• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • ঝড়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে উড়ে গেল ভবন!

    যুক্তরাষ্ট্রের মেইনে অঙ্গরাজ্যের শতবর্ষী মৎস্য ইন্ড্রাস্টিজ ভবনটি দেশটির ঐতিহাসিক জায়গাগুলোর একটি। যুক্তরাষ্ট্রের এই ঐতিহ্যবাহী ভবনটি ঝড়ে উড়ে গিয়ে পড়েছে কানাডায়!
    ঝড়ের কারণে এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভবন উড়ে যাওয়ার এই ঘটনাটি বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করলেও প্রকৃত  ঘটনা হলো ভবনটি ছিল কানাডার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। ঝড়ের কারণে সেটি কয়েক মিটার দূরে গিয়ে পড়লেও আইনগতভাবে সেটি দেশের সীমানা পার হয়ে যায়।
    কানাডার নিউ ব্রুনসউইকের কোমপোবেলো দ্বীপের পানিতে গিয়ে পড়লে দেখা দেয় জটিলতা। আইনি জটিলতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র চাইলেও সেখান থেকে তুলে আনতে পারছে না ভবনটিকে।
    লুবেক ল্যান্ডমার্কের প্রেসিডেন্ট রেচেল রুবেয়র বলেন, কানাডার কিছু মানুষ এটিকে এখন নিজেদের সম্পদ হিসেবে দাবি করছে। কিন্তু উভয় দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।-এপি

    উত্তর কোরিয়া হুমকি নিয়ে জাপান এবং লিথুয়ানিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সংলাপ

    উত্তর কোরিয়ার পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি মোকাবেলায় পারষ্পরিক সহযোগিতার ব্যাপারে একমত হয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে এবং তার লিথুয়ানীয় প্রতিপক্ষ।

    তিনটি বাল্টিক রাষ্ট্র সফরের তৃতীয় ধাপে শনিবার মি: আবে লিথুয়ানিয়া এসে পৌঁছান।

    লিথুয়ানিয়ার প্রধানমন্ত্রী সউলাস স্কুয়াভনেলিসের সংগে এক বৈঠকে মি: আবে তাকে এই মর্মে সতর্ক করেন যে উত্তর কোরিয়া এমন ধরণের ব্যালিষ্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে যা লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াস পর্যন্ত পৌঁছুতে সক্ষম। তিনি উত্তর কোরিয়ার এই সক্ষমতাকে পুরো ইউরোপের জন্যই হুমকি রূপে বর্ণনা করেন।

    প্রত্যুত্তরে মি: স্কুয়াভনেলিস বলেন, ঐতিহাসিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভিত্তিতে লিথুয়ানিয়া জাপানের সাথে কৌশলগত মৈত্রী গড়ে তুলতে চায়।

    বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার উপর চাপ বৃদ্ধি করার বিষয়ে দু’নেতাই সম্মত হন। এছাড়াও অর্থনীতি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্যসেবার মত বিষয়ে পারষ্পরিক সহযোগিতা প্রসারের ইচ্ছাও তারা এসময় ব্যক্ত করেন।

    এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মি: আবে জোর দিয়ে বলেন, শান্তি এবং সমৃদ্ধির ভিত্তি হওয়া উচিত স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের মত মৌলিক মূল্যবোধগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের পাশাপাশি বিশ্বকে মুক্ত এবং অবাধ রাখার মধ্য দিয়ে।

    মি: আবে বলেন, উত্তর কোরিয়ার উপর চাপ আরও বৃদ্ধি করে নেয়াসহ উত্তর কোরিয়ায় জাপানি নাগরিক অপহরণের বিষয়ে লিথুয়ানীয় নেতার সংগে তার অর্থপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।

    পিয়াং ইয়াং এর প্রতি জাপানের অবস্থানকে এসময় পরিপূর্ণভাবে সমর্থন করেন মি: স্কুয়াভনেলিস। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি বজায় রাখার পাশাপাশি আঞ্চলিক শান্তি এবং নিরাপত্তার প্রতি হুমকি কিংবা উত্তেজনা সৃষ্টিকারী কোন কার্যক্রম হতে বিরত থেকেই পরমাণু কর্মসূচির উন্নয়ন ঘটানো উচিত।

    মহাকাশে ৩.৫ ইঞ্চি উচ্চতা বৃদ্ধি, ভুল তথ্যের জন্য জাপানি নভোচারীর দুঃখপ্রকাশ

    পৃথিবীর বাইরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে তিন সপ্তাহ থাকার পর ৯ সেন্টিমিটার বা ৩.৫ ইঞ্চি বেড়ে গেছেন, জাপানের একজন নভোচারীর এমন টুইটে ভুল রয়েছে উল্লেখ করে, সেজন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন ঐ নভোচারী। ফের টুইটেই নরিশিগে কানাই জানিয়েছেন, বস্তুত তার উচ্চতা বেড়েছিল দুই সেন্টিমিটারের মত। ভুলটিকে তিনি ‘মাপজোখের ভুল’ বলে বর্ণনা করেছেন।
    এক টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘এমন একটি ভুয়া খবর টুইট করার জন্য আমি খুবই দুঃখিত।’ কিন্তু মহাকাশে গিয়ে তার উচ্চতা নয় সেন্টিমিটার বাড়ার খবরে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। মহাকাশে যাওয়ার পর সাধারণত নভোচারীদের উচ্চতা গড়ে দুই থেকে পাঁচ সেমি বেড়ে যায়।
    এর কারণ মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অভাবে মানুষের মেরুদণ্ডের হাড় প্রসারিত হয়। তবে পৃথিবীতে ফেরার পর সেই বাড়তি উচ্চতা কমে নভোচারী স্বাভাবিক উচ্চতায় ফিরে আসেন। জাপানী ভাষায় করা টুইটে কানাই প্রথমে জানিয়েছিলেন, ‘সবাইকে সুপ্রভাত। আমি একটি বড় ঘোষণা দিতে চাই। মহাকাশে আমাদের উচ্চতা মাপা হয়েছে। ওয়াও, আমি ৯ সেমি লম্বা হয়ে গেছি। আমি যেন লতার মত বেড়ে গেছি। স্কুলের পর এমন হয়নি। আমার ভয় হচ্ছে ফেরার সময় সয়্যূজে আমি আঁটবো কিনা।’
    কিন্তু পরে তিনি আরেক টুইটে জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে তার কমান্ডার অ্যান্টন শাকাপ্লেরভ তার উচ্চতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করনে। এরপরই তিনি দ্রুত আরেকবার নিজের উচ্চতা পরিমাপ করেন। তখন দেখতে পান নিজের উচ্চতার চেয়ে মাত্র দুই সেন্টিমিটার বেড়েছেন তিনি। নিজের টুইটে একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এটি তাহলে একটি ‘মাপজোখের ভুল।’ বিবিসি।

    জাপানী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মিয়ানমারের রোহিঙ্গা গ্রাম পরিদর্শন

    জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারোও কোওনো, রোহিঙ্গা মুসলমানদের দেশে প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমারের প্রস্তুতি প্রত্যক্ষ করতে দেশটির পশ্চিমাঞ্চল সফর করেছেন।

    মিঃ কোওনো, ভিন্ন কোন দেশের প্রথম মন্ত্রী হিসেবে আজ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারে চড়ে রাখাইন রাজ্যে গিয়ে পৌঁছান।

    গতবছর রোহিঙ্গা জঙ্গি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ আরম্ভ হওয়ার পর থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।

    প্রায় ১ হাজার রোহিঙ্গার বসবাস থাকা গ্রামটিতে মিঃ কোওনোর কাছে মিয়ানমারের সরকারী কর্মকর্তারা, সংঘর্ষের সময় পুড়িয়ে দেয়া বাড়িঘরগুলোর পুনর্নির্মাণ প্রচেষ্টার বিষয়ে ব্যাখ্যা করেন।

    তিনি, গ্রামবাসীদের কাছে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা সম্পর্কে শোনেন।

    এরপর মিঃ কোওনো, বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত থাকা এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি, রোহিঙ্গা শরনার্থীদের দেশে ফেরার সময় ব্যবহার করতে যাওয়া নদীর উপর স্থাপিত একটি সেতু এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার একটি সরকারী স্থাপনা পরিদর্শন করেন।

    সাংবাদিকদের কাছে মিঃ কোওনো, অধিকাংশ বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি, পরিস্থিতি খুবই মারাত্মক এবং প্রত্যাবর্তনকারী শরণার্থীদের জীবনযাত্রার পুনর্গঠনে সহায়তা করতে অনেক কাজ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন।

    তিনি, বিভক্ত সমাজগুলোর পুনর্মিলনে সহায়তা করতে জাপান সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করবে বলে জানান।

    মহাকাশে গিয়ে ৯ সেন্টিমিটার উচ্চতা বাড়ল নভোচারীর

    জাপানের একজন নভোচারী জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে তিন সপ্তাহ থাকার পর তার উচ্চতা ৯ সেন্টিমিটার (৩ দশমিক ৫ ইঞ্চি) বেড়ে গেছে। নরিশিগে কানাই সোশ্যাল মিডিয়াতে তার পাতায় লিখেছেন তিনি এখন ভয় পাচ্ছেন জুনে ভূপৃষ্ঠে ফেরার সময় রাশিয়ার সয়্যূজ নভোযানে তিনি আঁটবেন কিনা। মহাকাশে যাওয়ার পর নভোচারীদের উচ্চতা গড়ে দুই থেকে পাঁচ সেমি বেড়ে যায়।
    মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অভাবে মানুষের মেরুদণ্ডের হাড় প্রসারিত হওয়ায় এই উচ্চতা বাড়ে। তবে পৃথিবীতে ফেরার পর সেই বাড়তি উচ্চতা কমে নভোচারী স্বাভাবিক উচ্চতায় ফিরে আসেন।
    টুইটারে মি কানাই লিখেছেন, ‘সবাইকে সুপ্রভাত। আমি একটি বড় ঘোষণা দিতে চাই। মহাকাশে আমাদের উচ্চতা মাপা হয়েছে। ওয়াও, আমি ৯ সেমি লম্বা হয়ে গেছি। আমি যেন লতার মত বেড়ে গেছি। স্কুলের পর এমন হয়নি। আমার ভয় হচ্ছে ফেরার সময় সয়্যূজে আমি আঁটবো কিনা।’
    জাপানি এই নভোচারীর উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি কেন বেড়েছে? এই প্রশ্নে ব্রিটেনের একজন মহাকাশ বিজ্ঞানী লিবি জ্যাকসন বলছে, ‘৯ সেমি বেশ বেশি, কিন্তু এটা সম্ভব। একেক মানুষের শরীরের গঠন একক রকম।’
    নরিশিগে তানাই প্রথম কোনো জাপানি যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে গেলেন।

    ১ বছরের ছোট-বড় যমজ ভাই-বোন!

    যমজ ভাই-বোনরা সাধারণত একই সাথে পৃথিবীর আলো দেখে। কখনো কখনো জন্মের ব্যবধান কয়েক মিনিটও হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার এক যমজ ভাই-বোনের বয়সের পার্থক্য দাঁড়িয়েছে পুরো এক বছর!
    অবিশ্বাস্য মনে হলেও প্রকৃত ঘটনা হলো ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি ১১.৫৮ মিনিটে প্রথমে জন্ম নেয় ছেলে শিশু জোকুইন জুনিয়র অন্তিভারোস। তার জন্মের আঠারো মিনিট পরে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি ১২.১৬ মিনিটে জন্ম হয় তার বোন আইতানা দি জেসাস অন্তিভারোসের।
    তাদের মা মারিয়া এসপারেনজা ফ্লোরেস রাইসের ডেলিভারির তারিখ ছিল এ বছরের ২৭ জানুয়ারি। কিন্তু নতুন বছরের প্রাক্কালে প্রসব বেদনা ওঠার পরই হাসপাতালে চলে আসেন তারা। দুই সন্তানের জন্ম সাল ভিন্ন হলেও তাতে মোটেও অখুশি নন তাদের বাবা-মা। বিরল এই ঘটনার সাক্ষী হওয়ার পাশাপাশি তাদের জন্য আরো একটি চমক অপেক্ষা করছিল।
    ২০১৮ সালের প্রথম শিশু জন্ম দেওয়ার জন্য হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী তিন হাজার ডলার উপহারও পেয়েছেন তারা।

    শিশুর ডিএনএ থেকে জানা গেল প্রথম আমেরিকানদের ইতিহাস

    আমেরিকা মহাদেশে মানুষের আগমন কিভাবে ঘটেছিল সে সম্পর্কে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। আর সেটি এসেছে ১১ হাজার ৫০০ বছর আগের এক কন্যা শিশুর মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষা করে।
    পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে জানা যাচ্ছে, শিশুটি প্রাচীন এক নরগোষ্ঠীর সদস্য, যে গোষ্ঠীর পরিচয় সম্পর্কে আগে জানা যায়নি।
    বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ডিএনএ পরীক্ষা থেকে এখন জানা যাচ্ছে, ২০ হাজার বছর আগে সাইবেরিয়া থেকে এক ঝাঁক মানুষ প্রথমবারের মতো আমেরিকা মহাদেশে অভিবাসন করেছিলেন। এশিয়া এবং আমেরিকার মাঝামাঝি বেরিং প্রণালীতে তখন সমুদ্রের গভীরতা কম ছিল এবং দুই মহাদেশের মধ্যে স্থলপথের যোগাযোগ ছিল বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। অধ্যাপক এস্কে উইলারস্লেভ এবং তার গবেষক সঙ্গীরা মনে করেন, এরাই বর্তমানের নেটিভ আমেরিকানদের পূর্বপুরুষ।
    ছয়-বছর বয়সী এই মেয়ে শিশুটির কঙ্কাল ২০১৩ সালে আপওয়ার্ড সান রিভার প্রত্নতাত্ত্বিক খননের জায়গায় খুঁজে পাওয়া যায়। স্থানীয় আদিবাসীরা এই শিশুটির না দিয়েছে: ‘শাচিতিয়ানেহ্ টিডেগে’ অর্থাৎ শিশু কিরণময়ী। বিবিসি বাংলা।

    ফের উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন

    ৫ জানুয়ারি ঘিরে দুই দলের কর্মসূচি

    ঢাকায় দু’টি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ : এখনো অনুমতি পায়নি বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশের প্রস্তুতি ৫ জানুয়ারি। ২০১৪ সালে এই দিনে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখনো দেশ-বিদেশে চলছে বিতর্ক। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে প্রতিবছর দেশের বড় দুই দল দিবসটি পালন করে বিপরীত মেরু থেকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দিবসটি পালন করে ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ হিসেবে। আর মাঠের বিরোধী দল বিএনপি দিবসটি পালন করে ‘গণতন্ত্র হত্যা’। ২০১৫ সালে দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বাধা দেয়ায় টানা ৯২দিন হরতাল-অবরোধ হয়েছে।
    সেই ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠছে রাজনৈতিক অঙ্গন। ওইদিন নিজ নিজ দলীয় কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। বিএনপির বর্জন ও বিরোধীতার মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে ১৫৩ আসনে বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। যে আসনগুলোতে ভোট হয়েছে সেখানেও ভোটারদের উপস্থিতি ছিল সামান্যই। সংবিধান রক্ষার বাধ্যবাধকতা থেকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর সরকার গঠন করে দিনটিকে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করছে দলটি। অন্যদিকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। ওই নির্বাচনে গণতন্ত্র হত্যা হয়েছে উল্লেখ করে দিনটিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে তারা। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকেই ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজনৈতিক অঙ্গন। দিনটিতে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়ায় প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। কখনো একই স্থানে সমাবেশ করার ঘোষণা, কখনো বা পাশাপাশি স্থানে সমাবেশ করতে চাইলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীসহ সারাদেশেই। দুই দলের মুখোমুখি অবস্থানে সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষেরাও।
    বিগত দিনগুলোর মতো এবারও একই দিনকে পৃথক দিবস হিসেবে পালন করতে মাঠে নামছে দল দুটি। গতবার একই স্থানে কর্মসূচি পালন করতে চাইলেও এবার পৃথক পৃথকভাবে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দলের নেতারা। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করতে চাইলেও সেখানে অনুমতি পাচ্ছে না বিএনপি। ইতোমধ্যে সেখানে ইসলামিক ইউনাইটেড পার্টিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। তবে আশা ছাড়ছেনা বিএনপি। গতকাল পর্যন্তও বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কোন কারণে সোহরওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না দিলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। সেখানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে চিঠিও দেয়া হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে।
    অন্যদিকে ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বিজয় দিবসে রাজধানীতে দুটি স্থানে সমাবেশ পালন করবে আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর উত্তর সমাবেশ করবে বনানী খেলার মাঠে। ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সমাবেশ করবে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে। এই সমাবেশেও প্রধান অতিথি থাকবেন ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র নেতারা এ জনসভায় বক্তব্য রাখবেন বলে জানিয়েছেন মহানগর দক্ষিণের নেতারা।
    বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়, ৫ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশ করতে চায় তারা। সমাবেশের জন্য ২ জানুয়ারি গৃহায়ন ও পূর্ত মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চাওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপির আগেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য চাওয়ায় ইসলামিক ইউনাইটেড পার্টিকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে বিএনপি এটিকে সরকারের হীন পরিকল্পনার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই উল্লেখ করেছে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপিকে ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করার জন্য এখনো অনুমতি দেয়নি পুলিশ। গণমাধ্যম সুত্রে জানতে পারলাম সেখানে ৫ জানুয়ারি একটি অখ্যাত ও অজানা একটি দলকে নাকি অনেক আগেই জনসভার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপির মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের বিশেষ করে যে দলটি জনগণের ভোটে বার বার ক্ষমতায় থেকেছে, যে দলটি বাংলাদেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিত্ব করে, সে দলটির আবেদনকে পাশ কাটিয়ে অনেক আগেই অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে পুলিশ যে কথা বলছে সেটি সরকারের হীন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ। এটি সরকারের হিংসাপরায়ণ নীতির একটি অংশ। তবে কোন কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ না পেলে নয়াপল্টনেও সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি আমরা। বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পেলে সেখানে সমাবেশ করবে। তা না হলেও নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমাবেশের প্রস্তুতি আছে। এই সমাবেশে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন বলে তারা জানান। এজন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিকল্প হিসেবে নয়াপল্টনের সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ইতোমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
    রিজভী বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে চাই-সরকার বিএনপি’র গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি সম্মান জানাবে। সমাবেশের অনুমতি দিয়ে বিএনপিকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের সুযোগ করে দিবে। যদি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না দেয়া হয় তাহলে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আগামী ৫ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি দেয়ার আহবান জানাচ্ছি।

    টোকিও অলিম্পিক প্রস্তুতি জোরদার

    ২০২০ সালের অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিকের প্রস্তুতি জোরদার করে নিচ্ছে টোকিও পৌরসরকার।

    অলিম্পিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের মাত্র দুই বছর সময় হাতে থাকায় টোকিও সরকার কয়েকটি নতুন স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে দেয়ার পরিকল্পনা করছে।

    একই সাথে বিদ্যমান স্থাপনাগুলোকে সংস্কারের পরিকল্পনা করছে তারা। এর মধ্যে শিবুইয়া ওয়ার্ডের একটি জিমখানা অর্ন্তভুক্ত রয়েছে। টেবিল টেনিস খেলার স্থান হিসাবে একে ব্যবহার করা হবে। কোতো ওয়ার্ডের একটি সাঁতার কেন্দ্রও এতে অর্ন্তভুক্ত যেখানে ওয়াটার পোলো ক্রীড়া অনুষ্ঠিত হবে।

    কর্মকর্তারা বলছেন যে জুলাই মাস থেকে জিমখানাটি বন্ধ রাখা হবে। নভেম্বর মাসের শেষ নাগাদ সাঁতার কেন্দ্রটি বন্ধ করা হবে যাতে করে সংস্কারের কাজ এগিয়ে নেয়া যায়।

    অলিম্পিক ক্রীড়া স্থানে পৌঁছানোর জন্য দুই নম্বর রিং রোডটি হবে প্রধান এক প্রবেশ রাস্তা। তবে সুকিজি মাছের বাজার স্থানান্তরকরণে বিলম্ব হওয়ায় নির্মাণ সময়সূচী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

    কর্মকর্তারা বলছেন যে ক্রীড়া চলাকালীন ক্রীড়াবিদদের পরিবহন এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের মোতায়েনের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হবে।

     

    নতুন বছরে মঙ্গল কামনায় জাপানিরা

    নতুন বছর উপলক্ষ্যে মধ্য টোকিওর একটি শিনতো মন্দিরে ২০১৮ সালকে ঘিরে শুভ কামনার জন্য অসংখ্য প্রার্থনাকারীর ভিড় লক্ষ্য করা যায়। মধ্যরাতে ঘড়ির কাটা স্পর্শ করার আগেই এসব প্রার্থনাকারী মেইজি জিংগু মন্দিরে সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করতে থাকেন।

    নতুন বছরের আগমনী ঘণ্টা বেজে উঠার সঙ্গে সঙ্গেই পুণ্যার্থীরা বেড়া দেয়া নির্ধারিত স্থানে অর্থকরী নিবেদন এবং প্রার্থনা করেন।

    পরিদর্শনকারীরা সেখান থেকে বিভিন্ন মাঙ্গলিক সামগ্রী কিনে আনতে পারেন এবং ভাগ্য লেখা চিরকুট দেখতে পারেন।

    মেইজি জিংগু মন্দিরের কর্মকর্তারা বলেন, নতুন বছরের প্রথম ৩ দিনে ৩০ লাখ পুণ্যার্থীর আগমন ঘটবে বলে তারা ধারণা করছেন। এই সংখ্যা নতুন বছরের সময় জাপানের অন্যান্য যে কোন শিনতো বা বৌদ্ধ মন্দিরে যাওয়া পুণ্যার্থী সংখ্যার চেয়ে বেশি বলে মনে করা হয়।

    আমাদের রাজ্য শাসন-২০

    হযরত আলী রা.

    হযরত উসমান রা.-এর শাহাদতের পর সাহাবীগণ হযরত আলী রা.-কে খলীফা নিযুক্ত করেন। সে সময় মদীনায় বিদ্রোহীদের একচ্ছত্র প্রভাব ছিল। তাদের প্রতিহত করার কেউ ছিল না। এরাও হযরত আলী রা.-এর সাথে যোগ দেয়। কিন্তু তাদেরকে বের করে দেওয়ার শক্তি তাঁর ছিল না। ফলে তিনি তাদের ব্যাপারে নীরব থাকলেন।

    খেলাফত লাভের পর হযরত আলী রা. কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হলেন। লোকেরা তাঁর কাছে হযরত উসমান রা.-এর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করত। হযরত আলী রা.-এরও এমনটি ইচ্ছা ছিল। কিন্তু বিদ্রোহীরা চারপাশে এমনভাবে ছড়িয়ে ছিল যে, তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা তো দূরের কথা, মুখে কিছু বলাও কঠিন ছিল। তাই তিনি তাদেরকে বোঝাতে লাগলেন, একটু অপেক্ষা কর। অবস্থার একটু পরিবর্তন হলেই বিদ্রোহীদের দেখে নেওয়া হবে। কিন্তু কিছু মানুষ আলী রা.-এর অপারগতা বুঝল না বা বুঝতেই চাইল না। ফলে তাদের পিড়াপিড়ি ধীরে ধীরে বাড়তেই লাগল। আর হত্যাকারীরা যেহেতু আলী রা.-এর দলে যোগ দিয়েছে এজন্য কেউ কেউ এই ধারণা করতে লাগল যে, আলী রা. কিসাসের ব্যাপারে টালবাহানা করছেন। তারা মক্কায় গিয়ে হযরত আয়েশা রা.-কে বলল, হযরত উসমান রা.-কে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অথচ কেউ তার হত্যার প্রতিশোধ নিচ্ছে না। এ কথা শুনে হযরত আয়েশা রা. বড়ই কষ্ট পেলেন এবং হযরত তালহা ও যুবায়ের রা.-কে সাথে নিয়ে নিজেই হযরত উসমান রা.-এর হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য রওনা হয়ে গেলেন।

    হযরত আলী রা. পরস্পরে ঝগড়া-বিবাদ পছন্দ করতেন না। কিন্তু এহেন পরিস্থিতিতে আর কীইবা করার ছিল। একদিকে হত্যকারীরা ছিল তার আয়ত্তের বাইরে। অন্যদিকে হযরত আয়েশা রা. ও অন্যরা হত্যাকারীদের প্রতিশোধ নিতে উৎসাহী ছিলেন।

    মোটকথা, উভয়পক্ষের সৈন্যরা বসরার দিকে অগ্রসর হল। বসরা ছিল আরবের সবচেয়ে বড় সেনাছাউনি। উভয় পক্ষ মুখোমুখি হওয়ার পর প্রথমে সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া হল। যেহেতু উভয় পক্ষেরই নিয়ত সঠিক ছিল এজন্য দ্রুতই বিষয়টির সুরাহা হয়ে গেল। উভয় পক্ষের লোকেরা রাতের বেলা নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ল। কিন্তু সাবায়ীরা মুসলমানদের ঐক্য ও সমঝোতা কীভাবে মেনে নিতে পারে? তাছাড়া তাদের বড় আশঙ্কা ছিল যে, যদি পরস্পর সমঝোতা হয়ে যায় তবে তাদের ক্ষতি হয়ে যাবে। এজন্য তারা সিদ্ধান্ত নিল কোনোক্রমেই যেন সমঝোতা পূর্ণতা না পায়। তাই রাতে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়ল তখন সাবায়ীরা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিল যে, তাদের কিছু লোক হযরত আলী, হযরত যুবায়ের, হযরত তালহা, হযরত আয়েশা রা.-এর তাঁবুর আশপাশে অবস্থান নিবে। আর বাকিরা উভয় পক্ষের লোকদের উপর আক্রমণ করবে। যখন চারদিকে শোরগোল শুরু হবে আর হযরত আলী রা. অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইবেন তখন তাকে বলা হবে যে, হযরত আয়েশা রা.-এর সৈন্যরা হামলা করেছে। তেমনিভাবে যখন হযরত আয়েশা রা. কিংবা হযরত তালহা ও যুবায়ের রা. জানতে চাইবেন তখন বলা হবে, হযরত আলী রা.-এর সৈন্যরা আক্রমণ করেছে। এভাবে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেধে যাবে।

    জঙ্গে জামাল

    সাবায়ীদের বৈঠকে উপরোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহিত হওয়ায় তারা সবাই বেশ সন্তুষ্ট হয় এবং ভোর হওয়ার আগেই তারা উভয় দলের উপর আক্রমণ করে বসে। আলী রা. জানতে চাইলে তারা বলে, হযরত আয়েশা রা.-এর লোকেরা আক্রমণ চালিয়েছে। আর হযরত আয়েশা রা. জানতে চাইলে বলে, হযরত আলী রা.-এর লোকেরা আক্রমণ করেছে। যার ফলাফল এই দাঁড়াল যে, উভয় পক্ষের লোকেরা ক্রোধান্বিত হল এবং সকাল হওয়ার সাথে সাথেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হল। সারাদিন উভয় পক্ষের মাঝে তুমুল লড়াই চলল। অবশেষে যখন শামের নিকটে হযরত আয়েশা রা.-এর উষ্ট্রী মারাত্মক আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল তখন সংঘর্ষ শেষ হল। কিন্তু এতক্ষণে প্রায় দশ হাজার মানুষের প্রাণ ঝরে গেল। হযরত তালহা রা. ও হযরত যুবায়ের রা.ও শাহাদত বরণ করলেন।

    আমর ইবনে জুরমুযান হযরত যুবায়ের রা.-এর মাথা কেটে আলী রা.-এর সামনে রাখল। সে ভেবেছিল, হয়ত এ কারণে তাকে অনেক পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত করা হবে। কিন্তু হযরত আলী রা. তা দেখেই কেঁদে উঠলেন এবং বললেন, যুবায়ের-এর হত্যাকারীকে জাহান্নামের সুসংবাদ দিয়ে দাও।

    সংঘর্ষ শেষ হওয়ার পর হযরত আলী রা. হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট উপস্থিত হলেন এবং পরস্পরে মীমাংসা করে নিলেন। এরপর হযরত আয়েশা রা. মদীনা অভিমুখে রওনা হলেন। বিদায়ের সময় হযরত আলী রা. নিজে কয়েক মাইল পর্যন্ত সাথে গেলেন এবং হযরত হাসান ও হযরত হুসাইন রা.-কে নিরাপত্তার জন্য হযরত আয়েশা রা.-এর সাথে মদীনায় পাঠিয়ে দিলেন।

    টীকা : উটের আরবী শব্দ হল জামাল। এ কারণে এই যুদ্ধকে জঙ্গে জামাল বলা হয়।

    (অনুবাদ : আবদুল্লাহ ফাহাদ)

    মহাশূন্যে ভাসমান অ্যাপার্টমেন্ট

    পৃথিবীর সব মানুষের কাছেই নিজের ঘর সবচেয়ে সুখের জায়গা। কিন্তু প্রতিদিন একই বাড়িতে থাকতে থাকতে একঘেয়েমি চলে আসাটা স্বাভাবিক। এই একঘেয়েমি জীবন থেকে মুক্তি দিতে নতুন আবাসস্থল নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন একদল স্থপতি। ক্লাউড আর্কিটেকচার অফিসের একদল স্থপতি এমনই এক অভিনব ভাসমান অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির পরিকল্পনা করছেন। মূলত ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই তারা এমনটা চিন্তা করছেন। সব থেকে অবাক বিষয়, মহাশূন্যে ভাসমান এই অট্টালিকা এক জায়গায় স্থির থাকবে না। পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণরত স্যাটেলাইটের মতো এটি ঘুরে বেড়াতে সক্ষম হবে। মূলত মহাশূন্যের একটি কক্ষপথে স্থাপন করা হবে বিশেষ এই ভাসমান অট্টালিকাটি। এই ভাসমান অট্টালিকার নাম রাখা হয়েছে ‘অনালেমা টাওয়ার’। ভাসমান এই টাওয়ারটি তৈরি করা হবে দুবাইতে।

    মহাশূন্যে ভাসমান অট্টালিকা তৈরির জন্য বিজ্ঞানীরা একটি দৈত্যাকার গ্রহাণুকে কাজে লাগানোর কথা ভাবছেন। পৃথিবীর বাইরে কক্ষপথে পরিভ্রমণ করা এই গ্রহাণুটির নিচে জোর করে আটকে দেওয়া হবে সেই ভাসমান অট্টালিকাটি। কেন্দ্রাপসারী ভূ-তাত্ক্ষণিক কক্ষপথে পরিভ্রমণরত এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর উত্তর থেকে দক্ষিণ গোলার্ধ চলাচল করবে। অন্যভাবে বললে নিউ ইয়র্ক থেকে দুবাই সব জায়গাই ঘুরে বেড়াতে সক্ষম ভাসমান এই অট্টালিকাটি। অনালেমা টাওয়ারের ডিজাইনার অসতাপ রুদাকেভিচ বলেন, এই অ্যাপার্টমেন্টটি তৈরিতে গতানুগতি ইট-পাথর ব্যবহার না করে কার্বন ফাইবার এবং অ্যালুমিনিয়ামের মতো তুলনামূলক হালকা এবং টেকসই উপাদান ব্যবহার করা হবে। আর গ্রহাণুটির নিচে টাওয়ারটিকে  আটকে রাখা হবে শক্তিশালী তারের সাহায্যে। টাওয়ারের বিদ্যুত্ থেকে শুরু করে সব ধরনের জ্বালানির জন্য সোলার সিস্টেমকে কাজে লাগানো হবে। আর পানির সমস্যা মিটাতে কাজে লাগানো হবে মেঘ এবং বৃষ্টির পানিকে। ঘণ্টায় ৩০০ মাইল বেগে আকাশে ছুটে বেড়াবে টাওয়ারটি। ভাসমান টাওয়ারটির বাসিন্দারা যাতে একই সাথে পৃথিবীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারেন সে ব্যবস্থাও রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের মতে, এটি সফল হলে ভবিষ্যতে পৃথিবীর বদলে মহাশূন্যেই গড়ে উঠবে এই ধরনের আরো অনেক অ্যাপার্টমেন্ট।-সিএনএন

    হিংসা : চুলার আগুন যেমন

    মানবেতিহাসের শুরুর দিককার কথা। পৃথিবীতে মানব পরিবার বলতে তখনো কেবলই হযরত আদম আলাইহিস সালামের পরিবার। হযরত হাওয়া রা.-এর সঙ্গে তাঁর সংসার। তাঁদের সন্তান জন্ম নিত জোড়ায় জোড়ায়Ñএক ছেলে এক মেয়ে। তাদের জন্যে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিশেষ নিয়ম ছিল এমনÑজমজ ভাইবোন পরস্পর বিয়ে করতে পারবে না। যাদের জন্ম আগে-পরে, তারা একে অন্যকে বিয়ে করতে পারবে। হযরত আদম আলাইহিস সালামের দুই ছেলের নাম ছিল হাবীল ও কাবীল। কাবীলের সঙ্গে যে বোনের জন্ম হয় সে ছিল অধিক সুশ্রী। তাই নিয়ম ভেঙ্গে কাবীল তাকেই বিয়ে করতে চায়। আর নিয়ম টিকিয়ে তাকে বিয়ে করতে আগ্রহী ছিল হাবীলও। দ্বন্দ্ব নিরসনে তাদেরকে কুরবানী করতে বলা হল। যার কুরবানী কবুল হবে সে-ই তার উক্ত বোনকে বিয়ে করতে পারবে। এর পরের কাহিনী পবিত্র কুরআনের ভাষায়Ñ

    اِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ اَحَدِهِمَا وَ لَمْ یُتَقَبَّلْ مِنَ الْاٰخَرِ قَالَ لَاَقْتُلَنَّكَ قَالَ اِنَّمَا یَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِیْنَ  لَىِٕنْۢ بَسَطْتَّ اِلَیَّ یَدَكَ لِتَقْتُلَنِیْ مَاۤ اَنَا بِبَاسِطٍ یَّدِیَ اِلَیْكَ لِاَقْتُلَكَ  اِنِّیْۤ اَخَافُ اللهَ رَبَّ الْعٰلَمِیْنَ…

    যখন তারা উভয়ে কুরবানী করেছিল, কিন্তু তাদের একজনের পক্ষ থেকে তা কবুল করা হল এবং অপরজনের পক্ষ থেকে কবুল করা হয়নি। সে বলল, আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। অপরজন বলল, আল্লাহ তো মুত্তাকীদের থেকেই কবুল করে থাকেন। তুমি যদি আমাকে হত্যা করার জন্যে আমার দিকে তোমার হাত বাড়িয়ে দাও, তবুও আমি তোমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তোমার দিকে আমার হাত বাড়াব না। আমি অবশ্যই বিশ্বজগতের প্রভু আল্লাহকে ভয় করি। অবশ্যই আমি চাই, তুমি আমার পাপ এবং তোমার পাপ বহন কর, এরপর তুমি দোজখিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। আর এটাই জালেমদের শাস্তি। অবশেষে তার মন তাকে ভাই-হত্যার বিষয়ে প্ররোচিত করল, এরপর সে তাকে হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে। Ñসূরা মায়িদা (৫) : ২৭-৩০

    পবিত্র কুরআনের বর্ণনানুসারে, এই হচ্ছে পৃথিবীতে সংঘটিত প্রথম হত্যাকা-। পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম অপরাধ। প্রথম এই হত্যাকা-ের পেছনের কারণও আমরা উপরোক্ত আয়াতসমূহে দেখতে পাই, ‘তোমার কুরবানী কবুল হয়েছে আর আমারটি হয়নি’Ñএই চিন্তা থেকেই কাবীলের মনে হিংসা জমাট বাঁধতে থাকে আর এর পরিণতিতেই সে তার ভাই হাবীলকে হত্যা করে। যে হিংসা মানুষকে দিয়ে পৃথিবীতে পাপের সূচনা করাল, সে-ই হিংসা জগতে আরও কত শত-সহ¯্র অনিষ্ট ঘটিয়েছে তার হিসাব কে জানে!

    ইতিহাসের আরও পেছনের পাতায় আদম আলাইহিস সালামকে সিজদা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ইবলিসের যে ঔদ্ধত্য ও অহংকারের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, উল্লেখিত হয়েছে তার অভিশপ্ত হওয়ার কথা, তার মূলেও তো একই হিংসা। কুরআনের ভাষায়Ñ

    قَالَ اَرَءَیْتَكَ هٰذَا الَّذِیْ كَرَّمْتَ عَلَیَّ.

    সে বলল, দেখুন তো, এই কি সেই সৃষ্টি, যাকে আপনি আমার ওপর মর্যাদা দান করেছেন? Ñসূরা ইসরা (১৭) : ৬২

    ফলাফল তো এইÑআকাশের প্রথম অপরাধ আর জমিনের প্রথম অপরাধ সবটার মূলেই এই হিংসা। এর জঘন্যতা তাই আর বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রশ্ন হল, হিংসা কী?

    হিংসা হচ্ছে অন্যের ভালো কোনো কিছু দেখে তা ধ্বংস হওয়া বা হারিয়ে যাওয়ার কামনা করা। কেউ ভালো পথে চলতে থাকলে কিংবা ভালো কোনো কাজ করতে গেলে সেখান থেকে সে ফিরে আসা, বাধাগ্রস্ত হওয়া কিংবা ব্যর্থ হওয়ার কামনা করা। এগুলোই হিংসা। এসব হচ্ছে হিংসার প্রথম ধাপ। এর একটা পর্যায় অবশ্য মানুষের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। অনেকটাই সৃষ্টিগত ও স্বভাবজাত। আল্লাহ তাআলা তো বলেই দিয়েছেনÑ

    وَ اُحْضِرَتِ الْاَنْفُسُ الشُّحَّ.

    মানুষকে কৃপণতাপ্রবণ করেই সৃষ্টি করা হয়েছে। Ñসূরা নিসা (৪) : ১২৮

    এ কৃপণতার প্রভাবে মানুষ যেমন অন্য কাউকে নিজের সম্পদ দিতে চায় না, ঠিক এ কার্পণ্যের কারণেই ‘অন্য কেউ ভালো অবস্থায় থাকুক’Ñএটা সে মেনে নিতে চায় না। মানুষের একটি স্বাভাবিক স্বভাব হচ্ছে, সে অবচেতনভাবেই কামনা করেÑসকল ভালো জিনিস তার কাছে এসে একত্রিত হোক, যাবতীয় অর্থ সম্মান প্রভাব-প্রতিপত্তি তার হাতে চলে আসুক ইত্যাদি। এ কামনার জন্যেই তো তার চাহিদা সবসময় ঊর্ধ্বমুখী। চাওয়া শেষ হয় না কখনো। এক চাহিদা পূর্ণ হল তো আরেক চাহিদা এসে হাজির। এক লক্ষ্য অর্জিত হল তো আরেক লক্ষ্যের পেছনে অবিরাম ছুটে চলা। এটা স্বাভাবিকতা। এখান থেকেই জন্ম নিয়ে থাকে হিংসাÑএ সম্মান কিংবা এ পদ অথবা এত এত অর্থ আমার কাছে না এসে তার কাছে কেন? তা আমার কাছে চলে আসুক। তা যদি না হয় কমপক্ষে তার কাছ থেকে হারিয়ে যাক। এটাই হিংসা।

    পবিত্র কুরআনের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে বনী ইসরাঈল তথা ইহুদী-খ্রিস্টানদের আলোচনা। জাতি হিসেবে তাদের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ। তাদেরকে আল্লাহ তাআলা দান করেছিলেন অজ¯্র বড় বড় নিআমত। আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালামের পবিত্র কাফেলার প্রায় সকলেই ছিলেন বনী ইসরাঈল গোত্রভুক্ত। তাদেরকে দেয়া হয়েছিল আসমানী অনেক কিতাব। কিন্তু এতকিছু পেয়েও তারা শোকরগুজার ছিল না। ছিল না আল্লাহ তাআলার হুকুমের পূর্ণ অনুগত। তাঁর বিধান তারা লঙ্ঘন করেছে। আসমানী কিতাবে হয়ত বিকৃতি ঘটিয়েছে, কিংবা তার ওপর আমল করা ছেড়ে দিয়েছে। নবীদেরকে নানাভাবে কষ্ট দিয়েছে। এমনকি তাদের হাতে প্রাণও গেছে অনেক নবীর। পরিণামে তারা আমাদের কাছে আজ আলোচিত অভিশপ্ত এবং আল্লাহর গজবে নিপতিত জাতি হিসেবে। তাদের কিতাবসমূহে শেষ নবীর কথা ছিল। তাঁর চরিত্র ও বৈশিষ্ট্যের বিবরণ ছিল। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ তাআলা যখন শেষ নবী হিসেবে পাঠালেন, তখন তারা তাঁকে চিনতেও পারল। সে চেনাও কেমন? পবিত্র কুরআনের বর্ণনানুসারেÑনিজের ছেলেসন্তানকে মানুষ যতটুকু শক্তির সঙ্গে চেনে, তাদের চেনা ছিল আরও গভীর, আরও শক্তিমান। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেবলই ইসরাঈলী না হওয়ার কারণে তারা একদিকে তাঁর নবুওত মেনে নিতে অস্বীকার করে। উপরন্তু যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে, হযরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষ নবী হিসেবে মেনে নিয়েছে, তারা যেন এ সঠিক ও সরল পথ ছেড়ে আগের ভ্রান্ত ও বাঁকা পথে ফিরে যায়Ñতারা সে কামনাও করত। এর মূলে ছিল কেবলই হিংসাÑসঠিক দ্বীন আমরা মানি না তো তারা মানবে কেন? পবিত্র কুরআনের ভাষায়Ñ

    وَدَّ كَثِیْرٌ مِّنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ لَوْ یَرُدُّوْنَكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ اِیْمَانِكُمْ كُفَّارًا   حَسَدًا مِّنْ عِنْدِ اَنْفُسِهِمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمُ الْحَقُّ.

    আহলে কিতাবদের অনেকেই তাদের নিকট সত্য স্পষ্ট হওয়ার পরও হিংসাবশত কামনা করেÑতোমাদের ঈমান আনার পরও যদি তারা তোমাদের কাফের  অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে পারত! Ñসূরা বাকারা (২) : ১০৯

    আরেকজনের কোনো নিআমত দেখে তা বিলুপ্তির কামনা করা হিংসার প্রথম ধাপ।  এর পরের ধাপ হচ্ছে, মনে যখন কারও প্রতি হিংসা জন্ম নেয় তখন এর চাহিদা অনুযায়ী কাজ করা। তা হতে পারে তার কোনো ক্ষতি করার মধ্য দিয়ে, হতে পারে তার কোনো ক্ষতিতে আনন্দ প্রকাশের মধ্য দিয়ে। এসব যেহেতু তার কর্ম। তাই এর কারণে সে অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে। জবাবদিহিতার মুখোমুখি হবে তখনো, যদি সে তার হিংসার কথা মুখে প্রকাশ করে ফেলে। যতটুকু মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, অর্থাৎ অনিচ্ছাকৃতভাবে কারো প্রতি হিংসার ভাব উদ্রেক হওয়াÑতাতে গোনাহ হবে না।

    তবে গোনাহ হোক আর নাই হোক, হিংসা অবশ্যই মানবচরিত্রের একটি মন্দ দিক। মনের হিংসার দাবিতে কেউ যদি অন্যায় আচরণ করে, ক্ষতি করার সুযোগ খোঁজে তাহলে তা যে নিন্দনীয়Ñতা কে অস্বীকার করবে! হিংসা যে মানুষকে অন্যায়ে উৎসাহিত করেÑতাও জানা কথা। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শিখিয়েছেন হিংসুকের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনাÑ

    وَ مِنْ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ.

    এবং (আমি আশ্রয় চাই) হিংসুকের অনিষ্ট থেকে, যখন সে হিংসা করে। Ñসূরা ফালাক (১১৩) : ৫

    আর যদি বিষয়টি এ পর্যায়ে না গড়ায়, হিংসা কারও মনের গভীরেই লালিত হতে থাকে, তাহলে তাও নিন্দনীয়। আরবী ভাষার উক্তিÑ

    الحاسد يحترق بنار الحسد.

    অর্থাৎ হিংসুক হিংসার আগুনে জ্বলে। কারণ হিংসা কারও কোনো ক্ষতি করতে পারে না। যাকে এগিয়ে যেতে দেখে কেউ হিংসা করছে, সে তো এগিয়েই যায়। হিংসা তার এগিয়ে চলার গতি রোধ করতে পারে না। কারও মনে সৃষ্ট হিংসা যদি অন্য কারও নিআমতকে বিনাশ করতে পারত, তাহলে তো জগতের কেউই ভালো কিছু হাছিল করতে পারত না। দাঁড়াতে পারত না কারও সম্মান প্রতিপত্তি সুনাম যশ খ্যাতি সুসন্তান অর্থ বিদ্যাবুদ্ধি দ্বীনদারী পরহেজগারি কিছুই। কথায় বলে নাÑশকুনের দুআয় গরু মরে না! আত্মচিন্তায় বিভোর শকুনের কামনা যেমন গরুর মৃত্যু ডেকে আনে না, তেমনি হিংসুকের হিংসাও কারও নিআমত ছিনিয়ে নিতে পারে না। হিংসাকে অগ্রাহ্য করে প্রতিনিয়ত যখন কেউ এগিয়ে চলে তখন বাড়তে থাকে হিংসার আগুন। সে আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাই হতে থাকে হিংসুকের অন্তর। কথা হল, হিংসার আগুন কি শুধু হিংসুকের অন্তরকেই জ্বালায়? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস থেকে আমরা এর উত্তর পাইÑ

    إِيّاكُمْ وَالْحَسَدَ فَإِنّ الْحَسَدَ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النّارُ الْحَطَبَ أَوْ قَالَ الْعُشْبَ.

    তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থেকো। কারণ হিংসা নেক আমলসমূহকে গ্রাস করে নেয়, যেভাবে আগুন গ্রাস করে লাকড়ি (অথবা ঘাস)। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯০৫

    শুকনো ঘাস আর লাকড়ি যেমন আগুনের সামনে অসহায়, হিংসার আগুনের সামনে মানুষের নেক আমলও তেমনি অসহায়। হিংসার আগুন গ্রাস করে নেয় ব্যক্তির যাবতীয় নেক আমল। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরেক হাদীসে হিংসাকে তুলনা করেছেন পানির সঙ্গে। দুই হাদীসের দুই উপমা বাহ্যত বিপরীতমুখী মনে হলেও এ বিবেচনায় তো অবশ্যই একÑআগুন যেমন লাকড়ি আর ঘাসকে জ্বালিয়ে শেষ করে দেয়, পানিও তেমনি আগুনকে নিভিয়ে দেয় মুহূর্তেই। আগুনের সামনে লাকড়ি আর ঘাসের প্রাচুর্য যেমন কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়, পানির সামনেও আগুনের বিশালতা উল্লেখ করার মতো কিছু নয়। হাদীসের ভাষ্য এমনÑ

    إِنّ الْحَسَدَ يُطْفِئُ نُورَ الْحَسَنَاتِ.

    সন্দেহ নেই, হিংসা নেক আমলসমূহের নূর ও আলোকে নিভিয়ে দেয়। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯০৬

    হিংসা তাই সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য। এ হিংসা কোনো মুমিনের চরিত্র হতে পারে না। হাদীসের বক্তব্য এমনইÑ

    لَا يَجْتَمِعَانِ فِي قَلْبِ عَبْدٍ الْإِيمَانُ وَالْحَسَدُ.

    কোনো বান্দার হৃদয়ে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হতে পারে না। Ñসুনানে নাসাঈ, হাদীস ৩১০৯

    অবশ্য হিংসার একটি রূপ এমনও, যেখানে কারও অমঙ্গল কামনা নেই। কারও ভালো কোনো কিছু দেখে তার বিনাশ নয়, বরং নিজের জন্যেও অর্জিত হোক অনুরূপ ভালো ও কল্যাণÑএই কামনা রয়েছে সেখানে। প্রথমটিকে আরবীতে বলে ‘হাসাদ’ আর পরেরটিকে বলা হয় ‘গিব্তা’, বাংলায় যাকে আমরা বলি ‘ঈর্ষা’। এই ঈর্ষা দোষণীয় কিছু তো নয়ই, বরং ক্ষেত্রবিশেষে প্রশংসনীয়ও। ঈর্ষা অনেক সময় আমলের আগ্রহ সৃষ্টি করে। নেক কাজে উদ্ধুদ্ধ করে। ভালো কাজে ও কল্যাণকর ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। মুমিন বান্দা যখন কাউকে বারবার হজ্ব-উমরা পালন করতে দেখে কিংবা অল্প বয়সে কাউকে বায়তুল্লাহ যিয়ারতের সৌভাগ্য হাসিল করতে দেখে, সে তখন আবেগে আপ্লুত হয়, তার মনে ঈর্ষা জন্ম নেয়Ñএ সৌভাগ্য যদি আমারও হাসিল হতো! এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনÑ

    لاَ حَسَدَ إِلاَ عَلَى اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ الْكِتَابَ وَقَامَ بِهِ آنَاءَ اللّيْلِ وَرَجُلٌ أَعْطَاهُ اللهُ مَالاً فَهْوَ يَتَصَدّقُ بِهِ آنَاءَ اللّيْلِ وَالنّهَار.

    হিংসা (অর্থাৎ ঈর্ষা) কেবল দুই ব্যক্তিকেই করা যায়Ñআল্লাহ যাকে কুরআন হিফ্জ করিয়েছেন আর সে রাতের বিভিন্ন প্রহরে নামাযে দাঁড়িয়ে তা তিলাওয়াত করে, আর যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন এবং সে তা দিনে-রাতে দান করে। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ৫০২৫

    কথা হল, এ ঈর্ষাকে তো আমরা প্রশংসিত হিংসাও বলতে পারি। কিন্তু যে হিংসা নিন্দনীয়, যে হিংসা তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয় আমাদের যাবতীয় অর্জন, আগুনের মতোই গ্রাস করে নেয় আমাদের নেক আমল, যা পানির মতো নিভিয়ে দেয় ঈমান ও আমলের নূর, কারও মনে যখন তা দেখা দেবে তখন তা প্রতিহত করার উপায় কী? অন্য সকল ক্ষেত্রের মতো এখানেও প্রিয় নবীজীর প্রিয় কথামালাই তো আমাদের জন্যে চূড়ান্ত নির্দেশনা। এক হাদীসে তিনি বলেছেন

    دَبّ إِلَيْكُمْ دَاءُ الأُمَمِ قَبْلَكُمْ: الحَسَدُ وَالبَغْضَاءُ…

    পূর্ববর্তী জাতিসমূহের রোগব্যাধি তোমাদের কাছেও এসে পৌঁছেছে। তা হল হিংসা-বিদ্বেষ। এটা মু-িয়ে দেয়। আমি চুল মু-ানোর কথা বলছি না। বরং তা দ্বীনকে মু-িয়ে দেয়। যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ, যতক্ষণ তোমরা ঈমান না আনবে ততক্ষণ জান্নাতে যেতে পারবে না। আর যতক্ষণ পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি না হবে ততক্ষণ তোমাদের ঈমানও পূর্ণ হবে না। আমি তোমাদের বলে দিইÑকীসের মাধ্যমে তা অর্জিত হবে? তোমরা তোমাদের মাঝে সালামের প্রসার ঘটাও। জামে তিরমিযী, হাদীস ২৫১০

    আরেকটি হাদীসে তাঁর নির্দেশনা এমন

    لاَ تَقَاطَعُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَحَاسَدُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْوَانًا.

    তোমরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না, একে অন্যের পেছনে লেগে থেকো না, একে অন্যের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করো না। বরং তোমরা আল্লাহর বান্দা হয়ে যাও, পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে যাও। জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৩৫

    হাদীস দুটির বক্তব্যে কোনো অস্পষ্টতা নেই। হিংসা-বিদ্বেষ মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে, সৃষ্টি করে দূরত্ব ও শত্রুতা।

    উল্লেখিত দ্বিতীয় হাদীসে যেমন এসবকে দূরে ঠেলে দিয়ে পরস্পর মিলেমিশে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সমাজ গঠনের নির্দেশনা রয়েছে, প্রথম হাদীসে তেমনি এ ভ্রাতৃত্ববোধকে জাগ্রত করা এবং সর্বদাই একে সজাগ ও সচেতন রাখার জন্যে বেশি বেশি সালামের কথাও বলা হয়েছে। সালামের প্রচলন যখন বেশি হবে পারস্পরিক হৃদ্যতা ও ভালোবাসা তখন সৃষ্টি হবেই। আর হৃদয় দিয়ে যখন কেউ কাউকে ভালোবাসতে পারবে, তখন আর তার ভালো কোনো কিছু দেখে সে কুঞ্চিত হবে না, তার মনে হিংসা দানা বাঁধবে না, বন্ধুর ভালো জিনিসটির বিনাশ কামনা করবে না। তাই কারও প্রতি যদি মনে হিংসা জন্ম নেয় বিশেষভাবে তার সঙ্গে যদি সালাম-কালাম বাড়িয়ে দেয়া যায়, মহব্বত সৃষ্টির লক্ষ্যে তাকে কিছু হাদিয়া দেয়া যায় তাহলে তা হিংসার ঘায়ে মলমের মতো কাজ করতে পারে। মনকে হিংসামুক্ত রাখার জন্যে প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ দুআটিও সবিশেষ উল্লেখযোগ্যÑ

    رَبِّ تَقَبّلْ تَوْبَتِى وَاغْسِلْ حَوْبَتِى وَأَجِبْ دَعْوَتِى وَثَبِّتْ حُجّتِى وَاهْدِ قَلْبِى وَسَدِّدْ لِسَانِى وَاسْلُلْ سَخِيمَةَ قَلْبِى.

    প্রভু আমার! আপনি আমার তওবা কবুল করুন, আমার পাপরাশি ধুয়ে দিন, আমার ডাকে সাড়া দিন, আমার দলীল-প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করুন, আমার অন্তরকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমার যবানকে সঠিক রাখুন আর আপনি আমার অন্তরের যাবতীয় কলুষতা দূর করে দিন। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৫১২

    জানুয়ারিতে জাপানের প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া

    জাপানের কেন্দ্রীয় সরকার এবং স্থানীয় সরকার আগামী মাসে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র অপসারণ মহড়া করবে। ২২ জানুয়ারি টোকিও ডোম স্টেডিয়ামের বিনোদন পার্ক এবং সাবওয়ে স্টেশনে মহড়াটি অনুষ্ঠিত হবে।  একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের ভূখন্ডে আঘাত হানতে যাচ্ছে এমন দৃশ্যপটকে মহড়ার সামনে রাখা হবে। দেশ জুড়ে জে-এলার্ট ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কতা জারি হওয়ার পর প্রায় ২৫০ মানুষ দ্রুত কোনো ভবনে বা ভূগর্ভে নিরাপদ আশ্রয় নেবেন।

    কেন্দ্রীয় সরকার মার্চ থেকে দেশের ২৫টি পৌরসভা নিয়ে যৌথ ভাবে মহড়া করে আসছে। কিন্তু ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সামান্যই মহড়া হয়েছে কেননা তার জন্যে পথঘাট বন্ধ রাখা সহ বিভিন্ন সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়। এনএইচকে।

    রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ খালেদা জিয়ার খালাস দাবি

    জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে তাকে খালাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান।
    খালেদা জিয়ার পক্ষে পঞ্চম দিনের মতো যুক্তি উপস্থাপন শেষে তার আইনজীবী এই দাবি জানান। যুক্তি উপস্থাপনে আদালতে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কুয়েতের টাকা রাখার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলেছেন তার প্রমাণশূন্য। শুধু তাই নয়, তার (খালেদা জিয়া) বিরুদ্ধে লিখিত ও মৌখিক কোনো প্রমাণও নেই। রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশীবাজারে অস্থায়ী আদালতে পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামানের এজলাসে গত ২০ ডিসেম্বর যুক্তিতর্কের শুনানি শুরুর পর পাঁচ কার্যদিবসের চারদিনই খালেদার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এই আইনজীবী। গতকাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে বেলা ১১ টা ২০ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন রেজাক খান। মাঝে ১৫ মিনিটের বিরতি দিয়ে দুপর পৌনে দুইটা পর্যন্ত যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করেন তিনি।
    চারদিন নিজের যুক্তি তুলে ধরে শেষে এসে তিনি আদালতকে বলেন, এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তাকে খালাস দেওয়ার দাবি জানাই। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুয়েত থেকে আসা টাকা আত্মসাৎ করেছেন এর কোন প্রমাণ নেই। মামলার কোনো সাক্ষীও এ বিষয় কিছু বলেন নাই। মামলার এফআইআর-এ আছে বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তা মোটেও ঠিক নয়। আর এফআইআর-এ কথা যে বেদের মত বিশ্বাস করতে হবে তাও ঠিক না।
    রেজাক খানের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষ হলে বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষে নতুন করে যুক্তি তুলে ধরা শুরু করেন তার আরেক আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি প্রথম বারের মতো যুক্তি-তর্ক শুরু করলেও দিনের শুনানি শেষ হওয়ার আগে মাত্র ১৫ মিনিট সময় পান। বিচারক আজ বৃহস্পতিবারও তার যুক্তি উপস্থাপনের সময় রেখেছেন। ১৫ মিনিটের বক্তব্যে খন্দকার মাহবুব বলেন, আমরা যাই বলি না কেন, এই মামলার স্বাক্ষী প্রমাণে যাই থাকুক না কেন, বলতে হবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা; এবং এই মামলার উদ্দেশ্য হল যে কোনোভাবেই বলতে হবে- এটাই চোর, আমাদেরকে চোর বলতে হবে। আদালতের দিনের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণে দেখা যায়, কোনো বিষয়েই খালেদা জিয়ার বিপক্ষে বলা হয়নি। তিনি যে জড়িত ছিলেন না, সেটাই বরং প্রমাণিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী ওই লেনদেনের সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা প্রাইভৈট ট্রাস্ট। রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য, বেগম জিয়ার চরিত্র হননের জন্য, তাকে জনগণের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য দূরভিসন্ধিমূলকভাবে এই মামলা দায়ের করা হয়। এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে আসা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে মোট সাত দিন বক্তব্য দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
    গত ৫ ডিসেম্বর তার বক্তব্য শেষ হলে বিচারক যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ঠিক করেন। যুক্তিতর্ক শুনানির শুরুর দিন ২০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছিলেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। পরের কার্যদিবস থেকে আসামিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরা শুরু হয়। মামলার প্রধান আসামি খালেদার পক্ষে আইনজীবী রেজাক খান ও খন্দকার মাহবুব হোসেন ছাড়াও তার আরও দুই আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের যুক্তি উপস্থাপন করার কথা রয়েছে।
    পঞ্চম দিনে মামলার প্রধান আসামির এক আইনজীবীর যুক্তি উপস্থাপন শেষ হওয়ার পর দুদকের আইনজীবী কাজল সাংবাদিকদের বলেন, তারা বলছে খালেদা জিয়া কোনো অন্যায় করেনি। আমরা বলছি প্রধানমন্ত্রীর যে দায়িত্ব, সাংবিধানিকভাবে অর্থ-সম্পদ সব কিছুর ব্যাপারে দায়-দায়িত্ব তার। অর্থ যেটা এসেছিল- তা দুইভাগে ভাগ করে এক ভাগ তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানকে, আরেকভাগ তারেক রহমানকে দিয়েছিলেন। তারা বলছে (খালেদা জিয়ার পক্ষ) মোস্তাফিজুর রহমান বা তার সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে কেন মামলা হয়নি। এসবের জবাব আমরা দেব। মোস্তাফিজুরর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করা না করা প্রসিকিউশনের ব্যাপার। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এ মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরু করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। খালেদা জিয়া এ মামলায় জামিনে আছেন। তারেক রহমান গত নয় বছর ধরে দেশের বাইরে, তার বিরুদ্ধে এ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ রয়েছেন কারাগারে।