• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • জাপানের সাথে আরও বেশি করে দক্ষ ব্যক্তিদের বিনিময়ে মোদী’র সম্মতি

    ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাপানের বাণিজ্য মন্ত্রী হিরোশিগে সেকো’র সাথে দক্ষ ব্যক্তি বিনিময়, বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে বিনিময় বৃদ্ধি করতে সম্মত হয়েছেন।

    মোদী সোমবার টোকিও’তে হিরোশিগে সেকো’র সাথে বৈঠক করেন।

    তারা নিশ্চিত করেন যে এশিয়া এবং আফ্রিকার তৃতীয় কোন দেশের অবকাঠামো প্রকল্পে সহায়তা করা অব্যাহত রাখবে জাপান ও ভারত।

    তারা বছরের শেষ নাগাদ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা আরসেপ বিষয়ে একটি স্বতন্ত্র ঐকমত্যের জন্য কাজ চালিয়ে যেতে একমত হন।

    ভারতে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটছে। জাপান ভারতকে ইয়েন ঋণ দিচ্ছে এবং দেশটিতে বিনিয়োগ করার জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহ প্রদান করছে।

    সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টকে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক চিঠি ঐক্যফ্রন্টকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আমন্ত্রণ

    সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই আমন্ত্রণের চিঠি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় যান আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ। তিনি প্রধানমন্ত্রীর চিঠি ড. কামাল হোসেনের হাতে হস্তান্তর করেন।
    এসময় আব্দুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের বলেন, সংলাপের জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ড. কামাল হোসেনের একটি চিঠি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য তাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন তিনি। সংবিধান সম্মত যে কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রাজি আছেন।
    গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংলাপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী সেই চিঠির জবাব দিয়েছেন। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যদি কোনও সহযোগিতা চাওয়া হয়, তাহলে আমরা তা করবো। আমরা ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা ও ১১ লক্ষ্য নিয়ে সংলাপে আলোচনা করবো। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সংলাপে থাকবেন ১৫ জন সদস্য। এর নেতৃত্বে থাকবেন ড. কামাল হোসেন। তিনি হলেন এদেশের সংবিধান প্রণেতাদের একজন। তাই তিনি সাংবিধানিক বিভিন্ন বিষয়ের ব্যাখ্যা যথাযথভাবে দিতে পারবেন। আমরা তার নেতৃত্বেই সংলাপে যাচ্ছি।
    গত রবিবার (২৮ অক্টোবর) জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে অর্থবহ সংলাপের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বরাবর চিঠি দেন ড. কামাল হোসেন। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    সরকারের মেয়াদ ১০ দিন

    চট্টগ্রামের বিশাল জনসভায় বক্তারা

    দশদিনের মধ্যে সরকারের পতন নিশ্চিত উল্লেখ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলেছেন, এই স্বৈরাচার সরকারের সময় শেষ। ধৈর্য্য ধরে আর মাত্র দশদিন অপেক্ষা করুন এ সময়ের মধ্যে সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। দশদিন পর আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। নেতারা বলেন, জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সিলেটের পর চট্টগ্রামেও জনতার ঢল নেমেছে। পুলিশবাহিনী ভয়ভীতি দেখিয়ে, নানাভাবে বাধা দিয়েও জন স্রোতকে আটকে রাখতে পারেনি। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে কোন স্বৈরাচারই ক্ষমতায় টিকতে পারে না। এ সরকারও পারবেনা। গতকাল চট্টগ্রাম বিএনপি অফিসের সামনের রাস্তায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত বিশাল জনসভায় নেতারা এ কথা বলেন।
    পুলিশ বাহিনীর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলেন, আজকের এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক বাড়াবাড়ি করেছেন। নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো থেকে শুরু করে নানাভবে হয়রানি করছেন। তারপরও জনতার ঢলকে আটকে রাখতে পারেননি। লাখলোকের সমাবেশ হয়েছে। এই সমাবেশ থেকে বলতে চাই এখনো সময় আছে নিরপেক্ষ আচরণ করুন। আপনারা হলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারী। সরকারের অন্যায় নির্দেশ পালন থেকে বিরত থাকুন। বিবেক দিয়ে কাজ করুন। তা না হলে জনরোষ থেকে আপনারও রেহাই পাবেন না। জনতার আদালতে আপনাদেরও দাঁড়াতে হবে।
    চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংবিধান প্রণেতা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, এ সরকার প্রতিনিয়ত সংবিধান লঙ্ঘন করছে। সরকার তাদের শপথ ভঙ্গ করছে। এই শপথ ভঙ্গের জন্য তাদের অবশ্যই বিচার হবে। তিনি বলেন, সংবিধানে স্পষ্টকরে উল্লেখ আছে জনগণ দেশের মালিক, আর সরকার হলো তাদের সেবক। সরকার আজ দেশের মালিকদের কাছ থেকে মালিকানা ছিনিয়ে নিয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। তাদের মৌলিক মানবাধিকার নেই। আইনের শাসন নেই। এ সব কিছুর জন্য সরকারকে অবশ্যই জবাব দিহি করতে হবে। সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে তাদেরকে জনগণের আদালতে দাড়াতে হবে।
    ড. কামাল বলেন, ২০১৪ জানুয়ারি একটি ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর এ সরকার বলেছিল এটা সংবিধান রক্ষার নির্বাচন। খুব শিগগিরই সকলের অংশগ্রহণে আর একটি নির্বাচন দেয়া হবে। আদালত এবং আমরা সরকারের সে ওয়াদার প্রতি বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু সরকার সে ওয়াদা ভঙ্গ করেছে। জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। এজন্য অবশ্যই সরকারের বিচার করা হবে। তাদের শাস্তি পেতে হবে।
    ড. কামাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ কারো পৈতৃক সম্পত্তি নয়। আমরা জনগণ এদেশের মালিক। জনগণ আজ বুঝতে পেরে রুখে দাঁড়িয়েছে। এত বাধা-বিপত্তির পরও জনগণ কষ্ট করে এসেছে। চার-পাঁচ ঘণ্টা দাড়িয়ে আছে। জনগণের এই যে জোয়ার তাতে সরকারের পতন কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
    প্রবীণ এই জননেতা বলেন, এখনো সময় আছে আমাদের ৭দফা দাবি মেনে নিন। জনদাবি না মানলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। জনগণ এতদিনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। তখন আর ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন না। জনগণ এবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে কোন স্বৈরশাসক টিকে থাকতে পারে না। তাই জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে এবার বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত ইনশাআল্লাহ।
    ড. কামাল বলেন, আমরা এখন আর খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইব না। এখন তার মুক্তি আমরা আদায় করবো। সকলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সকল ন্যায্য দাবী আদায় করে একটি গণতান্ত্রিক ন্যায় বিচারের সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়বো।
    সমাবেশে প্রধানবক্তা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গণজোয়ার দেখে এ সরকার প্রচন্ড ভয় পেয়েছে। তারা এখন ছায়া দেখলেও ভয় পায়। তাইতো এখন সমাবেশ করতেও দিচ্ছে না। জনগণকে পুলিশ দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে, বাধা দিয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করছে। তাতে কোন লাভ নেই। এই চট্টগ্রামের জনসভায় জনতার ঢল নেমেছে। সরকার শত চেষ্টা করেও কোনভাবেই জনগণকে আটকে রাখতে পারেনি। জনগণ আজ জেগেছে। তাইতো সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
    মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ভয় পায়। কারণ তারা জানে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জিততে পারবে না। তাইতো হামলা মামলা দিয়ে জনগণকে দাবিয়ে রাখতে চাচ্ছে। যেনতেনভাবে একটা নীল নকশার নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। কিন্তু দেশের জনগণ তা হতে দেবে না।
    তিনি বলেন, এ সরকারের অত্যাচার জুলুম এসবের জবাব দেবে জনগণ। মামলা অনেক দিয়েছেন। এবার ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, ডা. জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছেন। এসব করে কোন লাভ হবে না। গুম, খুনের হিসাব নেবে জনগণ। শত শত নেতা গুম হয়েছে। কত মা তার সন্তান হারিয়েছেন। কত স্ত্রী তার স্বামী হারিয়েছে। কত সন্তান তার পিতা হারিয়ে গুমরে কাঁদছে। এ সব কিছুর জবাব সরকারকে দিতে হবে। তাইতো সরকারের আজ এত ভয়।
    মির্জা ফখরুল বলেন, এদেশের জনগণ বুকের রক্ত ঢেলে স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করে বিজয়ী হয়েছে। এবার জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যে আন্দোলনে নেমেছে তাতে বিজয় সুনিশ্চিত। ঐক্যবদ্ধ জনগণের আন্দোলন কোনদিন ব্যর্থ হয়নি। এবারও হবে না। বিজয় আমাদের অতি সন্নিকটে।
    জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, বাংলায় একটি প্রবাদ আছে সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠেনা। তাই আঙ্গুল বাঁকা করতে হবে। সারাদেশের মানুষকে সাথে নিয়ে মাঠে নামতে হবে। সিলেটের পর এই চট্টগ্রামে যে জনতার ঢল নেমেছে তাতে এই স্বৈরাচারের পতন আর কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
    তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আসুন দেখে যান চট্টগ্রামে লাখ জনতার সমাবেশ। যে গণজোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে তাতে করে পালানোর পথ পাবেন না। তাই সময় থাকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবি মেনে নিন। আমাদের সাত দফা দাবি না মেনে যদি তফসিল ঘোষণা করেন তাহলে বুঝবো আপনারা নির্বাচন বানচাল করতে চান। আর নির্বাচন বানচাল হলে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তার জন্য দায়ি হবেন আপনারা। আ স ম রব বলেন, এই সরকারের সময় প্রায় শেষ। এই পুলিশ বাহিনী আর বেশিদিন সরকারের কথা শুনবে না। তারাও নিরপেক্ষ আচরণ করবে। তা না হলে জনরোষ থেকে তারাও বাঁচতে পারবে না।
    তিনি বলেন, জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে মাছ চুরির মামলা দিয়েছেন ভাল করেছেন। কেননা মাওলানা ভাষানীর বিরুদ্ধেও গরু চুরির মামলা দিয়েছিল আইয়ূব সরকার। আপনার পিতা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধেও সিঁধেল চুরির মামলা হয়েছিল। এসব মামলা জনগণ কখনো ভালভাবে নেয় না। মনে রাখবেন এর পরিণতি ভাল হয় না। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হয়না এটা আজ প্রমাণিত। তাইতো জনগণ আজ তাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেমেছে। হামলা-মামলাসহ সকল ভয়ভীতি অতিক্রম করে তারা আজ রাজপথে নেমে এসেছে। জনগণের এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী। খুব শিগগিরই এ সরকারকে জনগণের আন্দোলনের মুখে বিদায় নিতে হবে।
    বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এ সরকার এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জনরোষ থেকে বাঁচতে তারা গায়েবি মামলা দিচ্ছে। গত কয়েকদিনে ৫ হাজার মামলায় ৫ লক্ষাধিক আসামী করা হয়েছে। সরকারের অন্যায়, দুর্নীতি, অপকর্ম যাতে মিডিয়ায় প্রকাশ করতে না পারে সে জন্য ডিজিটাল নিরাপত্ত আইন সম্প্রচার নীতিমালা এসব কালো আইন করছে। এতোকিছু করেও কোন লাভ হবে না। জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি মানতে বাধ্য হবে সরকার। সংলাপে বসতে, সমঝোতায় আসতে বাধ্য হবে। তা না হলে গণআন্দেলনের মুখে সরকারের ক্ষমতা ছেড়ে পালাবে।
    গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাষ্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার পাকিস্তানি শাসনের চেয়েও ভয়াবহ শাসন চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার এখন নিজেদের ছায়া দেখেও ভয় পাচ্ছে। যেভাবে গণজোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে তাতে এ সরকারের পতন আর কেউ ঠেকাতে পারবে না। আপনারা আর মাত্র ১০ দিন ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করুন। এই ১০ দিনের মধ্যে সরকারের পতন হবে। দেশের বুদ্ধিজীবিসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ যেভাবে এই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে তাতে আগামী ১০ দিনের মধ্যে বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। আর বিজয়ের পর ড. কামাল হোসেন, মইনুল হোসেনসহ আমরা এদেশে আইনের শাসন কায়েম করবো ইনশাআল্লাহ।
    নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার সব সময় বলে তাদের অধীনে নির্বাচন হবে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। আগে পদত্যাগ করতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আর যদি তা না করেন তাহলে কিভাবে গদি থেকে নামাতে হয় তা আমরা জানি। তিনি বলেন, সরকার ঐক্যের বিরুদ্ধে নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আপনারা এসব বিভ্রান্তিতে কান দেবেন না। ৭ দফার ভিত্তিতে আমাদের ঐক্য অটুট আছে থাকবে। এই স্বৈরাচারের পতন না ঘটিয়ে আমরা ঘরে ফিরবো না।
    বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, এ সরকার এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাই তারা ভূতুরে মামলা দিয়ে জনগণকে ভয় দেখাচ্ছে। কিন্তু দেশের জনগণ তাতে ভীত নয়। সকল ভয়কে জয় করে তারা আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। জনগণের এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন এবার অবশ্যই সফল হবে।
    বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আন্দোলনের ঘোষণা দিন চট্টগ্রামের মানুষ আপনাদের সাথে আছে। চট্টগ্রামকে খালেদা জিয়ার ঘাঁটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখান থেকেই সরকারের পতন আন্দোলন শুরু হবে।
    ডাকসুর সাবেক ভিপি জাতীয় ঐক্যের নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নয়। লুটপাটের আওয়ামী লীগ। লুটেরাদের সাথে জনগণ নেই। ঐক্যফ্রন্টের পেছনে জনতা কাতারবন্দী হয়েছে। ভোটের অধিকার আদায়ে দুর্বার আন্দোলন সফল করা হবে।
    গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি চট্টগ্রামের কৃতী সন্তান এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে মাইনক্যাচিপায় বন্দি করেছে। গণআন্দোলনের মাধ্যমে হাসিনার পতন ঘটিয়ে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। স্বৈরাচারী আইয়ুব খান আর এরশাদকে হটিয়েছি। হাসিনাকেও হটিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব।
    ২০ দলীয় জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জনারেল (অব.) মুহাম্মদ ইবরাহীম বীর প্রতীক ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফার প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে বলেন, ২০ দলের শরিক হিসেবে আমরাও দাবি আদায়ে মাঠে আছি। চট্টগ্রামের মানুষ বিপ্লবী, তারা স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে পরোয়া করে না।
    জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, ওবায়দুল কাদের বলছেন ভোটে পরাজিত হলে টাকা-পয়সা নিয়ে দেশ ছাড়তে হবে। জনতার সিদ্ধান্ত লুটেরাদের দেশ ছেড়ে পালাতে দেয়া হবে না। ২০ লাখ কোটি টাকা পাচারকারীদের বিচার করা হবে।
    নাগরিক ঐক্যের নেতা আ ব ম মোস্তফা আমিন বলেন, ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন গণতন্ত্র বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার আন্দোলন। এ আন্দোলনে দেশবাসীর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অবশ্যই সফল হবে।
    এলডিপির মহাসচিব ড. রেদুয়ান আহমেদ বলেন, মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়েছে। এ সরকার লুটেরাদের। লাখ লাখ কোটি টাকা লুটের বিচার করা হবে।
    বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ ভোটের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ, আজকের এ জনসভা তার বড় প্রমাণ।
    বিএনপির অপর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, জালিম সরকারের পতনে আন্দোলনের বিকল্প নেই। আন্দোলনের মাধ্যমে ভোটের অধিকার আদায় করা হবে।
    বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, খালেদা জিয়া ছাড়া বাংলার মাটিতে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে, ভোটের অধিকার আদায় করা হবে।
    বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান বলেন, শেখ হাসিনা ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আন্দোলন ছাড়া অধিকার আদায় করা যাবে না।
    চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জনসভায় লাখো মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে চট্টগ্রাম জাতীয়তাবাদী শক্তির ঘাঁটি। চট্টগ্রাম থেকে সরকারের পতন আন্দোলনের সূচনা হলো।
    সভাপতির বক্তব্যে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ধরপাকড়, গায়েবি মামলায় হুলিয়া ও বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে জনসভা সফল করায় চট্টলার বীর জনতার প্রতি সংগ্রামী অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে চট্টগ্রামের বীর জনতা জীবনবাজি রেখে মাঠে থাকবে।
    এ ছাড়া জনসভায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, জয়নাল আবেদীন ফারুক, গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, সাবেক ছাত্রনেতা ফজলুর রহমান, গণফোরাম নেতা আ ফ ম সুলতান, নাগরিক ঐক্যের এডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সেক্রেটারী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন, খায়রুল কবির খোকন, বিজেপির আহসান হাবিব মিল্টন, জেএসডি নেতা ও চাকসুর সাবেক জিএস গোলাম জিলানী, এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভুঁইয়া, ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা, মহিলা দলনেত্রী নূরী-আরা সাফা, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গাজী মোঃ শাহজাহান জুয়েল, নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানসহ ঐক্যফ্রন্টের জেলা ও মহানগরের নেতারা বক্তব্য রাখেন। জনসভা সঞ্চালনা করেন নগর বিএনপি নেতা এস এম সাইফুল, কামরুল ইসলাম ও ইয়াছিন চৌধুরী লিটন। জনসভা মঞ্চে বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক এবং ২০ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের পাশাপাশি পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

    দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আবে শির মতৈক্য

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং, বেইজিংএ এক শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। উভয় নেতা, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

    শি বলেন, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হওয়ার মাঝে চীন ও জাপান ক্রমবর্ধমান ভাবে পরস্পরের উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। তা’ছাড়া উভয় দেশের মাঝে, বহু পক্ষীয় পর্যায়ে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক সাধারণ স্বার্থ এবং উদ্বেগ বিদ্যমান রয়েছে। বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তন, জাপান ও চীনের কাছে উচ্চ পর্যায়ে আরও সহযোগিতার সুযোগ এনে দিচ্ছে।

    আবে, জাপান চীন সম্পর্ককে প্রতিযোগিতা থেকে সহযোগিতার এক নতুন পর্যায়ে উন্নীত করতে এই সফরকে কাজে লাগানোর ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। জাপান এবং চীন হচ্ছে, প্রতিবেশী এবং অংশীদার এবং আমরা পরস্পরের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াব না।

    আমাদেরকে, ন্যায্য এবং মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা বজায় রাখাও তা উন্নত করার কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক ভিত্তিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতার উদ্যোগের ক্ষেত্রে চীনের সাথে একযোগে কাজ করতে চাই। আন্তর্জাতিক সমাজ, আমাদের কাছ থেকে এটাই প্রত্যাশা করে।

    উল্লেখ্য যে, আবের এই সফর হচ্ছে ৭ বছরের মধ্যে কোনও জাপানী নেতার প্রথম আনুষ্ঠানিক চীন সফর।

    চীনা নেতা শি, উভয় দেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক বিষয়াদির উপরও আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, চীন এবং জাপানের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ২ হাজার বছরেরও বেশী ধরে চলছে। আমাদের দেশের লোকেরা, বহুদিন ধরে পরস্পরের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে চলেছে এবং প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। এই দীর্ঘ ইতিহাসে, দুঃখজনক সময়ও ছিল এবং চীনা জনগণ প্রচণ্ড দুর্দশার সম্মুখীন হয়েছেন।

    চীন এবং জাপানের মধ্যকার শান্তি ও মৈত্রী চুক্তির ৪০তম বার্ষিকী উদযাপনের সময়ে আবের এই সফর অনুষ্ঠিত হয়।

    তাঁদের এই উষ্ণ মনোভাবে, কয়েক বছর আগেকার দোদুল্যমান সম্পর্কের তুলনায় এক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়।

    ২০১২ সালে জাপান সরকার, পূর্ব চীন সাগরের সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জের মালিকের কাছ থেকে কিছু অংশ কিনে নেয়ার পর উভয় দেশের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। জাপান এসব দ্বীপ নিয়ন্ত্রণ করলেও চীন এবং তাইওয়ান এগুলোর মালিকানা দাবী করে।

    এর আগে একই দিন, আবে এবং চীনের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার বৈঠকে মুক্ত বাণিজ্য ছিল এক প্রধান আলোচ্য বিষয়।

    চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কে চিয়াং বলেন যে, উভয় দেশের মধ্যে প্রায় ২ হাজার কোটি ডলার মূল্যের বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদিত হয়। উভয় নেতা আরও বলেন যে, তাঁরা এমন এক কাঠামো তৈরি করবেন যার অধীনে উন্নয়নশীল দেশসমূহে অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর বিষয়ে একত্রে কাজ করা সহজতর হবে।

    চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলতি ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধ এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্ধিত সংরক্ষণশীল মনোভাবের মাঝে চীন এবং জাপানের মধ্যে এই সম্প্রসারিত বাণিজ্য সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।

    আবে এবং লি, উত্তর কোরিয়ার পরমানুমুক্তকরণ অর্জন প্রচেষ্টার সমন্বয়সাধন এবং পূর্ব চীন সাগরে দুর্ঘটনা পরিহারের লক্ষ্যে একটি হট লাইন স্থাপনের বিষয়েও একমত হন।

    ‘বিশ্বে’র সবচেয়ে লম্বা মানুষ নিয়ে হৈচৈ

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা মানুষ জিন্নাত আলী। বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনে এসে তিনি দেখা করেন। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন।
    জিন্নাত আলীকে সংসদ ভবনে নিয়ে আসেন কক্সবাজার-৩ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সাইমুর সরওয়ার কমল। তাকে সংসদে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে হৈচৈ পড়ে যায়। তিনি যেখানেই যাচ্ছিলেন মানুষ তাকে ঘিরে ধরছিলেন। এমনকি তাকে একনজর দেখতে ভিড় করেন সংসদ সদস্যরাও।
    হাসপাতালের নথিতে জিন্নাতের উচ্চতা ৭ ফুট ৬ ইঞ্চি উল্লেখ করা হয়েছে।  তবে  দাবি করা হচ্ছে, জিন্নাত আলীর উচ্চতা ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি। যদি এমনটি হয় তাহলে তিনি হলেন বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘকায় মানুষ। কারণ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা জীবিত মানুষ হলেন তুরস্কের সুলতান কশেন। তার উচ্চতা ৮ ফুট ৩ ইঞ্চি।
    জিন্নাত আলী বর্তমানে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন আছেন।
    কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া বড়বিল গ্রামের জিন্নাতের বাড়ি। বৃদ্ধ বাবা আমীর হামজার এক মেয়ে, তিন ছেলের মধ্যে তৃতীয় তিনি। ১২ বছর বয়স থেকেই দ্রুত তার উচ্চতা বাড়তে থাকে।

    শিনকানসেনে নতুন প্রযুক্তি

    জাপানের একটি রেল কোম্পানি নতুন এক প্রযুক্তি উন্মোচন করেছে যার ফলে দুর্যোগের সময় ওপর দিয়ে যাওয়া লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন হয়ে গেলেও শিনকানসেন বুলেট ট্রেন চলাচল অব্যাহত থাকবে।

    মধ্য জাপান রেলওয়ে কোম্পানি বা জে আর তোকাই বুধবার তাদের নতুন এন-৭০০-এস শ্রেণীর শিনকানসেন ট্রেনের জন্য এই ব্যবস্থা প্রচলনের লক্ষ্যে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ২০২০ আর্থিক বছরে এই সেবা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কোম্পানি গত মার্চ মাস থেকে ওই শ্রেণীর ট্রেনের পরীক্ষা চালিয়ে আসছে।

    বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হলে নতুন এই ট্রেন লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির সাহায্যে চলাচল করতে পারবে এবং ঘন্টায় প্রায় ৩০ কিলোমিটারের নিরাপদ এক গতিতে নেমে আসতে পারবে। দ্রুতগামী ট্রেনের জন্য এই ধরনের ব্যবস্থা হল বিশ্বে প্রথম।

    বিভিন্ন ধরনের এন-৭০০-এস শ্রেণীর শিনকানসেন ট্রেন চলতে দেখতে পাওয়া যাবে। সাধারণ ১৬ বগীর ট্রেন ছাড়াও ৮ বগীর ট্রেন বা ট্রেনের অন্যান্য বিন্যাস দেখা যাবে।

    কোম্পানি আশা করছে যে বিদেশে রেলওয়ে প্লাটফর্মের আয়তন এবং যাত্রীর সংখ্যায় পার্থক্য থাকায় বিদেশী রেলওয়ে পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্যরাও নতুন এই ধারা ব্যবহার করতে পারবে।

    মইনুলকে নিয়ে তোলপাড়

    Posted by admin on October 24
    Posted in Uncategorized 

    মইনুলকে নিয়ে তোলপাড়

    ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন’ এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। সর্বত্রই নামটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক চলছে। বিএনপি ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেপথ্যের অন্যতম এই কারিগর এখন কারগারে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টাকে গ্রেফতার, কারাগারে প্রেরণ, নারী সাংবাদিককে কটুক্তি, ক্ষমা চাওয়ার দাবি এবং দলবাজ নারী সাংবাদিকের উষ্কানিমূলক প্রশ্ন, টিভি টকশোতে মইনুলকে না নেয়ার অ্যাডকোর সিদ্ধান্ত, নারী নেত্রীদের সংবাদ সম্মেলন, অর্ধশত সাংবাদিকের বিবৃতি, আদালতে মুক্তির দাবিতে আইনজীবীদের বিক্ষোভ, সংবিধান বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ, সারাদেশ থেকে মিডিয়া অফিসে ফোন করে তার খবর জানতে সাধারণ মানুষের আগ্রহ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তর্ক-বিতর্কে তোলপাড় চলছে। আবার এই ইস্যুতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির বিপরীতমুখী বক্তব্য যুদ্ধে নেমেছেন। এতে দেশ-বিদেশের সবকিছু ছাপিয়ে এখন শিরোনাম হচ্ছে ‘ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন’ খবর। টিভি টকশোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলায় রংপুরে একটি মামলা দায়েরের পর পরই ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলামের আদালতে শুনানির পর জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। এর আগে দু’টি মামলায় হাইকোর্টে জামিন নিলেও ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাসহ জামালপুর, কুমিল্লা, কুড়িগ্রাম, ভোলা, রংপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কক্সবাজারে মামলা হয়েছে। জামিন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর গতকাল আদালত প্রাঙ্গণে ব্যাপক হৈ চৈ হয়। শ্লোগানে শ্লোগানে উত্তপ্ত করে তোলে আইনজীবীরা। বিক্ষোভ করে তারা মইনুলের পক্ষ্যে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেয়। মইনুল হোসেনকে গ্রেফতারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মইনুলকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে মামলার কারণে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে তার সংশ্লিষ্টতা এখানে কোনো বিষয় নয়। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সে জন্য গ্রেফতার করাটাই জরুরি ছিল’। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই গ্রেফতারকে ‘নজীরবিহীন’ অবিহিত করে মুক্তির দাবী জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘তিনি আইনের প্রতি প্রদ্ধাশীল একজন ব্যক্তি। অপশাসনের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলাটাকেই তার অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। মানহানি মামলায় প্রথমে গ্রেফতারি পরোয়ানার নজির নেই। এই গ্রেফতার সম্পূর্ণ বেআইনি’। এদিকে সাবেক এমপি হওয়ার পরও অ্যাটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে কারাগারে সাধারণ বন্দীদের মতোই রাখা হবে; কোনো ডিভিশন নয়। অবশ্য গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে নারী সাংবাদিককে ব্যারিস্টার মইনুলের কটূক্তি নিয়ে মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা প্রতিবাদ করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যা করার করবে। আপনারা মামলা করেন, আমরা যা করার করব।’
    মইনুল হোসেনের গ্রেফতার ও কারাগারে পাঠানো ইস্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিতর্কের ঝড় বইছে। এনিয়ে নানা জনের নানান ধরণের মন্তব্য করছেন, বক্তব্য দিচ্ছেন। টিভি টকশোগুলোতেও চলছে বিতর্ক। তবে সাধারণ মানুষের ওই সব তর্ক-বির্তক পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, মানুষের মতামত হলো সরকার সমর্থক হিসেবে পরিচিত ওই টিভি’র টকশোতে প্রশ্নকর্তা মহিলা সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন যে ‘চরিত্রহীন’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন তা শোভন ছিল না। আবার ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে যে স্টাইলে প্রশ্ন করেছেন মাসুদা ভাট্টি নামের সাংবাদিক সেটাও ছিল অশোভন। প্রশ্নটি ছিল পক্ষপাতিত্ব ও উস্কানিমূলক। ঐক্যফ্রন্ট গঠন করার পর এধরণের প্রশ্ন কেবল ক্ষমতাসীন দলের নীতি নির্ধারকদের খুশি করতেই উত্থাপন সম্ভব।
    অপ্রীতিকর ওই ঘটনার পর ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ফোন করে এবং একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার প্যাডে চিঠি লিখে নিজের বক্তব্যের জন্য মাসুদা ভাট্টির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। এমনকি মাসুদা ভাট্টির দাবির প্রেক্ষিতে তিনি আশ্বাসও দিয়েছেন যে ‘যদি টেলিভিশনে সুযোগ হয় আমি সেখানেও দুঃখ প্রকাশ করবো’। কিন্তু হঠাৎ করে কিছু পরিচিত বুদ্ধিজীবী, নারী নেত্রী, সাংবাদিক ব্যারিস্টার মইনুলকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন; বিবৃতি দেন। এ অবস্থায় বেকে বসেন মাসুদা ভাট্টি; বলেন পরিস্থিতি এখন আমার একার এক্তিয়ারে নেই। নারী নেত্রী ও সাংবাদিকদের এই ভুমিকা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি সমর্থন পরিষদের নেতা ডা. সাখাওয়াত শায়স্ত। যে টিভিতে ‘মইনুল-মাসুদা ভাট্টি’ অপ্রীতিকর বিতর্ক হয়েছে সেই টিভির টকশোতে ডা. সাখাওয়াত শায়স্ত বলেন, নারী নেত্রী-বুদ্ধিজীবী-সাংবাদিকদের কয়েকজন নারী সাংবাদিকের মানহানির অভিযোগে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে ক্ষমা চাইতে বলছেন। নারীর সম্মান রক্ষায় তারা উদগ্রীব। অথচ শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বই মেলাসহ বিভিন্ন যায়গায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে বহু নারী, ছাত্রী নির্যাতিত হয়েছে; সচিত্র সে খবর মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে; অথচ তখন এরা নীরব ছিলেন; প্রতিবাদ করেননি। এদের কাছে কী ওই মেয়ে-ছাত্রী-নারীদের সম্মানহানী অমর্যাদকর মনে হয়নি?
    নারী সাংবাদিককে নিয়ে মইনুল হোসেনের কটুক্তি নিয়ে যখন ঘটনার ঘনঘটা তখন ভারতের অবস্থান করা একজন ইসলাম বিদ্বেষী বিতর্কিত লেখিকা হিসেবে পরিচিত একজন লেখিকা লিখেছেন ‘মাসুদা ভাট্টি একটা ভীষণ রকম চরিত্রহীন মহিলা..। এছাড়াও ওই বিতর্কিত লেখিকা মাসুদা ভাট্টি সম্পর্কে যে সব অশ্লীল শব্দ লিখেছেন; তা পত্রিকায় ছাপার যোগ্য নয়। আবার ওই বিতর্কিত লেখিকার বক্তব্য খন্ডন করতে গিয়ে আলোচিত মাসুদা ভাট্টি ‘মিনমিনে স্বরে’ জবাব দিয়েছেন বলে সাধারণ মানুষ অভিযোগ তুলেছেন ফেসবুক-ব্লগ-টুইটারে।
    যে মামলায় মইনুলকে গ্রেফতার করা হয় রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তা দায়ের করেন মিলি মায়া। আদালতে জামিন চেয়ে মইনুলের আইনজীবী বিএনপিপন্থী খন্দকার মাহবুব উদ্দিন শুনানিতে বলেন, এই মামলা হয়েছে জামিনযোগ্য ধারায়। সুতরাং মইনুল হোসেনকে জামিন দেওয়া যায়। বাদীপক্ষে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা কাজী নজিবুল্যাহ হীরু জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, এ মামলার ধারা জামিনযোগ্য হলেও দেশ ও সমাজের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে আদালত তা নামঞ্জুর করতে পারে। মেয়ের বয়সী মাসুদার কাছে তিনি লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে পারতেন। তিনি তা করেননি। তার স্ট্যাটসের লোকের এ রকম কটূক্তি শোভা পায় না। তার উক্তি গোটা নারী সমাজের বিরুদ্ধে গেছে। নারী সমাজ অপমানিত হয়েছে।
    এদিকে মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা গ্রেফতার ও কারাগারে পাঠানো নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র বাদানুবাদ। শুধু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীই নন; দুই দলের নেতারা যেন বাকযুদ্ধে নেমে গেছেন। মইনুল হোসেনের গ্রেফতারের যৌক্তিকতা তুলে ধরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার না করলে নারী সমাজ ক্ষুব্ধ হতো। টকশোতে সরকারের বিরুদ্ধে তিনি অনেক কথা বলতেন; তখন কিন্তু তাকে আমরা গ্রেফতার করিনি। গ্রেফতার করা হয়েছে টকশোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে যা বলেছেন তাতে শুধু তার মানহানি হয়েছে তা নয়; বাংলাদেশের নারী সমাজ মনে করে তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথাটি পুরো নারী সমাজকে অপমানিত করেছে। সেখান থেকে মামলা হয়েছে’। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ব্যারিস্টার মইনুল বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে রাজনৈতিক জোট করে। এরপর তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাজনীতি করেন। ব্যারিস্টার মইনুল ২০০৫ সালে স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দল জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের অনুষ্ঠানে গিয়ে সেই দলের ও কর্মীদের প্রশংসা করেছিলেন। যে লোক ’৭১ এর খুনি, লুণ্ঠনকারী, ধর্ষকদের প্রশংসা করতে পারে, ’৭৫ এর খুনিদের সঙ্গে রাজনৈতিক আঁতাত করতে পারে, সে অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে চরিত্রহীন।’ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ৫ ঘণ্টার মধ্যে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এটা মানতেই হবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই গ্রেফতার। অথচ যে কারণে তাকে গ্রেফতার করা হলো সেই কারণ আদালত আমলে নিয়ে তাকে পাঁচ মাসের জামিন দিয়েছিল’। মইনুল হোসেনকে নিয়ে তর্ক-বিতর্ক এখনো চলছেই।

    ২০৩০ সালে জাপানে শ্রমিক ঘাটতি হবে ৬৪ লক্ষের বেশী

    জাপানের একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে ২০৩০ সালে দেশে শ্রমিক ঘাটতি হবে ৬৪ লক্ষ ৪০ হাজার।

    পের্সল রিসার্চ এন্ড কন্সালটিং চুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে মিলে আনুমানিক হিসাব করেছে যে, অর্থনীতি এখনকার হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন বজায় রাখলে ২০৩০ সালে জাপানে শ্রমিকের দরকার হবে ৭ কোটি। তবে তারা বলছে শুধুমাত্র ৬ কোটি ৪০ লক্ষ শ্রমিক দেশে পাওয়া যাবে।

    ঘাটতির পরিমাণ হচ্ছে গত বছর জুন মাসে শ্রম মন্ত্রণালয়ের করা আনুমানিক হিসাবের চাইতে পাঁচ গুনের বেশী।

    ৬০ শতাংশ বা ৪০ লক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি সেবা খাতে, চিকিৎসা ও কল্যাণ খাতে ১৮ লক্ষ ৭০ হাজার এবং পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় খাতে ৬ লক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দেবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

    চুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাসাহিরো আবে বলেছেন, সরকার ও বাণিজ্য খাতকে অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে নারী ও বৃদ্ধদের দক্ষতা কাজে লাগানোর মত পদক্ষেপ বিবেচনা করে দেখতে হবে।

    গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন আজ

    দশম জাতীয় সংসদে সর্বশেষ অধিবেশন বসছে আজ। অধিবেশন ঘিরে দেশি-বিদেশী সবার দৃষ্টি থাকবে সংসদের দিকে। এবার কী হবে জাতীয় সংসদে? সাড়ে তিনশ এমপির কেউ কী কোনো ইতিহাস সৃষ্টি করবেন? সংসদে কী অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রয়োজনে কোনো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হবে? নাকি আর দশটা অধিবেশনের মতোই সাদামাটা শেষ হবে? সংসদে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী ৪ মিনিটে এবং ষোড়শ সংশোধনী মাত্র ১১ মিনিটে পাস হয়েছিল। আবার ১৯৯৬ সালে ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেশের মানুষ জানতে পারে নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সংসদে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি’ বিধান সংবিধানে সংযোজন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) বলেছে, বাংলাদেশের এবার নির্বাচন হবে হাই-টেনশনের; তেমনি সংসদ অধিবেশনে কী হয় সেটা দেখার জন্য ১০ কোটি ভোটার রয়েছে হাই-টেনশনে।
    একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল কয়েকদিন পরই ঘোষণা করা হবে। অথচ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নেই কোনো দৃশ্যমান প্রস্তুতি। নির্বাচনের হাকডাক ক্ষমতাসীন দলের দৃশমান হলেও প্রতিদ্বন্দ্বি অন্য দলগুলোকে সভা-সমাবেশ পর্যন্ত করতে দেয়া হচ্ছে না। উপরন্তু মাঠের দলগুলোর রয়েছে ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে’ নির্বাচনের দাবি। এ অবস্থায় নির্বাচন নিয়ে ‘অনিশ্চয়তা’ সব মহলেই। এমনকি গৃহপালিত বিরোধী দল তথা দেশের রাজনীতিতে সরকারের ‘নাচের পুতুল’ খ্যাত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশে নির্বাচনের অনিশ্চয়তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এরই মধ্যে আজ শুরু হচ্ছে দশম জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশন। সংসদের সর্বশেষ এই অধিবেশন ৪ থেকে ৫ দিন চলতে পারে। যদিও সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে অনুষ্ঠেয় সংসদের কার্য উপদেষ্টার বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিগত ২২তম অধিবেশন সংসদের সর্বশেষ অধিবেশন হওয়ার কথা থাকলেও ওই সময়ই হঠাৎ করে ২৩তম অধিবেশন আহবানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই অধিবেশনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে দেশি ও আন্তর্জাতিক মহল। এ অধিবেশনে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রয়োজনে সংসদ সদস্যরা কী কোনো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন? নাকি আবার দেশকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়ে অধিবেশনের সমাপ্তি ঘটবে? গতকালও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের হাতে সময় হচ্ছে কম। নির্বাচন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু। সংসদ বসছে। আমাদের পাঁচ বছরের শেষ বৈঠক হবে। এরপর নির্বাচন প্রক্রিয়া। নির্বাচনে জনগণ যদি ভোট দেয় হয়তো নির্বাচিত হয়ে আসবো; আর যদি ভোট নাও দেয় আমার কোনো আফসোস নেই। বাংলাদেশে উন্নয়নের যে ধারাটা আমরা শুরু করেছি, আমি চাই সেই ধারাটা যেন অব্যাহত থাকে। সামনে নির্বাচন রেখে সকলেই ভোট চায়। আমরাও ভোট চাই। আমার লক্ষ্যই ছিল দুইবার যদি চালাতে পারি তাহলে উন্নয়নটা দৃশ্যমান হবে। পদ্মাসেতু এখন দৃশ্যমান। আমিতো বলেই দিলাম জনগণ ভোট না দিলেও আমার খুব একটা আফসোস নেই’। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে প্রধানমন্ত্রী দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘এবারের নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ; যেনতেন প্রকারের নয়’।
    বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট(এনডিআই) বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ‘হতাশা’ এবং একই সঙ্গে ‘আশাবাদ’ ব্যক্ত করেছে। এনডিআই বলেছে- ‘বাংলাদেশের নির্বাচন হবে হাই-টেনশনের; তবে যদি সরকার ও বিরোধী দল একটি সত্যিকারের সংলাপে বসে তাহলে একটি অধিকতর গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ, শাস্তিপূর্ণ ও সবার জন্য মাঠ সমতলকারী অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা সম্ভব। — একটি নতুন জাতীয় সমঝোতা ধারার সূচনা এবং জাতির সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে যে চমৎকার অগ্রগতি ঘটেছে তা চলমান থাকতে পারে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে এগিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত বিভিন্ন মৌলিক উপাদান রয়েছে। বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারা তার ইতিহাসে আছে—’। সংস্থাটি যেন মানুষের হৃদয় খুরে বেদনার কথা বের করেছে। আসন্ন নির্বাচনের অনিশ্চয়তা নিয়ে যেমন মানুষের মধ্যে হতাশা রয়েছে; তেমনি আশাবাদী মানুষের সংখ্যাও কম নয়। চরম অনিশ্চয়তা-হতাশা-সংঘাত-সংঘর্ষ এবং রক্তপাতের মধ্যেও এদেশের মানুষ ১৯৯৬ সালে দেখেছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে সংসদ সদস্যরা সারারাত জেগে সংসদে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা’ সংবিধানে সংযোজন করে বিল পাস করেছেন।
    দেশের রাজনৈতিক ও সার্বিক পরিস্থিতি রাখঢাকের কোনো বিষয় নয়। ডিজিটাল যুগে কোনো কিছু গোপন করাও যায় না। সবকিছুই এখন ওপেন সিক্রেট। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র যে পিছিয়ে পড়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই দেশের মানুষ চায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে; ভোটের নামে উৎসব করে নিজের ভোট নিজে দিতে। অন্যদিকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলও চায় বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা ধরে রাখা এবং গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার। ক্ষমতাসীন দলের নীতি নির্ধারকরা এতোদিন মনে করতেন বেগম জিয়ার মুক্তি দেয়া নাহলে বিএনপি হয়তো ৫ জানুয়ারির মতো এবারও নির্বাচন বর্জন করবে। হাওয়া দেখে এবার সে রকম মনে হচ্ছে না।
    অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বাড়ছে। জাতিসংঘ, কমনওয়েল, ইউরোপিয় ইউনিয়নসহ প্রভাবশালী দেশ-সংস্থাগুলো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে ঐকমত্য। তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার রক্ষা এবং আগামীতে ওই সব দেশ-সংস্থার সহায়তা পেতে হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অপরিহার্য। প্রয়োজনে তারা এ জন্য সব ধরণের সহায়তাও করতে প্রস্তুত। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই নির্বাচনের আগাম পরিবেশ ও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা যাচাই করতে বাংলাদেশে পর্যবেক্ষক টিম পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে। তারা বলেছেন, পর্যবেক্ষকরা ১৫ দিন বাংলাদেশে অবস্থান করে যে রিপোর্ট দেবেন সেটার আলোকে বাংলাদেশের উন্নয়নের সহায়তা ও বিনিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। আবার বাংলাদেশের নির্বাচনের জন্য ফ্যাক্টর মনে করা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারত। তিন দেশ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে তারা চান বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। এ জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গঠন এবং সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। অথচ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা নির্বাচন নিয়ে এতোদিন ভিন্ন আঙ্গিকে চিন্তা করেছেন।
    সুত্র জানায়, ক্ষমতাসীন দল ও ১৪ দলীয় জোটের নেতারা এতোদিন ‘নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন’ নিয়ে উচ্চ ধারণা পোষণ করতেন। তাদের ধারণা ছিল যেহেতু ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর সংসদ মেয়াদ পূর্ণ করেছে; দেশী বিদেশী কোনো চাপে মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি; দিল্লির দূতিয়ালীর কারণে বিদেশীরাও তেমন চাপ দেয়নি। দেশের ভিতরেও রাজনৈতিক দলগুলো সরকার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি; এখন পারবেও না। এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ মাঠের দলগুলো যতই দাবি ও আন্দোলন করুক সফল হতে পারবে না। আবার বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি ইস্যু নতুন করে যোগ হওয়ায় বিএনপি বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। বিএনপি যাতে এবারও নির্বাচন বর্জন করে সে জন্যই নিম্ন আদালতের সাজাপ্রাপ্ত মামলায় জামিন পেলেও কৌশলে অন্য মামলায় বেগম জিয়াকে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। কিন্তু ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর বিএনপি নির্বাচনমুখী হয়ে পড়েছে। বিএনপির তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতা এবং বিদেশী কূটনীতিকরা চায় বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। বেগম জিয়াকে মুক্তির পাশাপাশি নির্বাচনে অংশও আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছে বিএনপি। তবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছাড়া যে নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয় না সে ব্যাপারে দেশী ও আন্তর্জাতিক মহল ওয়াকেবহাল। এ অবস্থায় নির্বাচনের আয়োজন নির্বাচন কমিশন করলেও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির দায়িত্ব সরকারের।
    সংবিধানের ৭২ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ সংসদের সবশেষ অধিবেশন আহবান করছেন। বর্তমান সংসদের মেয়াদ ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি শেষ হবে। সংবিধানের বিধান অনুযায়ী হয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে; নয়তো কোনো ব্যত্যয় ঘটলে বা সংসদ ভেঙ্গে দিলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তবে ড. কামাল হোসেন, বিএনপি, বামদল-ইসলামী দলসহ মাঠের বিরোধী দল সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে তথা পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির পর নির্বাচন দাবি করছে। সরকার সংসদ বহাল রেখেই ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু দেশেই নয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। বিশেষ করে কিছু উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শেখ হাসিনার ইমেজ সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্যই সরকার দেশী বিদেশী চাপেই হোক আর নিজেদের ইমেজ রক্ষার জন্যই হোক আসন্ন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সংসদের এই অধিবেশনে নেয়া হতে পারে। সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, সংসদের অধিবেশনের শুরুর দিনে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মনোনয়ন, শোকপ্রস্তাব গ্রহণ, প্রশ্নোত্তর, ৭১ বিধির নোটিশ নিষ্পত্তি, কমিটির রিপোর্ট উত্থাপন ও আইনপ্রণয়ন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। অধিবেশনের প্রথম দিনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের প্রশ্নোত্তর এবং ৬টি বিল উত্থাপন ও একটি পাস হওয়ার কথা রয়েছে। সেগুলো হলো, সরকারি চাকরি বিল, বাংলাদেশ স্টান্ডার্ডাস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন বিল, বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমি বিল, বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল, মৎস সঙ্গনিরোধ বিল, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট বিল এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট বিল। এর আগে সংসদের ২২তম অধিবেশন ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ২০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। ১০ কার্য দিবসে ওই অধিবেশনে ১৮টি বিল পাসের মাধ্যমে রেকর্ড সৃষ্টি হয়। অথচ পাস হওয়া একাধিক বিল সম্পর্কে অধিবেশনের আগে সংসদ সদস্যরা কিছুই জানতেন না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রয়োজনে হঠাৎ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গড়তে যদি কোনো বিল এই অধিবেশনে সংসদে উত্থাপন করা হয়; এমনকি সংবিধান সংশোধন করে বিল পাসও করা হয়; তাহলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। কারণ বিগত অধিবেশনের সংসদের মাত্র ১০ কার্যদিবসে ১৮টি বিল পাস করে রেকর্ড গড়া হয়েছে। সে ধারা অব্যাহত রাখা হতে পারে। কারণ ১৫৩ জন এমপি বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেও এবারের সংসদে অন্য রেকর্ডও রয়েছে। তাহলে ’৯১ পরবর্তী প্রতিটি সংসদে বিরোধী দল টানা সংসদ বর্জন করেছে; এবার তেমন ঘটনা ঘটেনি। যা জাতীয় সংসদের জন্য অনন্য রেকর্ড বটে।

    ব্যবসা সহযোগিতার জন্য জাপান ও চীনের প্রস্তুতি

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবের বেইজিং সফরের আগে জাপান ও চীন, ব্যবসা সহযোগিতা সম্পর্কে বেশ কিছু স্মারক বিনিময়ের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতির কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

    আগামী বৃহস্পতিবার থেকে, আবে এক ৩দিন ব্যাপী সফর শুরু করবেন। প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এবং প্রধান মন্ত্রী লি কেচিয়াংএর সাথে আবের সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী আবের সফরের আগে, তৃতীয় দেশসমূহে জাপান ও চীনের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আলোচনার জন্য উভয় দেশ একটি সরকারী ও বেসরকারি খাতের প্যানেল গঠন করে।

    প্রধানতঃ উভয় পক্ষের কোম্পানিগুলি, এসব স্মারক স্বাক্ষর করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

    সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ডের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকায় নগর উন্নয়ন, চীন ও ইউরোপের মধ্যে রেল পরিবহন, এবং তৃতীয় দেশসমূহে সৌর ও বায়ু শক্তি উৎপাদন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

    আবে নিশ্চয়তা কামনা করবেন যে, সম্পর্কিত অঞ্চল এবং বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে এরূপ প্রকল্পসমূহের বিষয়ে চীন জাপানের সাথে সহযোগিতা করবে।

    তিনি ইঙ্গিত দেন যে, জাপান প্রকল্পের উপর ভিত্তি করে শির পথ ও অঞ্চল উদ্যোগের ক্ষেত্রে জাপান সহযোগিতার কথা বিবেচনা করবে।

    তারেককে ফেরত পাঠাতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের চিঠি

    লন্ডনে বসবাসরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে।
    চিঠিতে বলা হয়েছে, লন্ডনে বসবাসরত বিএনপি নেতা তারেক রহমানের যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল করে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো  হোক। বাংলাদেশের আদালতে তিনি দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত এবং পলাতক ব্যক্তি। যুক্তরাজ্য সরকার তাকে আশ্রয় দেয়ায় ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটি উদ্বিগ্ন। তারেক রহমান যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত। অতএব এ বিষয়গুলির আলোকে তার রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করে তাকে বাংলাদেশে  ফেরত পাঠাতে দৃঢ়ভাবে অনুরোধ করছি। আমাদের দাবি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।’
    ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে তার অফিস কর্মকর্তাদের  কাছে চিঠিটি হস্তান্তর করেন সংগঠনের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ এবং সাধারণ সম্পাদক সাজিদুর রহমান ফারুক। এসময়ে ওই স্থানে সংগঠনের নেতাকর্মীরা  বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

    ঐক্যফ্রন্টে যাওয়ার পর বিএনপি জোটে ভাঙন

    জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিএনপির যোগ দেওয়ার পর ২০ দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাপ ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)।
    ২০ দলীয় জোটের বাইরে কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিএনপি যুক্ত হওয়ার তিন দিনের মধ্যেই এই ঘোষণা এলো।
    মঙ্গলবার গুলশানে একটি কমিউনিটি সেন্টারে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মর্তুজা বিএনপির সঙ্গ ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।

    ২০১৯ অর্থবছরের বাজেট পরিকল্পনা শত লক্ষ কোটি ইয়েন ছাড়িয়ে যেতে পারে

    জাপান সরকার দেশের অর্থনীতিতে নির্ধারিত ভোগ্য পণ্য কর বৃদ্ধির প্রভাব কাটিয়ে উঠার পদক্ষেপ নিতে থাকায় ২০১৯ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সাধারণ খাতে ব্যয় প্রাথমিক পরিকল্পনায় প্রথমবারের মত শত লক্ষ কোটি ইয়েন বা প্রায় ৮৯ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

    গতকাল মন্ত্রীসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে ভোগ্য পণ্য কর এখনকার ৮ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে বৃদ্ধি পুনরায় নিশ্চিত করেন। কর বৃদ্ধির ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাসে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ মন্ত্রীদের তিনি দিয়েছেন।

    অর্থ মন্ত্রণালয় বাড়ি ও গাড়ি কেনায় জনগণকে উৎসাহিত করা ও সেই সাথে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের খুচরা বিক্রেতাদের বিক্রিতে ধ্বস নামা প্রতিহত করায় নেয়া পদক্ষেপ বিবেচনা করে দেখছে।

    ২০১৯ অর্থ বছরের বাজেট পরিকল্পনায় এসব ও অন্যান্য পদক্ষেপের জন্য তহবিল বরাদ্দের অনুরোধ জানানোর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় করছে।

    ২০১৯ অর্থ বছরের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও এজেন্সির জানানো ৯০ হাজার কোটি ডলারের বেশী পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের অনুরোধের বাইরে নতুন এই অনুরোধ আসছে।

    হজ্বের পর : হজ্ব-পরবর্তী জীবনের আলোক-প্রদীপ

    হজ্বের মওসুম শেষ হয়েছে। আল্লাহর বান্দাগণ দেশে ফিরে আসছেন। একটি ভূখণ্ডের জন্য এটা খুবই বরকতের বিষয় যে, এখান থেকে আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে আল্লাহর ঘরের দিকে যান, এরপর আল্লাহর বিধান পালন করে সেই ভূখণ্ডে প্রত্যাবর্তন করেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন, ‘জনপদের অধিবাসীরা যদি জানত তাদের উপর হজ্ব আদায়কারীদের কী হক, যখন তারা তাদের কাছে ফিরে আসে, তাহলে তারা তাদের সওয়ারিগুলোকেও চুমু খেত! এঁরা তো সকল মানুষের মাঝে আল্লাহর প্রতিনিধি দল।’ -শুআবুল ঈমান, বাইহাকী ৮/৫৩

    হজ্ব আদায়ের সূত্রে আল্লাহর সাথে বান্দার এই যে নিসবত এবং এ নিসবতের এই যে মর্যাদা, তা যেমন অন্যদের উপলব্ধির বিষয়, তেমনি যাদের হজে¦র মতো মর্যাদাবান ইবাদত আদায়ের সৌভাগ্য হয়েছে তাদেরও উপলব্ধির বিষয়। এই মহা নিসবতের মর্যাদা উপলব্ধি করতে পারলেই তো তা রক্ষা করার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া যাবে।

    জীবনের কোনো কাজকেই হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। মনুষ্যজীবনের কোনো কিছুই হালকা নয়। কারণ তার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত এবং সেই মুহূর্তের কাজের বিষয়ে জবাবদিহিতার প্রসঙ্গ আছে। জীবনের কাজগুলো ভালো হোক বা মন্দ, কিছুতেই গুরুত্বহীন নয়; যে কোনো মানুষের ক্ষেত্রেই এ বিষয়টি সত্য এবং মানুষমাত্রেরই এই বাস্তবতা উপলব্ধি করা প্রয়োজন। এরপর যাদের আল্লাহ ঈমানের মতো মহা নিআমত দান করেছেন, যাদের বুকের ভিতর জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ঐশী প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়েছেন তাদের কাছে তো জীবন ও কর্মের মূল্য একেবারেই স্পষ্ট। জীবনের কোনো কথা ও কাজই যে গুরুত্বহীন নয়, প্রতিটি কথা ও কাজের সাথেই যে রয়েছে শেষ পরিণামের ভালো-মন্দের গভীর সম্পর্ক- এ হাকীকত তো তাদের কাছে মোটেই অস্পষ্ট থাকে না। তাঁদের বিশ্বাস- যে যাররা পরিমাণ ভালো কাজ করবে সে তা দেখবে আর যে যাররা পরিমাণ মন্দ কাজ করবে সে তা দেখবে। তাহলে জীবনের কাজকর্ম কীভাবে অবহেলাযোগ্য হতে পারে?

    মুমিন তো বিশ্বাস করে, প্রত্যেকের জন্য বিশ্বাস ও কর্মের ঐ পথটিই সহজ করে দেওয়া হয়, যে পথের শেষ পরিণামের জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। কাজেই সে যখন পুণ্য ও ভালোর পথে চলার তাওফীকপ্রাপ্ত হয় তখন তার মনে উত্তম পরিণামের প্রত্যাশা জন্ম নেয়। তার মন আনন্দে ভরে ওঠে এবং এই পথে অটল থাকার চেষ্টায় আত্মনিয়োগ করে। পক্ষান্তরে যখন পাপ ও মন্দের পথে চলে তখন তার মনে অশুভ পরিণামের আশঙ্কা জাগে এবং দ্রুত সে ঐ পথ থেকে ফিরে আসে এবং ভালোর পথে চলা শুরু করে। আশা ও ভয়ের মাঝে আশার পাল্লা ভারী করার চেষ্টা মুমিনের কাজ-কর্মের নিয়ন্ত্রক ও পরিচালক হয়ে দাঁড়ায়।

    কাজেই কোনো ভালো কাজের তাওফীক হলে সেটার গুরুত্ব ও মর্যাদা উপলব্ধি করা এবং সেই মর্যাদা ও গুরুত্ব রক্ষা করা অতি প্রয়োজন। ছোট-বড় সকল ভালো কাজের ব্যাপারেই একথা। হজ্ব  তো বড় কাজগুলোর মধ্যেও উপরের দিকের বড় কাজ। এটি একটি ফরয আমল, ইসলামের অন্যতম প্রধান রোকন। কাজেই এই আমলের মর্যাদা রক্ষা করার চেষ্টা অবশ্যকর্তব্য।

    হজ্ব এবং অন্যান্য ইবাদত ও নেক আমলের মর্যাদা রক্ষার সাধারণ উপায় হচ্ছে আল্লাহ তাআলার ইবাদত ও ইতাআতের পথে অবিচল থাকা। নিজের বিশ্বাস ও কর্মের মুহাসাবা করে ত্রæটিগুলো সংশোধনের চেষ্টা করা। বর্তমান দ্বীনদারি রক্ষা করা এবং প্রতিদিন কিছু পরিমাণে হলেও উন্নতির চেষ্টা করা।

    এটি একটি সাধারণ কথা, যা সকল ইবাদতের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে প্রযোজ্য। এরপর প্রত্যেক আমল ও ইবাদতের মধ্যে এমন কিছু শিক্ষার উপাদান রয়েছে, যা বিশেষভাবে আমাদেরকে সামনের জীবনের দুরস্তির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং  উৎসাহিত করে। হজে¦র মধ্যে এমন উপাদান অনেক রয়েছে, তা সঠিকভাবে উপলব্ধি করলে তা আমাদের সামনের জীবনের জন্য প্রেরণার ও পথ প্রদর্শনের আলোকবর্তিকা হতে পারে। যেমন আমরা চিন্তা করতে পারি, আমাদের প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজে¦র খুতবাগুলোতে কী শিক্ষা, কী বিধান দান করেছিলেন। সেই শিক্ষা ও নির্দেশনাগুলোকে আমরা বিশেষভাবে আমাদের সামনের জীবনের পথনির্দেশক হিসেবে গ্রহণ করতে পারি। নমুনা স্বরূপ একটি-দুটি হাদীস এখানে উল্লেখ করছি।

    হযরত আবু উমামা বাহেলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিদায় হজে¦র খুতবায় বলতে শুনেছি-

    اتّقُوا اللهَ رَبّكُمْ، وَصَلّوا خَمْسَكُمْ، وَصُومُوا شَهْرَكُمْ، وَأَدّوا زَكَاةَ أَمْوَالِكُمْ، وَأَطِيعُوا ذَا أَمْرِكُمْ تَدْخُلُوا جَنّةَ رَبِّكُمْ.

    তোমরা আল্লাহকে ভয় করো,  তোমাদের পাঁচ (ওয়াক্ত) নামায আদায় করো, তোমাদের সম্পদের যাকাত দিও এবং তোমাদের দায়িত্বশীলের অনুগত থেকো। তাহলে তোমাদের রবের জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৬১৬

    হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হজে¦র যে দীর্ঘ বিবরণ দিয়েছেন, তাতে আরাফার ময়দানে তাঁর প্রদত্ত খুতবার জ্যোতির্ময় কিছু বাণীর উল্লেখ এভাবে এসেছে :

    إِنّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ حَرَامٌ عَلَيْكُمْ، كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا، فِي بَلَدِكُمْ هَذَا، أَلَا كُلّ شَيْءٍ مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيّةِ تَحْتَ قَدَمَيّ مَوْضُوعٌ، وَدِمَاءُ الْجَاهِلِيّةِ مَوْضُوعَةٌ، وَإِنّ أَوّلَ دَمٍ أَضَعُ مِنْ دِمَائِنَا دَمُ ابْنِ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ، كَانَ مُسْتَرْضِعًا فِي بَنِي سَعْدٍ فَقَتَلَتْهُ هُذَيْلٌ، وَرِبَا الْجَاهِلِيّةِ مَوْضُوعٌ، وَأَوّلُ رِبًا أَضَعُ رِبَانَا رِبَا عَبّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطّلِبِ، فَإِنّهُ مَوْضُوعٌ كُلّهُ، فَاتّقُوا اللهَ فِي النّسَاءِ، فَإِنّكُمْ أَخَذْتُمُوهُنّ بِأَمَانِ اللهِ، وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنّ بِكَلِمَةِ اللهِ، وَلَكُمْ عَلَيْهِنّ أَنْ لَا يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ أَحَدًا تَكْرَهُونَهُ، فَإِنْ فَعَلْنَ ذَلِكَ فَاضْرِبُوهُنّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرّحٍ، وَلَهُنّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنّ وَكِسْوَتُهُنّ بِالْمَعْرُوفِ، وَقَدْ تَرَكْتُ فِيكُمْ مَا لَنْ تَضِلّوا بَعْدَهُ إِنِ اعْتَصَمْتُمْ بِهِ، كِتَابُ اللهِ.

    তোমাদের শোণিত ও সম্পদ পরস্পরের উপর এমনই হারাম যেমন তোমাদের আজকের এই দিনটি, তোমাদের এই মাসে, তোমাদের এই শহরে! শোনো, জাহিলিয়্যাতের সবকিছু আমার দুই পায়ের নীচে। জাহিলী যুগের সকল রক্তের দাবি রহিত। আর সর্বপ্রথম যে রক্তের দাবি রহিত করছি, তা আমাদের রক্তের দাবি, রবীআ ইবনে হারিছের রক্তের দাবি। সে বনু সা‘দ কবীলায় দুধমায়ের কাছে ছিল, হুযাইল গোত্র তাকে হত্যা করে।

    জাহেলী যুগের সকল সুদ রহিত। আর সর্বপ্রথম যে সুদ রহিত করছি তা আমাদের প্রাপ্য সুদ- আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের সুদ। তা সম্পূর্ণরূপে রহিত। এরপর শোনো, স্ত্রীদের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় করো। কেননা তোমরা তাদের গ্রহণ করেছ আল্লাহর নিরাপত্তায় আর তাদের লজ্জাস্থানকে হালাল করেছ আল্লাহর কালিমার দ্বারা। তাদের কাছে তোমাদের অধিকার এই যে, তোমরা অপছন্দ করো এমন কাউকে অর্থাৎ পর পুরুষকে তোমাদের বিছানায় স্থান দিবে না। এটা যদি তারা করে তাহলে তোমরা তাদের হালকা প্রহার করতে পারবে। আর তোমাদের কাছে তাদের অধিকার হচ্ছে, নিয়মমতো তাদের খাদ্য ও বস্ত্রের সংস্থান করা। আমি তোমাদের মাঝে এমন বস্তু রেখে যাচ্ছি, যার পর তোমরা কিছুতেই গোমরাহ হতে পার না, যদি তোমরা আল্লাহর কিতাবকে অবলম্বন কর।… -সহীহ মুসলীম, হাদীস ১২১৮

    আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হজে¦র খুৎবার একটি অংশ বর্ণনা করার পর বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন-

    فَوَالّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، إِنّهَا لَوَصِيّتُهُ إِلَى أُمّتِهِ، فَلْيُبْلِغِ الشّاهِدُ الغَائِبَ، لاَ تَرْجِعُوا بَعْدِي كُفّارًا، يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ

    ঐ সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, এ তো আপন উম্মতের প্রতি তাঁর অসীয়ত। কাজেই উপস্থিত যেন অনুপস্থিতকে পৌঁছে দেয়- তোমরা আমার পরে কাফিরদলে পরিণত হয়ো না যে, একে অপরের গর্দান ওড়াবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৭৩৯

    আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ কিয়ামত পর্যন্ত তার সকল উম্মতের জন্য। সকলের কর্তব্য, সে নির্দেশ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে নিজের কর্ম ও জীবনে তা প্রতিফলিত করা। বিশেষত যাঁরা হজে¦র মোবারক আমলটি আদায় করেছেন, মিনা-আরাফার সেই পবিত্র স্থানের যিয়ারত করে এসেছেন তাঁরা তো ঐসকল স্থানে উচ্চারিত প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ ও নির্দেশনাকে জীবন ও কর্মে ধারণ করার বেশি হক্বদার। আমাদের হজ্ব-পরবর্তী জীবনের জন্য সেই পবিত্র অসীয়তকে আমরা যেন আলোকবর্তিকা হিসেবে গ্রহণ করি। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন- আমীন।

    নারা মন্দিরে বিশালাকারের কাপে চা পরিবেশন

    জাপানের প্রাচীন রাজধানী নারার একটি বৌদ্ধ মন্দিরে, বিপুল সংখ্যক লোকজন বিশালাকারের কাপের চায়ে চুমুক দিয়েছেন।

    আজ সাইদাইজি মন্দিরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে, প্রায় ৫০ জন অংশগ্রহণ করেন।

    একজন পুরোহিত একটি বিশালাকারের চামচ দিয়ে এই চা তৈরি করে প্রায় ৪০ সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের কাপে ঢেলে দেন।

    নিজেদের কাপ ধরার জন্য অংশগ্রহণকারীদের কয়েকজনের সাহায্যের প্রয়োজন হয়।

    স্থানীয় লোকজনদের চায়ের স্বাদ গ্রহণের সুযোগ দিতে প্রায় ৭শ ৮০ বছর আগে একজন বৌদ্ধ পুরোহিত এই ঐতিহ্য চালু করেন বলে কথিত রয়েছে।

    অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী জনৈক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী, এই চা সুমিষ্ট এবং গাড় স্বাদের ছিল বলে জানান। উক্ত ছাত্রী, চায়ের কাপটির ওজন বেশী হওয়ায় তাঁর মাংসপেশিতে ব্যথা হতে পারে বলেও উল্লেখ করেন।