• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • আজ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার একশ বছর পূর্তি

    আজ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার একশ বছর পূর্ণ হয়েছে। যুদ্ধ সমাপ্তির শতবছর পূর্তি পালন উপলক্ষে প্যারিসে একটি স্মারক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

    ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরনের আয়োজনে ঐ অনুষ্ঠান আজ স্থানীয় সময় সকাল ১১টার কিছুক্ষণ পরে শুরু হয়।

    বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশের নেতারা ঐ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে জাপানি উপ-প্রধানমন্ত্রী তারো আসো, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও রয়েছেন।

    যুদ্ধের সমাপ্তি নিশ্চিত করা সাময়িক যুদ্ধ বিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের স্থান উত্তর ফ্রান্সের কমপিয়েনে গতকাল ম্যাকরনের সংগে জার্মানির চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মেরকেলও যোগ দেন।

    কিন্তু বিশ্লেষকরা বিশ্বজুড়ে ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়া জাতীয়তাবাদ এবং একচেটিয়া-বাদের ধারাকে পূর্বের কিছু ঘটনাবলীর সাথে তুলনা করছেন যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য দায়ী ফ্যাসিজমের উত্তান ঘটিয়েছিল।

    নির্বাচনী জোয়ারে দেশ

    ৪০৩৫ মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে আওয়ামী লীগ , বিএনপি নয়াপল্টনে আজ থেকে ফরম বিক্রি শুরু

    সাগরে জোয়ার এলে যেমন জোয়ারের পানি সবকিছু ভাসে, তেমনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জোয়ারে ভাসছে দেশ। সারাদেশে শুরু হয়েছে নির্বাচনী হাওয়া। মানচিত্রের সাড়ে ৫৫ হাজার বর্গমাইলে একই চিত্র। এ যেন ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার আনন্দে নির্বাচনী উৎসবে অংশগ্রহণের আগাম প্রস্তুতি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত সর্বত্রই চলছে আলোচনা-তর্কবিতর্ক। কোন আসনে কারা প্রার্থী হচ্ছেন, কোন জোট থেকে কারা নমিনেশন পাচ্ছেন, মনোনয়ন-প্রত্যাশীরা কে কোন জাঁদরেল নেতার বাসায় দৌড়াচ্ছেন, কারা টাকার বিনিময়ে নমিনেশন ক্রয়ের চেষ্টা করছেন, কোন মন্ত্রী-এমপির দলীয় নমিনেশন পাওয়ার সম্ভাবনা কম, জেলায় আসনগুলোতে নতুন মুখ কারা আসছেন- এসব নিয়েই চলছে আলোচনা-চুলচেরা বিশ্লেষণ। দেশের মানুষের কাছে ‘নির্বাচন মানে যে উৎসব’ তা যেন ঘরে ঘরে ধরা দিয়েছে বাস্তব হয়ে।
    তফসিল ঘোষণার পর ৯ নভেম্বর শুক্রবার থেকেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে মনোনয়নপত্র বিক্রি নিয়ে উৎসব চলছে। হাজার হাজার কর্মী-সমর্থন দিয়ে শোডাউন করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র ক্রয় করছেন। দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় ও বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চলছে নির্বাচনী উৎসব। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাবে কি-না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় মানুষের মধ্যে উশখুশ ছিল। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেয়ার পর ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের সারাদেশের নেতাকর্মীদের মধ্যে আছড়ে পড়ে নির্বাচনের ঢেউ। শুরু হয় ভোট উৎসব। আজ নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করবে বিএনপি।
    ফরম ক্রয়ের জন্য ইতোমধ্যেই সারাদেশের সম্ভাব্য প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ফরম ক্রয়ের জন্য ঢাকার পথে রওয়ানা দিয়েছেন। এরশাদের জাতীয় পার্টি, বি. চৌধুরীর যুক্তফ্রন্টসহ অন্যান্য দল জোটগুলোতেও মনোনয়ন ফরম ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে উৎসব চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এবং বিএনপিসহ কয়েকটি শরিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মূল প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে মাঠে নামায় নির্বাচনের প্রবল বাতাস সারাদেশে বইতে শুরু করেছে। শুধু রাজনীতিকরাই নয়, নির্বাচনে প্রার্থী হতে দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে সাবেক আমলা, সাবেক সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা, ক্রিকেটার, ফুটবলার, সিনেমার নায়ক-নায়িকা, কণ্ঠশিল্পী, সাবেক ছাত্রনেতা, নাটকের অভিনেতা-অভিনেত্রী-ভিলেন-সাংবাদিক-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-এনজিওকর্মী-আইনজীবীসহ সব পেশার মানুষের মধ্যে। সবার লক্ষ্য আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি এমনকি ছোট ছোট দল ও জোটগুলো থেকে মনোনয়ন নিশ্চিত করে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া। অংশগ্রহণমূল নির্বাচন নিশ্চিত করতে ইসিতেও রাজনৈতিক দলগুলোর ভিড় বাড়ছে।
    আন্দোলনের অংশ হিসেবে ভোটে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গণভবনে সংলাপ সফল না হলেও নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে নির্বাচনের জন্য আন্দোলনের অংশ হিসেবেই ঐক্যফ্রন্ট সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে ড. কামাল হোসেন ভোটে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে তফসিল বাতিল করে তা এক মাস পিছিয়ে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবিও জানিয়েছেন। এর আগে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের পক্ষে কর্নেল (অব.) আলি আহমদ সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তবে তিনি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গঠনের দাবি জানান। অন্য দিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকালও ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘এবার অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। আমার লক্ষ্যই হলো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেয়া’। নির্বাচনের তারিখ পেছানোর জন্য ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওই চিঠিতে নির্বাচনী প্রস্তুতি সংক্রান্ত সময় চেয়ে তারিখ কয়েকদিন পেছানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। বি. চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট থেকেও নির্বাচনের তারিখ পেছানোর দাবি জানিয়ে ইসিতে চিঠি দেয়া হয়েছে। এর আগে বি. চৌধুরী নির্বাচনের তারিখ এক সপ্তাহ পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর করার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্টের প্রতি। একই সঙ্গে তিনি প্রেসিডেন্টকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গঠনে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশনা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই জেলা রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিসিদের নির্বাচনী আচরণবিধির ব্যাপারে কড়া নির্দেশনা পাঠিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অংশীজনের আবেদনে ইসি যদি নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দেয়, তা হলে আমাদের আপত্তি থাকবে না। আবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে নির্বাচন কমিশনে ‘নৌকা’ ও ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে শরিক যেসব দল প্রার্থী দেবে; সে তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা জানিয়েছেন, আজ সোমবার ইসির বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ পেছানো হবে কি হবে না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তবে ইসি সূত্রে জানা গেছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে ভোটের তারিখ কয়েকদিন পিছিয়ে দেয়া হতে পারে।
    এদিকে ইনকিলাবের ব্যুরো অফিস, আঞ্চলিক অফিস, জেলা, উপজেলা সংবাদদাতারা জানান, সর্বত্রই শুরু হয়েছে নির্বাচনী আমেজ। জেলা শহর, উপজেলা শহর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, গ্রামের হাটবাজার, রাস্তার মোড় সবখানেই সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু নির্বাচন। তাদের আসনে কারা কোন দলের প্রার্থী হচ্ছেন, কে বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন, শরিক দলগুলোর কারা কারা নমিনেশন পাচ্ছেন, পুরনো মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে কারা মনোনয়ন পাচ্ছেন না এবং কোন দল ও প্রার্থীর জনসমর্থন কেমন সে সবই মূলত আলোচনার বিষয়বস্তু। চায়ের টেবিলে আড্ডায় আছড়ে পড়ছে নির্বাচনী ঝড়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা অনেক আগ থেকেই নির্বাচনী মুড়ে রয়েছেন। দীর্ঘ দিন থেকে তারা দলীয় নমিনেশন ইস্যুতে নিজেদের মধ্যে বিরোধ, সঙ্ঘাত-সংঘর্ষ করছেন। নমিনেশন নিশ্চিতের আশায় কেন্দ্রীয় নেতাদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন। নানা পন্থায় নিজেদের জনসমর্থনের প্রমাণ দেয়ার চেষ্টা করছেন। ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী এবং বর্তমান সংসদের এমপি রয়েছেন এমন প্রায় অর্ধশত নেতাকে নির্বাচনী এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগেরই মনোনয়ন-প্রত্যাশী নেতারা। অনেক নেতা ও এমপিকে এলাকায় ঢুকতে পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে না। অন্য দিকে বিএনপির নেতারা বছরের পর বছর ধরে হামলা মামলার ভারে ন্যূজ। অনেকেই আত্মগোপন এবং পালিয়ে ছিলেন। কেউ কেউ হামলা-মামলার ভয়ে দলে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। ব্যবসা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন এমন নেতার সংখ্যাও কম নয়। কেউ কেউ এখনো কারাভোগ করছেন। এ ছাড়াও নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট অংশগ্রহণ করবে কি-না তা নিয়েও ছিল অনিশ্চয়তা। কিন্তু গতকাল নির্বাচনে অংশগ্রহণকে খালেদা জিয়ামুক্তিসহ সাত দফা দাবির আন্দোলনের অংশ হিসেবে নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর বিএনপির তৃণমূলের নেতারাও প্রকাশ্যে চলে এসেছেন। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া রুপসা থেকে পাথুরিয়া সর্বত্রই এমন দৃশ্য নির্বাচনের আবহ।
    রাজধানীতে গতকাল আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র ক্রয় করতে আসার সম্ভাব্য প্রার্থীদের মিছিলের পর মিছিল, সঙ্গে মোটরসাইকেল, পিকআপ ভ্যান ও বাসে চড়ে সমর্থকদের মহড়া অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি করে। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় ও বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন-প্রত্যাশীরা নিজেদের সামর্থ্য-শক্তি ও সমর্থন বোঝানোর জন্য শোডাউন করেন। শোডাউন করতে গিয়ে ৯ নভেম্বর মোহাম্মদপুর এলাকায় জাহাঙ্গীর করিব নানক ও মোহাম্মদপুর থাকা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাদেক খানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দু’জন প্রাণ হারিয়েছে। মনোনয়নপত্র ক্রয়ে যেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন-প্রত্যাশীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। কোনো ধরনের সিগন্যাল বা নিয়মের তোয়াক্কা না করে শোডাউন করছে সরকার দলীয় সমর্থকরা। ধানমন্ডি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে মিছিল করছেন তারা। প্রতিটি মিছিলের সঙ্গে রয়েছে মোটরসাইকেলের বহর। আর এসব বহরেও মানা হয়নি ট্রাফিক আইন। ৯ নভেম্বর শুক্রবার মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়। তিন দিনে প্রায় চার হাজার ৩৫টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়। প্রতিটি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয় ৩০ হাজার টাকা করে। এতে আওয়ামী লীগের দলীয় তহবিলে আসে প্রায় ১২ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অন্য দিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তথা বিএনপি আজ সকাল ১০টা থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করবে। দুদিন এই ফরম ক্রয় করা যাবে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, ১৪ নভেম্বরের মধ্যে মনোনয়ন ফরম জমা দিতে হবে। তবে কেউ চাইলে ১৩ নভেম্বরও জমা দিতে পারবেন। ফরমের মূল্য ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা; আর জমা দিতে লাগবে ২৫ হাজার টাকা।
    জাতীয় সংসদের গৃহপালিত বিরোধী আওয়ামী লীগের বি-টিম খ্যাত এরশাদের জাতীয় পার্টি গতকাল দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করেছে। গতকাল গুলশানের ইনামুল সেন্টারে সম্ভব্য প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়। সারাদেশ থেকে আসা দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হাজার হাজার সমর্থক মিছিল নিয়ে জড়ো হয় ইমানুয়েলস সেন্টার থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য। কেউ কেউ ব্যান্ড পার্টির তালে তালে বিশাল আকৃতির লাঙ্গল নিয়ে এসে ফরম সংগ্রহ করেন। এইচ এম এরশাদ তিনটি আসনে প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে ফরম সংগ্রহ করেছেন। অন্যান্য দলগুলোও নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এতে সারাদেশের আকাশে-বাতাসে এখন আওয়াজ নির্বাচন-নির্বাচন এবং নির্বাচন।

    পৃথিবীর আছে দুই গুপ্ত চাঁদ

    এতদিন মানুষ জানতো পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহটির নাম ‘চাঁদ’। বিজ্ঞানীদের তথ্য মতে, চাঁদ সৌরজগতের পঞ্চম বৃহত্তম উপগ্রহ। চাঁদের ব্যাস ৩,৪৭৪.২০৬ কিলোমিটার যা পৃথিবীর ব্যাসের এক-চতুর্থাংশের চেয়ে সামান্য বেশি। হিসেব মতে, চাঁদের আয়তন পৃথিবীর আয়তনের ৫০ ভাগের ১ ভাগ মাত্র। এতদিন চাঁদ সম্পর্কে মানুষের জানা এসব তথ্যের বাইরে আরো দুটি গুপ্ত চাঁদের কথা জানিয়েছে বিজ্ঞানীরা! ১৯৬০ সালে বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো ব্যাপক ধুলো-মেঘের যে বলয়টির সন্ধান পেয়েছিলেন এখন সেটিকেই বলছেন পৃথিবীর অন্য প্রাকৃতিক উপগ্রহ বা চাঁদ। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চাঁদ ছাড়াও পৃথিবীর আছে আরো দুটি গুপ্ত চাঁদ।
    দীর্ঘদিনের জল্পনা আর বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, চাঁদের বাইরে পৃথিবীর আরো দুটি গুপ্ত চাঁদ আছে। পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা এই গুপ্ত চাঁদগুলো পুরোপুরি ধুলো-মেঘের তৈরি। এই চাঁদগুলোও পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে গড়ে চার লক্ষ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পৃথিবী থেকে ‘পুরনো চাঁদের’ দূরত্বও একই রকম, ৩ লাখ ৮৪ হাজার কিলোমিটার প্রায়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অনেক আগে থেকেই ধারণা করতেন যে, পৃথিবীর কক্ষপথে হয়তো চাঁদের মতো আরো প্রাকৃতিক উপগ্রহ থাকতে পারে। কিন্তু ১৯৬১ সালে পোলিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী কাজিমিয়ার্জ করডেলস্কি সেই ধারণাকে আরো জোরালো করেন।
    হাঙ্গেরির ইয়োতভোস লোরন্ড ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী জুটিত স্লিজ বালোগ বলেন, প্রতিটা করডেলস্কি ধুলার মেঘবলয় যাকে চাঁদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে, তারা ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি কৌনিক অবস্থান তৈরি করে। এই গুপ্ত চাঁদে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে খুবই অনুজ্জ্বল আলোকচ্ছটা প্রকাশ করে। ছায়াপথের আলোতে এই ধুলো-মেঘের চাঁদকে খুঁজে পাওয়াটা কষ্টকর। এই কারণে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ক্যামেরায় বিশেষ এক ধরনের পোলারাইজড ফিল্টার ব্যবহার করছেন। চাঁদ সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের সর্বশেষ এই তথ্য যদি পুরোপুরি সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে ভবিষ্যতে হয়তো এই ধরনের আরো অনেক চাঁদের সন্ধান মিলবে পৃথিবীর কক্ষপথে।-ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

    বিদেশে অধ্যয়নরত জাপানী ছাত্রদের জন্য কর্মসংস্থান মেলা

    যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে গতকাল, মূলত বিদেশে অধ্যয়নরত জাপানী ছাত্রদের লক্ষ্য করে একটি কর্মসংস্থান মেলা আরম্ভ হয়েছে।

    এটি, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য দেশে অধ্যয়নরত ৫ হাজারের বেশী লোকজনের মনোযোগ আকর্ষণ করে।

    ভেনুটিতে, প্রায় ২শ ৩০টি কোম্পানি নিজেদের বুথ স্থাপন করেছে। এগুলোর মধ্যে, জাপানী কোম্পানির পাশাপাশি বিদেশী পরামর্শক এবং তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

    আয়োজকরা, অধিকাংশ কোম্পানি ইংরেজিসহ অন্যান্য ভাষায় ভাল দক্ষতা সম্পন্ন লোকদের নিয়োগ করতে তাৎক্ষনিক কাজের প্রস্তাব দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করছে বলে জানায়।

    সুবিচার হলেই খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব -ডা. জাফরুল্লাহ

    বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে গণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেনে, খালেদা জিয়ার কারো দয়ার প্রয়োজন নেই। উনার প্রতি ন্যায়্য অধিকার প্রয়োগ করা হোক। উনার প্রতি সুবিচার যেন করা হয়। সুবিচার হলেই উনার মুক্তি সম্ভব। কিন্তু সুবিচার হচ্ছে না। এ দেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন না। তিনি বলেন, জামিন পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। খুনের মামলার আসামী জামিন পায় তা হলে খালেদা জিয়া কেন জমিন পাবেন না? আমি গত কয়েক দিনে দেখেছি কোটের বারান্দায় হাজার হাজার মানুষের আহাজারী। কোটের বারান্দায় শুয়ে আছে, কোথায় ভেড়ামারা, খুলনা, কুষ্টিয়া, ইশ্বরদী, চট্টগ্রাম থেকে এসে জামিনের জন্য। এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার।
    গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়া মুক্তি আইনজীবী আন্দোলন আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ সব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি (চলতি দায়িত্ব) আবেদ রাজা সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সদস্য সচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বারের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এবিএম রফিকুল হক তালুকদার রাজার সঞ্চালনায় এতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বক্তব্য রাখেন কেন্দীয় মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সংগঠনের প্রসিডিয়াম সদস্য মনির হোসেন, আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার, ব্যারিস্টার হায়দার আলী, বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী, ড. গোলাম রহমান ভূইয়া, আনিছুর রহমান খান, আইয়ুব আলী আশরাফী, আশরাফুজ্জামান, ওয়াছেল উদ্দিন বাবু, কামাল হোসেন, পিকে সরকার, আবদুস সাত্তার, আবু হানিফা, শামসুল ইসলাম মুকুল, ফজলুল হক আকন্দ, আমান ফেরদৌস, মো: শাহ আলম সোহাগ, এআর খান পাঠান, মুকতার হোসেন, আবুল কাশেম রাজু, আবুল খায়ের খান, ব্যারিস্টার মামুন, নাজমুল হাসান, একেএম ফজলুল হক, মো: আবদুস সামাদ, হুমায়ুন কবীর চৌধুরী, আহসানউল্লাহ, মিনারা বেগম মিনি, আমিনুল ইসলাম মনি, ওয়ালিউল ইসলাম শুভ, সাইদ হাসান বক্তিয়ার, এইচএ মাহমুদ সুমন, মো: হানিফ, মো: মনির হোসেন, ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।
    ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়ার বড় অপরাধ তিনি সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। তার বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার মামলা। অথচ সেই দুই কোটি টাকা বেড়ে ছয় কোটি হয়েছে এবং ব্যাংকে গচ্ছিত আছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের সোনা তামা হয়ে যাচ্ছে। তার পরও দুদক মামলা করে না।
    সভাপতির বক্তব্যে আবেদ রাজা বলেন, একটি দলের প্রধানকে জেলে রেখে পৃথিবীর কোনো দেশে সংলাপ হয়নি। আমরা প্রহসনের কোন কিছু চাই না। আমরা ভবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া কোন সংলাপ সফল হবে না।
    মনির হোসেন বলেন, এদেশে গণতন্ত্র নেই। দেশের মানুষ ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। সামনে নির্বাচন এই নির্বাচন সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। নিপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে এবং মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়া মুক্তি আইনজীবী আন্দোলন আজ রাজ পথে নেমেছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিয়ে দেশে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।
    সাবেক বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী বলেন, আপনারা রাজপথে নেমে আসুন। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি সময়ের ব্যাপার। দেশের ৬৫ হাজার গ্রামের মানুষ রাজ পথে নেমে আসলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে।

    হিথ্রো বিমানবন্দরে নেশাগ্রস্ত জাপানি পাইলট গ্রেফতার

    যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এক জাপানি পাইলটকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  বৈধ পর্যায় থেকে নয় গুণ বেশি অ্যালকোহল গ্রহণ করেছেন তিনি।  গত ২৮ অক্টোবর গ্রেফতারের পর শ্বাস পরীক্ষায় তিনি তার এটি ধরা পড়ে। খবর বিবিসির।
    টোকিও থেকে একটি ফ্লাইট নিয়ে আসা জেআই৪৪ বিমানের এই হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ফিরতি ফ্লাইট ছাড়ার সময়  সময় শ্বাস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হন।  তার রক্তে প্রতি ১০০ মিলি লিটারে ১৮৯ মিলিগ্রাম অ্যালকোহল পাওয়া যায়। ইংল্যান্ডে একজন সাধারণ মানুষের যেখানে ৮০ মিলিয়ন অ্যালকোহল থাকাকে স্বাভাবিক ধরা হলেও  একজন পাইলটের ক্ষেত্রে এর বৈধ পর্যায় ২০ মিলিগ্রাম।
    বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় তাকে অক্সব্রিজের একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে। এ ধরনের অপরাধে এর আগে একজন ব্রিটিশ পাইলটের এর আগে আট মাসের কারাদণ্ড হয়। এখন জাপানি পাইলটকে কি সাজা দেয়া হয় তা চূড়ান্ত রায়ের পর জানা যাবে।
    জাপানি গণমাধ্যমে বলাহয়েছে, দেশটির পুলিশ বিমানের পাইলট ও ক্রোদের অ্যালকোহল গ্রহণের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছে। জাপানি এয়ার লাইন্স এই ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে। নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রম এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে বলেও প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দেয়া হয়।

    সংলাপ ভালো হয়েছে, আমরা আশাবাদী: ড. কামাল

    দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে :ফখরুল
    প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের দলের সঙ্গে রাতে সাড়ে তিন ঘণ্টারও বেশি যে সংলাপে হয়েছে তাতে বিশেষ কোন সমাধান পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের মূল উদ্যোক্তা ড. কামাল হোসেন।
    তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে গণভবনে গিয়েছিলাম।  প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের সংলাপ ছিল।  প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার মতো আমরা সেখানে ছিলাম।  আমাদের নেতারা সবাই বক্তব্য দিয়েছেন।  তারা তাদের নানা ধরনের অভিযোগের কথা বলেছেন।  সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
    এরপর প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিয়েছেন।  তবে বিশেষ কোনো সমাধান আমরা পাইনি।  কেবল সভা-সমাবেশের বিষয়েই তিনি একটি ভালো কথা বলেছেন।  এটা হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সভা সমাবেশে কোথাও কোনো বাধা থাকবে না আমাদের জানানো হয়েছে।  এ ব্যাপারে প্রশাসনকে নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
    ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা ৭ দফা দাবি প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছি।  তিনি আমাদের কথা শুনেছেন, তবে সুনির্দিষ্টভাবে তিনি কিছু বলেননি।  তবে তিনি বলেন, সংলাপ ভালো হয়েছে, আমরা আশাবাদী।  প্রধানমন্ত্রী তার কথা বলেছেন।  আমরা তার কথা শুনেছি। পরবর্তীতে আরো আলোচনা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
    সংলাপের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, খালেদা জিয়ার মামলা প্রত্যাহার ও তার মুক্তির বিষয়ে সংলাপে আলোচনা হয়েছে।  তবে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট কিছু বলেননি।  এতে আমরা হতাশ হয়েছি।  ফখরুল বলেন, সংলাপের বিষয়ে আমি সন্তুষ্ট নই।  তবে আমাদের আলোচনা চলতে পারে।  আমরা তফসিলের বিষয়ে কথা বলেছিলাম।  তফসিল যাতে সময় নিয়ে দেওয়া হয়।  এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তফসিল দেওয়ার বিষয়টি সরকারের নয়।  এটি নির্বাচন কমিশন দেখবে।  আমরা আন্দোলন অব্যাহত রাখবো।
    সংলাপ শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বেইলি রোডে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা তুলে ধরেন।
    এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মো. মনসুরসহ অন্যরা।
    সংবাদ সম্মেলনে আলোচনার বিষয়ে একটি লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন গণফোরামের এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।  সংবাদ সম্মেলনে আ স ম আবদুর রব বলেন, আমরা সাত দফা দাবি জানিয়েছি।  এসব দাবি মানা না মানার এখতিয়ার সরকারের।  আমরা মাঠে আন্দোলন অব্যাহত রাখবো।  আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি-দাওয়া আদায় করা সম্ভব কি না জানতে চাইলে আবদুর রব বলেন, সব দাবি কি পূরণ হয়? একদিনে কি সব দাবি পূরণ সম্ভব? আমরা আমাদের মতো কর্মসূচি চালিয়ে যাব।  নির্বাচনকে ঘিরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে ।
    সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমাদের বক্তব্য শোনার পর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সভা-সামাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কোনো ধরনের বাধা থাকবে না।  এসব সভা-সমাবেশে সহযোগিতা করার জন্যও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
    এদিকে সংলাপ শেষে গণভবন থেকে বের হয়ে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সংলাপ ভালো হয়েছে।

    প্রত্যাশার সংলাপ আজ

    Posted by admin on November 1
    Posted in Uncategorized 

    প্রত্যাশার সংলাপ আজ

    সংলাপের ক্ষণ গণনা চলছে। অনেকটা কাউন্ট ডাউনের মতোই। ক’মাস আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সংলাপের দিকে যেমন তাকিয়ে ছিল বিশ্ববাসী; তেমনই গণভবনে অনুষ্ঠেয় সংলাপের দিকে কোটি কোটি চোখ। দেশের ১৬ কোটি মানুষের মতোই সংলাপের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিশ্ব-রাজনীতির নিয়ন্ত্রক শক্তিখ্যাত প্রভাবশালী দাতাদেশ, সংস্থা ও আন্তর্জাতিক মহল। নির্বাচন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ হবে আজ। দেশের ১০ কোটি সাধারণ ভোটারের মতোই ঢাকায় কর্মরত বিদেশী কূটনীতিকরা সংলাপের সাফল্য দেখতে মুখিয়ে আছেন। সবার প্রত্যাশা সংলাপ সফল হউক। নির্বাচন ইস্যুতে ‘সংলাপের বন্ধ কপাট’ খুলে যাওয়ায় প্রশাসনে লেগেছে নতুন ঢেউ, দলবাজ আমলাদের মধ্যে বাড়ছে অস্থিরতা। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বইছে বাউলা বাতাস। সে বাতাসে উৎসাহ-উদ্দীপনা-প্রত্যাশা-উদ্বেগ-উৎকন্ঠা-শঙ্কা সবকিছুর মিশ্রণ।
    দেশের আর দশজন নেতার চেয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটু ব্যাতিক্রম। ক্যারিশমাটিক রাজনীতির কারণে তাঁর প্রতি দেশের মানুষের প্রত্যাশা একটু বেশি। আমজনতা মনে করে তাঁর পক্ষ্যে সবই সম্ভব। কেবল তিনিই পারেন জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে। তিনি আমজনতার মন-মনন চিন্তা-চেতনা-প্রত্যাশা বিবেচনা করে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখাতে পারেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী-রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে দীর্ঘদিন ধরে সংলাপের আহŸানে সাড়া না দিয়ে অনড় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হঠাৎ করে সংলাপে সম্মতি আগামীর রাজনীতির জন্য ‘মাইলফলক’ বার্তা আনতে পারে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর ঢাকায় কর্মরত বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বøুম বার্নিকাট সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্টই বলেছেন, সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ-গ্রহণযোগ্য-অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ‘প্রতিশ্রæতি’ সরকার বাস্তবায়ন করবে। তবে ‘চুন খেয়ে মুখ পুড়ে দই দেখলে ডরায়’ প্রবাদের মতোই (২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী) রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে শঙ্কারও রয়েছে যে, শেষ পর্যন্ত সংলাপ সফল-কার্যকর হবে তো? নাকি অতীতের অনুষ্ঠিত সংলাপগুলোর পরিণতির দিকে যাবে! হঠাৎ সংলাপে রাজী হওয়ার নেপথ্যে কী কোনো রহস্য রয়েছে? নাকি পর্দার আড়ালে কেউ কলকাঠি নাড়ছে? ১৯৯৪ সালে স্যার স্টিফেন নিনিয়ান, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ আবদুল জলিল ও বিএনপির আব্দুল মান্নান ভূইয়া, ওয়ান-ইলেভেনের পর তত্ত¡াবধায়ক সরকারের চার উপদেষ্টার উদ্যোগে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিবের সহকারী ফার্নান্দেজ তারানকোর নেওয়া উদ্যোগে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংলাপ কোনোটিই সাফল্যের মুখ দেখেনি। মানুষ হয়েছে আশাহত। গতকালও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জনগণের ঐক্যের ফলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংলাপের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই সংলাপের সফলতা ঐক্যবদ্ধভাবে ধরে রাখতে হবে। যাতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে সংলাপের সফলতা জিম্মি হতে না পারে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংলাপের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের একটি পথ তৈরি হবে। সংলাপের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহল বেশ ভালোভাবে নিয়েছে। তাই তারা অত্যান্ত আন্তরিকতার সঙ্গে সংলাপে বসার পরামর্শ দিচ্ছেন। কারো চাপে নয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তেই সংলাপ হচ্ছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে প্রস্তাব এলে ঐক্যফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্টের পর প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য দলের সঙ্গেও সংলাপে বসতে রাজি। সংলাপের সফলতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দুটি মামলার রায়ে বিষ্ময়করভাবে সাজা বাড়ানো হয়েছে। এ রায়কে কেন্দ্র করে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এতে সংলাপের সফলতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
    সংলাপে যোগদানের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যথেষ্ট হোম ওয়ার্ক করেছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংবিধান এবং নির্বাচনে জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে তৈরি ৭ দফা ও ১২ উদ্দেশ্য চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বিভিন্ন আলোচনা সভা, সমাবেশ, সেমিনার, সংবাদ সম্মেলনে দাবী-দফা নিয়ে বিস্তর সংশোধনী হয়েছে। গতকালও ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, সংসদ বাতিল ও পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়াসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে ৭ দফা দাবির ভিত্তিতেই সংলাপ হবে। সংলাপে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরা হবে। এতে মূলত তাদের ৭দফা দাবি তুলে ধরা হচ্ছে। সরকার তফসিল ঘোষণার যে দিনক্ষণ ধার্য করতে যাচ্ছে, সংলাপে সে বিষয়ে আপত্তি জানানো হবে। যদিও সংলাপের এজেন্ডা তফসিল নয়। ৭ দফা দাবির কয়েকটি সংবিধান সম্পৃক্ত। এ কারণে এসব বিষয়ে সংলাপে জোর দেব। হয়তো সংবিধান পরিবর্তনও করতে হতে পারে। এজন্য অধিবেশনের প্রয়োজন পড়বে। মাহমুদুর রহমান মান্না এ প্রসঙ্গে বলেন, আগে সংলাপ পরে তফসিল। আমাদের দাবির সঙ্গে জনগণের সম্মতি রয়েছে। সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের পরিচ্ছন্ন রাজনীতির ইমেজ তৈরি হয়েছে। ক্ষমতার মোহ তাকে স্পর্শ করতে না পারায় তিনি নিজেকে সুবিধাবাদের রাজনীতির উর্ধ্বে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এখনো সংবিধানের মধ্যে থেকেই সংকট সমাধানের কথা ভাবছে। ১৪ দলীয় জোটের মুখপত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আগামী নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সংবিধানের বাইরের কিছু মেনে নেয়া হবে না। শেখ হাসিনা উদার গণতন্ত্র বিশ্বাস করেন বলেই সংলাপ ডেকেছেন। সংলাপ হলেও নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী।
    সংলাপের সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ভর করে কার্যত ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর। ক্যালেন্ডারের দিকে তাকালে দেখি এদেশে সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকটের সমাধান খুবই কম হয়েছে। ১৯৭৬ সালের ২২ জানুয়ারী রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিশেষ সহকারী বিচারপতি আবদুস সাত্তার। ’৮২ সালে বিচারপতি সাত্তারকে হটিয়ে ক্ষমতা গ্রহণের পর এইচ এম এরশাদ ১৯৮৪ সালের ৯ এপ্রিল বঙ্গভবনে ৭ দলের সঙ্গে সংলাপ করেন; সেখানে ৩৩ দফা দাবি জানানো হয়। কোনো দাবিই মানা হয়নি। অতপর ১০ এপ্রিল জামায়াত ও ১১ এপ্রিল ১৫ দলের সঙ্গে বঙ্গভবনে সংলাপ করেন এরশাদ। ১২ এপ্রিল এরশাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার একান্ত সংলাপ হয়। আবার ১৪ এপ্রিল ১৫ দলের দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপ, ২৮ এপ্রিল আরও ১০ দলের সঙ্গে সংলাপ হয় এরশাদের। কোনোটিই সফল হয়নি। আন্দোলনের মুখে ১৯৮৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আহবান জানান এরশাদ। সেই সংলাপের আহবান প্রত্যাখ্যাত হয়। ওই বছরের ২৮ নভেম্বর এরশাদ আবারও সংলাপের প্রস্তাব দেন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো তা প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ সংলাপের নামে এরশাদ বিভিন্ন দলের সঙ্গে পৃথক পৃথক ভাবে বসে ‘রাজনৈতিক চালাকি’ করেন। ’৯০ এর রাজনৈতিক পট-পরিবর্তন এবং সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের পর ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন’ ইস্যুতে ১৯৯৪ সালের ৩১ আগস্ট সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলের দুই উপনেতার মধ্যে সংলাপ হয়। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর একই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সংলাপ হয়। লাগাতার হরতালের মধ্যেই ওই বছরের ১৩ অক্টোবর কমনওয়েলথ মহাসচিব এমেকা এনিয়াওকুর ঢাকায় এসে শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কমনওয়েলথ মহাসচিবের মধ্যস্থতায় রাজনৈতিক সংকট নিয়ে সংলাপে দুই নেত্রী আনুষ্ঠানিক সম্মতি দেন। পরে তিনি বিশেষ দূত স্যার নিনিয়ান ঢাকায় পাঠান। তিনি মাসব্যাপী সংলাপ করে একটি রাজনৈতিক ফর্মুলা দেন। অথচ সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় আওয়ামী লীগ মেনে না নেয়ায়। ২০০৬ সালের অক্টোবরে তখনকার ক্ষমতাসীন বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া ও বিরোধী দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলের মধ্যে প্রায় তিন সপ্তাহে ৬টি বৈঠকে ‘সংলাপ’ হয়। আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ২৯ দফা তুলে ধরা হয়; সমঝোতা হয়নি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসে বিএনপি। সংকট নিরসনে জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো তিনবার ঢাকায় আসেন। পর্দার আড়ালের ওই সব সংলাপের ফলাফল শুন্য।
    এবার মানুষ দারুণ আশাবাদী। সংলাপ সফল হবে এমন প্রত্যাশা সবার। ২৯ অক্টোবর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ৭ দফা দাবিতে আলোচনায় বসার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়। পরের দিনই সংলাপে বসার সম্মতি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনকে চিঠি দেন। এতে আজ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সংলাপে বসার আমন্ত্রণ জানানো হয়। ইতোমধ্যেই সংলাপে অংশ গ্রহণে ঐক্যফ্রন্টের ১৬ নেতার নাম পাঠিয়ে দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের ২১ নেতার তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু সংলাপ শুরু হওয়ার আগেই এর উদ্দেশ্য ও ফল নিয়ে নানা মহলে সরগরম আলোচনা চলছে। কেউ বলছেন সংলাপ লোক দেখানো। সরকার নিজের ছক মতোই নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন করবে। কারও মতে সরকার বহির্বিশ্বকে দেখাতে চাইছে তাঁরা সুষ্ঠু-অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনে আগ্রহী। কেউ বলছেন ‘নেতৃত্বহীন’ বিএনপিকে বোকা বানাতে আওয়ামী লীগ সংলাপের মাধ্যমে ব্যাতিব্যস্ত রেখে দলটিকে নির্বাচনী প্রস্তুতি থেকে দূরে রাখার কৌশল নিয়েছে। কারণ সমঝোতা চাইলে বেগম জিয়াকে এভাবে কারারুদ্ধ এবং মামলার দ্রæত রায় দিতো না। ড. কামাল হোসেন ইতোমধ্যেই বলেছেন, জনগণের স্বার্থে সংবিধান সংশোধন এক মিনিটের ব্যাপার। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলছেন, সংবিধানে প্রবিধান না থাকার পরও ’৯০ এ যেভাবে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদকে ক্ষমতায় বসিয়ে পরবর্তীতে সংবিধান সংশোধন করা হয়; সেভাবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা যায়। তবে আওয়ামী নেতারা বরাবর বলে আসছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
    তবে ২০০৬ সালে দুই আবদুলের (আবদুল জলিল, আবদুল মান্নান ভূঁইয়া) সংলাপ আর আজকে গণভবনে অনুষ্ঠেয় সংলাপে পার্থক্য রয়েছে। ওই সংলাপ ব্যর্থ হওয়ার দুই বছর পর আবদুল জলিল স্বীকার করেছিলেন সংলাপে দুই নেতা ঐক্যমত্যে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু মূল নেতৃত্ব রাজী না হওয়ায় তারা সাফল্য পাননি। এবার দ্বিতীয় পর্যায়ের নেতা নয়; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সংলাপের নেতৃত্ব দেবেন। সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে তাকে ওপরের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। অন্যদিকে ড. কামাল হোসেনের অবস্থাও প্রায় অভিন্ন। বিএনপি তার নেতৃত্ব মেনে নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে। অতএব এবারের সংলাপের সাফল্য দেখতে সবাই উন্মুখ।

    গ্রিন হাউস গ্যাস পর্যবেক্ষণের জন্য জাপানের নতুন কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ

    গ্রিন হাউস গ্যাস পর্যবেক্ষণের জন্য জাপান মহাকাশে ইবুকি-টু নামের একটি নতুন কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছে। এই কৃত্রিম উপগ্রহটি এর পূর্বসূরীদের চেয়ে আরও নিখুঁতভাবে কার্বোন ডাইঅক্সাইড এবং বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী অন্যান্য গ্যাস পর্যবেক্ষণ করতে পারবে।

    সোমবার দুপুরে দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের কাগোশিমা জেলার তানেগাশিমা মহাকাশ কেন্দ্র থেকে একটি এইচ টু এ রকেট কৃত্রিম উপগ্রহটি নিয়ে মহাকাশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।

    পরিকল্পনা অনুযায়ী উৎক্ষেপণের ১৬ মিনিট পরে মহাকাশে কমবেশি ৬১২ কিলোমিটার উচ্চতায় উপগ্রহটিকে কক্ষপথে স্থাপন করা হয়। পরিবেশ মন্ত্রণালয়, জাপান মহাকাশ গবেষণা এজেন্সি এবং জাতীয় পরিবেশ গবেষণা সংস্থার উদ্যোগে নির্মিত উপগ্রহ ইবুকি টু দৈর্ঘ্যে ৫ দশমিক ৮ মিটার এবং এর ওজন হচ্ছে ১ দশমিক ৮ টন।

    এই উপগ্রহটি তার উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সেনসর যন্ত্রের সাহায্যে কার্বোন ডাইঅক্সাইড, মিথেন এবং কার্বোন মোনোঅক্সাইডের প্রত্যেকটির নির্দ্দিষ্ট আলাদা আলাদা অবলোহিত রশ্মি সনাক্ত করবে এবং তারপর পর্যবেক্ষণ করবে।

    নতুন এই উপগ্রহ, ২০০৯ সালে প্রেরিত পূর্বসূরী ইবুকি’র চেয়ে ৮ গুণ বেশি নিখুঁতভাবে কার্বোন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা পরিমাপে সক্ষম।

    ইবুকি টু প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া কার্বোন ডাইঅক্সাইড এবং শিল্প কর্মকান্ডের দরুন তৈরি হওয়া কার্বোন ডাইঅক্সাইডের পার্থক্য বুঝতেও সক্ষম। ক্ষতিকারক পি এম টু পয়েন্ট ফাইভ কণিকা, যা মানুষে স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব ক্ষতিকারক, বাতাসে এর ঘনত্বের হিসেব বুঝতে প্রয়োজনীয় উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারবে ইবুকি টু।

    এই উপগ্রহ মোটামুটি আড়াই মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষণের কাজ শুরু ক’রে দেবে।

    জাপান সরকার বলছে, প্যারিস চুক্তিতে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমণ হ্রাসের যে নির্দ্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেই অনুযায়ী এই গ্যাস হ্রাস পাচ্ছে কি না, নতুন উপগ্রহ তাও পর্যবেক্ষণ করবে।

    এইচ টু এ রকেট সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি পৃথিবী পর্যবেক্ষণ উপগ্রহকেও কক্ষপথে স্থাপন করেছে। জাপান এ নিয়ে তৃতীয় বার অন্য দেশের উপগ্রহ মহাকাশে নিয়ে গেল।