• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • নতুন সম্রাটের জীবন বৃত্তান্ত

    সম্রাট নারুহিতো, এমেরিটাস সম্রাটের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন এবং উত্তরাধিকার সূত্রে পিতার আশা আকাঙ্খাগুলোও পেয়েছেন।

    ১৯৬০ সালে ২৩শে ফেব্রুয়ারি সম্রাটের জন্ম হয়। এমেরিটাস সম্রাট এবং এমেরিটাস সম্রাজ্ঞীর জ্যেষ্ঠ পুত্র হন তিনি।

    ঐতিহ্যগতভাবে রাজপরিবারে শিশুরা বাবা-মার কাছ থেকে পৃথক ভাবে বেড়ে ওঠার রীতি থাকলেও তিনি হলেন প্রথম সন্তান যিনি বাবা-মার সাথে থেকে বড় হন।

    বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা শেষ করার পর তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যুক্তরাজ্যে যান।জাপানেও তিনি রাজপরিবারের প্রথম একজন সদস্য হিসাবে গ্রাজুয়েট স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন।

    ৩১ তম জন্মদিনে তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে যুবরাজ হিসাবে ঘোষিত হন। ১৯৯৩ সালে, মাসাকো ওয়াদার সাথে তাঁর বাগদান হয় এবং সেই একই বছর জুন মাসে তাঁদের বিবাহ হয়েছিল।

    আট বছর পর তাঁদের এক কন্যা সন্তান হয়, যাঁর নাম হল রাজকুমারী আইকো। সেই সময় সম্রাটের বয়স ছিল ৪১ বছর।

    এর পর থেকে তাঁরা তাঁদের পরিবার নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। সম্রাজ্ঞী মাসাকো দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং সেই সময় সম্রাট নারুহিতো তাঁকে সাহায্য করেন।

    নিজের দায়িত্বের বিষয়, সম্রাট তাঁর পিতার পথ অনুসরণ করার আগ্রহ দেখিয়ে এসেছেন।

    হিরোশিমা, নাগাসাকি এবং ওকিনাওয়ার মত দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো তিনি বারংবার সফর করেছেন। যুদ্ধের সেই ইতিহাসকে সম্মুখীন করে তিনি শান্তির প্রার্থনা জানিয়েছেন।

    পিতার মত তিনিও দুর্যোগের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। জাপানের প্রধান ভূমিকম্প আক্রান্ত এলাকাগুলোতে তিনি এবং সম্রাজ্ঞী জরুরী আশ্রয়স্থানগুলো পরিদর্শনে যান। সম্রাট নারুহিতো সিংহাসনে বসায় জাপানের কাছে এখন একই সাথে সম্রাট এবং এমেরিটাস সম্রাট রয়েছে যা আধুনিক ইতিহাসে প্রথম এক দৃষ্টান্ত। রাষ্ট্রের দুইজন প্রতীক রয়েছে মনে হতে পারে বলে কয়েকজন এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

    তবে রাজপরিবার সম্পর্কিত এজেন্সী জানিয়েছে যে এই ধরনের কোন সম্ভাবনা নেই কেননা রাষ্ট্রের প্রতীক হিসাবে আনুষ্ঠানিক সবকটি দায়িত্ব পালন করবেন সম্রাট।

    বর্তমানে সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকার হলেন সম্রাটের কনিষ্ঠ ভাই যুবরাজ আকিশিনো। এখন থেকে যুবরাজের অনেক দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।

    জনগণের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রেখেছেন নতুন সম্রাট

    জাপানি ইতিহাসের নতুন যুগের আজ প্রথম দিন নানা উদযাপন ও আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হচ্ছে। সম্রাট নারুহিতো বুধবার প্রথম প্রহরেই সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং এর মধ্য দিয়ে রেইওয়া নামের নতুন এক যুগের সূচনা হয়।

    সিংহাসনে আরোহণ উপলক্ষে সম্রাট এরই মধ্যে দু’টো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।

    এর মধ্যে প্রথমটি ছিল সেই অনুষ্ঠান যেখানে সম্রাট তার পিতার কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে যে সাম্রাজ্যের প্রতীক লাভ করেছেন তা প্রদর্শন করা হয়। মঙ্গলবার তার পিতা সিংহাসন ত্যাগ করেন। পবিত্র এই তলোয়ার ও রত্ন শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে সম্রাটের মর্যাদার প্রমাণ হিসেবে হাতবদল হয়ে আসছে।

    এর প্রায় ৩০ মিনিট পর সম্রাট নারুহিতো জনগণের প্রতিনিধিগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাদের মধ্যে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী, সংসদের উভয় কক্ষের প্রধান, সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি এবং স্থানীয় সরকারের নেতৃবৃন্দ।

    এসময় সম্রাট সিংহাসনে আরোহণের পর প্রথমবারের মত তার বক্তব্য রাখেন।

    সম্রাট বলেন, তিনি জাপানের সংবিধান এবং রাজপরিবার সম্পর্কিত আইনের অন্তর্গত বিশেষ পদক্ষেপ আইন অনুযায়ী সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।
    যখন তিনি চিন্তা করেন যে তার উপর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে তখন তিনি তার মধ্যে একধরনের গাম্ভীর্য অনুভব করেন।

    পেছনে ফিরে তাকালে, এমেরিটাস সম্রাট সিংহাসনে আরোহণের পর থেকে ৩০ বছর ধরে বিশ্ব শান্তি ও জনগণের সুখ প্রার্থনা করে তার উপর অর্পিত প্রতিটি দায়িত্ব আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করেছেন এবং সবসময় জনগণের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিয়েছেন। তিনি তার আচরণের মাধ্যমে গভীর সহানুভূতি প্রদর্শন করেছেন। রাষ্ট্রের এবং জাপানের জনগণের একতার প্রতীক হিসেবে এমেরিটাস সম্রাট যে আচরণ প্রদর্শন করেছেন সেজন্য তিনি হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে তার প্রতি সম্মান জানান এবং তার মূল্যায়ন করেন।

    সিংহাসনে আরোহণ করে তিনি শপথ করেন, এমেরিটাস সম্রাট যে পথ অনুসরণ করেছেন তার কাজেও তা গভীর ছাপ রাখবে এবং পূর্ববর্তী সম্রাটেরা যে পথে চলেছেন তিনি তা স্মরণে রাখবেন এবং আত্মোন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করবেন। তিনি আরও শপথ করেন যে সংবিধান অনুযায়ী তিনি কাজ করবেন এবং রাষ্ট্র ও জাপানের জনগণের একতার প্রতীক হিসেবে তার দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকবেন। জনগণের জন্য সবসময় তার চিন্তা থাকবে এবং তিনি তাদের পাশে দাঁড়াবেন।

    জনগণের সুখ এবং দেশের আরও উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্বশান্তির জন্য তিনি আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করেন।

    প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে জনগণের পক্ষ থেকে নতুন সম্রাটকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।

    আবে বলেন, সবাই সম্রাটকে রাষ্ট্র এবং জনগণের একতার প্রতীক হিসেবে সম্মান করে। বর্তমানের দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে তার সরকার জাপানের একটি গৌরবময় ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে বদ্ধ পরিকর…দেশটি শান্তিপূর্ণ, প্রত্যাশায় ভরা এবং এমন এক স্থান যার জন্য সবাই গর্ব বোধ করতে পারে। তার সরকার এমন একটি যুগ তৈরি করতে সংকল্পবদ্ধ যেখানে জনগণের হৃদয়ের মিলন ঘটবে এবং তারা তাদের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাবে। জনগণ আন্তরিকভাবে প্রত্যাশা করে যে রেইওয়া যুগ শান্তিপূর্ণ হবে এবং রাজকীয় পরিবারের আরও সমৃদ্ধি ঘটবে।

    সম্রাট নারুহিতোর বয়স ৫৯ বছর। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জন্মগ্রহণকারী প্রথম সম্রাট।

    দু’শো বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এবারই প্রথমবার একজন জীবিত সম্রাটের কাছে থেকে সিংহাসনে আরোহনের ঘটনা ঘটল।

    এছাড়া, প্রথমবারের মত জাপানের আধুনিক ইতিহাসে একজন নতুন সম্রাট এবং একজন সিংহাসন ত্যাগকারী সম্রাট রয়েছেন।