• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • Untitled Post

    Posted by admin on April 15
    Posted in Uncategorized 

    ধর্মনিরপেক্ষতার অন্তরালে

    প্রথমেই বলে রাখতে চাই যে, বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার অন্তরালে ধর্ম আছে, তবে ইসলাম অনুপস্থিত। ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদের প্রবক্তাদের বলতে শুনেছি যে, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়, বরং নির্বিঘেœ স্ব স্ব ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিত করে। তবে রাষ্ট্র কোনো একটি ধর্মের প্রতি পক্ষপাত করবে না। এই ভাবনাটি অতি উত্তম। কেননা, এই উদারতার নাম পরমত সহিষ্ণুতা। এতে মানব সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকে। শান্তির ধর্ম ইসলাম এর পক্ষপাতী। কুরআন পাকে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, “যারা আল্লাহকে ছেড়ে যাদের বন্দনা করছে, তোমরা তাদেরকে মন্দ বলিও না। কেননা, তাহলে তারা অজ্ঞানতা বশতঃ আল্লাহকে অতিরিক্ত মন্দ বলে ফেলবে”। (সূরা আনআম-১০৯)।

    এই আয়াত থেকে আমরা পরমত সহিষ্ণুতার শিক্ষা পাই। এটা না হলে বিভিন্ন মতামতের এই বিশ্ব অশান্ত হয়ে পড়ায় মনুষ্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়তো। এটা যে ধ্রুব সত্য, তার প্রমাণ আমাদের সামনে রয়েছে। বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই মানুষে-মানুষে সংঘাত, তার ফলে রক্তপাত। আর, সেকারণেই মানুষ শান্তির খোঁজে এক দেশ ছেড়ে অন্য দেশে অনুপ্রবেশ করে। বর্তমানে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলমানরা সেখানকার বৌদ্ধদের অত্যাচারে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুপ্রবেশ করছে। এটা যে পরমত-পরধর্মের প্রতি অসহিষ্ণুতার কারণে ঘটছে তাতে সন্দেহ নেই। তথাকথিত প্রগতিশীলদের চোখে যে জঙ্গী ধর্ম ইসলাম, সে ধর্মে এই বর্বরতার সমর্থন নেই।

    এর প্রমাণ আল্লাহর আসমানী কিতাব আল-কুরআনে রয়েছে। ইসলামের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন কাহিনী এবং তাঁর হাদীসে রয়েছে। একটু স্থির মস্তিষ্কে ভাবলে এটাই প্রতীয়মান হবে যে, বিশ্বে যতো হানাহানি তার অন্যতম কারণ ধর্ম। সিরিয়ায় থাকতে পারে একদল লোকের ক্ষমতা দখলের দ্বন্দ্ব, কিন্তু প্রতিবাদীরা বলে ইসলামিক স্টেট প্রতিষ্ঠার কথা।

    সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ নিশ্চিত ইসলামের দুশমন। অথচ শতভাগ মুসলমানের দেশ সিরিয়া। সেখানকার মুসলমানদের মধ্যে কিছু ইসলাম দরদী মানুষ থাকতেই পারে। আধুনিকতা মনস্ক মানুষেরা প্রগতি আর ধর্মনিরপেক্ষতা বোঝে, কিন্তু বোঝেনা যা, তার নাম ইসলাম। তাই তাদের বিবেচনায় ইসলামের পক্ষে যারা থাকে তারা জঙ্গী। এ ভাবনার ফলেই তো মুসলিম অধ্যুষিত (শত ভাগ) দেশ তুরস্কে ইসলাম অবমানিত, মিশরেও তদবস্থা। মুসলমানের দেশে যদি ইসলাম এমন দুরবস্থায় থাকে, তাহলে অমুসলিম দেশে বসবাসকারী মুসলমানদের ধর্ম ইসলাম কোন অবস্থানে রয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। পত্র-পত্রিকায় প্রয়শঃ সে সব দেশের খবর পাওয়া যায়। কোথাও মুসলমানী নাম রাখা চলবে না, কোথাও দাড়ি রাখা বিপজ্জনক, কোথাও মসজিদে মাইকে আযান নিষিদ্ধ, কোথাও গো-কুরবানী চলবে না, কোথাও মেয়েদের বোরকা-হিজাব নিষিদ্ধ। দেখা যায় ইসলাম ধর্ম এবং ইসলামী ভাবধারা ও সমাজ ব্যবস্থা সে সব দেশে চলতে না পারলেও অন্যান্য ধর্মের বেলায় এরূপ কড়াকড়ি নেই। বিদেশে কোথায়ও শিখেরা মার খাচ্ছে দাড়ির কারণে। কারণ, আক্রমণকারীরা জানে না (জানলেও মানে না) মুসলমান ব্যতীত অন্য কেউ দাড়ি রাখতে পারে। জানি না, এ যুগে ইহুদী-খ্রীস্টান কার্ল মার্ক্স, ফ্রেডারিক এঙ্গেলস, জর্জ বার্নাডশ’রা বেঁচে থাকলে দাড়ির জন্য বিপদে পড়তেন কি-না?

    বিশ্বের সর্বত্র (হোক ইয়াহুদী, খ্রীস্টান, বৌদ্ধ, হিন্দুর দেশ, পাঁচ মিশালী দেশ, মুসলমানের দেশ) ইসলাম এবং ইসলামী ভাবধারা ও সমাজ ব্যবস্থার উপর খড়গহস্ত সেইসব দেশের প্রগতিশীল মানুষেরা। কিন্তু অন্য ধর্মের প্রতি এবং সেই সব ধর্মীয় সমাজ ব্যবস্থা এবং ভাবধারার প্রতি তাদের আপত্তি তো নেইই, বরং সমর্থনই থাকে। সেক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার বেরিকেড থাকে না। এই তো কিছুকাল পূর্বে আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের (তবুও রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম) সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রিম কোর্টের প্রাঙ্গণে গ্রীক দেবী (গ্রীক দেশের) থেমিসের মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। দেবী মূর্তি প্রায় ন্যাংটা হলেও শাড়ী পরিয়ে রাখা হয়েছে। শুধু থেমিস নয়, দেবী ভেনাসও নেংটা। এ সব দেবী খ্রীস্টান দেশের প্রাচীন কালের নিদর্শন।

    ভারতীয় দেবী কালীও তো তেমনি বসনহীন। তাকে তার সেবকেরা মন্দিরে বসন পরিয়ে রাখেন। সে যাই হোক, আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ দেশে গ্রীক দেবী থেমিসকে সর্বোচ্চ আদলতের প্রাঙ্গণে স্থাপনের আবশ্যক কী? যদি বলা হয়, ন্যায় বিচারের প্রতীক, বলবো, বিচারালয়ে ন্যায় বিচার থাকলে প্রতীক প্রতিষ্ঠার আবশ্যক কী? প্রবাদ আছে চেনা বামুনের পৈতা লাগে না। আর, ন্যায় বিচারের প্রতীক বাংলাদেশে কেন গ্রীক দেশ থেকে আমদানী করতে হবে? ৯০% মুসলমানদের ন্যায় বিচারের নির্দিষ্ট প্রতীক রয়েছে দাড়ি পাল্লা। এই প্রতীক বিচারালয়ে প্রতিষ্ঠা করলে যদি হয় ধর্মীয় ব্যাপার, তাহলে দেবী থেমিস কেন ধর্মীয় হবে না?

    ২৮শে মে তারিখের (২০১৭ খ্রীস্টাব্দ) দৈনিক নয়াদিগন্ত সংবাদপত্রে প্রকাশঃ ‘হেফাজতের দাবি মেনে নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনের ভাস্কর্যটি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরানো দেশের জন্য আত্মঘাতী’, বলেছেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং সাদারণ সম্পাদিকা শিরীন আখতার এমপি। তারা আরো বলেন, ‘হেফাজতের ভাস্কর্য সরানোর দাবির সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। ভাস্কর্য আর মূর্তি পূজা এক নয়। …..হেফাজত ভাস্কর্য বা স্থাপনাকে ইসলাম বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিস্তার ঘটাতে চাচ্ছে’।

    জাসদ নেতাদের প্রতি বলছি, বাংলাদেশ কি গ্রীক দেবী থেমিসের উপর নির্ভরশীল যে, তা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরানো দেশের পক্ষে আত্মঘাতী হবে? আর এটাও তাদের জেনে রাখা প্রয়োজন যে, সুদকে মুনাফা এবং ঘুষকে উপরি বললে তার চেহারা বদলায় না, তার ফলশ্রুতিও পাল্টায় না। তাই দেবী মূর্তিকে ভাস্কর্য বললেও, তা দেবীই থেকে যায়।

    মূর্তি ইসলাম বিরোধী কিনা, তা দ্বীনদার আলেম মুসলমানরাই ভালো জানেন; যারা নাস্তিক কিংবা মূর্খ্য, এটা তাদের জানার কথা নয়। কুরআন পাকে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘মদ, জুয়া, মুর্তি এবং ভাগ্য নির্ধারক শর (জুয়া); এইসব অতি অপবিত্র শয়তানের কাজ। অতএব, তা হতে মুক্ত থাক, তবেই তোমরা মুক্তি পাবে’। (সূরা মায়েদা- ৯০ আয়াত)।

    ভাস্কর্য যদি মূর্তি হয়, কুরআনের ভাষ্যমতে তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। তার আদর ক্বদর পূজারই শামিল। হেফাজত মূর্তিকে (ভাস্কর্য) ইসলাম বিরোধী বলেনি, বলেছেন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলা। দ্বীনদার মুসলমান আল্লাহর কথা মেনে চলেন। কোনো নাস্তিক্যবাদী কিংবা কুরআন বিরোধী বাক্য তারা মানেন না বা মানতে প্রস্তুত থাকেন না। কুরআন পাকে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত, যারা লোকদেরকে নেক কাজের দিকে ডাকবে ও ভালো কাজের হুকুম দিবে এবং মন্দ কাজ করতে নিষেধ করবে। এই সকল লোকই সফলকাম হবে’ । (সূরা আলে ইমরান- ১০৪)।

    হেফাজতে ইসলাম আল্লাহর এই নির্দেশনায় কাজ করছে। এতে সাম্প্রদায়িক কেন, কোনো ধরণের রাজনীতির নাম গন্ধই নেই। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫এর ১৫ই আগস্টের পূর্ব পর্যন্ত জাসদের ভূমিকা কী ছিল, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে লেখা আছে। বরং বিদেশী দেবী মূর্তির সমর্থনে আন্দোলন করে তারাই সাম্প্রদায়িকতা উসকে দিচ্ছে। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কিংবা একটু সরিয়ে নিয়ে থেমিস দেবী স্থাপনে তেমন একটা তফাত নেই। আমাদের দেশেও এ রকম দেবী মূর্তি রয়েছে। যদি তাদেরও আদালতের প্রাঙ্গণে কেউ স্থাপন করতে চাইলে, নিশ্চয় তাও এক সময় অন্যায্য মনে হবে না। যেমন আরব দেশের মক্কা শরীফের কাবা গৃহে ৩৬০টি মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। সম্ভবতঃ তা’ একদিনেই হয়নি। নিশ্চয় ক্রমান্বয়ে সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশেও যে তেমনটি ঘটবে না, তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে?

    সাম্প্রদায়িকতা (রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছাড়াই) এ কারণেই বিস্তার লাভ করার আশংকা রয়েছে। কুরআন মুতাবেক তাকে সাম্প্রদায়িকতা বলা যাবে না, সেটা দ্বীনদার মুসলমানের কর্তব্য কর্মের আওতায় পড়ে। বাংলাদেশে এখনও কিছু দ্বীনদার মুসলমান রয়েছেন, যারা অনৈসলামিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করবেন। আর, কিয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত কিছু দ্বীনদার মুসলমানের অস্তিত্ব থাকবে।

    এ প্রসঙ্গে আরেকটি কথা বলতে চাই যে, যদি ভাস্কর্যটি (থেমিস) দেবী মূর্তিই হয়, তাহলে যারা তার আরাধনাকারী, স্থাপিত করতে হবে তাদের মন্দিরে। এমনটি হলে কিন্তু দ্বীনদার মুসলমানদের প্রতিবাদ করার প্রয়োজন থাকতো না। আমাদের দেশে যাদুঘরে এবং মন্দিরে দেবী মূর্তি রয়েছে। কই, কখনোই কেউ তা তুলে নেবার জন্য আন্দোলন করেনি। তারা জানে, এদেশে মুসলমান ছাড়াও অন্যান্য ধর্মানুসারী মানুষের বসবাস রয়েছে। কুরআন পাকের নির্দেশনার প্রতি আস্থা থাকার কারণেই দ্বীনদার মুসলমান কখনো বিধর্মীদের ধর্মীয় ব্যাপারে নাক গলাতে যায় না।

    ইসলাম যেমন পরধর্ম সহিষ্ণুতার কথা বলে, তেমনি পরধর্মের সঙ্গে আপোষ করতে নিষেধ করে। এটা স্বাভাবিক, যারা স্বধর্মের প্রতি নিষ্ঠাবান, তারা পরধর্মের প্রতি কোনোরূপ অনুরাগ দেখাতে পারে না। হিন্দু ধর্মের ধর্মগ্রন্থ গীতায় বলা হয়েছে, ‘স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্ম ভয়াবহ’। ধর্মপ্রাণ মানুষের স্ব-ধর্মের প্রতি অনুরাগী থাকাই বিধেয়। ইসলামের আসমানী কিতাব আল-কুরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, শক্ত করে ধর এবং তাতে যা আছে তা মনে রাখ, তাহলে তোমরা রক্ষা পাবে’। (সূরা বাকারাহ- ৬৩)।

    এখানে কুরআন পাকের কথা বলা হয়েছে। নির্দেশনা এসেছে তার বিধি-বিধান মেনে চলার। কাফিররা একবার মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেকে বলেছিল, ‘তুমি আমাদের ধর্মও মেনে নাও, আমরাও তোমার ধর্ম মেনে নেবো’। অর্থাৎ- কাফিরদের সঙ্গে মিলে-মিশে ধর্মানুষ্ঠান। এ প্রস্তাবের উত্তর হিসেবে আল্লাহর তরফ থেকে ওহী নাযিল হয়। সেই ওহী ‘সূরা কাফিরূন’ এ সুস্পষ্ট জানা যায় যে, যাদের উপাস্য ভিন্ন তাদের সঙ্গে ধর্ম ব্যাপরে ঐক্যমতে আসার সুযোগ ইসলামে নেই।

    সুতরাং বক্তব্য একটাই, তা হলো, ‘লাকুম দ্বীনুকুম আলিইয়াদ্বীন’। ইসলাম ধর্ম অন্যান্য ধর্মের থেকে সুম্পূর্ণ বিপরীত। অন্যান্য ধর্মে মূর্তি এবং গান-বাদ্য-নাচ উপাসনার অঙ্গ। কিন্তু ইসলামে অইগুলি হারাম। ইসলাম ধর্মের কোনো আচার-আচরণ বিধর্মীদের সঙ্গে মিলেমিশে কিংবা তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করার সুযোগ মুসলমানদের নেই। ইসলামে উদারতা এ পর্যন্তই, অন্য ধর্মের লোকদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ না করা। তদর্থে সুযোগ রাখা হয়নি, মুসলমানের ভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার। ধর্মের ভিন্নতার কারণে সম্প্রদায় থাকবে, কিন্তু কোনো ধর্মানুসারীর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা যাবে না, হিংসা করা যাবে না। এই মত ইসলামের। আর, এমন হলেই একই দেশে সকল ধর্মের লোকেরা শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থানে বাস করা সম্ভব। পারস্পরিক মিলনের জন্য হিন্দুর মুসলমানকে বলার অবশ্যক নেই-

    গরু কোরবানী করা ছেড়ে দাও

                যদি মিঞা ভাই,

    সিনান করায়ে সিঁদুর পরায়ে

                তোরে মন্দিরে নিয়া যাই

    আর মুসলমানেরও হিন্দুকে বলার প্রযোজন নেই-

    যদি আল্লাহ মিঞার ঘরে

                নাহি লও হরিনাম,

    বলদ সহিত ছাড়িব তোমারে

                যাহা হয় হবে পরিনাম

    উল্লিখিত কবিতাংশ কাজী নজরুল ইসলামের প্যাকট কবিতা থেকে উদ্ধৃত করা হলো। নজরুলের জীবনাচার সম্পর্কে সকল শিক্ষিত ব্যক্তিরই জানা আছে। আর, তিনি যে সেকালে উভয় ধর্ম সম্প্রদায়ের কাছেই খুব সামাজিক কদর পাননি, তাও ওয়াকেফ মহলের জানা আছে। প্যাকট কবিতার উপসংহার এ রকম-

    মসজিদ পানে ছুটিলেন মিয়া

                মন্দির পানে হিন্দু,

    আকাশে উঠিল চির জিজ্ঞাসা

                করুন চন্দ্রবিন্দু।

    বস্তুতঃ এটাই সঠিক। এ জাতীয় প্যাকট কখনো টেকে না। সম্রাট আকবরও ‘দ্বীন-ই ইলাহী’ টেকাতে পারেননি, হাতে রাজদন্ড থাকা সত্ত্বেও।

    সেই সুলতানী যুগেও সম্ভবতঃ বিচার বিভাগ স্বাধীন ছিল। বাংলাদেশের একদার শাসক সুলতান গিয়াসুদ্দীন একদিন শিকারের উদ্দেশ্যে তীর ছুঁড়ে ছিলেন। সেই তীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে এক বিধবার একমাত্র পুত্র সন্তানের শরীরে বিদ্ধ হয়। ফলে তার মৃত্যু ঘটে। ছেলেটির মা বিচারকের (কাজী) আদালতে সুলতানের বিচার চেয়ে নালিশ (মামলা) করেন। বিচারক সুলতানকে আদালতে তলব করেন। কাজী বিচার করে বিধাবাকে ক্ষতিপূরণ এবং আজীবন ভরণ-পোষণের রায় ঘোষণা করেন। সুলতান এ রায়ের প্রতি খুব সন্তুষ্ট হলেন। সুবিচারক কাজীর প্রতি সুলতান বললেন, ‘আপনি যদি আমাকে দেশের শাসনকর্তা ভেবে পক্ষপাত করে সুবিচার না করতেন, তাহলে এই তরবারী দিয়ে আপনাকে হত্যা করতা’।

    কাজীও সাহস করে সুলতানকে বলেন, ‘আপনি যদি আমার রায় অমান্য করতেন, তাহলে এই বেত মেরে আপনাকে রায় মানাতে বাধ্য করতাম’। এই বলে কাজী তার টেবিলের নীচ থেকে একটি বেত বের করে সুলতানকে দেখালেন। সুলতান কাজীর সুবিচার এবং সৎ সাহসে মুগ্ধ হয়ে তাকেও পুরষ্কৃত করেন।

    জানি না, আমাদের দেশের বিচারকদের সে রকমের স্বাধীনতা আছে কি-না। তবু দেশেবাসীর এটুকু জানা প্রয়োজন যে, সুপ্রিম কোর্টে গ্রীক দেবীর মূর্তিটি কার নির্দেশে স্থাপন করা হয়েছিল এবং কার নির্দেশে তা’ একটু সরিয়ে স্থাপন করা হলো? আর, এই দেবী মূর্তিটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে স্থাপনের হেতুটা কি? বিচারলয় তো বিচার কার্যের জন্য। এ ছাড়া তো বিচারালয়ের অন্য কর্ম থাকার কথা নয়। দেবী মূর্তি প্রতিষ্ঠাও কি তবে অধুনা বিচারালয়ের কার্য তালিকার অন্তর্গত করা হয়েছে?

    বাংলাদেশ সাংবিধান অনুসারে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হলেও বাস্তবে মনে হয়, কার্যতঃ ইসলাম নিরপেক্ষ করার চেষ্টা চলছে। এখানে ইসলামী প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশন, যেখানে ইসলামী গ্রন্থাদি প্রকাশিত হয় এবং ইমাম প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, সেখানে অনুষ্ঠানে ইসলাম নিষিদ্ধ গান-বাজনা হয়। এখানে ইসলাম ধর্মীয় বিধানাবলী এবং ইসলামের মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবমাননাকর লেখা ব্লগাররা ব্লগে পোস্ট করে পার পেয়ে যায়। এখানে ফেসবুকে কা’বা শরীফের অবমাননাকর পোস্ট দেওয়া হয়। অথচ তার প্রতিবাদে তার নিবৃত্তি নেই। এমন একটি দেশকে ‘ইসলাম নিরপেক্ষ’ বলা অসঙ্গত হয় কিসে?

    পাশাপাশি বিজাতীয় বিধর্মীয় সংস্কৃতি ও ভাব ধারা অবাধ হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় প্রাঙ্গণে গ্রীক দেবীর আবির্ভাব ঘটানো হয়েছে। প্রতিবাদে খানিকটা স্থান পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু তাড়ানো গেল না।

    বাংলাদেশটা তো নিশ্চয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরও জন্মভূমি। সুপ্রিম কোর্ট তাদেরও। এ দেবী কোনো সর্বজনীন স্থানে থাকতে পারে না। ধর্মনিরপেক্ষ দেশে অবশ্যই সরকারকে সকল ধর্মের প্রতি নিরপেক্ষ থাকতে হবে। শুধু ইসলাম নিরপেক্ষ থাকলে চলবে না। কোনো ধর্মীয় অনুভতিতে আঘাত হানার কাজ সবারই পক্ষে পরিত্যজ্য। এবং এটা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্যই জরুরী। #

    আজ পবিত্র শবে মেরাজ

    Posted by admin on April 14
    Posted in Uncategorized 

    আজ পবিত্র শবে মেরাজ

    আজ দিন পেরিয়ে রাতের আঁধার নামলেই আবির্ভাব ঘটবে মহাপুণ্যে ঘেরা রজনী। এ রাত মহাপবিত্র মহিমান্বিত লাইলাতুল মেরাজের। এ রাতে আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম হযরত জিব্রাঈল আলাহিস্সালামের সাথে পবিত্র কাবা হতে ভূ-মধ্যসাগরের পূর্বতীর ফিলিস্তিনে অবস্থিত পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের উপর সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে সত্তর হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের সমস্ত কিছুর অপার রহস্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম-এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা ‘মেরাজ’।
    মেরাজ ইসলামের ইতিহাসে এমনকি পুরা নবুওয়াতের ইতিহাসেও এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। কারণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ছাড়া অন্যকোনো নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি। এ রজনীতেই মানবজাতির শ্রেষ্ঠ ইবাদত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় মুসলিম জাহানের সঙ্গে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও আজ কোরআনখানি, নফল সালাত, জিকির-আসকার, ওয়াজ মাহফিল, দোয়া-দরুদ পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে পবিত্র শবে মেরাজ পালন করবেন।
    মেরাজ শব্দটি আরবী, অর্থ ঊর্ধ্বারোহণ। মেরাজের বড়দাগে অর্থ দাঁড়ায়-সপ্তম আসমান, সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন ও ধনুক কিংবা তার চেয়ে কম দূরত্বে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য পর্যন্ত ভ্রমণ। এ ছিল আল্লাহ তাআলার মহান কুদরত, অলৌকিক নিদর্শন, নবুয়তের সত্যতার পক্ষে এক বিরাট আলামত। জ্ঞানীদের জন্য উপদেশ, মোমিনদের জন্য প্রমাণ, হেদায়েত, নেয়ামত, রহমত, মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে হাজির হওয়া, ঊর্ধ্বালোক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন, অদৃশ্য ভাগ্য সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান লাভ, ইহকাল ও পরকাল সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, স্বচক্ষে জান্নাত-জাহান্নাম অবলোকন, নভোমণ্ডল পরিভ্রমণ এবং সর্বোপরি এটিকে একটি অনন্য মুজিযা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা।
    পারিভাষিক অর্থে নবুয়তের একাদশ সালের ২৭ রজবের রাতের শেষ প্রহরে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম জিব্রাঈলের (আ.) সাথে আল্লাহর নির্দেশে বায়তুল্লাহ হতে বায়তুল মুক্বাদ্দাস পর্যন্ত ‘বোরাক্বে’ ভ্রমণ, অতঃপর সেখান থেকে অলৌকিক সিঁড়ির মাধ্যমে সপ্ত আসমান পেরিয়ে আরশে আল্লাহর সান্নিধ্যে গমন পুনরায় বায়তুল মুক্বাদ্দাস হয়ে বোরাক্বে আরোহণ করে প্রভাতের আগেই মক্কায় নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তনের ঘটনাকে ‘মেরাজ’ বলা হয়।
    মেরাজ সম্পর্কে আল্লাহ পবিত্র কুরআন শরীফে বলেন-“পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি তার স্বীয় বান্দাকে রাতের বেলায় মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করালেন, যার চতুর্দিকে আমার রহমত ঘিরে রেখেছেন-যেন আমি কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই।’

    সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক হামলায় সমর্থন জানিয়েছে জাপান

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রশাসনের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।

    আবে শনিবার বলেন, কোন অবস্থাতেই রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার করতে দেয়া উচিত হবে না সেটা যে অবস্থাতেই হোক না কেন।

    তিনি বলেন, এজন্য জাপান সরকার যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন ও ফ্রান্সের নেয়া সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাচ্ছে।

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি অনুধাবন করতে পারছেন যে পরিস্থিতির আরও অবনতি রোধ করতেই দেশগুলো এই হামলা চালিয়েছে।

    ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ঘোষণা

    নিজেদের মধ্যকার বিভক্তি দূর করে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদে আবারও মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
    গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. রাশেদ খান এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। এসময় ‘কত শতাংশ কোটা রাখা হবে তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দাবি করা হয়। জাতীয় সংসদে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারীদেরসহ ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মীদের দাবিগুলো যৌক্তিক বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির নেতারা।
    এদিকে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কোটা ব্যবস্থাকে জাতির জন্য ‘লজ্জাজনক’ আখ্যায়িত করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম এবং শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনকে সমর্থন করে গত রোববার বিবৃতি দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা। একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বুয়েট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। তবে গতকাল সকাল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভক্ত হয়ে আলাদা আলাদা সংবাদ সম্মেলন করলেও সন্ধ্যায় আবার ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের ঘোষণা দেন তারা। ওদিকে চলমান কোটা সংস্কারের আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল এ দাবিতে কুড়িল বিশ্বরোড বসুন্ধরা গেট, নর্দা-প্রগতি সরণির রাস্তা অবরোধ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা কোটা সংস্কারের সুনির্দিষ্ট ঘোষণার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের শিক্ষার্থীরা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে সেøাগানে সেøাগানে প্রকম্পিত করে তোলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাজপথ।
    কোটা সংস্কারের এই আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো যৌক্তিক বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির নেতারা।
    এদিকে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের চলমাল কোটা সংস্কারের আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে কুড়িল-বিশ্বরোড বসুন্ধরা গেট, নর্দা-প্রগতি সরণির রাস্তা অবরোধ করেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। এ সময় তারা কোটা সংস্কারের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের শিক্ষার্থীরা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ¯েøাগানে ¯েøাগানে প্রকম্পিত করে তোলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাজপথ।
    ঢাবি রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলনে করে এ কথা জানান তারা। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদে সমন্বয়ক মো. রাশেদ খান সাংবাদিকদের গতকাল আরও তিনটি দাবির কথা তুলে ধরেন। দাবির মধ্যে রয়েছে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট ঘোষণা। এর আগে সকালে এক সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনকারীরা বিকলে পাঁচটার মধ্যে কোটা সংস্কার নিয়ে জাতীয় সংসদে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে বলেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের কথায় সাড়া দেননি কৃষিমন্ত্রী। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিকেলে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। আন্দোলনকারীরা বলেন, সচিবালয়ে সরকারের সঙ্গে বৈঠকের এক দিন পরই অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাজেটের পরে কোটা সংস্কারে হাত দেওয়া হবে। আমরা এমন দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া মেনে নেব না। সারা দেশে অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে দেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করার আহŸান জানান আন্দোলনকারীরা।
    কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী তারা বক্তব্য প্রত্যাহার না করায় সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা সবাই রাজু ভাষ্কর্যে জড়ো হতে থাকেন এবং মতিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে নানা সেøাগান দিতে থাকেন। এসময় তারা ম তে মতিয়া তুই রাজাকার তুই রাজাকার ইত্যাদি সেøাগান দিতে থাকে এবং রাত ৮ টার দিকে তার কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
    অন্যদিকে, গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে দেখা গেছে রহস্যময় একটি ড্রোন। ড্রোনটিপ্রায় ১০ মিনিট অবস্থান করে ঢাবির আকাশে। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘শেইম, শেইম (লজ্জা)’ বলে ¯েøাগান দিতে থাকে। আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টার সময় প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির উপরে দেখা যায় ড্রোনটি। এর সামান্য কিছুক্ষণ পর ড্রোনটি ঠিক রাজু ভাস্কর্যের উপরে আসে। এরপর আবার ড্রোনটি লাইব্রেরির উপরে যায়। কিছুক্ষণ নিরুদ্দেশ হয়ে যায় ড্রোনটি। এসময় ড্রোনটিতে কয়েকবার নীল বাতি জ্বলতে দেখা গেছে। ড্রোনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে দেখার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে বেশ উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়।
    এর আগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সম্পূর্ণ যৌক্তিক বলে দাবি করেছেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। গতকাল সকালে ৮ তারিখের ঘটনায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে হামলার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতি আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ছাত্রদের এই কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। আমরা চাই সরকার ৭ মে এর মধ্যে এ বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে একটি সুষ্ঠ সমাধান দিক। তিনি কোটা আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকাকে বাড়াবাড়ি উল্লেখ করে এর নিন্দা জানান। সেই সাথে তিনি ভিসির বাসভবনে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন। এই মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ও ঢাবির সিনেট সদস্য ডা. ইকবাল আর্সালান, ঢাবি সাদা দলের আহŸায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন, রোকেয়া হলের প্রভোষ্ট জিনাত হুদা। সাদা দলের আহŸায়ক আখতার হোসেন খান বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সবার সর্মথন থাকে কিন্তু যখন সেটা সহিংস হয় তখন সেখানে কারো সমর্থন থাকে না।
    বক্তারা ভিসির বাসভবনে হামলাকে একটি ন্যক্কারজনক হামলা ও এর সাথে ১৯৭১ সালের হামলার তুলনা দিয়ে বলেন সন্ত্রাসীরা সবসময় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়কে টার্র্গেট করে। সেই ধারাবাহিকতায় সেদিন তারা ভিসির বাসভবনে এমন হামলা চালিয়েছে। এই মানবন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী বৃন্দ।
    এছাড়াও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় অফিসার্স এসোসিয়েশন, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতি, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কারিগরী কর্মচারী সমিতি, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কর্মচারী সমিতি এরা বিশ^বিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে পৃথকভাবে মানববন্ধন ও মৌণ মিছিল করে। পরবর্তীতে তারা শিক্ষক সমিতির মানবন্ধনে অংশ নেয়।
    অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন চলাকালে তিন জন শিক্ষার্থী ‘ছাত্ররা আহত কেন?’ ‘ক্যাম্পাসে হামলা কেন?’, ‘শিক্ষক (অভিভাবক) জবাব দাও’ এরকম লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনের সামনে দাড়ায়।
    জাবি সংবাদদাতা : সরকারী চাকরীতে কোটা সংস্কারের দাবি ও শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশী হামলার প্রতিবাদে ২য় দিনের মত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা। সমাবেশে ‘সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ জাবি শাখার আহŸায়ক খান মুনতাসির আরমান বলেন, “সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাতীয় সংসদে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আর যদি না হয় তাহলে তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।” এই সময় শিক্ষার্থীরা হাতে তালি দিয়ে এই ঘোষণাকে স্বাগত জানান।
    এসময় তিনি আরো বলেন, “আমরা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে বেড়ে উঠেছি। আমাদের আন্দোলন ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, কোটা বৈষম্যের ঠাঁই নাই’। কিন্তু মতিয়া চৌধুরী আমাদের সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছে তা আমাদের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক। তাই বক্তব্য প্রত্যাহর করে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।”
    সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীর একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এসে শেষ হয়।
    এদিকে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকল ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছে জাবি শিক্ষার্থীরা। বিভাগ ও অনুষদগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কোন ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
    অন্যদিকে জাবি শিক্ষক সমিতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি যৌক্তিক। তাই সরকারের উচিৎ এ বিষয়ে বিবেচনা করা।’ এছাড়া বিবৃতিতে জাবি শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশী হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়। পাশাপাশি জাবি ছাত্রদলও এক বিবৃতিতে পুলিশী হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে।
    রাবি সংবাদদাতা : সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দুই মন্ত্রীর দ্বিমূখী বক্তব্য এবং কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদেরকে নিয়ে অপৃতিকর বক্তব্যর প্রতিবাদ এবং প্রত্যাহারের দাবিতে পুনরায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কোটা সংস্কার কমিটি। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৬ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কোট সংস্কার আন্দোলনের আহবায়ক মাসুদ মোন্নাফ এ ঘোষণা দিলে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন এবং সন্ধা ৭ টা পর্যন্ত অবস্থান করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
    বিশ্ববিদ্যালয় আহবায়ক কমিটির নেতারা বলেন, দেশের ৯৮% সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের রাজাকারের বাচ্চা বলা, অর্থমন্ত্রীর সাংঘর্ষিক বক্তব্য, আটককৃতদের ছেড়ে না দেয়া, অসুস্থদের চিকিৎসারর দায়িত্ব না নেয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন ও প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধের কর্মসূচীর ষোষণা দিয়েছে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ আন্দোলন রাবি কমিটি।
    এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কোটা সংস্কার কমিটির আহবায়ক মাসুদ মোন্নাফ বলেন, সরকারের সাথে আলোচনার পর কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে ৭মে পর্যন্ত আমরা আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রীদের একের পর এক অপৃতিকর এবং সাংঘর্ষিক বক্তব্যে আমরা পুনরায় আন্দোলন শুরু করতে বাধ্য হয়েছি। যতদিন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বক্তব্য না পাওয়া যাবে ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান তিনি।
    অন্যদিকে, কোটা সংস্কারের আন্দোলনে নেমেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর সোবহানবাগে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা, যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে নর্থ-সাউথ (এনএসইউ) ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এআইইউবি) শিক্ষার্থীরা এবং রামপুরা ব্রিজের পূর্বপাশে ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
    গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীরা মিছিল করে কোটা সংস্কারের দাবি সম্বলিত পোস্টার হাতে নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়ায় প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে। এরপর রামপুরা ব্রিজের কাছে রাস্তার দু’পাশ অবরোধ করে তারা ¯েøাগান দিয়ে কোটা সংস্কারের দাবি জানায়। এ সময় রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
    ইউআইটিএস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমেরিকান দূতাবাসের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলন শুরু করেন। এতে কুড়িল থেকে রামপুরা পর্যন্ত পুরো রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। রামপুরা ও কুড়িল বিশ্বরোডের বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
    বনানী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখা গেছে, অনেকেই অপেক্ষা করেছেন বাসসহ অন্যান্য যানবাহনের জন্য। সাইদুল ইসলাম নামের একজন বলেন, ‘অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি বাসের জন্য। কিন্তু পাইনি। এখন সিএনজি খুঁজেও পাচ্ছি না। অন্যদিকে যানজটের কারণে গাড়িও নড়ছে না। ’
    একই অভিযোগ জানালেন মাসউদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এত বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে, বলার মতো নয়। প্রধান সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বনানী ও গুলশানের ভেতরের সব রাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়। গুলশান-১ নম্বর থেকে বাড্ডা লিঙ্ক রোড পর্যন্ত জ্যামের কারণে রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। গুলশান-১ থেকে গুলশান-২ পর্যন্ত প্রধান সড়কে আস্তে আস্তে গাড়ি চললেও গুলশান-২ এর মাথায় বন্ধ হয়ে যায়। এই মুহূর্তে কোনও গাড়ি বের হতে পারছে না। গুলশান বনানীর ভেতরের সব রাস্তা আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
    ধানমন্ডির ২৭ নম্বর সড়ক অবরোধ করেন স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। এই ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা আছি এখানেই। কোটা সংস্কার, অর্থমন্ত্রীর ভ্যাট আরোপের বক্তব্য প্রত্যাহার এবং কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে।
    সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর সচল মিরপুর রোড
    কোটা সংস্কারের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বেলা ১১টা থেকে মিরপুর রোডে অবস্থান নিয়েছিল ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে থমকে গিয়েছিল মিরপুর রোডের যান চলাচল। আসাদগেট থেকে নিউ মার্কেটের দিকে চলাচলকারী যানবাহনকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়ক দিয়ে সাত মসজিদ রোডের দিকে। এতে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বিকাল সাড়ে চারটার দিকে সড়কে অবস্থান থেকে সরে এসে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
    আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ফারদিন জানান, আজকের মতো অবস্থান শেষ। প্রয়োজন হলে আগামীকাল সকাল ১০ টা থেকে আবারও অবস্থান নেবো। ডিএমপির তেজগাঁও জোনের এসি আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা রাস্তা ছেড়ে দিচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে আশা করি।’
    সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার অবস্থানে থমকে গিয়েছিল মিরপুর রোড। যান চলাচলে বিঘœ ঘটায় দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে অনেককে। সোবহানবাগের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার দরকার ছিল ডাক্তারের কাছে। কিন্তু রাস্তা বন্ধ, পুলিশও আছে। কখন কী হয় বলে যায় না। তাই অপেক্ষা করছি।
    এছাড়া, বিকাল ৫টা ৩৭ মিনিটের দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মূল গেট সংলগ্ন কুড়িল বিশ্বরোড থেকে অবরোধ তুলে নেন ওই এলাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা।
    এক সপ্তাহ সময় দিয়ে ইস্ট ওয়েস্টের আন্দোলন স্থগিত
    কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে রাস্তায় নামা ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন স্থগিত করেছেন। গতকাল বিকেল ৫টার দিকে তারা আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে কোটাব্যবস্থা সংস্কারে কোনো সমাধান না হলে আবারও আন্দোলনে যাবেন বলে হুমকি দিয়েছেন তারা। সরেজমিনে দেখা গেছে, আন্দোলন স্থগিতের এই ঘোষণা দেয়ার পর রাস্তা থেকে শিক্ষার্থীরো সরে যাচ্ছেন। অপরদিকে রামপুরা-বাড্ডা রুটে আটকে থাকা যানবাহনও চলতে শুরু করেছে।

    জাপানে ধুমপান নিষেধাজ্ঞার ভবিষ্যৎ

    পরোক্ষ ধূমপান হচ্ছে অন্য মানুষের ধূমপান থেকে বাতাসে ছেড়ে দেয়া ক্ষতিকর উপাদান নিশ্বাসের মধ্যে দিয়ে গ্রহণ করা। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমান করছে পরোক্ষ ধূমপানের ফলে প্রতি বছর দেশে ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এরকম পরোক্ষ ধূমপান প্রতিহত করার লক্ষ্যে প্রণীত খসড়া একটি বিল গত মাসে সংসদে পেশ করা হয়। দেশের প্রথম সেই পরোক্ষ ধূমপান বিরোধী বিলে লঙ্ঘনকারীদের উপর জরিমানা আরোপের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ২০২০ সালের জুলাই মাসে শুরু হতে যাওয়া টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকের আগে বিলটি যেন আইনে পরিণত করা যায়, সরকার সেজন্য সংসদের চলতি অধিবেশনে সেটা পাশ করিয়ে নিতে চাইছে। সংবাদ বিশ্লেষণে আজ পরোক্ষ ধূমপানের বিরুদ্ধে নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে বলছেন এন এইচ কে’র ঊর্ধ্বতন ভাষ্যকার তোশিইয়ুকি ৎসুচিইয়া।

    পরোক্ষ ধূমপান প্রতিহত করতে স্বাস্থ্য রক্ষা আইন সংশোধন করে নেয়ার একটি বিলে মন্ত্রীসভার অনুমোদন সরকার পেয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে স্কুল, হাসপাতাল এবং প্রশাসনিক বিভিন্ন কার্যালয় নীতিগতভাবে ধূমপান-মুক্ত করে তোলা। অনেক মানুষের সমাবেশ যেখানে ঘটে, অফিস এবং দোকানের মত সেরকম জায়গার বেলায় এসব প্রতিষ্ঠানকে ঠিক করে নেয়ার অনুমতি দেয়া শুধুমাত্র ধূমপানের জন্য নির্ধারিত কক্ষ ছাড়া ভবনের ভেতরের সব জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ করা হবে।

    রেস্তোরাঁ ও দোকান হিসেবে নির্ধারিত খাওয়া-দাওয়া করার অন্য জায়গাগুলোকেও সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে কিনা সেটা ছিল সবচেয়ে বড় এক বিতর্কের বিষয়। সরকার শেষ পর্যন্ত বরং এসব ব্যবসার আকারের উপর নির্ভর করে ভিন্ন নীতি প্রয়োগের বেশ জটিল এক পরিকল্পনা ঠিক করে নেয়। ছোট আকারের বিদ্যমান রেস্টুরেন্টের বেলায় নীতি সংক্রান্ত ঘোষণার সাইনবোর্ড এরা টাঙ্গিয়ে নিলে লোকজনকে ধূমপানের অনুমতি দেয়া হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের সংজ্ঞায় এগুলোর বর্ণনা দেয়া হয়েছে একক ব্যক্তি কিংবা ছোট আকারের ব্যবসার পরিচালিত সেরকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে – বিনিয়োগ-কৃত পুঁজির পরিমাণ যেখানে হচ্ছে পাঁচ কোটি ইয়েন বা চার লক্ষ সত্তর হাজার ডলার পর্যন্ত এবং মোট জায়গার হিসাব যেখানে হচ্ছে ১০০ বর্গ মিটার কিংবা এর কম। এই শ্রেণী বিন্যাসের আওতায় যেগুলো পড়ে না, সেরকম রেস্টুরেন্টে ভেতরে ধূমপান ঠিক অফিসের মতই নির্ধারিত জায়গার বাইরে নিষিদ্ধ করা হবে। অনুমান করা হচ্ছে যে ৫০ শতাংশের বেশী খাওয়া-দাওয়া করার জায়গা ধূমপান নিষেধাজ্ঞা আওতা থেকে মুক্ত থাকবে।

    তবে কেন এই জটিল ব্যবস্থা? এর পেছনে যা আছে তা হল, জনস্বাস্থ্য রক্ষার দায়িত্ব পালনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে যাওয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এল ডি পি’র মধ্যে চলা দেন-দরবার। ব্যবসার প্রতি বন্ধু ভাবাপন্ন এল ডি পি ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন রেস্টুরেন্ট শিল্পের থেকে আসা বিরোধিতা বিবেচনায় নিয়েছে।

    বিলটি এখনও খসড়া অবস্থায় আছে বলে সংসদে বিতর্ক চলার সময় এটা আরও ভাল করে নেয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় রেখে বিচার করে দেখলে বলা যায়, ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিকের আগে পরোক্ষ ধূমপান নির্মূল করা মনে হয় কঠিন হবে।

    তবে এর বাইরে সবকিছু নির্ভর করছে জাপানের জনগণের উপর। যেসব দেশ ঘরের ভেতরে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছে তারা বলছে রেস্টুরেন্ট শিল্পের উপর নেতিবাচক কোন প্রভাব তা ফেলেনি। এছাড়া জাপানের ক্রমশ অনেক বেশী সংখ্যক খাওয়া-দাওয়া করার জায়গা এরকম মনে করছে যে ধূমপান সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করা হচ্ছে সুবিধাজনক একটি দিক।

    পরোক্ষ ধূমপানের ফলে প্রাণহানির সংখ্যা আমরা কতটা কমিয়ে আনতে পারি? আমি মনে করি এর সবটাই নির্ভর করে আমরা কিভাবে খাওয়া আর কাজের জায়গা বেছে নেই তার উপর।

    সংবাদ বিশ্লেষণে আজ জাপানে পরোক্ষ ধূমপান বিরোধী পদক্ষেপ নিয়ে বললেন এন এইচ কে’র ঊর্ধ্বতন ভাষ্যকার তোশিইয়ুকি ৎসুচিইয়া।

    এলিয়েনদের দেখা গিয়েছিল চাঁদে যাওয়ার পথে!

    এলিয়েনদের নিয়ে অনেক দিনের আগ্রহ হলেও তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে এখনো কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।  যদিও চাঁদের মাটিতে মানুষের প্রথম পা রাখার পঞ্চাশ বছর পূর্তি সামনের বছরেই। কিন্তু এখনও সমাধান হয়নি একটি রহস্যের।  আর তা হলো- নিল আর্মস্ট্রং-এর পরেই দ্বিতীয় মানুষ হিসেবে চাঁদের মাটিতে পা রাখা এডুইন বাজ অলড্রিন দাবি করেছিলেন- অ্যাপোলো ১১ যানে করে চাঁদের দিকে যাওয়ার সময়ে তিনি ও তাঁর তিন সঙ্গী একটি রহস্য উড়ন্ত বস্তুকে দেখেছিলেন, যা এলিয়েন বা ভিনগ্রহীদের মহাকাশযান বলেই তাদের বিশ্বাস।

    আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘মিরর’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, মার্কিন প্রদেশের ওহায়োতে অবস্থিত ‘দ্য ইনস্টিটিউট অফ বায়ো অ্যাকোয়াস্টিক বায়োলজি’ অলড্রিন ও তার সঙ্গীদের ‘ভয়েস প্যাটার্ন’ পরীক্ষা করে দেখেছেন, তারা মোটেই মিথ্যে বলছেন না। যা বলছেন, সেটা তারা বিশ্বাস করেই বলছেন! নিশ্চিত ভাবেই এই ঘটনা ‘ইউফো তত্ত্ব’তে বিশ্বাসীর দাবিকে আরও জোরালো করে তুলবে।

    ২০০৫ সালে ‘ফার্স্ট অন দ্য মুন: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ নামের একটি ডকুমেন্ট্রিতে অলড্রিন জানিয়েছিলেন তিনি ও তার সঙ্গীরা একটি ইউফো দেখেছিলেন চাঁদে যাওয়ার পথে। পরবর্তী সময়ে অলড্রিন দাবি করেছিলেন, তার সেই বক্তব্যকে সম্পাদনা করে ডকুমেন্ট্রিতে ব্যবহার করা হয়েছিল। তার ইঙ্গিত ছিল, তার ওই বক্তব্যকে ‘গুরুত্বহীন’ করতেই এমনটা করা হয়েছিল। গত বছরে অলড্রিন জানিয়েছিলেন, তিনি ভিনগ্রহীদের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন।

    অবশেষে অলড্রিন-সহ বাকিদের বক্তব্যকে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাঁরা যা দাবি করেছেন, তা ‘সত্যি’ ভেবেই বলেছেন। অলড্রিন অবশ্য জানিয়েছেন, যুক্তি দিয়ে তিনি তার দাবিকে ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। কিন্তু যা বলছেন, তা মিথ্যা নয়, তিনি সত্যিই মহাকাশে অজানা উড়ন্ত বস্তুকে ভেসে বেড়াতে দেখেছিলেন।

    সারা পৃথিবী জুড়েই গত কয়েক দশক ধরে বহু মানুষ দাবি করেছেন, তারা আকাশের গায়ে অজানা গোলক দেখেছেন, যা আসলে ভিনগ্রহের প্রাণীদের মহাকাশযান। সেই নিয়ে বিতর্ক আজও চলেছে। অলড্রিনের মতো কিংবদন্তি ব্যক্তিত্বের এমন দাবি সেই বিশ্বাসকেই আরও জোরালো করে তুলল যে, ভিনগ্রহের বুদ্ধিমানরা পৃথিবীর উপরে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে।  এবেলা।

    বিশ্বকাপের জন্য নতুন কোচ পেতে যাচ্ছে জাপানের জাতীয় ফুটবল দল

    রাশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের মাত্র ২ মাস আগে জাপান দেশটির জাতীয় ফুটবল দলের কোচ পরিবর্তন করতে যাচ্ছে।
    ভাহিদ হালিলহোযিচ-এর পরিবর্তে আকিরা নিশিনো দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন।

    জাপান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রেসিডেন্ট কোহযো তাশিমা বলেন, “আমি কোচ পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি কারণ বিশ্বকাপে দলকে জেতার জন্য সাহায্য করতে আমি আমার সম্ভাব্য সবকিছুই করতে চাই। আমি বিশ্বাস করি এটাই সবচেয়ে ভাল যে নতুন কোচ হলেন এমন একজন যিনি জাপানের খেলোয়ারদের সাথে কাজ করে আসছেন।

    মিস্টার নিশিনো বর্তমানে জাপান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের টেকনিকাল ডিরেকটর এবং জে-লিগের কয়েকটি প্রথম সারির দল পরিচালনা করেছেন।

    এর আগে তিনি ১৯৯৬ আটলান্টা অলিম্পিকে জাতীয় দলের নেতৃত্ব দেন।

    অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান জাপানকে ৬ষ্ঠ বারের মত সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনে সহায়তার জন্য মিস্টার হালিলহোযিচ-এর প্রশংসা করেন।

    তবে তিনি জানান, খেলোয়ারদের কাছাকাছি যেতে পারছিলেন না কোচ। বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে নি এমন দলের সাথেও সম্প্রতি জাতীয় দল ড্র করেছে এবং ম্যাচ হেরে গেছে।

    জুন মাসে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে জাপান কলম্বিয়ার মোকাবেলা করবে।

    কুমিল্লার মামলায় শোন অ্যারেস্ট খালেদা জিয়া

    দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রলবোমা মেরে আটজনকে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো (শোন অ্যারেস্ট) হয়েছে। কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. মোস্তাইন বিল্লাল রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার এ আদেশ দেন। এদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা একই দিন এই মামলায় তার জামিনের আবেদন করেন। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছেন আদালত। জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা হওয়ার পর প্রায় দুই মাস ধরে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই মামলায় হাইকোর্ট তাকে জামিন দিলেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগ সেই জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত রেখেছে। এখন কুমিল্লার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোয় মুক্তি পেতে হলে খালেদা জিয়াকে এ মামলায়ও জামিন পেতে হবে। বিএনপির ডাকে টানা হরতাল-অবরোধের মধ্যে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুরে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি বাসে পেট্রলবোমা হামলা হলে দগ্ধ হয়ে আটজনের মৃত্যু হয়। চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার পর দিন মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে বিস্ফোরক আইনে ও হত্যার অভিযোগে আলাদা দুটি অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দুই মামলাতেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়। ওই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এর মধ্যে ঢাকার দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ায় কুমিল্লার মামলাতেও তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত ওই আবেদন গ্রহণ করে ২৮ মার্চ খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ সেদিন তাকে হাজির না করায় বিচারক গত ৩১ মার্চ কারা কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর আদেশ দেন। সেই আদেশ অনুযায়ী গতকাল রবিবার কারা কর্তৃপক্ষ আদালতকে জানায়, বিএনপি নেত্রী কারাগারে রয়েছেন। অসুস্থতার কারণে তাকে আদালতে হাজির করা যায়নি। খালেদার আইনজীবী কাইয়ুমুল হক রিংকু জানান, আদালত এ মামলায় বিএনপি নেত্রীকে গ্রেপ্তার দেখানোর পর তারা জামিনের আবেদন করলে বিচারক শুনানির জন্য ১০ এপ্রিল দিন ঠিক করে দেন।

    জাপানে রেকর্ড সংখ্যক লোকের দ্বিতীয় একটি কাজ রয়েছে

    জাপানে চাকুরিদাতার সংখ্যার সাথে ফ্রিল্যান্স কর্মীদের সংখ্যা মিলিয়ে দেখার কাজে নিয়োজিত একটি কোম্পানির অনুমিত হিসাব অনুযায়ী দেশটিতে ৭৪ লক্ষ ৪০ হাজার লোকের এখন দ্বিতীয় একটি কাজ রয়েছে।

    এরকম ব্যক্তির সংখ্যা তিন বছর আগের হিসাব থেকে বর্তমানে আরও ২১ লক্ষ ১০ হাজার বৃদ্ধি পেয়েছে।

    ফেব্রুয়ারি মাসে ল্যান্সারস নামক একটি প্রতিষ্ঠান ৩ হাজারেরও বেশি ব্যক্তির উপর এই জরিপ চালায়।

    প্রতিষ্ঠানটির অনুমিত হিসাব অনুযায়ী ১৬ লক্ষ ৫০ হাজার ব্যক্তি দ্বিতীয় কাজ হিসেবে অনলাইনে প্রবন্ধ লিখে থাকেন অথবা উপাত্ত যুক্ত করেন। অন্যদিকে, ১৩ লক্ষ ৭০ হাজার ব্যক্তি বিক্রয় বা পরিকল্পনার কাজের সংগে সংযুক্ত রয়েছেন।

    উল্লেখ্য, কাজের পদ্ধতি সংস্কার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বর্তমানে জাপান সরকার কোম্পানিগুলোকে তাদের কর্মীদের দ্বিতীয় একটি কাজ করার সুযোগ দেয়ার জন্য উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে।

    ৮ কোটি ৭০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্যফাঁস

    লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার সঙ্গে ব্যবহারকারীদের তথ্য শেয়ার করে বেশ বিপদেই পড়েছে ফেসবুক। এই কেলেঙ্কারি ফাঁস করে ক্রিস্টোফার ওয়াইলি বলেছিলেন, প্রায় ৫ কোটি মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু এবার ফেসবুক নিজেই জানিয়েছে, মোট ৮ কোটি ৭০ লাখ মানুষের তথ্য বেহাত হয়েছিল। এর মধ্যে প্রায় ১১ লাখ অ্যাকাউন্ট যুক্তরাজ্যভিত্তিক।
    ফেসবুকের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মাইক স্ক্রফার এক ব্লগে জানিয়েছেন, ‘দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ’ নামের একটি কুইজ অ্যাপের মাধ্যমে এই তথ্য ফাঁস সম্ভব হয়েছে। ফেসবুক ধারণা করছে ৩ লাখেরও বেশী মানুষ এই অ্যাপটি ব্যবহার করেছেন। আগে বলা হয়েছিল এই সংখ্যা ২ লাখ ৭০ হাজার।
    অ্যাপ ব্যবহারকারীদের প্রায় ৯৭% যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী। মোট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে ১ কোটি ৬০ লাখ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের। যুক্তরাজ্যের তথ্য কমিশনের একজন মুখপাত্র জানান, কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে তারা এই বিষয়ের তথ্য-প্রমাণাদি নিয়ে আরো যাচাই করবে।
    এই কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুক। কর্তৃপক্ষ জানতো যে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা লক্ষাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু লন্ডনভিত্তিক সংস্থাটি সেসময় দাবী করে যে তারা সেসব তথ্য মুছে দিয়েছে। এই বক্তব্যের উপর বিশ্বাস করে ফেসবুক। বিবিসি।

    সোমবার আইন প্রণেতাদের প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন আবেসহ মন্ত্রীপরিষদ

    জাপানের সরকারি ও বিরোধী দল আগামী সোমবার প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে ও তার মন্ত্রীপরিষদের উপস্থিতিতে উচ্চকক্ষের এক কমিটির বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্ব আয়োজনে সম্মত হয়েছে।

    উচ্চকক্ষের নিরীক্ষা কমিটির পরিচালকগণ সরকারের ২০১৬ রাজস্বের আর্থিক বিষয়ে বিতর্কের এই সময় নির্ধারণের জন্য বুধবার মিলিত হন। গত ডিসেম্বরে উচ্চকক্ষের এক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে এর প্রতিবেদন পেশ করা হয়।

    আইন প্রণেতারা ইরাকে স্থল আত্মরক্ষা বাহিনীর কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত লগের ব্যাপারেও প্রশ্ন রাখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রথমে এই লগ হারিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও সম্প্রতি তা পাওয়া গেছে।

    সম্ভাব্য আলোচ্য আরেকটি বিষয় হল অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক রাষ্ট্র মালিকানাধীন জমি বিক্রয় সংক্রান্ত দলিলাদি পরিবর্তন।

    মাথাপিছু আয় এখন ১৭৫২ ডলার

    চলতি অর্থবছরে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৫২ ডলার, যা আগের অর্থবছরে ছিল এক হাজার ৬১০ ডলার। এতে আগের বছরের চেয়ে আয় বাড়ল ১৪২ ডলার।
    এ ছাড়া চলতি বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ, যা গত বছরে ছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।
    চলতি অর্থবছরের এই প্রাথমিক হিসাব জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন।
    মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি ভবনের সম্মেলনকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

    ২০১৯ সালের জি২০ শীর্ষ সম্মেলন ওসাকায় ২৮ জুন শুরু

    জাপান সরকার ওসাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আগামী বছরের গ্রুপ অব ২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময়সূচী স্থির করেছে এবং জাপানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকগুলোর স্থান নির্ধারণ করেছে।

    চীফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ইয়োশিহিদে সুগা সোমবার ঘোষণা দেন যে ২-দিনব্যাপী জি২০ শীর্ষ সম্মেলন আগামী বছর ২৮শে জুন ওসাকায় শুরু হবে।

    এটা হবে জাপানে অনুষ্ঠিত প্রথম জি২০ শীর্ষ সম্মেলন।

    জি২০ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের জন্য সরকার ৮ টি মিউনিসিপিলিটি নির্বাচন করেছে।

    উত্তর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মিউনিসিপিলিটিগুলোর দিকে নজর দেওয়া যাক: পর্যটন মন্ত্রীদের বৈঠকস্থল হবে হোক্কাইদোর কুচ্চান শহর; ইবারাকি জেলার সুকুবা শহরে অনুষ্ঠিত হবে বাণিজ্য এবং ডিজিটাল অর্থনৈতিক মন্ত্রীদের বৈঠক; নিইগাতা শহরে অনুষ্ঠিত হবে কৃষি মন্ত্রীদের বৈঠক; এবং নাগানো জেলার কারুইযাওয়া শহরে অনুষ্ঠিত হবে টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য বৈশ্বিক পরিবেশ এবং শক্তি রূপান্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের বৈঠক।

    পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা বৈঠক করবেন আইচি জেলায়; স্বাস্থ্য মন্ত্রীরা ওকাইয়ামা শহরে, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রীরা মাৎসুইয়ামা শহরে; এবং অর্থমন্ত্রীরা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা বৈঠক করবেন ফুকুওকা শহরে।

    বাণিজ্য বাধা অপসারণে জাপানের উপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ

    মার্কিন সরকারের এক প্রতিবেদনে, দেশটির ভাষায় মটরগাড়ি আমদানির উপর জাপানের অশুল্ক বাধার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এসকল বাধা অপসারণের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন জাপানের উপর চাপ প্রয়োগ করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

    গতকাল মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করে এমন বিদেশী শুল্ক ও বিধিমালার উপর আলোকপাত করা হয়।

    প্রতিবেদনে, গতবছর চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৩৭ হাজার ৫২০ কোটি মার্কিন ডলার ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। এতে, এই সমস্যার জন্য চীনকে দায়ী করে মেধা সম্পদের অধিকার লঙ্ঘন এবং ধাতব পণ্যের অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

    প্রতিবেদনটিতে, ২০১৭ সালে জাপানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৬ হাজার ৮৮০ কোটি মার্কিন ডলার ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। এতে, গোমাংস এবং চালের মত কৃষিজাত পণ্যের বাজারে আরও ব্যাপকভাবে প্রবেশাধিকার দিতে টোকিওর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

    এতে, জাপানের মটরগাড়ির বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অশুল্ক জনিত বাধা আরোপ করে রাখায় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি মটরগাড়ি বিক্রিতে মন্দাবস্থা বিরাজ করছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

    বাণিজ্য মন্ত্রী রবার্ট লাইট হাইযার, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশের বিভিন্ন অন্যায্য বাণিজ্যিক বাধা দূরীকরণে বদ্ধ পরিকর বলে উল্লেখ করেন। তিনি, আমেরিকানদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ নিশ্চিত করতে বর্তমান প্রশাসন সবধরনের উপায় ব্যবহার করবে বলে উল্লেখ করেন।

    নির্বাচন করতে পারবেন না তারেক-জোবাইদা! খালেদা জিয়া ভোটার হলেও তারা ভোটার নন
    বাংলাদেশের ভোটার নন লন্ডনে বসবাসরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। একদিকে তারেক ভোটার নন, অন্যদিকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ফলে চাইলেও আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না তারেক রহমান। তিনি ইতোমধ্যে দুটি মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। যদি আদালত তার সাজা স্থগিত করে,  তারপরও তিনি বাংলাদেশের ভোটার না হওয়ার কারণে নির্বাচনে অযোগ্য থাকবেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আইনানুযায়ী কেবলমাত্র ভোটারাই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। ইসির সংশ্লিষ্টরা ইত্তেফাককে জানিয়েছেন, দশ বছর ধরে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান এখনো ভোটার হননি। ভোটার হতে হলে সশরীরে বাংলাদেশে উপস্থিত হতে হবে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হয়, সার্ভারে সরাসরি আলোকচিত্র ধারণ করতে দিতে হয়। ডা. জোবাইদা রহমানও ভোটার না হওয়ার কারণে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না।

    জানা যায়, সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রণীত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ১৯৭২ এর ১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘কোনো নির্বাচনী এলাকার যে কোনো ভোটার উক্ত এলাকার সদস্য নির্বাচনের জন্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৬ (১) এর অধীন সদস্য হওয়ার যোগ্য যে কোনো ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করতে পারবেন, তবে শর্ত থাকে যে কোনো ব্যক্তি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এবং সদস্য থাকার যোগ্য হবেন না, যদি তিনি কোনো নির্বাচনী এলাকার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না থাকেন।’

    সংবিধান অনুযায়ী ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কেননা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সংসদ গঠিত হয় ২৯ জানুয়ারি। বিদ্যমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন পূর্বে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইতোমধ্যে আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা চলছে।

    ইসি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য হলো, ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী ডা, জোবাইদা রহমান এখনো ভোটার হননি। ইসির তথ্যভান্ডারে সংরক্ষিত সাড়ে ১০ কোটি ভোটারের মধ্যে তারেক রহমান এবং জোবাইদা রহমানের ভোটার হওয়ার তথ্য নেই। সম্ভাব্য ভোটার এলাকা হিসাবে ক্যান্টনমেন্টের শহীদ মইনুল হোসেন রোড এবং বগুড়ার গাবতলী এবং তারেক রহমান, জোবাইদা রহমানের পিতা-মাতার নাম যোগ করে অনুসন্ধান করে তাদের ভোটার হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রও তারেক রহমান এবং জোবাইদা রহমানের ভোটার না হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে। ভোটার তালিকা প্রণয়নের সময় বিএনপি বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন কারা অন্তরীণ ছিলেন। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিত্সার উদ্দেশ্যে লন্ডনে যান। যদিও বিশেষ কারাগারে অন্তরীণ থাকার পরও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ভোটার হয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া ভোটার হওয়ার সময় ঠিকানা ব্যবহার করেছিলেন ক্যান্টনমেন্ট-১ (শহীদ মইনুল হোসেন রোডের বাসভবন)।

    তারেক রহমান এবং জোবাইদা রহমান প্রবাসী বাংলাদেশি। ভোটার তালিকা বিধিমালা, ২০১২ এর ১১ ধারা অনুযায়ী প্রবাসী কয়েদি, আইনগত হেফাজতে থাকা ব্যক্তিরা ভোটার হতে পারবেন। সাধারণ রেজিস্ট্রেশন অফিসাররা সংশ্লিষ্টদের ভোটার করতে পারবেন। তবে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের এখনো পর্যন্ত ভোটার করা হয়নি। সাধারণত প্রবাসীরা দেশে সশরীরে হাজির হয়ে ভোটার হতে পারেন। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় সহসা দেশে আসার সম্ভাবনা নেই। তবে কমিশন বৃহত্স্বার্থে প্রবাসে অবস্থিত প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। এই প্রক্রিয়ায় তিনি ভোটার হতে পারবেন। যদিও বিষয়টি অনেক কঠিন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, প্রবাসে অবস্থিত ভোটারদের দূতাবাসের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কেননা এনআইডি না থাকার কারণে অনেকে বিভিন্ন নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন। এজন্য আগামী ১৭ এপ্রিল একটি সেমিনার করা হবে। তবে বর্তমানে বিদেশে অবস্থিত প্রবাসীদের দূতাবাসের মাধ্যমে ভোটার করা হয়নি।