• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • আজ জাপানের সম্রাট নারুহিতোর অভিষেক অনুষ্ঠিত

    মক্কায় বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ঝুলন্ত মসজিদের নির্মাণ চলছে 

    সউদী আরবের পবিত্র নগরী মক্কা মুকাররমায় নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ঝুলন্ত মসজিদ। ইতিমধ্যেই ১৬১ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন এই মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
    গতকাল শনিবার (১২ অক্টোবর) মক্কা-রিয়েল এস্টেট বোর্ডের পরিচালক আনাস সালেহ সাইরাফি এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের জানান, পবিত্র হারাম শরিফের সন্নিকটে নির্মাণাধীন ঝুলন্ত এই মসজিদের উচ্চতা ১৬১ মিটার। স্থাপনাটি এমনভাবে নির্মাণ করা হবে- যেখানে দাঁড়িয়ে সরাসরি হারাম শরিফে অনুষ্ঠিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জামাতের দৃশ্য সরাসরি প্রত্যক্ষ করা যাবে এবং হারাম শরিফের সঙ্গে এখানে ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেমরও ব্যবস্থা করা হবে।
    আনাস সালেহ সাইরাফি আরও জানান, ঝুলন্ত মসজিদটির আয়তন হবে ৪০০ বর্গমিটার। যেখানে অনায়াসে দুই শতাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।

    তাইফুন হাগিবিসের কারণে জাপানের কৃষি খাতে এপর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ ৫ হাজার ৭শ কোটি ইয়েন

    জাপান সরকার বলছে, তাইফুন হাগিবিসের কারণে দেশের কৃষি, বনাঞ্চল এবং মৎস্য শিল্প খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৫ হাজার ৭শ কোটি ইয়েন বা প্রায় ৫২ কোটি ৭০ লক্ষ ডলারে পৌঁছেছে।

    কৃষি, বন এবং মৎস্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত, গতকাল দুপুর পর্যন্ত জাপানের ৩৫টি জেলা থেকে পাঠানো ক্ষয়ক্ষতির হিসেবের উপর ভিত্তি করে এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।

    গুদাম এবং নালার মত কৃষি স্থাপনাগুলোর ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২২ কোটি ৪০ লক্ষ ডলার। এছাড়া, চাল, আপেল এবং অন্যান্য কৃষিজাত পণ্যের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৭০ লক্ষ ডলার।

    ভূমিধ্বসে ধ্বংস হওয়া বনের রাস্তা সংশ্লিষ্ট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার।

    তবে, তাইফুনের কারণে নদীর প্লাবনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কিছু জেলার হিসাব এখনও জানা যায়নি।

    মন্ত্রণালয় বলছে, চিকুমা নদীর পানি দু’তীর উপচে প্রবাহিত হয়ে প্লাবিত হওয়ায় নাগানোতে তাইফুনের কারণে আপেল বাগান এবং ধান ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে।

    এছাড়া, ইবারাকি জেলায় নাকা নদীর অদূরে থাকা ধানক্ষেতগুলোও বড় ধরণের ক্ষতির শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে।

    অন্যদিকে, হাগিবিসের প্রভাবে ফুকুশিমা জেলায় আবুকুমা নদীর দু’কুল উপচে পড়ার আগে এর আশেপাশের জমির প্রায় অর্ধেকের মত ফসল সংগ্রহ করতে পেরেছে স্থানীয় ধান চাষিরা।

    সেকারণে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

    মহাশূন্যে নারী নভোচারী দলের প্রথম পদচারণা

    স্পেসওয়াক বা মহাশুন্যে পদচারণায় প্রথম ‘নারী দল’ পাঠিয়ে ইতিহাস গড়ল যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। শুক্রবার ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের (আইএসএস) পাওয়ার নেটওয়ার্কের একটি ভাঙা অংশ ঠিক করেন তারা। প্রথমবারের মতো পুরুষ ক্রুমেট ছাড়া আইএসএসের বাইরে পা রাখলেন নারী মহাকাশচারীরা। এর আগে কোনো নারী মহাকাশচারী স্পেসওয়াকে গেলেও সঙ্গে ছিলেন পুরুষ সহকর্মী। সর্বশেষ ইতিহাস গড়া এই দুই নারী হচ্ছেন ক্রিস্টিনা কোচ ও জেসিকা মীর।

    ইস্টার্ন স্ট্যান্ডার্ড টাইম অনুযায়ী শুক্রবার সকাল সাতটা ৩৮ মিনিটে এই ইতিহাস সৃষ্টি হয় বলে নাসা জানায়। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ক্রিস্টিনা প্রথমে আইএসএসের বাইরে পা রাখেন। এর কিছুক্ষণ পরই পা বাড়ান তার ক্রুমেট জেসিকা। উল্লেখ্য, এর আগে মহাকাশে হাঁটা যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী হলেন ক্যাথরিন সুলিভ্যান। ৩৫ বছর আগে মহাকাশে পা রাখা সুলিভ্যান এই ঘটনায় খুবই আনন্দিত। তিনি বলেন, মহাকাশচারীদের মধ্যে মহাকাশে হাঁটার মতো যথেষ্ট প্রশিক্ষিত নারী আছে জেনে আমার খুবই ভালো লাগছে।

    নাসার শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারাসহ সারা বিশ্বের অসংখ্য নারী ও পুরুষ এই দুই মহাকাশচারীকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন তাদের অনেকেই ভবিষ্যতে নারীদেরকে মহাকাশে পাঠানোর বিষয়টি ধারাবাহিক হবে বলে আশা করছেন।

    জানা গেছে, শুক্রবারের স্পেসওয়াকের অভিযানে দুই নভোচারী ৬ ঘণ্টা অবস্থান করেন। এই সময়ের মধ্যে তারা বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক পাল্টান। ফেরার সময় তারা অকেজো হয়ে পড়া যন্ত্রটি নিয়ে আসেন। এই প্রোগ্রাম সরাসরি সমপ্রচার করে নাসা। প্রায় ৬১ জন ক্রু তাদের এই মহাকাশে পাড়ি দেয়ার বিষয়টি দেখভাল করেন। নাসা জানায় এটি তাদের ২০২৪ সাল নাগাদ চাঁদে মানুষ পাঠানো এবং নারীদের এ ক্ষেত্রে আরও উত্সাহিত করার পদক্ষেপ।

    ট্রাম্পের অভিনন্দন: এদিকে, স্পেসওয়াকে প্রথমবার নারীদল পাঠিয়ে ইতিহাস সৃষ্টির ঘটনায় ওই দুই মহাকাশচারীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সরাসরি ফোনে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় ট্রাম্প বলেন, ‘তোমরা মনোবল হারিও না। গোটা বিশ্ব তোমাদের দেখছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো নারী স্পেসওয়াকে যাচ্ছে।’ তবে তাদের মধ্যে একজন কথা বলার সুযোগ পেয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য সংশোধন করে বলেন, ‘এর আগেও একজন মার্কিন নারী স্পেসওয়াক করেছেন। এবার তফাত্ হলো কোনো পুরুষ ছাড়াই আমরা দু’জন নারী স্পেসওয়াকে যাচ্ছি।’

    জাপানের রাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কান্ডারী ১৩ বছরের কিশোর!

    বর্তমানে ১৩ বছরের কিশোর হিসাহিতোর ওপরই জাপানের রাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। জাপানের প্রথা অনুযায়ী, কেবল রাজপরিবারের পুরুষ সদস্যরাই সিংহাসনে বসার অধিকারী হন।

    ১৯৬৫ সালের পর থেকে জাপানের রাজবংশে কোনো ছেলে জন্মায়নি। জাপানের বর্তমান সম্রাট নারুহিতোর বিয়ের আট বছর তার স্ত্রীর কন্যাসন্তান জন্ম দেন।
    এতে রক্ষণশীলদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল, কীভাবে দেশের প্রাচীন প্রথা রক্ষা করা যাবে। আর প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেও চান না এই নিয়ম বদলে যাক।
    চলতি বছরই জাপানের সম্রাট হয়েছেন প্রিন্স নারুহিতো। তার বয়স ৫৯। নারুহিতোর বাবা সম্রাট আকিহিতো সিংহাসন ত্যাগ করার পর গত ১ মে তিনি সম্রাট হন। আগামী ২২ অক্টোবর তিনি আন্তর্জাতিক মহলের কাছে সম্রাট হওয়ার কথা ঘোষণা করবেন।

    এরপর তারই ভাতিজা কনিষ্ঠতম রাজকুমার হিসাহিতো সম্রাট হবেন। গত আগস্টে গিয়েছিল ভুটান সফরে। ওই সফর হবু সম্রাটকে আন্তর্জাতিক মহলে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই।

    এছাড়া সম্রাট হওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে হিসাহিতো জাপানি ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘হাকামা’ কিমানো পরা অভ্যাস করছে। শিখছে তীর ছুঁড়ে লক্ষ্যভেদ করাও।

    পুরানো প্রথা অনুযায়ী, নারুহিতোর ভাই আকিশিনোর ছেলে হিসাহিতো জাপানের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী। জাপানের বিখ্যাত সংবাদপত্র ‘আসাহি’তেও সম্প্রতি লেখা হয়েছে, রাজবংশের প্রথা অনুযায়ী, প্রিন্স হিসাহিতোই আগামী দিনে হবেন সম্রাট। সূত্র- রয়টার্স

    বাড়ী পরিষ্কার করার সময় সতর্কতা অবলম্বনের বিষয়াদি

    বাড়ী পরিষ্কার করার সময় সতর্কতা অবলম্বনের বিষয়াদি

    টাইফুন হাগিবিসের বয়ে নিয়ে আসা প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে নদীর পানি প্লাবিত হয়ে সমগ্র জাপানের বিপুল সংখ্যক বাড়িঘর পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে। আজকের প্রতিবেদনে আমরা, বাড়ির পানি সরাতে এবং বাড়িঘর পরিষ্কার করার সময় সতর্কতা অবলম্বনের বিষয়াদির উপর আলোকপাত করব।

    প্রথমত, সুরক্ষামুলক পোশাক পরিধানের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এসময় বাতাসে বিভিন্ন ধরণের জীবাণু থাকার সম্ভাবনা থাকায় জীবাণুগুলোকে মাথার চুল থেকে দূরে রাখতে মাথায় একটি টুপি দেয়া উচিত হবে। চোখের সুরক্ষার জন্য রোদ চশমা বা সাধারণ চশমা প্রয়োজনীয়। মুখোশ দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে রাখতে হবে। দেহের ত্বকের কোনও অংশই যাতে বাইরে না থাকে সেজন্য, লম্বা হাতার জামা, ফুল প্যান্ট, রাবারের গ্লাভসের নীচে কাজ করার সময় ব্যবহৃত হাতমোজা এবং বুট পরিধান করতে হবে। কাদার মধ্যে বিষাক্ত পানি, কৃষি কাজে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান বা তেল মিশ্রিত থাকার সম্ভাবনায় থাকায় অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

    পরিষ্কারের কাজ করার সময় প্রথমে কোদাল দিয়ে কাদা সরিয়ে পানি দিয়ে সব ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর, পানি পুরোপুরি শুকানোর পর জীবাণুমুক্ত করণের কাজ করতে হবে।

    বেনযাল্কোনিয়াম ক্লোরাইড নামে অভিহিত একটি রাসায়নিক পদার্থ বাড়ির আসবাবপত্র এবং মেঝেতে ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রথমে নির্দেশনা অনুযায়ী রাসায়নিকটিকে পানিতে মিশিয়ে পাতলা করে এক টুকরো কাপড় ভিজিয়ে সবকিছু মুছে ফেলুন। খাবারের টেবিলের সরঞ্জামাদির মত জিনিষপত্রে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট ব্যবহার করা যেতে পারে। খাবারের টেবিলের সরঞ্জামাদি উক্ত রাসায়নিকের দ্রবণে ডুবিয়ে রাখার পর ধুয়ে ফেলুন।

    উভয় ধরণের রাসায়নিকগুলো যেকোনো হার্ডওয়ার বা ড্রাগ স্টোরে কিনতে পাওয়া যায়। এগুলো খুব শক্তিশালী রাসায়নিক হওয়ায় এগুলো ব্যবহারের সময় অবশ্যই মুখোশ, চশমা এবং রাবারের গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে।

    জাপান চাঁদের কক্ষপথের মহাশূন্য কেন্দ্র প্রকল্পে অংশগ্রহণ করবে

    জাপানে জানিয়েছে যে, তারা চাঁদের চারিদিকের এক কক্ষপথে একটি মহাশূন্য স্টেশন স্থাপনের যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এক প্রকল্পে অংশ নেবে।

    সরকার শুক্রবার জাতীয় মহাশূন্য নীতিমালা সংক্রান্ত কৌশলগত সদরদপ্তরে আয়োজিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে এবং মন্ত্রিপরিষদের মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

    তারা একমত হন যে, জাপানের এই অংশগ্রহণ মহাশূন্যের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিকে সম্প্রসারিত করে জাপান-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতায় অবদান রাখবে।

    জাপানে শিশু আত্মহত্যার হার ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

    জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে এ বছর মার্চ মাস পর্যন্ত ৩শো ৩২ জন স্কুল শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। ১৯৮৮ সালে এ সংক্রান্ত রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে এই সংখ্যাটি হচ্ছে সর্বোচ্চ।

    মন্ত্রণালয় সারা জাপানের প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে জরিপ চালায়। আত্মহত্যার সংখ্যা পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে ৮২টি বৃদ্ধি পেয়েছে।

    আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২শো ২৭ জন হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ১শো জন নিম্ন মাধ্যমিকের এবং ৫টি শিশু প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী।

    জাপানে মার্চ মাস পর্যন্ত আত্মহত্যার মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ হাজারে। এটি রেকর্ড সংখ্যার চেয়ে ৪০ শতাংশ কম এবং শিশু আত্মহত্যার সংখ্যা বৃদ্ধির বিপরীত।

    জরিপের ফলাফল অনুযায়ী ১শো ৯৪টি শিশুর আত্মহত্যা বা মোট সংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশের ক্ষেত্রে আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি।

    ঘূর্ণিঝড় : জাপানে রাজকীয় প্যারেড স্থগিত

     

    জাপানে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে প্রায় ৮০ জন নিহত হওয়ার পর দেশটির নতুন সম্রাটের সিংহাসন আরোহণ পালনের প্রধান রাজকীয় (ইমপেরিয়াল) প্যারেড স্থগিত করেছে টোকিও। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম একথা জানায়। খবর এএফপির।

     জাপানের জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্র এনএইচকে জানায়, সম্রাট নারুহিতোর সিংহাসন আরোহণ উপলক্ষে ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের মধ্যে আগামী ২২ অক্টোবর এ প্যারেড অনুষ্ঠিত হতো। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে হতাহতের কারণে প্যারেড স্থগিত করা হয়েছে।

    প্রসঙ্গত, জাপানে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হাগিবিসের আঘাতে কমপক্ষে ৮০ জন নিহত হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরো অনেকে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হাগিবিস ঝড়কে গত ৬০ বছরে জাপানের সবচেয়ে ভয়াবহ বলে মনে করা হচ্ছে। ঝড়ের জেরে ভূমিধস ও নদীতে জলোচ্ছ্বাস হয়েছে।

    হাগিবিসের পরের করণীয় ও নিষেধাজ্ঞা

    হাগিবিসের পরের করণীয় ও নিষেধাজ্ঞা

    সামুদ্রিক ঝড় তাইফুন হাগিবিসের নিয়ে আসা মুষল বর্ষণ জাপানের পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল জুড়ে নদীগুলোতে যথেষ্ট সংখ্যক বাড়িঘর তলিয়ে দেয়ার মত বন্যা নিয়ে আসার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের নতুন ধারাবাহিক “হাগিবিসের পরের করণীয় ও নিষেধাজ্ঞা”য় বন্যার পানি নিয়ে কি করতে নেই সেই তথ্য আমরা আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেব।

    শুরুতে এবং সর্বাগ্রে বলতে হয় বাড়ির চারপাশে জমা হওয়া বন্যার পানির উপর দিয়ে কখনও হেঁটে যাবেন না। কেননা কর্দমাক্ত পানিতে চোখের আড়ালে থেকে যাওয়া ঢাকনা নেই সেরকম কোন ম্যানহোল, নালা, উঁচু নিচু ফসলের মাঠ কিংবা অন্য কোন সম্ভাব্য বিপজ্জনক জায়গায় আপনার পা হয়তো পড়তে পারে কিংবা আপনি পড়ে যেতে পারেন। এছাড়া গাছ ও কাচের মত ভেসে আসা কোন বস্তুর আঘাত আপনার উপর এসে পড়তে পারে। এমন কি পয় নিষ্কাসনের পানি ম্যানহোলের ভেতরে আপনাকেও সেই সাথে শুষে নিতে পারে।

    সবশেষে বলতে হয় খোলা ত্বক নিয়ে কাদা কিংবা বন্যার পানি কখনও স্পর্শ করবেন না। পয় নিষ্কাসনের ময়লা ও জীবাণু এতে থেকে যেতে পারে, যা কিনা নিউমোনিয়ার মত অসুখের কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে এবং দেহের ক্ষতে পচন ধরাতে পারে।

    পশ্চিমে পাড়ি জমানোর আগে একটু ভাবুন : কুবরুস সফর : কিছু শিক্ষা

    হযরত মাওলানা মুফতি তকী উছমানী

    [বয়ান : ১০ যিলকদ ১৪৪০ হি. মোতাবেক ১৪ জুলাই ২০১৯ ঈ. রবিবার, সাপ্তাহিক ইছলাহী মজলিস- জামে মসজিদ, দারুল উলূম করাচী।]

    (পূর্ব প্রকাশিতের পর)

    কুবরুস দ্বীপে

    এরপর মাল্টা থেকে আমাদের সফর হয়েছে কুবরুস (সাইপ্রাস) দ্বীপে। এটা ইউরোপে অবস্থিত একটি বড় দ্বীপ।

    এর বিজয়ের সাথে জড়িয়ে আছে বড় বিস্ময়কর ইতিহাস এবং তা বড় শিক্ষণীয়ও বটে।

    ঘটনা হল, হযরত উসমান রা.-এর খেলাফতের যামানা ছিল। তৎকালীন শামের গভর্নর ছিলেন হযরত মুআবিয়া রা.। মুজাহিদ বাহিনীর প্রতি হযরত ওমর রা.-এর নির্দেশ ছিল- তোমরা এমন কোথাও অভিযানে যাবে  না যেখানে আমার এবং তোমাদের মাঝে সমুদ্র প্রতিবন্ধক হয়। কেননা সে সময় সমুদ্রযাত্রা খুবই খতরনাক ছিল। জাহাজগুলো পাল তুলে চলত। বাতাস সেগুলোকে ভাসিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যেত। তাই কখনো কখনো দেখা যেত, আপনি কোথাও যেতে চাচ্ছেন, আর কিশতি আপনাকে ভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। এখনকার মতো এত শক্তিশালী জাহাজ তো তখন আবিষ্কার হয়নি। তাই সমুদ্রে সেগুলো ডুবে যাওয়ারও শঙ্কা থাকত।

    তো হযরত ফারুকে আযম রা. চাইতেন, আমাদের মুজাহিদ বাহিনী যেন শঙ্কামুক্ত থাকে। তাই সাধারণভাবে তিনি মুজাহিদীনকে নৌ অভিযানে বের হতে নিষেধ করতেন।

    হযরত মুআবিয়া রা. শামের শাসক ছিলেন। যখন হযরত উসমান রা.-এর যামানা আসল তিনি হযরত উসমান রা. থেকে নৌ অভিযানের অনুমতি নিলেন।

    ঘটনার প্রেক্ষাপট হল, ওই সময় রোমকদের শাসন চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিল। যে কোনো সময় তারা মুসলমানদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আশঙ্কা ছিল। হযরত মুআবিয়া রা. ছিলেন অত্যন্ত অভিজ্ঞ ব্যক্তি। তিনি হযরত উসমান রা.-এর নিকট আবেদন করলেন যে, আপনি অনুমতি দিয়ে দিন, আমরা নৌ পথে কুবরুসে অভিযান চালাব। কেননা এই দ্বীপটি আমাদের ভূ-খ-ের নিকটে অবস্থিত। যেকোনো মুহূর্তে রোমকরা আমাদের উপর হামলা করে বসতে পারে।

    হযরত মুআবিয়া রা.-এর অনুমতি চাওয়ার পর হযরত উসমান রা. প্রথমে চিন্তা-ভাবনা করেছেন, চুপচাপ থেকেছেন; পরে অনুমতি দিয়েছেন।

     

    হাদীস শরীফে কুবরুস বিজয়ের প্রতি ইঙ্গিত

    এই অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি হাদীস কার্যকর ছিল- তাতে একটি সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। হাদীসটি হল, হযরত উম্মে হারাম রা. বড় সাহাবিয়া ছিলেন। হযরত আনাস রা.-এর খালা ছিলেন। হযরত  উবাদা ইবনে ছামেত রা. ছিলেন তার স্বামী। এবং স্বয়ং রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তার দুধসম্পর্ক ছিল। নবীজী মাঝে মাঝে হযরত উম্মে হারামের ঘরে যেতেন। মাঝে মাঝে সেখানে বিশ্রামও নিতেন। যেহেতু নবীজীর সাথে হযরত উম্মে হারাম রা.-এর দুধসম্পর্কের আত্মীয়তা ছিল সে হিসেবে তিনি নবীজীর মাহরাম ছিলেন।

    একদিন নবীজী তার ঘরে আগমন করলেন। কিছুক্ষণ বিশ্রাম করলেন। নবীজীর চোখ লেগে গেল। তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর নবীজী জেগে উঠলেন। চেহারা মোবারকে হাসির রেখা ফুটে ছিল। হাসতে হাসতে জেগে উঠলেন। হযরত উম্মে হারাম জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কী কারণে আপনি এভাবে হাসছেন? নবীজী বললেন, স্বপ্নে আমাকে দেখানো হয়েছে যে, আমার উম্মতের এক মুজাহিদ-কাফেলা সমুদ্রে এভাবে সফর করছে যেমন রাজা মসনদে বসে থাকে। অর্থাৎ এতটা ইতমিনান, নিশ্চিন্ত ও নির্বিঘœ ছিলেন তারা, যেভাবে নিশ্চিন্ত মনে বাদশাহ তার আসনে বসে থাকে। হযরত উম্মে হারাম রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি দুআ করে দিন, যাতে আমিও তাদের সাথে শামিল থাকতে পারি। নবীজী বললেন, তুমিও তাদের সাথে থাকবে।

    এ বলার পর নবীজীর চোখ আবার লেগে গেল। দ্বিতীয়বার জেগে ওঠার পরও নবীজীর চেহারায় হাসির আভা ছিল। এবারও উম্মে হারাম রা. জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কী জন্য হাসছেন? নবীজী সে-ই জবাব দিলেন, আমি আমার উম্মতের একটি জামাতকে দেখেছি তারা সমুদ্রে জিহাদের সফর করছে। তাদের অবস্থা এমন যেমন বাদশাহ সিংহাসনে বসে থাকে। হযরত উম্মে হারাম রা. এবারও বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! দুআ করে দিন, যাতে আমিও তাদের সাথে থাকতে পারি। নবীজী বললেন, তুমি প্রথম জামাতে শামিল থাকবে; দ্বিতীয় জামাতে নয়। (দ্র. সহীহ বুখারী, হাদীস ২৭৮৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯১২)

    এ রেওয়ায়েতে নবীজী কেবল নৌ অভিযানের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন; এমনটি নয়। তাদের জন্য সুসংবাদও দিয়েছেন। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার নিকট তারা মাকবুল এবং পছন্দনীয় বান্দা হবেন।

    তো হযরত মুআবিয়া রা. সর্বপ্রথম হযরত উসমান রা.-এর অনুমতিক্রমে নৌপথে অভিযান চালিয়ে কুবরুসে হামলা করেন। হযরত উবাদা ইবনে ছামেত রা. যিনি হযরত উম্মে হারামের স্বামী ছিলেন তিনি তাতে শরীক ছিলেন এবং হযরত উম্মে হারামও সেই কাফেলায় ছিলেন। এভাবে নবীজীর ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হল। তারা গিয়ে কুবরুসে হামলা করলেন এবং চতুর্দিক থেকে তা ঘেরাও করে তাদেরকে পরাজিত করলেন। এভাবে কুবরুস বিজিত হল।

    এটা ছিল সমুদ্র পথে ইউরোপ অভিমুখে মুসলমানদের সর্বপ্রথম অগ্রযাত্রা। কেননা কুবরুস হল ইউরোপের একটি দ্বীপ। আর তা হযরত উসমান রা.-এর খেলাফত আমলে হযরত মুআবিয়া রা.-এর নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছে।

    কুবরুস বিজিত হল। সেখানে উম্মে হারাম রা. যাওয়ার পথে অথবা ফেরার পথে, দুই ধরনের রেওয়ায়েতই পাওয়া যায়, সওয়ারির উপর ছিলেন, সওয়ারি তাকে ফেলে দেয়। এতে তার ঘাড় ভেঙ্গে যায় এবং সেখানেই তার ওফাত হয়ে যায়। লোকমুখে প্রসিদ্ধ আছে, আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন, কুবরুসে তার কবর রয়েছে। এছাড়া আরো ছয়জন সাহাবীর কবরও সেখানে রয়েছে। হয়ত সেই জিহাদে তারা শহীদ হয়ে থাকবেন।

    সেখানে যাওয়ার পর অন্যরকমের এক অনুভূতি আমাকে আচ্ছন্ন করে; সাহাবায়ে কেরাম কীভাবে এত দূর দূর সফর করে এখানে এসেছেন! এত এত কুরবানী করে কুবরুস জয় করেছেন! ওই যমানা হিসেবে এটা কত দূর এলাকা না! একদিকে বায়রুত, আরেকদিকে কুবরুস। সমুদ্রের এপার ওপার সামনাসামনি।

     

    হযরত অবুদ দারদা রা.-এর শঙ্কা প্রকাশ

    রেওয়ায়েতে পাওয়া যায়, মুজাহিদীনের এই কাফেলায় বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবুদ দারদা রা.-ও শামিল ছিলেন। তিনি অত্যন্ত উঁচু তবকার সাহাবী ছিলেন।

    তাঁর সম্পর্কে বর্ণনায় পাওয়া যায়, যখন মুসলমানদের হাতে কুবরুস বিজিত হল এবং দুশমনরা সব অবদমিত হল, বিজয়ের সংবাদ পাওয়ার পর তিনি কাঁদতে আরম্ভ করলেন। সবাই জিজ্ঞাসা করল, হযরত! এটা তো আনন্দের মুহূর্ত, আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে নুছরত করেছেন। বিজয় দান করেছেন। আল্লাহর এই যমিনে ইসলামের কালিমা বুলন্দ করার তাওফীক দান করেছেন। এই মুহূর্তে তো কান্নার কোনো উপলক্ষ দেখা যাচ্ছে না। আপনি কাঁদছেন কী জন্য? তখন হযরত আবুদ দারদা রা. বড় তাৎপর্যপূর্ণ যে জবাব দিয়েছেন- সেটাই শুনাতে চাচ্ছি।

    তিনি বললেন, আমি চিন্তা করছি, এই সমস্ত লোক, যারা কুবরুসের শাসক ছিল, এরা অত্যন্ত প্রতাপ ও শৌর্যবীর্যের অধিকারী ছিল। এদের শক্তি ও দাপটের ডংকা গোটা দুনিয়াজুড়ে বাজছিল। বিত্ত-বৈভব এবং উপায়-উপকরণ সবকিছু তাদের করায়ত্ত ছিল। পৃথিবীর ক্ষমতাধর পরাশক্তি হিসেবে তারা বিবেচিত হত। কিন্তু এরাই যখন আল্লাহর অবাধ্যতায় কোমর বাঁধল, আল্লাহ তাআলার আহকাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে কুফুরিতে লিপ্ত হল এবং আল্লাহ তাআলার নাফরমানী করে ফিসক-ফুজূর ও পাপাচার-অনাচারে ডুবে রইল তো আল্লাহ তাআলা তাদের উপর আমাদেরকে চাপিয়ে দিয়েছেন। তাদের সকল শক্তি ও দাপট এবং ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি চূর্র্ণ করে দিয়েছেন। তাদের ত্রাস দূর হতে চলেছে। এখন আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাদের  উপর ক্ষমতা দিয়েছেন। ফলে এখন আমরা তাদের হাকিম ও শাসক। তো আমি এজন্য কাঁদছি যে, আজ তো আমরা বিজয়ী হয়েছি কিন্তু কাল যেন আমাদের এ হাল না হয় যে, আমরা আল্লাহ তাআলার নাফরমানী করতে থাকছি। আমাদের সমাজে আল্লাহ তাআলার নাফরমানীর সংস্কৃতি চালু হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ তাআলার আহকাম থেকে আমরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছি। তো আমি আশঙ্কা করছি, আমাদের আজ যে বিজয় ও নুছরত আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে হাছিল হয়েছে ফের না তা পরাজয়ে পরিবর্তিত হয়ে যায়! (দ্রষ্টব্য : আলবিদায়া ওয়াননিহায়া, ফাতহু কুবরুস অধ্যায়)

    বিজয়ের সেই আনন্দের মুহূর্তে হযরত আবুদ দারদা রা. কেঁদে কেঁদে এই নির্মম সত্য কথাটি বলেছিলেন।

    এখন আমরা সেখানে গিয়ে হযরত আবুদ দারদা রা.-এর সেই শঙ্কার বাস্তবতা স্বচক্ষে দেখতে পাই। অর্থাৎ কুবরুসের বিশাল একটা অংশ মুসলমানদের হাত থেকে ছুটে গিয়েছে।

    আপনারা হয়ত শুনে থাকবেন, দীর্ঘদিন যাবৎ এ অঞ্চল নিয়ে গ্রীক এবং তুর্কীদের মাঝে যুুদ্ধ চলছিল। গ্রীকরা বলছিল, এটা আমাদের এলাকা, আমরা এখানে শাসন করব। তুর্কী সরকার বলছিল, আমরা এখানে শাসন করব, এটা আমাদের অঞ্চল। একপর্যায়ে জাতিসংঘ শালিসিতে কুবরুস দ্বীপকে দুই ভাগে বণ্টন করা হয়। একটি অংশ দিয়ে দেয় গ্রীকদের আরেক অংশ তুর্কীদের।

    আজ বড় মর্মন্তুদ চিত্র হল, আল্লাহ তাআলা হেফাযত করুন, গ্রীকরা অধিকাংশ খ্রিস্টান অথবা ধর্মহীন, সেক্যুলার-দাহরিয়া। অর্ধ দ্বীপজুড়ে তাদের রাজত্ব। তারা কাফের এবং ঈসায়ী হওয়া সত্ত্বেও সেখানে তাদের আইন হল, এখানে কোনো জুয়াখানা হতে পারবে না। এ আইন ইসরাঈলেও রয়েছে- যেখানে ইহুদীরা শাসন করছে। অর্থাৎ সেখানে ক্যাসিনো থাকতে পারবে না।

    আর তুর্কীদের অধীনে যে অংশ রয়েছে, বাস্তবে যা মুসলমানদের কব্জায় রয়েছে, সেখানে ক্যাসিনো ওপেন রয়েছে। এটি পর্যটকদের পছন্দের স্পট হওয়ার একটি কারণ এটাও যে, তাতে জুয়ার আসরে শরিক হওয়া যায়। এটা বড় ইবরতের জায়গা, যেখানে কাফেররা রয়েছে সেখানে তারা এগুলো থেকে বিরত থাকছে আর মুসলমান সেগুলো নিয়েই মত্ত হয়ে আছে।

    এখন বলুন, মুসলমানদের দুর্দশা হবে না তো কার হবে! মুসলমান মার খাবে না তো কে খাবে!

    কাফের হয়ে তারা এ গুনাহ থেকে বেঁচে আছে। একে খারাপ মনে করছে। একে বেআইনি ঘোষণা করছে। আর ঐ দ্বীপেরই মুসলিম অধ্যুসিত অঞ্চলে এগুলো সব অবাধে চলছে।

    তো হযরত আবুদ দারদা রা. কেঁদে কেঁদে যে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন আজ তা স্বচক্ষে পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই আজ তা আমাদের হাতে নেই- ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

    সেই দ্বীপে মুসলমানদের সংখ্যা অনেক। ইউনানীদের অংশেও এবং তুর্কীদের অংশে তো বটেই। আলহামদু লিল্লাহ, মসজিদও রয়েছে। অনেকে এ চেষ্টাও করছে যে, কীভাবে সেখানে ইসলাহের পরিবেশ কায়েম হয়। কিন্তু নতুন প্রজন্মকে ধরে রাখা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। আগের মুসলমানরা যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে এসেছে তারা তো নামাযের পাবন্দি করে। মসজিদগুলো তাদের উপস্থিতিতে ভরপুর থাকে, আলহামদু লিল্লাহ। কিন্তু নতুন প্রজন্ম শুধু ‘মুসলিম’ নামটুকু ধারণ করে রেখেছে। আল্লাহ হেফাযত করুন, বাকি সব কাজে তারা কাফেরদের পথে পুরো দমে চরে বেড়াচ্ছে।

     

    পশ্চিমে পাড়ি জমানোর আগে একটু ভাবুন

    বলতে গেলে বর্তমানে পশ্চিমের সকল দেশে মুসলমানদের এ করুণ হালত বিরাজ করছে। ইংল্যান্ডের অবস্থা তুলনামূলক কিছুটা ভালো। সেখানে মসজিদ-মাদরাসা রয়েছে। দ্বীনের কাজ হচ্ছে। তাবলীগের কাজ হচ্ছে। তারপরও আশি ভাগ মুসলমানের সন্তান-সন্ততির এ হালত যে, হয়ত তারা মুরতাদ হয়ে গেছে কিংবা হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে, নাউযুবিল্লাহ। তাদের কর্ম অমুসলিমদের কর্মের মত। অধিকাংশ পশ্চিমা দেশেই আজ এ হালত।

    যারা এই আশা করে, যদি আমেরিকায় একটা চাকরি হয়ে যেত! কিংবা ইংল্যান্ডের ন্যাশনালিটি পাওয়া যেত! এজন্য দৌড়ঝাঁপ করে । হা পিত্তেশ করে। যার হাতে গ্রিনকার্ড চলে আসে তার যেন আর খুশি ধরে না। আর যে ইংল্যান্ড বা আমেরিকার ন্যাশনালিটি পেয়ে যায় সে এটাকে বহুত বড় সম্মান ও গর্বের বিষয় মনে করে। হাঁ, এমনটাই হালত। কিন্তু বন্ধু এখন তো তুমি শখে শখে সেখানে চলে যাবে। হয়তবা ভালো চাকরিও পেয়ে যাবে। অনেক অর্থকড়ি হবে। কিন্তু তোমার যে প্রজন্ম আসবে তার হেফাযত কে করবে?! কীভাবে করবে?!

    পশ্চিমের দেশগুলোতে যখন যাই, সেখানে আমার সামনে তো ভালো দৃশ্যই বিরাজ করে, আলহামদু লিল্লাহ। কিন্তু প্রতিবারই এমন এমন সংবাদ আসে যে, এত এত মুরতাদ হয়ে গেছে। দ্বীন থেকে বেরিয়ে গেছে। বিলকুল ইসলাম ছেড়ে দিয়েছে। তো যারা আজ ন্যাশনালিটি বা গ্রিনকার্ড পাওয়াকে বড় সম্মানজনক ভাবছে, সেই আল্লাহর বান্দারা এটা আর খেয়াল করে না যে, আমরা তো কোনোভাবে চলে যাব। হতে পারে দ্বীনের উপর কায়েম থাকতেও পারি। আল্লাহর কিছু বান্দা রয়েছেন, যারা অবশ্য সন্তানদেরও হেফাযত করতে পারেন। কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় আগামী প্রজন্ম রক্ষা করা বহুত মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এখন এটাকেই সম্মানজনক মনে করা হচ্ছে। বড় আশ্চর্যের ব্যাপার যে, আজ মুসলমান নিজের এবং সন্তানের দ্বীনকে কুরবান করে দুনিয়া হাছিল করছে।

    এ জন্য আমি হযরত আবুদ দারদা রা.-এর বক্তব্যটি আরজ করলাম। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে একথা সঠিকভাবে বোঝার তাওফীক দান করুন। এটা বড় তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য। একথা তিনি ঠিক ঐ সময় বলেছিলেন যখন কুবরুস বিজিত হচ্ছিল।

    তো ভাই! যে কথাগুলো বলা হল-

    প্রথমত : কুরআনে কারীম মনেপ্রাণে গ্রহণ করুন। এর সহীহ শুদ্ধ তিলাওয়াত, অর্থ ও মর্মের সঠিক বুঝ ও উপলব্ধি এবং এর উপর আমল করাকে নিজের এবং সন্তান-সন্ততির জন্য আবশ্যক করে নিন।

    দ্বিতীয়ত : আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দ্বীনী ইলম শেখার যে সুযোগ দিয়ে রেখেছেন, দ্বীনী মালুমাত হাছিল করার জন্য যে উত্তম সোহবতের ইন্তেযাম করে দিয়েছেন, এর যথাযথ কদর করি। এখানে যদি কেউ দ্বীনদারী রক্ষার জন্য নেক পরিবেশ তালাশ করে তো তার জন্য এর অবারিত সুযোগ রয়েছে, আলহামদু লিল্লাহ। কিন্তু ওখানে এত সহজে এগুলো পাওয়া যায় না। পাওয়াটা বড় মুশকিল।

    তো নেক সোহবত গ্রহণ করুন এবং সেখানে আসা যাওয়া অব্যাহত রাখুন। তাদের সাথে সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব রাখুন যাদের অন্তরে দ্বীনের ভালোবাসা-মহব্বত এবং দ্বীনের প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা রয়েছে।

    আর এই চেষ্টা ফিকিরে থাকা যে, পশ্চিমের কোনো দেশে চলে যাব। এটা দ্বীন ঈমানের জন্য কোনো মুনাসিব ফিকির নয়। ঠিক আছে, সেখানে গেলে কিছু পয়সাপাতি হয়। কিন্তু অনেককেই আমি দেখেছি ভবঘুরের মতো ফিরছে। কোনো চাকরি পাচ্ছে না। কেউ হোটেলে ম্যাসিয়ার-বয় হয়ে থাকে। কেউ থালা-বাসন ধোয়ার কাজ করে। যতকিছুই কর- গ্রিনকার্ড নাও বা ন্যাশনালিটি  পেয়ে যাও, তোমাকে সেই থার্ড রেটেই থাকতে হবে। অতএব তুমি যেটাকে সম্মান মনে করছ তা হাছিল করেও তুমি সেই ইজ্জত পাবে না, যা ওখানকার স্থানীয়রা পেয়ে থাকে।

    যারা চলে গেছে তো গেছেই। আল্লাহ তাআলা তাদের হেফাযত করুন। আমরা চেষ্টা করি সেখানে এমন হালকা কায়েম হোক যেখানে দ্বীনী আলোচনা হবে। এমন মজলিস হোক যেখানে তারা দ্বীনী খোরাক পাবে। আলহামদু লিল্লাহ, তাবলীগ জামাতের কাজ সব জায়গায় রয়েছে। এর মাধ্যমেও খুব ফায়দা হচ্ছে।

    এগুলো আছে- ঠিক আছে।

    কিন্তু কেউ সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করবে এবং এমন মনোভাব যে, যদি যেতে পারে তাহলে যেন জান্নাত পেয়ে গেছে- এটা চরম বেগায়রতীর কথা। এরকম মনোভাব নিজের এবং নিজের প্রজন্মকে ধ্বংস করার নামান্তর। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাযত করুন।

    এই কিছু শিক্ষা আল্লাহ তাআলা এবারের সফরে দান করেছেন। আল্লাহ তাআলা এ কথাগুলো বোঝার এবং সে মোতাবেক জীবন পরিচালিত করার তাওফীক দান করুন।

    আমি মুনাজাতে মাকবুলের দুআসমূহ নিয়ে আলোচনার একটা সিলসিলা চালু করেছিলাম। আগামী মজলিস থেকে আবার সেই ধারা চালু হবে- ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা সকলের জন্য তা উপকারী বানিয়ে দিন- আমীন। হ

    [তরজমা : মুহাম্মাদ আশিক বিল্লাহ তানভীর]

     

    তাইফুন হাগিবিসে নিহতের সংখ্যা ৭৫ জনে উন্নীত

    কমপক্ষে ৭৫ ব্যক্তির মৃত্যু ও আরও ৩৪৫ জনকে আহত করা তাইফুন হাগিবিসের চলমান ক্ষয়ক্ষতি সামাল দিতে জাপানের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। উদ্ধার কর্মীরা এখনও নিখোঁজ দশজনের সন্ধান অব্যাহত রাখার মুখে জরুরি ত্রাণ কর্মীরা পরিস্থিতি সামাল দিতে সংগ্রাম করতে হওয়া লোকজনের জন্য খাদ্য ও অন্যান্য সরবরাহ পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছেন।

    মিয়াগি জেলায় দুর্যোগে আটকা পড়ে যাওয়া লোকজন আবর্জনায় বার্তা লিখে সাহায্যের জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি আবেদন জানান।

    বন্যার পানিতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এলাকাগুলোতে প্রবেশ করার জন্য কিছু উদ্ধারকারী দল হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে।

    তাইফুন দমকা হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিপাত নিয়ে এসে সারা দেশ জুড়ে বিভিন্ন নদীর ৭৯টি বাঁধ ভেঙ্গে দেয়।

    এন এইচ কে জানতে পেরেছে ৩০ হাজারের বেশি বাড়িঘর তলিয়ে গেছে এবং ১ হাজার ৬শটির বেশি ভেঙ্গে পড়েছে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    ছয়টি জেলায় ৪,৩০০ বাসভবনে এখনও বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। ১৩টি জেলার ১ লক্ষ ১০ হাজার বাড়িঘরে পানি সরবরাহ বন্ধ আছে। পরিষেবা পুনরায় চালু হতে কতদিন লাগবে তা এখনও পরিষ্কার নয়।

    হোকুরিকু লাইনে বুলেট ট্রেনের চলাচল এখনও আংশিকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। রেল পরিচালনা কোম্পানি বলছে রেল যোগাযোগ পুরোপুরি চালু হতে কমপক্ষে এক কিংবা দুই সপ্তাহ লাগবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে অভ্যন্তরীণ রুটের কিছু বিমান কোম্পানি ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়িয়ে নিয়েছে এবং বড় আকারের বিমান ব্যবহার করছে।

    হাগিবিসকে একটি “মারাত্মক দুর্যোগ” হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পরিকল্পনা করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে বলেছেন, দুর্গত অঞ্চলগুলোর পুনর্গঠন কাজে রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি বৃদ্ধির জন্য তার সরকার তাইফুন হাগিবিসকে একটি “মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ” হিসেবে চিহ্নিত করার পরিকল্পনা করছে।

    আজ জাপানের সংসদের উচ্চ-কক্ষের বাজেট কমিটির একটি অধিবেশনে আবে বক্তব্য রাখেন। আইন-প্রণেতারা তাইফুনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করেন।

    আবে বলেন, এছাড়া, তার সরকার ৩শ ১৫টি পৌরসভাকে “মারাত্মক দুর্যোগ” বিধির আওতায় আনার সম্ভাবনা যাচাই করে দেখছে যাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো কোনরকম আর্থিক উদ্বেগ ছাড়াই জরুরি মেরামত কাজ পরিচালনা করতে পারে।

    প্রধানমন্ত্রী এটি স্বীকার করে নিয়েছেন যে লোকজনের নিত্যকার জীবন এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে এই তাইফুন একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব রাখতে পারে।

    তিনি বলেন, পানি এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টাকে একটি আন্ত:মন্ত্রণালয় দল সক্রিয়ভাবে সহায়তা দিয়ে যাবে।

    তাইফুন হাগিবিসে মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে

    গত সপ্তাহান্তে তাইফুন হাগিবিস জাপান জুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ার পর জরুরি উদ্ধার কর্মীরা এখনও পর্যন্ত অনেক নিখোঁজ লোকের অবস্থান নির্ধারণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

    কর্তৃপক্ষ বলছে, মৃতের সংখ্যা এখন ৭২ ছুঁয়েছে এবং ১৪ ব্যক্তি এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। প্রায় ২শ ২০ ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

    তাইফুন শক্তিশালী হাওয়া এবং ভারী বৃষ্টিপাত বয়ে আনায় প্রায় ২শ নদীর পানি কূল ছাপিয়ে যায়। প্রায় ৫০টি নদী তীরের বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় বিস্তৃত এলাকা জুড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়।
    ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশজুড়ে প্রায় ১শ ৪০টি ভূমিধ্বসের ঘটনাও ঘটে।

    হাগিবিসে লন্ডভন্ড জাপান মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই

    জাপানে সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন হাগিবিসের আঘাতে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। শক্তিশালী ওই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে কানাগাওয়া, টোচিগি, গানমা, মিয়াগি, সাইতামা, ফুকুসিমা, ইওয়াতে, চিবা, শিজুকা এবং ইবারাকি এলাকায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গত কয়েক দশকের মধ্যে সৃষ্ট বৃহৎ ঘূর্ণিঝড়ে ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছে, এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১৬৬ জন। জাপানের কেন্দ্রীয় অঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা ও ভূমিধস আঘাত হেনেছে। সেখানে উদ্ধার অভিযান চলছে। দেশজুড়ে ২৭ হাজার প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
    প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা একটি ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার এসডিএফ (সৈন্য) উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে। আমরা জনগণকে জন্য সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।’ ‘টাইফুনের ব্যাপকতা কমে এলেও আমরা এখন বন্যার কবলে পড়েছি। সবাইকে সতর্কভাবে চলার অনুরোধ করছি।’

    এর আগে জাপানের ইতিহাসে এমন প্রলয়ঙ্করী ঝড় দেখা যায় ১৯৫৮ সালে। সে বছর টাইফুন কানোগাওয়ার এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। রাজধানী টোকিও ও পূর্বাঞ্চলের ওপর ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার গতিতে আছড়ে পড়েছে সুপার টাইফুন হাগিবিস। প্রলয়ঙ্করী এই ঝড়ের তান্ডবে টোকিওর কিছু অংশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জাপানের রাষ্ট্রীয় স¤প্রচার মাধ্যম এনএইচকে বলছে, সুপার টাইফুন হাগিবেসের তান্ডবে নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় ১৬ জন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো দেড় শতাধিক মানুষ। জাপানের মধ্য এবং পূর্বাঞ্চলের নিচু এলাকার ওপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এতে এসব অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঝড়ের তান্ডবে টোকিও ও এর আশপাশের এলাকার প্রায় ৫ লাখ বাড়িঘর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

    এনএইচকে বলছে, টোকিওর নারিতা ও হানেদা বিমানবন্দরে বিমানের উড্ডয়ন এবং অবতরণ বাতিল করা হয়েছে। এতে প্রায় ৮শ’ ফ্লাইটের ওঠা-নামার সূচিতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত ৬০ বছরের মধ্যে এটাই জাপানের সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার কিছু আগে রাজধানী টোকিওর দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজু দ্বীপে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভ‚মিধস আঘাত হানে। স্থানীয় উপক‚লরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, টোকিও উপসাগরে পানামার একটি কার্গো জাহাজ ডুবে গেছে। এতে ১২ ক্রু সদস্য ডুবে মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে তিনজন মিয়ানমারের, সাতজন চীনের এবং দু’জন ভিয়েতনামের নাগরিক।

    অপরদিকে স্থানীয় সময় রোববার সকালে অপর একটি জাহাজের চার ক্রু সদস্যকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। কয়েক লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। খবরে বলা হয়, প্রায় ত্রিশ লাখ মানুষ শনিবার থেকে বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে। প্রায় ষাট লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ১৮ জনের লাশ উদ্ধার করলেও এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। উদ্ধার তৎপরতা চলছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা গতকাল সকালে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা আপাতত জরুরি বৃষ্টিপাতের সতর্কতা লেবেল-৫ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। স্থানীয় কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে টোকিও সাগরে ১২ জন ক্রুসহ পানামানিয়ান নামের একটি কার্গো ডুবে যায়। গতকাল সকালে তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও আরও ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। টেলিভিশন ফুটেজে নাগানো প্রদেশে চিকুমা নদীর আশে-পাশে বাড়িঘর জলমগ্ন দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলছে। সূত্র : এনএইচকে, কিওডো, বিবিসি, রয়টার্স।