জাপানে বিদেশি কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো কি সহজ হবে?
এবার সংবাদ বিশ্লেষণ। জুন মাসের মাঝামাঝি জাপানের মন্ত্রিসভা চলতি বছরের মৌলিক অর্থনীতি ও বাজেট বিষয়ক নীতিমালা অনুমোদন করেছে। আরও বেশি সংখ্যক বিদেশি কর্মী গ্রহণ করার লক্ষ্যে এই নীতিমালায় জাপানে বসবাস সংক্রান্ত একটি নতুন নীতি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। জাপানে বিদেশি কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো’র প্রচেষ্টার সাথে যুক্ত কিছু সমস্যাদি’র ওপর আলোকপাত করছেন এন এইচ কে’র ঊর্ধ্বতন ভাষ্যকার রেইকো সাকুরাই।
“এতদিন পর্যন্ত জাপানের নীতি ছিল বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের বেশি ক’রে গ্রহণ করা । তবে সেই ব্যবস্থায় আর কাজ হচ্ছে না। এখন জাপান সরকার, দেশে বিদেশি কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে। নতুন শর্তে বলা হয়েছে, বিদেশি কর্মীরা যদি অনায়াসে দৈনন্দিন জীবনের কাজ চালিয়ে নেওয়ার মত যথেষ্ট জাপানি ভাষা আয়ত্ত করতে পারেন এবং বিভিন্ন শিল্প জোট দ্বারা নির্ধারিত জাপানি ভাষার দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেন, সেক্ষেত্রে তাদের সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত জাপানে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে। যারা বর্তমানের সরকার-পৃষ্টপোষিত ইনটার্নশিপ প্রোগ্রাম সফলভাবে শেষ করতে পারবেন, তারা জাপানে থাকার মেয়াদ সর্বোচ্চ আরও ৫ বছর বাড়িয়ে নেওয়ার অনুমতি পাবেন।
সরকার বলছে, এই কর্মীদের স্থায়ীভাবে জাপানে বসবাসের অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনা তাদের নেই। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, এই কর্মীদের পরিবার নিয়ে আসার অনুমতি দেওয়া হবে না। পাশাপাশি শিল্পখাতকে এর বাইরে রাখা হচ্ছে, যেখানে নতুন ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে। সরকার কৃষি, নার্সিং পরিষেবা, নির্মাণ খাত, হোটেল শিল্প এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্প যেখানে শ্রমিক ঘাটতি বিশেষ ভাবেই তীব্র, সেখানে কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
কথা হচ্ছে, নতুন ব্যবস্থার অধীনে অ-জাপানি কর্মীরা জাপানে এসে কাজ করতে আগ্রহী হবেন কি না। এ ব্যাপারে জাপান তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন।
এর কারণ, বিগত কয়েক বছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া’য় কর্মীদের ন্যুনতম মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব দেশে কর্মীদের কর্ম পরিস্থিতিরও উন্নতি ঘটেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া, বিদেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যক কর্মী নেওয়ার জন্য ২০০৪ সালে এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম প্রবর্তন করে। চীনেও বয়োবৃদ্ধের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত। নার্সিং পরিষেবা ও কৃষি’র মত খাতে কর্মী ঘাটতি’র সমস্যা কেবল জাপানেরই রয়েছে, তা নয়।
দক্ষ কর্মীশক্তি পাওয়ার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে ব’লেই মনে হয়। বিভিন্ন দেশ যেমন কর্মী গ্রহণের ব্যাপারে নিজস্ব শর্ত নির্ধারণ করছে, তেমনি কর্মীদেরও পছন্দ মত কর্মস্থল বেছে নেওয়ার অধিকার আছে। চাকরির সন্ধানরত বিদেশি কর্মীরা জাপান’কে কাজ করার জন্য আকর্ষণীয় দেশ ব’লে মনে করবেন কি না, তারা জাপানে এসে কাজ করতে আগ্রহী হবেন কি না, সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন”।
সংবাদ বিশ্লেষণ শেষ হোল । জাপানে বিদেশি কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো’র প্রচেষ্টার সাথে যুক্ত কিছু সমস্যাদি’র ওপর আলোকপাত করলেন এন এইচ কে’র ঊর্ধ্বতন ভাষ্যকার রেইকো সাকুরাই।