• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

    সিলেটের বহুল আলোচিত কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলায় ছাত্রলীগ নেতা বদরুলকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার দুপুরে সিলেট মহানগর দায়রা জজ বিচারক আকবর হোসেন মৃধার আদালত এ রায় ঘোষণা করে। এদিকে, আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে খাদিজার পরিবার। এছাড়া উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছে বদরুলের আইনজীবী। তবে নতুন করে জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছেন স্বয়ং খাদিজা আক্তার নার্গিস।
    এর আগে গত বছরের ৩ অক্টোবর এমসি কলেজের পুকুরপাড়ে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম। ঘটনার পরপরই শিক্ষার্থীরা বদরুলকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। হামলার ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদি হয়ে বদরুলকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন। গত ৫ অক্টোবর বদরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত। এছাড়া ঘটনার পর শাবি থেকে বহিষ্কার করা হয় বদরুলকে। গত ২৬ ফেব্রæয়ারি আদালতে সাক্ষ্য দেন খাদিজা। পরে ১ মার্চ মামলাটি সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। ৫ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের তারিখ ধার্য করেছিলেন। গতকাল ওই মামলার রায় প্রকাশ করেছেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ বিচারক আকবর হোসেন মৃধা।
    আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ জানান, আদালত বদরুলের অপরাধ আমলে নিয়ে তাকে যাবজ্জীবন দন্ডাদেশ দিয়েছেন। একইসাথে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই মাসের কারাদন্ড প্রদান করেছেন। তিনি আরো জানান, মামলায় ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্যপ্রমাণের মাধ্যমে বদরুলের অপরাধ প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে।
    এদিকে, খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার রায় ঘোষণার সময় আদালত ছিল জনাকীর্ণ। বদরুলের বিরুদ্ধে কি রায় হয়, সেটা জানতে ছিল উৎসুক মানুষের ভিড়। রায় প্রকাশের পর উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে সন্তোষ প্রকাশ করেছে সিলেটের কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসের পরিবার। খাদিজার চাচা ও মামলার বাদি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বদরুলের বিরুদ্ধে এমন রায়ে আমি, আমার পরিবার সবাই খুশি। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট। কুদ্দুস আরো বলেন, আমরা আশা করছি, উচ্চ আদালতে যদি আসামিপক্ষ আপিল করে, তবে সেখানেও এই রায় বহাল থাকবে। এ রায়কে ‘যুগান্তকারী রায়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ কে এম শিবলী।
    রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে বের হওয়ার সময় জনগণের উদ্দেশে চিৎকার করে বদরুল বলেন, জন্ম বাংলায়, মরব বাংলায়, জয় বাংলা।
    এদিকে, রায় প্রকাশের পর সিলেট সদর উপজেলায় খাদিজা আক্তার নার্গিসের গ্রামের বাড়িতে সাংবাদিকরা যান। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের খাজিদা তার প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বদরুল আলমের বিরুদ্ধে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, নতুন করে জীবন গড়তে সব চেষ্টাই করব। রায়ে আমি খুশি।

    প্রচলিত ভুল

    একটি ভিত্তিহীন কাহিনী : দুই ব্যক্তির রূহ কবজ করতে মালাকুল মাউতের কষ্ট হয়েছে

    লোকমুখে প্রসিদ্ধ- আল্লাহ মালাকুল মাউতকে জিজ্ঞেস করলেন, হে মালাকুল মাউত! বনী আদমের রূহ কবজ করতে কি তোমার কখনো কষ্ট হয়নি? মালাকুল মাউত উত্তরে বললেন, জী, দুই ব্যক্তির রূহ কবজ করতে আমার কষ্ট হয়েছে। এক. একবার জাহাজ ডুবে গেলে এক মহিলা কাষ্ঠখ- ধরে সমুদ্রে ভাসছিল। এমতাবস্থায় তার একটি ছেলে সন্তান প্রসব হয়। এমন সময় ঐ মহিলার মৃত্যুর সময় চলে আসে। তো ঐ সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর দিকে তাকিয়ে তার মায়ের জান কবজ করতে আমার খুব কষ্ট হয়েছিল। দুই. শাদ্দাদের জান কবজ করতে আমার কষ্ট হয়েছিল; যখন সে তার দুনিয়ার জান্নাত বানায় এবং সেখানে প্রবেশ করার মুহূর্তে এক পা ভেতরে দেওয়ার সাথে সাথে আরেক পা বাইরে থাকা অবস্থায়ই তার মৃত্যুর পরওয়ানা চলে আসে আর আমি তার জান কবজ করে নিই।

    আল্লাহ বললেন, ওহে মালাকুল মাউত! সমুদ্রের মধ্যে যে শিশুর মায়ের জান কবজ করতে তোমার কষ্ট হয়েছিল সে শিশুটিই ছিল শাদ্দাদ!

    কেউ কেউ কিসসাটিকে এভাবেও বলে- (সংক্ষেপে) …জনমানবশূন্য মরুভূমির মধ্যে সদ্যভূমিষ্ঠ দুগ্ধপোষ্য শিশুর মায়ের জান কবজ করতে… এবং এক অশীতিপর বৃদ্ধ কামারকে তার লাঠির নিচের অংশে লোহা লাগিয়ে দিতে বলছিল, যাতে লাঠিটি অনেক বছর টেকসই হয়। এমতাবস্থায় বৃদ্ধের মৃত্যু চলে আসে আর আমি তার জান কবজ করি। তো এ কথা শুনে আল্লাহ বলেন, ঐ শিশু ও এই বৃদ্ধটি একই ব্যক্তি।

    কেউ কেউ এভাবেও বলে, আল্লাহ মালাকুল মাউতকে জিজ্ঞাসা করলেন, বনী আদমের রূহ কবজ করতে তোমার কখনো কান্না আসেনি? মালাকুল মাউত উত্তরে বললেন, হে আমার রব! বনী আদমের রূহ কবজ করতে গিয়ে আমি একবার কেঁদেছি, একবার হেসেছি এবং একবার ভীত-সন্ত্রস্ত হয়েছি। …জনমানবশূন্য মরুভূমিতে সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর মায়ের জান কবজ করতে গিয়ে শিশুটির কান্না ও অসহায়ত্ব দেখে কেঁদেছি। আর ভয় পেয়েছি এক আলেমের জান কবজ করতে গিয়ে। আমি যখন তার জান কবজ করতে যাই তো তার কামরা থেকে এক নূর বের হয় তা দেখে আমি ভয় পেয়ে যাই। আল্লাহ বললেন, ঐ আলেমই হল মরুভূমির ঐ শিশু; তাকে আমি লালন-পালন করেছি।

    (মালাকুল মাউত বলেন,) আর এক ব্যক্তি মুচির কাছে তার জুতা দিয়ে বলল, এটা এমনভাবে সেলাই করে দাও যাতে এক বছর পরতে পারি। সে ঐ জুতা পায়ে দেয়ার পূর্বেই তার জান কবজ করেছি আর হেসেছি- কয়েক মুহূর্ত তার হায়াত নেই আর সে এক বছরের জন্য জুতা ঠিক করছে।

    যাইহোক এগুলো সবই ভিত্তিহীন কিসসা-কাহিনী। কোনো নির্ভরযোগ্য সনদে তা বর্ণিত হয়নি।

    ইতিপূর্বে এক সংখ্যায় আমরা শাদ্দাদের বেহেশত কেন্দ্রিক কিসসা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম- শাদ্দাদের বেহেশতের কাহিনীর কোনো ভিত্তি নেই, এর কোনো অস্তিত্ব নেই। (আলইসরাঈলিয়্যাত ওয়াল মাউযূআত ফী কুতুবিত তাফসীর ২৮২-২৮৪)। তেমনি এই ঘটনায়ও আমরা শাদ্দাদের বেহেশতের আলোচনা দেখতে পাচ্ছি। সুতরাং তা কখনোই সত্য হতে পারে না।

    এছাড়াও এ ঘটনায় আমরা আরেকটি বিষয় দেখতে পাচ্ছি, শাদ্দাদের মত নাফরমানের জান কবজ করতে মালাকুল মাউতের কষ্ট হচ্ছে; সে তার আল্লাহদ্রোহিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছতে চাচ্ছে এবং আল্লাহদ্রোহিতায় লিপ্ত রয়েছে অথচ মালাকুল মাউত তার জান কবজ করতে কষ্ট পাচ্ছেন। এটি এ ঘটনা বাতিল হওয়ার আরেকটি প্রমাণ।

    আল্লাহ আমাদের এ জাতীয় অলীক কিসসা-কাহিনী বলা ও বিশ্বাস করা থেকে হেফাজত করুন।