• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • এবার জাগৃতির প্রকাশক দীপনকে কুপিয়ে হত্যা

    মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যবধানে আরেক প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি জাগৃতি প্রকাশনীর কর্ণধার ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় এ হামলার শিকার হন তিনি।
    এর আগে দুপুরে শুদ্ধসর প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুলসহ তিনজনকে কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। বর্তমানে তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন।
    ব্লগার মাহমুদুল হক মুন্সী বাঁধন জানিয়েছেন, আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় দীপনের উপর ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা হয়।

    টোকিও মোটর শোঃ নতুন প্রযুক্তিতে গড়িয়ে যাওয়া

    বিগত ৬০ বছর ধরে টোকিও মোটর শো গাড়ি প্রেমীদেরকে আকার্ষণ করে আসছে। গাড়ির সর্বশেষ প্রযুক্তি আগের চেয়েও আরও চাঞ্চল্যকর মডেল প্রদর্শন করছে দর্শকদের সামনে।

    প্রদর্শনীটি গাড়ি নির্মাতাদেরকে তাদের সবচেয়ে উন্মত্ত ধারণাকে তুলে ধরার সুযোগ করে দিচ্ছে। টয়োটা তাদের গাড়ির বহিরাবারন খুলে ফেলে গাড়ির বিভিন্ন পার্টস ও এর ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি তুলে ধরেছে। এর নাম দেয়া হয়েছে “কিকাই” যার অর্থ “মেশিন”। নতুন প্রজন্মের যারা মনে করেন গাড়ি আসলে প্রয়োজনহীন একটি যন্ত্র -এটি তাদেরকে আকৃষ্ট করতেই এ ব্যবস্থা।

    প্রদর্শনীতে ৭০টি নতুন মডেলের গাড়ি স্থান পেয়েছে। শো’র মূল লক্ষ্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যা পরিবেশ-বান্ধব। উদাহরণ স্বরূপ “তাকে” ফুয়েল সেল এ ব্যবহার করা হচ্ছে গাড়িতে জমাকৃত হাইড্রোজেন এবং বাতাস থেকে সংগৃহীত অক্সিজেন -দু’টি মিলিয়ে তৈরি হচ্ছে বিদ্যুৎ।

    নতুন গাড়ির এই মডেলটি আবার জেনারেটর হিসেবেও ব্যবহার করা সম্ভব। এটি অন্য গাড়িকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম, এমন কি স্থানীয় বিদ্যুৎ গ্রীডেও তা বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে। ইলেক্ট্রিক মোটর গুলো গাড়ির চাকাতে সংযুক্ত বলে যাত্রীরা গাড়ির ভেতর আরো অনেকটা স্থান পাবেন বসার।

    হোনদা ফুয়েল সেল গাড়ি ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত অতিক্রম করতে পারবে। আগামী বছর এটি বাজারে আসবে বলে তারা আশা করছে।

    ভক্সওয়াগান’র সাম্প্রতিক স্ক্যান্ডালের কারণে অনেক গাড়ি নির্মাতা ডিজেল গাড়ির অতীতকে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। তারা নিজস্ব প্রযুক্তিতে ডিজেল পরিস্রুত করার কৌশল তৈরি করছেন।

    অনেক দর্শনার্থী “মোবিলিটি ডিভাইস” বেছে নিয়েছেন হাঁটার বদলে যন্ত্রটিতে বসে আশেপাশটা ঘুরে দেখতে। পা ব্যবহার না করেই এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি!

    আরেকটি গাড়ির মডেল গাড়িটিকে ভাঁজ করে ফেলার প্রযুক্তি তৈরি করেছে। পার্কিং স্পেস সমস্যাকে এটি অনেকখানি দূর করে ফেলবে বলেই ধারণা। এটি গাড়িটিকে মাঝ বরাবর ভাঁজ করছে, ফলে দু’চাকার মধ্যেকার ফাঁক অনেকটাই কমে যাচ্ছে। এক্স মাচিনা কোম্পানির প্রেসিডেন্ট গাড়িটিকে ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিকের সময় ব্যাপক ভাবে বাজারজাত করতে চান।

    চালকবিহীন গাড়ির প্রতি মানুষের দুর্বার আকর্ষণ তো আছেই। নিসসান তাদের সয়ংক্রিয় গাড়ি বাজারে ছাড়তে ইচ্ছুক। গাড়ি গুলো সামনে কী রয়েছে তা সনাক্ত করতে সক্ষম, পথচারী এলে তা সয়ংক্রিয় ভাবেই থেমে যাচ্ছে, এমন কি সামলে লেখাও দিচ্ছে “আফটার ইউ”।

    নিসসান মোটরের সিইও কার্লোস ঘোসন বললেন “আপনি এখন স্টিয়ারিং হুইল থেকে নিশ্চিন্তে হাত সরিয়ে রাখতে পারেন। রাস্তা থেকে চোখ ফিরিয়ে অন্য কিছুর দিকে মনোযোগ দিলেও অসুবিধা নেই। ইমেইল পাঠান, ভিডিও কনফারেন্স করুন -সব চলবে এখন। গাড়ির জীবন এখন পাল্টে যাবে। ক্রেতারা খুবই আগ্রহী গাড়িটির ব্যাপারে। তাই আমাদেরকে সব কিছু দ্রুততার সাথে করতে হচ্ছে”।

    ১০ দিন ব্যাপী এই প্রদর্শনীর আয়োজকরা আশা করছেন ৯ লক্ষেরও বেশি মানুষ প্রদর্শনীটি দেখতে আসবেন।

    মুত্তাকীদের চার গুণ

    মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

    সূরায়ে ক্বফের কয়েকটি আয়াত তিলাওয়াত করেছি। সে আয়াতগুলোর সূ ধরে কয়েকটি কথা বলব ইনশাআল্লাহ। কথাগুলো দ্বারা আল্লাহ তাআলা আমাকে এবং মজলিসে উপস্থিত সবাইকে ফায়দা পৌঁছান। আমীন। প্রথম আয়াতগুলো হচ্ছে :

    وَ اُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِیْنَ غَیْرَ بَعِیْد  هٰذَا مَا تُوْعَدُوْنَ لِكُلِّ اَوَّابٍ حَفِیْظٍ

    (তরজমা) জান্নাতকে উপস্থিত করা হবে মুত্তাকীদের অদূরে। তোমাদের প্রত্যেক তওবাকারী ও সংরক্ষণকারীকে  এরই প্রতিশ্রæতি দেওয়া হয়েছিল। -সূরা ক্বাফ  (৫০) : ৩১-৩২

    মুত্তাকীদের জন্য জান্নাত

    হাশরের ময়দানে একটি দৃশ্যের কথা এই আয়াতগুলোতে বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মুত্তাকীদের জন্য জান্নাতকে অদূরে এনে উপস্থিত করা হবে। হাশরের ময়দান থেকে জান্নাত দেখা যাবে। ইশারা করে বলা হবে : هٰذَا مَا تُوْعَدُوْنَ (এই জান্নাতেরই ওয়াদা করা হয়েছিল তোমাদের সাথে দুনিয়ায়।) দুনিয়াতে জান্নাতের ওয়াদা শুনেছি না আমরা? তখন ওখানে দেখিয়ে বলা হবে- এই জান্নাতেরই ওয়াদা করা হয়েছিল তোমাদের সাথে।

    কে পাবে এই জান্নাত? لِكُلِّ اَوَّابٍ حَفِیْظٍ ।  حَفِیْظٍ : যে নিজের সত্তাকে কলুষমুক্ত রাখে। নিজেকে শুদ্ধ ও সাফ-সুথরা রাখে। আল্লাহ তো আমাকে সাফ-সুথরা পয়দা করেছেন। জন্মের সময় গুনাহের ময়লা আমার সঙ্গে যুক্ত ছিল না। আমি আমাকে গুনাহের ময়লা থেকে, পাপের ময়লা থেকে, অপরাধের ময়লা থেকে সাফ-শুদ্ধ রাখব। حَفِیْظٍ -এর আরেক মর্ম, সংরক্ষিত। নিজেকে সংরক্ষণ করব সকল অপরাধ থেকে। حَفِیْظٍ  : সংরক্ষণ করব আমি আল্লাহর বিধানগুলোকে, আল্লাহর পক্ষ থেকে বেধে দেওয়া হারাম-হালালের গণ্ডিকে। সংরক্ষণ করব আল্লাহর আহকামগুলোকে । حَفِیْظٍ  : আমি ভাল থাকব। নিরাপদ থাকব।

    তওবার মর্ম ফিরে আসা

    এরপরও আমরা মানুষ। গুনাহ হয়ে যেতে পারে। ভুল হয়ে যেতে পারে। হয়ে গেলে আবার গুনাহর উপর অনমনীয় থাকব না। আমাদের গুনাহর উপর দম ধরে থাকব না। এমন মনে করব না যে (নাউযুবিল্লাহ) গুনাহ-ই আমার জীবনের মিশন বরং গুনাহ হয়ে গেলেই সাথে সাথে আল্লাহর দিকে ঘুরে আসব। তওবার মাধ্যমে ফিরে আসব। গুনাহ করার মানেই হল আল্লাহর কাছ থেকে আমার চেহারা ফিরে গেল। আমি তো ঈমানের মাধ্যমে, কালিমার মাধ্যমে, তাওহীদের মাধ্যমে আল্লাহমুখি ছিলাম।

    وجهت وجهي للذي فطر السماوات والأرض.

    (আমি আমার চেহারা ওই সত্তার দিকে ঘুরিয়েছি, যিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশ ও যমীন) আমি তো আল্লাহমুখি। মুওয়াহহিদ হওয়া আর কালিমা পড়ার অর্থ আমি আল্লাহমুখি। আমার দিল আল্লাহর দিকে, আমার চেহারা আল্লাহর দিকে। পক্ষান্তরে অপরাধ হওযা- গুনাহ হওয়া মানেই হল, আমি অন্যদিকে ফিরে গেলাম। আমার কেবলা পরিবর্তন হয়ে গেল। এখন তো শয়তানকে আমি আমার লক্ষ্য বানিয়ে ফেললাম। নাউযুবিল্লাহ। তওবার মাধ্যমে তাই ফিরে আসা হয়। তওবাকে তওবা এজন্যই বলা হয় যে, তওবার মাধ্যমে আবার ফিরে এসেছে। আমি তো অন্যদিকে চলে গিয়েছিলাম। না, আমার রাস্তা তো এটা নয়। আমার গন্তব্য তো এদিকে নয়। আমার কেবলা ভিন্ন। আবার ফিরে এসেছি। আবার তওবার মাধ্যমে আল্লাহর দিকে ফিরে এসেছি। তওবার মানেই হল ফিরে আসা।

    গুনাহর রাস্তাটা আল্লাহর রাস্তা নয়। গুনাহ করার অর্থ হল, আল্লাহর দিক থেকে আমি অন্য দিকে চলে যাচ্ছি। তওবা করে আবার আল্লাহর দিকে ঘুরছি। আমরা বেশি বেশি আল্লাহর দিকে ফিরে আসি। এক গুনাহর জন্য একশ’বার তওবা করি। এক গুনাহর জন্য একশবার ইস্তেগফার পড়ি।

    أسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِي لاَ إلَهَ إلاَّ هُوَ الحَيُّ القَيُّومُ وَأتُوبُ إلَيهِ ، رَبِّ اغْفِرْ لِي وَتُبْ عَلَيَّ، إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الْغَفُورُ.

    সকালে এবং সন্ধ্যায় পড়ব :

    اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ.

    এটি সাইয়েদুল ইস্তিগফার।

    অন্তরে থাকবে আল্লাহর ভয়

    لِكُلِّ اَوَّابٍ حَفِیْظٍ : এখানে এই দুটি গুণের কথা বলা হয়েছে। এ গুণ দুটি কিন্তু দেখা যাবে আমার সীরাত-সুরতে। আমি ‘হাফীয কি না এবং ‘আওয়াব’ অর্থাৎ গুনাহ হয়ে গেলে ফিরে আসছি কি না। এ দুটি গুণ মুমিনের দৃশ্য বা বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য। এ দুটি কখন হবে, যখন আরো দুটি অদৃশ্য বৈশিষ্ট্য মুমিনের মধ্যে থাকবে তখন। ওই দুটি বৈশিষ্ট্যের কথা সামনে বলা হচ্ছে। مَنْ خَشِیَ الرَّحْمٰنَ بِالْغَیْبِ  (রহমানকে যে না দেখেই ভয় করে) দেখেনি সে রহমানকে এখনো, কিন্তু সে রহমানকে ভয় করে। আসমায়ে হুসনা অনেকগুলো। আল্লাহর সুন্দর নাম অনেক। এখানে جبار  (প্রতাপশালী)  قهار (পরাক্রমশালী) এগুলো বলা হয়নি। বলা হয়েছে, রহমান। মনে হতে পারে- ‘জাব্বারকে কাহহারকে ভয় করে’ এভাবে বলা হলে বেশি মুনাসিব হত। কিন্তু আল্লাহ এভাবেই বলেছেন এবং বাস্তবেই ভয় তো রহমানকেই করা উচিত। আমি ইনসান। যিনি আমার সাথে দয়ার মুআমালা করেন, তাকেই তো আমার ভয় করা উচিত। এখানে ভয় মানে কী? ভয় মানে মহব্বত মিশ্রিত ভয়। মানুষের জন্য আমরা ‘শ্রদ্ধা’ শব্দ যেখানে ব্যবহার করি, মহান খালেকের জন্য সেখানে উপযোগী শব্দ যা হবে- এই ভয় দ্বারা সেটাই উদ্দেশ্য।

    وَ جَآءبِقَلْبٍ مُّنِیْبِ : (আল্লাহর দরবারে হাযির হয়েছে কলবে মুনিব -আল্লাহমুখি দিল নিয়ে) কলব যদি আল্লাহমুখি হয়, কলবের মধ্যে যদি রহমানের ভয় থাকে তাহলে আমলগুলোর মধ্যে দেখা যাবে حَفِیْظٍ (সংরক্ষণকারী, কলুষমুক্ত)-এর গুণটা প্রকাশ পাবে। আচার-আচরণ, লেনদেন, উঠাবসা যাবতীয় বিষয়ে এবং জীবনের যত অঙ্গন আছে সবগুলোর মধ্যে। আর বিপরীত কিছু হয়ে গেলেই তওবা-ইস্তেগফার করবে। এই চারটি গুণের সমষ্টি- ব্যক্তিত্বই হল মুত্তাকী।

    মুত্তাকীর জন্য চার গুণ

    মুত্তাকী কাকে বলে? মুত্তাকী হতে হলে এই চারটা গুণ লাগবে। দিলে আল্লাহর খাশিয়াত (ভয়) থাকা আর ওটার প্রভাবে হাফীয হওয়া। আল্লাহর বিধানকে খেয়াল করে চলা। বেদআত থেকে বেঁচে সুন্নাত মোতাবেক চলা। গুনাহ হলে তওবা করা। আল্লাহর দরবারে আল্লাহমুখি দিল নিয়ে হাযির হওয়া। এই চারটা বৈশিষ্ট্য থাকলে তাকে মুত্তাকী বলা হবে। ওই মুত্তাকী মুসলমানদেরকেই বলা হবে অদূরে বেহেশতের উপস্থিতির কথা। সেখানে নিশ্চিন্তে প্রবেশ করতে বলা হবে তাদেরকে। সেখান থেকে কেউ তাদের বের করবে না।

    ادْخُلُوْهَا بِسَلٰمٍ ؕ ذٰلِكَ یَوْمُ الْخُلُوْدِ

    (তরজমা) তোমরা সেখানে শান্তিতে প্রবেশ কর এবং এটিই চিরকালের আবাসস্থলে প্রবেশের দিন। -সূরা ক্বাফ (৫০) : ৩৪

    জান্নাতে যারা যাবে চিরকাল থাকবে। সেখান থেকে কেউ তাদের বের করবে না।

    لَهُمْ مَّا یَشَآءُوْنَ فِیْهَا وَ لَدَیْنَا مَزِیْدٌ

    (তরজমা) জান্নাতে যা তাদের মনে চায় সব পাবে এবং আল্লাহর কাছে আছে আরো বেশি।) -সূরা ক্বাফ (৫০) : ৩৫

    মানুষের মনের চাওয়াও এক সময় শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আল্লাহর নিআমতের শেষ নেই। একথাই বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে আরো বেশি থাকবে’।  তাকওয়ার এই সিফাতগুলো অবলম্বন করে আল্লাহ তাআলা আমাদের পূর্ণ মুত্তাকী হওয়ার তাওফীক দান করুন। 

    [১৮ মে ২০১৫ তারিখে একটি মজলিসে প্রদত্ত বয়ান। অনুলিখন : শরীফ মুহাম্মদ]

    মঙ্গল গ্রহ নিয়ে গবেষণা এবং একটি পর্যালোচনা

    আমাদের এই পৃথিবী থেকে তিন কোটি ত্রিশ লাখ মাইল দূরের মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসতি গড়ে তোলার জন্য  নাসার বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টার কোনো ত্রুটি নাই। মঙ্গল গ্রহে কীভাবে মানুষের স্থায়ী বসতি গড়ে তোলা যায় তা নিয়ে তারা দিনরাত গবেষণায় ব্যস্ত। তারা মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসতি গড়ে তোলার বিরাট এক প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন; আর কিছুদিন পর পর এই প্রকল্পের অগ্রগতি বিশ^বাসীকে জানাচ্ছেন। এই প্রজেক্টের পিছনে খরচ করছেন বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। নাসার বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি জানিয়েছেন, আগামী ২৫/৩০ বছরের মধ্যে মঙ্গলে মানুষের স্থায়ী বসবাস গড়ে ওঠবে। নাসার এইসব বিজ্ঞানীদের মতে অচিরেই এই পৃথিবী মানব জাতির বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়বে। তাই মানব জাতির অস্তিত্বের স্বার্থেই অন্য গ্রহে মানুষের বসতি গড়ে তোলা প্রয়োজন। এ জন্যই এইসব বিজ্ঞানীদের এই নিরন্তর প্রচেষ্টা। মানবজাতির কল্যাণে পরিচালিত নাসার বিজ্ঞানীদের এই প্রচেষ্টাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। তবে মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসতি গড়ে তোলাÑএকটি অবাস্তব, অপ্রয়োজনীয় এবং অসম্ভব বিষয়। প্রকৃতপক্ষে মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাস কোনদিনও সম্ভব নয়। বিজ্ঞান যতই উন্নতি করুক না কেন, এই পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষের বসবাস সম্ভব নয়। মঙ্গল গ্রহ নিয়ে আমার এই কড়া মন্তব্য শুনে তেলে বেগুনে জ¦লে ওঠার দরকার নেই। আর আমাকে ধর্মান্ধ, বিজ্ঞানবিরোধী এবং প্রগতিবিরোধী বলে গালি দেয়ারও প্রয়োজন নেই। আসুন ঠা-া মাথায় যুক্তির মাধ্যমে এর সমাধান খুঁজি। বিজ্ঞানীদের মতে, এই মহাবিশে^ বিলিয়ন বিলিয়ন গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র রয়েছে। এই সব বিলিয়ন বিলিয়ন গ্রহ নক্ষত্র কেন, কখন এবং কীভাবে সৃষ্টি হলো তার কোনো সঠিক উত্তর এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা খুঁজে পাননি। একইভাবে আমাদের বসবাসের এই পৃথিবীটা কেন, কখন এবং কীভাবে সৃষ্টি হলো তার সঠিক তথ্যও বিজ্ঞানীরা বের করতে পারেননি। একইভাবে চন্দ্র সূর্যের সৃষ্টি রহস্যও বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পারেননি। বিজ্ঞানীরা এই মহাবিশে^র সীমা-পরিসীমাও আবিষ্কার করতে পারেননি। একইভাবে এই মহাবিশে^র সৃষ্টি রহস্যও বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেননি। আবার এই পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহ-উপগ্রহে এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব আবিষ্কার করতে পারেননি। তার মানে মহাবিশে^র এই পৃথিবী নামক গ্রহটিতেই কেবল প্রাণের অস্তিত্ব আছে এবং এখানে মানুষসহ লাখো প্রাণী বসবাস করে। এই পৃথিবীর জলে, স্থলে এবং অন্তরীক্ষে কত ধরনের প্রাণীর বসবাস তাও এখনো সঠিকভাবে গণনা করা যায়নি। আবার এই পৃথিবীতে মানুষসহ এসব লাখো প্রাণীর আবির্ভাব কখন থেকে হলো, কীভাবে হলো তারও কোনো সঠিক উত্তর বিজ্ঞানীদের কাছে নেই। বিজ্ঞানীদেরই মতে এই পৃথিবীতেই মানুষসহ লাখো প্রাণীর বসবাস। এর প্রকৃত কারণ হচ্ছে মানুষসহ যে কোনো একটি প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য যে সমস্ত  অত্যাবশকীয় উপাদানের প্রয়োজন তার সবই এই পৃথিবীতে আগে থেকে বিদ্যমান আছে। জীবনের জন্য যা প্রয়োজন, তার সবই আয়োজন এই পৃথিবীতে আছে। যেমন প্রাণীর জন্য অক্সিজেন অপরিহার্য। সেই অক্সিজেন এই পৃথিবীতে এত বেশি পরিমাণে বিদ্যমান যে, আজ পর্যন্ত এই পৃথিবীর কোন ভূখ-ে অক্সিজেনের কোনো ঘাটতি হয়নি এবং অক্সিজেনের অভাবে কোনো প্রাণী মারা যায়নি। প্রাণীর জন্য অপরিহার্য উপাদান পানি। সেই পানি পৃথিবীতে এত বেশি পরিমাণে বিদ্যমান যে, বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর মোট ভূখ-ের চার ভাগের তিন ভাগই পানি। এই যে প্রাণের জন্য অপরিহার্য দুটি উপাদানের কথা আমি উল্লেখ করলাম, তার কোনটিই কিন্তু মানুষ সৃষ্টি করেনি। বেঁচে থাকার জন্য মানুষেরা প্রতিদিন যে খাবার গ্রহণ করে- যেমন ভাত, রুটি, মাছ, মাংস, তরিতরকারি, ফলমূল কোনটিই মানুষের নিজের হাতে সৃষ্ট নয়। হাজার ধরনের গাছপালা এবং পশুপাখিও মানুষের সৃষ্টি নয়। ধান, গম, আলু, মরিচ, পিয়াজ, আদা, হলুদ, রসুন, বেগুন, মুলা, সীম সহ বিভিন্ন ধরনের তরিতরকারি, নানা ধরনের শাক-সবজি, আপেল, কমলা, আঙ্গুর, তরমুজ, কলা ইত্যাদি কখন থেকে এবং কীভাবে আবাদ শুরু হলো তার কোনো সঠিক উত্তর বিজ্ঞানীদের কাছে নেই। একইভাবে মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় গরু, মহিষ, ছাগল, হাঁস, মুরগী এবং পানিতে বাস করা রুই, কাতলা, কই, মাগুর, ইলিশ, চিংড়ি, বোয়াল, কোরাল, রূপচাদাসহ হাজারো মাছ কখন এবং কীভাবে সৃষ্টি হলো তার কোনো সঠিক উত্তরও বিজ্ঞানীদের জানা নেই। আর এসবের কোনটিই মানুষের হাতে সৃষ্ট নয়। আবার এসবের প্রত্যেকটিই মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় এবং এসবের উপর নির্ভর করেই মানুষ জীবন ধারণ করছে। আজকের এই পৃথিবীতে মানুষের যেসব আবিষ্কার জীবনকে সহজ, সুন্দর এবং সাবলীল করেছে তার কোনটাই হঠাৎ করে একদিনে তৈরি হয়নি। শত শত বছরের পথ পরিক্রমায় হাজারো বিজ্ঞানীর অক্লান্ত  পরিশ্রমে ধীরে ধীরে এসব অর্জিত হয়েছে। বিদ্যুৎ, গাড়ি, বিমান, মোবাইল ফোন, টিভি, ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনার, কম্পিউটার সবই বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার। রোগ নির্মূলের জন্য আজকের পৃথিবীতে বিদ্যমান হাজারো ওষুধ এবং চিকিৎসা সেবা ও বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল। পরিধানের জন্য বিজ্ঞানীরাই তৈরি করেছেন হরেক রকম দৃষ্টিনন্দন কাপড়। পড়াশোনা করার জন্য গড়ে তুলেছেন  স্কুল, কলেজ, বিশ^বিদ্যালয়। যাতায়াতের জন্য তৈরি করেছেন হাজার হাজার সড়ক, মহাসড়ক, সেতু, রেলপথ ইত্যাদি। দ্রুত সময়ে পথ পাড়ি দেয়ার জন্য তৈরি করেছে মোটরসাইকেল, কার, বাস, ট্রাক, ট্রেন, লঞ্চ, জাহাজ এবং বিমানসহ অসংখ্য যানবাহন। বেড়ানোর জন্য গড়ে তুলেছে পার্ক, চিড়িয়াখানা এবং সমুদ্র সৈকতসহ অসংখ্য স্থাপনা। বিনোদনের জন্য তৈরি করছে গান, নাটক, সিনেমা ইত্যাদি। সুরম্য অট্টালিকায় মানুষের যে বসবাস তাও একদিনে সম্ভব হয়নি। এসব আবিষ্কারের সাথে সাথে মানুষের জীবন হয়েছে সুন্দর, সহজ, সাবলীল এবং উন্নত। এই পৃথিবীতে মানুষের জীবন এত উন্নত, সহজ এবং সুন্দর হলেও, এই পৃথিবীরই বিস্তীর্ণ ভূখ-ে কিন্তু এখনো মানব বসতি গড়ে ওঠেনি। যেমন সাহারাসহ অসংখ্য মরুভূমি, অ্যান্টার্টিকা মহাদেশ, উত্তর মেরু এবং দক্ষিণ মেরুর বিশাল অঞ্চল, আমাজন বনভূমি, হিমালয়, আল্পস এবং কিলিমাঞ্জারুর চূড়াসহ অসংখ্য পাহাড় পর্বত, হাওর, নদী, সাগর, মহসাগরের বিশাল এলাকা ইত্যাদি। এসব এলাকা এই ভূখ-েরই সংযুক্ত অংশ হওয়া সত্ত্বেও মানুষ সেখানে এখনো বসতি গড়ে তুলতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও বসতি গড়তে পারার সম্ভাবনা নেই। এর প্রকৃত কারণ হচ্ছে, এসব এলাকার আবহাওয়া এবং পরিবেশ মানুষের বসবাসের জন্য উপযুক্ত নয়। অর্থাৎ পরিবেশ মানুষের অনকূল নয় বরং প্রতিকূল। যেমন কোথাও তাপমাত্রা বেশি গরম আবার কোথাও তাপমাত্রা বেশি ঠা-া। আবার কোথাও বা ধুধু বালু আবার কোথাও বা অথৈ পানি। আবার কোথাও বা পাহাড়ি ভূখ- আবার কোথাও বা রাশি রাশি বরফ খ-। আবার কোথাও বা হিং¯্র বন্যপ্রাণীর উপদ্রব আবার কোথাও বা প্রাণহীন নীরবতা। অথচ এসব ভূখ-ে আলো, বাতাস, অক্সিজেন, পানি সবই আছে। আছে এসব ভূখ-ে যাওয়া আসার ব্যবস্থাও। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এসব ভূখ-ে জনবসতি গড়ে তোলার কোনো ব্যবস্থা করছেন না এবং এসব ভূখ-কে মানুষের বসবাসের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য কাজও করছেন না। তবু যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম বিজ্ঞানীরা এক সময় মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার ব্যবস্থা করে ফেলবেন এবং কিছু মানুষ মঙ্গল গ্রহে পাড়ি জমাবে। কিন্তু তারা মঙ্গল গ্রহে পৌঁছার পর করবেটা কী? আর সেখানে বাঁচবেই বা কী করে? তারা গৃহ বানাবে কী দিয়ে? সেখানে তো রড, সিমেন্ট, টাইলস, কাঠ নেই। জীবন ধারণের জন্য তারা খাবে কী? সেখানে তো কৃষিকাজ করা সম্ভব নয়। সেখানে তো মাছ, মাংস নেই। তাদের অসুখ হলে ডাক্তার এবং ওষুধপত্র পাবে কোথায়? সেখানে তো কোন হসপিটাল নেই। তারা পড়াশোনা করবে কোথায়? সেখানে তো বিদ্যুৎ নেই। বৈদ্যুতিক পাখা এবং এসি চালাবে কী করে? সেখানে তো মোবাইল এবং ইন্টারনেটও নেই। তারা পথ চলবে কীভাবে? সেখানে তো কোন গাড়ি নেই আবার রাস্তাঘাটও নেই। সেখানে তো কোন গাছপালা নেই। তাহলে ছায়া পাবেন কই? বিজ্ঞানীরা হয়তো বলবেন, মঙ্গল গ্রহে যেহেতু পানি পাওয়া গেছে সুতরাং সেখানে অক্সিজেন আছে এবং সেখানে কৃষিকাজ করা যাবে, ফসল  উৎপাদন করা যাবে এবং বসবাস করা যাবে। কিন্তু পানি থাকলেই তো আর বসবাস করা যায় না। যদি সম্ভব হতো তাহলে তো এই পৃথিবীর অ্যান্টার্টিকা মহাদেশে সবার আগে মানুষের বসবাস সম্ভব হতো। আর সত্যিই কথা হচ্ছে, মঙ্গল গ্রহে যাওয়া মানুষের পক্ষে সম্ভব হলেও বসবাস করা সম্ভব হবে না এবং এই পৃথিবীর সুন্দর জীবন ছেড়ে মঙ্গল গ্রহে বসবাস করার জন্য কেউ যাবে না। যারা আজ মঙ্গলে যাবার জন্য নাম ঘোষণা করছে তারাও যাবে বলে মনে হয় না। এখানে একটি বিষয় সবার জানা দরকার আর সেটা হচ্ছে মানুষ কিন্তু ইচ্ছা করে এই পৃথিবীতে আসেনি। তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এখানে পাঠানো হয়েছে। আর জীবন ধারণের সকল উপকরণ সৃষ্টি করেই মানুষকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। এজন্যই এই পৃথিবীতে মানুষসহ লাখো প্রাণীর বাস এবং তারা হাজার হাজার বছর ধরেই এই পৃথিবীতে বসবাস করছে। অপরদিকে মঙ্গল গ্রহে মানুষ চেষ্টা করে যেতে চাচ্ছে। আর সেখানে বসবাসের কোনো উপকরণ নেই। সুতরাং সেখানে বসতি গড়তে হলে জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপকরণ মানুষকে সৃষ্টি করতে হবে, যা মানুষের পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়। আর তিন কোটি ত্রিশ লাখ মাইল দূরের পথ পাড়ি দেয়ার যাতায়াত খরচও তো মুখের কথা নয়। বিজ্ঞানীরা তো চাঁদ নিয়ে মানুষকে অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কিন্তু চন্দ্র বিজয়ের চার দশকেরও বেশি সময় তো পেরিয়ে গেছে। চাঁদে মানুষের বসবাসের অগ্রগতি কই? এখন তো চাঁদ নিয়ে বিজ্ঞানীদের কোনো তৎপরতাও নেই। মঙ্গল গ্রহ নিয়ে  বিজ্ঞানীদের তৎপরতাও কিন্তু  একদিন বন্ধ হয়ে যাবে। তাইতো বলি-     ‘প্রকৃতির দানে প্রকৃতির মাঝে আমরা বেঁচে আছি    প্রকৃতিটা কার দান তাহা ভুলে গেছি।’ যেসব বিজ্ঞানী আমাদেরকে মঙ্গলে বসবাস করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্য বলছি, আপনাদের এই স্বপ্ন কখনো পূরণ হবে না। বিজ্ঞানের চরম উন্নতি সত্ত্বেও তা কখনো সম্ভব হবে না। একজন বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবেই এ কথা বলছি। কারণ বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা সব অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে না। চিকিৎসা বিজ্ঞান একজন মানুষের রোগ নিরাময়ে সক্ষম। কিন্তু তাই বলে মানুষকে অমরত্ব দানে সক্ষম নয়। নারী গর্ভে থাকা সন্তানটি ছেলে নাকি মেয়ে তা প্রসবের আগে জানা সম্ভব। কিন্তু তাই বলে ইচ্ছামত ছেলে অথবা মেয়ে শিশুর জন্ম দেয়া সম্ভব নয়। মানুষ তার ইচ্ছামত দিন রাত্রিকেক যেমন বড় ছোট করতে পারে না, ঠিক তেমনি রোদ বৃষ্টি আর শীতকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। মানুষ তার প্রয়োজনমত আবহাওয়াটাকে গরম এবং ঠা-াও করতে পারে না। একইভাবে ভূমিকম্প, অতি বৃষ্টি, ঘূর্নিঝড় আর জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগকে বন্ধ করার উপায়ও মানুষ আবিষ্কার করতে পারেনি। কারণ হচ্ছে মানুষের জ্ঞান এবং ক্ষমতার একটি সীমারেখা আছে যা অতিক্রম করা কোন মানুষের পক্ষে কোনদিনও সম্ভব নয়। যারা মঙ্গলে বসতি গড়ার কথা বলছেন তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ, আপনারা আগে উত্তর মেরু এবং দক্ষিণ মেরুতে বসতি গড়–ন। হিমালয় অথবা আল্পস পর্বতের চূড়ায় আগে মানুষের বসবাস গড়ে তুলুন। সাইবেরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল আর মরুভূমির বালুর রাজ্যে মানুষের বসবাস গড়ে তুলুন। একইভাবে এই পৃথিবীর তিনভাগ অঞ্চল জুড়ে বিস্তীর্ণ অথৈই জলরাশিকে মানুষের বসবাসের উপযোগী করুন। লক্ষ কোটি মাইল দূরের মঙ্গল গ্রহÑযেখানে অক্সিজেন নেই, পানি নেই, গাছপালা নেই, কোনো ধরনের খাদ্য নেই, বিদ্যুৎ নেই, বাড়ি-গাড়ি কিছুই নেই, চাকরি নেই, ব্যবসা-বাণিজ্য নেই, ডাক্তার নেই, ওষুধপত্র নেই সেখানে এত কষ্ট করে যাওয়ার দরকার কী এবং সেখানে বসবাস করারই বা দরকার কী? লক্ষ কোটি মাইল দূরের মঙ্গলে যাওয়া এবং সেখানে বসতি গড়ার চেয়ে এই পৃথিবীর বরফ আচ্ছাদিত ভূখ-, পাহাড়ী জনপদ এবং মরুভূমির প্রান্তরকে মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তোলা বিজ্ঞানীদের জন্য অনেক বেশি সহজ বিষয়। এছাড়া পৃথিবীর যেসব শহরে, গ্রামে মানুষ এখন বসবাস করছে সেগুলোকে আরো উন্নত করে আরো বেশি মানুষ কীভাবে সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারে সেই প্রচেষ্টায় মনোনিবেশ করুন। বিজ্ঞানীদের উচিত এইডস, ক্যান্সার এবং ইবোলার হাত  থেকে মানুষের জীবনকে রক্ষার জন্য কাজ করা। বিজ্ঞানীদের উচিত অশিক্ষা, দারিদ্র্যতা এবং বিভিন্ন ধরনের অসুখের হাত থেকে মানব জাতিকে রক্ষার জন্য কাজ করা। কিন্তু তা না করে মঙ্গলে মানুষের বসতি গড়ার স্বপ্ন নিতান্তই অপ্রয়োজনীয়, অবাস্তব এবং অসম্ভব একটি বিষয়। মানুষ লক্ষ কোটি মাইল দূরের মঙ্গল গ্রহে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, অথচ টাইটানিক ডুবে যাবার একশত বছর পেরিয়ে গেলেও, তারা এখনো সমুদ্রের মাত্র কয়েক শত ফুট নিচ থেকে জাহাজটিকেই তুলতে পারছে না। আর মালয়েশিয়ার নিখোঁজ বিমানটিও খুঁজে বের করতে পারেনি এবং বিমানটির যাত্রীদেরকেও বাঁচাতে পারেনি। এমনকি বিমানটির ধ্বংসাবশেষ এবং যাত্রীদের লাশও উদ্ধার করতে পারেনি। তাই মানুষের উচিত বাস্তবতায় ফিরে আসা, বাস্তববাদী হওয়া এবং এই মহাবিশ্বের স্রষ্টাকে জানা। কীভাবে এই মহাবিশ^ সৃষ্টি হলো, কীভাবে পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব হলো, এই পৃথিবীতে আমাদের কাজ কী এবং মরণের পরে কী হবে সে সব বিষয় জানা এবং সেই অনুযায়ী পথ চলা সবার একান্ত কর্তব্য। তাহলেই কেবল মানুষের জীবন শান্তিময় এবং সুখের হবে।

    ‘চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ করতে ভয় পায় না’

    চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত একটি সংবাদপত্রে দাবি করা হয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ করতে ভয় পায় না চীন। ওই এলাকায় আরো যুদ্ধাজাহাজ পাঠানো হবে-যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রতিক্রিয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে চীনের পক্ষ থেকে এই প্রতিক্রিয়া আসলো। দেশটির কট্টর জাতীয়তাবাদী পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস অভিযোগ করেছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন চীনকে উস্কানি দিচ্ছে। গতকাল বুধবার পত্রিকাটির এক সম্পাদকীয়তে পরামর্শ দেয়া হয়েছে, চীনের উচিত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলে কাজ করা এবং একইসঙ্গে খারাপ কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকা। খবর দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি ও ডনের।

    পত্রিকাটির সম্পাদকীয়তে বলা হয়, হোয়াইট হাউসকে এটা বোঝানো যে, ইচ্ছা না থাকলেও চীন এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ করতে ভয় পায় না। চীন তার   সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। পত্রিকাটিতে আরো বলা হয়, এই অঞ্চলে বেইজিংয়ের দ্বীপ নির্মাণের দাবিতে বাধা দেয়ার মতো যুক্তরাষ্ট্রসহ কোনো দেশেরই নেই। চীনের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বস্থানীয় সংবাদপত্র দ্য পিপলস্ লিবারেশন আর্মি ডেইলির প্রথম পাতায় এক সম্পাদকীয়তে অভিযোগ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে ইরাক এবং আফগানিস্তানের মতো গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এতে আরো বলা হয়, প্রকৃত সত্য হলো, বিশ্বের যেসব দেশে স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করেছে সেখানে সামরিক শক্তি ব্যবহার করে যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কোনো কোনো দেশে আবার সরাসরি এসব ক্ষেত্রে যুক্ত হয়ে চরম ক্ষতি করেছে দেশটি।
    মঙ্গলবার দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমা নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। চীন বলছে, তাদের এলাকায় মার্কিন নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজকে দেখার পর তারা ওই জাহাজটিকে সতর্ক করে দিয়েছে। জাহাজটি ওই সাগরে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা চীনের কয়েকটি দ্বীপের কাছাকাছি বিতর্কিত জলসীমায় ঢুকে পড়েছিল।
    চীনের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র লু কাং অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটন ইচ্ছে করেই দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, যে কোন দেশের ইচ্ছাকৃত উস্কানির বিরুদ্ধে চীন শক্ত ব্যবস্থা নেবে। চীন তাদের আকাশ সীমা এবং সমুদ্র সীমার ওপর তীক্ষ নজর রাখছে। চীনের ‘সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং স্বার্থে’ আঘাত হানার বিরুদ্ধে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ার করে দেন। চীনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকেও মঙ্গলবার তলব করা হয়।
    মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলছে, এটা রুটিন অপারেশন এবং আন্তর্জাতিক জলসীমা আইন মেনেই তা করা হয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরের যে বিতর্কিত অঞ্চলটিকে চীন তাদের সমুদ্র সীমা বলে দাবি করছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগে থেকেই কিছু জাহাজ পাঠানোর পরিকল্পনা করছিল। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস লাসেন চীনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপটির ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে ঢুকে পড়ে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশটন কার্টার কংগ্রেসে এক শুনানিতে বলেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন না করে আমরা বিশ্বের যে কোনো জায়গায় উড়বো, পাল তুলবো এবং অভিযান চালাবো। যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন দিয়েছে জাপান।

    চীন যাকে নিজের সমুদ্রসীমা বলে দাবি করছে, সেটিকে চীনের অনেক প্রতিবেশি দেশ বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমা হিসেবে। ২০১৩ সালে দক্ষিণ চীন সাগরের ডুবন্ত কোরাল রীফের ওপর মাটি ফেলে চীন এই কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ তৈরি করে, এরপর সেখানে সামরিক ব্যবহারের উপযোগী রানওয়ে এবং লাইটহাউজও বসানো হয়। এসবের লক্ষ্য ছিল চীনের সমুদ্র সীমা দক্ষিণ চীন সাগরের অনেক গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত করা।

    ইন্টারনেট ব্যবহারে স্বাধীনতায় বাংলাদেশের অবনতি

    বাংলাদেশে বেড়েছে ইন্টারনেটের ব্যবহার, কিন্তু কমেছে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি পর্যবেক্ষক সংগঠন ফ্রিডম হাউস বার্ষিক জরিপ প্রতিবেদন ‘ফ্রিডম অব দ্যা নেট ২০১৫’ প্রকাশ করে বুধবার। সেখানেই এই তথ্য উঠে এসেছে।
    ২০১৪ সালে বিশ্বের ৬৫টি দেশ নিয়ে গবেষণা করে ফ্রিডম হাউজ। গবেষণা ফলাফল অনুযায়ী, ইন্টারনেট ব্যবহারে স্বাধীনতার দিক থেকে ১০০ এর মধ্যে ৫১ পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ওয়েবসাইটে প্রবেশের বাধার ক্ষেত্রে ১২, লেখায় বাধার ক্ষেত্রে ১২ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অধিকার আটকানোর ক্ষেত্রে ২৭ পয়েন্ট পেয়েছে। ফ্রিডম হাউজের গবেষণা ফলাফলে ১০০ এর মধ্যে যে দেশের পয়েন্ট যত কম হবে সে দেশ ইন্টারনেট স্বাধীনতার ক্ষেত্রে তত উদার।
    ২০১৩ সালে বিশ্বের ৬০টি দেশ নিয়ে গবেষণা করে ফ্রিডম হাউজ। ওই বছর ইন্টারনেট ব্যবহারে স্বাধীনতার দিক থেকে ১০০ এর মধ্যে ৪৯ নম্বর পেয়ে ‘আংশিক স্বাধীন’ ক্যাটাগরিতে স্থান পায় বাংলাদেশ। নতুন গবেষণা প্রতিবেদনেও একই অবস্থানে আছে দেশ।
    ফ্রিডম হাউজের প্রতিবেদনে যে সব দেশ পয়েন্টের দিক থেকে শূন্য থেকে ৩০ পেয়েছে তারা ‘স্বাধীন’ ও যে সব দেশ ৩১ থেকে ৬০ পেয়েছে তারা ‘আংশিক স্বাধীন’ ক্যাটাগরিতে পড়েছে।
    গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের জনসংখ্যা দেখানো হয়েছে ১৫ কোটি ৮৫ লাখ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের হার দেখানো হয়েছে ১০ শতাংশ। গবেষণা ফলাফল অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেটের প্রসার বাড়লেও এর ব্যবহারে স্বাধীনতা টানা পাঁচ বছর ধরে কমেছে।

    রহস্যময় হ্রদ যেখানে পাথর হয়ে যায় প্রাণীরা !

     আফ্রিকার তাঞ্জানিয়ার প্রত্যন্ত প্রান্তর | দিগন্ত জুড়ে শুয়ে আছে টকটকে লাল জমি | রং যেন রক্তকেও হার মানায় | জমি থেকে প্রতিফলিত হয়ে আসা আলোতে ধাঁধিয়ে যায় চোখ।

    ভুল করে কাছে যায় পাখী এবং প্রাণীরা | অনেক সময় অত কাছেও যেতে হয় না | তার আগেই জমে পাথর হয়ে যায় তারা | কারণ ওটা কোনও জমি নয় | বরং হ্রদ | অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়ার জন্য যার রং লাল | প্রচুর পরিমাণে সোডা আর লবণ থাকায় তার পানি এতটাই কষ্টিক, সংস্পর্শে এলেই প্রস্তরীভূত হয়ে যাচ্ছে প্রাণীরা | মৃত্যুপুরী এই হ্রদের নাম নাট্রোন |

    বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন হ্রদের পানিতে চারপাশের পাহাড় থেকে এসে জমা হয় প্রচুর ব্যাকটেরিয়া | পাশাপাশি আছে পানিতে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষার | যার মূল উৎস সোডিয়াম কার্বোনেট | পানির Ph Balance ১০.৫| নাট্রোন হ্রদের ধার বরাবর হেঁটে গিয়েছেন ফোটোগ্রাফার নিক ব্রান্ডট | তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ফসিল হয়ে যাওয়া একের পর এক পাখি এবং অন্য জীবজন্তু |

    সোডিয়াম ব্যবহার করা হত প্রাচীন মিশরে | মৃতদেহ মমি করার জন্য | সেই উপাদানের জন্য এখানেও সংরক্ষিত হয়ে থাকছে প্রাণী-দেহ| বিকৃত হচ্ছে না চেহারা | শুধু রক্ত মাংসের বদলে সে তখন পাথরের | অতিরিক্ত ক্ষারের প্রভাবে পুড়ে যাচ্ছে কিছু প্রাণীর চোখ আর চামড়া | তবে কীভাবে এবং কেন প্রাণীদের মৃত্যু হচ্ছে সে নিয়ে এখনও সম্যক ধারনা নেই বিজ্ঞানীদের |সেটা এখনও রহস্যই |

    কিন্তু শুধু মৃত্যুফাঁদ নয় | এই হ্রদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে বাস্তুতন্ত্রে | কারণ এই হ্রদ এবং সংলগ্ন এলাকা বিলুপ্তপ্রায় লেজার ফ্লেমিঙ্গোদের ব্রিডিং প্লেস | ওই পানিতে থাকা ব্যাকটেরিয়াই এই পাখিদের প্রধান খাদ্য | তাছাড়া এই লোহিত হ্রদের থাকা জীবাণু-বৈচিত্রও পৃথিবীতে বিরল |

    হ্রদের পানি তীব্র গরম | স্বাভাবিক উষ্ণতা প্রায় ১৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট | বুকের মধ্যে রক্তবর্ণ বিষ-পানি আর প্রাণীদের পাথর-দেহ নিয়ে শুয়ে আছে প্রকৃতির মেডুসা‚ লেক নাট্রোন |

    বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হলেন সুবীর চৌধুরী

    বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা কাউন্সিলের চার্টার মেম্বার হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সুবীর চৌধুরী। অক্টোবর থেকেই তিনি প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
    পাঁচ সদস্যের এই কাউন্সিলের অপর সদস্যরা হলেন- মার্শাল গোল্ডস্মিথ, মার্ক থমসন, রিটা ম্যাকগ্রেইন ও মায়া হু-চান।
    সুবীর চৌধুরীর (৪৮) জন্ম বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। তিনি এএসআই কন্সাল্টিং গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী।
    নিজের অনুভূতি জানিয়ে সু্বীর বলেন, চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকা মানুষের উন্নয়নে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। এ কাজের অংশ হতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি।
    বাংলাদেশেও বিপুলসংখ্যক মানুষ দারিদ্যসীমার নিচে অবস্থান করছে জানিয়ে সুবীর বলেন, বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্টের প্রধান লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংকটের সমাধান। বিশ্বব্যাংক সফল হলে বাংলাদেশেও চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের সংখ্যা শূন্যে নেমে আসবে।

    প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব গ্যারি কিলডাল

    বায়োসের পূর্বপুরুষ বলা যেতে পারে সিপি/এমকে (কন্ট্রোল প্রোগ্রাম ফর মাইক্রোকম্পিউটার)। এই সিপি/এম উদ্ভাবন করেছেন গ্যারি কিলডাল। মাইক্রোপ্রসেসর যে কম্পিউটার হিসেবে পূর্ণক্ষমতাপ্রাপ্ত হতে পারে, তা প্রথম যারা বুঝতে পেরেছিলেন তার একজন কিলডাল।

    এই সম্ভাবনা ব্যবহার করতে তিনি ডিজিটাল রিসার্চ ইনকরপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেন। কিলডাল জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪২ সালের ১৯ মে। ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন থেকে পড়ালেখা করে তিনি মাইক্রোপ্রসেসর নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।

    ওই সময়ে ইন্টেলেও তিনি উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। এই গবেষণার অংশ হিসেবেই তিনি পরবর্তী সময়ে আইবিএমের জন্য তৈরি করেন সিপি/এম অপারেটিং সিস্টেম। ১৯৯৪ সালের ১১ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন কিলডাল।

    জাপানে ফের পারমাণবিক চুল্লি চালু, বিক্ষোভ

    জাপানে সাড়ে চার বছর আগে সুনামিতে বিধ্বস্ত ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুত্ প্রকল্প চালুর একমাসের মধ্যে ফের আরো একটি চুল্লি চালুর অনুমতি দিয়েছে সরকার। ইমি প্রদেশের ইকাতা পারমাণবিক চুল্লির ৩ নাম্বার প্ল্যান্ট চালুর মধ্যে দিয়ে পারমাণবিক শক্তি উত্পাদন ফের শুরু করেছে দেশটি।
    সোমবার প্রদেশটির স্থানীয় সরকার তোকিহিরো নাকামুরা এ ঘোষণা দেয়ার পর স্থানীয় পারমাণবিক-চুল্লি বিরোধী কর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা প্রাদশিক সরকারের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানায়।

    পারমাণবিক চুল্লি চালুর ঘোষণা দিয়ে এ স্থানীয় সরকার বলেন, জাতীয় সরকারের অনুমতিক্রমে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে আমরা এ প্রকল্পে বিদ্যুত্ উত্পাদনের জন্য শিকুকো বিদ্যুত্ কোম্পানিকে সুপারিশ করেছি। এর মধ্যে দিয়ে সাড়ে ৪ বছর ধরে বন্ধ থাকা এই প্লান্টে ফের কার্যক্রম শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার পরই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

    ফেসবুকে সার্চে আসবে পুরোনো পাবলিক পোস্ট

    ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের দুই ট্রিলিয়ন পোস্টের একটি ইনডেক্স তৈরি করেছে। এর অর্থ হচ্ছে এখন সার্চ দিলেই সংশ্লিষ্ট পুরোনো ‘পাবলিক’ পোস্টগুলো সামনে চলে আসবে।
    ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের তাদের সাইটে আরো বেশি সময় কাটাতে উদ্বুদ্ধ করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ফেসবুক সার্চ এর প্রধান টম স্টকি একটি ব্লগ পোস্টে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন ঘটনায় বন্ধু ও পরিবারের মানুষ কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে সেটা দেখতে ব্যবহারকারীরা ফেসবুকে লগ ইন করছে। ফেসবুকে প্রতিদিন দেড় বিলিয়ন বার সার্চ অপশনটি ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছেন। এই সুবিধা যোগ করার অর্থ হচ্ছে মানুষ এখন কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে সার্চ করে নিজের কাছের  মানুষ ও গণমাধ্যমের পোস্ট দেখার পাশাপাশি অচেনা মানুষদের পোস্টও দেখতে পাবে। ফেসবুক সার্চের প্রধান অবশ্য জানিয়েছেন, ফেসবুক ব্যবহারকারীরা নিজেদের পুরোনো পোস্ট কারা দেখতে পারবে সে সুবিধা রেখেছে। বর্তমানে সার্চের এই বিশেষ সুবিধা শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়া যাবে। ফেসবুকের এই সুবিধা টুইটারের সঙ্গে তাদের সরাসরি প্রতিযোগিতায় নিয়ে আসছে। টুইটারের প্রায় একই রকম একটি সুবিধা আছে যার নাম ‘মোমেন্টস’। তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি ব্যবহারকারী থাকায় খুব দ্রুতই টুইটারকে পেছনে ফেলতে পারবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

    প্রচলিত ভুল

    Posted by admin on October 25
    Posted in Uncategorized 

     প্রচলিত ভুল

    একটি ভুল ধারণা : রুকু-সিজদার তাসবীহ কি তিনবারের বেশি পড়া নিষেধ?

    কিছু মানুষ মনে করেন, রুকু বা সিজদার তাসবীহ তিনবারের বেশি পড়া যায় না। ফলে তারা যখন ইমামের পিছনে নামায পড়েন তখন সুযোগ থাকা সত্তে¡ও তিনবার তাসবীহ পড়েই চুপ করে থাকেন।

    অনেক ইমাম সাহেবই রুকু সিজদার তাসবীহ বেশ ধীরে পড়েন। কোনো কোনো ইমাম সাহেবের ক্ষেত্রে মুসল্লিগণ তিনবারই তাসবীহ পড়ার সুযোগ পান। আবার কোনো কোনো ইমামের ক্ষেত্রে পঁচ থেকে সাতবার পর্যন্ত পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। সুতরাং এক্ষেত্রে তিনবার পড়ে চুপ না থেকে ইমাম সাহেব রুকু বা সিজদা থেকে উঠা পর্যন্ত পড়তে থাকা।

    একটি ভুল আমল : চলমান ‘ছুতরা’

    কিছু মানুষকে দেখা যায়, তারা হাতে থাকা জায়নামায বা রুমালকে সুতরা হিসেবে ব্যবহার করেন। মুসল্লির সামনে দিয়ে যান আর হাতের রুমাল বা জায়নামাযকে সুতরা হিসেবে সামনে ধরে থাকেন আর চলতে থাকেন। এ ধরনের চলমান সুতরার মাধ্যমে সুতরা আদায় হবে না। সুতরাং এটা থেকে বিরত থাকতে হবে।

    মুহররমের গুরুত্ব ও তাৎপর্য   

    হিজরী সালের প্রথম চান্দ্রমাস মুহররম। বিভিন্ন বিচার ও প্রেক্ষিতে এই মাসটি বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে। সংক্ষিপ্তাকারে তার কিছু বিবরণ প্রদান করা হচ্ছেÑপৃথিবী সৃষ্টির পূর্বে তাঁর সৃষ্টি জগতে আল্লাহ তা’য়ালা অনেক কিছু সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু তাতে তাঁর সৃষ্টি পূর্ণ হয়নি। তাই আপন মনের ইচ্ছাতে তিনি সৃষ্টি করলেন এই পৃথিবী। তা এই মুহররম মাসে। এরপরও তৃপ্তি নেই স্রষ্টার মনে। কী যেন অতৃপ্তি রয়ে গেছে তাঁর সৃষ্টির জগতে। সেই অতৃপ্তকে দূরীভূত করলেন তিনি মানব জাতিকে সৃষ্টি করে। প্রথম মানব হযরত আদম (আ.)কে সৃষ্টি করলেন তিনি এই মুহররম মাসে। শুরু হলো হযরত আদম (আ.)-এর জান্নাতবাস। আর তা এই মুহররম মাসে।মুসলমানদের পুণ্যভূমি কাবাঘর। আর এটাই পৃথিবীতে সৃষ্ট প্রথম গৃহ। তৈরি হয়েছিল হযরত আদম (আ.) কে সৃষ্টির আগেই। ফেরেশতাদের দ্বারা। তা এই মুহররম মাসে। হযরত নূহ (আ.)-এর জন্ম এই মুহররম মাসে। তাঁর সময়ে বিশ্বব্যাপী মহাপ্লাবনের সৃষ্টি হয় এই মাসেই। হযরত ইউনূস নবী (আ.)কে সামুদ্রিক মাছে গিলে খায়। এই অবস্থায় দীর্ঘদিন মাছের পেটে অবস্থান করার পর মুহররম মাসে তিনি মাছের পেট থেকে মুক্ত হন। মহান আল্লাহ তা’য়ালা হযরত আইউব নবী (আ.)কে দুঃসহ কুষ্ঠ রোগ দিয়ে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন করেন। দীর্ঘদিন যাবত অবর্ণনীয় রোগ ভোগের পর এই মুহররম মাসে তিনি এই কঠিন রোগ থেকে মুক্ত হন। ধর্ম প্রচারের অপরাধে কাফেররা হযরত ইবরাহিম (আ.)কে জ্বলন্ত অগ্নিকু-ে নিক্ষিপ্ত করে। আল্লাহর অশেষ রহমতে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থাতে তিনি উক্ত অগ্নিকু- থেকে বের হয়ে আসেন। এই ঘটনাটি যখন ঘটে, সেটা ছিল মুহররম মাস। মাবুদ আল্লাহর কঠিন পরীক্ষাতে অবতীর্ণ হয়ে হযরত নবী সুলায়মান হন রাজ্যহারা, সম্পদহারা, সর্বহারা একবারে নিঃস্বজন। ঈমানী পরীক্ষাতে উত্তরণ শেষে এই মুহররম মাসে তিনি রাজ্য, সম্পদÑসবকিছু ফিরে পান। আপন ভুলে হযরত দাউদ (আ.) আল্লাহর রোষে পতিত হন। এজন্য তাঁকে দীর্ঘদিন অনেক দুর্দশা ভোগ করতে হয়। আপন ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়ে দুচোখের অশ্রুতে বুক ভাসিয়ে আল্লাহর কাছে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন। দীর্ঘদিন পর অবশেষে এই মুহররম মাসে রাহমানির রাহিম আল্লাহ মাবুদ এই মাসে তাঁকে ক্ষমা করে দেন। সাক্ষাতে আল্লাহ দীদার লাভের জন্য হযরত মূছা (আ.) তূর পাহাড়ের পাদদেশে যেয়ে নিরলস এবাদত-সাধনা করতে থাকেন। অবশেষে একদিন আল্লাহ পাক তাঁকে সাক্ষাৎ প্রদান করেন। তখন ছিল মহররম মাস। বাদশাহ ফেরাউন হযরত মূছা (আ.)কে নদীতে ডুবিয়ে মারতে চেষ্টা করে। কিন্তু আল্লাহ তা’য়ালা ফেরাউনের কুটিল চক্রান্ত থেকে মূছা (আ.)কে রক্ষা করেন। এ ঘটনাটাও ঘটেছিল এই মুহররম মাসে।হযরত ঈসা (আ.)-এর ধর্ম প্রচারে নাখোস হয় ইহুদীরা। এরফলে ঈসা (আ.)কে বিরাট ষড়যন্ত্রের স্বীকার হতে হয়। ভীষণ কষ্টের মধ্যে তাঁর দিন কাটতে থাকে। তাদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ঈসা (আ.)কে পৃথিবী থেকে উঠিয়ে তাঁর কাছে নিয়ে নেন। ওটি ছিল মুহররমের একটি দিন।মুসলমানদের রোজা রাখার প্রচলন হযরত আদম (আ.)-এর আমল থেকেই ছিল। কিন্তু ফরজ ছিল না। এক মুহররম মাসে মহান আল্লাহ পাকের নির্দেশে মুসলমানদের জন্য রমজানের একমাস রোজা রাখা ফরজ ঘোষণা হয়। ইয়াজিদ বাহিনীর সাথে হযরত ইমাম হাসান-হোসেনের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে হযরত ইমাম হাসান- হোসেন শহীদ হন এই মহররম মাসে।ইসরাফিলের শিংগা ফুৎকারে একদিন পৃথিবী ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। সংঘটিত হবে কিয়ামত। মুহররম মাসেই এটি ঘটবে।

    থেমে যেতে পারে ক্লান্ত বিগ বেন

    সময়ের হিসাব বিরামহীনভাবে জানান দিতে দিতে পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছে লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী ঘড়ি বিগ বেন। ভেতরকার কলকব্জাগুলোও সামর্থ্য হারিয়েছে। ফলে এখনই যদি মেরামতের উদ্যোগ নেয়া না হয় তবে চিরকালের জন্যই ঘুমের দেশে চলে যেতে পারে এই অতিকায় সময়যন্ত্র।
    কিন্তু এর মেরামতের খরচও নেহায়েত কম নয়, প্রায় ৪ কোটি পাউন্ড। রাজনীতিবিদরা ইতিমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই খরচ মেটানো না গেলে থেমে যেতে পারে বিগ বেনের ঘণ্টাধ্বনি। সর্বশেষ ৩১ বছর আগে সংস্কার করা হয়েছিল এর।
    ১৫৬ বছরের পুরনো এই ঘড়িটি শুধুমাত্র ঠিকঠাক রাখতেই ব্যয় হবে ৪০ লাখ পাউন্ড। অন্যান্য আনুষঙ্গিক সংস্কার মিলিয়ে সর্বমোট ব্যয় দাঁড়াবে আনুমানিক ৪ কোটি পাউন্ড। ঘড়িটি সংস্কারে ঠিক কত সময় লাগবে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তা এক বছরও লাগতে পারে বলে জানা গেছে। এর আগে ১৯৭৬ সালে ঘড়িটি ২৬ দিনের জন্য বন্ধ ছিল। সপ্তাহে তিনবার ঘড়িটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়।
    যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের কমন্স ফাইন্যান্স কমিটি তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ঘড়িটি যে টাওয়ারে স্থাপিত তাতেও সংস্কার প্রয়োজন। টাওয়ারটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়াও টাওয়ার ভবনটির নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কিত উন্নয়ন প্রয়োজন।
    লন্ডনের গর্বের প্রতীকরূপে ১৮৫৮ সালে বিগ বেনকে স্থাপন করা হয়। একে এলিজাবেথ টাওয়ারও বলা হয়। এটি যুক্তরাজ্যের ঐতিহ্যের প্রতীক বহন করছে। বিগ বেনের টাওয়ারে ৩৩৪টি সিঁড়ি রয়েছে। রয়েছে লিফট। ৩১৫ ফুট উচ্চতার এই টাওয়ার বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান। লন্ডন সফরে গিয়ে কেউ বিগ বেন দেখেননি- এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

    মসজিদে হারামের দুর্ঘটনা : আল্লাহ! আমাদের ক্ষমা করুন

    গত ১১ সেপ্টেম্বর মসজিদে হারামে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেল। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবরে এ দুর্ঘটনায় ১০৭ জন নিহত ও ২৩৮ জন আহত হয়েছেন। যারা মারা গেছেন আল্লাহ তাদের শাহাদাতের মাকাম দান করুন এবং মাগফিরাত নসীব করুন। আর যারা আহত হয়েছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁদের পূর্ণ সুস্থতা দান করুন। সকলের পরিবার-পরিজনকে সবরে জামীলের তাওফীক নসীব করুন। আর আমাদের সকলকে এই ঘটনা থেকে সঠিক শিক্ষা গ্রহণের তাওফীক দান করুন।

    এই ঘটনা এবং এ ধরনের ঘটনা নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক তবে এর চেয়েও বড় কথা হচ্ছে, এগুলো আমাদের জন্য অনেক বড় হুঁশিয়ারী। হায়! আমরা যদি তা উপলব্ধি করতে পারতাম।

    মসজিদে হারামে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার এক মূল্যায়ন হচ্ছে, যারা হতাহত হয়েছেন তাদের দিক থেকে। আরেক মূল্যায়ন, আমরা যারা আপাত দৃষ্টিতে এ থেকে মুক্ত রয়েছি তাদের দিক থেকে।

    যারা হতাহত হয়েছেন তাদের বিষয়ে আমরা আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের প্রত্যাশা করি। কারণ কুরআন মাজীদের ইরশাদ-

    (তরজমা) “… এবং কেউ আল্লাহ ও রাসূলের উদ্দেশ্যে নিজ গৃহ থেকে মুহাজির হয়ে বের হলে এবং তার মৃত্যু ঘটলে তার পুরস্কারের ভার আল্লাহর উপর। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” -সূরা নিসা (৪) :১০০

    আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি আরাফার ময়দানে উকুফরত ছিলেন। হঠাৎ সওয়ারী থেকে পড়ে তার ঘাড় ভেঙ্গে গেল। (এতে তিনি মৃত্যু বরণ করলেন) তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

    اغسلوه بماء وسدر، وكفنوه في ثوبين، ولا تمسوه طيبا، ولا تخمروا رأسه، ولا تحنطوه، فإن الله يبعثه يوم القيامة ملبيا.

    “তাকে পানি ও বড়ই পাতা দিয়ে গোসল দাও এবং দুই কাপড়ে কাফন দাও। ওকে সুগন্ধী দিও না, মাথা ঢেকো না। কারণ কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় ওঠাবেন।”  -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৮৫০

    আর আমাদের জন্য এ ঘটনার প্রথম শিক্ষা হচ্ছে, মৃত্যুর স্মরণ। যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় যে কারো মৃত্যু হতে পারে। সুতরাং মৃত্যুকে দূরে মনে করে গাফিল থাকার অবকাশ নেই। কুরআন মাজীদের ইরশাদ-

    أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِكْكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوجٍ مُشَيَّدَةٍ

    “তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই। এমনকি সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও।” -সূরা নিসা (৪) :৭৮

    দ্বিতীয় শিক্ষা, তাওবা-ইস্তিগফার ও আল্লাহর দিকে রুজু করা। কুরআন মাজীদের ইরশাদ-

    وَمَا أَرْسَلْنَا فِي قَرْيَةٍ مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا أَخَذْنَا أَهْلَهَا بِالْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ لَعَلَّهُمْ يَضَّرَّعُونَ

    “আমি যে-কোনও জনপদে নবী পাঠিয়েছি, তার অধিবাসীদের অবশ্যই অর্থ-সংকট ও দুঃখ-কষ্টে আক্রান্ত করেছি, যাতে তারা বিনয় অবলম্বন করে” -সূরা আরাফ (৭) : ৯৪

    এসকল ঘটনায় সতর্ক না হওয়া এবং আল্লাহর দিকে রুজু না করা হচ্ছে ঐ নিন্দিত বৈশিষ্ট্য, কুরআন মাজীদে যাকে ‘হৃদয়ের কাঠিন্য’ ও ‘শয়তানের মন্ত্রণা-প্রসূত’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে-

    فَلَوْلَا إِذْ جَاءَهُمْ بَأْسُنَا تَضَرَّعُوا وَلَكِنْ قَسَتْ قُلُوبُهُمْ وَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ

    “অতপর যখন তাদের কাছে আমার পক্ষ হতে সংকট এল তখন তারা কেন নম্রতা ও রোনাযারী অবলম্বন করল না। বরং তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেল এবং তারা যা করছিল শয়তান তাদের বোঝাল যে, সেটাই উত্তম কাজ।” -সূরা আনআম (৬) : ৪৩

    এই ঘটনার পর একশ্রেণির ‘অসুস্থ’ মানুষের পক্ষ হতে যেসকল বিভ্রান্তিকর কথা আসছে, তা এই নিন্দিত প্রবণতার মধ্যেই পড়ে। যেমন, মসজিদে হারাম তো নিরাপদ জায়গা, এখানে এ দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল? যখন প্রয়োজন তাওবা-ইস্তিগফার এবং আপন কর্ম ও বিশ্বাসের মুহাসাবা ঐ সময় এজাতীয় তর্কে জড়িয়ে পড়া শয়তানের ওয়াসওয়াসা ছাড়া আর কিছুই না। এভাবে সময়ের মূল করণীয় থেকে শয়তান মানুষকে বিভ্রান্ত করে।

    অথচ কুরআন-সুন্নাহর সাধারণ ধারণাও যার রয়েছে তার পক্ষেও এই সময় এধরনের অসার প্রশ্ন অতি পীড়াদায়ক হওয়ার কথা। অবশ্যই কা‘বা ও মসজিদে হারাম নিরাপদ স্থান। কিন্তু এর অর্থ মোটেও এই নয় যে, কোনো রকমের ব্যতিক্রমি ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্ঘটনাও ওখানে ঘটবে না। এমন কথা তো কুরআন-সুন্নাহর কোথাও বলা হয়নি। বহুবার কা‘বা ও মসজিদে হারাম বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়েছে,পানির ঢলে, অগ্নিকাণ্ডে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন সময় নাফরমান লোকেরা এই স্থানের নিরাপত্তার বিধান লঙ্ঘন করে এখানে রক্তপাত ঘটিয়েছে। আর এ ধরনের ঘটনা ইসলাম-পূর্ব যুগেও ঘটেছে, ইসলাম-পরবর্তী যুগেও ঘটেছে, কিন্তু কুরআন নাযিলের যুগের কোনো কাফেরও কুরআনের এই ঘোষণাকে ঐসকল ঘটনার সাথে সাংঘর্ষিক মনে করেনি। অথচ সাংঘর্ষিক যদি হত তাহলে খুব সহজেই তারা একে কুরআনের বিরুদ্ধে, আল্লাহর রাসূলের বিরুদ্ধে দলীল হিসেবে ব্যবহার করত।

    এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা অন্য ফুরসতে করা যাবে, আপাতত আমাদের নিবেদন শুধু এইটুকু যে, এই হৃদয়বিদারক ঘটনার সময় এজাতীয় কূটতর্কের অবতারণা- হয় জাহালত-অজ্ঞতা, না হয় ইলহাদ ও মুনাফিকি। এই সময় আল্লাহর দিকে রুজু না করে এজাতীয় অসার তর্কে লিপ্ত হওয়াও এক প্রকারের আযাব। যারা হতাহত হয়েছেন তাদের সম্পর্কে তো আমরা মাগফিরাতের প্রত্যাশা করি। কিন্তু যারা এই ঘটনাকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উপায় বানায় তাদের ব্যাপারে কঠিন শাস্তির আশঙ্কা করি। আল্লাহ তাদের হেদায়েত দান করুন।

    তৃতীয় শিক্ষা এই যে, মুসলিম উম্মাহর ধর্মীয় কেন্দ্রে এই দুর্ঘটনা উম্মাহর জন্য অনেক বড় হুঁশিয়ারি। মুসলিমমাত্রই এই দুর্ঘনার দ্বারা আক্রান্ত। সুতরাং প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য, এই ঘটনার বার্তা উপলব্ধি করা এবং কুরআন-সুন্নাহর প্রকৃত অনুসারী হওয়া, বিশেষত হজ্ব-ওমরার সফরকে ছোট-বড় সব রকমের নাফরমানী থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করা।

    এছাড়া এ ঘটনায় অনেক ইতিবাচক বিষয়ও রয়েছে। এত বড় দুর্ঘটনার পরও যেভাবে জুমায়, জামাতে মসজিদে হারাম কানায় কানায় পূর্ণ ছিল তা এক অপূর্ব বিষয়। এভাবেই যুগে যুগে বহু রক্তক্ষয়ী দুর্ঘটনার পরও কা‘বা ও মসজিদে হারাম অভিমুখে মুমিনের মিছিল এক লমহার জন্যও  বন্ধ হয়নি। নিঃসন্দেহে এ এক নযীরবিহীন বিষয়।

    দ্বিতীয় ব্যাপার হচ্ছে, মক্কা-মদীনার খিদমতে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের আন্তরিকতা। এর দ্বারা হয়তো স্বজন-আপনজনের ক্ষত একেবারে শুকিয়ে যাবে না, কিন্তু একটি শীতল প্রলেপ তো অবশ্যই পড়বে। দুর্ঘটনা বিভিন্ন জায়গায় ঘটছে, বিভিন্নভাবে ঘটছে, কিন্তু এই সেবা ও আন্তরিকতার নযীরও এই সময়ে খুব বেশি দেখা যায় না।

    শেষ কথা এই যে, আল্লাহ আমাদের অভিভাবক, তাঁরই ইচ্ছায় সব ঘটে। তিনি আমাদের বিভিন্নভাবে সতর্ক করেন, যেন আমরা মৃত্যুর আগেই তাঁর দিকে রুজু করি। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন।