তামীম পেরেছেন, পারেননি মুশফিক
দু’বন্ধু তামীম ও সাকিবের মধ্যে লড়াইটা জমে উঠেছে ভালোই। ওয়ানডে ক্রিকেটে চার হাজারী ক্লাবের সদস্যপদে বাংলাদেশের ২ ব্যাটসম্যান তারাই। তিন ভার্সনের ক্রিকেটে রান সংগ্রহের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৮ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদও তাদেরই। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামকেও অন্য উচ্চতায় তুলেছেন এই দুই বাঁ-হাতি। ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ভেন্যুতে ২ হাজার রান, কম কথা নয়। প্রেমাদাসায় জয়সুরিয়া (২৫১৪) ও সাঙ্গাকারা (২১৫৬) ছাড়াও সারজায় পাকিস্তান গ্রেট ইনজামাম (২৪৬৪) ও সাইদ আনোয়ার (২১৭৯) এবং মেলবোর্নে অজি গ্রেট রিকি পন্টিংয়ের (২১০৮)। সেই রেকর্ডের পাশে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এমন কৃতিতে সাকিব নাম লিখিয়েছেন দ. আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে। বন্ধু তামীমকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপনে খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। বছরের শেষ ম্যাচে এসে দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এমন অধ্যায় রচনা করেছেন তামীম। এই বিরল কৃতিত্বে সাকিবের যেখানে লেগেছে ৬৫ ম্যাচ, তামীমের সেখানে বাংলাদেশের হোম অব ক্রিকেটে খেলতে হয়েছে একটি বেশি ম্যাচ। এমন মাইলফলকে সাকিবের পাশে নাম লেখানোর জন্য তামীমের প্রয়োজন ছিল গতকাল ১৭ রান, মুশফিকুরের সেখানে লাগত ৪০। মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে সদস্যপদ পেয়ে ছেড়েছেন তামীম। গতকালকের ৭৩ রানে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ২ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদে সাকিবকে (২০৫০ রান) টপকে গেছেন তামীম (২০৫৬)। এক ভেন্যুতে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২ হাজার রান পূর্ণ করার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন মুশফিকুর। তাহলে এক দিনে এক ভেন্যুতে দুই ব্যাটসম্যানের এমন কৃতি হয়ে যেত বিশ্বরেকর্ড। তবে ওয়ালারকে ডাউন দ্য উইকেটে লেট কাট করতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ে কাঁটা পড়ে ২৮এ ফিরে যাওয়ায় ২ হাজার থেকে এখন ১২ রান দূরে মুশফিকুর। তবে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে সৌম্যকে (৬৭২ রান) ছাড়িয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে এই বছরটিতে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৬৭ রান সংগ্রাহক মুশফিকুর। গত বছর ১৮ ম্যাচে সংগৃহীত ৭০৪ রানকে ছাড়িয়ে এবার সমসংখ্যক ম্যাচে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। দারুণভাবে কাটিয়ে দেয়া বছরে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সবোচ্চ ৭৪২ রান তামীমের। তবে ক্যারিয়ারে বছরওয়ারি পারফরম্যান্সের চেয়েও বেশি রানের অতীত আছে তামীমের। ২০০৮ সালে ২৬ ম্যাচে ৮০৭ এবং ২০১০ সালে ২৩ ম্যাচে করেছেন তিনি ৭৭৬ রান। বিশ্বকাপে উপর্যুপরি ২ সেঞ্চুরিতে বিস্ময়ের জন্ম দেয়া মাহামুদুল্লাহ রিয়াদও নিজেকে এ বছর চিনিয়েছেন অন্য রূপে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৯ ও ৪-এর পর গতকাল ৫২।৩২ রানের মাথায় ক্রেমারকে কভারে পুশ করে নন স্ট্রাইক ব্যাটসম্যান মাশরাফির কল না দেখে দিয়েছিলেন সিঙ্গলের জন্য দৌড়। কভারের ফিল্ডার সিকান্দার রাজার ডাইরেক্ট থ্রো স্ট্যাম্পে আঘাত হানার আগে জচ্চুরির আশ্রয় নিয়ে বলহীন গ্লাভস দিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে দিয়ে উইকেটকিপার চাকাভা যে অনৈতিক কাজ করেছেন, তা না দেখেই ড্রেসিংরুমের পথে হাঁটা শুরু করেছিলেন মাহামুদুল্লাহ। ঠিক বাউন্ডারি রোপ যখন অতিক্রম করতে উদ্যত মাহামুদুল্লাহ, তখন ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে এসে মাহামুদুল্লাহকে থামিয়েছেন তামীম। অতঃপর টিভি রিপ্লেতে চাকাভার ওই অনৈতিক কা- পড়েছে ধরা Ñ তার জন্য টিভি আম্পায়ার এনামুল হক মনিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে মিনিট পাঁচেক। ৩২ রানে থেমে, মাঠে ফিরে যোগ করেছেন রিয়াদ আরো ২০ রান এবং ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তার ১৪তম ফিফটিটি আবার দ্রুততম। ৩৮ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় প্রাপ্ত এই ফিফটির সুবাদে এ বছর চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫০০ পূর্ণ করে ছেড়েছেন মাহামুদুল্লাহ ওয়ানডেতে। বছরটি শেষ করেছেন বিশ্বকাপ হিরো ৫০৬ রানে। তবে এক বছরে এর চেয়েও বেশি রানের অতীত আছে তার এবং তা মাত্র ১ রান বেশি। ২০১০ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটে করেছিলেন তিনি ৫০৭ রান। এক ভেন্যুতে ওয়ানডে ক্রিকেটে ২ হাজার রানব্যাটসম্যান ভেন্যু ম্যাচ রান গড়জয়সুরিয়া (শ্রীলংকা) প্রেমাদাসা ৭১ ২৫১৪ ৩৮.৬৭ইনজামাম(পাকিস্তান) শারজাহ ৫৯ ২৪৬৪ ৫০.২৮সাইদ আনোয়ার (পাকিস্তান) শারজাহ ৫১ ২১৭৯ ৪৫.৩৯সাঙ্গাকারা (শ্রীলংকা) প্রেমাদাসা ৬২ ২১৫৬ ৪২.২৭রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া) মেলবোর্ন ৪১ ২১০৮ ৫৬.৯৭তামীম (বাংলাদেশ) মিরপুর ৬৬ ২০৫৬ ৩২.১৭সাকিব (বাংলাদেশ) মিরপুর ৬৮ ২০৫০ ৩৪.২৭