• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • মাউন্ট ৎসুকুবা: রহস্য ঘেরা দুটি শৃঙ্গ

    রাজধানী টোকিও থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ইবারাকি প্রিফেকচারের মাউন্ট ৎসুকুবা। আদিকাল থেকেই জাপানিরা পর্বতটির সাথে পরিচিত ছিল কেননা পাহাড়টির সাথে মাউন্ট ফুজি’র চেহারায় বেশ মিল রয়েছে। প্রতি বছর ২০ লক্ষ মানুষ বেড়াতে আসেন। সেই পুরনো কাল থেকেই বিশ্বাস করা হতো পাহাড়টিতে রহস্যময়ী এক শক্তি বাস করে।

    মাউন্ট ৎসুকুবা’র দু’টি চূড়া। জাপানিদের বিশ্বাস পূর্ব দিকের চূড়াটি দেবী এবং পশ্চিমেরটি দেবতা। সেখানে রয়েছে একটি পাথর যেটিকে বলা হয় “বুজো-গা-ইশি” যা স্বামী-স্ত্রী’র প্রতীক। ৭ম ও ৮ম শতাব্দীতে তরুণ তরুনীরা এখানে এসে ভোজ করতো, তাদের উদ্দেশ্য ছিলো বিয়ের সঙ্গী খোঁজা। আজকের তরুনরা পাহাড়ে আসে প্রাচীন রোমান্সের শক্তি গ্রহণ করতে। তারা জীবন সঙ্গী খুঁজতে “একাকী মানুষদের পর্বতারোহন” এ অংশ নেন, তাদের প্রত্যাশা থাকে এই পর্বতারোহনের ফলে তারা যেনো মিষ্টি দম্পতিতে পরিণত হতে পারবেন।

    এখানে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে ঐতিহ্যবাহী মলম বিক্রির নাট্যাংশ যাকে বলা হয় “গামা নো আবুরা” কিম্বা “ব্যাঙের তেল”। এটি এক ধরনের বিজ্ঞাপন যা ব্যাঙ এর চর্বিযুক্ত ঘাম থেকে তৈরী হয়ে থাকে, এই ব্যাঙ শুধুমাত্র ৎসুকুবা’তেই পাওয়া যায়। এর রয়েছে বিশেষ দক্ষতা, বলা হয় যে কোনো ক্ষত স্থানে লাগালে তা তাৎক্ষনিক ভাবে সরিয়ে তোলে। প্রায় ২০০ বছর আগে থেকেই এই চিকিৎসা চলছে।

    শরৎকাল ম্যান্ডারিন কমলার ফসল কাটার সময় মাউন্ট ৎসুকুবা হয়ে ওঠে অনন্য। এটি হলো “ফুকুরে মিকান” ম্যান্ডারিন যার রয়েছে তীব্র অম্লতা এবং ঘ্রাণ। স্থানীয় মসলা “শিচিমি” তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হয়। লাল মরিক, কল এবং সাদা তিল শৈবাল এবং ম্যান্ডারিন চূর্ণ সব মিলে প্রস্তুত হলো “শিমিজি”, একটি জাদুর মসলা যা যে কোনো খাবারকে সুস্বাদু করে তোলে।

    স্বাধীনতার মাস : ইয়া আল্লাহ! এই জাতিকে সর্বকল্যাণে ভূষিত করুন

    আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা। তিনি পরম দয়ালু অতি মেহেরবান। তাঁর দয়া ও করুণার প্রকাশ আমাদের সত্তায়, চারপাশে। জাতীয় কবির ভাষায় : কার করুণায় পৃথিবীতে এত ফসল ও ফুল হাসে/ বর্ষার মেঘে নদ-নদী-স্রাতে কার কৃপা নেমে আসে/ কার শক্তিতে জ্ঞান পায় এত পায় মান-সম্মান/ এ জীবন পেল কোথা, হতে তার পেল না আজিও জ্ঞান।’

    তবে এ তাঁর করুণার একটি দিক। পৃথিবীর জীবনে বেঁচে থাকার সকল উপায় ও ব্যবস্থা তাঁরই দান। তাঁর করুণার আরেক দিক, আখিরাতের জীবনের মুক্তি ও শান্তির ব্যবস্থা। এ উদ্দেশ্যেই তিনি নাযিল করেছেন তাঁর পাক কালাম এবং যুগে যুগে প্রেরণ করেছেন অনেক নবী ও রাসূল। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা লাভ করেছি শেষ আসমানী কিতাব- আলকুরআনুল কারীম এবং শেষ নবী- হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে।

    নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতকে আখিরাতের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন এবং নাজাতের পথ দেখিয়েছেন। শুধু পথই দেখাননি, চূড়ান্ত বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতার সাথে উম্মতকে সেই পথে পরিচালিত ও প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। তাঁর আগেও যুগে যুগে আল্লাহ তাআলা মানবজাতির হেদায়েতের জন্য অনেক নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন। তাঁদের সবার সাধারণ বৈশিষ্ট্য ছিল, বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতা। প্রত্যেক নবী তাঁর কওমকে বিভিন্ন ভাষায় একথাই বলেছেন إني لكم ناصح امين ‘আমি তোমাদের কল্যাণকামী ও বিশ্বস্ত।’ কুরআন মাজীদে নবীগণের দাওয়াতের যে বিবরণ এসেছে তাতে এ বিষয়টি বারবার উল্লেখিত হয়েছে। পৃথিবীতে বহু দাবি ও আহ্বান উচ্চারিত হয় কিন্তু এক কঠিন বাস্তবতা এই যে, দাবি মাত্রই সত্য নয়, আহ্বান মাত্রই কল্যাণের আহ্বান নয়। তাহলে সত্য ও মিথ্যার মাঝে এবং সততা ও কপটতার মাঝে পার্থক্যের উপায় কী? এর বড় উপায় হচ্ছে আহ্বানকারীর বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতা। এ এক সহজ সত্য। তবে এই সত্য কথাটি নীতিগতভাবে বোঝা যত সহজ প্রায়োগিক ক্ষেত্রে বোঝা তত সহজ নয়। একারণে নবী-রাসূল আলাইহিমুস সালামের মতো শ্রেষ্ঠ মানবগণকেও অবিশ্বস্ততার অপবাদ শুনতে হয়েছে। আর এভাবে কওমের একটি শ্রেণি ভ্রান্তি ও মত্ততার মধ্যেই জীবন কাটিয়েছে এবং পরিণামে ধ্বংস হয়েছে। পক্ষান্তরে যেসব সৌভাগ্যবান কওমের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামী মানুষটিকে চিনতে পেরেছেন এবং তাঁর আনুগত্য করেছেন। পরিণামে তারা সফল হয়েছেন ও নাজাত পেয়েছেন। একারণে ছোট-বড় সফলতা-ব্যর্থতা এবং ব্যক্তি ও সমাজের মুক্তি ও সাফল্য নির্ভর করে বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামীকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারার উপরে। যে করুণাময় সত্তা মানবের পার্থিব জীবনের প্রয়োজন পূরণের ধারা সৃষ্টির সূচনা থেকে অব্যাহত রেখেছেন তিনিই মানবের নাজাত ও মুক্তি এবং শান্তি ও সফলতার জন্য সঠিক পথনির্দেশ ও পথনির্দেশকের ধারাও জারি রেখেছেন। শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে যে পূর্ণাঙ্গ ও শাশ্বত দ্বীন তিনি মানবজাতিকে দান করেছেন তাই কিয়ামত পর্যন্ত মানুষের জন্য সঠিক পথনির্দেশ। আর এই দ্বীনের সত্যিকারের ধারক-বাহক -খোলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবা-তাবেয়ীন, আইম্মায়ে মুজতাহিদীন হচ্ছেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওয়ারিছ এবং তাঁর পর উম্মাহর সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামী শ্রেণি। দেশে দেশে কর্মে ও বিশ্বাসে এবং আদর্শের প্রচারে এঁদের যারা উত্তরসূরী তারাই স্ব স্ব জনদের সর্বাধিক বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামী মানুষ। আর এই কল্যাণকামিতা বিশেষ কোনো শ্রেণির জন্য নয় সকল শ্রেণি-পেশার ও সর্বস্তরের মানুষের জন্য। একটি হাদীসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইরশাদ الدين النصيحة ‘দ্বীন হচ্ছে কল্যাণকামিতা’। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন- لمن يا رسول الله ‘আল্লাহ রাসূল! কার জন্য কল্যাণকামিতা? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, لله ولرسوله ولائمة المسلمين وعامتهم ‘আল্লাহর জন্য, তাঁর রাসূলের জন্য, মুসলমানদের ইমামগণের জন্য এবং সাধারণ মুসলমানদের জন্য।’ সুতরাং ইলমে ওহীর যারা ধারক ও বাহক তাদেরও পরিচয়, বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতা। তাঁরা ওফাদার আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসূলের প্রতি, মুসলমানের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের প্রতি এবং সর্বস্তরের মুসলমানগণের প্রতি। এই ওফাদারিরই দাবি, সত্যকে সত্য বলা মিথ্যাকে মিথ্যা বলা। ব্যক্তি ও সমাজের জন্যে যা কল্যাণকর তাকে কল্যাণকর বলা আর ব্যক্তি ও সমাজের জন্যে যা অকল্যাণকর তাকে অকল্যাণকর বলা।

    ঐ কওমই সফলতার দিকে এগিয়ে যায় যে কওমের দা‘য়ীগণ নিজেদের বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতার রক্ষায় সক্ষম থাকেন আর মাদ‘উ তথা জনসাধারণ তাদের প্রকৃত কল্যাণকামীদের চিনে তাদের পথনির্দেশ গ্রহণ করতে পারে। আল্লাহ তাআলা এই দেশ ও জাতিকে এই মহাসৌভাগ্য দান করুন এবং সকল কল্যাণে ভূষিত করুন। আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।

    উত্তর কোরিয়ার নতুন করে ক্ষেপনাস্ত্র উৎপণের আশংকায় সতর্কাবস্থায় এসডিএফ

    জাপানের সেলফ ডিফেন্স ফোর্সের সদস্যরা উড়ে আসা যে কোনো দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিহত করতে নিজেদেরকে প্রস্তুত করে রেখেছেন।

    শুক্রবার উত্তর কোরিয়া দুটি দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করে। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপের পর পুনরায় শুক্রবার তারা দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করে।

    ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য প্যাক-৩ ক্ষেপনাস্ত্র বিধ্বংসী রকেট উত্ক্ষেপণকারী যান শুক্রবার রাতে টোকিওর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাঙ্গনে পৌঁছায়। মন্ত্রণালয়ের আঙ্গিনায় এগুলোকে স্থাপন করা হবে।

    অত্যাধুনিক রাডার দিয়ে সজ্জিত করা এইজিস ডেস্ট্রয়ার জাপানের সমুদ্রসীমায় মোতায়েন করা হচ্ছে।

    স্বচ্ছতা : মুমিনের বড় গুণ

    মাওলানা মুহাম্মাদ ইমদাদুল হক

    একটি প্রয়োজনে এক ভাইয়ের কাছে গিয়েছিলাম। সেখানে আরো দু’জন উপস্থিত ছিল। এক ব্যক্তি সম্পর্কে আলোচনা চলছিল- ‘আরে জানো না, তার একটু প্রশংসা করে দিলেই হয়। একদিন ভরা মজলিসে আমি তার খুব প্রশংসা করে দেই, এরপর থেকে আমার সাথে খুব ভাব। আর কোনো কঠোরতা করে না যা অন্যান্য অধীনস্তদের সাথে করে।’

    একজন আরেকজনের প্রশংসা করলে ঐ ব্যক্তি প্রশংসাকারীকে আন্তরিক মনে করবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ এটা তার প্রতি আন্তরিকতা দেখানো এবং তার সাথে নিজের একাত্মতা প্রদর্শন করা। তবে এটাও সত্য যে,প্রশংসা কামনা করা, প্রার্থনা করা, অপেক্ষায় থাকা, ঘটা করে প্রশংসা করানো ইত্যাদি গুনাহ তো বটেই, সাথে সাথে খুবই হীনতা ও নিন্দনীয় কাজ। আর প্রশংসা শুনে ন্যায়-নীতি, সত্য-মিথ্যা ও বাস্তবতার জ্ঞান বিবেচনা হারিয়ে ফেলা  তো আরো ভয়াবহ। এটি আজকের প্রসঙ্গ নয়, আজকের প্রসঙ্গ হলো পূর্বেরটি।

    একটি মানুষের প্রশংসা করে তাকে খুশী করে দিলাম। অথচ আমার অন্তরে তার প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা নেই। একটি মানুষকে সহজ সরল পেয়ে তাকে কাবু করে ফেললাম। মানলাম সেও প্রশংসা কামনা করে, প্রশংসা শুনে খুশী হয়ে যায়, কিন্তু আমার মনে তো তার প্রতি শ্রদ্ধা নেই। তার পরও মুখে মুখে তার প্রশংসা করলাম। এটা তো অবশ্যই অস্বচ্ছতা, কুটিলতা, এমনকি প্রতারণা। এটা মুসলিম বৈশিষ্ট্যের পরিপন্থী।

    সরাসরি মিথ্যা বলা, ওজনে কম দেওয়া, অন্যকে ঠকানো এগুলোকে সবাই প্রতারণা মনে করি, কিন্তু কতক বিষয় এমন আছে যেগুলোকে সাধারণত অস্বচ্ছতা মনে করা হয় না, অথচ তা মারাত্মক অস্বচ্ছতা।

    একজনের নিকটস্থ হওয়ার জন্য তার প্রশংসা করে দেয়া, তার থেকে কোনো কিছু উদ্ধারের জন্য লৌকিক তারিফ করা, দেখা হলেই বলা আমরা আপনার কথা বলতেই থাকি। আমি তার প্রশংসা করলে সেও আমার প্রশংসা করবে এ মানসে তার স্তুতি গাওয়া, কর্তা বা বসের তোষামদ করা, কোনো পদ পাওয়ার জন্য অথবা অন্যান্য সহকর্মিদের থেকে বেশী নৈকট্যশীল হওয়ার জন্য ভনিতা করে কর্তা ও বসের তারীফ ও সেবা করা,ভালোবাসা দেখানো, তাদেরকে হাদিয়া, গিফট দেওয়া- এসব আজ ‘শিল্প’ বা ‘দর্শনে’ পরিণত হয়েছে।

    হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর নিকট কিছু লোক এসে বললেন, আমরা আমীরদের দরবারে যাই, তখন তাদের সামনে (প্রশংসামূলক) এমন কিছু বলি, যা বাইরে বলি না। এ কথা শুনে হযরত ইবনে উমর রা. বললেন, كنا نعدها نفاقا   আমরা এগুলোকে ‘নিফাক’ (কপটতা, মুনাফেকী) গণ্য করতাম। -সহীহ বুখারী,হাদীস ৭১৭৮

    মুসলমানদের আমীরদের কল্যাণকামিতার বিষয়ে যে হাদীস এসেছে তার ব্যাখ্যায় ইমাম নববী বলেন,

    وأن لايغروا بالثناء الكاذب عليهم তাদেরকে যেন মিথ্যা প্রশংসা শুনিয়ে ধোঁকা না দেয়। এটাও কল্যাণকামনার অংশ।

    কোনো ব্যক্তি আরেক ব্যক্তি থেকে এমন ভাব-সাব নিয়ে হাদীস বর্ণনা করছে যেন সে সরাসরি তার কাছ থেকে শুনেছে। আসলে সরাসরি শুনেনি। মুহাদ্দিসীনের পরিভাষায় একে তাদলীস বলা হয়। সেটিও এ অস্বচ্ছতার কারণে নিন্দনীয়। কবি সুন্দর বলেছেন-

    دلس للناس حديثه + والله لا يقبل تدليساً

    ‘ম্যানেজ’ করে চলতে পারা, ‘ভাজ’ দিয়ে থাকতে পারা, ন্যায়নীতি ও আদর্শ বাদ দিয়ে কর্তা ও বসের মনোভাব উদ্ধার করে চলা, নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য অপরকে কৌশলে প্রতারণায় ফেলা ইত্যাদি সব কিছু আজ ‘বুদ্ধিমত্তা’, ‘দুরদর্শিতা’ ও ‘বিচক্ষণতা’য় পরিণত হয়েছে।

    বাংলা অভিধানে ‘চালাকি’ ‘চতুরতা’ ‘কুটিলতা’ ইত্যাদি শব্দ রয়েছে। জানি না এসবের জন্য কোন প্রকারের শব্দ প্রযোজ্য।

    مَلْعُونٌ مَنْ ضَارَّ مُؤْمِنًا أَوْ مَكَرَ بِهِ.

    ধীকৃত সে, যে কোনো মুমিনের ক্ষতি করে অথবা তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৪০

    আরেক হাদীসে আছে,

    إن أخوف ما أخاف على أمتي كل منافق عليم اللسان.

    উম্মতের ব্যাপারে আমার যে বিষয়গুলোকে ভয় হয় তন্মধ্যে ভয়ংকরতম হচ্ছে বাকপটু মুনাফিক। -মুসনাদে আহমদ, ১/২২

    সাহাবী হযরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

    يطبع المؤمن على الخلال كلها إلا الخيانة والكذب.

    স্বভাবগতভাবে একজন মুমিন -এর মাঝে (ভালো-মন্দ) সকল চরিত্রই থাকতে পারে, দুটি চরিত্র ছাড়া এক. খিয়ানত, দুই. মিথ্যা। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২২১৭০; মুয়াত্তা মালেক, শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৪৪৭১

    খিয়ানত ও মিথ্যার মূল অস্বচ্ছতা, এটি ঈমানের সাথে মেলে না।

    ঈমান ও নিফাকের পার্থক্যই এখানে যে, মুমিন স্বচ্ছ, মুনাফিক অস্বচ্ছ! তাবুক যুদ্ধে মুনাফিকদের অস্বচ্ছতা এবং ঐসব সাহাবী যারা যুদ্ধে যেতে পারেননি তাদের অবস্থার বিবরণ দিয়ে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের সম্বোধন করে বলেন,

    يا ايها الذين آمنوا اتقوا الله وكونوا مع الصادقين.

    “হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক।” ‘সাদেকীন’ এখানে‘মুনাফিকীন’-এর বিপরীতে এসেছে ‘কাফিরীন’-এর বিপরীতে নয়। কারণ আয়াতের উদ্দেশ্য মুনাফিকদের সঙ্গ ত্যাগ করার নির্দেশ দান। সাদেকীন দ্বারা উদ্দেশ্য এখানে মুমিন। অর্থাৎ তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং মুমিনদের সাথে থাক। তাদের সাথে জিহাদে শরীক হও, মুনাফিকদের সাথে থেকো না এবং জিহাদ থেকে লুকিয়ে থেকো না।

    মুনাফিক অস্বচ্ছ,

    يرضونكم بأفواههم وتأبى قلوبهم

    [তারা মুখে তোমাদের সন্তুষ্ট রাখে, কিন্তু তাদের হৃদয় তা অস্বীকার করে। -সূরা তাওবা (১০) : ৮]

    মুমিন স্বচ্ছ তাই তারা সত্যবাদী। মুমিনরাই যে সত্যবাদী আল্লাহ তাআলা তা অন্য আয়াতে এভাবে বলেছেন,

    اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ ثُمَّ لَمْ یَرْتَابُوْا وَ جٰهَدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ؕ اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الصّٰدِقُوْن.

    মুমিন তো তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে অতপর তাতে কোনো সন্দেহে পতিত হয়নি এবং তাদের জানমাল দিয়ে আল্লাহর পধে জিহাদ করেছে। তারাই তো সত্যবাদী। -সূরা হুজুরাত (৪৯) : ১৫

    মুমিন এজন্যই সত্যবাদী যে, সে যা বলে তার অন্তরেও তা থাকে এবং কাজে কর্মে হুবহু সেটাই বাস্তবায়ন করে দেখায়। এতে কোনো লুকোচুরি বা অস্বচ্ছতা থাকে না।

    হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে

    التَّاجِرُ الصَّدُوقُ الْأَمِينُ مَعَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ

    সত্যবাদী ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী সিদ্দীক ও শহীদগণের সাথে থাকবে।

    সত্যবাদী ব্যবসায়ী কারা তা হাদীসে এভাবে বর্ণিত হয়েছে –

    فَإِنْ صَدَقَا وَبَيَّنَا بُورِكَ لَهُمَا فِي بَيْعِهِمَا وَإِنْ كَذِبَا وَكَتَمَا مُحِقَ بَرَكَةُ بَيْعِهِمَا.

    যদি ক্রেতা-বিক্রেতা সত্য বলে এবং ভালো-মন্দ প্রকাশ করে দেয় তাহলে তাদের লেনদেন বরকতময় হবে। আর যদি উভয়ে মিথ্যা বলে এবং দোষত্রুটি গোপন করে তাহলে এ লেনদেন থেকে বরকত উঠিয়ে নেওয়া হবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৩২

    কুরআন হাদীসে স্বচ্ছতার প্রশংসা এবং অস্বচ্ছতার নিন্দা কতভাবে এসেছে তা একত্র করা মুশকিল। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম বলেছেন,

    شَفَاعَتِي لِمَنْ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ مُخْلِصًا، يُصَدِّقُ قَلْبُهُ لِسَانَهُ، وَلِسَانُهُ قَلْبَهُ.

    আমার সুপারিশ তার জন্য যে সাক্ষ্য দিবে ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই’। এমন ইখলাসের সাথে যে, তার অন্তর তার মুখকে সত্যায়ন করবে এবং মুখ অন্তরকে সত্যায়ন করবে। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৮০৭০

    এক মহিলা নবীজীর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার একজন সতীন রয়েছে। তো আমি যদি চালচলনে, কথাবার্তায় সতীনের নিকট এমন ভাব প্রকাশ করি যে, স্বামী আমাকে অনেক কিছু দেয় এতে কি পাপ হবে? উত্তরে নবীজী বলেছেন,

    الْمُتَشَبِّعُ بِمَا لَمْ يُعْطَ كَلَابِسِ ثَوْبَيْ زُورٍ.

    যে লোক এমন বিষয়ে প্রাপ্তি ও তৃপ্তির ভাব প্রকাশ করে যা সে প্রাপ্ত হয়নি সে যেন মিথ্যার একপ্রস্থ কাপড় পরিহিতের ন্যায়।

    কোনো ব্যক্তি আবেদ যাহেদের পোশাক পরে বুঝায় সে তাদের একজন এবং এমন তাকওয়া ও বিনয় প্রকাশ করে যা তার অন্তরে নেই। তাকে মিথ্যার কাপড় পরিধানকারী বলা হয়। মানুষ সাধারণত দুইটি কাপড় পরিধান করে। একটি শরীরের ঊর্ধ্বাংশে, অপরটি নি¤œাংশে। তাই দুই কাপড় পরিহিতের ন্যায় বলা হয়েছে। অর্থাৎ সে সম্পূর্ণরূপে মিথ্যায় আহত।

    হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    إِنَّ شَرَّ النَّاسِ ذُو الْوَجْهَيْنِ، يَأْتِي هَؤُلَاءِ بِوَجْهٍ وَهَؤُلَاءِ بِوَجْهٍ.

    সবচে নিকৃষ্ট মানুষ হল দু’মুখো মানুষ। এর কাছে আসে এক চেহারায় ওর কাছে যায় আরেক চেহারায় । -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৮০৬৯

    হযরত আসমা বিনতে উমাইস রা. বলেন, যেসব সখী আয়েশাকে সাজিয়ে নবীজীর বাসরে নিয়ে গিয়েছিল আমিও ছিলাম তাদের একজন। আল্লাহর শপথ, তখন তাঁর ঘরে শুধু এক পেয়ালা দুধ ছিল। প্রথমে নবীজী তা থেকে পান করেন অতপর আয়েশাকে দেন। সে খুব লজ্জা করছে এবং নিচ্ছে না  দেখে আমরা বললাম,নবীজীর হাত ফিরিয়ে দিও না, নিয়ে নাও তখন সে খুব লাজুকতার সাথে নিল ও পান করল। অতপর নবীজী বললেন, তোমার সখীদের দাও। আমরা বললাম, আমাদের ক্ষুধা নেই। তখন নবীজী বললেন, দেখ, ক্ষুধা ও মিথ্যা একত্র করো না। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোনো কিছুর প্রতি আমাদের চাহিদা আছে বটে তবে কেউ দিলে বলি, আমার এখন চাহিদা নেই এটা কি মিথ্যা হবে? তখন নবীজী বললেন,

    إِنَّ الْكَذِبَ يُكْتَبُ كَذِبًا حَتَّى تُكْتَبَ الْكُذَيْبَةُ كُذَيْبَةً.

    মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে লিখা হয় এমন কি ছোট মিথ্যাকেও ছোট মিথ্যা হিসেবে লিখা হয়। -মুসনাদে আহমদ,হাদীস ২৭৪৭১

    গরু ছাগল উট দুম্বা বিক্রি করতে গিয়ে দু’তিন দিন দুধ দোহন না করে ওলান ফুলিয়ে বিক্রি করতে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন, বরং ঐ লেনদেনকে অবৈধ ও ভেঙ্গে দেওয়া আবশ্যক বলেছেন।

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার একজন শস্যব্যবসায়ীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় তিনি তার শস্যের স্তূপের ভেতর হাত ঢুকিয়ে দিলেন। তখন ভেতরের শস্যগুলোতে কিছু আর্দ্রতা অনুভূত হল। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কী? সেই ব্যবসায়ী উত্তর দিলেন, বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিল। নবীজী তখন বললেন, ‘ভেজা অংশটা উপরে রাখলে না কেন?’ তারপর নবীজী আরো বললেন,যারা আমাদেরকে ধোঁকা দেয় তারা আমাদের নয়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০২

    বিচার ও সাক্ষ্যের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ইসলামে কাম্য। বিচারের ক্ষেত্রে ইনসাফ যেন ব্যাহত না হয়; ফয়সালা নিজের বিরুদ্ধে বা পিতা-মাতা ভাই-বোনের বিরুদ্ধে গেলেও, নিজের শত্রুর পক্ষে গেলেও। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী হয়ে যাও আল্লাহর সাক্ষীরূপে, যদিও তোমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে হয় কিংবা পিতামাতা ও আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে। -সূরা নিসা (৪) : ১৩৫

    আরো বলেন, কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা তোমাদেরকে যেন বে-ইনসাফীর প্রতি প্ররোচিত না করে। -সূরা মায়েদা (৫) : ৮

    কুরআন হাদীসে এ সম্পর্কিত সকল বর্ণনা একত্র করলে এক ভা-ার হয়ে যাবে। যার অবকাশ এখানে নেই। রিয়া, প্রতারণা, মিথ্যা, লৌকিকতা, ফন্দি আঁটা, কারো পিছে লাগা, নিফাক ইত্যাদি বিষয়ের ঘৃণ্যতার ক্ষেত্রে যত আয়াত ও হাদীস রয়েছে তা এ বিষয়েরই অন্তর্ভুক্ত। সবশেষে আরেকটি হাদীস উদ্ধৃত করছি, যার দ্বারা ইসলামে স্বচ্ছতা যে কত জরুরি তা আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যায়।

    মক্কা বিজয়ের দিন, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কার সকল কাফেরকে সাধারণ ক্ষমা করে দিলেন, তবে সাত জন কাফের ব্যতিত। ওরা মুসলমানদেরকে এত কষ্ট দিয়েছে দয়ার নবী হওয়ার পরও এবং সকলে সাধারণ ক্ষমা পাওয়ার পরও তারা ক্ষমা পায়নি। এদের মধ্যে একজন হল, আব্দুল্লাহ ইবনু আবুস সারাহ। হযরত উসমান রা.-এর দুধ ভাই। তিনি হযরত উসমানের নিকট আত্মগোপন করলেন। নবীজী যখন মানুষদেরকে বায়আতের জন্য ডাকলেন তখন হযরত উসমান রা. দুধ ভাইকে সাথে করে আল্লাহর নবীর নিকট গিয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আব্দুল্লাহকে বায়আত করুন। আল্লাহর নবী তার দিকে তাকালেন এবং মাথা নীচু করে নিলেন, কিছু বললেন না। কিছুক্ষণ পর হযরত উসমান পুনরায় আবেদন করলেন। আল্লাহর নবী তেমনি করলেন, কিছু বললেন না। তৃতীয় বার যখন আবেদন করলেন তখন নবীজী পুনরায় তাকিয়ে তাকে বায়আত করলেন। অতপর সাহাবীদের লক্ষ্য করে বললেন, তোমাদের মাঝে কি কোনো বুঝমান লোক নেই? আমাকে যখন তার বায়আত থেকে হাত গুটিয়ে রাখতে দেখলে তখন তাকে হত্যা করে ফেলতে! সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার মনে কী আছে আমরা তো তা জানি না।

    যদি একটু (চোখের) ইশারা দিতেন। তখন নবীজী বললেন,

    إِنَّهُ لَا يَنْبَغِي لِنَبِيٍّ أَنْ تَكُونَ لَهُ خَائِنَةُ أَعْيُنٍ.

    কোনো নবীর জন্য শোভনীয় নয় যে তার চোরা চোখ হবে। অন্য বর্ণনায় আছে  “أن يومض” কোনো নবীর জন্য শোভনীয় নয় চোখ দিয়ে ইশারা করা। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৬৭৬

    এতবড় দাগী শত্রু, হত্যা আবশ্যক এমন কাফির তাকে মারতে কৌশলের প্রয়োজন নেই। প্রকাশ্যেই মারা যায়,আর কৌশল করলেও গুনাহ নেই। আর কৌশলটাও সামান্য, চোখের ইশারা মাত্র। কিন্তু নবীজী কত স্বচ্ছতার পরিচয় দিলেন! স্বচ্ছতা তাকে এটুকুও করতে দেয়নি।

    চোখ দিয়ে ইশারা করা আমাদের কাছে কত সাধারণ। কতক্ষেত্রেই তো উপস্থিত লোকদের কাছে কোনো বিষয় লুকানোর জন্য এমন করি। বরং তা করে সাবাসও পাই।

    এসব হাদীসে আমাদের জন্য রয়েছে শিক্ষা। আমরা অনেকে আবার এসবকে ‘হিকমত’ বলি। ‘হিকমত’আরবী, উর্দু ও ফারসি শব্দ, কুরআন-হাদীসে হিকমতের বহু ফাযায়েল রয়েছে। নবীজীকে পাঠানো হয়েছে হিকমত শেখানোর জন্য। আল্লাহ বলেন, ‘যাকে হিকমত দান করা হল তাকে বহু কল্যাণ দান করা হল’। শেখ সাদী রাহ.ও গুলিস্তাঁ কিতাবে বহু হিকমত লিখে গেছেন। অস্বচ্ছতা যদি হিকমত হয় তাহলে কুরআন-হাদীসে বর্ণিত হিকমতকে কী বলব! আর একটি শব্দকে সম্পূর্ণ তার বিপরীত অর্থে ব্যবহার করা কত ভয়াবহ কাজ তা ভাবা দরকার। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমীন।

    জীবনের বাঁকে বাঁকে কত পদক্ষেপে এ অস্বচ্ছতার উপস্থিতি ঘটে। একটু খেয়াল করলেই তা অনুমান করা যাবে। এখানে শুধু একটি প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা রাখি, এর দ্বারা অন্য ক্ষেত্রেও সহযোগিতা পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুন। আমীন। 

    মাসতুরাতের উদ্দেশ্যে…

    (৪৬ পৃষ্ঠার পর)

    نَصْبِرُ عَلَى الْجُوعِ وَلَا نَصْبِرُ عَلَى النَّارِআপনি আমাদের জন্য কামাই করতে যাচ্ছেন, সংসার চালানোর জন্য রোজগার করতে বের হচ্ছেন, আমরা আপনাকে আস্বস্ত করছি যে, আমরা দারিদ্র্যের উপর সবর করতে রাজী, ক্ষুধার কষ্ট সইতে প্রস্তুত, আজ এটা নেই কাল ওটা নেই, অভাব-অনটন চলছেই চলছে…এর উপর আমরা ধৈর্য ধরব। কিন্তু জাহান্নামের আগুন সহ্য করতে পারব না। সুতরাং হালালভাবে যা পাবেন কেবল ততটুকু আনবেন, হারাম কিছু আনার চেষ্টা করবেন না। আমরা না খেয়ে কম খেয়ে থাকতে পারব কিন্তু দোযখের আগুন সইতে পারব না। এই ছিল আগের কালের মহিলাদের ভাষা। আর এই যামানার মহিলারা স্বামীর হাতে লম্বা তালিকা ধরিয়ে দিয়ে বলে, এগুলো আমার চাই। তালিকা দেখে স্বামী বেচারা বিমর্ষ হয়ে পড়ে। স্ত্রীকে অনুনয় করে বলে, আমি এত কিছু কীভাবে আনব, আমার আয় তো তোমার সামনে? তুমি তো জান আমার কত আয়! স্ত্রীর এক কথা; তোমার কত আয় আমার তা জানার দরকার নেই। এই জিনিসগুলো আমার চাই, এগুলো ছাড়া দিন চলবে না। এই যুগে এমন মহিলা অনেক। কিন্তু আগে এমন ছিল না। কম হোক আপত্তি নেই, কিন্তু হারাম তারা সহ্য করতেন না। আল্লাহ তাআলা সকল মহিলাদেরকে এমন হওয়ার তাওফীক দান করুন। পুরুষদেরও আগের পুরুষদের মত নেককার হওয়ার তাওফীক দিন। আমীন।

    وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين.

    [মুসাজ্জিলা থেকে বয়ানটি পত্রস্থ করেছেন মাহমুদ হাসান মাসরূর। জাযাহুল্লাহু খাইরান]


    জাপানে আত্মহত্যার হার হ্রাস পেয়েছে

    গত বছর জাপানে আত্মহননকারীর সংখ্যা পুনরায় হ্রাস পয়েছে। এই নিয়ে টানা ৬ বছর এই হার পড়তিমুখী থাকলো। ২০১৫ সালে পরে যাওয়ার হার ছিলো ৫.৫ শতাংশ।

    ২০১১ সলের মহাভুমিকম্প ও সুনামির পর আত্মহননকারীর সংখ্যা ২২ থেকে বেড়ে ২৩ এ উঠে গেছে।

    ফুকুশিমা পারমাণবিক দুর্র্ঘটনা কে কেন্দ্র করে অপসারণ সহ বিভিন্ন কারণে আত্মহননকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

    মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন “মানুষ এ ভাবে থাকতে থাকতে পীড়িত বা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েও নিজের জীবন সংহারের পথ বেছে নেয়।

    দারুন ব্যস্ত নতুন বুলেট 

    জাপানের বুলেট ট্রেনের সর্বশেষ সংযোজনের এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, টোকিও থেকে হোকুরিকু’র মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনটি প্রত্যাশার অধিক যাত্রী আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে তিন গুন।

    গত সোমবার হোকুরিকু শিনকানসেন এর প্রথম বছর পূর্তি হলো, পূর্ব জাপান রেলওয়ে এবং পশ্চিম জাপান রেলওয়ে যৌথ ভাবে লাইনটি পরিচালনা করছে। ট্রেনটি টোকিও’র সাথে ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের রাজধানী কানাজাওয়া’কে সংযুক্ত করেছে। এখন মাত্র আড়াই ঘন্টার মধ্যেই দু’শহরের মধ্যে যাতায়াত করা সম্ভব।

    “প্রথম বছরের যাত্রা ছিলো খুব মসৃন” জে আর পশ্চিম এর প্রেসিডেন্ট সেইজি মানাবে বলেন।

    ধারণা করা হয়েছিল প্রথম বছর পূর্ববর্তী ১২ মাসের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা দ্বিগুন হবে, কিন্তু যাত্রী সংখ্যা বাড়তেই থাকলো এবং তা প্রত্যাশিত মাত্রার তিন গুন হয়ে দাঁড়ালো ৯০ লক্ষে। মানাবে বলেন দ্বিতীয় বছরেও অনুরূপ যাত্রী তারা আশা করছেন।

    ইডেনে রোমাঞ্চিত বাংলাদেশ  

    আকাশপথে ঢাকা-চট্টগ্রামের দূরত্বের চেয়ে একটু বেশি ঢাকা-কোলকাতার দূরত্ব। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ, একই ভাষাভাষী মানুষের সঙ্গে ক্রিকেটে মিত্রতার সুযোগ পাচ্ছে কোথায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল? সেই ১৯৯০-এর ৩১ ডিসেম্বরের পর ২৫ বছর ১০৬ দিন পেরিয়ে ইডেন গার্ডেনসে খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। বাড়ির অনেক কাছাকাছি ভেন্যুটি বাংলাদেশের হোম অব ক্রিকেট-খ্যাত মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের প্রায় তিনগুণ, এতদিন বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের কাছে তা রূপকথার মতো শোনালেও আজ এই ভেন্যুতেই বেজে উঠবে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। ইডেনে আজ এই মহেন্দ্রক্ষণটির সাক্ষী হচ্ছেন ২৫ হাজার দর্শক- তেমনটাই জানিয়েছেন সিএবি’র বিশ্বস্ত সূত্র। ২০১৪ সালে ইডেন গার্ডেনসের দেড়’শ তম বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে সৌরভ গাঙ্গুলির আমন্ত্রণ রক্ষা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আমন্ত্রনমূলক টুর্নামেন্টে দল পাঠিয়েছে বিসিবি একাদশ। কিন্তু ইডেনের দেড়শ’তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে সিবিএ আয়োজিত টূর্নামেন্টের ম্যাচগুলোর একটিও হয়নি ভারতের সর্ববৃহৎ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে! কোলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে ম্যাচগুলো খেলেছে নাসির, মুমিনুলরা। তা নিয়ে কম আক্ষেপ করেনি বিসিবি একাদশ। বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাসের সমর্থক হয়েও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে টেস্ট খেলতে ইডেনে আতিথ্য দিতে অপেক্ষা করতে হবে আরো ৫ মাস। আপাতত প্রতিশ্রæতি পর্যায়েই আছে তা। তবে তার আগেই ক্রিকেটের নন্দনকাননে বাংলাদেশ দলকে দেখবে ক্রিকেট বিশ্ব। টি-২০ বিশ্বকাপে ধর্মশালার পরীক্ষায় পাস করে গ্রæপ রাউন্ডের বাধা পেরিয়ে ইডেন গার্ডেনসে পড়েছে পা, সে লক্ষ্যটা ইতোমধ্যে পূরণ করেছে মাশরাফিরা। প্রথম পর্বে ফেভারিটদের মতো খেলে সুপার টেন নিশ্চিত করে এখন ট্রফির লড়াইয়ে বাংলাদেশ দলের শুরুটা হচ্ছে ইডেন গার্ডেনস থেকেই, পাকিস্তনের বিপক্ষে অবতীর্ণ হবে মাশরাফিরা ক্রিকেটের নন্দনকানন খ্যাত ইডেন গার্ডেনসে ! বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার জন্য যে লোকটির অবদান অনস্বীকার্য, সেই জগমোহন ডালমিয়া যখন সিবিএ’র সেক্রেটারী, তখন থেকে সিবিএ-বিসিবি’র বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, ১৯৮৪ সাল থেকে এখনো ওই চুক্তিতে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের কিশোররা করছে সফর বিনিময়। কিন্তু ১৯৯০ সাল থেকে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল মাত্র ৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে ভারতে, সেখানে ইডেন গার্ডেনে খেলার সুযোগ পেয়েছে মাত্র ১টি ম্যাচ। ১৯৯০ সালের ৩১ ডিসেম্বরে শ্রীলংকার বিপক্ষে এশিয়া কাপের সেই ম্যাচটির স্মৃতিই ভেসে উঠেছে আতাহার আলী, আকরাম খান, নাসির আহমেদ নাসুর চোখের সামনে। ইডেনে প্রথম এবং একমাত্র ম্যাচে বাংলাদেশ দল শ্রীলংকার কাছে ৭১ রানে হেরেও পেয়েছে বাহাবা। সেই ম্যাচে হেরে যাওয়া বাংলাদেশ দলের মিডল অর্ডার আতাহার আলীর ৯৫ বলে ৭৮ রানের ইনিংসে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম। একই ভাষাভাষী সমর্থকদের সামনে ২৫ বছর ১০৬ দিন পর আনতর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ দল, তা নস্টালজিয়ায় ফিরিয়ে নিয়েছে ইডেনে বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচের ম্যান অব দ্য ম্যাচ এখন টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতের এই ভেন্যু থেকে ওই ভেন্যুতে ঘুরছেন, কিন্তু দেশের হয়ে প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচের সেই স্মৃতিটা এখনো তাকে দেয় নাড়াÑ ‘ক্রিকেটার হিসেবে সবার স্বপ্ন থাকে লর্ডস, মেলবোর্ন এবং ইডেন গার্ডেনসে খেলার। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ আমি এবং তা ইডেন গার্ডেনসে বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে। এখনো আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই স্মৃতি। বিশাল স্টেডিয়ামে প্রচুর দর্শক, বাংলাদেশ দলকে সবার সমর্থন, হেরেও পেয়েছি সবার হাততালি। এটা কি ভোলা যায়? এখনো কোলকায় গেলে, মাঝবয়সী কিংবা বৃদ্ধ কারো সাথে পথে দেখা হলে আমাকে ওই ইনিংসের কথা মনে করিয়ে দেন তারা।’ বাংলাদেশের এই প্রজন্মের ক্রিকেটারদের মধ্যে কোলকাতা নাইট রাইডার্সের খেলোয়াড় বলে ইডেন গার্ডেনস সাকিবের খুব চেনা-জানা ভেন্যু। বাংলাদেশের এই প্রজন্মের অন্য কারো এই অভিজ্ঞতা নেই এই ভেন্যুতে খেলার। তবে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকে সুপার টেনে উঠে ইডেন গার্ডেনসে খেলার স্বপ্ন পূরণ করবে বাংলাদেশ দল, এমটাই প্রত্যাশা করছেন আতাহার আলীÑ ‘যতটা জানি, সাকিব, মাশরাফি, তামীম, মুশফিকুরদের যথেস্ট ভালবাসে কোলকাতার ক্রিকেট ফ্যানরা। যেহেতু দীর্ঘ ২৫ বছর পর বাংলাদেশ জাতীয় দল খেলবে এখানে খেলতে নামছে, তাই একই ভাষাভাষী ক্রিকেট ফ্যানদের সমর্থন তাই পুরোটাই পাবে বাংলাদেশ দল। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান বলেই ইডেন গার্ডেনে খেলতে নেমে নিজেদের ভেন্যুই মনে করবে বাংলাদেশ।’ কোলকাতায় এসেই মাশরাফিরা যেনো নিজেদের চেনা পরিবেশই পাচ্ছে। খোঁজ-খবর নিচ্ছে যারা, তাদের অধিকাংশই বাঙালী। মাশরাফিদের ভক্তের সংখ্যাও তো কম নয় এখানে। ট্যাক্সি ড্রাইভার থেকে সবারই অভিনন্দন পাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। গতকাল বেলা ৩টায় বাংলাদেশ দল যখন এসেছে এখানে অনুশীলনে, তখন ইডেন গার্ডেনসের বাইরে শত শত লোক, মাশরাফিদের এক নজর দেখতে কৌত‚হলী তারা! ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ভেন্যু মেলবোর্নে ২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারত, শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলেছে বাংলাদেশ দল। তবে মেলবোর্নে নিজেদের হোম মনে হয়নি মাশরাফিদের। ইডেনকে সেখানে পরিচিত আবহাওয়া ও খাদ্যাভাস এবং স্থানীয় মানুষদের চার হোম হোমই যে মনে হচ্ছে। ধর্মশালা থেকে টনিক নিয়ে ইডেনে যে প্রানের স্পন্দনটা একটু বেশিই পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশের মতো অতো লম্বা সময় প্রতীক্ষা করতে না হলেও ইডেনেও যে ৫ বছর বিরতির পর আন্তর্জাতিক টি-২০ বসছে! ইডেনে বাংলাদেশ দল অভিষেকে খালি হাতে ফেরেনি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ পেয়েছে বাংলদেশ এই ইডেন থেকেই। ২৫ বছর পর ইডেনে খেলার সুযোগকে স্মরনীয় করে রাখার সংকল্প মাশরাফিরÑ ‘আমরা ইডেন গার্ডেনে খেলার ভালো একটি সুযোগ পেয়েছি। এখানে আমাদের খেলোয়াড়রা সবাই শিহরিত। এখানে প্রায় ৯০ হাজার দর্শক থাকে। কালকের ম্যাচে হয়ত ততটা হবে না। তারপরও ক্রিকেট এটা বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি ভেন্যু। আমরা চাই ভালো খেলতে ও স্মরণীয় করে রাখতে।’ কোলকাতা নাইট রাইডার্সে ৬ বছর কাটিয়ে দেয়ায় ইডেন কোলকাতার ঘরের ছেলেই যেনো হয়ে গেছেন সাকিব। ইডেনে খেলতে এসে বাংলাদেশ দলের মধ্যে সাকিবের কদরটা একটু বেশিই। তাই ইডেনের পীচ,রাতের শিশির সব কিছু’র প্রাক ধারনা নিতে সাকিবই যে প্রধান ভরসা মাশরাফিরÑ ‘এই মাঠ সম্পর্কে আমরা সাকিবের থেকে অনেক তথ্য নিতে পারব। কারন কেকেআরের হোম গ্রাউন্ড এটি।’ বদলে গেছে ইডেন, এক সময়ে লাখ ছাড়িয়ে যেতো দর্শক। ৯৬’র বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ভারত-শ্রীলংকা ম্যাচে ১ লাখ ১০ হাজার দর্শকের রেকর্ড এখনো ক্রিকেটের কোন ভেন্যু পারেনি ভাংঙতে। সংস্কারে নেমে এসেছে ৬৬ হাজার ৩৪৯ টি আসনে। এই ভেন্যুতে এসে বাংলাদেশের ক্রিকেটের পরম বন্ধু, বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার অন্যতম সমর্থক জগমমোহন ডালমিয়ার স্মৃতিটাও মনে করতে হচ্ছে।

    জ্বালানিকোষ গাড়ি নিয়ে এলো হোন্দা

    এক দফা চার্জেই আগের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি চলতে সক্ষম এমন নতুন জ্বালানি-কোষ গাড়ি বাজারে নিয়ে এসেছে হোন্দা।

    জ্বালানি-কোষ গাড়ি বিদ্যুতেই চলে যা উৎপাদিত হয় স্টোরেজ ট্যাংকে রাখা হাইড্রজেনের সাথে বাতাস থেকে নেয়া অক্সিজেন মিশ্রিত করে। পেছনের পাইপ থেকে নিসৃত হবে কেবলমাত্র পানি।

    হোন্দা প্রকৌশলীরা বলছেন নতুন মডেলটি একবার ট্যাংক পূর্ণ করলে গাড়ি ৭৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে সক্ষম। তারা বিদ্যুত উৎপাদন সিস্টেমকে সংক্ষিপ্ত করেছেন যাতে গাড়িতে ৫ জন যাত্রী অনায়াসে বসতে পারেন।

    গাড়িটির দাম পড়ছে ৬৭,০০০ ডলার।

    হোন্দা আপাতত এটিকে দেশের অভ্যন্তরীণ কোম্পানি এবং স্থানীয় সরকার গুলোর কাছে বিক্রির জন্যে প্রস্তাব করছে, পরবর্তীতে তা সাধারণ গ্রাহকদের জন্যেও উন্মুক্ত হবে।

    হোন্দা প্রেসিডেন্ট তাকাহিরো হাচিকো বলেছেন এই মডেল বিশ্ব উষ্ণায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভুমিকা রাখবে।

    বিশ্লেষকরা বলছেন জ্বালানি-কোষ গাড়ির ব্যবহার সম্প্রসারণ নির্ভর করছে গাড়ির দাম এবং কতটা সাশ্রয়ী হচ্ছে তার উপর। তা ছাড়াও এ ধরনের গাড়ির জন্যে আরো হাইড্রজেন স্টেশন নির্মানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

    বাংলাদেশের ‘মিনি ফাইনাল’ আজ

    সুপার টেনে উঠতে হলে ওমানের বিরুদ্ধে আজ জিততেই হবে বাংলাদেশকে। তবে বৃষ্টি অথবা অন্য কোনো কারণে ম্যাচটি যদি পরিত্যক্ত হয়ে যায়, তাহলে রান রেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে পরের রাউন্ডে উঠে যাবে মাশরাফিরা। বাংলাদেশ ও ওমানের রানরেট যথাক্রমে +০.৪০০ এবং +০.২৮৩।
    বাংলাদেশ ও ওমানের মধ্যে ‘এ’ গ্রুপের শেষ ম্যাচটি তাই অলিখিত ফাইনালে পরিণত হয়েছে। ভারতের ধর্মশালার এইচপিসিএ স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু হবে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এবারই প্রথম দেখা হচ্ছে বাংলাদেশ ও ওমানের। উভয় দলই তাদের প্রথম লড়াইকে স্মরণীয় করে রাখতে আজ জেতার জন্য মরিয়া হয়ে লড়বে। জয়ের তাগাদা ওমানের দিক থেকেও কম নয়। কারণ আজ বাংলাদেশকে হারাতে পারলে সুপার টেনের টিকেট জুটবে তাদেরই ভাগ্যে। বিশ্বকাপে প্রথম আবির্ভাবে এমন সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবে না ওমান।
    ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ ও ওমান উভয়েরই পয়েন্ট ৩। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৮ রানে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডসকে। ওমান তাদের বিশ্বকাপ মিশনকে স্মরণীয় করে রেখেছে অভিষেক ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে পরাজিত করে। ওমান ও নেদারল্যান্ডস এবং বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের ম্যাচ দু’টি বৃষ্টির জন্য পরিত্যক্ত হয়ে গিয়েছে। ফলে পরিত্যক্ত ম্যাচ থেকে চারটি দলই এক পয়েন্ট করে পেয়েছে। ‘এ’ গ্রুপে ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েছে নেদারল্যান্ডস ও আয়ারল্যান্ড। আজ ধর্মশালায় এ দু’টি দলের লড়াই তাই নিয়ম রক্ষার ম্যাচে পরিণত হয়েছে।
    আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচে বেশ দাপুটে সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তামিম ও সৌম্য সরকারের ব্যাটিংয়ে ভর দিয়ে মাত্র ৮ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৯৪ রান করেছিল বাংলাদেশ। বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি ১২ ওভারে নামিয়ে আনা হয়। বৃষ্টি বাগড়া না দিলে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে অনায়াসেই জিততে পারতো বাংলাদেশ। তাহলে আজ ওমানের ম্যাচটি নিয়ে বাড়তি দুঃশ্চিন্তা করতে হতো না ।
    বৃষ্টির পাশাপাশি আইসিসিকে নিয়েও বেকায়দায় আছে বাংলাদেশ। তাসকিন ও আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আইসিসি, যা বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মনের ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে। এ দুই বোলারকে সাতদিন সময় দেয়া হয়েছে। এসময়ের মধ্যে ভারতের বেঙ্গালোো একটি পরীক্ষাগারে গিয়ে তাসকিন ও সানিকে প্রমাণ করতে হবে যে তাদের বোলিং অ্যাকশন ত্রুটিমুক্ত।
    কয়েকজনের ইনজুরি নিয়েও সমস্যায় আছে বাংলাদেশ। বেশ ভালো রকম ইনজুরিতেই ভুগছেন টিমের বোলিং সেনসেশন মুস্তাফিজ। সমর্থকদের জন্য বড় দুঃসংবাদ হলো, মুস্তাফিজ আজও খেলছেন না। বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক গতকাল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে সাকিব ও মাশরাফির অবস্থা এখন বিপদমুক্ত বলেই জানা গেছে। সাকিব, মুশফিকের মত সিনিয়র ব্যাটসম্যানরা রান পাচ্ছেন না। এ নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন কোচ হাতুরুসিংহে।

    ভূমিকম্প ও সুনামির ৫ম বছর স্মরণ করছে জাপান

    পাঁচ বছর আগে এই দিনে জাপানে প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প ও সুনামিতে নিহতদের স্মরণ করছে দেশটির জনগণ। দেশটির উত্তরপূর্ব উপকূলে ভয়াবহ ওই প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ লোক প্রাণ হারায়। ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে ফুকুসিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে।
    এ উপলক্ষে টোকিওতে একটি জাতীয় স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে জাপানের সম্রাট আকিহিতো, সম্রাজ্ঞী মিশিকো, প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে উপস্থিত ছিলেন।
    স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৬ মিনিটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনতা মাথা নত করে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ২০১১ সালের মার্চ মাসের ১১ তারিখে ঠিক এই সময়ে প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ সুনামি আছড়ে পড়ে দেশটিতে।

    জাপানে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত আরো একজনের সন্ধান

    জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার দেশে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত আরো একজনের সন্ধান পেয়ছেন। গত বছর থেকে দক্ষিণ আমেরিকাতে ভাইরাসটি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।

    স্বাস্থ্য, শ্রম এবং কল্যাণ মন্ত্রণালয় বলেছে, তিরিশর্ধ্ব এক বিদেশী মহিলা মশা বাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশিত করা হয়।

    জাপানে এটি ছিলো জিকো ভাইরাসে আক্রন্ত হওয়ার দ্বিতীয় ঘটনা।

    ব্রাজিলের যে মেয়েটি বাংলাদেশের ক্রিকেট বলতে পাগল

    বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় বাংলাদেশের অনেক জায়গায় ব্রাজিলের পতাকা উড়তে দেখা যায়। ফুটবলে ব্রাজিলের ভক্ত সমর্থক এ দেশে অসংখ্য। এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ভক্ত-সমর্থক পাওয়া গেল ব্রাজিলে!

    ব্রাজিলের ১৯ বছরের তরুণী সিলভিয়া মোরেনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাঁর প্রোফাইল ছবি রাঙিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমর্থনে। এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি ফাইনালের আগে ৬ মার্চ লাল-সবুজ জুড়ে দিয়েছেন তাঁর ছবিতে। এখনো এটাই তাঁর প্রোফাইল ছবি হিসেবে আছে। ক্রিকেট যে দেশে মোটেও জনপ্রিয় নয়, সেই ব্রাজিলের একজন বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভক্ত। ঘটনাটি বিস্ময় জাগানিয়াই বটে!
    বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভক্ত সিলভিয়া মোরেনার (ফেসবুক প্রোফাইল নাম সিসি মোরেনা) কথা গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জানতে পারি। জাপান প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসক শেখ মিজানুর রহমান জানান তাঁর কথা। ভাইবারে তিনি বলেন, ‘ব্রাজিলের একটি মেয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ফ্যান।’ ফেসবুকে সিলভিয়ার প্রোফাইলে গিয়ে দেখা গেল লাল-সবুজে রাঙানো তাঁর প্রোফাইল ছবি। শেখ মিজানুর রহমান জানালেন, তাঁর ফেসবুক বন্ধু সিলভিয়া পর্তুগিজ ছাড়া অন্য কোনো ভাষা জানেন না।
    গুগল ট্রান্সলেটের সাহায্যে ইংরেজি থেকে পর্তুগিজ ভাষায় রূপান্তর করে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ব্রাজিলে থাকা সিলভিয়াকে বার্তা পাঠানো হলো। মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোর পাঠানো সেই বার্তার জবাব দিতে থাকেন সিলভিয়া।
    প্রোফাইল ছবিতে বাংলাদেশ কেন? জিজ্ঞেস করায় সিলভিয়া বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের “সুপার ফ্যান”। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য প্রচার চালাতে এবং বাংলাদেশকে তুলে ধরতে প্রোফাইল ছবিটি পরিবর্তন করেছি।’ ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এসপিরিতো স্যান্তোর (হলি স্পিরিট) রাজধানী ভিতোরিয়ার বাসিন্দা সিলভিয়া। পড়াশোনার পাশাপাশি সেখানেই একটি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি।
    ক্রিকেট পছন্দ করেন? সিলভিয়ার উত্তর, ‘ভালোবাসি’। জানালেন বাংলাদেশের সাব্বির রহমান ও মাহমুদউল্লাহ তাঁর প্রিয় খেলোয়াড়। সিলভিয়া এও বললেন, ‘বাংলাদেশে বেড়াতে যেতে চাই আমি। আমার স্বপ্ন বাংলাদেশ ঘুরে আসার।’
    টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাংলাদেশ জিতবে এই বিশ্বাস সিলভিয়ার। বললেন, ‘এ জন্য আমি অনেক প্রার্থনা করছি। আশা করি, তারা খুব ভালো লড়াই করবে।’

    প্রচলিত ভুল

    Posted by admin on March 9
    Posted in Uncategorized 

    প্রচলিত ভুল : একটি বানোয়াট কিচ্ছা – নবীজীর ওফাতের সময় মালাকুল মাওতের অনুমতি প্রার্থনা

    লোকমুখে নবীজীর ওফাতের বিষয়ে এ কিচ্ছাটি প্রসিদ্ধ যে, নবীজীর ইন্তেকালের সময় মালাকুল মাউত এক গ্রাম্য বেদুঈনের ছুরতে আগমন করেন এবং গৃহে প্রবেশের অনুমতি চান। অনুমতি দেওয়া হলে তিনি গৃহে প্রবেশ করেন এবং বলেন, আল্লাহ আমাকে অনুমতি ছাড়া গৃহে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন এবং অনুমতি ছাড়া আপনার পবিত্র রূহ কবজ করতে নিষেধ করেছেন। আপনি যদি অনুমতি দেন তাহলে রূহ কবজ করব অন্যথায় ফিরে যাব। একপর্যায়ে নবীজী অনুমতি দিলে তারপর তাঁর রূহ মোবারক কবজ করেন। এটি নবীজীর ওফাত সংক্রান্ত একটি দীর্ঘ জাল বর্ণনার অংশবিশেষ, যা আবদুল মুনঈম নামক এক ব্যক্তি জাল করেছে। ইবনুল জাওযী রাহ. বলেন,

    هَذَا حَدِيث مَوْضُوع…وَالْمُتَّهَم بِهِ عبد الْمُنعم بن إِدْرِيس.

    এটি একটি জাল বর্ণনা। আবদুল মুনঈম ইবনে ইদরীস নামে এক ব্যক্তি এটা জাল করেছে।

    জালালুদ্দিন সুয়ূতী রাহ. ও ইবনু আররাক রাহ. ইবনুল জাওযী রাহ.-এর সিন্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করেছেন। Ñকিতাবুল মাওযূআত, ইবনুল জাওযী ১/৩০১; আললাআলিল মাছনূআহ, সুয়ূতী ১/২৫৭; তানযীহুশ শরীআহ, ইবনু আররাক ১/৩৩১

    দেশব্যাপী জামায়াতের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে

    একাত্তরে হত্যা-গণহত্যার দায়ে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় বহালের প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে। বুধবার ভোর ৬টা থেকে হরতাল শুরু হয়।
    এর আগে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড আপিল বিভাগে বহাল থাকার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দেশব্যাপী এই হরতাল ডাকে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ এক বিবৃতিতে এ হরতালের ডাক দেন।
    বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে ও তার মুক্তির দাবিতে ৯ মার্চ বুধবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি।’

    আজ ঐতিহাসিক মার্চ

    আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দিন।
    সুদীর্ঘকালের আপসহীন আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তদানীন্তন রেসকোর্স ময়দান) বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন।
    এ দিন লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে জাতির অবিসংবিদিত মহান নেতা বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
    ৭ মার্চ তাঁর এই উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিক-নির্দেশনা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
    বঙ্গবন্ধুর এই বজ্রনিনাদে আসন্ন মহামুক্তির আনন্দে বাঙালি জাতি উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। যুগ যুগ ধরে শোষিত-বঞ্চিত বাঙালি ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় কাক্সিক্ষত মুক্তির লক্ষ্যে।
    ১৯৪৭ সালে ধর্মীয় চিন্তা, সাম্প্রদায়িক মানসিকতা ও দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাঙালি জাতিসত্ত্বা, জাতীয়তাবোধ ও জাতিরাষ্ট্র গঠনের যে ভিত রচিত হয়,তারই চূড়ান্ত পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর ছাত্র-কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের বাঙালি স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে।
    বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে বাঙালি জাতি। বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
    বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণের দিনটি প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
    দিনটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
    এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আজ ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। বিকাল ৩টায় ৭মার্চের ভাষনের স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে জনসভা। আওয়ামীলীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করবেন।
    দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার এবং জাতীয় পত্রিকাসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।
    ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে গর্জে ওঠে উত্তাল জনসমুদ্র। লাখ লাখ মানুষের গগনবিদারী শ্লোগানের উদ্দামতায় বসন্তের মাতাল হাওয়ায় সেদিন পত্ পত্ করে ওড়ে বাংলাদেশের মানচিত্র খঁচিত লাল-সবুজের পতাকা। লক্ষ শপথের বজ্রমুষ্টি উত্থিত হয় আকাশে।
    সেদিন বঙ্গবন্ধু মঞ্চে আরোহণ করেন বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে। ফাগুনের সূর্য তখনো মাথার ওপর। মঞ্চে আসার পর তিনি জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন। তখন পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান লাখ লাখ বাঙালির ‘তোমার দেশ আমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ, তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব, শেখ মুজিব ’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে।
    তিনি দরাজকণ্ঠে তাঁর ভাষণ শুরু করেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি…।’
    এরপর জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাংলা ও বাঙালির স্বাধীনতার মহাকাব্যের কবি ঘোষণা করেনÑ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম…, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
    মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণ। এই স্বল্প সময়ে তিনি ইতিহাসের পুরো ক্যানভাসই তুলে ধরেন। তিনি তাঁর ভাষণে সামরিক আইন প্রত্যাহার, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া এবং বিভিন্ন স্থানের হত্যাকান্ডের তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।
    বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, মানুষের অধিকার চাই। প্রধানমন্ত্রীত্বের লোভ দেখিয়ে আমাকে নিতে পারেনি। আপনারা রক্ত দিয়ে আমাকে ষড়যন্ত্র-মামলা থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন। সেদিন এই রেসকোর্সে আমি বলেছিলাম, রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করবো। আজো আমি রক্ত দিয়েই রক্তের ঋণ শোধ করতে প্রস্তুত।’
    তিনি বলেন, ‘আমি বলে দিতে চাইÑ আজ থেকে কোর্ট-কাচারি, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। কোন কর্মচারী অফিসে যাবেন না। এ আমার নির্দেশ।’
    বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সর্বশেষ দু’টি বাক্য, যা পরবর্তীতে বাঙালির স্বাধীনতার চূড়ান্ত লড়াইয়ের দিক-নির্দেশনা ও প্রেরণার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয়বাংলা’।
    বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের শ্রেষ্ঠত্বের কথা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণের পর গোটা বাংলাদেশে পাকিস্তানীদের পরিবর্তে বাঙালিদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। অনেকে বিভিন্ন জায়গায় পূর্ব পাকিস্তান শব্দ মুছে বাংলাদেশ লিখে।
    তিনি বলেন, এ ভাষণের পর গোটা দেশ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় চলতে থাকে। এ ভাষণ গুটি কয়েক রাজাকার ছাড়া গোটা বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলো।
    রাজনীতি বিশেষঞ্জদের মতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুধু বাঙালি জাতিকে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান নয়। এটি সব জাতির মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার দিক নির্দেশনা।