• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • চলে গেলেন ইমেইলের উদ্ভাবক

    ইমেইল ছাড়া আধুনিক বিশ্বের যোগাযোগ প্রায় অসম্ভব। আর এই ইমেইলের যিনি উদ্ভাবন করেছিলেন সেই রে টমলিনসন মারা গেছেন।
    ৭৪ বছর বয়সে মারা গেলেন এই মার্কিন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। ১৯৭১ সালে তিনি প্রথম ই মেইলের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক বার্তা আদান প্রদানের বিষয়টি শুরু করেন। এখন ইমেইল ছাড়া আধুনিক বিশ্বের যোগাযোগ প্রায় অসম্ভব। বোস্টনে একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত অবস্থায় তিনি প্রথম আধুনিক ইমেইল বার্তাটি পাঠান।
    বর্তমানে সব ধরনের ইমেইলের ক্ষেত্রে যে “@” প্রতীকের ব্যবহার করা হয় তারও প্রচলন শুরু হয় তার মাধ্যমে। তিনি পরে বলেছিলেন, তার প্রথম ইমেইলে কি লেখা হয়েছিল সেটি তার আর স্মরণ নেই।

    ভাবনায় কেবলই ফাইনাল

    এক বিদেশি সাংবাদিক বলছিলেন—বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসকে দু ভাগে ভাগ করা যায়; মাশরাফির দুই চারের আগে এবং পরে!
    একটু বাড়াবাড়ি মনে হলেও কথা মিথ্যে নয়। অন্তত মাশরাফির ওই চারের ফলে বাংলাদেশ যে অবিশ্বাস্য একটা লাফ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দিয়েছে, তাতে নতুন যুগ শুরু হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। অবশ্য দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় তামিম ইকবাল বলছেন, এখনই তারা নতুন যুব বা নিজেদের দাপট নিয়ে ভাবছেন না। এখন তাদের ভাবনায় কেবলই ফাইনালে সেরা খেলার চেষ্টা।
    বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতেও বড় দল হয়ে গেছে কি না, এমন আলোচনাই এখন প্রাসঙ্গিক মনে করছেন না তামিম, ‘আমি মনে করি না এখনই আমাদের জায়ান্ট বলা উচিত। এখনো অনেক পথ আমাদের যেতে হবে। তবে এটা সত্য আমরা বেশ খানিকটা এগিয়েছি। তবে সেটা জায়ান্ট বলার মতো না, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে। আমরা এই ফরম্যাটে উন্নতি করছি। এভাবে এগোতে থাকলে, আশা করছি তাহলে ভবিষ্যতে আমরা দারুণ কিছু হবে।’
    ফাইনালের প্রতিপক্ষ ভারত নিয়েও তামিমের কণ্ঠে শ্রদ্ধার অভাব নেই। তবে প্রতিপক্ষ যেই হোক, নিজেদের ক্রিকেটটা ধরে রাখতে চান তিনি, ‘ভারত শক্তিশালী একটি দল। ওরা এশিয়া কাপে ভালো ক্রিকেট খেলছে। সেই সঙ্গে আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি। শেষ তিনটি ম্যাচে আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছি। ফাইনালে যে কোন কিছুই হতে পারে। যে দল ভালো ক্রিকেট খেলবে তারাই জিতবে।’
    এই ভালো খেলার মানে কী, তাও বুঝিয়ে দিলেন দেশসেরা এই ওপেনার। তার কাছে ভালো খেলা মানে হলো তিন বিভাগেই সমান পারফরম্যান্স করা, ‘একটি জিনিস নিশ্চিত, ভারতের সঙ্গে আমাদের জিততে হলে তিন বিভাগেই সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে আমাদের। এই তিন বিভাগে আমাদের অনেক শক্তিশালী থাকতে হবে। কারণ প্রথম ম্যাচে ওরা খুব বাজে অবস্থা থেকে ফিরে এসে ম্যাচ জিতেছে। ওদের সেই স্কিল রয়েছে। ওই ভুলগুলো আমরা কম করলে সবকিছুই সম্ভব।’
    ভারতের সাথে বাংলাদেশের ম্যাচ মানেই অবশ্য কিছু স্মৃতি। এই তামিমের ব্যাটে চড়েই ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে সুপার এইটে গিয়েছিলো বাংলাদেশ। আগে-পরে আরও ইতিহাস আছে। তামিম বলছেন, ইতিহাসের চেয়েও সম্ভাবনা বেশি আকর্ষণীয়, ‘ভারতের সঙ্গে ভালো কিছু ইনিংস খেলার স্মৃতি তো অবশ্যই মনে পড়বে। একটা জিনিস আমরা বিশ্বাস করি, একটা দল যতোই শক্তিশালী হোক না কেনো, আমরা যদি আমাদের মতো খেলি, তাহলে আমরা যে কোনো দলকেই হারাতে পারি। যা আমরা প্রমাণ করেছি। ভারতের সর্বশেষ সিরিজে তাদেরকে আমরা হারিয়েছি। যদিও সেটা অন্য ফরম্যাট ছিলো। তারপরও আমরা যদি ভুল কম করি, তাহলে আমাদের ভালো সম্ভাবনা আছে।’
    বোঝা যাচ্ছে, ইতিমধ্যে ফাইনালের প্রতিপক্ষ দলটি নিয়ে হোমওয়ার্কে অনেকটাই এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। তবে প্রতিপক্ষের কোনো নির্দিষ্ট খেলোয়াড়কে লক্ষ্য করার পক্ষে নন তিনি, ‘আমি বিশেষ কোন একজনের নাম বলবো না।  তারা প্রত্যেকেই ভালো বোলার। ভারতের সবাই দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান। আমরা আমাদের নিয়েই ভাবছি। একটি খারাপ বল পেলে তার সদ্ব্যবহার আর ভালো বল হলে তাকে সমীহ করা।’
    সোজা কথা, তামিম জানেন, তার কাজ দলকে ভালো একটা শুরু এনে দেয়া। তারপর বাকীটা সতীর্থদের ওপর ভরসা আছে তার, ‘আমি ওপেনিং করি। আমার কাজ হলো দলকে শুরুটা ভালো এনে দেয়া। আমি এবং আমার পার্টনারের এটাই কাজ। এ ধরনের টুর্নামেন্টে ওপেনারদের দায়িত্বটা বড়। কারণ প্রতিপক্ষ সব সময়ই চায় শুরুতেই উইকেট নিয়ে নিতে। আমরা চেষ্টা করবো যাতে সেটা কম হয় এবং নিজেদের খেলা উপভোগ করবো। আমাদের শুরুটা হলে, আগে ব্যাটিং করলে যদি ভালো একটা স্কোর করি, তাহলে ভালো কিছুই হবে। কারণ আমাদের বোলাররা এই টুর্নামেন্ট সব মিলিয়ে খুব ভালো খেলছে।’

    একদিনের প্রধানমন্ত্রী!

    রূপকথার গল্পকে বাস্তবে রূপ দিলেন জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার একদিনের জন্য প্রাবজ্যোতি লক্ষণ পালকে প্রতীকী প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে নিজের চেয়ার ছেড়ে দিলেন তিনি। কল্পনার এইম ইন লাইফ সত্যি হলো ইয়র্ক ইউনিভার্সিটর ছাত্র প্রাবজ্যোতি লক্ষণ পালের।
    মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত ১৯ বছর বয়সী প্রাবজ্যোতি ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলো প্রধানমন্ত্রী হতে। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই খবর জানতে পেরে পিজি লক্ষণ পাল এবং তার পরিবারের সদস্যদের ভিভিআইপি মর্যাদা দিয়ে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে রাজধানী অটোয়ায় আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখা হয়। এ সময় তারা হোটেল শ্যাতো লরিয়র-এর প্রেসিডেন্সিয়াল সুইটে অবস্থান করে। পরে ১ মার্চ প্রাবজ্যোতি লক্ষণ পালকে একদিনের জন্য কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পূর্ণ মর্যাদা এবং নিরাপত্তা দেয়া হয়।
    প্রাবজ্যোতি লক্ষণ পাল শুধু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসেনি;  সেই সঙ্গে কানাডার পার্লামেন্ট ভবন পরিদর্শন, স্পিকার, গভর্নর জেনারেল, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য এবং জাস্টিন ট্রুডো সঙ্গে সাক্ষাৎ, একটি শপথ অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণ, প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বিমানে চড়া থেকে শুরু করে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বের পর গণমাধ্যমে কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়।
    উল্লেখ্য, পিজি পাল যখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর আসনে, তখন জাস্টিন ট্রুডো একটি সাধারণ চেয়ারে আসন গ্রহণ করেন।

    হিজাব নিয়ে জাপানি তরুণীদের উৎসাহ বাড়ছে   

    মাথায় কাপড় বা পাগড়ি দেয়ার একটি আরবী পরিভাষা হচ্ছে হিজাব। যেটাকে নারীবাদীরা দীর্ঘদিন যাবত নারীদের ওপর জোর জবরদস্তির প্রতীক হিসেবে মনে করে আসছে। গত শনিবার জাপানের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক আসাচি শিম্বুনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপানে বসবাসকারী একদল নারী এই ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে ফেলতে উদ্যোগী হয়েছেন। তারা বলছেন, মুসলিম বিশ্বের নারীদের সবার সামনে এমন পোশাক পড়ার কারণ তাদের শালীনতা রক্ষা করা। জাপানে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় একদল মুসলিম নারী হিজাব এবং মুসলিমদের অন্যান্য পোশাকের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন রুচিসম্মত পোশাক হিসেবে। তাদের আশা, এসবের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করার মাধ্যমে জাপানি নারীদের ইসলামের অনুসারী বানানো। জানুয়ারির শেষদিকে প্রায় ১০০ নারী জাপানের সবচেয়ে বড় মসজিদ টোকিও জামেতে জড়ো হয়েছিলেন। সেখানে তারা ঐতিহ্যবাহী হিজাব স্কার্ফ কিভাবে পরতে হয় তা শিখতে আসেন। রঙ-বেরঙের স্কার্ফ মাথায় পেঁচিয়ে পিন দিয়ে এঁটে দেয়া হয়। যেসব নারী ‘হিজাবের একদিন’ নামের এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তারা আয়নায় তাদের নিজেদের দেখে উৎসাহিত হয়ে বলতে থাকেন চমৎকার এবং খুবই আকর্ষণীয়। মরোক্কোর এক মুসলিম নারী অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বলছিলেন, আমাদের ধর্মে ¯্রষ্টা আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, মুখ এবং হাতের প্রথমভাগ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখার। তাই হিজাব পরিধান করা আমাদের জন্য ইবাদত। যখন আমরা পর্দা করি তখন আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় এবং অন্যের কাছ থেকে সম্মান পেয়ে থাকি। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেন জাপানে বসবাসরত ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৪ জন মুসলিম নারী। তাদের মধ্যে একজন ২৩ বছর বয়সী আরিসা সাকামোতো, যিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন, অনুষ্ঠানে তিনি একটি ফুলের নকশা করা কালো স্কার্ফ পরেছেন। সাকামোতো জানান, তিনি ইসলাম গ্রহণের পূর্বে বেশিরভাগ সময়ই ছোটখাট পোশাক পরতেন। তিনি ইসলামে দীক্ষিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমবর্ষে মালয় বিষয় নিয়ে পড়ার সময়। ইসলামের সহিষ্ণু নিয়মনীতি, সব রকম প্রতিকূলতায় ইতিবাচক মনোভাব পোষণ তাকে ইসলাম গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। তিনি হিজাব পরেন যাতে মানুষ জানতে পারে যে, তিনি একজন মুসলিম। তার বাবা-মা তাকে এ থেকে বেড়িয়ে আসতে বলেছেন। তার কারণ, তারা মনে করছেন এর ফলে তাদের কন্যা নির্যাতিত হতে পারেন। কিন্তু যখন তারা দেখলেন, তার কন্যা খুব আন্তরিকভাবে তার বিশ্বাসের চর্চা করছে, সক্রিয়ভাবে তাদের সেবা করছে এবং সম্মান প্রদর্শন করছে, তখন তার মায়ের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে যায়। এখন তিনি তার মেয়ের জন্য এমন পোশাক পছন্দ করেন, যা হিজাবের সঙ্গে মানিয়ে যায়। সাকামোতো জানান, যখন থেকে তিনি হিজাব পরে বাইরে যান, তখন অন্যান্য মুসলিম বোনেরা তাকে উৎসাহিত করেন। এছাড়াও বয়স্ক জাপানিরাও তার মাথা বন্ধনীকে ‘সুন্দর’ বলে প্রশংসা করেন। তবে সাকামোতো কাজের সময় হিজাব পরতে পারেন না। তিনি বলেন, আমি সেখানেও হিজাব পরতে চাই, কিন্তু এটা কঠিন, কারণ সেখানে অল্প কয়েকজন মুসলিম রয়েছেন। আমার প্রথমে যেটা করতে হবে তা হচ্ছে, আমার আচার-আচরণের মাধ্যমে তাদেরকে ইসলাম বোঝানো। জাপানে অমুসলিম নারীদের মাঝে ইসলামী পোশাকের প্রতি আগ্রহ দিনদিন বেড়েই চলেছে। ‘হিজাবের একদিন’ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া নারীদের অর্ধেকই অমুসলিম নারী। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ২২ বছর বয়সী আয়ানো অকি জানান, তিনি ফেসবুকে এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানতে পেরে বন্ধুদের সঙ্গে এখানে এসেছেন। তিনি বলেন, আগে আমার ধারণা ছিলো মুসলিম নারীদেরকে হিজাব জোর করে পরানো হয়। তবে এখন আমার ধারণা একেবারেই পাল্টে গেছে। এখানে এসে জানতে পারলাম এটা পুরোটাই মুসলিম নারীদের নিজের ইচ্ছাধীন ব্যাপার। এছাড়াও অনুষ্ঠানটি আমাকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে ভালো সুযোগ করে দিয়েছে, যেহেতু আমার কোনো মুসলিম বন্ধু নেই।

    আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধে দুধ পান

    যারা কারণে-অকারণে দুধ পান করেন না তাদের জন্য একটি তথ্য দিয়েছেন বিশেষজ্ঞগণ। তথ্যটি হলো একটি বড় ধরনের গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, দুধ পানে আর্থ্রাইটিস বা গ্রন্থি বাত ব্যথার উপশম হয়, ব্যথায় আক্রান্তের প্রবণতা প্রলম্বিত হয়।
    এব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর তথ্য হচ্ছে, ২৫ বছরের অধিক বয়সের লোকদের শতকরা ১৪ ভাগ এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সের লোকদের শতকরা ৩৪ ভাগের দীর্ঘ মেয়াদি অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টে প্রদাহ হতে পারে। তবে আশার কথা হলো মহিলাদের জন্য একটু বাড়তি খবর রয়েছে গবেষণায়।
    বিশেষ করে পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলাগণ সাধারণত শারীরিক পরিবর্তনের কারণে হাড়ে ও জয়েন্টে বা অস্থি সন্ধির ব্যথা বা অস্টিওআর্থ্রাইটিসে বেশি ভুগে থাকেন। এই বয়সের মহিলাগণ যদি সপ্তাহে ৫ থেকে ৭ গ্লাস লো-ফ্যাট মিল্ক পান করেন তবে তাদের জয়েন্ট প্রদাহ বা আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হবার প্রবণতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম।
    এ ব্যাপারে স্টাডি অথার হারভার্ড বিশ্ব বিদ্যালয়ের মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক বিং লুর কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল সত্যি সত্যিই কি প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো? তিনি জবাব দিয়েছেন ‘ইয়েস’। লো-ফ্যাট অথবা ফ্যাট ফ্রি মিল্ক পানে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কিছু নেই। বরং অস্টিওআর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হবার ঝুঁকিকে বেশ প্রলম্বিত অথবা প্রতিরোধ করে।

    জাপানে আরো একটি নতুন প্রজাতির ডাইনোসরের সন্ধান মিললো

    ফুকুই প্রিফেকচারের কাত্সুইয়ামা’তে নতুন আরেকটি প্রজাতির ডাইনোসরের সন্ধান নিশ্চিত করা হয়েছে। এর ফলে জাপানে পাওয়া ডাইনোসরের প্রজাতির সংখ্যা দাঁড়ালো ৭ এ।

    জীবাশ্ব বিশ্লেষণের তথ্য অনুসারে নতুন প্রাণীটি হলো একটি ছোট থেরোপড যেটির আদিম এবং উদ্ভূত বৈশিষ্ট্য রয়েছে, ফুকুই প্রিফেকচারাল ডাইনোসর জাদুঘর এবং ফুকুই প্রিফেকচারাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া তথ্যানুসারে নতুন ডাইনোসরটির নাম রাখা হয়েছে ফুকুইভেনাটোর প্যারাডক্সাস বা “ফুকুই প্রিফেকচারের স্ববিরোধী শিকারী”।

    থেরোপড যখন পাখির মতো উড়তে শুরু করেছিল, সে সময়ে ফুকুইভেনাটোরের অস্তিত্ব ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়র একজন অধ্যাপক ইয়ৈইচি আজুমা বলেছেন ফুকুইভেনাটোর পাখিতে পরিণত হতে ব্যর্থ হয়।

    ফুকুইভেনাটোর প্রায় আড়াই মিটার লম্বা এবং ওজন ছিলো প্রায় ২৫ কেজি -আজুমা বলেন।

    ২০০৭ সালের অগাস্টে ১৬০টির মতো ডাইনোসরের হাঁড়গোড় উদ্ধার করা হয়েছিলো, ১ কোটি ২০ লক্ষ বছর আগে ক্রটেশাস সময়ের শেষের দিকে পৃথিবীর বুকে বিচরণ করা ডাইনোসরের ফসিল গুলোর ৭০ শতাংশ চমত্কার অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল।

    আযানের কথা

    Posted by admin on February 28
    Posted in Uncategorized 

    আযানের কথা

    আল্লাহু আকবার। আল্লাহু আকবার। আযানের সূচনা ধ্বনি। প্রতিদিন আমরা পাঁচবার এই আযান ধ্বনি শুনে থাকি। আযান ধ্বনিগুলোর অর্থ সবাই না বুঝলেও এ কথা সবাই বুঝে যে, এখন নামাযের সময় হয়ে গেছে। একটু পরেই জামাত শুরু হবে। তথাপি আযানের রয়েছে গূঢ় অর্থ ও মর্ম।

    মর্ম ও তাৎপর্য : দুনিয়াতে অনেক কিছুই আছে বড়। রয়েছে বড়ত্বের অহমিকা ও দম্ভ। কিন্তু আল্লাহর বড়ত্ব সব কিছুকে ছাপিয়ে। দুনিয়াতে কোনো কিছুকে বা কাউকে বড়ত্ব তিনিই দান করেন। মহা মহীম সেই আল্লাহর মহিমা ও বড়ত্ব দিয়ে সূচনা হয় আযান-ধ্বনির। মানুষ যেন বিনয়াবনত হয় আল্লাহর বড়ত্বের কথা ভেবে।

    এরপর রয়েছে তাওহীদের সাক্ষ্য। তাওহীদের বিশ্বাস মানুষকে করে দেয় সবচে দামী, সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ। আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী।

    এরপর আযানের ধ্বনিতে রয়েছে রিসালাতের সাক্ষ্য। রিসালাতের সাক্ষ্য ছাড়া তাওহীদের স্বাক্ষ্য অর্থহীন। উভয় সাক্ষ্য মিলে ঈমান পূর্ণ হয়। রিসালাতের সাক্ষ্য আমাদের এই বার্তাই দেয় যে, পৃথিবীর অন্য কোনো পথ ও মতে প্রকৃত সফলতা ও কামিয়াবী নেই। দৃশ্যত যতই তা যুক্তিযুক্ত ও হৃদয়গ্রাহী হোক না কেন। সুতরাং রাসূলের অনুসরণই আমাদের শিরোধার্য।

    উপরন্তু এতে আরো রয়েছে নামায ও কল্যাণের দিকে আহ্বান। তাওহীদ ও রেসালাতের পরই নামাযের স্থান। হযরত উমর রা. বলেছেন, আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নামায। আযানের শব্দ বিন্যাসেও সেই ধারাক্রম রক্ষা করা হয়েছে।

    কল্যাণ-গ্রহণ মানুষের স্বভাবজাত প্রেরণা। কিন্তু তাওহীদ, রিসালাত ও নামাযের কল্যাণের দিকে আহ্বান এই তাৎপর্যই বহন করে যে, জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণ আল্লাহ ও তার রাসূলের নির্দেশনার মধ্যেই নিহিত। শুধু নিজস্ব মেধা ও বোধ-বুদ্ধি এ ক্ষেত্রে বিচার্য নয়।

    তারপর আযানের শব্দে পুনরায় এসেছে আল্লাহর বড়ত্বের উচ্চারণ। মানুষ যেন কখনোই অহংবোধে পতিত না হয় সেজন্যে আল্লাহর বড়ত্বের কথা বার বার। অহমিকা এতই জঘন্য যে, তা মানুষকে সত্য গ্রহণে বাধা প্রদান করে।

    অবশেষে তাওহীদের বাণী পুনঃউচ্চারণের মধ্য দিয়ে আযান শেষ হয়। মানুষ যেন সর্বদাই তাওহীদের বিশ্বাসে অটল থাকে। তাওহীদের বিশ্বাস নিয়েই যেন তার জীবনের শুভ সমাপ্তি ঘটে।

    গুরুত্ব : আযান ইসলামের একটি শিআর বা অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ নিদর্শন। শিআরের গুরুত্ব স্বীকৃত।

    ইসলামের শুরুর দিকে মুমিনদের কীভাবে নামাযের জন্য একত্র করা হবেÑ এ বিষয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের নিয়ে পরামর্শ সভা করেছেন। বিভিন্ন সাহাবী বিভিন্ন রকম মত দিয়েছেন। আল্লাহর রাসূল নানা কারণে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় সে সব মত খ-ন করেছেন। অবশেষে জিবরীল আ.-এর মাধ্যমে স্বপ্নযোগে এক সাহাবী আযাানের শব্দগুলো জানতে পারলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনে তা সমর্থন করলেন। তো আযানের কালিমাগুলো সম্পূর্ণরূপে ঐশী নির্দেশনাপ্রসূত। এবং আল্লাহর রাসূল কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। আযান কতটা গুরুত্ববহÑ আযানের শুরুতেই তা স্পষ্ট।

    আযানের গুরুত্বের আরেকটা দিক এটাও যে, আযান শুধু শ্রবণের জন্য নয়। প্রত্যেক শ্রোতাকে তার জবাব দিতে হয়। মৌখিক জবাবের পাশাপাশি সবচেয়ে মর্মবহ জবাব হচ্ছে আযান শুনে মসজিদে গমন করা।

    সর্বোপরি আযান হচ্ছে নামাযের আহ্বান। আর নামাযের গুরুত্ব যে সর্বাধিক তা বলাই বাহুল্য। হযরত উমরে ফারূক রা. থেকে বর্ণিত :

    إِنَّ أَهَمُّ أُمُورِكُمْ عِنْدِي الصَّلَاةَ، مَنْ حَفِظَهَا وَحَافَظَ عَلَيْهَا حَفِظَ دِينَهُ، وَمَنْ ضَيَّعَهَا فَهُوَ لِسِوَاهَا أَضْيَعُ.

    অর্থ : তোমাদের সব বিষয়ের  মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সালাত। যে তা রক্ষা করেছে অথবা বলেছেন যে, এ ব্যাপারে যতœবান হয়েছে সে তার দ্বীনকে রক্ষা করেছে। আর যে তা ধ্বংস করেছে সে অন্যান্য ব্যাপারে আরো বিধ্বংসী। Ñমুয়াত্তা মালেক, হাদীস ৬; সুনানে কুবরা, বায়হাকী হাদীস ২০৯৬

    ফযীলত : আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষ যদি আযান ও প্রথম কাতারের ছাওয়াবের কথা জানতো তাহলে লটারি করে হলেও তা অর্জনের চেষ্টা করত। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৫, ২৬৮৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৩৭

    হযরত মুআবিয়া রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের দিন সুদীর্ঘ গ্রীবার অধিকারী হবে মুআযযিনগণ। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৮৭

    অন্য হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ছাওয়াবের প্রত্যাশায় সাত বছর আযান দিবে তার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তি লেখা হবে। Ñজামে তিরমিযী, হাদীস ২০৪

    নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, ইমাম যিম্মাদার, মুয়াযযিন আমানতদার। হে আল্লাহ! আপনি ইমামদের সঠিক পথে পরিচালিত করুন। আর মুয়াযযিনদের ক্ষমা করুন। -সহীহ ইবনে খুযাইমা,হাদীস ১৫৩১-১৫৩২; মুজামে কাবীর তবারানী, হাদীস ২০৩

    এছাড়াও আযানের অনেক ফযীলত হাদীসে বিবৃত হয়েছে, যা আযানের গুরুত্বকে আরো বাড়িয়ে দেয়।

    শিক্ষা : আল্লাহর বড়ত্ব স্বীকার করা, বর্ণনা করা। ঈমান-আক্বীদার হেফাযত করা। ঈমানের নবায়ন করা। নামাযের দিকে, কল্যাণের পথে দাওয়াত দেওয়া। তাওহীদের বিশ্বাসকে খালিছ করা এবং অব্যাহত রাখা।

    শেষকথা, পৃথিবীতে বহু ধর্ম আছে। প্রত্যেক ধর্মের রয়েছে ইবাদত-উপাসনার নিজস্ব পদ্ধতি। কিন্তু নামাযের দিকে আহ্বানের এই পদ্ধতি -আযান- এক অনন্য অনুপম আদর্শ। তাৎপর্য-মণ্ডিত এক শিক্ষা ও ঐশীপ্রেরণাজাত এক নিদর্শন।

    জাপানি বেসবল খেলোয়াড়ের নামে নাম রাখা হলো গ্রহাণুর

    মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝে অবস্থিত একটি গ্রহাণুর নাম রাখা হয়েছে জাপানের বেসবল কিংবদন্তী সাদাহারু ওওহ’র নামে।

    প্যারিস ভিত্তিক আন্তর্জাতিক গ্রহাণু ইউনিয়ন শুক্রবার তাদের ঘোষণায় বলে এখন থেকে গ্রহাণুটিকে “ওওহসাদাহারু” নামে পরিচিত হবে।

    কিউশু বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক হিতোশি ইয়ামাওকা’র নেতৃত্বে জাপানের একটি গবেষক দল ২০০০ সালে গ্রহাণুটির সন্ধান পান।

    ইয়ামাওকা বলেন ছোট্ট গ্রহটির পরিধি ৩ কিলোমিটারের মতো এবং পৃথিবীর হিসেবে প্রতি ৩ বছর ৮ মাসে এটি সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে।

    ইয়ামাওকা গ্রহাণুটির নাম ওওহ রাখতে যাচ্ছিলেন, যিনি জাপানের হোম-রান কিং যিনি কিউশু ভিত্তিক বেসবল দল সফটব্যাংক হকস’র চেয়ারম্যান ছিলেন।

    ওওহ’র কাছ থেকে অনুমতি পাওয়ার পর তিনি নামটির রাখার আবেদন করেন।

    ওওহ ইয়ামাওকা’কে বলেন গ্রহণুর নাম তার নামে হওয়ায় তিনি সম্মানিত বোধ করছেন।

    ট্রেন চালনায় নারী

    Posted by admin on February 27
    Posted in Uncategorized 

    ট্রেন চালনায় নারী   

    অবাক হওয়ার মতোই বিষয়। নারীরা চালাচ্ছেন ট্রেন? তাদের নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। কেউ হন বিস্মিত, কেউবা মুগ্ধ। অনেকেই প্রশ্ন করেন, এটা কি সম্ভব? পার্বতীপুরের সহকারী লোকো মাস্টার বেবি ইয়াসমিন বললেন, কাজের ক্ষেত্রে পুরুষ যা পারে নারীরাও তাই পারে। দাদু ও বাবা দু’জনেই চাকরি করতেন রেলওয়েতে। সে সুবাদে এখানে আসা। আর ট্রেনচালক হিসেবে যোগদান করতে পেরে আমি গর্বিত। বেবি ইয়াসমিন ছাড়া আরও ১৪ জন নারী ট্রেনচালক আছেন সারা বাংলাদেশে। তাদের মধ্যে প্রথম এসেছেন টাঙ্গাইলের সালমা খাতুন। বাংলাদেশের প্রথম নারী ট্রেনচালক তিনিই। ঢাকায় কর্মরত সালমা বললেন, এ পেশা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। খুব এনজয় করি। আর কিছুদিন পরেই সালমা ছুটবেন দ্রুতগামী ট্রেন নিয়ে দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে। সাব-লোকো মাস্টার (এসএএলএম) থেকে সালমা তখন অ্যাসিসটেন্ট লোকো মাস্টার (এএলএম) হবেন। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রেলওয়েতে ট্রেন চালনায় ১৫ জন নারী আছেন। পর্যায়ক্রমে ট্রেনিং শেষ করে তারা একদিন সারাদেশে দ্রুতগামী ট্রেন চালিয়ে বেড়াবেন। ট্রেনের মূল চালককে বলা হয় লোকো মাস্টার বা সংক্ষেপে এলএম। প্রতিটি ট্রেনে মূল চালকের সঙ্গে একজন সহকারী চালক বা এএলএম থাকেন। এএলএম থেকে লোকো মাস্টার বা পূর্ণাঙ্গ চালক হতে সময় লাগে কমপক্ষে ১০-১২ বছর। এখানে আবার গ্রেডিংয়ের বিষয় আছে। সাব লোকো মাস্টার থেকে তিন বছর পর সহকারী লোকো মাস্টার হতে হয়। লোকো মাস্টারকে শুধু ট্রেনচালনাই নয়, পাশাপাশি ট্রেনের ইঞ্জিনের যান্ত্রিক ও তড়িৎ (ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল) বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানার্জন করে ইঞ্জিনের যান্ত্রিক ত্রুটি ও রক্ষণাবেক্ষণসহ ছোটখাটো মেরামতের কাজও শিখতে হয়। জানতে হয় সিগন্যাল ব্যবস্থা ও ট্রেনের রুট। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় যন্ত্র প্রকৌশলী জানান, আপাতত ঢাকায় সালমা একাই কাজ করছেন। সালমা ছাড়াও চট্টগ্রামে আছেন পাঁচজন। তারা হলেন, খুরশিদা আক্তার, উম্মে সালমা সিদ্দীকা, কুলসুম আক্তার, রেহানা আবেদিন ও কোহিনুর আক্তার। চারজন এএলএম আছেন লালমনিরহাটে। তারা হলেন আফরোজা বেগম, ফরিদা আক্তার, নাছরিন আক্তার ও মুনিফা আক্তার। কৃষ্ণা সরকার আছেন পাবনার ঈশ্বরদীতে। তাঁরা সবাই যোগ দিয়েছিলেন ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে। আর ২০১৪ সালে বেবি ইয়াসমিন, ছিপি খাতুন ও এ্যানি যোগ দিয়েছেন এএলএম হিসাবে। তারা রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে কাজ করছেন। এই ১৫ জনের মধ্যে চারজন যোগ দিয়েছেন ব্রডগেজে। বাকীরা সব মিটার গেজে। মিটারগেজের চেয়ে ব্রডগেজের ট্রেনের গতিবেগ অনেক বেশি। সে ক্ষেত্রে ঝুঁকিও বেশি। জানতে চাইলে ব্রডগেজের এএলএম বেবি ইয়াসমিন বলেন, যেহেতু ট্রেনচালনার উদ্দেশ্য নিয়েই এই চাকরিতে ঢুকেছি সেহেতু যেখানে যেতে বলবে সেখানে যেতে বাধ্য আমরা। এখানে ভয় পেলে চলবে না। তিনি বলেন, আমার ট্রেনিং শেষ। এখন পার্ব্বতীপুর লোকো শেডে ‘বুকিং ক্লার্ক’ হিসাবে কর্মরত আছি। এখানে কাজ হলো ট্রেনের ইঞ্জিন ও লোকো মাস্টারদের ডিউটি রোস্টার তৈরী করা। বেবি বলেন, ইতোমধ্যে আমি রুট চেনার জন্য লংরুটে গেছি। কিছুদিনের মধ্যেই দ্রুতগামী ট্রেনে সহকারী চালক হিসাবে যোগদানের সুযোগ হবে। পার্ব্বতীপুরের একজন গ্রেড-১ লোকো মাস্টার বলেন, বেবি অত্যন্ত দক্ষ চালক হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রচ- পরিশ্রমী এবং কর্তব্যপরায়ণ মেয়েটি নিঃসন্দেহে এ পেশায় ভালো করবে। যদিও লং রুটে ডিউটি করা অনেক কষ্টের। কারন সিডিউল বিপর্যয়ের কবলে পড়ে ট্রেন যখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গাতে দাঁড়িয়ে থাকে তখন যাত্রীদের বিরক্তি প্রকাশের সুযোগ থাকলেও চালক বা সহকারী চালকের সে সুযোগ নেই। যা-ই কিছু ঘটুক না কেন গন্তব্যে পৌঁছে আরেক চালককে ইঞ্জিনের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেয়া পর্যন্ত নিস্তার নেই। এসব বিষয়কেই চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখছেন বাংলাদেশের প্রথম ট্রেনচালক সালমা খাতুন। তিনি বলেন, নারী হিসাবে নয় চালক হিসাবেই ট্রেনের ইঞ্জিনে উঠি। এসময় সব ধরনের অসুবিধা বা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করার মতো মন মানসিকতা তৈরি করে নিয়েছি। আশা করি খুব একটা অসুবিধা হবে না। ছোটবেলায় সালমার প্রিয় খেলনা ছিল ট্রেন। খেলতে খেলতেই ট্রেনের প্রতি ভালোবাসা যেনো তৈরি হয়েই ছিল। সালমা বলেন, প্রথাগত পেশার বাইরে কিছু করার স্বপ্ন ছিল। তবে কাজটি সহজ নয়। রেলওয়েতে বাবার চাকরির সুবাদে এ পেশা সম্পর্কে আমি আগে থেকেই জানতাম। ট্রেন চালাতে ভালো লাগে এই কারণে যে এখন আরও অনেক মেয়ে আসছেন। যত বেশি মেয়ে এ পেশায় আসবেন, তত তাড়াতাড়ি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাবে। প্রথম নারী ট্রেনচালক বলেন, আমি এখন কমলাপুরে কাজ করছি। কোনো ট্রেন এলে ইঞ্জিন খুলে সেটি চালিয়ে আরেকটাতে লাগাই। কমলাপুরে হাজার হাজার মানুষের সামনে যখন এ কাজ করি তখন অনেকেই বিস্ময় নিয়ে থাকে। অনেক পুরুষ তাদের স্ত্রীকে দেখান। নরসিংদীর মেয়ে সালমা বেগম উচ্চমাধ্যমিক পাস করে যোগ দেন এএলএম হিসেবে। তবে এখনো লেখপাড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। চট্টগ্রাম কলেজে স্নাতক (সম্মান) পড়ছেন। সহকারী চালক হিসাবে প্রায়ই ডেমু ট্রেন নিয়ে যান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি বলেন, আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েদের প্রশ্নের শেষ নেই। তারা জানতে চান মেয়ে হয়েও এত সাহস পাই কী করে? ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে গণিতে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে এএলএম হয়েছেন চাঁদপুরের মেয়ে কুলসুম আক্তার। তাঁরও চ্যালেঞ্জিং পেশা বেছে নেওয়ার ইচ্ছা ছিল। তবে রেলওয়েতে যোগ দেবেন এমনটা ভাবেননি। তিনি বলেন, নানা জায়গায় চাকরির আবেদন করেছিলাম। এখানে হয়ে গেল। চ্যালেঞ্জিং পেশা হিসাবে মনের মতো কাজ পেলাম। বিয়ে করেছেন ট্রেনেরই এক সহকারী চালককে। ডেমু ট্রেন নিয়ে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে মাঝেমধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যান কুলসুম। এক সাথে এত শিক্ষার্থী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে খুব ভালো লাগে তার। দিনাজপুরের পার্ব্বতীপুরের মেয়ে নাছরিন আক্তারের। ডিগ্রি পাস করে তিনি রেলওয়েতে যোগ দিয়েছেন। এখন ডেমু ট্রেনের সহকারী হিসাবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, সহকারী চালক হিসেবে কাজ করতে ভালই লাগে। দারুন উপভোগ করি। কুমিল্লার মেয়ে রেহানা আবেদিনের নানা ছিলেন রেলের লোকো মাস্টার। বাবাও রেলের কর্মকর্তা। উচ্চমাধ্যমিক পাস করে নিজেও চলে আসেন এ পেশায়। মাঝেমধ্যেই ট্রেনে সহকারী চালক হিসেবে থাকেন। তিনি বলেন, ট্রেনের চালক হিসাবে আমাদের নিয়ে মানুষের অনেক আগ্রহ। নড়াইলের লোহাগড়ার মেয়ে কৃষ্ণা সরকার। যশোর সরকারি মহিলা কলেজ থেকে গণিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে তিনি এসেছেন এই পেশায়। এখন কাজ করছেন পাবনার ঈশ্বরদীর লোকোশেডে। কৃষ্ণা বলেন, খবরের কাগজে পড়েছিলাম দেশের প্রথম নারী ট্রেনচালক সালমা আপার থা। মনে হলো আমিও পারব। আমি মনে করি শিক্ষিত লোকজন এই পেশায় এলে মানুষের শ্রদ্ধা আরও বাড়বে। চট্টগ্রামের মেয়ে উম্মে সালমা সিদ্দিকী বলেন, ছোটবেলা থেকেই ট্রেন দেখছি। তখন অনেক বড় মনে হতো একেকটা ট্রেনকে। এখন যখন ট্রেনের সহকারী চালক হিসেবে থাকি, তখন আর এত বড় মনে হয় না। আফরোজার বাড়ি লালমনিরহাটের। এখন লালমনিরহাটেই আছেন। তিনি বলেন, অনেকে চালকের স্থানে একজন নারীকে দেখে বিস্মিত হন। এই বিস্ময় উপভোগ করি। অনেক স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা জানতে চায় কাজটা কেমন? আমিও উৎসাহ দিই। আফরোজার স্বামীও ট্রেনচালক। ২০১২ সালে রেলওয়েতে ৫৩ জন এএলএম যোগ দেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র একজন নারী ফরিদা আক্তার। বাড়ি বগুড়া। অত্যন্ত সাহসী ফরিদা ট্রেন চালনা দারুণভাবে উপভোগ করেন। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের একজন কর্মকর্তা বলেন, পুরুষের পাশাপাশি সব ধরনের কাজ শিখলেও এখনো দূরের রাস্তায় নানা কারণেই আমরা মেয়েদের পাঠাতে পারছি না। অথচ তাঁরা সেটিও পারবেন তাতে কোনো সন্দে নেই। তিনি বলেন, মেয়েদের যেমন এই পেশার চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে, তেমনি সমাজের সবাইকেও এদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে হবে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, এ বছরের মধ্যেই আরও কয়েকটি নতুন ট্রেন যুক্ত হবে রেলওয়ের দুই জোনের বহরে। আসবে স্টিলের অত্যাধুনিক কোচ, নতুন ইঞ্জিন। কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেনে যুক্ত হবে ফাইভ স্টার আদলের নতুন কেবিন। এরই মধ্যে নারী সহকারী চালকদের অনেকেই সহকারী চালক হিসাবে গ্রেড-২-তে উন্নীত হবেন। তখন আর তাদের দূরের গন্তব্যে ট্রেন চালনাতে কোনো বাধা থাকবে না। দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে ছুটে চলবেন এই নারীরাই। হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন যখন কোনো স্টেশনে ঢুকবে তখন আগ্রহী যাত্রীদের অনেকেই ইঞ্জিনের দিকে আগে লক্ষ্য করবেন, ট্রেনের চালক নারী নাকি পুরুষ!

    বছরে জাপানের জনসংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ কমে গেছে

    জাপানের সর্বশেষ আদম শুমারি অনুসারে ৫ বছর সময়ের মধ্যে দেশের জনসংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ কমে গেছে।

    আদম শুমারি অনুসারে জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্র এই প্রথমই ধরা পড়লো। ১৯২০ সাল থেকে জাপানে জনসংখ্যা জরিপ শুরু হয়।

    শুক্রবার দেশের আভ্যান্তরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১৫ সাল সম্পর্কে তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

    প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের অক্টোবরের ১ তারিখ জাপানের জনসংখ্যা ছিলো ১২ কোটি ৭১ লক্ষ ১০ হাজার। এই সংখ্যা ২০১০ সালের আদম শুমারির তুলনায় জনসংখ্যা কমে গেছে প্রায় ৯ লক্ষ ৪৭ হাজার।

    মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন স্বাভাবিক জনসংখ্যা হ্রাস – এর অর্থ জন্ম হারের তুলনায় প্রবীণদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।

    দেশের মোট জনসংখ্যা হ্রাস পেলেও ৮টি প্রিফেকচারে জনসংখ্যা বেড়েছে। এই ৮টি প্রিফেকচারের মধ্যে টোকিও, আইচি সাইতামা, ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

    অপরদিকে ওসাকা সহ জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়া ৩৯টি প্রিফেকচার রয়েছে।

    যৌন সংসর্গের মাধ্যমে জিকার সংক্রমণ তদন্তে যুক্তরাষ্ট্র 

    জিকা ভাইরাসে সংক্রমণের জন্য এডিস মশাকে দায়ী করা হলেও যৌন সংসর্গের মাধ্যমেও বিস্তার লাভ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যৌনকর্মের মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়াতে এ ধরনের রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। যৌন সংসর্গের মাধ্যমে জিকার সংক্রমণ তদন্তে নেমেছে এবার যুক্তরাষ্ট্র। সম্ভাব্য যৌন সংসর্গের মাধ্যমে জিকা ভাইরাস সংক্রমণের ১৪টি ঘটনা তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি)। সংক্রমিতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গর্ভবতী নারীও রয়েছেন। দেশটির জনস্বাস্থ্য সংস্থা যৌন সংসর্গের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ানোর ব্যাপারে নতুন নির্দেশনা প্রকাশ করেছে। কোথাও ভ্রমণ করা ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেই জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খোঁজ পাওয়ার পরই এই নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়। জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সংসর্গের মাধ্যমে ওই রোগী জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আক্রান্ত ব্যক্তি জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রয়েছে এমন কোনো স্থানে ভ্রমণ করেননি। কিন্তু যার সঙ্গে তার যৌন সংসর্গ হয়েছে তিনি ভেনেজুয়েলা ভ্রমণ করে এসেছেন বলে জানা গেছে। জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রয়েছে এমন অঞ্চলে ভ্রমণকালে গর্ভকালীন সময়ে যৌন সংসর্গের সময় কনডম ব্যবহার কিংবা সম্ভব হলে যৌন সংসর্গ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে সিডিসি। যদিও আক্রান্ত নারীদের মাধ্যমে সঙ্গীও জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন এমন কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে বোঝার জন্য আরো গবেষণা প্রয়োজন। গেল সপ্তাহে বিজ্ঞানীরা ব্রাজিলের গর্ভবতী নারীদের ওপর গবেষণা করে জানিয়েছেন, জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত গর্ভবতী নারীর অনাগত সন্তান মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। যদিও বিষয়টি এখনও পরীক্ষায় প্রমাণিত নয়। কিন্তু গেল বছর ব্রাজিলে জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর দেশটিতে আশঙ্কাজনক হারে মাইক্রোসেফালি আক্রান্ত শিশুর জন্ম হয়েছে। মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত শিশুর মস্তিষ্কের গঠন সম্পূর্ণরূপে হয় না। ফলে তাদের মাথা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক ছোট থাকে। এসব শিশু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়। এমনকি তাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত এডিস মশার মাধ্যমে এই ভাইরাসটি ছড়ায়। সম্প্রতি দক্ষিণ আমেরিকার পর জিকা ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বময় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। খবরে বলা হয়, জিকা ভাইরাস সাধারণত মশার মাধ্যমে ছড়ায়। তবে যৌন সংসর্গের মাধ্যমে এই রোগটি ছড়ানোর খবর পাওয়া যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন এমন একজনের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক হয়েছে। সংক্রমণের এই সংবাদটি নিশ্চিত করেছে দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (সিডিসি)। আক্রান্ত ব্যক্তি জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রয়েছে এমন কোনো এলাকায় ভ্রমণ করেননি, তবে তার সঙ্গী সম্প্রতি ভেনিজুয়েলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরেছেন। দক্ষিণ আমেরিকায় হাজার হাজার শিশু অপরিপক্ব মস্তিষ্ক নিয়ে জন্ম নেয়ার কারণ হিসেবে মশাবাহিত জিকা ভাইরাসকে দায়ী করা হচ্ছে। সিডিসির কর্মকর্তা ডা. অ্যান শুকেট বলেন, বিদেশ ভ্রমণ না করেও এই প্রথম মার্কিন কোনো ব্যক্তি জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। জিকা ভাইরাস ছড়িয়েছে এমন কোনো এলাকায় ওই রোগী ভ্রমণ করেননি। তবে তার সঙ্গী সম্প্রতি ভেনিজুয়েলা থেকে ফিরেছেন। এছাড়া ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে সম্প্রতি দেশে ফেরা দুই অস্ট্রেলিয়র শরীরেও জিকা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে যে ব্যক্তির এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে তার বাস টেক্সাসের ডেলাসে। যুক্তরাষ্ট্রের ওই এলাকায় মশার কোনো সমস্যা নেই, সুতরাং আমাদের তথ্য যৌন সংসর্গের মাধ্যমেই সংক্রমণের দিকে ইঙ্গিত করছে। সাধারণত জিকা ভাইরাসে তেমন কোনো উপসর্গ দেখা না গেলেও গর্ভধারিণী মায়েদের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক জন্মগত ত্রুটি তৈরি করতে পারে। সৌভাগ্য হচ্ছে যে, এক্ষেত্রে গর্ভধারণের কোনো বিষয় নেই। বলেন শুকেট। এর আগে বিদেশফেরতদের মধ্যে জিকা ভাইরাস পাওয়া গেলেও এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের ভূখ-েই জিকা সংক্রমণের ঘটনা ঘটলো। তবে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে জিকা সংক্রমণের এটিই প্রথম ঘটনা নয়, ২০১৩ সালে এ ধরনের আরেকটি সংক্রমণ ঘটেছিল বলে উল্লেখ করছে সিডিসি। অপর এক খবরে বলা হয়, জিকা ভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গামা রশ্মি ব্যবহার করে পুরুষ মশাগুলোকে জীবাণুুমুক্ত করার পরিকল্পনা করছে ব্রাজিল। ইরেডিয়েটর নামক একটি যন্ত্রের মাধ্যমে মশাগুলোর ওপর এ গামারশ্মি প্রয়োগ করা হবে। এটি এক ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। ঠিক মানুষের বেলায় যেমন আছে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিÑ বলেন আইএইএর ইনসেক্ট পেস্ট কন্ট্রোল ল্যাবরেটরির অণুজীব বিজ্ঞানী কোস্টাস বুর্টিস। মশা নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গামারশ্মি দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা পুরুষ মশাগুলোকে প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দেয়া হবে। এরপর সেগুলো বন্য নারী মশার সঙ্গে মিলিত হলে ওই নারী মশাগুলো যে ডিম পাড়বে সেগুলো থেকে কোনো বাচ্চা হবে না। সম্প্রতি ব্রাজিলসহ আমেরিকা মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশে জিকা ভাইরাস মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি খুব বেশি শারীরিক অসুবিধায় না পড়লেও গর্ভাবস্থায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তা গর্ভের শিশুর মস্তিষ্ক গঠন বাধাগ্রস্ত করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি এখনও প্রমাণিত নয়। কিন্তু গত বছর মে মাসে ব্রাজিলে জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর দেশটিতে মারাত্মক হারে ছোট মাথার শিশু জন্মগ্রহণ বেড়ে গেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় শিশুদের এই অবস্থাকে মাইক্রোসেফালি বলে। মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত শিশু মাতৃগর্ভে থাকার সময় তার মস্তিষ্কের গঠন সম্পূর্ণরূপে হয় না। ফলে এইসব শিশুবুদ্ধি প্রতিবন্ধী, শারীরিক প্রতিবন্ধী হতে পারে এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। জিকা ভাইরাস প্রতিরোধে এখনও কোনও টিকা আবিষ্কার না হওয়ায় এ ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে মশার জন্ম নিয়ন্ত্রণ করাটাই এখন একমাত্র উপায়। ইরেডিয়েটর ডিভাইসের মাধ্যমে গামারশ্মি দিয়ে সে কাজটিই করতে চাইছেন গবেষকরা।

    প্তাহ খানেকের ভেতরেই একীভূত হতে পারে জাপানের দুটি বিরোধী দল: ক্ষমতাসীন দল উদ্বিগ্ন

    জাপানের ক্ষমতাসীন জোট দু’টি বিরোধী দলের একীভূত হওয়ার ঘটনার উপর নজর রাখছে।

    লিবারাল ডেমোক্র্যটিক পার্টির কোনো কোনো সদস্য উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন দল দু’টি একীভূত হলে গ্রীষ্মে উচ্চকক্ষের নির্বাচনী প্রচারকে জটিল করে তুলবে।

    এলডিপি মহাসচিব সাদাকাজু তানিগাকি বলেছেন যদি শুধুমাত্র নির্বাচনে বিজয় অর্জনের জন্যেই দল গুলো একীভূত হয় তাহলে তা জনসাধারণের সমালোচনার মুখে পড়বে কেননা এই ঐক্য শুধুমাত্র নিজেদের সুবিধার জন্যেই সৃষ্টি।

    এলডিপি’র ছোট জোট শরিক কমেইতো প্রধান নাত্সুও ইয়ামাগুচি বলেছেন ইনোভেশন পার্টির কোনো কোনো সদস্য ডেমোক্র্যাটিক পার্টিরই ছিলেন। তিনি বলেন, সে কারণে এটিকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সম্প্রসারণ বলাটাই শ্রেয়।

    এদিকে কমিউনিস্ট পার্টি জাপানের ৩২টি আসনে বিরোধী দল গুলোর একক প্রার্থীকে সমর্থন করার বিষয়ে একমত হয়েছে।

    রংপুরে জাপানি নাগরিক হত্যা মামলার আসামি বিএনপি নেতার জামিন

    রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিয়ো হোশি হত্যা মামলার আসামি, বিএনপি নেতা রাশেদ-উন-নবী বিপ্লবের জামিন দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল বাছিদ তাকে এক মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন।
    এর আগে বিপ্লবকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে আসামির জামিনের আবেদন করা হয়। গত বছরের ৩ অক্টোবর জাপানি নাগরিক কুনিয়ো হোশি মাহিগঞ্জের পাশে কাউনিয়া উপজেলার নাছনিয়া বিল আলুটারী এলাকায় তার কোয়েল ঘাসের খামার বাড়ি যাওয়ার পথে   মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় পুলিশ বিপ্লব ও কুনিয়োর ভাড়া বাড়ির মালিক জাকারিয়া বালা ও তার শ্যালক এবং কুনিয়োর ব্যবসায়ীক পার্টনার হুমায়ুন কবীর হীরাসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করে।

    এ হত্যাকাণ্ডে কাউনিয়া থানার পুলিশ বাদি হয়ে অজ্ঞাত তিনজনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

    জাপানের নতুন উপগ্রহ আরো দ্রুত সংকেত পাঠাবে

    জাপান সরকার আরো দ্রুততার সাথে সংকেত পাঠাতে সক্ষম যোগাযোগ উপগ্রহ উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের মত ক্ষেত্র গুলোর জন্যে উপগ্রহটি কার্যকর ভুমিকা রাখবে। জাপানি প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরকার উপগ্রহের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বৃদ্ধি করতে চায়, জাপান বর্তমানে এই খাতে পশ্চিমা দেশগুলোর পিছে রয়েছে।

    পরিকল্পনা অনুসারে উপগ্রহটি প্রতি সেকেন্ডে ১০০ মেগাবাইট ডেটা পাঠাতে পারবে যা বর্তমানে অভ্যন্তরীণ উপগ্রহ গুলোর তুলনায় প্রায় ১০ গুণ অধিক দ্রুতগতি সম্পন্ন এবং আন্তর্জাতিক উপগ্রহ গুলোর তুলনায় প্রত্যাশিত গতি প্রায় দ্বিগুন।

    এই গতি অর্জন করতে সৌর কোষ প্যানেল এবং স্টোরেজ ব্যাটারিকে উপগ্রহতে স্থাপন করতে হবে। সরকার উপগ্রহের ওজনও কম রাখার কথা বিবেকনা করছে এবং সব ইলেকট্রিক সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণে তরল জ্বালানির পরিবর্তন, এর নির্মান এবং এর উত্ক্ষেপণ খরচও কমিয়ে ফেলা হবে।

    জাপান এরোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জে এ এক্স এ) উপগ্রহটি উন্নয়নের কার্যক্রম পরিচালনা করবে এবং জাপানে ঘরোয়া ভাবে তা উত্পাদন করা হবে।

    উপগ্রহের নতুন এই ভার্সনটির পরীক্ষামূলক সংস্করণ ২০২১ সাল নাগাদ উত্ক্ষেপণ করা হবে এবং এইচ৩ রোকেটে করে উপগ্রহটিকে তার কক্ষপথে পাঠানো হবে।

    সচেতনতা ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য: মাওলানা শিব্বীর আহমদ

    আরবের জনমানবহীন ফলফসলহীন এক অনাবাদ অঞ্চলে স্বীয় স্ত্রী হাজেরা আর শিশুপুত্র ইসমাঈলকে মহান আল্লাহর নির্দেশে রেখে গিয়েছিলেন নবী হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। পরবর্তীতে পুত্র ইসমাঈলও নবুওতপ্রাপ্ত হন। পিতা-পুত্র দুজনে মিলে নির্মাণ করেন মহান প্রভুর ঘর―পবিত্র কাবা শরীফ। শুরু হয় হজ্বের ধারা। পবিত্র কুরআনের কত সুন্দর বর্ণনা―(হযরত ইবরাহীম আ.-কে মহান আল্লাহর নির্দেশ) (তরজমা) তুমি মানুষের মাঝে হজ্বের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার নিকট চলে আসবে হেঁটে হেঁটে, দূর-দূরান্ত থেকে গভীর পথ মাড়িয়ে আগত শীর্ণকায় উটের পিঠে চড়ে। -সূরা হজ্ব (২২) : ২৭

    নবী ইবরাহীম আ.-এর ছেলেবেলায় স্বগোত্রের সঙ্গে বিতর্ক হয়েছিল মূর্তির উপাসনা নিয়ে। তাদের অবর্তমানে মূর্তিশালায় ঢুকে মূর্তি গুড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথায় কুলাতে না পেরে তারা সোজা তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করে পুড়িয়ে মারার সিদ্ধান্ত নেয়। আল্লাহর কুদরতে তিনি সেদিন জ্বলন্ত অগ্নিকু- থেকেও নিরাপদে বেরিয়ে আসেন। পবিত্র কুরআনে এ ঘটনাও বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। এই নবীর হাতেই নির্মিত পবিত্র কাবাঘর। সেই কাবাঘরে মানুষ হজ্ব করতে আসে। পবিত্র এই ঘর তওয়াফ করে। কিন্তু কালের আবর্তনে এই কাবাঘরের ভেতরেই স্থান করে নেয় তিনশ ষাটটি মূর্তি। যে মূর্তির উপাসনা নিয়ে তিনি সংগ্রাম করেছেন স্বজাতির সঙ্গে, তাঁরই হাতে নির্মিত পবিত্র ঘরটিতেও একটা সময় স্থান করে নিল এই মূর্তির দল। পৃথিবী জুড়ে ‘আল্লাহর ঘর’ বলে পরিচিত এই ঘরখানি। অথচ এই ঘরের পড়শিরাই আল্লাহর দ্বীন ছেড়ে মূর্তিপূজায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত! প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ পৃথিবীতে আগমনকালে আরবসমাজ এ মূর্তিপূজার কৃষ্ণ আবরণে এভাবেই আচ্ছাদিত ছিল।

    জানা কথা, ইসলাম প্রথমেই মানুষকে আহ্বান জানায় সৃষ্টির উপাসনা ছেড়ে একমাত্র স্রষ্টা মহান আল্লাহর বন্দেগি ও দাসত্ব গ্রহণ করতে। তাই মরু আরবে ইসলামের ঘোষণাই ছিল মূর্তিপূজার মূলে কুঠারাঘাত। অথচ প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াত গ্রহণ করে যারা মূর্তিপূজার অন্ধকার গলি থেকে উঠে আসছিলেন তাওহীদের আলোকিত রাজপথে, তাদেরকেই পবিত্র কুরআনে এ বলে সতর্ক করে দেয়া হল― (তরজমা)‘আল্লাহকে ছাড়া যাদের তারা ডাকে, তোমরা তাদেরকে গালি দিয়ো না!’ [সূরা আনআম (৬) : ১০৮] সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে এর রহস্য―‘এমন করলে তারাও যে শত্রুতাবশত আল্লাহকে গালি দেবে!’ (প্রাগুক্ত) কোনো জটিল সমীকরণ নয়। যিনি আল্লাহবিশ্বাসী মুমিন, তার কোনো কর্মের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ যদি কেউ আল্লাহকে গালি দিয়ে বসে, তাহলে এর দায় তো স্বাভাবিকভাবেই সে মুমিনের ওপরও বর্তায়। দুর্ভাগ্যবশত যদি কেউ আল্লাহকে গালি দেয় তাহলে সে যেমন অপরাধী, কারও কথা বা কাজের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ যদি এমনটি ঘটে তাহলে সেও এর দায় এড়াতে পারে না। ইসলাম তার অনুসারীদের এভাবেই সচেতনতা শিক্ষা দেয়।

    সচেতনতার আরেকটি রূপও এখানে লক্ষণীয়। স্বভাবধর্ম ইসলামে সবকিছুতেই মধ্যপন্থাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভাষ্য দেখুন―মধ্যপন্থা মেনে যে কর্ম করা হয় সেটাই শ্রেষ্ঠ। -বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীস : ৩৬০৪

    উপরোক্ত বিষয়েও সযত্নে রক্ষিত হয়েছে এ মধ্যপন্থার শিক্ষা। মূর্তিপূজা আর ইসলাম সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী দুটি বিষয়। এ দুয়ের মাঝে কোনোরকম সমন্বয় কিংবা মূর্তিপূজাকে ছাড় দেয়ার অবকাশ ইসলামে নেই। ইসলামের মৌলিক যে দাওয়াত―এক আল্লাহকে মাবুদ ও উপাস্য হিসেবে মেনে নেয়ার আহ্বান, এটিই তো শিরিক ও মূর্তিপূজাকে গুড়িয়ে দেয়। এ থেকে কেউ যেন আবার কাফেরদের দেবতা বা মূর্তিগুলোকে গালমন্দ করাকে ‘ভালো কাজ’ না বানিয়ে ফেলে, সেজন্যে সতর্ক করা হয়েছে। একদিকে মূর্তিপূজার বিপরীতে ইসলামের শাশ্বত বাণীর প্রচার এবং সৃষ্টির উপাসনা ছেড়ে এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি আহ্বানের আদেশ, সঙ্গে সঙ্গে পরিণতিতে ইসলাম আক্রান্ত হতে পারে এমন সব কাজে নিষেধাজ্ঞা―এ সচেতনতাই ইসলামের সৌন্দর্য।

    শুধু এই একটি ক্ষেত্রই নয়, ইসলামের সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে এই সচেতনতার শিক্ষা। দ্বীনী ও পরকালীন বিষয়ে তো বটেই, নিরেট পার্থিব বিষয়েও ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয় এই সচেতনতার। সচেতনতার শিক্ষা পাওয়া যায় এমন কয়েকটি দৃষ্টান্ত আমরা এখানে উল্লেখ করছি :

    প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দীর্ঘদিনের খাদেম হযরত আনাস ইবনে মালিক রা. বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করল, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কীভাবে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করব? আমার উটনীটি ছেড়ে দিয়ে, না বেঁধে রেখে?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, প্রথমে তোমার উটনীটি বাঁধ, এরপর আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল কর। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৫১৭

    আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল ও ভরসা একজন মুমিনের ঈমানের অপরিহার্য অংশ। তাই বলে স্বেচ্ছায় ‘আল্লাহ ভরসা’ বলে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়া তো আর ইসলামের শিক্ষা হতে পারে না। আমাদের স্থির বিশ্বাস, আল্লাহর হুকুমেই আগুন পোড়ায়, আগুনের নিজস্ব কোনো শক্তি নেই। তবে সঙ্গে এও বিশ্বাস করতে হবে, আল্লাহ তাআলাই আগুনকে পোড়ানোর শক্তি দিয়েছেন। সেই শক্তি দিয়েই আগুন পুড়িয়ে ছাই করে দেয় সবকিছু। এটি আগুনের শক্তি নয়, আল্লাহর দেয়া শক্তি। মহান আল্লাহ কখনো সেই শক্তি হরণ করে কুদরতের কারিশমা দেখান। মানুষ অবাক হয়ে দেখে―নমরুদের জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েও ইবরাহীম আলাইহিস সালাম নিরাপদ।

    তবে এটা তাঁর সাধারণ ধারা নয়। স্বাভাবিকতা এটিই―আল্লাহ আগুনকে পোড়ানোর ক্ষমতা দিয়েছেন আর আগুন সেই ক্ষমতাবলে পোড়ায়। উপরোক্ত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এই শিক্ষাই দিয়েছেন, উটনী ছেড়ে দিলে তা চলে যাবে কোথাও, হারিয়ে যাবে, তখন তুমি অর্থহীন পেরেশানিতে আক্রান্ত হবে―এটাই স্বাভাবিক। তাই উটনীটি ছেড়ে না দিয়ে বেঁধে রাখ, এরপর আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল কর এভাবে―একমাত্র আল্লাহই পারেন উটনীটি রক্ষা করতে। বাঁধার পরও তো উটনীটি আক্রান্ত হতে পারে কোনো বিপদে। তাই তোমার সাধ্যের সচেতনতাটুকু অবলম্বনের পর তুমি আল্লাহর ওপর ভরসা কর, যেন তিনি তোমার সাধ্যের বাইরের অনাকাক্সিক্ষত বিষয়াদি থেকে তোমাকে ও তাকে নিরাপদ রাখেন।

    ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু রোগ আছে। এক রোগীর ছোঁয়ায় আরেকজনের দেহে সংক্রমিত হয় এ রোগ। কিন্তু এ ধারণা যেন মূল বিষয়টি ভুলিয়ে না দেয়; তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ছোঁয়াচে কোনো রোগ নেই। তখন এক গ্রাম্য সাহাবী দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা তো দেখি, একটা পাঁচড়াযুক্ত উট যখন কোনো পালে থাকে, তখন পুরো উটের পালকেই পাঁচড়ায় আক্রান্ত করে দেয়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই হলো ভাগ্য, বলো দেখি, প্রথমটির পাঁচড়া হলো কীভাবে? -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস  ৮৬

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বুঝিয়েছেন, প্রথম উটটিকে যিনি পাঁচড়ায় আক্রান্ত করেছেন, তিনিই অন্যগুলোকেও এ রোগ দিয়েছেন। যে কোনো প্রকার রোগই হোক, তা কেবল আল্লাহর হুকুমেই কাউকে আক্রান্ত করতে পারে কিন্তু এখানেও একই কথা, আল্লাহ তাআলাই কিছু কিছু রোগকে সংক্রামক করে দিয়েছেন। আল্লাহ প্রদত্ত এই সংক্রমণ শক্তির কারণেই এক রোগী থেকে আরেক রোগীতে তা সংক্রমিত হয়। আরেকটি হাদীসে এই বাস্তবতাটিকেই তিনি স্পষ্ট করেছেন এভাবে―কুষ্ঠ রোগী থেকে দূরে থাক, যেভাবে তুমি সিংহ থেকে দূরে থাক। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৭০৭ প্রথমোক্ত হাদীসটি যেমন আমাদের ঈমানী ভিত মজবুত করে, দ্বিতীয় হাদীসটি আমাদেরকে সচেতনতার শিক্ষা দেয় এবং ঈমান-আকীদা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বা অলীক সন্দেহে আক্রান্ত করতে পারে এমন ক্ষেত্র থেকেও সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তা শেখায়।

    দান-সদকা তথা দুঃস্থ-অভাবীদের অভাব মোচনে এগিয়ে আসা একটি নৈতিক গুণ। শুধু মানুষই নয়, স্বজাতির বিপদে এগিয়ে আসে বনের হিংস্র পশুও। তাই মানুষ হয়েও যে মানুষের কষ্ট বোঝে না, সে বাস্তবিকই পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। দান-সদকার প্রতি ইসলাম আমাদের যথেষ্ট উৎসাহিত করেছে। যেমন দেখুন, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে পেটভরে আহার করে আর তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে সে তো মুমিনই নয়। -আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস ১১২

    পবিত্র কুরআন ও হাদীসে দান-সদকার ফযীলতও বর্ণিত হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন ভঙ্গিতে। এতে উৎসাহিত হয়ে কেউ তার সর্বস্ব বিলিয়ে দিতে পারে এবং আক্রান্ত হতে পারে অভাবে―এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু একজন অভাবীর অভাব মোচন করতে গিয়ে নিজেও অভাবের শিকারে পরিণত হওয়া―ইসলাম আমাদেরকে এ থেকে সতর্ক করে দিয়েছে। পবিত্র কুরআনের ভাষ্য দেখুন―(তরজমা)‘তুমি (দান-সদকা করার ভয়ে) তোমার দুই হাত তোমার কাঁধে আটকে রেখো না, আবার তা পুরোপুরি বিছিয়েও দিয়ো না, (অর্থাৎ সবকিছু দান করে দিও না, বরং কিছু নিজের প্রয়োজনে রেখে দাও,) অন্যথায় তো নিন্দিত নিঃস্ব হয়ে পড়বে।’ -সূরা বনী ইসরাঈল  (১৭) : ২৯

    আল্লাহকে গালি দেয়ার মতোই আরেকটি বিষয় লক্ষ করুন। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একটি কবিরা গোনাহ―কোনো ব্যক্তি তার বাবা-মাকে গালি দেবে। সাহাবায়ে কেরাম জানতে চাইলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কেউ কি তার বাবা-মাকে গালি দেয়? তিনি উত্তর দিলেন, হাঁ, সে আরেকজনের বাবাকে গালি দেবে। তখন দ্বিতীয় ব্যক্তি প্রথম ব্যক্তির বাবাকে গালি দেবে। সে কারও মাকে গালি দেবে। তখন দ্বিতীয় ব্যক্তি প্রথম ব্যক্তির মাকে গালি দেবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯০

    বাবা-মাকে যদি কোনো কুসন্তান গালি দেয় তাহলে তা অতি জঘন্য―এ কথা সহজেই বোঝা যায়। কিন্তু ইসলামের সচেতনতা দেখুন, অন্যের বাবা-মাকে গালি দেয়ার পরিণামেও যেন নিজের বাবা-মা গালির শিকার না হন- সে বিষয়টি সবিশেষ লক্ষ রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, এভাবেও যদি বাবা-মাকে গালি শুনতে হয় তাহলে তাও সন্তানের জন্যে কবিরা গোনাহ!

    বর্তমানের অগ্রসর পৃথিবীতে আর্থিক লেনদেন কিংবা যে কোনো বিষয়ে লিখিত চুক্তির প্রয়োজনীয়তা সর্বজন স্বীকৃত ও বহুল প্রচলিত। কিন্তু আমরা যদি দেড় হাজার বছর আগের পৃথিবীর দিকে ফিরে তাকাই দেখব, তখন চুক্তি কেবল মুখে মুখেই হতো। ইসলামে সচেতনতার শিক্ষা কত ব্যাপক দেখুন, ইসলাম আমাদেরকে সেই প্রাচীন কালেই এ শিক্ষা দিয়েছে যে কোনো মেয়াদি ঋণচুক্তি করলে তা লিখে রেখো। কুরআনের ভাষায়- (তরজমা) ‘হে মুমিনগণ! তোমরা যখন একে অন্যের সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের জন্যে ঋণের কারবার কর, তখন তা  লিখে রেখো।’ -সূরা বাকারা (২) ২৮২

    ঋণচুক্তি, বাকিতে ক্রয়-বিক্রয় কিংবা যে কোনো ধরনের আর্থিক চুক্তি যদি লিখে রাখা হয়, তাহলে  পরবর্তী সময়ে অনেক অনাকাক্সিক্ষত জটিলতা এড়ানো সম্ভব হয়। মৌখিক নির্ধারিত শর্ত ও চুক্তি ভুলে যাওয়া বিচিত্র কিছু নয়। যদি চুক্তিটি লিখিত থাকে, তাহলে উভয়পক্ষের জন্যেই তা নিরাপদ থাকে।

    সচেতনতাকে যারা তাওয়াক্কুল পরিপন্থী মনে করেন সামনের উদাহরণটি তাদের জন্যে। ইয়েমেনের কিছু লোক হজ্ব করতে আসত খালি হাতে। হাজ্বীগণ আল্লাহর মেহমান―এই ভরসায় তারা কোনো ধরনের খাবার-পানি সঙ্গে না নিয়েই হজ্বে চলে আসত। তারা বলত, আমরা আল্লাহর ওপর ভরসাকারী। পরে তারা অন্যদের বোঝা হয়ে থাকত। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে তাদের এ থেকে বারণ করেছেন এভাবে- (তরজমা) ‘আর (হজ্বের সফরে) পথ খরচা সাথে নিয়ে নিও…’ -সূরা বাকারা (২) : ১৯৭

    সচেতনতার জন্য চাই দ্বীনের সহীহ ইলম ও সহীহ সমঝ। আল্লাহ আমাদের দ্বীনের সহীহ ইলাম সহীহ সমঝ ও সচেতনতা দান করুন।