• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • প্রসঙ্গ-রাষ্ট্রধর্ম : বন্ধু! কলমের মর্যাদা রক্ষা করুন  

    যাদের0 হাতে কলম আছে তাদেরই কর্তব্য, কলমের মর্যাদা রক্ষা করা, সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার সাথে কলম পরিচালনা করা। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, হাতে কলম এলে অনেকেরই বিচার-বুদ্ধি আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। পাঠকজনকে তারা কী বিবেচনা করেন তা তারাই ভালো বলতে পারবেন।

    সম্প্রতি রাষ্ট্রধর্মের প্রসঙ্গ নিয়ে খানিকটা তোলপাড় হয়ে গেল। হাইকোর্টের রিট আবেদন ও অবশেষে তা খারিজের মধ্য দিয়ে বিষয়টি আপাতত স্তিমিত হয়েছে। কিন্তু একশ্রেণির কলমবাজ লোকের কলমচালনা থেমে নেই। তাদের কেউ লিখছেন, ‘রাষ্ট্র একটি নিষ্প্রাণ সত্তা, তার আলাদা ধর্ম থাকতে পারার বিবেচনা যে কোনো ধর্মের মৌলবাণীর সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ, ইসলামের ক্ষেত্রে তা সমপরিমাণে সত্য।’

    ধর্ম-বিশারদ ও রাষ্ট্র-বিশারদ উভয় শ্রেণির জন্যই এ উক্তিটি এক অপূর্ব তোহফা বটে। রাষ্ট্র যেহেতু নিষ্প্রাণ সত্তা আর সেকারণে যদি তার আলাদা ধর্ম না হতে পারে তাহলে এই নিষ্প্রাণ সত্তার জন্য সংবিধান কেন? এবং সংবিধানের নানা আদর্শই বা কেন? এরপর এই নিষ্প্রাণ সত্তাকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ বানাবারই বা এত কসরত কেন? কে না জানে, ‘ধর্ম-নিরপেক্ষতা’ শব্দবন্ধটি বর্তমান সময়ের এক কুফরী ধর্মেরই নাম!

    কেউ আবার ধমক দিয়ে লিখছেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতার যুক্তি ও জোরে একটি বিশেষ ধর্মকে সব নাগরিকের স্বতন্ত্র সমান অধিকারের উপর স্থাপন করার অর্থ হচ্ছে ভবিষ্যতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে আপনার অন্যান্য অধিকার, এমনকি আপনার ব্যক্তিগত ধর্মচর্চার ওপরে হস্তক্ষেপের যৌক্তিকতা আপনি নিজেই তৈরি করছেন।’

    কিন্তু বাস্তবতা এই যে, অন্তত মুসলিম ভূখ-গুলোতে সংখ্যা-গরিষ্ঠতার কোনো ‘জোর’ নেই, সুতরাং ‘যুক্তি’ও নেই। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোর ও যুক্তি থাকলে আমাদের এই কলমবাজ বন্ধুরা এভাবে কলম চালনা করতে পারতেন না। আর ‘অন্যায় হস্তক্ষেপ’? এ-ও আজকাল ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা’র জোরে হয় না; হয় ‘পৃষ্ঠপোষকতা’র জোরে। শাহবাগে এক বৃদ্ধ মুসলিমের শুভ্র দাড়ির উপর যে অপবিত্র হস্তক্ষেপ হয়েছিল তা কি সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোর ও যুক্তিতে হয়েছিল না পৃষ্ঠপোষকতার যুক্তি ও জোরে? আরো অনেক দেয়া যাবে। কিন্তু থাক্ কথা কম বলাই নিরাপদ। এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণই আজ সবচেয়ে বেশি মাযলুম। ক্ষেত্র বিশেষে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। পক্ষান্তরে পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্তগণই সবচেয়ে বেশি শক্তিমান। ক্ষেত্রবিশেষে দেশের প্রথম শ্রেণির নাগরিক।

    এখনকার বাকপটু কলমসমাজ বন্ধুদের প্রচারণায় কারো কারো মনে এ প্রশ্নও জাগতে পারে যে, ধর্ম-নিরপেক্ষতার মাধ্যমে তো সাম্প্রদায়িকতার পথ রুদ্ধ হয়। সুতরাং এতে দোষের কী আছে!

    ধর্ম-নিরপেক্ষতার এই মূল্যায়ন পৃথিবীর কোনো কোনো ধর্মের ক্ষেত্রে সঠিক হলেও ইসলামের ক্ষেত্রে সঠিক নয়। ইসলাম যেহেতু ন্যায় ও ইনসাফের ধর্ম তাই এর শিক্ষা-বিধানে কোনো প্রকারের যুলুমের অবকাশ নেই। সাম্প্রদায়িকতারও অবকাশ নেই।

    সাম্প্রদায়িকতা বিষয়ে ইসলামের শিক্ষাগুলোর দিকে নজর দিলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠবে। ইসলাম সাম্প্রদায়িকতাকে কীভাবে চিহ্নিত করে? একজন সাহাবী রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন ‘আসাবিয়্যাত’ (সাম্প্রদায়িকতা) কী? জবাবে তিনি ইরশাদ করলেন, অন্যায় কাজে স্বগোত্র-স্বজাতির পক্ষে দাঁড়ানো। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫০৭৮

    অর্থাৎ অন্যায় ও যুলুমে কাউকে শুধু এ জন্য সমর্থন করা যে, সে তার নিজ দল, গোত্র, জাতি ও ধর্মের লোকÑ এটাই সাম্প্রদায়িকতা।

    সুনানে আবু দাউদের অন্য বর্ণনায় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষকে আসাবিয়্যাত (সাম্প্রদায়িকতা)-এর দিকে আহ্বান করবে (অর্থাৎ অন্যায় কাজে নিজ দল, গোত্র, জাতিকে সাহায্য করতে বলবে) সে আমাদের (মুসলমানদের) দলভুক্ত নয়। যে এমন সাম্প্রদায়িকতার কারণে মৃত্যুবরণ করবে সেও আমাদের দলভুক্ত নয়। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫০৮০

    আর বিদায় হজ্বের বিখ্যাত ভাষণের কথা তো সকলেরই জানা। যেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছিলেন, ভাষা, বর্ণ ও গোত্রের ভিত্তিতে কারো উপর কারো প্রাধান্য নেই। তিনি বলেছেন, কোনো আরব অনারবের উপর (শুধু ভাষার কারণে) প্রাধান্য পাবে না। কোনো সাদা (তার বর্ণের কারণে) কালোর উপর প্রাধান্য দাবি করতে পারবে না। প্রাধান্যের একমাত্র ভিত্তি হবে তাকওয়া। Ñমুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৩৪৮৭

    উপরোক্ত হাদীসগুলো এবং কুরআন-সুন্নাহর সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আয়াত ও হাদীস-আসারগুলো অধ্যয়ন করলে যে কোনো চিন্তাশীল মানুষ উপলব্ধি করবেন যে, ইসলামের ব্যাখ্যায় সাম্প্রদায়িকতার আওতা কত বিস্তৃত এবং কত কঠোরভাবে ইসলাম এর নিন্দা ও বিরোধিতা করে।

    কিন্তু আধুনিক ইউরোপ মানুষকে দেশ, বর্ণ, দল ও ভাষার ভিত্তিতে বিভক্ত করে পুনরায় ইসলাম-পূর্ব জাহিলিয়াত-যুগেই নিয়ে গেছে। এখন দলের লোক, গোত্রের লোক, সম্প্রদায়ের লোক, নিজ পেশার বা গ্রুপের লোক কিংবা দেশের লোক যত অন্যায়ই করুক তার সম্প্রদায়ের লোকেরা তার পক্ষই অবলম্বন করবে। অন্য পক্ষ যতই মাযলুম, অসহায়, নির্যাতিত হোক তার প্রতি সদয় হবে না । আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো, ছাত্রসংগঠনগুলো, বিভিন্ন পেশাজীবী সম্প্রদায় এবং তাদের কর্মকা-ে তা স্পষ্ট। দলের সর্বোচ্চ ব্যক্তি যত বড় মিথ্যা বক্তব্যই দিক তারা সেটা প্রচার করতে থাকবে। দলীয় পরিচয়ে কোনো নেতাকর্মী যত অপকর্মই করুক তারা সেটিকে দোষই মনে করবে না এবং বেশি চাপে পড়ে গেলে তা অস্বীকার করে দিবে। এমনিভাবে তাদের কোনো লোক কোনো সংখ্যালঘুর উপর আক্রমণ করলে বা তার জানমালের ক্ষতি করলেও তারা আক্রমণকারীর পক্ষেই যাবে এবং তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। এরপরও ওরা ধর্মনিরপেক্ষ সুতরাং অসাম্প্রদায়িক!!

    ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসকারী অমুসলিম সংখ্যালঘুদের জানমাল তো মুসলমানদের মতোই। বিশ্বজিৎ হত্যাকা-ের পর আলিমগণ ইসলামী বিধানের আলোকেই এর প্রতিবাদ করেছেন। কোনো মুসলমানের পক্ষে যেমন দেশের আইন মেনে বসবাসকারী অমুসলিমের উপর কোনো ধরনের নির্যাতনের সুযোগ নেই তেমনি অন্য কোনো মুসলিমকে এমনটি করতে দেখলে সাধ্যানুযায়ী এ অন্যায় কাজ থেকে নিবৃত্ত রাখার চেষ্টা করাও তার দায়িত্ব। তা না করে উল্টো জালেমকে সমর্থন করলে সেটি হবে চরম সাম্প্রদায়িকতা।

    তো সাম্প্রদায়িকতা দমনের একমাত্র হাতিয়ার হচ্ছে ইসলামী আদর্শে জাতিকে গড়ে তোলা, কুরআন-সুন্নাহ তথা শরীয়াহ অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করা। ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষাব্যবস্থা, সেক্যুলার রাষ্ট্রযন্ত্র কখনো সাম্প্রদায়িকতা-মুক্ত মানব জাতি উপহার দিতে পারে না।

    শুধু আমাদের দেশেই নয় প্রতিবেশী দুটি দেশের রাজনৈতিক-সাম্প্রদায়িক ঘটনা এবং পশ্চিমের দেশগুলোর স্কুল ও বিভিন্ন জনসমাগমস্থলে অস্ত্রধারীদের গুলির ঘটনা ও আক্রমণকারীর বক্তব্য পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছে যে, রাষ্ট্র সেক্যুলার নামধারী হলেও জাতি সাম্প্রদায়িকতামুক্ত হয় না। সুতরাং সাম্প্রদায়িকতা থেকে মুক্তির জন্য চাই ইসলামী আদর্শ ও শিক্ষা, ধর্মনিরপেক্ষতা নয়।

    আর একারণেই অমুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে মুসলিমগণ ধর্মনিরপেক্ষতাকে আত্মরক্ষার একটি কৌশল হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। ঐ সকল অঞ্চলের উগ্র সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতিতে এর যৌক্তিকতা অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু মুসলিম ভূখ-গুলোতে ইসলামী আদর্শই অমুসলিমদের জন্য অধিকতর স্বস্তি ও নিরাপত্তার উপায়। সুতরাং কলমবাজ বন্ধুদের বাস্তবতা-পরিপন্থী সমীকরণ-নীতি ও বাস্তবতা কোনো দিক থেকেই গ্রহণযোগ্য নয়।

    জানিনা কোন কারণে ২৮ বছর আগের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম-এর বিরুদ্ধে রিট নতুনকরে শুনানি এনে জনমনে শংকা ও ক্ষোভের সৃষ্টি করা হয়েছে। তবে শস্তির বিষয় হচ্ছে, বিজ্ঞ আদালত রিটটি খারিজ করে দিয়েছেন। এবার সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা কবে সরবে তার অপেক্ষা।

    নড়াচড়া শনাক্ত করে কাজ করবে টাচস্ক্রিন!

    ভবিষ্যতে স্মার্টফোনের স্ক্রিন স্পর্শ না করেই বিভিন্ন কাজ করা যাবে। মাইক্রোসফটের তৈরি নতুন প্রযুক্তির টাচস্ক্রিন কাজে লাগিয়ে এমনটি করা যাবে। ‘প্রি-টাচ সেন্সিং’ প্রযুক্তির টাচস্ক্রিনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ ধরনের সেন্সর। এটি স্ক্রিনের ওপরে ব্যবহারকারীদের হাতের নড়াচড়া শনাক্ত করেই সম্ভাব্য কাজের ধরন শনাক্ত করতে পারে। অর্থাৎ স্মার্টফোনে চালু থাকা ভিডিও বন্ধ করতে স্ক্রিনের ওপর আঙুল নাড়ালেই ভিডিও প্লেয়ারের বিভিন্ন অপশন দেখা যাবে। নতুন এ প্রযুক্তি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

    আজ শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালনের আহ্বান জামায়াতের

    জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে আজ বোরবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে সর্বাত্মক হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার নিজামীর রিভিউ খারিজ করে মৃত্যুদ- বহালের আদেশ দেয়ার পরই জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান হরতালসহ ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যে নিজামীর মুক্তির জন্য শুক্রবার দেশব্যাপী দোয়া দিবস ও গতকাল শনিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। হরতাল সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল। বিবৃতিতে বলা হয়, মাওলানা নিজামী শুধু বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমিরই নন, তিনি দেশের একজন জাতীয় নেতা ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলেমে দ্বীন। তিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামী সমাজ কায়েমের জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। তার দেশপ্রেম এবং পরিচ্ছন্ন ইমেজ সর্বমহলে স্বীকৃত। তিনি তার নির্বাচনী এলাকার জনগণের উন্নতি-অগ্রগতি প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। দেশের জনগণ তাকে ভালবাসেন এবং তার মুক্তি চান। ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে কালবিলম্ব না করে তাকে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিবৃতিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে ঘোষিত হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সর্বাত্মক হরতাল সফল করার জন্য আমি জামায়াতের সকল শাখা এবং কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, ওলামায়ে-কেরাম ও পেশাজীবীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তথা দেশের আপামর জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। তবে হরতালে অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ী, হাসপাতাল, ঔষধের দোকান, ফায়ার সার্ভিস ও সংবাদপত্রের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।

    আমেরিকার সাথে নিরাপত্তা চুক্তি নবায়নের ক্ষেত্রে জাপানের পুনর্বিবেচনা করা উচিতঃ ইশিবা

    প্রতিরক্ষা নীতি বিশেষজ্ঞ একজন অভিজ্ঞ জাপানি আইনপ্রণেতা বলেছেন জাপান যদি তার যুদ্ধ বিরোধী সংবিধান সংশোধন করে তবে আমেরিকার সাথে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তিকে পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

    “বিষয়টি নিয়ে জরুরি ভাবে বিবেচনা করা উচিত” শিগেরু ইশিবা বলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র মন্ত্রী সভার একজন সদস্য। শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সুসংহত করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা চুক্তি এবং স্ট্যাটাস অফ ফোর্স এগ্রিমেন্ট পর্যালোচনা করার উপদেশ দেন।

    ১৯৬০ সালের চুক্তি পরিবর্তনে আবে প্রশাসন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না নেয়ায় সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইশিবা বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছেন।

    নিরাপত্তা চুক্তি অনুসারে কেবলমাত্রা আমেরিকা জাপানের প্রতিরক্ষায় দায়বদ্ধ।

    আবে সরকারের বক্ত বক্তব্য হচ্ছে, মিত্রবাহিনীর সুরক্ষায় জাপানের সেনাবাহিনী ব্যবহারের আইন সংশোধনটি প্রয়োজনীয় ছিলো -ইশিবা বলেন।

    যদি সংবিধান সংশোধন করাই হয় তবে জাপানের অবশ্য নিরাপত্তা চুক্তি এবং জাপানে মার্কিন বাহিনীর কার্যক্রম পরিচালনাকারী দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা পুর্নবিবেচনা করা উচিত।

    সামান্য কাজও সামান্য নয়

    মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ

    মানুষের সব কাজ গুরুত্বপূর্ণ। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছেÑ

    فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ    وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ .

    যে যাররাহ পরিমাণ ভালো কাজ করবে সে তা দেখতে পাবে। আর যে যাররাহ পরিমাণ মন্দ কাজ করবে সেও তা দেখতে পাবে। Ñসূরা যিলযাল (৯৯) : ৭-৮

    আবু যর গিফারী রা. বলেন-

    قال لي رسول الله صلى الله عليه و سلم : لا تحقرن من المعروف شيئاً ولو أن تلقى أخاك بوجه طلق.

    আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন, ‘কোনো ভালো কাজকে সামান্য মনে করো না। যদিও তা হয় তোমার ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ।’

    ইমাম মুসলিম রাহ. “সহীহ মুসলিমে” ‘কিতাবুল বিররি ওয়াস সিলাহ’ শিরোনামের অধীনে এই হাদীসটি এনেছেন । হাদীস ও ফিকহের কিতাবে বিভিন্ন শিরোনামের শুরুতে ‘কিতাব’ শব্দটি আসে। এখানে ‘কিতাব’ মানে অধ্যায়। তাহলে ‘কিতাবুল বিররি ওয়াসসিলাহ’ অর্থ আলবির ওয়াস সিলাহ অধ্যায়। ‘আল বির’ (البر) অর্থ সদাচার। আর ‘আস সিলাহ’ (الصلة) অর্থ, সম্পর্ক রক্ষা। তো সহীহ মুসলিমের এই অধ্যায়টির শিরোনাম ‘সদাচার ও সম্পর্ক রক্ষা’।

    আমরা যদি হাদীসের কিতাবের শুধু শিরোনামগুলো মনোযোগের সাথে পাঠ করি তাহলে ইসলামের শিক্ষার বহু দিগন্ত আমাদের সামনে উন্মোচিত হবে। ইসলাম সম্পর্কে আমাদের অনেকের ধারণাই খ-িত ও সীমাবদ্ধ। কেউ মনে করেন, শুধু ইবাদত-বন্দেগী হচ্ছে ধর্মের ও ইসলামের বিষয়। কেউ আরেকটু অগ্রসর হয়ে আরো কিছু বিষয়, বিবাহ-শাদী ইত্যাদিকেও ইসলামের অন্তর্ভুক্ত মনে করেন। কেউ আরো কিছু বিষয়কে। কিন্তু বাস্তবতা এই যে, ইসলামের শিক্ষা অনেক বিস্তৃত। সহজে বোঝার জন্য বলতে পারি, ব্যাপক অর্থে জীবনের যত অধ্যায়, ইসলামের শিক্ষারও তত অধ্যায়। জীবনের প্রতিটি অনুচ্ছেদ-পরিচ্ছেদ ইসলামের শিক্ষা ও বিধানের শামিল। আর জীবন শুধু ইহজীবন নয়, ইহজীবনের পর আছে পরকালের জীবন। এই উভয় জীবন তার পূর্ণ বিস্তৃতি সহকারে ইসলামী শিক্ষার বিষয়বস্তু। তো ইসলামের বিস্তৃতি সম্পর্কে ধারণা অর্জনের এক সহজ উপায় এই যে, বিষয়ভিত্তিক বিন্যাসে সংকলিত হাদীসের কোনো বড় কিতাব হাতে নিন, যেগুলোতে মুহাদ্দিসগণ ইসলামী শিক্ষার অধিকাংশ দিক সম্পর্কে হাদীস ও আছার সংকলন করেছেন। এরপর শুধু তার সূচিপত্রে নজর বুলান। তাহলেও বোঝা যাবে ইসলামী শিক্ষা কত বিস্তৃত।

    যাই হোক, সহীহ মুসলিমের একটি অধ্যায়ের নাম, ‘কিতাবুল বিররি ওয়াস সিলাহ’ সদাচার ও সম্পর্ক রক্ষা। এই অধ্যায়ে চল্লিশ-পঞ্চাশটি বা তারও বেশি শিরোনাম রয়েছে। আর প্রতিটি শিরোনামে রয়েছে এক বা একাধিক হাদীস।

    এই শিরোনামের কাছাকাছি আরেকটি শিরোনাম, ‘কিতাবুল আদব’ আদব-অধ্যায়। হাদীসের যে কোনো কিতাব হাতে নিন। বিশেষ করে কুতুবে সিত্তা; সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, সুনানে আবু দাউদ, জামে তিরমিযী, সুনানে নাসায়ী ও সুনানে ইবনে মাজাহ এই সকল কিতাবের যে কোনোটি হাতে নিন, তাতে একটি অধ্যায় পাবেন কিতাবুল আদব বা আদব অধ্যায়। এই অধ্যায়ের বিষয়বস্তু কী? এই অধ্যায়ে মুহাদ্দিসগণ রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যেসকল হাদীস সংকলন করেছেন তা মৌলিকভাবে দু’টি বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত। এক. স্বভাব-চরিত্র। দুই. আচার-আচরণ। তাহলে হাদীসের কিতাব থেকে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস ও সীরাত থেকে জীবনের যেসব অধ্যায়ে আলো গ্রহণের প্রয়োজন তন্মধ্যে সদাচার, সম্পর্ক রক্ষা, আচার-আচরণ, স্বভাব-চরিত্র ইত্যাদিও শামিল। শুরু থেকেই আমাদের মুহাদ্দিসগণ এ সংক্রান্ত হাদীস ও আছার সংকলন করে এসেছেন।

    ‘কিতাবুল বিররি ওয়াসসিলাহ’য় (সদাচার ও সম্পর্ক রক্ষা অধ্যায়ে) একটি অনুচ্ছেদ আছেÑ

    باب استحباب طلاقة الوجه عند اللقاء

    অর্থাৎ ‘হাসিমুখে সাক্ষাৎ কাম্য ও পছন্দনীয় হওয়া।’ সহীহ মুসলিমের এই অনুচ্ছেদ-শিরোনামগুলো ইমাম মুসলিম রাহ. দেননি; এসব শিরোনাম দিয়েছেন সহীহ মুসলিমের বিখ্যাত ভাষ্যকার ইমাম নববী রাহ.। এই শিরোনামে হযরত আবু যর গিফারী রা.-এর ঐ হাদীস উল্লিখিত হয়েছে যে, আমাকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনÑ

    لا تحقرن من المعروف شيئاً ولو أن تلقى أخاك بوجه طلق.

    “তুমি কোনো ভালো কাজকে সামান্য মনে করো না, যদিও তা হয় তোমার ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ।”

    এই হাদীসে একজন মুসলিমের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎকেও ‘মারূফ’ ও ভালো কাজ বলা হয়েছে এবং এই ভালো কাজের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। স্বয়ং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রিয় সাহাবীকে এই বিষয়ে উৎসাহিত করেছেন। তাহলে ধর্মীয় দিক থেকে একজন মুসলিমের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ কাম্য।

    আমরা বিভিন্ন সময় ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুস্তাহাব, মুস্তাহসান এই সকল পরিভাষা শুনে থাকি। শরীয়তের বিভিন্ন বিধানের পর্যায় ও গুরুত্ব বোঝাবার জন্য এই পরিভাষাগুলো ব্যবহৃত হয়। এই কাজটি ফরয, এই কাজটি ওয়াজিব, এই কাজটি সুন্নত, এই কাজটি মুবাহ, ইত্যাদি বিভিন্ন পরিভাষার মাধ্যমে শরীয়তে ঐ বিষয়টির বৈধতা ও কাম্যতার পর্যায় বোঝানো হয়ে থাকে। আমরা এই সকল বিষয়কে ধর্মীয় বিষয় মনে করি। যেমন আমরা বলি, পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়া ফরয। আমরা মনে করি পাঁচ ওয়াক্ত নামায ধর্মীয় কাজ। আর ধর্মীয় বিধানের দিক থেকে তা অপরিহার্য। এটা আদায় করতেই হবে, ছাড়া যাবে না। এরকম বিভিন্ন কাজকে আমরা ওয়াজিব বলি, সুন্নত বলি, মুস্তাহাব বলি। এগুলোকে আমরা ধর্মীয় কাজ মনে করি। এই যে ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত, মুস্তাহাবÑ এগুলোর গণ্ডিও অনেক বিস্তৃত। সচরাচর আমরা যেসকল কাজকে ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত, মুস্তাহাব মনে করি এর বাইরেও অনেক ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত, মুস্তাহাব আছে। আমাদের লেনদেন ও সামাজিক জীবনের অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলো ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত, মুস্তাহাবের পর্যায়ভুক্ত। তেমনি স্বভাব-চরিত্র ও আচার-আচরণগত অনেক বিষয় আছে, যা ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত-মুস্তাহাবের অন্তর্ভুক্ত।

    ইমাম মুসলিম রাহ. হযরত আবু যর গিফারী রা.-এর যে হাদীসটি এনেছেন এই হাদীসের উপর সহীহ মুসলিমের ভাষ্যকার ইমাম নববী রাহ. Ñযিনি অনেক বড় ফকীহ ও মুহাদ্দিস ছিলেনÑ শিরোনাম দিয়েছেনÑ

    استحباب طلاقة الوجه عند اللقاء

    ‘হাসিমুখে সাক্ষাৎ কাম্য ও মুস্তাহাব হওয়া’। তাহলে হাসিমুখে সাক্ষাৎও একটি ধর্মীয় কাজ।

    দেখুন, এটা ইসলামের এক অনুপম বৈশিষ্ট্য। ইসলামী শরীয়ত মানুষের জীবনের প্রতিটি আচরণের উপর ধর্মীয় বিধান আরোপ করেছে। মানব-জীবনের কোনো আচরণ এমন নেই, যে সম্পর্কে ফরয, ওয়াজিব, মুস্তাহাব, মুবাহ, মাকরূহ, হারাম ইত্যাদি বিধান আরোপিত হয় না।

    তাহলে এটাও জানা গেল যে, ধর্মীয় কাজ আমরা যতটা সীমাবদ্ধ মনে করি ততটা সীমাবদ্ধ নয়। শুধু নফল নামায পড়াই ধর্মীয় কাজ নয়। নিঃসন্দেহে নফল নামায পড়া অনেক বড় ধর্মীয় কাজ। দান-সদকা করা অনেক বড় ধর্মীয় কাজ। একইভাবে একজন মুসলিমের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাও একটি ধর্মীয় কাজ। একটি মুস্তাহাব ও পছন্দনীয় আমল। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি সুন্নাহ। প্রিয় সাহাবী হযরত আবু যর গিফারী রা.-কে তিনি এ বিষয়ে উৎসাহিত করেছেন।

    এ হাদীসে মুসলিম ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ হচ্ছে  একটি উদাহরণ। আল্লাহর রাসূল একটি মূলনীতি উল্লেখ করে এই বিষয়টি উদাহরণ হিসেবে এনেছেন। মূলনীতিটি হচ্ছে

    لا تحقرن من المعروف شيئاً “তুমি কোনো ভালো কাজকেই সামান্য মনে করো না।” এটা করণীয় সম্পর্কে এক বড় মূলনীতি। কোনো ভালো কাজকে সামান্য মনে করে ত্যাগ করো না। এটা যদি আমরা ভালোভাবে বুঝি তাহলে অনেক রকমের বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত হতে পারি।

    সামান্য মনে করার বিভিন্ন কারণ হতে পারেÑ কাজটি ছোট বলে সামান্য মনে করা, নিজের অবস্থার নিরিখে কাজটিকে সামান্য মনে করা ইত্যাদি। অনেক মানুষের এমন ধারণা আছে যে, আমি তো অনেক গুনাহ করেছি, অনেক পাপ করেছি, আমার সামান্য নেক আমলে আর কী হবে? না, ইসলামী শরীয়ত বলে, তুমি সামান্য নেক আমলকেও সামান্য মনে করো না। হতে পারে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই ভালো কাজের বিনিময়ে তোমাকে আরো ভালো কাজ করার তাওফীক দান করবেন এবং হতে পারে এই ভালো কাজের কারণে আল্লাহ তোমাকে মাফ করে দিবেন। সুতরাং কোনো ভালো কাজকে সামান্য মনে করো না।

    ভালো কাজ কাকে বলে? ইবাদত-বন্দেগীও ভালো কাজ। এই মূলনীতি ইবাদত-বন্দেগীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আমি মসজিদে এসেছি। জামাত আরম্ভ হতে এক মিনিট সময় বাকী আছে। এক মিনিটে দুই রাকাত নামায পড়তে পারব না, কিন্তু আধা পৃষ্ঠা কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করতে পারব। দশবার

    سبحان الله والحمد لله ولا إله إلا الله والله أكبر.

    বলতে পারব। তো হাদীসের নির্দেশনা হল, এখন যেহেতু দশবার সুবহানাল্লাহ বলার সময় আছে, আধা পৃষ্ঠা কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করার সময় আছে, একে কাজে লাগাই এবং কিছু ভালো কাজ, কিছু ইবাদত করে নিই। যদি এই চেতনা থাকে তাহলে মসজিদে আসার পর অযথা গল্পগুজবে, গীবত-শেকায়েতে সময় নষ্ট হবে না। এই জন্য আমাদের বুযুর্গানে দ্বীন তাদের সংশ্লিষ্টদের এই শিক্ষা দিয়েছেন যে, মসজিদে এসেছ, এক মিনিট সময় আছে, একটি আয়াত তিলাওয়াত করার সময় আছে, কুরআন মাজীদ খুলে একটি আয়াত তিলাওয়াত কর। আল্লাহ পাক এই এক আয়াতের আজর ও সওয়াব তোমাকে দান করবেন। আর আখেরাতে কিয়ামতের দিনে এই এক আয়াতের আজর ও সওয়াবেরও প্রয়োজন হবে।

    এটা তো হল ইবাদত-বন্দেগী। এরকম মুআমালা-লেনদেন। লেনদেনের ক্ষেত্রেও ইচ্ছা করলে ছোট ছোট ভালো কাজ করা যায়। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীস শরীফে ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ পাক ঐ ব্যক্তিকে রহম করুন, যিনি নরম ও কোমলÑ বিক্রি করার সময়, কেনার সময় এবং হক ও প্রাপ্যের তাগাদা করার সময়। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ২০৭৬

    তো বেচা-কেনার সময় এমন হতে পারে যে, একটি জিনিসের বাজার দর দশ টাকা। বিক্রেতা কিছু বেশি চাচ্ছেন। আমি জানি তিনি বেশি চাচ্ছেন। এখন আমার দিয়ে দিলেও কোনো অসুবিধা হবে না। অন্য কারো হকও নষ্ট হবে না। তাহলে ঠিক আছে তাকে কিছু বেশিই দিলাম। যিনি বিক্রি করছেন, তিনি ক্রেতার অবস্থা দেখে বুঝছেন, বেচারা এক টাকা কম দিতে চাচ্ছে। এক টাকা কম নিলে আমারও কোনো সমস্যা হয় না, আমার পাশের যেসব ব্যবসায়ী তাদেরও সমস্যা হবে না। এটা একটা সামান্য বিষয়। তো ঠিক আছে আমি এক টাকা কমেই তাকে দিয়ে দিলাম।

    আচ্ছা, এতে তো কিছু হলেও স্বার্থ-ত্যাগের ব্যাপার রয়েছে। স্বার্থত্যাগ ছাড়াও হাসিমুখে কথা বলে, ক্রেতার উদ্দিষ্ট দোকানটি দেখিয়ে দিয়ে, ভালো মানের জিনিস সম্পর্কে ধারণা দিয়ে বা অন্য দোকান থেকে এনে দিয়ে, ভেজাল সম্পর্কে সতর্ক করে এবং আরো নানাভাবে একজন মানুষের উপকার করতে পারি। আমার প্রাপ্য আমি কারো কাছে পাই। আমি বুঝছি যে, এই মুহূর্তে তার দেওয়ার সামর্থ্য নেই, সে আসলেই অভাবী, তাকে ঋণ পরিশোধের সময় বাড়িয়েও দিতে পারি। তার সাথে নম্র-কোমল ব্যবহার করতে পারি। এতে আমার ক্ষতি নেই। তার অনেক উপকার। তো লেনদেনের ক্ষেত্রে ইচ্ছা করলেই মানুষের ছোট বড় উপকার করা যেতে পারে।

    আমরা রিকশায় চড়ি, বাসে চড়ি, রিকশাওয়ালা পাঁচ টাকা বেশি চাইল। রিকশার আরোহী যিনি তিনি হয়তো একটা হোটেলে বসে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করতেও কুণ্ঠা বোধ করেন না। আবার পাঁচ হাজারের সাথে পঞ্চাশ টাকা বখশিশও দিয়ে দেন। কিন্তু রিকশাওয়ালা যখন পাঁচ টাকা বেশি চায় তখন তিনি অগ্নিমূর্তি ধারণ করেন। রিকশাওয়ালাকে যদি পাঁচ টাকা বেশি দিয়ে দেই তাহলে কী অসুবিধা? ঐ মানুষটার একটু উপকার হল, আমার কোনো ক্ষতি হল না। এ শুধু মানসিকতার ব্যাপার। ইচ্ছা করলেই আমরা তা করতে পারি। মাঝে মাঝে এমনও তো করতে পারি যে, তোমার ভাড়া বিশ টাকা। নাও, তোমাকে আরো বিশ টাকা বখশিশ দিলাম। আপনি ঐ সময় ঐ রিকশাওয়ালা গরীব মানুষটির ঘর্মাক্ত মুখে আনন্দ ও কৃতজ্ঞতার যে অভিব্যক্তি দেখতে পাবেন অন্য অনেক স্থানে বিশ হাজার টাকা খরচ করেও তা পাবেন না। একজন গরীব মানুষের হাসিমুখের অনেক মূল্য।

    অনেক সময় দেখা যায়, বাসে হেল্পারের সাথে মারমুখী তর্ক-বিতর্ক। ভালো ভালো শিক্ষিত মানুষের দ্বারাও এটা হয়। এটা এখন এক ধরনের রেওয়াজ হয়ে গেছে। হেল্পারের সাথে, রিকশাওয়ালার সাথে তর্ক-বিতর্ক করা, কষাকষি করাকেই কিছু মানুষ বীরত্ব মনে করেন। আসলে এটা বীরত্ব নয়। বীরত্বের ক্ষেত্রগুলোতে আমরা অনেকেই বীরত্ব প্রদর্শন করতে পারি না। সমাজের দরিদ্র অভাবী অশিক্ষিত মানুষগুলোর সাথেই আমাদের বীরত্ব! এটা ঠিক যে, অশিক্ষিত হওয়ার কারণে ওদের আচরণও সব সময় সভ্য-শালীন হয় না। কিন্তু সে তো অশিক্ষিত। আল্লাহ পাক আমাদের শিক্ষা-দীক্ষা দিয়েছেন। সভ্যতা ভব্যতা দান করেছেন। আমরা কেন ওদের পর্যায়ে নেমে আসব?

    সামাজিকতার ক্ষেত্রেও অনেক ছোট ছোট ভালো কাজের সুযোগ আমাদের সামনে আসে। এক গুরুত্বপূর্ণ ভালো কাজ, যা আমাদের জন্য খুব সহজ, কিন্তু প্রয়োজনগ্রস্তের জন্য অনেক বড়। তা হচ্ছে, আগন্তুককে পথ চেনানো। একজন মানুষ কোনো এলাকায় নতুন। যে বাসায় তিনি যাবেন তা খুঁজে পাচ্ছেন না। তার জন্য এটা অনেক বড় পেরেশানী। তার অনেক সময় ব্যয় হবে। অনেক পেরেশানী হবে। কিন্তু আমি যদি চিনিয়ে দিই, আমার জন্য খুব সহজ। আমি তো এই এলাকায়ই থাকি, এলাকার গলি কয়টা, বাসা কয়টা, কোন বাসা কোথায়, এগুলো সবই আমার জানা। আমি খুব সহজেই শুধু দু’টি বাক্য ব্যবহার করে, দুই মিনিট সময় ব্যয় করে এই ব্যক্তির সহযোগিতা করতে পারি। আমার জন্য খুবই সহজ। তার অনেক উপকার।

    এভাবে নিজের কোনো কাজের সাথে অরেকজনের একই ধরনের কাজটি করে দেওয়া সহজ। আমি টিউবওয়েল চেপে পানি নিচ্ছি বা অজু করছি, আরেকজন এল, দুই মিনিট সময় ব্যয় করে তার পাত্রটি ভরে দিলাম। দুটো চাপ দিয়ে তার অজু করা সহজ করে দিলাম। বাজার থেকে নিজের জিনিসের সাথে সঙ্গীর বা প্রতিবেশির টুকটাক জিনিসটি এনে দিলাম। এরকম কত কিছুই তো হতে পারে।

    বিখ্যাত মনীষী সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আরেকটি হাদীস বর্ণিত হয়েছেÑ

    الجنة أقرب إلى أحدكم من شراك نعله، والنار مثل ذلك.

    ‘তোমাদের জুতার ফিতার চেয়েও জান্নাত তোমাদের হাতের নাগালে আর জাহান্নামও তেমনি।’ Ñসহীহ বুখারী, কিতাবুর রিকাক, হাদীস ৬১২৩

    আল্লামা ইবনুল জাওযী রাহ. বলেন, হাদীসের অর্থ, জান্নাতে যাওয়া খুব সোজা। শুধু নিয়ত শুদ্ধ কর আর আল্লাহর হুকুম মান। তেমনি জাহান্নামের যাওয়াও কঠিন নয়। মনমতো চল আর গুনাহ কর।

    ইবনে বাত্তাল রাহ. বলেন, উপরের হাদীসে এই বার্তা আছে যে, আল্লাহর ফরমাবরদারী জান্নাতে পৌঁছায় আর আল্লাহর না-ফরমানী জাহান্নামে নিক্ষেপ করে। আর কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফরমাবরদারী ও নাফরমানী দুটোই হয় খুব সহজ কাজে।

    উপসংহারে সহীহ বুখারীর ভাষ্যকার ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. বলেন, সুতরাং প্রত্যেকের কর্তব্য, সামান্য ভালো কাজও সামান্য ভেবে ছেড়ে না দেওয়া। আর সামান্য গুনাহতেও সামান্য ভেবে লিপ্ত না হওয়া। কারো তো জানা নেই, কোন ভালো কাজটি তার জন্য আল্লাহর করুণা বয়ে আনবে। তেমনি কোন মন্দ কাজ তাকে আল্লাহর নারাজির শিকার করবে। Ñফতহুল বারী ১১/৩২১

    দেখুন, এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার এই যে, মানুষ যখন একটি নেক আমল করে আল্লাহ পাক এর বিনিময় এভাবেও দান করেন যে, তার আরেকটি নেক আমলের তাওফীক হয়। সুতরাং ছোট ছোট ভালো কাজের মাধ্যমে বড় বড় ভালো কাজেরও তাওফীক হয়ে যায়।

    আর সব কথার শেষ কথা হচ্ছে, ইসলামের এই যে এত সব শিক্ষা ও নির্দেশনা এর সারকথা কী? একজন বড় জ্ঞানী ব্যক্তি অনেক কিতাব-পত্রের মাঝে বসে গবেষণা করছেন। এক মাজযুব মানুষ এসে হঠাৎ করে সেই বড় আলিমকে জিজ্ঞাসা করলেনÑ

    هل تعلم ما تقول هذه الكتب؟

    আপনি জানেন কি আপনার চারপাশের এই বই-পত্র আপনাকে কী বলছে? আলিম সাহেব বুঝতে পারলেন, এই মানুষটির মনে বিশেষ কোনো ভাবের উদয় ঘটেছে। তিনি বললেন, আপনিই বলে দিন, এই সকল বই-পত্র আমাকে কী বলছে? ঐ মাজযুব বললেন, এই সকল বই-পত্র আপনাকে বলছেÑ

    كن رجلا صالحا

    ‘তুমি একজন ভালো মানুষ হয়ে যাও’।

    তো আমাদের সকল শিক্ষা-দীক্ষা, সেটা জাগতিক শিক্ষা হোক বা ধর্মীয় শিক্ষা, প্রকৃত অর্থে যা শিক্ষা তার সারকথা হচ্ছে كن رجلا صالحا ‘তুমি একজন ভালো মানুষ হও’।

    রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পবিত্র হাদীসে এবং তাঁর মোবারক সীরাত ও জীবনাদর্শে আমাদেরকে ভালো মানুষ হওয়ার শিক্ষাই দান করে গেছেন। আল্লাহ পাক আমাদেরকে তাঁর সীরাত ও হাদীস থেকে নূর ও আলো গ্রহণের তাওফীক দান করুন। আমীন।

    পৃথিবীর ৯৯.৯৯ শতাংশ প্রজাতি এখনো অনাবিষ্কৃত   

    মানুষকে বলা হয় সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষের সেরা হওয়ার যতগুলো কারণ আছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে, মানুষই সর্বপ্রথম পৃথিবীর অন্য প্রাজাতির প্রাণীদের অনুসন্ধান করতে শুরু করে। সেই অনুসন্ধান এখনো চলছে। মানুষ গহীন জঙ্গলে, পর্বতে, গুহায়, গভীর সমুদ্রে যেমন খুঁজছে প্রাণের সন্ধান, তেমনি খুঁজছে মহাশূন্যে। কিন্তু পৃথিবীতে ঠিক কত প্রজাতির প্রাণী রয়েছে সেই বিষয়ে মানুষের জ্ঞান যে অতি ক্ষুদ্র সেটা বেরিয়ে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। পৃথিবীর ৯৯.৯৯ শতাংশ প্রাণীই এখনো অনাবিষ্কৃত! ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীতে আরও এক ট্রিলিয়ন (এক হাজার কোটি) প্রজাতির প্রাণী রয়েছে যার কথা বিজ্ঞানীরা এখনো পর্যন্ত জানে না। অর্থাৎ ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ এখনো আমাদের অজানা। এই গবেষণা যদি সত্যি হয় তাহলে মোট প্রাণী প্রজাতির মাত্র ১ শতাংশ আমরা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার করতে পেরেছি। এই গবেষণার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে, গবেষকরা বলেছেন, প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা নির্ণয়ের এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে জেনেটিক সিকুয়েন্সিং টুল বা জিনের ধারাবাহিকতা নির্ণয়ক যন্ত্র দিয়ে। এই যন্ত্রের মাধ্যমে একটি সম্প্রদায়ের সামগ্রিক প্রজাতি সংখ্যা নির্ণয় করা যায়। গবেষণার লেখক এবং ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী জে লেনন এবং কেন লোসে অনু-পরমাণু পর্যায়ের ফাঙ্গাই থেকে শুরু করে বড় আকৃতির স্তন্যপায়ী প্রাণীদের একটি তালিকা তৈরি করেছেন। ঐ তালিকার মিশ্রণ থেকে স্কেলিং ল বা পরিমাপ আইন ব্যবহার তারা প্রাণী ও উদ্ভিদের মোট প্রজাতির সংখ্যা বের করেছেন। লেনন বলেছেন, ‘জীবাণুদের মধ্যে যে কি পরিমাণ বৈচিত্র্য রয়েছে সেটা আমাদের কল্পনাতেও ছিল না।’ লেনন এবং লোসে আবিষ্কার করেছেন, এই পর্যন্ত যত জীবাণু আবিষ্কৃত হয়েছে তার এক লাখ গুণ বেশি জীবাণু এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। আরও ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) জীবাণু নিয়ে গবেষণা করতে হবে। জনপ্রিয় বিজ্ঞান ভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘আইএফএল সাইয়েন্স’কে বিজ্ঞানী লোসে বলেছেন, এই অনাবিষ্কৃত মাইক্রোঅর্গানিজম বা অতি ক্ষুদ্র জীবাণুদের নিয়ে গবেষণা করাটা মোটেই হেলাফেলার বিষয় নয়। কারণ এই গবেষণাই আমাদের নিজেদের উৎপত্তির কারণ খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে। লোসে বলেন, এটা অনেকটা মহাশূন্যের গালাক্সি কিংবা আমাদের মিল্কিওয়ে বা আকাশ গঙ্গা ছায়াপথ পর্যবেক্ষণ করার মত। মহাবিশ্বের বিশালত্ব নিয়ে অতি বৃহৎ গবেষণা আর ক্ষুদ্র জীবাণুর অতি ক্ষুদ্রতা নিয়ে গবেষণার একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। কিন্তু মিলটা হচ্ছে দুটোই অসীম বৈচিত্র্যময়। পৃথিবীতে আমাদের আবির্ভাবের কারণ খুঁজতে হলে এই দুই গবেষণাই জরুরি।

    পবিত্র শবে মিরাজ

    Posted by admin on May 4
    Posted in Uncategorized 

    পবিত্র শবে মিরাজ   

    পবিত্র শবে মিরাজ। মহান আল্লাহ তায়ালার দীদার লাভ এবং সমগ্র সৃষ্টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অবলোকনের জন্য আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় মহানবী (সা.)-এর বিশেষ ভ্রমণ বা ঊর্ধ্বগমনই পবিত্র মিরাজের ঘটনা। মহানবী (সা.) এর অসংখ্য মোজেজার মধ্যে পবিত্র মিরাজ অন্যতম শ্রেষ্ঠ মোজেজা। মিরাজ শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বগমন। মক্কা শরীফ হতে বায়তুল মোকাদ্দাস (ফিলিস্তিন) এবং বায়তুল মোকাদ্দাস হতে ঊর্ধ্বে গমন, সপ্তআকাশ ভ্রমণ নবীগণের সাথে সাক্ষাৎ, বেহেস্ত, দোজখ, দর্শন এবং সিদরাতুল মোনতাহা পর্যন্ত গমন। সিদরাতুল মোনতাহা থেকে রফরফের মাধ্যমে আরশে আযীমে গমন, সেখান থেকে লা-মাকান ভ্রমণ এবং আল্লাহর দীদার ও সান্নিধ্য লাভ। সেখান থেকে পুনরায় পৃথিবীতে (মক্কায়) আগমন। এই বিস্ময়কর সফর বা ভ্রমণকেই এক নামে মিরাজ বলা হয়। মক্কা থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস, সেখান থেকে সপ্ত আকাশ পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মোনতাহা তার ওপরে ৩৬ হাজার বছরের পথ পাড়ি দিয়ে আরশে গমন এবং সেখান থেকে ৭০ হাজার নূরের পর্দা অতিক্রম করে (এক পর্দা হতে অপর পর্দার দূরত্ব ৫শ’ বছরের রাস্তা) একেবারে নির্জনে দীদারে এলাহীতে পৌঁছে সেখানে আল্লাহ তায়ালার সাথে ৯০ হাজার বাক্যবিনিময় করে মহানবী (সা.) পুনরায় মক্কায় ফিরে এসেছিলেন। প্রিয় নবী নুরুন্নবী (সা.)-এর মিরাজ ছিল বাস্তব, শারীরিক ও আধ্যাত্মিক ঘটনা। মিরাজের বাস্তবতার সাক্ষী হচ্ছেন মহান আল্লাহ তায়ালা ও তার পবিত্র কোরআন (সূরা বনী ইসরাইলের ১ম আয়াত ও সূরা নজমের ১ম থেকে ১৭ নং আয়াত) সাক্ষী হচ্ছেন স্বয়ং রাসূল (সা.)-এর হাদীস শরীফ। এছাড়া ৩০ জন সাহাবী মোতাওয়াতির বর্ণনা দ্বারাও মিরাজের বাস্তবতা প্রমাণিত তাফসীর গ্রন্থ কানযুল ঈমান। এছাড়া সাক্ষী হচ্ছে স্বয়ং জিব্রাইল (আঃ সা.) ও সকল ফেরেশতা (তাফসীরে জালালাইন শরীফের ২২৯ পৃষ্ঠা), আরো সাক্ষী হলেনÑ হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.আ.) ও হযরত মা উম্মেহানী (রা. আনহা) আরো সাক্ষী হচ্ছে বিজ্ঞান। মিরাজের বিষয়ে কিছু কিছু তথাকথিত শিক্ষিত অজ্ঞরা বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা করে থাকেন। কিন্তু বৈজ্ঞানিকগণ মাধ্যাকার্ষণ শক্তি বরাতে মিরাজ সম্পর্কে বিতর্ক প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ, শূন্যে অবস্থিত কোন স্থলবস্তুকে পৃথিবী মাধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা সর্বদা এবং সমভাবে আকর্ষণ করতে পারে না একটা প্রমাণিত সত্য। তাছাড়া পৃথিবী থেকে কোন বস্তুকে ৬.৯০ সেকেন্ডে ৭ মাইল বেগে ঊর্ধ্বে ছুঁড়ে মারলে অথবা পরিচালিত করলে সে বস্তু আর মাধ্যাকর্ষণ বলের কারণে পৃথিবীতে ফিরে আসবে না। বৈজ্ঞানিকদের হিসাবে ঘণ্টায় ২৫ হাজার মাইল বেগে ঊর্ধ্বলোকে ছুটতে পারলে পৃথিবী হতে মুক্তিলাভ সম্ভব। আর এ গতিকে বলা হয় মুক্তগতি। এ মুক্তগতিতেই মহাশূন্য গবেষণা হচ্ছে। এতো গেল জড়পদার্থের কথা, কিন্তু মহানবী (সা.)-এর মেরাজ বিষয়টি আর একটু ভিন্ন। কারণ, মেরাজের বাহন ছিল আল্লাহ তায়ালার কুদরতি বাহন। আর নবীজী (সা.) ছিলেন মানবরূপের নূরদেহী। তার সৃষ্টি হচ্ছে আল্লাহতায়ালার জাতিনূর থেকে। তাইতো রাসূল (সা.)-এর দেহের কোন ছায়া ছিল না। রাসূল (সা.) নিজেই বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেন। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর নূর হতে এবং সমুদয় সৃষ্টি আমার নূর হতে (সুবহান আল্লাহ)। পবিত্র কোরআনের সূরা মায়িদার ১৫ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, নিশ্চয় তোমাদের কাছে এসেছে আমার নূর ও স্পষ্ট কিতাব। মিরাজের বিষয়ে অক্সিজেন না থাকার যে যুক্তি প্রদর্শন করা হয় সে ক্ষেত্রে সহজ জবাব হচ্ছে, ডিমের ভেতর বা মাতৃগর্ভে একটি সন্তান কিভাবে জীবিত থাকে। হযরত ইব্রাহীম (আ.) কে আল্লাহ তায়ালা নমরুদের অগ্নিকু-ে কিভাবে বেহেশতী পরিবেশে জীবিত রেখেছিলেন। মাছের পেটের ভেতর কিভাবে জীবিত রেখেছিলেন হযরত ইউনূস (আ.) কে। হযরত ইশা (আ.) কে আল্লাহ তায়ালা কিভাবে আকাশে নিয়ে রেখেছেন এবং তাঁকে আবার এ ধরণীতে এনে হযরত ইমাম মাহদী (আ.)-এর সাথে একত্র করাবেন ইহুদী নির্মূলে এবং ইসলামী বিশ্ব প্রতিষ্ঠায়। সুতরাং আল্লাহ তায়ালা যা ইচ্ছা করেন তাই হয়। এ ক্ষেত্রে কোন ব্যত্যয় নেই। নূরের যেমন কোন ওজন নেই তেমনি নূর দেহেরও কোন ওজন নেই। নূর দেহ আধ্যাত্মিকভাবে যখন যেখানে খুশি যেতে পারে। এটাও মেরাজের একটি যুক্তি। তাছাড়া একই বস্তু বা পদার্থ এক এক পরিস্থিতিতে একেক চরিত্র ধারণ করে। কয়লার চরিত্র এক এবং কয়লা থেকে প্রস্তুত হীরকের আর এক চরিত্র বা গুণ। পানি তরল পদার্থ। শক্ত অবস্থানে নিলে পানির বরফ দ্বারা ঘর তৈরি সম্ভব। আর যখন পানিকে বাষ্পে পরিণত করা হয় তখন সে মেঘলোকে উড়ে বেড়ায়। স্রষ্টা ছিলেন গুপ্ত, কিন্তু তিনি প্রকাশ হওয়ার জন্যই নবী করীম (সা.)কে সৃষ্টি করেছিলেন। আবার সমগ্র সৃষ্টিকে পরিপূর্ণরূপে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চেনানোর জন্যই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর হাবিব হযরত মোহাম্মদ (সা.)কে মিরাজের মাধ্যমে সমগ্র সৃষ্টি প্রত্যক্ষ করানো শেষে সামনা-সামনি সাক্ষাৎ দিয়েছিলেন। অর্থাৎ রাসূল (সা.)-এর আল্লাহ তায়ালার দীদার লাভ ঘটেছিল। আধ্যাত্মিক ও ইহলৌকিক বিষয়ে রাসূল (সা.) সর্বশ্রেষ্ঠ এটাই মেরাজের মূল কথা। তাই স্থান, কাল ও গতির ওপর মানুষের যে অপরিসীম শক্তি ও অধিকার আছে, জড়শক্তিকে মানুষ অনায়াসে আয়ত্ত করতে পারে। মানুষের মধ্যে যে বিরাট অতিমানব ঘুমিয়ে আছে মিরাজ একথাই আমাদের বুঝিয়ে দেয়। মিরাজের রাতে আল্লাহ তায়ালা রাসূল (সা.) কে প্রশংসার সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছিয়ে ছিলেন। আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ, তার মহিমা এবং সৃষ্টির যাবতীয় রহস্য তন্ন তন্ন করে নবীজী (সা.)কে দেখিয়েছেন। এর চেয়ে বড় সম্মান, বড় প্রশংসা এবং বড় যোগ্যতা অন্য কোন পয়গাম্বরের ভাগ্যে জোটেনি। তাই রাসূলুল্লাহ (সা.)ই আল্লাহ তায়ালার প্রকৃত পরিচয়দাতা, চরম প্রশংসাকারী। এতেই রাসূল (সা.)-এর ‘আহমদ’ নাম সার্থক হয়েছে। মূলকথা মিরাজ আমাদের লক্ষ্যে ও গন্তব্যে পৌঁছার পথের সন্ধান দেয়। মিরাজের স্মৃতি আমাদের অন্তরে জাগ্রত হলে আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্ব এবং তার নৈকট্য লাভ সম্পর্কে আমাদের ধারণা সুস্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন হয়। তাই সে মহামানবের প্রতি অগণিত দরুদ ও সালাম যিনি আমাদের জ্ঞানের পরিধি সম্প্রসারিত করে গেছেন।

    জাপান, ফ্রান্স সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাংকোয়িস হোল্যান্দে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী লড়াইয়ের পারষ্পরিক সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি করার বিষয়ে একমত হয়েছেন।

    তারা দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের চলমান সামরিকীকরণের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, পাশাপাশি স্থিতিশীল বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে মতৈক্য প্রকাশ করেন।

    “আমরা কখনোই সন্ত্রাসবাদের ঘৃণ্য কাজকে অনুমতি দেব না” হোল্যান্দে’র সাথে আবে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন “ঘনিষ্ঠ সমন্বয় এবং নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে আমরা এক সাথে কাজ করে যাবো।”

    ইউরোপ ট্যুরের অংশ হিসেবে আবে ফ্রান্স সফর করছেন। মে’র শেষে জাপানে জি৭ গ্রুপের বৈঠকের প্রাক্কালে মত বিনিময়ের উদ্দেশ্যে তার এই সফর। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আলোচনায় অন্যতম প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

    কিউশুতে ভুমিকম্প অব্যাহত

    দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের কিউশু অঞ্চলে ভূমিকম্প অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ২ সপ্তাহে কুমামোতো এবং ওইতা প্রিফেকচারে মোট ভূমিকম্পের সংখ্যা ছিলো ১,০৩৭টি।

    শুক্রবার সকালে দু’টি ৩ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে ইয়াৎসুশিরো এবং উকি এলাকায়। দু’টি স্থানই কুমামোতো এলাকায় অবস্থিত। একই দিন ওইতা প্রিফেকচারে বিকেল ৩টার পর আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে ইউফু শহরে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিলো ৪.৫।

    কুমামোতো’র ৭টি পৌরসভায় ক্রমাগত ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

    কর্মকর্তারা বলেছেন ১৭ জন নিহত হয়েছেন ভূমিকম্পের পরবর্তী শারীরিক ঝক্কি থেকে।

    কর্মকর্তারা এলাকার সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

    জাপানে বসন্তের ছুটি শুরুঃ শহর ত্যাগের ধুম

    জাপানে বার্ষিক “গোল্ডেন উইক” এর ছুটি শুরু হয়েছে।

    মহাসড়ক, রেলওয়ে এবং বিমানবন্দর গুলো শুক্রবার ভ্রমণ বা নিজ শহরে ছুটি কাটাতে শহর ছেড়ে যাওয়া মানুষদের ভীড় উপচে পড়ে।

    টোকিও এবং নাগোয়াকে সংযোগকারী তোমেই এক্সপ্রেসওয়ে যানবাহনের ভীড়ে যান চলাচল মন্থর হয়ে পড়ে। মহাসড়কটিতে ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। অন্যান্য এক্সপ্রেসওয়ে গুলোতেও প্রবল ভীড় লক্ষ্য করা যায়।

    রেলওয়ে কোম্পানি গুলো বলেছে টোকিও ছেড়ে যাওয়া ট্রেন ও অনেক শিনকানসেন লাইন গুলো শুক্রবার যাত্রীপূর্ণ অবস্থায় ছেড়ে যায়। কোনো কোনো ট্রেন যাত্রী ধারন ক্ষমতার দ্বিগুন যাত্রী বহন করে।

    বিমান সংস্থা গুলো বলছে শুক্রবার টোকিও এবং ওসাকা ছেড়ে যাওয়া প্রায় প্রতিটি আভ্যান্তরিন ফ্লাইট যাত্রীপূর্ণ ছিলো।

    ত্রাণ কাজে অসপ্রে বিমান ব্যবহারঃ জয় করেছে জাপানিদের হৃদয়

    মার্কিন বিমানবাহিনীর এমভি-২২ অসপ্রে পরিবহন বিমান মার্কিন ঘাঁটিতে মোতায়েন নিয়ে জাপানিরা গোড়া থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। ২০১৪ সালে যখন ২৪টি অসপ্রে বিমান ওকিনাওয়া’র মার্কিন ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয় সে সময় জাপানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিলো।

    মার্কিন বাহিনী জাপানের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকা গুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে ৮টি অসপ্রে মোতায়েন করেছে। এরমাধ্যমে জাপান ও মার্কিন পক্ষ আশা করছিলো সামরিক বাহিনীর জন্যে অসপ্রে বিমান কতোটা গুরুত্বপূর্ণ তা প্রদর্শন করা।

    গত সপ্তাহের ভূমিকম্পের পর একটি অসপ্রে বিমান কুমামোতো প্রিফেকচারের হাকুসুই গ্রামের একটি খেলার মাঠে অবতরণ করে। এরপর জাপানি কর্তৃপক্ষ বিমানটির ত্রাণ সরবরাহ নামানোর জন্যে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এক ঘন্টার ভেতরেই বিমানটির সকল ত্রাণ সামগ্রী নামিয়ে ফেলা হয়।

    মার্কিন ঘাঁটিতে অসপ্রে বিমান মোতায়েনের বিরোধীতাকারীরা বলেছিলেন, জনমত উপেক্ষা করে অসপ্রে বিমান মোতায়েন করা হয়েছে।

    বুধবার জাপানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী অসপ্রে বিমানের কার্যক্রম দেখে মুগ্ধ হয়েছেন।

    মার্কিন ঘাঁটি নিয়ে জাপানের জনমত সহসাই পরিবর্তিত না হলেও ত্রাণ কাজে বিমানটির ব্যবহার ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির সহায়ক হবে।

    হিজাব পরায় আবারো ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দিলেন ঢাবি শিক্ষক   

    হিজাব পরে ক্লাসে আসার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার বিভাগের শ্রেণিকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ড. আজিজুর রহমান আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের প্রভাবশালী সদস্য। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মনোবিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের একজন ছাত্রী বোরকা পরে ক্লাসে আসছিলেন। ওই শিক্ষক তাকে বোরকা পরে ক্লাসে আসতে নিষেধ করেন। একই সঙ্গে যতদিন হিজাব পরে আসবে ততদিন তার ক্লাসের উপস্থিতিও দেয়া হবে না বলে জানান তিনি। এ ঘোষণার পর বেশ কয়েকটি ক্লাসে ছাত্রীটির ক্লাসে উপস্থিতি দেননি ওই শিক্ষক। সহপাঠীরা জানান, ছাত্রীটি প্রতিটি ক্লাসে উপস্থিত থাকলেও আজিজুর রহমান তার নাম ডাকেন না এবং উপস্থিতিও দেন না। সর্বশেষ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ক্লাসেও একই ঘটনা ঘটায় ছাত্রীটি দাঁড়িয়ে তার হাজিরা দেওয়ার জন্য স্যারকে অনুরোধ করেন। ড. আজিজুর রহমান তাকে হিজাব খুলে ক্লাসে আসলে হাজিরা দেয়া হবে বলে জানিয়ে দেন এবং বলেন, তুমি কি ছাত্র না ছাত্রী সেটা কিভাবে বুঝব। বিশ্ববিদ্যালয়ে তোমার আইডেনটিটি কি? এর পরপরই তাকে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এ ঘটনায় কয়েকজন ছাত্রী প্রতিবাদ করলে তাদেরও ক্লাস থেকে বের করে দেন ওই শিক্ষক। তবে ঘটনাটি অস্বীকার করে প্রফেসর ড. আজিজুর রহমান বলেন, হিজাব পরার কারণে তাকে বের করে দেয়া হয়নি। ওই ছাত্রীটি শিক্ষক ও বয়স্ক ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করতে রাজি নয়। ওই দিনের ক্লাসেও সে আমার সঙ্গে অশ্রদ্ধাপূর্ণ আচরণ করেছে। যার কারণে তাকে ক্লাস থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রফেসর ড. এ এম আমজাদ বলেন, ঘটনাটি আমি শুনিনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো পোশাক নির্দিষ্ট করে দেয়া নেই। যেকোনো পোশাক পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসতে পারবে। উল্লেখ্য, গত বছরও আজিজুর রহমান বোরকা পরে আসার কারণে নাবিলা ইকবাল নামে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেন।

    কিউশুতে প্রায় ১০০ ভূমিধসের ঘটনা

    জাপানের ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ভূমিকম্প উপদ্রুত কিউশু অঞ্চলে প্রায় ১০০টির মতো ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।

    মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন চাক্ষুষ পরিদর্শনের মাধ্যমে পরিস্থিতি যাচাই এবং আকাশ থেকে তোলা ছবির মাধ্যমে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

    তারা বলেছেন সোমবার পর্যন্ত কুমামোতো প্রিফেকচারে ৬৯টি এবং ওইতা প্রিফেকচারে ১৪টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

    মিনামিআসো গ্রামে ২৮টি ভূমিধস হয়েছে এবং আসো শহরে ৯টি ভূমিধসের ঘ্টনা ঘটেছে।

    পঞ্চকন্যার পান্তা ইলিশ ও বৈশাখী শুভেচ্ছা

    জাকজমক ও পরম আতিথেয়তায় গেল রোববার টোকিওর কিতা কূর কামি নাকাজাতোস্থ তাকিনাগাওয়া কুমিন কাইকানে প্রবাসীরা ভিন্নধারার জমজমাট বৈশাখী আড্ডায় সমবেত হয়েছিলেন। বাঙালীর গভীরের সংস্কৃতির চিরন্তন রূপটি নানাভাবে ধরা পড়েছিল বর্নাঢ্য আয়োজনের মাঝে। রকমারী খাবার ,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,হাস্য কৌতূকের মাঝে ঘরোয়া খেলাধূলা,উপস্হাপনা আর ছিল আয়োজকদের সহৃদয় আন্তরিকতা দিয়ে আতিথীদের বরন।

    মূলতঃ পাঁচজন বধূ এই বিশাল কর্মযজ্ঞের কান্ডারী। বাইশ রকমের ভর্তা, ভাত,ইলিশ ভাজা সহ নানা স্বাদের বাহারী মূখরোচক খাবার,বিকেলের নানা পদের নাস্তা তৈরী করেছেন এনারা। তিন শতাধিক অতিথি
    আপ্যায়নের আয়োজন থাকলেও প্রায় চার শতাধিক অতিথি খেয়ে তৃপ্ত হয়ে ঘড়ে ফিরেছেন। আয়োজক আর অতিথির মধ্যে আন্তরিকতার ঘাটতি না থাকায় দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি ছিল প্রানবন্ত মনে হয়েছে যেন স্বদেশে,স্বজনদের সাথেই যেন বৈশাখী আনন্দে সবাই মাতোয়ারা।
    ওরা পাঁচজন, সাদ্ধি আহমেদ, শাহনাজ পারভিন শীলা, শায়লা হোসেন আন্নি, সাহারা আক্তার মিলি ও আফসানা তানি, ওরা প্রমান করলেন কেবলমাত্র বধূবেশে প্রবাসে সংসার ধর্ম পালন ছাড়াও কাজ করে উপার্জনের পাশাপাশি প্রবাস কমিউনিটির নানান আয়োজনে ওরা ভুমিকা রাখতে পারেন।অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথী রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা পঞ্চকন্যার প্রশংসায় অভিভুত হয়ে জানালেন, নারী হয়ে আমিও গর্বিত ওনাদের এই সাফল্যে। সহযেগিতায় ছিল ওদের জীবন সংগীরা।

    ইস্ত্রীরা রান্না করেছেন,ওরা বাজার করা আর অতিথি আপ্যায়নের ঝামেলা সামাল দিয়েছেন।

    উদ্যোক্তা পঞ্চযূগল সেজেছেনও যথাযথ। পূরুষরা সাদা সবূজ পাঞ্জাবী , মেয়েরা বৈশাখী সাজে,লাল সাদা শাড়ী, রেশমী চূড়ি,মাথায় ফুলের মালা,অবলিলায় বল্লেন,আমারা উদ্যোগ নিলেও অনেক ভাই ভাবী আমাদের পাশে এসে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওযায় আয়োজনটি সফল হয়েছে।

    অনুষ্ঠানে প্রবাসী কমিউনিটির প্রায় সকলেই সদলবলে এসেছেন।রাজনৈতিক,সামাজিক সকল সংগঠন,মিডিয়া কর্মী,জাপানে নতূন আসা একঝাক নবাগতদেরও দেখা মিলেছে।

    জাপান সফরে আসা কজন সরকারী কর্মকতা প্রবাসীদের এই সমাগম দেখে বিস্মিত হয়ে এই প্রতিবেদককে জানালেন,এতটা প্রানের উচ্ছাস তো এখন দেশেও চোখে পড়েনা।

    আনুষ্ঠানের নাম বৈশাখী পান্তা ইলিশ হলেও পান্তার দেখা মেলেনি।মা ইলিশ ও জাটকা রক্ষায় দেশে ইলিশ নিষিদ্ধ তাই বেশ কজন ইলিশ খান নি। তবে ভর্তার সম্ভার ছিল চোখে পড়ার মতো। ভর্তার নামগূলোও লেখা ছিল চমৎকারভাবে।অনুষ্ঠানটিকে “বৈশাখী ভর্তা ইলিশ” ও বলা যেতে পারে।

    এসো হে বৈশাখ এসো এসো
    তাপস নিশ্বাস বায়ে,
    মুমুর্ষকে দাও উড়ায়ে

    সাদ্ধি-শীলা-আন্নি-মিলি-তানি,পাঁচ কন্যা তোমাদের অভিবাদন।

    মুসলমানদের সম্পর্কে ভাষা ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে : ওবামা   

    ইসলাম ধর্মকে যারা বিকৃত করছে তাদেরকে সমাজের একটি ক্ষুদ্র অংশ হিসেবে বর্ণনা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে চরমপন্থা মোকাবেলায় আমাদের মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য রয়েছে যেখানে মুসলিম-আমেরিকানরা ঐতিহাসিকভাবে আমাদের সমাজেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি বলেন, ইসলামবিদ্বেষ কেবল ভুলই নয়, বাস্তবিক অর্থে এটা আত্মপরাজয়মূলক আচরণও। তিনি বলেন, মুসলমানদের সম্পর্কে ভাষা ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে এবং লোকজনের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কথা বলেন তিনি। লন্ডনে তরুণ সমাজের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে তিনি তরুণদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। নিরাপত্তা ও মুসলমানদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে ওবামা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো বৈচিত্র্যপূর্ণ সমাজগুলোতে জনগণকে নিরাপদ রাখা এবং সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধ করা আমাদের অন্যতম একটি বড় চ্যালেঞ্জ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হতাশাবাদ ও সবকিছুতে দোষ খুঁজে বেড়ানোর সংস্কৃতি প্রত্যাখ্যান করার জন্য তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান জানান। কিভাবে অগ্রগতি অর্জন সম্ভব এবং সমস্যার সমাধান করা যায় সে সম্পর্কে জানার জন্যও তিনি তাদের প্রতি আহ্বান জানান। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ইতিহাসের অধিকতর আশাবাদী ও সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি তরুণ সমাজকে গ্রহণ করতে হবে। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট গ্লোবাল থিয়েটার পরিদর্শন করেন এবং হ্যামলেট নাটকের অভিনয় প্রত্যক্ষ করেন। তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ একটি ইস্যু নিয়ে কাজ শুরু করে তাহলে তাকে গভীর মনোযোগের সঙ্গে করতে হবে। ইস্যুটির সমাধান এক বছরে না হলেও হতাশ হবে না। প্রচেষ্টা এবং আশা ছাড়বে না। তিনি বলেন, ৫ বছরেও যদি দারিদ্র্য নির্মূল করা না যায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের সবগুলো নিষ্পত্তি না হলেও কখনো হতাশাবাদিতায় নিজেকে সমর্পণ করবে না। অগ্রগতি হাতের মুঠোর বিষয় নয়, এর জন্য অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদি লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। ওবামা তরুণ সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার এই আলাপচারিতাকে উৎসাহব্যঞ্জক বলে বর্ণনা করে বলেন, এতে তিনি বেশ কিছু নতুন ধারণা পেয়েছেন। রাজনৈতিক বিরোধীদের সঙ্গে কাজ করা এবং মধ্যপন্থা খুঁজে বের করতে তার দক্ষতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, যেসব লোক শুধু আপনার কথায় সায় দেয় তাদের সঙ্গে কেবল সময় কাটালে আপনি আপনার অভিমতের প্রতি আরো বেশি একরোখা হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু যারা সব বিষয়ে আপনার সঙ্গে একমত নন তাদের খুঁজে বের করুন। তাতে আপনি সমঝোতার ব্যাপারে শিখতে পারেন। সমঝোতা মানে আত্মসমর্পণ নয়। নিজের বিশ্বাস বজায় রেখেও অন্যের সঙ্গে সমঝোতা গড়ে তোলা যায়। লন্ডন সফরকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনের সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হন। সফরের সময় ওবামা ইইউ ইস্যু নিয়েও প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখেন। ব্রিটেন ইইউতে থাকবে কি না সে বিষয়ে আগামী ২৩ জুন গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ব্রিটেনের উচিত ইইউতে থাকা ওবামার এই প্রকাশ্য মন্তব্য ব্রিটেনের অনেক নাগরিকই ভালোভাবে নেয়নি। তারা এটাকে ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিরিয়ায় মার্কিন স্থলবাহিনী মোতায়েনের কথা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, কেবল সামরিক প্রচেষ্টা দেশটির সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। বিবিসিকে তিনি বলেন, আসাদ সরকারকে উৎখাতে সিরিয়ায় স্থলবাহিনী পাঠানো যুক্তরাষ্ট্র বা ব্রিটেনের জন্য ভুল হবে। ওবামা আরো বলেন, ক্ষমতায় তার শেষ নয় মাস সময়ে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট ‘আইএসকে’ পরাজিত করা যাবে এটা তিনি মনে করেন না। তবে তাদের অভিযানের পরিধি ধীরে ধীরে সংকুচিত করতে পারি। বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, সিরিয়ার সহজ সমাধান আছে বলে তিনি মনে করেন না। সিরিয়ার দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার সমাধান করতে হলে কেবল সামরিক সমাধান একমাত্র পথ নয় এবং আমরা অবশ্যই সেখানে স্থলবাহিনী মোতায়েন করছি না। তিনি বলেন, রাকার মতো অঞ্চলগুলোতে আইএস টার্গেটসমূহে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী বিমান হামলা অব্যাহত থাকবে এবং জোটের চেষ্টা হচ্ছে তাদেরকে সেখানে বিভিন্ন অংশে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা এবং ইউরোপে বিদেশী যোদ্ধা পাঠানোর চেষ্টা থেকে তাদের বাধা দেয়ার উদ্দেশ্যে তাদেরকে সেখানেই আটকে রাখা। তিনি বলেন, আগামী নয় মাসে আইএস নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এটা আমি মনে করি না। তিনি বলেন, চরমপন্থীদের যদি একটি পকেটও থাকে এবং তারা নিজেরা যদি আত্মঘাতী হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে তাহলে তারা আমাদের অনেক শহরে এখনো ভয়ঙ্কর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে পারে। তবে আমি মনে করি তাদের অভিযানের পরিধি ধীরে ধীরে সংকুচিত করে ফেলতে পারি। ওবামা আবারও সতর্ক করে দেন যে, জুনে গণভোটে ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি আলোচনায় ব্রিটেনের ১০ বছর সময় লাগতে পারে। ওবামা লন্ডনে তার তিন দিনের সফর শেষে গতকাল জার্মানির হ্যানেভার পৌঁছেছেন। সেখানে তিনি বিতর্কিত ট্রান্সআটলান্টিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব (টিটিআইপি) চুক্তির প্রতি জোরালে সমর্থনের আশা করছেন। হ্যানোভারে তিনি এবং জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল বিশ্বের বৃহত্তম শিল্প প্রযুক্তি বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, সিরিয়ায় একটি অর্ন্তবর্তী সরকার প্রতিষ্ঠায় আলোচনার টেবিলে বসাতে রাশিয়া, ইরান ও মধ্যপন্থী বিরোধী গ্রুপগুলোসহ সকল পক্ষের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চাপ অব্যাহত রাখবে। ওবামা অবশ্য বলেন, এটা খুব কঠিন কাজ। যেসব দেশের পার্লামেন্ট সিরিয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণকে অনুমোদন করেনি অথচ তারা এখনো চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে কিছু করুক ওবামা সেসব দেশেরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আপনি দুই দিকেই খেলতে পারেন না।