• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • জাপানকে ছাড়াই দ.কোরিয়ায় আন্তর্জাতিক যুদ্ধজাহাজ প্রদর্শনী শুরু

    দক্ষিণ কোরিয়া বুধবার জাপানকে ছাড়াই বিশ্বের ১৩টি দেশের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক যুদ্ধজাহাজ প্রদর্শনী শুরু করেছে। জাপানের যুদ্ধজাহাজ থেকে বিতর্কিত ‘রাইজিং সান’ নৌ পতাকা সরিয়ে নিতে সিউল অনুরোধ জানালে এর প্রতিবাদ হিসেবে টোকিও এ প্রদর্শনী থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়। খবর এএফপি’র।
    দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় জিজু দ্বীপ উপকূলে পাঁচ দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে প্রাথমিকভাবে জাপানের নৌবাহিনীর নাম অন্তর্ভুক্ত থাকলেও তাদের ওই পতাকা উড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয় এবং এটাকে কেন্দ্র করে তাদের সাবেক এ উপনিবেশে টোকিও বিরোধী একের পর এক বিক্ষোভের প্রতিবাদে তারা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকে।
    ১৯৫৪ সাল থেকে এ প্রতীক জাপানের নৌ-প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি নিশান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশ প্রতীকটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে তাদের সামরিক আগ্রাসনের প্রতীক হিসেবে দেখে থাকে।
    কোরিয়ার নাগরিকরা এখনো জাপানের ১৯১০-‘৪৫ সালের উপনিবেশ শাসনের ব্যাপারে বিরক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র এ দুই প্রতিবেশী দেশকে ঐতিহাসিক বিভিন্ন ইস্যু এবং টোকিও’র বলে দাবি করা সিউল নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন ছোট দ্বীপ নিয়ে প্রায় মুখোমুখি অবস্থান নিতে দেখা যায়।
    সিউলের নৌবাহিনী এ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া সকল দেশকে তাদের জাহাজগুলোতে কেবলমাত্র দেশের জাতীয় পতাকা প্রদর্শনের আহবান জানানোর পর টোকিও গত সপ্তাহে এ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেয়।
    টোকিও এ পতাকা উত্তোলন না করার সিউলের অনুরোধ নাকচ করে দিয়ে যুক্তি তুলে ধরে যে জাপানের আইন অনুযায়ী তাদের দেশের জাহাজগুলোতে ‘রাইজিং সান’ পতাকা উড়ানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
    বাবর-পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, তারেকসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন
    ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ১৯ জনের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী। এছাড়াও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।
    মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— মো. তাজউদ্দিন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মো. মাজেদ ভার্ট, আব্দুল মালেক, মহিবুল্লাহ ওরফে অভি, মাওলানা আবু সাঈদ, আবুল কালাম আজাদ, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন মো. তামিম, মঈনুদ্দিন শেখ, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন, মো. লুত্ফুজ্জামান বাবর, মেজর জে. রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রি. জে. (অবঃ) আব্দুর রহিম, মোহাম্মদ আবদুস সালাম পিন্টু ও মো. হানিফ।

    যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন— শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান সুমন, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর, মো. আরিফুল ইসলাম, মুহিবুল মুক্তাকিন, আনিসুল মুরসালিন, খলিল, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল, তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, শাহ মোফাজ্জেল কায়কোবাদ, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও রাতুল আহমেদ বাবু।

    প্রায় ১০ বছর বিচারিক কার্যক্রম শেষে আজ বুধবার দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দীন এ রায় ঘোষণা করেন। রায়কে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয় পুরো রাজধানীজুড়ে। আদালত প্রাঙ্গণ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ব্যাপক পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
    গ্রেনেড হামলার প্রধান টার্গেট ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। শুরু থেকেই নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ভিন্ন খাতে নিতে নানা চেষ্টা করা হয়। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। বেরিয়ে আসে অনেক অজানা তথ্য। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় আনা দুই মামলায় আসামির সংখ্যা ৪৯ জন। এদের মধ্যে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জঙ্গি মাওলানা তাজউদ্দিন আহমেদসহ ১৮ জন পলাতক রয়েছেন। কারাগারে রয়েছেন, বিএনপি নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ৩১ জন।

    বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন

    নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি ইস্যুতে বিতর্ক চলছে। সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে চলছে ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের’ অধীনে নির্বাচনের দাবিতে মাঠে নামার প্রস্তুতি। তিনি জোর দিয়েই ঘোষণা দিয়েছেন, এই দাবীর আন্দোলনে ব্যর্থ হবেন না। ক্ষমতাসীন দলের নীতি নির্ধারকরা এতোদিন বলে আসছেন ‘নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রিসভা হবে ছোট’। কিন্তু এখন ‘সেই সুর’ অনেকটা বদলে গেছে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে সব মহল থেকে ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার’ গঠনের দাবি বহাল থাকলেও; এখন বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন করার প্রস্তুতি চলছে। গতকালের মন্ত্রিসভার বৈঠকে অধিকাংশ মন্ত্রীই এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। বেশির ভাগ মন্ত্রীই বতর্মান মন্ত্রিসভা বহাল রেখেই জাতীয় নির্বাচন চাচ্ছেন। তবে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো মন্তব্য করেননি বলে জানা গেছে।

    সংবিধান বিশেষজ্ঞরা জানান, সংবিধান থেকে ২০১১ সালে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি’ বাতিল বিল পাসের সময় পঞ্চদশ সংশোধনী এমন ভাবে করা হয়েছে যে, নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি কেমন হবে সে ধরনের কোনো দিকনির্দেশনা বর্তমান সংবিধানে রাখা হয়নি। জাতীয় নির্বাচনের সময় সরকারের ধরন কেমন হবে এমন বিধানও নেই। সবকিছু রাখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাধীন। জানতে চাইলে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, সংবিধানে না থাকলেও প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ ছোট আকারে করতে পারেন। এই বিষয়টি একেবারেই নির্ভর করে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার ওপর। প্রায় অভিন্ন কথা বলেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেশের জনগণ ‘ভোটের অধিকার’ প্রত্যাশা করে। তিনি ২০১৪ সালে যে প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন সেটাই তিনি এবারও করতে পারেন।
    ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। ওই সংশোধনী অনুযায়ী বর্তমানে নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে সংবিধানের ৫৭(৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের কোনোকিছুই অযোগ্য করিবে না।’ আবার সংবিধানের ৫৮(৪) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করিলে বা স্বীয় পদে বহাল না থাকিলে মন্ত্রীদের প্রত্যেকে পদত্যাগ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে; তবে এই পরিচ্ছেদের বিধানাবলী-সাপেক্ষে তাহাদের উত্তরাধিকারীগণ কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তাহারা স্ব স্ব পদে বহাল থাকিবেন।’
    বর্তমান সংবিধানের বিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের এখতিয়ার এককভাবে প্রধানমন্ত্রীর ওপর ন্যাস্ত থাকায় মন্ত্রীরা প্রত্যাশা করছেন সংসদ বহাল এবং বর্তমান মন্ত্রিসভা রেখেই প্রধানমন্ত্রী একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করবেন। ইতোমধ্যেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব সরকারের; নির্বাচন কমিশনের নয়। আমরা কেবল নির্বাচনের আয়োজন করতে পারি’।
    বর্তমান মন্ত্রিসভা বহাল রেখেই যে সরকার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তা ক্ষমতাসীন দলের নীতি নির্ধারকদের ধারাবাহিক বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ৭ অক্টোবর ক্ষমতাসীন দলের মুখপত্র ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রাজধানীর সাপ্তাহব্যাপি গণসংযোগের সময় উত্তরায় বলেছেন, ‘নিবার্চনের আগে অন্তবর্তী কিংবা অন্য কোন সরকার হবে না, এই (বর্তমান) সরকার থাকবে। তবে সরকার রুটিন কাজ করবে। জানুয়ারী মাসের ২৭ তারিখের আগে যে কোন দিন নিবার্চনের তারিখ ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন’। এর আগে মহিউদ্দিন আহমেদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত জাতীয় জাদুঘরে এক স্মরণসভায় বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘এই সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল বর্তমান সরকারের অধীনেই ২০১৯ সালের নির্বাচনে অংশ নেবে। এর বাইরে কিছু চিন্তা করার সুযোগ নেই। সে সময় সরকার নির্বাচন কমিশনকে চাহিদা মোতাবেক সব ধরণের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে’। গতকাল সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়াত্ত তাবাজারা ডি অরিভেরা জুনিয়রের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘সংবিধান অনুসারে যথা-সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। তবে এর আকার নির্ধারণ করার এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনিই এটা নির্ধারণ করবেন। আর এটা চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে অথবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ পুনর্গঠিত হবে। নির্বাচনকালীন সরকারে প্রধানমন্ত্রী ৩০ জনের মতো সদস্য নিয়ে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠিত করতে পারেন’। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ অক্টোবর গণভবনে এক সভায় আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেছেন, নির্বাচনের নিয়ম হচ্ছে যে, ৫ বছরের জন্য সরকার নির্বাচিত হয়। ওই ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার তিন মাস আগে থেকে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করা মানে তখন যে সরকার হবে; সেই সরকার শুধু রটিন ওয়ার্ক ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে কাজ করতে পারে না। এটাই হচ্ছে নির্বাচনকালীন সময়ের দায়িত্ব’। এর আগে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কিভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা আমাদের সংবিধানে স্পষ্টভাবে বলা আছে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। সেই সরকার সর্বোতভাবে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা দিয়ে যাবে।’
    এদিকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এবং নির্বাচনী বিধিমালায় বলা হয়েছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের বদলি, পদায়নসহ কিছু কিছু কাজে সরকারকে কমিশনের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে এমন উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন, নির্বাচনের সময় সরকারি প্রটোকল গ্রহণ, ডাক-বাংলোসহ সরকারি স্থাপনার ব্যবহার বা এ জাতীয় কিছু কর্মকান্ডে বিধিনিষেধ আরোপ থাকবে।
    পঞ্চদশ সংশোধনীর পর সংবিধানের বিধান অনুসারে বিদ্যমান সরকার ক্ষমতায় রেখেই পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে গেলেও সরকারের ওপর তার প্রভাব পড়বে না। সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যিনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, তিনি নতুন একজন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত স্বপদে বহাল থাকবেন। অর্থাৎ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে স্বপদে বহাল রেখেই নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করবে। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি তার সরকারের মন্ত্রিসভার ক্ষেত্রেও সংবিধানের একই বিধান! সিইসি সেই ইংগিতও দিয়েছেন।
    এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলতে কিছু নেই। নির্বাচনকালীন সময় যে সরকার ক্ষমতায় থাকে সেই সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে বর্তমান মন্ত্রিসভা ছোট আকারে করতে পারেন। এই বিষয়টি একেবারেই নির্ভর করে প্রধানমন্ত্রীর ওপর। আর এই সরকার নির্বাচন পরিচালনা করতে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবেন। প্রখ্যাত আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কোনও বিধান সংবিধানে রাখা হয়নি। ক্ষমতাসীন সরকারই নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করবে। এক্ষেত্রে সরকার চাইলে তার কোন কোন কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে। তবে বিরত যে থাকতেই হবে এমন কোনও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, প্রথম কথা হলো আমাদের সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কিছু বলা নেই। বিগত সময়ে নির্বাচন পরিচালনার আগে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বসে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এবারের নির্বাচনের আগে এ রকম সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। তবে এই নির্বাচনটা যেহেতু দেশের জনগণের জন্য তাই নির্বাচন কীভাবে করা হবে সে বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের বসা উচিত। আগামী নির্বাচনের সময় কে বা কারা সরকার পরিচালনা করবে, এমন সিদ্ধান্তের জন্য সংলাপ জরুরি, সব দলের সঙ্গে বসা জরুরি। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গতকাল একটি টিভি টকশোতে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তার কাছে জাতি অনেক কিছু প্রত্যাশা করে। তিনি ২০১৪ সালে সব দলের অংশগ্রহণে যে উদ্যোগ নিয়ে বিএনপিকে প্রস্তাবনা দেন সেটা এবারও দিতে পারেন।

    জাপানি কম্পানিসমূহকে মিয়ানমারে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানালেন আউং সান সু চি

    মিয়ানমারের কার্যত নেত্রী আউং সান সু চি, জাপানী কম্পানিসমুহকে তাঁর দেশে পুঁজি বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন।

    মেকং-জাপান শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য বর্তমানে জাপানে অবস্থানরত আউং সান সু চি সোমবার টোকিওতে এক অনুষ্ঠানে জাপান ও মিয়ানমারের মধ্যে অর্থনৈতিক বিনিময় নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন। সেই ইভেন্টে জাপানের বিভিন্ন কম্পানি থেকে প্রায় ৩শো প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন।

    আউং সান সু চি জোর দিয়ে বলেন, মিয়ানমারে ব্যবসা করার পরিবেশের উন্নতি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বিদেশি কম্পানিসমূহের মিয়ানমারে যাওয়া সহজ করতে উপযুক্ত আইন বলবৎ হওয়ার কথা উল্লেখ করেন। জাপানের একটি ব্যবসায়ী জোটের সাহায্যে তিলাওয়া বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা গড়ে তোলার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

    আউং সান সু চি বলেন, তিনি পূর্ণ আস্থা নিয়ে জাপানী কম্পানিসমূহকে তাঁর দেশে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন।

    টোকিও’তে এই ইভেন্টের আয়োজন করা হয়েছে এমন এক সময়ে যখন মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মুসলিম ধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ ব্যক্ত ক’রে আসছে পশ্চিমা বিশ্বের কম্পানিসমূহ।

    আউং সান সু চি ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী জাপানী কম্পানির প্রতিনিধিদের কোনো চিন্তার বিষয় থাকলে তা নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করার পরামর্শ দেন। তিনি আরও বলেন, তাঁর বিশ্বাস জাপানী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলি প্রকৃত অবস্থা বোঝার চেষ্টা করবে।

    পুরোদমে নতুন খাদ্যপণ্যের বাজার খোলার প্রস্তুতি

    আজ সকালে টোকিওর খাদ্যপণ্যের পাইকারি ব্যবসায়ীরা, মালপত্র গুছিয়ে বিশ্ববিখ্যাত সুকিজি থেকে নতুন বাজারে তাঁদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড সরিয়ে নেয়ার কাজে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করেছেন।

    গতকাল, ৮৩ বছরের ব্যবসায়িক ইতিহাসের সমাপ্তি টেনে পাইকারি বাজারটি বন্ধ হয়ে যায়।

    আগামী বৃহস্পতিবার, টোকিওর তোয়োসু এলাকার অদূরে অবস্থিত নতুন বাজারটি খুলবে।

    নতুন স্থাপনাটিতে, বিপুল পরিমাণ পণ্য এবং সরঞ্জামাদি সরিয়ে নিতে হবে। এই বিপুল পরিমাণ জিনিষপত্র, প্রায় ৫ হাজার ৩শটি ট্রাক পূর্ণ করার জন্য যথেষ্ট।

    আগামী বুধবারের মধ্যে, নতুন বাজারটিতে ব্যবহারের জন্য মোট ২ হাজার ৬শটি ক্ষুদ্রাকারের গাড়ি ও ফর্কলিফট নিয়ে আসতে হবে।

    কর্তৃপক্ষ, পুরানো এবং নতুন স্থাপনাগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একটি নতুন সড়কের একটি অংশ সাময়িকভাবে খুলে দিয়েছে।

    আজ সকাল ৮টায়, নতুন স্থাপনাটিতে ট্রাক এসে পৌঁছা আরম্ভ হয়।

    পাইকারি ব্যবসায়ী কাযুতাদা ইগারাশি, সুকিজি থেকে তোয়োসুতে রেফ্রিজারেটর সরিয়ে আনতে সারারাত ধরে কাজ করছেন বলে জানান। তিনি, নতুন বাজারের পরিস্থিতি ভিন্ন হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে সেখানে কাজ করার অপেক্ষা করছেন বলে উল্লেখ করেন।

    দিনভর ‘জাপান ফেস্ট’

    Posted by admin on October 8
    Posted in Uncategorized 

    দিনভর ‘জাপান ফেস্ট’

    সবুজের বুকে লাল সূর্যের দেশ বাংলাদেশ আর সূর্যোদয়ের দেশ জাপান। স্বাধীনতার শুরু থেকেই দুই দেশের বন্ধুত্ব। আর দুই দেশের শিল্পীরা এক হয়ে গাইলেন ‘এই বন্ধন হবে না তো শেষ তুমি লাল সবুজের দেশ, আমি সূর্যোদয়ের দেশ’। ঢাকা কেন্দ্রিক জাপানি ব্যান্ড ‘বাজনা বিট’ এর সাথে বাংলাদেশি শিল্পী সন্ধির অপূর্ব পরিবেশনা সমগ্র মিলনায়তনে ছড়িয়ে পড়েছিল শিল্পের সুষমা। জাপানি শিল্পীদের কণ্ঠে বাংলা কথা আর গান মন ভরিয়ে দিল শ্রোতা-দর্শকদের।
    জাপান ও বাংলাদেশের শিল্পীরা শুধু দুই দেশের সংস্কৃতি নয়, যেন দুই দেশের বন্ধুত্বের গভীরতাই তুলে ধরলেন গানে, কথায় ও নানা আয়োজনে। এক মঞ্চ থেকেই দুই দেশের শিল্পীরা পরস্পরের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ঘটালেন। আর মিলনায়তন ভর্তি দর্শক-শ্রোতাও জাপানের অনন্য ও আন্তরিকতায় মুগ্ধ হলো।
    ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাস ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যৌথ আয়োজনে গতকাল বিকালে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় দিনব্যাপী ‘জাপান ফেস্ট ২০১৮’।
    এ জাপান ফেস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোয়াসু ইজুমির সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
    আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে জাপান অন্যতম অংশীদার। মুক্তিযুদ্ধের পরে ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর জাপান সফরের মধ্য দিয়ে দুদেশের সম্পর্কের যে নতুন মাত্রা পেয়েছিল বাংলাদেশ জাপানের সেই মৈত্রী, বন্ধুত্বের দৃঢ়তা সেভাবেই সামনে এগিয়ে    যাবে। লিয়াকত আলী লাকী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। জাপানের মানুষের দার্শনিক গভীরতা তাদের জীবনভাবনাকে উন্নত করেছে। তাদের এই সাংস্কৃতিক ভিত্তি বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে।
    জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোয়াসু ইজুমি বলেন, জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। জাপান ও বাংলাদেশের মানুষের সম্পর্ক দিন দিন আরো গভীর হচ্ছে।
    অনুষ্ঠানে গানে গানে জাপানের ঋতু বৈচিত্র্য, ফুল, ফল, নদী ও বাংলাদেশের প্রকৃতির অপরূপ রূপের বর্ণনা করেন জাপানি শিল্পীরা। ‘আমি তোমার সাথে সারাজীবন পথ চলতে চাই, আমি বিভোর হয়ে তোমার প্রেমে পড়ে যাই’ জাপানি শিল্পীর এমন বাংলা গানে বাংলাদেশের শ্রোতারা আপ্লুত। মঞ্চের পর্দায় ফুটে উঠেছিল জাপান ও বাংলাদেশের মানুষের বন্ধুত্বের গভীরতার নানা চিত্র। এসময় জাপান ও বাংলাদেশ দুদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো দর্শকদেরকে মুগ্ধ করেছিল। জাপানি ট্র্যাডিশনাল ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে। বন্ধুত্বের এই অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে মিলনায়তনের লবিতে ছিল জাপানি বনসাই ও বাংলাদেশ ও জাপানের সংস্কৃতি ও বন্ধুত্বের আলোকচিত্রের প্রদর্শনী।
    গ্যেটে ইন্সটিটিউটে পশ্চিমা ধ্রুপদী সংগীতসন্ধ্যা
    বাংলাদেশের ছয় প্রতিভাবান তরুণের পশ্চিমা ধ্রুপদী সংগীত পরিবেশনা হয়ে গেল গতকাল ধানমন্ডির গ্যেটে ইন্সটিটিউটে। আমেরিকান পিয়ানো শিক্ষক ম্যাথিউ বালাবান এবং জার্মান ভায়োলিনিস্ট সাইমন কিয়ারস্পেলের নির্দেশনায় পরিবেশিত হলো পশ্চিমা ধ্রুপদী সংগীতের অসাধারণ সব সুরের ঐকতান। ক্ল্যাসিকাল মিউজিক একাডেমি এবং মিউজিক ফর বাংলাদেশ এই সংগীত আসরের আয়োজন করেছিল। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সংগীতজ্ঞদের জনপ্রিয় সংগীতগুলো পরিবেশন করেন তারা। এই ছয় উদীয়মান বাদ্যশিল্পী হলেন- সুচরিত শুভানন রহমান, রিজু গমেজ, নিলয় গমেজ, নাহিয়ান কাব্য, ইখতারা হাসান ও ইমরান হোসেন জয়।
    অনুষ্ঠানে ফ্রেডরিক সঁপ্যার ওয়ালজ্, বিথোভেন-এর মুনলাইট সোনাটা, অস্কার রিডিং-এর কনসার্টো, স্ট্যানলি মেয়ারস-এর ক্যাভাটিনা, হানস মিলিএস-এর কনসার্টিনো, ম্যানুয়েল-দে-ফাল্লা-এর মিলারস ডান্স, ইউগেন ইয়াসেই-এর রেভে দে ইনফ্যান্ট, ফ্রান্জ সুবার্ট-এর রন্ডো, চেলসো ম্যাকাডো-এর পাকোকা, আসটর পিয়াজোলা-এর লিবারটাঙগো, কিন সকুনেনবিক-এর এ্যান ওল্ড স্টোরি এবং সবশেষে সেবাস্টিয়ান বাখ-এর কনসার্টো ডি মাইনর পরিবেশিত হয়।
    যারা দুর্নীতিতে অভ্যস্ত, তারা দেশের উন্নতি করতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
    প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা হত্যা, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তারা কখনোই দেশের উন্নতি করতে পারে না। অনেক বাধা অতিক্রম করে দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। এই সম্মান ও অগ্রযাত্রা যেন বজায় থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে সবাইকে কাজ করতে হবে। সমাজ বিনির্মাণে ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সরকারকে সহযোগিতা করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
    শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে লায়ন্স ক্লাবস্ ইন্টারন্যাশনাল এর লায়ন লিও মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, মানুষের সেবা করাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। মানুষের জন্য সেবা করা, মানুষের পাশে দাঁড়ানো এর চেয়ে বড় কাজ আর কি হতে পারে। আমি আমার জীবনটাকে উত্সর্গ করেছি বাংলার জনগণের জন্য। এখানে আমার নিজের চাওয়া-পাওয়ার কোনো কিছু নেই। আর বাবা-মা, ভাই সবই হারিয়েছি, হারাবারও কিছু নেই।
    লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনালের নবনির্বাচিত ‘আন্তর্জাতিক পরিচালক’ লায়ন কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদের সংবর্ধনা উপলক্ষে লায়ন ও লিওদের এই মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়। প্রথমেই সরকার প্রধান শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান লায়নরা। মানবতার সেবায় বিশ্বে প্রশংসিত হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু একটা জিনিসই চাই, যে দেশকে আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, যে স্বপ্নটা তার ছিল- যে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা মুক্ত দারিদ্র মুক্ত উন্নত বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে সেভাবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে চাই। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।
    সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে সকলের সহযোগিতা কামনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই সকলে এক সঙ্গে কাজ করে এই বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ বিশ্বে সম্মান পাচ্ছে, স্বীকৃতি পাচ্ছে। আগে আমরা বাঙালিরা বিদেশে গেলে সবাই বলতো ও বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়, দুর্ভিক্ষ, ইত্যাদি ইত্যাদি। এখন আর সে কথা কেউ বলে না। বিদেশে গেলে নিশ্চয়ই উপলব্ধি করতে পারেন। এখন বলে বাংলাদেশ তো উন্নয়নের রোল মডেল। এই সম্মানটা আমরা অর্জন করতে পেরেছি। আশা করি এই সম্মানটা আমরা যেন ধরে রাখতে পারি।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাজেট সাতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বাজেট আগে করতে গেলে বিদেশিদের কাছে হাত পাততে হতো। আল্লাহর রহমতে এখন আর হাত পাততে হয় না। বাজেটের ৯০ ভাগ নিজস্ব অর্থায়নে আমরা করে থাকি। আগে আমাদের উন্নয়ন বাজেট যা হয়তো ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকা ছিল। এখন ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি এটাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। দেশের অগ্রযাত্রা, এই উন্নয়নের ধারাটা অব্যহত রাখতে হবে।
    তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেকোন প্রতিযোগিতায় জয়ী হবার সক্ষমতা হয়েছে বাংলাদেশের। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সবাইকে সক্রিয় হতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধ পথে ক্ষমতা দখলের জন্য বিদেশের কাছে ন্যায্য দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়েছিল ৭৫ পরবর্তী শাসকরা। দুর্নীতির কারণে সে সময়ে উন্নয়ন থমকে গিয়ে দেশ পিছিয়ে গিয়েছিল।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই, আমাদের সকলে একসঙ্গে কাজ করে এই বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবেই পালন করার প্রত্যয় করার পাশাপাশি ২০৪১ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ এই আশাবাদ করেন তিনি।
    অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কাউন্সিল চেয়ারপারসন লায়ন মো. আমিনুল ইসলাম লিটন এমজেএফ। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সাবেক আন্তর্জাতিক পরিচালক শেখ কবীর হোসেন। গত ৩ জুলাই আমেরিকার লাস ভেগাসে বিশ্বের সর্ববৃহত্ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল’র ১০১তম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ২১০টি দেশের ডেলিগেটদের ভোটে লায়ন কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ (পিএমজেএফ) আন্তর্জাতিক পরিচালক নির্বাচিত হন।

    টাইফুন কং রে উত্তর জাপানের শক্তিশালী বাতাস বয়ে আনবে

    জাপানের আবহাওয়া সংস্থা, জাপান সময় রাত ৮টা নাগাদ অনুযায়ী বর্তমানে মারাত্মক মৌসুমি ঝড় হিসেবে শ্রেণীভুক্ত টাইফুন কং রে উত্তর জাপানের পাশাপাশি হোকুরিকু অঞ্চলে অত্যন্ত শক্তিশালী বাতাস বয়ে নিয়ে আসবে বলে সতর্ক করছে।

    আজ দুপুরে জাপান সাগরের উপরে অবস্থান করা ঝড়টি, ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে উত্তরপূর্ব অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে।

    এটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১শ কিলোমিটার গতিবেগের বাতাসে পরিপূর্ণ থাকাসহ কেন্দ্রভাগের অদূরে আকষ্মিক দমকা বাতাস ঘণ্টায় দেড়শ কিলোমিটারে পৌঁছেছে।

    আবহাওয়া কর্মকর্তারা, ঝড়টি আগামীকাল ভোরের আগে একটি নিম্নচাপে পরিণত হলেও উত্তর জাপান অভিমুখে অবস্থান করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানান।

    আজ দিনের শেষ নাগাদ পর্যন্ত পশ্চিম জাপানের দিকে প্রধানত জাপান সাগরের উপরে এবং আগামীকাল হোকুরিকু ও উত্তর জাপানে অত্যন্ত শক্তিশালী বাতাস বয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    কর্মকর্তারা, একটি নিম্নচাপের ফলে টাইফুনটি দুর্বল হয়ে উত্তর জাপানে ঘণ্টায় ৩০ মিলিমিটারের বেশী বৃষ্টিপাত বয়ে নিয়ে আসবে বলেও জানান। হোক্কাইদোতে সর্বোচ্চ ১শ ২০ মিলিমিটার এবং তোহোকু অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    তাঁরা, ভূমিধ্বস এবং বন্যার পাশাপাশি বিদ্যুৎ চমকানি ও টর্নেডোর আঘাতের বিষয়েও সতর্ক করছেন।

    ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প ও সুনামিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৪৭
    ইন্দোনেশিয়ার উপকূলীয় পালু শহরে ভূমিকম্প ও সুনামিতে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনই ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হচ্ছে। বুধবার দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছ-এ পর্যন্ত   ১৩৪৭ জনের মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়বে। খবর আল জাজিরার।
    গত শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। সুলাওয়েসি প্রদেশের রাজধানী পালু, ডোঙ্গালা ও অন্যান্য কয়েকটি উপকূলীয় এলাকায় ৬.৬ ফুট উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়ে। ভূমিকম্পের পরপর সমুদ্র উপকূলীয় পালু শহরটিতে সুনামিও আঘাত হানে।
    এ ঘটনায় পূর্বে ৮৪৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছিল। তখনই জানানো হয়, অনেকে নিখোঁজ ও অনেকে আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাই মৃতের সংখ্যা যে বাড়বে এটা আগেই ধারণা করা হচ্ছিল। এ অবস্থায় বুধবার সেই সংখ্যা ১৩৪৭ ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা জানানো হলো। একইসঙ্গে দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় খাবার, পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
    দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানায়, সকল মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সুলাওয়েসি দ্বীপের রাজধানী পালুতে। পুরো শহর ভরে গেছে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসাবশেষ দিয়ে। উল্লেখ্য, গত মাসে ইন্দোনেশিয়ার লম্বক দ্বীপে এক প্রাণঘাতী ভূমিকম্পে অন্তত ৪৬০ জন প্রাণ হারিয়েছে।

    নতুন মন্ত্রীসভা ঘোষণা করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে তাঁর মন্ত্রীসভা রদবদল করে দশজনের বেশী সদস্যকে প্রথমবারের মত মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পাশাপাশি মুখ্য কয়েকটি পদ অপরিবর্তিত রেখেছেন। গত মাসে আবে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা হিসেবে পুনঃ নির্বাচিত হওয়ার পর এই পদক্ষেপ নেয়া হয়।

    অর্থমন্ত্রী তারো আসো, পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো ও শিল্পমন্ত্রী হিরোশিগে সেকো এবং চিফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ইয়োশিহিদে সুগা সহ ছয়জন মুখ্য মন্ত্রীকে তিনি বহাল রেখেছেন।

    নব নিযুক্তদের মধ্যে আছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাকেশি ইওয়াইয়া এবং আঞ্চলিক পুনরুজ্জীবন মন্ত্রী সাৎসুকি কাতাইয়ামা, যিনি হলেন নতুন মন্ত্রীসভার একমাত্র নারী সদস্য।

    তীব্র আন্দোলনের প্রত্যয়

    সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় মানুষের ঢল

    অন্যরকম এক দৃশ্য। বন্ধ ঘরের বদলে হঠাৎ মুক্ত মাঠে জনসভা করার প্রেরণা, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয়। এরই মধ্যে ৭ দফা দাবি, ১২ লক্ষ্য ও ২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঘোষণা দিয়েই ৭ দফা দাবি আদায়ে ৩ অক্টোবর ৬৪ জেলায় সমাবেশ ও ৪ অক্টোবর প্রতিটি বিভাগে সমাবেশ করার কথা বলেন। দাবি আদায়ে পর্যায়ক্রমে এই আন্দোলন এগিয়ে নেয়ার ঘোষণা, তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে, তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে এবং কারাগারে থাকা নেতাকর্মীদের মুক্ত করতে সরকারকে বাধ্য করার প্রত্যয় গ্রহণ করেছেন দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। গতকাল (রোববার) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা শপথ গ্রহণ করেছেন, আন্দোলনের বিকল্প এখন কিছু নেই। আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে না, এই সরকারের পতন হবে না। তাই অক্টোবর মাস থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
    ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সমাবেশের পর বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে নতুন নতুন মামলা। গ্রেফতারের খোঁজে পুলিশ তাদের বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছে প্রায় প্রতিদিন। পুরনো ও নতুন মামলায় গ্রেফতার আতঙ্ক সকলকে তাড়া করছে। গ্রেফতার হওয়ার ভয়, প্রচন্ড রোদ, তীব্র গরম, পথে পথে বাধা কোন কিছুই আটকাতে পারেনি সোহরাওয়াদী উদ্যানের জন স্রোত। আশ্বিনের ৩৪ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রায় যেখানে ঘরে বসে থাকা দায় সেখানে লাখো নেতাকর্মী সেই গরম আর তাপমাত্রাকে উপেক্ষা করে ছুটে এসেছিলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। উপস্থিত হয়েছিলেন প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানাতে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করার পর রাজধানীতে এটি বিএনপির দ্বিতীয় সমাবেশ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রথম জনসভা। বিগত দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সকল সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এবারই প্রথম তাকে ছাড়া সোহরাওয়ার্দীতে জনসভা করলো বিএনপি। যেখানে নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষের উপস্থিতি অতিক্রম করেছে অতীতের সব সমাবেশের রেকর্ডকে।
    কারাগারে থাকায় খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকবেন না তা জানা ছিল। তারপরও তাকে সমাবেশের প্রধান অতিথি করা হয়, রাখা হয় তার জন্য নির্দিষ্ট আসন। তারেক রহমান বিদেশে থাকায় উপস্থিত থাকারও কোন সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু তার পরও জনসভায় দলে দলে ছুটে আসেন বিএনপি নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ ও উৎসুক জনতা। উদ্দেশ্য একটাই বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্তি করার দাবিতে বিএনপির আন্দোলনে অংশগ্রহণ। ঘোষণা অনুযায়ি দুপুর ২টায় জনসভা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল ১০টা থেকেই রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলো থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হতে থাকেন। মঞ্চকে ঘিরে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। সময় বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে নেতাকর্মীদের ভিড়। ১২টার পর গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হয়ে উঠে লোকে লোকারণ্য। আর সমাবেশ আনুষ্ঠানিক শুরুর পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে, বাইরে সমাবেশ স্থল হয়ে উঠে জনসমুদ্র। উদ্যানের ভেতরে ছাড়াও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, মৎসভবন, সেগুনবাগিচা, শাহবাগ সড়ক ছিল সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের দখলে। প্রচন্ড গরম থাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো একই রকম উপস্থিতি ছিল রমনা পার্কের ভেতরে।
    তখনও খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে জনসভামুখী ছিল ঢাকা ও এর আশাপাশের জেলার নেতাকর্মীরা। হাতে হাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড আর মুখে মুক্তির দাবিতে শ্লোগান দিতে দিতে তারা সমাবেশে উপস্থিত জনতার সাথে মিলে যান। নেতাকর্মীরা ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই,’ ‘আমরা নেত্রী, আমার মা, বন্দি থাকতে দেবো না’, ‘খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না’, ‘তারেক রহমান বীরের বেশে আসবে ফিরে বাংলাদেশ’ ইত্যাদি শ্লোগান দিতে থাকে। বেলা ২টায় কুরআন তিলওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় জনসভা। এর আগে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সভামঞ্চে দেশাত্মবোধক ও দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন জাসাস শিল্পীরা।
    বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্যের শুরুতেই অত্যন্ত আবেগ তাড়িত কণ্ঠে বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা এর আগে কখনো কোন জনসভা করিনি। এটি আমাদের হৃদয়ে রক্তখড়ন করছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় কারাগারে রয়েছেন। এই অসুস্থতা তাকে পরাজিত করতে পারেনি, দুর্বল করতে পারেনি। তিনি সেখান থেকেই দেশবাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যে কোন অবস্থা মেনে নিতে প্রস্তুত আছেন। কিন্তু গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং দানব, ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরাতে হবে।
    নেতাকর্মীদের জনসভায় আসতে বাধা দেয়া হয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পথে বাধা বিপত্তি ছিল, পুলিশ গ্রেফতার করেছে, গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে, ভয় দেখিয়েছে বাসায় থাকতে পারেন না। তার মধ্যেও নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, নেত্রীকে ফিরিয়ে আনার জন্য, তারেক রহমানকে দেশে আনার জন্য সব কিছু উপেক্ষা করে সোহরাওয়ার্দীতে উপস্থিত হয়েছেন।
    সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই সরকার দেশ, জাতি এবং সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। জনগণকে তাদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে গ্রেফতার, নির্যাতন, হামলা, গুম করছে। গত এক মাসেই গায়েবি মামলায় ৪ হাজার ৯৪টি মামলা, ৪ হাজার ৩১৯ জনকে গ্রেফতার এবং দুই লাখ ৭২ হাজার ৭৩০ জনকে আসামী করা হয়েছে। যে মামলার কোন অস্তিত্ব নাই, সম্পূর্ণ ভৌতিক মামলা।
    মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ও পুলিশ একবারও চিন্তা করছেন না, পট পরিবর্তন হলে, এই সব মামলা যদি ভবিষ্যতে তদন্ত করা হয় এবং দেখা যাবে এর কোন ভিত্তি নেই, সব বানোয়াট। তখন সকলকেই জবাবদিহি করতে হবে, কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এই সরকার কোথাও রেহাই পাবে না। যেভাবে তারা চুরি, লুট করেছে, বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কয়লাকে ধুলা বানিয়ে দিয়েছে, সোনাকে তামা বানিয়েছে, ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক খালি করে দিয়েছে। তাও এদের আশ মেটে না। ৫ বছর, ১০ বছর করলো এখন আরও করতে চায়। তাই আমাদেরকে দেশ এবং জনগণকে রক্ষা করতে, স্বাধীনতার চেতনা গড়ে তুলতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
    মেগা প্রজেক্টের নামে লুটপাট চলছে অভিযোগ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীরা কর ও চাঁদা দিতে দিতে অস্থির হয়ে গেছে। এই করের টাকা লুটপাট করছে। পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, ১০ হাজারের জায়গায় ২০ হাজার কোটি টাকা, প্রত্যেকটা মেগা প্রজেক্টে তিন গুণ, চার গুণ ব্যয় বাড়াচ্ছে। এই টাকা তারা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।
    কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে সরকার প্রতারণা করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের সাথে প্রতারণা বন্ধ করুন, কোটা সংস্কারের সঠিক পথ দেখান। নিরাপদ সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করেছেন, তাদের মুক্তি দিন। নিরাপদ বাংলাদেশ তৈরি করুন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে দেশ, গণতন্ত্র, দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য যে ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন সেই ডাকে আজকে সারাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সকল গণতান্ত্রিক শক্তি, রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
    স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ২৪ ঘণ্টার নোটিশে বিএনপির জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। সাহস থাকলে ৭ দিন সময় দিয়ে সমাবেশ করতে দিন। দেখবেন বিএনপির নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ঢাকা শহর অচল হয়ে যাবে। দেশে অরাজকতা চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, কোন জবাবদিহিতা নাই। সরকার ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারে পরিণত হয়েছে। ব্যাংক, সোনা, পাথর, কয়লা সবই লুট করে নিচ্ছে। এজন্য এই সরকারকে আর জনগণ দেখতে চায় না।
    ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া এই সরকারের বিদায় হবে না দাবি করে মোশাররফ বলেন, কারাবন্দি হওয়ার আগে বেগম খালেদা জিয়া যে সব দাবি উত্থাপন করেছিলেন এবং যে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন জনগণ তা গ্রহণ করেছে। সেই দাবির প্রেক্ষিতে আজকে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। বেগম জিয়ার দাবিগুলোই সকল গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো উত্থাপন করছে।
    প্রশাসন ও পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা আওয়ামী লীগের কর্মচারী নন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। এই সরকার পতিত সরকার, তাদের পতন সুনিশ্চিত। এই সরকারের আর কোন কথা শুনবেন না। না হলে জনগণের কাঠগড়ায় আপনাদেরকে দাঁড়াতে হবে।
    সংখ্যালঘুরা আওয়ামী লীগ সরকারের চেয়ে বিএনপি সরকারের সময় বেশি নিরাপত্তা বোধ করবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত দিনে বিএনপি সরকারের সময় সংখ্যালঘুরা নিরাপদে ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তারা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে।
    ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, আজকে দেশে যে সংগ্রাম শুরু হয়েছে তার শেষ হবে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মাধ্যমে। আইন অনুযায়ি খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু তাকে একটার পর একটা মামলা দিয়ে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না। কারণ সরকার জানে খালেদা জিয়া বের হলে এই সরকারের পতন নিশ্চিত হয়ে যাবে। একইভাবে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলা দেয়া হয়েছে। কারণ তিনি দেশে আসলে তরুণ প্রজন্মকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবেন।
    গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা না চাইলে শেখ হাসিনা সরকার আর একদিনও টিকতে পারবে না। আওয়ামী লীগ জেনে গেছে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না, ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচনও হবে না। আবার বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচনও করতে পারবে না। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনে গেলে সবচেয়ে ভয়। এই ভয়ে তারা ভীত হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্রের লড়াইয়ে যেই আসবে বিএনপি তাদের গ্রহণ করবে জানিয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মুক্তির লড়াইয়ে বিএনপি ঐক্যের ডাক দিয়েছে। এই ঐক্যের প্রক্রিয়ায় অনেকে বিএনপিকে দূর্বল ভাবছে। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই আমাদের আন্তরিকতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। লোক নাই, জন নাই চাপ সৃষ্টি করে অনেকে সুবিধা নিতে চাই। তাদের বলতে চাই জনগণের কাছে ধিকৃত হবেন না।
    ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, অতীতেও আওয়ামী লীগ বাকশাল করে টিকতে পারেনি। আবারও অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে এবারও তারা টিকতে পারবে না। সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো আজকে এই সরকারের স্বৈরাচারী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সময় এসেছে আওয়ামী লীগকে এক ঘরে করে দেয়ার।
    নজরুল ইসলাম খান বলেন, রাজপথ দখলে নিতে পারলে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে, তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবে, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে, নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার হবে, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এবং বেগম খালেদা জিয়া আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।
    মির্জা ফরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস। ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, এড. খন্দকার মাহবুব হোসেন, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, এড. জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভূইয়া, জয়নাল আবদীন ফারুক, এড. ফজলুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী। যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, মাহবুবুর রহমান শামীম, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আসাদুল হাবিব দুলু, এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস আক্তার জাহান, শামা ওবায়েদ। কেন্দ্রীয় নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ, অঙ্গসংগঠনের কাজী আবুল বাশার, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, আফরোজা আব্বাস, সাইফুল আলম নিরব, শফিউল বারী বাবু, সাদেক খান, আনোয়ার হোসেন, রাজিব আহসান প্রমুখ। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করেছিল বিএনপি। ওই সভায় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বক্তব্য দিয়েছিলেন।

    জাপানে টাইফুন ট্রামির আঘাতে ৭৪ জন আহত এবং ১ জন নিখোঁজ

    টাইফুন ট্রামির কারণে সৃষ্ট দমকা হাওয়া জাপানের দক্ষিণপশ্চিম অঞ্চলে আঘাত হেনে চলেছে। আজ জাপানের মুল দ্বীপগুলোর ভূমিতে সেটি আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।

    আজ সাড়ে ছয়টা নাগাদ ওসাকা এবং মিয়াযাকিসহ ১০টি জেলার প্রায় ১ লক্ষ লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

    দমকা হাওয়ায় ইতিমধ্যে বেশ কিছু ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওকিনাওয়া, কাগোশিমা, মিয়াযাকি এবং তোকুশিমাসহ ৭টি জেলায় ৭৪ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। মিয়াযাকি জেলায় একজন ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন।

    উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাতাসের তেজ বা গতিবেগ সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হবার উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

    লক্ষ লক্ষ বাড়িঘর এখন বিদ্যুৎ-বিহীন অবস্থায় রয়েছে।

    পশ্চিম জাপান রেলওয়ে কোম্পানি ইয়ামাগুচি জেলায় সানইয়ো লাইনে ইয়ানাই থেকে কুদামাৎসু স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছে।

    অন্যদিকে, বিমান কোম্পানিগুলো আজকের জন্য নির্ধারিত ১ হাজারেরও বেশি অভ্যন্তরীণ বিমান যাত্রা বাতিল করেছে।

    ওসাকা জেলায় অবস্থিত বিমান পরিবহনের একটি প্রধান স্থান কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আজ সকাল ১১টায় দু’টি রানওয়েই বন্ধ করে দিয়েছে। আগামীকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত সেগুলো বন্ধ থাকবে।

    আজ বিকেল ৫টার পর থেকে টোকিও থেকে শিন-ওসাকা পর্যন্ত সব শিনকানসেন বুলেট ট্রেনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে, শিন-ওসাকা এবং হিরোশিমার মধ্যে শিনকানসেন ট্রেন পরিষেবাও ইতিপূর্বে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

    পশ্চিম জাপান রেলওয়ে কোম্পানি কিয়োতো, ওসাকা এবং কোবে’তে স্থানীয় রেল পরিষেবাও বন্ধ করা শুরু করেছে।

    এদিকে, পূর্ব জাপান রেলওয়ে কোম্পানিও আজ রাত ৮টার পর থেকে অতি ব্যস্ত ইয়ামানোতে লাইনসহ মেট্রোপলিটন এলাকার সব ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে।