• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • সিরিজ বোমায় রক্তাক্ত শ্রীলঙ্কা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯০

    শ্রীলঙ্কার তিনটি চার্চ, তিনটি অভিজাত হোটেল, কলম্বো এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৪৫০ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান।

    দেশটির স্থানীয় সময় গতকাল রবিবার সকাল ৮ টা ৪৫ নাগাদ খ্রিস্টানদের ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উদযাপনকালে কোচকিকাদে, কাতুয়াপিটিয়া ও বাট্টিকালোয়া নামক স্থানের তিনটি গির্জায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। প্রায় একই সময়ে দেশটির রাজধানীর অভিজাত তিনটি হোটেল সাংগ্রি লা, দ্য কিন্নামোন এবং কিংসবারিতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

    এ হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যে ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দেশটির পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

    পুলিশের এক মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকারা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ভয়াবহ এ হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম বিস্ফোরণটি কলম্বোর সেন্ট এন্থনি চার্চ ও কাতুয়াপিটিয়ার সেন্ট সেবাস্থিয়ান চার্চে ঘটে। হামলার পর সেন্ট সেবাস্থিয়ানর ফেসবুক পাতায় বলা হয়েছে, আমাদের গির্জায় বোমা হামলা হয়েছে, দয়া করে এগিয়ে আসুন এবং আপনার পরিবারের সদস্যরা থাকলে সাহায্য করুন।

    এই সিরিজ বোমা হামলার প্রায় ঘণ্টা খানেক পর আবারও কলম্বো ও এর পার্শ্ববর্তী একটি শহরে আরও দুইটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে।

    সংবাদ সংস্থা এএফপির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বোমা হামলায় ব্রিটিশ, মার্কিন, জাপানিসহ মোট ৩৫ জন বিদেশির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।

    এই সিরিজ বোমা হামলার ঘটনার পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা এক বিবৃতিতে দেশটির জনগণকে শান্ত থাকতে এবং সেইসঙ্গে এ বর্বর ঘটনার তদন্তে দেশটির কর্তৃপক্ষকে সমর্থন জানাতে আহ্বান জানিয়েছেন।

    এছাড়া দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহ এক জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।

    এ হামলার দায় এখন পর্যন্ত কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী স্বীকার করেনি।

    হিরোসাকি উদ্যানে চেরি ফুল প্রস্ফুটন উৎসব

    বাংলাদেশে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে মিছিল সমাবেশ

    বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় গতকাল, চলতি মাসের প্রথম নাগাদ অগ্নি সংযোগের ফলে মৃত্যুবরণ করা ১৯ বছর বয়সী একজন ছাত্রীর জন্য বিচারের দাবিতে প্রতিবাদকারীরা সমবেত হয়েছেন।

    গতমাসে পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে নিহত নুসরাত জাহান রাফি, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিজের দপ্তরে ডেকে নিয়ে বার বার তাঁর শরীর স্পর্শ করেন বলে উল্লেখ করেন।

    তিনি, চলতি মাসের ৬ তারিখে অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগকারী ৫ জনের সঙ্গে মাদ্রাসার ছাদে সাক্ষাৎ করেন। তিনি তা করতে অস্বীকার করলে উক্ত ব্যক্তিরা, তাঁর শরীরে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে অগ্নি সংযোগ করেন বলে জানা গেছে।

    মারাত্মকভাবে পুড়ে যাওয়া শরীর নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হলেও এমাসের ১০ তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

    স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম, এই ঘটনায় জড়িত থাকার জন্য ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায়।

    গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের একজন, অধ্যক্ষের নির্দেশে এই হামলা চালানো হয় এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

    এই ঘটনার ফলে, যৌন হয়রানি এবং নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বিরোধী প্রতিবাদ জ্বলে ওঠে এবং এসকল বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

    গতকালের সমাবেশে অংশ নেয়া জনৈক নারী, এইধরনের অপরাধীদের শাস্তি দেয়াই পর্যাপ্ত নয় বলে উল্লেখ করেন।

    তিনি, লোকজনের উঠে দাঁড়ানো এবং নারীদের নিপীড়নের মধ্যে রাখা পরিবেশের পরিবর্তন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন।

    জাপানের এক শিক্ষার্থীর তিরানোসাউরুস গোত্রের এক প্রজাতির জীবাশ্ম উদ্ধার

    জাপানের এক হাইস্কুলের একজন শিক্ষার্থী উত্তর-পূর্ব জাপানে সম্ভবত তিরানোসাউরুস গোত্রের এক প্রজাতির একটি দাঁতের জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েছে।

    ১৮ বছর বয়সী এক ছাত্র, ইউউকি কাদোগুচি ইওয়াতে জেলার কুজি এলাকায় গত বছর এক খনন কর্মশালায় অংশ নেয়ার সময় এই ৯ মিলিমিটার জীবাশ্মটি খুঁজে পায়।

    ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেন হিরাইয়ামা এই জীবাশ্মটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন এবং এই উপসংহারে পৌঁছান যে, এটি একটি তিরানোসাউরুস’এর যেটি হচ্ছে একটি মাংসাশী ডাইনোসর। তিনি এই সত্যের উপর ভিত্তি করে তার এই অনুমান করেন যে, এই জীবাশ্মের আড়াআড়িভাবে কাটা টুকরোর আকৃতি হচ্ছে ইংরেজি অক্ষর ‘ডি’-এর মত।

    এই জীবাশ্ম ক্রেটাসিয়াস যুগের শেষ অর্ধাংশ থেকে ৯ কোটি বছর পুরনো একটি শিলার অনুভূমিক স্তরের মধ্যে পাওয়া গেছে।

    অধ্যাপক হিরাইয়ামা বলছেন, ধারণা করা হচ্ছে যে, এই ডাইনোসরটি প্রায় ৩ মিটার লম্বা। উদ্ধারকৃত দাঁতের আকার থেকে এই ধারণা করা হচ্ছে।

    তিনি এও বলছেন, দাঁতের এই জীবাশ্মের প্রান্ত মসৃণ এবং জাপানে এ ধরনের আকৃতির জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়াটা বিরল। তিনি আরও বলেন, এটি সম্ভবত এমন এক প্রজাতির যা এখন পর্যন্ত অজ্ঞাত এক তিরানোসাউরুস গোত্রের।

    কাদোগুচি ইওয়াতে জেলার মিইয়াকো হাইস্কুলে অনলাইন শিক্ষা কোর্সে পড়ছে। সে বলছে, এক ঘণ্টা খনন করার পরই এই জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়ায় সে নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে করছে।

    এই জীবাশ্মটি রবিবার থেকে আগস্ট মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত কুজি আম্বার জাদুঘরে প্রদর্শন করা হবে।

    শবে বরাত : গুরুত্ব ও ফযিলত

    যে সকল মাসে আল্লাহ তায়ালা বান্দার জন্য বিশেষ বরকত রেখেছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো শাবান মাস। রাসূল সা. এ মাসে সবচেয়ে বেশি নফল রোযা রাখতেন। হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন, আমি রাসূল সা. কে রমজান মাস ব্যতীত অন্য কোনো মাসে পূর্ণ রোযা রাখতে দেখিনি এবং শাবান মাসের চেয়ে অন্য কোনো মাসে এতো বেশি রোযা রাখতে দেখিনি। (বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী)।
    অন্য হাদিসে হযরত উসামা ইবনে যায়েদ রা. বর্ণনা করেন, আমি একদিন রাসূল সা.-এর খেদমতে আরজ করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমি আপনাকে শাবান মাস ব্যতীত অন্য কোনো মাসে এতো অধিক পরিমাণে রোযা রাখতে দেখিনি। রাসূল সা. বললেন, এটা ওই মাস যে মাস সম্পর্কে অধিকাংশ লোকই গাফেল থাকে। এটা রজব ও রমযান মাসের মধ্যবর্তী মাস। এটা এমন মাস, যে মাসে মানুষের আমলসমূহ আল্লাহ তায়ালার দরবারে পেশ করা হয়। আমার আকাক্সক্ষা যে, আমার আমল আল্লাহর দরবারে এ অবস্থায় পেশ হোক যে, আমি রোযাদার। (নাসায়ী, শুআবুল ঈমান)।
    এছাড়াও এ মাসের ফযিলত সম্পর্কে বিভিন্ন সহিহ হাদিসের কিতাবে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে। যার দ্বারা এ মাসের ফযিলত ও গুরুত্ব প্রমাণ হয়। সুতরাং এ মাসে রোযা রাখা প্রমাণিত হলো। এবারে আসি শবে বরাত প্রসঙ্গে। মুমিন মাত্রই এ বিশেষ রাতের নামের সাথে পরিচয় আছে। তবে হাদিস শরিফে এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ তথা ‘শাবানের পনেরতম রজনী’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। ‘শবে বরাত’ শব্দটি ফারসি শব্দ। যা ‘শব’ ও ‘বরাত’ দু’টি শব্দ মিলে গঠিত হয়েছে। ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত আর ‘বরাত’ অর্থ হলো নাজাত, মুক্তি রক্ষা ইত্যাদি।
    তবে মুফাসসিরে কেরাম এ রাতের আরও কয়েকটি নামের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন লাইলাতুল মুবারাকা, লাইলাতুল বারাআ, লাইলাতুস সাক ইত্যাদি। (তাফসীরে কুরতুবি, খÐ ১৬, পৃ. ১২৬)। এ রাতে যেহেতু গুনাহগারের গুনাহ মাফ হয় এবং অসংখ্য অপররাধীর অপরাধ ক্ষমা করা হয়, সেহেতু এ রাত মুসলমানদের মাঝে ‘শবে বরাত’ নামে প্রসিদ্ধ হয়েছে।
    পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কে কোরআনুল কারীমে নির্দেশনা আছে কিনা এ ব্যাপারে মুফাসসিরে কেরামগণ মতভেদ করেছেন। আর তাদের এ মতভেদের ভিত্তি হলো সুরা দুখানের ৩ নং আয়াত এর ভাবার্থ। জমহুর মুফাসসিরীন প্রায় সকলই এ আয়াতের (লাইলাতুল মুবারাকা) শব্দের ব্যাখ্যা ‘শবে কদর’ করেছেন এবং স্বপক্ষে হাদীস পেশ করেছেন।
    অন্যদিকে হযরত ইকরামা রা. এবং কিছু মুফাসসির উক্ত শব্দের দ্বারা ‘শবে বরাত’ বুঝাতে চেয়েছেন এবং স্বপক্ষে হাদীসও পেশ করেছেন উপস্থাপন করেছেন। তাছাড়া পরবর্তীতে অধিকাংশ মুফাসসির যেমন, ইমাম ফখরুদ্দীন রাজী রহ. তার তাফসীরে কাবিরে, ইমাম তাবারি রহ. তার তাফসীরে তাবারিতে, আল্লামা যামাখশারি রহ. তার তাফসীরে কাশশাফে, আল্লামা আলুসি রহ. তার তাফসীরে রুহুল মায়ানিতে, ইবনু কাসির তার তাফসীরে ইবনে কাসিরে, শায়খ ইসমাইল হাক্কি রহ. তার তাফসীরে রুহুল বয়ানে, ইমাম কুরতুবী তার তাফসীরে কুরতুবিতে, আশরাফ আলী থানভী রহ. তার তাফসীরুল বায়ানুল কোরআনে, মুফতি শফি রহ. তার তাফসীরে মাআরেফুর কোরআনে উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় শবে বরাতের আলোচনা করেছেন।
    পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কে কোরআনুল কারীমে সরাসরি নির্দেশনা না থাকলেও হাদীস শরিফে সুস্পষ্টভাবে এর গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফযিলত সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে। এ সকল বর্ণনার মধ্যে কিছু বর্ণনা সম্পর্কে পৃথিবীর সকল মুহাদ্দিসীনে কেরাম সহিহ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিছু বর্ণনা হাসান, কিছু যয়িফ বলেছেন। একথা সত্য যে কোনো বিষয়কে প্রমাণের জন্য একটি সহিহ হাদীসই যথেষ্ট।
    আর এ বিষয়ে মুহাদ্দিসীন, ফুকাহা ও অন্যান্য ওলামায়ে-কেরামের অধিকাংশ একমত যে, ফযিলতের ক্ষেত্রে যয়িফ হাদীসের ওপর আমল করা জায়েজ এবং ‘যয়িফ’ সনদের হাদিস দ্বারাও কোনো আমল মুস্তাহাব হওয়া প্রমাণিত হয়। তাছাড়া হাদিসে শবে বরাত পালন বা ফযিলতের বিপক্ষে কোনো বর্ণনার প্রমাণও নেই।

    জাপানে ইংরেজি শিক্ষা

    জাপানে ইংরেজি শিক্ষা সংলাপের দক্ষতা অর্জন নয়, বরং ব্যাকরণ শিক্ষা ও ইংরেজি বাক্যের অনুবাদের উপর মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপিত হওয়ায় সমালোচিত হচ্ছে। এর একটি কারণ হচ্ছে এরকম যে জাপান হচ্ছে দ্বীপ রাষ্ট্র এবং দৈনন্দিন জীবনে লোকজনকে ইংরেজি বলতে হয় খুব কম। তবে দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে জাপানের লোকজনের যে ইংরেজিতে কথা বলা দরকার, সেই বিশ্বাস থেকে সরকার স্কুল পর্যায়ের ইংরেজি শিক্ষায় সংস্কার বাস্তবায়নে কাজ করে চলেছে। জাপানের জনগণের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা যেন এশিয়ার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়ে উঠতে পারে, সরকার সেজন্য পড়া এবং লেখার বাইরে শ্রবণ ও কথা বলার দক্ষতা বিকাশের লক্ষ্য ধরে নিয়েছে।

    ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হতে যাওয়া শিক্ষা বর্ষ থেকে প্রাইমারি স্কুলে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা দেয়া আনুষ্ঠানিক একটি বিষয় হয়ে উঠবে। এছাড়া সেই একই বছর থেকে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিন্নভাবে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষার আগে জাতীয় পর্যায়ে একক মানসম্মত শিক্ষাগত মূল্যায়ন পরীক্ষার ব্যবস্থাও নবায়ন করে নেয়া হবে। নতুন পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের কথা বলার দক্ষতা সহ ইংরেজি ভাষার সামর্থ্যের মূল্যায়নে বেসরকারি খাতের পরীক্ষা পদ্ধতি কাজে লাগানো হবে।

    সংস্কারের কার্যকারিতা নিয়ে কিছু লোকজন আশাবাদী হলেও অন্যরা আবার উদ্বিগ্ন যে শিক্ষকদের মধ্যে সামর্থ্যের ঘাটতির মত কারণে স্কুল এখনও সংস্কার কার্যকর করতে প্রস্তুত নয়।

    মার্চ মাসে জাপানের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হ্রাস পেয়েছে

    জাপানে সর্বশেষ প্রকাশিত বাণিজ্য পরিসংখ্যানে পরপর দুই মাস ধরে উদ্বৃত্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে চীনের চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় এই পরিমাণ হ্রাস পেতে শুরু করেছে।

    মার্চ মাসে বাণিজ্য উদ্বৃত্তর পরিমাণ ছিল ৫২ হাজার ৮৫০ কোটি ইয়েন বা ৪৭০ কোটি ডলার। এই পরিমাণ হল এক বছর আগের তুলনায় ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ কম।

    বিভিন্ন বাজারে রপ্তানির পরিমাণ হল ৬ হাজার ৪৩০ কোটি ডলার যা হল এক বছর আগের তুলনায় ২ দশমিক ৪ শতাংশ কম।

    চীনে মাল চালান বিশেষ ভাবে মন্থর ছিল। যন্ত্রপাতি এবং লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে বা এলসিডির যন্ত্রাংশের চাহিদা কমে যাওয়ায় চীনে চালানের পরিমাণ ৯ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

    তবে গত দুই মাসে এই প্রথমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে জাপানের উদ্বৃত্ত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উপাত্তে দেখা যাচ্ছে। এক বছর আগের তুলনায় এই সংখ্যা ৯ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬১০ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ির চালান ৫ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

    জাপানের উত্তরের আল্পস পর্বতমালার একটি নয়নাভিরাম পথ পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে

    মধ্য জাপানের বরফাচ্ছন্ন উত্তরের আল্পস পর্বতের মধ্য দিয়ে চলে যাওয়া একটি নয়নাভিরাম পথে এখন প্রচুর পর্যটকের ঝাঁক নেমেছে।

    “তাতেয়ামা কুরোবে আলপাইন” সড়কটি তোইয়ামা এবং নাগানো জেলাকে সংযুক্ত করেছে। শীতকালীন একটি ছুটির পর গতকাল এটি আবারও সম্পূর্ণভাবে খুলে দেয়া হয়েছে। তবে, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সেখানকার একটি জনপ্রিয় দ্রষ্টব্য স্থল বন্ধ করে দিতে হয়।

    অনেক দর্শনার্থীই আজ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় আড়াই হাজার মিটার উপরে অবস্থিত ঐ এলাকা সফর করতে সমর্থ হন এবং একটি উজ্জ্বল আকাশের নীচে বরফের সুউচ্চ দেয়ালের ছবি তারা তোলেন।

    গত নভেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া তুষারপাতে ১৬ মিটার পর্যন্ত উঁচু বরফের দেয়ালের সৃষ্টি হয়েছে।

    টোকিও’র অদূরের সাইতামা জেলার এক বয়স্ক জুটি বলেন, দীর্ঘকাল ধরে তারা এর প্রতীক্ষায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত নিজেদের ৪৫তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এই সফরে আসতে সমর্থ হয়েছেন।

    তাইওয়ানের একজন তরুণ বলেন, এরকম বিস্ময়কর দৃশ্যাবলী অবলোকন করে তিনি ভীষণ মুগ্ধ।

    ঐ পথের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কোম্পানি প্রত্যাশা করছে যে গত বছরকে ছাড়িয়ে এ বছর প্রায় দশ লক্ষ দর্শনার্থীর সমাগম সেখানে ঘটবে।

    বরফের দেয়ালের ভেতর দিয়ে হাঁটার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত পথের একটি অংশ জুন মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।

    ‘খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ’

    সাক্ষাৎ শেষে মির্জা ফখরুল

    কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ।’ রবিবার (১৪ এপ্রিল) বিকাল ৪টা ৭মিনিট থেকে ৫টা পর্যন্ত খালেদা জিয়ার কেবিনে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে আরও ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।

    খালেদা জিয়া এখনও খেতে পারছেন না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডাম বেশ অসুস্থ, অত্যন্ত অসুস্থ। এখনও তিনি পা বেন্ড (বাঁকানো) করতে পারছেন না। তার বাম হাত আগের মতোই রয়ে গেছে। অর্থাৎ বাম হাতটা কাজ করতে পারছে না।’

    প্যারোলে মুক্তি ও সংসদে বিএনপির নির্বাচিত সদস্যদের শপথ নেওয়ার বিষয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এসব বিষয়ে কোনও আলোচনা করিনি। আমরা তার চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজ নিতে আসছিলাম। স্বাস্থ্যের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

    মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছিলাম, তার সঙ্গে দেখা করার জন্য। আমাদের এর আগে অনুমতি দেওয়া হয়নি।’

    খালেদা জিয়া যথেষ্ট অসুস্থ দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘আগের চেয়ে খুব বেশি ইম্প্রুভ করেছে বলে আমাদের কাছে মনে হয়নি। আমরা বার বার যেটা বলেছি, তার স্পেশালাইজড ট্রিটমেন্ট দরকার। কিন্তু সে ট্রিটমেন্ট এখনও শুরু হয়েছে বলে মনে হয়নি।’

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকেও বলছি, খালেদা জিয়াকে তার পছন্দ মতো হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করানো হোক। এটা জরুরি।’

    খালেদা জিয়া দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বলেছেন। এর জন্য দেশবাসী যেন সচেতন হয় এবং কাজ করে।’

    গত ১ এপ্রিল থেকে খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ’র কেবিন ব্লকের ৬ তলার ৬২১ নম্বর কক্ষে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখানে চিকিৎসা নিতে আসার পর এটিই নেতাদের সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাৎ।

    জাপানী ভাষার বিদ্যালয়গুলোর জন্য আরও কঠোর মানদণ্ড

    জাপানের আইন মন্ত্রণালয়, বিদেশী ছাত্রদের জাপানী ভাষা শেখার বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আরও কঠোর মানদণ্ড নির্ধারণের পরিকল্পনা করছে। উল্লেখ্য, গত দশ বছরে এইধরনের বিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

    অভিবাসন বিভাগ, বিরাজমান জাপানী ভাষা শেখার বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭শ ৪৯টি এবং প্রায় এক দশক আগে বিদেশী ছাত্রের সংখ্যা ৩ লাখে বৃদ্ধি করতে সরকারের এক ঘোষণার পর থেকে এসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে বলে জানায়।

    বর্তমান মানদণ্ডে, বিদ্যালয়ে কত ঘণ্টা ক্লাস হয় এবং শিক্ষক সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

    এসকল মানদণ্ড পূরণ করতে সক্ষম হলে বিভিন্ন কোম্পানিকেও নতুন বিদ্যালয় স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়। কিছু সংখ্যক কোম্পানি, তাদের পরিচালিত কারখানায় নিজেদের বিদ্যালয়ের ছাত্রদের কর্মী হিসেবে ব্যবহার করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

    মন্ত্রণালয়, যত দ্রুত সম্ভব এসকল মানদণ্ড আরও কঠোর করার পরিকল্পনা করছে। এতে, বিদ্যালয়গুলোর উপর জাপানী ভাষার দক্ষতা বিষয়ক পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের ছাত্রদের পাশের সংখ্যা প্রকাশের বাধ্যবাধকতা আরোপের বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

    জাপানী ভাষা শিক্ষা উন্নয়ন সমিতি, কিছু বিদ্যালয়ে উন্নত ব্যবস্থাপনা থাকলেও কিছু বিদ্যালয়ে তা অনুপস্থিত রয়েছে বলে জানায়। সমিতি, বিদ্যালয়গুলোর উপর নিয়মিতভাবে নজরদার করার একটি ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে বলেও উল্লেখ করে।

    জাপানে কর্মক্ষম জনসংখ্যা রেকর্ড সর্বনিম্ন

    সর্বশেষ এক উপাত্তে দেখা যাচ্ছে যে, জাপানি জনসংখ্যা অব্যাহতভাবে প্রবীণ হচ্ছে, আর এর পাশাপাশি কর্মক্ষম জনসংখ্যা পূর্ববর্তী এক রেকর্ড সর্বনিম্ন সংখ্যার সমান হয়েছে।

    অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমান করছে যে, গত অক্টোবর মাসের হিসাব অনুযায়ী, বিদেশি অধিবাসী সহ মোট জনসংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১২ কোটি ৬৪ লক্ষে।

    এই সংখ্যা থেকে দেখা যাচ্ছে, জাপানের জনসংখ্যা পর পর আট বছর হ্রাস পেয়েছে। রেকর্ডে আরও দেখা যাচ্ছে, এ বছরের হ্রাস ২ লক্ষ ৬৩ হাজার জন বা ০.২১% হচ্ছে সর্বোচ্চ। জাপানের জনসংখ্যা ২০০৮ সালে সর্বোচ্চ ছিল।

    কর্মক্ষম জনসংখ্যা অর্থাৎ যাদের বয়স ১৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে, তাদের সংখ্যা হচ্ছে ৭ কোটি ৫৪ লক্ষ। এই বয়সের লোকজন মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০% যা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ১৯৫০ সালের রেকর্ড সর্বনিম্ন সংখ্যার সমান।

    জনসংখ্যার মধ্যকার ৬৫ বা তদুর্ধ্ব বয়সী লোকের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ কোটি ৫৫ লক্ষে যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৮% এবং রেকর্ড সর্বোচ্চ। এই বয়সের গ্রুপের অর্ধেকেরও বেশি লোকের বয়স ৭৫ বা তদুর্ধ্ব।

    ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ১ কোটি ৫৪ লক্ষে এবং তাদের সংখ্যা ১২% কমে গেছে যা রেকর্ড সর্বনিম্ন।

    তিন মাস বা এর থেকে বেশি সময় ধরে জাপানে বাস করা বিদেশি অধিবাসীদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ২২ লক্ষে যা পর পর ৬ বছর ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

    সুযুকির অসত্য প্রতিবেদন

    সরকারের কাছে পেশ করা সুযুকি মটরের একটি প্রতিবেদনে, নির্মাতা কোম্পানিটি ১৯৮১ সাল থেকে গাড়ির ব্রেক ও ইঞ্জিন বিষয়ে ভ্রান্ত পরীক্ষা চালিয়ে এসে থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

    গতকাল কোম্পানির প্রেসিডেন্ট তোশিহিরো সুযুকি, বাইরের বিশেষজ্ঞদের পরিচালিত অনুসন্ধানের ভিত্তিতে প্রণীত প্রতিবেদনটি পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করেন।

    গত সেপ্টেম্বরে মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত সরেজমিন অনুসন্ধানে, পূর্বে অন্যভাবে বলা হলেও কোম্পানিটি জ্বালানি সাশ্রয় এবং গ্যাস নিঃসরণ বিষয়ক প্রাক চালান পরিদর্শনের উপাত্ত পরিবর্তন করে বলে প্রকাশ পায়।

    নতুন প্রতিবেদনে, পরিদর্শকদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণরত সহকারীরা এককভাবে পরিদর্শন কাজ চালানোর বিষয়ও জানা যায় বলে উল্লেখ করা হয়।

    মটরগাড়ি নির্মাতা কোম্পানিটি, ইতোমধ্যে কোম্পানির পরিদর্শন ব্যবস্থা সংশোধন করা হয়েছে বলে জানায়। কোম্পানি, পরিদর্শকের সংখ্যা দ্বিগুণে বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছে বলেও উল্লেখ করে।

    সাংবাদিকদের কোম্পানির প্রেসিডেন্ট, অন্যান্য কোম্পানিতে সরবরাহ করা গাড়িসহ প্রায় ২০ লাখ মটরগাড়ি রিকল বা ফেরত ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান।

    দিল্লির মসনদের লড়াই

    পার্লামেন্ট নির্বাচনে আজ প্রথম ধাপে ২০ রাজ্যের ৯১ আসনে ভোট

    আজ বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে। ১৯ মে পর্যন্ত মোট সাতটি ধাপে সারা ভারতে ভোটগ্রহণ করা হবে। প্রায় ৯০ কোটি ভোটার এবারের নির্বাচনে ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন। আজ প্রথম দফায় ২০টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের ৯১টি লোকসভা আসনের ভোটাররা ভোট প্রদান করবেন। ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার পর ২৩ মে ফলাফল প্রকাশিত হবে। সেদিনই চূড়ান্ত হবে যে আগামী পাঁচ বছরের জন্য কোন দল বা জোট দিল্লীর মসনদে আসীন হয়ে ভারতের ১৩০ কোটিরও বেশি জনগণের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। ভারতে এবারের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী হচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) এবং কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ পার্টি (ইউপিএ)। এর বাইরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসসহ কিছু আঞ্চলিক দল মোদির বিরোধিতায় একাট্টা হয়েছে। ভারতে মোট ২৯টি রাজ্য ও ৭টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল রয়েছে। দেশটির ৫৪৩ আসনের লোকসভায় সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজন ২৭২ আসনে বিজয়। ভোটকেন্দ্র থাকবে দশ লাখেরও বেশি। ভোট অনুষ্ঠিত হবে ১১, ১৮, ২৩ ও ২৯ এপ্রিল এবং ৬, ১২ ও ১৯ মে।
    ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছিল ২৮২টি আসন। আর বিজেপি জোট তথা এনডিএ সব মিলিয়ে পেয়েছিল ৩৩৪টি আসন। অপরপক্ষে শুধু কংগ্রেস পেয়েছিল ৪৪টি আসন। আর কংগ্রেস জোট তথা ইউপিএ পেয়েছিল ৬০টি আসন। অন্যরা ১৪৯টি। ভারতের আর কোনো নির্বাচনে কংগ্রেস কখনো এত খারাপ ফল করেনি।
    আজ যে ২০টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভোট অনুষ্ঠিত হবে সেগুলো হচ্ছেঃ অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, বিহার, ছত্তিশগড়, জম্মু ও কাশ্মীর, মহারাষ্ট্র, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ওড়িশা, সিকিম, তেলাঙ্গানা, ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড, পশ্চিমবঙ্গ, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং লাক্ষাদ্বীপ।
    কিছু রাজ্যে ভোট হবে কয়েক ধাপে। এর মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের ২৫টি আসনে, তেলাঙ্গানার ১৭টি আসনে, অরুণাচল প্রদেশের ২টি আসনে, মেঘালয়ের ২টি আসনে, মিজোরাম ও নাগাল্যান্ডের ১টি আসনে, সিকিম, লাক্ষাদ্বীপ, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ১টি করে আসনে ভোট হলেই এসব স্থানে ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে। এবার রাজ্যগুলোর মধ্যে তেলাঙ্গানায় সবচেয়ে বেশি ৪৪৩ জন প্রার্থী লড়াইয়ে নেমেছেন। অন্ধ্রপ্রদেশে লড়াই করছেন ৩১৯ জন প্রার্থী। এছাড়া মহারাষ্ট্রে ১২২ জন, উত্তরপ্রদেশে ৯৬জন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে নিজেদের ভাগ্য যাচাইয়ে নামবেন। এদিকে বাংলায় কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার দুই কেন্দ্রে লড়াইয়ে রয়েছেন ১৮জন প্রার্থী।
    ভারতের নির্বাচনে উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের ব্যাপক ভ‚মিকা রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, উত্তরপ্রদেশে যে দল বিজয়ী হয় তারাই ভারতে সরকার গঠন করে। জাতীয় রাজনীতিতে এ রাজ্যটি যেমন বেশ প্রভাবশালী তেমনি আবার সামাজিকভাবেও সবচেয়ে বিভক্ত রাজ্যও এটি। এখান থেকে ৮০ জন লোকসভা সদস্য যাবেন ভারতের পার্লামেন্টে। ২০১৪ সালে বিজেপি এখানে ৭১টি আসনে জয়ী হয়। তবে এ রাজ্যে এবার এক হয়েছেন দু’প্রতিদ্ব›দ্বী মায়াবতী ও অখিলেশ যাদব। তারা ৫০টির বেশি আসন পাওয়ার আশা করছেন যার মাধ্যমে দিল্লি জয়ের পথ বাধাগ্রস্ত হতে পারে বিজেপির জন্য।
    পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার পশ্চিমবঙ্গে ৭ ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে যা নজিরবিহীন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সব কটি আসন পাবার আশা করছে। তবে বিজেপিও এখানে ব্যাপক নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে এবং আগের চেয়ে বেশি সংখ্যক আসন পাবার আশা করছে। ২০১৪ সালে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে ২টি পেয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ৩৪, সিপিএম ২ ও কংগ্রেস ৪টি আসন।
    এবারের নির্বাচনে প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজ রাজ্য গুজরাটের কোনো আসন থেকে নির্বাচন না করে উত্তরপ্রদেশের বারানসী আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন। আর রাহুল গান্ধী নির্বাচন করবেন দুটি আসন উত্তর প্রদেশের আমেথি ও কেরালার ওয়ানাদ থেকে।
    এদিকে লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে টাইমস নাউ-এর জনমত সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এনডিএ এবার পাবে ২৭৯ আসন। ২০১৪-তে এনডিএ পেয়েছিল ৩৩৬ আসন। এবার এনডিএ-র আসন কমবে ৫৭টি।
    ২০১৪-র তুলনায় এবার ইউপিএ-র আসন সংখ্যা বাড়ছে। এতে বলা হয়, ইউপিএ এবার পাবে ১৪৯টি আসন। ২০১৪-তে ইউপিএ জোট পেয়েছিল ৬০টি আসন। এবার তারা ৮৯টি আসন বাড়াতে সক্ষম হবে। আর অন্যরাও ৩২টি আসন কম পাবে।
    টাইমস নাউ-এর সমীক্ষা ঠিক হলে আভাস মিলছে যে, নরেন্দ্র মোদি ফের ফিরছেন ক্ষমতায়। দিল্লির কুর্সিতে তিনি আবার বসছেন প্রাধান্য নিয়েই। একইসঙ্গে এবার প্রকৃত বিরোধী হয়ে ফিরছে কংগ্রেস। ইউপিএ জোট এবার ২০১৪-র তুলনায় অনেক ভালো ফল করতে চলেছে বলেও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
    তবে সোমবার এক বেসরকারি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওসব জনমত সমীক্ষা ম্যানুপুলেট করা যায়। টাকা ফেললেই সমীক্ষা বদলে যায়। কোনো ভিত্তি নেই। বিধানসভা ভোটের আগে তো দেখেছিলেন, রাজ্যে আমাদের হারিয়ে দেয়া হয়েছিল। তারপর বাস্তবে দেখা গিয়েছে কী ফলাফল হয়েছে। আমার স্থির বিশ্বাস, মানুষ মোদি সরকারকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে।
    বিশ্লেষকরা বলেন, অনেক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করা নিয়ে অসুবিধায় থাকলেও নরেন্দ্র মোদিই এখন বিজেপির প্রধান ভোট সংগ্রাহক। তার সাথে রয়েছে দলের মধ্যে তার বিশ্বস্ত একটি অংশ, যেমন অমিত শাহ। বিরোধী পক্ষেরও তাই টার্গেট মোদি। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বেই বিজেপি নির্বাচনে বিশাল জয় পেয়েছিল। সেটিই ছিলো প্রথমবারের মতো বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া। এ বিশাল জয়ের কৃতিত্ব যায় মোদির ঘরে।
    তারা বলেন, মোদি সরকারের সময়ে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারত কিছুটা গতি হারিয়েছে। শস্যের দাম পড়ে যাওয়ার ঘটনা কৃষকদের দারুণ ক্ষুব্ধ করেছে। ২০১৬ সালের নোট নিষিদ্ধ করার বিতর্কিত সিদ্ধান্ত আর সার্ভিস ট্যাক্স ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। ভাটা এসেছে রপ্তানি আয়েও। তাই বেড়েছে বেকারত্ব। ঋণের দায়ে কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ডুবতে বসেছে। অথচ ভারতের জিডিপি অন্তত ৭ শতাংশ হারে বাড়া প্রয়োজন। নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, অর্থনীতিতে সংস্কারের কাজ চলছে। তার সরকার সরাসরি কৃষকদের ঋণ বা ঋণ মওকুফ সুবিধা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। পিছিয়ে পড়াদের জন্য চাকুরীতে কোটার কথাও বলছেন তিনি। তবে নির্বাচনেই প্রমাণ হবে যে সেটি করার সময় তিনি আর পাবেন কিনা।
    তবে বলা হচ্ছে যে ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা ঘটনার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে বিমান হামলা চালানোর মধ্য দিয়ে মোদি বহু ভোটারের মন জয় করে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। তাছাড়া দেশের সাড়ে ৮ কোটি তরুণ ভোটারের সমর্থন লাভ করা তার লক্ষ্য।
    অন্যদিকে এবার সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, যে দলের হাত ধরে ভারতের স্বাধীনতা এসেছিল সেই ১৩৩ বছরের পুরনো রাজনৈতিক দল ও বহু বছর রাষ্ট্র শাসনকারী কংগ্রেস কি ফিরে আসতে পারবে ক্ষমতায়? ২০১৪ সালের নির্বাচনে শোচনীয় হার মানতে হয় তাদের। সে নির্বাচনে মাত্র ৪৪টি আসন পেয়েছিল তারা। পরের চার বছরে অনেক রাজ্য নির্বাচনেও হেরেছে তারা। তবে গত ডিসেম্বর থেকে দলটি শক্তি পুনরুদ্ধারের দিকে যেতে পেরেছে বলে মনে হয়েছে। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে উপর্যুপরি ব্যর্থতার পর সম্প্রতি কংগ্রেস তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে জয় পেয়েছে। তার বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও রাজনীতিতে যাত্রা শুরু করেছেন। যদিও তিনি এবার নির্বাচনে দাঁড়াননি, কিন্তু তার রাজনীতিতে আগমন অনেককেই উৎসাহিত করেছে। রাহুল গান্ধী তার দল জিতলে গরীবদের একটি ন্যূনতম আয়ের নিশ্চয়তা দিচ্ছেন। সমালোচকরা মনে করেন, মোদীর হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ভারতকে বিভক্ত করেছে, যদিও তার সমর্থকরা এতে বেজায় খুশি। অন্যদিকে ভারতের ১৭ কোটির মতো মুসলিমের অনেকেই মনে করেন যে, মোদি সরকারের আমলে তারা অদৃশ্য সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছেন।
    উল্লেখ্য, বিজেপির কোনো মুসলিম এমপি নেই। ২০১৪ সালে দলটি ৭ জন মুসলিমকে প্রার্থী করে। কিন্তু তারা সবাই পরাজিত হন।
    এদিকে ভারতের নির্বাচন কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, দেশ জুড়ে ১০ লাখ পোলিং স্টেশনে থাকবে ভিভিপ্যাট। ইভিএম ব্যালট পেপারে থাকবে প্রার্থীদের ছবি। ইভিএম স্থানান্তরিত করার সময় শেষ এক কিলোমিটার জিপিএস ব্যবহার করে ট্র্যাক করা হবে। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য দেশ জুড়েই মোতায়েন করা হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রার্থীদের অর্থব্যয় নিয়েও এবারের নিয়ম বেশ কিছুটা কড়া করেছে কমিশন। গুগল, টুইটার, ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের খরচের বিশদ বিবরণ উল্লেখ করতে হবে নির্বাচন কমিশনের কাছে এবং তা ধরা হবে নির্বাচনী খরচের মধ্যেই। এছাড়া নির্বাচনী অথবা রাজনৈতিক প্রচারে প্রতিরক্ষা দফতরের কোনো কর্মীর ছবি ব্যবহার করা যাবে না।
    কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা
    নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশ জুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ছত্তিশগড় রাজ্যে নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রায় ৮০ হাজার সেনা, পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মঙ্গলবারের হামলার কারণে সময়সূচির কোনো পরিবর্তন হবে না।
    আটকে গেল ‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’
    ভোটের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’র মুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির জাতীয় নির্বাচন কমিশন। গতকাল বুধবার এই ছবির মুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নির্বাচন কমিশন বলছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করে; এমন কারো জীবনী নিয়ে তৈরি বায়োপিক নির্বাচনের সময় কোনো গণমাধ্যমে প্রদর্শন করা উচিত নয়।
    দেশটির ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, ছবিটির মুক্তির মাত্র একদিন আগে ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশন এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো। বৃহস্পতিবার ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে। প্রথম দফার ভোটের দিনে ছবিটির মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও এতে বাগড়া দিলো নির্বাচন কমিশন।
    মোদির জীবনী নিয়ে নির্মিত এই চলচ্চিত্রের মুক্তি স্থগিতের দাবিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেছিলেন বিরোধীদল কংগ্রেসের একজন কর্মী। গত মঙ্গলবার তার ওই পিটিশন খারিজ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানান, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার যথাযথ কর্তৃপক্ষ হচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
    আনন্দবাজার বলছে, সামান্য এক চা দোকানী থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তার এই জীবনযাত্রা বায়োপিক ‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’র বিষয়বস্তু। এতে মোদির ভ‚মিকায় অভিনয় করেছেন বলিউড অভিনেতা বিবেক ওবেরয়।
    ছবির বেশির ভাগ অংশের শুটিং হয়েছে গুজরাট, হিমাচল এবং রাজধানী নয়াদিল্লিতে। কিন্তু ছবিটির নির্মাণ কাজের স‚চনা থেকেই ভোটের সময় মুক্তি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত ছবিটির মুক্তি আটকে গেল নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে।

    গত চারমাসে জাপানে প্রথমবার যন্ত্রপাতির ক্রয়াদেশ বৃদ্ধি

    জাপানের মন্ত্রীসভা দপ্তর জানিয়েছে যে ফেব্রুয়ারি মাসে যন্ত্রপাতির ক্রয়াদেশ গত চার মাসে প্রথমবারের মত বৃদ্ধি পেয়েছে।

    কর্মকর্তারা বলছেন যে প্রধান যন্ত্রপাতি নির্মাতারা ঐ মাসে অভ্যন্তরীণ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে প্রায় সাড়ে সাতশো কোটি ডলারের সমপরিমাণ ক্রয়াদেশ পেয়েছে। এই পরিমাণ হল জানুয়ারি মাসের তুলনায় ইয়েনের হিসাবে ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।

    তবে জাহাজ নির্মাণ এবং বিদ্যুৎ শক্তি উৎপদানকারীদের এই তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হচ্ছে না কেননা বিরাট আকারের ওঠানামার প্রবণতা দেখা যায় এসব ব্যবসার ক্ষেত্রে।

    ফেব্রুয়ারি মাসের এই বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল উৎপাদন শিল্প। তেল ও কয়লা জাতীয় পণ্য নির্মাতারা টার্বাইন এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতির জন্য অনুরোধ জানায়। ধাতু জাতীয় পণ্য নির্মাতারা যন্ত্রাপাতি প্রক্রিয়াকরণের জন্য আরও বেশি ক্রয়াদেশ দেয়।

    তবে দৃশ্যতঃ বৃদ্ধির এই পরিমাণ অতটাও বিরাট আকারের নয় যে কর্মকর্তারা তাঁদের মূল্যায়ন উর্ধ্বমুখী করে নেবেন।

    মন্ত্রীসভা দপ্তর বলছে যন্ত্রপাতির ক্রয়াদেশ এখনো পর্যন্ত খুব একটা যে বৃদ্ধি পেয়েছে তা নয়। চীনা অর্থনীতি মন্থর হয়ে পড়ার কি প্রভাব পড়ে তার উপর ঘনিষ্ঠ ভাবে নজর রাখার প্রয়োজন রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

    হতাশা মুমিনের চরিত্র নয়-২

    মাওলানা শিব্বীর আহমদ
    এক আল্লাহকে যারা বিশ্বাস করে, যারা মুমিন, যারা সঠিক পথের অনুসারী; তারা তো কিছুতেই আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হতে পারে না। হযরত ইবরাহিম (আ.) ও হযরত ইয়াকুব (আ.) ছিলেন পার্থিব বিপদের শিকার। একজন সন্তানহীন অবস্থায় পুরো জীবন কাটিয়ে বার্ধক্যে পৌঁছে গেছেন, আরেকজন এক সন্তানের শোকেই যখন পাথর হওয়ার অবস্থা, তখন হারালেন আরেক সন্তান! তবুও তাঁরা আল্লাহর অসীম কুদরতের কাছে আশাবাদী ছিলেন। হতাশা তাদের স্পর্শ করতে পারেনি। পরিশেষে তাঁরা উভয়েই এই পৃথিবীতে থেকেই এর ফল ভোগ করে গেছেন। মুমিনের শান এমনই হওয়া উচিত। যতকাল বেঁচে থাকবে, আল্লাহর রহমতের কাছে আশাবাদী হয়েই সে বেঁচে থাকবে। সাধ্যে যতটুকু কুলায়, চেষ্টা করে যাবে। একবারের চেষ্টা ব্যর্থ হলে আবার করবে। বারবার করবে। কবি যেমনটি বলেছেন : ‘পারিব না এ কথাটি বলিও না আর/ একবার না পারিলে দেখ শতবার।’
    হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম দুই সন্তান হারিয়ে চরম সঙ্কটের মুহূর্তেও ছেলেদের বলছেন, তোমরা গিয়ে ইউসুফ ও তার ভাইয়ের সন্ধান করো! অর্থাৎ তিনি নিজেও আশাবাদী, আশা পোষণ করছেন। অন্যদের মনেও আশার সঞ্চার করতে চাচ্ছেন।
    বিখ্যাত সাহাবি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছেন, ‘হাবরু হাযিহিল উম্মাহ’- এই উম্মতের বিদ্বান ব্যক্তি। তিনি বলেছেন, ‘সবচেয়ে বড় কবিরা গোনাহ হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে শিরক করা, আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিশ্চিন্ত হয়ে যাওয়া আর আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ে পড়া।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক : হাদিস ১৯৭০১)।
    বিপদে পড়লে মানুষ যে কিভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এর কিছু বর্ণনা পবিত্র কুরআনেও আছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আমি মানুষকে যখন কোনো নিয়ামত দিই তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় ও পাশ কাটিয়ে যায়। আর যদি কোনো অনিষ্ট তাকে স্পর্শ করে তাহলে সে সম্পূর্ণ হতাশ হয়ে পড়ে!’ (সূরা বনী ইসরাঈল : ৮৩)।
    নানা কারণেই মানুষ হতাশায় আক্রান্ত হতে পারে। বিপদে যদি কেউ ধৈর্য ধারণ করতে না পারে তখন দেখা যায়- সামান্য সঙ্কটেই সে ভেঙে পড়ে। কখনো হতাশাগ্রস্তদের সঙ্গও আরেকজনকে হতাশ করে দেয়। আরবীতে প্রবাদ আছে- ‘মানুষ তার বন্ধুর আদর্শই গ্রহণ করে থাকে।’ এটাই স্বাভাবিকতা। তাই কেউ যদি হতাশাগ্রস্তদের সঙ্গে ওঠাবসা করে, তাহলে এই হতাশায় একসময় সেও আক্রান্ত হবেই। কখনো আবার প্রত্যাশার পাহাড়ও মানুষকে হতাশ করে। নিজের জীবন নিয়ে কিংবা জীবনের কোনো দিক নিয়ে যখন কেউ নিজ সামর্থ্যরে বিবেচনা না করে অনেক উঁচু স্বপ্ন দেখতে থাকে, এর পরিণতিতেও সে হতাশাগ্রস্ত হতে পারে। একের পর এক যখন আশাভঙ্গ হতে থাকে, তখন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে সে। আবার এমনও হয়- আকস্মিক কোনো বিপদ কাউকে এতটাই ঝাঁকুনি দেয়, যার ফলে সে আর মাথা সোজা করে সামনে এগিয়ে চলার হিম্মত করতে পারে না। পরিণামে কেবলই হতাশা।
    হতাশা যে কেবল পার্থিব বিষয়াদিকেই আক্রান্ত করে এমন নয়, দ্বীনি ও পরকালীন বিষয়েও মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়। কারও যখন পাপের পরিমাণ বেশি থাকে, সারাদিন যখন কেউ বড় বড় পাপে ডুবে থাকে, যখন নিজেও পাপ করে, অন্যকেও পাপের দিকে ডাকে। মোটকথা, দিনের পর দিন মাসের পর মাস ধরে কেউ যখন কেবলই পাপই করে চলে, এমতাবস্থায় কেউ যদি দয়াময় প্রভুকে স্মরণ করতে চায়, তখন একরাশ হতাশা তাকে ঘিরে ধরতে পারে- আমার যে এত এত পাপ, আমারও কি এখান থেকে মুক্তি সম্ভব? গোনাহের পঙ্কিলতা থেকে পরিচ্ছন্ন হওয়ার সম্ভাবনা যতটুকু থাকে, তাও এ হতাশার আঘাতে শেষ হয়ে যায়। আবার এমন গোনাহগার কাউকে দেখে দ্বীনদার লোকেরাও অনেক সময় হতাশ হয়ে পড়ে- একে মনে হয় আর ভালো পথে আনা যাবে না! কথা কী, এ উভয় হতাশাই আল্লাহ তায়ালার রহমত সম্পর্কে অজ্ঞতার ফল। আল্লাহর রহমত যখন ভাগ্যে জোটে, তখন তো ইসলামের চরম দুশমনও মুহূর্তের ব্যবধানে অন্তরঙ্গ বন্ধুতে পরিণত হয়। একটি উদাহরণ দিই।