• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • বিশ্বের সবচেয়ে কম ওজন নিয়ে জন্ম নেয়া শিশুটি বাড়ি ফিরেছে

    টোকিও’র একটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, শুধুমাত্র ২শ ৬৮ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্ম নেয়া একটি শিশু ভাল স্বাস্থ্য নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। তারা বলছেন, পৃথিবীতে বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে সবচেয়ে কম ওজন এই শিশুর।

    কেইয়ো বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল বলছে, গত বছরের আগস্ট মাসে তার মা ২৪ সপ্তাহের গর্ভবতী থাকাকালীন সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে অপরিণত অবস্থায় শিশুটির জন্ম হয়।

    নতুন জন্মানো শিশুদের একটি বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্রে তাকে ছয়মাস রাখা হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, চলতি মাসের ২০ তারিখ হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার সময় ঐ ছেলে-শিশুটির ওজন বৃদ্ধি পেয়ে ৩ হাজার ২শ গ্রামে উন্নীত হয়।

    শিশুটির পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা তাকেশি আরিমিৎসু বলেছেন, ৩শ গ্রামের কম ওজন নিয়ে জন্ম নেয়া শিশুদের বাঁচার হার ৫০ শতাংশের নিচে হওয়ায় হাসপাতালের কর্মীদের এই শিশুটির ব্যবস্থাপনা খুব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে করতে হয়েছে।

    আরিমিৎসু বলেছেন, শিশুটিকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারায় তার বাবা-মা অত্যধিক আনন্দিত হয়েছেন। এছাড়াও, তিনি লোকজনকে এই বিষয়টিও জানাতে চাইছেন যে অতি ছোট শিশুদেরও বাঁচানো সম্ভব।

    যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ডাটাবেসে এরকম ২৩টি শিশুর তালিকা রয়েছে যাদের জন্ম-ওজন ৩শ গ্রামের নীচে হলেও যারা বেঁচে থাকতে পেরেছে।

    আর তাদের মধ্যে শুধুমাত্র চারজন ছেলে-শিশু। উল্লেখ্য, এর পূর্বের অতি নিম্ন ওজনের শিশুটি ২০০৯ সালে জার্মানিতে জন্ম নেয়। তার ওজন ছিল ২শ ৭৪ গ্রাম।

    জাপান ট্রেঞ্চ’এ ভূমিকম্পের সম্ভাবনা ৯০%-এর উপরে

    জাপান সরকারের একটি প্যানেল জানিয়েছে যে, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে জাপান ট্রেঞ্চ বরাবর ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ ৯০%।

    জাপানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলীয় জাপান ট্রেঞ্চ হচ্ছে সেই স্থান যেখানে প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেট মহাদেশীয় প্লেটের নিচে ঢুকে যাচ্ছে।

    সরকারের ভূমিকম্প গবেষণা প্যানেল এই ট্রেঞ্চ এলাকা সংক্রান্ত নতুন মূল্যায়ন মঙ্গলবার প্রকাশ করে।

    এতে বলা হচ্ছে, ২০১১ সালের মার্চ মাসে পূর্ব জাপানে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মত ৯ মাত্রার মহাভূমিকম্পের সম্ভাবনা শূন্য শতাংশ বললেই চলে।

    তবে, প্রায় সাত বা সাড়ে সাত মাত্রার অসংখ্য ভূমিকম্প হওয়ার ৯০% বা তার চেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে।

    কোন্ জীবনে পালিয়ে গেল মেয়েটি?!

    মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ

    রাহাফ মুহাম্মাদ আল কুনুন। সম্প্রতি পরিবার থেকে পালানো এই সৌদি তরুণীকে নিয়ে বেশ তোলপাড় দেখা গেল। জাতিসঙ্ঘ থেকে শুরু করে বিশে^র বড় বড় দেশ এ নিয়ে প্রকাশ করল অপরিসীম উদ্বেগ ও তৎপরতা। পরিশেষে কানাডা মেয়েটিকে আশ্রয় দেয়ার (প্রকৃত অর্থে সাদরে আতিথেয়তা) কথা ঘোষণা করে। মিডিয়ার কল্যাণে মোটামুটি ঘটনা কারো অজানা নেই। সৌদি আরব থেকে মেয়েটি তার মা-বাবার সাথে কুয়েত আসে। এখান থেকে পালিয়ে সে চলে যায় থাইল্যান্ডে। এখানে সুবর্ণ ভূমি বিমানবন্দরে থাই কর্তৃপক্ষ তাকে কুয়েতে ফেরত পাঠাতে চাইলে সে একটি হোটেলে গিয়ে নিজেকে আবদ্ধ করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনা ও ছবি শেয়ার করতে থাকে। বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায় সাথে সাথে। জাতিসঙ্ঘসহ বড় বড় দেশ তৎপর হয়ে ওঠে। অন্য অর্থে বললে তার জন্য অপেক্ষায় থাকা তার নব্য অভিভাবকরা ক্ষেত্র তৈরি করতে থাকে। জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) একজন প্রতিনিধি তার সাথে সাক্ষাতের পর অভিবাসন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। ওই সাক্ষাতের পর থাইল্যান্ডের প্রধান অভিবাসন কর্মকর্তা বলেন, রাহাফকে বহিষ্কার করা হবে না। তাকে ইউএনএইচসিআরের অধীনে ব্যাংককে নিরাপদ হেফাজতে নেওয়া হবে। তাকে শরণার্থী মর্যাদা দেয়ার জন্য কাজ করবে ইউএনএইচসিআর। নানামুখী কথাবার্তা চলতে থাকে। মেয়েটি প্রথমে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেও পরে ইউরোপ-আমেরিকার কয়েকটি দেশের যে কোনোটিতে যাওয়ার ব্যাপারে সম্মতি জানায়। এ পর্যন্ত নীরব থাকলেও এই পর্যায়ে এসে কানাডা সরব হয়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন টুডো সাংবাদিকদের বলেন, কানাডা সবসময়ই মানবাধিকার এবং বিশ্বজুড়ে নারীদের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার। জাতিসঙ্ঘ আমাদের কাছে রাহাফ আল কুনুনকে আশ্রয় দেয়ার অনুরোধ করলে আমরা তাতে রাজি হয়েছি। ১১ জানুয়ারি শুক্রবার দিবাগত রাতে সে থাইল্যান্ড থেকে সিউল হয়ে কানাডার টরেন্টোয় পৌঁছায়।

     

    বিবিসিকে সে জানায়, সে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছে। তার আশংকা সৌদীআরবে ফিরে গেলে পরিবার তাকে হত্যা করবে। সে ধর্মত্যাগের ঘোষণা দেয় এবং নাম পরিবর্তন করে।

    رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ اِذْ هَدَیْتَنَا وَ هَبْ لَنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَةً  اِنَّكَ اَنْتَ الْوَهَّاب.

    এই ঘটনাটিতে কয়েকটি বিষয় খুব চোখে পড়ার মতো। একটি বিষয় হচ্ছে, জাতিসঙ্ঘসহ বড় বড় দেশের এত তৎপরতা দেখা গেল যে ধনাঢ্য ঘরের দুলালীর জন্য, তার চালচলন ও বেশ-ভূষা প্রমাণ করে, তার বাড়ীতে তেমন দ্বীন চর্চা হতো না। তার কাছে অর্থ সম্পদের কোনো অভাব থাকার কথা নয়। অথচ বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ শরণার্থী মানবেতর জীবন-যাপন করছে দেশে দেশে। মায়ানমার, ফিলিস্তিন, সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের মুসলিম দেশত্যাগীগণকে বিতাড়িত করা হচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকার অনেক দেশ থেকে। সেসব ক্ষেত্রে জাতিসঙ্ঘকে এত তৎপর দেখা যায় না সচরাচর। কত দেশেই তো নারী সমাজ নিগৃহীত-নিপীড়িত হচ্ছে চরমভাবে। কিন্তু তাদের সুরক্ষা ও অধিকার রক্ষার বিষয়ে জাতিসঙ্ঘের কোনো সংস্থা বা বড় বড় দেশগুলো থেকে এর সিকিভাগ তৎপরতাও চোখে পড়ে না। এই দ্বৈত অবস্থান কেন?

    আমরা বলি না যে, একটি মেয়ের জন্য জাতিসঙ্ঘ ও বড় বড় দেশ তৎপর হতে  পারবে না? না, একথা আমরা বলি না। একটি মানুষকেও জুলুম হতে রক্ষার জন্য যদি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তৎপরতা শুরু হয় সে তো অতি সুখের ব্যাপার। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, চলমান বিশে^ জাতিসঙ্ঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও মোড়ল দেশগুলো কি মানবতা ও সুবিচারের জন্য এতই আন্তরিক?

    বাস্তব চিত্র বোধহয় এরকম নয়। আর সে কারণেই প্রশ্ন জাগছে যে, আলোচ্য দৃষ্টান্তটির ক্ষেত্রে এই ব্যতিক্রম কেন? মানবাধিকার, নারী-অধিকার ইত্যাদি যা কিছুই বলা হোক, বর্তমান বিশ্ব রাজনীতি সম্পর্কে চোখ কান খোলা যে কেউ বুঝবেন যে,  এই ব্যতিক্রমী উৎসাহের পিছনে মেয়েটির ইসলাম ত্যাগই হচ্ছে মুখ্য কারণ। একটি আঠার বছর বয়সী মেয়ে তার মা-বাবার বিরুদ্ধে একতরফা অভিযোগ করে দিল যে, তার জীবন সংকটময় অবস্থায় রয়েছে। বিশে^র বড় বড় সংস্থা ও ব্যক্তি তার সহযোগিতায় নেমে পড়ল ওমনিতেই। তারা কি ঐ মেয়ের দাবি যাচাই করে দেখেছে? এমনও তো হতে পারে মেয়েটি কোনো অপরাধ প্রবণতার সাথে জড়িত আছে বা জড়াতে চাচ্ছে। কারণ, তার মা-বাবা অথবা ঐ দেশের কেউ তো মেয়েটির দাবিকে স্বীকৃতি দেয়নি। তাহলে কি ‘মার চেয়ে মাসির দরদ বেশি’ প্রবাদটি এক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হবে? যে মেয়ে একটি ভিন দেশে গিয়ে ইমিগ্রেশনকে ফাঁকি দিয়ে হোটেল রুমে নিজেকে বন্দি করতে পারে, ছবি ও ভিডিও টুইট করে বিশ্ব কাঁপাতে পারে সে কি আসলেই অসহায়?

    আমাদের সর্বস্তরের মুসলমানদের জন্য ঘটনাটি একটি দৃষ্টান্ত। পশ্চিমাদের তথাকথিত উদারতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রায়োগিক রূপ বোঝার জন্য এইসকল দৃষ্টান্ত মনে রাখা দরকার।

    পশ্চিমা প্রপাগান্ডার কারণে মুসলিমসমাজের যে শ্রেণি বর্তমান বিশে^ ধর্মকে খুব নগণ্য বিষয় মনে করতে চান, তাদের জন্য এখানে চিন্তার খোরাক আছে। বিশ্বব্যাপী মিশনারী তৎপরতার পাশাপাশি বিচ্যুতি-বিভ্রান্তির শিকার তরুণ-তরুণীদের সর্বাত্মক পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার নীতি ও দৃষ্টান্ত কি প্রমাণ করে, ধর্মের বিষয়টি খুবই গৌণ? মুসলমানদের কর্তব্য, নিজের দ্বীন ও জীবনাদর্শের মূল্য ও মর্যাদা উপলব্ধি করা। নিজের দ্বীন ও ঈমান রক্ষায় সর্বোচ্চ সচেতনতার পরিচয় দেয়ার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর প্রতিটি সদস্যের দ্বীন ও ঈমান রক্ষায় সচেষ্ট হওয়া। একে গৌণ মনে করার কোনো অবকাশ নেই। সাথে সাথে নিজ নিজ সন্তানাদির চালচলন ও জীবন-যাপনের দিকেও অভিভাবকদের নজর থাকা দরকার। তাদেরকে দ্বীন-ঈমান নির্ভর নৈতিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেয়া এবং নিজেরাও দ্বীনের উপর চলা সময়ের দাবি। না হয় নানামুখী মিডিয়ার এ যুগে বেহায়াপনার সয়লাব সকলকে ডুবাবে। আলোচ্য ‘রাহাফ’ মেয়েটি এক্ষেত্রে একটি উদাহরণ মাত্র। এ আগুনে কত পরিবার যে জ¦লছে তার হিসাব কে জানে।

    দ্বিতীয়ত, নিজের দ্বীনী পরিচয় নিয়ে কুণ্ঠিত হওয়া শুধু ঈমান-পরিপন্থী বিষয়ই নয়, বর্তমান বিশে^র চলতি পরিস্থিতিতে সাধারণ বিবেক-বুদ্ধিরও পরিপন্থী। সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনের যারা নিজেদের মুসলিম পরিচয় প্রকাশে কুণ্ঠিত, ইসলামী শিক্ষা ও আদর্শের পক্ষে দাঁড়ানো নিয়ে শঙ্কিত ও লজ্জিত তাদের জন্যও উপরের ঘটনাটি একটি দৃষ্টান্ত। মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণকারী বিচ্যুত ছেলে-মেয়ের পক্ষে বিভিন্ন শিরোনামে বড় বড় দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে জাতিসঙ্ঘ পর্যন্ত সরাসরি দৃশ্যপটে চলে আসাটা কী বার্তা প্রদান করে?

    এজন্যই বলছিলাম, নিজের দ্বীনী পরিচয় ও সাধ্যমতো দ্বীনী কর্মতৎপরতার মধ্যে থাকা সচেতনতার পরিচায়কও বটে। যেন আমরা নিজেদের অজান্তেই কারো ষড়যন্ত্রের শিকার না হয়ে যাই।

    যে কেউ মেয়েটির নতুন জীবন সম্পর্কে উৎসাহিত হতে পারেন। কী করছে সে? কী রকম স্বাধীনতা উপভোগ করছে? তাহলে শুনুন, ডেইলি মেইলের সূত্রে বিভিন্ন দৈনিক (১৮ জানুয়ারি) রিপোর্ট করেছে, কানাডায় গিয়ে রাহাফ তার নতুন জীনবযাত্রার কিছু ছবি শেয়ার করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাতে দেখা গেছে, মদ, শূকরের মাংস আর গাঁজা হয়ে উঠেছে তার জীবনসঙ্গী। তাকে দেখা গেছে পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকে। গায়ে হাটু পর্যন্ত উলের পোশাক। মেয়েটি ¯œ্যাপচ্যাটে কিছু ছবি শেয়ার করেছে। এতে সে কানাডিয়ান স্টাইলে বেকন (শূকরের মাংস) খাচ্ছে বলে জানিয়েছে। এই ছবির সাথে মদ ও সিগারেটের টুকরার ছবি দিয়ে সেগুলো সে দারুণ উপভোগ করছে বলে জানিয়েছে।

    প্রিয় পাঠক! কী বুঝা যাচ্ছে? আসলেই কি অসহায় ছিল? পৃথিবীর শরণার্থী শিবিরগুলোর শিশুরা যেখানে এক টুকরো রুটির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য হয় সেখানে এ শরণার্থী মেয়েটির উদ্যাপন লক্ষ করুন।

    হায়! পশ্চিমের যে জীবনে অসংখ্য নারী হাঁপিয়ে উঠেছে সে জীবনের জন্যেই এত কিছু!

    তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে, বিচ্যুত সৌদি তরুণীটিকে নিয়ে পশ্চিমাদের এই উৎসাহ ও তৎপরতার ঘটনাটি এমন সময় ঘটল যখন সৌদিতে চলছে পশ্চিমাদের কাছে এমবিএস খ্যাত সৌদি যুবরাজের তথাকথিত সংস্কার। এ যেন পশ্চিমাদের তরফ থেকে একটি চপেটাঘাত। বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধির বিষয়। ঘটনাটি প্রমাণ করছে যে, মেয়েদের বেপর্দা করা, সিনেমা চালু করা, তথাকথিত বিনোদন কেন্দ্র খোলাসহ নানামুখী ‘সংস্কার’ সত্ত্বেও এমবিএসের সৌদীআরব পশ্চিমাদের  ‘আস্থা’ অর্জনে সক্ষম হয়নি। শুধু তাই নয়, এই ‘সংস্কারক’ সৌদি যুবরাজের প্রতি পশ্চিম ন্যূনতম সৌজন্য প্রদর্শনেরও  প্রয়োজন বোধ করেনি। আসলে নতজানুতা ‘আস্থা’ ও ‘সৌজন্য’ অর্জনের পথ নয়। ‘সৌজন্য’ ও ‘আস্থা’র পথ হচ্ছে দৃঢ়তা, স্বকীয়তা ও শক্তিমত্তা। মুসলিম জনতাকে তথাকথিত সংস্কার বা পশ্চিমায়নের মাধ্যমে পশ্চিমের আস্থা অর্জনের এই পথের কোনো শেষ নেই। কুরআন মাজীদে জানানো হয়েছে-

    وَ لَنْ تَرْضٰی عَنْكَ الْیَهُوْدُ وَ لَا النَّصٰرٰی حَتّٰی تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ.

    ইহুদী-নাসারা ঐ পর্যন্ত তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যে পর্যন্ত না তাদের ধর্মাদর্শের হয়ে যাও। -সূরা বাকারা (২)  : ১২০

    আলোচিত ঘটনায় কুরআনের বাণীর সত্যতার উভয় দিকই স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। আমাদের ব্যক্তি থেকে শুরু করে সমাজচিন্তক এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পর্যন্ত সকলের জন্য কুরআন মাজীদের এই বাণীতে আছে গভীর শিক্ষা ও পথনির্দেশনা। শিক্ষা-সাহিত্য, সংস্কৃতি, জীবন-দর্শন, জীবন-ব্যবস্থা প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইসলামী আদর্শ বিরোধী পশ্চিমায়নের দ্বারা মুসলিম উম্মাহর কোনোই উপকার হবে না। অবস্থা সেটাই হবে, যা কবির ভাষায়-

    نہ خدا ہی ملا  نہ وصال صنم

    না খোদার সান্নিধ্য পাওয়া গেল, না প্রিয়ার মিলন!

    দুঃখজনক আশ্চর্যের ব্যাপার হল, পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা যখন তাদের ধর্মের বিষয়গুলো পালন করতে ও তাদের ধর্মের লোকদের সাথে কাজ করতে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত হচ্ছে। নিজেদের বানানো নীতি-আদর্শ, সংবিধান-আইন-কানুনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যের আচরণ করতে কোনো প্রকার লজ্জাবোধ করছে না, ট্রাম্প সাহেবরা যখন বেছে বেছে শুধু মুসলিম দেশগুলোর নাগরিকদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছেন, পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশের দাবিদার রাষ্ট্রটি যখন শুধু গরুর জন্য মানব হত্যাকে বৈধতার চোখে দেখছে, যখন প্রকাশ্যেই মুসলিমদের দেশ থেকে বের করে দেয়ার বিভিন্ন অপকৌশল খোঁজ করছে, পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ থেকে তাদের ধর্মের লোকদের সে দেশে গিয়ে নাগরিকত্ব নেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আইন পাশ করছে, তখন কিনা মুসলিম নেতারা ব্যস্ত হচ্ছেন নিজেদের তাহযীব-তমদ্দুন জলাঞ্জলি দিয়ে ওদের পঁচা-গন্ধ সংস্কৃতির প্রসারে। সুতরাং মুসলিম মা-বাবাদের নিজ নিজ সন্তানাদির দ্বীনী পরিচর্যায় মনোযোগ দিতে হবে গোড়া থেকেই। আমাদের সন্তানদের ধর্মবিদ্বেষী করতে বিশ্বশক্তি কতভাবে এবং কী পরিমাণ তৎপর- সৌদি তরুণী রাহাফ তার একটি সামান্য উদাহরণ মাত্র। শত কোটি মুসলিম থেকে তারা নোবেল দেয়ার জন্য শুধু কেন কাদিয়ানী বিজ্ঞানী (মুসলিম নামধারী)-কেই খুঁজে পায়, অথবা বিশ্বব্যাপী তৃণমূল পর্যন্ত অভিশপ্ত সুদকে পৌঁছে দেয়ার কারিগরকেই শান্তির নোবেল দেয় এবং… তখন তাদের মতলব তো আর অস্পষ্ট থাকে না।

    শত বাধা, ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও আল্লাহ তাআলার একমাত্র দ্বীন ইসলামের বিজয় অবশ্যম্ভাবী। তা ঠেকানো কারো পক্ষেই সম্ভব হবে না। আমরা যারা এর অনুসারী তারা কতটুকু এতে অবদান রাখতে পারি তা হল দেখার বিষয়। দু-চারজন ধর্মচ্যুতকে শূকর ও গাঁজা খাইয়ে আর যাই অর্জন করা যাক, ইসলামের অগ্রযাত্রা থামানো যাবে না- ইনশাআল্লাহ।

    সরকার গণভোটের ফলাফল আন্তরিকভাবে গ্রহণ করবে: আবে

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে বলেছেন, সরকার ওকিনাওয়া জেলায় একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থানান্তরের জন্য সমুদ্রে জমি ভরাটের কার্যক্রম বাতিল করে দেয়া গণভোটের ফলাফলকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করবে।

    আবে সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, সরকার প্রকল্পটিকে এগিয়ে নিতে ওকিনাওয়ার জনগণের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখবে।

    তিনি বলেন, ওকিনাওয়ায় মার্কিন ঘাঁটিগুলোর বর্তমান ঘনত্ব কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

    তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের গুরু দায়িত্ব রয়েছে জেলার উপর থেকে চাপ কমানো এবং এর জন্য সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবে।

    আবে এও বলেন যে ফুতেনমা বিমান ঘাঁটি হল বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক ঘাঁটি এবং একে স্থায়ীভাবে এক জায়গায় রাখার মত অবস্থা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

    ঘাঁটি স্থানান্তরে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ২০ বছর আগে মতৈক্য হয় উল্লেখ করে আবে বলেন বর্তমান ঘাঁটির দখলে থাকা জমি জাপানের কাছে ফেরত দেয়ার প্রক্রিয়া কোনভাবেই প্রলম্বিত করা উচিত হবে না।

    প্রধানমন্ত্রী আবে বলেন, তিনি প্রত্যাশা করছেন জনগণ এটা অনুধাবন করতে সক্ষম হবে যে এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হেনোকো’তে নতুন কোন মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপন নয় বরং বর্তমানে থাকা একটি ঘাঁটির স্থানান্তর মাত্র।

    তিনি আরও বলেন, এই ঘাঁটি সরিয়ে ফেললে শব্দ প্রতিরোধী ব্যবস্থার প্রয়োজন হয় এমন বাড়ির সংখ্যা বর্তমানের ১০ হাজার থেকে শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে।

    ভাঁজ করা যায় এমন ফোন আনছে হুয়াওয়েই

    চীনের বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়েই সর্বসাম্প্রতিক স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক হিসেবে ভাঁজ করা যায় এমন স্ক্রিনযুক্ত মোবাইল ফোন আনার কথা জানিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি স্যামসাং মাত্রই গত সপ্তাহে বাঁকানো যায় এমন ফোন প্রদর্শন করার পর এই ঘোষণা দেয়া হল।

    হুয়াওয়েই’র ৬.৬ ইঞ্চি যন্ত্রটির ভাঁজ খোলার পর একে ৮ ইঞ্চি ট্যাবলেট হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটার পঞ্চম প্রজন্মের ৫-জি সক্ষমতা রয়েছে। যার অর্থ হল যেখানে পরবর্তী প্রজন্মের নেটওয়ার্ক রয়েছে সেখানে এই যন্ত্র অনেক দ্রুত গতিতে ডাউনলোড করতে পারবে।

    তবে উচ্চ প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্যগুলো কম দামে মিলবে না। বিস্ময়করভাবে ফোনটির মূল্য ধরা হয়েছে দুই হাজার ছয়শো ডলার। নির্বাহীরা জানাচ্ছেন এই ফোন চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে পাওয়া যাবে।

    বৈশ্বিক ফোনের চালান স্থবির হয়ে পড়ায় স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো ভাঁজ করা যায় এমন স্ক্রিনযুক্ত যন্ত্রের দিকে জোর দিয়েছে।

    তারা আশা করছে এই নতুন প্রযুক্তি স্থবির হয়ে থাকা উচ্চ প্রযুক্তির বাজারে ক্রেতাদের টানতে প্রলুব্ধ করবে।

    জাপানে তাকেশিমা দিবস উদযাপন

    জাপান সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জাপান সাগরে অবস্থিত তাকেশিমা দ্বীপ নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ভূখণ্ডগত বিরোধ নিরসনের লক্ষ্য অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। উল্লেখ্য, দ্বীপপুঞ্জটি দক্ষিণ কোরিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও জাপান এগুলোর মালিকানা দাবী করছে।

    মন্ত্রী পরিষদ দপ্তরের সংসদ বিষয়ক উপমন্ত্রী হিরোশি আন্দো, ১৯০৫ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি দ্বীপপুঞ্জটি শিমানে জেলায় সংযুক্তিকরণ দিবস উপলক্ষে গতকাল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেয়ার সময় উক্ত মন্তব্য করেন।

    ২০০৫ সালে শিমানে জেলা, ২২শে ফেব্রুয়ারিকে তাকেশিমা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করে প্রতিবছর একটি স্মৃতিরক্ষা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে।

    চলতি বছর, যুদ্ধকালীন একটি শ্রম সমস্যাসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিষয়াদি নিয়ে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার সম্পর্কে অচলাবস্থা বিরাজমান থাকার মধ্যে জেলার প্রধান শহর মাৎসুয়েতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রায় ৪শ ৬০ জন লোক অংশগ্রহণ করেন।

    ভূখণ্ডগত বিষয়ক দায়িত্বে নিয়োজিত আন্দো, তাকেশিমা রাষ্ট্রের মূল ভিত্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমস্যা হওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার বলে উল্লেখ করেন।

    তিনি, এবিষয়ে দেশে বিদেশে জাপানের অবস্থান নিয়ে সঠিক বোঝাপড়া এগিয়ে নিতে স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আরও কঠোর পরিশ্রম করবেন বলে মন্তব্য করেন।

    শিমানে জেলার গভর্নর জেমবে মিযোগুচিও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন। তিনি, বাস্তবে দ্বীপপুঞ্জটির উপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে দক্ষিণ কোরিয়া তৎপরতা বৃদ্ধি করে চলেছে বলে জানান।

    তিনি, সমস্যাটি সমাধানের লক্ষ্যে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের মধ্যকার আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।

    তিনি, আলোচনার টেবিলে সউলের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

    জাপান সরকার, দ্বীপপুঞ্জটি জাপানী ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে অবস্থান বজায় রেখেছে। তারা, দক্ষিণ কোরিয়া অবৈধভাবে এগুলো দখল করে রেখেছে বলে জানায়।

    দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের উত্তরপূর্ব এশিয়া ব্যুরোর প্রধান কিম ইয়ং গিল, এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে সউলে অবস্থিত জাপানী দূতাবাসের একজন মিনিস্টার কোইচি মিযুশিমার কাছে প্রতিবাদ জানান।

    দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত এক বিবৃতিতে, দ্বীপগুলোকে ঐতিহাসিক, ভৌগলিক এবং আন্তর্জাতিক আইনানুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ার ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অভিহিত করে অবিলম্বে সবধরনের উস্কানিমূলক পদক্ষেপ বন্ধ করতে জাপান সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়।

    পাঁচ বছরে সবচেয়ে বড় বাণিজ্য ঘাটতির হিসাব দিয়েছে জাপান

    চীনে পণ্যের রপ্তানিতে ধ্বস নামায় পরপর চার মাস লোকসানের হিসাব কষতে হওয়ায় জানুয়ারি মাসে জাপান প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বাণিজ্য ঘাটতির উল্লেখ করেছে।

    জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আজ প্রকাশিত হিসাবে দেখা যায় জানুয়ারি মাসে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি ইয়েন বা আনুমানিক ১ হাজার ২৭০ কোটি ডলার।

    প্রধানত জাহাজ ও সেমি-কন্ডাক্টর তৈরির যন্ত্রপাতির বিক্রি কমে যাওয়ায় সবকয়টি বাজারে রপ্তানি ইয়েনের হিসাবে এক বছর আগের একই সময় থেকে ৮.৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

    আমদানি হ্রাস পেয়েছে ০.৬ শতাংশ, যা হচ্ছে অশোধিত জ্বালানি তেলের নিম্ন মূল্যের ফলাফল।

    চীনে রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ১৭.৪ শতাংশ। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন চীনের অর্থনীতি মন্থর হয়ে আসার কারণে তা হতে পারে। তাঁরা বলছেন চন্দ্র পঞ্জিকা নববর্ষের ছুটিও চাহিদা কমিয়ে দিতে পারে।

    অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে জাপানের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত সাত মাস সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মত বৃদ্ধি পেয়ে এক বছর আগের চাইতে ৫.১ শতাংশ ঊর্ধ্বমুখী পথে ধাবিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র-গামী মোটরগাড়ির রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩ শতাংশ।

    আজ রাতের আকাশে দেখা যাবে ‘সুপারমুন’

    চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙ্গেছে, উছলে পড়ে আলো’ বাঁধভাঙ্গা চাঁদের হাসি দেখে যারা আপ্লুত-বিমোহিত হন তাদের জন্য আজ মঙ্গলবার রাতটি হতে যাচ্ছে স্মৃতির পটে অক্ষয় করে রাখার মতো।আজ সত্যি সত্যি চাঁদের হাসি বাঁধ ভাঙবে; উছলে পড়বে আলো। বিরল এক মহাজাগতিক দৃশ্য অবলোকন করতে পারবে জগত্বাসী। মহাজাগতিক নিয়ম মেনে আজ চাঁদ চলে আসবে পৃথিবীর খুব কাছাকাছি। চাঁদকে দেখা যাবে তার স্বাভাবিক আকৃতি থেকে কয়েকগুণ বড়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আজ চাঁদ ওঠার কিছুক্ষণ পর পরই সুপারমুন দেখার সবচেয়ে সেরা সময়। আজকের সুপারমুনকে ‘পূর্ণ বরফ চাঁদ’ নাম দেয়া হয়েছে।কারন এখন পৃথিবীর বেশিরভাগ অঞ্চলে তুষারপাতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এমন নামকরন।

    এ ছাড়া এ চাঁদকে স্ট্রোমমুন, হাঙ্গারমুন ও বোনমুনও বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৫৩ মিনিট থেকে দেখা যাবে সুপারমুনকে।

    বিজ্ঞানীরা বলছেন, আজ প্রায় ১৪ শতাংশ বড় দেখাবে চাঁদকে। বেলা সাড়ে তিনটা থেকে দেখা পাওয়া যাবে এ সুপারমুনের। এ বছরে বাকি তিন সুপারমুনের দেখা মিলবে যথাক্রমে আগামী ১২ জুলাই, ১০ আগস্ট ও ৯ সেপ্টেম্বর। আর এদের মাঝে শুধু আগস্ট মাসেই চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসবে।

    উপবৃত্তাকার কক্ষপথে পৃথিবী থেকে চাঁদের এই নিকটতম অবস্থানকে অনুভূ বা পেরিজি বলা হয়। এসময় চাঁদ পৃথিবী থেকে থেকে ২ লাখ ২১ হাজার ৭৩৪ মাইল (৩ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটারেরও কম) দূরত্বে অবস্থান করবে। পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০২ কিলোমিটার। সুপার মুনের ঔজ্জল্য থাকবে স্বাভাবিকের চেয়ে ১২ দশমিক ৫ ভাগ থেকে ১৪ দশমিক ১ ভাগ বেশি।

    বিজ্ঞান সংগঠন অনুসন্ধিত্সু চক্র জানায়, ‘অনুভূ’ সময়ের কাছাকাছি সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ প্রায় একটি সরল রেখায় অবস্থান করবে, সেই জন্য তখনই পূর্ণচন্দ্র হবে। দৃশ্যমান চাঁদের চাইতে বড় ও উজ্জ্বল দেখাবে। গবেষকরা চাঁদের এই অবস্থাকে বলেন অনুভূ পূর্ণচন্দ্র বা পেরিজি ফুলমুন। নাসা’র মতে পৃথিবীর সাথে চাঁদের দূরত্ব অনুসারে ‘সুপারমুন’ কতটকু বড় দেখাবে সেটা নির্ভর করে। যেমন সুপারমুনের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে আমরা যে চাঁদকে দেখি, তার চেয়ে এই চাঁদ দেখতে হবে প্রায় ১৪ ভাগ বড় ও উজ্জ্বল্য হবে ৩০ ভাগ বেশি।

    চাঁদের এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগের জন্য পৃথিবীবাসী যেমন প্রহর গুনছেন, তেমনি রয়েছে ‘সুপারমুন’ আতংকও। চাঁদ পৃথিবীর কাছে আসলে প্রতিবারই পৃথিবীতে কোন না কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে। প্রবল জোয়ারের টানে অনেক সময় ডুবে যায় জাহাজ।

    ২০১১ সালের ১৯ মার্চ ‘সুপারমুন’ রাতে ইংল্যান্ডের সোলেন্ট সাগরে ভাসমান ৫টি বড় জাহাজ কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাগরের অতল গহ্বরে তলিয়ে যায়।

    আগামী ২০২৬ সালের আগে আর এমন ঘটনা ঘটবে না।শনিবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় আমেরিকান বিজনেস ম্যাগাজিন ‘ফোর্বস’। এতে বলা হয়, আমেরিকা থেকে আজ ভোরের একটু আগে এবং ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে সূর্যাস্তের পর সুপারমুন দেখা যাবে।যদি কেউ সুপারমুন দেখতে চায়, তবে আজ সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কিন্তু যদি কেউ এদিন সুপারমুন দেখতে ব্যর্থ হয়, তবে আগামী সাত বছরের আগে আর দেখতে পারবে না।

    টাইম অ্যন্ড ডেট ডটকমের মতে, সুপারমুন জ্যোতির্বিদ্যা-সংক্রান্ত টার্ম নয়। ১৯৭৯ সালে জ্যোতির্বেত্তা রিচার্ড নোলে প্রথমবারের মতো এটি ব্যবহার করেন। পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি আসা চাঁদকে ‘নতুন বা পূর্ণচাঁদ’ বলে সংজ্ঞায়িত করেন তিনি।

    আজ মঙ্গলবার যে চাঁদটি আকাশে উঠবে তা ২০১৯ সালের দ্বিতীয় সুপারমুন। এর আগে ২১ জানুয়ারি চলতি বছরের প্রথম সুপারমুন দেখা গিয়েছিল। ২০ থেকে ২১ জানুয়ারির ওই চাঁদটিকে বলা হয়েছে ব্লাড ওলফ সুপারমুন। তা ছিল বেশ রক্তাভ, উজ্জ্বল। আজকের সুপারমুনটি রক্তাভ না হলেও তা হবে খুবই উজ্জ্বল।

    জাপানে হামের অস্বাভাবিক মৌসুমি প্রাদুর্ভাব

    জাপানে হামের সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ বছরের শুরু থেকে এপর্যন্ত হামে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

    সংক্রামক ব্যধি বিষয়ক জাতীয় ইনস্টিটিউট জানিয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত ঐ সপ্তাহে দেশজুড়ে ২২ জন নতুন রোগীর খবর পাওয়া গেছে। এর ফলে চলতি বছরের শুরু থেকে এপর্যন্ত ২০টি জেলায় মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৬৭ জনে।

    ফিলিপাইন জুড়েও হামের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে যেখানে চলতি বছর আট হাজার চারশো জনেরও বেশি ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন এবং একশো ৩০ জনেরও বেশি মারা গেছেন।

    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে যে বিশ্বের বিভিন্ন অংশে গত কয়েক বছর ধরে হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে, যার সংক্রমণ প্রধানত এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকায় ছড়াচ্ছে।

    নোবেল পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পকে মনোনয়নের বিষয়ে চুপ রয়েছেন আবে

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টকে মনোনীত করেছেন বলে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে মন্তব্য করেছেন সে বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

    ট্রাম্প শুক্রবার হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের জানান, উত্তর কোরিয়ার সাথে উত্তেজনা হ্রাসে তার প্রচেষ্টার জন্য আবে তাকে মনোনীত করেছেন।

    বিরোধী দলের একজন নেতা সোমবার সংসদীয় কমিটির এক বৈঠকে ট্রাম্পের মন্তব্য সম্পর্কে আবে’র কাছে জানতে চান।

    আবে বলেন, ট্রাম্প সুনির্দিষ্টভাবে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী নিয়ে কাজ করছেন। তিনি দেশটির নেতা কিম জং উনের সাথে ২০১৮ সালের ঐতিহাসিক শীর্ষ বৈঠকের উল্লেখ করেন।

    তিনি বলেন, ট্রাম্প সেই শীর্ষ বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার গুপ্তচর কর্তৃক জাপানি নাগরিকদের অপহরণের বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্ব্যক্ত করেন।

    আবে বলেন, অপহরণের বিষয়টি সমাধানে হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা জাপান সরকারের সঙ্গে কাজ করছেন।

    আবে এও বলেন যে তিনি ট্রাম্পের নেতৃত্বের উচ্চ মূল্যায়ন করছেন।

    তবে, মনোনয়ন প্রদানকারী এবং মনোনয়ন প্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ৫০ বছরের মধ্যে প্রকাশ করা যাবে না – নোবেল ফাউন্ডেশনের এমন নিয়মের উদ্ধৃতি করে তিনি মনোনয়ন বিষয়ক মন্তব্য স্বীকার কিংবা অস্বীকার কোনটিই করেননি।

    দুবাই’এর মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে জাপানের হালাল খাদ্য

    দুবাই’এ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ খাদ্য মেলায় জাপানের খাদ্য উৎপাদকরা ইসলামী আইন অনুযায়ী উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করছেন।

    রবিবার আরম্ভ হওয়া ৫ দিনের এই মেলায় একশো ২০ টি দেশের ৫ হাজারেরও বেশি প্রদর্শক অংশ নিচ্ছেন।

    মেলায় হালাল খাদ্যপণ্য প্রদর্শন করা প্রদর্শকদের মধ্যে ৪৪ জন জাপানের। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা মিয়াযাকি’র একটি কোম্পানি দর্শনার্থীদের তাদের মিষ্টি আলু চেখে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে।

    কোম্পানিটির একজন বিক্রয় কর্মকর্তা বলেন, “আমি মুসলিম জনগণের খাদ্যের প্রয়োজনীয় বিষয় সম্পর্কে আরও শিখতে চাই এবং তারা জাপানি সবজি সম্পর্কে কী চিন্তাভাবনা করেন সেটা জানতে চাই।”

    তিনি বলেন, দুবাই একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার, কারণ এটি সৌদি আরব, উত্তর আফ্রিকা এবং ভারতের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে।

    জাপানে বিদেশি কর্মীদের পরামর্শ সেবা দেয়ার জন্য অর্থ বরাদ্দের পরিকল্পনা

    বিদেশি অধিবাসীদের জন্য কাউন্সেলিং বা পরামর্শ সেবা দেয়ার জন্য দপ্তর স্থাপন করতে স্থানীয় সরকারগুলোকে আর্থিক সহায়তা করবে জাপানের বিচার মন্ত্রণালয়।

    আগামী এপ্রিল মাস থেকে চালু হতে যাওয়া নতুন নীতির আলোকে জাপান আরও বেশি বিদেশি কর্মী গ্রহণের প্রেক্ষাপটে সব জেলা এবং অধ্যাদেশ-চিহ্নিত শহরের পাশাপাশি ৪০টি এলাকা, ওয়ার্ড এবং শহর এখন এই পরামর্শ সেবা চালুর প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে।

    এই ধরণের দপ্তরগুলোতে বহু ভাষায় পরামর্শ সেবার সুযোগ থাকবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

    মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা প্রতিটি স্থানীয় সরকারকে প্রায় ১ কোটি ইয়েন বা ৯১ হাজার ডলার প্রদান করবেন।

    কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, প্রথমে স্থানীয় সরকারগুলোর অনুরোধ শুনে মার্চ মাসের মাঝামাঝি নাগাদ তারা অর্থ বরাদ্দের যথাযথ পরিমাণের উপর সিদ্ধান্ত নিবেন।

    মন্ত্রণালয় এও বলছে যে এপ্রিল মাস থেকেই অতিরিক্ত সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা তারা করছে।

    বিরল রোগে ‘নেকড়ে মানব’

    ভারতের কিশোর ললিত পটিদরের কোনো শারীরিক প্রতিবন্ধকতা না থাকলেও তার মুখ ও শরীর জুড়ে রয়েছে অজস্র পশম। ১৩ বছর বয়সের এই কিশোরের জন্য এটি একটি কঠিন অভিজ্ঞতা। সমবয়সীদের অনেকেই তাকে ‘বানর’ বলে। তবে, বন্ধুরা তাকে সবসময় দেখে রাখে বলেই সে বাসার বাইরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।
    গত ৮ ফেব্রুয়ারি, ডেইলি মিররের এক বিশেষ প্রতিবেদনে ললিতের বিষয়টি উঠে আসলে তাকে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় ভারতজুড়ে। তার এ ভিন্নতার পেছনে রয়েছে হাইপারট্রাইকোসিস নামক এক রোগের ভূমিকা। এই ধরনের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অনেকটাই নেকড়ের মত লাগে।
    ললিতের মা পার্বতী বাই বলেন, ‘ললিত যখন জন্ম নেয়, সেসময় খুব অবাক হয়েছিলাম। এরপরই হাসপাতালের স্থানীয় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের দেখাই, তখন জানতে পারি এই রোগের কোনো সমাধান নাই।’
    ললিতের স্কুলে প্রধান শিক্ষক বাবুলাল মাকোয়ানা বলেন, ‘অন্য কোনো ছাত্রের তুলনায় পড়াশোনা ও খেলাধুলায় মোটেও পিছিয়ে নেই ললিত। দুইবছর আগে যখন ললিত স্কুলে ভর্তি হয়, তখন অনেকেই তাকে দেখে অস্বাভাবিক আচরণ করলেও ক্রমেই সবাই তাকে স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিয়েছে। এমন, পুরো স্কুল ও বন্ধুদের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয় ললিত।’
    তবে শরীরে পশমের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া বাদে আর তেমন কোনো সমস্যা নেই ললিতের। দিব্যি খেলছে, স্কুলে যাচ্ছে, সবই করছে। ললিত নিজেই বলে, ‘মাঝে মাঝে মনে হয়, কেনো আমি সবার চেয়ে আলাদা, এমন না হলে কেউ আমাকে বিরক্ত করতো না।’
    তবে, এখন বিষয়টায় অনেকটাই স্বাচ্ছন্দ্য বলেও জানায় ললিত। ললিত তার নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়ে বলে, ‘আমি চাই, খুব বড় পুলিশ অফিসার হতে। তাহলে মা-বাবা, দাদিকে দেখাশোনা করতে পারবো।’ সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

    জাপানের শিযুওকায় চেরি উৎসব শুরু

    মধ্য জাপানের শিযুওকা জেলায় বার্ষিক একটি চেরি প্রস্ফুটন উৎসব শুরু হয়েছে।

    আজ কাওয়াযু শহরে এই আয়োজন শুরু হয়।

    শহরটিতে প্রায় ৮ হাজারের মত নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে আগে ফোটা চেরি ফুলের গাছ রয়েছে।
    এক্ষেত্রে, সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থানটি হচ্ছে কাওয়াযু নদীর তীর ঘেঁষে লাগানো সারি সারি চেরি গাছ সমৃদ্ধ একটি পথ।

    নাগানো থেকে বেড়াতে আসা এক পরিবার গোলাপী রঙের ফুলের প্রশংসা করে জানায়, এত আগে চেরি ফোটা অবলোকনে তারা বিস্মিত।

    আয়োজকরা বলছেন, আগামী প্রায় দশদিনের মধ্যেই চেরি গাছগুলোতে ফুলের পূর্ণ প্রস্ফুটন ঘটবে। আগামী মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত থাকা এই আয়োজনে ১০ লক্ষের মত দর্শনার্থীর সমাগম হবে বলে তারা প্রত্যাশা করছেন।

    গীবত : ভাইয়ের গোশত খাওয়া

    কোরআন ও হাদিসে ‘গীবত’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ কোনো লোকের অনুপস্থিতিতে তার দোষের কথা প্রকাশ করা, তার বদনাম ও তার নিন্দা, সমালোচনার মাধ্যমে তার সুনাম খর্ব করা, লোকসমাজে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা ইত্যাদি।
    তবে মহানবী (সা.) গীবতের যে অর্থ করেছেন তা জানা থাকা উচিত। তিনি এক হাদিসে (গীবত/পরনিন্দা) ও ‘বোহতান’ (অপবাদ) এর মধ্যে পার্থক্য প্রসঙ্গে বলেছেন, হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কি জান, গীবত কি? সাহাবাগণ বললেন, ‘আল্লাহ ও তার রাসূল ভালো জানেন।’
    তিনি বললেন, ‘গীবত হচ্ছে এই যে, তুমি নিজের ভ্রাতার কথা এমনভাবে উল্লেখ করো যে, যা সে পছন্দ করে না।’ অতঃপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘বলুন, আমি যে কথাটি বলছি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থেকে থাকে?’ তিনি বললেন, ‘এটাই তো গীবত, যা তুমি বলছো। তার মধ্যে তা থাকলেই গীবত। আর যদি যে কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে তা না থাকে তা হলে তুমি তার ওপর অপবাদ (বোহতান) আরোপ করেছ।’ (মেশকাত)।
    গীবত ও বোহতান সম্পর্কে হুজুর (সা.)-এর এ অর্থের পর আর কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। কোরআনের সূরা ‘হুমাযাহ’ এর প্রথম আয়াতেই গীবতকারীর কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘দুর্ভোগ প্রত্যেকের যে পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে।’
    গীবত বা পরনিন্দাকে সূরা ‘হুজুরাত’ এ অতি ঘৃণ্য অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে মোমেনগণ! তোমরা অধিকাংশ অনুমান হতে দূরে থাকো, কারণ অনুমান কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাপ এবং তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না এবং একে অপরের পশ্চাতে নিন্দা করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভ্রাতার গোশত খেতে চাইবে। বস্তুত: তোমরা তো এটাকে ঘৃণ্যই মনে করো। তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ তাওবা গ্রহণকারী পরম দয়ালু।’ (আয়াত-১২)
    এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হুজুর (সা.) বলেছেন; ‘শবে মেরাজে এমন এক জাতির কাছে আমি গমন করি যাদের নখ ছিল তামার এবং তারা তা দ্বারা নিজেদের চেহারা ও বুক খামচাচ্ছিল। আমি জিবরাইলকে (আ.) জিজ্ঞাসা করি, এরা কারা? তিনি বললেন, ‘এরা সে সব লোক যারা লোকেদের গোশত খেত এবং তাদের ইজ্জত আব্রæ হরণ করত।’ (আবু দাউদ) এরা লোকদের গীবত করত বলে এ শাস্তি।’
    একবার ভীষণ দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবাদেরকে বললেন, ‘তোমরা জানো এটা কি?’ তিনি নিজেই বললেন, ‘এটি ওইসব লোকের দুর্গন্ধ যারা মুসলমানদের গীবত করত।’ (আদাবুল মোফরাদ)
    হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘দুই ব্যক্তি জোহর অথবা আছরের নামাজ আদায় করে এবং তারা দুই জনই রোজা রেখেছিল। রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাজ শেষ করার পর তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা পুনরায় অজু করো এবং আবার নামাজ পড়ো এবং রোজা পূরণ করো। তবে তা অপর কোনো সময় কাজা হিসেবে আদায় করবে।’ তারা উভয়ই বলল, ‘হুজুর! এর কারণ কি?’ তিনি বললেন, ‘তোমরা অমুক ব্যক্তির গীবত করেছিলে।’ (মেশকাত)
    রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘গীবত, জেনা (ব্যভিচার) অপেক্ষা গুরুতর পাপ।’ সাহাবাগণ আরজ করলেন, ‘হুজুর! গীবত জেনা অপেক্ষা গুরুতর কিভাবে’ হুজুর বললেন, ‘মানুষ জেনা করার পর তওবা করলে আল্লাহ তা কবুল করেন।’
    অপর এক বর্ণনায় আছে, মানুষ তওবা করলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু গীবতকারীকে ক্ষমা করেন না, যতক্ষণ না যার গীবত করা হয়েছে সে ক্ষমা করে দেবে। হজরত আনাস (রা.) এর বর্ণনায় আছে, হুজুর (সা.) বলেছেন, ‘জেনাকারীর জন্য তওবার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু গীবতকারীর জন্য তওবার সুযোগও নেই।’ (মেশকাত)
    রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘গীবতের একটি কাফ্ফারা এই যে, তুমি যার গীবত করেছ তার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবে এবং এভাবে বলবে, হে আল্লাহ! তুমি আমার ও তার মাগফিরাত করো।’ (মেশকাত)
    হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মৃত ব্যক্তিদেরকে মন্দ বলো না, কেননা তারা নিজেদের আমলগুলো পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।’(বোখারি)
    অনেক মুসলমান মুসলমানের গীবতচর্চায় লিপ্ত থাকে। কোরআন ও হাদিসের শিক্ষার কথা স্মরণে রাখলে এবং সেই মোতাবেক আমল করলে গীবতচর্চা হতে আত্মরক্ষা করা যেতে পারে।