• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • লংকানদের হারিয়ে ১৩৭ রানের বিশাল জয় বাংলাদেশের

    মুশফিকের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বেঁধে দেওয়া ২৬২ রানের লক্ষ্য পূরণে ব্যাট করছে শ্রীলংকা। কিন্তু ৫০ ওভারের খেলায় ২১ ওভার শেষে দলটির সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ৮০। তাও আবার ৭টি উইকেট হারানোর পর! ২৫ ওভারের ২য় বলে ৮ম উইকেট হারিয়ে দলটির রান দাঁড়ায় ৯৬।
    বলাবাহুল্য, দুর্দান্ত ব্যটিং তো বাংলাদেশের ছিলই। তারপর ফিল্ডিংয়ে এসে লংকানদের এমনই করুন অবস্থা আজ করে ছেড়েছে বাংলাদেশের বোলাররা!
    লঙ্কানরা আজ যেন শকড তামিম ইকবালের আহত ব্যান্ডেজ বাঁধা হাতের আর মুশফিকুর রহিমের দিক-বিদিক মার খেয়ে!
    আজকের মাঠে বল হাতে লংকানদের ত্রাশ হিসেবে বিরাজ করছেন মাশরাফি। এছাড়া মোস্তাফিজ আর মেহেদী হাসান মিরাজের বলের তেজ লংকানদের রীতিমতো আজ ঘাম ছুটিয়ে দিয়েছে! দুঃস্বপ্ন দেখছেন যেন তারা আজ!
    শেষ ৫ ওভারে লংকানরা নিয়েছে ১৮ রান। এছাড়া দলের গড় রান বর্তমানে ৩.৬। জেতার জন্য দলের গড় রান দরকার ছিল ৫.২৪। এখনো জিততে হলে দলটিকে প্রতি ওভারে গড়ে রান নিতে হবে ৬.৬১ করে।
    ২৫ ওভারের ২য় বলে দলীয় ৯৬ রানের মাথায় মাঠ ছাড়েন সুরাঙ্গা লাকমাল। শ্রীলংকান দল হারায় ৮ উইকেট। দিলরুয়ান পেরেরার সঙ্গে ব্যাট হাতে জুটি বাঁধতে নামেন আমিলা আপনসো। ৩৪ ওভারের পর দ্বিতীয় বলে দিলরুয়ানও ফিরে যান সাজঘরে। সর্বশেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামেন লাসিথ মালিঙ্গা। ৩৫ ওভার শেষে দলীয় রান ১২৪।
    এরপর ৩৫ ওভার শেষে ৩৬ ওভারের দ্বিতীয় বলে মালিঙ্গাকে একাই থেকে যান। দলের রান তখনও ১২৪।
    বাংলাদেশ জিতে যায় ১৩৭ রানের বিপুল ব্যবধানে!

    বোমা আতঙ্কে সাময়িকভাবে বন্ধ জাপানের নারিতা বিমানবন্দর রানওয়ে

    জাপানের নারিতা বিমানবন্দরের দু’টি রানওয়ের একটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রানওয়েটির পাশে বোমা পুঁতে রাখা হয়েছে এমন সন্দেহে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়। কর্মকতারা একথা জানিয়েছেন।
    স্থানীয় পুলিশ সন্দেহজনক বস্তুটি অপসারণ করেছে। বিমানবন্দরটিতে একটি রানওয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল বলে সেখানে কোন ফ্লাইট বাতিল করার প্রয়োজন পড়েনি। খবর এএফপি’র।
    জাপানের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নারিতার এক মুখপাত্র বলেন, ‘ঠিকাদাররা সেখানে রাতে কাজ করার সময় বিস্ফোরক জাতীয় ওই বস্তু দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন।
    পুলিশ জানায়, বস্তুটির বিস্ফোরণের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
    বিমানবন্দরটি বছরে ৪ কোটি যাত্রী ও আড়াই লাখ ফ্লাইট পরিচালনা করে। -বাসস

    সম্পর্ক উন্নয়নে সম্মত আবে ও শি

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, তাঁরা সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবেন। এর অংশ হিসাবে আবে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আগামী মাসে চিন ভ্রমণের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাবেন। দুই নেতা রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলে অর্থনৈতিক ফোরামের পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন।

    আবে বলেন, “জাপান ও চিনের সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হচ্ছে, এবং দু’দেশে সম্পর্ক এখন স্বাভাবিক গতিতে চলছে।”

    শি বলেন, “পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে চিন ও জাপানের সম্পর্ক স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে এসেছে। আরও উন্নয়নের লক্ষ্যে স্থিতিশীল সম্পর্কের জন্য আমাদেরকে এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে এবং চিন-জাপান সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।”

    ওসাকা বিশ্বাস করতে পারছেন না ইউ এস ওপেন’এ শিরোপা জয় করেছেন

    জাপানের টেনিস খেলোয়াড় নাওমি ওসাকা বলেছেন, তিনি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে ইউ এস ওপেন’এর মহিলাদের সিঙ্গলস্‌’এ শিরোপা জয় করেছেন।

    যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রতিযোগিতায় সেরেনা উইলিয়ামস’কে পরাজিত করার এক দিন পরে, নিউইয়োর্ক থেকে রবিবার মিয ওসাকা এনএইচকে’কে একটি সাক্ষাতকার দেন। ২০ বছর বয়সী ওসাকা হলেন গ্র্যান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্ট বিজয়ী প্রথম জাপানী খেলোয়াড়।

    কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ক’রে ওসাকা বলেন, তিনি এই ফলাফলে খুশি। ওসাকা বলেন, খেলাটি খুব উপভোগ করেছেন বলেই জিততে পেরেছেন।

    এখানে উল্লেখ্য, শৈশব থেকে ওসাকা’র টেনিস-আদর্শ হলেন স্বয়ং উইলিয়ামস্‌। চলতি বছর মার্চ মাসে ওসাকা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হন। তবে ওসাকা বলেন, ইউ এস ওপেনের খেলার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি, কারণ তিনি জানতেন গ্র্যান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্টে উইলিয়ামস্‌ তাঁর সবচেয়ে ভাল খেলাটাই খেলবেন।

    ওসাকা বলেন, ফাইনালে উইলিয়ামসের মুখোমুখি হতে পেরে তিনি খুব গর্ববোধ করছেন।

    ‘খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলেই বোঝা যাবে সরকার নির্বাচন চায়’

    সারাদেশে বিএনপির মানববন্ধন আটক দুই শতাধিক

    দেশে সরকার নির্বাচন চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সবার আগে মুক্তি দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া দেশে কোন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। এজন্য সবার আগে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে মুক্তি দিলেই বোঝা যাবে সরকার দেশে নির্বাচন চায়। গতকাল (সোমবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন।
    বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে বিএনপি। বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার এই কর্মসূচি থাকলেও সকাল ১০টার আগেই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন। খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নিতে নেন। তারা তীব্র রোদ আর প্রচন্ড গরমের মধ্যেই ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন গোটা এলাকা। নির্ধারিত সময়ের আগেই পল্টন হাইকোর্ট সড়কটি লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জনসভার পর এই মানববন্ধন কর্মসূচিতেও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি দলটির আত্মবিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করেছে। মানববন্ধনের শুরুতে দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত হলে নেতাকর্মীরা আপোষের পরিবর্তে কর্মসূচির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। ‘আপোষ না সংগ্রাম? কর্মীরা বলেন- সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘দালালি না রাজপথ? কর্মীরা বলেন- রাজপথ, রাজপথ’। এই ছাড়াও ‘চলছে লড়াই চলবে, খালেদা জিয়া লড়বে, ‘আমার মা জেলে কেন? খুনি হাসিনা জবাব দে,’ ‘খালেদা জিয়ার ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
    মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সাত মাস ধরে কারারুদ্ধ। সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে সাজা দিয়ে অন্যায়ভাবে তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। আমরা যে তার মুক্তি চাচ্ছি এটা কোন করুনা চাচ্ছি না। কোন দয়া বা ভিক্ষা চাচ্ছি না। আইন অনুযায়ি তার যে প্রাপ্য নিম্ন এবং উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া সেটা দেয়া হচ্ছে না। আবার আদালত থেকে জামিন হলেও সরকার তাকে মুক্ত হতে দিচ্ছে না। একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে এবং মুক্তি তার প্রাপ্য।
    সরকার দেশকে ধ্বংস স্তুপে পরিণত করেছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার গত ১০ বছরে বাংলাদেশকে ধ্বংস স্তুপে পরিণত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যা অর্জন করেছিলাম সব অর্জনগুলোকে তারা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। তারা বাংলাদেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে এই সরকার সংসদকে একটা প্রহসনে পরিণত করেছে। সেখানে একটি গৃহপালিত বিরোধী দল বানিয়ে সেটাকে অকার্যকর করে রেখেছে। প্রশাসনকে পুরোপুরি দলীয়করণ করা হয়েছে। সবচেয়ে দুর্ভাগের বিষয় হলো বিচারবিভাগকে দলীয়করণ করার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা তারা চালাচ্ছে। গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারে না। প্রতি পদে পদে স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। সরকার বিরোধী দলকে ধ্বংস করার জন্য অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটার পর একটা পরিকল্পনা করছে এবং সেভাবে বিরোধী দলকে ধ্বংস করছে।
    সম্প্রতি নতুন করে এক লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন তারা সারা বাংলাদেশে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ভৌতিক মামলা দিয়ে হাজার হাজার তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। গত কয়েকদিনেই প্রায় এক লাখের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। ভৌতিক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ১২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে। সারাদেশের প্রত্যেকটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে অসংখ্য মিথ্যা মামলা তারা দিয়েছে। সরকারকে পরিস্কার করে বলতে চাই এভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে, অত্যাচার-নির্যাতন করে, গুম-খুন, গ্রেফতার করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। তিনি বলেন, এই সরকার সন্ত্রাসী সরকারে পরিণত হয়েছে। তারা সন্ত্রাস করছে। একদিকে তারা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে আর অন্যদিকে তারা বিনা কারণে তারা গ্রেফতার করে গোটা জাতিকে জিম্মি করেছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকারকে চলে যেতে হবে, তাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে। জনগণ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ এখন দেউলিয়া রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। এজন্য আমাদের এখন ইস্পাত কঠিন ঐক্য প্রয়োজন। সমস্ত রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে ঐক্য তৈরি করে এই ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে জনগণের সরকার, জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
    জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, দেশ এখন ভয়াবহ নরকে পরিণত হয়েছে। এই ভয়াবহ অবস্থা, অত্যাচার-নির্যাতন থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। যে দানব আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে এই দানবকে আমাদের সরাতে হবে। সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। দেশনেত্রী কারাগারে যাওয়ার আগে যে আহ্বান করে গেছে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আমি তার সেই আহ্বান আবারও জানিয়ে বলছি আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অচলায়ন ভেঙে ফেলি। বুকের ওপর যারা বসে আছে তাদেরকে সরাতে হবে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের রাষ্ট্র, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
    বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীদের সমস্ত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে, সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
    স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে বাইরে রেখে আরও একটি ৫ জানুয়ারির মতো প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়। তবে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তারা দেশনেত্রীকে মুক্ত করবে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করে নেবে। এজন্য সময় থাকতে তিনি সরকারকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানান। কারণ খালেদা জিয়া ছাড়া দেশে কোন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না।
    ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, দেশের একজন নাগরিক হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার সাংবিধানিক ৫টি মৌলিক অধিকার আছে। এটি সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রের প্রতীক, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিয়ে কারাগারে সাজানো বিচার করতে চাইলে তা কখনো মেনে নেয়া হবে না। তিনি সুস্থ্য না হওয়া পর্যন্ত তার কোন বিচার করা যাবে না। বিএনপির এই নেতা বলেন, ধোকাবাজীর নির্বাচন আর এদেশে করা যাবে না। আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো এবং তাকে চতুর্থবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবো।
    নজরুল ইসলাম খান বলেন, এখন জোর করে যারা ক্ষমতায় আছে তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরও একটি নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। এজন্য তারা বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তি বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি। নজরুল ইসলাম বলেন, জনগণ বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত করে তার নেতৃত্বেই সরকার উৎখাতের আন্দোলন করতে চায়। তাকে ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হবে না। খালেদা জিয়া মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে একেকজনকে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মতো ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানান তিনি।
    মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, সেলিমা রহমান, ডাঃ জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, জয়নাল আবদীন ফারুক, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরাফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, মহানগর দক্ষিণের কাজী আবুল বাশার, যুব দলের মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, শ্রমিক দলের নুরুল ইসলাম খান নাসিম, ছাত্র দলের রাজীব আহসান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।
    সারাদেশে দুই শতাধিক নেতাকর্মী আটক: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাব এবং দেশব্যাপী জেলা ও মহানগর সদরের মানববন্ধন কর্মসূচিকে ঘিরে গতকাল বিকেল পর্যন্ত দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে দলটি। বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ তথ্য জানান।
    তিনি বলেন, প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে আসা ও যাওয়ার পথে সরকারের আজ্ঞাবহ পুলিশ বাহিনী বিনা উস্কানিতে ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনসমূহের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নির্বাহী কমিটি সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল মতিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ লেবার পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলমকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে মৎস্য ভবন, কাকরাইল মোড়, পল্টন মোড়, সেগুনবাগিচা, হাইকোর্ট মোড়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত হয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। কিন্তু পুলিশী বাধা উপেক্ষা করে মানববন্ধনে নেতাকর্মীসহ জনতার ঢল নামে। এদিকে গাজীপুরসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিএনপি’র মানববন্ধন কর্মসূচিতে পুলিশ অতর্কিত হামলা ও গুলি চালায়। এসময় বিএনপি’র বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মরহুম আ স ম হান্নান শাহ’র পুত্র শাহ রিয়াজুল হান্নান ও কাউন্সিলর হান্নান মিয়া হান্নুসহ ২৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশী লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণে মহিলা দলের সাবেক সভাপতি আনোয়ারা বেগম, যুবদল নেতা সাজেদুল মোল্লাহ, সুমনসহ বেশ ২০ জনের মতো নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন।
    তিনি জানান, মানববন্ধন থেকে যুবদলের অর্ধশতাধিক, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩০ জনের অধিক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৪০ জনের অধিক, দক্ষিণ যুবদলের দুই জন, ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক, শ্রমিক দলের ৫জনসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। এছাড়া বাগেরহাট জেলার ৪ জন, মেহেরপুরে ১১জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। লেবার পার্টির মাহবুবুল আলমকে গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলের চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার ফরিদ উদ্দিন। তারা অবিলম্বে মাহবুবের মুক্তি দাবি করেন।

    জাপানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৩৫

    জাপানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ এ।
    স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সেখানে ভূমিধসের সৃষ্টি হয়। এতে চাপা পড়েছে অসংখ্য বাড়িঘর ও মানুষ। সংবাদমাধ্যম ‘এনএইচকে’ জানায়, এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩৫। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬০০ জনের মত। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
    নিহতদের বেশিরভাগই উত্তরাঞ্চলের ছোট শহর আতসুমার বাসিন্দা। সেখানে একটি বড় পাহাড় ধসে পড়ে। আতসুমা শহরের এক বাসিন্দা আকিরা মাতসুশিতা যিনি ভূমিধসে তার এক ভাইকে হারান। তিনি বলেন, এ রকম ভূমিধস আমাদের এখানে কখনও হয়নি। আমি আমার নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাসই করতাম না।
    যারা ভূমিধসে আটকা পড়েছে তাদের বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম। ভূমিকম্প ও ভূমিধসে আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ করছে কমপক্ষে ৪০ হাজার উদ্ধারকর্মী। এদের মধ্যে রয়েছে সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবক।
    দেশটির সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বুল্ডেজার, স্নাইপার কুকুর ও ৭৫ টি হেলিকপ্টার।
    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজে আবে বলেন, শিগগিরই তিনি ভূমিকম্প ও ভূমিধসে আক্রান্ত হওয়া অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
    এদিকে ভূমিকম্পের ফলে হোকাইদো দ্বীপের ১৬ লাখ বাসিন্দা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।

    ভোটের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে সংশয় বিএনপিতে

    বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাসের ৮ মাস পূর্ণ হলো আজ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন। পরে তাকে আদালতের পাশে নাজিমউদ্দিন রোডের ২২৮ বছরের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে আট মাস ধরে জেলে আছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও নেতারা আশা করছেন আর মাত্র দু’টি মামলায় জামিন পেলে কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আইনগত বাধা অপসারিত হতে পারে। এ পর্যন্ত বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ৩৬টি মামলার মধ্যে ৩৪টিতে জামিন লাভ করেছেন তিনি। এখন কুমিল্লার আদালতে দুইটি মামলায় জামিনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন দলের নেতা-কর্মীরা। একটি মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও দায়রা জজের বিচারক কে এম সামছুল আলম ১২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন। অপর মামলাটির জামিন আবেদনের ওপর শুনানির দিন নির্ধারনের জন্য ৯ সেপ্টেম্বর আদালতে আবেদন করবেন বেগম জিয়ার আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার আইনজীবী একেএম এহসানুর রহমান জানান, কুমিল্লার নাশকতার মামলায় আগামী ১২ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ  জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে। আর অপর একটি হত্যা মামলায় দায়রা আদালত থেকে নথি আসা সাপেক্ষে কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। তার আইনজীবী মাসুদ আহমদ তালুকদার ইত্তেফাককে জানান, তারা হত্যা মামলার দ্রুত জামিন শুনানির জন্য আগামীকাল রবিবার পিটিশন দিবেন।
    এদিকে কুমিল্লার অবশিষ্ট দুই মামলায় জামিন পেলে বেগম জিয়া কারামুক্ত হতে পারবেন কি-না তা নিয়ে সংশয়ে আছেন দলের আইনজীবী ও নেতৃবৃন্দ। দলের সিনিয়র একজন আইনজীবী নেতা ইত্তেফাককে বলেন, সরকার আন্তরিক না হলে আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে মুক্ত করা সম্ভব না। দুইটি মামলায় জামিন হলে উনার মুক্তি মিলবে এমন আশা ভেঙে গেছে কারাগারের ভেতর আদালত স্থাপনের পর। আমরা ধারণা করেছিলাম সরকার কিছুটা নরম হয়েছে। কিন্ত তা ঠিক নয়। তারা বেগম জিয়ার ব্যাপারে হার্ডলাইনে আছে বলে মনে হচ্ছে। নির্বাচন পর্যন্ত তাকে কারাগারে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে।
    দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আমরা আইনজীবীরা আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। যতবার সফলতার দোরগোড়ায় গেছি তখনই সরকারের কলাকৌশল আর ষড়যন্ত্রের কারণে জামিন বিলম্বিত হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করা সম্ভবপর নয়। একমাত্র পথ হলো, রাজপথ। এই রাজপথে যাওয়ার জন্য এখন প্রস্তুতি নিচ্ছি।
    স্থায়ী কামটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী মনে করেন, এখন যা পরিস্থিতি তাতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আইন যখন সরকারের হাতে চলে যায়, তখন তো আর ন্যায়বিচার আশা করা যায় না। বিচারবিভাগকে সরকার প্রভাবিত করছে তাই দেশের মানুষ মনে করে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। আমরাও মনে করি আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন না। এর জন্য আন্দোলন সংগ্রাম, প্রতিবাদ, প্রয়োজন। বিএনপি তাই খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমীর খসরু বলেন, আর দুইটি মামলায় জামিন পেলেই তিনি মুক্তি পাবেন বলে আমরা আশা করতে পারি, তবে নিশ্চিত হতে পারি না। কারণ সরকার বেগম জিয়াকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। তাকে মাইনাস করে নির্বাচন করতে চায়। নির্বাচনের আগে তার মুক্তি এমনিতে দিবে না। এজন্য আমাদের আন্দোলন করতে হবে। সরকারকে আমরা বাধ্য করবো।
    খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আইনের প্রক্রিয়ায় যদি জামিন হয় তাহলে আমরা আশা করি অতি শিগগিরই তিনি কারামুক্ত হবেন। আমরা আশা করছি কুমিল্লার দুইটি মামলায় জামিন হলে তার কারামুক্তিতে আইনগত বাধা থাকবে না। এখন রাজনৈতিকভাবে সরকার খালেদা জিয়াকে আরো মামলা দিয়ে বা গ্রেফতারি পরোয়ানা দিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত জেলে রাখতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। যদি তাই হয়, তাহলে সেটা হবে অত্যন্ত বেআইনি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চারটি মামলা ছাড়া বাকি সব মামলা দায়ের করা হয়েছে বর্তমান সরকারের আমলে। রাজনৈতিকভাবে এখন সরকার খালেদা জিয়াকে আরো মামলা দিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত জেলে রাখতে পারে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। তার বিরুদ্ধে যে সব মামলা রয়েছে তাতে এই সময়ে এই মামলায় (জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা) তাকে গ্রেপ্তার করার কোনো কারণ ছিল না।
    বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, যে মামলায় খালেদা জিয়া জেলে গেছেন সেই মামলায় কিন্তু তিনি জামিনে আছেন। কিন্তু কিছু বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলায় তাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় জামিন পাওয়ার অর্থই হচ্ছে তিনি মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে আসবেন। কিন্তু সরকারের অবৈধ হস্তক্ষেপে কারামুক্ত হতে পারছেন না। তাকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা মনে করি সরকারের হস্তক্ষেপেই আইন চলছে। তিনি বলেন, সরকার গোপনে অনেক কিছু করছে, যা আমাদের জানানো হচ্ছে না। এসবই করা হচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যাতে তাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যায়।
    এডভোকেট মাসুদ আহমদ তালুকদার বলেন, কুমিল্লার দুই মামলায় জামিন পেলে খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আর কোন বাধা থাকবে না। তবে আমাদের আশংকা সরকার যদি তাকে নির্বাচন পর্যন্ত কারাগারে রাখতে চায় তাহলে হয়তো নতুন কোন মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখাতে পারে। সরকারের মনোভাব সুবিধাজনক নয়।
    কুমিল্লার জামিনের অপেক্ষায় থাকা দুই মামলার ব্যাপারে আইনজীবিরা জানান, ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বেলা ১১টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সদরের পৌর এলাকার হায়দারপুল নামক স্থানে একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। পর দিন ২৬ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হয়ে থানায় বিএনপি চেয়ারপারসনসহ ২০ দলীয় জোটের ৩২ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। এরই মধ্যে আদালতে মামলাটির অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। ওই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগসহ তাকে হুকুমের আসামি করা হয়।

    জাপানের কোবে শহরের কাছে দ্বিতীয়বারের মত ভূমিতে আঘাত হেনেছে টাইফুন জেবি

    জাপানের মূল দ্বীপের শিকোকু এবং হোনশু অঞ্চল অতিক্রমের পর টাইফুন জেবি এখন জাপান সাগরের উপর দিয়ে ক্রমশ উত্তরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। জাপানের আবহাওয়া এজেন্সি বলছে, এত বেশি তীব্রতার কোন টাইফুন সর্বশেষ জাপানের ভূমিতে আঘাত হেনেছিল সিকি শতাব্দী আগে।

    উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত এই টাইফুনে অন্তত ৩ ব্যক্তি নিহত এবং অন্যান্য আরও ১শ ৪৮ জন আহত হয়েছেন।

    টাইফুনের কারণে যানবাহন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কিয়োটো, ওসাকা এবং কোবে এলাকায় কিছু রেল চলাচল স্থগিত করা হয়েছে।

    এছাড়াও, প্রধানত পশ্চিম জাপানে আজকের জন্য নির্ধারিত ৬শ’রও বেশি আভ্যন্তরীণ বিমান-যাত্রা বাতিল করেছে বিমান কোম্পানিগুলো।

    দাঁড়িয়ে পানি পান মৃত্যুরও কারণ হতে পারে

    উবায়দুর রহমান খান নদভী

    আমেরিকার এক শহরে জনৈক পাকিস্তানি ট্যাক্সি চালক একটি কফি শপে ঢুকলেন। নিজে এক বোতল ঠান্ডা পানি নিয়ে এক পাশে গিয়ে বসে, প্রথমে ছোট ছোট তিন ঢোক তিন নিঃশ্বাসে পান করলেন। এরপর বাকী পানিটুকু শেষ করে যখন লোকটি বের হয়ে যাচ্ছেন, তখন আরেক ভদ্রলোক দৌঁড়ে এসে তার হাত ধরলেন। বললেন, এক্সকিউজ মি, আপনি কি আমাকে ৫ মিনিট সময় দিবেন? আমার কিছু কথা বলার ছিল। ড্রাইভার লোকটি বললেন, বসে বলব না চলতে চলতে বলব। পার্কিংয়ে আমার গাড়ি রাখা আছে। তখন ভদ্রলোক বললেন, চলুন আপনার সাথে যেতে যেতেই কথাগুলো বলা যাক। ভদ্রলোক যা বললেন, তা রীতিমতো বিস্ময়কর। তিনি নিজের পরিচয় দিলেন, আমেরিকার প্রখ্যাত এক বিজ্ঞানী তিনি। ট্যাক্সিতে বসে তিনি পাকিস্তানি এই চালককে প্রশ্ন করলেন, আপনি একটু আগে যেভাবে পানি পান করলেন, এটা কি আপনার অভ্যাস না হঠাৎ করেই এমনটি হয়েছে। যেখানে আমেরিকায় আমরা যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে হাঁটতে হাঁটতে শুধু পানি কেন পুরো লাঞ্চ বা ডিনার করে ফেলি, আপনি সেখানে এক বোতল পানি এক জায়গায় বসে থেমে থেমে নিঃশ্বাস নিয়ে পান করলেন, এর পেছনে কারণ কি? বিজ্ঞান যেখানে বলে, পরিশ্রান্ত মানুষ দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। পানির প্রেসারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তার হার্ট, কিডনি, লিভার ইত্যাদি। নিজের জীবনের দৈনন্দিন এ অভ্যাসটি এই বিজ্ঞানীর চোখে এত বিস্ময়কর কেন ঠেকলো তা এই ড্রাইভার বুঝতে পারছিলেন না। তিনি সরল ভাষায় উত্তর দিলেন, আমি একজন মুসলমান। আমাদের ধর্মে এভাবেই পানি খাওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। আমি ছেলে বেলা থেকে এভাবেই পানি খেতে শিখেছি। আমার পরিবারের ছোট বড় সকলেই এভাবে পানি পান করে। বিজ্ঞানী তখন বললেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে মানুষের পানি পানের সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছি। আমার জ্ঞানের সাথে আপনার আজকের এ পানি পানের দৃশ্য এমনভাবে মিলে গেছে যে, আমি আপনাকে না ধরে পারলাম না। আপনি আমাকে একটু লম্বা সময় দিন। দূরে কোনোদিকে লংড্রাইভে চলুন। আমি আপনার পেমেন্ট দিব, কথা বলার জন্য আলাদা সম্মানিও দেব। তথাপি আমি চাই, আমার গবেষণার একজন রোলমডেলের সাথে আমার দীর্ঘ আলোচনায় আমার গবেষণা পূর্ণতা লাভ করুক। বিজ্ঞানী এরপর জানতে চাইলেন, এভাবে পানি পান করা আপনি শিখেছেন কার কাছে? এটি কি কোনো সংস্থা বা গবেষকের ফর্মুলা। তখন ড্রাইভার সহজ সরলভাবে জবাবে বললেন, এটি আমাদের নবী (সা.) এর সুন্নত। তার এ নির্দেশনা মত পৃথিবীর সব অনুগত মুসলমান পানি পান করে থাকেন। শুধু তাই না, আমাদের জীবনে প্রতিটি কাজের এমন একটি সুন্দর নকশা আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এঁকে দিয়ে গিয়েছেন। যাকে সুন্নত বলে, আমরা তারই অনুসরণ করি। তখন এ বিজ্ঞানী ট্যাক্সি চালককে তখনকার মতো বিদায় দিয়ে বললেন, আমাকে আরও সময় দিতে হবে। আপনার ঠিকানা ও যোগাযোগের সবকিছু আমাকে দিন। আপনাদের প্রফেটের সুন্নত সম্পর্কে যারা বেশি জানেন তেমন জ্ঞানী ব্যক্তিদের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিন। সেদিনের মতো এভাবেই তারা দু’জন আলাদা হয়ে যান। ক’য়েকটি সাক্ষাতের পর এই বিজ্ঞানী ইসলামিক সেন্টারের ইমাম সাহেবের হাতে ইসলামগ্রহণ করেন। তিনি ইসলামের সত্যতা ও শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে আলোচিত ট্যাক্সি চালকের পানি পান করা থেকে প্রথম ধারণা লাভ করেন। পরে তিনি বলেছেন, দাঁড়িয়ে পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। খুব তৃষ্ণার সময় একশ্বাসে অনেক পানি খাওয়া আরও ক্ষতিকর। পানি পানের বহু থিওরি আমি জমা করেছি, কিন্তু সাধারণ একজন ট্যাক্সি চালক যেভাবে বসে ধীরে ধীরে ছোট ছোট তিন ঢোক পানি তিন নিশ্বাসে পান করলো, এ ছিল আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। আমি বুঝতে চেষ্টা করেছিলাম এ ঘটনাটি কি ইচ্ছাকৃত না কাকতালীয়। যখন চালক ব্যক্তিটি আমাকে সব বুঝিয়ে বললেন, তখন আমার সামনে জ্ঞানের দরজা খুলে গেল। আমি সেই মহামানবের সকল সুন্নত সম্পর্কে শ্রদ্ধাভরে জানার সুযোগ পেলাম। যা দেড় হাজার বছর আগে একটি অনুন্নত পরিবেশে থেকেও ইসলামের নবী (সা.) শিক্ষা দিয়ে গেছেন। যার মধ্যকার বিজ্ঞান সৌন্দর্য ও শ্রেষ্ঠত্ব দিনে দিনে বিশ্বের মানুষ আরও বেশি করে বুঝতে পারছে। মানুষ যখন প্রথম এক ঢোক পানি খায়, এরপর নিঃশ্বাস নেয় তখন পানির পরপরই তার দেহে অক্সিজেন প্রবেশ করে। এরপর তিনবার যখন এ কাজটি করে তখন তার মস্তিষ্ক ও রক্তের শিরা-উপশিরা যথেষ্ট অক্সিজেন লাভ করে, ফুসফুস আরাম পায়, খাদ্য ও শ্বাসনালী নিজেদের সেরা পারফর্ম করে, পাকস্থলী ধীরে ধীরে সে পানিগুলো রিসিভ করে। বিভিন্ন নালী ও শিরা পানিটাকে ফিল্টারিং করে, পানিতে কোনো জীবাণু বা ময়লা থাকলে উপকারী জীবাণুরা সেগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে এর তীব্র গতি পাকস্থলীকে যেভাবে আঘাত করে, তার কুপ্রভাব কিডনী পর্যন্ত পৌঁছে যায়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি এমনকি মূত্রথলিতেও চাপ সৃষ্টি করে। আর তৃষ্ণার্থ বা ক্লান্ত মানুষ এক নিঃশ্বাসে অনেক পানি খেলে এতে তার শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থা, রক্তচাপ, মস্তিষ্কের কমান্ড ইত্যাদি সবক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। বিষম খেয়ে বা খাদ্যনালীতে আটকে গিয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটাও অসম্ভব নয়। শুধু এ বিজ্ঞানী নয়, দুনিয়ার আরও গবেষণা প্রতিষ্ঠান মুসলমানদের পানি পানের সুন্নত পদ্ধতিকে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দিচ্ছে, স্বাগত জানাচ্ছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরির জন্য জাপানী ও ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা ছোট ছোট ঢোক নিয়ে শ্বাস ছেড়ে ছেড়ে দীর্ঘ সময়ে পানি পান করার পদ্ধতি প্রয়োগ করে ভালো ফল লাভ করেছে। পাশ্চাত্যের ইসলামগ্রহণের যে প্রবণতা দিনদিনই বাড়ছে এতে বড় বড় ঘটনাতো বটেই সাধারণ মুসলমানদের জীবনরীতি দেখেও অসংখ্য মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বিশ্বে প্রতিদিন প্রায় ৩২শ’ মানুষ ইসলামগ্রহণ করে। তাদের এ পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে পানি পান, খাদ্যগ্রহণ, পারিবারিক শান্তি, বিবাহিত জীবনের পবিত্রতা, সন্তানদের মায়া-মমতা, এমনকি রোগীর সেবা, মৃতের প্রতি শ্রদ্ধা ও ইসলামী পদ্ধতির জানাজা দাফন-কাফন। আল্লাহ মানুষের হেদায়াতের জন্য যে কোনো বিষয়কে উসিলা বানাতে পারেন। মহানবী (সা.)-এর সুন্নত তো ইসলামের সর্বপেক্ষা বড় সম্পদ। এটি কল্যাণের আকর, সাফল্যের ভান্ডার, আর বিজ্ঞানের সমারোহ।

    ইভিএম চাপানো হবে না

    গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

    জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে তুমুল বিতর্ক এবং বিরোধিতার মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই ইভিএম পদ্ধতিতে ইলেকশন হয়। ইভিএম দেশে নিয়ে আসার পক্ষে আমি সব সময় ছিলাম। এখনও পক্ষেই আছি। তবে এটা ঠিক, এটা একটা প্রাকটিসের ব্যাপার; তাড়াহুড়ার কিছু নেই। ভোটারদের ওপর এটা চাপিয়ে দেয়া যাবে না। নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুতে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলন থেকে দেশে ফিরে এসে গতকাল গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। যথা সময়েই নির্বাচন হবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবেই; নির্বাচন ঠেকানোর শক্তি কারো নেই। বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না এবং কোনো ধরণের সংলাপে বসার সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, তাদের (বিএনপি) সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রশ্নই আসে না। বেগম জিয়াকে ২০১৫ সালেই গ্রেফতার করা উচিত ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা তাকে গ্রেফতার করিনি। বেগম জিয়ার মুক্তি আদালত অথবা প্রেসিডেন্টের ক্ষমার উপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, জনগণের সেবা করছি; নির্বাচনে জনগণ ভোট দিলে দেবে না দিলে নাই। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের চেষ্টায় ভুঁয়া ছবি ব্যবহার করে মিয়ানমারের প্রচারণা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিয়ানমার অত্যান্ত জঘন্য কাজ করেছে। আন্তর্জাতিকভাবে নিজেরাই নিজেদের অবস্থান খারাপ করেছে। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
    নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি পেতে হলে হয় আদালত থেকে, না হয় প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। খালেদা জিয়াকে আমি গ্রেফতার করিনি, রাজনৈতিকভাবে তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। ২০১৫ সালে আন্দোলনের নামে যখন জ্বালাও পোড়াও করেছে তখন তাকে গ্রেফতার করতে পারতাম, কিন্তু করিনি। তিনি গ্রেফতার হয়েছেন এতিমের টাকা চুরি করে। আমরা সেই মামলা করিনি। তার পছন্দের ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের সরকার মামলা করেছে। কেস তো আরও আছে। আমার নামেও তো মামলা ছিল। আমার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া কোনো মামলা তুলে নেইনি। আমি বলেছি কোন মামলার চার্জশীট দেবার আগে মামলা শেষ হবে না। বিএনপির এত নামিদামি আইনজীবী, ব্যারিস্টার অমুক-তমুক রয়েছে। তারা কেন পারলো না প্রমাণ করতে যে খালেদা জিয়া নির্দোষ, তারা এতিমের টাকা নেয়নি। তাহলে এখানে আমাদের দোষ দিয়ে লাভটা কী। তবে তাদের নেত্রী বন্দি হয়ে আছে, তাদের আন্দোলন কই? তারা আন্দোলন করুক। কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, দলটির নেতাদের এমন ঘোষণা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের নেত্রী বন্দি হয়ে আছে, এতে আমাদের কী করার আছে। তাকে মুক্ত করার জন্য তারা আন্দোলন করুক।
    আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি তাদের চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না- দলটির এ ঘোষণার উত্তরে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ক্ষমতা থেকে সরে গেলে যারা একবার ক্ষমতায় বসে তারা আর ছাড়তে চায় না। মার্শাল ল, সামরিক শাসন ও কেয়ারটেকার সরকারের এমন উদাহরণ রয়েছে। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে তিনি বলেন, উচ্চ আদালত এ বিষয়ে একটি রায় দিয়েছে। যদি সংসদ মনে করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনের সুযোগ সংসদ পরপর দুবার নিতে পারে। তবে সংসদ সে সুযোগ নেয়নি। একটা সরকার থেকে আরেকটা সরকারে যে ট্রানজিশনাল সময়, এ সময়ে যেন কোনও ফাঁক না থাকে সেজন্য এটা করা। মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে গেলে সংসদ ভেঙে দিতে হয়। সংসদ কিন্তু কখনো শেষ হয়ে যায়নি। নির্বাচনের সময় সংসদ থাকবে কিন্তু কার্যকারিতা থাকবে না। যদি কোনো ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, যদি কোনো যুদ্ধ দেখা দেয় তখন ওই পার্লামেন্টের অনুমোদন নিয়েই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে আমি ভারত ও নেপাল সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিশ্বের প্রত্যেকটা দেশে এ ব্যবস্থা আছে।
    আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি হুঙ্কার দিচ্ছে নির্বাচন করবে না। সেটা তাদের দলের ওপর নির্ভর করবে, এটা তাদের দলের সিদ্ধান্ত। আমাদের কি করার আছে? বিএনপি যদি মনে করে নির্বাচন করবে না, তাহলে করবে না। এখানে তো আমাদের বাধা দেওয়ারও কিছু নেই বা দাওয়াত দেওয়ার কিছু নেই, এটাই পরিষ্কার কথা।
    বিএনপির সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না
    নির্বাচনকালীণ সরকার গঠন এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রশ্নই ওঠে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে মারা যাওয়ার পর যখন বাসায় দেখতে গেলাম, তারা আমার মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিলো, ভেতরে ঢুকতে দিলো না। সেই দিনই আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি, আর তাদের সঙ্গে আমি বসবো না, কোনও আলোচনা হবে না। আপনারা যে যা-ই বলেন না কেন, ক্ষমতায় থাকি আর না থাকি, তাতে কিছুই আসে যায় না। আমার একটা আত্মসম্মানবোধ আছে।
    বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া জড়িত
    বঙ্গবন্ধু হত্যায় যারা পরিকল্পনাকারী এবং সুবিধাভোগী তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে কিনা-এমন প্রশ্নে জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় তার কেবিনেটের সদস্য খন্দকার মোশতাক জড়িত। কিন্তু সে প্রেসিডেন্ট হয়েই জিয়াউর রহমানকে সেনা প্রধান করেছিল। এছাড়া কর্ণেল ফারুক-রশিদদের সাক্ষাতকারের সময় তারা বলেছিল জিয়াউর রহমানের কাছে তারা পরামর্শ চাইলে তাদের ‘গো এহেড’ বলে সামনে এগুতে বলেছিল। এতেই বোঝা যায় ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর খুনের সাথে জিয়া জড়িত ছিল। খুনের পরিকল্পনাকারী এবং সুবিধাভোগীদের বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এই হত্যাকান্ড নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে। হয়তো ভবিষ্যতে অনেক কিছুই বেড়িয়ে আসবে।
    ড. কামাল, বি. চৌধুরী, রব, মান্না প্রসঙ্গে
    ড. কামাল হোসেন, বি. চৌধুরীর জোট গঠনকে সাধুবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের এই উদ্যোগ, ঐক্যকে সাধুবাদ জানাই। ঐক্য হোক, একসঙ্গে হয়ে ভোটটা করুক। বিকল্প একটা জোট থাকুক। নির্বাচনে কনটেসটেন্ট লাগে। ড. কামাল হোসেন বলেছেন নির্বাচন হয় কিনা সন্দেহ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনকে পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আপনারা কামাল হোসেন গংরা নির্বাচন চান কি না? আপনারা চান অসাংবিধানিক সরকার আসুক। তাহলে আপনারা পতাকা পান, গুরুত্ব বাড়ে।ড. কামাল হোসেনের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী যখন ধমকের সুরে কথা বলেন তখন বুঝতে হবে প্লেন রেডি, শুটকেস ঘোছানো শুধু বাকি।
    ’৭৩ সালে ড. কামাল হোসেন বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় এমপি হয়েছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া আসনে তিনি বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় এমপি হয়েছিলেন। তিনি আবার আমাদের সমালোচনা করেন, গণতন্ত্রের কথা বলেন।
    ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ভাল মানুষ। তার পরিবারের সাথে অনেক আগ থেকে সম্পর্ক। তারা বাবা এবং আমার বাবা ১৯৫৬ সালে একই ক্যাবিনেটে মন্ত্রী ছিলেন। তিনি বিএনপি থেকে বিকল্পধারা তৈরী করেছেন। কিন্তু বিকল্পধারা এখন স্বতন্ত্রধারা হয়ে গেছে।
    জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম রব সম্পর্কে তিনি বলেন, একটা কথা আছে রব সম্পর্কে আর তা হল- সুসময়ে সরব দু:সময়ে নিরব/ সে হল আ স ম রব। অনেক বড় নেতা ছিলেন। এক সময় ছাত্রলীগ করতেন। আমাদের দল থেকে বের হয়ে আলাদা নির্বাচন করলেন। কিন্তু ফেল করলেন। জনগণ আপনাকে ভোট দিয়েছিল নৌকার জন্য। নৌকা নেই জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
    নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মান্না। যখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসলেন তখন বলেছিলাম, অনেক তো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লিখলেন এবার আওয়ামী লীগের পক্ষে লিখেন। কিন্তু এ কথা শুনে মান্না জুড়ে দেয় কান্না। তিনিও দল থেকে চলে গেলেন।
    মিডিয়া বিএনপির ফেবারে
    আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার অসংখ্য বেসরকারি টেলিভিশনের পারমিশন দিয়েছে জানিয়ে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বেসরকারি টেলিভিশন আগে ছিল না, আমিই দিয়েছি। অথচ সেই টেলিভিশন তাদের (বিএনপি) ফেবার করে, আমাকে রাখে চার-পাঁচ নম্বরে। তিনি বলেন, বিএনপি পার্লামেন্টে নেই, তারা বৈধ বিরোধী দলেও নেই। অথচ আমাদের মিডিয়ার কাছে এখন বিএনপিই বিরোধী দল, তারাই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। আজ কিছু কিছু রিপোর্ট পড়ছিলাম। তাদের (বিএনপি) আমলে যে দুর্নীতি, ঘুষ নেওয়া, আন্তর্জাতিকভাবেও বহু কাহিনি রয়েছে। তবে, তাদের সৌভাগ্য যে মিডিয়া সব সময় তাদের ফেবার করে। আমি তো থাকি আপনাদের প্রত্যেকটা টেলিভিশনের হয় তিন নম্বর, নয়তো চার বা পাঁচ নম্বরে। এটা হলো বাস্তবতা।
    মিয়ানমারের ছবি বানানো
    রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। তারা মুখে বলে, কিন্তু করে না। আবার করতে গেলে অনেক বাধা আসে। নেপালে মিয়ানমারের নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে দেশটিকে দেয়া বাংলাদেশের তালিকা অনুযায়ী ৩ হাজার লোককে ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত রয়েছে মিয়ানমার।
    এদিকে সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধের ছবি ব্যবহার করে রোহিঙ্গা বিরোধী প্রচারণা চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটা নিয়ে বলতে চাই, আমাদের দেশেও এই ধরনের ছবি নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে। এখন কথাটা হচ্ছে, শিখলো কার কাছ থেকে ওরা? আমাদের বিএনপি-জামায়াতের কাছ থেকে এগুলো শিখলো কি-না তারা? বিভিন্নভাবে জামায়াত-বিএনপিও কিন্তু এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছিল। মিয়ানমার যেটা করেছে এটা অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ করেছে। আন্তর্জাতিক ভাবে তারা হেয় প্রতিপন্ন হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সাধারণত যখন এই ধরনের (বিমসটেক) একটা আঞ্চলিক গোষ্ঠী তৈরি হয়, তখন সেখানে এ ধরনের দ্বি-পাক্ষিক বিষয়গুলো সেখানে তুলে ধরা যায় না। এতে পরিবেশটা ভালো থাকে। হিমালয় থেকে বঙ্গপোসগারকে ঘিরে যে দেশগুলো সে দেশগুলোর সঙ্গে একটা সমঝোতা ও দেশগুলোর মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। সার্বিক বিবেচনায় বিমসটেকের সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
    ডেল্টা প্ল্যান ২১০০
    ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ডেল্টা প্ল্যান ২১০০-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ১০০ বছরে কোন পর্যায়ে যাবে সেই পরিকল্পনা চলছে। ২০২১ সাল থেকে শুরু করে ২০৪১ সাল পর্যন্ত কী করবো, তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, দিনবদলের সনদ চলছে। কাজ চলছে। তা অব্যাহত থাকবে। ২১০০ সালে বাংলাদেশকে কীভাবে দেখতে চাই, বদ্বীপকে বাঁচিয়ে রাখা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্যান্য অভিঘাত থেকে বাঁচাতে এই প্ল্যান। দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতেই ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়ন হাতে নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে কাজ চলছে।
    একাদশ জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নেই। তবে লক্ষ্য ও পরিকল্পনা গ্রহণে কাজ করে যাচ্ছি। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ছাড়া আসলে দেশের উন্নয়ন হবে না। সে লক্ষ্যে ২০১০ থেকে ২০, ২০২১ থেকে ৪১ সাল পর্যন্ত করণীয় অনেকদূর এগিয়েছে। পরবর্তী ২০৪১ থেকে ২১০০ পর্যন্ত কী হবে সেই পরিকল্পনাও দিয়ে যাচ্ছি। এ নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। দেশ এগিয়ে যাবে। বদ্বীপকে রক্ষা ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতেই ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ হাতে নেওয়া হচ্ছে। জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নই আমার ইচ্ছা। আর কিছু চাই না তো।
    আগামী নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ওপর আমার আস্থা-বিশ্বাস আছে। আমার কোনও আকাক্সক্ষা নেই। জনগণ যদি উন্নতি চায়, কল্যাণ চায়, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও আমাকে জয়যুক্ত করবে। তবে আমি এটুকু মনে করি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে না পারলে সুদিন আসবে না, আসবে দুর্দিন। এটা আমি নিশ্চিত। জনগণ আমাকে না চাইলে আমার কোনও দুঃখ নাই। ক্ষমতায় থেকে কাজ করেছি জনগণের জন্যে, জনগণ ভোট দিলে দেবে, না দিলে কিছু করার নাই, আফসোস নাই।

    বিদেশি পর্যটকদের জাপানী বিমান কোম্পানির নতুন সেবা

    জাপানী বিমান কোম্পানি “অল নিপ্পন এয়ারওয়েজের” পরিচালনা কোম্পানি, এএনএ হোল্ডিংস, বিদেশি পর্যটকদের এক নতুন সেবা প্রদানের ব্যবস্থা শুরু করবে।

    ভ্রমণ নির্দেশিকা সেবা প্রদানের জন্য এই কোম্পানি, টোকিওর নিকটবর্তী কামাকুরা শহর ভিত্তিক “হাবার” নামক একটি উদ্যোগী কোম্পানির সাথে ব্যবসায়ী সম্পর্ক স্থাপন করেছে।

    নতুন উদ্যোগী কোম্পানিটি, প্রায় ৪ হাজার ৫শ নিবন্ধিত গাইডের সাথে বিদেশি পর্যটকদের যোগাযোগ স্থাপনের জন্য অনলাইন সেবা প্রদান করে।

    এসব গাইড, দু’জন একসঙ্গে কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে একজন, বিদেশি ভাষার ভার নেন এবং অপর জন হচ্ছেন স্থানীয় বিশেষজ্ঞ।

    এএনএ চলতি বছরের শেষ নাগাদ, জাপানে আগত যাত্রীদের জন্য যোগাযোগ স্থাপনের সেবা প্রদান শুরু করার পরিকল্পনা করছে।

    এএনএ’র “ডিজিটাল ডিজাইন ল্যাবের” মুখ্য পরিচালক ইয়োশিয়াকি সুদা বলেন যে, এই সেবা বিমান কোম্পানিটিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে সাহায্য করবে কেননা গ্রাহকরা বিমানের টিকিট কেনার সময় গাইড বেছে নিতে সক্ষম হবেন।

    কুরআন-বর্ণিত ইঞ্জিল ও প্রচলিত ইঞ্জিল

    মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

    আলহামদু লিল্লাহ, মুসলিমসমাজে ইসলামী আকীদা-বিশ্বাসের শিক্ষা মকতব থেকে শুরু হয়ে যায়। মকতবেই আমাদেরকে ইসলামের মৌলিক আকীদাগুলো একটি সংক্ষিপ্ত বাক্যে শেখানো হয়েছে। আমাদেরকে পড়ানো হয়েছে-

    آمنت بالله، وملائكته، وكتبه، ورسله، واليوم الآخر، والقدر خيره وشره من الله تعالى، والبعث بعد الموت.

    আমি ঈমান এনেছি আল্লাহ তাআলার প্রতি। তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি। তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি। তাঁর রাসূলগণের প্রতি। আখেরাতের প্রতি। আর একথার প্রতি যে, সকল ভালো-মন্দ আল্লাহর তাআলার পক্ষ থেকে নির্ধারিত। এবং ঈমান এনেছি মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করার প্রতি।

    ইসলামী আকীদার বৈশিষ্ট্য এই যে, উম্মতে মুসলিমা আল্লাহ তাআলার বাতলে দেওয়া সকল হককে হক মনে করে। এগুলোর মাঝে কোনোরূপ তারতম্য করে না। তারা বলে-

    لا نفرق بين أحد من رسله.

    আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোনো পার্থক্য করিনা। যে, কারও প্রতি ঈমান আনব আর কারও প্রতি ঈমান আনব না। তারা ইহুদী নাসারার মত কখনো এ কথা বলে না- نؤمن ببعض ونكفر ببعض.

    আমরা কারো প্রতি ঈমান আনি আর কারো প্রতি আনি না।

    বরং তারা আল্লাহ তাআলার সকল ফেরেশতার প্রতি ঈমান আনে। আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত সকল কিতাবের প্রতি ঈমান আনে। সেগুলোকে সত্য মনে করে। আল্লাহ তাআলার প্রেরিত সকল নবী ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনে। তাদেরকে হক এবং সত্যবাদী ও সত্যায়িত মনে করে। নাযিলকৃত কিতাবের প্রতিটি আয়াত ও প্রতিটি কথা সত্য মনে করে। আল্লাহ তাআলার রাসূল থেকে প্রাপ্ত সকল কথা  হক ও সত্য মনে করে। ইরশাদ হয়েছে-

    اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ  كُلٌّ اٰمَنَ بِاللهِ وَ مَلٰٓىِٕكَتِهٖ وَ كُتُبِهٖ وَ رُسُلِهٖ  لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِهٖ  وَ قَالُوْا سَمِعْنَا وَ اَطَعْنَا ؗغُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَ اِلَیْكَ الْمَصِیْرُ.

    রাসূল (হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাতে ঈমান এনেছে, যা তাঁর উপর তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ হতে নাযিল করা হয়েছে এবং (তাঁর সাথে) মুমিনগণও। তাঁরা সকলে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছে। (তারা বলে,) আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না  (যে, কারও প্রতি ঈমান আনব এবং কারও প্রতি আনব না)। এবং তাঁরা বলে, আমরা (আল্লাহ ও রাসূলের বিধানসমূহ মনোযোগ সহকারে) শুনেছি এবং তা (খুশীমনে) পালন করছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনার মাগফিরাতের ভিখারী, আর আপনারই কাছে আমাদের প্রত্যাবর্তন। -সূরা বাকারা (২) : ২৮৫

    সূরা নিসায় এ ধরনের পার্থক্য ও তারতম্যের ব্যাপারে এই ধমকি শোনানো হয়েছে-

    اِنَّ الَّذِیْنَ یَكْفُرُوْنَ بِاللهِ وَ رُسُلِهٖ وَ یُرِیْدُوْنَ اَنْ یُّفَرِّقُوْا بَیْنَ اللهِ وَ رُسُلِهٖ وَ یَقُوْلُوْنَ نُؤْمِنُ بِبَعْضٍ وَّ نَكْفُرُ بِبَعْضٍ  وَّ یُرِیْدُوْنَ اَنْ یَّتَّخِذُوْا بَیْنَ ذٰلِكَ سَبِیْلً اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْكٰفِرُوْنَ حَقًّا وَ اَعْتَدْنَا لِلْكٰفِرِیْنَ عَذَابًا مُّهِیْنًا وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللهِ وَ رُسُلِهٖ وَ لَمْ یُفَرِّقُوْا بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ اُولٰٓىِٕكَ سَوْفَ یُؤْتِیْهِمْ اُجُوْرَهُمْ  وَ كَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا.

    যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় ও বলে, আমরা কতক (রাসূল)-এর প্রতি তো ঈমান রাখি এবং কতককে অস্বীকার করি, আর (এভাবে) তারা (কুফর ও ঈমানের মাঝখানে) মাঝামাঝি একটি পথ অবলম্বন করতে চায়- এরূপ লোকই সত্যিকারের কাফির। আর আমি কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনবে এবং তাঁদের কারও মধ্যে কোনো পার্থক্য করবে না, আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মফল দান করবেন। আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। -সূরা নিসা (৪) : ১৫০-১৫২

    সূরা বাকারায় ইহুদীদের এ ধরনের কুফরীসূলভ আচরণের ব্যাপারে সর্তক করে ইরশাদ হয়েছে-

    اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْكِتٰبِ وَ تَكْفُرُوْنَ بِبَعْضٍ  فَمَا جَزَآءُ مَنْ یَّفْعَلُ ذٰلِكَ مِنْكُمْ اِلَّا خِزْیٌ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا  وَ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ یُرَدُّوْنَ اِلٰۤی اَشَدِّ الْعَذَابِ  وَ مَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ.

    তবে কি তোমরা কিতাবের (তাওরাতের) কিছু অংশে ঈমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? তাহলে বল, তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে তোমাদের শাস্তি এ ছাড়া আর কী হতে পারে যে, পার্থিব জীবনে তাদের জন্য থাকবে লাঞ্ছনা আর কিয়ামতের দিন তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হবে কঠিনতর আযাবের দিকে? তোমরা যা-কিছু কর আল্লাহ সে সম্পর্কে উদাসীন নন। -সূরা বাকারা (২) : ৮৫

    এদিকে অনেক সহজ-সরল মুসলমানকে খ্রিস্টান মিশনারীরা এই বলে ধোকা দেয় যে, মুসলমানরা তো ঈসা আলাইহিস সালামকে নবী মানে এবং ইঞ্জিলকে আসমানী কিতাব মনে করে তাই (নাউযুবিল্লাহ) তারা নাসারা হয়ে গেলে কোনো অসুবিধা নেই। এ ধরনের ধোঁকা ও প্রবঞ্চনা দিয়ে তাদেরকে খ্রিস্টান বানায়। আর তাদের নাম দেয় ‘ঈসায়ী মুসলমান’।

    প্রত্যেক নবীর প্রতি ঈমান আনার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহর প্রেরিত সকল নবী রাসূলকে হক মনে করা। এই বিশ্বাস রাখা যে, তাঁর শরীয়ত ও সুন্নাত তাঁর উম্মতের জন্য অবশ্যঅনুসরণীয় ছিল। এবং এ বিশ্বাসও রাখা যে, আল্লাহ তাআলার শেষ নবী ও শেষ রাসূল হলেন হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাঁর শরীয়ত ও সুন্নাত সকল সম্প্রদায়ের সকল এলাকার সকল যুগের সকল ভাষার মানুষের জন্য অবশ্যঅনুসরণীয়। এখন নাজাত ও মুক্তি শুধু তাঁরই অনুসরণ এবং তাঁর শরীয়ত ও সুন্নাতের অনুসরণে সীমাবদ্ধ।

    তাঁর পরে অন্য কোনো ব্যক্তির নবুওতের দাবি করার একমাত্র অর্থ হচ্ছে ঐ ব্যক্তি দাজ্জাল ও মিথ্যাবাদী। আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপকারী। যারা তাকে নবী মানবে তারা সরাসরি কাফের ও ঈমানহারা হয়ে যাবে।

    উম্মতে মুসলিমা আল্লাহর সকল ‘নবী’র প্রতি ঈমান রাখে, ‘মুতানাব্বির’ (নবুওতের মিথ্যা দাবিদার) প্রতি ঈমান রাখে না। তারা মুসায়লামা থেকে গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী পর্যন্ত সকল যুগের নবুওতের মিথ্যা দাবিদারকে মিথ্যাবাদী ও অভিশপ্ত মনে করে।

    আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত সকল কিতাবের প্রতি ঈমান রাখার উদ্দেশ্য হচ্ছে, তারা সেগুলোকে সত্য ও হক মনে করে। পাশাপাশি এই বিশ্বাসও রাখে, যা আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলে দিয়েছেন, আহলে কিতাবগণ আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত কিতাবে বিকৃতি সাধন করেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিকৃত অংশ আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাবের অংশ নয়। আর যতক্ষণ বিকৃত অংশ নির্দিষ্ট করা না হবে বিকৃতি মিশ্রিত কিতাবের উপর বিশ্বাস করা জায়েয হবে না।

    এবং এ বিশ্বাসও রাখে যে, আল্লাহর নাযিলকৃত ঐ সকল কিতাব যেভাবে নাযিল হয়েছিল সেভাবে নিঃসন্দেহে হক ও সত্য। কিন্তু আল্লাহ তাআলা এখন কিয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য কুরআনে নাযিলকৃত শরীয়তকে অবশ্যঅনুসরণীয় বানিয়ে দিয়েছেন। পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের শরীয়তকে আল্লাহ তাআলার কুরআনের মাধ্যমে রহিত করেছেন। এখন পূর্ববর্তী শরীয়তের কোনো হুকুম কুরআন-সমর্থিত না হলে অনুসরণযোগ্য নয়।

    মোটকথা, প্রত্যেক হককে হক মনে করা, হককে সত্যায়ন করার ক্ষেত্রে পার্থক্য ও তারতম্য না করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী আকীদা। কিন্তু অন্যান্য ইসলামী আকীদার মতই এ আকীদার বিস্তারিত ব্যাখ্যাও অনেকের জানা নেই। এই অজ্ঞতাকে পুঁজি করে অনেক খ্রিস্টান মুসলমানদেরকে ধোঁকা দিয়ে থাকে। তারা বলে, মুসলমানরা যদি (নাউযুবিল্লাহ) খ্রিস্টান হয়ে যায় এতে কোনো অসুবিধা নেই। এভাবে ধোঁকা দিয়ে তাদেরকে খ্রিস্টান বানিয়ে তাদের নাম দেয় ‘ঈসায়ী মুসলমান’। إنا لله وإنا إليه راجعون

    অথচ আমরা হলাম মিল্লাতে হানীফিয়্যাহ (তাওহীদের অনুসারী) ‘মুসলিম’। আমরা মুশরিক নই, ইহুদী নই, খ্রিস্টান নই, না অন্য কোনো প্রকারের কাফের। ভালোভাবে স্বরণ রাখতে হবে, এ নাম কেবলই ধোঁকা। ‘ঈসায়ী মুসলমান’-এর অর্থ হচ্ছে গায়রে মুসলিম মুসলমান।

    আরো স্মরণ রাখা দরকার, মুসলমান ঈসা আলাইহিস সালামের ব্যাপারে ঐ আকীদা-বিশ্বাসই পোষণ করে, যা কুরআনে কারীম ও হাদীসে ইরশাদ হয়েছে। যথা :

    ঈসা আলাইহিস সালাম আল্লাহ তাআলার বান্দা ও তাঁর রাসূল। ঈসা আলাইহিস সালাম মারইয়ামের পুত্র। আল্লাহ তাআলা তাঁকে পিতা ছাড়া নিজের বিশেষ কুদরতে সৃষ্টি করেছেন। ঈসা আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তাআলা বনী ইসরাঈলের নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেন। ঈসা আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তাআলা শেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যাঁর আরেক নাম আহমদ, ভবিষ্যদ্বাণী শোনানোর জন্য প্রেরণ করেছেন। এবং তিনি শেষ নবী আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী শুনিয়েছেন এবং জোরালোভাবে বলে গেছেন যে, তাঁর আগমনের পর তোমরা সকলে তাঁর প্রতি ঈমান আনবে এবং তাঁর অনুসরণ করবে। ঈসা আলাইহিস সালাম আল্লাহ তাআলার বান্দা। নাউযুবিল্লাহ আল্লাহর পুত্র নন। তিনি আল্লাহ তাআলার ইবাদতগুযার বান্দা ছিলেন। মাআযাল্লাহ তিনি ইলাহ অথবা তিন খোদার এক খোদা ছিলেন না। খোদাবন্দ তাআলা তো কেবল আল্লাহই। তিনি একমাত্র মা‘বুদ। তিনি ছাড়া অন্য কেউ ইবাদতের উপযুক্ত নয়। ঈসা আলাইহিস সালামকে জালেমরা না হত্যা করতে পেরেছে, না শুলে চড়াতে পেরেছে। বরং আল্লাহ তাআলা তাঁকে জালেমদের হাত থেকে রক্ষা করে আসমানে উঠিয়ে নিয়েছেন। তিনি এখনও আসমানে জীবিত আছেন। হাদীস শরীফের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী কিয়ামতের পূর্বে তিনি পৃথিবীতে অবতরণ করবেন এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীয়ত অনুযায়ী ফায়সালা করবেন। দাজ্জালকে হত্যা করবেন। একটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হবে।

    একটু চিন্তা করুন! খ্রিস্টানরা হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের ব্যাপারে যেসব আকীদা পোষণ করে সেগুলোর সাথে মুসলমানদের এ সকল আকীদার কোনো মিল আছে কি?

    আজকের খ্রিস্টানরা ঈসা আলাইহিস সালামের আনীত আকীদা-বিশ্বাস ও শরীয়তের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। তারা ঈসা আলাইহিস সালামের শিক্ষা ছেড়ে পৌলের মনগড়া বানানো কথার প্রচার করছে। আল্লাহর নাযিলকৃত ইঞ্জিল তো এখন তাদের কাছে অবিকৃত অবস্থায়ও নেই, বিকৃত অবস্থায়ও নেই। ইঞ্জিলের পরিবর্তে তারা হাওয়ারীনদের দিকে সম্বন্ধকৃত মানবরচিত কিছু গ্রন্থের প্রতি বিশ্বাসের দাবি করে। এ জন্য তারা তো নিজেদের ঈসায়ী বলারও হক রাখে না।

    যদি মেনে নেওয়া হয় যে, তারা ঈসা আলাইহিস সালামের শরীয়তের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং নাযিলকৃত ইঞ্জিলের শরীয়তের অনুসারী তাহলেও তো খোদ ঈসা আলাইহিস সালামের হুকুম এবং নাযিলকৃত ইঞ্জিলের ফরমান অনুযায়ী তাদের জন্য আবশ্যক হল, সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ঈমান আনা এবং তাঁর শরীয়তের অনুসরণ করা। স্বয়ং ঈসা আলাইহিস সালাম যদি জীবিত থাকতেন তাহলে তাঁরই অনুসরণ করতেন। আর ঈসা আলাইহিস সালাম কিয়ামতের পূর্বে যখন আসমান থেকে অবতরণ করবেন তখন তাঁরই অনুসরণ করবেন।

    খ্রিস্টানদের ভ্রষ্টতার অবস্থা দেখুন, যেখানে তাদের জন্য আবশ্যক ছিল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ঈমান আনা, কুরআন ও কুরআনের শরীয়তের প্রতি ঈমান এনে সেগুলোর অনুসরণ করা, তা না করে তারা ঈমানদার মুসলমানদেরকে বিকৃত খ্রিস্টবাদের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত। তাছাড়া শেষ নবীর আগমনের পর তো সঠিক খ্রিস্টবাদও রহিত হয়ে গেছে। নাজাত ও মুক্তির জন্য এখন সেটাও যথেষ্ট নয়।

    ইঞ্জিল সম্পর্কে ইসলামী আকীদার সারমর্ম হল :

    ইঞ্জিল আল্লাহ তাআলার কালাম, যা তিনি তাঁর বান্দা ও রাসূল মারইয়াম তনয় ঈসা আলাইহিস সালামের উপর নাযিল করেছেন। আল্লাহ তাআলা যে ইঞ্জিল নাযিল করেছেন তা সবটুকুই হক এবং তা পুরোপুরি সত্য। ইঞ্জিলের শরীয়ত বনী ইসরাঈলের জন্য প্রযোজ্য ছিল। তাওরাত ও ইঞ্জিলে কিতাবীরা অনেক বিকৃতি সাধন করেছে। কুরআনে কারীমের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাওরাত ও ইঞ্জিলসহ পূর্বের সকল শরীয়ত রহিত করেছেন। এখন শেষ নবীর আগমনের পর হেদায়েত ও নাজাত কেবল শেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর প্রতি নাযিলকৃত কুরআনী শরীয়তের অনুসরণে নিহিত।

    এখন আবার একটু চিন্তা করুন! এই ইসলামী আকীদাগুলোর সাথে খ্রিস্টানদের কাছে থাকা মানবরচিত গ্রন্থ ইঞ্জিল ও বাইবেলের কী সম্পর্ক? ইঞ্জিল তো আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত কালাম। আর প্রচলিত ইঞ্জিল ও বাইবেল মানবরচিত। যাতে স্বয়ং খ্রিস্টান পাদ্রী ও গবেষকদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী প্রচুর পরিমাণে অসঙ্গতি ও বৈপরীত্য বিদ্যমান। কুরআনে বর্ণিত ইঞ্জিলের সাথে যার কোনো মিল নেই।

    তা সত্ত্বেও খ্রিস্টানরা প্রচলিত ইঞ্জিল ও বাইবেলকে আসল ইঞ্জিল হিসেবে প্রচার করার পেছনে লেগে আছে!!

    নয়াপল্টনে মানুষের ঢল

    Posted by admin on September 1
    Posted in Uncategorized 

    নয়াপল্টনে মানুষের ঢল

    বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নয়াপল্টনের জনসভায় মানুষের ঢল নেমেছে। দুপুর ২টায় জনসভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। দুপুর ১২ টার দিকেই নেতাকর্মীদের উপস্থিতি একদিকে নাইটিঙ্গেল মোড় অন্যদিকে ফকিরাপুল ছাড়িয়ে যায়। এখন জনসভার উপস্থিতি আরামবাগ, ফকিরাপুল, কাকরাইল, বিজয়নগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে।

    ঢাকা এবং ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড হাতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশের দিকে যাচ্ছেন। তবে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না। প্রখর রোদ ও তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে নয়াপল্টনেে অবস্থান নিয়ে নেতাকর্মীরা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন।