• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • ধর্ষণের শিকার নারী সাংবাদিক পেলেন ৩০ হাজার ডলার

    জাপানে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী সাংবাদিককে অচেতন করে ধর্ষণের ঘটনায় শুরু হয় #মিটু আন্দোলন। আদালতে সেই মামলার রায়ে ধর্ষণের শিকার নারী ক্ষতিপূরণ হিসেবে পেলেন ৩০ হাজার ডলার।

    বিবিসি জানায়, শিওরি ইতো (৩০) নামের এক নারী সাংবাদিক জাপানের প্রভাবশালী সাংবাদিক নরিয়কি ইয়ামাগুচির (৫৩) বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের খুব ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নরিয়কি ইয়ামাগুচি।

    আদালতে জানানো হয়, ২০১৫ সালে চাকরির সাক্ষাৎকারের কথা বল ইয়ামাগুচি শিওরি ইতোকে অফিসে ডেকে নেন। পরে ডিনারের কথা বলে একটি হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে পানীয়র সঙ্গে কোনো নেশাজাতীয় কিছু মিশিয়ে ইতোকে অচেতন করে হোটেল কক্ষে নিয়ে যান ইয়ামাগুচি। এর পর মাঝরাতে ঘুম ভেঙে ইতো নিজেকে একটি হোটেল কক্ষে আবিষ্কার করেন। এ সময় তার ওপর ইয়ামাগুচি ছিল বলে আদালতকে জানান নারী সাংবাদিক ইতো।

    এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রথমবারের মত জাপানের গণমাধ্যম ফুঁসে ওঠে #মিটু আন্দোলনে। কিন্তু পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে আদালত এটিকে ক্রিমিনাল কেস হিসেবে গণ্য না করে সিভিল মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে। অবশ্য মামলায় শেষ পর্যন্ত জয় হয়েছে ইতোর। ৩৩ লাখ ইয়েন (৩০ হাজার ডলার) জরিমানা করা হয়েছে ইয়ামাগুচিকে।

    মামলায় বিজয়ের পর ইতো জানান, ‌’আমি অত্যন্ত খুশি।’

    এদিকে মামলার রায়ের পর এক সংবাদ সম্মেলনে জাপানের শীর্ষ গণমাধ্যম টোকিও ব্রডকাস্টিং সিস্টেমের ওয়াশিংটন ব্যুরো প্রধান ইয়ামাগুচি আরও একবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। সেই সঙ্গে এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান তিনি।

    জাপানে যৌন হয়রানি বা ধর্ষণের ঘটনা অধিকাংশ ক্ষেত্রে লুকিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টিকে গোপন করার সংস্কৃতি থেকে ইতোর বের হয়ে আসাকে এক নতুন অধ্যায়ের শুরু হিসেবে দেখছেন অনেকে। বিবিসি।

    জাপানের রেকর্ড ১০২ লক্ষ কোটি ইয়েনের খসড়া বাজেট

    জাপান সরকার আগামী অর্থ বছরের জন্য রেকর্ড পরিমাণের একটি খসড়া বাজেট প্রণয়ন করেছে। খরচের একটি বড় দিক হচ্ছে জনসংখ্যার বৃদ্ধ হয়ে আসা। বাজেটের আনুমানিক পরিমাণ হচ্ছে ১০২ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি ইয়েন বা প্রায় ৯৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। মন্ত্রীসভা আগামীকাল খসড়া বাজেট অনুমোদন করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

    বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সর্বকালের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ – ৩৫ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি ইয়েন বরাদ্দ করা হয়। এই ব্যয়ের মধ্যে বৃদ্ধদের জন্য চিকিৎসা ও অন্যান্য খরচ মেটানো অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

    এছাড়া অবৈতনিক স্কুল পূর্ব ও নার্সারি সেবা ও সেই সঙ্গে নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য উচ্চ শিক্ষার খরচের যোগানও এটা দেবে।

    উদ্দীপনা প্যাকেজের জন্য ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি ইয়েনের কাছাকাছি বরাদের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এসবের মধ্যে দুর্যোগ প্রস্তুতি উন্নত করে নিতে দেশের অবকাঠামো শক্তিশালী করে নেয়া অন্তর্ভুক্ত আছে।

    নতুন প্রযুক্তিও তহবিল আকৃষ্ট করছে। কৃষি ও চিকিৎসা সেবার জন্য স্থানীয়ভাবে ৫জি নেটওয়ার্ক অভিযুজ্য করে নিতে প্রায় ৩৬০ কোটি ইয়েন বরাদ্দ দেয়া হবে।

    যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তির প্রভাব মনিটর করবে জাপান

    জাপান বলছে বিশ্বের প্রধান দু’টি অর্থনীতির মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তির প্রথম পর্যায়ের সম্ভাব্য প্রভাবসহ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য বিরোধের মধ্যে নতুন করে কি ঘটছে সেটা তারা ঘনিষ্ঠভাবে মনিটর করবে।

    চীন বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে ঘোষণা দেয়ার ৩ দিন পর জাপান সরকারের প্রধান মুখপাত্র ইয়োশিহিদে সুগা সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

    চীফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারী সুগা বলেন, জাপান সরকার চুক্তিটিকে ইতিবাচক আলোকেই দেখে এবং প্রত্যাশা করে যে ওয়াশিংটন ও বেইজিং আলোচনার মাধ্যমে তাদের বাণিজ্য বিরোধের গঠনমূলক সমাধান করবে।

    জাপানের এনিমে বাজারে রেকর্ড সর্বোচ্চ বিক্রি

    পর পর ষষ্ঠ বারের মত ২০১৮ সালেও জাপানের এনিমে বাজার সর্বোচ্চ রেকর্ড করেছে। বিদেশের বাজারগুলো জাপানের মোটের প্রায় অর্ধেক।

    এসোসিয়েশন অব জাপান এনিমে দেশটির প্রায় দেড়শোটি এনিমে সম্পর্কিত কোম্পানির বিক্রয় মুল্যের ওপর জরিপ চালিয়ে বার্ষিক বাজার নির্ধারণ করেছে।

    প্রতিবেদন অনুযায়ী গতবছর এনিমে শিল্পের বিক্রয় ছিল ১৯ হাজার নয়শ কোটি ডলার, যা তার আগের বছরের চেয়ে ১৭ কোটি ৪০ লক্ষ ডলার বেশি।

    মুভি স্ক্রিনিং এবং গেম বিক্রিসহ বিদেশে বাজারগুলো মোট মূল্যের ৪৬ শতাংশ যা নয়শ তেইশ কোটি ডলারের সমান।

    অনলাইন সরবরাহ ৫৪ কোটি ৪০ লক্ষ মূল্য অতিক্রম করেছে এবং ডিভিডি এবং অন্যান্য ভিডিও প্যাকেজের বিক্রি এক চতুর্থাং কমে ৫৩ কোটি ৭০ লক্ষে পৌঁছেছে।

    অলিম্পিক স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজের সমাপ্তি

    ২০২০ টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকের মূল স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গতমাসের শেষ নাগাদ নতুন জাতীয় স্টেডিয়ামটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

    আজ আয়োজিত অনুষ্ঠানে, প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে, টোকিওর গভর্নর ইউরিকো কোইকে এবং স্টেডিয়ামটির নকশার কাজে সংশ্লিষ্ট স্থপতি কেনগো কুমা অংশগ্রহণ করেন।

    আবে, নতুন রেইওয়া যুগে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া স্থাপনাটি ক্রীড়ার ইতিহাসে বিভিন্ন ক্রীড়ার সাক্ষ্য বহন করে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

    অংশগ্রহণকারীরা, মঞ্চে স্থাপিত একটি সুইচে চাপ দিলে বিশালাকারের একটি পর্দায় লোকজনদের স্টেডিয়ামটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া উদযাপন করতে দেখা যায়।

    গভর্নর কোইকে, স্টেডিয়ামটি এমন এক স্থাপনা যা নিয়ে বিশ্বের কাছে গর্ব করতে পারেন বলে উল্লেখ করেন।

    তিনি, টোকিওর ক্রীড়ানুষ্ঠানটিকে রেকর্ড বইয়ে এবং লোকজনের স্মৃতিতে খোদাই করে রাখার মত এমন এক অনুষ্ঠানে পরিণত করতে কঠোর পরিশ্রম করে যাবেন বলেও উল্লেখ করেন।

    ৬০ হাজার আসন বিশিষ্ট স্টেডিয়ামটিকে, মোজাইকের মত প্রতিচ্ছবি সৃষ্টি করতে সবুজ ও বাদামির মত বিভিন্ন রংএ সজ্জিত করা হয়েছে। আবার, চারপাশের শ্যামলিমার সঙ্গে সাদৃশ্য বজায় রাখতে আসনগুলোর উপরিভাগে ৬০ মিটার দীর্ঘ কাঠের ছাদের প্রান্তভাগ প্রলম্বিত করে নকশা করা হয়েছে।

    আগামী শনিবার এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্টেডিয়ামটি জনসমক্ষে উন্মুক্ত করা হবে। স্টেডিয়ামটিতে, প্রথম ক্রীড়ানুষ্ঠান হিসেবে নববর্ষের প্রথম দিন ফুটবলের এমপেররস কাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।

    তাকাইয়ামায় বছর শেষের চালের পিঠার উৎসব

    জাপানের মধ্যভাগের গিফু জেলার তাকাইয়ামা শহরে আজ, বার্ষিক চালের পিঠার উৎসবে বিপুল সংখ্যক লোকজনের সমাগম হয়েছে।

    খড়ের বাড়ি এবং অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী গৃহ থাকা একটি পর্যটন এলাকা হিদা নো সাতো বা হিদা লোক পল্লী নামে অভিহিত স্থানটিতে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।

    গ্রামের কর্মীরা, প্রায় ২০ কিলোগ্রাম আঠালো চাল সেদ্ধ করে কাঠের হাতুড়ি দিয়ে মলে ভাতগুলো পাকিয়ে ক্ষুদ্রাকারের বা চ্যাপ্টা টুকরো তৈরি করেন।

    গ্রামটিতে, নতুন বছরের সাজসজ্জার জন্য ভাতের পিঠাগুলো ব্যবহার করা হয়।

    কর্মীরা ভাতের পিঠার টুকরোগুলো দিয়ে গাছের ডাল সজ্জিত করেন যেগুলো দেখতে প্রস্ফুটিত ফুলের মত মনে হয়।

    পর্যটক এবং অন্যান্য দর্শনার্থীরা, ভাতের পিঠা তৈরির অনুষ্ঠানটিতে যোগ দেন।

    বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

    শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
    আজ শনিবার সকাল ৭টা ১ মিনিটে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
    স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার দেয় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল।
    এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ সমাধিতে ফুল দিয়ে পুনরায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
    শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর উপস্থিত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সন্তানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
    রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের পর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
    এরপর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সন্তান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
    রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এলাকা ছেড়ে গেলে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ সময় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল নামে।

    ২০২০ অর্থবছরে জাপানের বাজেটের পরিমাণ সর্বকালের সর্বোচ্চ

    ২০২০ অর্থবছরের জন্য জাপানের সাধারণ বাজেটের পরিমাণ ১শ ২ লক্ষ কোটি ইয়েনের বেশী বা প্রায় ৯৩ হাজার ৫শ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

    আগামী ১লা এপ্রিল থেকে আরম্ভ হতে যাওয়া অর্থবছরের জন্য খসড়া বাজেট চূড়ান্তকরণের পর্যায়ে রয়েছে।

    জাপানের প্রবীণ নাগরিকদের সংখ্যা অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলায় সামাজিক নিরাপত্তা ব্যয়ের পরিমাণ বিপুলভাবে বৃদ্ধি পেয়ে মোট বাজেটের এক তৃতীয়াংশ দখল করে চলতি অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৩শ ৭০ কোটি মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পাবে।

    প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ এবং নতুন অর্থনৈতিক নীতিমালা অনুযায়ী, অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ১ হাজার ৬শ কোটি ডলারের বেশী অর্থ ব্যয় করা হবে।

    সরকার, নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর শিশুদের জন্য বিনামূল্যে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা আরম্ভ করবে।

    এদিকে, রাজস্ব আয়ের পরিমাণ হচ্ছে মোট বাজেটের মাত্র প্রায় ৬০ শতাংশ।

    সরকার, আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য মন্ত্রীসভার বৈঠকে খসড়া বাজেটটি অনুমোদনের ইচ্ছা পোষণ করছে।

    রোহিঙ্গা গণহত্যার দাবি অস্বীকার মিয়ানমার নেত্রীর

    সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের লক্ষ্য হিসেবে ধরে নিয়ে গণহত্যা চালানোর জন্য অভিযুক্ত নিজ দেশের সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গেয়েছেন মিয়ানমারের নেত্রী।

    অং সান সুচি বিশ্বের সর্বোচ্চ মানবাধিকার আদালতকে বলেছেন, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি “জটিল এবং এর গভীরতা মাপা এত সহজ নয়।”

    তিনি বলেন, “দু:খজনকভাবে, গাম্বিয়া মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে বাস্তবতার একটি অসম্পূর্ণ এবং বিভ্রান্তিকর চিত্র আদালতের সম্মুখে উপস্থাপন করেছে।”

    উল্লেখ্য, পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে এই মামলাটি দায়ের করে।

    মিয়ানমার দাবি করেছে যে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের সাবেক আবাসস্থল রাখাইন রাজ্যে সন্ত্রাসবাদের জবাব দিতেই সামরিক অভিযান চালানো হয়।

    তবে এই নোবেল বিজয়ী স্বীকার করে নেন যে সেখানে হয়ত বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা থাকতে পারে।

    অং সান সুচি আরও বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন’সহ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের অতিরিক্ত বা সামঞ্জস্যহীন বলপ্রয়োগের বিষয়টি নাকচ করে দেয়া যায় না।”

    তিনি আরও বলেন, যদি কোন সেনা যুদ্ধাপরাধ করে থাকেন, তবে তাদের বিচার মিয়ানমারেই করা উচিত।

    কার্বন ডাই অক্সাইড হ্রাসে জাপানের প্রচেষ্টার উপর পরিবেশ মন্ত্রীর আলোকপাত

    জাপানের পরিবেশ মন্ত্রী শিনজিরো কোইযুমি মাদ্রিদে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন সামাল দেয়ায় তাঁর দেশের প্রচেষ্টার উপর আলোকপাত করেছেন।

    কপ ২৫ শীর্ষ সম্মেলনে কোইযুমি গতকাল মন্ত্রী-পর্যায়ের একটি বৈঠকে অংশ নেন।

    বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার অব্যাহত রাখায় জাপানের ব্যাপক সমালোচনা করা হচ্ছে।

    বৈঠকের আগে কোইযুমি সাংবাদিকদের বলেছেন তাঁর বিশ্বাস সমালোচনা এড়িয়ে না গিয়ে সরাসরি এর মুখোমুখি হওয়া জাপানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

    তিনি আরও উল্লেখ করেন যে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন সমস্যার সমাধানে তাঁর দেশের চালানো প্রচেষ্টা নিয়ে ইতিবাচক একটি বার্তা তিনি পাঠাবেন।

    জাপানের কিছু কিছু পৌর প্রশাসন কিভাবে উৎপাদিত নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য নিজস্ব বিদ্যুৎ লাইন তৈরি করে নিচ্ছে, চিলির পরিবেশ মন্ত্রী ক্যারোলিনা শ্মিডের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে কোইযুমি তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

    জাপানে ব্যবসায়িক মনোভাব গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

    জাপানের ব্যবসায়িক পরিস্থিতি নিয়ে দেশের নির্বাহী কর্মকর্তারা আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গী পোষণ করছেন না। সরকারী এক জরিপে দেখা গেছে যে বর্তমান ত্রৈমাসিক সময়ের জন্য বিরাট আকারের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর মনোভাব গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

    কর্মকর্তারা বলছেন, সব ধরনের শিল্পের ক্ষেত্রেই বিরাট আকারের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর সূচক হল মাইনাস ৬ দশমিক ২। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক সময়ের পর থেকে সূচকের এই পরিমাণ হল সর্বনিম্ন। ঐ বছর দক্ষিণ পশ্চিম জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল।

    সূচকের পরিমাণ মাইনাস হওয়ায় তার থেকে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে ব্যবসায়িক পরিস্থিতি অবনতিশীল বলে অধিক সংখ্যক কোম্পানির ধারণা।

    কর্মকর্তারা বলছেন যে পয়লা অক্টোবার থেকে ভোগ্য পণ্যের উপর করের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং শক্তিশালি তাইফুনের ফলে বিপণী কেন্দ্রগুলো ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে বিক্রির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে।

    চীনে অর্থনীতির গতি মন্থর হয়ে পড়ার ফলে সেই দেশে গাড়ির চাহিদাও হ্রাস পেয়েছিল।

    উদারতা অর্থ আকীদা ও আদর্শের বিসর্জন নয়

    মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

    الحمد لله، وسلام على عباده الذين اصطفى، وأشهد أن لا إله إلا الله، وأشهد أن محمدا رسول الله، خاتم النبيين لانبي بعده، أمابعد:

    এক হল মুদারাত তথা উদারতা, যার অর্থ হল, নিজের প্রতিপক্ষের সঙ্গে উত্তম আচরণ ও কোমল ব্যবহার করা এবং তার কোনো হক নষ্ট না করা; বরং তার সবধরনের হক ও অধিকার যথাযথভাবে আদায় করা। উদারতা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা এবং অনেক বড় ঈমানী বৈশিষ্ট্য।

    আরেক হল মুদাহানাত তথা শৈথিল্য প্রদর্শন। অর্থাৎ আকীদা-বিশ্বাস ও আদর্শিক বিষয়গুলোকে হালকা মনে করা। অন্যদের খুশি করতে গিয়ে তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি, ভ্রান্তি ও গোমরাহীগুলোকে সঠিক বা গ্রহণযোগ্য বলা। ইসলামের দৃষ্টিতে এটা নিষিদ্ধ এবং এটা মুনাফেকির অনেক ভয়াবহ প্রকার।

    ইসলামী শিক্ষার অভাবে এবং অনেক সময় ঈমানী দুর্বলতার কারণে আজকাল অনেকেই উদারতার নামে শৈথিল্যে লিপ্ত হচ্ছেন। এজন্য জরুরি হল, এই দুইয়ের সঠিক পরিচয় ও বাস্তবতা ব্যাপকভাবে চর্চা করা ।

    ইসলাম তার অনুসারীদের নির্দেশ দেয়, তারা যেন সত্যের উপর অবিচল থাকে এবং সত্যকে সত্য আর মিথ্যাকে মিথ্যা বলে অভিহিত করে। পাশাপাশি এই আদেশও করে, তারা যেন প্রতিপক্ষের সঙ্গে উত্তম ও কোমল আচরণ করে; এমনকি ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় বিরোধী বরং শত্রু অমুসলিমদের প্রতিও যেন তারা কোমল ও সৌহার্দপূর্ণ আচরণ করে এবং তাদের যাবতীয় হক ও অধিকার আদায় নিশ্চিত করে। খুলাফায়ে রাশেদীন, ন্যায়পরায়ণ খলীফা ও বাদশাগণ এবং প্রত্যেক যুগের দ্বীনদার রাষ্ট্রপ্রধানগণ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ইসলামের এই হুকুম পালন করেছেন। কোনো কোনো ইতিহাসবিদ অমুসলিমদের সঙ্গে মুসলমানদের ধর্মীয় সৌহার্দপূর্ণ ও উদার আচরণের নির্বাচিত কিছু ঘটনা সংকলন করেছেন; আর তাতেই বড় বড় কয়েক খণ্ডের কিতাব তৈরি হয়ে গেছে।

    এই উদারতার বাস্তবতা হল, সকল অমুসলিম আল্লাহ তাআলার বিদ্রোহী হওয়া সত্ত্বেও শুধু আল্লাহর সৃষ্টি মানুষ হওয়ার কারণে আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য যেসব হক নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেসব হকের প্রতি যথাযথ লক্ষ্য রাখা। এদিকে মুসলমানগণ আল্লাহর ওয়াফাদার বান্দা হওয়ার কারণে তারা এ বিষয়ের আরো বেশি উপযুক্ত যে, তারা পক্ষের-বিপক্ষের সবার সঙ্গে ইনসাফপূর্ণ, উত্তম ও সুন্দর আচরণ করবে। এর একটি বড় হেকমত এটাও  যে, উত্তম আচরণের ফলে হতে পারে তাদের অন্তরে সত্য ধর্মের প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি হবে। অতপর তা তাদের হেদায়েত ও নাজাতের মাধ্যম হয়ে যাবে। এজন্য সৌহার্দপূর্ণ উদার আচরণ মূলত দ্বীনের প্রতি নীরব দাওয়াত। ইতিহাস সাক্ষী, ইসলামের প্রচার-প্রসার ও ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা আসলে ইনসাফ ও উত্তম আচরণেরই ফল।

    আমাদের পূর্বসূরীদের মাঝে উদারতা তো পূর্ণ মাত্রায় ছিল; কিন্তু শৈথিল্য তাঁদের মধ্যে একদম ছিল না। ঈমান-আকীদার বিষয়ে তাঁরা অত্যন্ত মজবুত ছিলেন। চিন্তা-চেতনা ও আদর্শ-ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে তাঁরা পাহাড়ের মতো অটল-অবিচল ছিলেন। শুধু শিরক নয়; বরং শিরকের সামান্য মিশ্রণ বা সন্দেহ আছে এমন সব বিষয় থেকে তাঁরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বেঁচে থাকতেন। বিধর্মীদের বেশ-ভূষা, চাল-চলন এবং তাদের উৎসব-পার্বণ থেকে অনেক দূরে থাকতেন। কারণ তাঁরা জানতেন, ইসলাম যেভাবে বিরোধীদের সঙ্গে উত্তম আচরণ ও সদ্ভাব বজায় রাখাকে ফরয করেছে, তার চেয়ে আরো গুরুত্বের সঙ্গে ফরয করেছে ঈমান-ইসলাম, আকীদা-বিশ্বাস ও আদর্শ-ঐতিহ্য হেফাযত করাকে। যেভাবে উদারতার ইসলামী বিধান উপেক্ষা করে কোনো অমুসলিমের উপর যুলুম করাকে ইসলাম হারাম করেছে, তার চেয়ে আরো গুরুত্বের সঙ্গে হারাম করেছে সত্য ও বাস্তবতার উপর যুলুম করাকে । এজন্য আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বুঝতে হবে, মন্দ পরিবেশ বা ভুল প্রচারণায় প্রভাবিত হয়ে ঈমান-ইসলামের মৌলিক দাবিগুলো খুইয়ে বসা, আকীদা-বিশ্বাস ও আদর্শ-ঐতিহ্যকে বিসর্জন দেয়া এবং সত্যকে সত্য ও মিথ্যাকে মিথ্যা না বলাÑ এগুলো কখনো উদারতা নয়। এগুলো তো পরিষ্কার শৈথিল্য, যা একেবারে হারাম। আর সত্য কথা হল, ইসলামের দৃষ্টিতে এটা মুনাফেকির একটা শাখা।

    যেমনটি আগে বলা হয়েছে, মুসলিম দেশে অমুসলিম নাগরিকদের মানুষ হিসাবে প্রাপ্য সব ধরনের অধিকার সুসংরক্ষিত। নিজ নিজ ধর্ম পালন করা এবং আপন আপন গণ্ডিতে শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব পালন করার পূর্ণ অধিকার তাদের রয়েছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হল, সে নিজে তাতে বাধা দেবে না এবং অন্য কাউকে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সুযোগ দেবে না। কিন্তু তার অর্থ কখনো এই নয় যে, তাদের ধর্মীয় আচার ও অনুষঙ্গগুলো (যেগুলোর ভিত্তি স্পষ্টত তাদের ধর্মীয় ধ্যান-ধারণা ও বিশ্বাসের উপর) কোনো মুসলমান পালন করা শুরু করবে অথবা আগে বেড়ে তাদের ধর্মীয় আচারানুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কিংবা তাদের ধর্মীয় নিদর্শনগুলো নিজের মধ্যে ধারণ করে তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করবে। এমনটা করা স্পষ্ট হারাম এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা কুফর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ইসলাম তার অনুসারীদের উপর এ ধরনের শৈথিল্যকে হারাম করেছে, আর দ্বীন-ঈমানের ক্ষেত্রে শৈথিল্যকে হারাম করার একমাত্র অধিকার সত্য ধর্ম ইসলামেরই আছে। সেজন্য যাদেরকে আল্লাহ তাআলা এই দ্বীন গ্রহণের তাওফীক দিয়েছেন তাদের জন্য এটা অকৃতজ্ঞতা ও অবাধ্যতার বিষয় যে, তারা চিন্তা-চেতনা, দৃষ্টিভঙ্গি ও ঈমান-আমলের বিষয়ে শৈথিল্যে লিপ্ত হবে।

    আর এটাও বাস্তবতা ও ইসলামী শিক্ষা সম্পর্কে অজ্ঞতা ও উদাসীনতার ফল যে, কেউ কেউ এই নজায়েয কাজের পক্ষে এই বলে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করছে যে, ‘এটা তো ধর্মীয় বিষয় নয়; বরং সংস্কৃতির বিষয়’ এবং ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’!!

    প্রথমত এই কথাই তো ঠিক নয় যে, সংস্কৃতি দ্বীন, দ্বীনের আকীদা-বিশ্বাস, বিধি-বিধান ও চিন্তা-চেতনা থেকে বিচ্ছিন্ন বিষয়। আর একথাও ঠিক নয় যে, কোনো জাতির ধর্মীয় উৎসব অপরাপর সব জাতির জন্যই উৎসব। এটা না সে জাতির ধর্মে গ্রহণযোগ্য হবে, না অন্যান্য জাতির ধর্মে। এটা তো না জেনে বলা সম্পূর্ণ অবাস্তব কথা।

    দ্বিতীয়ত এই কথা মুসলিম উম্মাহর ক্ষেত্রে সঠিক হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। কারণ এই উম্মত একমাত্র সত্য ধর্মের অনুসারী, যা পূর্ণাঙ্গ দ্বীন এবং যার রয়েছে নিজস্ব আকীদা-বিশ্বাস ও শরীয়ত এবং স্বতন্ত্র সংস্কৃতি। এ দ্বীনের শরীয়তে পানাহার থেকে নিয়ে জীবনের প্রতিটি  ক্ষেত্রে বৈধ-অবৈধের নিজস্ব বিধি-বিধান রয়েছে।

    এটা তো একমাত্র দ্বীন, যার যাবতীয় প্রমাণ ও উৎস হুবহু সংরক্ষিত আছে এবং যার প্রথম যুগের মহামনীষীদের আমল ও কর্মপদ্ধতি সূত্রসহ বিদ্যমান রয়েছে। এই ধর্মে ঈদ ও উৎসবের বিষয়টি অনেক নাযুক। এ ধর্মে কঠিনভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তার অনুসারীরা যেন নিজেদের সংস্কৃতি সংরক্ষণ করে এবং নিজেদের ঈদ-উৎসবের প্রতি গুরুত্বারোপ করে আর বিধর্মীদের সংস্কৃতি ও উৎসব-পার্বণ থেকে দূরে থাকে।

    তৃতীয়ত  যে উৎসবের নামই হল ‘দুর্গাপূজা’ সেটা ধর্ম ও বিশ্বাস থেকে বিচ্ছিন্ন নিছক উৎসব হয় কীভাবে? আর ‘পূজা’-ই যদি তাদের ধর্মের অংশ না হয়, তাহলে তাদের ধর্ম আর কোন্ জিনিসের নাম?!

    মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেক সদস্যের জানা থাকা উচিত, আমাদের ধর্মÑ

    ১. পূর্ণাঙ্গ।

    ২. জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে তার বিধি-বিধান ও দিকনিদের্শনা বিদ্যমান।

    ৩. এর দাওয়াত সবার জন্য বিস্তৃত। বংশ, বর্ণ, অঞ্চল ও ভাষা নির্বিশেষে সবধরনের মানুষের জন্য এর দাওয়াত সুবিস্তৃত।

    যে-ই তা কবুল করবে, সফলতা লাভ করবে এবং আখেরাতে মুক্তি পাবে। আর কবুল না করলে শুধু ক্ষতি আর ক্ষতি। তবে বিধর্মীদের প্রতি সদ্ভাব বজায় রাখার নির্দেশের কারণে ইসলাম কাউকে (আল্লাহ তাআলার নিকট তা একমাত্র সত্য ধর্ম হওয়া সত্ত্বেও) তা গ্রহণে বাধ্য করে না। অবশ্য তা যে একমাত্র সত্য ধর্ম আর অন্যসব যে বাতিল ও মিথ্যা ধর্ম সে সম্পর্কে ওহীর মাধ্যমে সুস্পষ্ট প্রমাণাদি পেশ করে ‘হুজ্জত তাম’ করে দেওয়া হয়েছে এবং অজুহাত দাঁড় করানোর সকল পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

    ৪. চিরস্থায়ী ও চিরকালীন ধর্ম। এই ধর্ম রহিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই ধর্মের শরীয়ত ও হেদায়েতগ্রন্থ তো নাযিলই হয়েছে সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর।

    ৫. এর যাবতীয় শিক্ষা ও বিধি-বিধান এবং সেগুলোর সকল উৎস ও প্রমাণ হুবহু সংরক্ষিত আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকবে। এই দ্বীনের মাঝে সামান্যতম বিকৃতি বা পরিবর্তন ঘটিয়ে কেউ পার পেয়ে যাবে এবং তা দ্বীন হিসাবে চালিয়ে দেবেÑ এটা সম্ভবই নয়।

    দ্বীন ও শরীয়ত সম্পর্কে অবগত এমন যে কারো জানা আছে, এই দ্বীনের মূল ভিত্তি দুটি জিনিসের উপরÑ

    ক. তাওহীদের আকীদা এবং একমাত্র আল্লাহ তাআলার ইবাদত।

    খ. আল্লাহপ্রদত্ত শরীয়তের অনুসরণ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ও উত্তম আদর্শের অনুকরণ।

    তাওহীদ তখনই সাব্যস্ত হবে, যখন মানুষ সব ধরনের শিরক থেকে বেঁচে থাকবে। শরীয়তের অনুসরণ তখনই বোঝা যাবে, যখন শরীয়ত পরিপন্থী সবধরনের নিয়ম-নীতি ও আইন-কানুন থেকে বেঁচে থাকবে। আর সুন্নাহর অনুসরণ তখনই সাব্যস্ত হবে, যখন সবধরনের বিদআত ও নতুন-পুরাতন জাহেলী রীতি-নীতি ও সংস্কৃতি থেকে বিরত থাকবে।

    আল্লাহ তাআলা যত নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন সকলের মৌলিক দাওয়াত এটাই ছিল যে, আল্লাহ তাআলার ইবাদত করা, যিনি এক, যার কোনো শরীক নেই। পাশাপাশি সব ধরনের শিরক থেকে বেঁচে থাকা এবং আল্লাহকে ভয় করা। আর রাসূলের আনুগত্য করা, রাসূলের মাধ্যমে প্রদত্ত শরীয়তকে নিজের উপর অত্যাবশ্যকীয় মেনে নেয়া এবং তাঁর উত্তম আদর্শের অনুসরণ করা।

    সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর আল্লাহ তাআলা সর্বশেষ হেদায়েতগ্রন্থ কুরআন মাজীদ নাযিল করেছেন, তাঁকে সর্বশেষ শরীয়ত দান করেছেন এবং তাঁর উম্মতকে সর্বশেষ উম্মত বানিয়েছেন। আর ঘোষণা করেছেন, দ্বীনে তাওহীদ (যা চিরকালীন দ্বীন) আর শরীয়তে মুহাম্মাদী (যা কুরআন নাযিলের সময় থেকে নিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত পুরো মানবজাতির জন্য একমাত্র শরীয়ত ও জীবনবিধান) হল এখন মুক্তি ও সফলতার একমাত্র মাধ্যম।

    কুরআনে কারীমে বারবার উল্লেখিত হয়েছে, প্রত্যেক নবী-রাসূলের দাওয়াত এটাই ছিল যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর; তিনি এক, তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।

    ইরশাদ হয়েছেÑ

    وَ مَاۤ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا نُوْحِیْۤ اِلَیْهِ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّاۤ اَنَا فَاعْبُدُوْن.

    আমি তোমার পূর্বে এমন কোনো রাসূল পাঠাইনি, যার প্রতি আমি এই ওহী নাযিল করিনি যে, ‘আমি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই। সুতরাং আমারই ইবাদত করা।’ Ñসূরা আম্বিয়া (২১) : ২৫

    وَ لَقَدْ بَعَثْنَا فِیْ كُلِّ اُمَّةٍ رَّسُوْلًا اَنِ اعْبُدُوا اللهَ وَ اجْتَنِبُوا الطَّاغُوْتَ،  فَمِنْهُمْ مَّنْ هَدَی اللهُ وَ مِنْهُمْ مَّنْ حَقَّتْ عَلَیْهِ الضَّلٰلَةُ.

    নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক উম্মতের মাঝে কোনো না কোনো রাসূল পাঠিয়েছি এই পথ নির্দেশ দিয়ে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগূতকে১   পরিহার কর। তারপর তাদের মধ্যে কতক তো এমন ছিল, যাদেরকে আল্লাহ হেদায়েত দান করেছেন আর কতক ছিল এমন, যাদের উপর বিপথগামিতা অবধারিত হয়ে গেছে। Ñসূরা নাহ্ল (১৬) : ৩৬

    কুরআনে কারীমের বিভিন্ন সূরায় অনেক নবী-রাসূলের দাওয়াতের বিস্তারিত বর্ণনা আছে। বিশেষত সূরা হূদ (সূরা নং ১১) এবং সূরা শুআরায় (সূরা নং ২৬) একেকজন রাসূলের নাম নিয়ে নিয়ে তাঁদের দাওয়াতের বর্ণনা বিবৃত হয়েছে। তাঁদের সবার দাওয়াত একই ছিলÑ

    قَالَ یٰقَوْمِ اعْبُدُوا اللهَ مَا لَكُمْ مِّنْ اِلٰهٍ غَیْرُهٗ.

    হে আমার কওম! আল্লাহর ইবাদত কর। তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোনো মাবুদ নেই। Ñসূরা হূদ (১১) : ৫০, ৬১, ৮৪

    اَنْ لَّا تَعْبُدُوْۤا اِلَّا اللهَ.

    তোমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করো না। Ñসূরা হূদ (১১) : ২৬

    فَاتَّقُوا اللهَ وَ اَطِیْعُوْنِ.

    সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। Ñসূরা শুআরা (২৬) : ১০৮, ১২৬, ১৩১, ১৪৪, ১৫০, ১৬৩, ১৭৯

    সূরা আনকাবূতে আছেÑ

    وَ اِبْرٰهِیْمَ اِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ اعْبُدُوا اللهَ وَ اتَّقُوْهُ،  ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ، اِنَّمَا تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ اَوْثَانًا وَّ تَخْلُقُوْنَ اِفْكًا،  اِنَّ الَّذِیْنَ تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ لَا یَمْلِكُوْنَ لَكُمْ رِزْقًا فَابْتَغُوْا عِنْدَ اللهِ الرِّزْقَ وَ اعْبُدُوْهُ وَ اشْكُرُوْا لَهٗ،   اِلَیْهِ تُرْجَعُوْنَ.

    এবং আমি ইবরাহীমকে পাঠালাম, যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল, আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁকে ভয় কর। এটাই  তোমাদের পক্ষে শ্রেয়, যদি তোমরা জ্ঞান রাখ। তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে কেবল প্রতিমাদেরই পূজা করছ এবং রচনা করছ মিথ্যা। তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদের ইবাদত কর, তারা তোমাদেরকে রিযিক দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং আল্লাহর কাছে রিযিক সন্ধান কর। তাঁর ইবাদত কর এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা আদায় কর। তাঁরই কাছে তোমাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। Ñসূরা আনকাবূত (২৯) : ১৬-১৭

    আর সূরা শুআরায় আছেÑ

    وَ اتْلُ عَلَیْهِمْ نَبَاَ اِبْرٰهِیْمَ، اِذْ قَالَ لِاَبِیْهِ وَ قَوْمِهٖ مَا تَعْبُدُوْنَ، قَالُوْا نَعْبُدُ اَصْنَامًا فَنَظَلُّ لَهَا عٰكِفِیْنَ،  قَالَ هَلْ یَسْمَعُوْنَكُمْ اِذْ تَدْعُوْنَ، اَوْ یَنْفَعُوْنَكُمْ اَوْ یَضُرُّوْنَ، قَالُوْا بَلْ وَجَدْنَاۤ اٰبَآءَنَا كَذٰلِكَ یَفْعَلُوْنَ،  قَالَ اَفَرَءَیْتُمْ مَّا كُنْتُمْ تَعْبُدُوْنَ، اَنْتُمْ وَ اٰبَآؤُكُمُ الْاَقْدَمُوْنَ، فَاِنَّهُمْ عَدُوّ لِّیْۤ اِلَّا رَبَّ الْعٰلَمِیْنَ، الَّذِیْ خَلَقَنِیْ فَهُوَ یَهْدِیْنِ،  وَ الَّذِیْ هُوَ یُطْعِمُنِیْ وَ یَسْقِیْنِ،  وَ اِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ یَشْفِیْنِ، وَ الَّذِیْ یُمِیْتُنِیْ ثُمَّ یُحْیِیْنِ،  وَ الَّذِیْۤ اَطْمَعُ اَنْ یَّغْفِرَ لِیْ خَطِیْٓـَٔتِیْ یَوْمَ الدِّیْنِ.

    (হে নবী!) তাদেরকে শোনাও ইবরাহীমের বৃত্তান্ত। যখন সে তার পিতা ও সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা কিসের ইবাদত কর। তারা বলল, আমরা প্রতিমাদের পূজা করি এবং তাদেরই সামনে ধরনা দিয়ে থাকি। ইবরাহীম বলল, তোমরা যখন তাদেরকে ডাক, তখন তারা কি তোমাদের কথা শোনে? কিংবা তারা কি তোমাদের কোনো উপকার বা ক্ষতি করতে পারে? তারা বলল, আসল কথা হল, আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে এমনই করতে দেখেছি। ইবরাহীম বলল, তোমরা কি কখনও গভীরভাবে লক্ষ করে দেখেছ তোমরা কিসের পূজা করছ? তোমরা এবং তোমাদের বাপ-দাদাগণ? এরা সব আমার শত্রুÑ এক রাব্বুল আলামীন ছাড়া, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তিনিই আমার পথপ্রদর্শন করেন। এবং আমাকে খাওয়ান ও পান করান। এবং আমি যখন পীড়িত হই, আমাকে শেফা দান করেন। এবং যিনি আমার মৃত্যু ঘটাবেন, ফের আমাকে জীবিত করবেন। এবং যাঁর কাছে আমি আশা রাখি, হিসাব-নিকাশের দিন তিনি আমার অপরাধসমূহ ক্ষমা করবেন। Ñসূরা শুআরা (২৬) : ৬৯-৮২

    সূরা ইউনুসের শেষে বর্ণিত হয়েছেÑ

    قُلْ یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ اِنْ كُنْتُمْ فِیْ شَكٍّ مِّنْ دِیْنِیْ فَلَاۤ اَعْبُدُ الَّذِیْنَ تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ وَ لٰكِنْ اَعْبُدُ اللهَ الَّذِیْ یَتَوَفّٰىكُمْ،  وَ اُمِرْتُ اَنْ اَكُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ، وَ اَنْ اَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّیْنِ حَنِیْفًا،  وَ لَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ،  وَ لَا تَدْعُ مِنْ دُوْنِ اللهِ مَا لَا یَنْفَعُكَ وَ لَا یَضُرُّكَ،  فَاِنْ فَعَلْتَ فَاِنَّكَ اِذًا مِّنَ الظّٰلِمِیْنَ، وَ اِنْ یَّمْسَسْكَ اللهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهٗۤ اِلَّا هُوَ،  وَ اِنْ یُّرِدْكَ بِخَیْرٍ فَلَا رَآدَّ لِفَضْلِهٖ،  یُصِیْبُ بِهٖ مَنْ یَّشَآءُ مِنْ عِبَادِهٖ، وَ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ، قُلْ یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ قَدْ جَآءَكُمُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّكُمْ،  فَمَنِ اهْتَدٰی فَاِنَّمَا یَهْتَدِیْ لِنَفْسِهٖ،  وَ مَنْ ضَلَّ فَاِنَّمَا یَضِلُّ عَلَیْهَا،  وَ مَاۤ اَنَا عَلَیْكُمْ بِوَكِیْلٍ.

    (হে নবী) তাদেরকে বল, হে মানুষ! তোমরা যদি আমার দ্বীন সম্পর্কে কোনও সন্দেহে থাক, তবে (শুনে রাখ) তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদের ইবাদত কর আমি তাদের ইবাদত করি না; বরং আমি সেই আল্লাহর ইবাদত করি, যিনি তোমাদের প্রাণ সংহার করেন। আর আমাকে হুকুম দেওয়া হয়েছে, আমি যেন মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত থাকি। এবং (আমাকে) এই (বলা হয়েছে) যে, তুমি একনিষ্ঠভাবে নিজ চেহারাকে এই দ্বীনের দিকেই কায়েম রাখবে এবং কিছুতেই নিজেকে সেইসকল লোকের অন্তর্ভুক্ত করবে না, যারা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক মানে। আল্লাহকে ছেড়ে এমন কাউকে (অর্থাৎ মনগড়া মাবুদকে) ডাকবে না, যা তোমার কোনও উপকারও করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না। তারপরও যদি তুমি এরূপ কর (যদিও তোমার পক্ষে তা করা অসম্ভব), তবে তুমি জালেমদের মধ্যে গণ্য হবে। আল্লাহ যদি তোমাকে কোনও কষ্ট দান করেন, তবে তিনি ছাড়া এমন কেউ নেই,  যে তা দূর করবে এবং তিনি যদি তোমার কোনও মঙ্গল করার ইচ্ছা করেন, তবে এমন কেউ নেই, যে তার অনুগ্রহ রদ করবে। তিনি নিজ বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ দান করেন। তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (হে নবী!) বলে দাও, হে লোকসকল! তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সত্য এসে গেছে। সুতরাং যে ব্যক্তি হেদায়েতের পথ অবলম্বন করবে, সে তা অবলম্বন করবে নিজেরই মঙ্গলের জন্য আর যে ব্যক্তি পথভ্রষ্টতা অবলম্বন করবে, তার পথভ্রষ্টতার ক্ষতি তার নিজেরই ভোগ করতে হবে। আমি তোমাদের কার্যাবলীর যিম্মাদার নই। Ñসূরা ইউনুস (১০) : ১০৪-১০৮

    কুরআনে কারীম ও হাদীস শরীফে এই বাস্তবতা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, আসল দ্বীন হল তাওহীদের দ্বীন। প্রথমে সব মানুষ এই দ্বীনের অনুসারীই ছিল। সবাই দ্বীনে তাওহীদের উম্মত ছিল। পরবর্তীতে শয়তানের প্ররোচনায় মানুষ শিরকে লিপ্ত হয়ে পড়ে। তাই আল্লাহ তাআলা নবী-রাসূলগণকে আদেশ করেন, তাঁরা যেন মানুষকে শিরক ছেড়ে তাওহীদের দিকে ফিরে আসার দাওয়াত দেন। এজন্য প্রাচীন দ্বীন হল তাওহীদের দ্বীন। আর প্রাচীন উম্মত হল তাওহীদের উম্মত । দেখুন, সূরা আম্বিয়া (২১) : ৯২, সূরা মুমিনূন (২৩) : ৫২, সূরা ইউনুস (১০) : ১৯।

    আর প্রসিদ্ধ হাদীসে কুদসীতে আছেÑ

    وَإِنِّي خَلَقْتُ عِبَادِي حُنَفَاءَ كُلّهُمْ، وَإِنّهُمْ أَتَتْهُمُ الشّيَاطِينُ فَاجْتَالَتْهُمْ عَنْ دِينِهِمْ، وَحَرّمَتْ عَلَيْهِمْ مَا أَحْلَلْتُ لَهُمْ، وَأَمَرَتْهُمْ أَنْ يُشْرِكُوا بِي مَا لَمْ أُنْزِلْ بِهِ سُلْطَانًا.

    আমি আমার সকল বান্দাকে সৃষ্টি করেছি দ্বীনে হানীফের (তাওহীদের) উপর। শয়তান এসে তাদেরকে তাদের দ্বীন থেকে সরিয়ে দিয়েছে। আর তাদের জন্য আমি যা হালাল করেছি সে তা হারাম করেছে এবং তাদেরকে আমার সঙ্গে এমন সব জিনিস শরীক করার আদেশ করেছে, যার স্বপক্ষে আমি কোনো প্রমাণ অবতীর্ণ করিনি। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ২৮৬৫

    আরব মুশরিক হোক বা অনারব, অতীতের মুশরিক হোক বা বর্তমানের- সবার সব ধরনের শিরকী ধ্যান-ধারণার ব্যাপারে তাওহীদের অনুসারী একজন মুমিনের বক্তব্য সেটাই, যা কুরআন মাজীদে হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালামের যবানীতে বিবৃত হয়েছেÑ

    اِنِّیْ تَرَكْتُ مِلَّةَ قَوْمٍ لَّا یُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَ هُمْ بِالْاٰخِرَةِ هُمْ كٰفِرُوْنَ، وَ اتَّبَعْتُ مِلَّةَ اٰبَآءِیْۤ اِبْرٰهِیْمَ وَ اِسْحٰقَ وَ یَعْقُوْبَ مَا كَانَ لَنَاۤ اَنْ نُّشْرِكَ بِاللهِ مِنْ شَیْء ذٰلِكَ مِنْ فَضْلِ اللهِ عَلَیْنَا وَ عَلَی النَّاسِ وَ لٰكِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَا یَشْكُرُوْنَ،  یٰصَاحِبَیِ السِّجْنِ ءَاَرْبَابٌ مُّتَفَرِّقُوْنَ خَیْرٌ اَمِ اللهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ، ماَ تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِهٖۤ اِلَّاۤ اَسْمَآءً سَمَّیْتُمُوْهَاۤ اَنْتُمْ وَ اٰبَآؤُكُمْ مَّاۤ اَنْزَلَ اللهُ بِهَا مِنْ سُلْطٰنٍ  اِنِ الْحُكْمُ اِلَّا لِله اَمَرَ اَلَّا تَعْبُدُوْۤا اِلَّاۤ اِیَّاه ذٰلِكَ الدِّیْنُ الْقَیِّمُ وَ لٰكِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَا یَعْلَمُوْن.

    যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে না ও যারা আখেরাতে অবিশ্বাসী, আমি তাদের দ্বীন পরিত্যাগ করেছি। আমি আমার বাপ-দাদা ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের দ্বীন অনুসরণ করেছি। আমাদের এ অধিকার নেই যে, আল্লাহর সঙ্গে কোনও জিনিসকে শরীক করব। এটা (অর্থাৎ তাওহীদের আকীদা) আমাদের প্রতি ও সমস্ত মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহেরই অংশ। কিন্তু অধিকাংশ লোক (এ নিআমতের) শোকর আদায় করে না। হে আমার কারা-সংগীদ্বয়! ভিন্ন-ভিন্ন বহু প্রতিপালক শ্রেয়, না সেই এক আল্লাহ, যাঁর ক্ষমতা সর্বব্যাপী? তাঁকে ছেড়ে তোমরা কেবল কতগুলো নামেরই ইবাদত করছ, যে নামগুলো তোমরা ও তোমাদের পিতৃপুরুষরা রেখেছে। আল্লাহ তার পক্ষে কোনও দলীল নাযিল করেননি। হুকুম দানের ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও নেই। তিনিই এ হুকুম দিয়েছেন যে,  তোমরা তাঁর ভিন্ন অন্য কারও ইবাদত করো না। এটাই সরল-সোজা পথ। কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না। Ñসূরা ইউসুফ (১২) : ৩৭-৪০

    মুশরিকদের সকল কাল্পনিক মাবুদের ব্যাপারে তাওহীদে বিশ্বাসী একজন মুমিন কুরআনের ভাষায় বলেÑ

    اِنْ هِیَ اِلَّاۤ اَسْمَآءٌ سَمَّیْتُمُوْهَاۤ اَنْتُمْ وَ اٰبَآؤُكُمْ مَّاۤ اَنْزَلَ اللهُ بِهَا مِنْ سُلْطٰنٍ  اِنْ یَّتَّبِعُوْنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ مَا تَهْوَی الْاَنْفُسُ  وَ لَقَدْ جَآءَهُمْ مِّنْ رَّبِّهِمُ الْهُدٰی.

    (এদের স্বরূপ এর বেশি কিছু নয় যে,) এগুলি কতক নাম মাত্র, যা তোমরা এবং তোমাদের বাপ-দাদাগণ রেখেছ। আল্লাহ এর স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ নাযিল করেননি। প্রকৃতপক্ষে তারা (অর্থাৎ কাফেরগণ) কেবল ধারণা এবং মনের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে। অথচ তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে তাদের কাছে এসে গেছে পথনির্দেশ। Ñসূরা নাজ্ম (৫৩) : ২৩

    মুশরিকদের খুব ভালোভাবে বোঝা উচিত, তাদের কাল্পনিক উপাস্যদের কাছে কিছুই নেই যে, দুনিয়া-আখেরাতে তারা তাদের কোনো সাহায্য করবে। ইরশাদ হয়েছেÑ

    قُلِ ادْعُوا الَّذِیْنَ زَعَمْتُمْ مِّنْ دُوْنِ الله لَا یَمْلِكُوْنَ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ فِی السَّمٰوٰتِ وَ لَا فِی الْاَرْضِ وَ مَا لَهُمْ فِیْهِمَا مِنْ شِرْكٍ وَّ مَا لَهٗ مِنْهُمْ مِّنْ ظَهِیْر.

    (হে রাসূল! ওই কাফেরদেরকে) বলে দাও, তোমরা যাদেরকে আল্লাহর পরিবর্তে উপাস্য মনে করতে তাদেরকে ডাক। আকাশম-লী ও পৃথিবীতে তারা অণু পরিমাণ কিছুরও মালিক নয় এবং আকাশম-লী ও পৃথিবীতে (কোনও বিষয়ে আল্লাহর সাথে) তাদের কোনো অংশীদারিত্ব নেই এবং তাদের মধ্যে কেউ তাঁর সাহায্যকারীও নয়। Ñসূরা সাবা (৩৪) : ২২

    অন্যত্র আল্লাহ তাআলার কুদরত ও নিআমতরাজির আলোচনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছেÑ

    ذٰلِكُمُ اللهُ رَبُّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ  وَ الَّذِیْنَ تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِهٖ مَا یَمْلِكُوْنَ مِنْ قِطْمِیْرٍؕ، اِنْ تَدْعُوْهُمْ لَا یَسْمَعُوْا دُعَآءَكُمْ وَ لَوْ سَمِعُوْا مَا اسْتَجَابُوْا لَكُمْ وَ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ یَكْفُرُوْنَ بِشِرْكِكُمْ وَ لَا یُنَبِّئُكَ مِثْلُ خَبِیْرٍ.

    তিনি আল্লাহÑ তোমাদের প্রতিপালক। সকল রাজত্ব তাঁরই। তাঁকে ছেড়ে যাদেরকে (অর্থাৎ যেসব অলীক প্রভুকে) তোমরা ডাক, তারা খেজুর বীচির আবরণের সমানও কিছুর অধিকার রাখে না। তোমরা তাদেরকে ডাকলে তারা তেমাদের ডাক শুনবেই না আর শুনলেও তোমাদেরকে কোনো সাড়া দিতে পারবে না। কিয়ামতের দিন তারা নিজেরাই তোমাদের শিরককে অস্বীকার করবে। যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে অবগত সত্তার মত সঠিক সংবাদ তোমাকে আর কেউ দিতে পারবে না। Ñসূরা ফাতির (৩৫) : ১৩-১৪

    এজন্য রিযিকের প্রার্থনা হোক বা নিরাপত্তার, রহমতের প্রার্থনা হোক বা যুলুম থেকে নিষ্কৃতিরÑ সর্বাবস্থায় সেই একমাত্র মাবুদের নিকটই ফিরে আসতে হবে এবং তাঁর কাছেই সকল আশা-প্রত্যাশা নিবেদন করতে হবে। শান্তি ও নিরাপত্তার একমাত্র মালিক তো তিনিই। এজন্য শুধু তাঁরই ইবাদত করতে হবে। ইরশাদ হয়েছেÑ

    فَلْیَعْبُدُوْا رَبَّ هٰذَا الْبَیْتِ الَّذِیْۤ اَطْعَمَهُمْ مِّنْ جُوْعٍ،  وَّ اٰمَنَهُمْ مِّنْ خَوْفٍ.

    তারা যেন এই ঘরের মালিকের ইবাদত করে, যিনি তাদেরকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাদ্য দান করেছেন এবং ভয়-ভীতি থেকে তাদেরকে নিরাপদ রেখেছেন। Ñসূরা কুরাইশ (১০৬) : ৩-৪)

    তাছাড়া শিরকের মাধ্যমে কীভাবে যুলুম-ফাসাদ দূর হয়ে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হবে? শিরক তো নিজেই অনেক বড় যুলুমÑ

    اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِیْمٌ.

    নিশ্চয়ই শিরক চরম যুলুম। Ñসূরা লুকমান (৩১) : ১৩

    শান্তি ও নিরাপত্তা তো সেই যুলুম থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই। আপন যুগের তাওহীদী মিল্লাতের ইমাম আল্লাহর রাসূল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের বক্তব্য কুরআন মাজীদে বিবৃত হয়েছেÑ

    وَ كَیْفَ اَخَافُ مَاۤ اَشْرَكْتُمْ وَ لَا تَخَافُوْنَ اَنَّكُمْ اَشْرَكْتُمْ بِاللهِ مَا لَمْ یُنَزِّلْ بِهٖ عَلَیْكُمْ سُلْطٰنًا فَاَیُّ الْفَرِیْقَیْنِ اَحَقُّ بِالْاَمْنِ  اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَۘ اَلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ لَمْ یَلْبِسُوْۤا اِیْمَانَهُمْ بِظُلْمٍ اُولٰٓىِٕكَ لَهُمُ الْاَمْنُ وَ هُمْ مُّهْتَدُوْنَ۠.

    তোমরা যেসকল জিনিসকে (আল্লাহর) শরীক বানিয়েছ, আমি কীভাবেইবা তাদেরকে ভয় করতে পারি, যখন তোমরা ওইসকল জিনিসকে আল্লাহর শরীক বানাতে ভয় করছ না, যাদের বিষয়ে তিনি তোমাদের প্রতি কোনো প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি? সুতরাং তোমাদের কাছে যদি কিছু জ্ঞান থাকে, তবে (বল) দুই দলের মধ্যে কোন্ দল নির্ভয়ে থাকার বেশি উপযুক্ত? (প্রকৃতপক্ষে) যারা ঈমান এনেছে এবং নিজেদের ঈমানকে যুলুমের সাথে মিশ্রিত করেনি, নিরাপত্তা ও স্বস্তি তো কেবল তাদেরই অধিকার এবং তারাই সঠিক পথে পৌঁছে গেছে। Ñসূরা আনআম (৬) : ৮১-৮২

    দুআ ও প্রার্থনার একমাত্র হকদার তিনিই, যিনি সবকিছুর খালিক ও মালিক। আর কেবল সে দুআই যথার্থ ও কার্যকর হবে, যা শুধু তাঁরই দরবারে পেশ করা হবে। এর বাইরে সকল প্রার্থনা বেকার ও অর্থহীন। কারণ সেগুলো করা হয়েছে ভুল স্থানে। ইরশাদ হয়েছেÑ

    لَهٗ دَعْوَةُ الْحَقِّ وَ الَّذِیْنَ یَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِهٖ لَا یَسْتَجِیْبُوْنَ لَهُمْ بِشَیْءٍ اِلَّا كَبَاسِطِ كَفَّیْهِ اِلَی الْمَآءِ لِیَبْلُغَ فَاهُ وَ مَا هُوَ بِبَالِغِهٖ  وَ مَا دُعَآءُ الْكٰفِرِیْنَ اِلَّا فِیْ ضَلٰلٍ.

    তিনিই সেই সত্তা, যার কাছে দুআ করা সঠিক। তারা তাঁকে ছেড়ে যাদেরকে (অর্থাৎ যেই দেব-দেবীদেরকে) ডাকে তারা তাদের দুআর কোনো জবাব দেয় না। তাদের দৃষ্টান্ত সেই ব্যক্তির মত, যে পানির দিকে দু’হাত বাড়িয়ে আশা করেÑ তা আপনিই তার মুখে পৌঁছে যাবে, অথচ তা কখনো নিজে নিজে তার মুখে পৌঁছাতে পারে না। আর (দেব-দেবীদের কাছে) কাফেরদের দুআ করার ফল এছাড়া আর কিছুই নয় যে, তা শুধু বৃথাই যাবে। Ñসূরা রাআদ (১৩) : ১৪

    এককথায়Ñ

    ذٰلِكَ بِاَنَّ اللهَ هُوَ الْحَقُّ وَ اَنَّ مَا یَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِهٖ هُوَ الْبَاطِلُ وَ اَنَّ اللهَ هُوَ الْعَلِیُّ الْكَبِیْرُ.

    অর্থাৎ, আল্লাহই সত্য। আর তারা তাঁকে ছেড়ে যেসব জিনিসের ইবাদত করে তা সবই মিথ্যা। আর আল্লাহই সেই সত্তা, যার মহিমা সমুচ্চ, মর্যাদা বিপুল। Ñসূরা হাজ্জ (২২) : ৬২

    মোটকথা, তাওহীদের অনুসারী মুমিনের ঘোষণাই এটাÑ

    এক.

    اَغَیْرَ اللهِ اَتَّخِذُ وَلِیًّا فَاطِرِ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ هُوَ یُطْعِمُ وَ لَا یُطْعَم.

    আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করব? যিনি আকাশম-লী ও পৃথিবীর ¯্রষ্টা এবং যিনি (সকলকে) খাদ্য দান করেন, কারো থেকে খাদ্য গ্রহণ করেন না? Ñসূরা আনআম (৬) : ১৪

    দুই.

    یٰقَوْمِ اِنِّیْ بَرِیْٓء مِّمَّا تُشْرِكُوْنَ،  اِنِّیْ وَجَّهْتُ وَجْهِیَ لِلَّذِیْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ حَنِیْفًا وَّ مَاۤ اَنَا مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ.

    হে আমার কওম! তোমরা যেসকল জিনিসকে (আল্লাহর সঙ্গে) শরীক কর, তাদের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি সম্পূর্ণ একনিষ্ঠভাবে সেই সত্তার দিকে নিজের মুখ ফেরালাম, যিনি আকাশম-লী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আমি শিরককারীদের অন্তর্ভুক্ত নই। Ñসূরা আনআম (৬) : ৭৮-৭৯

    তিন.

    اِنَّ صَلَاتِیْ وَ نُسُكِیْ وَ مَحْیَایَ وَ مَمَاتِیْ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَ لَا شَرِیْكَ لَهٗ وَ بِذٰلِكَ اُمِرْتُ وَ اَنَا اَوَّلُ الْمُسْلِمِیْن ، …اَغَیْرَ اللهِ اَبْغِیْ رَبًّا وَّ هُوَ رَبُّ كُلِّ شَیْءٍ  وَ لَا تَكْسِبُ كُلُّ نَفْسٍ اِلَّا عَلَیْهَا وَ لَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِّزْرَ اُخْرٰی ثُمَّ اِلٰی رَبِّكُمْ مَّرْجِعُكُمْ فَیُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ فِیْهِ تَخْتَلِفُوْن.

    নিশ্চয়ই আমার নামায, আমার ইবাদত ও আমার জীবন-মরণ সবই আল্লাহর জন্য, যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক। তাঁর কোনও শরীক নেই। আমাকে এরই হুকুম দেওয়া হয়েছে। এবং আনুগত্য স্বীকারকারীদের মধ্যে আমিই প্রথম।

    …আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনও প্রতিপালক সন্ধান করব, অথচ তিনি প্রতিটি জিনিসের মালিক? প্রত্যেক ব্যক্তি যা-কিছু করে, তার লাভ-ক্ষতি অন্য কারও উপর নয়, স্বয়ং তার উপরই বর্তায় এবং কোনও ভার-বহনকারী অন্য কারও  ভার বহন করবে না। পরিশেষে তোমাদের প্রতিপালকের কাছেই তোমাদের সকলকে ফিরে যেতে হবে। তোমরা যেসব বিষয়ে মতভেদ করতে, তখন তিনি সে সম্পর্কে তোমাদের অবহিত করবেন। Ñসূরা আনআম (৬) : ১৬২-১৬৪

    তাওহীদের অনুসারী মুমিন সর্বদা এই প্রার্থনা করেÑ

    رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ اِذْ هَدَیْتَنَا وَ هَبْ لَنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَة اِنَّكَ اَنْتَ الْوَهَّاب.

    হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে যখন হেদায়েত দান করেছ তারপর আর আমাদের অন্তরে বক্রতা সৃষ্টি করো না এবং একান্তভাবে নিজের পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান কর। নিশ্চয়ই তুমিই মহা দাতা। Ñসূরা আলে ইমরান (৩) : ৮

    رَبِّ اجْعَلْ هٰذَا الْبَلَدَ اٰمِنًا وَّ اجْنُبْنِیْ وَ بَنِیَّ اَنْ نَّعْبُدَ الْاَصْنَامَ.

    হে আমার প্রতিপালক! এ নগরকে শান্তিপূর্ণ বানিয়ে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে প্রতিমা পূজা করা হতে রক্ষা করুন। Ñসূরা ইবরাহীম (১৪) : ৩৫

    মনে রাখা উচিত, আল্লাহ তাআলার নিকট শিরক সবচে বড় কবীরা গুনাহ। অন্যান্য গুনাহ তো আল্লাহ যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেন, তবে শিরকের ব্যাপারে তিনি ঘোষণা করেছেন, এই গুনাহ তিনি মাফ করবেনই না, যতক্ষণ না শিরককারী ব্যক্তি খাঁটি অন্তরে তওবা  করে সব ধরনের শিরক থেকে ফিরে আসে এবং তাওহীদের দ্বীন ইসলাম কবুল করে মনে-প্রাণে শুধু এবং শুধু তাওহীদের উপর অবিচল থাকে। ইরশাদ হয়েছেÑ

    اِنَّ اللهَ لَا یَغْفِرُ اَنْ یُّشْرَكَ بِهٖ وَ یَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِكَ لِمَنْ یَّشَآءُ  وَ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلٰلًۢا بَعِیْدًا.

    নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না। এর নিচের যে কোনো গুনাহ যার ক্ষেত্রে চান ক্ষমা করে দেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে (কাউকে) শরীক করে, সে (সঠিক পথ থেকে) বহু দূরে সরে যায়। Ñসূরা নিসা (৪) : ১১৬

    আরো ইরশাদ হয়েছেÑ

    اِنَّهٗ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَیْهِ الْجَنَّةَ وَ مَاْوٰىهُ النَّارُ وَ مَا لِلظّٰلِمِیْنَ مِنْ اَنْصَار.

    নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে (কাউকে) শরীক করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। তার ঠিকানা জাহান্নাম। আর জালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই। Ñসূরা মায়িদা (৫) : ৭২

    মোটকথা, দ্বীনে  তাওহীদের অনুসারী এবং কালিমায়ে তাওহীদের সাক্ষ্যদানকারী মুমিন-মুসলিমকে সতর্ক থাকতে হবে। এমন যেন না হয় যে, উদারতার নামে স্পষ্ট শিরকী কর্মকা-গুলোকে ভুল ব্যাখ্যা করতে শুরু করল, নিছক উৎসব নাম দিয়ে সেগুলোর পক্ষে সাফাই এবং সেগুলোতে অংশগ্রহণ করতে লাগল। এমনটা করলে এর চেয়ে বড় অকৃতজ্ঞতা ও অবাধ্যতা আল্লাহর সঙ্গে আর কী হতে পারে? এবং ঈমান ও তাওহীদের নিআমত থেকে বঞ্চিত হওয়ার এর চেয়ে বড় কারণ আর কী হতে পারে?

     

    অমুসলিমদের উৎসবে মুসলমানদের অংশগ্রহণের বিধান

    বর্তমানে কিছু মানুষ কেবল অজ্ঞতার কারণে এমন মনে করছে যে, মুসলমানদের জন্য যেন অমুসলিমদের ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করা বৈধ! এই ভাইদের খুব ভালো করে বোঝা উচিত, এমন ধারণা একেবারে ভুল।

    ইসলাম ও ইসলামী শরীয়ত এসব বিষয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল। ইসলাম তার অনুসারীদের জীবনের কোনো অঙ্গনকে ‘ফকির’ ছেড়ে দেয়নি; বরং জীবনের প্রতিটি অধ্যায় ও ক্ষেত্রে তাদেরকে বিধান দান করেছে এবং তাদেরকে আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি জাতি হিসাবে পুরো পৃথিবীর জন্য আদর্শ বানিয়েছে। মুমিনদের লক্ষ করে ইরশাদ হয়েছেÑ

    یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا ادْخُلُوْا فِی السِّلْمِ كَآفَّةً  وَّ لَا تَتَّبِعُوْا خُطُوٰتِ الشَّیْطٰنِ اِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوّ مُّبِیْنٌ.

    হে মুমিনগণ! ইসলামে সম্পূর্ণরূপে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। Ñসূরা বাকারা (২) : ২০৮

    আর পুরো দুনিয়ার প্রতি ইসলামের ঘোষণাÑ

    اٰمِنُوْا كَمَاۤ اٰمَنَ النَّاسُ.

    যেসকল লোক ঈমান এনেছে তোমরাও তাদের মত ঈমান আন। Ñসূরা বাকারা (২) : ১৩

    এবং

    فَاِنْ اٰمَنُوْا بِمِثْلِ مَاۤ اٰمَنْتُمْ بِهٖ فَقَدِ اهْتَدَوْا.

    তারা যদি সেরকম ঈমান আনে, যেমন তোমরা ঈমান এনেছ, তবে তারা সঠিক পথ পেয়ে যাবে। Ñসূরা বাকারা (২) : ১৩৭

    জীবনের অন্যসব বিষয়ের মত উৎসবের ক্ষেত্রেও মুসলিম উম্মাহকে স্বতন্ত্র বিধি-বিধান দান করা হয়েছে। তাদেরকে ঈদের বিধান দেয়াই হয়েছে এ কথা বলেÑ

    “প্রত্যেক জাতির নিজস্ব উৎসব থাকে। হে মুসলিম জাতি! তোমাদের উৎসব হল ‘ঈদ’।” অর্থাৎ সব জাহেলী উৎসব থেকে অমুখাপেক্ষী করে মুসলিম উম্মাহকে ‘ঈদ’ দান করা হয়েছে। তাই তাদের জন্য এটা বৈধই নয় যে, তারা নিজেরা কোনো জাহেলী উৎসব উদ্যাপন করবে বা তাতে অংশগ্রহণ করবে।

    হাদীস শরীফে আছে, মদীনায় আগমনের পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখেন, এখানকার অধিবাসীরা বছরে দু’দিন উৎসব পালন করে। তখন আল্লাহর রাসূল তাদের বললেনÑ

    إِنّ اللهَ قَدْ أَبْدَلَكُمْ بِهِمَا خَيْرًا مِنْهُمَا: يَوْمَ الْأَضْحَى، وَيَوْمَ الْفِطْرِ.

    নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে সেসবের পরিবর্তে দুটি উত্তম দিন দান করেছেনÑ আযহা এবং ফিতর। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১১৩৪

    এছাড়া একাধিক হাদীসে বলা হয়েছেÑ

    إِنّ لِكُلِّ قَوْمٍ عِيدًا، وَهَذَا عِيدُنَا.

    অর্থাৎ নিশ্চয়ই প্রত্যেক কওমের আপন আপন উৎসব আছে। আমাদের (অর্থাৎ মুসলিম উম্মাহর) উৎসব হচ্ছে ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ৯৫২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৯২

    এজন্য কুরআনে কারীমে [সূরা ফুরকান (২৫) : ৭২] আল্লাহর নেক বান্দাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে এ কথাও বলা হয়েছেÑ

    وَ الَّذِیْنَ لَا یَشْهَدُوْنَ الزُّوْر.

    অর্থাৎ তারা এমন মানুষ, যারা মিথ্যা ধ্যান-ধারণার ভিত্তিতে উদ্যাপিত কাফের-মুশরিকদের উৎসবে অংশগ্রহণ করে না।

    (উল্লেখিত আয়াতাংশের তাফসীর জানার জন্য দেখুনÑ তাফসীরে ইবনে কাসীর খ. ৬ পৃ. ১৪০ ও আদ্দুররুল মানসূর খ. ৫ পৃ. ৮০-৮১  এবং ইমাম ইবনে তাইমিয়া রাহ.-এর কিতাব ‘ইকতিযাউস সিরাতিল মুসতাকীম মুখালাফাতা আসহাবিল জাহীম’ খ. ১ পৃ. ৪২৭-৪৩২)

    আরেক হাদীসে এই ঘটনা বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় একজন মান্নত করল, অমুক জায়গায় সে উট জবাই করবে। সে আল্লাহর রাসূলের নিকট মাসআলা জানতে চাইলে আল্লাহর রাসূল জিজ্ঞেস করলেনÑ

    هَلْ كَانَ فِيهَا وَثَنٌ مِنْ أَوْثَانِ الْجَاهِلِيّةِ يُعْبَدُ؟

    সেখানে কি জাহেলী যুগের কোনো মূর্তি ছিল, যার পূজা করা হত? লোকেরা বলল, না। পুনরায় জিজ্ঞেস করলেনÑ

    هَلْ كَانَ فِيهَا عِيدٌ مِنْ أَعْيَادِهِمْ؟

    সেখানে কি অমুসলিমদের কোনো উৎসব হত? লোকেরা বলল, না। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনÑ

    أَوْفِ بِنَذْرِكَ، فَإِنّهُ لَا وَفَاءَ لِنَذْرٍ فِي مَعْصِيَةِ اللهِ…

    তুমি তোমার মান্নত পুরা কর। (এরপর বললেন, এসব প্রশ্ন এজন্য করা হয়েছে) কারণ, আল্লাহর নাফরমানিতে কোনো মান্নত গ্রহণযোগ্য নয়; এ ধরনের মান্নত পূরণ করা জায়েয নয়। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৩১৩, অধ্যায় : মা ইয়ু’মারু বিওয়াফাইহী মিনান নাযরি

    সাহাবায়ে কেরাম কুরআন-হাদীসের হেদায়েত ও নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে হৃদয়ঙ্গম করেছিলেন। এজন্য তাঁরা মানুষকে অমুসলিমদের উৎসবে যেতে অত্যন্ত কঠোরভাবে নিষেধ করতেন। হযরত উমর রা. বলেনÑ

    اجْتَنِبُوا أَعْدَاءَ اللهِ فِي عِيدِهِمْ.

    তোমরা আল্লাহর শত্রুদের উৎসব থেকে দূরে থাক। Ñআসসুনানুল কুবরা লিলবাইহাকী, বর্ণনা ১৮৮৬২; ইকতিযাউস সিরাতিল মুসতাকীম, খ. ১ পৃ. ৪৫৬-৪৫৭

    অবশেষে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুটি মৌলিক হেদায়েত স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনÑ

    مَنْ تَشَبّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ.

    যে যে জাতির সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদেরই বলে গণ্য হবে। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪০৩১

    কোনো জাতির উৎসব হচ্ছে সে জাতির শিআর বা নিদর্শন। অতএব বিজাতির নিদর্শনাবলীর ক্ষেত্রে যে তাদের সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে যে হাদীসে উল্লেখিত ধমকির অন্তর্ভুক্তÑ এ বিষয়ে কি কোনো সন্দেহ  আছে?

    আরেক হাদীসে এসেছেÑ

    مَنْ كَثّرَ سَوَادَ قَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ وَمَنْ رَضِيَ عَمَلَ قَوْمٍ كَانَ شَرِيكًا لِمَنْ عَمِلَهُ.

    যে ব্যক্তি কোনো কওমের দল ভারী করবে সে তাদের মধ্যে গণ্য হবে। আর যে কোনো সম্প্রদায়ের কাজের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করবে সে সে কাজের অংশীদার বলে ধতর্ব্য হবে। Ñ(মুসনাদে আবু ইয়ালা) আলমাতালিবুল ‘আলিয়া খ. ৪ পৃ. ৩১৫; কিতাবুয যুহদি ওর্য়ারাকাইক, ইবনুল মুবারক পৃ. ৪৪৭, অধ্যায় : বাবু ইসতিমায়িল লাহ্বি; নাসবুর রায়াহ, খ. ৪ পৃ. ৩৪৬-৩৪৭;  আদ্দিরায়াহ ফী তাখরীজি আহাদিসিল হিদায়া (দ্র. হিদায়া খ. ৪ পৃ. ৫৬৭, হিন্দুস্তানী সংস্করণ) ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার খ. ১৩, পৃষ্ঠা ৩৭-৩৮, হাদীস ৭০৮৫ باب من كره أن يكثر سواد الفتن والظلم; আলমাকাসিদুল হাসানা খ. ৫ পৃ. ১৮১

    আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ঈমানী গায়রত দান করুন। সকল শিরক থেকে রক্ষা করুন এবং বিজাতীয় সকল আচার-অনুষ্ঠান ও পর্ব-উৎসব থেকে দূরে থাকার তাওফীক দান করুনÑ আমীন।

    هذا، وصلى الله تعالى وبارك وسلم على سيدنا ومولانا محمد خاتم النبيين، لا نبي بعده، وعلى آله وأزواجه وأهل بيته أجمعين.

    وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين

    চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ হোক্কাইদো’তে ভাসমান বরফের স্তর অদৃশ্য হওয়ার সম্ভাবনা

    একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা গ্রুপ বলছে, চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ জাপানের সর্ব উত্তরের জেলা হোক্কাইদো থেকে বরফের ভাসমান আস্তরণ অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে।

    প্রতিবছর শীতকালে আবাশিরি উপকুল’সহ অন্যান্য এলাকায় রাশিয়ার উপকূল এলাকা থেকে আসা ভাসমান বরফের আস্তরণ চোখে পড়ে। আর এগুলো দেখতে অনেক পর্যটকেরও সমাগম ঘটে।

    হোক্কাইদো’র ওখোতস্ক সাগর বরফ যাদুঘরের একটি গবেষণা গ্রুপ ২০০৯ সাল পর্যন্ত ১৫ বছর ধরে চারটি নির্দিষ্ট এলাকায় গড় তাপমাত্রার সাথে ভাসমান বরফের আস্তরণের পরিমাণের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা বা নিরীক্ষা চালায়। এক্ষেত্রে, মূলত, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব সম্পর্কে জানার জন্যই গ্রুপটি এই অনুসন্ধান চালায়।

    এর ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির সময় বরফের ভাসমান আস্তরণ কমে যায়।

    হোক্কাইদো’র আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের একটি সিমুলেশন বা নমুনা-উপস্থাপনায় দেখা গেছে যে চলতি বছরের শেষ নাগাদ ওখোতস্ক সাগর উপকূলীয় এলাকায় ৩ থেকে ৬ ডিগ্রী তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

    তাপমাত্রা বৃদ্ধির সময় বরফের আস্তরণ হোক্কাইদোর দিকে নেমে আসবে না বলে মনে করা হচ্ছে। সাগর বরফ যাদুঘরের প্রধান শুহেই তাকাহাশি বলেছেন, ঐ জেলায় ভাসমান বরফের আস্তরণ প্রত্যাশার চাইতেও বেশ দ্রুতগতিতে অদৃশ্য হয়ে চলেছে।

    বাবরি মসজিদে হামলাকারীর ইসলাম গ্রহণ, নির্মাণ করলেন ৯০ মসজিদ

    ভারতের অযোধ্যায় অবস্থিত ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদে প্রথম হামলাকারী ব্যক্তি বলবীর সিং ইসলাম গ্রহণ করেছেন, নাম রেখেছেন মোহাম্মদ আমির। এটা পুরনো খবর। নতুন খবর, মসজিদ ভাঙ্গার সুতীব্র এক অনুশোচনা থেকে মোহাম্মদ আমির ইতিমধ্যে নির্মাণ করেছেন ৯০টি মসজিদ।

    সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ আমির বলেছেন, শিব সেনার দলে যোগ দেয়ার পর তিনি উগ্রবাদী হয়ে উঠেন।

    তিনি ব্যখ্যা করে বলেন, দিল্লির কাছে হরিয়ানায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রশিক্ষণ শিবিরে ও পানিপথে কার্যক্রমে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতাম।

    মোহাম্মদ আমির বলেছেন, বাবরি মসজিদে হামলার দিন কার্যত কোন সেখানে নিরাপত্তা ছিল না যা আমাদের সেখানে আক্রমণে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।

    আমির বলেছেন, মসজিদ ভেঙ্গে ফেরার পথে সবাই আমাদের নায়কের চোখে দেখছিল, কিন্তু আমার পরিবারের প্রতিক্রিয়া ছিল পুরোপুরি ভিন্ন যা আমাকে মর্মাহত করে।

    আমার পরিবারের লোকজনের হতাশায় মসজিদ ভাঙ্গার উল্লাস নিমিষেই দূর হয়ে যায়। আমি বুঝতে পারলাম অনেক খারাপ কিছু করে ফেলেছি। এরপর সিদ্ধান্ত নিলাম এর মাশুল আমায় দিতে হবে, বলেন আমির।

    বাবরি মসজিদে হামলাকারীর ইসলাম গ্রহণ, নির্মাণ করলেন ৯০ মসজিদ

    এরপর তিনি আলেম মাওলানা কালেম সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং এক পর্যায়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। সে সময় মোহাম্মদ আমির পণ করেন ১০০টি মসজিদ নতুন করে নির্মাণ ও সংস্কার করবেন।

    তারই প্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত ৯০টি মসজিদ নির্মাণ করেছেন। সূত্র: আরব নিউজ, আনাদোলু।

    গবেষকদেরকে বর্ধিত সহায়তা দিবে জাপান সরকার

    জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় তরুণ গবেষকদের সাত বছর ধরে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য একটি কর্মসূচী চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

    মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা এই কর্মসূচীর জন্য প্রায় ৪৬ কোটি মার্কিন ডলারের একটি তহবিল গঠন করবে। তারা জানিয়েছে, প্রত্যেক সফল প্রার্থীদের প্রায় ৬৪ হাজার ডলারের বার্ষিক সহায়তা প্রদান করা হবে।

    মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, এই কর্মসূচীর জন্য ৭০০ গবেষককে বাছাই করতে তিন বছর সময় লাগবে এবং নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে গবেষকদের বয়স সীমা হবে ৪০ বছর।

    মন্ত্রণালয় এও জানিয়েছে যে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময়সীমা ১০ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যাবে যা তরুণ গবেষকদের জন্য নেয়া অন্যান্য সহায়তা কর্মসূচীর চেয়ে বেশি।

    জাপানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এজেন্সি এই কর্মসূচীর জন্য গবেষকদের বাছাই করবে। কর্মকর্তারা জানান, আদর্শ প্রার্থী হবেন তারাই যারা স্বতন্ত্র ও চ্যালেঞ্জিং গবেষণা নিয়ে কাজ করবেন।