জাপানের উপকূলে ভৌতিক নৌকা ভেসে আসা অব্যাহত

জাপানের উপকূলে ভেসে আসা রহস্য ঘেরা নৌকা গুলো নিয়ে কৌতুহল বাড়ছেই। ভাসমান নৌকা গুলোতে মানুষের মাথাবিহীন কঙ্কাল বা পচে যাওয়া মৃতদেহের সন্ধান মেলে।

গত অক্টোবর থেকে মারাত্মক রকম ক্ষতিগ্রস্ত বা উল্ট যাওয়া এ রকম ১৪টি নৌযান ভেসে এসেছে যে গুলোর ভেতর থেকে অন্ততঃ দু’ডজন মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ধারণা করা হয় এগুলো ভেসে আসছে উত্তর কোরিয়া থেকে।

জাপানের অনেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ধারণা তারা দেশ থেকে পালিয়ে আসা উত্তর কোরিয় নাগরিক কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন তারা সম্ভবত হতভাগ্য জেলে যাদেরকে উত্তর কোরিয় সরকার আরো বেশি সংখ্যক মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে পাঠিয়েছিলো।

“নভেম্বরের ২৩ তারিখ তিনটি মৃতদেহ পাওয়া যায়, এগুলর মধ্যে একটির মাথা যথাস্থানে থাকলেও দু’টি ছিলো মাথাবিহীন” জাপানের উপকূল রক্ষী কর্মকর্তা শুইচি হাশিজুমে বলেন।

“আমরা যখন জাহাজটিকে উপকূলে টেনে নিয়ে আসি তখন ভেতর ৬টি মাথার খুলি দেখতে পাই” তিনি বলেন।

মস্তক বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা ইঙ্গিত করছে সম্ভবতঃ নিহত হওয়ার পরও দীর্ঘ দিন ধরে সাগরে থাকার ফলে দেহের অংশ গুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

উপকূল রক্ষীরা জানিয়েছেন গত ৫ বছর ধরে ২৫০টিরও বেশি এ ধরনের নৌকা ভেসে এসেছে। কিন্তু সম্প্রতি এত অল্প সময়ে এতো গুলো নৌকা ভেসে আসা অস্বাভাবিক।

টোকিও’র ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর কোরিয়া বিশেষজ্ঞ তোশিমিৎসু শিগেমুরা বলেছেন “উত্তর কোরিয়াতে খাদ্য সংকট গুরুতর রূপ ধারণ করায় দেশের নেতা কিম জং-উন গত বছর জেলেদের আরো বেশি করে মাছ ধরে সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেন”।

সিউলের ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজ এর অধ্যাপক ইয়াং মু-জিন, এর সাথে একমত।

“উত্তর কোরিয়ার প্রায় সকল জেলে সামরিকতন্ত্রের অধিনস্ত এবং তাদেরকে প্রায়ই বড় রকমের মাছ শিকারে দূরবর্তী এলাকায় পাঠান হয়”।

“সমস্যা হচ্ছে এসব নৌযান গুলো পুরোনো এবং সাগরে যাওয়ার জন্যে তাদের যন্ত্রপাতি দুর্বলভাবে সজ্জিত, সুতরাং যদি জোয়ারের সময় সেগুলোর কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে তবে নাজুক এসব নৌকার রক্ষা পাওয়া কঠিন হয়ে ওঠে।”

“এ সমস্ত পরিস্থিতিতে তাদের জ্বালানি এবং খাবার-দাবার দ্রুত ফুরিয়ে যায়” ইয়াং বলেন।