• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • ইসলাম গ্রহণের পর এবার মদ নিষিদ্ধ করলেন নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি

    নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডেলা ম্যান্ডেলা ২০১৬ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর এবার তার খ্রিস্টান অধ্যুষিত গ্রামে এলকোহল ও মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করেছেন। তবে তার এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার মদ বিক্রেতা ও ক্রেতারা। মান্ডেলা ম্যান্ডেলা (৪২) তার এমভেজো গ্রামের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৭ সালে পিতামহ নেলসন ম্যান্ডেলা কর্তৃক তাকে এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। গত বছরের গোড়ার দিকে তিনি রাবিয়া ক্লার্ক নামে এক মুসলিম মহিলাকে বিয়ে করেন এবং তাকে বিয়ের দুই মাস পূর্বে তিনি ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নেন। এলকোহল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে বিক্রেতা ও ক্রেতাদের ক্ষোভের মুখে মান্ডেলা ম্যান্ডেলা দাবি করেছেন, তার এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে তার ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। গত বছর মান্ডেলা জানিয়েছিলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি ট্রাকযোগে এমভেজো গ্রামের মদের দোকানগুলোতে এলকোহল পরিবহন নিষিদ্ধ করতে চান। এমভেজো গ্রামে জোসা উপজাতিরা বসবাস করেন। তাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। মান্ডেলা জানান, তার গ্রামে সব ধরনের এলকোহলের ডেলিভারি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যদিও, সেখানকার সরাইখানাগুলোর মদের লাইসেন্স রয়েছে এবং বৈধভাবেই তারা মদ বিক্রি করে আসছে। এলকোহল ডেলিভারি এবং মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করায় সরাইখানার মালিকরা মেন্ডলার ওপর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ। ডোডু নামে একজন সরাই মালিক বলেন, আমরা জানি, যদিও তিনি মদ পান করে না। কিন্তু তিনি তার প্রাসাদে অতিথিদের জন্য এলকোহল রাখেন। তাই তার এ সিদ্ধান্তে আমি অত্যন্ত বিস্মিত। তিনি আরো বলেন, তিনি যদি এতো এলকোহল বিরোধী হন, তবে তিনি তার বাড়িতে এটা রাখতে পারবেন না। একটি পুরো মাসের জন্য ট্রাকগুলো আমাদের মাল ডেলিভারি বন্ধ করে দিয়েছে। টাইমস জানায়, মান্ডেলার আইনজীবী জানিয়েছেন যে, এই নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে তার পরিবর্তিত ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই। এলাকার পরিবারগুলোর উপর এলকোহলের ধ্বংসাত্মক প্রভাবের কারণেই এটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইসলামে কোনো ধরনের মাদকদ্রব্যের ব্যবহার, বিশেষ করে এলকোহল গ্রহণকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআন মজীদের বেশ কয়েকটি পৃথক আয়াতের মাধ্যমে এটি নিষিদ্ধের কথা বলা হয়েছে। মান্ডেলা জানান, এইডসের কারণে ২০০৫ সালে তার পিতা মারা যান। তাকে পূর্বে এলকোহলের বিপদ সম্পর্কে অনেকবার সতর্ক করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আমার বাবার মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে তার অতিমাত্রায় এলকোহল গ্রহণ। মারা যাবার পূর্বে তিনি আমাকে এবং আমার অনুজ এনদাবাকে বলেগিয়েছেন যে, এলকোহল অত্যন্ত খারাপ জিনিস এবং আমরা যেন কখনোই এলকোহল পান না করি। মান্ডেলা ম্যান্ডেলা ২০০৫ তানদো মাবুনাকে তার প্রথম স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। পরে মেন্ডলাকে বন্ধ্যা অভিযোগ দিয়ে ওই নারী বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন। তারপর ২০১০ সালে তিনি ফরাসি নাগরিক অ্যানিস গ্রিমউডকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। ২০১১ সালে দ্বিতীয় স্ত্রী একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন কিন্তু এক বছর পরে মান্ডেলা ওই সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন যে, শিশুটি তার ভাইয়ের ঔরসজাত। ২০১১ সালে বড়দিনের আগের দিন তিনি তার তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে এমবালি মাকায়তিনিকে বিয়ে করেন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি তার চতুর্থ স্ত্রীকে বিয়ের দুই মাস পূর্বে তিনি ইসলামে ধর্মান্তরিত হন।

    অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিদায়

    আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ও সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মারা গেছেন। রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে রবিবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়। এর আগে তিনি ওই হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

    সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হক জানান, রাত পৌনে চারটার দিকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তখন চিকিৎসকেরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। ৪টা ২৪ মিনিটে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বৃহস্পতিবার অসুস্থ বোধ করছিলেন। শুক্রবার সকালে তাকে ল্যাব এইডে ভর্তি করা হয়। তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। রাত নয়টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।

    সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি।

    সকাল সাড়ে সাতটার দিকে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। তিনি আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্ব। পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে তিনি নাম্বার ওয়ান বলে আমার মনে হয়। তার মৃত্যুতে বিরাট শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এটা সহজে পূরণ হবে, এটা মনে করার কারণ নেই। আমরা তাকে শেষ বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

    ওবায়দুল কাদের জানান, সকাল নয়টায় তার মরদেহ ঢাকার বাসভবন জিগাতলায় নেওয়া হবে। বেলা ১২টায় মরদেহ নেওয়া হবে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। বিকেল তিনটায় মরদেহ নেওয়া হবে সংসদ ভবনে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এর পর সংসদে অবিচুয়ারি রেফারেন্স হবে। আগামীকাল সোমবার সকাল নয়টায় মরদেহ যাবে সিলেটে। সকাল ১০টায় সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। বেলা ১১টায় মরদেহ যাবে সুনামগঞ্জ। এরপর সেখান থেকে মরদেহ তার নির্বাচিত এলাকা দিরাই ও শাল্লাতে নেওয়া হবে।

    সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সংক্ষিপ্ত জীবনী

    বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১৯৪৫ সালের ৫ মে সুনামগঞ্জের আনোয়ারাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

    বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা কমিটির অন্যতম সদস্য সুরঞ্জিতের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থী রাজনীতির মধ্য দিয়ে। স্বাধীন দেশের প্রথম সংসদসহ তিনি সাত বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তুখোড় পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত ছিলেন বর্তমান সংসদে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি।

    সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পরে ঢাকা সেন্ট্রাল ল কলেজ থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ল পাসের পর কিছু দিন তিনি আইন পেশায়ও যুক্ত ছিলেন। ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ভিপি প্রার্থী হয়েছিলেন। ১৯৬৭ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) পিকিং ও মস্কো ধারায় দুই টুকরা হলে মাওলানা ভাসানীকে ত্যাগ করে সুরঞ্জিত অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন অংশে যোগ দেন।

    ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাইরে ন্যাপ থেকে জয়ী হয়ে দেশবাসীকে তাক লাগিয়ে দেন তিনি। পরে ন্যাপের ভাঙনের পর গণতন্ত্রী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৬ ও ১৯৯১- এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে জয়ী হন।

    পঞ্চম সংসদের সদস্য থাকাকালেই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে প্রথমে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং পরে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন।

    ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে সুরঞ্জিত ভোটে হেরে গেলেও পরে হবিগঞ্জের একটি আসনে উপ-নির্বাচন করে তিনি বিজয়ী হন। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা নিযুক্ত হন তিনি।

    ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত হন। দলীয় মনোনয়নে এমপি হলেও ওয়ান-ইলেভেনের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অন্য চার জন সিনিয়র নেতার সঙ্গে সুরঞ্জিতও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর পদটি হারান।

    ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর সুরঞ্জিতকে আইন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান। পরে ২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর রেলমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সুরঞ্জিত। কিন্তু ব্যক্তিগত সহকারীর দুর্নীতির দায় মাথায় নিয়ে পরের বছর (২০১২) ১৬ এপ্রিল মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে দফতর বিহীন মন্ত্রী হিসেবে তার মন্ত্রীসভায় রেখে দেন।

    এ সময় নির্দোষ প্রমাণিত না হলে সক্রিয় রাজনীতি করবেন না বলে সুরঞ্জিত ঘোষণা দেন। এপিএসের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সুরঞ্জিত সেনকে নির্দোষ ঘোষণা করলে আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি।

    ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সম্মেলন তিনি পুনরায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনোনীত হয়েছেন। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে তিনি আবারও আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

    সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ডক্টরেট। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থার শিক্ষা বিভাগে সমন্বয়কারী পদে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের একমাত্র সন্তান সৌমেন সেনগুপ্ত নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং কানাডা থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ব্যবসা করছেন। সৌমেনের স্ত্রী রাখী মৈত্রী সেনগুপ্ত পেশায় চিকিৎসক।