• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • পূর্ব চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের নৌ মহড়া

    উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পরে এ অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের নৌবাহিনী পূর্ব চীন সাগরে যৌথ নৌ মহড়ায় অংশ নিয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে একথা বলা হয়।
    চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে এই মহড়া শুরু হয়। মহড়ায় জাপানের ডেস্ট্রয়ার এবং ইউএস নেভি কেরিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ অংশ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জাপানের সানকেই সিমবুন ডেইলি ও কিয়েটো নিউজ এ খবর জানায়।
    সানকেই জানায়, পরমাণু অস্ত্রধারী উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক সংকেত দিতে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে পূর্ব চীন সাগরে চীন ও জাপানের দীর্ঘদিনের বিরোধের প্রেক্ষিতে সামরিক শক্তির জানান দেয়াও এই যৌথ মহড়ার অন্যতম কারণ।

    ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

    সিলেটের বহুল আলোচিত কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলায় ছাত্রলীগ নেতা বদরুলকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার দুপুরে সিলেট মহানগর দায়রা জজ বিচারক আকবর হোসেন মৃধার আদালত এ রায় ঘোষণা করে। এদিকে, আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে খাদিজার পরিবার। এছাড়া উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছে বদরুলের আইনজীবী। তবে নতুন করে জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছেন স্বয়ং খাদিজা আক্তার নার্গিস।
    এর আগে গত বছরের ৩ অক্টোবর এমসি কলেজের পুকুরপাড়ে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম। ঘটনার পরপরই শিক্ষার্থীরা বদরুলকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। হামলার ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদি হয়ে বদরুলকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন। গত ৫ অক্টোবর বদরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত। এছাড়া ঘটনার পর শাবি থেকে বহিষ্কার করা হয় বদরুলকে। গত ২৬ ফেব্রæয়ারি আদালতে সাক্ষ্য দেন খাদিজা। পরে ১ মার্চ মামলাটি সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। ৫ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের তারিখ ধার্য করেছিলেন। গতকাল ওই মামলার রায় প্রকাশ করেছেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ বিচারক আকবর হোসেন মৃধা।
    আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ জানান, আদালত বদরুলের অপরাধ আমলে নিয়ে তাকে যাবজ্জীবন দন্ডাদেশ দিয়েছেন। একইসাথে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই মাসের কারাদন্ড প্রদান করেছেন। তিনি আরো জানান, মামলায় ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্যপ্রমাণের মাধ্যমে বদরুলের অপরাধ প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে।
    এদিকে, খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার রায় ঘোষণার সময় আদালত ছিল জনাকীর্ণ। বদরুলের বিরুদ্ধে কি রায় হয়, সেটা জানতে ছিল উৎসুক মানুষের ভিড়। রায় প্রকাশের পর উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে সন্তোষ প্রকাশ করেছে সিলেটের কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসের পরিবার। খাদিজার চাচা ও মামলার বাদি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বদরুলের বিরুদ্ধে এমন রায়ে আমি, আমার পরিবার সবাই খুশি। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট। কুদ্দুস আরো বলেন, আমরা আশা করছি, উচ্চ আদালতে যদি আসামিপক্ষ আপিল করে, তবে সেখানেও এই রায় বহাল থাকবে। এ রায়কে ‘যুগান্তকারী রায়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ কে এম শিবলী।
    রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে বের হওয়ার সময় জনগণের উদ্দেশে চিৎকার করে বদরুল বলেন, জন্ম বাংলায়, মরব বাংলায়, জয় বাংলা।
    এদিকে, রায় প্রকাশের পর সিলেট সদর উপজেলায় খাদিজা আক্তার নার্গিসের গ্রামের বাড়িতে সাংবাদিকরা যান। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের খাজিদা তার প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বদরুল আলমের বিরুদ্ধে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, নতুন করে জীবন গড়তে সব চেষ্টাই করব। রায়ে আমি খুশি।

    প্রচলিত ভুল

    একটি ভিত্তিহীন কাহিনী : দুই ব্যক্তির রূহ কবজ করতে মালাকুল মাউতের কষ্ট হয়েছে

    লোকমুখে প্রসিদ্ধ- আল্লাহ মালাকুল মাউতকে জিজ্ঞেস করলেন, হে মালাকুল মাউত! বনী আদমের রূহ কবজ করতে কি তোমার কখনো কষ্ট হয়নি? মালাকুল মাউত উত্তরে বললেন, জী, দুই ব্যক্তির রূহ কবজ করতে আমার কষ্ট হয়েছে। এক. একবার জাহাজ ডুবে গেলে এক মহিলা কাষ্ঠখ- ধরে সমুদ্রে ভাসছিল। এমতাবস্থায় তার একটি ছেলে সন্তান প্রসব হয়। এমন সময় ঐ মহিলার মৃত্যুর সময় চলে আসে। তো ঐ সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর দিকে তাকিয়ে তার মায়ের জান কবজ করতে আমার খুব কষ্ট হয়েছিল। দুই. শাদ্দাদের জান কবজ করতে আমার কষ্ট হয়েছিল; যখন সে তার দুনিয়ার জান্নাত বানায় এবং সেখানে প্রবেশ করার মুহূর্তে এক পা ভেতরে দেওয়ার সাথে সাথে আরেক পা বাইরে থাকা অবস্থায়ই তার মৃত্যুর পরওয়ানা চলে আসে আর আমি তার জান কবজ করে নিই।

    আল্লাহ বললেন, ওহে মালাকুল মাউত! সমুদ্রের মধ্যে যে শিশুর মায়ের জান কবজ করতে তোমার কষ্ট হয়েছিল সে শিশুটিই ছিল শাদ্দাদ!

    কেউ কেউ কিসসাটিকে এভাবেও বলে- (সংক্ষেপে) …জনমানবশূন্য মরুভূমির মধ্যে সদ্যভূমিষ্ঠ দুগ্ধপোষ্য শিশুর মায়ের জান কবজ করতে… এবং এক অশীতিপর বৃদ্ধ কামারকে তার লাঠির নিচের অংশে লোহা লাগিয়ে দিতে বলছিল, যাতে লাঠিটি অনেক বছর টেকসই হয়। এমতাবস্থায় বৃদ্ধের মৃত্যু চলে আসে আর আমি তার জান কবজ করি। তো এ কথা শুনে আল্লাহ বলেন, ঐ শিশু ও এই বৃদ্ধটি একই ব্যক্তি।

    কেউ কেউ এভাবেও বলে, আল্লাহ মালাকুল মাউতকে জিজ্ঞাসা করলেন, বনী আদমের রূহ কবজ করতে তোমার কখনো কান্না আসেনি? মালাকুল মাউত উত্তরে বললেন, হে আমার রব! বনী আদমের রূহ কবজ করতে গিয়ে আমি একবার কেঁদেছি, একবার হেসেছি এবং একবার ভীত-সন্ত্রস্ত হয়েছি। …জনমানবশূন্য মরুভূমিতে সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর মায়ের জান কবজ করতে গিয়ে শিশুটির কান্না ও অসহায়ত্ব দেখে কেঁদেছি। আর ভয় পেয়েছি এক আলেমের জান কবজ করতে গিয়ে। আমি যখন তার জান কবজ করতে যাই তো তার কামরা থেকে এক নূর বের হয় তা দেখে আমি ভয় পেয়ে যাই। আল্লাহ বললেন, ঐ আলেমই হল মরুভূমির ঐ শিশু; তাকে আমি লালন-পালন করেছি।

    (মালাকুল মাউত বলেন,) আর এক ব্যক্তি মুচির কাছে তার জুতা দিয়ে বলল, এটা এমনভাবে সেলাই করে দাও যাতে এক বছর পরতে পারি। সে ঐ জুতা পায়ে দেয়ার পূর্বেই তার জান কবজ করেছি আর হেসেছি- কয়েক মুহূর্ত তার হায়াত নেই আর সে এক বছরের জন্য জুতা ঠিক করছে।

    যাইহোক এগুলো সবই ভিত্তিহীন কিসসা-কাহিনী। কোনো নির্ভরযোগ্য সনদে তা বর্ণিত হয়নি।

    ইতিপূর্বে এক সংখ্যায় আমরা শাদ্দাদের বেহেশত কেন্দ্রিক কিসসা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম- শাদ্দাদের বেহেশতের কাহিনীর কোনো ভিত্তি নেই, এর কোনো অস্তিত্ব নেই। (আলইসরাঈলিয়্যাত ওয়াল মাউযূআত ফী কুতুবিত তাফসীর ২৮২-২৮৪)। তেমনি এই ঘটনায়ও আমরা শাদ্দাদের বেহেশতের আলোচনা দেখতে পাচ্ছি। সুতরাং তা কখনোই সত্য হতে পারে না।

    এছাড়াও এ ঘটনায় আমরা আরেকটি বিষয় দেখতে পাচ্ছি, শাদ্দাদের মত নাফরমানের জান কবজ করতে মালাকুল মাউতের কষ্ট হচ্ছে; সে তার আল্লাহদ্রোহিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছতে চাচ্ছে এবং আল্লাহদ্রোহিতায় লিপ্ত রয়েছে অথচ মালাকুল মাউত তার জান কবজ করতে কষ্ট পাচ্ছেন। এটি এ ঘটনা বাতিল হওয়ার আরেকটি প্রমাণ।

    আল্লাহ আমাদের এ জাতীয় অলীক কিসসা-কাহিনী বলা ও বিশ্বাস করা থেকে হেফাজত করুন।

    আকাশে হোটেলএয়ারবাস ৩৮০ প্রথমবারের মতো জাপানে নিয়ে এলো ্যানা

    অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ কোঃ জাপানের প্রথম বিমান সংস্থা হিসেবে এয়ারবাস এ৩৮০’র ভেতর “আকাশে হোটেল” পরিচালনা করার পরিকল্পনা করেছে।

    বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্যিক বিমান নারিতা-হনলুলু রুটে ২০১৯ সালের বসন্তে বিমানটি চালু করবে বলে কোম্পানি মার্চের ৬ তারিখ জানায়।

    বিমানটির নির্মাতা ইউরোপিয়ান-ভিত্তিক এয়ারবাস স্যাস এবং বিমানটিতে ৫০০’র বেশি আসন রয়েছে।

    অ‌্যানা এ৮৮০’র শরীরে সামুদ্রিক কচ্ছপের রং দেয়া হয়েছে। হাওয়াইয়ান পৌরানিক অনুসারেই এটিকে কাছিমের রং দেয়া হয়েছে।

    রাশিয়া জাপান ও দ. কোরিয়া উদ্বিগ্ন উ. কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় টোকিও স্টকে পতন

    আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জাপান সাগরে পর পর ৪টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির এ কর্মকাÐের ফলে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার চলমান যৌথ সামরিক মহড়ার জবাব হিসেবে এ সিরিজ পরীক্ষা চালানো হয়েছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। এদিকে জাপান নিয়ন্ত্রিত পানি সীমায় উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় এরইমধ্যে টোকিও স্টকে পতন দেখা গেছে। ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর জাপানি ইয়েনের মানের উল্লম্ফন ঘটায় শেয়ারবাজারে পতন ঘটেছে। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উেক্ষপের পর জাপানের শেয়ারবাজার বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। টয়ো সিকিউরিটিজের কৌঁসুলি হিরোআকি হিওয়াদা জানান, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এরইমধ্যে ইয়েনের মান শক্তি অর্জন করেছে। ভ‚রাজনৈতিক ঝুঁকি বৃদ্ধির আশঙ্কায় লেনদেন থেকে বিরত থাকছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে এ পরিস্থিতি অতীতের মতোই দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলেই মনে করছেন হিওয়াদা। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দেশটির পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে বলেন, এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আরোপিত নিষেধাজ্ঞার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এটা খুবই ভয়াবহ একটি উদ্যোগ। জাপান এ পরীক্ষার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ওয়াং কো-আন এ পরীক্ষাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সরাসরি হুমকি প্রদর্শন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি তিনি চীনের তীব্র বিরোধিতা সত্তে¡ও মার্কিন সহায়তায় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা (থাড) স্থাপন প্রক্রিয়া দ্রæত এগিয়ে নিতে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। উত্তর কোরিয়ার সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় উদ্বিগ্ন ক্রেমলিনও। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, আমরা ভীষণ মাত্রায় উদ্বিগ্ন। উত্তর কোরিয়ার এ পরীক্ষার ফলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হয়ে উত্তেজনা ছড়াবে। ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনার প্রেক্ষিতে তিনি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সংযম পালনের আহŸান জানান। এদিকে উত্তর কোরিয়ার সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার প্রেক্ষিতে মুখ খুলেছে চীনও। দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জেন শুয়াং নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সহনশীল আচরণ করার জন্য আহŸান জানিয়েছেন। স্থানীয় সময় গত সোমবার সকালে উত্তর কোরিয়া-চীন সীমান্তের নিকটবর্তী তংচ্যাং-রি অঞ্চল থেকে জাপান সাগরে পর পর ৪টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়। দেশটির মতে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভ‚খÐে আঘাত হানতে সক্ষম। পরীক্ষাকৃত ক্ষেপণাস্ত্রের ৩টি প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকায় (ইইজেড) গিয়ে পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জাপান। চলমান দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র যৌথ সামরিক মহড়াকে নিজেদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে উত্তর কোরিয়া। সম্প্রতি কিম জং-উন প্রশাসন চলমান সামরিক মহড়ার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে। মহড়া বন্ধ না হলে কড়া জবাব দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এর পর পরই দেশটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সিরিজ পরীক্ষা চালাল। খবরে বলা হয়, টোকিও স্টকে লেনদেনে বেঞ্চমার্ক নিক্কেই ২২৫ সূচকের দশমিক ৫২ শতাংশ পতন ঘটেছে। সূচকটি ১০০ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট হারিয়ে ১৯ হাজার ৩৬৮ দশমিক ৫০তে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে টপিক্স ইনডেক্স অব অল ফার্স্ট সেকশন ইস্যু হ্রাস পেয়েছে দশমিক ৩৫ শতাংশ। সূচক ৫ দশমিক ৪০ পয়েন্ট হারিয়ে ১ হাজার ৫৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। রয়টার্স, বিবিসি, এএফপি।

    জাপান সাগরে সিরিজ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ উ. কোরিয়ার 

    জাপান সাগরে একযোগে চারটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সকাল ৭টা ৩৬ মিনিটে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার একজন সেনা কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জানিয়েছেন, এসব ক্ষেপণাস্ত্রের তিনটি প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা (ইইজেড)-এর মধ্যে গিয়ে পড়েছে। এ ঘটনাকে উত্তর কোরীয় হুমকির একটা অধ্যায় হিসেবে বর্ণনা করেন শিনজো আবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক সূত্র জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার চীন সীমান্তের নিকটবর্তী তংচ্যাং-রি অঞ্চল থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইওনহ্যাপ জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সম্ভবত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র; যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখÐে আঘাত হানতে সক্ষম। কোরীয় উপদ্বীপে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার চলমান যৌথ সামরিক মহড়া বন্ধ করা না হলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হবে বলে গত শুক্রবার হুঁশিয়ার করে দিয়েছিল পিয়ংইয়ং। প্রতি বছর ওয়াশিংটন ও সিউলের মধ্যকার এ মহড়াকে উত্তর কোরিয়া তার ওপর হামলার প্রস্তুতি বলে মনে করে। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারিতে সর্বশেষ ব্যালাস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। পুকগুকসং-২ নামের ওই ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন-এটি দেখাশোনা করছিলেন। প্রতিবেশী দেশগুলোর কথা বিবেচনায় রেখে এটিকে উঁচু অ্যাঙ্গেলে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। সা¤প্রতিক সময়ে উত্তর কোরিয়া নিজের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটির নেতা কিম জং-উন দাবি করেন, তার দেশ পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো কাছাকাছি পর্যায়ে রয়েছে। পিয়ং ইয়ং-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখÐে আঘাত হানতে সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে; যে কোনও সময় এর পরীক্ষা চালানো হতে পারে। তবে ৩ ফেব্রæয়ারি ২০১৭ শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়া সফরকালে পিয়ং ইয়ং-এর হুমকি নিয়ে কথা বলেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কিংবা আমাদের মিত্র দেশগুলোর ওপর যে কোনও হামলা পরাস্ত করা হবে। যে কোনও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে এমনভাবে জবাব দেওয়া হবে যেন তা কার্যকরী ও অপ্রতিরোধ্য হয়।’ ১৯৫৩ সালে সাময়িক অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরও এক রকম প্রাযুক্তিক সক্ষমতাজনিত যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া। জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী পরমাণু ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে উ. কোরিয়া। তবে দক্ষিণে থাড নামে পরিচিত উচ্চ প্রযুক্তির মিসাইল প্রতিরোধ ব্যবস্থা মোতায়েন নিয়ে গত বছরের জুলাইয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চুক্তি হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে দেশটি। দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চতর ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ঘোষণার বিপরীতে ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা শুরু করে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার বিপরীতে একে তারা যোগ্য জবাব বলে মনে করে। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই গত বছর দুটি পারমাণবিক পরীক্ষার পাশাপাশি ২০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একটি স্থায়ী ঘাঁটি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া নিয়মিত যৌথ মহড়া দিয়ে থাকে। একে উস্কানিমূলক বলে অভিযোগ করে আসছে পিয়ং ইয়ং।

    ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ: রঙিন ভার্সনে সেই ভাষণ

    ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ। সুদীর্ঘকালের আপসহীন আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৯৭১ সালের আজকের দিনে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন।
    এ দিন লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে জাতির অবিসংবাদিত মহান নেতা বজ্রকন্ঠে ঘোষণা করেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
    ৭ মার্চ তাঁর এই উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিক-নির্দেশনা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
    বঙ্গবন্ধুর এই বজ্রনিনাদে আসন্ন মহামুক্তির আনন্দে বাঙালি জাতি উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। যুগ যুগ ধরে শোষিত-বঞ্চিত বাঙালি ইস্পাত-কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত মুক্তির লক্ষে।
    রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক এই দিনটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি-সংবাদপত্রসমূহ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদ প্রচার করছে।
    দিনটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

    জাপানে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৯

    জাপানে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নয়জন আরোহীর সকলে প্রাণ হারিয়েছে। রবিবার একটি পাহাড়ে উদ্ধার মহড়া চলাকালে এটি বিধ্বস্ত হয়।
    সোমবার পুলিশের নাগানো পুলিশ মুখপাত্র বলেন, নাগানোর মধ্যাঞ্চলে বিধ্বস্ত এ হেলিকপ্টারের ধ্বংস্তুপের ভেতর থেকে ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পাইলটসহ অপর তিনজনের মৃত্যুর খবর রোববার নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার থেকে বরফে ঢাকা একটি পাহাড়ের পাশে দুর্ঘটনাস্থল চিহ্নিত করার পর তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হলো।
    খারাপ আবহাওয়ার কারণে সোমবার পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান স্থগিত রাখা হয়। জাপানের সরকারি সম্প্রচার কেন্দ্র এনএইচকে জানায়, সরকার দুর্ঘটনাস্থলে তদন্ত কর্মকর্তাদের পাঠাবেন।

    ৮১ বছরের বৃদ্ধা তৈরি করলেন আইফোন অ্যাপ

     

    বয়স কোন বিষয় না, ইচ্ছে আর মেধার পরিচর্যা করার মনমানসিকতা থাকেলে সব কিছু করে দেখানো যে সম্ভব তা প্রমাণ করে দেখালেন এই জাপানি নারী। ৮১ বছর বয়সে অর্থাৎ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও অভিজাত ফোন আইফোনের অ্যাপ তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
    জাপানি এ বৃদ্ধের নাম মাসাকো ওয়াকামিয়া। তার গল্পটা দারুণ। ৬০ বছর বয়সে কম্পিউটার চালাতে শিখেন, আশ্চর্য হলেও ঘটনাটি সত্য। এই বয়সে কম্পিউটার শেখার পর আর বসে থাকেননি তিনি। সেকেলে মানুষরা তরুণদের চেয়ে প্রযুক্তিতে পিছিয়ে আছে ধারণা পাল্টে দিলেন মাসাকো।
    তার অ্যাপ বানানোর খবর বেশ প্রচারিত হচ্ছে গণমাধ্যমগুলোতে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে আকর্ষণীয় খবর হয়ে উঠেছে এটি।
    মাসাকো ওয়াকামিয়া ৪৩ বছর জাপানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছেন। অনেক পরে এসে তিনি কম্পিউটারের ব্যবহার শিখেছেন। আর সেই শিক্ষাকে কাজেও লাগিয়ে গেলেন। বিশ্বের সবচে অভিজাত মুঠোফোন আইফোনের নিজেই তৈরি করলেন একটি অ্যাপ।

    গত সপ্তাহে ‘হিনাদান’ নামের ওই অ্যাপটির উদ্বোধন করা হয়। জাপানের গার্লস ডে উৎসবে তিনি উদ্বোধন করেন এই অ্যাপ। মানুষ কীভাবে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পুতুল সাজাবেন- তা শেখাবে হিনাদান অ্যাপ।
    উল্লেখ্য, ‘হিনা’ শব্দের অর্থ পুতুল। আর ‘দান’ মানে স্তর। আইফোন ডিসপ্লের চারটি স্তরে ১২টি পুতুল সাজানোর পদ্ধতি শেখাবে হিনদান। ঠিকঠাক মতো সাজাতে পারলেই এই গেম শেষ হবে।
    এই বয়সে এসেও বসে নেই তিনি। ওয়াকামিয়ার একটি ব্লগও রয়েছে, যেখানে তিনি ভ্রমন এবং শিল্পকর্ম তুলে ধরেন। তার সঙ্গে যোগ করেছেন ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড।

    প্রযুক্তি : প্রযুক্তির অপব্যবহার

    গত মাসের শেষের দিকে বিটিআরসি জানিয়েছে যে ‘বাংলাদেশে ইন্টারনেট-পর্নোগ্রাফি ও আপত্তিকর কন্টেন্ট প্রকাশ বন্ধের প্রক্রিয়ার শুরুতে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ৫৬০ টি সাইট বন্ধ করেছে।’

    এটা একটা ইতিবাচক পদক্ষেপ। ফাঁক ফোকর কতটুকু বন্ধ করা যাবে বা করা হবে সে আলোচনায় না গিয়ে আপাতত এই পদক্ষেপটিকে সাধুবাদযোগ্য বলা প্রয়োজন। প্রযুক্তির নামে এখন যে এক প্রকারের ‘হিস্টিরিয়াগ্রস্ততা’- এ অবস্থায় এ পদক্ষেপও কম নয়! এটা প্রমাণ করছে পরিস্থিতি আসলেই কত ভয়াবহ।

    একটি দৈনিকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বেসরকারী সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক জরিপের তথ্য অনুযায়ী ঢাকার স্কুলগামী শিশুদের প্রায় ৭৭ শতাংশ নিয়মিত পর্নোগ্রাফি দেখছে। (দৈনিক নয়াদিগন্ত, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬, পৃ. ১১)

    এই প্রজন্মের বর্তমান ও ভবিষ্যত নানা দিক থেকে চরম ঝুঁকিগ্রস্ত হয়ে পড়ার কারণেই হয়তো বাধ্য হয়ে এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। যে কারণেই নেয়া হোক, এখন এই বোধোদয় প্রয়োজন যে, মানুষের জীবনে সংযমের কোনো বিকল্প নেই। সুস্থ জীবন-যাপনের জন্য এ এক বিকল্পহীন ব্যাপার। মনের সকল ইচ্ছা পূরণ করা, এককথায় প্রবৃত্তিপরায়ণতা মানুষের সুস্থতা ও সুখী-সুন্দর জীবনের জন্যই হুমকি। আর এর জন্য যেমন দরকার ব্যক্তিগত চেতনা তেমনি দরকার সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ।

    এই চেতনাও প্রয়োজন যে, যৌনতা জীবনের একটি অংশমাত্র; এটিই জীবন নয়। আর জীবনের এই অংশেও অতি প্রয়োজন সংযম রক্ষা । কারণ এক্ষেত্রের স্বেচ্ছাচারও একজন মানুষের শেষ হয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট।

    ইসলাম এই সীমা-সরহদই স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, যা রক্ষা করা মানুষের নিজের স্বার্থেই প্রয়োজন। এ কারণে যে বন্ধুরা জীবন-যাপনে ইসলামের বিধি-বিধান সম্পর্কে অমনোযোগী এবং যারা ইসলামের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের বিরোধী তাদের জন্য বেদনাবোধ হয় বৈকি।

    সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল অনেক বড় আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘৮০ থেকে ৭০ শতাংশ পারলেও বড় কাজ হবে।’ এই আগ্রহটা ইতিবাচক। সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থাই গ্রহণ করা উচিত। সদিচ্ছা ও নিষ্ঠা থাকলে কিছু সফলতাও যে আসবে না, তা নয়। কিন্তু একইসাথে এই কথাটিও মনে রাখলে ভালো হবে যে, এটি খুবই সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক কিছু সুফল পাওয়ার মতো একটি ব্যবস্থা। গোটা সমাজ-ব্যবস্থা যখন এক ধারায় চলে তখন দু’এক জায়গায় কিছু বিধি নিষেধ বিশেষ কোনো পরিবর্তন আনতে পারে না।

    এখানেই বড় পার্থক্য সমাজ-সংস্কারের ইসলামী ব্যবস্থা ও তথাকথিত প্রগতিবাদী ব্যবস্থায়। ইসলামেও দৃষ্টির সংযমের সুস্পষ্ট বিধান আছে। কিন্তু ইসলাম যখন দৃষ্টির সংযমের বিধান দিয়েছে তখন একটি মাত্র বিচ্ছিন্ন বিধান দেয়নি, ঐ ব্যবস্থাটাও দিয়েছে, যা এই সংযমের পক্ষে সহায়ক। ইসলামের পর্দা-ব্যবস্থায় সতর থেকে শুরু করে নারী-পুরুষের সম্পর্ক ও লেবাস-পোষাক পর্যন্ত নানা বিষয়ে এবং ব্যক্তি ও পরিবার থেকে শুরু করে শিক্ষা-দীক্ষা,বিচরণ-উপার্জন, সংস্কৃতি-বিনোদন, পর্ব-উৎসব প্রভৃতি নানা ক্ষেত্রে বিস্তৃত এক ব্যবস্থা, যা দৃষ্টির সংযম থেকে শুরু করে চারিত্রিক শুদ্ধতা রক্ষা পর্যন্ত পবিত্রতার সব কিছুকেই সহজ করে তোলে। আর এই ব্যবস্থার সাথে রয়েছে ইসলামের খোদাভীতি, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য, আখিরাতে জবাবদিহিতার অনুভূতির মতো গভীর চেতনা ও বিশ্বাসের পৃষ্ঠপোষকতা, যা একজন মানুষকে সংযমের বিধান পালনে স্বতঃস্ফূর্ততা দান করে। সারকথা এই যে, ইসলামে একেকটি বিধানের পেছনে একেকটি ব্যবস্থা কাজ করে তেমনি এর প্রতিটি বিধান ইসলামী চেতনা ও বিশ্বাসের গভীর পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে। এটা তার সাফল্যের এক বড় কারণ। আর এ কারণে বর্তমান প্রতিকূল স্রোতেও ব্যক্তিগত পর্যায়ে এর সাফল্যের উদাহরণ একেবারে কম নয়।

    পক্ষান্তরে এখনকার প্রগতিবাদী সমাজে অপারগতাবশত যে সকল সংযমের বিধান বা ব্যবস্থা কখনো কখনো আসছে এগুলো সাধারণত সাফল্যের মুখ দেখছে না। কারণ, এসব বিধান ও ব্যবস্থা ‘বিচ্ছিন্ন’ ও ‘আরোপিত’। অর্থাৎ বিশেষ কোনো ক্ষেত্রের ঐ বিধানটি এসংক্রান্ত ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, সাংঘর্ষিক। যেমন, আলোচ্য বিষয়টিই ধরুন। এখানে বিশেষ একটি ক্ষেত্রে একটি বিধি-নিষেধ আরোপিত হলেও নারী-পুরুষের সম্পর্ক, মেলা-মেশা, লেবাস-পোষাক ও অন্যান্য ক্ষেত্রের প্রচলিত ধারাটা ঐ ব্যবস্থার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। বরং বলা যায়, বিদ্যমান পরিবেশ-পরিস্থিতির একটি বড় অংশ দৃষ্টির স্বেচ্ছাচারের অনুকূল ও প্রেরণাদানকারী। এ অবস্থায় এ ধরনের বিচ্ছিন্ন কোনো পদক্ষেপ কীভাবে সফল হতে পারে? তাছাড়া এই বিধি-নিষেধ স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রহণ করার মতো শক্তিশালী কোনো চেতনা ও প্রেরণাও তো কার্যকর নেই। বরং নানাভাবে ঈমান ও তাকওয়ার চেতনাকেই দুর্বল ও বিলুপ্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ফলে এইসকল বিধি-ব্যবস্থা হয়ে যাচ্ছে অনেকটাই ‘আরোপিত’ প্রকৃতির। কাজেই ফাঁক ফোকর খোঁজার ব্যাপারটা অনেক বড় ও ব্যাপকভাবেই এসে যাচ্ছে। এ কারণে সত্যিকার অর্থেই জাতি ও সমাজকে অশ্লীলতা ও তার কুফল থেকে রক্ষা করতে হলে ঈমান ও তাকওয়া;বিশ্বাস ও খোদাভীতির চর্চার কোনো বিকল্প নেই। চিন্তা-চেতনায়, বিশ্বাস ও কর্মে ইসলামী শিক্ষা ও জীবনধারা অনুসরণের দাওয়াতই আল্লাহর ইচ্ছায়- ব্যক্তি ও সমাজকে আত্মসংযমের পথে নিয়ে আসতে পারে। তখন দায়িত্বশীলদের পক্ষ হতে অন্যায়-অপরাধ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ-আয়োজনগুলোও সফলতার মুখ দেখবে।

    এই সংযম ও নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই সত্যিকারের প্রগতি ও চিন্তার মুক্তির পরিপন্থী নয়; বরং তার সহায়ক ও পৃষ্ঠপোষক। দৃষ্টির সংযম থেকে শুরু করে চরিত্র ও নৈতিকতার শুদ্ধি পর্যন্ত গোটা ব্যবস্থাটা ব্যক্তি ও সমাজের সুস্থতার জন্যই প্রয়োজন। সমাজ যদি সুস্থ থাকে তবেই না প্রগতি ও প্রযুক্তি। অসুস্থ মৃতপ্রায় সমাজে প্রযুক্তি ও প্রগতি কী কাজে আসবে?

    Untitled Post

    Posted by admin on February 27
    Posted in Uncategorized 

    আল্লার রহমতের আশা : পরকালের সফরে মুমিনের সম্বল
    শিববীর আহমদ

    দুদিনের এ পার্থিব জীবনে আল্লাহ তাআলার সর্বাধিক আনুগত্য ও ইবাদত করে গেছেন যিনি, তিনি যে আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এ নিয়ে কি আর কোনো দ্বিমত আছে! তাঁর আমল-ইবাদত যে সকল মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ- তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে! তিনিও যদি বলেন, আমার আমল আমাকে নাজাত দিতে পারবে না; তাহলে আমরা নিজেদের ব্যাপারে কেমন এক নিরাশায় যেন আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি! সৃষ্টিকুলের সেরা মানবকাফেলা আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালামেরও যিনি সর্দার, তিনিই যদি নিজ আমল দিয়ে জান্নাতে যেতে না পারেন, তাহলে আমাদের কী দশা হবে! ভাবতেই কেমন শরীর কেঁপে ওঠে! অথচ এটাই বাস্তবতা। প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কণ্ঠেই শুনুন-
    لَنْ يُدْخِلَ أَحَدًا عَمَلُهُ الْجَنَّةَ
    নিজ আমল কাউকেই জান্নাতে নিয়ে যেতে পারবে না!
    সাহাবায়ে কেরামের সচকিত প্রশ্ন : ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাকেও নয়?! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন :
    لاَ، وَلاَ أَنَا إِلاَّ أَنْ يَتَغَمَّدَنِي اللَّهُ بِفَضْلٍ وَرَحْمَةٍ.
    না, আমাকেও নয়, যদি না আল্লাহ দয়া ও অনুগ্রহ দিয়ে আমাকে জড়িয়ে নেন।
    নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ কথাটুকু থেকেই আমরা আশায় বুক বাঁধতে পারি। যে রাহমানুর রাহীমের দয়ায় তিনি জান্নাতে প্রবেশ করবেন, দয়াময় সেই সত্তার নিকট তো রহমতের আশা আমরাও করতে পারি। হাদীসের শেষাংশটুকু লক্ষ করুন-
    فَسَدِّدُوا وَقَارِبُوا، وَلاَ يَتَمَنَّيَنَّ أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ إِمَّا مُحْسِنًا فَلَعَلَّهُ أَنْ يَزْدَادَ خَيْرًا وَإِمَّا مُسِيئًا فَلَعَلَّهُ أَنْ يَسْتَعْتِبَ.
    তাই তোমরা ইবাদতে সঠিক পন্থা অবলম্বন করো এবং ইবাদত নিয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে বেঁচে থেকো। আর তোমাদের কেউ যেন মৃত্যুর কামনা না করে। সে যদি সৎকর্মপরায়ণ হয় তাহলে সে হয়তো কল্যাণের পথে আরও এগিয়ে যাবে, আর যদি পাপীও হয় তাহলে হতে পারে, সে পাপ থেকে তওবা করে আল্লাহর প্রিয়পাত্র হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৬৭৩
    আমাদের আশাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে এই একটি মাত্র হাদীসই যথেষ্ট, যেখানে বলা হচ্ছে- ১. নিজের যোগ্যতা ও আমল নয়, বরং আল্লাহ পাকের দয়া ও অনুগ্রহই হল সকল সফলতা ও মুক্তির মূল; ২. ইবাদত করতে গিয়েও নিজের সাধ্য ও সক্ষমতার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে, এড়িয়ে চলতে হবে সাধ্যাতিরিক্ত সকল পদক্ষেপ; ৩. মৃত্যু কামনা করতে পারবে না কেউ। ভালো হলেও নয়, খারাপ হলেও নয়। আর ভালো-মন্দ মিলিয়েই তো মানুষ। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের আশা দিয়েছেন- হায়াত দীর্ঘ হলে ভালো কাজ আরও বাড়তে পারে, আর মন্দ কাজ থেকে ফিরে আসার সৌভাগ্যও মিলে যেতে পারে।
    এ জীবনে টিকে থাকতে হলেও আশা অপরিহার্য। আশার পিঠে চড়েই মানুষ বিপদের পর বিপদ মাড়িয়ে যায়। সারা জীবনের সঞ্চয়ও যখন আকস্মিকভাবে হারিয়ে যায়, বাহ্যত সামনে এগিয়ে যাওয়ার সব অবলম্বনও যখন ‘নাই’ হয়ে যায়, তখনো মানুষ বুকভরা আশা নিয়ে দাঁড়ায়। কষ্ট করে হলেও সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে এবং সেই স্বপ্নের পথে চলার সাহস সঞ্চার করে। একজন সুস্থ মানুষ, যত বিপদেই সে পড়ুক, তা পাশ কাটিয়ে সামনে চলার স্বপ্ন সে দেখবে, আশায় ভর করে সে বিপদ থেকে উঠে দাঁড়াবে-এটাই স্বাভাবিকতা। দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী এ জীবন নিয়ে সুন্দর স্বপ্ন দেখা- এক্ষেত্রে ধনী-গরীব সবাই সমান। একজন কোটিপতি যেমন নিজের ও পরিবার-পরিজনের সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে, মৃত্যু অনিবার্য জেনেও দুনিয়ার এ জীবনে কামনা করে আরও সুখের, আরও সম্পদের, আরও সম্মানের, তেমনি ‘দিন এনে দিন খায়’ এমন একজন বিত্তহীন মানুষও তার মতো করে স্বপ্ন দেখে আরেকটু সুখের, সম্পদের ও সম্মানের, আরেকটু আরামদায়ক জীবনের। এই স্বপ্ন এই আশাই মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই যে কথায় বলে- জীবন থেমে থাকে না! জীবন চলবেই। আর আশাই হল সেই চলার চালিকাশক্তি। বারবার আশাহত হতে হতে কারও আশা কখনো দুর্বল হতে পারে, একসময়ের রঙ্গিন জীবনের পরিবর্তে এখন সে সাদামাটা ভবিষ্যতের আশা করতে পারে। কিন্তু আশা থাকবেই। এটাই বাস্তব। সামনে চলার জন্য এর বিকল্প নেই।
    এ তো পার্থিব জীবন নিয়ে কথা। আর পরকালীন জীবনে? সেখানেও আল্লাহর রহমতের আশাই সম্বল। পরকালীন জীবন যেন সমৃদ্ধ হয়, সুখকর ও আনন্দময় হয়, সেজন্যও আমলের সাথে সাথে আল্লাহর রহমতের আশাই আমাদের পাথেয়। পবিত্র কুরআনে কারীমে ও হাদীস শরীফে আমাদের জন্যে রয়েছে আশাজাগানিয়া অনেক বাণী। যে হাদীসটি আমরা উপরে উল্লেখ করেছি সেটিই আবার লক্ষ করুন- সুখী-সমৃদ্ধ পরকাল নির্মাণে কীভাবে আমাদের আশাকে সেখানে জাগিয়ে তোলা হয়েছে!
    আশার উপাদান যে কত ধরনের- তা গুনে গুনে হিসাব করা সহজ নয়। কয়েকটি উদাহরণ লক্ষ করুন-
    আল্লাহ পাক রাহমানুর রাহীম। তিনি ক্ষমাশীল দয়ালু। কিন্তু তিনি কাকে ক্ষমা করবেন? কতটুকু অপরাধ ক্ষমা করবেন? কতবার ক্ষমা করবেন? কতক্ষণ ক্ষমা করবেন? এসবের উত্তরে এক কথায় বলা যায়- অপরাধ যত বড়ই হোক, অপরাধী যদি তওবা করে এবং আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাহলে তিনি ক্ষমা করে দেবেন। এক্ষেত্রে কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। কোনো নির্দিষ্ট মাত্রা নেই। শর্ত একটাই- আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা। তাহলেই তিনি ক্ষমা করবেন। অপরাধের ধরন যত জঘন্যই হোক, পরিমাণ যত বেশিই হোক- এগুলো কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। হাদীস শরীফে বর্ণিত একটি ঘটনা বলি- বনি ইসরাইলের এক ব্যক্তি নিরানবক্ষইজন মানুষকে হত্যা করেছিল। এরপর সে তখনকার সেরা আলেমের সন্ধান করল। লোকেরা তাকে এক পাদ্রী দেখিয়ে দিল। পাদ্রীর কাছে গিয়ে সে জানাল- সে নিরানবক্ষইজন মানুষ হত্যা করে এসেছে। তার জন্য কি এখন তওবার কোনো সুযোগ আছে? পাদ্রী বলল : না, এমন পাপের তওবার কোনো সুযোগ নেই। লোকটি তখন পাদ্রীকেও হত্যা করল এবং খুনের সংখ্যা একশ পূর্ণ করল। এরপর সে আরেকজন সেরা আলেমের সন্ধান করল। লোকেরা তাকে আরেকজন আলেম দেখিয়ে দিল। তার কাছে গিয়ে সে জানাল- সে একশজন মানুষ হত্যা করে এসেছে। এখন কি তার জন্যে তওবা করার সুযোগ আছে? আলেম বললেন : কেন নয়, কে তার তওবাকে বাধা দিয়ে রাখতে পারে! এরপর তিনি তাকে বললেন : ‘তুমি এ এলাকা ছেড়ে অমুক অঞ্চলে চলে যাও। সেখানে কিছু মানুষ আছে, যারা আল্লাহর ইবাদত করে। তাদের সঙ্গে তুমিও ইবাদত শুরু করে দাও। তোমার এ এলাকায় তুমি আর ফিরে এসো না। জায়গাটি ভালো নয়।’ কথামতো সে চলতে শুরু করল। এ আলেমের নির্দেশিত অঞ্চলটি এখন তার গন্তব্য। কিন্তু অর্ধেক পথ যখন সে অতিক্রম করল, তখনই তার মৃত্যু হল। মৃত্যুর পর শুরু হল আরেক দৃশ্য। তাকে নেয়ার জন্যে রহমতের ফেরেশতাদলও উপস্থিত, আজাবের ফেরেশতারাও উপস্থিত। তাকে নিয়ে দুই দল ফেরেশতার টানাটানি। রহমতের ফেরেশতাদলের বক্তব্য- সে তো তওবা করে আল্লাহর অভিমুখী হয়েই এখানে এসেছে। আর আজাবের ফেরেশতারা যুক্তি দিল- সে তো কখনোই কোনো ভালো কাজ করেনি। দুই দল ফেরেশতার বিবাদ মেটাতে আল্লাহ মানুষরূপে আরেক ফেরেশতা পাঠালেন। সবাই তাকে ফয়সালা করার ভার দিল। এ ফেরেশতা বললেন : তোমরা মেপে দেখ, সে যে অঞ্চলের কাছাকাছি হবে সেখানকার বলেই গণ্য হবে। এদিকে আল্লাহর পক্ষ থেকে অঞ্চল দুটিকে আদেশ করা হল- তার নিজ অঞ্চলটি যেন দূরে সরে যায় আর কাঙ্ক্ষিত অঞ্চলটি যেন কাছে চলে আসে। মাপার পর দেখা গেল, সে তার গন্তব্যের দিকে আধা হাত এগিয়ে আছে। তখন রহমতের ফেরেশতারা তাকে নিয়ে গেল। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৪৭০; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৭৬৬
    এমন রহমতের মালিক যে সত্তা, তাঁর কাছে তো আশা করাই যায়। কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা সবচেয়ে বড় কবিরা গোনাহগুলোর একটি। পবিত্র কুরআনের ভাষ্য অনুসারে, একজন মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা যেন গোটা মানবজাতিকেই হত্যা করা। অন্যায় হত্যা এতটাই জঘন্য! অথচ একে একে একশ জন মানুষকে হত্যা করার পর কৃত তওবাকে তিনি গ্রহণ করে নিলেন!
    কুরআনে কারীমে কত রকম পাপের শাস্তির কথা বলা হয়েছে! কোথাও শাস্তির পরিমাণ নির্ধারিত! আবার কোথাও শুধু বলা হয়েছে ‘মহাশাস্তি’র কথা, কিংবা ‘যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি’র কথা। শাস্তির কথা বলে বলেও আবার রহমতের কথা বলেছেন। আশার বাণী শুনিয়েছেন। অপরাধ যত জঘন্যই হোক, খাঁটি মনে তওবা করলে তা কবুল করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন। এই যে দেখুন, খ্রিস্টানরা কখনো হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে আল্লাহর ছেলে বলে থাকে, কখনো বা ‘খোদা’ই বলে বসে। তাদের এই ধৃষ্টতা কুরআনেই বর্ণিত হয়েছে। সেই বর্ণনার পর আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে স্বীয় রহমতের দিকে আহক্ষান করেছেন এভাবে-
    اَفَلَا یَتُوْبُوْنَ اِلَی اللهِ وَ یَسْتَغْفِرُوْنَهٗ  وَ اللهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ.
    তারা কি আল্লাহর কাছে তওবা করবে না এবং তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে না? আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু। -সূরা মায়িদা (৫) : ৭৪
    ফেরাউন তো নিজেকে খোদা বলেই দাবি করে বসেছিল! তার ঘটনাও পবিত্র কুরআনের অনেক স্থানে বর্ণিত হয়েছে। অথচ এই ভ- স্বঘোষিত খোদাকেও পরম করুণাময় আল্লাহ রহমতের দিকে ডেকেছেন। বিশেষ হেদায়েত ও নির্দেশনা দিয়ে তিনি তাঁর নবী হযরত মূসা আলাইহিস সালামকে এ ‘নকল’ খোদার কাছে পাঠিয়েছেন। পবিত্র কুরআনের একটি সংক্ষিপ্ত উদ্ধৃতি-
    اِذْهَبْ اِلٰی فِرْعَوْنَ اِنَّهٗ طَغٰی، فَقُلْ هَلْ لَّكَ اِلٰۤی اَنْ تَزَكّٰی، وَ اَهْدِیَكَ اِلٰی رَبِّكَ فَتَخْشٰی، فَاَرٰىهُ الْاٰیَةَ الْكُبْرٰی، فَكَذَّبَ وَعَصٰی، ثُمَّ اَدْبَرَ یَسْعٰی، فَحَشَرَ فَنَادٰی، فَقَالَ اَنَا رَبُّكُمُ الْاَعْلٰی.
    ফেরাউনের নিকট যাও, সে তো সীমালঙ্ঘন করেছে। এবং বলো, তোমার কি আগ্রহ আছে যে তুমি পবিত্র হও আর আমি তোমাকে তোমার প্রতিপালকের দিকে পথপ্রদর্শন করি, যেন তুমি তাকে ভয় কর? অতপর সে তাকে মহানিদর্শন দেখাল। কিন্তু সে অস্বীকার করল এবং অবাধ্য হল। এরপর সে পেছনে ফিরে প্রতিবিধানে সচেষ্ট হল। সকলকে সমবেত করে উচ্চস্বরে সে ঘোষণা করে বলল : আমিই তোমাদের সর্বোচ্চ প্রতিপালক! -সূরা নাযিয়াত (৭৯) : ১৭-২৪
    মিথ্যা প্রভুত্বের দাবিদার যে ব্যক্তি, তার জন্যও উন্মোচিত আসল প্রভুর রহমতের দুয়ার! এমন প্রভুর কাছে তো আশা করাই যায়। কত সুস্পষ্ট তাঁর ঘোষণা-
    قُلْ یٰعِبَادِیَ الَّذِیْنَ اَسْرَفُوْا عَلٰۤی اَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ  اِنَّ اللهَ یَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِیْعًا  اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ.
    হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ! আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না। সন্দেহ নেই, আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয়ই তিনিই ক্ষমাশীল, দয়ালু। -সূরা যুমার (৩৯) : ৫৩
    আল্লাহ তাআলার রহমত যে কত ব্যাপক- তা কল্পনা করার জন্যে একটি হাদীসের উদ্ধৃতি দিই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
    جَعَلَ اللَّهُ الرَّحْمَةَ مِئَةَ جُزْءٍ فَأَمْسَكَ عِنْدَهُ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ جُزْءًا وَأَنْزَلَ فِي الأَرْضِ جُزْءًا وَاحِدًا فَمِنْ ذَلِكَ الْجُزْءِ يَتَرَاحَمُ الْخَلْقُ حَتَّى تَرْفَعَ الْفَرَسُ حَافِرَهَا عَنْ وَلَدِهَا خَشْيَةَ أَنْ تُصِيبَهُ.
    আল্লাহ রহমতকে একশ ভাগ করেছেন। নিজের কাছেই রেখে দিয়েছেন নিরানবক্ষই ভাগ। একভাগ পাঠিয়েছেন পৃথিবীতে। সেই এক ভাগের কারণেই পুরো সৃষ্টিজগত পরস্পরকে দয়া করে। এমনকি ঘোড়াও তার পা উঁচু করে রাখে যেন তার বাচ্চা কোনো কিছুতে আক্রান্ত না হয়। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০০০
    এবার তাঁর রহমতের ভিন্ন একটি দিক লক্ষ করুন। তিনি আমাদেরকে তাঁর ইবাদতের জন্যেই সৃষ্টি করেছেন- একথা কুরআনেও বলা হয়েছে। আবার সৃষ্টিগতভাবে তিনি আমাদের মাঝে কিছু বন্ধন জুড়ে দিয়েছেন। মানবিকতার টানেই আমরা সেই বন্ধন রক্ষা করি। জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পেতে আমরা তাঁর ইবাদত করি। আমরা আমাদের শুধুই ইবাদত দিয়ে বেহেশতে যেতে পারব না ঠিক, কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি কীভাবে আমাদের ইবাদতের সওয়াবকে বাড়িয়ে দিচ্ছেন দেখুন- শবে কদরের একটি মাত্র রাত ইবাদতে কাটালে হাজার মাসেরও বেশি ইবাদতে কাটানোর সওয়াব পাওয়া যায়; জামাতে নামায পড়লে সাতাশ গুণ বেশি সওয়াব মেলে; মসজিদে হারামে এক রাকাত নামায পড়লে এর সওয়াব বেড়ে যায় এক লক্ষ গুণ ইত্যাদি।
    বলেছিলাম, আমরা আমাদের সুখময় ও সমৃদ্ধ পরকাল নির্মাণের জন্যে আল্লাহর রহমতের আশাবাদী। আমরা আশা করি, তিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদের সামান্য নেক আমলটুকু কবুল করে নেবেন। এগুলো ত্রুটিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও নিজ দয়ায় তিনি ত্রুটিগুলো মুছে দিয়ে আমাদেরকে পুরস্কৃত করবেন। এ আশা পোষণ করা ঈমানের দাবি।
    তবে মনে রাখতে হবে, নিজের সাধ্যটুকু বিলিয়ে দিয়ে আশা পোষণ করতে হবে। বীজ বপন না করে চারাগাছের আশা করা যেমন নির্বুদ্ধিতা, তেমনি নেক আমল না করে এবং গোনাহ ছেড়ে তওবা না করে পরকালীন মুক্তির জন্যে আল্লাহ পাকের রহমতের আশায় বসে থাকাও তেমনি বোকামি। আর আশা যদি হয় তওবার দরজা পেরিয়ে নেক আমলকে সঙ্গে নিয়ে, তাহলে সে আশাই পরকালের সফরে মুমিনের সম্বল।

    উচ্চ রক্তচাপে কলা

    Posted by admin on February 27
    Posted in Uncategorized 

    উচ্চ রক্তচাপে কলা

    উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বেলায় প্রাথমিক অবস্থাতেই ডাক্তাররা যে পরামর্শগুলো দিয়ে থাকেন সেগুলো প্রায়ই এ রকম অতিরিক্ত ওজন কমান, সকাল-বিকাল হাঁটুন, টেনশন কমান-রিলাক্স থাকুন। আর খাবারদাবারের বেলায় রয়েছে একগাদা নিষেধাজ্ঞা। কাঁচা লবণ খাবেন না, মদ-গাঁজা ছোঁবেন না, বিড়ি-সিগারেট ফুঁকবেন না ইত্যাদি ইত্যাদি। আর বেশি করে খেতে বলা হয় পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার-শাকসবাজি আর ফলমূল। এই পটাসিয়ামের একটি ভালো উৎস হলো কলা।
    আমাদের অতিপরিচিত ফলটি উচ্চরক্তচাপে কতটা জরুরি তা আর বলার নয়। ডাক্তাররা বলেন, উচ্চরক্তচাপে কলা ওষুধের মতো কাজ করে। বই পুস্তকে তো এই পটাসিয়ামসমৃদ্ধ ফলটিকে রীতিমতো চিকিৎসার অংশ হিসেবেই ধরা হয়েছে। সুতরাং নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন এর গুরুত্ব। তাই বেশি বেশি কলা খান, যত পারুন। তবে সাবধান। খালি পেটে কলা না খাওয়াই ভালো। এসিডিটি হতে পারে।

    সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

    জাপান জুড়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর বার্ষিক প্রবেশিকা পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছে।

    জাপানের ১৫৯টি জাতীয়, প্রিফেকচারাল এবং পৌর বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ভর্তি পরীক্ষা শনিবার থেকে শুরু হয়। জানুয়ারিতে সমন্বিত প্রাথমিক রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয়।

    টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা সকাল ৮টার কিছু আগে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। পরিবারের সদস্য ও স্কুলের শিক্ষকরা তাদেরকে উৎসাহিত করেন।

    টোকিও’র একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র বলেন তিনি তার ওয়ার্কবুক কঠিন ভাবে অধ্যায়ন করেছেন। তার বিশ্বাস তিনি যদি তার প্রকৃত ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারেন তবে পাস করবেন।

    দক্ষিণ পশ্চিম প্রিফেকচার ওইতা’র একজন ছাত্র বলেন তার পরিবার তাকে ইমেইল বার্তার মাধ্যমে উৎসাহ দিয়েছেন।

    মঙ্গলে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তিতে বসতি স্থাপনের চিন্তা

    বেহরোখ খোশনেভিস, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই অধ্যাপক বলছেন- সৌরজগতে আমাদের প্রতিবেশী গ্রহ মঙ্গলে মানুষের বসতি স্থাপন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
    কিন্তু তার আগে এমনসব রোবট তৈরি করে মঙ্গলে পাঠাতে হবে যেগুলো থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তিতে এই লাল গ্রহের মাটিতে মানুষের বেঁচে থাকার সকল উপকরণ প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে।
    তিনি বলেন, ‘চাঁদকে তুলে রাখার সময় হয়েছে, মানুষের পরবর্তী বড় পদক্ষেপ হতে যাচ্ছে মঙ্গলের মাটিতে পা দেয়া এবং পৃথিবীর বাইরে তথা এই উষর গ্রহে বসতি স্থাপন করা।’
    সৌরজগতের চতুর্থ এই গ্রহটি এতোটাই ঠাণ্ডা যে সেখানকার শীত ঋতুতে তাপমাত্রা প্রায় মাইনাস ৮৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে যায়। অক্সিজেনহীন গ্রহটির উপরিভাগ খুবই পাথুরে ও উষর।
    অধ্যাপক খোশনেভিস ২০১১ সাল থেকেই নাসার সঙ্গে মঙ্গলে বসতি স্থাপন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া ২০০৪ সালে তিনি বৈপ্লবিক থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তির কনচ্যুয়ার ক্রাফ্টিং (সিসি) আবিষ্কার করেন, যার মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে একদিন সময়ের মধ্যে ২৫০০ বর্গফুটের একটি বিল্ডিং প্রিন্ট করা যায়।
    এছাড়া ২০১৬ সালেও তিনি নাসার কাছ থেকে পুরস্কৃত হন থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের আরো একটি প্রযুক্তি আবিষ্কার করে, যেটি মঙ্গলের মাটিতে প্রাপ্ত উপকরণ ব্যবহার করেই শূন্য ত্বরণে কোন অবয়ব বা কাঠামো প্রিন্ট করতে সক্ষম।
    ভারতে সম্রাট বাবর না আসলে কী হতো না হতো
    ভারতীয় উপমহাদেশে পরাক্রমশালী মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা ছিলেন জহিরুদ্দিন মুহম্মদ বাবর। তার হাত দিয়েই ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের যাত্রা শুরু হয়।
    গতকাল ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়েছে ভ্যালেন্টাইন্স ডে। কিন্তু এই দিনটি যে এক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের জন্মদিনও বটে, সেটা খুব কম মানুষই জানেন।১৪৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি উজবেকিস্তানের আন্দিজানে জন্ম হয়েছিল সম্রাট বাবরের। তিনি শুধু ঐতিহাসিক চরিত্র নন, বিতর্কিতও বটে।
    বাবরকে নিয়ে বিবিস বাংলায় প্রকাশিত ্এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের একটা অংশের মানুষ সম্রাট বাবরকে আক্রমণকারী বলে মনে করে থাকেন। আর অযোধ্যায় তাঁর নামাঙ্কিত বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি নিয়ে বহু দশক ধরে বিতর্ক চলছে। আক্রমণকারী হোন অথবা বিজয়ী – কিন্তু বাবর সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কাছে খুব বেশী তথ্য নেই। মুঘল সম্রাটদের মধ্যে আকবর বা শাহজাহানের নামই সবচেয়ে বেশী আলোচিত হয়ে থাকে।
    ইতিহাসবিদ হরবংশ মুখিয়ার কথায়, সংস্কৃতি, সাহসিকতা আর সেনা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাবর নি:সন্দেহে এক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। যদি বাবর ভারতে না আসতেন, তাহলে এই দেশের সংস্কৃতি হয়তো এতটা বিচিত্র হওয়ার সুযোগ পেত না। ভাষা, সঙ্গীত, চিত্রকলা, স্থাপত্য, পোশাক অথবা খাবার-দাবার – প্রতিটা বিষয়েই মুঘলদের অবদান অনস্বীকার্য বলে মনে করেন মুখিয়া।
    ১২ বছর বয়সে রাজ সিংহাসনে বসেছিলেন বাবর। হরবংশ মুখিয়ার মতে, বাবরের চিন্তাধারায় কখনও হার না মানার একটা মানসিকতা ছিল। তাঁর মাথায় সমরখন্দ দখলের স্বপ্ন ছিল। তিনবার দখল করেছিলেন, কিন্তু প্রতিবারই ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁকে। যদি তিনি সমরখন্দ দখলে সফল হতেন আর সেখানকার রাজা হিসাবেই থেকে যেতেন, তাহলে হয়তো কাবুল বা ভারত দখল করে রাজত্ব করার কথা তিনি ভাবতেনও না।১৫২৬ সালে পানিপথের যুদ্ধে বিজয়ের বাবর সেখানে একটি মসজিদ বানিয়েছিলেন, যেটা আজও রয়েছে।
    হরবংশ মুখিয়ার মতে সম্রাট বাবর হচ্ছেন পৃথিবীর প্রথম শাসক, যিনি নিজের আত্মজীবনী লিখেছিলেন। ‘বাবরনামা’-তে তাঁর জীবনের সাফল্য আর ব্যর্থতা – দুইয়ের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
    তুর্কি ভাষায় কবিতা লিখতেন বাবর। বাবরনামায় ব্যবহৃত বেশ কিছু শব্দ এখন ভারতে প্রতিদিনের ভাষার অঙ্গ হয়ে গেছে। যেমন ‘ময়দান’ শব্দটা তাঁর জীবনীতেই প্রথমবার দেখা যায়। সেভাবেই অনেক তুর্কি আর ফার্সি শব্দ ভারতীয়দের মুখের ভাষায় ঢুকে গেছে।
    ইতিহাসবিদ মুখিয়ার মতে যুদ্ধ, সাম্রাজ্য পরিচালনার মধ্যেও নিজের পরিবারের প্রতি নিষ্ঠাবান ছিলেন বাবর।তার মা এবং নানির সঙ্গে যেমন গভীর সম্পর্ক ছিল, তেমনই বোনের কাছেও বাবর ছিলেন এক আদর্শ ভাই। আবার ছেলে হুমায়ূনের প্রতিও ছিল গভীর পিতৃস্নেহ।
    হুমায়ূনের একবার কঠিন অসুখ হয়েছিল, সেই সময়ে বাবর ছেলের শরীর ছুঁয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন যে পুত্রের অসুখ সারিয়ে দিয়ে তিনি যেন বাবরের প্রাণ কেড়ে নেন, বলেন তিনি। তিনি আরো বলেন, হুমায়ূন সে যাত্রা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন, কিন্তু ওই ঘটনার কিছুদিন পরেই বাবর অসুস্থ হয়ে পড়েন আর তারপরেই মৃত্যু হয় তাঁর।
    ৪৭ বছর বয়সে মৃত্যু পর্যন্ত লাগাতার যুদ্ধ করে গেছেন মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মুহম্মদ বাবর।