ক্যান্সার প্রতিরোধে ভিটামিন সি

ভিটামিন সি পানিতে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন। শরীর ভিটামিন সি জমিয়ে রাখতে পারেনা। অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহণ করলে তা প্রস্রাবের সাথে দেহ থেকে রেরিয়ে যায়।

প্রতিদিন আমাদের এই ভিটামিন খাওয়া উচিত। টক জাতীয় ফলে ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে থাকে। আমলকী, আমড়া, পেয়ারা, জলপাই, লেবু,  বাতাবী লেবু, কমলা, টমেটো, আঙ্গুর, ইত্যাদি ফলে অনেক ভিটামিন সি থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে এই ভিটামিন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। সুতরাং সবার এই ভিটামিন প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে খাওয়া উচিত। ভিটামিন সি আমাদের শরীরের বৃদ্ধি এবং ক্ষয়পূরণের জন্য খুব প্রয়োজনীয়। বিভিন্ন জায়গা কেটে গেলে প্রচুর সি জাতীয় ভিটামিন গ্রহণ করা উচিত।
কারণ এই ভিটামিন কোলাজেন তৈরী করে এবং ক্ষতস্থান দ্রুত মেরামত করে। দাঁত এবং অস্থির গঠনেও এর ভূমিকা রয়েছে। ক্যান্সার প্রতিরোধ ছাড়াও বিভিন্ন অসুখ বিসুখের হাত থেকে রক্ষা করতে ভিটামিন সি এর জুড়ি নেই। যেমনঃ- ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, সুন্দর, সুস্থ মাড়ির জন্য এই ভিটামিন প্রয়োজন, রক্তের গ্লোকোজ নিয়ন্ত্রণ করে, পোড়া এবং ক্ষত দ্রুত আরোগ্যের জন্য ডাক্তারগণ ভিটামিন সি ব্যবহার করেন।
এছাড়া অ্যাজমা, একজিমা ইত্যাদি অসুখেও ভিটামিন সি উপকার করে, অবসাদ রোগীদের জন্য যেসব ওষুধ ব্যবহার করে সেগুলোর একটি পরিচিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় মুখ শুকিয়ে যায়, এ অবস্থায় ভিটামিন সি ব্যবহার করা হয়, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে-এর ব্যবহার আছে। মহিলাদের এক্লামশিয়া রোগ প্রতিরোধ করে ভিটামিন সি এবং অস্টিওআর্থ্রাইটিস রোগীদের জন্য ভিটামিন সি ভালো কাজ করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে ভিটামিন সির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এটি মূলত এন্টি অক্সিডেন্ট। বিজ্ঞানী পাওলিং বলেছিলেন, প্রতিদিন আমাদের ভিটামিন সি খাওয়া উচিত। আমাদের দেশে অনেকেই টক জাতীয় ফল খেতে চায়না। এটি একেবারেই ঠিক নয়। অনেকে কেটে গেলে ভিটামিন সি খেতে চায়না এই ভয়ে যে ক্ষতস্থান পেকে যাবে। এটা যে কত বড় ভুল তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
বরং কেটে বা পুড়ে গেলে আরো বেশী ভিটামিন সি খাওয়া উচিত। তাহলে দ্রুত আরোগ্য সম্ভব। কার্সিনোজেন (যেসব পদার্থ ক্যান্সার তৈরী করে) এবং নাইট্রেট ইত্যাদি থেকে শরীরকে রক্ষা করার মধ্য দিয়েই ভিটামিন সি ক্যান্সার থেকে আমাদের মুক্তি দিতে পারে। অনেক বিজ্ঞানীই একমত ভিটামিন সি ক্যান্সার থেকে আমাদের মুক্তি দিতে পারে। তাই ভিটামিন সি কে ক্যান্সার প্রতিরোধক বলা যায়।
কিন্তু  ক্যান্সার হয়ে গেলে ভিটামিন সি খেয়ে খুব একটা লাভ নেই। ক্যান্সারের মেটাস্টেসিস অর্থাত্ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়াকে ভিটামিন সি প্রতিরোধ করতে পারে।  ফলে সবারই ভিটামিন সি প্রচুর খাওয়া উচিত। তাহলে ভবিষ্যতে ক্যান্সারের প্রকোপ অনেক কমে যাবে।
ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
রেজিষ্টার, মেডিসিন বিভাগ
রাজশাহী মেডিক্যাল হাসপাতাল