• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • জাপার বনানী অফিসে তালা, এরশাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

    নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি থেকে শুরু করে গণদলের মতো ক্ষুদ্র দলের অফিস যখন সরগরম; তখন এরশাদের জাতীয় পার্টির বনানী অফিসে গতকাল সারাদিন তালা ঝুলেছে। দলের নেতাকর্মী এবং ‘চেয়ারম্যানের কার্যালয় সিÐিকেট’কে যারা মনোনয়ন নিশ্চিত করতে অর্থ দিয়েছেন তারা এসে ঘুরে গেছেন। হঠাৎ জাতীয় পার্টির বনানী চেয়ারম্যানের কার্যালয় ‘রজনীগন্ধা’য় তালা দেয়া হলো? পুলিশ ছাড়া গতকাল কাউকেই ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী পদত্যাগ করেন। গতকাল চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে এসে পদত্যাগেরঘোষণা দেন ঢাকা-১৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর। এর আগে জাপা চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়ে পদত্যাগ করেন গাইবান্ধা-২ আসনের সাবেক এমপি এখন একাদশ নির্বাচনের প্রার্থী ও পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রশিদ সরকার। পদত্যাগ করার পর তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। নিলফামারী-৪ আসনের বর্তমান এমপি শওকত চৌধুরী বলেছেন, ৬০ লাখ টাকা দিয়েছি; কিন্তু কিছুই পাইনি। গাজীপুরের এক মনোনয়ন প্রত্যাশী বলেছেন, ২২ হাজার টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনে এক প্যাকেট বিরিয়ানি পেয়েছি। আরো কয়েকজন বিক্ষুব্ধ নেতা বলেন, এরশাদের বনানী অফিসে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এই সিÐিকেট নতুন নতুন মুরগি ধরে এনে দলের পদপদাবি দেয়, মনোনয়ন দেয়ার লোভ দেখিয়ে টাকা কামায়। এই টাকার ভাগ সবাই পাওয়ায় সিÐিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় না।
    ’৯১ ও ’৯৬ সালের এমপি আব্দুর রশীদ জানান গাইবান্ধা-২ আসনে মনোনয়ন না পেয়ে তিনি পদত্যাগ করেন। আব্দুর রশীদের অভিযোগ কেবল ‘টাকার অঙ্ক কমে যাওয়ায়’ জাপা তাকে ২০০১ সালে মনোনয়ন দেয়নি। একই কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনেও মনোনয়ন পাননি। অথচ ড. টিআইএম ফজলে রাব্বী চৌধুরী ও এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী চৌধুরী চলে যাওয়ার পর তিনিই জেলা জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব দেন।
    মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টিকে মূলত আসন দেয়া হয়েছে ২২টি। পরে জানানো হয় জাপাকে ৪৫টি আসন দিতে চেয়েছে আওয়ামী লীগ। এরশাদের বনানী অফিস থেকে ১১১ জন প্রার্থীকে মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে বলা হয়। বাস্তবে সারাদেশে দুই শতাধিক প্রার্থী লাঙ্গল মার্কায় ভোট করতে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। জাতীয় পার্টির অবস্থান কি এবং কতগুলো আসনে প্রার্থী দেবেন সে সম্পর্কে দলের নেতারা অন্ধকারে। জাপার মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার জোর দিয়ে বলেছেন, ‘জাপা অবশ্যই মহাজোটে থেকেই নির্বাচন করবে’। তার ‘মহাজোটে থাকবে অবশ্যই’ জোর দেয়া নিয়ে রহস্যঘুনিভূত হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি মহাজোট থেকে বের হয়ে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে পারে। কারণ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া গঠিত হয়েছিল তার অন্যতম সদস্য ছিলেন জিএম কাদের।
    সুত্র জানায়, বিগত ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে আসন ভাগাভাগিতে রওশন এরশাদ ভুমিকা রাখলেও এবার মহাজোটের মধ্যে আসন ভাগাভাগির আলোচনায় সক্রিয় ছিলেন এরশাদ। এর মধ্যেই হঠাৎ করে দু সপ্তাহ আগে আবারো সিএমএইচে ভর্তি হন। সিএমএইচ থেকে ফিরে এরশাদ কোথায় আছেন তা নিযে কয়েকদিন ধূম্রজাল থাকলেও শেষ পর্যন্ত জানানো হয় হাঁটুব্যাথাসহ নানা শারীরিক জটিলতার কারণে তাকে সিএমএইচে নেয়া হয়। মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, এরশাদকে সিংগাপুরে নেয়ার দরকার নেই; বিদেশে নেয়া হচ্ছে না। তাহলে এরশাদের অসুস্থতা কি রাজনৈতিক? জাপার নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এরশাদের অসুস্থতার সুযোগে মহাজোটের সঙ্গে আসন সমঝোতা করছেন মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার। কিন্তু দলের নেতারা হাওলাদার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্য এবং নিজেদের দুই আসন রক্ষা করে অন্য আসন ছাড় দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন। বরিশালে প্রতিদিন হাওলাদার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ঝাটা মিছিল হচ্ছে। আবার যে রংপুরকে এরশাদের ঘাটি বলা হয় সেখানেও ধ্বস নেমেছে। রংপুরের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহত্তর রংপুরের মানুষ এরশাদের উপর ক্ষুব্ধ। তারা বলেন, ’৯১ এ ফাঁসি থেকে বাঁচাতে এরশাদকে ভোট দিয়ে রংপুর বাসী ফেঁসে গেছে। রংপুরে এরশাদ বিপুল ভোট পাওয়ায় স্ত্রী, দুই ভাই, বোন, দুই ভাজিতা, ভগ্নিপতি, ভাগিনাকে এমপি করেন। অথচ রংপুরের উন্নয়নে কোনো কোনো কাজ করেননি। রংপুর-৩ আসনে এরশাদ নিজে ও ভাই জিএম কাদের ও স্ত্রী রওশনকে এমপি করেছেন। ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৫ বছর এমপি থাকার সময় রওশন এরশাদ এলাকায় গেছে ৩বার। জনগণ দূরের কথা কখনোই তিনি দলীয় নেতাদের সঙ্গে মিট করেননি। এবার মহাজোটে এরশাদ যাওয়া নিয়ে মানুষ চরম ক্ষুব্ধ। তাদের বক্তব্য এরশাদ নৌকায় উঠেছেন নিজের স্বার্থে রংপুরের মানুষের স্বার্থে নয়। এরশাদ বিক্রি হয়েছেন আমরা তো বিক্রি হইনি। এবার এরশাদ উচিত জবাব পাবেন।
    এরশাদের অসুস্থতা, দুই যুগ ধরে রাজনৈকি ক্যারিকেচায় জাতীয় পার্টির ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। তার অনুপস্থিতিতে গত কয়েকদিনে জাতীয় পার্টিতে মনোনয়ন নিয়ে ক্ষাভ বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠেছে। যদিও কয়েকজন সিনিয়র নেতা নিশ্চিত করেছেন সরকারের সঙ্গে আসন নিয়ে আলোচনা চলছে। এ অবস্থায় কার্যত অস্তিত্বের সংকটে পড়তে যাচ্ছে এরশাদের জাপা। পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে দলটির একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, অন্যের আলোয় আলোকিত হওয়ায় জাপার রাজনীতি ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। ৫ বছর সরকারে না বিরোধী দলে এই পরিচয় সংকটের কারণে দলটির সমর্থন কমছে। এবারের নির্বাচনে এটা স্পষ্ট হবে। অবশ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের আস্তস্থ্য করে বলেছেন, এরশাদের অসুস্থতা নিয়ে এমন কথা না বলাই ভাল। এরশাদ সাহেবের অসুস্থতা গতবারের মত (২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনের এক মাস আগে ১২ নভেম্বর সিএমএইচ-এ নেয়া হয়) নয়। অবস্থা সঙ্কটের দিকে ছিল, এখন স্থিতিশীল আছে।

    জাপানের প্রতি সমর্থনের আহ্বান রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু গ্রুপের

    জাপানের রোহিঙ্গা মুসলমানরা বলছেন সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণের আহ্বান মিয়ানমার সরকারের প্রতি অবশ্যই জানানো দরকার। একই সাথে এরা জাপানের সরকার ও নাগরিকদের সমর্থন লাভের আশা করছেন।

    টোকিওতে ভাষণ দেয়ার সময় জাপানে বর্মী রোহিঙ্গা সমিতির একজন প্রতিনিধি এই আহ্বান জানান। সেই ব্যক্তি, হারুন রাশিদ, দুই দশকের বেশী আগে মিয়ানমার ত্যাগ করেন এবং এখন তিনি জাপানের নাগরিক।

    তিনি বলেছেন তাঁর ভাই-বোনেরা বর্তমানে বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে কঠিন জীবন কাটাচ্ছেন। এদের মানবাধিকার রক্ষা করার জন্য মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ প্রয়োগের অনুরোধ তিনি অনুষ্ঠানে সমবেত দর্শকদের প্রতি জানান।

    গত বছর রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো দমন অভিযানের মুখে ৭ লক্ষের বেশী রোহিঙ্গা মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে যান।

    রাশিদ বলেছেন মিয়ানমার সরকারের অবশ্যই উচিৎ হবে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়া এবং সমস্যার সমাধান করে নিতে এদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

    বিএনপির তালিকাজুড়ে গত নির্বাচনের প্রার্থীরাই

    আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নের চিঠি বিতরন শুরু করেছে বিএনপি। আজ দুপুর সোয়া ৩ টায় দলের কারারুদ্ধ চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য মনোনয়নপত্র দিয়ে আনুষ্ঠানিতার সুচনা হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম জিয়ার (বগুড়া-৬ আসন) মনোনয়নের চিঠি তুলে দেন বগুড়া জেলার সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও (বগুড়া-৭) চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালুর হাতে। অতঃপর বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রার্থীদের মধ্যে চিঠি বিতরণ করা হয়।

    আজ সোমবার ঢাকাসহ অন্য বিভাগগুলোর মনোনয়নের চিঠি বিতরণ সম্পন্ন হবে। তিনশটি নির্বাচনী আসনের মধ্যে অর্ধ শতাধিক আসন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও ড.কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য ছাড় দিয়ে বাকিগুলোতে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা বিশে­ষন করে দেখা গেছে গত ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির যেসব প্রার্থী মনোনয়ন পেয়েছিলেন আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তাদেরকেই প্রার্থী করা হয়েছে। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রাপ্ত বিএনপির বেশ কিছু সাবেক এমপি এবং নেতা মৃত্যুবরণ করেছেন। এমন প্রায় ২৫ জন নেতার আসনে এবার নতুন মুখকে মনোনয়ন দিচ্ছে বিএনপি। এরমধ্যে কিছু আসনে মৃত্যুবরণকারী নেতাদের স্ত্রী ও সন্তান, কিছু দলীয় নেতা এবং কিছু জোটের নেতাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এছাড়া কোন কোন নেতা বয়োবৃদ্ধ হয়ে চলৎশক্তিহীন হয়ে পড়েছেন বা মামলায় দণ্ডিত অথবা দুদকের জটিলতার কারণে মনোনয়ন পাননি। তাদের স্থানে নতুন মুখ রাখা হয়েছে। এসব অনিবার্য কারণে অন্তত অর্ধশত আসনে নতুন মুখ মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। গত নির্বাচনের প্রার্থীদেরকেই মনোনয়ন দেয়াই দলের তর“নদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আজ রাতে গুলশান অফিসের সামনে বিক্ষোভও হয়েছে।

    এই বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে তারা নবম সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদেরকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনি জেলে যাওয়ার আগেই শতাধিক আসনে প্রার্থী চুড়ান্ত করে যান। তার নির্দেশেই সংস্কারপন্থিদের দলে ফিরিয়ে নিয়ে তাদেরকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। অনেক আসনে পুরানোদের চেয়ে যোগ্য জনপ্রিয় প্রার্থী থাকলেও তাদের মনোনয়ন না দিয়ে আগের ২০০৮ সালের তালিকা ধরে প্রার্থী করা হয়েছে।এমনকি অন্যের সাহায্য নিয়ে চলতে হয় এমন বয়স্ক বেশ কয়েকজন নেতাকেও মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। প্রায় প্রতি আসনেই একাধিক বিকল্প প্রার্থী প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্যে নির্বাচন করছে বিএনপি। গ্রেফতার জেল জুলুম মামলা চলছে অব্যাহতভাবে। গ্রেফতার হচ্ছেন প্রার্থীরা। কয়েকজন প্রার্থী এখনো কারাগারে।

    এই অবস্থায় বিএনপি সরকারী প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনসহ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। তারা মনে করছে তাদের প্রার্থীদের নানা অজুহাতে প্রার্থিতা বাতিল করে দেয়া হতে পারে। এজন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে বিএনপি। তারা প্রায় প্রতিটি আসনে একের অধিক প্রার্থী দিয়েছে। যাতে কোনও কারণে একজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে গেলে অন্যজন নির্বাচনে টিকে থাকতে পারে।

    আজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, প্রায় প্রতিটি আসনেই একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ছাড়া প্রায় প্রতিটি সংসদীয় আসনে আমরা দুজনকে মনোনয়নের চিঠি দিচ্ছি। যাতে কোনও কারণে একজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে গেলে অন্যজন নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পান।

    আজ সোমবার বেলা ৩টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।এ সময় মির্জা ফখর“ল বলেন, আজ দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার, খুন, গুম করা হয়েছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়ার অবকাশ নেই। তারপরও আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি শুধু একটি কারণে, সেটি হচ্ছে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি আন্দোলন সৃষ্টি করে খালেদ জিয়াকে মুক্ত করবো।

    ২০ দলকে ৪০ ঐক্যফ্রন্টকে ২০ বিএনপির পুরানো সঙ্গী ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের সর্বোচ্চ ৫৫-৬০টি আসনে ছাড় দেবে বিএনপি। এর মধ্যে ২০ দলীয় জোটের শরিকদের৩৮-৪২টি ও ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের ১৫-২০ টি আসন দেয়া হবে। এনিয়ে আজও বৈঠক হয়েছে। এখনো চলছে দরকষাকষি। ড.কামাল হোসেন আজ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, পিঠা ভাগ করতে গেলেও টানাটানি করতে হয়। এই কাজ একটা চ্যালেঞ্জ। আমি নিজেও ভাবতে পারিনি, আমাদের এই জোট এত দ্রুত গঠন করা যাবে। আপনারা অবশ্যই বোঝেন যে, যেকোনো জায়গায় যেকোনো সমাজে কিছু কাড়াকাড়ি হবে। ভাগ করা মানে কী? কেউ পাবে কেউ পাবে না। কাজগুলো কঠিন। কিন্তু কাজগুলো এগিয়ে নিতে হবে। বিএনপি নেতারা বলছেন, ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে আসন বন্টন চুড়ান্ত হবে। তাড়াহুড়োর কিছু নেই।

    জানা গেছে, জামায়াত ইসলামীকে-২৮, এলডিপিকে-৪, বিজেপি-১, এনপিপি-১, কল্যাণ পার্টি-১, খেলাফত মজলিস-১, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম-২ এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ২০ আসনে ছাড় দেয়া হতে পারে। তবে আসন ভাগাভাগি এটাই চূড়ান্ত নয়। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পুর্ব পর্যন্ত এ নিয়ে ২০ দলীয় জোটের শরীক ও ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আরো আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির এক নেতা।

    শুরুতেই বিদ্রোহ, সান্ট’র চিঠি প্রত্যাখ্যান একই আসনে একাধিক মনোনীত প্রার্থী থাকায় শুরুতেই বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে বিএনপিতে। দলের মনোনীত প্রার্থী তালিকায় অধিকাংশ আসনেই বিকল্প হিসেবে একাধিক জনের নাম রেখেছে দলটি। মনোনয়ন বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কেউ কেউ। ফলে চিঠি বিতরণের শুরুতেই বিএনপিতে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। এরইমধ্যে কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন। মনোনীত প্রার্থীরা গুলশান অফিসের ২য় তলা থেকে মনোনয়ন বোর্ডের কাছ থেকে মনোনয়নের চিঠি নিচ্ছেন।

    আজ সোমবার সন্ধ্যায় মনোনয়ন আনতে যান বরিশাল-২ আসনের মনোনয়নের চিঠি প্রাপ্ত শরফুদ্দিন সান্টু। নিজ আসনে তিনজন প্রার্থীর নাম দেখে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাখান করেছেন বলে জানান। শরফুদ্দিন সান্টু বলেন, আমার আসনে এক নম্বর প্রার্থী সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালেরও নাম রয়েছে। আমার নাম দুই নম্বরে। তিন নম্বরে আছেন শহীদুল হক জামাল। ফলে আমি মনোনয়ন প্রত্যাখান করে এসেছি। তিনি বলেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো। আমি এদের থেকে কম যোগ্য নই।

    দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতাদের তাকেশিমা সফরে জাপানের প্রতিবাদ

    জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতাদের জাপান সাগরে অবস্থিত বিরোধপূর্ণ তাকেশিমা দ্বীপমালায় এক সফরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।

    দক্ষিণ কোরিয়ার ভিন্ন ভিন্ন দলের ৮ জন আইনপ্রণেতার একটি গ্রুপ সোমবার হেলিকপ্টারে কোরে ঐ দ্বীপমালায় যায়। সেখানে তারা নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য সম্প্রতি সংস্কারকৃত একটি অবকাঠামো পরিদর্শন করে এবং রক্ষীদের উৎসাহ প্রদান করে।

    দ্বীপগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জাপান সেগুলোর মালিকানা দাবি করে আসছে। জাপান সরকার মনে করে যে দ্বীপগুলো জাপানের ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্দ অংশ। তারা বলে যে দক্ষিণ কোরিয়া অবৈধভাবে দ্বীপগুলো দখলে রেখেছে।

    পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চল বিষয়ক ব্যুরো’র প্রধান কেনজি কানাসুগি টোকিও’র দক্ষিণ কোরীয় দূতাবাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

    কানাসুগি ঐ কর্মকর্তাকে বলেন যে দ্বীপগুলোর সার্বভৌমত্বের বিষয়ে জাপানের অবস্থানের ভিত্তিতে সেখানে দক্ষিণ কোরীয় আইনপ্রণেতাদের সফর কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সিওলের জাপান দূতাবাস দক্ষিণ কোরীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একই ধরনের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

    জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে যে গতসপ্তাহে তারা এই পরিকল্পিত সফরের কথা জানতে পারে এবং তখন তারা এই সফর বাতিলের জন্য আহ্বান জানায়।

    ১৩ জন দক্ষিণ কোরীয় আইনপ্রণেতাদের অপর একটি গ্রুপ তাদের দাবিকৃত সার্বভৌমত্ব প্রদর্শন করতে গত মাসে দ্বীপটিতে গিয়েছিল।

    চলতি মাসের শুরুতে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি গবেষণা জাহাজও কোন অনুমতি ছাড়াই দ্বীপটির কাছে জাপানের জলসীমায় প্রবেশ করে।

    আ.লীগের মনোনয়ন চিঠি বিতরণ শুরু

    আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চুড়ান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে সবার নামে ইস্যু হয়েছে মনোনয়নের চিঠি বিতরণ শুরু হয়েছে। রোববার সকাল থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতির স্বাক্ষর করা মনোনয়ন চিঠি দলীয় সভাপতির কার্যালয় থেকে বিতরণ শুরু হয়।ছে, ১৪ দলীয় জোট ও মহাজোটের শরীক দলগুলোর কাছে ইতোমধ্যে তাদের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকাও হস্তান্তর করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

    একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের তালিকায় যাদের নাম আছে- তারা হলেন- অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন (পঞ্চগড়-২), রমেশচন্দ্র সেন (ঠাকুরগাঁও-১), দবিরুল ইসলাম (ঠাকুরগাঁও-২), খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (দিনাজপুর-২), ইকবালুর রহিম (দিনাজপুর-৩), আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪), অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার (দিনাজপুর-৫), আসাদুজ্জামান নূর (নীলফামারী-২), মোতাহার হোসেন (লালমনিরহাট-১), নুরুজ্জামান আহমেদ (লালমনিরহাট-২), টিপু মুনশি (রংপুর-৪), এইচএন আশিকুর রহমান (রংপুর-৫), মাহাবুব আরা বেগম গিনি (গাইবান্ধা-২), ডা. ইউনুস আলী সরকার (গাইবান্ধা-৩), শামসুল আলম দুদু (জয়পুরহাট-১), আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন (জয়পুরহাট-২), আবদুল মান্নান (বগুড়া-১), হাবিবুর রহমান (বগুড়া-৫), সাধনচন্দ্র মজুমদার (নওগাঁ-১), শহীদুজ্জামান সরকার (নওগাঁ-২), আবদুল মালেক (নওগাঁ-৫), ইসরাফিল আলম (নওগাঁ-৬), ওমর ফারুক চৌধুরী (রাজশাহী-১), প্রকৌশলী এনামুল হক (রাজশাহী-৪), শাহরিয়ার আলম (রাজশাহী-৬), অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক (নাটোর-৩), মোহাম্মদ নাসিম (সিরাজগঞ্জ-১), ডা. হাবিবে মিল্লাত (সিরাজগঞ্জ-২), আবদুল মজিদ মন্ডল (সিরাজগঞ্জ-৫), হাসিবুর রহমান স্বপন (সিরাজগঞ্জ-৬), আহমেদ ফিরোজ কবির (পাবনা-২), মকবুল হোসেন (পাবনা-৩), শামসুর রহমান শরীফ ডিলু (পাবনা-৪), গোলাম ফারুক প্রিন্স (পাবনা-৫), ফরহাদ হোসেন দোদুল (মেহেরপুর-১), মাহবুবউল আলম হানিফ (কুষ্টিয়া-৩), আবদুর রউফ (কুষ্টিয়া-৪), সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন (চুয়াডাঙ্গা-১), আলী আজগার টগর (চুয়াডাঙ্গা-২), শেখ আফিল উদ্দিন (যশোর-১), কাজী নাবিল আহমেদ (যশোর-৩), রণজিৎ কুমার রায় (যশোর-৪), স্বপন ভট্টাচার্য (যশোর-৫), ইসমাত আরা সাদেক (যশোর-৬), বীরেন শিকদার (মাগুরা-২), সাইফুজ্জামান শিখর (মাগুরা-১), মাশরাফি বিন মুর্তজা (নড়াইল-২), শেখ হেলাল উদ্দিন (বাগেরহাট-১), হাবিবুন্নাহার (বাগেরহাট-৩), পঞ্চানন বিশ্বাস (খুলনা-১), মুন্নুজান সুফিয়ান (খুলনা-৩), আবদুস সালাম মুর্শেদী (খুলনা-৪), নারায়ণচন্দ্র চন্দ (খুলনা-৫), অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক (সাতক্ষীরা-৩), এসএম জগলুল হায়দার (সাতক্ষীরা-৪), অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্রচন্দ্র দেবনাথ শম্ভু (বরগুনা-১), শওকত হাচানুর রহমান রিমন (বরগুনা-২), আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন (পটুয়াখালী-৩), তোফায়েল আহমেদ (ভোলা-১), নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন (ভোলা-৩), আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব (ভোলা-৪), আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ (বরিশাল-১), অ্যাডভোকেট তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস (বরিশাল-২), পংকজ দেবনাথ (বরিশাল-৪), জেবুন্নেছা আফরোজ (বরিশাল-৫), আমির হোসেন আমু (ঝালকাঠি-২), ড. আবদুর রাজ্জাক (টাঙ্গাইল-১), আতাউর রহমান খান (টাঙ্গাইল-৩), হাসান ইমাম খান (টাঙ্গাইল-৪), ছানোয়ার হোসেন (টাঙ্গাইল-৫), খন্দকার আবদুল বাতেন (টাঙ্গাইল-৬), একাব্বর হোসেন (টাঙ্গাইল-৭), সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (কিশোরগঞ্জ-১), রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক (কিশোরগঞ্জ-৪), নূর মোহাম্মদ (কিশোরগঞ্জ-২), আফজাল হোসেন (কিশোরগঞ্জ-৫), নাজমুল হাসান পাপন (কিশোরগঞ্জ-৬), এএম নাঈমুর রহমান দুর্জয় (মানিকগঞ্জ-১), জাহিদ মালেক স্বপন (মানিকগঞ্জ-৩), সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি (মুন্সীগঞ্জ-২), অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস (মুন্সীগঞ্জ-৩), নসরুল হামিদ বিপু (ঢাকা-৩), সাবের হোসেন চৌধুরী (ঢাকা-৯), ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস (ঢাকা-১০), একেএম রহমতুল্লাহ (ঢাকা-১১), আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল (ঢাকা-১২), কামাল আহমেদ মজুমদার (ঢাকা-১৫), ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা (ঢাকা-১৬), আ ক ম মোজাম্মেল হক (গাজীপুর-১), জাহিদ আহসান রাসেল (গাজীপুর-২), সিমিন হোসেন রিমি (গাজীপুর-৪), মেহের আফরোজ চুমকি (গাজীপুর-৫), লে. কর্নেল (অব) নজরুল ইসলাম হিরু বীরপ্রতীক (নরসিংদী-১), সিরাজুল ইসলাম মোল্লা (নরসিংদী-৩), অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন (নরসিংদী-৪), নজরুল ইসলাম বাবু (নারায়ণগঞ্জ-২), একেএম শামীম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৪), কাজী কেরামত আলী (রাজবাড়ী-১), ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন (ফরিদপুর-৩), কাজী জাফরউল্লাহ (ফরিদপুর-৪), লে. কর্নেল (অব) ফারুক খান (গোপালগঞ্জ-১), শেখ ফজলুল করিম সেলিম (গোপালগঞ্জ-২), শেখ হাসিনা (গোপালগঞ্জ-৩), নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন (মাদারীপুর-১), শাজাহান খান (মাদারীপুর-২), একেএম এনামুল হক শামীম (শরীয়তপুর-২), ইকবাল হোসেন অপু (শরীয়তপুর-১), নাহিম রাজ্জাক (শরীয়তপুর-৩), মির্জা আজম (জামালপুর-৩), রেজাউল করিম হিরা (জামালপুর-৫), আতিউর রহমান আতিক (শেরপুর-১), মতিয়া চৌধুরী (শেরপুর-২), একেএম ফজলুল হক চান (শেরপুর-৩), জুয়েল আরেং (ময়মনসিংহ-১), অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন (ময়মনসিংহ-৬), ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল (ময়মনসিংহ-১০), অসীম কুমার উকিল (নেত্রকোনা-৩), ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন (সুনামগঞ্জ-১), জয়া সেনগুপ্তা (সুনামগঞ্জ-২), এমএ মান্নান (সুনামগঞ্জ-৩), মুহিবুর রহমান মানিক (সুনামগঞ্জ-৫), ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন (হবিগঞ্জ-৪), মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরী কয়েস (সিলেট-৩), ইমরান আহমদ (সিলেট-৪), নুরুল ইসলাম নাহিদ (সিলেট-৬), শাহাব উদ্দিন (মৌলভীবাজার-১), সৈয়দা সায়রা মহসিন (মৌলভীবাজার-৩), অ্যাডভোকেট আনিসুল হক (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪), ক্যাপ্টেন (অব) এবি তাজুল ইসলাম (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬), অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু (কুমিল্লা-৫), আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার (কুমিল্লা-৬), অধ্যাপক আলী আশরাফ (কুমিল্লা-৭), আ হ ম মুস্তফা কামাল লোটাস (কুমিল্লা-১০), মুজিবুল হক (কুমিল্লা-১১), মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম (চাঁদপুর-২), ডা. দীপু মনি (চাঁদপুর-৩), এইচএম ইব্রাহিম (নোয়াখালী-১), ওবায়দুল কাদের (নোয়াখালী-৫), একেএম শাজাহান কামাল (লক্ষ্মীপুর-৩), ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন (চট্টগ্রাম-১), ড. হাছান মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৭), ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (চট্টগ্রাম-৯), সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ (চট্টগ্রাম-১৩), সাইমুম সরওয়ার কমল (কক্সবাজার-৩), শাহীনা আক্তার চৌধুরী (কক্সবাজার-৪), কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি) ও বীর বাহাদুর উ শৈ সিং (বান্দরবান)।

    বাকি আসনের কিছু শরীকদের; যেগুলোর তালিকা সংশ্লিষ্ট দলের কাছে দেয়া হয়েছে। আর কিছু চিঠি ইস্যুর অপেক্ষায়।

    গত ৯-১২ নভেম্বর টানা চারদিনে ৪ হাজারের বেশি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে আওয়ামী লীগ। এরপর টানা এক সপ্তাহ দলটি সভাপতির নেতৃত্বে মনোনয়ন বোর্ড বিভিন্ন জরিপের ভিত্তিতে নিজেদের প্রার্থী তালিকা করেন। এরপরে দলীয় প্রধানের সঙ্গে শরিক দলগুলোর একাধিক বৈঠক করার পর তাদেরও আসন নিয়ে সুরাহা হয়। এখন সবই চূড়ান্ত হয়েছে।

    ২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ড এক্সপো আয়োজনের দায়িত্ব পেল ওসাকা

    জাপানের ওসাকা শহর স্বাগতিক হিসেবে ২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ড এক্সপো আয়োজন করবে। শহরটি শুক্রবার প্যারিসের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ব্যুরো সংক্ষেপে বিআইই’তে দুই দফা ভোটগ্রহণ শেষে ত্রিমুখী লড়াইয়ে জয় লাভ করে।

    ১৫৬ টি সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা ভোট দেন। আজারবাইজানের বাকু শহর প্রথম দফা ভোটে বাদ পরে। ওসাকা সবচেয়ে বেশি ভোট লাভ করে কিন্তু নিরঙ্কুশ বিজয়ের জন্য প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের চেয়ে কম ভোট পায়।

    দ্বিতীয় দফা ভোটে ওসাকা রাশিয়ার একাতেরিনবুর্গ শহরের বিপক্ষে ৯২-৬১ ভোটে জয় লাভ করে।

    ২০২৫ সালের এই অনুষ্ঠান হবে ওসাকার দ্বিতীয়বারের মত ওয়ার্ল্ড এক্সপো আয়োজন। এর আগেরবার আয়োজন করা হয়েছিল ১৯৭০ সালে।

    শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা: মনোনয়ন নিয়ে মহাজোট-ঐক্যফ্রন্টের দৌড়ঝাঁপ

    দেশের দুই জায়ান্ট রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে চলছে নির্বাচনের মনোনয়ন প্রক্রিয়া। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার পর্ব শেষ হলেও বিএনপিতে এখনো সে পর্ব চলছে। দলীয় প্রার্থী চূড়ান্তের পর আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোট ও মহাজোটের শরীক জাপা-বিকল্পধারার সঙ্গে প্রার্থী সমঝোতা করতে হবে। বিএনপি ২০ দলীয় জোট ছাড়াও ঐক্যফ্রন্টের দলগুলোর মধ্যে আসন ভাগাভাগি করবে। জোটের মধ্যে উপজোট এবং অনুগত দলগুলোর মধ্যেও ‘আসন বিতরণ’ হবে। দুই বড় শক্তিই ঘোষণা দিয়েছে তারা শরীকদের ৬০ থেকে ৭০টি আসন ছাড় দেবেন। কোন কোন আসন শরীকদের দেয়া হবে তা নিয়ে চলছে টেনশন ও অস্থিরতা। দুই দলের নিজেদেরই প্রতিটি আসনে ১০ থেকে ৩০ জন করে মনোনয়ন প্রত্যাশীর কারা প্রার্থী হচ্ছেন? কোন দলের কে প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে টান টান উত্তেজনা। প্রার্থীরা রয়েছেন শ্বারুদ্ধকর অবস্থায়।
    আওয়ামী লীগ ঃ দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন না বাদ পড়ছেন তা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই আওয়ামী লীগের বর্তমান অনেক এমপি ও মনোনয়নপ্রত্যাশীর। যেসব আসনে ১৪ দলের বা জাতীয় পার্টিরসহ মহাজোটের প্রার্থী রয়েছে সেসব আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা রয়েছে বিপাকে। শেষ মুহুর্তে হাইপারটেনশনে ভূগছেন অনেকেই। তবে হাল ছাড়েননি কেউই। মনোনয়ন নিশ্চিত করতে গণভবন, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের বাসা অফিসে দৌড়াঝাপ করছেন। দলের মনোনয়ন ঘোষণা করার আগ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
    এবার ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনেছেন চার হাজার ৪৩ জন। গড়ে প্রতি আসনে প্রায় ১৫ জন। কে মনোনয়ন পাচ্ছেন তা নিয়ে উৎকণ্ঠার শেষ নেই প্রার্থীদের। খোঁজ নিচ্ছেন প্রার্থী তালিকায় নাম আছে কিনা। গণভবন থেকে শুরু করে দলীয় অফিস, নেতাদের বাসায় যোগাযোগ করছেন। কর্মকর্তা থেকে শুরু করে পিয়ন, ছোট খাট নেতাদের জিজ্ঞেস করছেন তালিকা সম্পর্কে খোঁজ জানেন কিনা এবং তার নাম আছে কিনা।
    গণমাধ্যমে খসড়া তালিকায় প্রার্থীর নিজের আসনে অন্য জনের নাম দেখে টেনশনে অনেকেই। তাদের মিষ্টি খাওয়ানোর দৃশ্য দেখে আতকে উঠেন, বুকের ভেতর চাপ অনুভব করেন। তবে বিশ্বাস করতে চান তিনি মনোনয়ন পাবেন। বিভিন্ন জরিপে এগিয়ে থাকা প্রার্থী বিশ্বাস করতে চান দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকেই মনোনয়ন দেবেন। গণমাধ্যম ও অন্য প্রার্থীদের গ্রিন সিগনাল পাবার খবর মিথ্যা।
    সব মিলিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির উপর দিয়ে দিন পার করছেন আওয়ামী লীগের এমপি ও এমপি প্রার্থী। আর তিন চার দিনের মধ্যেই এ পরিস্থিতির অবসান হবে। কারো মুখে থাকবে হাসি, আর কারো মুখ মলিন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শরীকদের ৬৫ থেকে ৭০টি আসন দেয়া হবে। ২৫ নভেম্বর প্রাথী তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরশাদ অন্য চিন্তা করলে সেটা তার ব্যাপার।
    ইতোমধ্যে দলের মনোনয়নের খসড়া তালিকায় থাকা কিছু নাম এসেছে আলোচনায়। সবাই চেষ্টা করছেন তালিকায় নাম আছে কিনা তা জানার জন্য। বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের জোর প্রচেষ্টা চলছে। খসড়া তালিকায় কিছু আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট কিছু নেতা মনোনয়ন পাচ্ছেন না। আর যেসব আসনে বর্তমান এমপি মনোনয়ন পাবেন না আশা করেছিলেন অন্য প্রার্থীরা, সেসব আসনে প্রার্থী পরিবর্তন হচ্ছে না এমন খবরে সবাই দৌড়ঝাপের উপরে রয়েছেন।
    এমপিরা মনোনয়ন ঠিক রাখার জন্য আর অন্য প্রার্থীরা মনোনয়ন পাবার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন না পাবার তালিকায় আলোচনার শীর্ষে দলের দুই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান এবং দুই সাংগাঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। খসড়া তালিকায় আব্দুর রহমানের আসন ফরিদপুর-১ এ সাবেক সচিব ও রূপালী ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন, বিএম মোজাম্মেলের শরিয়তপুর-১ এ ইকবাল হোসেন অপু এবং নাছিমের আসন মাদারীপুর-৩ এ কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের নাম। বাদ পড়া এই চার নেতাই মনোনয়ন ঠিক রাখার চেষ্টা করছেন। এছাড়া অনেক প্রবীণ এমপি টেনশনে আছেন মনোনয়ন না পাবার। অনেকে নিজের আসনে সন্তানের মনোনয়নের চেষ্টা করছেন; টেনশনে পড়ে গেছেন কি হয়?
    গাজীপুর-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট রহমত আলীর স্থানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজের নাম। এ নিয়ে এমপি পুত্র জামিল হাসান দুর্জয়ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।
    আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি সাবিনা আক্তার তুহিন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, টাঙ্গাইল-৮ আসনের এমপি অনুপম শাহজাহান জয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন।
    খসড়া প্রার্থী তালিকায় টাঙ্গাইল-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটুর নাম রয়েছে। এ আসনের এমপি খন্দকার আবদুল বাতেন দলের মনোনয়নবঞ্চিত হচ্ছেন। চট্টগ্রাম-৪ আসনে বর্তমান এমপি দিদারুল আলমের স্থানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমের নাম।
    ঝিনাইদহ-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌরসভা মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু ও সাবেক এমপি সফিকুল ইসলাম অপু দলের প্রার্থিতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এই আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন স্বতন্ত্র এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী।
    এদিকে জোটের কারণে টেনসনে অনেকেই। জোটের এমপির আসনে দীর্ঘদিন প্রচারণা তালিয়ে নি:স্ব আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থী। ঢাকা-১, ৪, ৬, লক্ষীপুর-১ ও ২, সাতক্ষীরা-১, পঞ্চগড়-১, ফেনী-১, নীলফামারি-৪, পটুয়াখালী-১, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন পুনরুদ্ধারে নানা চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এছাড়া সেসব আসনে শরিকদের প্রার্থী রয়েছে সে আসনে আওয়ামী লীগের এমপিরা আছেন বেজায় বিপাকে। বিকল্পধারার যুগ্ম-মহাসচিব মাহি বি চৌধুরীর কারণে মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষ এবং দীর্ঘদিন প্রচারণা চালানো বদিউজ্জামন ডাবলু ও গোলাম সরোয়ার কবির, মহাসচিব মেজর (অব.) এম এ মান্নানের কারণে নোয়াখালী-৪ এর এমপি একরামুল করিম চৌধুরী বিপাকে আছেন। বেজায় প্যাচে পড়েছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি জগলুল হায়দার। তার আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইম মুহম্মদ এরশাদ ও বিকল্পধারার গোলাম রেজা মনোনয়ন চান। ঢাকা-৫ এর এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার আসন নিতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে জাসদ। এখানে তাদের প্রার্থী কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম।
    বিএনপি ঃ
    একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে সাক্ষাতকার চলছে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের। ৩০০ আসনেই প্রার্থী হতে আগ্রহীদের সাক্ষাতকার নিচ্ছেন বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিভাগ হিসেবে ভাগ করে গত রোববার থেকেই চলছে এই সাক্ষাতকার। গতকাল (মঙ্গলবার) সকাল ৯টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগের প্রার্থীদের এবং দুপুর আড়াইটা থেকে রাত পর্যন্ত কুমিল্লা সাংগঠনিক বিভাগ ও সিলেট বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাতকার নেয়া হয়। দল ও দলের নেতাদের পক্ষ থেকে দেয়া হয় দিকনির্দেশনা। আজ শেষ দিনে ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও ঢাকা বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাতকার গ্রহণের মাধ্যমে শেষ হবে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার।
    দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারে গতকালও যথারীতি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লন্ডন থেকে যুক্ত হন তিনি। তবে স্কাইপে নয়, অন্য কোনো মাধ্যমে তিনি ভিডিও কনফারেন্সে আছেন বলে জানিয়েছেন সাক্ষাৎকারে অংশ নেয়া কয়েক মনোনয়ন প্রত্যাশী। নোয়াখালী-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, মনোনয়ন বোর্ড আমাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যুক্ত হয়েছিলেন। স্কাইপে নয়, অন্য একটি উপায়ে তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কড়া নির্দেশ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে হবে। তার এই নির্দেশ আমি অনুসরণ করব। আমার আসনে অন্য যারা প্রার্থী হতে চান, আশা করি তারাও এটা ফলো করবেন। ফেনী-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মিনার চৌধুরী বলেন, তারেক রহমান বড় স্ক্রিনে আমাদের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করছেন। তারেক রহমানের কোন ধরনের নির্দেশনা ছিল জানতে চাইলে মিনার চৌছুরী বলেন, তার নির্দেশনা ছিল মনোনয়ন বোর্ডে যে সিদ্ধান্ত হবে তা যেন মেনে চলি এবং ধানের শীষকে বিজয়ী করতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করি। ফেনী-৩ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির সাবেক দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি বলেন, গত দু’দিনের মতো আজও (গতকাল) দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রার্থীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। স্কাইপ নেই, তারেক রহমান কীভাবে যুক্ত রয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি আছেন লন্ডন থেকে। স্কাইপ নেই তাতে কি? পৃথিবীতে আরও বহু পদ্ধতি আছে। মেধা শক্তি থাকলে যে কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। মানুষের আবেগকে বাধা দিয়ে রাখা যায় না। সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা।
    সব সংসদীয় আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আগ্রহী বিএনপি নেতাকর্মীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হলেও ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য বেশ কিছু আসন ছেড়ে দিতে হবে দলটিকে। বিপুল সংখ্যক প্রার্থী নির্বাচন করতে আগ্রহী হলেও দল ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে কাউকে কাউকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে বলে সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সকলকে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে এবং ধানের শীষ প্রতীকের জন্য কাজ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন তারেক রহমান। এজন্য প্রার্থী নির্ধারণ ও মনোনয়ন নিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিএনপি, ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে। নিজ দলের প্রার্থীদের ছাড়াও অন্য দুই জোটকেও খুশি করার চ্যালেঞ্জ বিএনপির সামনে। যদিও বিষয়টিকে তেমন কঠিন মনে করছে না দলটির শীর্ষ নেতারা। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জোটের শরিকদের সাথে আলোচনা করে প্রার্থী ঠিক করা হবে। এখনো এ বিষয়ে আমরা চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পর আসন নিয়ে কোন কিছু ঠেকে থাকবেনা বলেও মনে করেন তিনি।
    এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর একদিকে সংলাপের তোড়জোড় চললেও অন্যদিকে নিজস্বভাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠের অবস্থান যাচাই করেছে বিএনপি। এতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতাদের ৬০টি আসন পাওয়া যায়, যেখানে দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীদের ছাড় দেয়া যায়। কিন্তু প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা ও জাতীয় রাজনীতি বিবেচনায় তার সঙ্গে ১০টি আসন যোগ করে সর্বোচ্চ ৭০টি আসনে ছাড় দেয়ার কথা ভাবছে বিএনপি।
    বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ২০ দলীয় শরিকদের মধ্যে জামায়াতের দাবি ৫০ আসন। জোটের অন্য শরিক দলগুলো ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও নিবন্ধন হারানো জামায়াত নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবার তাদের জন্য বরাদ্দ হতে পারে সর্বোচ্চ ২৫ আসন। বিএনপির কাছে এলডিপির পক্ষ থেকে ৩০টি আসন চেয়ে প্রার্থী তালিকা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ লেবার পার্টি ২টি আসন চেয়েছে। জাতীয় পার্টি ১৫টি, অন্যান্য দলও একাধিক আসন চেয়েছে। তবে বিএনপি সূত্রে জানা যায়, এলডিপি ৪-৫টি, জাতীয় পার্টির (জাফর) ৪টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ২-৩টি, বিজেপি ১টি, জাগপা ১টি, কল্যাণ পার্টি ১টি, খেলাফত মজলিস ১টির মতো আসন পেতে পারে। এছাড়া অন্যান্য দলগুলোর অবদানও বিবেচনায় রেখেছে বিএনপি। তাদের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন দলের শীর্ষ নেতারা।
    অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের মধ্যে নাগরিক ঐক্য ৪০টি, গণফোরাম ৩০টি, জেএসডি ৩০টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৫টি আসন চায়। এর মধ্যে দল ও জোট শরিকদের অনুরোধে ড. কামাল ঢাকা-৮ বা অন্য এক বা একাধিক আসনে প্রার্থী হতে পারেন। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ঢাকা-২ বা ৩ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ঢাকা-১৪ আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন। ডাকসুর সাবেক ভিপি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ মৌলভীবাজার-২ আসনে মনোনয়ন পাবেন। মফিজুল ইসলাম খান কামালের জন্য মানিকগঞ্জ-৩ ও জানে আলমের জন্য চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবে গণফোরাম। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডিও এর আগে ৩০ আসনের প্রস্তুতি নিলেও এখন ১৫টি চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ল²ীপুর-৪ আসন থেকে অথবা ঢাকা থেকে মনোনয়ন চাইবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন চান কুমিল্লা-৪ আসন। সহ-সভাপতি তানিয়া রব ঢাকা-১৮ (উত্তরা)। ঐক্যফ্রন্টের আরেক শরিক নাগরিক ঐক্য এতদিন ৩০ আসন চাইলেও এখন চূড়ান্ত দরকষাকষির পর্যায়ে ১৫টি চাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দলের আহŸায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-২ বা ঢাকা-১৭ (গুলশান) আসনে মনোনয়ন চাইবেন। কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগকে সর্বোচ্চ তিনটি আসন দিতে পারে বলে জানিয়েছে বিএনপি সূত্র। ঐক্যফ্রন্টের শরিক বিকল্পধারা বাংলাদেশ (একাংশ) ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের একটি আসনে ছাড় দিতে পারে বিএনপি। সেক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর নূরুল আমিন বেপারি মনোনয়ন পেতে পারেন। তবে সবমিলিয়ে ঐক্যফ্রন্ট ২০টি আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন বলে বিএনপি সূত্রে জানা যায়।

    নিসান এবং মিতসুবিশি মোটরের শেয়ারের ব্যাপক দরপতন

    আজ নিসান মোটরের শেয়ার দরের ব্যাপক পতন ঘটে এবং এক পর্যায়ে তা কিছুক্ষণের জন্য ৬ শতাংশেরও নিচে নেমে যায়। মূলত, কোম্পানিটির দু’জন নির্বাহীর গ্রেপ্তার গাড়ি নির্মাতাটির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ উস্কে দিচ্ছে।

    কোম্পানিটির শেয়ার ৫.৪ শতাংশ নেমে ৯শ ৫০ ইয়েনে দিনশেষ করে। দুই বছরের চেয়ে বেশি সময়ের মধ্যে এটি ছিল কোম্পানিটির সর্বনিম্ন শেয়ার দর। অন্যদিকে, নিসান এর জোট-অংশীদার মিতসুবিশি মোটর এর শেয়ারও ৬.৮ শতাংশ নেমে ৬শ ৮০ ইয়েনে দিনশেষ করে।

    বিশ্লেষকরা বলছেন, নিসান এবং মিতসুবিশি মোটরের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক বিনিয়োগকারীই এখন উদ্বিগ্ন

    অপার ক্ষমার ঘোষণা : এর পরও কি গোনাহ রয়ে যাবে!

    মুহাম্মাদ ফজলুল বারী

    আল্লাহ তাআলা গাফফার-মহা ক্ষমাশীল; তিনি ক্ষমা করতেই ভালোবাসেন। তাই তো ক্ষমার জন্য তিনি রেখেছেন- বিভিন্ন উপলক্ষ; এই উপলক্ষে সেই উপলক্ষে তিনি বান্দাকে ক্ষমা করেন। পৃথিবী-ভর্তি গোনাহও তিনি ক্ষমা করে দেন। প্রয়োজন শুধু ফিরে আসা। তওবার মাধ্যমে তাঁর ক্ষমার দুয়ারে ধরনা দেওয়া। ব্যস, বান্দার ক্ষমা চাইতে দেরি, ক্ষমা করতে দেরি নেই। আর শুধু ক্ষমা নয়, ক্ষমা করে তিনি টেনে নেন রহমতের ছায়ায়; এমনকি কখনো পাপের সংখ্যা পরিবর্তন করে দেন পুণ্য দিয়ে।

    বান্দাকে হতে হবে ‘তাওয়াব’-গোনাহ হয়ে গেলেই সাথে সাথে তওবা করতে হবে। তওবা করতে হবে দিল থেকে, অনুশোচনার সাথে। তাহলেই লাভ করা যাবে ‘গাফফার’-এর ক্ষমা। হাদীস শরীফে ইরশাদ-

    كُلّ ابْنِ آدَمَ خَطّاءٌ وَخَيْرُ الخَطّائِينَ التّوّابُونَ.

    প্রতিটি বনী আদম ‘খাত্তা’-বারংবার পাপকারী। তবে ‘খাইরুল খাত্তাঈন’ অর্থাৎ পাপকারীদের মধ্যে উত্তম হল তারা, যারা ‘তাওয়াবূন’ অর্থাৎ যারা বেশি বেশি তওবা করে; গোনাহ হলেই তওবা করে নেয়। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৪৯৯

    হাঁ, গোনাহ হলে তওবা করে নেওয়াই তো মুমিনের গুণ। মুমিনের এ গুণের বর্ণনা এসেছে কুরআনে, এভাবে-

    وَ الَّذِیْنَ اِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً اَوْ ظَلَمُوْۤا اَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوْبِهِمْ  وَ مَنْ یَّغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا اللهُ، وَ لَمْ یُصِرُّوْا عَلٰی مَا فَعَلُوْا وَ هُمْ یَعْلَمُوْنَ.

    এবং তারা সেই সকল লোক, যারা কখনো কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনোভাবে) নিজেদের প্রতি যুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গোনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া কেই বা আছে, যে গোনাহ ক্ষমা করতে পারে?   আর তারা জেনেশুনে তাদের কৃতকর্মে অবিচল থাকে না। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৩৫

    এই আয়াতের এক আয়াত আগে আল্লাহ বান্দাকে মাগফিরাত ও জান্নাতের দিকে প্রতিযোগিতামূলক ধাবিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এরপর (উপরের আয়াতে) বর্ণনা করেছেন- যারা তাঁর মাগফিরাত ও জান্নাত পাবে, তাদের গুণ ও বৈশিষ্ট্য।

    এর পরও কি গোনাহের পাল্লা ভারি হবে!

    বান্দার নেকী-বদী লিপিবদ্ধ করা হয়; কিয়ামতের দিন বান্দার সামনে তা মেলে ধরা হবে। ছোট বড় সবকিছু লেখা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলার দয়া দেখুন- নেক কাজের ইচ্ছা করলেই একটি নেকী লেখা হয় আর সে নেক কাজটি করলে দশ থেকে সাতশটি পর্যন্ত নেকী লেখা হয়; কখনো আল্লাহ আরো বাড়িয়ে দেন। পক্ষান্তরে কেউ যদি কোনো গোনাহের ইচ্ছা করে, তো যতক্ষণ গোনাহটি না করে ততক্ষণ কোনো গোনাহ লেখা হয় না। তারপর যদি গোনাহটি করে ফেলে তখন মাত্র একটি পাপ লেখা হয়।

    مَنْ جَآءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهٗ عَشْرُ اَمْثَالِهَا،  وَ مَنْ جَآءَ بِالسَّیِّئَةِ فَلَا یُجْزٰۤی اِلَّا مِثْلَهَا وَ هُمْ لَا یُظْلَمُوْن.

    কেউ কোনো সৎ কাজ করলে সে তার দশ গুণ পাবে আর কেউ কোনো অসৎ কাজ করলে তাকে শুধু একটি পাপের শাস্তি দেওয়া হবে। আর তাদের প্রতি কোনো যুলুম করা হবে না। -সূরা আনআম (৬) : ১৬০

    হাদীসে কুদসীতে হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন-

    إِذَا هَمّ عَبْدِي بِحَسَنَةٍ وَلَمْ يَعْمَلْهَا، كَتَبْتُهَا لَهُ حَسَنَةً، فَإِنْ عَمِلَهَا كَتَبْتُهَا عَشْرَ حَسَنَاتٍ إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ، وَإِذَا هَمّ بِسَيِّئَةٍ وَلَمْ يَعْمَلْهَا، لَمْ أَكْتُبْهَا عَلَيْهِ، فَإِنْ عَمِلَهَا كَتَبْتُهَا سَيِّئَةً وَاحِدَةً.

    বান্দা যখন কোনো নেক কাজের ইচ্ছা করে, উক্ত নেক কাজ না করলেও (এ ইচ্ছার কারণে) একটি নেকী লেখা হয়। যদি সে নেক কাজটি করে তাহলে দশ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত নেকী লেখা হয়। আর যখন কোনো গোনাহের ইচ্ছা করে, কিন্তু ওই পাপ কাজটি করে না; তখন (এ ইচ্ছার কারণে) কোনো গোনাহ লেখা হয় না। হাঁ, যদি ওই পাপ কাজটি করে বসে তখন মাত্র একটি পাপ লেখা হয়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১২৮

    কোথায় এক আর কোথায় দশ থেকে সাতশ! এছাড়া গোনাহ মাফ হওয়ার বিভিন্ন প্রসঙ্গ তো রয়েছেই। এই আমল করলে পিছনের এক বছরের গোনাহ মাফ হয়। ওই আমল করলে গোনাহ মাফ। এর পরও কি নেকির পাল্লা ভারি হবে না!

    পৃথিবী-ভর্তি পাপও তিনি ক্ষমা করেন

    বান্দা নিজের পাপ দেখে নিজেই নিরাশ হয়ে যায়- আমি যত পাপ করেছি, আমার ক্ষমা নেই। বান্দার পাপের সীমা আছে, কিন্তু রহমানুর রাহীমের ক্ষমার কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। একটি হাদীসে কুদসীতে এরই একটা উদাহরণ টেনেছেন আল্লাহ তাআলা। বান্দা! কত গোনাহ করেছ? তোমার গোনাহ দ্বারা পৃথিবী পূর্ণ হয়ে গেছে, আসমান পর্যন্ত পৌঁছে গেছে তোমার পাপরাশি! শিরক থেকে মুক্ত হয়ে, তওবা করে ফিরে আস আমার কাছে, সকল পাপ ক্ষমা করে দিব; কোনো পরোয়া করব না!

    (হাদীসে কুদসী) আনাস ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলা বলেছেন-

    يَا ابْنَ آدَمَ إِنّكَ مَا دَعَوْتَنِي وَرَجَوْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ عَلَى مَا كَانَ فِيكَ وَلاَ أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوبُكَ عَنَانَ السّمَاءِ ثُمّ اسْتَغْفَرْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ، وَلاَ أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ إِنّكَ لَوْ أَتَيْتَنِي بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطَايَا ثُمّ لَقِيتَنِي لاَ تُشْرِكُ بِي شَيْئًا لأَتَيْتُكَ بِقُرَابِهَا مَغْفِرَةً.

    বনী আদম! তুমি যতক্ষণ আমাকে ডাকতে থাকবে, আমার কাছে (ক্ষমার) আশা করতে থাকবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিব; কোনো পরোয়া করব না।

    বনী আদম! তোমার পাপরাশি যদি মেঘমালা পর্যন্ত পৌঁছে যায়, অতপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও আমি ক্ষমা করে দিব; কোনো পরোয়া করব না।

    বনী আদম! তুমি যদি পৃথিবী-ভর্তি পাপ নিয়ে আমার কাছে আস এবং শিরক থেকে মুক্ত হয়ে আমার সাথে সাক্ষাৎ কর আমি পৃথিবী-ভর্তি ক্ষমা নিয়ে তোমার সাথে সাক্ষাৎ করব। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫৪০

     

    নিরাশ হয়ো না, তিনি সব গোনাহ মাফ করে দেন

    পাপের বোঝায় ন্যুব্জ কোনো বান্দা মনে করতে পারে- আমার গোনাহ তো অনেক বেশি; কয়েক পৃথিবী পূর্ণ হয়ে যাবে আমার পাপ দ্বারা। মদ, যিনা, হত্যা, লুণ্ঠন কোন পাপ নেই যা আমি করিনি; জীবনটাই কেটেছে পাপের মাঝে। এখন আর তওবা করে কী হবে? তাছাড়া আমার মত পাপীকে কি আল্লাহ ক্ষমা করবেন!

    তো এমন পাপীর জন্যও আল্লাহ ক্ষমার ঘোষণা দিলেন- তুমিও নিরাশ হয়ো না আল্লাহর রহমত থেকে; তোমারও সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত-

    কিছু মুশরিক নবীজীর কাছে এল, যারা মানুষ হত্যা করেছে; অগণিত মানুষকে হত্যা করেছে। যারা যিনা করেছে; প্রচুর পরিমাণে যিনা করেছে। তারা বলল, আপনি যা বলেন এবং যেদিকে আহ্বান করেন তা তো খুব সুন্দর ও উত্তম। যদি আপনি আমাদের বলতেন যে, আমাদের অতীত পাপের কাফফারা আছে! তখন নাযিল হল-

    وَ الَّذِیْنَ لَا یَدْعُوْنَ مَعَ اللهِ اِلٰهًا اٰخَرَ …

    এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য কোনো মাবুদের ইবাদত করে না। এবং আল্লাহ যে প্রাণকে মর্যাদা দান করেছেন তাকে অন্যায়ভাবে বধ করে না এবং ব্যভিচার করে না। (যে ব্যক্তিই এরূপ করবে তাকে তার গোনাহের শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ করা হবে। এবং সে লাঞ্ছিত অবস্থায় তাতে সর্বদা থাকবে।

    তবে কেউ তওবা করলে, ঈমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে, আল্লাহ এরূপ লোকদের পাপরাশিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।) [সূরা ফুরকান (২৫) : ৬৮-৭০]

    এবং নাযিল হল-

    قُلْ یٰعِبَادِیَ الَّذِیْنَ اَسْرَفُوْا عَلٰۤی اَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ، ( اِنَّ اللهَ یَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِیْعًا،  اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ).

    বলে দাও, হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের উপর অবিচার করেছ- আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। (আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।) [সূরা যুমার (৩৯) : ৫৩]  -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৮১০

    সূরা যুমারের ৫৩ নং আয়াতের তাফসীরে ইবনে কাসীর রাহ. কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করেন। এরপর বলেন-

    فَهَذِهِ الْأَحَادِيثُ كُلّهَا دَالّةٌ عَلَى أَنّ الْمُرَادَ: أَنّهُ يَغْفِرُ جَمِيعَ ذَلِكَ مَعَ التّوْبَةِ…

    এসকল হাদীস থেকে বুঝা যায়, এ আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য, আল্লাহ সকল গোনাহ ক্ষমা করেন- তওবার শর্তে। (তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা যুমার, ৫৩ নং আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য)

     

    আল্লাহ ক্ষমা করার জন্য বাহানা তৈরি করেন

    দেখুন, বান্দা যখন তওবা করে ফিরে অসে তখন আল্লাহ শুধু ক্ষমাই করেন না, বরং ক্ষমার জন্য বাহানা তৈরি করেন। বনী ইসরাঈলের নিরানব্বই হত্যাকারীর ঘটনা অনেকেরই জানা। সে তওবা করে ফিরে এল এবং নেককারদের এলাকার দিকে রওয়ানা হল। পথিমধ্যে যখন তার মৃত্যুক্ষণ ঘনিয়ে এল তখন রহমত ও আযাবের ফিরিশতা এল এবং প্রত্যেকে তার জান কবয করতে চাইল। এক পর্যায়ে ফয়সালা হল, সে যদি নেককারদের এলাকার কাছাকাছি হয় রহমতের ফিরিশতারা তাকে নিয়ে যাবে, অন্যথায়…।

    উক্ত ঘটনার যে দিকটি আমাদের আলোচ্য বিষয় তা হল-

    فَأَوْحَى اللهُ إِلَى هَذِهِ أَنْ تَقَرّبِي، وَأَوْحَى اللهُ إِلَى هَذِهِ أَنْ تَبَاعَدِي، وَقَالَ: قِيسُوا مَا بَيْنَهُمَا، فَوُجِدَ إِلَى هَذِهِ أَقْرَبَ بِشِبْرٍ، فَغُفِرَ لَهُ.

    আল্লাহ নেককার লোকদের ভূমিকে বললেন, তুমি নিকটবর্তী হও। আর অপর ভূমিকে বললেন, তুমি দূরবর্তী হও। তারপর যখন ভূমির দূরত্ব মাপা হল, দেখা গেল সে নেককারদের এলাকার দিকে এক বিঘত এগিয়ে রয়েছে। তখন তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হল (এবং রহমতের ফিরিশতা তার জান কবয করল)। (দ্র. সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৪৭০)

    একটু লক্ষ্য করুন, ঘটনার বর্ণনা থেকে বুঝা যায় যে, সে নেককারদের ভূমির দিকে এগিয়ে ছিল না। আল্লাহর আদেশে তা নিকটবর্তী হয়েছে। অর্থাৎ, সে যখন তওবা করে ফিরে এসেছে তো আল্লাহ তার ক্ষমার জন্য নিজ রহমতে বাহানা তৈরি করে দিয়েছেন! হাঁ, আল্লাহ এমনই গাফূরুর রাহীম। প্রয়োজন শুধু বান্দার একটু এগিয়ে আসা।

    এ যেন ঐ হাদীসেরই একটি বাস্তব উদাহরণ, যে হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেছেন-

    وَإِنْ تَقَرّبَ إِلَيّ بِشِبْرٍ تَقَرّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا…

    বান্দা যদি আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে আমি বান্দার দিকে এক হাত এগিয়ে আসি…। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৪০৫

     

    আল্লাহ ক্ষমা করে খুশি হন

    তওবা অর্থ- ফিরে আসা। পাপের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ থেকে অনেক দূরে সরে যায় আর তওবার মাধ্যমে ফিরে আসে। পাপী বান্দা যখন তওবার মাধ্যমে ফিরে আসে তখন আল্লাহ কত খুশি হন- একটি হাদীসে তার উদাহরণ টানা হয়েছে এভাবে-

    لَلّهُ أَشَدّ فَرَحًا بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ حِينَ يَتُوبُ إِلَيْهِ، مِنْ أَحَدِكُمْ كَانَ عَلَى رَاحِلَتِهِ بِأَرْضِ فَلَاةٍ، فَانْفَلَتَتْ مِنْهُ وَعَلَيْهَا طَعَامُهُ وَشَرَابُهُ، فَأَيِسَ مِنْهَا، فَأَتَى شَجَرَةً، فَاضْطَجَعَ فِي ظِلِّهَا، قَدْ أَيِسَ مِنْ رَاحِلَتِهِ، فَبَيْنَا هُوَ كَذَلِكَ إِذَا هُوَ بِهَا، قَائِمَةً عِنْدَهُ، فَأَخَذَ بِخِطَامِهَا، ثُمّ قَالَ مِنْ شِدّةِ الْفَرَحِ: اللهُمّ أَنْتَ عَبْدِي وَأَنَا رَبّكَ، أَخْطَأَ مِنْ شِدّةِ الْفَرَحِ.

    এক ব্যক্তি বিরান মরুভূমিতে চলছিল। তার খাদ্য-পানীয় সব ছিল তার বাহন জন্তুটির পিঠে। (সে এক স্থানে বিশ্রামের জন্য নামল এবং ঘুমিয়ে গেল। উঠে দেখল,) খাদ্য-পানীয়সহ বাহন জন্তুটি পালিয়ে গেছে। সে নিরাশ হয়ে একটি গাছের ছায়ায় শুয়ে গেল। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখল, বাহন জন্তুটি (খাদ্য-পানীয়সহ) উপস্থিত! সাথে সাথে বাহনের লাগাম ধরে ফেলল এবং আনন্দের আতিশয্যে বলে উঠল-

    اللهُمّ أَنْتَ عَبْدِي وَأَنَا رَبّكَ.

    আল্লাহ! তুমি আমার বান্দা আমি তোমার রব! আনন্দের আতিশয্যে সে উল্টো বলল (সে বলতে চেয়েছিল, আল্লাহ! তুমি আমার রব আর আমি তোমার বান্দা!)। বান্দার তওবায় আল্লাহ ঐ ব্যক্তির চেয়েও বেশি খুশি হন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৭৪৭

    তো যে রব আকাশসম গোনাহ ক্ষমা করে দেন, ক্ষমা করার জন্য বাহানা তৈরি করেন এবং বান্দার তওবায় এত খুশি হন তাঁর বান্দার কি গোনাহ রয়ে যাওয়া সাজে!

    আগামীতে পড়–ন- যে সকল নেক আমল দ্বারা পাপ মিটে যায়।

    শীর্ষ বৈঠকের সমাপ্তি ঘোষণা প্রকাশে ব্যর্থ এপেক

    চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে বিরোধের কারণে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা ফোরাম বা এপেক শীর্ষ বৈঠক কোন সমাপ্তি ঘোষণা প্রকাশে ব্যর্থ হয়েছে।

    আজ শীর্ষ বৈঠক শেষে পাপুয়া নিউ গিনি’র প্রধানমন্ত্রী এবং বৈঠকের সভাপতি পিটার ও’নিল এ বিষয়টি অবহিত করেন।

    ও’নিল বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সংস্কারের মত মুক্ত বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে “কক্ষের অভ্যন্তরে থাকা দুই বৃহৎ শক্তির” মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।

    অন্যদিকে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাষ্টিন ট্রুডো পৃথকভাবে সাংবাদিকদের বলেন, বাণিজ্য নিয়ে বিরোধ বৈঠকের সমাপ্তি ঘোষণার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দের একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে বাধার সৃষ্টি করেছে।

    ট্রুডো অবশ্য এই ইংগিত দেন যে সভাপতির একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হবে।

    উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত মন্ত্রী পর্যায়ের এপেক বৈঠকে মুক্ত বাণিজ্য বিষয়ে শব্দ নির্বাচনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়ায় সমাপ্তি দলিল প্রকাশে বিলম্ব হয়।

    বৈঠকের ঘোষণা প্রকাশের ক্ষেত্রে এই ব্যর্থতা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সংরক্ষণবাদী নীতি অব্যাহত থাকায় বহুপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য কাঠামোর সমর্থনে একটি ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেয়ার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়টিই স্পষ্ট করেছে।

    প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাসের পথে জাপানের রেস্টুরেন্ট শিল্প

    জাপানের রেস্টুরেন্ট শিল্প প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। প্লাস্টিক বর্জ্যে সমুদ্র দূষিত হওয়া নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাওয়া অবস্থায় জাপানের রেস্টুরেন্ট শিল্প সেরকম বর্জ্য হ্রাসের দিকে এগুচ্ছে।

    স্কাইলার্ক হোল্ডিংস হচ্ছে জাপানের বড় আকারের চেইন রেস্তোরাঁ পরিচালকদের মধ্যে প্রথম, প্লাস্টিকের তৈরি স্ট্রর ব্যবহার বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত যারা ঘোষণা করে।

    আগামী মাস থেকে প্রতিষ্ঠানের গাস্টো চেইনের সবগুলো রেস্তোরাঁ প্লাস্টিক স্ট্র রাখা বন্ধ করে দেবে। সারা দেশ জুড়ে এদের পরিচালিত ৩,২০০র বেশী শাখায় ২০২০ সালের মধ্যে সেই পদক্ষেপ আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা কোম্পানি করছে।

    ডেনি’স রেস্তোরাঁ এবং জাপানি ধাঁচের খাদ্যের দোকান ওওতোইয়া’ও চলতি মাস থেকে পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে এদের কিছু শাখার ড্রিঙ্ক বার থেকে প্লাস্টিকের স্ট্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছে।

    স্টারবাক্স কফি জাপান ২০২০ সালের গ্রীষ্মকালের মধ্যে প্লাস্টিক স্ট্র বর্জন করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

    এদিকে ম্যাকডোনাল্ডস জাপান উপহার হিসেবে দেয়া খেলনার রিসাইকেল শুরু করেছে। নেতৃস্থানীয় এই ফাস্ট ফুড চেইন গতকাল এদের কিছু ট্রে প্লাস্টিকের বদলে উপহারের খেলনা রিসাইকেল করে নেয়া উপাদান থেকে তৈরি ট্রেতে বদল করে নেয়।

    ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

    জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে যেসব দল আছে তারা সবাই ধানের শীষে নির্বাচন করবে। বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

    বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। বুধবার ইসির সাথে বৈঠক বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মান্না বলেন, আমরা ইসিকে নির্বাচন পেছানোর জন্যে অনুরোধ করেছি। কমিশন আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে। নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে আমরা আশাবাদী। এসময় গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

    বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনে, বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, আবদুল মালেক রতন, সুলতান মাহমুদ মনসুর, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

    এটা আমার পথ, আমি আল্লাহর দিকে ডাকি

    প্রফেসর হযরত মুহাম্মাদ হামীদুর রহমান

    نَحْمَدُه وَنُصَلِّيْ عَلَى رَسُوْلِه الْكَرِيْم، أما بعد :

    আল্লাহ পাকের কাছে শোকর আদায় করছি, যিনি আমাদেরকে মাগরিব নামায জামাতের সঙ্গে পড়ে এই মাহফিলে আসার সৌভাগ্য দিয়েছেন। এসকল মাহফিল সম্পর্কে বহু আলোচনা হাদীস শরীফে এসেছে। আমার কাছে কুরআন মাজীদের যে আয়াতটা বার বার শুনেছেন সেই আয়াতটা পড়ি, হারদুঈ হযরত যে আয়াতটা বেশি বেশি পড়তেন-

    وَ ذَكِّرْ فَاِنَّ الذِّكْرٰی تَنْفَعُ الْمُؤْمِنِیْنَ.

    আপনি নসীহত করুন, নসীহত করলে ঈমানদারদের ফায়দা হবেই। আপনি মনে করিয়ে দিন। মনে করিয়ে দিলে ঈমানদারের ফায়দা হবে।

    আর এই হাদীসটা শুনেছেন অনেকবার, ওটাই আমি ৎবঢ়বধঃ করছি। ফেরেশতাদের একদল ঘুরে ঘুরে খুঁজতে থাকে- কোথায় আল্লাহর যিকিরের মহফিল হচ্ছে। একেক দল একেক দিকে যায়। কোনো একটা দল যখন এরকম কোনো মহফিল দেখতে পায়, বলে- ‘এই যে পেয়েছি!’ অন্য দলকে ডাকে, ‘আসো এদিকে আসো, আসো এদিকে আসো’। কোনো জায়গায় আল্লাহ পাকের জিকির করছে, কুরআন পড়ছে, কুরআনের কথা শুনছে। ওরা ডেকে ডেকে অন্য গ্রুপগুলোকে জমা করে। সবাই মিলে আল্লাহর কাছে রহমতের ও মাগফিরাতের দুআ করে। তাদের উপর রহমত নাযিল হয়, আল্লাহ তাআলার খাস রহমত নাযিল হয়। আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের সঙ্গে নিয়ে গর্ব করেন। এজন্য এ ধরনের মাহফিল অনেক দামী। ঘেরাও করার জন্য ফেরেশতারা আসবেন এবং সবার জন্য দুআ করবেন। এজন্য জন-মানবের সংখ্যার কোনো প্রশ্ন নাই; কম হোক, বেশি হোক এই ফযীলত, এই বরকত পাওয়া যাবেই।

    হযরত আবরারুল হক ছাহেব রাহ.-এর কাজগুলো দেখেন। তাঁর কতগুলো কাজ আপাত-বিসদৃশ মনে হয়। কিন্তু অত্যন্ত দামী। একটা হল, ঘরে ঘরে ছোট ছোট মাহফিল করার জন্য কোনো হাদিয়ার ব্যবস্থা নাই, দুই নম্বর খাবারেরও ব্যবস্থা নাই। এইটাকে আমি নাম দিয়েছি “No food, No drink”  কোনো খাবার নাই, কোনো পানীয় নাই। উনার কথা হল ‘দ্বীন কি বাত সুনাও’, দ্বীনের কথা মানুষকে শুনিয়ে দাও।

    হযরত মাওলানা আবরারুল হক ছাহেব রাহ. দ্বীনের কথাই বলতেন। ‘দ্বীন কি বাত সুনাও’, দ্বীনের কথা শোনাও। ঘরোয়া মাহফিলের কথা আমরা অনেকবার বলেছি। আলহামদু লিল্লাহ আমাদের এই এলাকায় অনেকেই শুরু করে দিয়েছেন। মাহফিলে শরীক হওয়ার পরে কোনো কিছু খেতে হবে, তা জরুরি না।

    আমরা মনে করি, আমাদের বাসায় ২০ জন মানুষ এসেছে, ২৫ জন মানুষ এসেছে, মেহমানদারি করব না? কী কথা বলেন আপনারা? মেহমানদারি আপনি অবশ্যই করেন। কিন্তু মহফিলের সঙ্গে মিলাবেন না। আমরা নাম দিয়েছি, যে মহফিল মিস্টান্ন ছাড়া, খাবার  ছাড়া করতে পারবে সে A+  পেল। আপনাদের বাচ্চারা পরীক্ষায় A+  পেলে আপনি খুশি হন না? A+ পাওয়ার জন্য শর্ত হল “No food, No drink” কোনো খানা খাওয়াতে পারবেন না।

    অনেক জায়গায় মেজবান খুব চান- আপনারা মহফিল শুনতে এসেছেন, খালি মুখে কী করে যান। কোনো খাতির নাই। মাওলানা আবরারুল হক ছাহেব নিষ্ঠুর, নির্মম গাড়ী চালিয়ে যেতেন, যে গাড়ীতে “No food, No drink”  লেখা আছে। আমার সৌভাগ্য হয়েছে একবার হযরতের সঙ্গে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ গেলাম। ভোর রাতে মেজবান নাস্তা দিয়ে দিলেন- রুটি, গোস্তু, কিছু ভাজি, ফ্লাস্ক ভরে চা। আমরা ধানমণ্ডি থেকে দুই-তিন গাড়ী রওয়ানা হলাম। ফজরের বেশ খানিক আগে রওয়ানা হয়েছি। আমরা প্রথমে গেলাম মাসদাইল। জায়গাটা চাষাড়ার কাছে। মসজিদটার একটা বিশেষত্ব হল, এক পাশে মুসলমানদের কবরস্থান আর পুকুরের অপর পাড়েই হিন্দুদের মাটি দেয়ার জায়গা আছে। সেই গোরস্তান মসজিদে ঢুকলেন। মসজিদের ইমাম ছিলেন খুবসম্ভব মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ, তিনি খাওয়ার আবদার করলেন। না, তোমার এখানে বয়ান হবে না, খাওয়াও হবে না। এখানে বিশ্রাম করার জন্য ঢুকেছি, নামায পড়ার জন্য ঢুকেছি। ফেরার পথে দেখা যাবে।

    নামায পড়ে আমরা আমলাপাড়া গেলাম। ওখানে এক বড় মাদরাসা আছে, এর মসজিদে বয়ান করলেন। বয়ানের পরে দস্তরখানায় খাবার দাবার সব সাজানো, উনি তার পাশ দিয়ে গট্ গট্ করে হেঁটে গেলেন। মুহতামিম ছাহেব, ওখানকার মুহাদ্দিস ছাহেবানরা বললেন হুযূর, নাস্তা!  তিনি বললেন, না, বলেছি না- “No food, No drink” । তিনি অবশ্য ইংরেজিতে বলেন নাই। নিষ্ঠুর না? মাদরাসার কর্তৃপক্ষ কত কষ্ট করে নাস্তা প্রস্তুত করেছেন, কয়েক শ টাকা খরচ করেছেন, দস্তরখানায় দেওয়া আছে, বসলেই হয়, খেলেই হয়। না, কোনো কথা নাই, কোনো খাদ্য নাই, কোনো পানীয় নাই। নিষ্ঠুর না? কতগুলো মানুষের দিল ভেঙ্গে দিলেন, একটু খেলে কী হত?

    এরপর গেলেন কালীবাড়ীর এক মাদরাসায়। যারা নারায়ণগঞ্জের সাথে পরিচিত আছেন তারা বুঝবেন। মাদরাসায় গেলাম। একই কিস্সা। এরপর ওখানে ছোট একটা মাদরাসা, কী যেন নাম, ওখানে গেলেন। চার নম্বরে গেলেন নারায়ণগঞ্জের বিখ্যাত মাদরাসা দেওভোগে মাদরাসার মুহতামিম ছিলেন মাওলানা আলতাফ হোসেন ছাহেব রাহ., খুব বিখ্যাত মানুষ, খুব আল্লাহওয়ালা। ওখানেও একই রকম। মাওলানা আলতাফ হোসেন ছাহেব আমাকে খুব স্নেহ করতেন, বললাম, খাতির নাই। “No food, No drink”   হযরত এটা ইংরেজিতে বলেন নাই, আপনাদেরকে বললাম আর কি!

    চার মাদরাসায় গেছেন। ফিরে এসে এই আনুমানিক এগারটা-সাড়ে এগারটায়, সেই মাসদাইল মাদরাসায় আবার ঢুকলেন। আমাদের খাবার তোমাদের মসজিদে ইতেকাফের নিয়তে খাব, খেলেন। সাড়ে এগারটার মধ্যে চারটা বড় বড় মাদরাসা শেষ, ঢাকায় আসলেন।

    তখন মাওলানা মাহমুদুল হাসান ছাহেবের সঙ্গে হযরতের পরিচয় হয় নাই, তাঁর কথা শুনেছেন। মাওলানা মাহমুদুল হাসান ছাহেব, যিনি এখনো মুহতামিম আছেন। তার মাদরাসা কোথায় যেন? আমরা যারা চিনতাম তারা বললাম, হুযূর! যাত্রাবাড়ীর মোড়। যাত্রাবাড়ীর মোড় থেকে কাঁচপুর ব্রীজের দিকে গিয়ে তারপর ঢুকার রাস্তা আছে কি? হুযূর রাস্তা ভালো না। এদিকে পশ্চিম দিকে ওয়াপদা কলোনীর ভিতর দিয়ে যাওয়া যায়। খুব কষ্ট করে ওর ভিতর দিয়ে গেলেন, গাড়ী রাখলেন, তারপর মাদরাসায় ঢুকলেন। হুযূরকে খবর দেওয়া হল। হুযূর দৌড়ে আসলেন। হারদুঈর হুযূর বয়ান করলেন। যোহর ঢাকায় এসে পড়লেন। আপনি চিন্তা করতে পারেন, পাঁচটা মহফিল। যাত্রবাড়ীতে এসে শেষ।

    আল্লাহ হযরতের দরজা বুলন্দ করুন, কবরকে নূরে ভরে দিন। মাহমুদুল হাসান ছাহেব বাংলাদেশের দাওয়াতুল হকের আমীর। তিনি আমাকে নিজে দেখিয়েছেন চিঠিটা। হযরতের কাছে চিঠি লিখেছিলেন, সেই চিঠির জন্য এই কাহিনী বললাম।

    আলেমদের সাথে থাকলে বোঝা যায়, আসলে আমরা কত পেছনে। আমরা ইংরেজি শিক্ষিতরা অহমিকায় ভুগি। বিন্দুমাত্র জ্ঞান নাই। কোনো খবর শুনলেই বলি, ‘ওহ্ হো, আগে জানতাম না’ Standard কথা। আমাদের ইংরেজি শিক্ষিতদের  ‘ওহ্ হো, আগে জানতাম না’। এই আগে জানতাম না করতে করতেই আমাদের কবরে যেতে হবে। নতুন কিছু আসলে ‘ওহ্ হো, আগে জানতাম না। আমাদের ইংরেজি শিক্ষিতদের কপালে- ‘ওহ্ হো, আগে জানতাম না’।

    এই মাওলানা মাহমুদুল হাসান ছাহেবের সঙ্গে আমার পরিচয় ১৯৭৫ সাল থেকে। তাবলীগে সময় লাগাতাম। একবার জামাতের মধ্যে ছিল আবদুল আহাদ। তিন দিনের জামাত। এই একটা অপূর্ব কাজ, তাবলীগ জামাতের কাজ। এখন যে ঝগড়া-ঝাটির কথা শুনি, আমাদের ওগুলোতে কান দেওয়ার দরকার নাই। আমরা উলামায়ে কেরামের নেগরানীতে এই কাজে লেগে থাকব। তাবলীগে প্রতিদিন কিছু সময় লাগাবেন। তিন দিন সময় লাগালেই নিজের কাছে প্রমাণ হয়ে যায়- এই কাজে কী ফায়দা। ফায়দা বর্ণনার দ্বারা হবে না। রসগোল্লা, বিদেশী কারো কাছে রসগোল্লার খুব ফায়দা বয়ান করলেন, এক পৃষ্ঠা এর ফযীলত লিখলেন। কাজ হবে? যার যেমন ফল, ফলটা খেলে আপনি নিজেই বলবেন এর ফযীলত।

    আলহামদু লিল্লাহ, আল্লাহ পাক আমাকে সৌভাগ্য দিয়েছেন, মাওলানা মাহমুদুল হাসানকে মিলিয়েছেন। জামাতের মধ্যে আমাদের এক সাথী বলল, ‘আমাদের মহল্লায় এক বোম্বাই মরিচ এসেছে’। বললাম, বোম্বাই মরিচ এসেছে- মানে কী? আমাদের মসজিদের ইমাম, কী ডাট, বাপরে বাপ। ছোট মানুষ, সেদিন করাচী থেকে ফিরেছেন। আমি গল্প বলছি আপনাদের কাছে। গল্পগুলো আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই মাওলানা মাহমুদুল হাসান ছাহেব দাওয়াতুল হকের আমীর, হযরত হারদুঈ তাকে সারা বাংলাদেশের আমীর বানিয়েছেন। দাওয়াতুল হক হল মানুষকে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেওয়া। কুরআন শরীফের পাতায় পাতায় আল্লাহ পাক এ বিষয়ে ইশারা করেছেন।

    وَ مَنْ اَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّنْ دَعَاۤ اِلَی اللهِ وَ عَمِلَ صَالِحًا وَّ قَالَ اِنَّنِیْ مِنَ الْمُسْلِمِیْنَ.

    ঐ ব্যক্তির কথার চাইতে কার কথা অধিক সুন্দর হবে, যে আল্লাহর দিকে ডাকে। Who can be better in speach than one who invites towards Allah.

    আবার আছে-

    اُدْعُ اِلٰی سَبِیْلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَ الْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَ جَادِلْهُمْ بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ،  اِنَّ رَبَّكَ هُوَ اَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِیْلِهٖ وَ هُوَ اَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِیْنَ.

    আপনার রবেব পথের দিকে, আপনার রবের দিকে মানুষকে দাওয়াত দেন। এই রকম আয়াত কুরআনে আরো আছে। এক সুরায় আছে-

    قُلْ هٰذِهٖ سَبِیْلِیْۤ اَدْعُوْۤا اِلَی الله.

    আপনি বলুন, এটা (তাওহীদ ও শরীয়ত) আমার পথ। আমি মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকি।

    আল্লাহর দিকে ডাকার ফযীলত অনেক বেশি। এই জন্য আমাদের নিজেদের আমলের সাথে সাথে এটা মনে রাখা চাই, অন্য ভাইদের দাওয়াত দিতে হবে। তাবলীগে সময় লাগাতে পারেন তো ভালো আর না হয় আমাদের এই রকম মাহফিলে শরীক হতে হবে। বরং আমি বলব, দোনো কাজই করেন।

    দুটো কাজে অনেক ফারাক। আমাকে এক ভাই বলেন- ‘আপনারা ওয়াজ মাহফিলগুলোতে এরকম করেন ক্যান, তাশকিল করতে পারেন না? এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা বয়ান হয়, মানুষের মনটা নরম হয়, দোয়া কইরা ছাইড়া দেন, তশকিল করণ যায় না?’ আমি বলি, দুটো কাজ দুই রকম। একটা কাজ মাওলানা ইলিয়াস ছাহেব রাহ. শুরু করেছেন; আল্লাহ তাআলা তাওফীক দিয়েছেন, আর একটা যুগ যুগ ধরে চলে আসা পুরনো পদ্ধতি। সাদামাটাভাবে আল্লাহ, আল্লাহর রাসূলের কথা, আখেরাতের কথা হয়, দুআ করা হয়, তশকিল ছাড়া ছেড়ে দেওয়া হয়। তাবলীগের মত খাতা নিয়া বলা হয় না- ‘নাম লেখান’। কোনো নাম লেখানো হয় না। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই কাজ। আর নতুন এটাও বড় কাজ। আল্লাহ তাআলা ইলিয়াস রাহ.-এর কবরকে নূরে ভরে দিন। তাঁর মাধ্যমে শুরু হয়েছে এই পদ্ধতি। এর জন্য দুআ করা চাই। এটা নিয়ে এখন যে ফেতনা চলছে, আল্লাহ আমাদেরকে এই ফেতনা থেকে মাহফুয রাখেন। মহব্বতের সাথে যতটুকু পারেন এই কাজের সঙ্গে সময় ব্যয় করেন।

    মাওলানা মাহমুদুল হাসান ছাহেবের কথা বলছিলাম। তিনি হযরতের কাছে চিঠি লিখেছেন, ‘আল্লাহ তাআলার মেহেরবানীতে আপনার ছোহবতে দাওয়াতুল হকের কাজ বুঝে এসেছে। সারা দেশে যদ্দুর পারছি সফর করছি। আমার মনে চায় মাদরাসার কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখি, দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা দাওয়াতুল হকের কাজ করি’। তিনি লিখেছেন সেই চিঠির পাশে লাল দাগ দিয়ে- “তাআজ্জুব হ্যায়, আপনার কথা শুনে অবাক লাগে, আপনি দরস-তাদরীসের কাজ থেকে এটাকে বড় মনে করলেন? ওটাই তো প্রাণ”। মাদরাসায় পড়াইন্যাগো আমরা বলি- “মৌলভীরা কী জানে? আমরা যাগো কাছ থিকা দ্বীন পাইছি তাগো কথা শুনলেই হইব। কাগো কাছ থিকা দ্বীন পাইছেন? আমার ভাই পড়াশুনা জানে না, তিন দিন লাগাইছে, তাগো থাইকা দ্বীন পাইছে। কিন্তু মৌলভীরা বলেন, চৌদ্দশ বছর ধরে কাদের উসিলায় দ্বীন টিকে আছে?”

    মাওলানা মওদুদী সাহেবের একটা বিখ্যাত পরিচয় আছে, তিনি এবং তার ভক্তরা মাদরাসার আলেমদের কোনো মূল্য দিতে চান না। বলা হয়, মাদরাসায় যারা পড়ে, বড় বড় কিতাব- আবু দাউদ শরীফ, বুখারী শরীফ- বিরাট বিরাট সাইজ, তাদের কেউ এক মাদরাসার দাওরার ছাত্রদেরকে লক্ষ করে বলেছিলেন- “বগলে করিয়া মোটা মোটা কিতাব লইয়া কী হইবে, ময়দানে আসো।” ‘বগলে করিয়া মোটা মোটা কিতাব লইয়া…’- তিনি এটাকে ঠাট্টা করেছেন।

    হযরত মাওলানা আবরারুল হক ছাহেব লেখেন- তাআজ্জুব হ্যায়- অবাক কাণ্ড আপনার! আপনি দরস-তাদরীসের মূল কাজ করেই তরতিবের সঙ্গে সময় লাগাবেন। কুরআনের খেদমত আগে, এটা পূর্বশর্ত। কোনটা আগে করব, ক্রমটা বলে দেওয়া হয়। দরস-তাদরীসের কাজে সাহায্য করেন, দুই নম্বরে দাওয়াতুল হক। মজলিসের শেষে দুআ হয়। সেই প্রসঙ্গে হযরত বললেন, আমাদের মুহতামিম ছাহেব অসুস্থ। তার জন্য দুআ করেন। আর একটা কথা বলি। মাওলানা আজিজুল হক শাইখুল হাদীস ছাহেব রাহ. অনেক বার বলেছেন, আমি অনেকবার শুনেছি-

    ‘দুআর মধ্যে কোনো ইমামতি নাই। একজন হাত উঠালেন আমরা শুধু আমীন আমীন বলব, নাহ। আপনার মনে চাইলে আমীন আমীন বলতে পারেন, শুনলেও আমীন, না শুনলেও আমীন অথবা আপনার মনে চাইলে পাশাপাশি নিজের মতো দুআ করতে পারেন। হাত উঠিয়েছেন একজন, তিনি দুআ করছেন, আবার আপনি নিজের খুশি মতো দুআ করতে পারেন (তারপর দুআ হল)।

    জাপানের কোওনোতোরি মহাকাশ যান

    মনুষ্যবিহীন মালবাহী মহাকাশ যান কোওনোতোরি জাপান তৈরি করেছে এবং ভূমণ্ডলের ৪০০ কিলোমিটার ঊর্ধ্বে পরিক্রমণরত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে সরবরাহ নিয়ে যাওয়ার জন্য এটা নির্মাণ করা হয়। সিলিন্ডার আকৃতির নভোযানটির দৈর্ঘ্য ১০ মিটার, ব্যাস ৪.৪ মিটার এবং আকারে এটা বড় একটি বাসের মত।

    সর্বশেষ কোওনোতোরি ৭ মডেলের মহাকাশ যান ৬ টনের বেশী মালামাল বহনে সক্ষম, যে পরিমাণ হচ্ছে বিশ্বের অন্য মহাকাশ যানগুলোর চাইতে বেশি। জাপানের তৈরি একটি এইচ-টু বি রকেটে করে পানি, খাদ্য ও কাপড়-চোপড়ের মত দৈনন্দিন সরবরাহ ও সেই সাথে বৈজ্ঞানিক গবেষণার যন্ত্রপাতি নিয়ে মহাকাশের পথে এটাকে উৎক্ষেপণ করা হয়। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের একটি জাপানি গবেষণাগারে সরবরাহ পাঠানো ও সেই সাথে মহাকাশ স্টেশনের পুনঃ সরবরাহে সাহায্য করায় দেশের করা আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার পূরণ করতে বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে জাপান মালবাহী নভোযান নির্মাণ শুরু করে। কোওনোতোরি সিরিজের প্রথম নভোযানটি ২০০৯ সালে উৎক্ষেপণ করা হয় এবং এরপর থেকে জাপান এরকম ৭টি নভোযানের সব কয়টি সাফল্যের সাথে উৎক্ষেপণ করেছে।

    কোওনোতোরিতে মানব ক্রু না থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে এটা ভিড়বে বলে মানব-বাহী প্রতিপক্ষের সাথে পাল্লা দেয়ার জন্য নিরাপত্তার সর্বোচ্চ মান পূরণ করার মত করে এর নকশা করা হয়। জাপানের মহাকাশ এজেন্সি জাকসা বিভিন্ন সামগ্রী পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার ক্যাপসুল নিয়ে পরবর্তী গবেষণা চালানো সহ কোওনোতোরি পরিচালনা করা এবং এটা আরও উন্নত করে নেয়া অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা করছে। জাপান সরকারের বিবেচনা করে দেখা ২০২০ সালের মত দ্রুত এক সময়ে আন্তর্জাতিক চন্দ্রাভিযানে অংশ নেয়ার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে মনুষ্যবাহী মহাকাশ যান তৈরির অপেক্ষায় এজেন্সি আছে।

    চলতি সংসদ অধিবেশনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বিদেশি কর্মী সংক্রান্ত বিল পাশ করিয়ে নিতে চাইছেন

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে জোর দিয়ে বলেছেন যে, তিনি দেখতে চান চলতি সংসদ অধিবেশন চলাকালীন দেশে আরও বেশি বিদেশি কর্মীর কাজ করার অনুমতি প্রদান সংক্রান্ত একটি বিল অনুমোদিত হয়েছে।

    সরকার এবং ক্ষমতাসীন কোয়ালিশনের কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদে তিনি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি সতর্কতার সাথে ব্যাখ্যা করবেন।

    সংসদের নিম্ন কক্ষে মঙ্গলবার থেকে এই বিল নিয়ে বিতর্ক শুরু হবে।
    আবে এই পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করার পরিকল্পনা করছেন।
    তিনি বলেন, বিলটি অবিলম্বে জাপানের দীর্ঘদিনের শ্রম ঘাটতিকে সমাধান করবে এবং সেজন্য তিনি বিলটি পাশ করানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। এর পাশাপাশি তিনি বিলটির বিস্তারিত নিয়ে জনগণের বোধগম্যতা অর্জনেরও চেষ্টা করবেন।

    বর্তমানে জাপান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মত উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন পেশাদারদের বিদেশ থেকে এখানে আসার অনুমতি দেয়। এই প্রস্তাবিত সংশোধনী আরও অনেক বেশি বিদেশি কর্মীকে কায়িক শ্রম সংক্রান্ত কাজ করার সুযোগ করে দেবে।