• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • ভারতে সম্রাট বাবর না আসলে কী হতো না হতো
    ভারতীয় উপমহাদেশে পরাক্রমশালী মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা ছিলেন জহিরুদ্দিন মুহম্মদ বাবর। তার হাত দিয়েই ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের যাত্রা শুরু হয়।
    গতকাল ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়েছে ভ্যালেন্টাইন্স ডে। কিন্তু এই দিনটি যে এক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের জন্মদিনও বটে, সেটা খুব কম মানুষই জানেন।১৪৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি উজবেকিস্তানের আন্দিজানে জন্ম হয়েছিল সম্রাট বাবরের। তিনি শুধু ঐতিহাসিক চরিত্র নন, বিতর্কিতও বটে।
    বাবরকে নিয়ে বিবিস বাংলায় প্রকাশিত ্এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের একটা অংশের মানুষ সম্রাট বাবরকে আক্রমণকারী বলে মনে করে থাকেন। আর অযোধ্যায় তাঁর নামাঙ্কিত বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি নিয়ে বহু দশক ধরে বিতর্ক চলছে। আক্রমণকারী হোন অথবা বিজয়ী – কিন্তু বাবর সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কাছে খুব বেশী তথ্য নেই। মুঘল সম্রাটদের মধ্যে আকবর বা শাহজাহানের নামই সবচেয়ে বেশী আলোচিত হয়ে থাকে।
    ইতিহাসবিদ হরবংশ মুখিয়ার কথায়, সংস্কৃতি, সাহসিকতা আর সেনা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাবর নি:সন্দেহে এক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। যদি বাবর ভারতে না আসতেন, তাহলে এই দেশের সংস্কৃতি হয়তো এতটা বিচিত্র হওয়ার সুযোগ পেত না। ভাষা, সঙ্গীত, চিত্রকলা, স্থাপত্য, পোশাক অথবা খাবার-দাবার – প্রতিটা বিষয়েই মুঘলদের অবদান অনস্বীকার্য বলে মনে করেন মুখিয়া।
    ১২ বছর বয়সে রাজ সিংহাসনে বসেছিলেন বাবর। হরবংশ মুখিয়ার মতে, বাবরের চিন্তাধারায় কখনও হার না মানার একটা মানসিকতা ছিল। তাঁর মাথায় সমরখন্দ দখলের স্বপ্ন ছিল। তিনবার দখল করেছিলেন, কিন্তু প্রতিবারই ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁকে। যদি তিনি সমরখন্দ দখলে সফল হতেন আর সেখানকার রাজা হিসাবেই থেকে যেতেন, তাহলে হয়তো কাবুল বা ভারত দখল করে রাজত্ব করার কথা তিনি ভাবতেনও না।১৫২৬ সালে পানিপথের যুদ্ধে বিজয়ের বাবর সেখানে একটি মসজিদ বানিয়েছিলেন, যেটা আজও রয়েছে।
    হরবংশ মুখিয়ার মতে সম্রাট বাবর হচ্ছেন পৃথিবীর প্রথম শাসক, যিনি নিজের আত্মজীবনী লিখেছিলেন। ‘বাবরনামা’-তে তাঁর জীবনের সাফল্য আর ব্যর্থতা – দুইয়ের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
    তুর্কি ভাষায় কবিতা লিখতেন বাবর। বাবরনামায় ব্যবহৃত বেশ কিছু শব্দ এখন ভারতে প্রতিদিনের ভাষার অঙ্গ হয়ে গেছে। যেমন ‘ময়দান’ শব্দটা তাঁর জীবনীতেই প্রথমবার দেখা যায়। সেভাবেই অনেক তুর্কি আর ফার্সি শব্দ ভারতীয়দের মুখের ভাষায় ঢুকে গেছে।
    ইতিহাসবিদ মুখিয়ার মতে যুদ্ধ, সাম্রাজ্য পরিচালনার মধ্যেও নিজের পরিবারের প্রতি নিষ্ঠাবান ছিলেন বাবর।তার মা এবং নানির সঙ্গে যেমন গভীর সম্পর্ক ছিল, তেমনই বোনের কাছেও বাবর ছিলেন এক আদর্শ ভাই। আবার ছেলে হুমায়ূনের প্রতিও ছিল গভীর পিতৃস্নেহ।
    হুমায়ূনের একবার কঠিন অসুখ হয়েছিল, সেই সময়ে বাবর ছেলের শরীর ছুঁয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন যে পুত্রের অসুখ সারিয়ে দিয়ে তিনি যেন বাবরের প্রাণ কেড়ে নেন, বলেন তিনি। তিনি আরো বলেন, হুমায়ূন সে যাত্রা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন, কিন্তু ওই ঘটনার কিছুদিন পরেই বাবর অসুস্থ হয়ে পড়েন আর তারপরেই মৃত্যু হয় তাঁর।
    ৪৭ বছর বয়সে মৃত্যু পর্যন্ত লাগাতার যুদ্ধ করে গেছেন মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মুহম্মদ বাবর।

    একটি ভিত্তিহীন কাহিনী : দুই ব্যক্তির রূহ কবজ করতে মালাকুল মাউতের কষ্ট হয়েছে

    লোকমুখে প্রসিদ্ধ- আল্লাহ মালাকুল মাউতকে জিজ্ঞেস করলেন, হে মালাকুল মাউত! বনী আদমের রূহ কবজ করতে কি তোমার কখনো কষ্ট হয়নি? মালাকুল মাউত উত্তরে বললেন, জী, দুই ব্যক্তির রূহ কবজ করতে আমার কষ্ট হয়েছে। এক. একবার জাহাজ ডুবে গেলে এক মহিলা কাষ্ঠখ- ধরে সমুদ্রে ভাসছিল। এমতাবস্থায় তার একটি ছেলে সন্তান প্রসব হয়। এমন সময় ঐ মহিলার মৃত্যুর সময় চলে আসে। তো ঐ সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর দিকে তাকিয়ে তার মায়ের জান কবজ করতে আমার খুব কষ্ট হয়েছিল। দুই. শাদ্দাদের জান কবজ করতে আমার কষ্ট হয়েছিল; যখন সে তার দুনিয়ার জান্নাত বানায় এবং সেখানে প্রবেশ করার মুহূর্তে এক পা ভেতরে দেওয়ার সাথে সাথে আরেক পা বাইরে থাকা অবস্থায়ই তার মৃত্যুর পরওয়ানা চলে আসে আর আমি তার জান কবজ করে নিই।

    আল্লাহ বললেন, ওহে মালাকুল মাউত! সমুদ্রের মধ্যে যে শিশুর মায়ের জান কবজ করতে তোমার কষ্ট হয়েছিল সে শিশুটিই ছিল শাদ্দাদ!

    কেউ কেউ কিসসাটিকে এভাবেও বলে- (সংক্ষেপে) …জনমানবশূন্য মরুভূমির মধ্যে সদ্যভূমিষ্ঠ দুগ্ধপোষ্য শিশুর মায়ের জান কবজ করতে… এবং এক অশীতিপর বৃদ্ধ কামারকে তার লাঠির নিচের অংশে লোহা লাগিয়ে দিতে বলছিল, যাতে লাঠিটি অনেক বছর টেকসই হয়। এমতাবস্থায় বৃদ্ধের মৃত্যু চলে আসে আর আমি তার জান কবজ করি। তো এ কথা শুনে আল্লাহ বলেন, ঐ শিশু ও এই বৃদ্ধটি একই ব্যক্তি।

    কেউ কেউ এভাবেও বলে, আল্লাহ মালাকুল মাউতকে জিজ্ঞাসা করলেন, বনী আদমের রূহ কবজ করতে তোমার কখনো কান্না আসেনি? মালাকুল মাউত উত্তরে বললেন, হে আমার রব! বনী আদমের রূহ কবজ করতে গিয়ে আমি একবার কেঁদেছি, একবার হেসেছি এবং একবার ভীত-সন্ত্রস্ত হয়েছি। …জনমানবশূন্য মরুভূমিতে সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর মায়ের জান কবজ করতে গিয়ে শিশুটির কান্না ও অসহায়ত্ব দেখে কেঁদেছি। আর ভয় পেয়েছি এক আলেমের জান কবজ করতে গিয়ে। আমি যখন তার জান কবজ করতে যাই তো তার কামরা থেকে এক নূর বের হয় তা দেখে আমি ভয় পেয়ে যাই। আল্লাহ বললেন, ঐ আলেমই হল মরুভূমির ঐ শিশু; তাকে আমি লালন-পালন করেছি।

    (মালাকুল মাউত বলেন,) আর এক ব্যক্তি মুচির কাছে তার জুতা দিয়ে বলল, এটা এমনভাবে সেলাই করে দাও যাতে এক বছর পরতে পারি। সে ঐ জুতা পায়ে দেয়ার পূর্বেই তার জান কবজ করেছি আর হেসেছি- কয়েক মুহূর্ত তার হায়াত নেই আর সে এক বছরের জন্য জুতা ঠিক করছে।

    যাইহোক এগুলো সবই ভিত্তিহীন কিসসা-কাহিনী। কোনো নির্ভরযোগ্য সনদে তা বর্ণিত হয়নি।

    ইতিপূর্বে এক সংখ্যায় আমরা শাদ্দাদের বেহেশত কেন্দ্রিক কিসসা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম- শাদ্দাদের বেহেশতের কাহিনীর কোনো ভিত্তি নেই, এর কোনো অস্তিত্ব নেই। (আলইসরাঈলিয়্যাত ওয়াল মাউযূআত ফী কুতুবিত তাফসীর ২৮২-২৮৪)। তেমনি এই ঘটনায়ও আমরা শাদ্দাদের বেহেশতের আলোচনা দেখতে পাচ্ছি। সুতরাং তা কখনোই সত্য হতে পারে না।

    এছাড়াও এ ঘটনায় আমরা আরেকটি বিষয় দেখতে পাচ্ছি, শাদ্দাদের মত নাফরমানের জান কবজ করতে মালাকুল মাউতের কষ্ট হচ্ছে; সে তার আল্লাহদ্রোহিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছতে চাচ্ছে এবং আল্লাহদ্রোহিতায় লিপ্ত রয়েছে অথচ মালাকুল মাউত তার জান কবজ করতে কষ্ট পাচ্ছেন। এটি এ ঘটনা বাতিল হওয়ার আরেকটি প্রমাণ।

    আল্লাহ আমাদের এ জাতীয় অলীক কিসসা-কাহিনী বলা ও বিশ্বাস করা থেকে হেফাজত করুন।