• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আগুন : নাশকতা না দুর্ঘটনা
    হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৮০৮ কোটি টাকা চুরির ঘটনায় এখনো বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছে। ওই ঘটনার এক বছর পার হতে না হতে বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের একটি ই-মেইল থেকে ব্যাংকগুলোকে ভুয়া বার্তা পাঠানো হয়। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে একই বিভাগে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলো। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকে একের পর এক এমন ঘটনা ঘটেই চলেছে। এসব ঘটনা কাকতালীয় না পরিকল্পিত তা নিয়ে সর্বমহলে আলোচনা ও গুঞ্জন চলছে। জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। অনেকেই বলছেন-এটি শুধুমাত্র দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা, নাকি ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতিবাজরা তাদের অপরাধ আড়াল করতে এই অগ্নিকান্ড ঘটিয়েছেন। রিজার্ভ চুরির সাথে জড়িতরা তথ্য-প্রমাণ পুড়িয়ে ফেলার জন্য তিন দিনের এক লম্বা ছুটির আগে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলেও অনেকের ধারণা। আগুনের ভয়াবহতা খুব বেশি না। তবে এ নিয়ে সন্দেহ অত্যন্ত তীব্র। ঘটনার পরপর বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন টকশোতে এ নিয়ে তীর্যক সমালোচনা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও রিজার্ভ চুরির সাথে জড়িতরা তথ্য-প্রমাণ গায়েব করতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে এমনটাই আলোচিত হয়েছে। এই ঘটনাকে পরিকল্পিত বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন। বিশেষ করে রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত বিবিসি বাংলায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশের দুই ঘণ্টার মধ্যে আগুন লাগায় অনেকে নাশকতা বলতেও দ্বিধা করেননি। বিএনপি নেতারাও রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ না হওয়ায় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আগুন লাগার ঘটনায় জনগণের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। একই সঙ্গে এই ঘটনার সাথে সরকার জড়িত বলেও উল্লেখ করেছেন। এদিকে গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন দুই তদন্ত কমিটির সদস্যরা। একই সঙ্গে আগুন লাগার ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে অগ্নিকান্ডের খবর বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ ফায়ার সার্ভিসকে জানায়নি। স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রথম জানতে পারেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। একই সঙ্গে দেশের অর্থনীতির নিয়ামক এই প্রতিষ্ঠানের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ভবনের অবকাঠামো অগ্নিনির্বাপক উপযোগী নয় বলেও জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
    অর্থনীতিবিদ ড. আবু আহমেদ বলেন, একের পর এক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্ঘটনা রহস্যজনক। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন বেহাল অবস্থায় বড় ধরনের সঙ্কট দেখা দিতে পারে। রিজার্ভ চুরির পর বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হয়েছে। একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি হওয়া বিরল ঘটনা। এমতাবস্থায় সরকারকে আরও গুরুত্বের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে।
    বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেছেন, এটা বিদেশী ষড়যন্ত্র। বিশেষ করে পাকিস্তানের। প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা পাকিস্তান পন্থীরাও এ ঘটনা ঘটাতে পারে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পাকিস্তান আমাদের শত্রæ।
    রিজার্ভ চুরি ও আগুন লাগার দুটি ঘটনা কাকতালীয় নাকি উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক আছে এ নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানকে। এমন প্রশ্নে বিব্রত অর্থপ্রতিমন্ত্রী প্রকাশ্যে এর সাদৃশ্যের কথা স্বীকার না করলেও বিষয়টি নিয়ে উচ্চতর তদন্ত করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
    আধুনিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যাংক তহবিল লোপাটের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা। চুরি হওয়া আট কোটি দশ লাখ ডলার চলে গিয়েছিল ফিলিপিন্সের ব্যাংক ও জুয়ার বাজারে। সে অর্থ ফেরত আনার জন্য তদ্বিরও করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু বিষয়টি এখন সে দেশে অনেকটাই স্থবির আছে।
    সূত্র মতে, রিজার্ভ চুরির ঘটনা নিয়ে এমনিতেই সমালোচিত বাংলাদেশ ব্যাংক, এর ওপর বৃহস্পতিবারের আগুন লাগার ঘটনা বিষয়টিকে আবারও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এ দু’টি ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক আছে কিনা তা নিয়েও চলছে জোর আলোচনা। উভয় ঘটনার মধ্যে একটি সাদৃশ্য এ প্রশ্নটিকে আরও জোরালো করেছে, আর তা হচ্ছে গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছিল ৩ দিনের ছুটির ফাঁকে, এবারও আগুন লাগার ঘটনার পরে রয়েছে তিন দিনের ছুটি। সঙ্গত কারণেই, দুটি ঘটনা কাকতালীয় নাকি উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক আছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। সাধারণ মানুষ থেকে বিশেষজ্ঞরাও বিষয়টিকে রহস্যজনক মনে করছেন। তাদের মতে, রিজার্ভ চুরির ঘটনা ধামাচাপা বা নথিপত্র গায়েব করতেও কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩০ তলা ভবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান ১৪ তলায় অবস্থিত বৈদশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ। আর এর ঠিক উপরের তলাতেই রয়েছে আরেক গুরুত্বপূর্ণ দেশের সব সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মনিটরিং দফতর। যেখানটায় বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা ও দেশের ব্যাংক খাতের বড় বড় অনিয়মের নথিপত্র রয়েছে। অপরদিকে নিচের তলাতে ব্যাংকিং রেগুলেশন এন্ড পলিসি ডিপার্টমেন্টের মত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ।
    অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম. এ. মান্নান এমপি গতকাল তাঁর বাসভবনে সাংবাদিকদের বলেন, রিজার্ভের টাকা লুটের পর ই-মেইলে ভুয়া বার্তার ঘটনা। এর পরপরই একই বিভাগে আগুন লাগার ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে নানান প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। পর পর কেনো এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে! এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো গাফিলতি আছে কি-না? সে বিষয়ে গভীরভাবে উচ্চতর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের আর্থিক খাতের প্রধান নিয়ামক ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’। এখানে একের পর এক দুর্ঘটনায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিরা উদ্বিগ্ন। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে সরকার। বিশেষ করে এসব ঘটনায় অন্যকোনো লিংক আছে কি-না, তা খতিয়ে দেখা হবে। আর্থিক খাতের শৃঙ্খলার স্বার্থে সরকার এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেবে না।
    বৃহস্পতিবার এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম. এ. মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়াসহ সরকার ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এসব কর্তাব্যক্তির উপস্থিতি বাড়তি গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্ব কেন? অবশ্যই কর্তাব্যক্তিরা বলেছেন, কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত সুরক্ষিত থাকার কথা। এতে বিন্দুমাত্র ব্যত্যয় ঘটলে উদ্বিগ্ন হওয়াই স্বাভাবিক। যদিও গতকাল এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এই ঘটনাকে স্বাভাবিক বলেই মন্তব্য করেছেন। এদিকে কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান এবং দেশের আর্থিক খাতের প্রধান নিয়ামক এই ব্যাংকের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন রাখেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান। তিনি বলেন, অগ্নিকাÐ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব লক্ষ্য করা গেছে। ভবনের অবকাঠামো অগ্নিনির্বাপক উপযোগী নয়। তাছাড়া ফায়ার অ্যালার্মগুলোও অকার্যকর।
    ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ গতকাল সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা মান্ধাতা আমলের। একটি কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান হওয়ার পরও অগ্নিনির্বাপণে কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় না। তিনি আরও বলেন, আগুন লাগার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তাদের কিছু জানানো হয়নি। এলাকাবাসীর ফোনে তারা নিজ উদ্যোগে ছুটে গেছেন। আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, বৈদ্যুতিক শর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তদন্তে বিস্তারিত আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা যেন জোরদার করা হয় সেজন্য তদন্ত প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হবে বলে জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান। এছাড়া মাঝে মধ্যে অগ্নিকান্ড ঘটলে কী করণীয় সে বিষয়ে ট্রায়াল যেন নিয়মিত করা হয় সেই সুপারিশও থাকবে কমিটির পক্ষ থেকে। পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপনে ফায়ার অ্যালার্মসহ দরকারি সরঞ্জামাদি রাখা এবং কর্মকর্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধির ওপরও গুরুত্বারোপ করবেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
    এদিকে, গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন দুই তদন্ত কমিটির সদস্যরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত কমিটির তিন সদস্য গতকাল সকাল ১০টা ২৪ মিনিটে ৩০ তলা ভবনের ১৪ তলায় যান। সেখানে তারা দেড়-দুই ঘণ্টা অবস্থান করেন। পরে সাংবাদিকদের তদন্ত কমিটির প্রধান ও নির্বাহী পরিচালক আহমেদ জামাল সাংবাদিকদের বলেন, আগুন লাগার সময়ে ওই বিভাগের কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না। রাত ৮টার মধ্যে নিরাপত্তা বিভাগ নিয়মানুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব বিভাগের দরজা বন্ধ করে দেয়। আর রাত ৯টার পরে আগুন লাগে। বিষয়টা প্রথমে নিরাপত্তা বিভাগ জানতে পেরে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। এতে বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাক ও তার সহকারীর দুইটি কক্ষই পুড়ে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় অন্যান্য ডেস্কের কোনো ক্ষতি হয়নি। ওই দুই কক্ষে থাকা টেবিল, চেয়ার, সোফা ইত্যাদি পুড়েছে। কিন্তু ওইখানে গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র ছিল না বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি আরও বলেন, আগুন লাগার ঘটনায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ খুবই সামান্য। তবে ঠিক কী কারণে আগুন লেগেছে, তা স্পষ্ট করে তিনি বলেননি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা বিভাগের মহাব্যবস্থাপক লে. কর্নেল (অব.) মো. মাহমুদুল হক খান চৌধুরী ও কমন সার্ভিসেস্ ডিপার্টমেন্ট-২-এর মহাব্যবস্থাপক মো. তফাজ্জল হোসেন।
    জানা গেছে, মহাব্যবস্থাপকের কক্ষে থাকা দু’টি কম্পিউটার, কয়েকটি চেয়ার, দু’টি টেবিল, একটি ফটোকপি মেশিন এবং মহাব্যবস্থাপকের ব্যক্তিগত কিছু ফাইলপত্র পুড়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, তদন্ত শেষ হলে অগ্নিকান্ডের প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছেন- বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হতে পারে। রিজার্ভ চুরির তথ্য আড়াল করা বা বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে অগ্নিকান্ডরর যে কথা বলা হচ্ছে, তাও সঠিক নয়। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে বিভ্রান্তিকর কথা বলা হচ্ছে। কেননা বাংলাদেশ ব্যাংকের যে বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের কক্ষে আগুন লেগেছে সেখান থেকে বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়। এখান থেকে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদন হয়না, এমনকি আর্থিক লেনদেন সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্যও থাকে না। এদিকে গতকাল দুপুরের পর পরই ফায়ার সার্ভিস গঠিত তদন্ত কমিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের আগুন পোড়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা বিকেল পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। এসময়ে তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
    আলোচনায় রিজার্ভ চুরি ও ৩ দিনের ছুটি
    ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রæয়ারি দিবাগত রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফট সিস্টেম হ্যাকড করে রিজার্ভ ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ৮০৮ কোটি টাকা চুরি করা হয়। সেদিনটা ছিল বৃহস্পতিবার। পরের দুইদিন শুক্র ও শনিবার বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে সাপ্তাহিক ছুটি পালিত হয়। আবার যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি। আবার ৭ ফেব্রæয়ারি (সোমবার) চীনের নববর্ষ উপলক্ষে ছুটি ছিল ফিলিপাইনে। এই ছুটির ফাঁকে মার্কিন ফেডারেল ব্যাংকে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে স্থানান্তর করা হয় ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকে। তিন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনের ছুটির দিনগুলোকে সমন্বয় করেই হ্যাকাররা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এবার আগুন লাগার পরের দুইদিন বাংলাদেশে সাপ্তাহিক ছুটি, আবার রবিবার বিভিন্ন দেশের ছুটির সঙ্গে বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবসের ছুটিও রয়েছে।
    ছুটির ফাঁকে আগুন লাগার ঘটনায় রিজার্ভ চুরির সময়ের সাদৃশ্য থাকা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম. এ. মান্নান বলেন, আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান থেকে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলা ঠিক হবে না। তবে আপাতত এমনটি মনে হচ্ছে না। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সঙ্গে এই ঘটনার কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও উল্লেখ করেন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বারবার অগ্নিকান্ডের ঘটনা কোনওভাবেই কাম্য নয় উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কাকতালীয় হোক আর যা-ই হোক, এভাবে আগুন লাগার পেছনে অন্য কোনও কারণ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। আমাদের আইসিটি বিভাগ, বুয়েট ও কম্পিউটার সায়েন্সের বিশেষজ্ঞদের দেখানো হবে। ঘটনা যা-ই ঘটুক, প্রকৃত ঘটনা সবাইকে জানানো হবে। এখানে ঢেকে রাখার কিছু নেই। সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি দেশবাসীকে সরকারের প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানান।
    রিজার্ভ চুরি নিয়ে বিবিসি বাংলা
    বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জড়িত। অপরাধীরা ঢাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিবিসি বাংলা ফিলিপিন্সের ইনকোয়ারার পত্রিকার অনুসন্ধানী সাংবাদিক ড্যাক্সিম লুকাসের বরাত দিয়ে একটি সংবাদ বৃহস্পতিবার প্রকাশ করে। যিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রথমে বিস্তারিত ফাঁস করে ব্যাপক আলোড়ন তোলেন। এই সংবাদ প্রকাশের দুই ঘন্টা পরই বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুন লাগে। প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে- ফিলিপিন্সের কিছু কর্মকর্তা বিশ্বাস করেন, যারা এ অপরাধের সূচনা করেছিল তারা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভেতরের লোক। ফিলিপিন্সের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিক ড্যাক্সিম লুকাসকে বলেছে- বাংলাদেশ অযথাই ফিলিপিন্সের ঘাড়ে বেশি দোষ চাপাচ্ছে। অপরাধীরা হয়তো ঢাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
    বাংলাদেশ ব্যাংকের জিডি
    বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে আগুন লাগার ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্মপরিচালক নুরুল ইসলাম মতিঝিল থানায় জিডি করেন। মতিঝিল থানার এসআই ইব্রাহিম জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জিডিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৯ টা ২০ মিনিটের দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যালয় ৩০তলা ভবনের ১৪ তলার বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে আগুনের শিখা দেখা যায়। তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ৩০ মিনিটের ভেতরের মধ্যে আগুনের শিখা নিভিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বন জানানো হয়েছে।
    উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার ২০ মিনিটের দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩০ তলা ভবনের ১৪ তলায় বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার মাসুদ বিশ্বাসের কক্ষে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করে রাত ১০টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন পুরোপুরি নেভানো হয় রাত ১০টা ৩৪ মিনিটে। এ ঘটনা তদন্তে দু’টি কমিটি গঠন করা হয়। একটি তিন সদস্যের অন্যটি পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ জামালের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিকে ২৮ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

    ২৫শে মার্চ: গণহত্যা দিবস আজ

    আজ সেই ভয়াল ও বীভত্স কালরাত্রির স্মৃতিবাহী ২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস। মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত হত্যাযজ্ঞের দিন। একাত্তরের অগ্নিঝরা এই দিনে বাঙালির জীবনে নেমে আসে নৃশংস ও বিভীষিকাময় কালরাত্রি। এ রাতে বর্বর পাক বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর হিংস্র দানবের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আর এদিন বাঙ্গালি জাতি তথা বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছিল ইতিহাসের এক নৃশংস বর্বরতা।

    ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে ঢাকায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী কর্তৃক বর্বরোচিত হামলার সেই বিয়োগান্তক ঘটনার স্মরণে এবারই প্রথমবারের মতো জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হবে। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস এবং একুশে ফেব্রুয়ারির মতোই ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঘটানো গণহত্যার দিনটি জাতীয়ভাবে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। স্বাধীনতার প্রায় ৪৬ বছর পর গত ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে সর্ব সম্মতিক্রমে এ প্রস্তাব পাস হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ ৫৬ জন সংসদ সদস্য উল্লিখিত প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন। সংসদে পাস হওয়ার পর গত ২০ মার্চ মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ দিবসটি পালনে গত ২১ মার্চ প্রজ্ঞাপন জারি করে। দিবসটি আন্তর্জাতিকভাবে পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে একই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সমর্থন আদায়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ৯ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিকভাবে কেন গণহত্যা দিবস পালন করা উচিত, এর পেছনে সমস্ত তথ্য উপাত্ত, যুক্তি উপস্থাপনে ডকুমেন্টস তৈরি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে এসব তথ্য-উপাত্ত বিভিন্ন দেশ বা সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছানোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে সবাই ব্যস্ত। তাই এটা শেষ হলেই ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনের যুক্তিগুলো তুলে ধরে তারা পুরোদমে কূটনৈতিক তত্পরতা জোরদার করবে।
    কী ঘটেছিল সেদিন: ২৫ মার্চের সেই দিন শেষে নেমেছে সন্ধ্যা। গভীর হতে শুরু করেছে রাত। তখনো কেউ জানে না কী ভয়ঙ্কর, নৃশংস ও বিভীষিকাময় রাত আসছে বাঙালির জীবনে। ব্যস্ত শহর ঢাকা প্রস্তুতি নিচ্ছে ঘুমের। ঘরে ঘরে অনেকে তখন ঘুমিয়েও পড়েছে। রাত সাড়ে ১১টায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে জীপ,  ট্রাক বোঝাই করে নরঘাতক কাপুরুষ পাকিস্তানের সৈন্যরা ট্যাঙ্কসহ আধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ে ছড়িয়ে পড়লো শহরজুড়ে। আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে গর্জে উঠলো আধুনিক রাইফেল, মেশিনগান ও মর্টার। মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণের মাধ্যমে পাক জল্লাদ বাহিনী নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। শুরু হলো বর্বরোচিত নিধনযজ্ঞ আর ধ্বংসের উন্মত্ত তান্ডব। হকচকিত বাঙালি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঢলে পড়লো মৃত্যুর কোলে। মানুষের কান্না ও আর্তচিত্কারে ভারি হয়ে ওঠে শহরের আকাশ। মধ্যরাতে ঢাকা পরিণত হলো লাশের শহরে। ঢাকা শহরের রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, নীলক্ষেতসহ বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে তারা বাঙালি নিধন শুরু করে। ঢাকাসহ দেশের অনেক স্থানে মাত্র এক রাতেই হানাদাররা নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল অর্ধ লক্ষাধিক বাঙালিকে। আর এর মানব ইতিহাসের পাতায় রচিত হলো কালিমালিপ্ত আরেকটি অধ্যায়। নিরস্ত্র, ঘুমন্ত মানুষকে বর্বরোচিতভাবে হত্যার ঘটনায় স্তম্ভিত হলো বিশ্ববিবেক।
    শুধু নিষ্ঠুর ও বীভংস হত্যাকান্ডই নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে থাকা গণমাধ্যমও সেদিন রেহাই পায়নি জল্লাদ ইয়াহিয়ার পরিকল্পনা থেকে। পাক হানাদাররা সেই রাতে অগ্নিসংযোগ, মর্টার সেল ছুঁড়ে একে একে দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক সংবাদ, জাতীয় প্রেসক্লাব ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। এ হামলায় জীবন দিতে হয় বেশ কয়েক জন গণমাধ্যম কর্মীকেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও জান্তাদের কালো থাবা থেকে রক্ষা পায়নি। ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য. ড. মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের নয় শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। তাদের এই সশস্ত্র অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল একটি। আর তা হলো বাঙালির মুক্তির আকাঙ্খাকে অঙ্কুরেই ধ্বংস করা।
    ২৫ মার্চ রাত সোয়া ১টার দিকে এক দল সৈন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। তারা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। তখন বঙ্গবন্ধু বীরের মতো দোতলার ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়ান। রাত ১টা ২৫ মিনিটের দিকে এ বাড়ির টেলিফোনের লাইন কেটে দেয়া হয়। এ সময় বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্নকে চিরতরে নস্যাতের জন্য বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় হায়েনার দল। অবশ্য গ্রেফতার হওয়ার আগেই ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর অর্থাত্ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু তত্কালীন ইপিয়ারের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেন। আর এই ওয়্যারলেস বার্তা চট্টগ্রাম ইপিআর সদর দফতরে পৌঁছে। চট্টগ্রাম উপকূলে নোঙ্গর করা একটি বিদেশি জাহাজও এ বার্তা গ্রহণ করে। তখন চট্টগ্রামে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের তত্কালীন শ্রম বিষয়ক সম্পাদক জহুর আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা সেই রাতেই সাইক্লোস্টাইল করে শহরবাসীর মধ্যে বিলির ব্যবস্থা করেন। বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীনতার ঘোষণার ভিত্তিতেই ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়। এই রাত একদিকে যেমন বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম মুহূর্তটি প্রত্যক্ষ করেছিল, তেমনি এ রাতেই সূচিত হয়েছিল জঘন্যতম গণহত্যার। পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়েছিল তাদের এ দেশীয় দোসর ঘাতক দালাল, রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর সদস্যরা।
    নানা কর্মসূচী:জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে সেই কালরাতে নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার বীর বাঙালীদের। রাজধানীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। শোকাবহ জাতি ঘৃণা ও ধিক্কার জানাবে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশী দোসর রাজাকার, আল-বদর ও আল-শামসদের। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দিবসটি পালনে ২ দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রর্দশনীসহ নানা কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভ সংলগ্ন স্থানে ‘রক্তাক্ত ২৫ মার্চ: গণহত্যা ইতিবৃত্ত’ শিরোনামে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা। এই প্রদর্শনী চলবে দু’দিন। এছাড়া দেশের প্রত্যেক জেলা ও উপজেলায় গণহত্যা দিবস পালন উপলক্ষে আলোচনা সভা, গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গীতিনাট্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কর্মসূচি রয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ বিকাল ৩টায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাজধানীর লালবাগ আজাদ মাঠে এবং একই সময়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মিরপুর বাংলা কলেজ মাঠে জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ। এছাড়া ১৪ দলীয় জোটের উদ্যোগে আজ বেলা ১১টায় রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া
    আগামী ৩০ মার্চ যশোরের চুকনগর বধ্যভূমিতে বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় ১৪ দলের জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। জনসভা দুটিতে নেতৃত্ব দিবেন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
    আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সারাদেশে সভা, সমাবেশ, পশাভাযাত্রা, আলোকচিত্র প্রদশর্নীসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযথ মর্যাদায় ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করার জন্য আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।