ভাবনায় কেবলই ফাইনাল
এক বিদেশি সাংবাদিক বলছিলেন—বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসকে দু ভাগে ভাগ করা যায়; মাশরাফির দুই চারের আগে এবং পরে!
একটু বাড়াবাড়ি মনে হলেও কথা মিথ্যে নয়। অন্তত মাশরাফির ওই চারের ফলে বাংলাদেশ যে অবিশ্বাস্য একটা লাফ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দিয়েছে, তাতে নতুন যুগ শুরু হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। অবশ্য দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় তামিম ইকবাল বলছেন, এখনই তারা নতুন যুব বা নিজেদের দাপট নিয়ে ভাবছেন না। এখন তাদের ভাবনায় কেবলই ফাইনালে সেরা খেলার চেষ্টা।
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতেও বড় দল হয়ে গেছে কি না, এমন আলোচনাই এখন প্রাসঙ্গিক মনে করছেন না তামিম, ‘আমি মনে করি না এখনই আমাদের জায়ান্ট বলা উচিত। এখনো অনেক পথ আমাদের যেতে হবে। তবে এটা সত্য আমরা বেশ খানিকটা এগিয়েছি। তবে সেটা জায়ান্ট বলার মতো না, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে। আমরা এই ফরম্যাটে উন্নতি করছি। এভাবে এগোতে থাকলে, আশা করছি তাহলে ভবিষ্যতে আমরা দারুণ কিছু হবে।’
ফাইনালের প্রতিপক্ষ ভারত নিয়েও তামিমের কণ্ঠে শ্রদ্ধার অভাব নেই। তবে প্রতিপক্ষ যেই হোক, নিজেদের ক্রিকেটটা ধরে রাখতে চান তিনি, ‘ভারত শক্তিশালী একটি দল। ওরা এশিয়া কাপে ভালো ক্রিকেট খেলছে। সেই সঙ্গে আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি। শেষ তিনটি ম্যাচে আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছি। ফাইনালে যে কোন কিছুই হতে পারে। যে দল ভালো ক্রিকেট খেলবে তারাই জিতবে।’
এই ভালো খেলার মানে কী, তাও বুঝিয়ে দিলেন দেশসেরা এই ওপেনার। তার কাছে ভালো খেলা মানে হলো তিন বিভাগেই সমান পারফরম্যান্স করা, ‘একটি জিনিস নিশ্চিত, ভারতের সঙ্গে আমাদের জিততে হলে তিন বিভাগেই সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে আমাদের। এই তিন বিভাগে আমাদের অনেক শক্তিশালী থাকতে হবে। কারণ প্রথম ম্যাচে ওরা খুব বাজে অবস্থা থেকে ফিরে এসে ম্যাচ জিতেছে। ওদের সেই স্কিল রয়েছে। ওই ভুলগুলো আমরা কম করলে সবকিছুই সম্ভব।’
ভারতের সাথে বাংলাদেশের ম্যাচ মানেই অবশ্য কিছু স্মৃতি। এই তামিমের ব্যাটে চড়েই ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে সুপার এইটে গিয়েছিলো বাংলাদেশ। আগে-পরে আরও ইতিহাস আছে। তামিম বলছেন, ইতিহাসের চেয়েও সম্ভাবনা বেশি আকর্ষণীয়, ‘ভারতের সঙ্গে ভালো কিছু ইনিংস খেলার স্মৃতি তো অবশ্যই মনে পড়বে। একটা জিনিস আমরা বিশ্বাস করি, একটা দল যতোই শক্তিশালী হোক না কেনো, আমরা যদি আমাদের মতো খেলি, তাহলে আমরা যে কোনো দলকেই হারাতে পারি। যা আমরা প্রমাণ করেছি। ভারতের সর্বশেষ সিরিজে তাদেরকে আমরা হারিয়েছি। যদিও সেটা অন্য ফরম্যাট ছিলো। তারপরও আমরা যদি ভুল কম করি, তাহলে আমাদের ভালো সম্ভাবনা আছে।’
বোঝা যাচ্ছে, ইতিমধ্যে ফাইনালের প্রতিপক্ষ দলটি নিয়ে হোমওয়ার্কে অনেকটাই এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। তবে প্রতিপক্ষের কোনো নির্দিষ্ট খেলোয়াড়কে লক্ষ্য করার পক্ষে নন তিনি, ‘আমি বিশেষ কোন একজনের নাম বলবো না। তারা প্রত্যেকেই ভালো বোলার। ভারতের সবাই দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান। আমরা আমাদের নিয়েই ভাবছি। একটি খারাপ বল পেলে তার সদ্ব্যবহার আর ভালো বল হলে তাকে সমীহ করা।’
সোজা কথা, তামিম জানেন, তার কাজ দলকে ভালো একটা শুরু এনে দেয়া। তারপর বাকীটা সতীর্থদের ওপর ভরসা আছে তার, ‘আমি ওপেনিং করি। আমার কাজ হলো দলকে শুরুটা ভালো এনে দেয়া। আমি এবং আমার পার্টনারের এটাই কাজ। এ ধরনের টুর্নামেন্টে ওপেনারদের দায়িত্বটা বড়। কারণ প্রতিপক্ষ সব সময়ই চায় শুরুতেই উইকেট নিয়ে নিতে। আমরা চেষ্টা করবো যাতে সেটা কম হয় এবং নিজেদের খেলা উপভোগ করবো। আমাদের শুরুটা হলে, আগে ব্যাটিং করলে যদি ভালো একটা স্কোর করি, তাহলে ভালো কিছুই হবে। কারণ আমাদের বোলাররা এই টুর্নামেন্ট সব মিলিয়ে খুব ভালো খেলছে।’






















