জাপানের বেসরকারি খাতের কোম্পনিতে নির্ধারিত প্রক্রিয়ার বাইরে নিয়োগ দান
জাপানে বেসরকারি খাতের চালানো এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে আগামী বছর মার্চ মাসে স্নাতক ডিগ্রী পেতে যাওয়া জাপানের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ৪০ শতাংশের বেশি চলতি মাসের এক তারিখের মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে চাকরিতে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছে। জাপানের প্রধান ব্যবসায়ী ফেডারেশন কেইদানরেন নিজেদের সদস্য কোম্পানির জন্য নিয়োগ কর্মকাণ্ডের নির্দেশিকা ঠিক করে দিয়েছে। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসমূহ জুন মাস থেকেই কেবল চাকরি প্রত্যাশী ছাত্রদের সাক্ষাৎকার নেয়া শুরু করতে পারবে। চাকরির সন্ধানে ছাত্রদের খুব বেশী সময় ব্যয় করা প্রতিহত করে লেখাপড়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় এদের করে দেয়া হচ্ছে এই নিয়মের লক্ষ্য। তবে নিয়ম ভঙ্গকারীদের জন্য কোনরকম শাস্তির বিধান এতে রাখা হয়নি। ফলে অনেক কোম্পানি এই নিয়ম অবজ্ঞা করতে শুরু করেছে।
সংবাদ বিশ্লেষণে আজ এখনকার এই প্রবণতার পটভূমি নিয়ে বলছেন এন এইচ কে’র ঊর্ধ্বতন ভাষ্যকার জুনকো ইমাই।
সদস্য কোম্পানিগুলোর জন্য কেইদানরেনের ঠিক করে দেয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময়সূচীতে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে যে জুন মাসে এদের নিয়োগ সংক্রান্ত সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরু করা উচিৎ এবং এর পরেই কেবল চাকরিতে যোগ দেয়ার প্রস্তাব কোম্পানি দিতে পারবে।
তবে জরিপে দেখা গেছে আগামী বছর মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয় যারা শেষ করতে যাচ্ছে, তাদের মধ্যে ৪০ শতাংশের বেশি চলতি মাসের এক তারিখের মধ্যে আগামী বছর চাকরিতে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছে।
কেইদানরেন অনেকদিন থেকেই নিয়োগ সংক্রান্ত নির্দেশিকা ঠিক করে আসছে। অনেকটা অলিখিত সম্মতির আকারে এগুলো ঠিক করে নেয়া হয় এবং এর ফলে লঙ্ঘনের বেলায় কোনরকম শাস্তিমূলক পদক্ষেপ এতে যুক্ত থাকে না। তবে তা সত্ত্বেও কেইদানরেনের সদস্যদের অনেকেই এটা মেনে চলছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমশ অনেক বেশী মাত্রায় নির্দেশিকা লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক এই প্রবণতার পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, চাকরির বাজার ক্রমশ বিক্রেতার বাজার হয়ে উঠছে। জাপানে জন্মহার হ্রাস পেতে থাকায় তরুণদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার আরও বেশী লোকজনকে নিয়োগ দেয়ায় কোম্পানিকে উদ্বুদ্ধ করায় কর্মী ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, প্রধানত কলেজ ছাত্রদের লক্ষ্য ধরে নেয়া ইন্টার্ন বা প্রশিক্ষণ কর্মসূচী বিস্তৃত হয়ে আসায় সম্ভাব্য নিয়োগপ্রাপ্তদের সম্পর্কে আগে থেকে তথ্য পাওয়ার সুযোগ কোম্পানি লাভ করছে। এরকম অনেক কোম্পানি সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরুর আনুষ্ঠানিক তারিখের অনেক আগে থেকেই নিজেদের ইন্টার্ন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারীদের কার্যত চাকরিতে নিয়োগের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করছে বলে জানা যায়।
অনেক বেশী জাপানি কোম্পানি আজকাল এরকম অভিযোগ করছে যে নির্দেশিকা মেনে চললে ভাল প্রার্থী তারা নিশ্চিত করতে পারবে না। কেইদানরেনকে এটা ২০২০ সালের নিয়োগ কর্মকাণ্ডের জন্য সময়সূচী পর্যালোচনা করে দেখা শুরু করার দিকে নিয়ে যায়। আমি আশা করছি নতুন এরকম একটি সময়সূচী ফেডারেশন নির্ধারণ করে নেবে, লেখাপড়া করার জন্য পর্যাপ্ত সময়ের ব্যবস্থা যেটা ছাত্রদের জন্য করে দেবে।
সংবাদ বিশ্লেষণে আজ জাপানের বিভিন্ন কোম্পানির আগে থেকে ছাত্রদের চাকরিতে নিয়োগ দেয়ার সাম্প্রতিক প্রবণতার পটভূমি নিয়ে বললেন এন এইচ কে’র ঊর্ধ্বতন ভাষ্যকার জুনকো ইমাই।