• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • জাপানের সমুদ্র উপকূলে দাবদাহ অব্যাহত    

    জাপান সাগরের উপকূলবর্তী জনগোষ্ঠী দাবদাহের মধ্যে সোমবার আরেকটি দিন অতিবাহিত করেছে।

    আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে পর্বতমালার উপর দিয়ে বয়ে চলা দক্ষিণের বায়ু জাপান সাগরের বিভিন্ন এলাকায় তপ্ত বাতাস নিয়ে আসছে।

    আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা এটাকে “বিস্ময়কর ফন ঘটনা” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এতে ইশিকাওয়া, গিফু, নি’গাতা এবং ফুকুই জেলার বেশ কিছু এলাকার তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপর উঠে গেছে।

    মঙ্গলবারও এই দাবদাহ অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা হিট স্ট্রোক এড়ানোর জন্য লোকজনকে যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করার পাশাপাশি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার করার অনুরোধ জানাচ্ছেন।

    রাজশাহী ও বরিশালের ফল প্রত্যাখ্যান বিএনপির, বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিক্ষোভ

    রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে আগামী বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী প্রতিবাদ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
    মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
    তিনি বলেন, ‘জনগণ তিন সিটি নির্বাচনে সরকারি দলের সীমাহীন ভোট কারচুপি ও জবরদখল দেখেছে। এই সরকার এবং নির্বাচন কমশিন আবারও প্রমাণ করেছে, তাদের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না’।
    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা রাজশাহী ও বরিশালের ভোটের ফলাফল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। কারণ, এটা কোনো নির্বাচনই হয়নি। ভোট চুরি নয়, ডাকাতি প্রতিফলিত হয়েছে। সেখানে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। ভোট কারচুপির প্রতিবাদে আগামী বৃহস্পতিবার সারাদেশের জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ করা হবে।’
    এ সময় তিনি দাবি করেন, ‘সিলেটেও ব্যাপক ভোট কারচুপি হয়েছে। তা না হলে আরিফুল হক লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হতেন’।
    সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন,‘গতকাল (সোমবার) রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট এই ৩টি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনের নাটক শেষ হলো। এই নির্বাচনে আমাদের কথাই সত্য প্রমাণিত হলো- শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনই সুষ্ঠু ও অবাধ হতে পারে না। প্রমাণিত হলো এই অযোগ্য নির্বাচন কমিশিনের পরিচালনায় কোন নির্বাচনেই জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব নয়’।
    গাজীপুর ও খুলনার মতো এই তিনটি সিটি কর্পোরেশনে ভোট চুরি বা কারচুপি নয়, ভোট ডাকাতির মহাউৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিরোধী দলগুলোর প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নয়, প্রতিপক্ষ এই অবৈধ সরকারের প্রশাসন এবং অযোগ্য নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কমিশন পুলিশের মতোই আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী করার জন্য নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। শুধু নির্বাচনের দিনে নয়, সিডিউল ঘোষণার দিন থেকেই পুলিশের বিশেষ স্কোয়াড মাঠে নেমেছে’।
    নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন গঠনের পর থেকেই আমরা বলে এসেছি- এই কমিশন আওয়ামী লীগের প্রতি পক্ষপাত দুষ্ট এবং অযোগ্য। তারা আচরণ বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশের নির্যাতন বন্ধ করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মানতে পুলিশকে বাধ্য করতে পারেনি’।
    তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করছে। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করছে। লক্ষ্য একটি- একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ভিন্নরূপে প্রতিষ্ঠা করে চিরদিন ক্ষমতায় থাকা। আওয়ামী লীগ এখন একটি গণবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে। সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনে তারা জয়ী হতে পারবে না বলেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভোট ডাকাতি করে তারা জাতীয় সংসদের নির্বাচন করতে চায়। ২০১৪ সালের মতোই একতরফা নির্বাচন করার নীল নকশা করছে। জনগণ তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে দিবে না’।
    তিনি আরও বলেন, ‘দেশে নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হলে প্রথমেই বেগম খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলীয় সকল বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করতে হবে। বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। সরকারকে আহ্বান জানাবো কালবিলম্ব না করে অবিলম্বে আামদের দাবিগুলো মেনে নিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে’।
    সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

    পারকিনসন্স রোগের চিকিৎসায় স্টেম কোষ ব্যবহারের পরীক্ষা শীঘ্রই আরম্ভ

    কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল পারকিনসন্স রোগের চিকিৎসার জন্য কৃত্রিমভাবে তৈরি বিভিন্ন কোষ উৎপাদনে সক্ষম স্টেম কোষ বা আইপিএস কোষ ব্যবহারের মাধ্যমে শীঘ্রই রোগীদের উপর পরীক্ষা আরম্ভ করবে।

    পারকিনসন্স হলো এমন এক রোগ যা সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না এবং এতে মস্তিষ্কের ডোপামিন উৎপন্নকারী কোষ কমে যাওয়ার ফলে স্নায়বিক কার্যকলাপের ক্রমান্বয়ে অবনতি ঘটে।

    জাপানে এই স্নায়ুরোগে আক্রান্ত প্রায় দেড় লক্ষ রোগী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই রোগের পরিপূর্ণ কোন চিকিৎসা এখন পর্যন্ত আবিস্কৃত হয়নি।

    কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয় জাপানের আইপিএস গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের অধ্যাপক রিয়োসুকে তাকাহাশি এবং কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইপিএস কোষ গবেষণা ও প্রয়োগ কেন্দ্রের অধ্যাপক জুন তাকাহাশির নেতৃত্বাধীন গবেষক দল রোগীদের উপর পরীক্ষা চালানোর জন্য সরকারি অনুমোদন লাভ করেছেন।

    পরীক্ষায়, আইপিএস কোষের মাধ্যমে উৎপন্ন কোষগুলোকে রোগীদের মস্তিস্কে স্থাপন করা হবে। কোষগুলো তখন ডোপামিন-উৎপন্নকারী স্নায়ু কোষে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    গবেষক দলটি আশা করছে এই চিকিৎসাসেবা একসময় বৃহৎ পরিসরে ব্যবহৃত হবে এবং জাপানের স্বাস্থ্য বিমা ব্যবস্থায় তা অন্তর্ভুক্ত হবে।

    জাপানে চোখের রেটিনার রোগের চিকিৎসায় আইপিএস কোষের ব্যবহারের মাধ্যমে রোগীদের উপর পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। এছাড়া সরকার এই কোষ ব্যবহারের মাধ্যমে হৃদরোগ চিকিৎসায় পরীক্ষা চালানোর অনুমোদন দিয়েছে।

    জাপানে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নারীর মৃত্যু

    বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নারী মিয়াকো চিইয়ো ১১৭ বছর বয়সে মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার টোকিওতে তিনি মারা যান। মিয়াকো চিইয়ো নামের জাপানিজ এই বৃদ্ধা ১৯০১ সালের ২২ মে জন্মগ্রহণ করেন। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দেশের ও বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি মারা গেছেন। খবর সিএনএনের।
    ২০১৫ সালের এপ্রিলে জাপানের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে মিসাও ওকাওয়া ১১৭ বছর বয়সে মারা যান। ওকাওয়া ১৮৯৮ সালের ৫ মার্চ জন্ম গ্রহণ করেন। তার মৃত্যুর পর চিইয়ো ছিলেন জাপান ও বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি।
    গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস চিইয়োকে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি ও সবচেয়ে বয়স্ক নারী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পরপরই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
    এক বিবৃতিতে জানা যায়, ১১৭ বছর বয়সী চিইয়ো ধৈর্যশীল ও দয়ালু ছিলেন। এছাড়া পরিবারের সদস্যরা তাকে গল্পবাজ ‘দেবী’ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি জাপানিজ খাবার সুশি ও ইল মাছ খেতে পছন্দ করতেন। চিইয়ো ক্যালিওগ্রাফি করতেও ভালোবাসতেন।
    বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষও জাপানি নাগরিক। মাসাজো নোনাকা নামের ওই ব্যক্তি ২৫ জুলাই ১১৩ বছরে পা দিয়েছেন।

    ৯ বছর পর বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

    তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটিং নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। শনিবার রাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৮ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় মাশরাফি বাহিনী। নয় বছর পর এটি বিদেশের মাটিতে প্রথম কোনও ওয়ানডে সিরিজ জয় বাংলাদেশের। শুরুতে ব্যাট করে ছয় উইকেটে ৩০১ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেমেছে ছয় উইকেটে ২৮৩ রান করে।
    বাংলাদেশের ছূঁড়ে দেয়া ৩০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ক্রিস গেইল, শাই হোপ ও রোভম্যান পাওয়েল তিনজন হাফসেঞ্চুরি করেন। তাতেও কাজের কাজ হয়নি। এভিন লুইস ও ক্রিস গেইলের ওপেনিং জুটি ভাঙে ৫৩ রানে। এ সময় মাশরাফির বলে লুইস আউট হন ৩৩ বল থেকে মাত্র ১৩ রান করে। এরপর গেইল-হোপের ‍জুটি ভাঙে ১০৫ রানে। এ সময় গেইল ফিরেন রুবেলের বলে। তার আগেই ৬৬ বলে ছয়টি চার ও পাঁচটি ছক্কার মারে করেন গেইল করেন ৭৩ রান।
    এরপর হেটমায়ের-হোপের জুটি দলকে নিয়ে যান ১৭২ রান পর্যন্ত। ৩০ রান করা হেটমায়ের এ সময় মাশরাফির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। এর পরপরই কাইরন পাওয়েল রান আউট হয়ে যান। পরবর্তী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রোভম্যান পাওয়েল ও শাই হোপ দুর্দান্ত ব্যাট করলেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে দলকে নিয়ে যেতে পারেননি। ৯৪ বল থেকে ৫টি চারের মারে ৬৪ রান করেন হোপ। অপরদিকে পাওয়েল ৪১ বল থেকে পাঁচটি চার ও চারটি ছক্কার মারে ৭৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন পাওয়েল। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মাশরাফি দুটি উইকেট নেন। এছাড়া রুবেল, মিরাজ ও মুস্তাফিজ একটি করে উইকেট নেন।
    এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম-মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে শেষ ও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ছয় উইকেটে ৩০১ রান করেছে বাংলাদেশ। সেঞ্চুরি করেছেন তামিম এবং আর ৪৯ বলে ৬৭ রানের হার নামা এক ইনিংস খেলেছেন রিয়াদ।
    তামিম ও বিজয় বাংলাদেশের ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমে সতর্ক সূচনা করেও বেশিদূর যেতে পারেননি। দশম ওভারের তৃতীয় বলে এসে দলীয় ৩৫ রানে আউট হয়ে যান বিজয়। হোল্ডারের বলে আউট হওয়ার আগে ৩১ বল থেকে মাত্র ১০ রান করেছেন তিনি।
    এরপর তামিম-সাকিব জুটি বাঁধেন। দ্বিতীয় উইকেটে এ দুজন যোগ করেন ৮১ রান। সেই সুবাদে মন্থর সূচনা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ২৫ ওভারে ১১ রান করে বড় স্কোরের আভাস দিচ্ছিল। ঠিক এমন সময়ই ২৬তম ওভারে হতাশ করেন সাকিব। দলীয় ১১৬ রানে নার্সের বলে ‍পলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। আউট হওয়ার আগে ৪৪ বল থেকে তিনটি চারের মারে সাকিব করেছেন ৩৭ রান।
    সাকিব আউট হওয়ার পর তামিমের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন মুশফিকুর রহিম। দুজন মিলে তৃতীয় উইকেটে ৩৬ রান যোগ করেন। এরপর ১২ রান করে মুশফিক আউট হয়ে যান। পরে তামিমের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে জুটি বাঁধেন মাহমুদউল্লাহ। তিনজন সঙ্গী একপাশ থেকে বিদায় নিলেও সেঞ্চুরি করেই মাঠ ছেড়েছেন তামিম। আউট হওয়ার আগে ১০৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি।
    ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে করেছিলেন হাফসেঞ্চুরি। এরপর দ্বিতীয়টিতে ১৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় শনিবার তৃতীয় ম্যাচেও সেঞ্চুরি করলেন এই মারকুটে ওপেনার। এদিন ১২৪ বল থেকে সাতটি চার ও দুটি ছক্কার মারে তামিম করেন ১০৩ রান। এটি ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তামিমের ১১তম সেঞ্চুরি। তামিম যখন আউট হন তখন ৩৮.৫ ওভারে বাংলাদেশের দলীয় ২০০ রান।
    এরপর পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি বাঁধেন ও মাশরাফি। পঞ্চম উইকেটে এই দুজন করেছেন আরও ৫৩ রান। দলীয় ২৫৩ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন মাশরাফি। আউট হওয়ার আগে ২৫ বল থেকে চারটি চার ও একটি ছক্কার মারে করেন ৩৬ রান। এরপর মাঠে নেমে ৯ বল থেকে ১২ রান করে আউট হন সাব্বির। সবশেষ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে ৩০১ রান সংগ্রহ করে মাঠ ছাড়েন রিয়াদ। ৪৯ বল থেকে পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কার মারে ৬৭ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন রিয়াদ। আর সৈকত অপরাজিত থাকেন ৫ বল থেকে ১১ রান নিয়ে।
    ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে অ্যাশলে নার্স ও জেসন হোল্ডার দুটি করে উইকেট নেন।
    চলতি সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। এখন বাংলাদেশ দল স্বাগতিকদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে। আগামী ১ থেকে ৬ আগস্টের মধ্যে হবে এসব ম্যাচ।

    যে ঘটনা পৃথিবীতে একবারই ঘটবে

    পৃথিবী সৃষ্টির শুরু হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত কত শত সহস্র ঘটনা ঘটেছে তার হিসাব কালের খাতায় ইতিহাসের পাতায় কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে হাদিস শরিফের ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী এমন একটি ঘটনার কথা জানা যায়, যা সাইয়্যেদেনা ইমাম মাহদি আ.-এর আগমনের শুভ সঙ্কেত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এ পর্যায়ে স্বভাবতই মনের কোণে উঁকি মেরে উঠে একটি প্রশ্ন যে, ঘটনাটি আসলে কি? হাদিস শরিফের আলোকে এর উত্তর হচ্ছে- ঘটনাটি হলো ‘সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণ’। বছরে সাধারণত দু’বার সূর্যগ্রহণ এবং দু’বার চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটে থাকে। কিন্তু এ পর্যন্ত একই মাসে ১৫ দিনের মধ্যে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটেনি। এই ঘটনাটি পৃথিবীতে মাত্র একবারই ঘটবে, দ্বিতীয়বার নয়। এই ঘটনাটি ঘটবে রমজান মাসের এক তারিখ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে। যে বছর রমজান মাসে সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণ হবে, সে বছরই সাইয়্যেদেনা ইমাম মাহদি আ.-এর আবির্ভাব হবে। হাদিস শরিফে এ কথারও উল্লেখ আছে যে, মহাবিশ্বের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এরকম সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা মাত্র একটি বছরই ঘটবে। আসুন, এবার হাদিস শরিফের ভাষ্যে নজর দেয়া যাক। (১) আল বুরহান ফি আলামাতিল মাহদি গ্রন্থের ৩৮ পৃষ্ঠায় আল্লামা মুত্তাকি আল হিন্দি রহ. একটি হাদিস উদ্ধৃত করেছেন। রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে সূর্যগ্রহণের ঘটনা ঘটবে এবং রমজান মসের শেষের দিকে চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটবে।
    (২) আল কাওলুল মুখতাছার গ্রন্থের ৫৩ পৃষ্ঠায় একটি হাদিস উল্লেখ রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘রমজান মাসে দু’টি গ্রহণের ঘটনা অনুষ্ঠিত হবে।’ (৩) ইমামুল আকবার আলী বিন ওমর আল দারাকুতনির সুনানে দারাকুতনিতে একটি হাদিস সঙ্কলিত হয়েছে। মোহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে আল হানাফিয়্যাহ রহ. বলেছেন, সাইয়্যেদেনা ইমাম মাহদি আ.-এর আবির্ভাবের দু’টি নিদর্শন রয়েছে, যা আকাশমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টির পর থেকে কখনো দৃষ্টিগোচর হয়নি। নিদর্শন দু’টি হলো- চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ রমজান মাসেই ঘটবে। (৪) ইমাম রাব্বানি রহ.-এর রাব্বানির পত্রাবলির ৩৮০ নম্বর পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে- যে বছর রমজান মাসের প্রথম দিকে সূর্যগ্রহণ ঘটবে এবং রমজান মাসের ১৪ তারিখে চন্দ্রগ্রহণ ঘটবে। (৫) ইমাম কুরতবি রহ. রচিত কিতাব মুখতাছার তাজকিয়াহ গ্রন্থের ৪৪০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, সাইয়্যেদেনা ইমাম মাহদি আ.-এর আগমনের পূর্বে দু’টি গ্রহণ রমজান মাসেই ঘটবে। (৯) নুয়ায়েম ইবনে হাম্মাদ রহ.-এর রচিত কিতাবুল ফিতান গ্রন্থের সতর্কতামূলক বাণী উল্লেখ করা হয়েছে- রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমরা যখন সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ ঘটনা প্রত্যক্ষ করবে, তখন এক বছরের খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করে রাখবে।
    উপর্যুক্ত আলোচনার নিরিখে জানা গেল যে এমন একটি বছর হবে, যে বছর রমজান মাসে ১৫ দিনের মধ্যে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটবে। সে বছরটা যে কবে হবে, তা পরবর্তী গবেষণায় জানা যাবে’, ওয়াছ ছালাম।

    জাপানে স্কুল বন্ধ, তাপদাহে নিহত ৮০

    জাপানে তাপদাহ চলতে থাকায় স্কুলের গ্রীষ্মকালীন ছুটি নতুন করে বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। চলতি সপ্তাহে স্কুলগুলো খোলা হয়েছিল।
    মঙ্গলবার দেশটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইউশিহিডে ‍সুগা বলেন, ‘তাপদাহ চলছেই, আমাদের শিশুদের রক্ষায় জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন একটি বড় ইস্যু।’
    এদিকে আজও তাপমাত্র ৪০ ডিগ্রির ঘরে ছিল বিভিন্ন শহরে। এতে মৃতের সংখ্যা আরও বেড়ে ৮০ জনে পৌঁছেছে।
    দেশজুড়ে বিরাজমান এই প্রাণঘাতী তাপদাহকে ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ বলে ঘোষণা দিয়েছে আবহাওয়া সংস্থা। খবর বিবিসি’র।
    আবহাওয়া সংস্থার এক মুখপাত্র সতর্ক করে বলেছেন, জাপানের কিছু জায়গায় তাপদাহ নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন পর্যন্ত ‘’হিট স্ট্রোকে’ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২ হাজারেরও বেশি মানুষ।  এদের বেশিরভাগই বৃদ্ধ বয়সের মানুষ।

    ব  য়া  ন : অল্পেতুষ্টির ক্ষেত্র কী?

    মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

    আলহামদু লিল্লাহ, জুমার দিন আমরা জুমার জন্য মসজিদে আসি। সেই উপলক্ষে কিছু দ্বীনী কথা হয়।  দ্বীনী কথা, দ্বীনী আলোচনা শুধু জুমার দিনের বিষয় নয়। যে কোনো দিন, যে কোনো সময় হতে পারে। দিনে একাধিকবারও হতে পারে। কিন্তু আমাদের জীবন অনেক ব্যস্ত। তবে আফসোস, সেই ব্যস্ততার মূল বিষয় দ্বীন-ঈমান হল না। ওই চিন্তাধারা থেকেই মূলত জুমার দিনের এ আলোচনা। যেহেতু জুমার জন্য সকলে আসছেই; সেই উপলক্ষে কিছু দ্বীনী কথা হয়ে যাক। সেজন্য খুতবার আগে স্থানীয় ভাষায় কিছু দ্বীনী কথা হয়। খুতবা তো আরবী ভাষায় হওয়াটা নির্ধারিত। বাংলা এ আলোচনা জুমার নামাযের অংশ নয় এবং জুমার দিনের বিশেষ আমলও নয়। এ আমল যে কোনো দিন হতে পারে, জুমার দিনও হতে পারে। জুমার নামাযের পরেও হতে পারে। আপনাদের মনে থাকবে, যারা প্রথমদিকে এ মসজিদে জুমা পড়েছেন তখন এখানে বয়ান হত জুমার পরে, আগে না। যাই হোক, দ্বীনের কথা যেভাবেই হোক আল্লাহ তাআলার মেহেরবানীতে কিছু না কিছু ফায়েদা হয়েই যায়।

    আমি বিভিন্ন ওযরের কারণে আসতে পারি না। আজকে এসেছি মুরব্বী অনেকদিন থেকে অসুস্থ; ডক্টর আনওয়ারুল করীম সাহেব। তার খেদমতে হাজির হতে পারি না, আপনাদের সাথেও দীর্ঘদিন সাক্ষাৎ হয় না। ভাবলাম যাই, দেখা-সাক্ষাৎ হোক। আল্লাহ কবুল করার মালিক। আল্লাহ্র কাছে মুহাব্বতের অনেক মূল্য, অনেক দাম। আমি আপনাদেরকে মুহাব্বত করি, আপনারা আমাকে মুহাব্বত করেন। এটা শুধু একটা প্রথাগত বিষয় নয়; এই মুহাব্বতটা যদি আল্লাহ্র জন্য হয় তাহলে এটাও একটা নেক আমল, গুরুত্বপূর্ণ নেক আমল।

    যাইহোক, আজ আমি শুধু একটা কথা আলোচনা করব। আল্লাহ আমাকেও উপকৃত করুন আপনাদেরকেও উপকৃত হওয়ার তাওফীক দান করুন। যে বিষয়টি আলোচনা করতে চাচ্ছি তা হল, মুমিনের মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ গুণ ও সিফত থাকা দরকার। সেটি হল ‘অল্পেতুষ্টি’। আরবীতে বলা হয়- قناعة। এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি গুণ। তবে আমাদের জানতে হবে, অল্পেতুষ্টির ক্ষেত্র কী?

    অল্পেতুষ্টি মানে আল্লাহ তাআলা আমাকে যা দিয়েছেন তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা। যা পেলাম, যদ্দুর হয়েছে তাতেই আমি সন্তুষ্ট আলহামদু লিল্লাহ-আল্লাহ্র শোকর। তো এই অল্পতে তুষ্ট থাকা এবং আল্লাহ্র শোকর আদায় করা- এটা গুরুত্বপূর্ণ একটা গুণ। একজন মুমিনের মধ্যে এই গুণটা থাকা দরকার। কিন্তু এই অল্পেতুষ্টির ক্ষেত্রটা কী?

    এটার ক্ষেত্র হল দুনিয়া- জাগতিক বিষয়। জাগতিক যত বিষয় আছে, তাতে ‘কানাআত’ বা অল্পেতুষ্টি বাঞ্ছনীয়। অল্পেতুষ্টির বিপরীত হল, লোভ ও মোহ- বেশি থেকে বেশি উপার্জন করতে হবে, বেশি থেকে বেশি পেতে হবে। আমাকে ধন-সম্পদ বাড়াতেই হবে, আসবাব-পত্র বাড়াতেই থাকতে হবে- এমনটি বাঞ্ছনীয় নয়। যদ্দুর পেয়েছি তাতেই আমি সন্তুষ্ট থাকব।

    এটা হল জাগতিক বিষয়ে। কিন্তু দ্বীন-ঈমানের বিষয়ে, নেক আমলের বিষয়ে এর উল্টাটা। এখানে সামান্য একটু পেয়েই খোশ- হাঁ, আমি অনেক ইবাদত-বন্দেগী করে ফেলেছি, দ্বীন-ঈমানের অনেক মেহনত করে ফেলেছি; আর দরকার নেই, বেশি হয়ে গেছে। নাহ্, এমন নয়; বরং দ্বীন-ঈমানের ক্ষেত্রে, নেক আমলের ক্ষেত্রে, আখেরাতের প্রস্তুতি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করতে হবে। জাগতিক বিষয়ে প্রতিযোগিতা নয়, অল্পেতুষ্টি। আর দ্বীন-ঈমানের বিষয়ে, আখেরাতের প্রস্তুতি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে দরকার হল প্রতিযোগিতা। কত অগ্রসর হতে পারি আমি! ফরয নামাযের বাইরে, সুন্নাতে মুআক্কাদার বাইরে আমি দুই রাকাত নফল পড়ি। আচ্ছা নফল চার রাকাত পড়তে পারি কি না চেষ্টা করি। মাগরিবের পরে দুই রাকাত সুন্নতে মুআক্কাদা তারপরে দুই রাকাত নফল পড়ি; সামনে থেকে চেষ্টা করি চার রাকাত পড়ার। এশার পরে দুই রাকাত সুন্নতে মুআক্কাদা তারপরে বিতিরের নামায; বিতিরের আগে দুই রাকাত নফল বা চার রাকাত পড়া উত্তম এবং বেশ গুরুত্বপূর্ণ নফল নামায। অন্যান্য নফল থেকে এই নফলের অনেক গুরুত্ব। আমরা কিন্তু খেয়াল করি না। এশার পরে দুই রাকাত সুন্নতে মুআক্কাদার পরে আমরা বিতির পড়ে ফেলি। বিতিরের মূল সময় কিন্তু তাহাজ্জুদের পরে। শেষ রাতে যদি আমি জাগতে পারি; নিজের উপর ঐ আস্থা থাকে যে, ইনশাআল্লাহ জাগতে পারব তাহলে তো তাহাজ্জুদ পড়ে- চার রাকাত, আট রাকাত যেই কয় রাকাত তাহাজ্জুদ পড়া যায়, তাহাজ্জুদের পরে তিন রাকাত বিতির পড়ব। কিন্তু যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে এশার পরেই আমি শোয়ার আগে বিতির পড়ে ফেলব। তখনও উত্তম নিয়ম হল, বিতিরের আগে দুই, চার, ছয়  যা পারি নফল পড়ে তারপরে বিতির পড়ব।

    হাদীস শরীফে আছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা মাগরীবের মতো বিতির পড়ো না।’ মাগরিবের আগে তো সুন্নত নেই। মাগরিবের আযান হলে একটু অপেক্ষা করে তারপরেই মাগরিবের ফরয পড়া হয়। ‘বিতির মাগরিবের মতো পড়ো না; لَا تَشَبّهُوا بِصَلَاةِ الْمَغْرِبِ বিতিরকে সালাতুল মাগরিবের সদৃশ করো না।’ সালাতুল মাগরিবের আগে যেমন কোনো নামায পড় না, তেমনি বিতিরের আগেও কোনো নামায পড়লে না, এমন করো না। বিতিরের আগে নফল পড়। দুই রাকাত পড়, তারপর তিন রাকাত তাহলে পাঁচ রাকাত হল। চার রাকাত নফল পড়, তারপর তিন রাকাত তাহলে সাত রাকাত হল- এভাবে। বিতির মানে তো বেজোড়; তিন রাকাত বেজোড়। এই বেজোড়টা যদি আগে কোনো নফল  ছাড়া হয় সেটাকে কোনো কোনো সাহাবী বলেছেন- بتر । একটা হল وِتْرٌ আরেকটা بُتْرٌ একটা শুরুতে ‘ওয়াও’ দিয়ে আরেকটা ‘বা’ দিয়ে। পড়লেন তো ‘বিতির’ হয়ে  গেল ‘বুত্র’। ب ت ر বুত্র মানে- অসম্পূর্ণ।

    عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبْدِ اللهِ، أَنّهُ كَانَ يَكْرَهُ أَنْ تَكُونَ ثَلَاثًا بُتْرًا، وَلَكِنْ خَمْسًا أَوْ سَبْعًا.

    -মারিফাতুস সুনানি ওয়াল আসার, ইমাম বায়হাকী ৪/৭১, বর্ণনা ৫৫০৭

    তিন রাকাত পড়বে? বিতির তো তিন রাকাতই; তুমি এর আগে দুই রাকাত নফল পড়, চার রাকাত নফল পড়। তা না করে শুধু বিতির পড়লে এটা অসম্পূর্ণ। এতে বিতিরের হক আদায় হল না। বিতিরের হক আদায় হবে বিতিরের আগে যদি দুই রাকাত বা চার রাকাত নফল পড়ি। তো আমি প্রথম প্রথম বিতিরের আগে দুই রাকাত পড়ি, কিছুদিন পর চার রাকাত পড়ি- এভাবে এগুতে থাকি।

    আমার কেরাত কোনোরকম শুদ্ধ- ফরয আদায় হয়ে যায়; কিন্তু পুরো শুদ্ধ না। এত মারাত্মক ভুল হয়ত আমার কেরাতে নেই, যে কারণে নামাযই হবে না। এমন ভুল হচ্ছে না, কিন্তু এখনো অনেক ভুল আছে। ভুলে ভুলে তারতম্য আছে না? কিছু ভুল আছে কেরাত পড়ার সময় যদি সে ভুল হয় তাহলে অর্থ এমন বিগড়ায় যে, ঈমানের কথা হয়ে যায় কুফুর, হালালের কথা হয়ে যায় হারাম। নামায হবে? এত মারাত্মক ভুল হয়ত সবার নেই; কিন্তু আমাদের মধ্যে কিছু মানুষের এরকম মারাত্মক ভুল আছে; কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না। কারণ আমি তো নিজের ভুলটা নিজে ধরতে পারব না। আরেকজনের কাছে শোনাতে হবে। যার তিলাওয়াত সহীহ-শুদ্ধ তার কাছে শোনাতে হবে। কিন্তু শুনাই না, নিজে ভাবি যে, আমার তিলাওয়াত ঠিক আছে। হাঁ, যদি মোটামুটি শুদ্ধ হয় তাও চলে। কিন্তু মোটামুটি শুদ্ধের উপর কেন ক্ষান্ত হব? চেষ্টা করব আরো উন্নতি করার।

    তো বলছিলাম, আমরা দ্বীন-ঈমানের বিষয়ে অল্পতেই ক্ষান্ত হয়ে যাই। ব্যস! হয়ে গেছে, আর জরুরত নেই। দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টায় দশবার দরূদ শরীফ পড়ি, আলহামদু লিল্লাহ; সামনে চেষ্টা করি বিশবার পড়ার, ত্রিশবার পড়ার; এই দশবারের উপর ক্ষান্ত না হই।

    এমন কিন্তু আমরা জাগতিক বিষয়ে করি না। হাদীসের শিক্ষা হল- তুমি জাগতিক বিষয়ে অল্পতে তুষ্ট হয়ে আলহামদু লিল্লাহ বল-শোকর আদায় কর; বাকি সময়টা বেশি বেশি দ্বীন-ঈমানের কাজে ব্যয় কর। তারপরও নিষেধ করা হয়নি; ঠিক আছে, জাগতিক ব্যস্ততা বাড়াও। নিষেধ করা হয়নি যে, জাগতিক ব্যস্ততা তোমাকে একেবারে এতটুকুর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে; ছাড় আছে। কিন্তু এই ছাড়ের মানে কি ফরয নামায ছেড়ে দিব, সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দিব, ফরয রোযাতে অবহেলা করব? এই ছাড়ের মানে কি হালাল-হারামের তারতম্য রাখব না? আল্লাহ তো অনেক ছাড় দিয়েছেন। আল্লাহ্র সেই ছাড় গ্রহণ করে আমাকে আল্লাহ্র শোকর আদায় করতে হবে। সেই শোকর কীভাবে? দুনিয়ার ক্ষেত্রে অল্পেতুষ্টির পরে শোকর আর দ্বীন-ঈমানের ক্ষেত্রে শোকর আদায় করে ক্ষান্ত হব না; বরং অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করতে থাকব। আরো অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করতে থাকব। এটা হল হাদীসের শিক্ষা।

    এ বিষয়টি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিখিয়ে দিয়েছেন। এর পদ্ধতিও শিখিয়ে দিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ একটা হাদীস, আপনারা শুনেছেন-

    انْظُرُوا إِلى مَنْ أَسْفَلَ مِنْكُمْ، وَلَا تَنْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَكُمْ، فَهُوَ أَجْدَرُ أَنْ لَا تَزْدَرُوا نِعْمَةَ اللهِ عَلَيْكُمْ.

    তোমাদের চেয়ে যারা গরীব-দুঃখী তাদেরকে দেখো তোমাদের চেয়ে যারা সুখী-সচ্ছল তাদেরকে নয়। এটা হবে তোমাদের জন্য আল্লাহ-প্রদত্ত নিআমতের শোকরগোযারির পক্ষে অধিক সহায়ক ও সম্ভাবনাপূর্ণ। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৯৬৩; জামে তিরমিযী, হাদীস ২৫১৩

    জাগতিক বিষয়ে তোমার চেয়ে তুলনামূলকভাবে যার অবস্থা নি¤œমানের তার দিকে তাকাও আর দ্বীন-ঈমানের বিষয়ে তোমার চেয়ে যার অবস্থা উন্নত তার দিকে তাকাও। জাগতিক বিষয়ে তোমার চেয়ে দুর্বল যে তার দিকে তাকাও, তাহলে আল্লাহ্র শোকর আদায় করতে পারবে- আমার তো যাক তাও একটা ঘর আছে আরেকজনের তো ঘর নেই, কোনোরকম একটা ছাপরা করে আছে। তোমার চাইতে জাগতিক দিক থেকে দুর্বল, বৈষয়িক দিক থেকে দুর্বল তার দিকে তাকাও যে, আল্লাহ তো তার থেকে আমাকে অনেক ভালো রেখেছেন। এরকম তো সবাই খুঁজে পাবে- তার চেয়ে আরো নি¤œমানের অবস্থা, দুর্বল অবস্থা- কে খুঁজে পাবে না বলুন? নিজের থেকে দুর্বলের দিকে তাকাও, তাকে একটু সাহায্য করতে পার কি না। দেখ আর আল্লাহ্র শোকর আদায় কর; আল্লাহ আমাকে ভালো রেখেছেন-

    الحَمْدُ لِلهِ الّذِي عَافَانِي مِمّا ابْتَلاَكَ بِهِ، وَفَضّلَنِي عَلَى كَثِيرٍ مِمّنْ خَلَقَ تَفْضِيلاً.

    সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি তোমাকে যে বিষয়ে আক্রান্ত করেছেন আমাকে তা থেকে নিরাপদ রেখেছেন আর তাঁর সব মাখলুকের উপর আমাকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৩১

    আল্লাহ তোমাকে ভালো রেখেছেন তো আল্লাহ্র শোকর আদায় কর। আর দ্বীন-ঈমানের বিষয়ে যারা তোমার চেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে তাদের দিকে তাকাও- সে তাহাজ্জুদের জন্য নিয়মিত ওঠে, আমি তো মাসে একবার দুইবার জাগি, আর না হয় শুয়েই থাকি; কোনোরকম ফরযে যাই, ফজরের জামাতে শরীক হই। তো এখন আমি ফযরের নামায পড়ি, কিন্তু মসজিদের জামাতে আসি না; আমি খোশ! কেন? বলে, আরে কতজন তো ফজরের নামাযের জন্য ওঠেই না। ঐ আটটা-নয়টার দিকে যখন ওঠে, গোসল করে ফজরের কাযা আদায় করলে করল বা না করেই অফিসে রওয়ানা হয়ে গেল। যার যেই কাজ, কর্মস্থলে চলে গেল, ফযরের নামায বাদ!

    এখন বলে, সে তো ফজরের নামাযই  ছেড়ে দিল। আমি তো পড়ি, সময়মতো সূর্য ওঠার আগে আগে ফযরের নামায পড়ি। এজন্য আমি খোশ্। কেন? আমি অন্যদের দিকে তাকাচ্ছি, ঈমান আমলের দিক থেকে আমার চেয়ে যে দুর্বল অবস্থায় আছে তার দিকে তাকাচ্ছি। ও তো ফজর পড়েই না, আমি পড়ি। সেজন্য আমি খোশ! আমি চিন্তা করি না যে, আরে আমার পাশেই তো মসজিদ, মসজিদে যে দুই কাতার মুসল্লি এরা সবাই তো ফজরের নামায জামাতে পড়ছে, আমি তো জামাতে যাচ্ছি না, মসজিদে যাচ্ছি না, জামাতে পড়ছি না; আমার অবস্থা তো তাদের চেয়ে খারাপ, আমাকে আরো ভালো হতে হবে। আমি তো শুধু মাগরিবের নামায মসজিদে জামাতে পড়ি, বাকি চার ওয়াক্ত পড়ি না। অন্যরা তো দেখি পাঁচ ওয়াক্ত পড়ে, আমি তো তাদের থেকে পেছনে পড়ে আছি; আমাকে অগ্রসর হতে হবে।

    তো দ্বীন-ঈমানের ক্ষেত্রে নিজের চেয়ে ভালো যারা, ওদের দিকে তাকাও, তাহলে তোমার মধ্যে একটু অনুশোচনা আসবে- আহা! আমি তো পেছনে পড়ে আছি, আমাকে অগ্রসর হতে হবে। জাগতিক বিষয়ে তোমার চেয়ে  দুর্বল যারা ওদের দিকে তাকাও- আমাকে তো আল্লাহ ওদের চেয়ে ভালো রেখেছেন, আলহামদু লিল্লাহ-আল্লাহ্র শোকর।

    রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীস শরীফে বলে দিয়েছেন, যদি তুমি জাগতিক বিষয়ে তোমার চেয়ে ভালো যে তার দিকে তাকাও তুমি নিআমতের শোকর আদায় করতে পারবে না। আহা! ওর তো গুলশানে বাড়ী আছে, আমার গুলশানে বাড়ী নেই। ধানম-িতে আছে বহুত বড় সুন্দর বাড়ী, তাও শোকর আসে না; কেন? গুলশানে নেই। এজন্য শোকর আসে না। এটা অন্যায়। আল্লাহ্র শোকর আদায় করা উচিত, যা আল্লাহ দিয়েছেন এটার উপর আল্লাহ্র শোকর আদায় করা। যা নিআমত আমি অর্জন করেছি তা আল্লাহ্র দান। একথা মনে রাখতে হবে পাশাপাশি লক্ষ্য রাখতে হবে কোন্ সূত্রে আমি সম্পদ হাসিল করেছি? অবৈধ পন্থায় যদি কোনো কিছু হাসিল করে থাকি ওটা শুধরিয়ে নেওয়া, পাক করে ফেলা।

    أَرْبَعٌ إِذَا كُنّ فِيكَ فَلَا عَلَيْكَ مَا فَاتَكَ مِنَ الدّنْيَا: حِفْظُ أَمَانَةٍ، وَصِدْقُ حَدِيثٍ، وَحُسْنُ خَلِيقَةٍ، وَعِفّةٌ فِي طُعْمَةٍ.

    রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়াসাল্লাম বলেছেন, চারটা সিফাত, চারটা গুণ যদি তোমার মধ্যে থাকে, তাহলে কী আছে, কী নেই এটা নিয়ে আর পেরেশান হওয়ার দরকার নেই :

    ১. আমানত রক্ষা করা। খিয়ানত না করা।

    ২. সত্য বলা; সত্য কথা বলব, মিথ্যা বলব না।

    ৩. আখলাক সুন্দর, চরিত্র পবিত্র হওয়া এবং ব্যবহার সুন্দর হওয়া।

    ৪. খাবার হালাল হওয়া। রিযিকটা হালাল হওয়া। (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ৬৬৫২; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৪৪৬৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৮৭৬)

    তো চারটা গুণ অর্জন করতে হবে। কী কী?

    ১. حِفْظُ أَمَانَةٍ আমানত রক্ষা করা। যে কোনো ধরনের খেয়ানত, দুর্নীতি, ভেজাল এবং ধোঁকা সবকিছু থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

    ২. صِدْقُ حَدِيثٍ সত্য বলা, মিথ্যা থেকে বেঁচে থাকা।

    ৩. حُسْنُ خَلِيقَةٍ ভালো ব্যবহার এবং দিলের উত্তম অবস্থা। আরবী خليقة বা خلق শব্দের মধ্যে দুইটা দিক আছে :

    ক. দিলের অবস্থা ভালো থাকা; দিলের যেই ব্যাধিগুলো আছে সেগুলো থেকে দিলকে পাক করা। দুনিয়ার মুহাব্বত, দুনিয়ার মোহ, এটা একটা আত্মিক রোগ, আত্মিক ব্যাধি। কিব্র-অহংকার, উজ্ব, উজ্ব মানে নিজের সবকিছু নিজের কাছে ভালো লাগে, অপরের কোনোটাই ভালো লাগে না। নিজেরটাই সবচেয়ে ভালো; আমার কাছে আমার কথা সুন্দর, চাল-চলন সুন্দর, আমার সবকিছু সুন্দর। অপরের কোনোটাই ভালো লাগে না। এটা ব্যাধি, রোগ। এইসমস্ত অন্তরের রোগগুলো থেকে অন্তর পাক-সাফ থাকা এটাকে বলে حُسْنُ خَلِيقَةٍ।

    খ. আর মানুষের সাথে কথা-বার্তা, চাল-চলন, উঠা-বসা এগুলো ভালো করা। সবার সাথে, রিক্সাওয়ালা ভাইয়ের সাথে, বাসের হেলপারের সাথে, তোমার ঘরের যে খাদেম আছে, কাজের লোক আছে তাদের সাথে ভালো ব্যাবহার করা আর নিজের স্ত্রী-সন্তান সবার সাথে তো বটেই। আমরা অনেক সময় করি কী, বাইরের লোকদের সাথে ভালো ব্যবহার করি, আমার বসের সাথে আমি ভালো ব্যবহার করি, কিন্তু আমার অধীনের যারা, তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করি না। বাইরে ভালো ব্যবহার করি, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ভালো ব্যবহার করি, কিন্তু ঘরে গেলে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে সুন্দর করে কথা বলি না, ধমকের সুরে কথা বলি।  এটা অন্যায়।

    তো حُسْنُ خَلِيقَةٍ -এর মধ্যে এই দুইটা বিষয় শামিল।

    ৪. عِفّةٌ فِي طُعْمَةٍ তোমার রিযিক হালাল হতে হবে। বাসস্থান, তোমার খাবার, এই যে লোকমা যাচ্ছে, এই লোকমাটার সাথে ইবাদতের সম্পর্ক আছে। এটা হালাল হতে হবে।

    তো চারটা জিনিস- আমানত রক্ষা করা, খেয়ানত  থেকে বেঁচে থাকা, সত্য বলা, আখলাক ভালো হওয়া, চরিত্র ভালো হওয়া, মানুষের সাথে আচার-ব্যবহার ভালো হওয়া, আর রিযিক হালাল হওয়া, পানাহার-বাসস্থান হালাল হওয়া। এগুলোতে যদি আমার মধ্যে ত্রুটি থাকে, আমার রিযিক যদি সন্দেহযুক্ত হয়ে থাকে, হারামের সাথে মিশে গিয়ে থাকে তাহলে হবে না।

    আর একটা কথা বলেই শেষ করছি, শুরুতে যে বললাম অল্পেতুষ্টির কথা, সে বিষয়ে আরেকটি কথা-

    আল্লাহ হজে¦র তাওফীক দিয়েছেন। এখন মুখে দাড়ি এসে গেছে, নামায ঠিকমতো আদায় করছি, অনেক আমল ঠিক হয়ে গেছে বা তাবলীগের চিল্লায় গেলাম, চিল্লা থেকে আসার পর অনেক কিছু সংশোধন হয়ে গেছে বা কোনো আল্লাহওয়ালার সান্নিধ্যে গেলাম ওখান থেকে আমার মাঝে বড় পরিবর্তন এসে গেছে- এটা খুশির বিষয় না? খুশির বিষয়, আল্লাহ্র শোকর আদায় করার বিষয়। এসকল পরিবর্তন তো আমার মাঝে এসেছে, কিন্তু পিছনের কাফফারা আদায় করি না। পিছনের ভুলগুলোর, পেছনের জিন্দেগীর কাফফারা আদায় করি না। পিছনের জিন্দেগীর কাফফারা কী? কারো হক নষ্ট করেছি, এটা আদায় করি। বোনদের হক দেইনি, এখন বোনদের মিরাছ দিয়ে দেই। অনেক পাওনাদার আছে, ওদের পাওনা আদায় করিনি, ওরা চাইতে চাইতে বিরক্ত হয়ে চুপ করে গেছে। যত দ্রুত সম্ভব আদায় করে দেই।

    তো পিছনের যামানার কাফফারা করা এটা খুব জরুরি। যদি এটা না করি তাহলে এটা তো কঠিন ধরনের অল্পেতুষ্টি হয়ে গেল, (অন্যায়ের উপর তুষ্টি) যেটা একেবারে গুনাহ, পাপ। আল্লাহ আমার মধ্যে পরিবর্তন এনেছেন এই পরিবর্তনের হক আদায় করতে হবে আমাকে। এই পরিবর্তনের হক এবং এর শোকর হল পিছনের জিন্দেগীর যা যা কাফফারা সম্ভব আমার দ্বারা তা আদায় করা।

    কাউকে খামোখা অন্যায়ভাবে থাপ্পর মেরেছি, খুব ধমক দিয়ে কথা বলেছি, গালি দিয়েছি, এখন গিয়ে ক্ষমা চাই। ক্ষমা চাই তার কাছে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে নিজেদের পিছনের জিন্দেগীর কাফফারা আদায় করার তাওফীক নসীব করুন, শুধরাবার তাওফীক নসীব করুন। দুনিয়ার বিষয়ে অল্পেতুষ্টির গুণ দান করুন; আখেরাতের বিষয়ে আরো আগে বাড়ার তাওফীক দিন।

    وآخر دعوانا أن الحمد الله رب العالمين.

    জাপানে অব্যাহত আছে তীব্র দাবদাহ

    হাঁসফাঁস তোলা গরম জাপানের অধিকাংশ এলাকাকে আচ্ছাদিত করে রেখেছে। কিছু কিছু জায়গায় তাপমাত্রা আজ ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছায়।

    আবহাওয়া এজেন্সি বলছে একটি উচ্চ-চাপ ব্যবস্থা পশ্চিম ও পূর্ব জাপানে ফোস্কা পড়া সূর্যতাপ নিয়ে আসে।

    মধ্য জাপানের গিফু জেলার গুজো শহরে দিনের তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৮ ডিগ্রী। এই তাপমাত্রা এখন ১৯৭৮ সালে হিসাব গ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে শহরে দুবার রেকর্ড করা হল।

    নাগোইয়া শহরে দিনের তাপমাত্রা ৩৯.৫ ডিগ্রিতে পৌঁছায়, কিওতো জেলার মাইযুরুতে তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৮ ডিগ্রী, গুম্মা জেলার ইসেযাকিতে ৩৮.৬ ডিগ্রী এবং তত্তোরি শহরে ৩৮.২ ডিগ্রী।

    আজ ছিল জাপানের অংশ বিশেষে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রী ছাড়িয়ে যাওয়া পরপর নবম দিন।

    ২৩৭টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে তাপমাত্রা আজ ৩৫ ডিগ্রীর বেশী রেকর্ড করা হয়, যে হিসাব হচ্ছে এপর্যন্ত সবচেয়ে বড়। টোকিওতে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৬ ডিগ্রী।

    রাত্রিকালীন নিম্ন তাপমাত্রা আজ পশ্চিম ও পূর্ব জাপানে ২৫ ডিগ্রী থাকবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

    দাবদাহ আগামীকালও অব্যাহত থাকবে। নাগোইয়া, গিফু এবং সাইতামা জেলার কুমাগায়ায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রী থাকবে বলে পূর্বাভাষ দেয়া হয়েছে। টোকিওর কেন্দ্রস্থলের সর্বোচ্চ প্রত্যাশিত তাপমাত্রা হচ্ছে ৩৬ ডিগ্রী।

    বড় কেলেঙ্কারির শঙ্কা

    সাড়ে ৮শ কোটি টাকার ডিজিটাল চুরির রেশ কাটতে না কাটতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ভল্টে জমা রাখা স্বর্ণের গরমিল’ নিয়ে দেশব্যাপি তোলপাড়। ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ৪০ দিন গোপন রেখে গভর্নর ড. আতিউর রহমান দিল্লী যান। বিদেশী পত্রিকায় খবর প্রচারের পর শুরু হয় হৈ চৈ। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ব্যাংক চুরির নেপথ্যের কারণ এখনও জানতে পারেনি জাতি। দীর্ঘদিনেও আলোর মুখ দেখেনি ওই সময়ে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট। স্পর্শকাতর ওই ঘটনার কোনো সুরাহা হয়নি। চিহ্নিত হয়েও শাস্তির বাইরে হোতারা। এ ঘটনার পর আরো কয়েকটি ব্যাংকে কেলেঙ্কারীর কারছে ব্যাংকিং অবস্থার ওপর আস্থা হারাচ্ছে গ্রাহক। এরই মধ্যে নতুন করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে সোনা কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি গ্রাহকদের মধ্যে ভীতি-অবিশ্বাস সৃষ্টির পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোও বিব্রত। পরিস্থিতি সামলাতে দফায় দফায় বৈঠক চলছে কর্মকর্তাদের মধ্যে।
    ব্যাংকিং ব্যাবস্থা নিয়ে গবেষণা করেন এমন বিশেষজ্ঞরা বলছেন-আগের ঘটনাগুলোর ‘সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়ায়’ নতুন করে ঘটছে এ ধরনের ঘটনা। তাদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকে স্বর্ণ গচ্ছিত রাখার বিষয়ে খাতা-কলমে এত সব আটঘাট বাঁধা থাকার পরও কেন এর মান ও পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে তা খুবই উদ্বেগজনক। অভিযোগ সত্য হলে এটি হবে বড় ধরনের বিপর্যয়। সে ক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে রক্ষকই ভক্ষক। আর তাদের শেকড় খুব গভীরে। যা এখন জনস্বার্থে বের করে আনতে হবে। না হলে জনমনে সংশয় ও প্রশ্ন আরও বাড়তে থাকবে।
    বিশ্লেষকরা জানান, রিজার্ভ চুরি থেকে ভল্টে রাখা সোনায় গরমিল। খেলাপি ঋণ, তারল্য সংকট ও ডলারের অস্থিরতায় ব্যাংক খাত অস্থির। পাশাপাশি ডেসটিনি, বিসমিল্লাহ, হলমার্ক, বেসিক ব্যাংক, ফারমার্স ব্যাংকসহ নানা কেলেঙ্কারির ঘটনায় ব্যাংকিং খাতের প্রতি মানুষ আস্থার সঙ্কটে। এখনই লাগাম টানতে না পারলে চির ধরা এই আস্থা ফিরিয়ে আনা আরও দুরূহ হয়ে পড়বে। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতে আরও বড় ধরণের কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এসব অনিয়মের মূল কারণ হলো- আগের দোষীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া। বিচারহীনতার একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠছে। অর্থনীতিবীদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে স্বর্ণ কেলেঙ্কারির বিষয়টি তদন্ত করা উচিত।
    এদিকে নতুন করে বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত স্বর্ণের গরমিলে দেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকারের উচ্চপর্যায়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সরকারের নীতিনির্ধারকরাও এ ব্যাপারে কথা বলতে শুরু করেছেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে কথা বলেছেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আদুল মুহিতও দেশে ফিরে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলেছেন। এর আগে গত গত বুধবার অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে থাকা স্বর্ণের মান তৃতীয় কোনো পক্ষ দিয়ে যাচাই করার উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন।
    এ বিষয়ে এম এ মান্নান বলেছেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেমে ত্রুটি আছে। প্রয়োজনে আমরা তদন্ত করব। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে পাওয়া বক্তব্য পৃথকভাবে নোট নিয়েছি। দুটো সংস্থার কারো ভুল থাকলে ধরা হবে। কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে এলেও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সামান্য ফাঁক থাকলেও তা থেকে ভবিষ্যতে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে।’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তাব্যবস্থা সময়োপযোগী কি না তা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী মান্নান।
    স্বর্ণের হিসাব-নিকাশের গরমিলের ঘটনায় এখনও ধোঁয়াশা বিরাজ করছে। ভল্টে স্বর্ণের রক্ষণাবেক্ষণ, গ্রহণ পদ্ধতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মাঝে সন্দেহ বাড়ছে। গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা স্বর্ণকান্ড নিয়ে প্রকৃত পরিস্থিতি উপস্থাপন করতে চাইলেও বিষয়টি নিয়ে আরও অসংলগ্নতা স্পষ্ট হয়। স্বর্ণ হ্যান্ডেলিংয়ের সঙ্গে সরকারের দুই এজেন্সি বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এনবিআর নিশ্চিত করার পর বিষয়টি ব্রিফ করলেও বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়নি। অর্থনীতিবীদ, রাজনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও এসব বিষয়ে গত কয়েকদিন থেকে কথা বলছেন। সবারই অভিমত নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ঘটনার তদন্ত করতে হবে।
    স¤প্রতি শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের তৈরি একটি গোপনীয় তদন্ত রিপোর্টের আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা স্বর্ণের মান নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভল্টে রাখা তিন কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের চাকতি ও আংটি হয়ে গেছে মিশ্র বা সংকর ধাতু। ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ এখন হয়ে গেছে ১৮ ক্যারেট। এর পর থেকে চাঞ্চল্যকর বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। যা এখন টক অব দ্য কান্ট্রিতে রূপ নিয়েছে।
    নিউইয়র্ক থেকে অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বর্ণ নিয়ে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে তা কোনোভাবেই ছোট করে দেখার বিষয় নয়। যাদের কাছে স্বর্ণ রাখা হলো তাদেরই বেশি দায়িত্ব। ভল্টে স্বর্ণ ঢোকানোর আগে তা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া উচিত ছিল। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারে না। অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, আমি দেশে ফিরে বিষয়টি পর্যালোচনা করবো এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
    গত মঙ্গলবার অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করে, শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের প্রতিবেদন সঠিক নয়। অপরদিকে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের প্রতিবেদন সঠিক।
    বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সুর মিলিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে যে স্বর্ণ রাখা হয়েছে সেগুলো ঠিকমতোই আছে। কোনো হেরফের হয়নি। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন, ঘটনা যাই হোক না কেন নিরপেক্ষভাবে স্বর্ণের মান যাচাই করে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
    বাংলাদেশ ব্যাংক ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের এই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ চলমান অবস্থায় তৃতীয় পক্ষ দিয়ে স্বর্ণের মান যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। গত বুধবার অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের বৈঠকের সময় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে স্বর্ণের মান যাচাইয়ে একমত হন তারা।
    এদিকে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি করে নেয় দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে দুই কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলংকা এবং আট কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে। এই ঘটনার প্রায় একমাস পর ফিলিপাইনের একটি পত্রিকার সংবাদের মাধ্যমে বিষয়টি বাংলাদেশ জানতে পারে। এ ঘটনা চেপে রাখতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন ড. আতিউর রহমান। বড় ধরনের রদবদল করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষপর্যায়ে। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা মানি লন্ডারিং আইনে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরির অভিযোগ এনে ১৫ মার্চ (২০১৬) মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর সিআইডি এখনও পর্যন্ত আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি।
    বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেম-এর নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর সেলিম রায়হান বলেন, ব্যাংক খাতে আস্থার সংকট এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন আছে। সব মিলিয়ে আস্থার সংকট আমানতকারীদের ধীরে ধীরে ব্যাংকবিমুখ করছে। ফলে ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সংকট দেখা দিয়েছে। তার মতে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো এখন নিজেদের ইচ্ছেমতো চলছে। ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো নিয়ম-নীতি মানছে না তারা।
    ব্যাংক খাত নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস দেখা দিয়েছে বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। এই সন্দেহ ও অবিশ্বাসকে ব্যাংকের জন্য একটি অশনি সংকেত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
    ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, একদিকে আমানত আসছে না, অন্যদিকে ঋণ ঠিকই বিতরণ করা হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংক খাতে নগদ টাকার সংকট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরের শেষে ব্যাংক খাতে অতিরিক্ত তারল্য (এক্সেস লিক্যুইডিটি) ছিল ৯৭ হাজার ১২২ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের মার্চের শেষে তা কমে দাঁড়ায় ৭৬ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে অতিরিক্ত তারল্য কমেছে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। অথচ গত বছরের শুরুতেও ব্যাংক খাতে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকা অতিরিক্ত তারল্য ছিল। বিনিয়োগ করতে না পারায় ওই সময় ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার কমিয়ে দেয়। তখন অনেকে সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এতে ব্যাংকের আমানত কমতে থাকে। এরই মধ্যে ফারমার্স ব্যাংকের ঘটনায় আস্থা হারান আমানতকারীরা। এমনকি সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকে রাখা আমানত প্রত্যাহার করতে থাকে। ফলে ব্যাংকিং খাতে নগদ টাকার সংকট হতে দেখা যায়। বিনিয়োগযোগ্য তহবিলের টান পড়ায় ব্যাংকগুলো ঋণের সুদহার বাড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি এ সংকট মেটাতে ব্যাংকগুলো আমানত সংগ্রহে মরিয়া হয়ে ওঠে।
    জেনেভাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিব্রিউইএফ) প্রকাশিত ‘গ্লোবাল কম্পিটিভনেস রিপোর্ট ২০১৭-১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিষদ সদস্যদের স্বেচ্ছাচারিতা, অব্যবস্থাপনা আর অদক্ষতার কারণে একধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে ব্যাংকিং খাতে।

    ভারী বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হিরোশিমা জেলা সফর জাপানের প্রধানমন্ত্রীর

    সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিপাতে ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিম জাপানের হিরোশিমা জেলার কিছু এলাকা সফর করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে। এছাড়াও ঐ বর্ষণকে আগামী সপ্তাহে একটি মারাত্মক জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করার ইংগিত দিয়েছেন মি: আবে।

    প্রধানমন্ত্রী আজ হিরোশিমা শহরের এমন একটি স্থান সফর করেন যেখানে একটি বৃহদাকারের ভূমিধ্বস সংঘটিত হয়েছিল। ঐ স্থানে নিহত ব্যক্তিদের জন্য সেখানে তিনি নীরব প্রার্থনা করেন।

    এরপর মি: আবে কুরে শহর সফরে গেলে হিরোশিমার গভর্নর হিদেহিকো ইউযাকি’র সংগে তার সাক্ষাত ঘটে। এসময় মি: ইউযাকি মি: আবে’র কাছে এমন একটি চিঠি হস্তান্তর করেন যাতে বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত খামারের জন্য সরকারি সহায়তার পাশাপাশি ঐ দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া জলাধারগুলো মেরামতের জন্য আর্থিক সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

    মি: আবে সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় পৌরসভা এবং অধিবাসীরা ঐ দুর্যোগের ক্ষেত্রে কিভাবে সাড়া দিয়েছে, সেটি সরকার নানা আঙ্গিক থেকে বিবেচনা করে দেখবে। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পর তার উপর ভিত্তি করেই সরকার এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে।

    তাজিমিতে তাপমাত্রা ৪০.৭

    পশ্চিম ও পূর্ব জাপানে তাপ প্রবাহ বুধবার অব্যাহত থাকার প্রেক্ষাপটে ৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে।

    আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, বিস্তৃত এলাকায় উচ্চচাপ বিরাজ করছে।

    বুধবার গিফু জেলার তাজিমি শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০.৭ ডিগ্রি।

    এরফলে ৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত জাপানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি অতিক্রম করল। ২০১৩ সালে কোচি জেলায় জাপানের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়।

    বুধবার মধ্য জাপানের টয়োটা শহরের তাপমাত্রা ৩৯.৭ ডিগ্রি, এবং নাগোয়া শহরে তা ৩৯.২ ডিগ্রিতে পৌঁছায়।

    হাসপাতাল ছেড়েছে গুহায় আটকেপড়া থাই কিশোররা

    গুহা থেকে উদ্ধার হওয়া থাইল্যান্ডের কিশোর ফুটবলাররা আজ হাসপাতাল ছেড়েছে। হাসপাতাল ছাড়ার পর বুধবার বিকেলে তাদেরকে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে হাজির করা হয়। সেখানে তারা গুহায় আটকে থাকা ও উদ্ধার হওয়া সম্পর্কে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
    রুদ্ধশ্বাস অভিযানে থাম লুয়াং গুহা থেকে উদ্ধার হওয়ার পর থেকে চিয়াং রাই হাসপাতালে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ছিল কিশোর দল।
    সংবাদ সম্মেলনে শেষে শেষে ওয়াইল্ড বোরস দলের এসব ক্ষুদে ফুটবলার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবে। তবে বাড়ি ফেরার পরও দীর্ঘ সময় চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকবে তারা। থাইল্যান্ডের প্রথা অনুযায়ী কিছুদিন বৌদ্ধ ভীক্ষুর জীবনও কাটাতে হতে পারে তাদের।
    থাই সরকারের প্রধান মুখপাত্র সানসার্ন কায়েউকুনার্ড এএফপিকে বলেন, ‘হাসপাতাল ছাড়ার পর গণমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ তাদের স্বাভাবিক জীবনকে যেন ব্যাহত না করে, সেটি নিশ্চিত করতেই আজকের সংবাদ সম্মেলন।’

    গুডবাই লুজনিকি

    Posted by admin on July 17
    Posted in Uncategorized 

    গুডবাই লুজনিকি

    ‘বিদায়’ বলা জীবনের কঠিনতম কাজগুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু বাস্তবতাকে মেনে জীবনে অনেকবারই আমাদের এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। কখনো প্রিয় মানুষকে, আবার কখনো প্রিয় স্থানকে বলতে হয় ‘গুডবাই’। ব্যাপারটা যে কষ্টের সেটা আবারো টের পেলাম বিশ্বকাপের শেষ মুহূর্তে এসে।
    অনেকটা অল্প দেখাতেই প্রেমে পড়ার মত ব্যাপার। এতটুকু সময়েই প্রেমে পড়ে যেতে হলো রাশিয়ার। এখানকার মানুষ, নয়নাভিরাম সব জায়গা, সব সবকিছুই যেন অমোঘ এক বাধনে বেধে ফেলেছে। যা ছেড়ে যাওয়া কষ্টের। মস্কো ছেড়ে যাওয়ার কথা মনে হতেই তাই একবুক হাহাকার নিজেকে গ্রাস করল। সেটাকে আরো উস্কে দিল বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে সেচ্ছাসেবকদের বিশাল গ্লভসে লেখা ‘গুডবাই লুজনিকি’ সম্ভাষণে।
    সেন্ট পিটার্সবার্গ, কালিনিনগ্রাদ, মস্কো, লুজনিকি,সামারা, সোচি, কাজান, নিজনি নভোগরোদ, রস্তভ-অন-ডন, ভলগোগ্রাদ, সারানাস্ক এবং একাতারিনবার্গ। বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর আয়োজক প্রতিটা শহরই কি সুন্দর, নয়নাভিরাম। চোখ ধাধানো সব সুযোগ সুবিধা, ঝকঝকে রাস্তা ঘাট, ট্রেন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, সবকিছুই ছিল অবাক করার মত। এখানকার পুলিশ বা জনগন ইংলিশ বোঝে না ঠিকই, কিন্তু আপনাকে সহযোগিতা করার, গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার প্রচেষ্টায় কমতি নেই তারদের মধ্যে।
    এখানকারা সেচ্ছাসেবকরাও ছিল অসাধারন। অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েগুলোর মুখে সবসময় হাসি লেগেই ছিল। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটা মানুষই স্ব স্ব অবস্থানে থেকে সহায়তা করেছেন বিশ্বকাপের আয়োজনকে সফল করতে। তার ফলও পেয়েছে রাশিয়া। যে কারণে বিশ্ববাসীও মেনে নিয়েছে যে, এযাবৎকালের সেরা বিশ্বকাপ আয়োজন ছিল এটিই।
    ফাইনাল ম্যাচের পর লুজনিকি স্টেডিয়ামের বাইরে ফরাসিদের উদযাপনে বাড়াবাড়ি নজরে পড়ল না। আসলে ফরাসি সমর্থকদের উপস্থিতিই ছিল কম। এর প্রধাণ কারণ স্বাগতিক রাশিয়া তো বটেই অন্যান্য দেশের সমর্থকরাও ফাইনালে সমর্থন করেছে ক্রোয়েশিয়াকে। ম্যাচ শেষে বৃষ্টি হওয়াকে রাশিয়ানরা দেখছে আশির্বাদ হিসেবে। তাদের মতে, সফল বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে রাশিয়া। এজন্যই ম্যাচ শেষে সৃষ্টিকর্তা খুশি হয়ে বৃষ্টি বর্ষণ করেছে। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর থেকেই স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে শুরু করে প্রতিটা ট্রেন-বাস স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা সেচ্ছাসেবকের হাতে ছিল ‘গুডবাই লুজনিকি’ লেখা বিশাল বড় গ্লাভস।
    গতকাল থেকেই রাশিয়া ছাড়তে শুরু করেছে বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রায় ২৫ লক্ষ ফুটবল অনুরাগী। যে কারণে প্রতিটা ট্রেন স্টেশন থেকে শুরু করে বিমানবন্দরে প্রচুর ভীড়। এর আগে এত মানুষ এক সাথে আসেনি রাশিয়ায়। অধিকাংশেরই এটি ছিল প্রথম রাশিয়া ভ্রমণ। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশ সম্পর্কে এতদিন তাদের যে ধারণা ছিল তা পুরোপুরি পাল্টে গেছে এখানে এসে। এ বিষয়ে কথা হলো এক ইংলিশ সাংবাদিকের সঙ্গে। নাম টনি। বয়স কতই বা, আনুমানিক ৪৫ হবে। জানালেন রাশিয়া সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতার কথা, ‘এবারই প্রথম রাশিয়া এসেছি আমি। দেশটি সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল নেতিবাচক। কিন্তু এখানে এসে আমার সেই ধারণা পাল্টে গেছে। সত্যিই আমি এখানে এসে অবিভূত হয়েছি। অনেক ক্ষেত্রেই রাশিয়া ইউরোপের অন্য দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে।’
    টনির মত একই অভিমত অন্যদেরও। আসলে এই রাশিয়া এমন যা চর্মচক্ষে না দেখলে অবিশ্বাস্যই মনে হবে। বিশ্বকাপের আবেশ নিয়ে দেশে ফিরলেও রাশিয়ার প্রতি যে প্রেমের আবহ তৈরি হয়েছে তা সত্যিই আমোচনীয়।

    অব্যাহত তাপ প্রবাহে হিট স্ট্রোকে’র ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে

    জাপানের পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দারা, তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যাওয়ায়, গরমে দগ্ধ হচ্ছেন। এই দাবদাহ চলতি সপ্তাহ জুড়ে অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাষ করা হয়েছে। গরমে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকবে।

    আবহাওয়া এজেন্সি জানায়, জাপানের বায়ুমন্ডলে শক্তিশালী উচ্চ চাপ গড়ে ওঠায়, দেশের বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে প্রচন্ড গরম পড়েছে।

    গিফু জেলার ইবিগাওয়া শহরে সোমবার দিনের বেলার তাপমাত্রা চলতি বছরের জাতীয় রেকর্ড ৩৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। মধ্য টোকিওতে তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

    সম্প্রতি দেশের পশ্চিমাঞ্চল যেখানে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা দেখা দিয়েছে, সেখানে এবং আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়।

    আবহাওয়া কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে এই তাপ প্রবাহ প্রায় এক সপ্তাহ অব্যাহত থাকবে। তাঁরা হিট স্ট্রোকের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক ক’রে দিয়েছেন।

    এই ঝুঁকি বিশেষ ক’রেই বেশি পশ্চিম জাপানের বন্যা দুর্গত এলাকায়, যেখানে উদ্বাস্তুরা অভ্যস্ত নন এমন পরিবেশে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। কর্তৃপক্ষ উদ্বাস্তু, স্বেচ্ছাসেবী ও পুনরুদ্ধারের কাজে নিয়োজিত কর্মীদের, সাধারণ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছাড়াও, বার বার গিয়ে ছাদের তলায় ছায়ায় বিশ্রাম নিতে পরামর্শ দিয়েছেন।