• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • শিহরণ জাগাচ্ছে ঐতিহাসিক টেস্ট
    ২০০৪ সালে রাজিব গান্ধি স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠার পর পেয়েছে মাত্র ৩টি টেস্ট, ৫ ওয়ানডে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন কালে ভদ্রে করার সুযোগ পায় বলে বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট আয়োজন নিয়ে খুব একটা তৎপরতা চোখে পড়েনি হায়দারাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের। তবে বাংলাদেশের ৯৮তম এই টেস্টটিই পাচ্ছে ঐতিহাসিক টেস্টের উত্তাপ। টেস্ট অভিষেকের পর ১৬ বছর ২ মাস ২৯ দিনের প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে আজ। ১৯ বছর আগে এই হায়দারাবাদে সূচিত হয়েছিল বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয়, আকরাম, রফিকদের উত্তরসূরীদের হাত ধরে সেই হায়দারাবাদেই দ্বি-পাক্ষিক সফরে ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশকে নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে করতে শেষ পর্যন্ত বিসিসিআই’র কৃপায় পাওয়া এই একমাত্র টেস্টটি দিচ্ছে উত্তাপ।
    গত বছর ভারতকে ২-১এ ওয়ানডে সিরিজ হারিয়ে দিয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে আলোচনার ঝড়
    তুলছে বাংলাদেশ দল। সর্বশেষ টি-২০ বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুতে ৩ বলে ২ রানের সহজ লক্ষ্যটা পূরণ করতে না পারার কস্টটাও পুষে রেখেছে বাংলাদেশ দল। তার উপর বাংলাদেশ দলকে অবজ্ঞা, অবহেলা করে দ্বি-পাক্ষিক সফর সূচীতে ভারতে আতিথ্য থেকে বিরত রাখার জবাবটাও পারফরমেন্স দিয়ে দিতে চায় মুশফিকুররা। হোক না প্রতিপক্ষ টেস্টের নাম্বার ওয়ান, যেখানে বাংলাদেশ দলের অবস্থান টেস্টের তলানীতে (৯ নম্বরে)।
    র‌্যাংকিংয়ের এই যোজন যোজন দূরত্ব, সর্বশেষ ১৮ টেস্টে অপরাজেয় ভারত পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে হায়দারাবাদ টেস্টকে সামনে রেখে আত্মতুস্টিতে ভুগছে না। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডকে ৪-০তে টেস্ট সিরিজ হারিয়েও ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলী বাংলাদেশকে দেখছেন শ্রদ্ধার চোখেÑ ‘যুদ্ধ ক্ষেত্রটা সমানই দেখছি। বাংলাদেশের ব্যাটিংকে খাটো করে দেখার কিছুই নেই। ওয়ানডে ক্রিকেটে তারা (বাংলাদেশ) বিশ্বের সব দলকেই হারিয়েছে। কারণ তারা জানে, এই ফরম্যাটে কীভাবে খেলতে হয়। তারা এটা নিয়মিত খেলছে। টেস্টে তারা নিয়মিত খেলছে না। তবে  নিউজিল্যান্ড সফরে তারা দারুণ করেছে। এক দিনে তুলেছে সাড়ে তিনশ’ রান। ওভারপ্রতি সাড়ে ৪ রান করে তোলা অসাধারণ। তাদের দলে আছে কোয়ালিটি ক্রিকেটারের সমাবেশ। আমি নিশ্চিত যে যদি তারা এই ফরম্যাটে বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় তাহলে বাংলাদেশ পরিপূর্ণ টেস্ট দল হয়ে উঠবে। তাদের সেই সামর্থ আছে। তাই আমরা চাই দল হিসেবে নিজেদেরকে মেলে ধরতে।’
    ভারতের মাটিতে টেস্টে প্রথম আতিথ্যের সুযোগ পেয়ে অবজ্ঞাকারীদের একটা জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমÑ ‘বেশি টেস্ট আমি ১১ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছি। দুই আড়াই বছর পর বিদেশের মাটিতে আমরা টেস্ট খেলেছি। এটা কখনোই একটা টেস্ট দলের জন্য কাম্য হতে পারে না। যে টিমকে সবাই বলছে টেস্ট খেলতে পারে না কিংবা জানে না; তাদেরকে আপনারা খেলার সুযোগও দেবেন না। তাহলে কিভাবে বুঝতে পারবেন টিম উন্নতি করছে।’
    ২০০০ সালের ২৬ জুন বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদারা স্বীকৃতিতে রেখেছে ভারত বিশেষ অবদান। বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার সমর্থক ভারত সে বছরের ১০ নভেম্বর বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট ইতিহাসেরও অংশ। অথচ, সেই দলটিই কি না বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে টেস্ট খেলতে প্রথম আতিথ্য দিতে করেছে সময়ক্ষেপণ, কাটিয়ে দিয়েছে ১৬ বছর ২ মাস ২৯ দিন! বিষয়টি জেনে নিজেই যেনো লজ্জিত ভারত অধিনায়ক কোহলীÑ ‘মাত্র ক’দিন আগেই আমি জানতে পারলাম বাংলাদেশ দল ভারতে খুব বেশি সফর করেনি। আমরা বাংলাদেশে বেশ ক’বার গিয়েছি,  কিন্তু এবারের আগে ওরা দ্বিপাক্ষিক টেস্ট সিরিজ খেলতে আসেনি। সেদিক থেকে অবশ্যই এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দুই দলের জন্যই শুধু নয়, দুই দেশের জন্যও এটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এটা একটা বিশেষ উপলক্ষ্য, এটা এমন একটা সময়ে হতে যাচ্ছে যখন আমি অধিনায়ক। তাই আমার জন্যও দিনটি বিশেষ কিছু।’ ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলার প্রতীক্ষাটা বড় হলেও সঠিক সময়ে ভারতে টেস্ট খেলতে এসেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ দলের হেড কোচ হাতুরুসিংহেÑ ‘বাংলাদেশ এখন বড় দলগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ভাল করা এখানে একটা ফ্যাক্টর হতে পারে। সঠিক সময়ে আমরা এখানে খেলতে এসেছি। হোমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভাল খেলেছি, নিউজিল্যান্ড সফরেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে।’
    প্রতীক্ষার প্রহর এতো লম্বা বলেই অন্য এক শিহরণ অনুভব করছেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর  রহিমÑ ‘টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে এমন ঘটনা আশ্চর্যজনকই বটে। দেশে এবং দেশের বাইরে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলার স্বপ্ন সবারই থাকে। দেশে দেশের বাইরে ভারতের বিপক্ষে খেলা আমাদের জন্য একটা বড় উপলক্ষ্য। অনেক দিন পর এমনটা হচ্ছে বলে আমাদের দলের সবাই এখন শিহরণ অনুভব করছে। বিশ্বের নাম্বার ওয়ান দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পেয়ে আমরা আমাদের স্কিল প্রদর্শন করতে চাই।’

    শুকনো ফুলের ব্যথা!

    ঝরে যাওয়া ফুলের প্রতি এ কেমন অবজ্ঞা! কেমন অকৃতজ্ঞতা!! যখন বাগানের ফুল ছিলাম, পাপড়ি-মেলা তাজা ফুল, তখন তো ভালোবাসতে! অন্তত ভালোবাসার কথা বলতে!! একটু সুবাস-সান্নিধ্যের জন্য ছুটে আসতে!!!

    সুবাস দিতে কার্পণ্য করেছি?!

    যখন ডাল থেকে ছিঁড়ে ফুলদানিতে সাজাতে চাইলে, ব্যথা পেলাম, তবু অস্বীকার করিনি। তোমার ঘরে বসে তোমাকে সুবাস দিয়েছি। যখন শুকিয়ে গেলাম, ফুলদানি থেকেও ছুঁড়ে ফেললে! হায়রে নিষ্ঠুর!! হায়রে অকৃতজ্ঞ!!

    আমি শুকনো ফুল, মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছি, ভাবছো আমার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে! নাহ, এখনো পারি তোমাকে সুবাস দিতে, যদি একটু কৃতজ্ঞ থাকো। কৃতজ্ঞতা এখনো ফুল ফোটায়, গোলাব, বেলি, শিউলি, সব রকম ফুল।

    বিশ্বাস হলো না! তাহলে যা বলেছি সব ভুল। দয়া করে ভুলে যাও শুকনো ফুলের ভুল। ১[1]

    আবু তাহের মেছবাহ

    [1] ১. রুচিশীল সাহিত্য-সাধকের চিন্তা হয়ে থাকে খুবই উন্নত, গভীর ও সুদূর প্রসারী। তিনি উপলব্ধি করেন নির্বাক জড়বস্তুর অভিব্যক্তি এবং তাতে আপ্লুত হন। কখনো অন্যকেও আপ্লুত করেন। ঠিক যেমনটি কবি বলেছেন-

    خدا اگر دل فطرت شناس دے تجهكو + سكوت لالہ وگل سے كلام پيدا كر

    অর্থ : খোদা যদি তোমায় দান করেন প্রকৃতি-বৎসল হৃদয়

    তবেই বুঝবে লালা ও গোলাবের ভাষাহীন বাণী।

    মাদরাসাতুল মদীনাহ হযরতপুর প্রাঙ্গণে আছে ছোট্ট একটি শিউলি ফুলগাছ। অবিরাম অসংখ্য ফুল দ্বারা যা গোটা পরিবেশকে সুবাসিত করে রেখেছে। ফুল তো সবাই দেখে এবং তার সৌন্দর্য উপভোগ করে, কিন্তু তা থেকে নিত্যনতুন উপলব্ধি গ্রহণ তাওফীকপ্রাপ্ত মানুষের কাজ। উপরের সংক্ষিপ্ত লেখায় এ ধরনেরই এক ভিন্নধর্মী উপলব্ধির সাথে আমাদের পরিচিত করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা তাঁকে উত্তম বিনিময় দান করুন। সুস্থতা ও নিরাপত্তার সাথে নেক ও দীর্ঘ হায়াত দান করুন। আমীন।

    এ লেখা থেকে গ্রহণ করার মতো অনেক কিছুই আছে। তবে প্রথমেই আমার মনে যে দুটি বিষয় এসেছে তা এখানে তুলে ধরছি।

    এক. সবকিছুর মধ্যেই সবর ও কোমলতা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। কিন্তু অনেক সময় আমাদের অভ্যাস হল, দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর কোনো বস্তু ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেলে তা নির্দয়ভাবে ছুঁড়ে ফেলি। কোনো কিছু পুরনো হয়ে গেলে বা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেলে সাধারণত তার ব্যবহারের সমাপ্তি ঘটাতেই হয়। কিন্তু তা হওয়া চাই কোমলভাবে, কৃতজ্ঞতা ও কৃতার্থতার সাথে। যখন কোনো সাথীকে পুরোনো কলমটা নির্দয়ভাবে ছুঁড়ে মারতে দেখি তখন খুব কষ্ট হয়। এটা হয়তো হাদীসে শেখানো স্থিরতা ও গাম্ভীর্যের পরিপন্থী। হাদীসে দস্তরখানা উঠানোর সময় নিম্নোক্ত দুআর তালকীন করা হয়েছে-

    اَلْحَمْدُ لِلهِ حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيْهِ، غَيْرَ مَكْفِيٍّ وَلَا مُوَدَّعٍ وَلَا مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبَّنَا .

    এই দুআর মধ্যে غَيْرَ مَكْفِيٍّ وَلَا مُوَدَّعٍ وَلَا مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبَّنَا অংশের প্রতিটি বাক্য থেকে উপরোক্ত শিক্ষাই পাওয়া যাচ্ছে।

    দুই. যার জীবন ফুলসম তাঁর কাছ থেকে গ্রহণ অব্যহত রাখা উচিত।

    ফুলের মতো যার জীবন তার উপরও বিভিন্ন পরিস্থিতি আসতে পারে। এমনকি তার মৃত্যুও হতে পারে। তখন এমন হওয়া উচিত নয় যে, সসম্মানে সমাহিত করেই তার সাথে সব সম্পর্ক শেষ। বরং তাঁর ফুল থেকে আমরা যে সুবাসিত হচ্ছি তার শুকরিয়াস্বরূপ তাঁর জন্য ইস্তিগফার ও ঈসালে সওয়াবের ধারা চালু রাখা। আর ফুলের যে সুবাস তিনি সদকায়ে জারিয়ারূপে রেখে গেছেন তা থেকেও ইস্তেফাদা অব্যাহত রাখা উচিত।

    আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাঁর প্রতিটি নিআমত কাজে লাগানোর এবং নিআমতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের তাওফীক দান করুন। ফুলের যথাযোগ্য মর্যাদা দান এবং ফুলের মতো জীবন অবলম্বনের তাওফীক দান করুন। আমীন। আরো একবার আরজ করছি-

    جزاك الله خيراً يا أبا محمد

    (মুহাম্মাদ আবদুল মালেক)

    যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা : ট্রাম্প প্রশাসনের আপিল খারিজ

    যুক্তরাষ্ট্রে সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি পুনর্বহালের আবেদন করা আপিল খারিজ করে দিয়েছে দেশটির ফেডারেল আদালত। শনিবার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয় সিয়াটলের একটি আদালত। রবিবার সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে সেটাও খারিজ করে দেয় ফেডারেল আদালত।
    ফলে এ সংক্রান্ত সম্পূর্ণ শুনানি না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশনা জারি থাকছে।
    ট্রাম্প প্রশাসন সাতটি মুসলিমপ্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে জারি করা নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে স্থগিত করে একটি নিম্ন আদালতের দেয়া নির্দেশনার বিরুদ্ধে আপিলের অংশ হিসেবে নবম সার্কিট কোর্ট অব জাস্টিসে আবেদন করেছিল।
    ফিনিক্সে বিচারক উইলিয়াম ক্যানবি, জুনিয়র ও সান ফ্রান্সিস্কোতে বিচারক মিশেল ফ্রিডল্যান্ড এ আবেদন খারিজ করে দেয়া সংক্ষিপ্ত রায়ে আপিল গ্রহণে অস্বীকৃতির কারণ উল্লেখ করেননি। তবে তারা ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী দুই অঙ্গরাজ্য ওয়াশিংটন ও মিনেসোটা ওএবং বিচার মন্ত্রণালয়কে নিজ নিজ অবস্থানের পক্ষে আরো বিস্তারিত নথিপত্র উপস্থাপনের জন্য যথাক্রমে রবিবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিট ও সোমবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে।
    যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের আইনজীবীরা বলছেন, সাতটি দেশের নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি পুরোপুরি অসাংবিধানিক।
    তবে বিচার মন্ত্রণালয় নিজেদের যুক্তি তুলে ধরে বলেছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করার কোনো এখতিয়ার অঙ্গরাজ্যগুলোর নেই। আর জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি সংক্রান্ত প্রেসিডেন্টের কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলারও কোনো অধিকার তাদের নেই।
    ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আদালতের ওই নির্দেশনার পর সাতটি মুসলিমপ্রধান দেশের অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন।
    মুসলিমপ্রধান সাত দেশের নাগরিকদের প্রবেশ নিয়ে ট্রাম্পের আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছিলেন, এ ধরনের আইনী রুলিংয়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্র খারাপ ও বিপজ্জনক মানুষে ভরে যেতে পারে।
    এরপরেই দেশটির বিচার মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে মিস্টার ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা স্থগিতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে বলে জানায়।
    এর আগে মিস্টার ট্রাম্প টুইটারে জানিয়েছিলেন, তথাকথিত বিচারক আইনের প্রয়োগ স্থগিত করেছে। তিনি তখন এটাও জানিয়ে দেন যে, আদালতের এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হবে এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হবে।
    যদিও শুক্রবার আদালতের ওই আদেশের পর থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলছে, যেসব ভিসা বাতিল করা হয়েছে সেগুলো পুনর্বিবেচনা করা হবে।
    প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ জারির পর প্রায় ষাট হাজার ভিসা বাতিল করার কথা জানিয়েছিল পররাষ্ট্র দফতর।
    এছাড়া আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি এয়ার লাইনস তাদের ফ্লাইটে যাত্রী ওঠানো শুরু করে দেয়।
    এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে সিরিয়া, ইরাক, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের লোকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষিদ্ধ করেন। এর পর সিয়াটলের একজন বিচারক ওই আদেশটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেন।

    ইসলাম গ্রহণের পর এবার মদ নিষিদ্ধ করলেন নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি

    নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডেলা ম্যান্ডেলা ২০১৬ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর এবার তার খ্রিস্টান অধ্যুষিত গ্রামে এলকোহল ও মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করেছেন। তবে তার এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার মদ বিক্রেতা ও ক্রেতারা। মান্ডেলা ম্যান্ডেলা (৪২) তার এমভেজো গ্রামের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৭ সালে পিতামহ নেলসন ম্যান্ডেলা কর্তৃক তাকে এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। গত বছরের গোড়ার দিকে তিনি রাবিয়া ক্লার্ক নামে এক মুসলিম মহিলাকে বিয়ে করেন এবং তাকে বিয়ের দুই মাস পূর্বে তিনি ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নেন। এলকোহল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে বিক্রেতা ও ক্রেতাদের ক্ষোভের মুখে মান্ডেলা ম্যান্ডেলা দাবি করেছেন, তার এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে তার ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। গত বছর মান্ডেলা জানিয়েছিলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি ট্রাকযোগে এমভেজো গ্রামের মদের দোকানগুলোতে এলকোহল পরিবহন নিষিদ্ধ করতে চান। এমভেজো গ্রামে জোসা উপজাতিরা বসবাস করেন। তাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। মান্ডেলা জানান, তার গ্রামে সব ধরনের এলকোহলের ডেলিভারি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যদিও, সেখানকার সরাইখানাগুলোর মদের লাইসেন্স রয়েছে এবং বৈধভাবেই তারা মদ বিক্রি করে আসছে। এলকোহল ডেলিভারি এবং মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করায় সরাইখানার মালিকরা মেন্ডলার ওপর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ। ডোডু নামে একজন সরাই মালিক বলেন, আমরা জানি, যদিও তিনি মদ পান করে না। কিন্তু তিনি তার প্রাসাদে অতিথিদের জন্য এলকোহল রাখেন। তাই তার এ সিদ্ধান্তে আমি অত্যন্ত বিস্মিত। তিনি আরো বলেন, তিনি যদি এতো এলকোহল বিরোধী হন, তবে তিনি তার বাড়িতে এটা রাখতে পারবেন না। একটি পুরো মাসের জন্য ট্রাকগুলো আমাদের মাল ডেলিভারি বন্ধ করে দিয়েছে। টাইমস জানায়, মান্ডেলার আইনজীবী জানিয়েছেন যে, এই নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে তার পরিবর্তিত ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই। এলাকার পরিবারগুলোর উপর এলকোহলের ধ্বংসাত্মক প্রভাবের কারণেই এটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইসলামে কোনো ধরনের মাদকদ্রব্যের ব্যবহার, বিশেষ করে এলকোহল গ্রহণকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআন মজীদের বেশ কয়েকটি পৃথক আয়াতের মাধ্যমে এটি নিষিদ্ধের কথা বলা হয়েছে। মান্ডেলা জানান, এইডসের কারণে ২০০৫ সালে তার পিতা মারা যান। তাকে পূর্বে এলকোহলের বিপদ সম্পর্কে অনেকবার সতর্ক করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আমার বাবার মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে তার অতিমাত্রায় এলকোহল গ্রহণ। মারা যাবার পূর্বে তিনি আমাকে এবং আমার অনুজ এনদাবাকে বলেগিয়েছেন যে, এলকোহল অত্যন্ত খারাপ জিনিস এবং আমরা যেন কখনোই এলকোহল পান না করি। মান্ডেলা ম্যান্ডেলা ২০০৫ তানদো মাবুনাকে তার প্রথম স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। পরে মেন্ডলাকে বন্ধ্যা অভিযোগ দিয়ে ওই নারী বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন। তারপর ২০১০ সালে তিনি ফরাসি নাগরিক অ্যানিস গ্রিমউডকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। ২০১১ সালে দ্বিতীয় স্ত্রী একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন কিন্তু এক বছর পরে মান্ডেলা ওই সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন যে, শিশুটি তার ভাইয়ের ঔরসজাত। ২০১১ সালে বড়দিনের আগের দিন তিনি তার তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে এমবালি মাকায়তিনিকে বিয়ে করেন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি তার চতুর্থ স্ত্রীকে বিয়ের দুই মাস পূর্বে তিনি ইসলামে ধর্মান্তরিত হন।

    অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিদায়

    আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ও সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মারা গেছেন। রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে রবিবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়। এর আগে তিনি ওই হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

    সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হক জানান, রাত পৌনে চারটার দিকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তখন চিকিৎসকেরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। ৪টা ২৪ মিনিটে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বৃহস্পতিবার অসুস্থ বোধ করছিলেন। শুক্রবার সকালে তাকে ল্যাব এইডে ভর্তি করা হয়। তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। রাত নয়টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।

    সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি।

    সকাল সাড়ে সাতটার দিকে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। তিনি আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্ব। পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে তিনি নাম্বার ওয়ান বলে আমার মনে হয়। তার মৃত্যুতে বিরাট শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এটা সহজে পূরণ হবে, এটা মনে করার কারণ নেই। আমরা তাকে শেষ বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

    ওবায়দুল কাদের জানান, সকাল নয়টায় তার মরদেহ ঢাকার বাসভবন জিগাতলায় নেওয়া হবে। বেলা ১২টায় মরদেহ নেওয়া হবে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। বিকেল তিনটায় মরদেহ নেওয়া হবে সংসদ ভবনে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এর পর সংসদে অবিচুয়ারি রেফারেন্স হবে। আগামীকাল সোমবার সকাল নয়টায় মরদেহ যাবে সিলেটে। সকাল ১০টায় সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। বেলা ১১টায় মরদেহ যাবে সুনামগঞ্জ। এরপর সেখান থেকে মরদেহ তার নির্বাচিত এলাকা দিরাই ও শাল্লাতে নেওয়া হবে।

    সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সংক্ষিপ্ত জীবনী

    বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১৯৪৫ সালের ৫ মে সুনামগঞ্জের আনোয়ারাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

    বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা কমিটির অন্যতম সদস্য সুরঞ্জিতের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থী রাজনীতির মধ্য দিয়ে। স্বাধীন দেশের প্রথম সংসদসহ তিনি সাত বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তুখোড় পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত ছিলেন বর্তমান সংসদে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি।

    সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পরে ঢাকা সেন্ট্রাল ল কলেজ থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ল পাসের পর কিছু দিন তিনি আইন পেশায়ও যুক্ত ছিলেন। ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ভিপি প্রার্থী হয়েছিলেন। ১৯৬৭ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) পিকিং ও মস্কো ধারায় দুই টুকরা হলে মাওলানা ভাসানীকে ত্যাগ করে সুরঞ্জিত অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন অংশে যোগ দেন।

    ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাইরে ন্যাপ থেকে জয়ী হয়ে দেশবাসীকে তাক লাগিয়ে দেন তিনি। পরে ন্যাপের ভাঙনের পর গণতন্ত্রী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৬ ও ১৯৯১- এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে জয়ী হন।

    পঞ্চম সংসদের সদস্য থাকাকালেই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে প্রথমে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং পরে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন।

    ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে সুরঞ্জিত ভোটে হেরে গেলেও পরে হবিগঞ্জের একটি আসনে উপ-নির্বাচন করে তিনি বিজয়ী হন। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা নিযুক্ত হন তিনি।

    ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত হন। দলীয় মনোনয়নে এমপি হলেও ওয়ান-ইলেভেনের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অন্য চার জন সিনিয়র নেতার সঙ্গে সুরঞ্জিতও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর পদটি হারান।

    ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর সুরঞ্জিতকে আইন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান। পরে ২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর রেলমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সুরঞ্জিত। কিন্তু ব্যক্তিগত সহকারীর দুর্নীতির দায় মাথায় নিয়ে পরের বছর (২০১২) ১৬ এপ্রিল মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে দফতর বিহীন মন্ত্রী হিসেবে তার মন্ত্রীসভায় রেখে দেন।

    এ সময় নির্দোষ প্রমাণিত না হলে সক্রিয় রাজনীতি করবেন না বলে সুরঞ্জিত ঘোষণা দেন। এপিএসের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সুরঞ্জিত সেনকে নির্দোষ ঘোষণা করলে আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি।

    ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সম্মেলন তিনি পুনরায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনোনীত হয়েছেন। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে তিনি আবারও আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

    সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ডক্টরেট। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থার শিক্ষা বিভাগে সমন্বয়কারী পদে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের একমাত্র সন্তান সৌমেন সেনগুপ্ত নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং কানাডা থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ব্যবসা করছেন। সৌমেনের স্ত্রী রাখী মৈত্রী সেনগুপ্ত পেশায় চিকিৎসক।

    সার্চ কমিটির কার্যক্রম গভীর পর্যবেক্ষণে বিএনপি
    নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সার্চ কমিটির কার্যক্রম গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপি। রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রস্তাবের আলোকে ইসি গঠন হলে তা মেনে নেবে। পাশাপাশি আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নতুন ইসিকে কিছু প্রস্তাবনা দেয়ার সিদ্ধান্ত দলটির। আর গতবারের মতো মেরুদ-হীন ও দলকানা ইসি গঠন করা হলে রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে সরব হবে বিএনপি। ইনকিলাবের সাথে আলাপকালে বিএনপির সিনিয়র নেতারা এমন আভাস দিয়েছেন।
    ২৫টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে পাওয়া যায় ১২৫টি নামের মধ্যে ২০ জনের শর্ট লিস্ট করেছে সার্চ কমিটি। ওই তালিকায় সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবদুল করিম, শেখ ওয়াহিদ-উজ-জামান, মোল্লা ওয়াহিদউজ্জামান, সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ, শিক্ষাবিদ ড. তোফায়েল আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক নির্বাচন কমিশন ও স্বাস্থ্য সচিব হুমায়ুন কবির, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, শিক্ষাবিদ ড. সাদেকা হালিম, এলজিআরডি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মনজুর হোসেন, নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ এমএ গফুর, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) দানিয়েল ইসলাম, বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন, এনবিআরের সাবেক সদস্য রাহেলা চৌধুরী, সাবেক গভর্নর খোরশেদ আলম, সাবেক সচিব ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী ও কমডোর (অব.) ওয়াহিদ চৌধুরী নাম রয়েছে বলে জানতে পেরেছে বিএনপি।
    এদের অধিকাংশের ব্যাপারে বিএনপির তেমন আপত্তি নেই। এসব ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে সবচেয়ে সুযোগ্যদের দিয়ে কমিটি করা হলে তাদের স্বাগত জানানোর পাশাপাশি নতুন ইসিকে সহযোগিতা করতে বিএনপি নানা উদ্যোগ নেবে।
    বিএনপি সূত্র মতে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্দোলন করে দাবি আদায়ের বিষয়টি এখনই ভাবতে চায়না বিএনপি। কারণ  দুই দফা আন্দোলন করে বিএনপি সরকারকে নতুন নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে পারেনি বরং আন্দোলনে সহিংসতার কারণে সমালোচিত হয়েছে। সঙ্গত কারণে এখন সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে সমঝোতা ও আলোচনার বিষয়টি। তাই ঐ পথেই হাঁটছে। এছাড়া আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো বিকল্পও নেই। সেজন্য যতটা সম্ভব নিরপেক্ষ ইসি গঠনে ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন করার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে চাপ দিতে চাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এর কোনো কিছুই সম্ভব না হলে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। তবে দলীয় অস্তিত্বের স্বার্থে কট্টর আয়ামীপন্থী ব্যক্তিদের দিয়ে ইসি গঠন করা হলে শান্তিপূর্ণ নিরীহ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি দলের পরবর্তী সব ধরনের কর্মসূচিতে নতুন ইসির বিরুদ্ধে বক্তব্য আসবে। আর ইসি’র নিরপেক্ষতা নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও জানানো হবে। বিশেষ করে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা চাওয়া হবে।
    অপর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন যেমন গঠন করা হোক না কেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নতুন ইসিকে কয়েকটি প্রস্তাব দিতে চায় বিএনপি। নির্বাচনের সময় প্রশাসনের নিরপেক্ষ অবস্থা, ইভিএম’র বিরোধিতা, দলবাজ কর্মকর্তাদের নির্বাচনী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত না করা এমন কিছু প্রস্তাব দেয়া হবে, যাতে ইসি সুষ্ঠু নির্বাচন করার ব্যাপারে চাপে থাকে। এরই মধ্যে দলের সিনিয়র কয়েকজন নেতা নতুন ইসিকে দেয়ার জন্য প্রস্তাবনার একটি খসড়া তৈরি করছেন। পাশাপাশি দলবাজ কর্মকর্তাদেরও একটি তালিকা করা হচ্ছে।
    বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, সার্চ কমিটি বিএনপির মনঃপূত হয়নি। এরপরেও নিরপেক্ষ ইসি গঠনে আশা হারায়নি। কারণ, রাজনৈতিক দল এবং ও বিশিষ্ট নাগরিকরা যেসব প্রস্তাব দিয়েছে এর আলোকে ইসি গঠন হলে তা সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে। আর এখন পর্যন্ত সার্চ কমিটি যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তা ইতিবাচক। এখন দেখার বিষয় তারা আলোচনার আলোকে কাজ করে নাকি কারো ইশারায় কাজ করে।
    ইসি গঠন নিয়ে বিএনপির পরবর্তী ভাবনার বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, সার্চ কমিটি নিয়ে শুরুতেই বিএনপি আপত্তি করেছে। এরপরেও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে নাম নেয়া এবং সমাজের সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনা করায় সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন হবে এমনটা আশা করা যায়। যদি এরপরেও বিতর্কিত কমিশন হয় কর্মসূচি দেয়া হবে।
    স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য গয়েশ্বর রায় বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে যে নাম নিয়েছে সেগুলো থেকেই ইসি গঠন হওয়া উচিত। নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করে বিতর্কিতদের ইসি গঠন করা হলে বিএনপি দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা ঠিক করবে।

    জাপান সফরে মার্কিন পররাষ্ট্র প্রদান

    মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জিম ম্যাটিস শুক্রবার জাপানে এসে পৌঁছেছেন। ম্যাটিস জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সহ বিভিন্ন উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করবেন। তারা উত্তর কোরিয়া সহ দ্বিপাক্ষিক জোট নিয়ে আলোছনা করবেন।

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর এটিই হচ্ছে ম্যাটিস এর প্রথম জাপান সফর।

    ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখ আবে-ট্রাম্প শীর্ষ বৈঠকের প্রাথমিক কাজও করবে ম্যাটিস’র সফর। ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে জাপানের প্রত্যাশার অন্যতম একটি হচ্ছে জাপান-মার্কিন নিরাপত্তা জোট নিশ্চিত করা।

    আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব হিজাব দিবস

    ‘নারীর হিজাব পরার পক্ষে দাঁড়ান’ এ আহ্বানকে সামনে রেখে আজ ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী ‘হিজাব দিবস’ পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশসহ বর্তমানে বিশ্বের ১৯০টিরও বেশি দেশে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে।

    নিউ ইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নাজমা খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সর্বপ্রথম হিজাব দিবস পালনের পক্ষে প্রচারণা চালান। এর ধারাবাহিকতায় পরে মুসলিম দেশগুলোতে এই দিবসটি পালনের প্রচলন শুরু হয়।

    এ উপলক্ষে নিউ ইয়র্কের মূল অনুষ্ঠান হবে সিটি হলের বারান্দায়। বাংলাদেশি, পাকিস্তানি, ভারতীয়, আফগান, তুরস্ক, সৌদি আরব, মিসর, কুয়েত, কাতার ও ইরানের নারীরা হিজাব দিবসের চেতনা ভিন্ন ধর্মের আমেরিকানদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেবেন।

    বাংলাদেশী নাজমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো বিশ্বের প্রায় ৬৭টি দেশের মুসলিম-অমুসলিম নারীরা হিজাব দিবস পালন শুরু করে।
    শুরু হওয়ার পর হিজাব দিবস বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। মাত্র দুই বছরের মাথায় গতবার ১৫০টি দেশে এ দিবস পালিত হয়েছিল।

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগমনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলোতে মুসলমানরা নানা বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে হিজাব পরা মুসলিম নারীরা হয়রানি-বৈষম্য-আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।

    এ অবস্থায় এবারের হিজাব দিবসকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে’র দাফতরিক ওয়েবসাইটে এবারের দিবসে উগ্র খ্রিস্টান ধর্মান্ধতা, বৈষম্য এবং মুসলিম নারীর অধিকার হরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

    বিভিন্ন দেশে হিজাবকে নিষিদ্ধ করে মুসলিম নারীদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে জানিয়ে ‘বতর্মান সময়কে সবচেয়ে বৈরি সময়’ বলে অভিহিত করেছে ওয়েবসাইটটি।

    হিজাব দিবসের আহ্বানকারী নাজমা খান ১১ বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলেন।

    তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুসলিম নারীরা ছাড়াও খ্রিস্টান, ইহুদি, হিন্দু, বৌদ্ধ এবং নাস্তিকরাও হিজাব দিবস পালন করেন।

    ভারত যেন আমাদের বারবার ডাকে

     

    ভারত সফরে নিজেদের প্রমাণ করার আছে বাংলাদেশের। ছবি: বিসিবি
    টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ১৬ বছর পর ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উপলক্ষটা বিশেষই। তবে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের কাছে এটি মোটেও ‘ঐতিহাসিক’ কিছু নয়। ভারত সফরে ভালো করতে চান। আমরা স্কোয়াড দেখেছি। শক্তিশালী স্কোয়াড। তাদের বিপক্ষে আমরা দুই তিন দিন নয়, বরং পুরো পাঁচ দিন ভালো খেলতে চাই।’
    নিউজিল্যান্ড সফরে দুটি টেস্টই বিরাট শিক্ষা বাংলাদেশের জন্য। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সগুলোকে দলগত পারফরম্যান্সে পরিণত করতে না পারার ব্যর্থতাই যে সবকিছু শেষ করে দিতে পারে বাংলাদেশ সেটি বুঝেছে বেশ ভালোভাবেই। ভারত সফরে তাই ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সকে দলগত পারফরম্যান্সে পরিণত করাই লক্ষ্য মুশফিকের, ‘ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স দিয়ে নয়, দরকার হলো দলগত খেলা। যারা এত দিন ভালো খেলেছে, আশা করি তারা সেটা ধরে রাখবে। আর যারা ভালো খেলতে পারেনি, তারা এখন নিজেদের মেলে ধরবে। দলীয় প্রচেষ্টাটা দরকার। তাহলে ভালো ফল হবে।’
    নিজের চোট প্রায় সেরে উঠেছে বলেই জানিয়েছেন মুশফিক। ৯ ফেব্রুয়ারি টেস্টের আগেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা তাঁর, ‘আল্লাহর রহমতে আমার ইনজুরি অনেকটা কমে এসেছে। এখনো টেস্টে নয় দিন বাকি আছে। ওখানে গিয়ে একটা অনুশীলন ম্যাচ আছে। আশা করছি, তার আগেই আমি পুরো ফিট হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন কিপারের আঙুলের ব্যথা থাকে। এটা ম্যানেজ করে খেলতে হয়। অনুশীলন ম্যাচটা খেলে ম্যাচ ফিটনেস ফিরে পেতে চাই।’
    মোস্তাফিজকে দীর্ঘ সময়ের জন্যই পেতে চান মুশফিক। সে কারণেই ভারত সফরে তাঁকে না পাওয়ায় আফসোস নেই বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়কের। তাঁর প্রার্থনা, দলের আক্রমণের অন্যতম প্রধান অস্ত্র যেন দীর্ঘমেয়াদি চোটে না পড়েন, ‘মোস্তাফিজকে সব সময় দলে চাই। সে যাতে তিন ধরনের ক্রিকেটেই খেলতে পারে, সেটাই আমরা চাই। সামনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ আছে। এরপর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আছে, সেখানে তাকে আমাদের দরকার। এ ছাড়া ইনজুরি থেকে ফিরেই একজন বোলার সরাসরি টানা পাঁচ দিন খেলতে পারে না। এটা কঠিন। টেস্ট খেলতে গিয়ে সে যদি দীর্ঘ মেয়াদি ইনজুরিতে পড়ে, সেটা খারাপ হবে।’
    ভারত ১৬ বছর টেস্ট খেলতে তাদের দেশে ডাকেনি। এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে চান না মুশফিক। তাঁর মতে, বরং পাঁচ বছর আগে ভারতে না গিয়ে এখন যাওয়াটা দলের জন্যই ভালো হয়েছে। ভারতের মাটিতে ভালো খেলার সম্ভাবনাটা উজ্জ্বল হয়েছে, ‘আমার কাছে এটা ঐতিহাসিক ধরনের কিছু মনে হয় না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেললে বেশি চাপ থাকে। কারণ তাদের কাছে হারলে অনেক ব্যাপার থাকে। ওখানে আমাদের অনেক কিছু করার আছে। পাঁচ বছর আগের চেয়ে এখন যাওয়া মানে আমাদের ভালো কিছু করার আছে। ভারতের মাটিতে আমরা কেমন খেলি, সেটা প্রমাণ করার আছে। এটা আর দশটা ম্যাচের মতোই একটা টেস্ট। এমন পারফর্ম করতে চাই, যাতে ভারত যেন আমাদের বারবার আমন্ত্রণ জানায়।’