• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • ২৬ জনের মৃত্যুদন্ড

    নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ৭ খুন মামলা

    ‘৭ খুন মাফ’ প্রবাদ মিথ্যা প্রমাণ করে নারায়ণগঞ্জের ভয়াবহ ৭ খুন মামলায় ২৬ জনের মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে অন্য ৯ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে। গতকাল সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় দেয়া হয়। এ সময় আদালতে মামলার ৩৫ আসামির মধ্যে ২৩ জন উপস্থিত ছিলেন। আলোচিত এ মামলায় ৩৫ আসামির মধ্যে ১৭ জনই র‌্যাব সদস্য। মামলার শুরু থেকেই র‌্যাবের সাবেক ৮ সদস্যসহ ১২ জন আসামি পলাতক। ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে থেকে প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন। অতঃপর ৩০ এপ্রিল তাদের লাশ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। ভয়ঙ্কর এবং আলোচিত এই নৃশংস হত্যাকান্ড নিয়ে দেশ-বিদেশের মিডিয়ায় তোলপাড় হয়। আসামিদের অধিকাংশ র‌্যাবের সদস্য হওয়ায় তাদের গ্রেফতার করতে বিলম্ব করায় উচ্চ আদালত গ্রেফতারের নির্দেশনা দেয়। অতঃপর গ্রেফতার করা হয় আসামিদের। রায় ঘোষণার পর নারায়ণগঞ্জে মিষ্টি বিতরণের ধুম পড়ে যায়। রায় ঘোষণার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এ রায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অপরাধী সদস্যদের জন্য সতর্কবার্তা। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এই রায়কে আইনের শাসনের নজির হিসেবে অভিহিত করেছেন।
    ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রয়ারি এই মামলায় আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। যুক্তিতর্ক শেষ হয় গত বছরের ৩০ নভেম্বর। চার্জ গঠন  থেকে শুরু করে মামলার ৪১তম কার্যদিবস শেষে আদালত রায়  ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন। আসামিদের মধ্যে ২৫ জন র‌্যাব সদস্য ও ১০ জন নূর হোসেন ও তার সহযোগী। মামলায় মোট ১০৬ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। রায় ঘোষণার সময় র‌্যাব-১১ এর সাবেক তিন কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ সাঈদ, আরিফ  হোসেন ও এম এম রানা এবং নূর হোসেনসহ ২৩ আসামি উপস্থিত ছিলেন। পলাতক ১২ আসামির পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ ৬ জন আইনজীবী নিয়োগ দেন। তারা পলাতক আসামিদের পক্ষে বিচারকার্য পরিচালনা করেন। পলাতকদের মধ্যে র‌্যাবের ৮ সদস্য ও নূর হোসেনের ৪ সহযোগী রয়েছেন।
    ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ শহরের কাছ থেকে তৎকালীন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করে হত্যার অপরাধে আসামিদের সাজার এই রায় দেন আদালত। গ্রেফতারকৃত ২৩ আসামির সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ৩০ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন আদালত। এদিকে রবিবার রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এই মামলার রায় সম্পর্কে তার প্রত্যাশা ব্যক্ত করতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষ চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়। যাদের কাজ জনগণের জানমাল রক্ষা করা, তারাই যদি পরিকল্পিত হত্যাকান্ডে লিপ্ত হন, তা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।’
    ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে  থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন। পরদিন ২৮ এপ্রিল ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নজরুল ইসলামের স্ত্রী। ওই মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূর  হোসেনকে প্রধান করে ৬ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ের জামাই বিজয় কুমার পাল বাদি হয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় আরো একটি মামলা করেন। ৩০ এপ্রিল বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৬ জন এবং ১  মে সকালে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে স্বজনরা লাশগুলো শনাক্ত করেন।
    এ হত্যাকান্ডের পর প্রধান আসামি নূর হোসেন ভারতে পালিয়ে যায়। ২০১৪ সালের ১৪ জুন রাতে কলকাতার দমদম বিমানবন্দরের কাছে কৈখালী এলাকার একটি বাড়ি থেকে নূর  হোসেন ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করে বাগুইআটি থানার পুলিশ। পরে ওই বছরের ১৮ আগস্ট নূর হোসেন, ওহাদুজ্জামান শামীম ও খান সুমনের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে বারাসাত আদালতে চার্জশিট জমা দেয় বাগুইআটি থানা পুলিশ। ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দমদম কারাগার কর্তৃপক্ষ নূর হোসেনকে বাংলাদেশে হস্তান্তর করতে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। এরপর ১৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ আদালতে উপস্থাপন করা হয় নূর হোসেনকে। তিনজন তদন্তকারী কর্মকর্তার ১১ মাসের দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল ভারতের কলকাতায় গ্রেফতার হওয়া নূর হোসেন,  র‌্যাবের চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এজাহারভুক্ত ৫ আসামি অব্যাহতির আবেদন করে। মামলায় ১২৭ জনকে সাক্ষী করা হয়। ১৬২ ধরনের আলামত উদ্ধার দেখানো হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত ৩৫ জনের মধ্যে ২৩ জন গ্রেফতার রয়েছেন।
    রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সাত খুনের দু’টি মামলায় গ্রেফতারকৃত ২৩ জনের উপস্থিতিতে ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে চার্জ গঠন করেন। শুনানির সময়ে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ২৩ জনের অব্যাহতি আবেদন করলে আদালত তা নাকচ করে দেন। পলাতক ১২ জনসহ সাত খুনের দু’টি মামলায় অভিযুক্ত ৩৫ জনের সবার বিরুদ্ধেই চার্জগঠন করা হয়। ১২ জনের অনুপস্থিতিতেই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। তাদের পক্ষে ৫ জন আইনজীবী নিযুক্ত করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
    ফাঁসি হলো যাদের : ৭ খুন মামলার ৩৫ আসামির মধ্যে ২৬ জনকে ফাঁসি দিয়েছেন আদালত। বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টার কিছু পর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন এ রায় দেন। আসামিদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় দিয়েছেন আদালত। ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নূর হোসেন,  লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক মোহাম্মদ সাঈদ, মেজর আরিফ  হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানা (এম এম রানা), হাবিলদার এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্সনায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু  তৈয়ব,  কনস্টেবল মো: শিহাব উদ্দিন, এসআই পুর্নেন্দু বালা,  র‌্যাবের সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু, রহম আলী, আবুল বাশার,  নূর হোসেনের সহযোগী  মোর্তুজা জামান চার্চিল, সেলিম, সানাউল্লাহ সানা, শাহজাহান, জামালউদ্দিন, সৈনিক আবদুল আলী, সৈনিক মহিউদ্দিন মুন্সী, আলামিন শরিফ, তাজুল ইসলাম, এনামুল কবীর।
    যাদের কারাদন্ড হলো : ৭ খুন মামলার রায়ে ৯ আসামিকে বিভিন্ন  মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬ জন এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জিম্মায় আছেন। বাকি ৩ জন পলাতক। গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে করপোরাল রুহুল আমিনের ১০ বছর, এএসআই বজলুর রহমানের ৭ বছর, হাবিলদার নাসির উদ্দিনের ৭ বছর, এএসআই আবুল কালাম আজাদের ১০ বছর,  সৈনিক নুরুজ্জামানের ১০ বছর, কনস্টেবল বাবুল হাসানের ১০ বছর কারাদন্ড হয়েছে। পলাতক আসামিদের মধ্যে হাবিবুর রহমানের ১৭ বছর, কামাল হোসেনের ১০ বছর ও মোখলেসুর রহমানের ১০ বছর কারাদন্ড হয়েছে। এদিকে এই মামলায় মৃত্যুদন্ডাদেশ পেয়েছেন নূর হোসেন, সাবেক লে. কমান্ডার তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লে. কমান্ডার মাসুদ রানা, হাবিলদার এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্সনায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু  তৈয়ব, কনস্টেবল মো: শিহাব উদ্দিন, এসআই পুর্নেন্দু বালা, র‌্যাবের সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু, রহম আলী, আবুল বাশার, নূর হোসেনের সহযোগী  মোর্তুজা জামান চার্চিল, সেলিম, সানাউল্লাহ সানা, শাহজাহান, জামালউদ্দিন, সৈনিক আবদুল আলী, সৈনিক মহিউদ্দিন মুন্সী, আলামিন শরিফ, তাজুল ইসলাম ও এনামুল কবীর।
    রায়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে : আইভী
    নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, ৭ খুনের মামলার রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘এ রায়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ন্যায় বিচার হয়েছে। এজন্য আমি সরকারকে নারায়ণগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের ত্বকী হত্যাকান্ড থেকে শুরু করে সকল হত্যাকান্ডের ন্যায়বিচার এ সরকার প্রতিষ্ঠা করবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
    সোমবার ১৬ জানুয়ারি মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন, র‌্যাবের তিন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানা ও মেজর আরিফ হোসেনসহ ২৬ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বাকি ৯ জনকে সাত থেকে ১০ বছরের কারাদ- দেয়া হয়েছে।
    প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় নিহতদের একজন নজরুল ইসলাম যিনি সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র ছিলেন। আর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত নূর হোসেন ছিল তদানীন্তন কমিশনার, পরে তাকে বরখাস্ত করা হয়।  ওই সময়েও মেয়র ছিলেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এখনও তিনি মেয়র হিসেবেই রয়েছেন।
    ৭ খুন নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সভাপতির প্রতিক্রিয়া
    নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের মামলায় ২৬ জনকে ফাঁসি ও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদানের পর প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সভাপতি। তাঁদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই বলেন, এ রায় আমাদের প্রত্যাশিত ছিল। একটি সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। এতে আবারো প্রমাণ  হলো আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন আমি তার সঙ্গে একমত।
    অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, দেশের একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী দ্বারা সাতজন মানুষ নির্বিচারে হত্যাকান্ডের ঘটনায় দেশের মানুষ একটি বিচার চেয়েছিল এই বিচারের রায়ে জাতি সেই বিচার পেয়েছে বলে আমি মনে করি। তবে সরকার সুশৃঙ্খল বাহিনীকে বিএনপির উপর লেলিয়ে দিয়ে তাদের কলিজা বড় করে দিয়েছে। এই হত্যাকান্ডের জন্য সরকার দায় এড়াতে পারে না। তাই পুলিশ র‌্যাব বাহিনীর লাগাম টেনে ধরা উচিত।’
    সোমবার মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন, র‌্যাবের তিন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানা ও মেজর আরিফ হোসেনসহ ২৬ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বাকি ৯ জনকে সাত থেকে ১০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি সোমবার সকাল ১০টা ৪ মিনিট হতে ১০টা ৯ মিনিট পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন ওই রায় ঘোষণা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় দিয়েছেন আদালত।

    কথার পিঠে কথা : ‘উটের যুগের ইসলাম রকেটের যুগে অচল’

    কারো কারো মুখস্থ বুলি- ‘উটের যুগের ইসলাম রকেটের যুগে অচল’। কথাটিতে কেউ কেউ আমোদও বোধ করেন, কিন্তু বিচার করার প্রয়োজন বোধ করেন না। এ শুধু একটি কুফরী কথাই নয়, নিতান্ত অবাস্তব একটি কথা। একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা হয়ে যাক।

    উপরের বাক্যে ‘উট’ ও ‘রকেট’ এ দুটো জিনিসকে আনা হয়েছে দুটি যুগের প্রতিনিধি হিসেবে। আমরাও উল্লেখিত দুই বিষয়ের মাঝেই আমাদের আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখব।

    উট একযুগের একটি বাহন, রকেট আরেক যুগের। উট ও রকেটের পার্থক্য দ্বারা দু’টি যুগের জীবন ও যাত্রার উপায়-উপকরণ ও প্রযুক্তিগত ব্যবধান নির্দেশ করাই উদ্দেশ্য। এই পার্থক্য নির্দেশ করে বলা হয়েছে সেই উটের যুগে যে ইসলাম এসেছে তা এই রকেটের যুগে কীভাবে চলতে পারে?

    ইসলাম যদি মানব-রচিত কোনো ধর্ম হত তাহলে এই প্রশ্ন হয়তো শতভাগ বিশুদ্ধ হত, কিন্তু বোঝার বিষয় এটিই যে, ইসলাম আল্লাহ-প্রদত্ত দ্বীন। এ কারণে উটের যুগে এসেও রকেটের যুগেও তা সমান প্রাসঙ্গিক। কীভাবে? প্রথমেই একটি প্রশ্নের জবাব দিন। ইসলাম উটের যুগে এসেছে, কিন্তু বাহন হিসেবে উটের ব্যবহার কি ইসলামে ফরয ও অপরিহার্য? কুরআনের একটি আয়াত কিংবা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদীসেও কি উটের ব্যবহার ‘ফরয’ করা হয়েছে? কিংবা বলুন রকেটের ব্যবহার কি ইসলামে হারাম? একটি আয়াত বা একটি হাদীসেও কি রকেটে চড়াকে ‘হারাম’ করা হয়েছে? করা হয়নি। ইসলামে যদি উটে চড়া ফরয হত আর রকেটে চড়া হারাম হত তাহলে যথার্থই বলা যেত উটের যুগের ইসলাম রকেটের যুগে অচল। আচ্ছা! উটে চড়া ‘ফরয’ নয়, রকেটে চড়াও ‘হারাম’ নয়; তাহলে ফরয-হারামের বাইরে এদের বিধান কী? এদের বিধান হচ্ছে ‘মোবাহ’। অর্থাৎ বৈধ। ইসলামের বিধান অনুসারে উটে চড়াও ‘মোবাহ’ রকেটে চড়াও ‘মোবাহ’। দুটোই বৈধ, কোনটিই অবৈধ নয়, আবার কোনোটি অপরিহার্যও নয়।

    অর্থাৎ উটের যুগের ইসলামী বিধান রকেটের যুগকেও তার বিস্তৃতির মাঝে গ্রহণ করছে। উটের যুগের ইসলাম মান্য করে রকেটে-চড়তেও অসুবিধা হচ্ছে না। কোথাও কোনো সংঘর্ষ বাধছে না। শুধু সংঘর্ষ বাধছে না তাই নয়, অত্যন্ত নিখুঁতভাবে খাপ খেয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন আজকের জন্যই ইসলাম।

    দেখুন, কুরআন শুধু উটে চড়া ‘ফরয’ করেনি তা-ই নয় কুরআন বলেছে-

    وَّ الْخَیْلَ وَ الْبِغَالَ وَ الْحَمِیْرَ لِتَرْكُبُوْهَا وَ زِیْنَةً  وَ یَخْلُقُ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ  .

    তোমাদের আরোহণের জন্য ও শোভার জন্য তিনি সৃষ্টি করেছেন অশ্ব, অশ্বতর ও গর্দভ এবং সৃষ্টি করবেন এমন অনেক কিছু যা তোমরা জান না। -সূরা নাহ্ল (১৬) : ৮

    উটের যুগের মানুষ আজকের রকেট সম্পর্কে জানত না, তেমনি আজকের মানুষও ভবিষ্যতের যান সম্পর্কে জানে না। কিন্তু কুরআন যিনি নাযিল করেছেন তিনি জানতেন এবং জানেন। এবং তিনি পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি করতে থাকবেন। আজকের যুগে ‘রকেটে’ চড়া মোবাহ, ভবিষ্যতে… চড়াও ‘মোবাহ’ই থাকবে। মুসলমানদের তাতে চড়তে কোনো বাধা থাকবে না। তাহলে দেখুন, উটের যুগে নাযিল হলেও কুরআনী শরীয়ত এগিয়ে গেছে রকেটের চেয়েও।

    ভুঁড়ি নিয়ে মামলা

    Posted by admin on January 15
    Posted in Uncategorized 

    ভুঁড়ি নিয়ে মামলা
    পুলিশের ভুঁড়ি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করলেন এক ব্যক্তি। আর হাইকোর্টও প্রশ্ন তুলল, ভুঁড়িধারী পুলিশ কী করে অপরাধীদের ধাওয়া করে ধরবে? কাজের অতিরিক্ত চাপেও পুলিশকে শারীরিকভাবে সক্ষম থাকতে হবে- মনে করছে আদালত। হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে কমল দে নামে ওই ব্যক্তির দাবি, কলকাতা পুলিশের এক শ্রেণির কর্মী ভুঁড়ি থাকার কারণে শারীরিকভাবে সক্ষম নন। তাদের সক্ষম হওয়া দরকার বলে আদালতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। গত শুক্রবার ওই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে প্রশ্ন তুলেছেন, ভুঁড়িধারী পুলিশের পক্ষে শারীরিকভাবে সক্ষম থাকা যায় কি না। পুলিশের শারীরিক সক্ষমতা (ফিটনেস) ও সতর্কতা বজায় রাখতে কী কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে অথবা এ নিয়ে রাজ্য সরকারের কী নীতি রয়েছে- হলফনামা আকারে তা আদালতে পেশ করতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মাত্রে।
    জাপানের অদূরে জাহাজ ডুবি: ২৬ উত্তর কোরীয় উদ্ধার
    জাপানের নিকটবর্তী পূর্ব চীন সাগর থেকে উত্তর কোরিয়ার ২৬ নাগরিককে উদ্ধার করেছে জাপান কোস্ট গার্ড। উত্তর কোরিয়ার মালবাহী একটি জাহাজ ডুবে যাওয়ার সময় তাদের উদ্ধার করা হয়। ভোররাতে জাপানের কোস্টাগার্ডের টহলকারী নৌযানগুলো জাহাজের সকল ক্রুকে পানি থেকে উদ্ধার করে।
    বুধবার ৬ হাজার ৫শ’ ৫৮ টনের মালবাহী জাহাজ চোং জেন থেকে একটি বিপদ সংকেত পাঠানো হয়। জাহাজটি নাগাসাকির ফুকুই দ্বীপ থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ডুবতে শুরু করে। পরে এটি দ্বীপ থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে ভোরের আগে ডুবে যায়। এটি উত্তর কোরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় নাম্পো বন্দর থেকে চাল নিয়ে পূর্ব উপকূলীয় উন সান শহরে যাচ্ছিল।
    কোস্টগার্ড মুখপাত্র জানান, সকল ক্রুকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। কেউ আহত হয়নি। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব

    বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম দিন শুক্রবার বাদ ফজর থেকে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
    ১৭টি জেলা থেকে সড়ক পথ, রেলপথ ও নৌপথসহ সব পথেই মুসল্লিদের কাফেলা টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের দিকে। বৃহস্পতিবার থেকে আসতে থাকা মুসল্লিদের ঢল শুক্রবারও অব্যাহত থাকে। শুক্রবার পবিত্র জুম্মার নামাজে লাখ লাখ মুসল্লি এক সঙ্গে জুম্মার নামাজ আদায় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
    শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় গাজীপুর সহ আশপাশের অঞ্চল গুলে থেকে থেকে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি জুম্মার নামাজ আদায় করতে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করবেন।
    এ বছর প্রথম পর্বে ১৭টি জেলা অংশ নেয়ায় চটের বিশাল সামিয়ানার নীচে মুসল্লিদের কোন ঠাসাঠাসি নেই। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মুসল্লিদের অনেকে মূল প্যান্ডেলের নিচে বসেরই জুম্মার নামাজ আদায় করার সুযোগ পাবেন।
    সকাল থেকে টঙ্গী ও এর আশপাশের লোকজন ইজতেমায় বৃহত্তর জুমার নামাজের জামাতে অংশ নিতে পায়ে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেন। শুক্রবার বাদ ফজর থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জিকির আসকার ইবাদত বন্দেগীতে টঙ্গী এখন এক পবিত্র পূণ্যভূমিতে পরিণত হয়।
    হজের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ হলো এ বিশ্ব ইজতেমা। ইসলামের দাওয়াতী কাজ বিশ্বব্যাপি পৌঁছে দেওয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বিশ্ব ইজতেমা থেকেই দাওয়াতি কাজে বের হন।
    ইজতেমা সূত্র জানায়, বাদ ফজর উর্দূতে আম বয়ান করেন ভারতের হযরত মাওলানা ওবায়দুল্লাহ খোরশেদ।
    আজ ইজতেমা ময়দানে বৃহত্তর জুমা’র নামাজ অনুষ্ঠিত হবে এতে ইমামতি করবেন বাংলাদেশের কাকরাইল মসিজদের খতিব হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের। বাদ আসর বয়া করবেন ভারতের মাওলানা ওয়াসিমুল ইসলাম। বাদ মাগরিব বয়ান করবেন দিল্লির হযরত মাওলানা শওকত আলী।
    এবারে প্রথম দফায় বিভিন্ন জেলার মুসল্লিদের জন্য পুরো ময়দানকে ২৭টি খিত্তায় (ভাগে) ভাগ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট খিত্তায় নির্দিষ্ট জেলার মুসল্লির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
    ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ ও র‌্যাব কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছে। সিসি ক্যামেরা মাধ্যমে সার্বিক নিরাপত্তা কন্ট্রেল রুম থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। খিত্তায় খিত্তায় সাদা পোষাকে আইনশৃংখলা বাহিনী সদস্যরা অবস্থান করছেন। জানা গেছে, পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা ৫টি করে স্তরে বিভক্ত হয়ে পোশাকে ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া বাইনোকুলার, মেটাল ডিটেক্টর, নৌ-টহল, চেকপোষ্ট। দুই পর্বে প্রায় ১২ হাজার আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন।
    শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে জুমার নামাজ আদায় করতে রাজধানী ঢাকা থেকে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতাসহ সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের ভিআইপি অতিথিরা ইজতেমা ময়দানে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
    আজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। পাকিস্তানের কারাগারে বন্দিদশা  থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের এদিন বেলা ১টা ৪০ মিনিটে তিনি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন।
    দিবসটি পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে প্রধান কর্মসূচি হচ্ছে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদানে দুপুর আড়াইটায় জনসভা। এতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন।
    দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে দলের  কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন।
    প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।
    ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবিহত পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়।
    ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে ইংরেজি হিসাবে ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। বেলা ১০টার পর থেকে তিনি কথা বলেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন।
    দশ তারিখ সকালেই তিনি নামেন দিল্লিতে। সেখানে ভারতের প্রেসিডেন্ট ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও সে দেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জনক শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ঢাকা এসে পৌঁছেন ১০ জানুয়ারি। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের পর বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য অপেক্ষায় ছিল। লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স (সোহরাওয়ার্দী) ময়দান পর্যন্ত তাকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল পাঁচটায় সেখানে তিনি ভাষণ দেন।

    জাপানে সিফিলিস দ্রুত ছড়াচ্ছে

    জাপানে দ্রুত সিফিলিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, অল্প বয়স্ক নারীদের মধ্যে এ রোগের প্রকোপ অধিক দেখা যাচ্ছে বলে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় এর কারণ খুঁজতে একটি বিশেষ গবেষক টিম গঠন করেছে, যাতে যৌনবাহিত রোগ সংক্রমণটি ঠেকানোর উপায় বের করা সম্ভব হয়।

    তথ্য অনুসারে ডিসেম্বরের গোড়া পর্যন্ত সারা জাপানে এই রোগীর সংখ্যা ছিলো ৪,২৫৯ জন, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এই রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে ২,৪১২, এবং এক দশক আগের তুলনায় এই সংখ্যা দশ গুন।

    ধারণা করা হয় ব্যাকটেরিয়া বাহিত রোগটি বিপরীত লিঙ্গের সংসর্গ থেকে মূলতঃ বিস্তার লাভ করে। কিন্তু মা-থেকে-সন্তানের মধ্যে রোগটি ছড়ানো স্বাভাবিক ভাবে বিরল ঘটনা হলেও, জাপানে সেটিরও প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।

    লাইফস্টাইল কাঁচা মরিচ শরীর স্লিম রাখবে

    সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, চর্বি জাতীয় খাবারের সঙ্গে কাঁচা মরিচ খেলে মোটা হওয়ার কোনা ভয় থাকে না। কারণ কাঁচা মরিচ খাদ্যের সঙ্গে থাকা চর্বিকে ধ্বংস করে স্লিম থাকতে সাহায্য করে।
    যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েমিং বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গবেষণাটি আমেরিকার মেরিল্যান্ডে বাল্টিমোর বায়োফিজিক্যাল সোসাইটির সভায় উপস্থাপন করা হয়।
    গবেষণা দলের সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিবেক কৃষ্ণান জানান, কাঁচা মরিচের ক্যাপসাইসিন নামের বিশেষ উপাদানটি শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
    তিনি আরো বলেন, ক্যাপসাইসিন নামের এই উপাদানটি নতুন করে ক্যালোরি উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করে। উচ্চ চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণের পর শরীরের চর্বি জমতেও বাধা দেয় এটি।
    কৃষ্ণান আরো জানান, সাদা চর্বি আমাদের দেহের কোষ জমা রাখে এবং বাদামী চর্বি কোষের ক্ষয় করে। ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাদ্য এবং এর সঠিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হলে বিপাকযন্ত্র ভারসাম্য হারায়। যে কারণে শরীরের মেদ বাড়ে। খাদ্যে থাকা উচ্চমাত্রার চর্বি শুষে নিয়ে শরীরে মেদ রোধে সাহায্য করে ক্যাপসাইসিন যা পরীক্ষাগারে প্রমাণিত হয়েছে।

    মোবাইল ফোন : প্রয়োজনীয় মাসায়িল

    মোবাইল ফোন বর্তমান সময়ের একটি নতুন আবিষ্কার। এর কিছু ভালো দিক যেমন আছে তেমনি ক্ষতির দিকও রয়েছে। আর দশটা প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো এরও প্রয়োজন মাফিক ব্যবহার আপত্তিকর নয়, কিন্তু এখন যেভাবে তা ব্যবহৃত হচ্ছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

    মোবাইলের প্রয়োজনীয় দিকগুলোর তুলনায় এর যে ব্যাপক আর্থিক ও নৈতিক ক্ষতির দিক অভিজ্ঞতায় এসে গেছে, বিশেষত এলম চর্চায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য এর যে ক্ষতিকর প্রভাব, তার তালিকা মোটেই ছোটো-খাটো নয়। তবে বাস্তবতা এই যে, মোবাইলের ব্যবহার অত্যন্ত ব্যাপক হয়ে গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নও আসছে। এজন্য এসব প্রশ্ন একত্র করে শরীয়তের দলীল ও নীতিমালার আলোকে তার জওয়াব প্রস্ত্তত করা এবং পাঠকবৃন্দের খেদমতে তা পেশ করা একটি প্রয়োজনীয় বিষয় বলে মনে হয়েছে। এ অনুভূতি থেকেই বর্তমান প্রবন্ধটি তৈরি হল। এ প্রসঙ্গে দু’টি বিষয়ে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। তা হচ্ছে :

    ১. বেশ কিছু মাসায়িলে হাদীস, তাফসীর ও ফিকহের বিভিন্ন গ্রন্থের উদ্ধৃতি সংযুক্ত হয়েছে। এগুলো মূলত কুরআন, হাদীস ও ফিকহে ইসলামীর ওইসব নীতিমালার উদ্ধৃতি, যার আলোকে এই সমাধানগুলো পেশ করা হয়েছে। কেননা, উল্লেখিত প্রাচীন উদ্ধৃতিগুলোতে স্পষ্টভাবে মোবাইল ফোনের উল্লেখ যে থাকবে না তা তো বলাই বাহুল্য।

    কিছু মাসায়িল এমনও আছে, যেগুলো অনেকের কাছেই স্পষ্ট বলে মনে হবে। তারপরও ওই মাসআলাগুলো এজন্য উল্লেখ করা হয়েছে যে, এসব বিষয়েও বিভিন্ন সময় প্রশ্ন এসেছে। আর সকল বিষয় সবার সমানভাবে জানা থাকবে-এটাও অপরিহার্য নয়।

    এই সংক্ষিপ্ত ভূমিকার পর ওই মাসয়িলগুলো বিশেষ কোনো বিন্যাস ছাড়াই পেশ করছি। আলোচনা সহজ করার উদ্দেশ্যে প্রশ্নোত্তরের আঙ্গিকটিই বহাল রাখা হয়েছে।

    ১. ভিডিও ক্যামেরাযুক্ত মোবাইল ক্রয় বিক্রয়

    প্রশ্ন : ‘মোবাইল’ ফোনেরই আধুনিক সংস্করণ। কিন্তু এ আবিষ্কার শুধু কথোপকথন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখেনি বরং মোবাইলের সাথে আজকাল গচ৩-৪, ক্যামেরা এবং ভিডিও, ইন্টারনেটসহ সবধরনের সুবিধা রয়েছে। মোবাইলের এ সুবিধাগুলো আজকাল ভাল-খারাপ উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার হতে দেখা যায়। তাই প্রশ্ন দাঁড়ায় এ সকল সুবিধাযুক্ত মোবাইল ক্রয়-বিক্রয় জায়েয কি না?

    উত্তর : ক্রয়-বিক্রয় জায়েয। তবে অবৈধ কোনো কাজে তা ব্যবহার করা জায়েয নয়। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৯১, আল-বাহরুররায়েক ৮/২০২, জাওয়াহিরুল ফিকহ ২/৪৪৬, বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ ১/৩৫৯

    ২. সিম হস্তান্তর

    প্রশ্ন : সিম ক্রয়ের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন করা জরুরি। এখন কোনো ব্যক্তি নিজ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সিম ক্রয় করে কোম্পানীর অনুমোদন এবং পুনঃ রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অন্য ব্যক্তির কাছে সিম বিক্রি করা বৈধ কি না?

    উত্তর : বৈধ।

    ৩. চোরাই সেট ক্রয়-বিক্রয়

    প্রশ্ন : মোবাইলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণে মোবাইল চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনাও বেড়েছে। অনেকের মোবাইল হারিয়েও যায়। প্রশ্ন হল, এ ধরনের সেট ক্রয়-বিক্রয়ের হুকুম কী?

    উত্তর : ছিনতাইকৃত বা চোরাই সেট জেনে শুনে ক্রয় করা জায়েয নেই। কেউ ক্রয় করলেও এ সেট ক্রেতার জন্য ব্যবহার করা বৈধ হবে না। বরং মালিক জানা থাকলে মূল মালিকের নিকট পৌঁছে দেওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে ক্রেতাবিক্রেতা থেকে মূল্য ফেরত নিতে পারবে। মালিকের সন্ধান পাওয়া না গেলে যার থেকে কিনেছে তাকে দিয়ে মূল্য ফেরত নিতে পারবে। আর কারো কাছ থেকে হারিয়ে যাওয়া সেট হস্তগত হলে কী করতে হবে তা তো সবারই জানা আছে। এর ক্রয়-বিক্রয় জায়েয হওয়ার প্রশ্নই আসে না। -আল-মুহীতুল বুরহানী ৭/৫৯, বাদায়েউস সানায়ে ৬/৪৫, খানিয়া ৩/৪১৮, ফাতহুল কাদীর ৫/১৬৯

    ৪. ডাউন লোডিং ব্যবসা

    প্রশ্ন : মোবাইলে রিংটোন, মিউজিক, গান, ভিডিও-ছবি ইত্যাদি ডাউন লোড করার প্রবণতা বেড়েছে। এজন্য অনেক সার্ভিসিং সেন্টারে পৃথক ব্যবস্থাপনা থাকে। জানতে চাই ডাউন লোড করে বিনিময় নেওয়া এবং এ ব্যবসা করা জায়েয কি না?

    উত্তর : মিউজিক সংবলিত গান, প্রচলিত অশ্লীল ছবির ভিডিও ফিল্ম, অবৈধ চিত্র ইত্যাদির ডাউনলোড ব্যবসা নাজায়েয। কারণ এতে নিজের তো গুনাহ হয়ই, উপরন্তু অন্যের নিকট গুনাহের উপকরণ সরবরাহ করা হয়। তাই এ ধরনের ডাউনলোড থেকে উপার্জিত অর্থ হালাল হবে না। হাঁ, কোনো বৈধ চিত্র, মিউজিক ছাড়া রিংটোন, বাদ্যহীন গজল ইত্যাদি ডাউনলোড করা জায়েয এবং এ থেকে অর্জিত টাকাও হালাল।

    -সহীহ বুখারী ১/২৯৮, জামে তিরমিযী ১/২৪১, সহীহ মুসলিম ২১৯, শরহে নববী ২/২৯, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৫৫, আল-বাহরুররায়েক ৮/১৯

    ৫. স্ক্র্যাচকার্ডের নির্ধারিত মূল্য থেকে কম/বেশীতে ক্রয়-বিক্রয়

    প্রশ্ন : স্ক্র্যাচকার্ডের গায়ের মূল্যের (ঋধপব ঠধষঁব) এর চেয়ে কম-বেশীতে বেচা-কেনা করা জায়েয আছে কি না? যেমন ১০০ টাকার কার্ড অনেক দোকানে কোনো কোনো সময় দুই তিন টাকা বেশী নেয়। আবার কোন কোন মোবাইল কার্ডে ৪/৫ টাকা কমও রাখে। এখন ১০০ টাকার পরিবর্তে কম-বেশী করে লেনদেন করা কি জায়েয, এটি কি সুদ নয়?

    উত্তর : স্ক্র্যাচকার্ডের গায়ের মূল্য একটি নির্ধারিত পরিমাণ টেলিযোগাযোগ সুবিধা তথা আউটগোয়িং সেবা প্রতিনিধিত্ব করে। অন্যান্য সেবার মত এটিও বিক্রিয়যোগ্য সেবা। সুতরাং কার্ডের (ঋধপব ঠধষঁব) গায়ের দাম যেহেতু টাকা নয় তাই কম-বেশীতে বিক্রি করা সুদ নয়। ১০০ টাকার কার্ড কম-বেশীতে ক্রয়-বিক্রয়কে সুদ মনে করা ভুল। তবে এখানে আরেকটি বিষয় আছে, তা হল, কোম্পানী থেকে পণ্যের বা সেবার মূল্য নির্ধারিত করে দিলে ঐ নির্ধারিত মূল্যেই বিক্রি করা নিয়ম। কমবেশি করা ঠিক নয়। কেননা এতে বাজারের স্বাভাবিকতা বাঁধাগ্রস্ত হয়।

    -ফাতহুল কাদীর ৬/১৫৯; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৪০০

    ৬. ফ্লেক্সিলোড ব্যবসা ও গ্রাহক থেকে ফ্লেক্সিকৃত অর্থের বেশী গ্রহণ করা

    প্রশ্ন : ঋষবীর খড়ধফ (ফ্লেক্সিলোড) করতে অধিকাংশ দোকানে অতিরিক্ত টাকা নেয় না। যত টাকার ফ্লেক্সি করা হয় তত টাকা নেয়। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে গ্রাহক থেকে ২/৪ টাকা বেশি রাখে। এটা জায়েয কি না? এখানেও অতিরিক্ত নেওয়াকে কেউ কেউ সুদ মনে করে। এছাড়া দোকানীকে কোম্পানি ফ্লেক্সির উপর ১০% কমিশন দিয়ে থাকে। যেমন- ৯০০০ টাকা ফ্লেক্সি বাবদ জমা দিলে তার নামে ১০,০০০/- টাকার ফ্লেক্সি সুবিধা দেওয়া হয়। এটাকেও কেউ কেউ ৯০০০/-এর পরিবর্তে ১০,০০০/- টাকার লেনদেন মনে করে। বিস্তারিত জানতে চাই।

    উত্তর : ফ্লেক্সিলোডে যত টাকার ফ্লেক্সি করা হচ্ছে এর চেয়ে কম-বেশীতে লেনদেন করার হুকুম কার্ডের মতই। এতেও সুদ নেই। নির্ধারিত অংকের ফ্লেক্সি অর্থাৎ ঐ পরিমাণ টেলি যোগাযোগ আউটগোয়িং সেবা, যা বিক্রয়যোগ্য। তাই এটা নির্ধারিত মূল্যের বেশীতে লেনদেন করা সুদ নয়। কিন্তু কোম্পানির পক্ষ থেকে লোডকারী তথা দোকানীকে যেহেতু কমিশন দেওয়া হয় এবং গ্রাহক থেকে এবাবদ অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া কোম্পানি কর্তৃক নিষিদ্ধ তাই নির্ধারিত মূল্যের বেশী নেওয়া ঠিত হবে না। একইভাবে ফ্লেক্সিকারী দোকানীকে দেওয়া কমিশন তার জন্য বৈধ। এখানেও সুদের কিছুই নেই। বরং এ কারবারের ব্যাখ্যা হল, ১০ হাজার টাকার সেবা কোম্পানি তার ডিলারদের নিকট নয় হাজার টাকায় বিক্রি করছে। -প্রাগুক্ত

    দোকানগুলোর ফোন ব্যবসা

    ৭. কল-মিনিটের হিসাব কীভাবে হবে

    প্রশ্ন : সিটিসেল মোবাইলের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলেরই জানা যে, সিটিসেলের মিনিট গণনা শুরু হয় ডায়ালের পর থেকেই। এখন ৭-৮ টা রিং হওয়ার পর অপর প্রান্ত থেকে রিসিভ করলে রিসিভ করার আগেই প্রায় এক মিনিট চলে যায়। অনেক ব্যবসায়ীকেই দোকানে সিটিসেল ফোন রাখতে দেখা যায়। তারা এই এক মিনিটের বাড়তি সুবিধা ভোগ করে। অর্থাৎ এই অগ্রীম ১ মিনিটেরও বিল রাখে। জানতে চাই, রিসিভের আগের সময়ের বিল নেওয়া জায়েয কি না? এক্ষেত্রে কী করণীয়?

    উত্তর : গ্রাহক থেকে কল রিসিভ হওয়ার আগের সময়ের বিল নেওয়া জায়েয হবে না। কারণ এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের সাথে চুক্তি হল, রিসিভের পর থেকে যত মিনিটের কথা হবে তার বিল নিবে। সুতরাং রিসিভের আগের মিনিটের বিল নেওয়া জায়েয হবে না। এজন্য সিটিসেল মোবাইল দিয়ে বৈধভাবে ব্যবসা করতে চাইলে হয়ত পৃথক মিনিটমাইন্ডার রাখতে হবে যা দ্বারা রিসিভ করার সময় থেকে মিনিটের হিসাব করা হবে। এছাড়া কল ডিউরিশন অপশন থেকেও শেষ কলের সময় জেনে নেওয়া যেতে পারে। আর এখন সিটিসেল অপারেটরের পক্ষ থেকেই কল শেষে কলের মোট সময় সরবরাহের ব্যবস্থা আছে। তাই সে অনুপাতেও বিল নেওয়া সহজ।

    ৮. পরবর্তী মিনিটের ১-২ সেকেন্ড হলেও পুরো মিনিটের বিল নেওয়া

    প্রশ্ন : সাধারণত ফোন দোকানীরা দ্বিতীয় বা তৃতীয় মিনিট শুরু হলেই এমনকি সেকেন্ড পরিমাণ কথা হলেও পরবর্তী পুরো মিনিটের বিল করে। মোবাইল কোম্পানী থেকে পাল্স সুবিধা থাকলেও তার হিসাব করে না। এটা জায়েয কিনা? এক্ষেত্রে করণীয় কী?

    উত্তর : ফোন ব্যবসায়ীর জন্য কোম্পানি কর্তৃক ঘোষিত পাল্স সুবিধা গ্রাহকদের দেওয়া জরুরি নয়। বরং পালস হিসাব না করতে চাইলে গ্রাহককে পূর্ব থেকেই অবহিত করবে যে, এখানে পরবর্তী মিনিটের এক সেকেন্ড হলেও পুরো মিনিটের বিল নেওয়া হয়। প্রয়োজনে গ্রাহকের দৃষ্টি পড়ে এভাবে দোকানের কোথাও লিখে রাখা যেতে পারে। তবে এব্যাপারে পরামর্শ হল, পরবর্তী মিনিটের ২/৩ সেকেন্ড হয়ে কথা শেষ হয়ে গেলে পুরো মিনিটের বিল না নিয়ে আধা মিনিটের বিল নেওয়া যেতে পারে। এ প্রস্তাবের ওপর আমল উভয় পক্ষের জন্য ভাল।

    ৯. ভুল নাম্বারে গেলে এর বিল কার জিম্মায়

    প্রশ্ন : ফোন দোকানে ভুল নাম্বারে গেলেও গ্রাহক থেকে বিল আদায় করা হয়ে থাকে। আগে টিএন্ডটির এ্যানালগ লাইনে সঠিক নাম্বারে রিং করলেও ভুল নাম্বারে চলে যেত। এজন্য ফোন দোকানগুলোতে এ নিয়ম চলে আসছে যে, ভুল নাম্বারে গেলেও বিল দিতে হবে। সেই এ্যানালগ নাম্বার এখন আর নেই। মোবাইল করার পর ভুল নাম্বারে ডায়াল হলে এর বিল কে দিবে? এ বিল কি গ্রাহক দিতে বাধ্য?

    উত্তর : মোবাইলে যে নাম্বারে রিং করা হবে সে নাম্বারেই যাবে। সঠিক নাম্বারে রিং করার পরও ভুল নাম্বারে যাওয়ার অবকাশ নেই। তাই ভুল নাম্বারে চলে গেলে বুঝতে হবে নিশ্চয় ভুল নাম্বারে ডায়াল করা হয়েছে। এখন দেখতে হবে এ ভুল কার। দোকানী ভুলে একটির পরিবর্তে অন্যটি টিপেছে, নাকি গ্রাহক নাম্বার দিতে ভুল করেছে? গ্রাহকের ভুল হলেই কেবল এর ক্ষতিপূরণ তার ওপর আসবে। আর দোকানীর ভুল হলে সেই ভুলের ক্ষতি তারই। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক থেকে কিছুই নেওয়া যাবে না।

    ১০. কল রিসিভের জন্য বিনিময় নেওয়া

    প্রশ্ন : গ্রামেগঞ্জে অনেকের হাতে মোবাইল থাকে না। অনেকের হাতে থাকলেও টিএন্ডটি ইনকামিং নেই। তাই বিদেশ থেকে কিংবা অন্য কোথাও থেকে দোকানীর মোবাইলে কল আসলে তার কিছু খরচ না হলেও সে গ্রাহক থেকে কিছু টাকা নিয়ে থাকে। এটাকা নেওয়া কি জায়েয?

    উত্তর : হাঁ, এ বাবদ বিনিময় নেওয়া জায়েয। বিল না কাটলেও তার সেট ও লাইন ব্যবহার হচ্ছে। সময় ব্যয় হচ্ছে। তাই সে এর ন্যায্য বিনিময় নিতেই পারে। দোকানী এ সেবা ফ্রি দিতে বাধ্য নয়।

    ১১. ভিওআইপি সংযোগ নিয়ে বিদেশে কম খরচে কথা বলা

    প্রশ্ন : এক ধরনের মেশিন দেশীয় টিএন্ডটি এবং মোবাইলের সাথে সংযোগ করলে সরাসরি বিদেশে অনেক কম খরচে কথা বলা যায়। কিন্তু এটি সরকার অনুমোদিত নয়। কেউ কেউ অবৈধভাবে এর ব্যবহার করে থাকে। এ ব্যবসা জায়েয কি না? এ ধরনের সুবিধাযুক্ত ফোনের গ্রাহকদের ফোন বা মোবাইল ব্যবহার করার কী হুকুম?

    উত্তর : এ ধরনের লাইনে কথা বলা বৈধ হবে না। কারণ, এতে সরকারীভাবে নিষিদ্ধ লাইন ব্যবহার করা হয়। সরকারের আদায়যোগ্য ফি অনাদায় থাকে এবং সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ব্যবসায় সহায়তাও করা হয়। এছাড়া এতে অনেকগুলো টিএন্ডটি চোরা লাইনও থাকে। এমনটি হলে তো এর অবৈধতা আরো প্রকট।

    ভিওআইপি ব্যবসায়ীরা এতে কোনো চোরা লাইন ব্যবহার করে থাকলে এ বাবদ উপার্জিত অর্থ হালাল হবে না। তবে চোরা লাইন ব্যবহার না করলে সরকারী নিয়ম ভঙ্গ করে এ কারবার করার জন্য গুনাহ হবে। কিন্তু এ কারণে কারবার থেকে উপার্জিত অর্থ অবৈধ গণ্য হবে না।

    ১২. মিউজিক, গানের কলির রিং টোন

    প্রশ্ন : মোবাইলের রিং টোন হিসাবে বিভিন্ন ধরনের মিউজিক বা গানের কলি ইত্যাদি ব্যবহার করার হুকুম কী?

    উত্তর : মিউজিক, বাদ্য ইত্যাদি গানের সাথে শোনা তো কবীরা গুনাহ। গান ছাড়া পৃথকভাবে শোনাও গুনাহ। তাই যেকোনো ধরনের বাদ্য, মিউজিক টোন রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করাও গুনাহ। তদ্রূপ গানের কলি বা অংশবিশেষও রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করা নাজায়েয। প্রকাশ থাকে যে, মিউজিক বা গান রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করলে নিজে শোনার গুনাহ তো আছেই, সাথে সাথে যে স্থানে মোবাইলটি ব্যবহার হচ্ছে তার আশপাশের লোকদেরকে বাদ্য, গান শোনানোর গুনাহও হয়। এছাড়া এমন রিংটোন মসজিদে বেজে উঠলে মসজিদের পবিত্রতা ক্ষুণ্ণ করা হয়। তাই রিংটোন হিসাবে এর ব্যবহার নিতান্তই মন্দকাজ ও গুনাহ। সেজন্যই গান বা মিউজিক ছাড়া অন্যান্য শব্দ রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

    -সূরা লোকমান-৬, সহীহ বুখারী ২/৮৩৭, জামে তিরমিযী ১/২৪১; সুনানে ইবনে মাজা ৩০০; আলগিনা ফিল-ইসলাম ৮৭; ফাতহুল কাদীর ৬/৪৮২

    ১৩. ওয়েলকাম টিউন হিসাবে গানের ব্যবহার

    প্রশ্ন : কারো কাছে ডায়াল করার পর তার মোবাইল বা ফোনে রিং হচ্ছে কিনা এটি বুঝানোর জন্য যে টোন বা শব্দ ব্যবহার করা হয় তাকে ওয়েলকাম টিউন বলে। এখন এই টোনের পরিবর্তে গান ডাউন লোড করা যায়। কেউ ডাউন লোড করলে তাকে যে ব্যক্তি কল করবে সে রিং টোনের পরিবর্তে ঐ গান বা ডাউন লোডকৃত আওয়াজ শুনতে পাবে। এতে ডাউন লোডকারীর প্রত্যেক মাসে ২০/৩০ টাকা করে খরচ হয়। এটি জায়েয কি না?

    উত্তর : ওয়েলকাম টিউনে গান বা মিউজিক ডাউন লোড করলে এই নাম্বারের সাথে যোগাযোগকারী সকলকে বাধ্য হয়ে গান বা মিউজিক শুনতে হবে। এতে অন্যকে গান শোনানো তথা গুনাহের কাজে বাধ্য করার গুনাহ হয়। তাই এটিও নাজায়েয। -সূরা লোকমান ৬, সহীহ বুখারী ২/৮৩৭, ফাতহুল কাদীর ৬/৪৮২, প্রাগুক্ত

    ১৪. ওয়েলকাম টিউন হিসাবে কুরআনে কারীমের তিলাওয়াতের ব্যবহার

    প্রশ্ন : গানের ব্যবহার যেহেতু নাজায়েয তাই অনেকেই এক্ষেত্রে কুরআনে কারীমের তিলাওয়াত, আযান ইত্যাদি ডাউনলোড করে থাকে। ধারণা করা হয় যে, এতে গুনাহ তো হবেই না, বরং আমার সাথে কথা বলার জন্য অপেক্ষমান ব্যক্তি কিছু সময় হলেও কুরআনের তিলাওয়াত শুনছে। বাহ্যত এটাকে ভাল মনে করা হয়। আযানের শব্দ বা জিকর শুনছে। এতে শ্রোতাকে সওয়াবের বিষয় শোনানো হচ্ছে। এদৃষ্টিতে একে অনেকেই ভাল বলে। জানতে চাই ওয়েলকাম টিউন হিসাবে কুরআন, জিকির, আযানের ব্যবহারের হুকুম কী?

    উত্তর : নিঃসন্দেহে প্রশ্নোক্ত উদ্দেশ্যেটি ভালো। রিংটোন, মিউজিক বা গান না শুনিয়ে সেস্থানে কুরআনের তিলাওয়াত বা জিকর, আযান ইত্যাদি শোনানোর ব্যবস্থা করা অবশ্যই একটি প্রশংসণীয় কাজ। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে এটি ভাল মনে হলেও এক্ষেত্রে এগুলোর ব্যবহারে একাধিক খারাপ দিক রয়েছে। যার একটিই এ থেকে বিরত থাকার জন্য যথেষ্ট। যেমন-

    (১) ওয়েলকাম টিউন-এর ব্যবহার হয় যার কাছে কল করা হয়েছে তার সাথে সংযোগ সৃষ্টি হয়েছে কি না এটি বুঝার জন্যই। কারো কাছে কল করার পর রিংটোন পেলে বুঝা যায় যে, তার মোবাইলে রিং হচ্ছে। কল করার পর বিজিটোন আসলে বুঝা যায় সে এখনও অন্যের সাথে কথা বলছে। আবার ফোন বন্ধ থাকলেও এক ধরনের টোন পাওয়া যায়। মোটকথা কাঙ্ক্ষিত ফোনটিতে সংযোগ লাগার জন্য যে সংকেত-টোন রয়েছে সেস্থানে কুরআনের তিলাওয়াত, আযান ইত্যাদি ফিট করলে এই তিলাওয়াত ও আযানও ফোনকারীকে প্রথমে ঐ টোনের কাজ দিবে। অর্থাৎ ফোনকারী বুঝবে যে, কাঙ্ক্ষিত ফোনটিতে সংযোগ পেয়েছে, রিং হচ্ছে। আচ্ছা, বলুন তো আল্লাহর মহান কালাম কি এই কাজে ব্যবহার করা উচিত? এই কাজে তিলাওয়াতের ব্যবহার কি অপাত্রে কুরআনের ব্যবহার নয়? আযান যা শরীয়তের একটি মহান নিদর্শন ও জিকর, একে এই কাজে ব্যবহার করা কি সমীচীন?

    (২) কাঙ্ক্ষিত নাম্বারে কল করার পর রিংটোন হিসাবে ফোনকারীর কানে কুরআনের তিলাওয়াত ভেসে আসছে, হয়ত রিসিভের অপেক্ষার সাথে সাথে তিলাওয়াতও শুনছে। কিন্তু যার নাম্বারে ফোন করা হয়েছে সে তো তিলাওয়াত শুনতে পাচ্ছে না। বিধায় সে এমন সময় রিসিভ করল যখন তিলাওয়াতের কোন শব্দের মাঝে কিংবা এমন স্থানে রিসিভ করা হল যখন থেমে গেলে আয়াতের অর্থই বদলে যায়। তদ্রূপ আযান ডাউনলোড করলে কেউ যদি ‘লা-ইলাহা’ পর্যন্ত উচ্চারিত হওয়ার পর ফোন রিসিভ করে ফেলে তাহলে অর্থ দাঁড়ায়- ‘কোন মাবুদ নেই।’ ফলে অর্থের বিকৃতি ঘটে। এই সমস্যার কারণেও এস্থানে এগুলোর ব্যবহার করা যাবে না।

    (৩) এছাড়া বিভিন্ন ব্যস্ততার মধ্যে থেকে ফোনে কথা বলার সময় কানে তিলাওয়াতের ধ্বনি আসলেও তা মনোযোগ সহকারে শোনা হয় না। ফলে তিলাওয়াত শোনার হক আদায় হয় না। তাই ওয়েলকাম টিউন হিসাবে কুরআন-তিলাওয়াত বা আযান কিংবা যিকরের ব্যবহার করা যাবে না। এর জন্য স্বাভাবিক রিংটোনই উপযোগী।

    -আত-তিবয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন- নববী ৪৬, হককুত্তিলাওয়া-হুসাইনী শাইখ উসমান-৪০১, আলমগীরী ৫/৩১৫, রদ্দুল মুহতার ১/৫১৮, আল মুগনী ৪/৪৮২, আলাতে জাদীদাহ কী শরয়ী আহকাম- ১৭১

    ১৫. রিংটোন হিসাবে ‘সালাম’-এর ব্যবহার

    প্রশ্ন : অনেকে সালাম ডাউনলোড করে তা রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করে এটি জায়েয কিনা?

    উত্তর : হাঁ, এ ক্ষেত্রে সালামের ব্যবহার জায়েয। কারণ, শরীয়তে সালাম এর ব্যবহার দু’ভাবে এসেছে। একটি হল অভিবাদন হিসাবে সালামের ব্যবহার। দ্বিতীয়টি হল অনুমতি প্রার্থনামূলক সালাম। অর্থাৎ কারো ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাওয়ার জন্য সালাম দেওয়া। মোবাইলের রিংটোন হিসেবে সালামের ব্যবহার এ প্রকারের সাথে কিছু মিল রয়েছে। রিংটোনের জন্য সালামের ব্যবহার না জায়েয নয়।

    ১৬. আযান, জিকর বা তিলাওয়াত রিংটোন হিসাবে ব্যবহার

    প্রশ্ন : অনেকে রিংটোন হিসাবে ঘণ্টা, বাজনা ইত্যাদির পরিবর্তে আযান, যিকর ও তিলাওয়াতের ব্যবহারকে পছন্দ করে। জানতে চাই এতে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো খারাপী আছে কি না?

    উত্তর : তিলাওয়াত, যিকর ও তাসবীহ সবকিছুই অতীব মর্যাদাপূর্ণ বিষয়। আযান আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব ও তাসবীহ সম্বলিত কিছু বাক্যের সমষ্টি যা শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিক তথা ‘শিআর’। এগুলোর ব্যবহার একমাত্র আল্লাহ তাআলাকে রাজি-খুশি করার উদ্দেশ্যে শরীয়তের নিয়ম অনুযায়ী হতে হবে। শরীয়তে এগুলোর ব্যবহার-ক্ষেত্র সুনির্ধারিত। মোবাইলের রিংটোন হিসাবে এগুলোর প্রয়োগ অপব্যবহারের অন্তর্ভুক্ত। কারণ, মোবাইলে রিং এসেছে, কেউ কথা বলতে চায় এই খবর দেওয়ার জন্য আল্লাহ তাআলার পবিত্র কালাম ওহী, জিকর ও তাসবীহের ব্যবহার যে এগুলোর অপাত্রে ব্যবহার তা বলাই বাহুল্য।

    ক্রেতাকে আকৃষ্ট করার জন্য বিক্রেতার জোরে জোরে সুবহানাল্লাহ বলা, তদ্রূপ প্রহরী জাগ্রত আছে একথা বুঝানোর জন্য জোরে জোরে যিকর করাকেই ফিকহবিদগণ অপব্যবহার হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন। তাহলে মোবাইলে কল এসেছে এ খবর দেওয়ার জন্য এগুলোর ব্যবহার যে কেমন হবে তা তো বলার অপেক্ষাই রাখে না। উপরন্তু রিংটোন হিসাবে এগুলোর ব্যবহারে আরো অন্যান্য শরয়ী খারাবী রয়েছে যেমন : (ক) রিং আসলে কুরআনের তিলাওয়াত বেজে উঠছে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে   ব্যস্ততার দরুণ তিলাওয়াতের প্রতি ভ্রূক্ষেপ করারই সুযোগ হয় না। তদ্রূপ কে রিং করেছে তা দেখা ও কল রিসিভ করার ব্যস্ততা তো লেগেই থাকে এ কারণেও তিলাওয়াতের আদব রক্ষা করে শ্রবণ করা হয় না।

    (খ) রিং আসলে যেহেতু রিসিভের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং এটিই মূল উদ্দেশ্য থাকে তাই আয়াতের যেকোনো স্থানেই তিলাওয়াত চলতে থাক সে দিকে ভ্রূক্ষেপ না করে রিসিভ করে ফেলে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে উচ্চারিত অংশের বিবেচনায় আয়াতের অর্থ বিকৃত হয়ে যায়।

    (গ) মোবাইল নিয়ে টয়লেট কিংবা বাথরুমে প্রবেশের পর রিং আসলে অপবিত্র স্থানে আল্লাহ তাআলার পবিত্র কালাম, যিকর ও আযান বেজে উঠবে। এতে এগুলোর পবিত্রতা ক্ষুণ্ণ হয়। মোটকথা অনেক কারণেই তিলাওয়াত, আযান ও জিকরকে রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা জরুরী।

    -আততিবয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন-ইমাম নববী ৪৬, হক্কুততিলাওয়া- হুসাইনী শাইখ উসমান ৪০১, ফাতাওয়া আলমগীরী ৫/৩১৫, আলমুগনী ৪/৪৮২, রদ্দুল মুহতার ১/৫১৮, ১/৫৪৬, আলাতে জাদীদা, মুফতী মুহাম্মাদ শফী রহ., আলকাফী ১/৩৭৬, আলআশবাহ ৩৫

    রেকর্ড/ডাউনলোভ

    ১৭. মোবাইল মেমোরিতে কুরআন তিলাওয়াত ডাউনলোড করা

    প্রশ্ন : মোবাইল মেমোরী বা মেমোরী কার্ডে কুরআন তিলাওয়াত বা কোন যিকর ডাউনলোড করে রাখা জায়েয কিনা?

    উত্তর : মেমোরি কার্ড বা মোবাইল মেমোরিতে তিলাওয়াত ডাউনলোড বা রেকর্ড করা জায়েয। এতে কোনো অসুবিধা নেই। এর হুকুম অন্যান্য রেকর্ডারের মতই। তবে যখন তিলাওয়াত চালানো হবে তখন খুব মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করতে হবে। অন্য কাজে ব্যস্ত থেকে তিলাওয়াতের রেকর্ড ছেড়ে দেওয়া তিলাওয়াতের আদব পরিপন্থী কাজ।

    ১৮. কুরআন শরীফের সূরা বা পুরো কুরআন মোবাইলে ডাউনলোড করা

    প্রশ্ন : লিখিত কুরআন শরীফ বা তার অংশবিশেষ ডাউনলোড করে মেমোরিতে সংরক্ষণ করা যায়। আজকাল ইন্টারনেট থেকে অল্প খরচে ‘পকেট কুরআন’ নামে পুরো কুরআন শরীফ মোবাইলে ডাউন লোড করা যায়। তদ্রূপ হাদীস শরীফও ডাউন লোড করা যায়। লিখিত কুরআন ডাইনলোড করা এবং মেমোরিতে সংরক্ষণ করা জায়েয কি না?

    উত্তর : হাঁ, লিখিত পূর্ণ কুরআন বা তার অংশ বিশেষ ডাউনলোড করে মেমোরিতে রেখে দেওয়া জায়েয। তবে কখনো তা স্ক্রিনে আনলে এর অসম্মানী না হয় সেদিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে। মেমোরিতে হেফাযত করা অবস্থায় মোবাইল ধরতে অযুর প্রয়োজন নেই। তেমনিভাবে স্ক্রিনে থাকা অবস্থায়ও মোবাইল বিনা অযুতে ধরা যাবে।

    ১৯. মোবাইলের স্ক্রিনে ছবি সেভ করে রাখা

    প্রশ্ন : মোবাইলের স্ক্রিনে পুরুষ বা মহিলার ছবি সেভ করে রাখার হুকুম কী?

    উত্তর : স্ক্রিনে ছবি সেভ করে রাখলে ছবির প্রদর্শনী হয় এবং ছবি খুলে রাখা হয়। যা রহমতের ফিরিশতার আগমন থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ। এছাড়া শরীয়তে ছবির প্রকাশ ও প্রদর্শন নিষেধ করা হয়েছে। অতএব, স্ক্রিনে মানুষ বা কোন প্রাণীর ছবি সেভ করে রাখা থেকে বিরত থাকা জরুরি।

    আর স্ক্রিনের ছবিটি যদি কোনো মহিলার হয় তবে গায়রে মাহরামদের জন্য ছবিটি দেখা এবং অন্যদের দেখানোর ভিন্ন গুনাহ হবে। এতে ছবি প্রদর্শনের গুনাহ ছাড়া পর্দা লংঘনের গুনাহ হয়। তাই এ থেকে বিরত থাকা আরো বেশী জরুরি।

    -সহীহ বুখারী ২/৮৮০; সহীহ মুসলিম ২/২০০; আলমাদখাল ইবনুল হাজ ১/২৭৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৯; আলবাহরুর রায়েক ৬/১৭২

    ২০. স্ক্রিনে কুরআনে কারীমের আয়াত, যিকর, বা এগুলোর ক্যালিগ্রাফী সেভ করে রাখা

    প্রশ্ন : মোবাইল স্ক্রিনে কুরআনের আয়াত, জিকর বা আল্লাহ তাআলার নাম সেভ করে রাখা হয়। তদ্রূপ কেউ এগুলোর ক্যালিগ্রাফি সেভ করে রাখে। এটি জায়েয কি না?

    উত্তর : মোবাইল স্ক্রিনে আল্লাহ তাআলার নামের ক্যালিগ্রাফি বা লিখিত আয়াত কিংবা অন্য কোন যিকর ইত্যাদি সেভ করে রাখা ঠিক নয়। কারণ, এভাবে ক্ষেত্রবিশেষে এগুলোর সাথে বেয়াদবি হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। এছাড়া মোবাইল সাধারণত সম্মানের সাথে ব্যবহার করা হয় না। বরং অধিক ব্যবহারের ফলে যত্রতত্র রাখা হয়। অনেক সময় বসার স্থানে, নিচেও থাকে, চার্জের প্রয়োজনেও নিচে রাখতে হয় ইত্যাদি। সুতরাং স্ক্রিনে দৃশ্যমান অবস্থায় রেখে এর যথাযথ আদব রক্ষা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই এ ধরনের কোন কিছু স্ক্রীন সেভারে রাখা ঠিক হবে না। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫০

    মোবাইলের ব্যবহার

    ২১. পিকচার ম্যাসেজ

    প্রশ্ন : পিকচার ম্যাসেজের মাধ্যমে যেমনিভাবে বিভিন্ন চিত্র, ফুল ইত্যাদি কাঙ্ক্ষিত নাম্বারে পাঠানো যায়। তদ্রূপ মোবাইলে ধারণকৃত মানুষ বা প্রাণীয় ছবিও পাঠানো যায়। ছবির এই ব্যবহার জায়েয কি না?

    উত্তর : এসএমএস মাধ্যমে প্রাণীর ছবি ছাড়া অন্য কিছু পাঠাতে কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু মানুষ বা কোন প্রাণীর ছবি পাঠানো জায়েয হবে না। কেননা এক্ষেত্রে প্রয়োজন ছাড়া ছবির ব্যবহার হচ্ছে। আর ছবিটি যদি কোন গায়রে মাহরাম মহিলার হয় তবে তো পর্দার হুকুম লংঘন করার গুনাহ হবে। এ ধরনের ছবি যার কাছে পাঠানো হচ্ছে সেও দেখে, আশপাশের অন্য পুরুষরাও দেখে। এতে ব্যাপকভাবে পর্দা লংঘনের গুনাহ হয়। তাই এ থেকে বিরত থাকা জরুরি। তবে জরুরতের সময় জায়েয। যেমন শরীয়তসম্মত বিশেষ প্রয়োজনে কারো ফটোর জরুরত হলে মোবাইলের মাধ্যমে অন্যত্র ছবি পাঠানো যাবে। প্রাপক মোবাইলের এই ছবি প্রিন্ট করে নিজ কাজে লাগাতে পারবে। তবে এক্ষেত্রেও এর ব্যবহার জরুরত পর্যন্তই সীমাবদ্ধ হওয়া কর্তব্য। -সহীহ মুসলিম ২/২০০; আলমাদখাল ১/২৭৩

    ২২. মিসডকল

    প্রশ্ন : মোবাইল ব্যবহারকারীর অনেকেই প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে মিসডকল দেয়। এতে অনেক ক্ষেত্রে যাকে মিসডকল দেওয়া হচ্ছে সে বিরক্ত হয়। এছাড়া এতে অনর্থক নেটওয়ার্ক ব্যস্ত রাখা হয়। গ্রামীণ ফোন কোম্পানি মিসডকলকে নিরুৎসাহিত করার জন্য একবার মিসডকলকে বিনষ্টকারী পোকার সাথে তুলনা করে একটি বিজ্ঞাপনচিত্র দিয়েছিল। মোটকথা প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে মিসডকল দেওয়া জায়েয কি না?

    উত্তর : বিনা প্রয়োজনে মিসডকল দিলে অনর্থক নেটওয়ার্ক ব্যস্ত রাখা হয়। ফলে প্রয়োজনীয় কথার জন্য অনেকের সংযোগ পেতে কষ্ট হয়। বিনা প্রয়োজনে মিসডকল দিয়ে নেটওয়ার্ক ব্যস্ত রাখার কোন বৈধতা নেই। এতে মোবাইল কোম্পানীরও কোন উপকার নেই বরং এতে তাদের ক্ষতি হয়। এছাড়া বিনা প্রয়োজনে এ মিসডকল দেওয়ার দ্বারা যাকে মিসডকল দেওয়া হচ্ছে তাকে বিরক্ত করা হয়। তার একাগ্রতা বা কাজে ব্যাঘাত ঘটে। এসবই মিসডকলের ক্ষতি। এসব কারণে বিনা প্রয়োজনে মিসডকল দেওয়া গুনাহ।

    তবে প্রয়োজনে মিসডকলের ব্যবহার বৈধ। যেমন কারো সাথে পূর্বেই কথা থাকল যে, তুমি প্রস্ত্তত হলে কিংবা অমুক স্থানে পৌঁছলে কিংবা অমুক জিনিস পেলে অথবা অমুক ব্যক্তি আসলে আমাকে মিসডকল দিবে। এসব ক্ষেত্রে মিসডকল দেয়ার দ্বারা কিছুটা উপকার পাওয়া যায়। তদ্রূপ আত্মীয়-স্বজন কিংবা কম আয়ের লোকদের সহযোগিতা কামনার্থে অনেকেই বলে থাকে, তুমি আমাকে শুধু মিসডকল দিলেই আমি ব্যাক করব। তোমার কল করার প্রয়োজন নেই।’ তুমি কল করে টাকা খরচ কর না ইত্যাদি। এসবই মিসডকলের বৈধ ক্ষেত্র। এককথায় যে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে মিসডকল করা হয় আর এর কারণে যাকে মিসডকল করা হচ্ছে তার অসন্তুষ্টি বা কষ্টের কারণ না হয় সেক্ষেত্রে এতে কোন অসুবিধা নেই।

    ২৩. মোবাইলে কে আগে সালাম দিবে

    প্রশ্ন : মোবাইলে কোন পক্ষ আগে সালাম দিবে এ নিয়ে দুধরনের মতামত শোনা যায়। কেউ বলেন, যে ব্যক্তি রিং করবে সে আগে সালাম দিবে। আবার কেউ বলেন, যে রিসিভ করবে সে সালাম দিবে। জানতে চাই শরীয়তের দলীলের আলোকে কোনটি সঠিক? মহিলার সাথে কথা বললে সালাম দেওয়া যাবে কি না? কোন বড় ও শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির সাথে কথা বলার সময় যে ছোট সেই কি শুধু সালাম বলবে?

    উত্তর : ‘আস্সালামু কাব্লাল কালাম’এর ভিত্তিতে যে ব্যক্তি আগে কথা বলবে সেই সালাম দিবে। সাধারণত যে রিসিভ করে সেই যেহেতু আগে কথা বলে থাকে তাই সে কথা শুরু করার আগে সালাম দিবে। কারণ রিসিভ করার পর কথা না বললে অনেক সময় রিসিভ হয়েছে কি না তা বুঝা যায় না। তাই রিসিভকারী সাধারণত আগে কথা বলে থাকে।

    অবশ্য কখনো রিসিভকারী যদি রিসিভ করে কথা না বলে বা কোন কারণে কলকারী কথা শুনতে না পায় অথবা বুঝতে না পারে তখন কলকারী আগে কথা বলে থাকে। এক্ষেত্রে যেহেতু কলকারী আগে কথা বলছে তাই কথা শুরুর আগে সে সালাম দিবে, এমনকি হ্যালো বলার আগে সালাম বলবে।

    ২৪. গায়রে মাহরাম মহিলার সাথে মোবাইলে সালাম আদান-প্রদান

    গায়রে মাহরাম মহিলার সাথে প্রয়োজনে পর্দায় থেকে কথা বলা জায়েয। (যদি ফেতনার আশংকা না থাকে।) তাই মোবাইলে মহিলার সাথে কথা বলতে হলেও সালাম দিয়েই কথা শুরু করবে।

    যে আগে কথা বলবে সে সালাম দিবে। মহিলা আগে কথা বললে সে আগে সালাম দিবে। আর পুরুষ আগে কথা বললে সে সালাম দিবে।

    যার নাম্বারে কল করা হচ্ছে তিনি যদি বড় ও সম্মানী ব্যক্তি হন তখন তিনি সালাম দিলে এ সালামের উত্তর দেওয়া হয় না। বরং কলকারী উল্টো তাকে সালাম দেয়। এটা ভুল নিয়ম। তাই বড় ও সম্মানী ব্যক্তি রিসিভ করে সালাম দিলে অপর প্রান্ত থেকে এর শুধু উত্তরই দিবে। পাল্টা সালাম দিবে না। -সুনানে তিরমিযী ২-৯৯

    আগে হ্যালো না আগে সালাম

    ২৫. প্রশ্ন : ফোনে অনেকে আগে হ্যালো বলে এরপর সালাম বলে। এটি কি ঠিক নিয়ম?

    উত্তর : এ নিয়ম সুন্নত পরিপন্থী। কারণ, সুন্নাত নিয়ম হল,…….সবধরনের কথার আগে সালামের ব্যবহার হবে। এমনকি হ্যালো বলার আগেও। তাই হ্যালো বলে সালাম বলা ঠিক নয়। বরং আগে সালাম বলবে। এটিই সুন্নত। -জামে তিরমিযী ২/৯৯, রদ্দুল মুহতার ৫/৮৬, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৫

    উভয় পক্ষের সালাম মুখোমুখী হলে

    ২৬. প্রশ্ন : অনেক সময় দেখা যায় উভয় পক্ষ থেকেই সালাম দেয়া হয়। এক্ষেত্রে কি করণীয়?

    উত্তর : যদি রিসিভকারী এবং কলকারী উভয়ে একই সাথে সালাম বলে তবে প্রত্যেককেই উত্তর দিতে হবে। কিন্তু কেউ যদি আগে সালাম দিয়ে দেয় তাহলে অপর পক্ষের জন্য উত্তর দেওয়া নির্ধারিত। সে ভুলে বা ইচ্ছাকৃত পাল্টা সালাম দিলে দ্বিতীয় ব্যক্তির সালাম উত্তর হিসাবে ধর্তব্য হবে।

    -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৫, রদ্দুল মুহতার ৬/৪৯৬, শরহুল মুহাযযাব ৪/৪৬৩

    মসজিদে মোবাইলের ব্যবহার

    ২৭. প্রশ্ন : মসজিদের ভিতরে থেকে মোবাইলে কথাবার্তা বলা যাবে কি না? কী ধরনের কথাবার্তা বলা যাবে?

    উত্তর : মসজিদ আল্লাহ তাআলার ঘর। এখানে অন্য ইবাদতকারীর ক্ষতি করে বৈধ কথাবার্তাও নাজায়েয। অবশ্য ইবাদতের উদ্দেশ্যে এসে অন্য ইবাদতকারীর ক্ষতি না হয় এভাবে বৈধ কথাবার্তা বলার অবকাশ আছে। তবে মসজিদে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা না বলাই উচিত। আর মসজিদে প্রবেশের আগেই রিংটোন বন্ধ করে দেয়াই আদব। বিশেষ করে কেউ ইবাদতে মগ্ন থাকলে বা জামাতের সময় হলে এ বিষয়ে যত্নবান হওয়া খুবই জরুরী।

    -আল মাসনূ ফী মাআরিফাতিল হাদীসিল মাওজু’ ৯২, আলমুহাল্লা-৩/১৬০, শরহুল মুনইয়াহ ৬১০, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২১,ফাতহুল বারী ১/৬৫৩, এলামুস সাজিদ ০৩২৬

    এতেকাফে মোবাইলের ব্যবহার

    ২৮. প্রশ্ন : ইতিকাফ অবস্থায় মোবাইল রাখা যাবে কি না? ইতিকাফ অবস্থায় মোবাইলে কথাবার্তা বলার হুকুম কী?

    উত্তর : ইতিকাফকারীর জন্য পূর্ণ সময় বাইরের সকল ঝামেলা থেকে মুক্ত থেকে ইবাদতে নিমগ্ন থাকা এবং আল্লাহমুখী হয়ে থাকাই কাম্য। তাই অধিক প্রয়োজন ছাড়া ইতিকাফ অবস্থায় মোবাইলের ব্যবহার না করাই শ্রেয়। আর অন্য কোন মুসল্লী বা ইবাদতকারীর ক্ষতি না করে মোবাইলে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলতে পারবে। -আল বাহরুর রায়েক ২/৩০৪, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪১২

    ভুল নাম্বারে ফ্লেক্সি হলে টাকা কে দিবে?

    ২৯. প্রশ্ন : ফ্ল্যাক্সিলোডে ভুল হলে কোনো কোনো সময় অন্যের মোবাইলে টাকা চলে যায়। এক্ষেত্রে এর ক্ষতিপূরণ কে দিবে? অনেক দোকানীকে এ টাকা জোরপূর্বক ফ্লেক্সি করতে আসা গ্রাহক থেকে আদায় করতে দেখা যায়। এটা জায়েয কি না?

    উত্তর : যে নাম্বারে ফ্লেক্সি করা হবে সে নাম্বারেই টাকা জমা হবে। ভুল নাম্বারে করা হলে ভুল নাম্বারে যাবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে টাকা উদ্ধার না করা গেলে দেখতে হবে ভুল কার থেকে হয়েছে। সাধারণত ফ্লেক্সিকারী গ্রাহকের নাম্বার ভিন্ন খাতায় প্রথমে নোট করা হয়। সেটা কখনো দোকানী নিজে লিখে কখনো গ্রাহকের হাতে লেখায়। দোকানী লিখলে গ্রাহকের জন্য ঐ লিখা মিলিয়ে নেওয়া কর্তব্য। এরপর খাতার নোটকৃত নাম্বারে ফ্লেক্সি না করে ভুলে অন্য নাম্বারে করলে এর ক্ষতি দোকানীর নিজেরই। এ বাবদ গ্রাহক থেকে কিছুই নিতে পারবে না। হাঁ, গ্রাহক যদি স্বেচ্ছায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে কিছু দিতে চায় তবে তা নিতে বাধা নেই।

     

    আর খাতায় যা নোট করা হয়েছে দোকানী যদি সে নাম্বারেই ফ্লেক্সি করে থাকে তবে এ ভুলের ক্ষতিপূরণ গ্রাহককে দিতে হবে। অবশ্য দোকানী খাতায় ভুল নাম্বার নোট করেছে এ কথা প্রমাণিত হলে এ ভুলের দায়দায়িত্ব দোকানীর, গ্রাহকের নয়।

    মুসলিমদের হিজাব-দাড়ি অনুমোদন পেল মার্কিন সেনাবাহিনীতে

    মুসলিমদের হিজাব ও দাড়ি রাখার অনুমোদন দিল মার্কিন সেনাবাহিনী। মুসলমান ও শিখ ক্যাপ্টেনদের জন্য এই অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে ফক্স নিউজ জানায়, মুসলিম নারীরা মার্কিন সেনাবাহিনীর কাজগুলো হিজাব ব্যবহার করে সম্পন্ন করতে সক্ষম হলে আমাদের অনুমতি দিতে আপত্তি নেই। একইভাবে শিখদের পাগড়ি ও দাড়ি এবং মুসলমানদের দাড়ি রাখার বিষয়ে মত দেয়া হয়।
    মার্কিন সেনাবাহিনীর এই বক্তব্য অনুসারে- এখন থেকে দাড়ি রাখার জন্য, পাগড়ি রাখার জন্য বা হিজাব ব্যবহারের জন্য আবেদন করা যাবে। অবশ্য সাধারণ সৈন্যদের এখনও এই আবেদনের জন্য যোগ্য বলে বিবেচনা করা হচ্ছে না। শুধুমাত্র ক্যাপ্টেন র‍্যাঙ্কে থাকা নারী-পুরুষেরা এই আবেদন করতে পারবেন। আর তা করা হলে সার্বিক দিক বিবেচনা করে মার্কিন সেনাবাহিনী ধর্মীও এই নীতি মেনে কাজ করার অনুমতি দেবে।
    গেল সপ্তাহে মঙ্গলবার এই অনুমোদন দেয় মার্কিন সেনাবাহিনী।
    সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত কয়েক বছর ধরেই আমরা বিষয়টা নিয়ে গবেষণা করে আসছি। বিভিন্ন গোত্র থেকে আসা মানুষ কিভাবে সহ অবস্থানের মাধ্যমে সেনা বাহিনীর কার্যক্রমকে আরো শক্তিশালী করতে পারে, তা ছিল আমাদের গবেষণার বিষয়। আর সে কারণেই আমরা চাই প্রত্যেকে নিজ নিজ বিশ্বাস নিয়ে আরো দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করুক তার অপর ভাইয়ের (অপর সৈন্যের) সঙ্গে।