• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • কামাতায় প্রবাসীদের পিঠা উৎসব

    টোকিওর ওতাকূ এলাকার প্রবাসীদের উদ্দোগে গত রোববার ১৪ ফেব্রুয়ারী,২০১৬, জেআর কামাতা ষ্টেশন সংলগ্ন শোহিশা সেইকাৎসূ সেন্টারে জমজমাট শীতকালীন পিঠা উৎসবের আয়োজনটি ছিল বেশ জমজমাট।জাপান প্রবাসী বাংলা উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত “কামাতা মসজিদ” কেন্দ্রিক মূসলিম প্রবাসীরা সবাই মিলে আয়োজনটির সাথে সম্পৃক্ত থেকে প্রথমবারের মতো পিঠা উৎসব ও সেই সাথে মূখরোচক রাতের বাহারী খাবার পরিবেশন করেন।শূধূ নিজেরা নয় ও অন্য এলাকা থেকে আগত অতিথীদের নিয়ে আড্ডা ও সবাই মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়ার চিরন্তন বাংলা ঐতিহ্য পালনের অভিপ্রায়ে আয়েজনটি পূরোটাই সফল হয়েছে।
    দিনটি ছিল চমৎকার,কদিনের হাড়কাপূনী শীতের পর হঠাৎ এই দিনটির আবহাওয়া ছিল শরৎকালের.ভ্যালেন্টাইনস দিনটিও ওদিন।

    এলাকায় বসবাসরত বোন-ভাবীরা প্রচূর পরিশ্রম করে নানা ধরনের সূস্বাদু পিঠা বানিয়ে নিয়ে আসেন,কর্তারা ব্যাস্ত ছিলেন বিরিয়ীনী ও অন্য খাবার রান্নার আয়োজনের সাথে। আয়োজক বৃন্দ:এস ইসলাম নান্নু,সাইয়িদ চৌধূরী,গাজী হেলাল,শরীফ হোসেন,সফিকূল ইসলাম খান,শেখ মো:বদিউজ্জামান, সায়েম, ময়েজ বাশার,তৌহিদূর রহমান,রবিউল ইসলাম রবীন,রবিউল আলম লিংকন,খোকন,মিল্টন,শাহাদত চৌধূরী,হক প্রমূখ।

    প্রচূর প্রবাসীদের ভীড়,খোশগল্প,ভূরিভোজ শেষে পরম পরিতৃপ্তি নিয়ে অবশেষে ঘড়ে ফেরা।

    ঘাম থেকে চার্জ নেবে স্মার্টফোন!

    পরিশ্রমের কাজ করেতে গেলে আমাদের কম বেশি সবারই ঘাম ঝরাতে হয়। ঘাম নিয়ে আবার অনেকের বিরক্তিরও শেষ নেই। কিন্তু আপনি অবাক হলেও সত্যিই যে, এই ঘাম থেকেই স্মার্টফোনে চার্জ দেয়া যাবে।
    সম্প্রতি এক দল গবেষক জানিয়েছেন, এক ধরনের বিশেষ ট্যাটুর মাধ্যমে তারা স্মার্টফোন চার্জের প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন। এই প্রযুক্তি ঘাম থেকেই শক্তি সঞ্চয় করে থাকে।
    যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়েগোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, তারা এমন একটি ট্যাটু বানিয়েছেন যা শরীরে লাগানো থাকলে ঘাম থেকে চার্জ নিতে পারবে স্মার্টফোন।
    গবেষণাটির প্রধান জোসেফ ওয়াং জানিয়েছেন, মানুষ যখন কাজ করে ঘর্মাক্ত হয় তা থেকেই ব্যক্তিগত ডিভাইসের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ বা চার্জ সংগ্রহ করা সম্ভব।
    তিনি জানান, তারা আপাতত একটি অস্থায়ী ট্যাটো সেন্সর বানিয়েছেন যা শরীরের ঘাম এবং রক্তের ধারা থেকে ল্যাকটিক অ্যাসিডের রাসায়নিক লবণ সংগ্রহ করবে। এরপর এটি ল্যাকটিক অ্যাসিড থেকে ইলেকট্রনগুলোকে আলাদা করবে, যা স্মার্টফোনকে চার্জ করতে যথেষ্ট।
    এমনকি, ডাক্তাররাও এর সাহায্যে শরীরের ল্যাকটিক অ্যাসিডের মাত্রা নির্ণয় করতে পারবেন।
    গবেষক দল ট্যাটু সেন্সরটিতে জুড়ে দেয়ার জন্য একটি বায়ু ব্যাটারি বানিয়েছেন, যা কিছুটা বিদ্যুৎ জমা করে রাখতে পারবে। প্রতি মুহূর্তেই এই সেন্সরগুলো কয়েক মাইক্রোওয়াট বিদ্যুৎ সংগ্রহ করে।
    গবেষণায় দেখা গেছে, একটি স্মার্টফোন প্রতি দুই মিনিটে ৭০ মিলিওয়াট বিদ্যুৎ সংগ্রহ করতে পারে। আর এই স্মার্ট ট্যাটুটি এর কিছু অংশ দিতে পারে।
    গবেষকরা বলছেন, তারা ট্যাটুটির মাধ্যমে আরো বেশী বিদ্যুৎ ধারণক্ষম করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

    জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত যাত্রীদের বিমানবন্দরে পৃথক করার বন্দোবস্ত করছে জাপান

    নারিতা বিমানবন্দরের সংগনিরোধ কর্মকর্তারা সম্ভাব্য জিকা আক্রান্ত যাত্রীদের সনাক্ত করার ব্যবস্থা নিয়েছেন।

    স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় জিকা জ্বরকে সংক্রামক রোগ হিসেবে ঘোষণা করার পর নারিতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিলেন।

    সোমবার থেকে জ্বরে আক্রান্ত যাত্রীদের চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে থার্মগ্রাফিক ক্যামেরা ব্যবহার করা শুরু হয়। কোনো যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকলে তাকে বিমানবন্দরের ক্লিনিকে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হবে তিনি জিকা আক্রান্ত কি না।

    ইমিগ্রেশনেও স্বাস্থ্য সমস্যা ধরা পড়লে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজন পরবে।

    যদি কারো দেহে ভাইরাস পাওয়া যায় তবে ক্লিনিক কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অবহিত করার পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাদেরও জানাবেন।

    নারিতা বিমানবন্দরের সংগনিরোধ কর্মকর্তারা উপদ্রুত এলাকা সফরকারীদের ফুল হাত জামা এবং ফুল প্যান্ট পরার উপদেশ দিয়েছেন এবং কীট তাড়ানোর ঔষুধ ব্যবহার করতে বলেছেন। তারা গর্ভবতী মায়েদের বিশেষ করে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

    হালাল-হারামের দৃষ্টিতে বর্তমান শেয়ারবাজার ঝুঁকিপূর্ণ

    মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ

    মাসিক আলকাউসারের সৌভাগ্য যে, আল্লাহ তাআলা তাকে এমন একজন সম্পাদক দান করেছেন, যিনি একজন ‘বালিগুন নযর ফকীহ’ সূক্ষ্মদর্শী ফিকহ-বিশারদ হওয়ার পাশাপাশি বর্তমান সময়ের ভাষা ও পরিভাষা এবং সঙ্কট ও জটিলতা সম্পর্কেও সচেতন। এজন্য তাঁর নিকট পাঠকবৃন্দের এই প্রত্যাশা যথার্থ যে, সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গে বিশেষত আধুনিক লেনদেন ও কারবারের জটিল বিষয়গুলোতে তাঁর চিন্তা-ভাবনা আলকাউসারের পাতায় নিয়মিত প্রকাশিত হবে। যদিও বিভিন্ন কারণে তা হয়ে ওঠে না।আমাদের প্রথম ইচ্ছা ছিল, উপরোক্ত শিরোনামে একটি বিস্তারিত প্রবন্ধ তিনি লিখুন, পরে মনে হয়েছে যে, বিষয়টি যদি সাক্ষাৎকার আকারে উপস্থাপিত হয় তাহলে সর্বশ্রেণীর পাঠকের জন্য তা সহজ হবে। এরপর আমার অনুরোধে মাওলানা ইয়াহইয়া, মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ ও মাওলানা যাকারিয়া আবদুল্লাহ একটি দীর্ঘ প্রশ্নপত্র তৈরি করে তাঁর মুখোমুখি হন। সম্পাদক সাহেব আততাখাসসুস ফিলফিকহি ওয়াল ইফতার তালিবে ইলমদের উপস্থিতিতে ‘ফিকহুল মুয়ামালাত’ এর কয়েকটি মজলিসে ওই প্রশ্নগুলোর বিস্তারিত জওয়াব দেন।

    পরে মাওলানা যাকারিয়া আবদুল্লাহ অত্যন্ত মেহনত করে ‘মুসাজজিলে’র সহায়তায় তার একটি সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করেছেন, যা সম্পাদক সাহেবের নযরে ছানীর পর পাঠকবৃন্দের সামনে পেশ করা হচ্ছে। আশা করি, ইনশাআল্লাহুল আযীয সর্বশ্রেণীর পাঠক এর দ্বারা উপকৃত হবেন। বিশেষত ফিকহ ও ফতোয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তালাবা ও আসাতিযা চিন্তা ও গবেষণায় নতুন নতুন দিক খুঁজে পাবেন। আল্লাহ তাআলা কবুল করুন এবং ভবিষ্যতেও আসানী ও কবূলিয়্যতের সাথে এই ধারাকে অব্যাহত রাখার তাওফীক দান করুন। আমীন।-তত্ত্বাবধায়ক

    প্রশ্ন : এখন শেয়ারবাজারে বেশ চাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ৯৬ সালের বিপর্যয়ের পর দীর্ঘ দিন পর্যন্ত শেয়ার মার্কেট অনেকটা নিস্তব্ধ ছিল। বিশেষ করে গ্রামীনফোনের শেয়ার বাজারে আসার পর থেকে শেয়ারবাজারে অংশগ্রহণ অনেক বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে বর্তমান শেয়ারবাজার সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে তাতে অংশগ্রহণের হুকুম সম্পর্কে জানতে চাই।

    উত্তর : এই প্রশ্নের উত্তর তো সরাসরিই দেওয়া যায়। তবে প্রশ্নকারীর প্রতি সহানুভূতি থেকেই আমরা আগে পরিস্থিতিটা বুঝিয়ে বলি। একে অনেকটা তুলনা করতে পারেন, কারো স্বজনের মৃত্যুসংবাদ দেওয়ার সাথে। সংবাদটা দিতেই হয়। তবে শ্রোতা যেন বাস্তবতাকে মেনে নিতে পারে এজন্য কিছুটা হলেও মানসিক প্রস্তুতিরও সুযোগ দিতে হয়। বর্তমান শেয়ারবাজারের ব্যাপারে অবশ্য অনেক ক্ষেত্রেই এমনটি করার প্রয়োজন পড়ে না। কারণ, হালাল-হারামের বিষয়ে যাদের মধ্যে উদ্বেগ ও সংবেদনশীলতা আছে তাদের যদি শেয়ারবাজার সম্পর্কেও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে তাদের সংশয় সৃষ্টি হবে যে, সম্ভবত এই কারবারটা সহীহ নয়। এজন্য এখন কোনো কোনো প্রশ্নকারীকে সরাসরিও বলে দেই। শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিও বিষয়টিকে সহজ করে দিয়েছে। তা যদি আপনার সামনে থাকে তাহলে বলাও সহজ, গ্রহণ করাও সহজ। যাই হোক, আপনার প্রশ্নের উত্তর যদি সংক্ষেপে পেতে চান তাহলে বলব, বর্তমানে আমাদের দেশে শেয়ার-মার্কেট যে নিয়মে চলে তাতে সেখান থেকে শেয়ারের ক্রয়-বিক্রয়-তা আইপিও-এর মাধ্যমে বলুন বা সেকেণ্ডারি মার্কেট থেকে বলুন-শরীয়তের লেনদেন ও বেচাকেনা-সংক্রান- শর্ত ও নীতিমালা পূরণ করে না। এজন্য হালাল-হারামের দৃষ্টিতে বর্তমান শেয়ারবাজার ঝুঁকিপূর্ণ।

    প্রশ্ন : শেয়ারবাজারে অংশগ্রহণের বিষয়ে আগে থেকে যেসব মাসআলা আমরা পড়েছি, তার সাথে এই সিদ্ধান্তের আংশিক অমিল আছে বলে মনে হয়। কারণ, শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে উপমহাদেশের আলিমদের বিভিন্ন লেখায় যেমন ইমদাদুল ফাতাওয়া ও পরবর্তী ব্যক্তিত্বদের লিখিত কিতাবপত্রে আমরা দেখি যে, তারা কিছু শর্তের সাথে কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচাকে জায়েয বলেছেন। তো এই দুই সিদ্ধান্তের মাঝে কিছুটা অমিল দেখতে পাচ্ছি।

    উত্তর : শেয়ারবাজারের লেনদেনের প্রসঙ্গে যে শর্তযুক্ত বৈধতার কথা বলা হয়ে থাকে তা অনেক পুরানো কথা। প্রথম যখন তা বলা হয়েছিল তখন বৃটিশ আমল। তখনকার মুসলমানদের আর্থসামাজিক অবস্থা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। আর শেয়ারবাজারে মূল্যের উঠা-নামা ছিল কোম্পানির বাস্তব অবস্থার সাথে অনেকটা সঙ্গতিপূর্ণ। এরপর শেয়ারবাজারে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তিত অবস্থার উপর ওই কথাগুলোর প্রয়োগ আমরা যথার্থ মনে করি না। যে চিন্তার উপর ভিত্তি করে ঐ চার শর্তের কথা বলা হয়েছিল বর্তমান শেয়ারবাজারে তা মোটেই মুখ্য বিষয় নয়। শেয়ারের বেচাকেনাকে কোম্পানির অংশের বেচাকেনা ধরে নিয়ে এই শর্তযুক্ত বৈধতার কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমান শেয়ারবাজার সম্পর্কে যাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আছে তারা জানেন যে, সেটি এখন নিতান্তই গৌণ। এখন শেয়ারবাজার এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে যেখানে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার বেচাকেনা হলেও কোম্পানির লাভ-লোকসান বা বাস্তব অবস্থার সাথে এর তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। শেয়ারকে কেন্দ্র করে মানিগেমই হচ্ছে শেয়ারবাজারের মূল ধারা। এটা এখন বেশ পরিষ্কার, সামনে আরও পরিষ্কার হবে। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, বর্তমান শেয়ারবাজারের উপর হুকুম প্রয়োগের আগে এই শর্তযুক্ত বৈধতার প্রসঙ্গটি গোড়াতেই কতটা মজবুত তা নিয়েও শান্তভাবে চিন্তা করা প্রয়োজন ছিল এবং এখনও এ বিষয়ে ভাবার অবকাশ আছে। তৃতীয় কথা হচ্ছে, যারা এখনো এই শর্তযুক্ত বৈধতার কথা বলছেন, বাস্তবতা সম্পর্কে খোঁজ নিলে দেখা যায় যে, তাদের কথা অনুযায়ীও বর্তমান শেয়ারবাজারের লেনদেন বৈধ হয় না। সমপ্রতি পাকিস্তানের মীযান ব্যাংক থেকে একটি পুস্তিকা বের হয়েছে। তাতে শেয়ারের প্রসঙ্গও আছে। কারণ এখনকার ব্যাংকগুলো শেয়ারের কারবারও করে। তাতে বলা হয়েছে যে, কোনো কোম্পানি যদি তার মোট পুঁজির ৪০% বা তারচেয়ে কম সুদী ব্যাংক থেকে ঋণ নেয় তাহলে ওই কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা করা যাবে। মনে হয় যেন অহী আছে! চল্লিশ পার্সেন্ট পর্যন্ত সুদী লোন থাকলে সে কোম্পানির শেয়ার কেনা যাবে! এই কথাগুলো গোড়াতেই সঠিক কি না সে প্রসঙ্গ বাদ দিলেও তাদের কথা অনুযায়ীই তো হালাল হয় না। কারণ এখন কোম্পানিগুলোর ব্যাংক-লোন থাকে ৬০% থেকে ৭০%, ৮০% পর্যন্ত। ৬০% নিজের টাকা দিয়ে কোম্পানি করার দিন অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। এখন তো ঘরও করা লাগে না ৬০% নিজের টাকা দিয়ে। ফ্ল্যাট কেনার জন্য ৮০% লোন পাবেন। ১ কোটি টাকার ফ্ল্যাট কিনতে চান তো ব্যাংক আপনাকে ৮০ লক্ষ টাকা লোন দিবে। এজন্য আজকাল এমন কোম্পানি পাওয়া দুষ্কর, যার ব্যাংক-লোন মূল ক্যাপিটালের মাত্র ৪০%। আপনি কোম্পানিগুলোর খোঁজ-খবর নিলে দেখবেন ওদের ৬০-৭০% করে ব্যাংক-লোন আছে। যেসব কোম্পানির শেয়ার মানুষ বেশি কেনে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। কারণ, এতো ওষুধ কোম্পানি! মূল কারবার বৈধ! অথচ কিছুদিন আগেও বেক্সিমকো গ্রুপ ছিল বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ঋণখেলাপী। এখন অবশ্য তারা আর কাগজে-কলমে ঋণ খেলাপী নেই! যারা এদের সম্পর্কে ঋণখেলাপী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল তাদেরকে তওবা-আসতাগফিরুল্লাহ পড়িয়ে দিয়েছে! যাই হোক, আমার দেখানো উদ্দেশ্য এই পার্সেন্টগুলো। এগুলো শরীয়তের কোনো নসে আছে বলে আমরা দেখিনি। ফকীহরা এ রকম পার্সেন্ট ধরে ধরে কোনো কথা বলেছেন তাও আমাদের জানা নেই। অথচ এখন ৩৩%, ৪০%, ৫০% এগুলো এসে গেছে ছাপানো আকারে! তো গোড়ার প্রসঙ্গটাতেই প্রশ্ন আছে।

    প্রশ্ন : আপনি বলেছেন যে, বর্তমান শেয়ারবাজার পূর্বের অবস্থায় নেই। তাতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। শেয়ার বাজারের গতি-প্রকৃতি এবং শেয়ারের দর বাড়া-কমা-এগুলো নিয়ন্ত্রিত হয় শেয়ারবাজারের নিজস্ব কিছু বিষয় দ্বারা। বিষয়টি একটু সুনির্দিষ্ট করে বলবেন কি?

    উত্তর : আগে বিষয়টি এই ছিল যে, কোম্পানির কারবার ভালো হলে শেয়ারের দাম বাড়ত। কোনো কোম্পানি বেশি ডিভিডেন্ড দিবে, তা আগে থেকে জানাজানি হলে তার শেয়ারের দাম বাড়ত। ওই বাড়ারও একটা মাত্রা ছিল। জানা গেল যে, কোম্পানি ৩০% ডিভিডেন্ড দিবে তাহলে ২০%, ২৫% বেশি দামেও মানুষ শেয়ার কিনে ফেলত। তদ্রূপ কোম্পানি কোনো সম্ভাবনাময় প্রজেক্ট হাতে নিচ্ছে তাহলে শেয়ারের দাম বাড়ত। এটা এখনও আছে। কিছু দিন আগে গ্রামীনফোন ঘোষণা দিয়েছে যে, টেকনোলজি সংক্রান্ত ওদের একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি আসছে। এই ঘোষণার পরও গ্রামীনফোনের শেয়ারের দাম বেড়েছে। এগুলো হচ্ছে দাম বাড়ার যৌক্তিক বা অর্ধ-যৌক্তিক কয়েকটি কারণ। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এ বিষয়গুলো গৌণ। এখন মুখ্য বিষয় হচ্ছে চাহিদা ও যোগান। কাঁচাবাজারে যেমন চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে দাম বাড়ে-কমে, শেয়ারবাজারেও তেমনি। শেয়ারের যোগান কিন্তু নির্ধারিত। কারণ কতগুলো কোম্পানির শেয়ার বাজারে আছে এবং কত শেয়ার আছে তা অজানা নয়। সামান্য কিছু নিরীহ লোক, যারা ঠেকায় না পড়লে স্টক এক্সচেঞ্জে যায় না তাদের শেয়ার ছাড়া অবশিষ্ট শেয়ার নিয়মিত বেচাকেনা হয়। তাই যোগান নির্ধারিত। তবে চাহিদা বিভিন্ন হওয়ার কারণে দাম বাড়ে এবং কমে। চাহিদা বাড়া বা কমার একটি প্রকাশ্য কারণ হচ্ছে মার্চেন্ট ব্যাংক। মার্চেন্ট ব্যাংক যে শেয়ারের জন্য লোন বেশি দিবে তার দাম বাড়বে, যে শেয়ারের জন্য লোন কম দিবে তার দাম কমবে। আগে মার্চেন্ট ব্যাংক বলতে কিছু ছিল না। তবে লোন নিতে চাইলে শেয়ার বন্ধক রেখে সাধারণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া যেত। এখন শুধু শেয়ারে বিনিয়োগকারীদেরকে লোন দেওয়ার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংক হয়েছে। এই লোন-ব্যবসার কারণে বিনিয়োগকারীকে বেশি টাকা বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। কারণ এতে একদিকে শেয়ারের দাম বাড়ে এবং বর্ধিত মূল্যে শেয়ার খরিদ করতে হয়। অন্যদিকে মার্চেন্ট ব্যাংককে তার লোনের বিপরীতে সুদ পরিশোধ করতে হয়! এরপরও চাহিদার কমতি নেই। কারণ মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার কারণে আরো দশজনের ক্রয়-ক্ষমতা সৃষ্টি হয়েছে। তারাও কিনবে। ফলে চাহিদা বেশি থাকার কারণে শেয়ারের দাম বাড়ে। এখানে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, মার্চেন্ট ব্যাংক পুরা ১০০% লোন দেয় না। ওরা ওদের স্বার্থ-রক্ষা করে তারপর লোন দেয়। ৭০%, ৮০% এ রকম দেয় এবং অবস্থা বুঝে দেয়। শেয়ারের দাম কমে গেলেও ক্ষতি নেই। শেয়ারগুলো তাদের কাছে মর্গেজ থাকে। এদের মাধ্যম হয়ে রিলিজ হয়। অনেকটা গ্রামদেশের ফড়িয়াদের দাদনের মতো। মাছের প্রজেক্টে যদি দাদন-লোন দেয় তাহলে মাছ বিক্রির সময় সে উপস্থিত। তদ্রূপ আড়তদার থেকে বাকিতে মাছের খাবার নিয়েছেন তো আড়ৎদারকে সামনে রেখে মাছ বিক্রি করতে হবে। ওদের প্রতিনিধিরা খোঁজ খবর রাখে, কোথায় মাছ বিক্রি হচ্ছে, কোন খামারী মাছ বিক্রি করছে। মার্চেন্ট ব্যাংকের বিষয়টাও এ রকম। পুঁজিপতিরা কীভাবে শেয়ারবাজারকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে এটা তার একটি ছোট দৃষ্টান্ত। শেয়ারের দাম যদি ১০%, ২০%ও কমে যায় মার্চেন্ট ব্যাংক তারটা পেয়ে যাবে। কখনো শেয়ারের দাম অনেক বেশি কমে গেলে মার্চেন্ট ব্যাংক ঝুঁকিতে পড়ে। তো বলছিলাম যে, মার্চেন্ট ব্যাংক হচ্ছে কৃত্রিম চাহিদা সৃষ্টির একটি উপায়। এই কারণটাকে আগে বললাম এজন্য যে, এটাই এখন বড় কারণ হয়ে গেছে। শেয়ারবাজারের গতি নির্ধারণে তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকে। এই তো কিছুদিন আগে গ্রামীন ফোনের শেয়ারের দাম যেভাবে বাড়ছিল তাতে অনেক আগেই হয়ত ৫০০/- পার হয়ে যেত, যদি এসইসি আইন করে গ্রামীনের শেয়ারের জন্য মার্চেন্ট ব্যাংকের লোন দেওয়া নিষিদ্ধ না করত। এই আইন করার পর রাতারাতি শেয়ারের দাম কমে গেল। দেখুন, গ্রামীন ফোনের ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে তার শেয়ারের দাম কমেনি। এটা সবাই বোঝে। এজন্য দরপতনের পর বিক্ষোভ হয় এসইসির বিরুদ্ধে। গ্রামীনফোনের বিরুদ্ধে নয়। এমন কথা কেউ বলে না যে, কোম্পানির ডাইরেক্টররা কোম্পানি থেকে মোটা অঙ্কের বেতন নেয় আর বসে বসে মাক্ষি মারে! ফলে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শেয়ারের দাম কমেছে! আসলে এখনকার শেয়ারবাজার তার নিজস্ব গতিতে চলে। কোম্পানির সম্পদ, ব্যবসায়িক সফলতা-ব্যর্থতা ইত্যাদির সঙ্গে শেয়ারের দাম বাড়া-কমার বিষয়টি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যুক্ত নয়। এটা নিয়ন্ত্রিত হয় শেয়ারবাজারের নিজস্ব কিছু বিষয় দ্বারা। একটু নিরপেক্ষভাবে চিন্তা করলেই তা বোঝা যায়। শেয়ারের দাম বাড়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে গুজব। কিছু লোক আছে যারা গুজব ছড়ানোর কাজ করে। গুজবটা কাজে লেগে যায়। এ বিষয়ে রূপালী ব্যাংকের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা যায়। সৌদী যুবরাজ রূপালী ব্যাংক কিনবে এই সংবাদ আসার পর রূপালী ব্যাংকের শেয়ারের দাম বেড়ে গেল। অথচ সে কয়েক বছর ধরে ডিভিডেন্ট দিতে পারে না, এজিএম করতে পারে না। তার ১০০/- টাকার শেয়ার তিন হাজার টাকার উপরে চলে গিয়েছিল। বছর বছর থেকে লোকসান গুনতে থাকা একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার তার ফেসভ্যালুর কয়েক হাজার পার্সেন্ট বেশি দামে লেনদেন হল। পরে যুবরাজ যখন আর কিনল না তখন আবার আগের অবস্থায় ফিরে এল। মাঝে প্রায় দু’বছর পর্যন্ত এই শেয়ারের লেনদেন হল অত্যন্ত চড়া মূল্যে। বলাবাহুল্য, যারা আরো বেশি দামে এই শেয়ার বিক্রি করতে পারবে মনে করে সর্বোচ্চ দামে তা কিনেছিল তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তদ্রূপ আগেও বলেছি যে, একটি দু’টি বড় কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়া-কমার কারণেও অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে যায়, কমে যায়। এটা হচ্ছে হুজুগ। বাজারে রব উঠল, বেড়েছে, বেড়েছে, বেড়েছে! কী বেড়েছে, কোনটা বেড়েছে? সবই বেড়েছে!! আবার রব উঠল, কমেছে, কমেছে, কমেছে! দেখা গেল সবই কমে গেছে!!! এছাড়া আইনগত কারণেও বাড়ে কমে। যেমন কোনো সময় এসইসি হুকুম করে যে, অমুক অমুক কোম্পানির শেয়ার স্পটসেল হতে হবে। অর্থাৎ নগদ টাকায় তৎক্ষণাৎ বিক্রি হতে হবে। স্পটসেলের নির্দেশ জারি করলে ওই শেয়ারের দাম কমবে। কারণ অনেকে তা করতে পারে না। আইনগত কারণে শেয়ারের মূল্য বাড়া-কমার আরেকটি দৃষ্টান্ত ‘মিউচুয়াল ফাণ্ড’। মিউচুয়াল ফাণ্ডের শেয়ারের দাম শুধু বাড়তির দিকে যাচ্ছিল। এসইসি আইন করল যে, মিউচুয়াল ফান্ড রাইট শেয়ার, বোনাস শেয়ার দিতে পারবে না। অর্থাৎ শেয়ার-হোল্ডারদেরকে লভ্যাংশ দিতে হলে নগদ টাকায় দিতে হবে, বোনাস শেয়ারের মাধ্যমে দেওয়া যাবে না। অর্থনীতিবিদদের মতে, এসইসির এই আইন যৌক্তিক ছিল। কারণ মিউচুয়াল ফাণ্ডের তো অন্য কোথাও কোনো ব্যবসা নেই। অন্য কোথাও টাকা খাটানো হলে এই যুক্তি চলে যে, কোম্পানি অমুক প্রকল্পে টাকা খাটিয়ে ফেলেছে, অতএব এই মুহূর্তে তা তুলে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। প্রকল্পটি লাভজনক, তবে এই মুহূর্তে লভ্যাংশ নগদ টাকায় দেওয়া যাচ্ছে না। এই যুক্তিতে বোনাস শেয়ার দেওয়া যায়, কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ডের বিষয়টা তো এমন নয়। সে তো ব্যবসাই করে শেয়ারের। বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারই তার এ্যাসেট। আর তা হচ্ছে লিকুইড মানির মতো। যে কোনো সময় তা মার্কেটে বিক্রি করে দিয়ে নগদ টাকা পেতে পারেন, কম পাবেন বা বেশি পাবেন। তাহলে আপনি বোনাস শেয়ার দিবেন কেন? যদি বলেন যে, এখন দাম কম আছে, ভবিষ্যতে দাম বাড়বে, তাহলে এথন এত লাভ দিচ্ছেন কেন? আপনি তো আজকের অবস্থা অনুযায়ী লাভ দিচ্ছেন ভবিষ্যতে দাম বাড়বে, বাড়ুক, কিন্তু আজকেই যখন এত পার্সেন্ট লভ্যাংশ দিবেন তো আপনার কাছ থেকে ওই টাকা বের হয়ে যাবে। এটা আপনি শেয়ার আকারে আটকে রাখতে চাচ্ছেন কেন? যাই হোক, ওই ঘোষণার পরই মিউচুয়াল ফাণ্ডের শেয়ারের দাম কমে গেছে। এরপরে মিউচুয়াল ফাণ্ডওয়ালারা হাইকোর্টে রিট করেছে। বড় বড় উকীল নিয়োগ করেছে। ওই মামলায় এসইসি জয়লাভ করতে পারেনি। এখানে অনেক কথা আছে। সে কথাগুলো এখন থাক। এসইসির একটিই সুযোগ ছিল আপিল করার। তারা আপিলের ঘোষণা দিয়েছে। সে সময় আবার শেয়ারের দাম কমেছে। পরে মিউচুয়াল ফাণ্ডওয়ালারা উচ্চ পর্যায়ের ক্ষমতাশালীদের সাথে বসেছে। শেষ পর্যন্ত এসইসিকে আপিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হয়েছে। এই দীর্ঘ আলোচনার উদ্দেশ্য একটিমাত্র প্রশ্ন। তা এই যে, এসইসির একটিমাত্র সিদ্ধান্তে হাজার হাজার মিউচুয়াল ফাণ্ডের শেয়ারের দাম কমে যায় কেন? তদ্রূপ এসইসি আপিল করবে না বলে ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে দাম বাড়ে কেন? উপরন্তু মিউচুয়াল ফাণ্ড তো এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, যার নিজস্ব কোনো ব্যবসা আছে। অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচাই তার কাজ। অথচ সেও বোনাস শেয়ার দিতে পারে, রাইট শেয়ার দিতে পারে, তার শেয়ারের দামও বাড়ে এবং কমে। এই সকল বাস্তবতা যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে নির্দেশ করে তা এই যে, শেয়ারবাজার নিজেই একটি ভিন্ন সত্তা। ইতিপূর্বে কোম্পানিকে আইনগত ব্যক্তি-সত্ত্বা বলা হয়েছে, এখন শেয়ার-বাজার নিজে একটি সত্তা হয়ে গিয়েছে। এটি স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি মার্কেট এবং এখানে লেনদেনের ক্ষেত্রে কোম্পানির নামটাই শুধু ব্যবহৃত হয়। কোম্পানির ব্যবসায়িক উন্নতি-অবনতি, ব্যবসার ভালো-মন্দ ইত্যাদির সঙ্গে এর উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পর্ক এখন আর অবশিষ্ট নেই। একটি উদাহরণ দ্বারা বিষয়টি পরিষ্কার করছি। বর্তমানে প্রতি ৬ মাস অন্তর কোম্পানিগুলোকে তাদের আর্থিক বিবরণী প্রকশ করতে হয়। সেখানে কোম্পানির নেট এসেট ভ্যালু, শেয়ার প্রতি আয় ইত্যাদি তথ্য থাকে। তো সদ্য প্রকাশিত গ্রামীনফোনের আর্থিক বিবরণীতে তারা বলেছে তাদের আর্নিং পার শেয়ার তথা শেয়ার প্রতি আয় ১২/-টাকার কিছু বেশি। অথচ শেয়ারবাজারে তখন গ্রামীনফোনের শেয়ার বিক্রি হচ্ছিল ৩০০/- টাকার অধিক মূল্যে। চিন্তা করুন, যেখানে কোম্পানি নিজেই তার শেয়ার প্রতি আয় ঘোষণা করছে ১২/-টাকা কয়েক পয়সা, সেখানে ১০/-টাকা ফেসভ্যালুর ঐ শেয়ার মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে হাজার পার্সেন্ট বেশি মূল্যে। শেয়ারবাজারের লেনদেনগুলো যে মানি-গেমের দিকেই অগ্রসর হচ্ছে তা বুঝার জন্য উপরোক্ত উদাহরণই মনে হয় যথেষ্ট।

    প্রশ্ন : শেয়ারবাজারে কৃত্রিমভাবে দরবৃদ্ধির একটি বিষয় আছে, এ প্রসঙ্গে কিছু বলুন।

    উত্তর : শেয়ারবাজারের একটি গতি আছে, যা অনেকটা জুয়ার মতো। জুয়াতে মানুষ সর্বস্ব হারায় কীভাবে? দু’এক বার যখন টাকা পায় তখন সে ভাবে যে, আরো পাব। তাই উঠে আসে না। বার বার টাকা বিনিয়োগ করে। এরপর যখন হারতে থাকে তখন ভাবে যে, এই বার ঘুরে আসবে। কিন্তু ঘোরে না। শেষে নিঃস্ব হয়ে বের হয়ে আসে। এটা জুয়ার ধারা। এভাবেই জুযা মানুষকে শেষ করে দেয়। অর্থনীতিবিদরা বলেন যে, শেয়ার বাজারেরও এমন একটি গতি আছে। শেয়ারের দাম যখন বাড়তে থাকে তখন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা হাতের শেয়ার বিক্রি করে না। খালি কিনে। তারা ভাবে যে, দাম তো বাড়ছে, আরো বাড়বে, দেখি না কোন পর্যন্ত যায়। দেখতে দেখতে একসময় দাম কমতে থাকে। সে তখন ভাবে যে, এখন বেচলে তো লস হবে তাই পুনরায় দাম বাড়ার অপেক্ষা করে। কিন্তু পিছনে কোনো কারসাজি থাকলে দাম আর বাড়ে না, কমতেই থাকে। ৯৬ সালে এমন একটি মহা কেলেঙ্কারি হয়েছিল। প্রথমদিকে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বেড়েছে। দু’ সপ্তাহের মাঝে একেকটি শেয়ারের দাম ২০০%, ৩০০%, ২০-৩০ গুণ বেড়েছে। তখন প্রথম সাড়ির কোম্পানিগুলোর সাথে সাথে প্রায় সকল কোম্পানির শেয়ার এমনকি জেড গ্রুপের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামও বেড়েছে। যাদের অনেকের সেভাবে অফিসও নেই, কারবার তো নেইই। কয়েক বছর থেকে এজিএম করে না, ডিভিডেন্ট দেয় না। একপর্যায়ে শেয়ার বাজারে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। তখন সব কাজ স্টক এক্সচেঞ্জে গিয়ে করতে হত। এখনকার মতো বিভিন্ন জায়গায় ব্রোকারেজ হাউস ছিল না। যখন শেয়ারের দাম বাড়ছিল তখন ইচ্ছামতো সবাই কিনেছে। আজকে কিনলেই কালকে লাভ। অসংখ্য মানুষ জমি-জমা বিক্রি করে, হালের গরু বিক্রি করে, এমনকি ভিটেবাড়ি বিক্রি করে শেয়ার কিনেছে। হঠাৎ করে শোনা গেল যে, সব শেয়ারের দাম আজকে কমে গেছে। যে শেয়ারের দাম উঠেছিল ৩০০০/- টাকা আজকে তা ২৮০০/- টাকা হয়ে গেছে। এর পরের দিন ২৫০০/-টাকা, পরের দিন ২২০০/- টাকা। এভাবে আবার ওই ১০-১৫ দিনের ব্যবধানে ১৫০/- টাকার নিচে নেমে আসে। তখন মানুষের হাহাকার, মিছিল, কান্নকাটি! তো সে সময় কী ঘটেছিল? এখন আর তা অনুমান করে বলতে হবে না। ওই সময়ই অনেকে বলেছিলেন, পরে এটা নিয়ে মামলা হয়েছে, তদন্ত হয়েছে, তদন্ত-কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তাতে সব ঘটনা বের হয়ে এসেছে। একদল দেশি-বিদেশি কুচক্রী কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল। একপর্যায়ে তারা তাদের সব শেয়ার বিক্রি করে মার্কেট থেকে বের হয়ে যায়। ফলে অস্বাভাবিক দামে শেয়ার ক্রয়কারী চক্রের অনুপস্থিতির কারণে শেয়ারের দাম আগের জায়গায় ফিরে আসে। মাঝে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যায়। এখনকার মার্কেট যদি হত তাহলে সেটা হত বাংলাদেশের জন্য মহা বিপর্যয়। কারণ এখনকার মার্কেট তখনকার মার্কেটের চেয়ে অনেক বড়। শেয়ার অনেক বেশি, ইউজারের সংখ্যাও অনেক বেশি।

    প্রশ্ন : এখনকার বাজারেও কি এ ধরনের কারসাজি করা সম্ভব? এখন বাজার যেমন বড় তেমনি সিকিউরিটির জন্য আলাদা প্রতিষ্ঠানও তো আছে?

    উত্তর : জ্বী, এখনও সম্ভব। ছোটখাটো কিছু দৃষ্টান্ত তো চোখে পড়ে। এই তো কিছুদিন আগে গ্রামীন ফোনের শেয়ারের দাম শুধু বাড়ছিল। সম্ভবত ঘটনাটা এমন হয়েছে যে, কিছু বেনামী বিও একাউন্টধারী সিণ্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছিল। অর্থাৎ তারা বিভিন্ন বিও একাউন্ট থেকে একযোগে গ্রামীনের শেয়ার বেশি দামে কিনছিল। এক পর্যায়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও বেশি দামে শেয়ার কিনতে আরম্ভ করে। যে দামে প্রস্তাব হয় সে দামেই কেনে। এসইসি চিন্তা করেছে যে, তার সমস্যা হবে। ১০/-টাকার শেয়ার ৪০০-৫০০/- টাকার কাছাকাছি হয়ে গেছে, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে ৭০০-৮০০/-টাকাও হয়ে যেতে পারে। যে সিণ্ডিকেট দাম বাড়িয়েছে তারা যদি ইতিমধ্যে তাদের শেয়ার ছাড়া শুরু করে থাকে তাহলে তাদের শেয়ারগুলি ছাড়া শেষ হলেই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিপদে পড়বে। তো এসইসি ঘোষণা করেছে যে, গ্রামীন ফোনের সকল শেয়ার স্পট সেল হতে হবে। অর্থাৎ নগদ-নগদে জায়গাতে বিক্রি হতে হবে। এটার জন্য কোনো লোন নেওয়া যাবে না। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে বলে দেওয়া হয়েছে যে, গ্রামীন ফোনের শেয়ারের জন্য কোনো লোন দেওয়া যাবে না। এসইসির এই হস্তক্ষেপের কারণে স্বাভাবিকভাবেই তাদের শেয়ারের দরপতন হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই যে এসইসি সফল হবে বা তাকে সফল হতে দেওয়া হবে এটা অপরিহার্য নয়। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি চিটাগাং ভেজিটেবল এর কথাই ধরুন। গত এক মাসে এর শেয়ারের দর বৃদ্ধি পেয়েছে ২৬০%। বর্তমানে ১০০/-টাকার শেয়ার বিক্রি হচ্ছে ১০০০/- টাকার উপরে। অথচ বিগত ৬ বছরে কোম্পানিটি কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি শেয়ারহোল্ডারদেরকে। এর মূলধনের বিশাল ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি এ শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে পারছে না।

    প্রশ্ন : সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা এবং বাজারকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করার জন্য এই সংস্থার কার্যক্রমকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

    উত্তর : এটা ঠিক যে, এসইসি বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। এজন্য সময় সময় আইন কানুন করে। কিন্তু একদিকে আইন তৈরি হয়, তো বাজার অন্য দিকে ঘুরে যায়। বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে বাজারকে রক্ষা করার চেষ্টা এসইসির থাকে। কারণ সরকার বোঝে যে, বর্তমান অবস্থায় যদি বাজারকে সম্পূর্ণ স্বাধীন ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে আমাদের এসব দেশে বিশাল সংখ্যক মানুষ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে, যা সরকারের জন্যও বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। তবে এরপরেও কথা আছে। চিন্তা করলেই বুঝবেন। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা যদি বলেন তো এটা মুখ্য বিষয় নয়, শেয়ারবাজারের মুখ্য বিষয়ই হল পুঁজিপতিদের স্বার্থরক্ষা। এর সাথে যদি কখনো সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও কিছু লাভ হয় ভালো। পুঁজিপতিদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যাওয়ার সাধ্য এসইসির আছে বলে মনে হয় না। এসইসির কোনো চেয়ারম্যান যদি ভদ্রলোক হয়ে কোনো কিছু করতে চান তাহলে কয়েকদিন পরেই তাকে সেখান থেকে সরে যেতে হবে, অথবা ম্যানেজ্ড হতে হবে। আসলে পেছনের শক্তিগুলো অনেক বড়। এজন্য প্রথমে দু’ একজন চাইলেও পরে বুঝতে পারেন যে, নেপথ্যের শক্তির সঙ্গে পাল্লা দেওয়া তাদের কাজ নয়।

    প্রশ্ন : কোনো কোনো অর্থনীতিবিদের আলোচনায় দেখা যায়, তারা শেয়ারবাজারের কারবারকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জুয়া বলে থাকেন। শরীয়তের দৃষ্টিতে কি এটাকে জুয়া বলা যায়?

    উত্তর : আমরা বলতে চাই যে, কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের মধ্যে কোম্পানির অংশীদারিত্ব, লাভ-লোকসানের দায় গ্রহণ ইত্যাদি কোনো কিছুই যদি মূল উদ্দেশ্য না হয় তাহলে বলতে হবে যে, কোম্পানির শুধু নামটিই ব্যবহৃত হচ্ছে। খুব ক্ষীণ যে সূত্রটি এখনো আছে, অর্থাৎ আপনার হাতে যদি কোম্পানির শেয়ার থাকে তাহলে এ মুহূর্তে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করলে আপনি তা পাবেন-শুধু এর কারণে গোটা কারবারকে কোম্পানির অংশের লেনদেন বলা যায় কি না-এটা চিন্তা করা দরকার। তাছাড়া ডিভিডেন্ট তো ঘোষণা হয় বছরে একবার, আর কোম্পানির শেয়ার বিক্রি হয় প্রতিদিন। অনেক শেয়ার দৈনিক কয়েকবার পর্যন্ত লেনদেন হয়। আগে তা হতে পারত না, এখন স্পটে তা হয়। এরপরও যেহেতু অতি ক্ষীণ হলেও একটি যোগসূত্র আছে সেজন্য এবং এ ধরনের কিছু বিষয়ের কারণে আমরা একে সরাসরি ফিকহের পরিভাষার কিমার বা জুয়া বলি না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এর গন্তব্য ওইদিকেই। ধীরে ধীরে তা সম্পূর্ণ টাকার খেলায় পরিণত হচ্ছে। এজন্য যে ফিকহের কথা বলবে তার দায়িত্ব হল এখন থেকেই বাধা সৃষ্টি করা। ছাদ্দুল বাব তথা আগে থেকেই সতর্কতামূলক দরজা বন্ধ করা ইসলামী ফিকহের একটি বড় মূলনীতি। বর্তমান অবস্থাতেই তো এটি বহু কারণে বৈধ নয়। এমনকি আপনি যদি পাকিস্তানের ইমরান আশরাফ সাহেবের মতকেও গ্রহণ করেন তবুও বৈধ নয়। কারণ আগেই বলা হয়েছে যে, এখন অধিকাংশ কোম্পানিরই ব্যাংক-লোন চল্লিশ পার্সেন্টের বেশি। এমন কোনো উৎপাদনকারী কোম্পানি খুঁজে পাওয়া মুশকিল হবে, যার ৪০ পার্সেন্ট ব্যাংক-লোন নেই। লোনটাই কোম্পানির জন্য সহজ এবং সেটাই তারা নেয়। তদ্রূপ ব্যাংকগুলোও চলে কর্পোরেট লোনের আয় দিয়ে। যাই হোক, একে সরাসরি ফিকহি পরিভাষার জুয়া হয়তো অনেকে বলবে না, কিন্তু বিষয়টি জুয়ার মতো এবং ধীরে ধীরে তা সেদিকেই যাচ্ছে।

    প্রশ্ন : কেউ যদি শেয়ার বাজারের উপরোক্ত বেচাকেনায় অংশগ্রহণ না করে; বরং বাস্তবেই কোনো কোম্পানির ডিভিডেন্ট গ্রহণ করার জন্য শেয়ার কিনে রেখে দেয় তাহলে কি এটা জায়েয হবে? যে চার শর্তে কোম্পানির শেয়ার কেনার বৈধতা কোনো কোনো কিতাবে পাওয়া যায় তা কি এক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে ধরে নেওয়া যায় না?

    উত্তর : এখন তো এসব শর্ত-শরায়েত শেয়ার বেচাকেনার ক্ষেত্রেই বলা হয়। যারা এসব শর্তের কথা বলেন তারা তো শুধু প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রের মাঝে সীমাবদ্ধ রাখেন না। আপনারা যদি গোড়ার কথাটা বুঝে নেন তাহলে এই প্রশ্নের উত্তরও পেয়ে যাবেন। আমি আপনাদের প্রশ্ন করি, কোনো ব্যবসায়ী যদি জিজ্ঞাসা করে যে, আমার ব্যবসার মূলধন এক লক্ষ টাকা। ব্যবসা চলছে, কিন্তু আরো দশ হাজার টাকা যোগ করলে ব্যবসাটা একটু ভালো চলবে। আমি এই অংশটা কি সুদের ভিত্তিতে নিতে পারি? কোনো মুফতী কি বলবে, আপনি সুদী লোন নিতে পারেন? ব্যক্তিগত পর্যায়েও কাউকে ফাতোয়া দিবে? দিবে না। যদিও অংকটা মূলধনের ১০ ভাগের এক ভাগমাত্র। অথচ একই জিনিসকে কোম্পানিতে গেলে জায়েয মনে করা হয়। অন্যভাবে বলা যায় যে, একটি দোকান দশ জনে মিলে শুরু করেছে। প্রত্যেকে ১০ হাজার টাকা করে ১ লক্ষ টাকা পুঁজি সংগ্রহ করেছে। আরো ২ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। তো ৬০ হাজার টাকা ব্যাংক-লোন নেওয়া হল। অবশিষ্ট টাকা সংগ্রহের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হল যে, আরো ১৪ জন অংশীদার নেওয়া হবে। তাহলে অবশিষ্ট ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা যোগার হয়ে যাবে। তাহলে দেখছেন যে, ব্যবসার মূলধন ৩ লক্ষ টাকা। অংশীদার ২৪ জন। ব্যাংক-লোন আছে ৬০ হাজার টাকা, যার সুদ আনুপাতিক হারে সকল শেয়ার-হোল্ডারের উপরই আসবে। অংশীদার নেওয়ার সময়ও বলে দেওয়া হয়েছে যে, আমাদের পুঁজিতে এই পরিমাণ ব্যাংকলোন আছে। এখন এই ব্যবসায় অংশীদার হতে ইচ্ছুক কোনো ব্যক্তি যদি জিজ্ঞাসা করেন যে, আমি এই ব্যবসায় শরীক হতে পারি কি না? কোনো মুফতী কি উত্তরে বলবে, শরীক হতে পারেন তবে শর্ত হচ্ছে আপনাকে একটি প্রতিবাদ করে দিতে হবে। এরপরও যদি অন্য শরীকরা সুদী লোন অব্যাহত রাখে তাতে আপনার অসুবিধা নেই। নিশ্চয় শরীকানা কারবারের ক্ষেত্রে এমন কথা কেউ বলবে না। কারণ সুদ দেওয়া-নেওয়া এককভাবে যেমন নিষেধ, তেমনি শরীকানাভাবেও নিষেধ।

    প্রশ্ন : অনেকে যুক্তি দেন যে, কোম্পানিতে আইনগত সত্তা সৃষ্টি হয়। ফলে ডাইরেক্টর ও শেয়ার-হোল্ডারদের সম্পর্ক উকীল-মুয়াককিলের হয়ে যায়। সকল সিদ্ধান্ত ডাইরেক্টররাই নিয়ে থাকে, সাধারণ শেয়ার হোল্ডাররা কোম্পানির বাইরে থাকে। তাদের তেমন ক্ষমতাও থাকে না। তাই ডাইরেক্টরদের গৃহীত সকল সিদ্ধান্তকে শেয়ার-হোল্ডারদের দিকে নিসবত করে দেওয়া ঠিক না?

    উত্তর : এই ধরনের কথা খুচরা-খাচরি মাকরূহ পর্যায়ের বিষয়ে চলতে পারে, সুদের মতো অকাট্য হারামকে বৈধ করার জন্য চলতে পারে না। দেখুন, কোনো কোনো কিতাবে মালে মাখলূতের প্রসঙ্গ আছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কারবার নাজায়েয হলেও কামাই বৈধ হওয়ার প্রসঙ্গ আছে। এসব বিষয়ের বিশ্লেষণে এই মুহূর্তে যেতে চাই না, আমি শুধু বলতে চাই যে, ওইসব কথাও এই ক্ষেত্রে বলার যোগ্য বিষয় নয়। এগুলো যদি বলেন, তাহলে আপনি সুদের রাস্তা খুলে দিলেন। মানুষ সরাসরি সুদ নিবে না, সোনালী, রূপালী, অগ্রণীতে যাবে না; বরং শেয়ারবাজারে ঢুকেই সুদের বাজারকে গরম রাখবে। সুদকে এত কঠিনভাবে হারাম করা হয়েছে কি আপনার এইসব কাজ করার জন্য? এখানে একটি মৌলিক বিষয় আছে, যা বিবেচনায় রাখা খুবই জরুরি। তা হচ্ছে, আপনি নতুন করে শেয়ার বাজারে ঢুকবেন। আগে থেকেই আপনার জানা আছে যে, এই কোম্পানির কারবারে এই এই হারাম আছে, কারবার করার সময় এরা হালাল-হারাম বাছাই করে না, লোন নেওয়ার সময় হালাল তরীকা-হারাম তরীকা বাছাই করে না, তবে কোম্পানির মূল কাজ হালাল। যেমন বেক্সিমকো ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, অল্প কিছুদিন হল গ্রামীনফোন এসেছে। এটা এক প্রসঙ্গ। পক্ষান্তরে আরেকজন ব্যক্তি আগে থেকেই শেয়ার বাজারে আছে, শেয়ার যখন কিনেছে তখন জিজ্ঞাসা করেনি বা জিজ্ঞাসা করলেও নফসের ধোকায় আমল করেনি। এখন তার বুঝ হয়েছে, এখন তার করণীয় কী-এটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। এটা হচ্ছে তাফাসসী আনিল হারাম তথা হারাম থেকে নিস্তার পাওয়ার বিষয়। এর অবস্থা হচ্ছে ওই ব্যক্তির মতো যে ব্যাংকে টাকা জমা রেখেছে এবং তার একাউন্টে সুদ এসে গেছে। পার্থক্য শুধু এই যে, শেয়ার কিনলে হয়ত পুরো টাকাটা হারাম হবে না, পক্ষান্তরে ব্যাংকে সুদী একাউন্ট হলে প্রাপ্ত সুদ পুরোটাই হারাম, তবে ওখানে যা বলবেন এখানেও তাই বলবেন যে, আপনি উপার্জনের এত ভাগ সদকা করে দিন। কিন্তু যে ব্যক্তি শেয়ারবাজারে নতুন ঢুকতে চাচ্ছে, তাকেও কি আপনি ওই কথাই বলবেন? কোম্পানি সুদী কারবারের সাথে জড়িত থাকলেও আপনি ঢুকতে পারেন-যদি তার মূলধনের ৪০% এর বেশি সুদী না হয়? তাহলে তো একজন মুসলমানকে সুদী কারবারের সাথে যুক্ত করলেন! এ ধরনের ক্ষেত্রে আমি বলি, ভাই! আমরা আখেরী যমানায় আছি। সময়টা কঠিন। এই বাস্তবতা আপনাকে স্বীকার করতে হবে এবং এজন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। কষ্ট করে হলেও আমাদেরকে হালাল পথেই চলতে হবে এবং এখনো দুনিয়াতে হালাল মোতাবেক চলা অসম্ভব হয়ে যায়নি। এখন তো শেয়ারবাজার অনেক বড়, কিন্তু বলুন তো বাংলাদেশের কত পার্সেন্ট লোক শেয়ারবাজারে আছে? যারা বাইরে আছে তাদের রিযিকের ব্যবস্থা কীভাবে হচ্ছে? আপনি একে ইযতিরার ও নিরুপায় অবস্থার পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন কেন? মানুষ কীভাবে যে ইযতিরার তৈরি করে তা আমি ছাত্রদেরকে অনেক সময় বলি। বড় বড় কোটিপতিদের ইযতিরারের হাকীকত বলেছি। সুদী লোন নিতে চায়, সুদী কারবার করতে চায়, এসে ইযতিরারের অবস্থা শোনায়, এমনভাবে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে যে, তার এখন নিরুপায় অবস্থা! আমরা যারা মাসআলা বলি তাদের সাবধান থাকা উচিত, মানুষ কিন্তু আপনার উপর সওয়ার হয়ে সুদ খাবে। আপনি কেন দায় নিবেন? আমরাও কোনো কোনো প্রশ্নকারীকে বলতে বাধ্য হই যে, দেখুন ভাই, আপনি সুদ খাবেন তো এতে আমাকে জড়াচ্ছেন কেন? আপনি নিজে নিজে করলে আল্লাহর কাছে আপনি জবাব দিবেন, আমি অনুমতি দিলে এর দায় আমার উপর আসে। আমাকে জড়াবেন না। তখন বলে, হুজুর! অনেকে তো জায়েয বলে। আমরা বলি যে, যারা জায়েয বলে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন। আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে আপনার সমস্যা হবে, আমরা যা বুঝি তাই আপনাকে বলব। যাই হোক, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইযতিরারের দাবি ঠিক নয়। দুনিয়াতে হালাল উপার্জনের সব রাস্তা এখনো বন্ধ হয়নি।

    প্রশ্ন : শরীয়তে যে নীতি-কৌশলগুলো আছে তা তো মানুষকে অবকাশ দেওয়ার জন্যই। এই বিষয়গুলো থেকে উপকৃত হতে দোষ আছে কি?

    উত্তর : প্রথম বিষয় তো হল শরীয়তে বাস্তবেই এই ক্ষেত্রে অবকাশ দিয়েছে কি না তা দেখতে হবে। দ্বিতীয় কথা হল শরীয়তের সকল হীলা সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। এজন্য হীলাকে ব্যাপক করে দেওয়ার অবকাশ নেই। দেখুন, তিন তালাকের ক্ষেত্রে হীলা বলে দেওয়া হয়েছিল যে, তিন-চার শর্তের সাথে প্রথম স্বামীর জন্য স্ত্রী হালাল হবে। শর্ত ছিল-তিন তালাকের পর ইদ্দত পূর্ণ হতে হবে, বৈধ পন্থায় বিয়ে হতে হবে, বাসর ঘর হতে হবে, এরপর দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিলে বা তার মৃত্যু হলে তালাকের পর ইদ্দত পুরা হতে হবে। এই সবগুলো শর্ত বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন অনেক ক্ষেত্রে শুধু একটি শর্তই পাওয়া যায়। অর্থাৎ আরেকটি বিয়ে পড়িয়ে দেয়। ইদ্দতের কোনো প্রশ্নই নেই। না প্রথম তালাকের পর, না দ্বিতীয় তালাকের পর। এর কারণ হল হীলাকে সাধারণ বিধানে পরিণত করা হয়েছে। এ ধরনের ক্ষেত্রে মানুষ শুধু বিধানটা মনে রাখে, মাঝের শর্তগুলো মনে রাখে না। কারবারের মধ্যেও যখন হীলাকে বিধান বানিয়ে দেওয়া হয়েছে তখন ওই বিষয়টাই ঘটছে। এজন্য প্রকৃত ইযতিরারের হালত ছাড়া ব্যাপকভাবে যদি হীলা বলে দেওয়া হয় তাহলে অনিবার্যভাবেই তা মানুষকে ভুল পথে নিয়ে যাবে। সেটাই এখন ঘটছে।

    প্রশ্ন : শেয়ারবাজারে লেনদেন করার বিধানটি ভালোভাবে বুঝতে হলে কোন কোন বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করেন?

    উত্তর : বেচাকেনার ক্ষেত্রে, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ফুকাহায়ে কেরাম যেসব কথা বলে গেছেন এগুলো তো থাকবেই সাথে কারবারের বর্তমান অবস্থাও সামনে থাকতে হবে। যদি দেখা যায় যে, এর হাকীকতটাই গলদ, যা অনিবার্যভাবে এমন একটি অবস্থায় গিয়ে পৌঁছে যা ইসলামের উসূল ও নীতিমালার সঙ্গে মেলে না তাহলে শুধু বাহ্যিক অবস্থার বিচারে একে বৈধ বলা যাবে না। কারণ ইসলামের মৌলিক নীতিমালার সাথে তা সাংঘর্ষিক হয়ে যাবে। যদিও কাগজ-কলমে বৈধ। যেমন ধরুন, আপনার কাছে দশ তোলা স্বর্ণ আছে, আপনার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে। আপনার যাকাত-বর্ষ মহররম থেকে যিলহজ্ব। অন্যান্য বছর যাকাত দিয়ে এসেছেন, এবার মাথায় চেপেছে যে, যাকাত দিব না। যিলহজ্বের ১৫ তারিখে স্ত্রীকে বললেন, সব স্বর্ণ তোমাকে দান করে দিলাম। এবার ফকীহর কাছে গিয়ে বলুন, ‘হুজুর ১০ ভরি স্বর্ণ এক বছর আমার কাছে ছিল, কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আগে কী যে মাথায় চাপল, একজনকে দান করে দিলাম! এখন আমাকে কী করতে হবে? (বউকে যে পরিকল্পিতভাবে দিয়েছেন বললেন না। এটা বললে তিনি বলবেন যে, মাকরূহ কাজ করেছেন। কিতাবে তো মাকরূহই লেখা আছে।) মুফতী বলবেন, যাকাত দেওয়া লাগবে না। কিন্তু ঘটনা যদি পরিষ্কার করে বলেন তাহলে মুফতী বলবেন, আপনি তো যাকাত থেকে বাঁচার জন্য হীলা করেছেন। এটা নাজায়েয হীলা। আপনার কর্তব্য যাকাত আদায় করা। কারণ মুফতী এখানে বাস্তব অবস্থাটা দেখছেন। নিছক শব্দের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন না। কারবার-সংক্রান্ত মাসায়েলের ক্ষেত্রেও আমি মনে করি, শুধু ইমদাদুল ফাতাওয়া বা তার উপর ভিত্তি করে লেখা কিতাবগুলো সামনে রাখা যথেষ্ট নয়। কারণ তিনি যখন এই শর্তগুলো বলেছেন তখন তাঁর সামনে বর্তমান সময়ের পুঁজিবাজার ছিল না। তাই এখনকার মারপ্যাচ, সমস্যা ও জটিলতার উপর তাঁর কোনো শব্দ বা বাক্যকে প্রয়োগ করা ঠিক হবে না। তিনি তো বিশেষ এই অবস্থার জন্য কথাটা বলেননি। ঠিক এই বাজারের এই জায়গাটার জন্য বলেননি। এই বিষয়গুলো দেখার আছে। আমরা বিশ্বাস করি যে, মানুষের জন্য দ্বীনকে যত সহজভাবে উপস্থাপন করা যায় ততই ভালো। কঠিন করে বলা, কঠিন নীতি অবলম্বন করা এবং সব জায়গায় শুধু ইহতিয়াতকে খোঁজ করার পক্ষপাতী আমরা নই, অন্তত মানুষকে বলার ক্ষেত্রে ইহতিয়াতের চেয়ে জাওয়াযের কথা বলতেই পছন্দ করি। কোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে ইহতিয়াতের কথাও বলি। কিন্তু একই সাথে এটাও ঠিক যে, সহজীকরণের লক্ষ্যে শরীয়তের কোনো হারামকে এবং শরীয়তের মৌলিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো বিষয়কে কিংবা পরিণতির দিক দিয়ে উসূলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়া অনিবার্য এমন কোনো বিষয়কে অনুমোদন দেওয়ার অবকাশ আছে বলে মনে করি না। তাহলে শরীয়ত থাকবে না। এবং থাকছে না। ধীরে ধীরে তা একটি বাস্তব অস্তিত্বহীন জিনিসে পরিণত হচ্ছে।

    প্রশ্ন : যদি ধরে নেওয়া হয় যে, কোম্পানিগুলোর সঙ্গে পুঁজিবাজারের কোনো সম্পর্ক নেই তাহলে এখানে বিনিয়োগের বিধান কী হবে? কেউ কেউ বলে থাকেন যে, আমরা তো কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছি না, পুঁজিবাজারেই থাকছি। অতএব কোম্পানি যদি সুদী কারবার করে তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না?

    উত্তর : আপনি যদি স্বীকার করে নেন যে, কোম্পানির সঙ্গে শেয়ারবাজারের লেনদেনের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই তাহলে তো এই কারবার জায়েয কি না-এই প্রশ্নই ওঠবে না। কারণ তখন বিষয়টা দাড়াবে সরাসরি টাকার বিনিময়ে টাকা। শেয়ারের কারবার জায়েয কি না-এই প্রশ্ন এজন্যই ওঠে যে, এই লেনদেনকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অংশবিশেষের লেনদেন ধরে নেওয়া হয়। দেখুন, কেউ যদি সরাসরি প্রস্তাব করে যে, আমি ১০০০/- টাকা বিক্রি করব, দাম ১০২০/-টাকা এবং তা নগদে আদায় করতে হবে। তাহলে মাথায় সমস্যা না থাকলে এই প্রস্তাব কেউ গ্রহণ করবে না। বাকিতে হলে করতে পারে যে, এখন ১০০০/-টাকা দিচ্ছি, একমাস পর ১০২০/-টাকা দিবেন। কিন্তু নগদে কেউ করবে না। এজন্য যারা টাকার খেলা করতে চায় তারা বিষয়টিকে কোনো কিছুর সঙ্গে যুক্ত করে। এটা নতুন কিছু নয়, অনেক আগে থেকেই আছে। এই বিষয়গুলো গোড়া থেকে বোঝার জন্য পুঁজিবাজার, পুঁজিবাদীদের কারবার ও বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিকে নিজেদের স্বার্থের অনুকূলে ব্যবহারের পুঁজিবাদী কলা-কৌশল সম্পর্কেও ধারণা থাকতে হবে। এখানে দীর্ঘ আলোচনার অবকাশ নেই। আমি কিছু দৃষ্টান্ত দিচ্ছি। যেমন লটারি। আগে সাধারণ প্রতিষ্ঠানগুলোও লটারি দিতে পারত। এখন সাধারণত দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোর লটারি আসে। ইদানীং আহসানিয়া মিশনের লটারি চলছে। তাদের প্রথম ‘পুরষ্কার’ ৩০ লক্ষ টাকা। এরপর আরো যেসব ‘পুরষ্কার’ আছে সব মিলে অন্তত ৫০ লক্ষ টাকার অফার। প্রশ্ন হচ্ছে, তারা কি এই ৫০ লক্ষ টাকা বিতরণের জন্য লটারির আয়োজন করেছে? মোটেই না; বরং ৫০ লক্ষ টাকার অফার করেছে কোটি কোটি টাকা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য। এরপর আছে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ। আরবীতে বলে উকূদুল মুছতাকবিলিয়্যাত। খুব বেশি দেরি হয়তো নেই, আমাদের দেশেও তা চালু হবে। সাবেক গভর্ণর সালেহ উদ্দীন আহমদ তো তার যুগেই চেয়েছিলেন কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে। এটা চালু হলে আমরা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারব যে, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ যা শেয়ারবাজারের লেনদেনও অনেকটা তাই। শুধু শব্দগত কিছু পার্থক্য। পাকিস্তানে ইতিমধ্যে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হয়ে গেছে। অতএব এদেশেও তা চালু হয়ে যাবে! পাকিস্তান বাংলাদেশের মিল লিখতে চাইলে কত যে মিল লিখতে পারবেন তার কোনো ইয়ত্তা নেই! যত আকাম ওই দেশে শুরু হয় আমাদের দেশ তার অনুসরণ করে। ওরা মাতবূ আমরা তাবে। এরকম বিষয়ের তালিকা করলে অন্তত কয়েক ডজন বিষয়ের নাম লিখতে পারবেন।

    যাক, সরাসরি জুয়াও তো অনেক জায়গায় চলে, এটা সবার কাছেই অনৈতিক। এজন্য জুয়াড়ি শব্দটা একটা গালি। কিন্তু জুয়াটা আসলে কী? টাকার খেলাই তো। ভাগ্য নিয়ে তামাশা করে একজন আরেকজনের টাকা নিয়ে চলে যায়। এজন্য জুয়াতে যে হারে তার প্রতি মানুষ সহানুভূতিশীল হয়। আর যে জেতে তাকে সবাই বাঁকা চোখে দেখে। অথচ সে তো বিজয়ী হয়েছে। খেলায় জিতলে তো মানুষ তাকে অভিনন্দন জানায়। অথচ এখানে বিষয়টা উল্টো। কারণ সবাই বোঝে যে, এই লোক মারপ্যাচ করে আরেকজনের টাকা নিয়ে গেল। এজন্য টাকার বাজিকররা বিভিন্ন কৌশল বের করেছে। শেয়ারবাজারের অবস্থাও প্রথমদিকে এত করুণ ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে এই অবস্থায় নামিয়ে আনা হয়েছে। ফলে বর্তমান পর্যায়ে এসে পুঁজিপতিদের মূল উদ্দেশ্য বেশি হাসিল হচ্ছে। খুব বেশি দিন লাগবে না বিষয়টি সম্পূর্ণ স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, শেয়ারবাজার শরীয়তের দৃষ্টিতে বিনিয়োগযোগ্য ক্ষেত্র নয়।

     

    বাঁদরের কাহিনী

    Posted by admin on February 15
    Posted in Uncategorized 

    বাঁদরের কাহিনী

    ২০১৬ হলো বানরের বছর। জাপান হলো বিভিন্ন বুনো বানরের আবাসস্থল যা ম্যাকক নাম পরিচিত। এখন চলছে তাদের মিলন মৌসুম, কিন্তু বানরদের সম্পর্ক গুলো বোঝা বেশ জটিল।

    ওইতা প্রিফেকচারের মাউন্ট তাকাসাকি বানরদের জন্যে বিশেষ ভাবে পরিচিত। দু’টি গ্রুপে সেখানে প্রায় ১.৫০০ বানর রয়েছে। দর্শনার্থীরা পার্কে এসে বানরদেরকে বিভিন্ন ধরনের খাবার দেন -সেই সুযোগে তাদেরকে দেখে নেন কাছ থেকে।

    মাউন্ট তাকাসাকি’র অন্যতম প্রভাবশালী একটি বানর “জোরোমে”, বয়স তার ২৯, মানুষের হিসেবে ধরলে তার বয়স হয় ৯০ এর বেশি।

    গ্রুপের প্রবীণতম বানর হিসেবে স়ে অন্যান্য বানরদের কাছ থেকে যথেষ্ট সম্মান পেয়ে থাকে। তবে গত ক’বছর ধরে জোরোমে মেয়ে বানরদের কাছ থেকে খুব একটা সাড়া পাচ্ছেনা, অর্থাৎ কিনা তরুণীরা তাকে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছেনা।

    তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী দলের দ্বিতীয় স্থানের বানর ওমুগি, বয়স তার ১৪, মানুষের সাথে তুলনায় বয়স দাঁড়ায় ৪০ এর মতো। তার মধ্যে রয়েছে পৌরুষদ্বীপ্ত একটা হ্যান্ডসাম ভাব। বিভিন্ন সময় তার রয়েছে উদ্ধত ভাব।

    এই শীতকালে জোরোমে এবং ওমুগি একই তন্বী তরুণীর পিছে ঘুরছে। তরুণীটি হলো ১৪ বছরের মিলসা। মিলসা দলের সবচেয়ে জনপ্রিয় তরুণী। জোরোমে মিলসার কাছাকাছি আসতে তার সর্বোত্তম চেষ্টা করেছে, অকারণ তার পিছে গাছে গাছে ঘুরেছে, ফল হয়নি দেখে অনন্যোপায় হয়ে তাকে চুমু দেওয়ারও চেষ্টা করেছে -কিন্তু তার এই শেষ চেষ্টাও কোনো ফল দেয়নি বেচারার জন্যে।

    শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে কিনা দলের দ্বিতীয় বানর ওমুগী। মিলসা তার সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছে যুবক ওমুগিকে। জোরোমে হয়তো দলের নেতা কিন্তু ডেটিং সার্ভিসের জন্যে সে এখন বায়ো:বৃদ্ধ, আজকালকার তরুণীরা তাকে বর হিসেবে আর তেমন পছন্দ করছেনা।

    ধূমপায়ী জিরাফ!

    Posted by admin on February 10
    Posted in Uncategorized 

    ধূমপায়ী জিরাফ!

    স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও অনেক মানুষ ধূমপান করে। এতোদিন সবাই জানতো শুধু মানব জাতিই ধূমপান করে কিন্তু আজকাল দেখা যাচ্ছে পশুপাখিরও ধূমপানের বদভ্যাস তৈরি হয়েছে। এই যেমন কিছুদিন আগে লন্ডনের রাস্তার পাশে ধূমপায়ী দোয়েলের ছবি সাড়া ফেলে দিয়েছিল অনলাইন দুনিয়ায়। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার মখুজে গেম রিজার্ভ সাফারি পার্ক থেকে ক্যামেরাবন্দী করা হয়েছে একটি ধূমপায়ী জিরাফকে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে জিরাফটি সিগারেট টানার ভঙ্গি নিয়ে মুখে কিছু একটা ধরে রেখেছে। যদিও এটি সত্যিকারের কোনো সিগারেট ছিল না। জিরাফটি মূলত একটি ছোট হাড় মুখে নিয়ে সিগারেট টানার ভাব করছিল। জিরাফটির অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছিল, জিরাফটি সত্যি সত্যি ধূমপান করছে। ড্যানিশ বন্যপ্রাণী ফটোগ্রাফার মোগেনস ট্রোলি ছবিটি তুলে তা অনলাইনে শেয়ার করার পর ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

    জাপানি বিজ্ঞানীরা শুক্র গ্রহের তাপমাত্রা বৈচিত্রের রহস্য সমাধান করতে চলেছেন

    জে এ এক্স এ শুক্র গ্রহের মেরুর উপরে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কেন গ্রহের আশপাশের এলাকার চেয়ে বেশি সেই রহস্যের সমধান করতে চলেছেন।

    ব্রিটিশ বৈজ্ঞানিক জার্নাল নেচার কমিউনিকেশনস এ ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ তাদের এই নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। জাপান এরোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি’র গবেষকরা বলেছেন তাপমাত্রার এই বৈচিত্রের কারণ সম্ভবত: বিপুল বায়ু স্রোত বিষুবরেখা থেকে উত্তর ও দক্ষিণে বহমান।

    গবেষকরা আশা করছেন এপ্রিল থেকে যখন জে এ এক্স এ’র নভোযান আকাৎসুকি শুক্র গ্রহের উপর পূর্ণমাত্রায় সমীক্ষা শুরু করবে তখন এ বিষয়ে বিশদ জানা সম্ভব হবে।

    “পর্যবেক্ষণের সঠিকতার পরিমান বাড়িয়ে পৃথিবীর এবং শুক্র গ্রহের বায়ুমন্ডলে কেন পার্থক্য তা উদঘাটনের প্রত্যাশা করছি আমরা” জে এ এক্স এ’র গবেষক দলের হিরোকি আনদো বলেন।

    গ্রহের ১২০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলীয় আন্দোলন থেকে গবেষক দলের কম্পউটার সিমুলেশন থেকে দেখা যায় সেখানে ৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় বিষুবরেখা থেকে বিপুল পরিমান বায়ুর স্রোত উত্তর ও দক্ষিণে গমন করে।

    দুই মেরুর উপর বায়ুমন্ডলের এই স্রোত শক্তিশালী অধ:স্রোতের সৃষ্টি করে। যেহেতু স্রোত নিম্নমুখী তাই বায়ুমন্ডল সংকুচিত হয়ে পড়ে ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় -বিজ্ঞানীরা জানান।

    পৃথিবী এবং শুক্র গ্রহের মধ্যে বায়ুমণ্ডলীয় পরিস্থিতির পার্থক্য ব্যপক। শুক্র গ্রহের বায়ুমন্ডলের বেশিরভাগ কার্বন ডাইঅক্সাইড দিয়ে গঠিত এবং গ্রহে উচ্চ গতির বাতাস প্রবাহিত হয়।

    উল্লেখ্য ১৯৭০ সালে একটি নভোযান গ্রহটির মেরুর ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার উচ্চতা হতে তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করে, মেরুর উপরের তাপমাত্রা মাইনাস ৩০ ডিগ্রি পাওয়া যায় যা আশেপাশের এলাকা থেকে ২০ ডিগ্রি বেশি।

    ‘২০৩০ সালে ফেসবুক ব্যবহারকারী হবে ৫০০ কোটি’

    ২০৩০ সালের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের  ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫০০ কোটি হবে বলে দাবি করলেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে ফেসবুকের ভবিষ্যৎ কী এমন প্রশ্নের জবাবে  তিনি  একথা বলেন।
    জাকারবার্গ বলেন, বর্তমানে ১৫০ কোটির বেশি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করছে। আমরা প্রত্যেককে এই সুবিধার আওতায় আনতে চাই।
    জাকারবার্গ মনে করেন, আগামী ১৪ বছরে পৃথিবীর জনসংখ্যা ৭০০ কোটি থাকবে। তবে অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ২০৩০ সালনাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যা দাঁড়াবে ৮৫০ কোটিতে।
    তাদের মতে, জাকারবার্গের পরিকল্পনার ঘাটতি আছে। বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারী যে হারে বাড়ছে, তা যদি চলতে থাকে; তবে আগামী ১৪ বছরে বড়জোর ৩০০ কোটি মানুষকে ফেসবুকের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
    অপরদিকে, একসময় ফেসবুক ব্যবহারকারী বাড়ার হার থেমে যাবে। এ বিষয়টি ফেসবুক বুঝতে পেরেছে বলেই বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, বিশেষ করে ইন্টারনেট সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিতে ‘ফ্রি বেসিকস’-এর মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ‘ফ্রি বেসিকস’ উদ্যোগটি নিয়ে ফেসবুক যতই প্রচার চালাক না কেন, এটি সমালোচনার মুখে পড়েছে।

    বান কি মুনের ফোন, জাতিসংঘ প্যানেলে শেখ হাসিনা

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন।  রবিবার রাত ৮টায় জাতিসংঘ মহাসচিব এই ফোন করেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
    তিনি বলেন, ফোনালাপে তারা পারস্পরিক শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর বান কি-মুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে জানান, জাতিসংঘ ‘ইউনাইটেড নেশনস হাই লেভেল প্যানেল অন ওয়াটার’নামে একটি প্যানেল করতে যাচ্ছে। এই প্যানেলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সদস্য হিসেবে রাখার প্রস্তাব করেন বান কি-মুন। প্রধানমন্ত্রী এই প্রস্তাবে সম্মতি জানান।
    ইহসানুল করিম বলেন, আগামী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতিসংঘে পুলিশের একটি সম্মেলন হবে। এই সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে উচ্চ পর্যায়ের একটি দল পাঠাতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন বান কি-মুন। আগামী ডিসেম্বরে ঢাকায় গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
    প্রেস সচিব ইহসানুল বলেন, ফোনালাপে এই সম্মেলনে অংশ নিতে জাতিসংঘ মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী।
    প্রধানমন্ত্রী বান কি-মুনকে বলেন, বাংলাদেশ এখন স্থিতিশীল। সকল রাজনৈতিক দল এখন ইউনিয়ন কাউন্সিল পর্যায়ের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সকলে নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত। এর আগে সকল দলের অংশগ্রহণে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে।

    কোরবানীর উপর বিধি জারির উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

    পরিবেশ দূষণের অজুহাত তুলে পবিত্র ঈদুল আযহায় মুসলমানদের ঘরে ঘরে পাড়া-মহল্লায় কোরবানী দেওয়ার চিরাচরিত ইসলামী ঐতিহ্য বন্ধ করে এর পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট জায়গায় পশু কোরবানি দেওয়া এবং নিবন্ধিত লোকের মাধ্যমে পশু জবাইয়ের বিধি জারির সরকারী উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এটাকে দেশ থেকে ক্রমান্বয়ে ইসলামী সংস্কৃতি ও চেতনাবোধ মুছে ফেলার ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমীর হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তিনি হতাশা প্রকাশা করে বলেন, সুপরিকল্পিতভাবে দেশে একদিকে নগ্নপনা, বেহায়াপনাসহ ক্ষতিকর সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো হচ্ছে, অন্যদিকে ইসলামী সংস্কৃতিকে হেয় প্রতিপন্ন ও সংকোচনের অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, কোরবানী নিয়ে ছলচাতুরী ও ষড়যন্ত্র জনগণ বরদাস্ত করবে না।

    হেফাজত আমীরের প্রেসসচিব মাওলানা মুনির আহমদ স্বাক্ষরিত গতকাল (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সংবাদপত্রে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, শুধু পাড়া-মহল্লা থেকে কোরবানীর সংস্কৃতিকে সরিয়ে দেওয়া নয়, যানজটের অজুহাত খাড়া করে পশুর হাটে নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমে কোরবানী দাতাদের জন্য পশু ক্রয়েও সংকট তৈরীর ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, কোরবানীর দিন জনসাধারণকে পশুবর্জ্য সুনির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার জন্য উদ্বুদ্ধ করে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশন পশু বর্জ্য অপসারণে কোরবানীর দিন বাড়তি জনবল নিয়োগ দিতে পারত। অথচ সিটি কর্পোরেশনকে রাস্তা মেরামত, নালা-নর্দমা পরিষ্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনের চেয়েও কোরবানীর ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি সংকোচনের কাজে বেশী উৎসাহী দেখা যাচ্ছে। তিনি সরকারের প্রতি শত শত বছর ধরে চালু থাকা ইসলামী নিদর্শন পবিত্র কুরবানীর ঐতিহ্যবিরোধী এই উদ্যোগ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এতে করে সরকার বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণ জনগণের অন্তরে মারাত্মক ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া তৈরী হতে পারে।

    বিবৃতিতে হেফাজত আমীর আরো বলেন, একদিকে শহুরে ধনিক শ্রেণীর পান্তা-ইলিশের ক্ষতিকর সংস্কৃতির প্রসার ঘটানোর নানা উদ্যোগ নিয়ে দেশের ৮০-৯০ ভাগ গরীব ও আর্থিক সামর্থহীন জনগণকে উপহাস ও অসহায়ত্বের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার প্রয়াসকে এগিয়ে নিতে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে পবিত্র কোরবানীকে উপলক্ষ্য করে বেকার পরিবারে গরু-ছাগল পালন, কোরবানীর পশু বেচা-বিক্রির সাথে গরীব মানুষের সম্পৃক্ততা, ঈদের দিন গরীব-মজদুরদের উচ্চ বেতনে কামলা খাটা থেকে শুরু করে কোরবানীর গোস্ত বিলি-বণ্টন, কোরবানীর পশুর চামড়া বিক্রির মূল্য দানসহ সবক্ষেত্রেই গরীবদের জন্য উপকারি সার্বজনীন মুসলিম সংস্কৃতির পবিত্র কোরবানীকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত ও সংকোচিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে গরীবদের স্বার্থে আঘাত হানার আয়োজন চলছে। ইতোমধ্যেই নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ কোরবানী নিয়ে সরকারের এমন উদ্যোগে কোরবানী দাতাদের নানা সমস্যার মুখোমুখী হওয়ার পাশাপাশি গরীবরাই সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া উদ্ভুত সমস্যার কারণে ভবিষ্যতে অনেকেই কোরবানীর প্রতি উৎসাহ হারাতে পারেন বলেও মত প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সরকারের কাজ কি শুধু ধনী মানুষের স্বার্থ রক্ষা করা?

    পরিবেশ দূষণের প্রসঙ্গ টেনে হেফাজত আমীর বলেন, পরিবেশ দুষন! রাজপথ মাসের পনের দিন মল-মূত্র ও ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত পানিতে ডুবে একাকার হয়ে থাকলেও সিটি কর্পোরেশনের কার্যকর তৎপরতা দেখা যায় না। অথচ গরীবদের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধের বহিঃপ্রকাশের এই মহান সংস্কৃতির দিনেই তারা পরিবেশ দূষণকে বড় করে দেখাতে চায়। তিনি বলেন, আমাদের দেশের জনগণের ঘনত্ব, অবকাঠামো, নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা, যাতায়াত, পরিবহণ ব্যবস্থার যে হাল, তাতে সুনির্দিষ্ট জায়গায় কোরবানী দেওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ কোনভাবেই নিশ্চিত করা যাবে না।

    হেফাজত আমীর বলেন, পবিত্র কোরবানীর মাধ্যমে গভীর আত্মত্যাগের পাশাপাশি মুসলমানদের ধনী-গরীব, ফকীর-মিসকীনদের মধ্যে যে গভীর সহমর্মিতাবোধ, আত্মীয়তার মজবুত বন্ধন ও ঐক্যের সংস্কৃতির চর্চা হয়, তাতে ইসলাম বিদ্বেষী চক্র চরম অস্বস্তিতে ভোগে থাকেন। এ কারণে বহু পূর্ব থেকেই তারা নানাভাবে পবিত্র কুরবানীর বিরুদ্ধে গভীর অপপ্রচার ও চক্রান্তে লিপ্ত। মাত্র কয়েক বছর আগে দেব নারায়ণ নামে এক ইসলাম বিদ্বেষী পবিত্র কোরবানীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেছিল। তদুপরি প্রতিবেশী বৃহৎ দেশটি যেভাবে বাংলাদেশে গরু রফতানী নিয়ে কঠোরতা আরোপ ও বাংলাদেশে গরুর গোস্তের মূল্য বৃদ্ধিতে ওই দেশের মন্ত্রীর গভীর সন্তুষ্টি প্রকাশ, সবই একি সূত্রে গাঁথা বলেই মনে হচ্ছে। যে দেশটি বাংলাদেশে গরু রফতানী করতে চায় না, অথচ পত্রিকায় দেখা যায়, তারাই বিশ্বে গরুর গোস্ত রফতানীতে এক নম্বর স্থানে রয়েছে।

    হেফাজত আমীর পবিত্র কোরবানী ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির উপকারীতা প্রসঙ্গে বলেন, কোরবানীর পশু জবাইকে কেন্দ্র করে বাড়ীতে বাড়ীতে, পাড়া-মহল্লায় শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষসহ ধনী-গরীব মিলে সর্বস্তরের মুসলমানদের মধ্যে এক ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যপূর্ণ আবেগময় ধর্মীয় উৎসব বিরাজ করে থাকে। যারা মাসে, ছয় মাসে একবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভাল খাবারের আয়োজন করতে পারে না, এমন সব গরীবদের মাঝে বাড়িতে বাড়িতে অকাতরে কোরবানীর গোস্ত বিতরণ করা হয়ে থাকে। এই সংস্কৃতি শিশু-কিশোররা দেখে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মীতার ইসলামী আদর্শের সাথে পরিচিত হতে পারে। মাদ্রাসার গরীব ছাত্র বা প্রতিবেশী গরীবদের মাঝে কোরবানীর পশুর চামড়া বিনামূল্যে বা চামড়া বিক্রয়ের টাকা বিতরণ করার সহমর্মীতার সংস্কৃতি দেখে সকলেই অভিভূত হয়। গরীব-মিসকীন ছাড়াও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে কোরবানীর গোস্ত বিতরণের মাধ্যমে আত্মীয়তার সম্পর্ক আরো গভীর হওয়ার সংস্কৃতির চর্চা হয়। এ ধরণের অগণতি কল্যাণকর প্রথা পবিত্র কোরবানীর মাধ্যমে জনসমাজে চালু রয়েছে।

    তিনি বলেন, আমার জোরালো সন্দেহ, পরিবেশ দূষণের অভিযোগ ও পরিচ্ছন্নতার লেবেল সেঁটে ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদি চক্র এবং প্রতিবেশী দেশের ব্রাহ্মণ্যবাদি চক্রের সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্রে প্ররোচিত হয়ে ক্ষমতাসীন মহলের কেউ কেউ এমন পদক্ষেপে উদ্বুদ্ধ হয়ে থাকতে পারেন। ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য, পবিত্র কোরবানী উদ্যাপনে ক্রমান্বয়ে বাজার সংকট, পশু সংকট, গরু জবাইয়ে সমস্যা তৈরী, গরীবদের মাঝে গোস্ত বিলির প্রথা বিলোপ, গরীব মাদ্রাসা ছাত্র ও ছিন্নমূল প্রতিবেশীদের হক কোরবানীর পশুর চামড়া দখলসহ নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে মানুষকে কোরবানীর প্রতি নিরুৎসাহিত করা এবং নির্ধারিত জায়গা ঠিক করে দিয়ে শিশু-কিশোরদেরকে পবিত্র কোরবানীর চিরাচরিত সংস্কৃতি চর্চা ও আনন্দ থেকে দূরে রেখে ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনকে সমাজ থেকে বিলোপ বা গুরুত্বহীন করে দেওয়া। পাশাপাশি ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও নাস্তিক্যবাদিদের তল্পিবাহক বিভিন্ন মিডিয়ায় পশুপ্রেম ও পশু-বধের অপপ্রচার চালিয়ে নতুন প্রজন্মকে কুরবানীর প্রতি ভীতশ্রদ্ধ ও নিরুৎসাহিত করা। অথচ এই পশুপ্রেম ও পশুবধের বন্দনা যারা তুলেন, দেখা যায় একদিনের জন্যও বীফ, মাটন ও চিকেন ছাড়া তাদের ডিশ কল্পনা করা যায় না।

    তিনি বলেন, ইসলামী সংস্কৃতির বিশেষত্ব হচ্ছে, সকল আনন্দে ধনী-গরীব, ফকীর-মিসকীন, আত্মীয়-স্বজনসহ সকলকে শামিল করে নেওয়া। পবিত্র কুরবানীকে কেন্দ্র করে এই একটা দিন দেশের সকল মুসলমানের পাতিলে একই রান্না হয়, ধনী-গরীব সকল শিশুদের মাঝে আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায়। এর চেয়ে সুন্দর ও সহমর্মীতাপূর্ণ সংস্কৃতি জগতের কোন মতবাদে কেউ কি দেখাতে পারবেন?

    জাপানে নার্সিং হোম গুলোতে বৃদ্ধদের উপর নির্যাতনের ঘটনা রেকর্ড সংখ্যক বেড়েছে

    জাপানের বৃদ্ধদের নার্সিং হোম গুলোতে ২০১৪ সালে ৩০০টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ২০১২ সালের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন। সরকারের এই তথ্য থেকে ক্রমবর্ধমান প্রবীণ সমাজে আরেকটি মাথা ব্যাথার ইঙ্গিত মিলছে।

    স্বজনদের নির্যাতন সহ সবমিলে প্রবীণদের উপর নির্যাতনের ঘটনা দাঁড়িয়েছে ১৬,০৩৯টিতে, আগের বছর যা ছিলো ১৫,৯৫২টি। নির্যাতনের ফলে নিহত হয়েছেন ২৫ জন, আগের বছরের চেয়ে মৃত্যুর ঘটনাও বেড়েছে ৪ জন।

    সরকার ৫ লক্ষ প্রবীণদের আবাসনের জন্যে স্থান অনুসন্ধান করছেন যাতে চাকুরি ছেড়ে পরিবারের সেবায় নিয়োজিত হওয়া মানুষের সংখ্যা হ্রাস পায়।

    জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম এবং কল্যাণ মন্ত্রণালয় নার্সিং কেয়ারে নিয়োজিত অনাভিজ্ঞ তরুণদের আরো সম্প্রসারিত প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করেছেন।

    এক জরিপে দেখা গেছে নার্সিং হোমে নির্যাতনকারীদের ২২ শতাংশের বয়স ৩০ বছরের নীচে।

    পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার ক্ষেত্রে ৪০.৩% নির্যাতনকারীরা হলেন পূত্র, ১৯.৬% স্বামী, এবং ১৭.১% হলেন কন্যা।

    হিমায়িত ডিম্বানু থেকে সন্তানের জন্ম দিলেন চল্লিশোর্ধ্ব মহিলা

    চল্লিশোর্ধ্ব এক জাপানি মহিলা তার হিমায়িত ডিম্বানু ব্যবহার করে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, বিশেষজ্ঞরা নারীদের স্বাস্থ্যের জন্যে খুব একটা উপযুক্ত নয় বলে এ ব্যবস্থাকে সুপারিশ করেন না।

    ধারণা করা হচ্ছে জাপানে এই প্রথম জাপানে সুস্বাস্থ্যের অধিকারীনী এক মহিলা সংরক্ষিত ডিম্বানু ব্যবহার করে গর্ভধারণ করলেন। জাপানে ইতিপূর্বে এ রকম কিছু গর্ভধারণের ঘটনা রয়েছে যেখানে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী হিমায়িত ডিম্বানু ব্যবহার করে সন্তান জন্ম দিয়েছেন, পরবর্তীতে তেজস্ক্রিয় চিকিৎসার ঝুঁকি থাকার কারণে তাদেরকে সন্তান ধারণের অনুমতি দেয়া হয়।

    গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জাপান সোসাইটি অফ অবস্টেট্রিক্স এন্ড গাইনেকোলজি’র একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল জানায় তরুণী এবং সুস্থ নারীদেরকে ডিম্বানু হিমায়িত করে সংরক্ষণ না করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, কেননা এতে মহিলাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে সাথে গর্ভধারণের হারও হ্রাস পেতে পারে।

    উ. কোরিয়ার রকেট উৎক্ষেপণ পরিকল্পনায় দ. কোরিয়া ও জাপানের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

    দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বুধবার বলেছে, উত্তর কোরিয়া তার পরিকল্পনা অনুযায়ী রকেট উৎক্ষেপণের দিকে অগ্রসর হলে তার জন্যে তাকে চরম মূল্য দিতে হবে। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই উত্তর কোরিয়া চতুর্থ পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছে।
    এই পরিকল্পনা বাতিল করার জন্য পিয়ংইয়ংয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সিউল সরকার জানিয়েছে, এটা জাতিসংঘ প্রস্তাবের গুরুতর লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘সরাসরি চ্যালেঞ্জের’ সামিল। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি-র।  উত্তর কোরিয়া আগামী সপ্তাহে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রকেট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করেছে।
    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে এই ঘটনাকে ‘গুরুতর উসকানি’ হিসেবে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে পিয়ংইয়ং আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাকে স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করতে যাচ্ছে।
    উত্তর কোরিয়া ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে এই উৎক্ষেপণের ঘোষণা দেয়ার একদিন পর দেশটিকে এভাবে সতর্ক করা হল। দেশটি এই কর্মসূচির মধ্যমে কক্ষপথে একটি পর্যবেক্ষণকারী স্যাটেলাইট স্থাপন করতে যাচ্ছে।

    কফি পান করতে পারবেন নিশ্চিন্তে

    যাদের অনিয়মিত হার্ট বিট হয় তাদের কফি বা ক্যাফেইন সমৃদ্ধ ড্রিংক পান না করা ভালো— এমন পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞগণ। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণায় বিশেষজ্ঞগণ কফি পানের সঙ্গে হার্ট বিট বা হৃদস্পন্দন বাড়ার কোনো সংশ্রব খুঁজে পাননি। বিশেষজ্ঞগণ এক বছর ধরে ১ হাজার ৩৮৮ জন লোকের ওপর গবেষণা পরিচালনা করেন; যারা প্রতিদিন কফি, চা, চকলেট খেতেন। পাশাপাশি এদের শরীরে ২৪ ঘণ্টার জন্য হল্টার মনিটর লাগিয়ে রাখা হতো যাতে হার্টের স্পন্দন সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়।
    গবেষকগণ বলছেন, যাদের গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তাদের অন্তত শতকরা ৬০ ভাগ প্রতিদিন একাধিক ক্যাফেইনসমৃদ্ধ খাবার খেতেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যারা নিয়মিত কফি পান করেন এবং যারা কফি বা ক্যাফেইন সমৃদ্ধ খাবার আহার করেন না তাদের মধ্যে হল্টার মনিটর রিপোর্টে বা ইলেক্ট্রকার্ডিওগ্রাফি রিপোর্টে কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। আর এই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে।
    এ ব্যাপারে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক গবেষণার সিনিয়র অথার ড. গ্রেগরি এম মারকিউস উল্লেখ করেছেন গবেষণায় এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি যা অধিক ক্যাফেইন পানে হার্ট বিট বাড়তে পারে। তবে ড. মারকিউস এটাও বলেন যে, অনেক রোগীর ক্ষেত্রে ক্যাফেইন পান অতিরিক্ত হার্ট বিটের কারণ হতে পারে। তবে এমন যদি হয় তাহলে তাদের অবশ্যই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেয়া ভালো এই কারণে যে, তারা সত্যিটা বুঝতে পারবেন। তবে তিনি মনে করেন অ্যারিদমিয়া বা অনিয়মিত হার্ট বিট জীবন হরণকারী কোনো রোগ নয়। তবে কয়েক দশক ধরে কফি পান নিয়ে যে নেতিবাচক গবেষণা তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তা একটি মাত্র গবেষণায় বদলে যাবে তা মনে হয় না। তাই যাদের হার্ট বিটের সমস্যা আছে অথচ কফি পান করতে চান তাদের অবশ্যই হূদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।

    টোকিওর জনসংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে

    ২০১৫ সালে টোকিও ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা গুলোতে জনসংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে, সরকারের এক তথ্যে এ কথা জানা যায়।

    রাজধানী ও পার্শ্ববর্তী তিনটি প্রিফেকচার -সাইতামা, চিবা এবং কানাগাওয়া’তে স্থানান্তরিত হয়ে চলে আসা মানুষ সংখ্যা এসব অঞ্চল ছেড়ে যাওয়া মানুষের তুলনায় বেড়ে গেছে ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৩৫৭ জন।

    বৃহত্তর টোকিও এলাকাতে চলে আসা মানুষের সংখ্যা টানা ২০ বছরের মতো বৃদ্ধি পাওয়া অব্যাহত রয়েছে। ২০১৫ সালের চিত্র ২০১৪ সালের তুলনায় ৯,৯৪৯ জন বেশি।

    অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রেক্ষাপটে টোকিও এলাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব বাড়ছে, মন্ত্রণালয় জানায়।

    রাজধানীর ২৩টি ওয়ার্ডে সব মিলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৮,৯১৭ জন।

    কিয়োতো, ওসাকা, হিয়োগো এবং নারা প্রিফেকচারে জনসংখ্যা কমে গেছে ৯,৩৫৪ জন, গিফু, আইচি এবং মিয়ে প্রিফেকচারে জনসংখ্যা কমে গেছে ১,০৯০ জন।

    দেশের ৪৭টি প্রিফেকচারের মধ্যে টোকিও, সাইতামা, কানাগাওয়া, চিবা, আইচি, ফুকুওকা, ওসাকা এবং ওকিনাওয়া প্রিফেকচারে স্থানান্তরিত হয়ে আসা মানুষের সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে। অপর দিকে ৩৯টি প্রিফেকচার ছেড়ে মানুষের চলে যাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে।