• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় মুহাম্মদ আলীকে শেষ বিদায়

    শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মুহাম্মদ আলীকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রবাসী। যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকির লুইভিলে ওই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষ অংশ নেন। পঞ্চাশটির বেশি দেশ থেকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ইসলামী রীতি অনুযায়ী মুহাম্মদ আলীর শেষকৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। শুধুমাত্র তার পরিবার আর ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতে কেভ হিলের কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
    পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতে তাকে দাফন করা হয়। লুইভিলের রাস্তায় মুহাম্মদ আলীর কফিন বহনকারী গাড়ি দেখতে দাঁড়িয়ে ছিলেন অসংখ্য মানুষ। কোরান পাঠ দিয়ে শুরু হয় মুহাম্মদ আলীকে শ্রদ্ধা আর স্মরণের অনুষ্ঠান। এরপর মুসলিম, ক্রিশ্চিয়ান, ইহুদিসহ বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
    তারা বক্তব্যে মুহাম্মদ আলীর খেলা, সামাজিক আর রাজনৈতিক অর্জন, শান্তি আর মানবাধিকার অর্জনে তার ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। সবসময় ন্যায় ও নীতির পক্ষে তার শক্ত অবস্থান নেয়ার কথা বক্তাদের বক্তব্যে উঠে আসে। অনুষ্ঠানে থাকতে না পারলেও, এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মুহাম্মদ আলীকে বিশাল, উজ্জ্বল আর এ যুগের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অন্যতম বলে বর্ণনা করেছেন।
    উল্লেখ্য, গত ৩ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রক্তচাপ হঠাৎ করে কমে গিয়ে মারা যান ৭৪ বছর বয়সী কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদ মুহাম্মদ আলী।

    হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলো হারিয়ে যাওয়া বালক

    হোক্কাইদো’র গহীন জঙ্গলে নিখোঁজ হওয়ার ৬ দিন পর উদ্ধার হওয়া পিতামাতা পরিত্যাক্ত বালককে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

    গত শুক্রবার ইয়ামাতো তানেওকা’কে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। এর আগে সেল্ফ ডিফেন্স ফোর্সের সদস্যরা জঙ্গলের নিকট একটি স্থান থেকে উদ্ধার করে।

    মঙ্গলবার বিকেলে সে তার পিতামাতার সাথে একসাথে হাসপাতাল ত্যাগ করে, এ সময়ে তার সাথে চিকিৎসক ও নার্সরাও ছিলেন। তারা সকলে বালকটি বিদায় জানাসে আসে।

    হাসপাতালের সামনে জড় হওয়া মিডিয়ার সামনে সে জানায়, এখন সে ভালো আছে এবং বেসবল খেলতে চায়।

    শিশুটির স্কুল কর্তৃপক্ষ তার জন্যে বিশেস কাউন্সিলিং প্রস্তাব দিয়েছে কেননা তার উপর মানসিক একটি চাপ কাজ করে থাকতে পারে।

    তার পিতামাতা ছেলেটিকে শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে তাকে গাড়ি থেকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন।

    মজিলা ফায়ার ফক্সের আইকন কুকুর!

    ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে মজিলা ফায়ার ফক্স ব্রাউজারটি পরিচিত তো বটেই বেশ জনপ্রিয়ও। মজিলা ফায়ার ফক্সের আইকনে থাকা শিয়ালের ছবির সাথে মিল খুঁজে পাওয়া গেছে একটি কুকুরের। পমেরিনিনান এবং হাস্কি জাতের সংকরে তৈরি পোমস্কি জাতের একটি কুকুরের চেহারার সাথে প্রচণ্ড মিল মজিলা ফায়ার ফক্স ব্রাউজারটির আইকনের।
    এই মিলের কারণে অনলাইন দুনিয়ায় রীতিমতো হৈচৈ ফেলে দিয়েছে মায়া নামের এই কুকুরটি। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ফ্লোরিডার বাসিন্দা ডেভ ল্যাসিওর কাছে বড় হওয়া মায়ার একটি ছবি সম্প্রতি অনলাইনে প্রকাশ করা হয়। আর সেই ছবি যারা দেখেছেন তাদের প্রায় সবার চোখেই ভেসে উঠেছে মজিলা ফায়ার ফক্স-এর শিয়ালের আইকনটি। অনেকেই প্রথম ভেবেছিলো এটি বোধ হয় শিয়ালেরই ছবি; কিন্তু পরক্ষণেই তাদের ভুল ভাঙে। মায়ার ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ারের সংখ্যা এখন ২৬ হাজারের বেশি। মায়ার ভক্তদের জন্য এখন তার শখ, তার প্রিয় খাবার সবই তুলে ধরা হচ্ছে ঐ পেজে।

    মোহাম্মদ আলীর ইচ্ছানুযায়ী ইসলামিক নিয়মেই দাফন হবে এবং বিভিন্ন ভাষায় সম্প্রচারিত হবে অনুষ্ঠান: গ্রেটেস্ট মোহাম্মদ আলীর দাফন শুক্রবার   

    তিনি নিজের সৎকর্মের দ্বারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের অন্তরে জায়গা করে নিয়েছেন -এরদোগান ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের লুইসভিলে নিজের শহরে গ্রেটেস্ট কিংবদন্তিতুল্য মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর দাফন হবে বলে জানা গেছে। আগামী শুক্রবার (১০ জুন) স্থানীয় সময় দুপুর ২টা থেকে শহরের কেএফসি ইয়োম সেন্টারে দাফনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। অনুষ্ঠানটি অনলাইনে বিভিন্ন ভাষায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। এ সম্পর্কে তার পরিবারের মুখপাত্র বব গানেল জানান। তবে এতে ধর্ম-মত নির্বিশেষে সবাই অংশ নিতে পারবেন। কেননা আলী ছিলেন বিশ্ব নাগরিক এবং তিনি জীবনের সকল ক্ষেত্রে মানুষের সাহচর্য পছন্দ করতেন। তবে তাকে কোথায় সমাহিত করা হবে তা এখনও জানা যায়নি। তার শেষকৃত্যে আরো আনেকের মধ্যে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, অভিনেতা বিলি ক্রিস্টাল ও সাংবাদিক ব্রায়ান্ট গাম্বেল অংশ নেবেন। গত শনিবার আরিজোনার স্কটসডেলে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র বব গানেল আরো জানান, আরিজোনা অঙ্গরাজ্যের ফিনিক্স হাসপাতালে গত শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১০ মিনিটে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনবারের হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন ও বিশ্বের গ্রেটেস্ট ক্রীড়াবিদ ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এই সংগ্রামী নেতা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তার পরিবারের সদস্যরা বলছেন, তিনি সেপটিক শকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গত ৩২ বছর ধরেই তিনি পারকিসসন রোগে ভুগছিলেন। অপর এক খবরে বলা হয়, কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ  আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার জন্য মহান আল্লাহর কাছে রহমত ও ক্ষমা কামনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। প্রেসিডেন্ট এরদোগান নিজের টুইটারে এক বার্তায় বলেন, মোহাম্মদ আলী ছিলেন বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে প্রভাবশালী ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব। তিনি বলেন, মোহাম্মদ আলী যিনি শুক্রবার ইন্তেকাল করেছেন তিনি ছিলেন অসাধারণ ক্রীড়াবিদ। তিনি নিজের সৎকর্মের দ্বারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের অন্তরে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি একজন অসাধারণ মানুষ ছিলেন। তিনি আরো বলেন, কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা সারাজীবন বর্ণবাদ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন, যা কখনো ভুলে যাবার নয়। আল্লাহ তাকে ক্ষমা ও রহম করুন। মোহাম্মদ  আলী এমন ব্যক্তিত্ব ছিলেন যার সাহস, দৃঢ় বিশ্বাস এবং সংকল্প বিশ্ব মানবতাকে অনুপ্রাণিত করেছে। দীর্ঘ ৩২ বছর পারকিনসন্স ব্যাধির সঙ্গে সংগ্রাম করে মারা গেছেন বিশ্বের সর্বকালের সেরা মুষ্টিযোদ্ধা তিনবারের বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন মোহাম্মদ আলী। এর বাইরেও ক্যারিসমেটিক ব্যক্তিত্ব, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। প্রথম বিশ্ব হেভিওয়েট পদক পাওয়ার তিন বছর পর ১৯৬৭ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধকে মোহাম্মদ  আলী অনৈতিক আখ্যায়িত করে প্রত্যাখ্যান করেন। নিজেকে একজন ন্যায়বান আপত্তিকারী হিসেবে উপস্থাপন করে ওই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। যদিও সামরিক সেবার জন্য তিনি নিবন্ধিত ছিলেন। এ কথাও যোগ করেন এরদোগান।

    রমজানের শুভেচ্ছা জানালেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

    পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ব্রিটেন ও বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর অফিস ১০ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই শুভেচ্ছা জানান।
    শুভেচ্ছা বার্তায় ডেভিড ক্যামেরন বলেন, পবিত্র রমজান এমন একটি সময় যখন মসজিদগুলো তাদের দরজা খুলে দেয়, কমিউনিটি সেন্টারগুলো প্রতিবেশীদের স্বাগত জানায়। এমনকি সিনাগগ ও চার্চগুলোও মুসলিম রোজাদারদের ইফতারের জন্য তাদের জায়গা ছেড়ে দেয়। এতে সবার সঙ্গে বন্ধন আরও বেড়ে যায়।
    তিনি বলেন, এই মাসে মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাসের একটি পরীক্ষা। এই মাসে রোজাদাররা নিজেদের ইবাদতের পাশাপাশি দানের হাত প্রসারিত করেন। অসহায়ের পাশে এসে দাঁড়ান।
    ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা কমিউনিটির অনুষ্ঠান ও ইফতারে মিলিত হই। চলুন ভিন্ন ভিন্ন জাতি ও ভিন্ন ভিন্ন মতে বিশ্বাসীরা আমাদের গর্বকে একসঙ্গে উদযাপন করি। ব্রিটেন ও বিশ্বের সব মুসলমানকে রমজানের শুভেচ্ছা।

    মারা গেলেন বক্সিং লিজেন্ড মোহাম্মদ আলী

    দীর্ঘ তিন দশক শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত রোগে ভোগার পর মারা গেলেন বক্সিং লিজেন্ড মোহাম্মদ আলী (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। ফনিক্স এরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যান তিনি।
    ৭৪ বছর বয়সী আলী বক্সিং ছেড়ে দেওয়ার পর ১৯৮৪ সাল থেকে পারকিনসন্স রোগে ভুগছেন। এছাড়া বেশ কয়েক বছর ধরে তার শারীরিক অবস্থারও অবনতি হয়েছে। গত ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
    এনবিসি নিউজ তাদের প্রতিবেদনে জানায়, গত কয়েকদিন হাসপাতালে থাকার পর অবশেষে মারা গেলেন ‘দ্য গ্রেট’ মোহাম্মদ আলী। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আলীর পরিবারের একটি সূত্র।
    আলীর পরিবারের মুখপাত্র বব গানেল বলেন, ৩২ বছর পারকিনসন্স রোগে ভোগার পর ৭৪ বছর বয়সে মারা গেলেন মোহাম্মদ আলী। তিনবারের বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ান এই বক্সার সন্ধ্যায় মারা গেছেন।
    মুহাম্মদ আলীর জন্ম ১৯৪২ সালের ১৭ জানুয়ারি। একজন সাবেক মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা তিনি। এই বক্সার তিনবারের ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন এবং অলিম্পিক লাইট-হেভিওয়েট স্বর্ণপদক বিজয়ী। ১৯৯৯ সালে মুহাম্মদ আলীর নাম বিবিসি এবং স্পোর্টস ইলাট্রেটেড স্পোর্টসম্যান অব দ্যা সেঞ্চুরি অথবা শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষণা করে।
    আলী জন্মগ্রহণ করেছিলেন লুইসভিলা, কেন্টাকিতে। তার বাবা ক্যাসিয়াস মারকেলাস ক্লে সিনিয়র এর নাম অনুসারেই তার নাম রাখা হয়েছি। আলী ১৯৬৪ সালে ইসলামী সংগঠন নেশন অব ইসলাম এ যুক্ত হন এবং ১৯৭৫ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে তার নাম পরিবর্তন করে মোহাম্মদ আলী রাখেন।
    তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন সামরিক বাহিনীর হয়ে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান। শক্তি, বাগ্মিতা, বিবেক ও সাহসিকতার প্রতীক হয়ে আছেন তিনি। মারা যাওয়ার কিছুদিন আগেও অসুস্থ থাকা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের মুসলিম নিষিদ্ধ ঘোষণা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন তিনি।

    দিন পর সন্ধান মিললো হারিয়ে যাওয়া বালকের

    গত শনিবার উত্তর জাপানের হোক্কাইদো’র একটি দুর্গম বনে হারিয়ে যাওয়া বালককে শুক্রবার সকালে ৬ দিন পর খুঁজে পাওয়া গেছে।

    ইয়ামাতো তানোওকা’কে শিকাবে শহরের সেলফ ডিফেন্স ফোর্সের একটি মহড়া ক্ষেত্রে পাওয়া যায়, ৬ দিন আগে যেখান থেকে সে হারিয়ে গিয়েছিলো স্থানটি সেখান থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে।

    এসডিএফ সদস্যরা তাদের মহড়া ক্ষেত্রে বালকটিকে বিশ্রাম নিতে দেখেন। সে তখন তার নাম ইয়ামাতো বলে জানায়। পরে পুলিশ জানায় তার পিতামাতা তাদের সন্তান বলে নিশ্চিত করে।

    বালকটিকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে সে তার পিতামাতাকে দেখে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছেন তার শরীরে সামান্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং এবং পুরো সপ্তাহটা সে শুধুমাত্র পানি পান করেই কাটিয়ে দিয়েছে। তাকে অন্ততঃ একদিন হাসপাতালে থাকতে হবে।

    বালকটি পুলিশকে জানিয়েছে সে মে মাসের ২৮ তারিখ থেকে সেখানকার একটি স্থাপনারর মধ্যেই ছিলো। পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে হেঁটে এসে সে ঐ স্থানে পৌঁছায় এবং এ ক’দিন শুধুমাত্র পানি খেয়েই ছিলো।

    বালকটির পিতামাতা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে নানায়ে শহরের পাশে জঙ্গলের পাশে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন।

    তারা বলেছেন, খারাপ ব্যবহারের কারণে তাকে এই শাস্তি দেয়া হয়েছিলো। তারা বলেছেন, অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা আবার জঙ্গলের ঐ স্থানে ফিরে যান কিন্তু এরপর থেকে তার আর দেখা মেলেনি।

    তাকে উদ্ধারের জন্যে পুলিশ, দমকল বাহিনী এবং সেলফ ডিফেন্স ফোর্সের বিরাট এক উদ্ধারকারী দল মাঠে নামে।

    ছেলেটির পিতা সকলের কাছে ঘটনার জন্যে ক্ষমা চেয়েছেন।

    সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময়ে তাকাইউকি তানোওকা বলেন তার সন্তানকে এই অবর্ণনীয় যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে বলে তিনি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত, তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে যারা দুর্ভোগের শিকার হয়েছে তিনি তাদের কাছেও ক্ষমা চান।

    ৪৪ বছরের পিতা বলেন তিনি সকলের কাছে আন্তরিক কৃতজ্ঞ।

    ২০০৫ সালের পর মঙ্গল পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটে

    এক দশকেরও বেশি সময় পর মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটে চলে এসেছিলো মে মাসের ৩১ তারিখ।

    ন্যাশনাল এস্ট্রোনোমিকাল অবজারভেটরি অফ জাপান বলেছে মঙ্গলবার মঙ্গলগ্রহ পৃথিবীর ৭ কোটি ৫০ লক্ষ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসে।

    অবজারভেটরি বলেছে আবহাওয়া ভালো থাকলে এমনকি শহরের মানুষরাও লাল গ্রহটিকে খালি চোখে দেখতে পাবেন।

    মঙ্গল গ্রহ প্রতি ২৬ মাস পর পর পৃথিবীর নিকটে চলে আসে।

    কিন্তু দুই গ্রহের মধ্যে ব্যাবধান একেক সময়ে একেক রকম থাকে কেননা পৃথিবীর কক্ষপথ প্রায় গোলাকার অপর দিকে মঙ্গলের কক্ষপথ ডিম্বাকার।

    লাল গ্রহটি এ বছরের গোড়ার তুলনায় এখন ৩ গুন বড় দেখা যাবে।

    রাজধানী টোকিওর মানুষজন মঙ্গলবার রাতে রোপ্পোঙ্গীর একটি ৩ তলা ভবনের ছাদে উঠে মঙ্গল গ্রহ দেখার প্রত্যক্ষ করেন।

    পশ্চিম জাপানের মিয়াজাকি প্রিফেকচারে রাত ৮টা ৩০ মিনিটের পরে মঙ্গল দৃশ্যমান হয়ে হয়ে। মিয়াজাকি শহরের একটি অবজারভেটরি থেকে উৎসাহী মানুষরা মঙ্গল গ্রহ দেখেন।

    বাবা-মায়ের দ্বায়িত্বজ্ঞানহীনতায় বনে হারিয়ে গেল সন্তান

    মাত্র সাত বছর বয়সী ছেলেকে শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন এক জাপানি দম্পতি। এর জন্য হোক্কাইডোর নির্জন বনের মধ্যে ছেড়ে আসেন ছেলেকে। আর এর পর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
    খারাপ ব্যবহার করায় ছেলেকে শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন ওই দম্পতি। এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করতে দিতে গিয়ে দুই দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও ছেলের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
    বনের যে এলাকায় শিশুটি হারিয়ে গেছে সেখানে বুনো ভালুকের আবাস রয়েছে।
    শিশুটিকে খুঁজে বের করতে জরুরি বিভাগের কয়েকশ কর্মী বনের ওই এলাকাটিতে তল্লাশি চালাচ্ছে। অনেক সময় পরও শিশুটি বন থেকে ফিরে না আসায় ওই দম্পতি প্রথমে পুলিশকে গিয়ে জানায়। তবে এসময় পুলিশকে মিথ্যা কথা বলে তারা। তারা বলে, সবজি সংগ্রহ করতে গিয়ে তাদের ছেলে বনে হারিয়ে গেছে।
    তবে এর একদিন পর তারা সত্য ঘটনা প্রকাশ করে। ওই বাবা-মা বলেন ছেলেকে ভদ্রতা শেখাতে শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন তারা।

    কর বৃদ্ধি পেছানোকে সমর্থন করতে কোমেইতোকে আবে আহ্বান

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে তার ক্ষমতাসীন শরিক জোটের প্রধানকে ভোগ কর বৃদ্ধি পেছানোর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করতে অনুরোধ করেছেন।

    সোমবার আবে কোমেইতো পার্টি প্রধান নাৎসুও ইয়ামাগুচি’র সাথে বৈঠক করেন। এর আগে তিনি নিজ দল লিবারাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ঊর্ধ্বতন নেতাদের সাথে এ ব্যাপারে বৈঠক করেছিলেন।

    প্রধানমন্ত্রী ইয়ামাগুচি’কে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন গ্রুপ ৭ ভুক্ত দেশ সমূহের নেতারা গত সপ্তাহে বিশ্ব অর্থনীতি একটি ঝুঁকির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বলে অভিন্ন মত পোষণ করেছেন।

    তিনি বলেন জাপানের এখন প্রয়োজন এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন।

    তিনি ইয়ামাগুচি’কে ভোগ কর ২ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাবটি ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়ার জন্যে সমর্থন প্রত্যাশা করেন।

    জাবাবে ইয়ামাগুচি বলেন তিনি দলের অন্যান্য সদস্যদের ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করবেন। তিনি আরো বলেন তিনি এলডিপি’র সাথে এ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে চান।

    প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৫তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ   

    আজ ৩০ মে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৫তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে একদল বিপথগামী উচ্ছৃঙ্খল সৈনিকের হাতে তিনি নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেন। তখন তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৫ বছর। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ক। তার সততা, নিষ্ঠা, গভীর দেশপ্রেম, কর্মমুখরতা, নেতৃত্বের দৃঢ়তা প্রভৃতি গুণাবলি এ দেশের গণমানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল। তার ঘটনাবহুল কর্মময় জীবন বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে চিরস্থায়ী আসন অলঙ্কৃত করে আছে। নানা কারণে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ে স্থান করে নিয়েছেন। তিনি ছিলেন একজন পেশাদার সৈনিক। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের কাছে তার যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল অন্য কোনো রাষ্ট্রনায়কের ভাগ্যে তা জোটেনি। মাত্র ছয় বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। এ অল্প সময়েই তার ওপর সাধারণ মানুষের অগাধ আস্থার তৈরি হয়েছিল। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তার ওপর মানুষের এই আস্থার কোনো কমতি ছিল না। রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত সফল একজন রাষ্ট্রনায়ক। তিনি তার সততা ও প্রজ্ঞা দিয়ে এদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে স্বনির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন। বাংলাদেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে জিয়াউর রহমান যখন অক্লান্ত পরিশ্রম করছিলেন, বিশ্বে দ্রুত অগ্রসরমান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই দেশী-বিদেশী চক্রান্তের অংশ হিসেবে ঘাতকদের তপ্ত বুলেটে প্রাণ হারান বাংলাদেশের ইতিহাসের ক্ষণজন্মা এই রাষ্ট্রনায়ক। তিনি যে কত জনপ্রিয় ছিলেন তা বোঝা গিয়েছিল ঢাকায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত তার স্মরণকালের বৃহত্তম নামাজে জানাজায়। সেদিন পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছিল ‘একটি লাশের পাশে সমগ্র বাংলাদেশ’। জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপিকে এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ভালোবাসে তার কারণেই। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী থানার বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মনসুর রহমান কলকাতায় একজন কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামে কাটিয়ে তিনি বাবার সাথে কলকাতায় এবং দেশ বিভাগের পর করাচিতে চলে যান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমি কাকুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন্ড লাভ করেন। সামরিক জীবনে কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যেও তিনি একের পর এক কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার সাথে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তার কোম্পানি যুদ্ধে সর্বোচ্চ খেতাব লাভ করে। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের জন্য তিনি নিজেও একটি পিস্তল উপহার পান। সৈনিক জীবনে তিনি যেমন সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের নৈপুণ্য দেখিয়েছেন, ঠিক তেমনি জাতীয় সঙ্কটকালেও শক্ত হাতে হাল ধরেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী যখন এদেশের নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, রাজনৈতিক নেতারা যে যেদিকে পারেন আত্মগোপন কিংবা পালিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলেন, জিয়াউর রহমান তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বিশ্ব সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের মানুষের এ ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামে সমর্থনের আবেদন জানান। ৯ মাসের মুক্তি সংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে সমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীর-উত্তম খেতাব লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থানে খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী করা হয়। জাতির ভাগ্যাকাশে তখন এক অনিশ্চয়তা বিরাজ করছিল। সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। অবস্থা এতটাই শোচনীয় ছিল যে, প্রকৃতপক্ষে সে সময় দেশে কোনো সরকার ছিল না। কোথা থেকে কী হচ্ছে তা জানতে পারছিলেন না কেউ। চারদিকে এক অনিশ্চয়তা-বিশৃঙ্খলার মাঝে আধিপত্যবাদের শ্যেনদৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত ছিল গোটা জাতি। ইতিহাসের সেই ভয়াবহ ক্রান্তিকালে সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন এবং নেতৃত্বের হাল ধরেন। এর পর থেকে জিয়াউর রহমানকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সততা, দৃঢ়তা ও অসাধারণ মেধার গুণে তিনি শুধুই এগিয়ে গেছেন। ব্যক্তিগত সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা, দৃঢ় নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা, নির্লোভ-নির্মোহ আত্মপ্রত্যয়, গভীর দেশপ্রেম প্রভৃতি গুণাবলি দিয়ে তিনি জাতির মধ্যে নতুন করে জাগরণের সৃষ্টি করেন। প্রতিদিন সারা দেশ চষে বেড়াতেন তিনি। তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ছিল তিনি বাংলাদেশের মানুষের উপযোগী একটি স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটান। দেশে সমন্বয়ের রাজনীতি চালু করে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসেন। প্রথমে তিনি জাগদল গঠন করেন। এরপর তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিতে একদিকে যেমন বামপন্থীরা স্থান পান, তেমনি ডানপন্থীরাও জায়গা করে নেন। একটি উদার ও মধ্যপন্থী দল হিসেবে বিএনপিকে গড়ে তোলেন তিনি, যা বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় সবচেয়ে প্রয়োজন ছিল। তার অমর কীর্তি বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ সংযোজন করা। এ ছাড়া তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। নিজে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা হলেও তিনি এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রাখেন। জিয়াউর রহমান বিভক্তির রাজনীতি দূর করে ঐক্যের রাজনীতির ডাক দেন। তিনি উন্নয়ন এবং উৎপাদনের রাজনীতি শুরু করেন। রাজনীতিবিদদের তিনি জনগণের দোরগোড়ায় যেতে বাধ্য করেন। বিশাল কর্মকা-ের সূচনা করে জনগণের মধ্যে তিনি সাড়া জাগান। মাত্র ছয় বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পান শহীদ জিয়া। কিন্তু এ ছয় বছরেই তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ থেকে এ জাতিকে মুক্ত করেন। স্বজনপ্রীতি, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটসহ নানা অপকর্মে জাতির যখন ত্রাহি অবস্থা, ঠিক তখনই জিয়াউর রহমান শক্ত হাতে দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। তিনি সমগ্র জাতির মধ্যে এক নব জাগরণের সূচনা করেন। বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর প্রেরণা জোগান তিনি। তাকে নিয়ে অনেকেই আজকাল ইঙ্গিতে কটু কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু জীবদ্দশায় তাদের কেউ কোনো অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে পারেননি। এমনকি তার ব্যক্তিত্ব ও নির্লোভ চরিত্রের কাছে আজকের অনেকের চারিত্রিক দৃঢ়তা মøান হয়ে যেত। সাদামাটা জীবন যাপনের এমন দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ কেন সমসাময়িক রাজনীতিবিদদের ইতিহাসে বিরল। তার চরিত্রে কোনো কপটতা ছিল না। সময় ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনে তিনি নেতৃত্বে এসেছেন। কাউকে উৎখাত কিংবা উচ্ছেদ করে তিনি আসেননি। এখানেই জিয়াউর রহমান ও অন্যদের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। জিয়াউর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন সত্যিকার স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচতে হলে বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনী প্রয়োজন। তিনি বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। একটি বহুমাত্রিক সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে তা বাস্তবায়নের আগেই ঘাতকের বুলেটে প্রাণ হারান। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী এবারে একটু ভিন্ন পরিবেশে পালিত হচ্ছে। শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপির বহু নেতাকর্মীই বর্তমানে কারাগারে। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও লন্ডনে চিকিৎসাধীন বড় ছেলে তারেক রহমান মামলা মোকদ্দমার মুখোমুখি। সারাদেশের প্রায় সর্বস্তরের নেতাই বিভিন্ন মামলার আসামি। অতীতে কখনোই বিএনপিকে এতটা ঝড়-ঝাঁপটা মোকাবেলা করতে হয়নি। এত কিছু সত্ত্বেও জিয়াউর রহমান আজও তার অমর কীর্তিতে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে আছেন। তার আদর্শ এখনো কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছে। জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকী কর্মসূচি ঢাকার ৬০টি স্পটে খাবার বিতরণ করা হবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিএনপি। কেন্দ্রের সাথে মিল রেখে সারা দেশে কর্মসূচি পালন করবে দলটির নেতাকর্মীরা। এর আগে যৌথ সভা করে কর্মসূচি চূড়ান্ত করে বিএনপি এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। আজ সকাল ৬ টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ১০টায় শেরে বাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে মাজারে পবিত্র কোরআনখানী ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর উদ্যোগে মাজার প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সকাল ৯টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ড্যাবের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ঔষধ বিতরণ করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে সারা দেশে শহীদ জিয়ার স্মরণে পোষ্টার সাটানো হয়েছে গ্রাম থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থাপনায়। পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে ঢাকা মহানগর বিএনপি’র উদ্যোগে আজ থেকে ১ জুন পর্যন্ত টানা তিনদিন মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করবেন বেগম খালেদা জিয়া। এছাড়া ১৫দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনাসভা, চিত্র প্রদর্শনী, মিলাদ মাহফিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে। যেসব স্পটে খাবার বিতরণ : রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহল হল থেকে খাবার বিতরণ শুরু হবে। এরপর আদাবর থানা, সুগন্ধা কমিউনিটি সেন্টার (মেডিনোভার সামনে), আজিমপুর বটতলা, জাতীয় প্রেস ক্লাব (ছাত্রদল), আল-হাবিব কমিউনিটি সেন্টারের সামনে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে (জাসাস ও মুক্তিযোদ্ধা দল), পল্টন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে (স্বেচ্ছাসেবক দল), মতিঝিল কলোনী কমিউনিটি সেন্টার (আইডিয়াল স্কুলের বিপরীত পার্শ্বে), মাহবুব আলী মিলনায়তন (রেলওয়ে শ্রমিক দল), মির্জা আব্বাসের বাড়ির সামনে, শান্তিনগর বাজার (পল্টন বিএনপি), খিলগাও চৌরাস্তা (জোড় পুকুর খেলার মাঠ), দয়াগঞ্জ মোড় (তিন রাস্তার মোড় যাত্রাবাড়ি, আলম মার্কেট (জুরাইন), শ্যামপুর ঈদগা মাঠ (লাল মসজিদ), যাত্রাবাড়ি শহীদ ফারুক সড়ক, পোস্তগোলা (বটতলা) শ্যামপুর, ধোলাইপাড় বাস স্ট্যান্ড, ডেমরা থানা বিএনপি, বাংলামটর (হাতিরপুল) কলাবাগান থানা বিএনপি, কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ১ম লেনের সামনে, সুত্রাপুর কমিউনিটি সেন্টার নতুন রাস্তা, নবাবপুর রোড-মদনপাল লেন মোড়, পোস্তামোড় (লালবাগ যুবদল), কোতয়ালী থানা যুবদলের কার্যালয়ের সামনে (নর্থ সাউর্থ রোড়), নয়াবাজার বিএনপি অফিস (বংশাল থানা), কাঠেরপুল গেন্ডারিয়া মোড় (ছাত্রদল দক্ষিণ), আজিমপুর ভিকারুন্নেছা নুন স্কুল সংলগ্ন, লালবাগ হাফেজ মুছা ব্রীজ, মৌলভীবাজার কমিউনিটি সেন্টার-চকবাজার, ঢাকা টেনারী মোড় (হাজারীবাগ), ঢাকাশ্বর বালু মাঠ, সাত মসজিদ রোড (ঈদগা রোডের পশ্চিম পাশে), গাউসিয়া চাঁদনী চকের গেট (নিউ মার্কেট), মালিবাগ ডিআইটি রোড (ফরচুন মার্কেট সংলগ্ন), আজিমপুর ছাপড়া মসজিদ, নয়াপল্টনে হোটেল ভিক্টোরীয়ার সামনে (তৃণমূল দল), খিলক্ষেত নিকুঞ্জ (রিজেন্সি হোটেলের পিছনে বটতলা), আমির কমপ্লেক্স (আজমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন), অনিক প্লাজার সামনে (পল্লবী), পল্লবী ১২নং বাসস্ট্যান্ড, ন্যাশনাল বাংলা স্কুল (মিরপুর ষ্টেডিয়াম সংলগ্ন), শাহআলী মাজার (মিরপুর), বুদ্ধিজীবী শহীদ মিনার গেইট, শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড, রোকেয়া সরণী, মহাখালী ওয়ারলেস গেইট, টিএন্ডটি মাঠের সামনে (মানিক মিয়া এভিনিউ), মোল্লাপাড়া (মধ্যবাড্ডা), আল-আমিন সুপার মার্কেট (রামপুরা), বিশাল সেন্টার (মগবাজার), বালু নদীর পাড় (খিলক্ষেত থানা ৩০০ ফুট রাস্তা পূর্বাঞ্চল), কাওরান বাজার প্রগতি টাওয়ারের সামনে, সাত রাস্তার মোড়/নাবিস্কো মোড়, শাহ আলী মাজার গেইট সংলগ্ন (বাউল দল) ইত্যাদি । বাণী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হত্যার নেপথ্যে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত রয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার এক বাণীতে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয়তা দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারী শক্তি কখনোই মেনে নিতে পারেনি। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই অশুভ চক্র তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এই চক্রান্তকারীরা ১৯৮১ সালের ৩০ মে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে। জিয়াউর রহমানের ৩৫তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে এই বাণী পাঠানো হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে একজন মহান দেশপ্রেমিককে দেশবাসী হারায়। তবে চক্রান্তকারীরা যতই চেষ্টা করুক কোন ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ককে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিলেই তিনি বিস্মৃত হন না, বরং নিজ দেশের জনগণের হৃদয়ে চিরজাগরুক হয়ে অবস্থান করেন। জিয়াউর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, জাতির চরম দুঃসময়গুলোতে জিয়াউর রহমান দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। মহান স্বাধীনতার বীরোচিত ঘোষণা, স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা এবং রাষ্ট্র গঠনে তার অনন্য কৃতিত্বের কথা আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। মির্জা ফখরুল বলেন, একাত্তরে সারা জাতি যখন স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, যখন রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ দিশেহারা ঠিক সেই মুহূর্তে ২৬শে মার্চ মেজর জিয়ার কালূরঘাট বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা সারা জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের অভয়মন্ত্রে উজ্জীবিত করে, ফলশ্রুতিতে দেশের তরুণ, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির আখ্যা থেকে খাদ্য রপ্তানীকারক দেশে পরিণত করেন জিয়াউর রহমান। ব্যক্তিজীবনেও দুর্নীতি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও সুবিধাবাদের কাছে আত্মসমর্পণকে তিনি ঘৃণা করতেন। তার অন্তর্গত স্বচ্ছতা তাকে দিয়েছে এক অনন্য ঈর্ষণীয় উচ্চতা। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জিয়ার প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ বুকে ধারণ করে গণতন্ত্রমনা মানুষকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

    প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর – রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নবদিগন্তের সূচনা  

    জাপানে অনুষ্ঠিত জি-সেভেনের আউটরিচ সম্মেলনে যোগদানের সুযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেকে এবং দেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি দেশীয় নেতা থেকে নিজেকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বনেতৃত্বের আসনেÑআন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা এমনটি মনে করেন। প্রধানমন্ত্রীর এ সফর অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও দিচ্ছে নতুন বার্তা। জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনার পর আসছে জাপানি বিনিয়োগ। সার্কের মধ্যে তৈরি হতে যাচ্ছে নতুন অর্থনৈতিক প্রবাহ। জি-সেভেনসহ বিশ্ব নেতাদের কাছে শেখ হাসিনা এখন একটি নাম নয়, একটি প্রেরণা। আর তাই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনও বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্পের অংশ হতে চান। ইইউ থেকে বের না হওয়ার বিষয়েও তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ চান। সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির ইনকিলাবকে বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রধানমন্ত্রীর এ সফর অত্যন্ত গুরুত্ববহ। ইংরেজিতে এটাকে বলা যায় ‘বাংলাদেশ রিচআউট অ্যাট দ্য জি-সেভেন আউটরিচ মিটিং’। আমাদের এখানে যা যা হওয়া সম্ভব প্রধানমন্ত্রী তা বিশ্ব নেত্রীবৃন্দের সামনে হাইলাইট করতে পেরেছেন। সামাজিক ক্ষেত্রেও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, বহুপাক্ষিক ফোরামে বিশ্বের ক্ষমতাধর নেতাদের সাথে কূটনৈতিক সুযোগ প্রধানমন্ত্রী কাজে লাগিয়েছেন। আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপানÑএসব দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে আলোচনা রাজনৈতিক দিক থেকে অবশ্যই নতুন কিছুর ইঙ্গিত বহন করে। সরকার আগের চেয়ে নৈতিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ হয়ে ওঠায় বিদেশীরাও আগের চেয়ে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। এ ছাড়া জি-সেভেনের দেশগুলোতে আমাদের রপ্তানির ষাট ভাগ যায়। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও এটার গুরুত্ব রয়েছে। এ ছাড়া জাপান-চীন আমাদের দেশের বড় প্রকল্পগুলোতে আগ্রহী। বর্তমান অবস্থায় তাদের সাথে আমাদের আলোচনার সুযোগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।   জাপানে চার দিনের সফর শেষে গতকাল মধ্যরাতে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিশ্ব অর্থনীতির সাত পরাশক্তির জোট জি-সেভেনের সম্মেলনের পরদিন ওই আউটরিচ মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব ‘স্পষ্ট হয়েছে’। এর ফলে দেশের ভেতরে এবং আন্তর্জাতিক সমাজে সরকারের অবস্থান আরো মজবুত হয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে জাপানের বিনিয়োগের নতুন নতুন খাত দেশের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক যোগাযোগেরও নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। একরাশ আশা নিয়েই এবার দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর দেশে ফিরে আবার তিনি রওনা হবেন মুসলিম বিশ্ব এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী দেশ সউদী আরব সফরে। বিগত বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে যে উচ্চতায় বিশ্ব দরবারে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন, অন্য কোনও সরকারপ্রধান সেটা দিতে পারেননি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রনায়করা যেমন তার আমলে বাংলাদেশ সফর করেছেন, দ্বিপাক্ষিক সফরে তিনিও সেসব দেশে গেছেন। আন্তর্জাতিক ফোরামে গৌরবময় উপস্থিতিতে তিনি দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন। অবশ্য জি-সেভেনে বাংলাদেশের কোনো নেতার অংশগ্রহণ এই প্রথম নয়। ১৯৮৮ সালে ফ্রান্স যখন এই বৈঠকের আয়োজক, তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। পার্থক্য এটাই যে, তিনি যেখানে শেখ হাসিনার মতো মর্যাদা পাননি, অর্থাৎ বাংলাদেশ সেই মাত্রায় সম্মানিত হয়নি, সমাদৃত হয়নি। সে কারণে দেশের অবস্থান কোথায়, নেতৃত্ব কে দিচ্ছেনÑঘুরেফিরে বিশ্ব দরবারে রাষ্ট্রের সম্মানের প্রশ্ন এলে এই প্রশ্নও আসে। সম্পদশালী শিল্পোন্নত সাত জাতির সংস্থা হলো জি-সেভেন। বাংলাদেশ এ সংস্থার কোনো কিছুই নয়। তবু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে সাত জাতির জি-সেভেন সম্মেলনে যোগদান করার জন্য জাপানের প্রধানমন্ত্রী দাওয়াত দিয়েছেন। জি-সেভেনের নেতারা তাকে খুবই আহ্লাদে নিজেদের মাঝে বসিয়েছেন। আর বাংলাদেশকে তিনি কিভাবে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন তার কাহিনী শুনেছেন। সম্মেলনে জি-সেভেনের নেতারা যারা উপস্থিত হয়েছেন তারা কেউ তাদের স্ব স্ব জাতির নির্মাতা নন। তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছেন এবং বহু পূর্ব থেকে তাদের রাষ্ট্রগুলো সুপ্রতিষ্ঠিত। সুতরাং একটা নির্মীয়মান জাতির যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তার কথা শুনার তাদের আগ্রহ অস্বাভাবিক নয়। তাকে যে সম্মান দেখানো হয়েছে তাও অস্বাভাবিক নয়। এ সম্মান বিশ্বসভায় তার পাওনা। আউটরিচ বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া যে দেশগুলেকে মিটিংয়ে দাওয়াত দেয়া হয়েছে, তাদের সবাই কোনো না কোনো গ্রুপকে প্রতিনিধিত্ব করে। কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতিতে আমাদের যে উল্লেখযোগ্য অবদান, সেজন্য বাংলাদেশকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। বিশ্ব নেতৃত্বের সারিতে বসে জি-৭ সম্মেলনে অংশগ্রহণ, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনার সঙ্গে সৌজন্য বৈঠকসহ গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ কর্মসূচিতে জাপানে তিন দিন ব্যস্ত সফর কাটিয়ে দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আউটরিচের দুটি অধিবেশনে অংশ নিয়ে বিশ্বনেতা হিসেবে বিশ্বের সাতশ’ কোটি মানুষের উন্নয়নের বর্তমান অবস্থা, সে বিষয়ে ভাবনা ও দর্শনের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। অধিবেশনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশলাদি ও মতবিনিময় হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা, কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন, আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দসহ অন্যান্য রাষ্ট্র ও সংস্থার প্রধানদের সঙ্গেও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয় শেখ হাসিনার। দুপুরে সম্মেলনের আউটরিচ অধিবেশনের ফাঁকে শেখ হাসিনা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে। সে বৈঠকে ক্যামেরন বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে আগ্রহ প্রকাশ করেন এ উন্নয়নের গল্পের অংশ হওয়ার। ক্যামেরন ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়া-না হওয়ার বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ চান। পরদিন ২৮ মে সকাল থেকেও শুরু হয় তার ব্যস্ততা। সকাল ৯টায় প্রধানমন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনার সঙ্গে। সে বৈঠকে বন্যাকবলিত শ্রীলঙ্কাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা। সিরিসেনা এসময় ঢাকা কলম্বো সরাসরি বিমানের ফ্লাইট চালুর অনুরোধ করেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে ওষুধসহ পাটজাত দ্রব্য আমদানি করতে শ্রীলঙ্কার প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া সার্ক দেশগুলোর প্রবাসী শ্রমিকদের অর্থটা কীভাবে আমাদের দেশগুলোর মাধ্যমে প্রবাহিত করা যায় সেজন্য শ্রীলঙ্কার সাথে কাজ করবে বাংলাদেশ। এদিনই প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবের সঙ্গে। দ্বিপাক্ষিক এ বৈঠকে আলোচনা হয় দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে। এসময় ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন শিনজো আবে। বাংলাদেশের তরফ থেকে প্রস্তাব দেয়া হলে নতুন ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ নির্মাণে সহযোগিতার আশ্বাস দেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণেও সহযোগিতার কথা বলেন। বৈঠকে জাপানি প্রধানমন্ত্রী জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসাও করেন। এছাড়া বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরলে শিনজো আবে তাৎক্ষণিকভাবে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে তার দেশের সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিবদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেবল স্বাধীনতা বা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনেই নয়, উন্নয়নে এখনও জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। আমাদের যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু, রূপসা সেতু নির্মাণ জাপানের সহযোগিতায় হয়েছে। পদ্মাসেতু নির্মাণের অর্থায়নেও এগিয়ে এসেছিল জাপান। দেশে যখন কোনো আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ছিল না, তখন হোটেল সোনারগাঁও তৈরিতে জাপানই হাত বাড়িয়েছিল। বর্তমানে কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ এবং ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্পে জাপান অর্থায়ন করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাদের সমুদয় অবদানকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন আবের সাথে বৈঠক প্রসঙ্গে বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে। জাপানের ছয় বিলিয়নের মধ্যে চলতি বছর ১ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি ‘সফট লোন’ আসবে। তাছাড়া জাপান ‘গুণগত’ অবকাঠামোর উপর গুরুত্বারোপ করেছে। মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকায় এমআরটি, বঙ্গবন্ধুর সেতুর পাশে পৃথক রেললাইন স্থাপন এই ‘গুণগত’ অবকাঠামো উন্নয়নের আওতায় বাস্তবায়ন করা হবে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব। মেজবাহউদ্দিন বলেন, বৈঠকে ২০১৯ সালের মধ্যে এই টার্মিনাল আংশিকভাবে চালু করতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। ২০২০ সালে পুরোপুরি চালু করার বিষয়েও তারা দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নেবেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিষয়েও জাপানারে সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। এই বিমানবন্দর ঢাকা থেকে ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরত্ব এলাকার মধ্যে হবে। জানা গেছে, পদ্মার ওপারে চর জানাজাতে এই বিমানবন্দর নির্মাণ করা হতে পারে। তার আগে অবশ্য ফিজিবিলিটি স্টাডি বা সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষাও করবে জাপান। এছাড়া ‘এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনে’ জাপানের বিনিয়োগ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, শিনজো আবে শেখ হাসিনাকে বলেছেন, তার সরকার প্রতিশ্রুত ৬০০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা বাংলাদেশকে দেয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে। চলতি বছরের মধ্যে যার দেড়শ’ কোটি ডলার দেয়া হবে। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, অঅবের সাথে বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ক্ষুদ্র মাঝারি ঋণ, জ্বালানি দক্ষতা, ন্যানো টেকনোলজি এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রী সহায়তাও চেয়েছেন; প্রতিটি বিষয় বিবেচনার আশ্বাস মিলেছে জাপানের পক্ষ থেকে। রফতানি পণ্যের ক্ষেত্রে রুলস অব অরিজিন শিথিল করায় জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। দুই দেশের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক জোরদার করতে এটি করা হবে বলেও জানান শিনজো আবে। বাই-ব্যাক, মানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে উৎপাদিত পণ্য ফের কিনে নেয়ার যে প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বৈঠকে দেন তা খতিয়ে দেখা ও সম্ভাব্যতা যাচাই করতে জাইকা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন শিনজো আবে। গত শনিবার বিকালে টোকিওতে জাপানে বাংলাদেশের নতুন দূতাবাস উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। ছোট বোন শেখ রেহানা সে সময় তার সঙ্গে ছিলেন। প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭১৪ বর্গমিটার এলাকায় টোকিও’র কেন্দ্রস্থলে কিওইচো, ছিওদা-কু এলাকায় বাংলাদেশের নতুন চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মিত হয়েছে। সফরের চতুর্থ দিন গতকাল রোববার সকালে জাপানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রাতরাশ বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি বিদেশি নাগরিক ও বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য জাপানিদের প্রতি আহ্বান জানান। এরপর দুপুরে প্রবাসী বাংলাদেশীদের আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সকালের প্রাতরাশ বৈঠকে জাপানের ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে। আমি চাই বাংলাদেশের এই ঊর্ধ্বমুখী সুযোগ এবং তারুণ্যদ্দীপ্ত জনশক্তির সর্বোচ্চ সুবিধা আমাদের জাপানি বন্ধুরা ভোগ করুক। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা শতাধিক বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও কিছু আইটি পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছি। এর মধ্যে ৩৩টির কাজ এগিয়ে চলেছে। আশা করছি, আগামী চার বছরে বাংলাদেশের শিল্প উৎপাদনে আরো এক কোটি মানুষ যুক্ত হবে। তিনি জাপানি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আমাদের ওষুধ ও জাহাজ নির্মাণখাতেও আগ্রহী হতে পারেন। আমাদের সমুদ্র অর্থনীতি আপনাদের সামনে তুলে ধরছে বিনিয়োগ সুযোগের বিশাল পরিধি। আপনারা নজর দিতে পারেন আমাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতেও। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সরকার লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, জুট, মৎস্য আহরণ, টেক্সটাইল ম্যানুফেকচারিং খাত নিয়েও কাজ করছে। একইসঙ্গে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে ‘সবুজ’ হতে উৎসাহ যোগাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বাংলাদেশের বিদ্যুৎ-জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বিদ্যুৎ বণ্টনের মতো নানা ক্ষেত্রে প্রয়োজন মেটানোর জন্য জাপান পা বাড়াতে পারে বলেও উল্লেখ করেন। এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টর এই প্রথম জাপানের কাছে স্বীকৃতি পেলো। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আমরা দুই দেশের প্রাইভেট সেক্টরে নতুন নতুন বিনিয়োগের পথ খুঁজতে পারব। জাপান সফরের শেষ দিন রোববার স্থানীয় সময় বিকেলে টোকিওর ইমপেরিয়াল হোটেলে সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া ‘নাগরিক সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আপনাদের একটা বড় অবদান রয়েছে। আপনাদের রেমিট্যান্স আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। উল্লেখ্য, জি-সেভেন জোটের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তিও রেনজি এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে নিজে আউটরিচ মিটিংয়ে অংশ নেন। পাশাপাশি আঞ্চলিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনার জন্য জোটের বাইরে থেকে বিভিন্ন দেশকে আলাদা বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। একেই বলা হচ্ছে জি-সেভেন আউটরিচ মিটিং। এবার বাংলাদেশের পাশাপাশি এশিয়া থেকে লাওস, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, পাপুয়া নিউ গিনি এবং আফ্রিকা থেকে শাদকে আউটরিচ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আমন্ত্রণে এসেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব, আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারপারসন এবং বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও আইএমএফের প্রধানরাও।

    টোকিও নগরীতে নতুন চ্যান্সারী ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ এখানে বাংলাদেশের নবনির্মিত চ্যান্সারী ভবন উদ্বোধনকালে আশা প্রকাশ করেছেন যে, বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার জাপানের সঙ্গে আমাদের বিশেষ সম্পর্ক দিনে দিনে আরো জোরদার হবে।
    তিনি বলেন, জাপান হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর অন্যতম এবং বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার। তাই, আমরা ঐতিহাসিক টোকিও নগরীর কেন্দ্রস্থলে আমাদের নিজস্ব একটি ঠিকানা পেয়ে নিঃসন্দেহে গর্বিত।

     

    বাংলাদেশ দুতাবাসের সামনে জাপান বি এন পি প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশ

    বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের বিরূদ্ধে টোকিওতে অবস্হিত বাংলাদেশ দুতাবাসের সামনে জাপান বি এন পি এক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।

    জাপান বিএনপি র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন ও সাধারন সম্পাদক মীর রেজাউল করিম রেজার নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সভায় বক্ত্যব রাখেন কাজী এনামূল হক, আলমগীর হোসেন মিঠু, ফয়সাল সালাহউদদীন , নুর খান রনি, কাজী সাদেকুল হক বাবলু, আবুল খায়ের, জাকির মাসুম, সিরাজুল হক সহ প্রমুখেরা।
    নানা রকম ব্যানার, ফেস্টুন, প্লে কার্ড সহ জাপান বিএন পির নেতাকমীরা এই বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।
    সমাবেশে নেতাকমীরা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেন। সমাবেশে বক্তারা শেখ হাসিনার জাপান সফরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগনের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি অবৈধভাবে প্রশাসনের মাধ্যমে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছেন। তারা অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের আহবান জানিয়ে বলেন, অন্যথায় তিনি যেখানে যাবেন সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। তারা বলেন,শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশে গনতন্ত্রের কবর রচনা করেছেন। আজ জনগনের ভোটের অধিকার নেই,গনমাধ্যমের সাধীনতা নেই,আইনের শাসন নেই। প্রতিদিন গুম, খুন, হত্যা, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, রাহাজানি সহ দুর্নীতি, দলীয়করনের মাধ্যমে বাংলাদেশে এক ভয়াবহ অবস্হা বিরাজ করছে।
    এই অবস্হায় তারা বাংলাদেশের সকল দেশপ্রেমিক জনগনকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃতে গনতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবার আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহবান জানান।
    এই প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ সমাবেশে জাপান বি এন পি এবং এর অংগ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকমী অংশগ্রহণ করেন।

    যে সময়গুলো নষ্ট হচ্ছে সেগুলোই আসল সময়: আবু আবদুর রহীম মুহাম্মাদ আবদুল মালেক

    এক এক মুহূর্তের সমষ্টিই তো জীবন। প্রতিটি মুহূর্ত সময়ের একটি অংশ। সময়ের আলাদা কোনো অস্তিত্ব যেহেতু মানুষ অনুভব করে না তাই সময়ের বয়ে চলাও অনুভূত হয় না।

    وإنا لفي الدنيا كركب سفينة * نظن وقوفا، والزمان بنا يجري

    আমরা দুনিয়ার বুকে যেন নৌকার যাত্রী। মনে হয়, ঠাঁয় দাঁড়িয়ে। অথচ সময় আমাদের নিয়ে বয়ে চলেছে।

    নৌকা কিংবা গাড়ির আরোহী কোথাও যাওয়ার সময় মনে করেÑ সে বসে আছে। অথচ সে চলছে। ঠিক তেমনি সময়ও তার কাজ করে চলেছে। সময় শেষ হয়েই যায়। বয়স বাড়ার অর্থ জীবন কমে যাওয়া। অথচ আমরা একটুও ভাবি না। আমাদের অবস্থা হল, কবির ভাষায়-

    الوقت أنفس ما عُنِيت بحفظه * وأراه أسهل ما عليك يضيع

    সংরক্ষণ করা যায় এমন বস্তুর মধ্যে সময় সবচেয়ে মূল্যবান/অথচ দেখছি, এটিই সবচেয়ে সহজে তোমার কাছে নষ্ট হচ্ছে।

    আমার শ্রদ্ধেয় আম্মাজান (হাফিযাহাল্লাহু ওয়া রাআহা) কে সব সময় দেখেছি, যোহরের পর থেকেই তিনি বলতে থাকেন, নামাযের সময় চলে যাচ্ছে! প্রথমদিকে আরয করতাম, এইমাত্র আপনি নামায পড়লেন!? তিনি বলতেন, আসরের নামাযের সময় চলে যাচ্ছে! ঘড়ির কাটা পাঁচের কোঠা পার হলেই বলতেন, ছ’টা বেজে গেছে। অথচ ডিজিটাল ঘড়িতে ৫টা ৫৯ মিনিট হলেও তা ৫ টাই থাকে। আর এমনটিই হল সাধারণ ধারণা!!

    রমযানুল মুবারক শুরু হয়। বুদ্ধিমানেরা আগে থেকেই মানসিক প্রস্তুতি নেয়, কর্মের প্রস্তুতি গ্রহণ করে, আলাদা নিযামুল আওকাত তৈরি করে। এরপর রমযানের শুরু থেকেই প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগায়। আর কিছু মানুষ প্রথম দশক পর্যন্ত মনে করে, কেবল তো রমযান শুরু হল। আর অধিকাংশ মানুষ তো প্রথম দুই-চার দিনেই তাদের সব আগ্রহ-উৎসাহ শেষ করে ফেলে। আর সকলের কাছেই শেষ দশক যেন রমযানের পরিশিষ্ট, মূল রমযান তো আগেই শেষ হয়ে যায়! এ কারণে শেষ দশক কাটিয়ে দেওয়া হয় ঈদের প্রস্তুতিতে। এ সময়ের প্রধান ব্যস্ততা থাকে কেনাকাটা, ঘুরে বেড়ানো ও বন্ধুদের সাথে আড্ডা। এই তো আমাদের অবস্থা!!

    কিন্তু আমাদের আকাবির কী করতেন? তাঁদের রমযান কেমন ছিল? শেষ দশক তারা কীভাবে কাটাতেনÑএসব তাদের জীবনী-গ্রন্থ থেকে পাঠ করা উচিত। শায়খুল হাদীস যাকারিয়া কান্ধলভী রাহ.-এর পুস্তিকা ‘আকাবির কা রমযান’ও অধ্যয়ন করা যেতে পারে।

    শেষ দশকের গুরুত্ব উপলব্ধির জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, এটিই হচ্ছে সুন্নত ইতিকাফের সময়। আর লায়লাতুল কদরেরও প্রবল সম্ভাবনা শেষ দশকেই হওয়ার। হাদীস শরীফে আছে, যে ব্যক্তি লায়লাতুল কদরের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়, সে তো সকল কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৬৪৪)

    সুতরাং শেষ দশককে যে নষ্ট করে সে প্রকৃতপক্ষে নিজের সব কল্যাণ বিসর্জন দেয়।

    উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বর্ণনা করেন –

    كان رسول الله صلى الله عيله وسلم يجتهد في العشر الأواخر ما لا يجتهد في غيره.

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ দশকে সবচেয়ে বেশি মেহনত করতেন। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৭৫

    তিনি আরো বলেন,

    كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا دخل العشر أحيا الليلَ، وأيقظ أهلَه، وجّدَّ وَشَدَّ المِئْزَرَ.

    শেষ দশক শুরু হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা রাত জাগতেন। পরিবারের লোকদেরকেও জাগাতেন। অনেক মেহনত করতেন। এমনকি কোমর বেঁধে নিতেন। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ২০২৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৭৪

    আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনÑ

    من صام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه، ومن قام ليلة القدر إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه.

    যে সওয়াবের আশায় রমযানের সওম আদায় করে তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর যে সওয়াবের আশায় লায়লাতুল কদরে জাগরণ করে তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ২০১৪

    আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বর্ণনা করেনÑ

    قال رسول الله صلى الله عيله وسلم : التمسوها في العشر الأواخر، يعني ليلة القدر، فإن ضعف أحدكم أو عجز فلا يُغْلَبَنَّ على السبع البواقي.

    তোমরা শেষ দশকে লায়লাতুল কদর অন্বেষণ কর। তোমাদের কেউ দুর্বল কিংবা অক্ষম হলে সে যেন অবশিষ্ট সাত রাতের বিষয়ে পরাজিত না হয়। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৫ (২৭৪১)

    অন্য বর্ণনায় তিনি বলেনÑ

    تّحَيَّنوا ليلة القدر في العشر الأواخر، أو قال : في التسع الأواخر.

    তোমরা শেষ দশ রাতে লায়লাতুল কদর তালাশ  কর। অথবা বলেছেন, শেষ নয় দিনে। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৫ (২৭৪৩)

    এই হাদীসের মতো অন্য অনেক হাদীস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, লায়লাতুল কদর নির্দিষ্ট কোনো রাতের নাম নয়, যে রাতে সবাই মসজিদে সমবেত হবে, কিছু কথা শুনবে, এরপর সম্মিলিতভাবে উচ্চস্বরে দুআ করে চলে আসবে!!

    লায়লাতুল কদর লাভের জন্য গোটা রমযান বিশেষ করে শেষ দশকে পূর্ণ প্রস্তুত থাকা উচিত এবং এর খোঁজে নিজেকে পূর্ণ মনোযোগী রাখা উচিত। নফল নামায, দুআ-যিকির, ইস্তিগফার, কুরআন তিলাওয়াত ও দরূদ শরীফ ইত্যাদি আমলে সময় কাটানো উচিত। যেন শবে কদরের বরকত হাসিল হয় এবং মাগফিরাতের নিআমত লাভ করা যায়।

    এজন্য প্রথম চেষ্টা হওয়া উচিত, শেষ দশকের ইতিকাফ। কমপক্ষে অধিকাংশ সময় মসজিদে ও ইবাদতে কাটানো। আর গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং অনর্থক কথা ও কাজ থেকে বেঁচে থাকা তো মুমিনের সবসময়ের কর্তব্য। রমযান মাসে বিশেষ করে শেষ দশকে তা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে।

    বর্তমান সময়ে সবচেয়ে অনর্থক ও অযথা যে কাজে এই মুবারক সময়টুকু নষ্ট করা হয় তা হল কেনাকাটা, ঘুরে বেড়ানো ও বন্ধুদের সাথে আড্ডা।

    আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে এর অভিশাপ থেকে রক্ষা করুন এবং রমযান থেকে তাকওয়ার নিআমত লাভ করার তাওফীক দান করুন। আমীন।