• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • কিউশুতে ভুমিকম্প অব্যাহত

    দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের কিউশু অঞ্চলে ভূমিকম্প অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ২ সপ্তাহে কুমামোতো এবং ওইতা প্রিফেকচারে মোট ভূমিকম্পের সংখ্যা ছিলো ১,০৩৭টি।

    শুক্রবার সকালে দু’টি ৩ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে ইয়াৎসুশিরো এবং উকি এলাকায়। দু’টি স্থানই কুমামোতো এলাকায় অবস্থিত। একই দিন ওইতা প্রিফেকচারে বিকেল ৩টার পর আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে ইউফু শহরে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিলো ৪.৫।

    কুমামোতো’র ৭টি পৌরসভায় ক্রমাগত ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

    কর্মকর্তারা বলেছেন ১৭ জন নিহত হয়েছেন ভূমিকম্পের পরবর্তী শারীরিক ঝক্কি থেকে।

    কর্মকর্তারা এলাকার সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

    জাপানে বসন্তের ছুটি শুরুঃ শহর ত্যাগের ধুম

    জাপানে বার্ষিক “গোল্ডেন উইক” এর ছুটি শুরু হয়েছে।

    মহাসড়ক, রেলওয়ে এবং বিমানবন্দর গুলো শুক্রবার ভ্রমণ বা নিজ শহরে ছুটি কাটাতে শহর ছেড়ে যাওয়া মানুষদের ভীড় উপচে পড়ে।

    টোকিও এবং নাগোয়াকে সংযোগকারী তোমেই এক্সপ্রেসওয়ে যানবাহনের ভীড়ে যান চলাচল মন্থর হয়ে পড়ে। মহাসড়কটিতে ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। অন্যান্য এক্সপ্রেসওয়ে গুলোতেও প্রবল ভীড় লক্ষ্য করা যায়।

    রেলওয়ে কোম্পানি গুলো বলেছে টোকিও ছেড়ে যাওয়া ট্রেন ও অনেক শিনকানসেন লাইন গুলো শুক্রবার যাত্রীপূর্ণ অবস্থায় ছেড়ে যায়। কোনো কোনো ট্রেন যাত্রী ধারন ক্ষমতার দ্বিগুন যাত্রী বহন করে।

    বিমান সংস্থা গুলো বলছে শুক্রবার টোকিও এবং ওসাকা ছেড়ে যাওয়া প্রায় প্রতিটি আভ্যান্তরিন ফ্লাইট যাত্রীপূর্ণ ছিলো।

    ত্রাণ কাজে অসপ্রে বিমান ব্যবহারঃ জয় করেছে জাপানিদের হৃদয়

    মার্কিন বিমানবাহিনীর এমভি-২২ অসপ্রে পরিবহন বিমান মার্কিন ঘাঁটিতে মোতায়েন নিয়ে জাপানিরা গোড়া থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। ২০১৪ সালে যখন ২৪টি অসপ্রে বিমান ওকিনাওয়া’র মার্কিন ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয় সে সময় জাপানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিলো।

    মার্কিন বাহিনী জাপানের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকা গুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে ৮টি অসপ্রে মোতায়েন করেছে। এরমাধ্যমে জাপান ও মার্কিন পক্ষ আশা করছিলো সামরিক বাহিনীর জন্যে অসপ্রে বিমান কতোটা গুরুত্বপূর্ণ তা প্রদর্শন করা।

    গত সপ্তাহের ভূমিকম্পের পর একটি অসপ্রে বিমান কুমামোতো প্রিফেকচারের হাকুসুই গ্রামের একটি খেলার মাঠে অবতরণ করে। এরপর জাপানি কর্তৃপক্ষ বিমানটির ত্রাণ সরবরাহ নামানোর জন্যে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এক ঘন্টার ভেতরেই বিমানটির সকল ত্রাণ সামগ্রী নামিয়ে ফেলা হয়।

    মার্কিন ঘাঁটিতে অসপ্রে বিমান মোতায়েনের বিরোধীতাকারীরা বলেছিলেন, জনমত উপেক্ষা করে অসপ্রে বিমান মোতায়েন করা হয়েছে।

    বুধবার জাপানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী অসপ্রে বিমানের কার্যক্রম দেখে মুগ্ধ হয়েছেন।

    মার্কিন ঘাঁটি নিয়ে জাপানের জনমত সহসাই পরিবর্তিত না হলেও ত্রাণ কাজে বিমানটির ব্যবহার ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির সহায়ক হবে।

    হিজাব পরায় আবারো ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দিলেন ঢাবি শিক্ষক   

    হিজাব পরে ক্লাসে আসার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার বিভাগের শ্রেণিকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ড. আজিজুর রহমান আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের প্রভাবশালী সদস্য। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মনোবিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের একজন ছাত্রী বোরকা পরে ক্লাসে আসছিলেন। ওই শিক্ষক তাকে বোরকা পরে ক্লাসে আসতে নিষেধ করেন। একই সঙ্গে যতদিন হিজাব পরে আসবে ততদিন তার ক্লাসের উপস্থিতিও দেয়া হবে না বলে জানান তিনি। এ ঘোষণার পর বেশ কয়েকটি ক্লাসে ছাত্রীটির ক্লাসে উপস্থিতি দেননি ওই শিক্ষক। সহপাঠীরা জানান, ছাত্রীটি প্রতিটি ক্লাসে উপস্থিত থাকলেও আজিজুর রহমান তার নাম ডাকেন না এবং উপস্থিতিও দেন না। সর্বশেষ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ক্লাসেও একই ঘটনা ঘটায় ছাত্রীটি দাঁড়িয়ে তার হাজিরা দেওয়ার জন্য স্যারকে অনুরোধ করেন। ড. আজিজুর রহমান তাকে হিজাব খুলে ক্লাসে আসলে হাজিরা দেয়া হবে বলে জানিয়ে দেন এবং বলেন, তুমি কি ছাত্র না ছাত্রী সেটা কিভাবে বুঝব। বিশ্ববিদ্যালয়ে তোমার আইডেনটিটি কি? এর পরপরই তাকে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এ ঘটনায় কয়েকজন ছাত্রী প্রতিবাদ করলে তাদেরও ক্লাস থেকে বের করে দেন ওই শিক্ষক। তবে ঘটনাটি অস্বীকার করে প্রফেসর ড. আজিজুর রহমান বলেন, হিজাব পরার কারণে তাকে বের করে দেয়া হয়নি। ওই ছাত্রীটি শিক্ষক ও বয়স্ক ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করতে রাজি নয়। ওই দিনের ক্লাসেও সে আমার সঙ্গে অশ্রদ্ধাপূর্ণ আচরণ করেছে। যার কারণে তাকে ক্লাস থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রফেসর ড. এ এম আমজাদ বলেন, ঘটনাটি আমি শুনিনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো পোশাক নির্দিষ্ট করে দেয়া নেই। যেকোনো পোশাক পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসতে পারবে। উল্লেখ্য, গত বছরও আজিজুর রহমান বোরকা পরে আসার কারণে নাবিলা ইকবাল নামে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেন।

    কিউশুতে প্রায় ১০০ ভূমিধসের ঘটনা

    জাপানের ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ভূমিকম্প উপদ্রুত কিউশু অঞ্চলে প্রায় ১০০টির মতো ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।

    মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন চাক্ষুষ পরিদর্শনের মাধ্যমে পরিস্থিতি যাচাই এবং আকাশ থেকে তোলা ছবির মাধ্যমে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

    তারা বলেছেন সোমবার পর্যন্ত কুমামোতো প্রিফেকচারে ৬৯টি এবং ওইতা প্রিফেকচারে ১৪টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

    মিনামিআসো গ্রামে ২৮টি ভূমিধস হয়েছে এবং আসো শহরে ৯টি ভূমিধসের ঘ্টনা ঘটেছে।

    পঞ্চকন্যার পান্তা ইলিশ ও বৈশাখী শুভেচ্ছা

    জাকজমক ও পরম আতিথেয়তায় গেল রোববার টোকিওর কিতা কূর কামি নাকাজাতোস্থ তাকিনাগাওয়া কুমিন কাইকানে প্রবাসীরা ভিন্নধারার জমজমাট বৈশাখী আড্ডায় সমবেত হয়েছিলেন। বাঙালীর গভীরের সংস্কৃতির চিরন্তন রূপটি নানাভাবে ধরা পড়েছিল বর্নাঢ্য আয়োজনের মাঝে। রকমারী খাবার ,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,হাস্য কৌতূকের মাঝে ঘরোয়া খেলাধূলা,উপস্হাপনা আর ছিল আয়োজকদের সহৃদয় আন্তরিকতা দিয়ে আতিথীদের বরন।

    মূলতঃ পাঁচজন বধূ এই বিশাল কর্মযজ্ঞের কান্ডারী। বাইশ রকমের ভর্তা, ভাত,ইলিশ ভাজা সহ নানা স্বাদের বাহারী মূখরোচক খাবার,বিকেলের নানা পদের নাস্তা তৈরী করেছেন এনারা। তিন শতাধিক অতিথি
    আপ্যায়নের আয়োজন থাকলেও প্রায় চার শতাধিক অতিথি খেয়ে তৃপ্ত হয়ে ঘড়ে ফিরেছেন। আয়োজক আর অতিথির মধ্যে আন্তরিকতার ঘাটতি না থাকায় দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি ছিল প্রানবন্ত মনে হয়েছে যেন স্বদেশে,স্বজনদের সাথেই যেন বৈশাখী আনন্দে সবাই মাতোয়ারা।
    ওরা পাঁচজন, সাদ্ধি আহমেদ, শাহনাজ পারভিন শীলা, শায়লা হোসেন আন্নি, সাহারা আক্তার মিলি ও আফসানা তানি, ওরা প্রমান করলেন কেবলমাত্র বধূবেশে প্রবাসে সংসার ধর্ম পালন ছাড়াও কাজ করে উপার্জনের পাশাপাশি প্রবাস কমিউনিটির নানান আয়োজনে ওরা ভুমিকা রাখতে পারেন।অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথী রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা পঞ্চকন্যার প্রশংসায় অভিভুত হয়ে জানালেন, নারী হয়ে আমিও গর্বিত ওনাদের এই সাফল্যে। সহযেগিতায় ছিল ওদের জীবন সংগীরা।

    ইস্ত্রীরা রান্না করেছেন,ওরা বাজার করা আর অতিথি আপ্যায়নের ঝামেলা সামাল দিয়েছেন।

    উদ্যোক্তা পঞ্চযূগল সেজেছেনও যথাযথ। পূরুষরা সাদা সবূজ পাঞ্জাবী , মেয়েরা বৈশাখী সাজে,লাল সাদা শাড়ী, রেশমী চূড়ি,মাথায় ফুলের মালা,অবলিলায় বল্লেন,আমারা উদ্যোগ নিলেও অনেক ভাই ভাবী আমাদের পাশে এসে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওযায় আয়োজনটি সফল হয়েছে।

    অনুষ্ঠানে প্রবাসী কমিউনিটির প্রায় সকলেই সদলবলে এসেছেন।রাজনৈতিক,সামাজিক সকল সংগঠন,মিডিয়া কর্মী,জাপানে নতূন আসা একঝাক নবাগতদেরও দেখা মিলেছে।

    জাপান সফরে আসা কজন সরকারী কর্মকতা প্রবাসীদের এই সমাগম দেখে বিস্মিত হয়ে এই প্রতিবেদককে জানালেন,এতটা প্রানের উচ্ছাস তো এখন দেশেও চোখে পড়েনা।

    আনুষ্ঠানের নাম বৈশাখী পান্তা ইলিশ হলেও পান্তার দেখা মেলেনি।মা ইলিশ ও জাটকা রক্ষায় দেশে ইলিশ নিষিদ্ধ তাই বেশ কজন ইলিশ খান নি। তবে ভর্তার সম্ভার ছিল চোখে পড়ার মতো। ভর্তার নামগূলোও লেখা ছিল চমৎকারভাবে।অনুষ্ঠানটিকে “বৈশাখী ভর্তা ইলিশ” ও বলা যেতে পারে।

    এসো হে বৈশাখ এসো এসো
    তাপস নিশ্বাস বায়ে,
    মুমুর্ষকে দাও উড়ায়ে

    সাদ্ধি-শীলা-আন্নি-মিলি-তানি,পাঁচ কন্যা তোমাদের অভিবাদন।

    মুসলমানদের সম্পর্কে ভাষা ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে : ওবামা   

    ইসলাম ধর্মকে যারা বিকৃত করছে তাদেরকে সমাজের একটি ক্ষুদ্র অংশ হিসেবে বর্ণনা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে চরমপন্থা মোকাবেলায় আমাদের মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য রয়েছে যেখানে মুসলিম-আমেরিকানরা ঐতিহাসিকভাবে আমাদের সমাজেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি বলেন, ইসলামবিদ্বেষ কেবল ভুলই নয়, বাস্তবিক অর্থে এটা আত্মপরাজয়মূলক আচরণও। তিনি বলেন, মুসলমানদের সম্পর্কে ভাষা ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে এবং লোকজনের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কথা বলেন তিনি। লন্ডনে তরুণ সমাজের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে তিনি তরুণদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। নিরাপত্তা ও মুসলমানদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে ওবামা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো বৈচিত্র্যপূর্ণ সমাজগুলোতে জনগণকে নিরাপদ রাখা এবং সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধ করা আমাদের অন্যতম একটি বড় চ্যালেঞ্জ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হতাশাবাদ ও সবকিছুতে দোষ খুঁজে বেড়ানোর সংস্কৃতি প্রত্যাখ্যান করার জন্য তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান জানান। কিভাবে অগ্রগতি অর্জন সম্ভব এবং সমস্যার সমাধান করা যায় সে সম্পর্কে জানার জন্যও তিনি তাদের প্রতি আহ্বান জানান। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ইতিহাসের অধিকতর আশাবাদী ও সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি তরুণ সমাজকে গ্রহণ করতে হবে। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট গ্লোবাল থিয়েটার পরিদর্শন করেন এবং হ্যামলেট নাটকের অভিনয় প্রত্যক্ষ করেন। তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ একটি ইস্যু নিয়ে কাজ শুরু করে তাহলে তাকে গভীর মনোযোগের সঙ্গে করতে হবে। ইস্যুটির সমাধান এক বছরে না হলেও হতাশ হবে না। প্রচেষ্টা এবং আশা ছাড়বে না। তিনি বলেন, ৫ বছরেও যদি দারিদ্র্য নির্মূল করা না যায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের সবগুলো নিষ্পত্তি না হলেও কখনো হতাশাবাদিতায় নিজেকে সমর্পণ করবে না। অগ্রগতি হাতের মুঠোর বিষয় নয়, এর জন্য অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদি লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। ওবামা তরুণ সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার এই আলাপচারিতাকে উৎসাহব্যঞ্জক বলে বর্ণনা করে বলেন, এতে তিনি বেশ কিছু নতুন ধারণা পেয়েছেন। রাজনৈতিক বিরোধীদের সঙ্গে কাজ করা এবং মধ্যপন্থা খুঁজে বের করতে তার দক্ষতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, যেসব লোক শুধু আপনার কথায় সায় দেয় তাদের সঙ্গে কেবল সময় কাটালে আপনি আপনার অভিমতের প্রতি আরো বেশি একরোখা হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু যারা সব বিষয়ে আপনার সঙ্গে একমত নন তাদের খুঁজে বের করুন। তাতে আপনি সমঝোতার ব্যাপারে শিখতে পারেন। সমঝোতা মানে আত্মসমর্পণ নয়। নিজের বিশ্বাস বজায় রেখেও অন্যের সঙ্গে সমঝোতা গড়ে তোলা যায়। লন্ডন সফরকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনের সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হন। সফরের সময় ওবামা ইইউ ইস্যু নিয়েও প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখেন। ব্রিটেন ইইউতে থাকবে কি না সে বিষয়ে আগামী ২৩ জুন গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ব্রিটেনের উচিত ইইউতে থাকা ওবামার এই প্রকাশ্য মন্তব্য ব্রিটেনের অনেক নাগরিকই ভালোভাবে নেয়নি। তারা এটাকে ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিরিয়ায় মার্কিন স্থলবাহিনী মোতায়েনের কথা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, কেবল সামরিক প্রচেষ্টা দেশটির সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। বিবিসিকে তিনি বলেন, আসাদ সরকারকে উৎখাতে সিরিয়ায় স্থলবাহিনী পাঠানো যুক্তরাষ্ট্র বা ব্রিটেনের জন্য ভুল হবে। ওবামা আরো বলেন, ক্ষমতায় তার শেষ নয় মাস সময়ে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট ‘আইএসকে’ পরাজিত করা যাবে এটা তিনি মনে করেন না। তবে তাদের অভিযানের পরিধি ধীরে ধীরে সংকুচিত করতে পারি। বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, সিরিয়ার সহজ সমাধান আছে বলে তিনি মনে করেন না। সিরিয়ার দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার সমাধান করতে হলে কেবল সামরিক সমাধান একমাত্র পথ নয় এবং আমরা অবশ্যই সেখানে স্থলবাহিনী মোতায়েন করছি না। তিনি বলেন, রাকার মতো অঞ্চলগুলোতে আইএস টার্গেটসমূহে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী বিমান হামলা অব্যাহত থাকবে এবং জোটের চেষ্টা হচ্ছে তাদেরকে সেখানে বিভিন্ন অংশে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা এবং ইউরোপে বিদেশী যোদ্ধা পাঠানোর চেষ্টা থেকে তাদের বাধা দেয়ার উদ্দেশ্যে তাদেরকে সেখানেই আটকে রাখা। তিনি বলেন, আগামী নয় মাসে আইএস নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এটা আমি মনে করি না। তিনি বলেন, চরমপন্থীদের যদি একটি পকেটও থাকে এবং তারা নিজেরা যদি আত্মঘাতী হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে তাহলে তারা আমাদের অনেক শহরে এখনো ভয়ঙ্কর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে পারে। তবে আমি মনে করি তাদের অভিযানের পরিধি ধীরে ধীরে সংকুচিত করে ফেলতে পারি। ওবামা আবারও সতর্ক করে দেন যে, জুনে গণভোটে ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি আলোচনায় ব্রিটেনের ১০ বছর সময় লাগতে পারে। ওবামা লন্ডনে তার তিন দিনের সফর শেষে গতকাল জার্মানির হ্যানেভার পৌঁছেছেন। সেখানে তিনি বিতর্কিত ট্রান্সআটলান্টিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব (টিটিআইপি) চুক্তির প্রতি জোরালে সমর্থনের আশা করছেন। হ্যানোভারে তিনি এবং জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল বিশ্বের বৃহত্তম শিল্প প্রযুক্তি বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, সিরিয়ায় একটি অর্ন্তবর্তী সরকার প্রতিষ্ঠায় আলোচনার টেবিলে বসাতে রাশিয়া, ইরান ও মধ্যপন্থী বিরোধী গ্রুপগুলোসহ সকল পক্ষের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চাপ অব্যাহত রাখবে। ওবামা অবশ্য বলেন, এটা খুব কঠিন কাজ। যেসব দেশের পার্লামেন্ট সিরিয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণকে অনুমোদন করেনি অথচ তারা এখনো চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে কিছু করুক ওবামা সেসব দেশেরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আপনি দুই দিকেই খেলতে পারেন না।

    লাটভিয়ায় নিষিদ্ধ হলো বোরকা  

    বোরকা নিষিদ্ধে আইন করেছে ইউরোপের দেশ লাটভিয়া। প্রকাশ্য স্থানে এই ধর্মীয় পোশাকটি পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জারিকৃত নতুন ওই আইনটি ২০১৭ সাল থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। দেশটিতে বোরকা পরিহিত নারীর মোট সংখ্যা তিনজন। লাটভিয়ার সংস্কৃতি সংরক্ষণ এবং পোশাকের আড়ালে সন্ত্রাসীদের অস্ত্র বহন ঠেকাতেই নতুন এ আইনটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর আগে ২০১১ সালে প্রকাশ্য স্থানে বোরকা পরা নিষিদ্ধ করে ইউরোপের আরেক দেশ ফ্রান্স। চলতি সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের হেডস্কার্ফ বা হিজাব নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা জানিয়ে বিতর্কের ঝড় তুলেছেন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভলস। লাটভিয়ার আইনমন্ত্রী জিনটার রাসনাকস জানান, মুসলিম নারীদের এই ঐতিহ্যগত পোশাকটি পরা ঠেকাতে নয়; বরং লাটভিয়ায় বিদেশিদের কাছে দেশের মূল্যবোধ তুলে ধরতেই আইনটি করা হয়েছে। তিনি বলেন, একজন আইনপ্রণেতার কাজ এসব বিষয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া। আমরা শুধু লাটভিয়ার সংস্কৃতিই সংরক্ষণ করছি না, পুরো ইউরোপের সংস্কৃতিই সংরক্ষণ করছি। বোরাক নিষিদ্ধের বিষয়ে লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ভাইরা ভিকে ফ্রেবারগা বলেন, এই সময়ে বোরকা পরা সমাজের জন্য বিপজ্জনক। বোরকায় লুকিয়ে যে কেউ একটা রকেট লঞ্চার পর্যন্ত বহন করতে পারে। উল্লেখ্য, লাটভিয়া ইউরোপের ছোট একটি দেশ। এর জনসংখ্যা মাত্র ২০ লাখ, যার মধ্যে মুসলিম রয়েছে এক হাজারের মতো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের শরণার্থী পুনর্বাসন পরিকল্পনার আওতায় আগামী দুই বছরে ৭৭৬ জন শরণার্থী নেয়ার কথা রয়েছে দেশটির।

    কুমামোতো উদ্ধারাভিযানে শত শত স্বেচ্ছাসেবী

    শুক্রবার হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী কুমামোতো সহ দক্ষিণ পশ্চিম জাপানের ভূমিকম্প উপদ্রুত প্রিফেকচার গুলোতে হাজির হয়েছেন।

    কুমামোতো শহরে ১ হাজার মানুষ ইতিমধ্যেই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নাম লিখিয়েছেন। কোনো কোনো উদ্ধারকেন্দ্রে মানুষের স্বাস্থ্য দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে তা গুরুতর পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

    ৬.৫ ভূমিকম্প আঘাত হানার পর এক সপ্তাহ অতিক্রম করেছে।

    ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৪৮ জন।

    টোকিওতে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন তিনি ভূমিকম্প উপদ্রুত কুমামোতো’তে শনিবার সফর করার পরিকল্পনা করেছেন। তিনি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে মিলে অপসারিত মানুষদের জন্যে অস্থায়ী বাড়ি নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

    হিজাব থাকায় মুসলিম মহিলাকে নামিয়ে দিল বিমান  

    পাশের যাত্রীকে নিয়ে অস্বস্তি হওয়ায় বিমানে নিজের আসন বদলানোর অনুরোধ করেছিলেন মাত্র। তাই বলে বিমান থেকেই নেমে যেতে হবে তাকে, ভাবতে পারেননি হাকিমা আবদুল্লে। মেরিল্যান্ডের বাসিন্দা হাকিমা। গত বুধবার সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের বিমানে শিকাগো থেকে সিয়াটল যাওয়ার কথা ছিল তার। হাকিমা জানান, ওই দিন সব স্বাভাবিকই ছিল। নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে বিমানেও ওঠেন তিনি। তবে পাশের আসনে বসা ব্যক্তির আচরণে তার অস্বস্তি হতে থাকে। কিছুক্ষণ পর তিনি বিমানবালাকে ডেকে অনুরোধ করেন, যাতে তাকে অন্য কোনো আসনে বসার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। হাকিমা জানাচ্ছেন, এর পরেই তাকে বিমান থেকে নেমে আসতে বলা হয়। কেন তাকে নেমে আসতে হচ্ছে তা বারবার জিজ্ঞাসা করলেও বিমানসংস্থার কর্মীরা তার কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। এর পর তাকে টার্মিনালে বসিয়ে রেখে বিমান চলে যায় গন্তব্যে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত নিরাপত্তাকর্মীরাও জিজ্ঞাসা করেন বিমান থেকে ওই মহিলাকে কেন নামিয়ে দেয়া হয়েছে। তাতে সংস্থার কর্মীরা জানান, বিমানে ওই মহিলার অস্বস্তি হচ্ছিল। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও অপমানিত হাকিমার প্রশ্ন, পরনে হিজাব থাকায় ও মুসলিম সম্প্রদায়ের বলেই কি তার সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন ওই বিমানকর্মীরা? এ দিনের ঘটনা নিয়ে বিমানসংস্থার কোনো যুক্তি মানতে নারাজ কাউন্সিল অব আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স। কাউন্সিলের এক অফিসারও বলেন, হাকিমাকে অযথা হেনস্থা করেছে বিমানসংস্থা। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হন হাকিমার স্বামীও। তবে নিজেদের তরফে কোনো ভুল হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন সাউথওয়েস্ট বিমানসংস্থার মুখপাত্র ব্যান্ডি কিংগ। তিনি বলেন, ওই ঘটনা নিয়ে যেটুকু তথ্য পেয়েছি তাতে নিয়মকানুন মানতেই ওই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল বলে মনে হচ্ছে।

    অবশেষে বিশ্ব উষ্ণায়ন চুক্তিতে সাক্ষর করলো জাপান

    জাপান সরকার মঙ্গলবার অবশেষে প্যারিস চুক্তিতে সাক্ষর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, বিশ্ব উষ্ণায়নে ভূমিকা রাখা গ্যাস গুলোর নির্গমন হ্রাস করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকা প্রস্তাবটি অবশেষে আলোর মুখ দেখছে।

    সাক্ষর অনুষ্ঠানটি নিউইয়র্কের জাতিসংঘের সদরসপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়, এ সময়ে ১৩০টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। যাদের মধ্যে আমেরিকা ও চীনা প্রতিনিধিরাও ছিলেন। ৬০টি দেশের নেতারা চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন।

    ডিসেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে চুক্তির প্রস্তাব গ্রহন করা হয়। চুক্তির লক্ষ্য, বিশ্বের তামমাত্রা বৃদ্ধি ২ থেকে ৩ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা।

    চুক্তিতে সাক্ষরকারী দেশ গুলোকে তাদের গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমণ হ্রাস করার লক্ষ্যমাত্রা করটুকু অর্জিত হলো তা জাতিসংঘকে প্রতি ৫ বছর অন্তর অন্তর অবহিত করতে হবে।

    অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে হাজারো দুর্গত মানুষ  

    জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পরপর তিনবার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর সেখানকার হাজার হাজার মানুষ এখন অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বসবাস করছে। ওই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে ও প্রচ- ঠা-া অনুভূত হচ্ছে। দু’দফা ভূমিকম্পে ৪০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে এবং শতাধিক আহত হয়েছে। এদিকে, ভূমিকম্পের পর জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় আসো পর্বতের আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা ও ছাই উদ্গীরণ শুরু হয়েছে। ফলে ওই এলাকায় ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শুক্রবার দুপুরে ধারণ করা এক ভিডিওচিত্রে প্রায় ১০০ মিটার উঁচুতে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। গত বৃহস্পতিবারের ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের পর আগ্নেয়গিরিটি সক্রিয় হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১১ সালেও জাপানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশটির অন্তত ২০টি আগ্নেয়গিরি সক্রিয় হয়েছিল। স্থানীয় গণমাধ্যম জানাচ্ছে যে, প্রায় দুই লাখেরও বেশি মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাবার আহ্বান জানানো হয়েছে। দু’দফা ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও তা আবার সরিয়ে নেয়া হয়। তবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিধস ও আর ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা আশংকা করছেন ধ্বংসস্তূপে হয়তো আরো অনেকে আটকা পড়ে আছেন। অনেকে বিদ্যুৎ ও পানির অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। প্রায় দুই হাজার মানুষকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং আহত দুইশো জনের অবস্থা ভালো নয় বলে জানা যাচ্ছে। জাপানের মাশিকিতে এক ভুতুড়ে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জাপান মিটিরোলজিক্যাল এজেন্সি গত শনিবার জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ২৬ মিনিট থেকে শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ২৫২ বার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। এটি ১৯৯৫ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সর্বশেষ জাপানে শক্তিশালী কম্পনের রেশ না কাটতেই কুমামতো প্রদেশে শনিবার স্থানীয় সময় বিকাল সোয়া ৫টার দিকে আবারো ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ওই কম্পনের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩। কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশটির কুমামতো প্রদেশে আঘাত হানা ওই ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে, যার উৎপত্তিস্থল ছিল দেশটির কুমামতো-চিহি এলাকায়। এর আগে স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১টা ২৫ মিনিটে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওই প্রদেশটিতে শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এর কম্পনের মাত্রা ছিল ৭। আমেরিকান জিওলজিক্যাল সার্ভে জানায়, জাপানের কিউশু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল দেশটির ইউকি শহর থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই অঞ্চলে ৫ দশমিক ৮ এবং ৫ দশমিক ৭ মাত্রার আরো দুটি কম্পন অনুভূত হয়। এ নিয়ে ওই অঞ্চলে তিন দফা ভূমিকম্প হয়েছে। জাপানে দফায় দফায় ভূমিকম্পের পর সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতায় সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগের নির্দেশ দেন তিনি। আবে বলেন, সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জোর দিচ্ছি আমরা। এ ক্ষেত্রে উদ্ধারকাজকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। জনসাধারণকে যথাযথ তথ্য দ্রুততার সঙ্গে সরবরাহ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভূমিকম্পে কমপক্ষে দুই হাজার লোক আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। শনিবার জাপান কর্তৃপক্ষ জানায়, উদ্ধারকাজ ত্বরান্বিত করতে ২০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কুমামতো প্রদেশে ৯২ হাজারের বেশি লোক বাড়িঘর ছেড়েছে বলে জানা গেছে। প্রায় দুই লাখ বাড়িঘর বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে, শনিবার ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে বড় ধরনের ভূমিধস হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত শুক্রবার রাতে হাজার হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে বিভিন্ন রাস্তা ও পার্কে ভয়ার্ত অবস্থায় রাত কাটিয়েছে। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে।

    পররাষ্ট্র কার্যালয়ে চাকরি পেল বিড়াল!

    যুক্তরাজ্যের বড় বড় সব কূটনীতিক ও মন্ত্রীদের কাছে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানা হলো লন্ডনের কিংস চার্লস স্ট্রিট ভবন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান এই কার্যালয়ে সব রথী মহারথীরা সর্বক্ষণ ব্যস্ত থাকেন গুরুত্বপূর্ণ কাজে। আর এই কার্যালয়েই কিনা ইঁদুরের উৎপাত! এমনকি এসব ইঁদুরের উৎপাত ঠেকাতে সেখানে নিযুক্ত কর্মচারীরাও রীতিমতো গলদঘর্ম হয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে শেষ পর্যন্ত সেখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে একটি বিড়ালকে। বিড়ালটির কাজ হবে পররাষ্ট্র কার্যালয়ের ভেতরে থাকা ইঁদুর তাড়ানো। তার পদের নাম ‘প্রধান ইঁদুর শিকারি’। খবর এনডিটিভি অনলাইনের।

    দুই বছর বয়সী ওই বিড়ালের নাম পালমারস্টোন। এখন থেকে বিড়ালটি যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত ওই ভবনেই থাকবে। পররাষ্ট্র কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, বিড়ালটি দেশটির কর দাতাদের জন্য মোটেও বোঝা হবে না। বিড়ালটি নিয়োগ দেওয়া হলেও এর খরচের জন্য জনগণের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হবে না।

    পররাষ্ট্র কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পালমারস্টোন এই কার্যালয়ের এক নতুন অতিথি। ‘প্রধান ইঁদুর শিকারি’ হিসেবে তার দায়িত্ব হবে কিং চার্লস স্ট্রিটে অবস্থিত এই কার্যালয়ে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণকারীদের কাজে সহায়তা করা ও ইঁদুরের সংখ্যা কমানো।

    বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বিড়ালটিকে লন্ডনের একটি রাস্তায় পাওয়া গিয়েছিল। সে ছিল খুবই ক্ষুধার্ত ও কম ওজনের। খুব সম্ভবত সে তার মালিককে খুঁজে পাচ্ছিল না। যুক্তরাজ্যের অনেক সরকারি ভবনে ইঁদুরের উৎপাত আছে। তাই এসব ভবনে ইঁদুর মোকাবিলায় বিড়ালও বাস করছে।

    ২০১১ সালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ইঁদুর মারতে ল্যারি নামের একটি বিড়ালকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ওই সময় বলেছিলেন, ল্যারি ইঁদুর ধরতে খুবই পরিশ্রম করে যাচ্ছে। ল্যারি নামের ওই বিড়ালটির টুইটার অ্যাকাউন্টও আছে। টুইটারে তার ফলোয়ার সংখ্যা ৪৭ হাজার ৫০০ জন।

    এ ছাড়া ২০১১ সালে যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের হাডার্সফিল্ড রেলস্টেশনের একটি বিড়ালও পদোন্নতি পেয়েছিল। স্টেশনের সব ইঁদুর তাড়ানোর কৃতিত্বের জন্য কর্তৃপক্ষ তাকে জ্যেষ্ঠ পেস্ট কন্ট্রোলার হিসেবে পদোন্নতি দিয়েছিল।

    দুর্গত এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা, ৭০ হাজার লোক অন্যত্র স্থানান্তর জাপানে তৃতীয় দফা ভূমিকম্প, আরো ২০ জনের প্রাণহানি   

    জাপানে ব্যাপক হতাহতের মধ্যেই ফের কয়েক দফা ভূমিকম্পে আরো ২০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯-এ দাঁড়িয়েছে। আরো বহু সংখ্যক ব্যক্তি ধসে যাওয়া ভবনের নিচে আটকে আছে বলে জানা গেছে। আতঙ্কিত অধিবাসীরা রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। ভূমিকম্পে একটি বাঁধ ভেঙ্গে পার্শ্ববর্তী এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে কয়েক দফায় এসব ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুমামতো শহরের মাইশি এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিহীন রয়েছে এই অঞ্চল। ভূমিকম্প দুর্গত এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে প্রায় ৭০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। প্রথম দফা ভূমিকম্পে নয়জন নিহত হওয়ার এক দিনের মাথায় জাপানে আবার আঘাত হানে শক্তিশালী ভূমিকম্প। স্থানীয় সময় রাত ১টা ২৫ মিনিটে এ ৭.৩ মাত্রার এই ভূমিকম্পের পর জারি করা হয় সুনামি সতর্কতা। তবে সেই সতর্কতা পরে আবার তুলে নেওয়া হয়। কয়েক দফার এসব ভূমিকম্পে ২০১১ সালের সুনামির পর বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাপান সরকার। নতুন করে প্রাণহানির খবর না পাওয়া গেলেও আহত কয়েক হাজারের মতো বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কুমামতো প্রদেশের এই ভূমিকম্পের তীব্রতা বৃহস্পতিবারের আঘাতের চেয়ে বেশি বলে জানানো হয়েছে। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কুমামতো শহর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে। উৎপত্তিস্থলের মাত্র ১২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে কিয়েশু পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। একই এলাকার মধ্যে রয়েছে সেন্দাই পারমাণবিক কেন্দ্র। গভীর রাতে এই বিপর্যয় ঘটায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা করা কঠিন বলে জানিয়েছেন রুপার্ট উইংফিল্ড। তিনি জানান, হাজার হাজার ভীত সন্ত্রস্ত মানুষকে দেখেছি খোলা আকাশের নিচে, রাস্তায় বা পার্কে জড়ো হয়ে আছে। পরপর ভূ-কম্পনের আঘাতে তারা ভীষণ বিপর্যস্ত। উইংফিল্ড বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চোখে দেখতে না পেলেও আমরা ভেঙ্গে পড়া বাড়িঘরের নিচে আটকা পড়া মানুষ জনের সাহায্যের আবেদন পাচ্ছি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। উদ্ধার তৎপরতাও শুরু হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তর ইউএসজিএস এর তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার রাত ১টা ২৫ মিনিটে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭। বিভিন্ন ভবনের বাসিন্দারা জিমনেশিয়াম ও হোটেল লবিতে আশ্রয় নিয়েছে। প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা এখনো জানা যায়নি, গতকাল শনিবারও উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত আছে। কুমানাতো শহরের কর্মকর্তা তোমোইউকি তানাকা বলেন, প্রতি ঘণ্টায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। ভূকম্পনপ্রবণ জাপানের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়াশিদা সুগা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ভূমিকম্প মোকাবেলা করছি। প্রায় দেড় লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। আমরা সবাইকে বলেছি, নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, এটি নিঃসন্দেহে ২০১১ সালের পর বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবারের এই ভূমিকম্প আঘাত হানার পর রাতভর অনেক মানুষ খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেয়। এর ১০ মিনিট পরই দ্বিতীয় দফায় ৫.৭ মাত্রার আরেকটি ভূকম্পন অনুভূত হয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে। স্থানীয় পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলছেন, গতকাল শনিবারের রাতের ভূমিকম্পে বেশি কয়েকটি বাড়ি ধসে পড়েছে। রাস্তাঘাটও ভেঙে গেছে। জাপানের গণমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে , কমপক্ষে ২ লক্ষ বাড়িঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। পানীয় জল পাওয়া যাচ্ছে না আক্রান্ত এলাকায়।

    জাপানে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প

    বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ২৪ ঘণ্টার মাথায় এবার জাপানে ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে ট্রেন যোগাযোগ, বিদ্যুৎ বিছিন্ন হয়ে গেছে কয়েকটি স্থানে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসজিএস জরিপে এ ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ২।
    বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯ টার ( বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা) দিকে দেশটির কুমামতো ও কিয়েশু প্রদেশে এ ভূমিকম্প হলেও এতে পুরো জাপানই কেঁপে ওঠে। ইউএসজিএস এর তথ্যে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল জাপানের ইউকি শহর থেকে মাত্র সাত কিলোমিটার দূরে এবং গভীর সমুদ্রের ১০ কিমি এলাকা জুড়ে।
    কুমামতোর পুলিশ বলছে, একটি বাড়ি ধসে গেছে, আটকে গেছে কিছু মানুষ। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন  হওয়ার খবর আসছে।
    ওদিকে, প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দিয়েছেন।
    তবে ভূমিকম্পে তাৎক্ষণিকভাবে সুনামি সর্তকতা জারি করেনি দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর।