মাউন্ট ৎসুকুবা: রহস্য ঘেরা দুটি শৃঙ্গ

রাজধানী টোকিও থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ইবারাকি প্রিফেকচারের মাউন্ট ৎসুকুবা। আদিকাল থেকেই জাপানিরা পর্বতটির সাথে পরিচিত ছিল কেননা পাহাড়টির সাথে মাউন্ট ফুজি’র চেহারায় বেশ মিল রয়েছে। প্রতি বছর ২০ লক্ষ মানুষ বেড়াতে আসেন। সেই পুরনো কাল থেকেই বিশ্বাস করা হতো পাহাড়টিতে রহস্যময়ী এক শক্তি বাস করে।

মাউন্ট ৎসুকুবা’র দু’টি চূড়া। জাপানিদের বিশ্বাস পূর্ব দিকের চূড়াটি দেবী এবং পশ্চিমেরটি দেবতা। সেখানে রয়েছে একটি পাথর যেটিকে বলা হয় “বুজো-গা-ইশি” যা স্বামী-স্ত্রী’র প্রতীক। ৭ম ও ৮ম শতাব্দীতে তরুণ তরুনীরা এখানে এসে ভোজ করতো, তাদের উদ্দেশ্য ছিলো বিয়ের সঙ্গী খোঁজা। আজকের তরুনরা পাহাড়ে আসে প্রাচীন রোমান্সের শক্তি গ্রহণ করতে। তারা জীবন সঙ্গী খুঁজতে “একাকী মানুষদের পর্বতারোহন” এ অংশ নেন, তাদের প্রত্যাশা থাকে এই পর্বতারোহনের ফলে তারা যেনো মিষ্টি দম্পতিতে পরিণত হতে পারবেন।

এখানে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে ঐতিহ্যবাহী মলম বিক্রির নাট্যাংশ যাকে বলা হয় “গামা নো আবুরা” কিম্বা “ব্যাঙের তেল”। এটি এক ধরনের বিজ্ঞাপন যা ব্যাঙ এর চর্বিযুক্ত ঘাম থেকে তৈরী হয়ে থাকে, এই ব্যাঙ শুধুমাত্র ৎসুকুবা’তেই পাওয়া যায়। এর রয়েছে বিশেষ দক্ষতা, বলা হয় যে কোনো ক্ষত স্থানে লাগালে তা তাৎক্ষনিক ভাবে সরিয়ে তোলে। প্রায় ২০০ বছর আগে থেকেই এই চিকিৎসা চলছে।

শরৎকাল ম্যান্ডারিন কমলার ফসল কাটার সময় মাউন্ট ৎসুকুবা হয়ে ওঠে অনন্য। এটি হলো “ফুকুরে মিকান” ম্যান্ডারিন যার রয়েছে তীব্র অম্লতা এবং ঘ্রাণ। স্থানীয় মসলা “শিচিমি” তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হয়। লাল মরিক, কল এবং সাদা তিল শৈবাল এবং ম্যান্ডারিন চূর্ণ সব মিলে প্রস্তুত হলো “শিমিজি”, একটি জাদুর মসলা যা যে কোনো খাবারকে সুস্বাদু করে তোলে।