শুক্র গ্রহের ছবি
জাপানের ছোট্ট মহাকাশ যান আকাৎসুকি প্রায় ব্যর্থ হয়ে পড়া মিশন থেকে পুনরায় গুরত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ব্যয়বহুল আকাৎসুকি অবশেষে বিজ্ঞানীদের ফল দিতে শুরু করেছে। শুক্র গ্রহ থেকে ছবি আসা শুরু হয়েছে এবং আগামীতে আরো পাঠাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জাক্সা’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাসাতো নাকামুরা প্রকল্পের সাথে জড়িতদের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন নভোযানটি এখন কোনো রকম সমস্যা ছাড়াই কাজ করছে। জাপান এরোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি’র কর্মকর্তারা আকাৎসুকি নভোযানের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। নভোযানটি ৬ বছর আগে ২০১০ সালে উৎক্ষেপণ করা হয় শুক্রগ্রহের জলবায়ু পর্যবেক্ষণ করতে। কিন্তু অভিযানের মাঝ পথে নভোযানটির প্রধান ইঞ্জিন ভেঙে যায় এবং পরবর্তী ৫ বছর আকাৎসুকি সূর্যের চারিদিকে ঘুরে ঘুরে অতিক্রম করে। কিন্তু প্রকৌশলীরা হাল ছেড়ে দেননি। তারা গত বছরের ডিসেম্বরে আকাৎসুকি’কে তার কক্ষপথে স্থাপন করার দ্বিতীয় প্রচেষ্টা চালান। এ সময়ে থ্রাস্টার ব্যবহার করে কক্ষপথে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।
পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহকে প্রদক্ষিণ করা জাপানের প্রথম উপগ্রহ হলো আকাৎসুকি। মাত্র কয়েকমাসের মধ্যেই আকাৎসুকি মহাকাশ থেকে চমৎকৃত ছবি পাঠানো শুরু করেছে। তার তোলা একটি ছবিতে শুক্রগ্রহের বুকে কালো কালো ছোপ দেখা যাচ্ছে। এসব কালো ছোপের একটি দক্ষিণ গোলার্ধের একটি পাহাড় বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রায় ৪ হাজার মিটার উঁচুতে কয়েক হাজার মিটার বিস্তৃত কালো দাগ।
অপর একটি ছবি তোলা হয়েছে উপগ্রহটির অবলোহিত ক্যামেরার মাধ্যমে। সেখানে উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত একটি নাইট্রিক এসিডের মেঘপুঞ্জ। এটি ২০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। আকাৎসুকির মূল উদ্দেশ্য এগুলো কী এবং কেমন করে তৈরি হলো।
শুক্রগ্রহকে প্রায়ই পৃথিবীর বোন হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। গ্রহ দু’টির আকার এবং বয়স প্রায়ই একই। গ্রহটির উপর গবেষণার মাধ্যমে পৃথিবীর বিশ্বউষ্ণায়ন সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা সম্ভব হবে।
শুক্রগ্রহের বায়ুমন্ডলের প্রায় পুরোটাই জুড়ে রয়েছে কার্বন ডাইঅক্সাইড। এর ফলে ভূত্বকের তাপমাত্রা ৪৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রা পর্যন্ত পৌঁছুতে পারে।
আকাৎসুকির মিশন এখনো ঢের বাকী। বিজ্ঞানীরা অপেক্ষায় আছেন মহাকাশযানটি এরপর কিসের ছবি পাঠায় তা দেখার জন্যে।