বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর অভিষেক ও মনোরম সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা
দীর্ঘ প্রতিক্ষা, আলোচনা, সমালোচনার শেষে জাপানে বসবাসরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিসিসিআইজে’র প্রথম নির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হলো গত রোববার তাকিনোগাওয়া বুনকা সেন্টারে। গত ১২ এপ্রিল প্রবাসীদের ভীড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হলটিতে বহু দর্শকদের দাঁড়িয়ে থেকে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করতে দেখা গেছে।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের প্রধান, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুকিত মজুমদার বাবু, সাংবাদিক ও “সাপ্তাহিক” সম্পাদক গোলাম মোর্তজা, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী স্টেট লিবারাল পার্টির সাংসদ সদস্য প্রার্থী রশিদ ভূঁইয়া।
কামরুল হাসান লিপু’র বানানো চমৎকার মঞ্চটিতে বিকেল পাঁচটায় প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। দীর্ঘদিন পর উপস্থাপক নিয়াজ আহমেদ জুয়েলের চমৎকার উপস্থাপনায় মঞ্চে প্রথম নব নির্বাচিত সভাপতি বাদল চাকলাদার অনুষ্ঠানের সুচনা করেন। এরপর মঞ্চে আসেন কমিউনিটির পক্ষ থেকে বিসিসিআইজে’র প্রথম আহ্বায়ক কমিটির উপদেষ্টা প্রবাসী সাংবাদিক কাজী ইনসানুল হক।
তিনি নব নির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাকিম মোঃ নাসিরুলকে মঞ্চে আহ্বান করেন এবং প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে তার কাছ থেকে প্রবাসী সকল ব্যবসায়ীদের নিয়ে একসাথে এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে বিসিসিআইজে’র প্রতি অনুরোধ করেন। জনাব হাকিম চমৎকার জবাবের মাধমে দু’বছরের নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে পরবর্তী কমিটির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ও সবাইকে এক করে জাপান বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা ও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনকে গভীর করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এবং তিনি নব নির্বাচিত কমিটির এক একজনকে পরিচয় করিয়ে দেন।
প্রবাসী মহিলারা একে একে সকলকে ফুল দিয়ে অভিষিক্ত করেন। এরপর আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে ফুল ও ক্রস্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। অতিথিরাও বক্তব্য রাখেন। প্রবাসীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন ফুল দিয়ে নতুন কমিটিকে অভিননন্দন জানান এবং বক্তব্য রাখেন। সকলের প্রত্যাশা নতুন কমিটি তাদের যোগ্যতা দিয়ে কমিটিকে নতুন মাত্রা পৌঁছে দেবে।
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ জাপান প্রতিষ্ঠায় তৎকালীন রাষ্ট্রদূত আশরাফ উদ দৌলার ভূমিকার কথা ভোলবার নয়। তার কথা উল্লেখ থাকলে ভালো হতো। জাপানে নিজস্ব দূতাবাস করার উদ্যোগতাও তিনি।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বটি ছিলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন কাজী এনামুল হল এবং সোমা। প্রথমে পুলক ও পরে কুমার বিশ্বজিৎ মাতিয়ে রাখেন পুরো অনুষ্ঠানটিকে।
শুরুতে কুমার বিশ্বজিৎ এর তিন দশকেরও বেশি সময়ের সংগীত জীবনের উপর একটি ছোট্ট প্রামাণ্যচিত্র তুলে ধরা হয়। এরপর দর্শকদের তুমুল করতালির মাধ্যমে মঞ্চে প্রবেশ করেন কুমার বিশ্বজিৎ। যেখানে সীমান্ত তোমার -গানটির মাধ্যমে শুরু করেন গান। তার জনপ্রিয় সব গানের মাঝে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলিক ভাষায় কৌতুকপূর্ণ বক্তব্য দর্শকরা দারুন উপভোগ করেন।
তিনি চতুরদোলাতে দুলে দেখো ঐ বধু যায়, ডাক্তার, তুমি রোজ বিকেলে আমার বাগানে ফুল নিতে আসতে, তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে সহ বেশ অনেক গুলো জনপ্রিয় গান গেয়ে শোনান। দর্শকরাও যেন গানের তালে মাতাল হয়ে ওঠেন। এদিন ড্রাম বাদক মিথুনের মাতোয়ারা তাল দর্শকরা সহজে ভুলতে পারবেন না। দর্শকদেরকে তালে তালে উত্তাল করে দিতে তিনি তারও অবদান কোনো অংশে কম ছিলো না।
একটি গানে পুরো হলের বাতি নিভিয়ে সকল মা’র প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কুমার বিশ্বজিৎ গাইলেন “মাগো মা তোমার আঁচল” দর্শকরা এ সময়ে মোবাইলের আলো জ্বেলে ধরেন -গোটা হলটি যেন ভোরে গেলো তারায় তারায়।
সাম্প্রতিক দিন গুলোর মধ্যে আয়োজিত অন্যতম সফল অনুষ্ঠানটি দর্শকরা ব্যাপক ভাবে উপভোগ করেন।