দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আবে শির মতৈক্য
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং, বেইজিংএ এক শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। উভয় নেতা, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
শি বলেন, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হওয়ার মাঝে চীন ও জাপান ক্রমবর্ধমান ভাবে পরস্পরের উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। তা’ছাড়া উভয় দেশের মাঝে, বহু পক্ষীয় পর্যায়ে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক সাধারণ স্বার্থ এবং উদ্বেগ বিদ্যমান রয়েছে। বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তন, জাপান ও চীনের কাছে উচ্চ পর্যায়ে আরও সহযোগিতার সুযোগ এনে দিচ্ছে।
আবে, জাপান চীন সম্পর্ককে প্রতিযোগিতা থেকে সহযোগিতার এক নতুন পর্যায়ে উন্নীত করতে এই সফরকে কাজে লাগানোর ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। জাপান এবং চীন হচ্ছে, প্রতিবেশী এবং অংশীদার এবং আমরা পরস্পরের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াব না।
আমাদেরকে, ন্যায্য এবং মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা বজায় রাখাও তা উন্নত করার কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক ভিত্তিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতার উদ্যোগের ক্ষেত্রে চীনের সাথে একযোগে কাজ করতে চাই। আন্তর্জাতিক সমাজ, আমাদের কাছ থেকে এটাই প্রত্যাশা করে।
উল্লেখ্য যে, আবের এই সফর হচ্ছে ৭ বছরের মধ্যে কোনও জাপানী নেতার প্রথম আনুষ্ঠানিক চীন সফর।
চীনা নেতা শি, উভয় দেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক বিষয়াদির উপরও আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, চীন এবং জাপানের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ২ হাজার বছরেরও বেশী ধরে চলছে। আমাদের দেশের লোকেরা, বহুদিন ধরে পরস্পরের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে চলেছে এবং প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। এই দীর্ঘ ইতিহাসে, দুঃখজনক সময়ও ছিল এবং চীনা জনগণ প্রচণ্ড দুর্দশার সম্মুখীন হয়েছেন।
চীন এবং জাপানের মধ্যকার শান্তি ও মৈত্রী চুক্তির ৪০তম বার্ষিকী উদযাপনের সময়ে আবের এই সফর অনুষ্ঠিত হয়।
তাঁদের এই উষ্ণ মনোভাবে, কয়েক বছর আগেকার দোদুল্যমান সম্পর্কের তুলনায় এক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়।
২০১২ সালে জাপান সরকার, পূর্ব চীন সাগরের সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জের মালিকের কাছ থেকে কিছু অংশ কিনে নেয়ার পর উভয় দেশের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। জাপান এসব দ্বীপ নিয়ন্ত্রণ করলেও চীন এবং তাইওয়ান এগুলোর মালিকানা দাবী করে।
এর আগে একই দিন, আবে এবং চীনের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার বৈঠকে মুক্ত বাণিজ্য ছিল এক প্রধান আলোচ্য বিষয়।
চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কে চিয়াং বলেন যে, উভয় দেশের মধ্যে প্রায় ২ হাজার কোটি ডলার মূল্যের বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদিত হয়। উভয় নেতা আরও বলেন যে, তাঁরা এমন এক কাঠামো তৈরি করবেন যার অধীনে উন্নয়নশীল দেশসমূহে অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর বিষয়ে একত্রে কাজ করা সহজতর হবে।
চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলতি ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধ এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্ধিত সংরক্ষণশীল মনোভাবের মাঝে চীন এবং জাপানের মধ্যে এই সম্প্রসারিত বাণিজ্য সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
আবে এবং লি, উত্তর কোরিয়ার পরমানুমুক্তকরণ অর্জন প্রচেষ্টার সমন্বয়সাধন এবং পূর্ব চীন সাগরে দুর্ঘটনা পরিহারের লক্ষ্যে একটি হট লাইন স্থাপনের বিষয়েও একমত হন।