তার বক্তব্যে হীনম্মন্যতা প্রকাশ : হাসান রুহানি মনে ইসলামবিদ্বেষ পোষণ করলেও মধ্যপ্রাচ্যেই ব্যবসা ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিডেন্ট হতে চান। তাই মুখে ইসলাম ও মুসলমান বিদ্বেষ ছড়িয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে হোয়াইট হাউস বলেছে, তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন। ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, তার এ ধরনের মন্তব্য সম্পূর্ণরূপে বিভেদ সৃষ্টিকারী, অকেজো এবং ভুল। বার্তাসংস্থা এএফপির এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এসব বিতর্কিত বক্তব্য পরিকল্পনামাফিক ও ইচ্ছাকৃত। মনোয়নপ্রাপ্তিতে নির্বাচনের প্রাথমিক ধাপে তিনি এতে সফলতাও পেতে পারেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ট্রাম্পের বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, এর মধ্যদিয়ে তার হীনম্মন্যতা প্রকাশ পেয়েছে। তিনি কৌশগতভাবে তার দেশে এবং দেশের বাইরে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, যা-ই ঘটে যাক, আমি নির্বাচন থেকে সরছি না। অপরদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন ৩৫ হাজারের বেশি ব্রিটিশ। তারা এরই মধ্যে অনলাইনে একটি পিটিশনে সই করেছেন। ওই পিটিশনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ব্রিটেনে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে সরকারের কাছে। মজার ব্যাপার হলো চরম ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব ধারণকারী এই ধনকুবেরের ব্যবসা-বাণিজ্যের একটি বড় অংশই মুসলিম প্রধান আরব আমিরাত ও তুরস্কে পরিচালিত হয়। তিনি আরব আমিরাতে পরিচালিত ট্রাম্প অর্গানাইজেশন ট্রাম্পের মালিকানাধীন একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির স্বত্বাধিকারী। এছাড়া তুরস্কে রয়েছে ট্রাম্প টাওয়ার ইস্তাম্বুল ডেভেলপমেন্টস, আজারবাইজানের বাকুতে রয়েছে ট্রাম্প হোটেল এন্ড টাওয়ার্স। আবুধাবী, দুবাই,কাতার, সউদি আরবে রয়েছে তার বহুমুখী ব্যবসা। আমিরাতের শীর্ষস্থানীয় একটি ডেভেলপার কোম্পানির সাথে পার্টনারশিপে ব্যবসা করছে ট্রাম্পের কোম্পানি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম নিষিদ্ধ করার ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের ব্যবসায়িক মিত্র দুবাইয়ের দামাক প্রোপার্টিজের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নায়াল ম্যাকলোগলিন বলেন, ট্রাম্পের রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত ব্যাপারে আমরা আগ্রহী নই। তার সাথে আমাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক। তিনি যে মন্তব্য করেছেন তা নিয়ে আমাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। ট্রাম্পের মন্তব্যে গোটা বিশ্বেই আলোড়ন তৈরি হলেও আরব আমিরাতে ট্রাম্পের ব্যবসায়িক কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আরো একটি মুসলিম প্রধান দেশ তুরস্কেও ট্রাম্পের ব্যবসা আছে। তুরস্কে ট্রাম্পের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ট্রাম্প টাওয়ারও বরাবরের মতো চালু আছে। সিসলি জেলাতে অবস্থিত ইস্তাম্বুল ভিত্তিক আবাসিক ও অফিস টাওয়ার ট্রাম্পের বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ট্রাম্পের মেয়ে ও পারিবারিক ব্যবসার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইভানকা জানিয়েছেন, ট্রাম্প তার ব্যবসার পরিধি কাতার, সউদি আরবের মতো মুসলিম প্রধান দেশগুলোতেও ছড়িয়ে দিতে চান। এ ব্যাপারে কাউন্সিল অন আমেরিকান রিলেশনস (কেয়ার) এর মুখপাত্র ইবরাহিম হুপার বলেন, তিনি মুসলিম দেশ থেকে টাকা বানাতে পারলে খুব খুশি হন আবার তাদেরকেই আক্রমণ করেন সম্ভাব্য সবচেয়ে জঘন্য ভাষায়। ট্রাম্পের এই দ্বিমুখী নীতির কারণ আমার বোধগম্য নয়’। তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জিজ্ঞাসা করলে হুপার বলেন, আমার মনে হয় না এটা তাকে কোনো বার্তা দিতে পারবে।