• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • ফুকুশিমা প্ল্যান্টের মাটি জমাট বাঁধানো শুরু করেছে টেপকো

    পারমাণবিক দুর্ঘটনার শিকার ফুকুশিমা দাইইচি পারমাণবিক চুল্লীর পরিচালনাকারী সংস্থা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে অনুমোদন পেয়ে চুল্লীর চারপাশের মাটি জমাট বাঁধানো শুধু করেছে। টোকিও ইলেক্ট্রিক পাওয়ার কোম্পানি বা টেপকো বরফের দেয়াল তৈরি করে ভূগর্ভস্থ পানিকে ৪টি পারমাণবিক চুল্লীর দিকে প্রবাহিত হওয়া থেকে প্রতিহত করবে ফলে জলাধারে তেজস্ক্রিয় পানি ধরে রাখার পরিমাণ হ্রাস পাবে।

    ইউটিলিটি গত বুধবার নিউক্লিয়ার রেগুলেটরি অথরিটি বা এনআরএ’র কাছ থেকে মাটি হিমায়িত করার অনুমতি পায়। ধারণা করা হচ্ছে বৃহস্পতিবার থেকেই মাটি জমানোর কাজ শুরু হতে পারে। ভূগর্ভস্থ পানির প্রবাহের কারণে প্ল্যান্টে তেজস্ক্রিয় দূষিত পানির পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে।

    মাটি জমানোর কাজ সম্পন্ন হলে, অন্যান্য সব ব্যবস্থা মিলে প্রতিদিন জমিয়ে রাখা ভূগর্ভস্থ পানির পরিমাণ ৪০০ টন থেকে কমে ৫০ টনে নেমে আসবে। মাটি জমাট বাঁধানোর কাজ শুরু হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যেই তা ভূগর্ভস্থ পানির প্রবাহ ঠেকাতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    দু’বছর কাজ করার পর গত মাসে টেপকো ভূগর্ভস্থ মাটি জমাট বাঁধানোর সিস্টেমটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে।

    মাসতুরাতের উদ্দেশ্যে তিনটি কথা

    প্রথম কথা : আল্লাহ তাআলা মাকে সন্তানের মাদরাসা বানিয়েছেন। মায়ের কোল সন্তানের মাদরাসা। তাবলীগের বড় মুরুব্বী হাজী আব্দুল মুকীত রাহ.-এর জামাতা প্রফেসর ড. আনওয়ারুল করীম সাহেব একবার হযরতজী এনামুল হাসান ছাহেব রাহ.-কে জিজ্ঞেস করলেন, হুযুর! এখন এত মাদরাসা, দ্বীনী তালীমের এত সুযোগ-সুবিধা, এরপরও নতুন প্রজন্ম খারাপ কেন, ওদের মধ্যে ভালো কম কেন? সাহাবায়ে কেরামের যামানায়, তাবেঈ-তাবে তাবেঈর যামানায় তো এত মাদরাসা ছিল না, তবু সেই যামানার সবাই ভাল, সব ছেলে ভাল। এখন কেন খারাপ? এত মাদরাসা সত্ত্বেও কেন ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ভালোর সংখ্যা কম?  সম্ভবত হযরতজী বললেন, আরে! তখন মাদরাসা ছিল বেশী এখন মাদরাসা কম! এখন তো তুমি ছয়/সাত বছর বয়সে সন্তানকে মাদরাসায় পাঠাও, ভর্তি করাও। সে এক মাদরাসায় পড়ে, যতক্ষণ মাদরাসায় থাকে ততক্ষণ শুধু মাদরাসা। আর আগে সন্তান যেদিন ভূমিষ্ঠ হত সেদিন থেকে প্রতিটি মুহূর্তই হতো তার মাদরাসা, প্রতিটি কোলই ছিল তার একেকটি মাদরাসা। মায়ের কোলে আছে তো মাদরাসায় আছে। বোনের কোলে আছে তো আরেক মাদরাসায় আছে। ভাই কোলে নিয়েছে তো সে মাদরাসাতেই আছে। তখন সন্তান দুনিয়াতে আসার পর যার কোলে যাক যে দিকে তাকাক, যার হাতে যাক যে দিকে বের হোক- সবখানে মাদরাসা আর মাদরাসা। অর্থাৎ সে যেখানেই যাবে যার কাছেই থাকবে সে দ্বীনদার পাবে, দ্বীনী পরিবেশ পাবে। যে বোনের কোলে আছে, সে বোন মিথ্যা বলে না, কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করে না। ভায়ের কোলে গেল তো ভাই-ও ভদ্র ছেলে, নামাযী, কারো গীবত-শেকায়েত করে না। বাবা এসেছেন, তার কোলে গেল, তিনিও ভাল, তার কামাই হালাল, দুনিয়ার পিছে পড়ে নামায ছাড়েন না। ধন-সম্পদ গড়ার জন্য হারামে লিপ্ত হন না। তার মানে, সন্তান যার কোলে যাচ্ছে যার কাছে যাচ্ছে মাদরাসায় যাচ্ছে! আর এখন? কোথায় সেই মাদরাসা?

    সন্তান যেখানে যাবে যার কোলে থাকবে, সেখানেই যদি আগের মত মাদরাসা হতো, তাহলে তো ভাল ছিল। কিন্তু তা যদি না হয়, অন্তত প্রত্যেক সন্তানের প্রথম কোলটি যেন হয় মাদরাসা। যিনি এ সন্তানকে ধারণ করছেন, বহন করছেন দশ মাস দশ দিন, তাঁর আখলাক যদি ভাল হয়, তাঁর মধ্যে যদি দ্বীন-ঈমান থাকে, নামায থাকে কুরআন থাকে, ভাল ব্যবহার থাকে, তবে সন্তানের উপর এর প্রভাব পড়বেই পড়বে। প্রত্যেক নারীকে বুঝতে হবে, আপনার ব্যক্তি-সত্তাই আপনার সন্তানের মাদরাসা। আপনিই আপনার সন্তানের প্রথম মাদরাসা। আপনি ভাল সন্তান ভাল, আপনি খারাপ সন্তান খারাপ। হয়ত বলবেন, মা অনে-ক ভাল, সন্তান খারাপ- এমনও তো দেখা যায়! আসলে এমনটা খুব কম হয়। হলেও পরে ঠিক হয়ে যায়। আরেক কথা হল, মা যে অনেক ভাল, আমরা তাঁর বাহ্যিক অবস্থা দেখে সুধারণা করছি। কিন্তু মার তো নিজের হিসাব নিজে নেওয়া দরকার, আমি কতটুকু ভাল। নিশ্চই আমার কোনো ত্রুটি আছে, মানুষ জানে না, কিন্তু আল্লাহ জানেন। আমাকে আমার সেই ত্রুটি সংশোধন করতে হবে।

    আমরা ছেলে-মেয়েদের শাসন করি কথা দিয়ে, হাত দিয়ে। বেশি ভাল হলে হয়ত হাত ব্যবহার করি না, শুধু কথা দিয়ে শাসন করি। কিন্তু সন্তানের শাসন-পদ্ধতি কি শুধু হাত আর মুখ ব্যবহার? বকাঝকা করা আর লাঠি হাতে নেওয়া? আসলে এভাবে শাসন হয় না। মূলত সন্তান শাসনের প্রথম কথা হল আমি ভাল হওয়া, এক নম্বরে আমি ভাল হওয়া। আমার আমল-আখলাক, আমার আচার-ব্যবহার, চিন্তা-চেতনা ভাল হওয়া। বাপের রোজগার হালাল হওয়া। এ হল সন্তান শাসনের মৌলিক কথা। মা-বোনদের প্রতি নসীহত, আপনারা স্মরণ রাখবেন, আপনারা হলেন সন্তানের প্রথম মাদরাসা। প্রথম থেকেই মাদরাসা। আপনি যতদিন বেঁচে থাকবেন সন্তান আপনার কাছ থেকে শিখতে থাকবে। কাজেই আপনারা আপনাদের যতœ নিন।

    দ্বিতীয় কথা : সময়ের অপচয়। এটা গুনাহ, স্বতন্ত্র গুনাহ। যদিও আমাদের সকল কাজ সময়ের সাথে বাঁধা। আমরা সময়ের উর্ধ্বে উঠে কোনো কাজ করতে পারি না। কিন্তু যদি সময়ের উর্ধ্বে উঠে কোনো গুনাহের কাজ করা যেত তবে কি ঐ গুনাহর কাজ গুনাহ হতো না? অবশ্যই হত। বোঝা গেল, গুনাহের কাজ এমনিতেই গুনাহ আর সময়ের অপচয় আলাদা গুনাহ। সময়কে কোনো কাজে না লাগানো বা হেলায় নষ্ট করা ভিন্ন একটা গুনাহ। সকল শ্রেণীর মানুষ এখন এই গুনাহে লিপ্ত। সময়-অপচয়-রোগে আমরা সবাই আক্রান্ত। আমাকে ক্ষমা করবেন, আমার ধারণা, মহিলাদের মধ্যে এ সমস্যাটা বেশি।

    তাদের সময় বিভিন্নভাবে অপচয় হয়। একটা হল সাংসারিক কাজ। বলতে পারেন, এটা তো বড় কঠিন কথা, কাজের মধ্যে থাকলে আবার সময়ের অপচয় হয় কীভাবে! আমি বলি, ফজর থেকে মাগরিব পর্যন্ত কাজ? গ্রামের মহিলাদের সারাদিন কাজ আর কাজ। সারাদিন কেন কাজ? কোথায় আপনার একটু আরাম-বিশ্রাম, তালিম-তিলাওয়াত, নফল নামায, যিকির-আযকার? আসলে আমরা কাজ অনেক করি বটে, কিন্তু সুশৃঙ্খলভাবে করি না। রুটিন মোতাবেক করি না। অনেক সময় কাজ ফেলেও রাখি, সময় মতো করি না। ফলে আমাদের সময়ে বরকত হয় না। অপচয় হয়ে যায় বহু সময়। এজন্য প্রত্যেক ঘরে মহিলারা সময়সূচি বানিয়ে নিবেন। রুটিন মাফিক কাজ করলে দেখবেন অনেক সময় বেঁচে যাবে। আপনি রুটিনে তালিম-তেলওয়াতের জন্য সময় বরাদ্দ রাখুন। নফল নামাযের জন্য সময় বের করুন। আরাম-বিশ্রামের জন্য সময় খালি করুন। ঠিকমতো বিশ্রাম না নেওয়ার কারণে মহিলাদের শারীরিক কত সমস্যা হয়। আপনি ঠিক করুন, ঠিক কতটা থেকে কতটার মধ্যে নাশতা প্রস্তুত করবেন, বাচ্চাদেরকে মাদরাসায় কখন পাঠাবেন। দুপুরের রান্না কখন শুরু করবেন কখন শেষ করবেন। আপনার কাজ যদি সময় মতো হয়, গোছালো হয়, অলসতা না করে যদি সব কাজ সময় মতো করে ফেলতে পারেন, তাহলে আপনি ইবাদত-বন্দেগী ও দ্বীনী কাজের জন্য অনেক সময় বের করতে পারবেন। আর না হয় কাজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে  যাবে এবং পুরোটা দিন শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু আপনি একটু আরাম-বিশ্রামেরও সময় পাবেন না।

    আপনি লক্ষ্য রাখুন, যেন কম থেকে কম সময়ে বাচ্চাদের খাওয়া-গোসল ইত্যাদি হয়ে যায়, সেভাবে ওদের গড়ে তুলুন। স্বামীরা স্ত্রীদের সময় বাঁচনোর প্রতি লক্ষ রাখুন। নিজের খাওয়ার বর্তনটা স্ত্রীর ধোওয়ার জন্য রেখে না দিয়ে নিজেই ধুয়ে ফেলুন। দস্তরখান বিছানো-গুটানোর ক্ষেত্রে স্ত্রীকে সহায়তা করুন। সময় হলে ঘরের অন্যান্য কাজে অংশ নিয়ে স্ত্রীর কাজ এগিয়ে দিন। এটা পুরুষের দায়িত্ব। পুরুষের উদ্দেশ্যে যখন কথা বলবো তখন এ-বিষয়ে আরও বলা যাবে। আজ তো মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলছি। সুতরাং ঘরওয়ালি হিসাবে যে কাজের দায়িত্ব আপনি নিজের কাঁধে নিয়েছেন, যে কাজ আপনি করবেনই, সে কাজ সময় মতো করুন। উদ্যমের সাথে করুন। তাহলে আপনি দ্বীন শেখার জন্য সময় বের করতে পারবেন। ইবাদত-বন্দেগীতে অগ্রসর হতে পারবেন।

    ছোটকালে আমি আমার মার সঙ্গে রান্না ঘরে যেতাম। একদিন তিনি আউয়াল ওয়াক্তে যোহর পড়ে রান্না করতে এলেন। কী কারণে যেন আগুন ধরতে দেরি হচ্ছিল। লক্ষ্য করলাম, তিনি দোয়া পড়ছেন আর কেঁদে কেঁদে বলছেন, আহারে! নামাযের সময় বুঝি যায়! নামাযের সময় বুঝি যায়! আমি বললাম, এই না আপনি যোহর পড়ে এলেন, নামাযের সময় তাহলে যায় কোথায়? বললেন, ‘আসরের সময় চলে যায়!’ অর্থাৎ এই যে আগুন জ্বলছে না, রান্না শুরুই হচ্ছে না, দেরি হয়ে যাচ্ছে, রান্নার নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে তো আমি আসরের নামায আওয়াল ওয়াক্তে পড়তে পারবো না। চিন্তা করুন, এইমাত্র যোহর পড়ে এলেন, কিন্তু আগুন জ্বলতে একটু দেরি হচ্ছে বলে এখনই তাঁর আসরের সময় চলে যাচ্ছে!

    আমরা সাধারণত দশটা উনষাট মিনিট হয়ে গেলেও এগারটা বাজেনি মনে করি। কিন্তু আমার আম্মা ঘড়ির কাঁটা দশটা পার হলেই বলতেন এগারটা বেজে গেছে। আসলেও তাই। দশটার পরের মিনিটগুলো এগারটার মিনিট দশটার নয়। আর এগারটা বাজার পর যে মিনিট সেটা তো এগারটার নয়, বারটার মিনিট!

    তৃতীয় কথা : স্বামীর সাথে ভাল আচরণ। স্বামী যারা, তাদেরকে আদর্শ স্বামী হওয়ার জন্য যা জানা দরকার, প্রশিক্ষণ নেওয়া দরকার, তা তো আমরা নিইনি। স্বীকার করছি, আমরা আদর্শ স্বামী হতে পারিনি। আদর্শ স্বামীর গুণাবলী আমরা শিখিনি। ইসলাম কিন্তু খুব শিখিয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব ক্ষেত্রেই আমাদের জন্য আদর্শ। তাঁর আদর্শই তো আদর্শ। কিন্তু নবীজীর সীরাত থেকে আমরা আদর্শ স্বামীর সেই গুণাবলী হাসিল করতে পারিনি। আমরা ভাল স্বামী নই, আমরা ‘আসামী’। এখন যেহেতু নারীদের উদ্দেশ্যে কথা বলছি সে জন্য ঐ প্রসঙ্গে আর যাচ্ছি না। মা-বোনদের বলছি, আমরা যেন আমাদের আচরণ সুন্দর করি। আচরণ সুন্দর করার অনেক দিক আছে। সব তো আর এক মজলিশে বলা সম্ভব নয়। বলার দরকারও নেই। আপনারা মনিতেই জানেন। আমি শুধু সওয়াব হাসিলের জন্য একটি কথা তুলে ধরছি। যে কথা হাদীসেও এসেছে।

    ‘কখনও, কোন সময়, সব সময়’ এই শব্দগুলো বিরক্তির সময় আমরা ব্যবহার করি। স্বামীর আচরণ একটু খারাপ লাগলেই বলে উঠি, তুমি ‘সব সময়’ আমার সাথে এমন কর। এখানে ‘সব সময়’ শব্দটা অপাত্রে ব্যবহার হয়েছে। আসলেই কি সব সময় আপনার স্বামী আপনার সাথে এমন করে? স্বামীরা বাহিরে বাহিরে থাকে। স্ত্রীদেরকে সময় কম দেয়। স্ত্রী এক দিন সময় চাইলেন। স্বামী ব্যস্ততা দেখালেন আর অমনি স্ত্রী বলে উঠলেন, ‘কখনও তোমার কাছে একটু সময় পাই না! কোনো দিন তুমি আমাকে সময় দাও না।’ এই যে পাইকারি বলা, ‘সব সময় তুমি এরকম কর, কখনও তোমার কাছে একটু ভাল ব্যবহার পাই না, কোনো সময় তোমার কাছে একটা জিনিস চাইলে পাই না।’- এই ভাষাগুলো ঠিক না। হাদীসে এসেছে, গড়পড়তা নারীদের অভ্যাস হল, একটুতেই তারা স্বামীদের সব অনুগ্রহ ভুলে যায় এবং বলে উঠে,

    مَا رَأَيْتُ مِنْكَ خَيْرًا قَط ‘তোমার কাছে কখনও ভাল ব্যবহার দেখলাম না!’ আহারে! কিচ্ছুই দেখেননি? এটা কীভাবে হয়! কিছু না কিছু দেখেছেন, অবশ্যই দেখেছেন! তাহলে এরকম করে বলার কী দরকার। এমন কথা স্ত্রী বললে স্বামীর মনে আঘাত লাগে, তিনি বড় কষ্ট পান। স্বামী বললেও স্ত্রীর মন ভেঙ্গে যায়, তিনি ভীষণ আঘাত পান।

    উর্দুতে এজাতীয় একটি শব্দ হল হামেশা। মুফতি রফী উসমানী সাহেব হুযুরের বয়ানেও কথাটা আছে। একদিন তরকারিতে লবণ একটু কম হল, আপনি ক্ষেপে গিয়ে বলে উঠলেন, ‘সব সময় তরকারিতে লবণ কম হয়, রান্না একটা দিনও খাওয়ার মত হয় না।’ ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন… একটা দিনও কি তরকারি খাওয়ার মত হয় না? আরে ভাই আপনি বলতে পারেন, সব সময় তো স্বাদ হয়! আজ বুঝি লবণটা কম হয়ে গেছে! আর এটাই বা বলার কী দরকার। ওরা কি খাওয়ার সময় বিষয়টা বুঝবে না? হাফেজ্জী হুযুর রাহ.-এর ঘটনা শুনেছি, লবণ মোটেই দেয়া হয়নি এমন তরকারি হুযুর বিনাবাক্যে খেয়ে মাদরাসায় চলে গেলেন, কিছুই বলেননি। অন্যরা খেতে বসে তো আশ্চর্য! হুযুর তো কিছুই বললেন না। হুযুর তো কিছুই বললেন না! -আমাদেরকেও এমন হতে হবে। এ জাতীয় কথা পরিহার করতে হবে। আমরা বরং প্রশংসা করব, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব। তাহলে স্ত্রীরা আমাদের কাছে শিখবে। স্ত্রীরা করলে স্বামীরা শিখবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে শেখার তাওফীক দান করুন। আমীন।

    আরেকটি কথা আরজ করছি। আগের যামানার মহিলা আর এ যামানার মহিলাদের মাঝে বিশেষ একটি পার্থক্য আছে। ‘রিসালাতুল মুস্তারশিদীন’ কিতাবে আমি পড়েছি। ইহইয়াউ উলূমিদ্দীনসহ আরও অনেক কিতাবে কথাটা আছে। আগে যখন স্বামীরা রোজগারের জন্য ঘর থেকে বের হতেন, তখন স্ত্রীরা বলত, نَصْبِرُ عَلَى الْجُوعِ وَلَا نَصْبِرُ عَلَى النَّارِ আপনি আমাদের জন্য কামাই করতে যাচ্ছেন, সংসার চালানোর জন্য রোজগার করতে বের হচ্ছেন, আমরা আপনাকে আস্বস্ত করছি যে, আমরা দারিদ্র্যের উপর সবর করতে রাজী, ক্ষুধার কষ্ট সইতে প্রস্তুত, আজ এটা নেই কাল ওটা নেই, অভাব-অনটন চলছেই চলছে…এর উপর আমরা ধৈর্য ধরব। কিন্তু জাহান্নামের আগুন সহ্য করতে পারব না। সুতরাং হালালভাবে যা পাবেন কেবল ততটুকু আনবেন, হারাম কিছু আনার চেষ্টা করবেন না। আমরা না খেয়ে কম খেয়ে থাকতে পারব কিন্তু দোযখের আগুন সইতে পারব না। এই ছিল আগের কালের মহিলাদের ভাষা। আর এই যামানার মহিলারা স্বামীর হাতে লম্বা তালিকা ধরিয়ে দিয়ে বলে, এগুলো আমার চাই। তালিকা দেখে স্বামী বেচারা বিমর্ষ হয়ে পড়ে। স্ত্রীকে অনুনয় করে বলে, আমি এত কিছু কীভাবে আনব, আমার আয় তো তোমার সামনে? তুমি তো জান আমার কত আয়! স্ত্রীর এক কথা; তোমার কত আয় আমার তা জানার দরকার নেই। এই জিনিসগুলো আমার চাই, এগুলো ছাড়া দিন চলবে না। এই যুগে এমন মহিলা অনেক। কিন্তু আগে এমন ছিল না। কম হোক আপত্তি নেই, কিন্তু হারাম তারা সহ্য করতেন না। আল্লাহ তাআলা সকল মহিলাদেরকে এমন হওয়ার তাওফীক দান করুন। পুরুষদেরও আগের পুরুষদের মত নেককার হওয়ার তাওফীক দিন। আমীন।

    وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين.

    [মুসাজ্জিলা থেকে বয়ানটি পত্রস্থ করেছেন মাহমুদ হাসান মাসরূর। জাযাহুল্লাহু খাইরান]

    সন্তানের নাম রাখা : অবহেলা কাম্য নয়

    আবু আহমাদ

    সন্তানের সুন্দর ও অর্থপূর্ণ নাম রাখা- এটা বাবা-মা’র দায়িত্ব। সকলেই তার সন্তানের জন্য পছন্দসই নাম খোঁজেন। কিন্তু বিপত্তি ঘটে পসন্দসই ও ‘আনকমন’ নাম খোঁজ করতে গিয়ে।‘আনকমন’ নাম রাখতে গিয়ে অনেকেই এমন নাম নির্বাচন করেন, যা হয় অর্থহীন বা এমন শব্দ যা কোনো নাম হতে পারে না। কোনো একটি শব্দ কুরআন মাজীদে পেয়েছেন এবং পছন্দ হয়েছে তো সেটা সন্তানের নাম রেখে দিয়েছেন।

    কিছুদিন আগে এক ভাই জিজ্ঞেস করলেন, ‘ফাবি’ নামের অর্থ কী? প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি যে‘ফাবি’ শব্দটা কোত্থেকে এল। পরে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, সূরা আররাহমান-এর

    فَبِأَيِّ آلاءِ رَبِّكُما تُكَذِّبانِ

    এই আয়াতের প্রথম দুই অক্ষর ‘ফাবি’ থেকে রাখা হয়েছে। এটি সূরা আররাহমানে বারবার এসেছে,তার কাছে ভালো লেগেছে, সন্তানের নাম রেখে দিয়েছেন।

    আমি তো শুনে অবাক। বলে কী! বিচ্ছিন্ন দুটি অক্ষর দিয়ে রাখা নামের এখন কী অর্থ হবে?কোনোই অর্থ নেই। সুতরাং নাম রাখার আগে কোনো আলেম থেকে জেনে নেওয়া; আমি যে নাম রাখতে চাচ্ছি সেটি কোনো নাম হতে পারে কি না এবং এটি অর্থবহ ইসলামী নাম কি না।

    সন্তানের নাম সুন্দর ও অর্থবহ হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণে কোনো সাহাবীর নাম যদি অসুন্দর হত নবীজী  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সুন্দর নাম রাখতেন। হাদীসে এসেছে,এক সাহাবিয়্যার নাম ছিল ‘আছিয়া’ যার অর্থ অবাধ্য-নাফরমান। তখন নবীজী তার নাম রাখলেন ‘জামীলা’ যার অর্থ ‘সুন্দর’। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ২১৩৯) সুতরাং এ বিষয়ে আমরা সচেতন হব।

    আযানের সময় বক্তৃতা বন্ধ রাখলেন মোদী

    পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি- বিজেপির পক্ষে প্রচারণা করতে এসে আযানের শব্দ শুনে বক্তৃতা বন্ধ রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বক্তৃতার সময় মোদী যখন তৃণমূল ও বামফ্রন্টের সমালোচনা করছিলেন ঠিক তখনই কিচ্ছুক্ষণের জন্য বক্তৃতা বন্ধ রাখেন তিনি।
    ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুরের বিএনআর ময়দানে এ ঘটনা ঘটে। আজান চলাকালে জনসভায় উপস্থিত লোকজন তাকে বক্তৃতা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানালেও হাত উঠিয়ে তাদের শান্ত থাকতে বলেন মোদী।
    এসময় তিনি বলেন, ‘ক্ষমা করবেন। আমার কারণে কারো প্রার্থনায় কোনো সমস্যা হওয়া উচিত নয়, তাই আমি কয়েক মিনিট অপেক্ষা করছি।’
    বিজেপিবিরোধী অনেক নেতারই দাবি, রাজ্যে মুসলমান সংখ্যালঘুদের ভোটে ভাগ বসাতেই মোদীর এই নীরবতা। সাম্প্রদায়িকতার দায়ে অভিযুক্ত এই দলটিকে দেশটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সাধারণত এড়িয়ে চলে। তবে গত জাতীয় নির্বাচনে চিরাচরিত হিন্দুত্ববাদকে বাদ দিয়ে উন্নয়নের স্লোগান তুলে ক্ষমতায় আসে বিজেপি।

    আমাজন ডটকমে বাংলাদেশের তানভীর

    ছোটবেলা থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হবেন। যখন স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করেছেন, তখনো এদেশে কম্পিউটার বিরাট অরাধ্য বস্তু। প্রথম কম্পিউটারের স্পর্শ পান বিশ্ববিদ্যালয়ে, সেখান থেকেই তার কম্পিউটারের প্রতি ভালোবাসার সূচনা।
    সম্প্রতি, বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন মার্কেটপ্লেস আমাজন ডটকমে যোগ দিয়েছেন সৈয়দ তানভীর মোনাওয়ার। সুনামগঞ্জের ছেলে তিনি। নতুন কর্মস্থলে তার পদবি সিনিয়র প্রোডাক্ট ম্যানেজার।
    ধাপে ধাপে যোগ্যতা ও মেধার পরীক্ষা দিয়ে আসতে হয়েছে এ পর্যন্ত। অনেকটা যেন লিটমাস পেপারে অম্ল-ক্ষারের পরীক্ষা। তানভীর পড়ালেখাতেও বরাবরই মেধাবী ছিলেন। ১৯৯৩ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিকে স্টার মার্কস, ১৯৯৫ সালে ইস্পাহানি ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকে কুমিল্লা বোর্ডে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থান অর্জন করেন। অবশ্য শুধু ভালো পড়াশোনা ছাড়াও তিনি কবিতা লিখতেন, গান শুনতেন ও গল্পের বইয়ে ডুবে থাকতেন। উচ্চমাধ্যমিকের পরে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে। কিন্তু, কবিমন নিয়ে মানিয়ে নিতে পারেননি পদার্থবিজ্ঞানের কাটখোট্টা বইপত্রের সঙ্গে।
    শেষমেশ একবছর পর পুরোনো ইচ্ছাতেই ফিরে যান, কম্পিউটার সায়েন্সে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় কম্পিউটারের জগতেই ব্যস্ত থেকেছেন। স্নাতক-স্নাতকোত্তর শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই একটা বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি হয়, পরে তাদের মাধ্যমেই চলে যান জাপানে। সেখানে থেকেই নিজের যোগ্যতাকে ঝালাই করেছেন। চাকরির পাশাপাশি সেখান থেকেই এমবিএ করেছেন যুক্তরাজ্যের লিচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। চাকরিবদল করে জাপানের শীর্ষস্থানীয় কিছু প্রতিষ্ঠানেও কাজ করেছেন। ব্যাংকিং আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবেও কাজ করেছেন।
    আমাজনে যোগ দেওয়ার আগে সর্বশেষ কাজ করেছেন জাপানের টেক জায়ান্ট রাকুটেনে, বিশ্বের বহুল ব্যবহূত ইন্সট্যান্ট ম্যাসেঞ্জার ‘ভাইবার’ এই প্রতিষ্ঠানটির মালিকানাধীন। মূলত তিনি সফটওয়্যার প্রকৌশলী হলেও বেশিরভাগ সময়ই কাজ করেছেন প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট প্রফেশনাল হিসেবে। এই বিষয়ে নিজে একটি বইও লিখেছেন। পাশাপাশি ব্যক্তিগত ব্লগে প্রায়শই গল্প-কবিতা লিখেন।
    তানভীরের ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা হলো কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা। এছাড়া, বড় কোনো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হতে চান তিনি। দেশে ইলিমেন্টারি স্কুল খোলার স্বপ্নও দেখেন তিনি। তানভীরের ভাষায়, সব শিক্ষাকে পূর্ণতা দেয় নৈতিক শিক্ষা। সেই শিক্ষা না থাকলে সবই বৃথা।

    রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল হলে কঠোর আন্দোলন – আল্লামা আহমদ শফী   

    রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী ও মহাসচিব হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, যারা আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করতে চায় তারা স্বাধীনতা ও জনগণের শক্র। পৃথক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় নাস্তিক্যবাদিদের ফাঁদে পা না দিয়ে এ ধরনের কর্মকা- থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। ২৮ বছর আগের পুরনো একটি রিট মামলাকে সচল করে বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলাম’ থাকবে কী থাকবে না; এই বিষয়ে শুনানির জন্যে হাইকোর্টের গ্রহণ করা রিট মামলা বাতিলের দাবি এবং দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতিসহ নানা পর্যায়ে ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের আহ্বানে গত ২৫ মার্চ শুক্রবার বাদ জুমা দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ব্যাপকহারে শরিক হয়ে কর্মসূচিকে সফল করায় দেশবাসীর প্রতি ধন্যবাদ ও শোকরিয়াও জ্ঞাপন করেন সংগঠনটির আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী এবং মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী। গতকাল (রোববার) এক বিবৃতিতে হেফাজত আমির বলেন, বাংলাদেশের জনগণ নাস্তিক্যবাদি ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হতে দিবে না। যারাই ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে, তারাই এক সময় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, গত শুক্রবার দেশের এমন কোনো শহর ছিল না, যেখানে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়নি। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত নাস্তিক্যবাদি চক্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মিছিলে সেদিন রাজপথে তৌহিদী জনতার ঐক্যের ঢল নেমেছিল। সেদিন কোটি কোটি মুসলমি জনতা ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদী চক্রসহ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের জন্যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সকল মহলের কাছে এই কঠিন বার্তা পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে যে, দেশবাসী ইসলামের স্বার্থে সীসাঢালা প্রাচীরের মতো ঐক্যবদ্ধ এবং ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো চক্রান্তই তারা সফল হতে দিবে না। হেফাজত আমির বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল নিয়ে চক্রান্ত বন্ধ না হলে প্রয়োজনে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনের মাধ্যমে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। বিবৃতিতে হেফাজত আমির দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসলাম ও মুসলিম স্বার্থসংশ্লিষ্ট যেকোনো প্রতিকূলতার মোকাবেলায় আমাদের এই ঐক্যবদ্ধ অবস্থানকে আরো দৃঢ় করতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যর্থ হয়ে উচ্ছেদ হয়ে যাবে। অপর এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনাইদ বাবুনগরী গত শুক্রবার বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে সারাদেশে প্রতিবাদের গণজোয়ারে শামিল হওয়ায় দেশবাসীর প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি এবং শাসক মহলসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখার পক্ষে দেশবাসীর ঐকবদ্ধ দৃঢ় অবস্থানের কথা জানান দিতে সক্ষম হয়েছি। জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয় এবং যারা চায় না এদেশের সকল ধর্মমতের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাধ্যমে সুখে-শান্তিতে সুন্দরভাবে বসবাস করুন, তারাই আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করে দেশে গোলযোগ তৈরি করতে চায়। এই ষড়যন্ত্রকারীরা দেশের শক্র, দেশের গণমানুষেরও শক্র এবং এরা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয়। হেফাজত মহাসচিব আরও বলেন, বাংলাদেশে ৯২ ভাগ মুসলমান যেমন স্বাধীন ধর্মীয় ও নাগরিক অধিকার নিয়ে বসবাস করবে, তেমনি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সকল অমুসলিমও তাদের পূর্ণ ধর্মীয় ও নাগরিক অধিকার নিয়ে বসবাস করবেন। আমরা চাই মুসলমানদের পাশাপাশি অন্যান্য সকল ধর্মাবলম্বীও যেন এদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সাথে সুখে শান্তিতে বসবাস করে। যারা সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম মুছে দিতে চায়, তারা মূলত এদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধাতে চায়।

    মন্ত্রী হচ্ছে সু চি!

    মিয়ানমারের ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জয়লাভের পর পার্টি প্রধান অং সান সু চিকে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার তালিকায় স্থান দেয়া হয়েছে। দুই সন্তান বিদেশি নাগরিক হওয়ায় মিয়ানমারের সংবিধানের ধারা অনুযায়ী দেশটির প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি সু চি। তিনি মন্ত্রিসভার পদ গ্রহণ করবেন না এমন ধারণাই ব্যাপকভাবে করা হচ্ছিল।
    কিন্তু মিয়ানমারের নতুন প্রেসিডেন্ট এনএলডি দলীয় থিন কিয়াও পার্লামেন্টে মন্ত্রী হিসেবে যে ১৮ জনের নাম প্রস্তাব করেছেন, তার মধ্যে সু চি-র নামও আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
    বিবিসির ইয়াঙ্গুন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সু চির অধীনে পররাষ্ট্র, জ্বালানি, শিক্ষা এবং প্রেসিডেন্ট দফতরের মন্ত্রণালয় থাকবে। প্রস্তাবিত নতুন মন্ত্রিসভায় আর কোনো নারী সদস্য নেই বলে জানিয়েছে তিনি।
    নতুন প্রেসিডেন্ট কিয়াও সু চি-র ঘনিষ্ঠ মিত্র। কিয়াও প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে সু চি বেশ কয়েকবার বলেছেন, নতুন প্রেসিডেন্ট ‘তার অধীনে’ থাকবে এবং সরকারি কোনো পদে না থেকেও তিনিই সরকার পরিচালনা করবেন।

    প্রস্তাবিত মন্ত্রিসভার ঘোষণা বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। কারণ সরকারের বাইরে থেকেই সু চি সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল।

    তাসকিনের নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখলো আইসিসি

    রিভিউয়ের পরেও তাসকিন আহমেদের নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে আইসিসি। নিজের অ্যাকশনের পুনঃপরীক্ষার পরে অ্যাকশন ‘সংশোধন’ এর পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন এই ফাস্ট বোলার।
    এর আগে  জানা গিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আপিলের সুবাদে আইসিসি তার সিদ্ধান্ত আজ সকাল বেলায় প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে বলে বিশ্বস্ত কিছু সূত্র জানিয়ে ছিল ইত্তেফাককে। গতকালই আইসিসির টেকনিক্যাল কমিটি, জুডিশিয়াল কমিশন এবং বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে শুনানিতে অংশ নিতে ব্যাঙ্গালুরুতে যান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সেখানে অনুষ্ঠিত শুনানি শেষে পাপনকে আইসিসি তার মনোভাব জানালেও সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেনি। বুধবার সকালে আইসিসি জানিয়েছে আইসিসির জুডিশিয়াল কমিশনার রিভিউয়ের পরে পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে।
    গত ৯ মার্চ ধর্মশালায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের দুই বোলার আরফাত সানি ও তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন সন্দেহজনক বলে রায় দেন ম্যাচের কর্মকর্তারা। তাদের রিপোর্টের পর আরাফাত সানি ১২ মার্চ ও তাসকিন ১৫ মার্চ নিকটস্থ চেন্নাইয়ের শ্রী রামচন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরিতে অ্যাকশনের পরীক্ষা দেন। ১৯ মার্চ আইসিসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে বাংলাদেশের দুই বোলার আরাফাত সানি ও তাসকিন আহমেদকে সব ধরনের বোলিং থেকে নিষিদ্ধ করেছে তারা। আইসিসি বলেছে, চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় আরাফাত সানির প্রায় সব ডেলিভারি বৈধ সীমার ওপরে বলে দেখা গেছে। তাসকিনের ক্ষেত্রে কিছু কিছু ডেলিভারি অবৈধ বলে জানিয়েছে আইসিসি।

    স্কুলে হাজির দশ ফুটি কুমির!

    শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢোকার আগ মুহূর্তে দেখল স্কুলের সামনে বসে আছে বিশাল এক কুমির। এই দৃশ্য দেখে যে যেদিকে পারল দৌড়াতে শুরু করল।
    খবর পেয়ে স্কুলের বাইরে অপেক্ষমাণ অভিভাবকরাও সন্তানদের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে ছুটে এল। এত লোক দেখে কুমিরটিও এদিক সেদিক দৌঁড়াতে শুরু করল। স্কুল কর্তৃপক্ষ উপায় না দেখে চিড়িয়াখানায় ফোন করে। সেখান থেকে লোক এসে কুমির ধরে চিড়িয়াখানায় নিয়ে যায়। ঘটনাটি শুক্রবার ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার লেকল্যান্ডের একটি স্কুলে। কুমিরটি ধরার পর দেখা গেছে এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ ফুট। অভিভাবকরা ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কুমিরটির ছবি প্রকাশ করেছে।

    মাউন্ট ৎসুকুবা: রহস্য ঘেরা দুটি শৃঙ্গ

    রাজধানী টোকিও থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ইবারাকি প্রিফেকচারের মাউন্ট ৎসুকুবা। আদিকাল থেকেই জাপানিরা পর্বতটির সাথে পরিচিত ছিল কেননা পাহাড়টির সাথে মাউন্ট ফুজি’র চেহারায় বেশ মিল রয়েছে। প্রতি বছর ২০ লক্ষ মানুষ বেড়াতে আসেন। সেই পুরনো কাল থেকেই বিশ্বাস করা হতো পাহাড়টিতে রহস্যময়ী এক শক্তি বাস করে।

    মাউন্ট ৎসুকুবা’র দু’টি চূড়া। জাপানিদের বিশ্বাস পূর্ব দিকের চূড়াটি দেবী এবং পশ্চিমেরটি দেবতা। সেখানে রয়েছে একটি পাথর যেটিকে বলা হয় “বুজো-গা-ইশি” যা স্বামী-স্ত্রী’র প্রতীক। ৭ম ও ৮ম শতাব্দীতে তরুণ তরুনীরা এখানে এসে ভোজ করতো, তাদের উদ্দেশ্য ছিলো বিয়ের সঙ্গী খোঁজা। আজকের তরুনরা পাহাড়ে আসে প্রাচীন রোমান্সের শক্তি গ্রহণ করতে। তারা জীবন সঙ্গী খুঁজতে “একাকী মানুষদের পর্বতারোহন” এ অংশ নেন, তাদের প্রত্যাশা থাকে এই পর্বতারোহনের ফলে তারা যেনো মিষ্টি দম্পতিতে পরিণত হতে পারবেন।

    এখানে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে ঐতিহ্যবাহী মলম বিক্রির নাট্যাংশ যাকে বলা হয় “গামা নো আবুরা” কিম্বা “ব্যাঙের তেল”। এটি এক ধরনের বিজ্ঞাপন যা ব্যাঙ এর চর্বিযুক্ত ঘাম থেকে তৈরী হয়ে থাকে, এই ব্যাঙ শুধুমাত্র ৎসুকুবা’তেই পাওয়া যায়। এর রয়েছে বিশেষ দক্ষতা, বলা হয় যে কোনো ক্ষত স্থানে লাগালে তা তাৎক্ষনিক ভাবে সরিয়ে তোলে। প্রায় ২০০ বছর আগে থেকেই এই চিকিৎসা চলছে।

    শরৎকাল ম্যান্ডারিন কমলার ফসল কাটার সময় মাউন্ট ৎসুকুবা হয়ে ওঠে অনন্য। এটি হলো “ফুকুরে মিকান” ম্যান্ডারিন যার রয়েছে তীব্র অম্লতা এবং ঘ্রাণ। স্থানীয় মসলা “শিচিমি” তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হয়। লাল মরিক, কল এবং সাদা তিল শৈবাল এবং ম্যান্ডারিন চূর্ণ সব মিলে প্রস্তুত হলো “শিমিজি”, একটি জাদুর মসলা যা যে কোনো খাবারকে সুস্বাদু করে তোলে।

    স্বাধীনতার মাস : ইয়া আল্লাহ! এই জাতিকে সর্বকল্যাণে ভূষিত করুন

    আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা। তিনি পরম দয়ালু অতি মেহেরবান। তাঁর দয়া ও করুণার প্রকাশ আমাদের সত্তায়, চারপাশে। জাতীয় কবির ভাষায় : কার করুণায় পৃথিবীতে এত ফসল ও ফুল হাসে/ বর্ষার মেঘে নদ-নদী-স্রাতে কার কৃপা নেমে আসে/ কার শক্তিতে জ্ঞান পায় এত পায় মান-সম্মান/ এ জীবন পেল কোথা, হতে তার পেল না আজিও জ্ঞান।’

    তবে এ তাঁর করুণার একটি দিক। পৃথিবীর জীবনে বেঁচে থাকার সকল উপায় ও ব্যবস্থা তাঁরই দান। তাঁর করুণার আরেক দিক, আখিরাতের জীবনের মুক্তি ও শান্তির ব্যবস্থা। এ উদ্দেশ্যেই তিনি নাযিল করেছেন তাঁর পাক কালাম এবং যুগে যুগে প্রেরণ করেছেন অনেক নবী ও রাসূল। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা লাভ করেছি শেষ আসমানী কিতাব- আলকুরআনুল কারীম এবং শেষ নবী- হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে।

    নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতকে আখিরাতের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন এবং নাজাতের পথ দেখিয়েছেন। শুধু পথই দেখাননি, চূড়ান্ত বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতার সাথে উম্মতকে সেই পথে পরিচালিত ও প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। তাঁর আগেও যুগে যুগে আল্লাহ তাআলা মানবজাতির হেদায়েতের জন্য অনেক নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন। তাঁদের সবার সাধারণ বৈশিষ্ট্য ছিল, বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতা। প্রত্যেক নবী তাঁর কওমকে বিভিন্ন ভাষায় একথাই বলেছেন إني لكم ناصح امين ‘আমি তোমাদের কল্যাণকামী ও বিশ্বস্ত।’ কুরআন মাজীদে নবীগণের দাওয়াতের যে বিবরণ এসেছে তাতে এ বিষয়টি বারবার উল্লেখিত হয়েছে। পৃথিবীতে বহু দাবি ও আহ্বান উচ্চারিত হয় কিন্তু এক কঠিন বাস্তবতা এই যে, দাবি মাত্রই সত্য নয়, আহ্বান মাত্রই কল্যাণের আহ্বান নয়। তাহলে সত্য ও মিথ্যার মাঝে এবং সততা ও কপটতার মাঝে পার্থক্যের উপায় কী? এর বড় উপায় হচ্ছে আহ্বানকারীর বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতা। এ এক সহজ সত্য। তবে এই সত্য কথাটি নীতিগতভাবে বোঝা যত সহজ প্রায়োগিক ক্ষেত্রে বোঝা তত সহজ নয়। একারণে নবী-রাসূল আলাইহিমুস সালামের মতো শ্রেষ্ঠ মানবগণকেও অবিশ্বস্ততার অপবাদ শুনতে হয়েছে। আর এভাবে কওমের একটি শ্রেণি ভ্রান্তি ও মত্ততার মধ্যেই জীবন কাটিয়েছে এবং পরিণামে ধ্বংস হয়েছে। পক্ষান্তরে যেসব সৌভাগ্যবান কওমের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামী মানুষটিকে চিনতে পেরেছেন এবং তাঁর আনুগত্য করেছেন। পরিণামে তারা সফল হয়েছেন ও নাজাত পেয়েছেন। একারণে ছোট-বড় সফলতা-ব্যর্থতা এবং ব্যক্তি ও সমাজের মুক্তি ও সাফল্য নির্ভর করে বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামীকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারার উপরে। যে করুণাময় সত্তা মানবের পার্থিব জীবনের প্রয়োজন পূরণের ধারা সৃষ্টির সূচনা থেকে অব্যাহত রেখেছেন তিনিই মানবের নাজাত ও মুক্তি এবং শান্তি ও সফলতার জন্য সঠিক পথনির্দেশ ও পথনির্দেশকের ধারাও জারি রেখেছেন। শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে যে পূর্ণাঙ্গ ও শাশ্বত দ্বীন তিনি মানবজাতিকে দান করেছেন তাই কিয়ামত পর্যন্ত মানুষের জন্য সঠিক পথনির্দেশ। আর এই দ্বীনের সত্যিকারের ধারক-বাহক -খোলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবা-তাবেয়ীন, আইম্মায়ে মুজতাহিদীন হচ্ছেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওয়ারিছ এবং তাঁর পর উম্মাহর সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামী শ্রেণি। দেশে দেশে কর্মে ও বিশ্বাসে এবং আদর্শের প্রচারে এঁদের যারা উত্তরসূরী তারাই স্ব স্ব জনদের সর্বাধিক বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামী মানুষ। আর এই কল্যাণকামিতা বিশেষ কোনো শ্রেণির জন্য নয় সকল শ্রেণি-পেশার ও সর্বস্তরের মানুষের জন্য। একটি হাদীসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইরশাদ الدين النصيحة ‘দ্বীন হচ্ছে কল্যাণকামিতা’। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন- لمن يا رسول الله ‘আল্লাহ রাসূল! কার জন্য কল্যাণকামিতা? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, لله ولرسوله ولائمة المسلمين وعامتهم ‘আল্লাহর জন্য, তাঁর রাসূলের জন্য, মুসলমানদের ইমামগণের জন্য এবং সাধারণ মুসলমানদের জন্য।’ সুতরাং ইলমে ওহীর যারা ধারক ও বাহক তাদেরও পরিচয়, বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতা। তাঁরা ওফাদার আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসূলের প্রতি, মুসলমানের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের প্রতি এবং সর্বস্তরের মুসলমানগণের প্রতি। এই ওফাদারিরই দাবি, সত্যকে সত্য বলা মিথ্যাকে মিথ্যা বলা। ব্যক্তি ও সমাজের জন্যে যা কল্যাণকর তাকে কল্যাণকর বলা আর ব্যক্তি ও সমাজের জন্যে যা অকল্যাণকর তাকে অকল্যাণকর বলা।

    ঐ কওমই সফলতার দিকে এগিয়ে যায় যে কওমের দা‘য়ীগণ নিজেদের বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতার রক্ষায় সক্ষম থাকেন আর মাদ‘উ তথা জনসাধারণ তাদের প্রকৃত কল্যাণকামীদের চিনে তাদের পথনির্দেশ গ্রহণ করতে পারে। আল্লাহ তাআলা এই দেশ ও জাতিকে এই মহাসৌভাগ্য দান করুন এবং সকল কল্যাণে ভূষিত করুন। আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।

    উত্তর কোরিয়ার নতুন করে ক্ষেপনাস্ত্র উৎপণের আশংকায় সতর্কাবস্থায় এসডিএফ

    জাপানের সেলফ ডিফেন্স ফোর্সের সদস্যরা উড়ে আসা যে কোনো দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিহত করতে নিজেদেরকে প্রস্তুত করে রেখেছেন।

    শুক্রবার উত্তর কোরিয়া দুটি দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করে। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপের পর পুনরায় শুক্রবার তারা দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করে।

    ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য প্যাক-৩ ক্ষেপনাস্ত্র বিধ্বংসী রকেট উত্ক্ষেপণকারী যান শুক্রবার রাতে টোকিওর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাঙ্গনে পৌঁছায়। মন্ত্রণালয়ের আঙ্গিনায় এগুলোকে স্থাপন করা হবে।

    অত্যাধুনিক রাডার দিয়ে সজ্জিত করা এইজিস ডেস্ট্রয়ার জাপানের সমুদ্রসীমায় মোতায়েন করা হচ্ছে।

    স্বচ্ছতা : মুমিনের বড় গুণ

    মাওলানা মুহাম্মাদ ইমদাদুল হক

    একটি প্রয়োজনে এক ভাইয়ের কাছে গিয়েছিলাম। সেখানে আরো দু’জন উপস্থিত ছিল। এক ব্যক্তি সম্পর্কে আলোচনা চলছিল- ‘আরে জানো না, তার একটু প্রশংসা করে দিলেই হয়। একদিন ভরা মজলিসে আমি তার খুব প্রশংসা করে দেই, এরপর থেকে আমার সাথে খুব ভাব। আর কোনো কঠোরতা করে না যা অন্যান্য অধীনস্তদের সাথে করে।’

    একজন আরেকজনের প্রশংসা করলে ঐ ব্যক্তি প্রশংসাকারীকে আন্তরিক মনে করবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ এটা তার প্রতি আন্তরিকতা দেখানো এবং তার সাথে নিজের একাত্মতা প্রদর্শন করা। তবে এটাও সত্য যে,প্রশংসা কামনা করা, প্রার্থনা করা, অপেক্ষায় থাকা, ঘটা করে প্রশংসা করানো ইত্যাদি গুনাহ তো বটেই, সাথে সাথে খুবই হীনতা ও নিন্দনীয় কাজ। আর প্রশংসা শুনে ন্যায়-নীতি, সত্য-মিথ্যা ও বাস্তবতার জ্ঞান বিবেচনা হারিয়ে ফেলা  তো আরো ভয়াবহ। এটি আজকের প্রসঙ্গ নয়, আজকের প্রসঙ্গ হলো পূর্বেরটি।

    একটি মানুষের প্রশংসা করে তাকে খুশী করে দিলাম। অথচ আমার অন্তরে তার প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা নেই। একটি মানুষকে সহজ সরল পেয়ে তাকে কাবু করে ফেললাম। মানলাম সেও প্রশংসা কামনা করে, প্রশংসা শুনে খুশী হয়ে যায়, কিন্তু আমার মনে তো তার প্রতি শ্রদ্ধা নেই। তার পরও মুখে মুখে তার প্রশংসা করলাম। এটা তো অবশ্যই অস্বচ্ছতা, কুটিলতা, এমনকি প্রতারণা। এটা মুসলিম বৈশিষ্ট্যের পরিপন্থী।

    সরাসরি মিথ্যা বলা, ওজনে কম দেওয়া, অন্যকে ঠকানো এগুলোকে সবাই প্রতারণা মনে করি, কিন্তু কতক বিষয় এমন আছে যেগুলোকে সাধারণত অস্বচ্ছতা মনে করা হয় না, অথচ তা মারাত্মক অস্বচ্ছতা।

    একজনের নিকটস্থ হওয়ার জন্য তার প্রশংসা করে দেয়া, তার থেকে কোনো কিছু উদ্ধারের জন্য লৌকিক তারিফ করা, দেখা হলেই বলা আমরা আপনার কথা বলতেই থাকি। আমি তার প্রশংসা করলে সেও আমার প্রশংসা করবে এ মানসে তার স্তুতি গাওয়া, কর্তা বা বসের তোষামদ করা, কোনো পদ পাওয়ার জন্য অথবা অন্যান্য সহকর্মিদের থেকে বেশী নৈকট্যশীল হওয়ার জন্য ভনিতা করে কর্তা ও বসের তারীফ ও সেবা করা,ভালোবাসা দেখানো, তাদেরকে হাদিয়া, গিফট দেওয়া- এসব আজ ‘শিল্প’ বা ‘দর্শনে’ পরিণত হয়েছে।

    হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর নিকট কিছু লোক এসে বললেন, আমরা আমীরদের দরবারে যাই, তখন তাদের সামনে (প্রশংসামূলক) এমন কিছু বলি, যা বাইরে বলি না। এ কথা শুনে হযরত ইবনে উমর রা. বললেন, كنا نعدها نفاقا   আমরা এগুলোকে ‘নিফাক’ (কপটতা, মুনাফেকী) গণ্য করতাম। -সহীহ বুখারী,হাদীস ৭১৭৮

    মুসলমানদের আমীরদের কল্যাণকামিতার বিষয়ে যে হাদীস এসেছে তার ব্যাখ্যায় ইমাম নববী বলেন,

    وأن لايغروا بالثناء الكاذب عليهم তাদেরকে যেন মিথ্যা প্রশংসা শুনিয়ে ধোঁকা না দেয়। এটাও কল্যাণকামনার অংশ।

    কোনো ব্যক্তি আরেক ব্যক্তি থেকে এমন ভাব-সাব নিয়ে হাদীস বর্ণনা করছে যেন সে সরাসরি তার কাছ থেকে শুনেছে। আসলে সরাসরি শুনেনি। মুহাদ্দিসীনের পরিভাষায় একে তাদলীস বলা হয়। সেটিও এ অস্বচ্ছতার কারণে নিন্দনীয়। কবি সুন্দর বলেছেন-

    دلس للناس حديثه + والله لا يقبل تدليساً

    ‘ম্যানেজ’ করে চলতে পারা, ‘ভাজ’ দিয়ে থাকতে পারা, ন্যায়নীতি ও আদর্শ বাদ দিয়ে কর্তা ও বসের মনোভাব উদ্ধার করে চলা, নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য অপরকে কৌশলে প্রতারণায় ফেলা ইত্যাদি সব কিছু আজ ‘বুদ্ধিমত্তা’, ‘দুরদর্শিতা’ ও ‘বিচক্ষণতা’য় পরিণত হয়েছে।

    বাংলা অভিধানে ‘চালাকি’ ‘চতুরতা’ ‘কুটিলতা’ ইত্যাদি শব্দ রয়েছে। জানি না এসবের জন্য কোন প্রকারের শব্দ প্রযোজ্য।

    مَلْعُونٌ مَنْ ضَارَّ مُؤْمِنًا أَوْ مَكَرَ بِهِ.

    ধীকৃত সে, যে কোনো মুমিনের ক্ষতি করে অথবা তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৪০

    আরেক হাদীসে আছে,

    إن أخوف ما أخاف على أمتي كل منافق عليم اللسان.

    উম্মতের ব্যাপারে আমার যে বিষয়গুলোকে ভয় হয় তন্মধ্যে ভয়ংকরতম হচ্ছে বাকপটু মুনাফিক। -মুসনাদে আহমদ, ১/২২

    সাহাবী হযরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

    يطبع المؤمن على الخلال كلها إلا الخيانة والكذب.

    স্বভাবগতভাবে একজন মুমিন -এর মাঝে (ভালো-মন্দ) সকল চরিত্রই থাকতে পারে, দুটি চরিত্র ছাড়া এক. খিয়ানত, দুই. মিথ্যা। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২২১৭০; মুয়াত্তা মালেক, শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৪৪৭১

    খিয়ানত ও মিথ্যার মূল অস্বচ্ছতা, এটি ঈমানের সাথে মেলে না।

    ঈমান ও নিফাকের পার্থক্যই এখানে যে, মুমিন স্বচ্ছ, মুনাফিক অস্বচ্ছ! তাবুক যুদ্ধে মুনাফিকদের অস্বচ্ছতা এবং ঐসব সাহাবী যারা যুদ্ধে যেতে পারেননি তাদের অবস্থার বিবরণ দিয়ে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের সম্বোধন করে বলেন,

    يا ايها الذين آمنوا اتقوا الله وكونوا مع الصادقين.

    “হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক।” ‘সাদেকীন’ এখানে‘মুনাফিকীন’-এর বিপরীতে এসেছে ‘কাফিরীন’-এর বিপরীতে নয়। কারণ আয়াতের উদ্দেশ্য মুনাফিকদের সঙ্গ ত্যাগ করার নির্দেশ দান। সাদেকীন দ্বারা উদ্দেশ্য এখানে মুমিন। অর্থাৎ তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং মুমিনদের সাথে থাক। তাদের সাথে জিহাদে শরীক হও, মুনাফিকদের সাথে থেকো না এবং জিহাদ থেকে লুকিয়ে থেকো না।

    মুনাফিক অস্বচ্ছ,

    يرضونكم بأفواههم وتأبى قلوبهم

    [তারা মুখে তোমাদের সন্তুষ্ট রাখে, কিন্তু তাদের হৃদয় তা অস্বীকার করে। -সূরা তাওবা (১০) : ৮]

    মুমিন স্বচ্ছ তাই তারা সত্যবাদী। মুমিনরাই যে সত্যবাদী আল্লাহ তাআলা তা অন্য আয়াতে এভাবে বলেছেন,

    اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ ثُمَّ لَمْ یَرْتَابُوْا وَ جٰهَدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ؕ اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الصّٰدِقُوْن.

    মুমিন তো তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে অতপর তাতে কোনো সন্দেহে পতিত হয়নি এবং তাদের জানমাল দিয়ে আল্লাহর পধে জিহাদ করেছে। তারাই তো সত্যবাদী। -সূরা হুজুরাত (৪৯) : ১৫

    মুমিন এজন্যই সত্যবাদী যে, সে যা বলে তার অন্তরেও তা থাকে এবং কাজে কর্মে হুবহু সেটাই বাস্তবায়ন করে দেখায়। এতে কোনো লুকোচুরি বা অস্বচ্ছতা থাকে না।

    হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে

    التَّاجِرُ الصَّدُوقُ الْأَمِينُ مَعَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ

    সত্যবাদী ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী সিদ্দীক ও শহীদগণের সাথে থাকবে।

    সত্যবাদী ব্যবসায়ী কারা তা হাদীসে এভাবে বর্ণিত হয়েছে –

    فَإِنْ صَدَقَا وَبَيَّنَا بُورِكَ لَهُمَا فِي بَيْعِهِمَا وَإِنْ كَذِبَا وَكَتَمَا مُحِقَ بَرَكَةُ بَيْعِهِمَا.

    যদি ক্রেতা-বিক্রেতা সত্য বলে এবং ভালো-মন্দ প্রকাশ করে দেয় তাহলে তাদের লেনদেন বরকতময় হবে। আর যদি উভয়ে মিথ্যা বলে এবং দোষত্রুটি গোপন করে তাহলে এ লেনদেন থেকে বরকত উঠিয়ে নেওয়া হবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৩২

    কুরআন হাদীসে স্বচ্ছতার প্রশংসা এবং অস্বচ্ছতার নিন্দা কতভাবে এসেছে তা একত্র করা মুশকিল। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম বলেছেন,

    شَفَاعَتِي لِمَنْ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ مُخْلِصًا، يُصَدِّقُ قَلْبُهُ لِسَانَهُ، وَلِسَانُهُ قَلْبَهُ.

    আমার সুপারিশ তার জন্য যে সাক্ষ্য দিবে ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই’। এমন ইখলাসের সাথে যে, তার অন্তর তার মুখকে সত্যায়ন করবে এবং মুখ অন্তরকে সত্যায়ন করবে। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৮০৭০

    এক মহিলা নবীজীর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার একজন সতীন রয়েছে। তো আমি যদি চালচলনে, কথাবার্তায় সতীনের নিকট এমন ভাব প্রকাশ করি যে, স্বামী আমাকে অনেক কিছু দেয় এতে কি পাপ হবে? উত্তরে নবীজী বলেছেন,

    الْمُتَشَبِّعُ بِمَا لَمْ يُعْطَ كَلَابِسِ ثَوْبَيْ زُورٍ.

    যে লোক এমন বিষয়ে প্রাপ্তি ও তৃপ্তির ভাব প্রকাশ করে যা সে প্রাপ্ত হয়নি সে যেন মিথ্যার একপ্রস্থ কাপড় পরিহিতের ন্যায়।

    কোনো ব্যক্তি আবেদ যাহেদের পোশাক পরে বুঝায় সে তাদের একজন এবং এমন তাকওয়া ও বিনয় প্রকাশ করে যা তার অন্তরে নেই। তাকে মিথ্যার কাপড় পরিধানকারী বলা হয়। মানুষ সাধারণত দুইটি কাপড় পরিধান করে। একটি শরীরের ঊর্ধ্বাংশে, অপরটি নি¤œাংশে। তাই দুই কাপড় পরিহিতের ন্যায় বলা হয়েছে। অর্থাৎ সে সম্পূর্ণরূপে মিথ্যায় আহত।

    হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    إِنَّ شَرَّ النَّاسِ ذُو الْوَجْهَيْنِ، يَأْتِي هَؤُلَاءِ بِوَجْهٍ وَهَؤُلَاءِ بِوَجْهٍ.

    সবচে নিকৃষ্ট মানুষ হল দু’মুখো মানুষ। এর কাছে আসে এক চেহারায় ওর কাছে যায় আরেক চেহারায় । -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৮০৬৯

    হযরত আসমা বিনতে উমাইস রা. বলেন, যেসব সখী আয়েশাকে সাজিয়ে নবীজীর বাসরে নিয়ে গিয়েছিল আমিও ছিলাম তাদের একজন। আল্লাহর শপথ, তখন তাঁর ঘরে শুধু এক পেয়ালা দুধ ছিল। প্রথমে নবীজী তা থেকে পান করেন অতপর আয়েশাকে দেন। সে খুব লজ্জা করছে এবং নিচ্ছে না  দেখে আমরা বললাম,নবীজীর হাত ফিরিয়ে দিও না, নিয়ে নাও তখন সে খুব লাজুকতার সাথে নিল ও পান করল। অতপর নবীজী বললেন, তোমার সখীদের দাও। আমরা বললাম, আমাদের ক্ষুধা নেই। তখন নবীজী বললেন, দেখ, ক্ষুধা ও মিথ্যা একত্র করো না। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোনো কিছুর প্রতি আমাদের চাহিদা আছে বটে তবে কেউ দিলে বলি, আমার এখন চাহিদা নেই এটা কি মিথ্যা হবে? তখন নবীজী বললেন,

    إِنَّ الْكَذِبَ يُكْتَبُ كَذِبًا حَتَّى تُكْتَبَ الْكُذَيْبَةُ كُذَيْبَةً.

    মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে লিখা হয় এমন কি ছোট মিথ্যাকেও ছোট মিথ্যা হিসেবে লিখা হয়। -মুসনাদে আহমদ,হাদীস ২৭৪৭১

    গরু ছাগল উট দুম্বা বিক্রি করতে গিয়ে দু’তিন দিন দুধ দোহন না করে ওলান ফুলিয়ে বিক্রি করতে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন, বরং ঐ লেনদেনকে অবৈধ ও ভেঙ্গে দেওয়া আবশ্যক বলেছেন।

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার একজন শস্যব্যবসায়ীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় তিনি তার শস্যের স্তূপের ভেতর হাত ঢুকিয়ে দিলেন। তখন ভেতরের শস্যগুলোতে কিছু আর্দ্রতা অনুভূত হল। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কী? সেই ব্যবসায়ী উত্তর দিলেন, বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিল। নবীজী তখন বললেন, ‘ভেজা অংশটা উপরে রাখলে না কেন?’ তারপর নবীজী আরো বললেন,যারা আমাদেরকে ধোঁকা দেয় তারা আমাদের নয়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০২

    বিচার ও সাক্ষ্যের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ইসলামে কাম্য। বিচারের ক্ষেত্রে ইনসাফ যেন ব্যাহত না হয়; ফয়সালা নিজের বিরুদ্ধে বা পিতা-মাতা ভাই-বোনের বিরুদ্ধে গেলেও, নিজের শত্রুর পক্ষে গেলেও। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী হয়ে যাও আল্লাহর সাক্ষীরূপে, যদিও তোমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে হয় কিংবা পিতামাতা ও আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে। -সূরা নিসা (৪) : ১৩৫

    আরো বলেন, কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা তোমাদেরকে যেন বে-ইনসাফীর প্রতি প্ররোচিত না করে। -সূরা মায়েদা (৫) : ৮

    কুরআন হাদীসে এ সম্পর্কিত সকল বর্ণনা একত্র করলে এক ভা-ার হয়ে যাবে। যার অবকাশ এখানে নেই। রিয়া, প্রতারণা, মিথ্যা, লৌকিকতা, ফন্দি আঁটা, কারো পিছে লাগা, নিফাক ইত্যাদি বিষয়ের ঘৃণ্যতার ক্ষেত্রে যত আয়াত ও হাদীস রয়েছে তা এ বিষয়েরই অন্তর্ভুক্ত। সবশেষে আরেকটি হাদীস উদ্ধৃত করছি, যার দ্বারা ইসলামে স্বচ্ছতা যে কত জরুরি তা আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যায়।

    মক্কা বিজয়ের দিন, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কার সকল কাফেরকে সাধারণ ক্ষমা করে দিলেন, তবে সাত জন কাফের ব্যতিত। ওরা মুসলমানদেরকে এত কষ্ট দিয়েছে দয়ার নবী হওয়ার পরও এবং সকলে সাধারণ ক্ষমা পাওয়ার পরও তারা ক্ষমা পায়নি। এদের মধ্যে একজন হল, আব্দুল্লাহ ইবনু আবুস সারাহ। হযরত উসমান রা.-এর দুধ ভাই। তিনি হযরত উসমানের নিকট আত্মগোপন করলেন। নবীজী যখন মানুষদেরকে বায়আতের জন্য ডাকলেন তখন হযরত উসমান রা. দুধ ভাইকে সাথে করে আল্লাহর নবীর নিকট গিয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আব্দুল্লাহকে বায়আত করুন। আল্লাহর নবী তার দিকে তাকালেন এবং মাথা নীচু করে নিলেন, কিছু বললেন না। কিছুক্ষণ পর হযরত উসমান পুনরায় আবেদন করলেন। আল্লাহর নবী তেমনি করলেন, কিছু বললেন না। তৃতীয় বার যখন আবেদন করলেন তখন নবীজী পুনরায় তাকিয়ে তাকে বায়আত করলেন। অতপর সাহাবীদের লক্ষ্য করে বললেন, তোমাদের মাঝে কি কোনো বুঝমান লোক নেই? আমাকে যখন তার বায়আত থেকে হাত গুটিয়ে রাখতে দেখলে তখন তাকে হত্যা করে ফেলতে! সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার মনে কী আছে আমরা তো তা জানি না।

    যদি একটু (চোখের) ইশারা দিতেন। তখন নবীজী বললেন,

    إِنَّهُ لَا يَنْبَغِي لِنَبِيٍّ أَنْ تَكُونَ لَهُ خَائِنَةُ أَعْيُنٍ.

    কোনো নবীর জন্য শোভনীয় নয় যে তার চোরা চোখ হবে। অন্য বর্ণনায় আছে  “أن يومض” কোনো নবীর জন্য শোভনীয় নয় চোখ দিয়ে ইশারা করা। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৬৭৬

    এতবড় দাগী শত্রু, হত্যা আবশ্যক এমন কাফির তাকে মারতে কৌশলের প্রয়োজন নেই। প্রকাশ্যেই মারা যায়,আর কৌশল করলেও গুনাহ নেই। আর কৌশলটাও সামান্য, চোখের ইশারা মাত্র। কিন্তু নবীজী কত স্বচ্ছতার পরিচয় দিলেন! স্বচ্ছতা তাকে এটুকুও করতে দেয়নি।

    চোখ দিয়ে ইশারা করা আমাদের কাছে কত সাধারণ। কতক্ষেত্রেই তো উপস্থিত লোকদের কাছে কোনো বিষয় লুকানোর জন্য এমন করি। বরং তা করে সাবাসও পাই।

    এসব হাদীসে আমাদের জন্য রয়েছে শিক্ষা। আমরা অনেকে আবার এসবকে ‘হিকমত’ বলি। ‘হিকমত’আরবী, উর্দু ও ফারসি শব্দ, কুরআন-হাদীসে হিকমতের বহু ফাযায়েল রয়েছে। নবীজীকে পাঠানো হয়েছে হিকমত শেখানোর জন্য। আল্লাহ বলেন, ‘যাকে হিকমত দান করা হল তাকে বহু কল্যাণ দান করা হল’। শেখ সাদী রাহ.ও গুলিস্তাঁ কিতাবে বহু হিকমত লিখে গেছেন। অস্বচ্ছতা যদি হিকমত হয় তাহলে কুরআন-হাদীসে বর্ণিত হিকমতকে কী বলব! আর একটি শব্দকে সম্পূর্ণ তার বিপরীত অর্থে ব্যবহার করা কত ভয়াবহ কাজ তা ভাবা দরকার। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমীন।

    জীবনের বাঁকে বাঁকে কত পদক্ষেপে এ অস্বচ্ছতার উপস্থিতি ঘটে। একটু খেয়াল করলেই তা অনুমান করা যাবে। এখানে শুধু একটি প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা রাখি, এর দ্বারা অন্য ক্ষেত্রেও সহযোগিতা পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুন। আমীন। 

    মাসতুরাতের উদ্দেশ্যে…

    (৪৬ পৃষ্ঠার পর)

    نَصْبِرُ عَلَى الْجُوعِ وَلَا نَصْبِرُ عَلَى النَّارِআপনি আমাদের জন্য কামাই করতে যাচ্ছেন, সংসার চালানোর জন্য রোজগার করতে বের হচ্ছেন, আমরা আপনাকে আস্বস্ত করছি যে, আমরা দারিদ্র্যের উপর সবর করতে রাজী, ক্ষুধার কষ্ট সইতে প্রস্তুত, আজ এটা নেই কাল ওটা নেই, অভাব-অনটন চলছেই চলছে…এর উপর আমরা ধৈর্য ধরব। কিন্তু জাহান্নামের আগুন সহ্য করতে পারব না। সুতরাং হালালভাবে যা পাবেন কেবল ততটুকু আনবেন, হারাম কিছু আনার চেষ্টা করবেন না। আমরা না খেয়ে কম খেয়ে থাকতে পারব কিন্তু দোযখের আগুন সইতে পারব না। এই ছিল আগের কালের মহিলাদের ভাষা। আর এই যামানার মহিলারা স্বামীর হাতে লম্বা তালিকা ধরিয়ে দিয়ে বলে, এগুলো আমার চাই। তালিকা দেখে স্বামী বেচারা বিমর্ষ হয়ে পড়ে। স্ত্রীকে অনুনয় করে বলে, আমি এত কিছু কীভাবে আনব, আমার আয় তো তোমার সামনে? তুমি তো জান আমার কত আয়! স্ত্রীর এক কথা; তোমার কত আয় আমার তা জানার দরকার নেই। এই জিনিসগুলো আমার চাই, এগুলো ছাড়া দিন চলবে না। এই যুগে এমন মহিলা অনেক। কিন্তু আগে এমন ছিল না। কম হোক আপত্তি নেই, কিন্তু হারাম তারা সহ্য করতেন না। আল্লাহ তাআলা সকল মহিলাদেরকে এমন হওয়ার তাওফীক দান করুন। পুরুষদেরও আগের পুরুষদের মত নেককার হওয়ার তাওফীক দিন। আমীন।

    وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين.

    [মুসাজ্জিলা থেকে বয়ানটি পত্রস্থ করেছেন মাহমুদ হাসান মাসরূর। জাযাহুল্লাহু খাইরান]


    জাপানে আত্মহত্যার হার হ্রাস পেয়েছে

    গত বছর জাপানে আত্মহননকারীর সংখ্যা পুনরায় হ্রাস পয়েছে। এই নিয়ে টানা ৬ বছর এই হার পড়তিমুখী থাকলো। ২০১৫ সালে পরে যাওয়ার হার ছিলো ৫.৫ শতাংশ।

    ২০১১ সলের মহাভুমিকম্প ও সুনামির পর আত্মহননকারীর সংখ্যা ২২ থেকে বেড়ে ২৩ এ উঠে গেছে।

    ফুকুশিমা পারমাণবিক দুর্র্ঘটনা কে কেন্দ্র করে অপসারণ সহ বিভিন্ন কারণে আত্মহননকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

    মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন “মানুষ এ ভাবে থাকতে থাকতে পীড়িত বা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েও নিজের জীবন সংহারের পথ বেছে নেয়।

    দারুন ব্যস্ত নতুন বুলেট 

    জাপানের বুলেট ট্রেনের সর্বশেষ সংযোজনের এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, টোকিও থেকে হোকুরিকু’র মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনটি প্রত্যাশার অধিক যাত্রী আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে তিন গুন।

    গত সোমবার হোকুরিকু শিনকানসেন এর প্রথম বছর পূর্তি হলো, পূর্ব জাপান রেলওয়ে এবং পশ্চিম জাপান রেলওয়ে যৌথ ভাবে লাইনটি পরিচালনা করছে। ট্রেনটি টোকিও’র সাথে ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের রাজধানী কানাজাওয়া’কে সংযুক্ত করেছে। এখন মাত্র আড়াই ঘন্টার মধ্যেই দু’শহরের মধ্যে যাতায়াত করা সম্ভব।

    “প্রথম বছরের যাত্রা ছিলো খুব মসৃন” জে আর পশ্চিম এর প্রেসিডেন্ট সেইজি মানাবে বলেন।

    ধারণা করা হয়েছিল প্রথম বছর পূর্ববর্তী ১২ মাসের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা দ্বিগুন হবে, কিন্তু যাত্রী সংখ্যা বাড়তেই থাকলো এবং তা প্রত্যাশিত মাত্রার তিন গুন হয়ে দাঁড়ালো ৯০ লক্ষে। মানাবে বলেন দ্বিতীয় বছরেও অনুরূপ যাত্রী তারা আশা করছেন।