• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • আবে’র চীন সফরের প্রস্তুতি

    প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবের আসন্ন চীন সফরের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার দেশটি সফরে যাচ্ছেন জাপানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে অক্টোবার মাসে আবের বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা আছে।

    জাপানের জাতীয় নিরাপত্তা সচিবালয়ের প্রধান শোতারো ইয়াচি, চীনের পলিটিক্যাল ব্যুরো’র সদস্য ইয়াং জিয়েচি’র সাথে বৈঠক করবেন। ইয়াং হচ্ছেন বৈদেশিক সম্পর্ক সংক্রান্ত বিষয়গুলো’র দায়িত্বে থাকা চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা।

    বৈঠকে ইয়াচি সেই বিষয়গুলো উত্থাপন করতে চান, যা নিয়ে আসন্ন জাপান-চীন শীর্ষ বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা। গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত আন্তঃকোরিয়া শীর্ষ বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার প্রসঙ্গটিও ইয়াচি উত্থাপন করতে আগ্রহী।

    উল্লেখ করা যেতে পারে, চলতি মাসে গোড়ার দিকে রুশ দূর প্রাচ্যের ভ্লাদিভস্টকে আবে ও শি বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। তখনই পারস্পরিক সফর বিনিময় সম্পর্কে তাঁদের মতৈক্য হয়।

    ঐক্যের আনুষ্ঠানিক যাত্রা

    বি চৌধুরী. ড. কামাল. মির্জা ফখরুল, রব, মান্না’র অভিন্ন সুর

    জনগণের ভোটের অধিকার সুনিশ্চিতের দাবিতে মাঠে নামার ক্ষেত্রে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের আনুষ্ঠানিক যাত্রা কার্যত শুরু হয়ে গেছে। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে মহানগর নাট্টমঞ্চে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে এই যাত্রা শুরু হলো। বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, গণফোরামসহ ডান, বাম মধ্যপন্থী প্রায় অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দলের নেতা উপস্থিত হয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের আওয়াজ তুলেছেন। তারা আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দেয়া, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, ইভিএম বাতিল এবং বন্দী খালেদা জিয়ার আইনগত ও ন্যায়-সংগত অধিকার নিশ্চিত করার দাবীতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলনে একমত হন। তবে বিএনপির নেতারা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীও যুক্ত করে বক্তৃতা দেন। গতকাল গুলিস্তানের মহানগর নাট্টমঞ্চে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বি. চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আ স ম রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন বক্তৃতায় অভিন্ন সুরে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দেশ-মানচিত্র-পতাকা বাঁচাতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্য প্রায় হয়েই গেছে এমন দাবী করে তারা আরো বলেন, জনগণের সাংবিধানিক ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতেই এই ঐক্য।
    সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী প্রধান অতিথি এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন তেল গ্যাস বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক পরিবেশবিদ ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। দুপুরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা নানান শ্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে হাজিন হন। মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠে নাট্টমঞ্চস্থল। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তারা নানান শ্লোগান দেন।
    জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার উদ্যোগে নাগরিক সমাবেশের ঘোষণা পত্রে তেল গ্যাস বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক প্রবীণ ব্যাক্তিত্ব ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ শহীদুল্লাহ দেশের হত্যা-সন্ত্রাস-গুম-অব্যবস্থাপনার চিত্র এবং ঐক্য প্রক্রিয়ার দাবি দাওয়া তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবে ৫ দফা ও ৯ লক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির কার্যকর পদক্ষেপ করতে হবে। বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। এসব দাবী পুরণ না হলে পহেলা অক্টোবর থেকে দেশব্যাপী ঐক্যবদ্ধ ভাবে সভাসমাবেশ করা হবে। সরকারকে বাধ্য করা হবে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে।
    যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সরকারের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, স্বাধীন দেশে মা-বোনেরা কেন আজ শঙ্কিত। সরকারের কাছে জনগণের প্রশ্ন, যে স্বাধীনতা আনতে লক্ষ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে, মা-বোনকে ইজ্জত দিতে হয়েছে, এর মূল্যবোধ কেনো পদদলিত? দিন-রাত প্রতিটি ঘন্টায় আতংকে কেনো বৃদ্ধ বাবা মা তার ছেলে নিরাপদে ফিরবে কিনা, শংকায় কেন থাকবে গুম, রাহাজানি নিয়ে। কেনো পুলিশ, র‌্যাব, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীদের ছাড় দিবে? কেনো ঘুষ দুর্নীতিকে ‘স্পীড মানি’ বলে সরকারিকরণ করা হলো? সমস্ত জাতির নৈতিকতাবোধকে পদদলিত করা হলো? এই অধিকার কে দিয়েছে আপনাদের? নিরাপদ সড়কের দাবিতে কঁচি-কিশোরদের রাস্তায় নামতে হবে কেনো? কেনো কোটা সংস্কারের পক্ষে মেধাবী ছাত্রদের আন্দোলন করতে হবে? মেধাবী ছাত্রদের কি অপরাধ? কেনো তাদের গুন্ডা দিয়ে, হাতুড়ি, চাপাতি দিয়ে আক্রমণ করা হবে, এর জন্যই কি স্বাধীনতা? কেনো আমার ভোট আমি দিতে পারবো না? ভোটের অধিকারকে কেনো দলীয়করণ করা হলো। সারা পৃথিবীতে ইভিএম পরিত্যাক্ত, ইভিএম কেউ চায় না। কেনো আপনাদের সুবিধার জন্য ইভিএম গ্রহণ করতে হবে? এমন হাজারো প্রশ্ন আজ জনগণের আপনাদের কাছে। জনগণ যখন জেগে ঊঠে তখন স্বৈরাচার পালাতে বাধ্য হয়। জনগণের শক্তি কি দেখেন নাই? ১৯৭১ সালে দেখেছে ইয়াহিয়া আর ১৯৯০ সালে দেখেছেন এরশাদ।
    অধ্যাপক বি চৌধুরী বলেন, আমাদের রাষ্ট্র তুমি কোথায়? আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গী আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত কোথায়? কেনো গঙ্গার পানি পাবো না, কেনো বন্ধু রাষ্ট্র তিস্তার পানি দিবে না? ১০ বছর কিসের বন্ধুত্ব হলো? তিনি বলেন, এখন রুখে দাঁড়ানোর সময়, এখন অধিকার আদায়ের সময়। প্রতিবাদের কণ্ঠ ধারালো করতে হবে। গণতন্ত্রের স্বপক্ষ শক্তির সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে কোন ঐক্য নয়। শুধুমাত্র স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তিকে সাথে নিয়ে ভারসাম্যের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য বেগবান হতে পারে। আমরা বিভিন্ন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি এবং বিএনপির সাথে আলোচনা করছি। আশা করি ঐক্য প্রক্রিয়া সফল হবে।
    জাতীয় ঐক্যের আহবায়ক ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশে এমন এক সময় বিরাজ করছে যখন সবার মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। জনগণের জানমাল, ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই। দেশে আইনের শাসন নেই। দেশের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশে সুশাসন-আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমরা সমবেত হয়েছি। দেশে অবাধে দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে। দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বন্ধ হলে দেশের অর্থনীতি উন্নত হবে, বেকারত্ব দূর হবে। উন্নয়ন আরও দৃশ্যমান হবে। সুশাসন, গণতন্ত্র এবং ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে চাই জাতীয় ঐক্য। ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণ স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলো। আজো জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আমরা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবো। জনগণের বৃহত্তর ঐক্যের ভিত্তিতে কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রের আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করে জনগনের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব। এখন দেশে অপশাসন-দুঃশাসন চলছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে প্রতিনিয়ত হয়রানি ও অপদস্থ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্রের জন্য অনেক সংগ্রাম করে জয়ী হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বলতেন মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে কেউ তাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না। তিনি জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করতেন। আজ জনগণ সেই ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত। আমরা জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চাই। দেশে উন্নয়নের নামে অবাধে লুটপাট চলছে। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করা হচ্ছে। মেগা প্রকল্পের নামে জনগণের টাকা অপচয় করা হচ্ছে। বর্হিবিশ্বের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রতিনিয়ত খারাপ হচ্ছে। তাই জনশক্তি রপ্তানিতে ধস নেমেছে। সর্বত্র চলছে এক অরাজকতা। এর থেকে মুক্তির লক্ষে আমাদের এই জাতীয় ঐক্য। জনগণের ভোটাধিকারসহ মৌলিক অধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কার্যকর গণতন্ত্র আইনের শাসন ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা ছাড়া বিকল্প নেই।
    বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জাতির এই চরম দুর্দিনে বিপন্ন মানুষ মুক্তির পথ খুঁজছে। সকলে পরিবর্তন দেখতে চান, এই সরকারের পতন দেখতে চান। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চান। যিনি তার সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। এজন্যই তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কারাবন্দি করা হয়েছে। তিনি জেলে যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিলেন, দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে হলে, দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। সকল দল, মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি সবাইকে এই স্বৈরাচার ও দখলদার সরকারকে সরাতে হবে। এজন্য ঐক্য হচ্ছে একমাত্র পথ। কারাগার থেকেও খালেদা জিয়া খবর পাঠিয়েছেন, আমার কি হবে সেটি নিয়ে পরোয়া করিনা। এই দুঃশাসন থেকে মুক্ত হতে, স্বৈরাচার সরকারকে সরাতে যেকোন মূল্যে জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর মামলার চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর প্রাণ গেছে, ৫শ’র মত নেতাকর্মী গুম হয়েছে, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তিন হাজার ৭৭৩টি নতুন মামলা দেয়া হয়েছে। এসব মামলায় এজহার করা হয়েছে ৭৯ হাজার মানুষ আর অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে তিন লাখ মানুষকে। ইতোপূর্বে ৭৮ হাজার মামলা দেয়া হয়েছিল। ১ সেপ্টেম্বরের পর থেকে ঘরে ঘরে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই আগামী নির্বাচনে জনগণ যাতে অংশ নিতে না পারে জনগণকে দূরে রাখার জন্য নতুন মামলা দেয়া হচ্ছে। এই সরকারকে যদি সরাতে না পারি, জনগণের সরকার যদি প্রতিষ্ঠা করতে না পারি, ঐক্যের সরকার যদি প্রতিষ্ঠিত করতে না পারি তাহলে এই দেশের স্বাধীনতা থাকবে না। জনগণ অধিকার থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হবে। এজন্য নূন্যতম কর্মসূচি ও দাবি-দাওয়ার ভিত্তিতে জনগণকে সাথে নিয়ে দাবি আদায়ে আন্দোলন শুরু করতে হবে। যার মাধ্যমে আমরা সরকারকে বাধ্য করবো বেগম খালেদা জিয়া ও সমস্ত বন্দিদের মুক্তি দিতে এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে।
    দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে ভোটাধিকারের জন্যে লড়াই দুঃখজনক। তাই এই দুঃশাসনের জন্য জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য। যদি ঐক্য গড়তে না পারেন তাহলে ভোট দেবেন কিন্তু তা কোনো কাজে আসবে না। প্রশাসনযন্ত্র এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যে, জনগণের ভোট দিতে বাধা দেয়া হবে না। বাইরে পুলিশ নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করবে। কিন্তু ফলাফল নির্ধারণ করা হবে অন্য যায়গা থেকে। জনগণের ভোটে কোনো ফলাফল নির্ধারিত হবে না। তিনি বলেন, রাজনীতি নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গণভোট দরকার। কিন্তু এই সরকার জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে। বিশ্বজনমত গণতন্ত্রের পক্ষে। জনগণের জয় নিশ্চিত। গণতন্ত্রের জয় হবেই। আওয়ামী লীগ এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে রাজনীতিকে আমলাতন্ত্রের পেটের ভিতরে নিয়ে গেছে। এটা দুঃখজনক। আমলাদের দলীয়করণ এবং তাদের সুযোগ সুবিধা দিয়ে ভোটের রাজনীতি হরণ করে আওয়ামী লীগ কার্যত রাজনীত থেকে হারিয়ে গেছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে জোর করে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়ার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও এমন নজীর নেই। দেশের প্রধান বিচারপতিকে জোর করে অসুস্থ বানিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশ থেকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এ ধরণের ঘটনা দুঃখজনক আইনের শাসনের জন্য হতাশাজনক এবং লজ্জাজনক। এমন ঘটনায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। আওয়ামী লীগের উন্নয়নের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এক টাকার উন্নয়ন করে একশ টাকা লুট করেছেন। এতোই যদি উন্নয়ন করে থাকেন তাহলে নিরপেক্ষ ভোটের আয়োজন করেন দেখা যাবে জনগণ আপনাদের ভোট দেয় কিনা? উন্নয়ন করে থাকলে জনগণকে এতো ভয় পান কেন? কেন নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন করতে চান? দেশের কিছু সুবিধাবাদী বিশৃংখল নেতার কারণে এমন হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
    জাসদের সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, দেশ এখন বেওয়ারিশ লাশের ভাগাড়ে পরিণত হয়ে গেছে। ব্যাংকে টাকা নাই। কখন দেখবো দেশের পতাকা নাই, মানচিত্র নাই। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি আরো বলেন, সেনাবাহিনীকে ম্যাজেষ্ট্রিসি ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনের আগে মাঠে নামাতে হবে। নির্বাচনের ৩০ দিন আগে তারা মাঠে নামবেন এবং ভোটের ১০ দিন পর ফিরে যাবেন। যারা নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী হবেন তারা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। জাতীয় ঐক্যের প্রতি জোর দিয়ে তিনি বলেন, ঐক্য এখন সময়ের দাবি।
    বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ফেব্রæয়ারিতেই খালেদা জিয়া স্বৈরাচার সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য এবং জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ জাতীয় ঐক্যের দিকে তাকিয়ে আছে। যদিও জনগণের মধ্যে ইতোমধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদের ঐক্য হচ্ছে এই সরকারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, জাতীয় ঐক্য ছাড়া এই স্বৈরাচারী সরকারকে অপসারণ করা সম্ভব হবে না। এই ঐক্যের মাধ্যমে ভোটের অধিকার, আইনের শাসন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরে পেতে চাই। দেশে একটি সুষ্ঠু, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণতান্ত্রিক চর্চা ফিরে পেতে চাই। ঐক্যের মাধ্যমে স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, গণতন্ত্র ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠির অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। কিন্তু ৪৭ বছর পরও বলতে হচ্ছে গণতন্ত্র মৃত। তাহলে কেন স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম? সরকার স্বাধীনতা যুদ্ধের যে লক্ষ্য ছিল তার একটিও রক্ষা করতে পারেনি।
    নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশ আজ গভীর সংকটে। সাড়ে তিন মাস পর নির্বাচন হবে। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২২ হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। অজ্ঞাত আসামী কয়েক লাখ। নির্বাচন কমিশন ঘেরা কর্মসূচী পালন করতে গেলে বাম গণতান্ত্রিক ঐক্যের নেতাকর্মীদের উপর পুলিশ বেধড়ক হামলা চালিয়েছে। এটা কি সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষন, নাকি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করতে চায় সরকার? এ প্রশ্ন এখন সারাদেশের জনগণের মধ্যে। আমরা একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। অথচ সরকার আমাদের হাত পা বেঁধে পানিতে সাঁতার কাটতে বলছে। এটা কিছুতেই হতে পারে না। দেশে সোনা তামা হয়ে যাচ্ছে, কয়লা মাটি হয়ে যাচ্ছে, ব্যাংক লুট হয়ে যাচ্ছে। অথচ লুটেরাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা দেয়া হচ্ছে না। আর দেশের সব চেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকার অভিযোগ এনে জেলে আটক রাখা হয়েছে। আমরা বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি চাই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ওরা লুটেরা ওরা ভোট চোর। তাদের বাদ দিয়ে আমরা এক হয়ে আওয়াজ তুলছি ‘অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমাদের পাঁচ দফা দাবির পক্ষে সবাই একমত তাই ঐক্যতো হয়েই গেছে। এই ঐক্য এখন আরও সুসংহত হবে। জনগণের ঐক্যের মাধ্যমে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করতে হবে। এবার ঘরের মানুষ রাস্তায় নামবে, আর র্দুবৃত্তরা রাস্তা থেকে ঘরে ঢুকবে।
    জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তাফা আমিনের সঞ্চলনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন, বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, জাসদ সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থের ট্রাষ্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি সুলতাম মোহাম্মদ মনসুর, সুপ্রিম কোট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব) আবদুল মান্নান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, মোস্তফা মোহসিন মন্টু, ডা. মোমেনা খাতুন প্রমূখ। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, গণদলের সভাপতি এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, জাসদের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, জাগপার সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণদলের মহাসচিব আবু সৈয়দ, জামায়াতে ওলামায়ে ইসলামীর ঢাকা মহানগর আমীর নুর হোসেন কাশেমী প্রমূখ।

    লস এঞ্জেলসে জাপানী অ্যানিমে চলচ্চিত্র উৎসব আরম্ভ

    মার্কিন শহর লস এঞ্জেলসে, একটি জাপানী অ্যানিমে চলচ্চিত্র উৎসব আরম্ভ হয়েছে।

    জাপান বহির্বাণিজ্য সংস্থা, লস এঞ্জেলস অ্যানিমে চলচ্চিত্র উৎসবটি আয়োজনের জন্য আংশিক সহায়তা প্রদান করছে। আয়োজকরা, উত্তর আমেরিকায় জাপানী অ্যানিমে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের বৃহত্তম এই বার্ষিক অনুষ্ঠানটি গতবছর আরম্ভ হয় বলে জানান।

    গতকাল উদ্বোধনী দিনে, যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় কণ্ঠ অভিনেতারা লাল গালিচায় উপস্থিত হন।

    উৎসবে প্রদর্শন করতে যাওয়া ২০টির বেশী চলচ্চিত্রের মধ্যে, মাকোতো শিনকাইয়ের পরিচালিত ব্যাপক জনপ্রিয় জাপানী অ্যানিমে ইউর নেইম বা তোমার নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

    এতে, চলতি বছর মৃত্যুবরণ করা অস্কার পুরস্কারের জন্য মনোনীত পরিচালক ইসাও তাকাহাতার কয়েকটি চলচ্চিত্রও প্রদর্শন করা হবে।

    এগুলোর একটি হচ্ছে, ১৯৮৮ সালে মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে শীর্ষ পুরস্কার অর্জনকারী শিশু ও তরুণদের জন্য নির্মিত গ্রেইভ অফ দা ফায়ারফ্লাইস অর্থাৎ জোনাকির কবর নামের চলচ্চিত্র।

    আয়োজকরা, ৩ দিনের এই অনুষ্ঠানে প্রায় ১ হাজার ৮শ দর্শকের সমাগম হবে বলে আশা করছেন।

    আশুরার দিন কেয়ামত হবে

    Posted by admin on September 21
    Posted in Uncategorized 

    আশুরার দিন কেয়ামত হবে

    মাহে মুহাররমে হযরত হুসাইন রা. স্বীয় লোকজনসহ জালিম ইয়াযীদ ও তার লোকদের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে লড়াই করে শাহাদাত বরণ করেছেন। সে জন্য মাহে মুহাররমে হজরত হুসাইন রা. এর এ ত্যাগের কথা স্মরণ করে দীনের হিফাজতের জন্য জানমাল কোরবানি করার প্রত্যয় করা আমাদের কর্তব্য।
    তবে স্মরণ রাখা দরকার যে, সৃষ্ট জগতের প্রলয় শিঙ্গার ফুৎকারের মাধ্যমে সাধিত হবে। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে: ‘আর শিঙ্গার ফুৎকার উচ্চকিত হবে, সেটা হবে নির্ধারিত দিনে।’ (সুরা ক্বাফ: আয়াত ২০)। আরও ইরশাদ হয়েছে: ‘যেদিন শিঙ্গার ফুৎকার উচ্চকিত হবে, সেদিন পৃথিবী ও আকাশমন্ডলীর বাসিন্দারা বেকারার হয়ে যাবে।’ (সূরা নমল: আয়াত ৮৭)। এই ফুৎকার মুহররমের ১০ তারিখ কোনো এক শুক্রবার দিন উচ্চকিত হবে। কিন্তু কিছু লোক আশুরার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করে অতিরঞ্জিত ও গর্হিত কার্যকরাপ দ্বারা বিদআত ও নাজায়িজ বিষয়ের অবতারণা করে চলেছেন। মুসলমানদের সেসব গর্হিত কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। যেমন:
    ১. আশুরার সিয়ামকে শোক পালনের উদ্দেশে করা: মুহাররম মাসের বা আশুরার সুন্নত আমল হিসেবে রোযা রাখা কর্তব্য। আশুরার সেই রোযার উদ্দেশ স্পষ্ট হাদীস দ্বারা পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত। আর তা হল, অত্যাচারী শাসক ফিরআউনের কবল থেকে মুসা আ. এর নাজাতের শুকরিয়া স্বরূপ ও সিয়াম পালন করা। কিন্তু সেই উদ্দেশ্যকে পাশ কাটিয়ে শোক পালনের উদ্দেশে সিয়াম পালনের কোনো সুযোগ নেই। অথচ অনেকে তা করে থাকেন। বলা বাহুল্য, আশুরার এই সিয়ামের সূচনা হয়েছে মুসা আ. এর সময় থেকে। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় জিবদ্দশায় সেই সিয়াম পালন করেছেন। অপরদিকে কারবালার ঘটনা ঘটেছে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর ওফাতের ৫০ বছর পর ৬১ হিজরীতে। হাদীস শরীফে সেই রোযা পালনের উদ্দেশের কথা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তা হচ্ছে অত্যাচারী শাসক ফিরআউনের কবল থেকে মুসা আ. এর নাজাতের জন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া স্বরূপ। সুতরাং রাসুলুল্লাহ সা. যে উদ্দেশে আশুরার রোযা রেখেছেন, আমাদেরও সেই উদ্দেশ্যকেই সামনে রেখে রোযা রাখতে হবে।
    ২. ১০ই মুহাররমকে আনন্দ উৎসবে পরিণত করা : রাফেজীরা (কট্টর শী’য়া) হযরত হুসাইন রা. এর শাহাদাতের শোক স্বরূপ শোক দিবস পালন করে। পক্ষান্তরে একটি গোষ্ঠী রাফেজীদের বিরোধিতা করার লক্ষ্যে এ দিনটিকে আনন্দ উৎসবে পরিণত করে। এ উভয় প্রকার কাজই গর্হিত ও বিদআত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কিরাম রা. এ দিনটিকে শোক দিবস হিসেবেও পালন করেননি, আবার আনন্দ উৎসবে পরিণত করেননি। তারা শুধুমাত্র ফিরআউনের কবল থেকে মুসা আ. এর নাজাতের শুকরিয়া স্বরূপ সিয়াম পালন করেছেন। সুতরাং আমাদেরও তা-ই করতে হবে।
    ৩. তা’যিয়া: তা’যিয়া অর্থ বিপদে সান্ত¦না দেয়া। তবে বর্তমানে শাহাদাতে হুসাইন রা. এর শোক মিছিলে রূপ নিয়েছে। অথচ ইসলামে কারও মৃত্যুতে তিনদিনের অধিক (আর স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রীর জন্য চারমাস দশ দিনের অধিক) শোক পালন করা নিষেধ। (দ্রষ্টব্য: সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৪৬২)। তাই শী’য়াদের উদ্ভাবিত উক্ত তা’যিয়া সম্পূর্ণ বিদআত। তা থেকে সকলের দূরে থাকতে হবে।
    ৪. আশুরা উপলক্ষে চোখে সুরমা লাগানো: অনেকেই আশুরার দিন বা ১০ই মুহাররম উপলক্ষে এদিন বিশেষ ফজীলতের আশায় চোখে সুরমা লাগিয়ে থাকেন। এটাও সুস্পষ্ট বিদাআত। কেননা, রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কিরাম রা. আশুরার নিয়মরূপে চোখে সুরমা লাগাননি এবং কোনো ফজীলত বর্ণনা করেননি। এ মর্মে যা প্রচলিত আছে, তা মাওযূ বা জাল।
    ৫. ১০ই মুহাররমে বিশেষ পদ্ধতিতে সালাত আদায় করা: অনেকে ১০ই মুহাররমে বিশেষ বিশেষ পদ্ধতিতে সালাত আদায় করে থাকেন। এটাও সম্পূর্ণ বিদআত। কেননা, রাসুলুল্লাহ সা. ও সাহাবায়ে কিরাম রা. এদিনে বিশেষ কোনো সালাত আদায় করেছেন বা বলেছেন মর্মে কোনো নির্ভরযোগ্য দলীল নেই। এ সম্পর্কে আল্লামা ইবনে তাইমিয়াহ রহ. বলেন, সিয়াম ব্যতীত আশুরা সম্পর্কিত কোনো বিশেষ নিয়মের আমলের ব্যাপারে কোনো সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়নি। সুতরাং আশুরা উপলক্ষে আমাদের ইসলামের সহীহ আমলরূপে রোযা পালন করতে হবে। এ জন্য আশুরার দিন এবং তার সাথে মিলিয়ে তার আগের বা পরের দিনসহ রোযা পালন করা বাঞ্ছনীয়। আর এ মাসকে সম্মানিত জ্ঞান করে এ মাসে দাঙ্গা-ফাসাদ ও ঝগড়া-বিবাদ থেকে বিশেষভাবে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়াও কারবালার ঘটনার ব্যাপারে সকল প্রকার আবেগ ও বাড়াবাড়ি হতে বিরত থাকতে হবে।

    ভারতের বিরুদ্ধে আজ মাঠে বাংলাদেশ

    ভারতের চাপে নতজানু এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। সংস্থাটির মেরুদণ্ডহীনতা এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বটাকে কার্যত ট্রফি জয়ের পোশাকি মহড়া বানিয়ে দিয়েছে। টুর্নামেন্টের ট্রফির মূল লড়াইটা শুরু হচ্ছে আজ। সুপার ফোর পর্ব থেকেই শিরোপা জয়ের প্রহর গুনবে দলগুলো।
    আচমকা সূচি বদলের কোপানলে পড়ে অনেক প্রতিকূলতার গহ্বরে এখন বাংলাদেশ। গতকাল গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটা খেলতে হয়েছে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। আবুধাবিতে ম্যাচটা শেষ করে দুবাইয়ের টিম হোটেলে ফিরতে ফিরতে মাঝ রাত। ম্যাচ খেলার ধকল কাটিয়ে উঠার আগেই আজ আবার নামতে হবে মাঠে।
    শিরোপা জয়ের স্বপ্ন নিয়েই এশিয়া কাপে এসেছে বাংলাদেশ। স্বপ্ন জয়ের মিশনে  প্রথম পা রাখতে হচ্ছে টানা দুদিন ম্যাচ খেলার দুরূহ চ্যালেঞ্জ নিয়ে। সুপার ফোর পর্বের প্রথম ম্যাচে আজ ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিকাল সাড়ে পাঁচটায় শুরু হবে ম্যাচটি। এদিকে আবুধাবিতে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের ভেতরে সুপার ফোরের আরেক ম্যাচ।
    গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ নিয়ে তাই বাড়তি চিন্তা করতে চায়নি বাংলাদেশ। সূচি পরিবর্তনের খবর নিশ্চিত হতেই টাইগাররা চোখ রেখেছে সুপার ফোর পর্বে। গত বুধবার আইসিসি একাডেমিতে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও বলেছেন, ভারতের বিরুদ্ধে আজকের ম্যাচ নিয়েই পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ।
    মাশরাফি বলেছিলেন, ‘২১ তারিখের (আজ) ম্যাচের জন্য যতটা ধরে রাখা যায়, যতটা ফিট থাকা যায়, এটা নিয়েও ভাবা জরুরি। এখন সত্যি বলতে আফগানিস্তান ম্যাচ নিয়ে ভাবনা যতটুকু ছিল, সেটি তো আর নেই। এখন ২১ তারিখের (আজ) ম্যাচের পরিকল্পনাই বেশি করতে হচ্ছে।’
    সুপার ফোর পর্বে টানা ম্যাচ খেলার চ্যালেঞ্জ পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশকে। গতকালের ম্যাচসহ ছয়দিনে খেলতে হবে চারটি ম্যাচ। বেশ তাড়াহুড়ো করে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মাশরাফি বলেছেন, ‘এই গরমে ৬ দিনে ৪টি ম্যাচ, যে কেউ সূচি করতে বললেই আমি নিশ্চিত যে রাজী হবে না কোনো দল। বলতে পারেন সব দলের জন্যই চ্যালেঞ্জিং।’
    ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য শারীরিকভাবে সবাই ফিট না থাকলে কাজটা কঠিন হয়ে যাবে মনে করেন মাশরাফি। তিনি বলেছেন, ‘২১ তারিখে (আজ) এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, তার আগেই গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচ খেলতে হবে। সুপার ফোরে প্রথম ম্যাচটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেই ম্যাচে আমরা সবাই শারীরিক ভাবে শতভাগ থাকতে না পারলে কাজটা কঠিন হয়ে যায়।’
    ভারতের বিরুদ্ধে ৩৩ ম্যাচে মাত্র পাঁচটি জয় বাংলাদেশের। দুই দলের শেষ দুটি ম্যাচ ২০১৫ বিশ্বকাপ ও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। যেখানে জিতেছে ভারত। একদিন বিশ্রাম নিয়ে আজ খেলতে নামবে রোহিত শর্মার দল। তবে ভারত শিবিরেও ইনজুরির হানা প্রকট আকার ধারণ করেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে বোলিং করতে গিয়ে পিঠের চোটে পড়া হার্দিক পান্ডিয়ার এশিয়া কাপ শেষ হয়ে গেছে।

    ডিমেই সারবে ক্যান্সার

    অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজনের ফলাফল হলো ক্যান্সার। পৃথিবীতে দুইশ প্রকারের বেশি ক্যান্সার রয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্যান্সারের কার্যকর কোনো ওষুধ আবিষ্কার করতে পারেনি বিজ্ঞানীরা। এ কারণে এ রোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। ক্যান্সার চিকিত্সার জন্য নিত্য নতুন গবেষণা অব্যাহত রেখেছেন চিকিত্সা বিজ্ঞানীরা। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ক্যান্সার চিকিত্সায় নতুন এক ধরনের ডিম আবিষ্কার করেছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। বিশেষ এই ডিমকে বলা হচ্ছে ‘গোল্ডেন এগ বা সোনালি ডিম’।
    গবেষণার মাধ্যমে তৈরি করা বিশেষ এই ডিমে রয়েছে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন যা কিনা ক্যান্সার এবং হেপাটাইটিসের মতো দুর্লভ রোগ সারাতে কার্যকরি ভূমিকা রাখবে। এই ডিম অবশ্য কোনো কৃত্রিম ডিম হবে না, মুরগি-ই পাড়বে এই ডিম। তবে এর জন্য ঐ মুরগির মধ্যে এমন কিছু গুণাবলী যোগ করা হয়েছে যাতে থাকবে খুবই দামি কিছু প্রোটিন। জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইন্স এন্ড টেকনোলজির বায়োকেমিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ক্যান্সার প্রতিরোধী ডিম নিয়ে গবেষণা করা হয়। মূলত জিনগত পরিবর্তন সাধন করে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ প্রকৃতির এই মুরগি। তাদের তৈরি মুরগি যে ডিম পাড়বে তাদের উচ্চ মাত্রার প্রোটিন থাকবে যা কিনা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার এবং হেপাটাইটিস রোগে কার্যকরি ভূমিকা রাখতে সক্ষম। বিশেষ এই ডিম তৈরির জন্য বিজ্ঞানীরা মুরগির ভ্রূণ থেকে কোষ সংগ্রহ করে তা হিউম্যান ইন্টারফেরন বেটা তৈরির কাজ করেছে। এরপর সেই হিউম্যান ইন্টারফেরন বেটা সমৃদ্ধ কোষগুলো অন্য মুরগির ভ্রূণের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ায় তৈরি করা মুরগির সঙ্গে পরবর্তীতে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে জন্ম নেওয়া মুরগির সঙ্গে মিলিত করে জন্মানো হয় সেই বহু কাঙ্ক্ষিত মুরগি। আর সবশেষ ধাপে এই মুরগি থেকেই মিলবে ক্যান্সার প্রতিরোধী  ‘সোনালি ডিম’।
    এক একটি ডিম ৩০ থেকে ৬০ মিলিগ্রাম প্রোটিন সমৃদ্ধ।
    ওষুধের দ্বারা বেশ কিছুু মুরগির শুক্রাণু জিনগতভাবে বদলে ফেলেছেন। গবেষকদের বক্তব্য, জিনের এ পরিবর্তন করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন ‘ইন্টার-ফেরনস’ নামের দামি ওষুধ। ক্যান্সার, হেপাটাইটিস, স্কেলারোসিসের মতো রোগে আক্রান্তদের এ ওষুধ দেওয়া হয়। এ ওষুধ এতটাই দামি যে, কয়েক মাইক্রোগ্রামের দাম প্রায় হাজার ডলার। ক্যান্সার প্রতিরোধী এক একটা ডিমের দাম হবে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ডলার। গবেষণাগারে বর্তমানে ২০টি মুরগি রয়েছে। এই মুরগিগুলো প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী প্রায় প্রতিদিনই পাড়ছে একটি করে ডিম।-দ্য টেলিগ্রাফ

    চাঁদের কক্ষপথে প্রথম বেসরকারি ভ্রমণের যাত্রী হিসেবে একজন জাপানি উদ্যোক্তার নাম ঘোষণা

    মার্কিন মহাকাশ ভেঞ্চার কোম্পানি স্পেস-এক্স বলছে, জাপানি উদ্যোক্তা ইউসাকু মায়েযাওয়া হবেন কোম্পানিটির নির্মিত পরবর্তী প্রজন্মের রকেটে চড়ে চাঁদের আশেপাশে উড্ডয়ন করতে যাওয়া প্রথম বেসরকারি যাত্রী।

    সোমবার লস এঞ্জেলস এর একটি রকেট নির্মাণ কারখানায় মায়েযাওয়া’কে পাশে নিয়ে এই ঘোষণা দেন স্পেস-এক্স এর প্রধান নির্বাহী এলোন মাস্ক। উল্লেখ্য, মায়েযাওয়া হলেন এমন একটি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, যেটি ইন্টারনেটে “যোযোটাউন” নামক প্রধান একটি ফ্যাশন ওয়েবসাইট পরিচালনা করে থাকে।

    মায়েযাওয়া বলেন, এই ঘোষণায় তিনি উদ্বেলিত, সম্মানিত এবং কৃতজ্ঞ বোধ করেছেন।

    মায়েযাওয়া আরও বলেন, ২০২৩ সালে নির্ধারিত চাঁদ অভিযাত্রার সময় “বিগ ফ্যালকন রকেট” এ তার সাথে আরোহণের জন্য সারা বিশ্বের অনেক শিল্পীকেই তিনি আমন্ত্রণ জানাবেন।

    ধারণা করা হচ্ছে, এটিই হবে কোন বেসরকারি মহাকাশ কোম্পানি পরিচালিত প্রথম মহাকাশ ভ্রমণ। উল্লেখ্য, ১৯৬০ এবং ৭০ এর দশকে মার্কিন এপোলো মিশন চলাকালীন মানুষ চাঁদের কক্ষপথে সর্বশেষ পরিভ্রমণ করে।

    যে দেশে অতি সহজে ধনী হওয়া যায়

    বিশ্বে অতিধনী মানুষের দ্রুতগতিতে সংখ্যাবৃদ্ধির রেকর্ড এখন বাংলাদেশের। আগে ছিল চীনের। এই বিস্ময়কর রেকর্ডের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েলথ এক্স। প্রতিষ্ঠানটির ‘ওয়ার্ল্ড আল্ট্রা ওয়েলথ রিপোর্ট ২০১৮’, শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটা আশ্চার্যজনক এই যে, অতিধনীর সংখ্যাবৃদ্ধির হারের দিক দিয়ে চীন বিশ্বের এক নম্বর দেশ নয়। এ অবস্থান বাংলাদেশের। প্রতিবেদন মোতাবেক, ২০১২ সাল থেকে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে অতিধনীর সংখ্যা বেড়েছে গড়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ হারে। সাধারণত অতিধনী তাদেরই বিবেচনা করা হয়, যাদের সম্পদের অর্থমূল্য তিন কোটি ডলার বা তার বেশি। বাংলাদেশী মুদ্রায় এটা ২৫০ কোটি টাকারও বেশি।
    প্রতিবেদনটিতে শীর্ষ ১০-এর যে তালিকা দেয়া হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, চীনের অবস্থান দ্বিতীয়। চীনে অতিধনীর সংখ্যা বেড়েছে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ হারে। এরপর যথাক্রমে ভিয়েতনাম ১২ দশমিক ৭ শতাংশ, কেনিয়া১১ দশমিক ৭ শতাংশ, ভারত ১০ দশমিক ৭ শতাংশ, হংকং ৯ দশমিক ৩ শতাংশ, আয়ারল্যাণ্ড ৯ দশমিক ১ শতাংশ, ইসরাইল ৮ দশমিক ৬ শতাংশ, পাকিস্তান ৮ দশমিক ৪ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্র ৮ দশমিক, ১ শতাংশ। বিশ্বে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে একনম্বর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের, দুই নম্বরে চীন, এরপর অন্যান্য দেশ। অতিধনী বা সম্পদশালীর সংখ্যা অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রেই বেশি। এরপর জাপান, চীন ও ইউরোপীয় দেশগুলো। বাংলাদেশে এই সংখ্যা কত তা উল্লেখ করা হয়নি। অতিধনী বৃদ্ধির দৌঁড়ে বিশ্বের তাবৎ বড় অর্থনীতির দেশকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের শীর্ষ স্থান অধিকার বিস্ময়াবহই বটে। কীভাবে এটি সম্ভবপর হলো, সেটাই প্রশ্ন। একটি বিষয় অত্যন্ত পরিষ্কার যে, এখানে সম্পদ হাসিল করার একটা অনুকূল সুযোগ বিদ্যমান রয়েছে। সহজে এবং দ্রুত ধনী হওয়া যায় এখানে। অভিজ্ঞতা থেকেও আমরা বুঝতে পারি, কিছু লোক এখানে রাতারাতি আঙুল ফলে কলাগাছ হয়ে গেছে এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। কোনো দেশে যখন ধনীর সংখ্যা বাড়ে, সম্পদ বাড়ে তখন তার একটি ইতিবাচক প্রভাব জাতীয় অর্থনীতি ও জনগণের জীবনমানে লক্ষ্য করা যায়। বিনিয়োগ বাড়ে, কর্মসংস্থান বাড়ে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে, সেবা-পরিষেবা করা বাড়ে, অভাব-দারিদ্র কমে এবং স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি পায়। দু:খজনক হলেও বলতে হচ্ছে, ধনীর সংখ্যা বাড়লেও এসব ক্ষেত্রে তেমন কোনো শুভ প্রভাব লক্ষ্যযোগ্য হয়ে ওঠেনি। কি দেশী, কি বিদেশী-কোনো বিনিয়োগই প্রত্যাশা অনুপাতে বাড়েনি। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটা খরা-পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরেই বিরাজ করছে। ব্যক্তি বা বেসরকারী খাতের বিনিয়োগের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। সরকার বেশ কিছু বড় প্রকল্পে বিনিয়োগের পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সেসব প্রকল্পে বিদেশী বিনিয়োগের আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সে বিনিয়োগও আসছে ধীর গতিতে। বৈদেশিক সহায়তা ও অনুদান প্রতাশানুগ নয়। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তা ও অনুদান এসেছে আশ্বাসের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।
    বিনিয়োগ না বাড়লে শিল্প-কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়েনা। বাড়েনা কর্মসংস্থান। বিরাজমান বাস্তবতা তো এই যে, শিল্প-কারখানা বাড়া তো দূরের কথা, বহু শিল্প কারখানা ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। রুগ্ন অবস্থায় পতিত হয়েছে আরো বহু শিল্প-কারখানা। ফলে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মী বেকার হয়ে পড়েছে, আরো হাজার হাজার বেকার হওয়ার অপেক্ষায় আছে। দেশের শ্রমবাজারে প্রতি বছর ২০-২৫ লাখ মানুষ প্রবেশ করছে। অথচ তাদের মধ্যে ৭-৮ লাখেরও কর্মসংস্থান হচ্ছে না। এতে বেকারের সংখ্যা বছর কে বছর বাড়ছে। এখন সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষিত-অশিক্ষিত বেকার কর্মসংস্থানের অভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরছে।
    সরকারের পক্ষ থেকে বড় গলা করে বলা হয়, দেশের মানুষের আয় বেড়েছে, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে দারিদ্র কমেছে। বাস্তবে এসব দাবির পক্ষে যথোপযুক্ত প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়না। বরং উল্টো তথ্য পাওয়া যায়। সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে মালয়েশীয় অর্থনীতিবিদ জুমো বলেছেন, বাংলাদেশে দারিদ্র কমেছে বলে বিভিন্ন রিপোর্টে উঠে আসছে। কিন্তু পুষ্টিহীনতা যে কমছে না সেটা উঠে আসছেনা। দারিদ্র কমলেও ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বলা বাহুল্য, দারিদ্র কমলে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা কমার কথা। কিন্তু এখানে এর ব্যতিক্রমই লক্ষ্যণীয়। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বাড়ায় সরকারের কর্তাব্যক্তিদের আহলাদের সীমা নেই। অথচ জনজীবনে তার প্রতিফলন দৃষ্ট হয়না। অর্থমন্ত্রী স্বয়ং স্বীকার করেছেন, সাধারণভাবে প্রবৃদ্ধি বাড়লে দারিদ্র হ্রাস পায়। তবে অর্থনীতির কাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে প্রবৃদ্ধির সুফল সমানভাবে সকলের কাছে পৌঁছায় না। তিনি বলেছেন, দারিদ্র ও অসমতা-হ্রাসের ক্ষেত্রে আমরা করকাঠামো সংস্কার, আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, ক্ষুদ্রঋণ ও দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ, আশ্রায়ন প্রকল্প, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচীর মাধ্যমে আয় হস্তান্তর ইত্যাদি কৌশল প্রয়োগ করে আসছি। এই কৌশল যে খুব একটা কাজে আসছে না, বাস্তবতাই তার প্রমাণ বহণ করে। একজন মন্ত্রী সম্প্রতি জাতীয় সংসদে বলেছেন, দেশে প্রায় দু’ কোটি মানুষ অভুক্ত থাকে। আর আয় বৈষম্য ক্রমাগত বাড়ছে। সিপিডির তরফে বলা হয়েছে, দেশে আয়হীন কর্মসংস্থান বাড়ছে। সানেমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারসাজি করে চালের মূল্যবৃদ্ধি করার ফলে মাত্র কয়েক মাসে দারিদ্রসীমার ওপর থাকা ৫ লাখের বেশি মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে চলে গেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গত দশ বছরে অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ৭ লাখ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০১৬ অনুযায়ী, ২০১০ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে দেশে সবচেয়ে ধনী ৫ শতাংশ পরিবারের আয় প্রায় ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। তাদের মাসিক আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৯৪১ টাকায়। বিপরীতে একই সময় সবচেয়ে দরিদ্র ৫ শতাংশ পরিবারের আয় কমেছে ৫৯ শতাংশ। তাদের মাসিক আয় দাঁড়িয়েছে ৭৩৩ টাকায়, যা ২০১০ সালে ছিল ১ হাজার ৭৯১ টাকা। ওই জরিপেই উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের মোট আয়ের ২৮ শতাংশ যাচ্ছে ৫ শতাংশ ধনীর কাছে। অর্থাৎ ১০০ টাকা আয়ে তারা পাচ্ছে ২৮ টাকা। পক্ষান্তরে দরিদ্র ৫ শতাংশ পাচ্ছে মাত্র ২৩ পয়সা। এ ভয়ংকর আয় বৈষম্যের কারণে ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে, দরিদ্ররা আরো দরিদ্র হচ্ছে।
    সঙ্গতকারণেই প্রশ্ন উঠতে পারে, কী সেই আলাদীনের চেরাগ, যার মাধ্যমে কিছু মানুষ দ্রুততম সময়ে অতিধনী হয়ে যাচ্ছে? বলা বাহুল্য, আয় বন্টনের সুষম ব্যবস্থা যে দেশে নেই সে দেশে যখন ধনীর সংখ্যা বাড়ে, ধনী যখন আরো ধনী হয়ে যায় তখন দরিদ্রের সংখ্যা বাড়ে, দরিদ্র আরো দরিদ্র বা হতদরিদ্রে পরিণত হয়। আমাদের দেশে এটাই প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। এও বলার অপেক্ষা রাখেনা, অসততা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুণ্ঠন ছাড়া কেউ রাতারাতি, ধনী ও সম্পদশালী হয়ে উঠতে পারেনা। সৎভাবে, নিয়ম ও সুনীতি মেনে ধনী ও সম্পদশালী হওয়া খুবই কঠিন। আমাদের দেশ ও সমাজে অনিয়ম, দুনীতি, ঘুষ এবং কৌশল, প্রতারণা বাজার করে অন্যের সম্পদ হাতিয়ে নেয়া কোনো নতুন ঘটনা নয়। তবে গত এক দশকে এ ধরনের অপকর্ম মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মুষ্টিমেয় কিছু লোকের কাছে সম্পদ পুঞ্জিভূত হওয়ার এসবই উল্লেখযোগ্য কারণ।
    কেনা জানে, আমাদের দেশে অনিয়ম-দুর্নীতি সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেনি। রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন তারা যোগসাজস করে দেশকে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়া-বাড়িতে পরিণত করেছেন। পেছনে রাষ্ট্রীয় আনুুকূল্য আছে বলেই তাদের পক্ষে এটা করা সম্ভবপর হয়েছে। শেয়ার বাজার লুট হয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা লুণ্ঠিত হয়েছে। এর কোনো প্রতিকার রাষ্ট্র করেনি। লুটেরারা অধরা রয়ে গেছে এখনো। অনিয়ম-দুর্নীতিতে ব্যাংক সেক্টর কার্যত বসে গেছে। ব্যাংক থেকে হলমার্ক, ডেসটিনি, ক্রিসেন্ট গ্রুপ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, নূরজাহান গ্রুপসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আর ফেরৎ দেয়নি। এ টাকা ফেরৎ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ব্যাংকখাতে বকেয়া ঋণ আছে ৮ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। এ ঋণ কবে আদায় হবে, আদৌ হবে কিনা কেউ বলতে পারে না। বেসরকারী ব্যাংকগুলোর মালিকরা পরস্পর যোগসাজসে অধিকাংশ টাকা ঋণ হিসাবে নিয়ে নিয়েছে। ঋণ খেলাপীদের পকেটে আছে এক লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। খেলাপী ঋণের বেশির ভাগই সরকারি ব্যাংকের। বকেয়া ও খেলাপী ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোর তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। অনেক ক্ষেত্রেই নিয়ম মেনে ঋণ দেয়া হয়নি। ফলে অনিয়মে দেয়া ঋণ আদায় হওয়ার সম্ভবনা কম। ঘুষের ব্যপারটি এমন যে, কোনো কাজই ঘুষ ছাড়া হয়না। সেবাখাতে পর্যন্ত ঘুষ না দিলে কাজ হয় না। ১৬টি সেবাখাতে ২০১৭ সালে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার ঘুষের লেনদেন হয়েছে। অতি সাম্প্রতিক এক খবরে জানা গেছে, দেড় বছরে মালয়েশিয়াগামী প্রায় দু’লাখ বাংলাদেশী শ্রমিকের কাছ থেকে নির্ধারিত আয়ের বাইরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ১০ বিক্রুটিং এজেন্সির একটি সিন্ডিকেট।
    অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অর্জিত অর্থের একটি বড় অংশ দেশ থেকে পাচার হয়ে যায়। অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে শীর্ষে। গেøাবাল ফিনান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির ২০১৭ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন মতে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ৯১১ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে, বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। ১০ বছরে এর পরিমাণ সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকা। ২০১৭ সাল শেষে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশী মুদ্রায় ৪ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। এও জানা যায়, মালয়েশিয়ার সেকেণ্ড হোম কর্মসূচীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাংলাদেশী অন্তত ৪২ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
    শেয়ারবাজার লুণ্ঠন, ব্যাংকখাত থেকে ঋণের নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়া এবং ঘুষ-কমিশন ইত্যাদির মাধ্যমে সঞ্চিত সম্পদ বিদেশে পাচার না হয়ে দেশেই যদি থাকতো ও বিনিয়োগ হতো তাহলে এক ধরনের সুফল পাওয়া সম্ভব হতো। শিল্প-কারখানা হতো, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটতো, কর্মসংস্থান বাড়তো। সে সম্ভাবনাও রহিত হয়ে গেছে। যে দেশে অনিয়মকারী, দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর ও লুটেরারা পার পেয়ে যায়, দায়মুক্তি ভোগ করে এবং শাসক শ্রেণী কোনো না কোনোভাবে তাদের ছত্রচ্ছায়া দেয়, সে দেশের ভবিষ্যত নিয়ে শংকিত না হয়ে পারা যায় না ।
    আসলে কোনো দেশে সুশাসন, জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার না থাকলে বা সংকুচিত হয়ে পড়লে জনগণের দুর্ভোগ-বিড়ম্বনা, শোষন-বঞ্চনা, জুলম-নির্যাতন, ও বৈষম্যের শিকার হওয়া অবধারিত হয়ে যায়। আমাদের দেশের বাস্তবতাও এমনই। ক্ষমতায় যে সরকার আছে তা অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বদ্বীতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত নয়। সে কারণে তার জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা কম। এটা মনে করার কোনো কারণ নেই যে, ধনী ও দরিদ্র বৃদ্ধি কোনো প্রাকৃতিক নিয়মের ফল। এটা অনুসৃত রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক নীতি-সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থারই অনিবার্য পরিণতি। শেয়ারবাজার, ব্যাংক ব্যবস্থা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-জ্বালানিখাত, সরকারী ক্রয়খাত, নির্মাণ খাত, সেবাখাত ইত্যাদি যখন অবৈধভাবে অর্থ বানানোর উপায়ে পরিণত হয়,তখন অতিধনীর সংখ্যা বৃদ্ধি যেমন স্বাভাবিক তেমনি সমাজে বিষম অবস্থা বৃদ্ধি পাওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
    দেশের মানুষ লাগাতার উন্নয়নের জয়গান শুনছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি, মাথাপিচু আয় বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, উন্নয়নশীল দেশের সূচক অর্জন ইত্যাদির কথা বলা হচ্ছে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী ট্যানেল, অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রভৃতির কথাও জানানো হচ্ছে। অথচ জনগণের দারিদ্র দূর হচ্ছে না; ক্ষুর্ধাত মানুষের সংখ্যা বরং বাড়ছে। নাগরিক নিরাপত্তা নেই বললেই চলে। গুম, তুলে নেয়া, খুন ইত্যাদি সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। জনগণের রাজনৈতিক অধিকার, মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হতে হতে প্রান্তিক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। নিবর্তনমূলক আইনের বাঁধনও জোরদার করা হচ্ছে। গণতন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে বটে, তবে সেই গণতন্ত্র নিয়ন্ত্রণমূলক গণতন্ত্রের নামান্তর। গণতন্ত্রহীন বা নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের দেশে ক্ষমতাসীনদের গণতন্ত্রসম্মত আচরণের প্রতি আনুগত্য প্রত্যাশা করা যায় না। ক্ষমতার দাপট দেখানোর প্রবণতা বরং তাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। আর তাদের সঙ্গেই জুটে যায় সুযোগসন্ধানীরা। তারা ক্ষমতাসীনদের তোয়াজ করে, বখরা দিয়ে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে। এভাবেই তারা দ্রুত ধন-সম্পদের মালিক বনে যায়। কাজেই আইনের শাসন, সুশাসন, জবাবদিহিমূলক শাসন এবং দেশের সুষম উন্নয়ন তরান্বিত করতে হলে গণতন্ত্র ও অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য।

    ইয়ামাগাতার আলুর স্টু উৎসবের গিনেস বিশ্ব রেকর্ড

    উত্তর জাপানের ইয়ামাগাতা শহরের একটি আলুর স্টু উৎসব, ৮ ঘণ্টার মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক সুপ সরবরাহের জন্য বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করেছে।

    আজ, বার্ষিক শরত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বিশালাকারের একটি পাত্রে, কচুর ছড়া, গোমাংস এবং কোনিয়াকুর সমন্বয়ে ইমোনি নামে এই স্টু তৈরি করা হয়। উৎসব উপলক্ষে আজ ভোর থেকে বিপুল সংখ্যক লোকজন সমবেত হন।

    ৩ টন কচুর ছড়া, ১.২ টন গোমাংস এবং সাড়ে ৩ হাজার কোনিয়াকুর শিট সাড়ে ৬ মিটার প্রশস্ত একটি পাত্রে ঢেলে সয়া সস এবং চিনি দিয়ে মেশানো হয়। লোকজনের মধ্যে স্টু বিতরণের জন্য একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করা হয়।

    আয়োজকরা, প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ৬শ ৯৫ বাটি স্টু বিতরণ করেন।

    গিনেস বিশ্ব রেকর্ড, ৮ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যক সুপ সরবরাহের জন্য অনুষ্ঠানটিকে স্বীকৃতি প্রদান করে।

    জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর কোরিয়া বিষয়ক দূতদের বৈঠক

    উত্তর কোরিয়া বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত স্টিফেন বিগান এবং তাঁর জাপানী প্রতিপক্ষ কেনজি কানাসুগি, উত্তর কোরিয়ার জাতিসংঘ প্রস্তাব লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয় পুনঃনিশ্চিত করেছেন।

    আজ টোকিওতে মিঃ বিগান, জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও ওশেনিয়া ব্যুরোর প্রধানের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন।

    কূটনীতিকদ্বয়, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু মুক্ত করণ অর্জনের লক্ষ্যে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর নিরাপত্তা পরিষদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের প্রয়োজন রয়েছে বলে একমত পোষণ করেন।

    তাঁরা, সমুদ্রে অবৈধভাবে উত্তর কোরিয়া অভিমুখী জাহাজ থেকে জাহাজে তেলজাতীয় পণ্য সরিয়ে নেয়া প্রতিরোধ করতে জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ কোরিয়াসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করার বিষয় নিশ্চিত করেন।

    মিঃ বিগান এবং মিঃ কানাসুগি, জাপানী নাগরিক অপহরণ সমস্যা এবং আগামী মঙ্গলবার থেকে আরম্ভ হতে যাওয়া আন্তঃকোরীয় শীর্ষ সম্মেলনসহ উত্তর কোরিয়া বিষয় মোকাবিলায় দেশ দুটির পারস্পরিক সমন্বয় সাধনের বিষয়েও মতৈক্যে পৌঁছান।

    চলতি সপ্তাহে মিঃ বিগান, বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও জাপান সফরে রয়েছেন। তিনি গতকাল, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারোও কোওনোর সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন।

    লংকানদের হারিয়ে ১৩৭ রানের বিশাল জয় বাংলাদেশের

    মুশফিকের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বেঁধে দেওয়া ২৬২ রানের লক্ষ্য পূরণে ব্যাট করছে শ্রীলংকা। কিন্তু ৫০ ওভারের খেলায় ২১ ওভার শেষে দলটির সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ৮০। তাও আবার ৭টি উইকেট হারানোর পর! ২৫ ওভারের ২য় বলে ৮ম উইকেট হারিয়ে দলটির রান দাঁড়ায় ৯৬।
    বলাবাহুল্য, দুর্দান্ত ব্যটিং তো বাংলাদেশের ছিলই। তারপর ফিল্ডিংয়ে এসে লংকানদের এমনই করুন অবস্থা আজ করে ছেড়েছে বাংলাদেশের বোলাররা!
    লঙ্কানরা আজ যেন শকড তামিম ইকবালের আহত ব্যান্ডেজ বাঁধা হাতের আর মুশফিকুর রহিমের দিক-বিদিক মার খেয়ে!
    আজকের মাঠে বল হাতে লংকানদের ত্রাশ হিসেবে বিরাজ করছেন মাশরাফি। এছাড়া মোস্তাফিজ আর মেহেদী হাসান মিরাজের বলের তেজ লংকানদের রীতিমতো আজ ঘাম ছুটিয়ে দিয়েছে! দুঃস্বপ্ন দেখছেন যেন তারা আজ!
    শেষ ৫ ওভারে লংকানরা নিয়েছে ১৮ রান। এছাড়া দলের গড় রান বর্তমানে ৩.৬। জেতার জন্য দলের গড় রান দরকার ছিল ৫.২৪। এখনো জিততে হলে দলটিকে প্রতি ওভারে গড়ে রান নিতে হবে ৬.৬১ করে।
    ২৫ ওভারের ২য় বলে দলীয় ৯৬ রানের মাথায় মাঠ ছাড়েন সুরাঙ্গা লাকমাল। শ্রীলংকান দল হারায় ৮ উইকেট। দিলরুয়ান পেরেরার সঙ্গে ব্যাট হাতে জুটি বাঁধতে নামেন আমিলা আপনসো। ৩৪ ওভারের পর দ্বিতীয় বলে দিলরুয়ানও ফিরে যান সাজঘরে। সর্বশেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামেন লাসিথ মালিঙ্গা। ৩৫ ওভার শেষে দলীয় রান ১২৪।
    এরপর ৩৫ ওভার শেষে ৩৬ ওভারের দ্বিতীয় বলে মালিঙ্গাকে একাই থেকে যান। দলের রান তখনও ১২৪।
    বাংলাদেশ জিতে যায় ১৩৭ রানের বিপুল ব্যবধানে!

    বোমা আতঙ্কে সাময়িকভাবে বন্ধ জাপানের নারিতা বিমানবন্দর রানওয়ে

    জাপানের নারিতা বিমানবন্দরের দু’টি রানওয়ের একটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রানওয়েটির পাশে বোমা পুঁতে রাখা হয়েছে এমন সন্দেহে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়। কর্মকতারা একথা জানিয়েছেন।
    স্থানীয় পুলিশ সন্দেহজনক বস্তুটি অপসারণ করেছে। বিমানবন্দরটিতে একটি রানওয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল বলে সেখানে কোন ফ্লাইট বাতিল করার প্রয়োজন পড়েনি। খবর এএফপি’র।
    জাপানের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নারিতার এক মুখপাত্র বলেন, ‘ঠিকাদাররা সেখানে রাতে কাজ করার সময় বিস্ফোরক জাতীয় ওই বস্তু দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন।
    পুলিশ জানায়, বস্তুটির বিস্ফোরণের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
    বিমানবন্দরটি বছরে ৪ কোটি যাত্রী ও আড়াই লাখ ফ্লাইট পরিচালনা করে। -বাসস

    সম্পর্ক উন্নয়নে সম্মত আবে ও শি

    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, তাঁরা সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবেন। এর অংশ হিসাবে আবে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আগামী মাসে চিন ভ্রমণের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাবেন। দুই নেতা রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলে অর্থনৈতিক ফোরামের পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন।

    আবে বলেন, “জাপান ও চিনের সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হচ্ছে, এবং দু’দেশে সম্পর্ক এখন স্বাভাবিক গতিতে চলছে।”

    শি বলেন, “পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে চিন ও জাপানের সম্পর্ক স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে এসেছে। আরও উন্নয়নের লক্ষ্যে স্থিতিশীল সম্পর্কের জন্য আমাদেরকে এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে এবং চিন-জাপান সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।”

    ওসাকা বিশ্বাস করতে পারছেন না ইউ এস ওপেন’এ শিরোপা জয় করেছেন

    জাপানের টেনিস খেলোয়াড় নাওমি ওসাকা বলেছেন, তিনি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে ইউ এস ওপেন’এর মহিলাদের সিঙ্গলস্‌’এ শিরোপা জয় করেছেন।

    যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রতিযোগিতায় সেরেনা উইলিয়ামস’কে পরাজিত করার এক দিন পরে, নিউইয়োর্ক থেকে রবিবার মিয ওসাকা এনএইচকে’কে একটি সাক্ষাতকার দেন। ২০ বছর বয়সী ওসাকা হলেন গ্র্যান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্ট বিজয়ী প্রথম জাপানী খেলোয়াড়।

    কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ক’রে ওসাকা বলেন, তিনি এই ফলাফলে খুশি। ওসাকা বলেন, খেলাটি খুব উপভোগ করেছেন বলেই জিততে পেরেছেন।

    এখানে উল্লেখ্য, শৈশব থেকে ওসাকা’র টেনিস-আদর্শ হলেন স্বয়ং উইলিয়ামস্‌। চলতি বছর মার্চ মাসে ওসাকা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হন। তবে ওসাকা বলেন, ইউ এস ওপেনের খেলার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি, কারণ তিনি জানতেন গ্র্যান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্টে উইলিয়ামস্‌ তাঁর সবচেয়ে ভাল খেলাটাই খেলবেন।

    ওসাকা বলেন, ফাইনালে উইলিয়ামসের মুখোমুখি হতে পেরে তিনি খুব গর্ববোধ করছেন।

    ‘খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলেই বোঝা যাবে সরকার নির্বাচন চায়’

    সারাদেশে বিএনপির মানববন্ধন আটক দুই শতাধিক

    দেশে সরকার নির্বাচন চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সবার আগে মুক্তি দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া দেশে কোন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। এজন্য সবার আগে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে মুক্তি দিলেই বোঝা যাবে সরকার দেশে নির্বাচন চায়। গতকাল (সোমবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন।
    বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে বিএনপি। বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার এই কর্মসূচি থাকলেও সকাল ১০টার আগেই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন। খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নিতে নেন। তারা তীব্র রোদ আর প্রচন্ড গরমের মধ্যেই ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন গোটা এলাকা। নির্ধারিত সময়ের আগেই পল্টন হাইকোর্ট সড়কটি লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জনসভার পর এই মানববন্ধন কর্মসূচিতেও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি দলটির আত্মবিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করেছে। মানববন্ধনের শুরুতে দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত হলে নেতাকর্মীরা আপোষের পরিবর্তে কর্মসূচির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। ‘আপোষ না সংগ্রাম? কর্মীরা বলেন- সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘দালালি না রাজপথ? কর্মীরা বলেন- রাজপথ, রাজপথ’। এই ছাড়াও ‘চলছে লড়াই চলবে, খালেদা জিয়া লড়বে, ‘আমার মা জেলে কেন? খুনি হাসিনা জবাব দে,’ ‘খালেদা জিয়ার ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
    মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সাত মাস ধরে কারারুদ্ধ। সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে সাজা দিয়ে অন্যায়ভাবে তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। আমরা যে তার মুক্তি চাচ্ছি এটা কোন করুনা চাচ্ছি না। কোন দয়া বা ভিক্ষা চাচ্ছি না। আইন অনুযায়ি তার যে প্রাপ্য নিম্ন এবং উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া সেটা দেয়া হচ্ছে না। আবার আদালত থেকে জামিন হলেও সরকার তাকে মুক্ত হতে দিচ্ছে না। একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে এবং মুক্তি তার প্রাপ্য।
    সরকার দেশকে ধ্বংস স্তুপে পরিণত করেছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার গত ১০ বছরে বাংলাদেশকে ধ্বংস স্তুপে পরিণত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যা অর্জন করেছিলাম সব অর্জনগুলোকে তারা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। তারা বাংলাদেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে এই সরকার সংসদকে একটা প্রহসনে পরিণত করেছে। সেখানে একটি গৃহপালিত বিরোধী দল বানিয়ে সেটাকে অকার্যকর করে রেখেছে। প্রশাসনকে পুরোপুরি দলীয়করণ করা হয়েছে। সবচেয়ে দুর্ভাগের বিষয় হলো বিচারবিভাগকে দলীয়করণ করার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা তারা চালাচ্ছে। গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারে না। প্রতি পদে পদে স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। সরকার বিরোধী দলকে ধ্বংস করার জন্য অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটার পর একটা পরিকল্পনা করছে এবং সেভাবে বিরোধী দলকে ধ্বংস করছে।
    সম্প্রতি নতুন করে এক লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন তারা সারা বাংলাদেশে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ভৌতিক মামলা দিয়ে হাজার হাজার তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। গত কয়েকদিনেই প্রায় এক লাখের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। ভৌতিক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ১২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে। সারাদেশের প্রত্যেকটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে অসংখ্য মিথ্যা মামলা তারা দিয়েছে। সরকারকে পরিস্কার করে বলতে চাই এভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে, অত্যাচার-নির্যাতন করে, গুম-খুন, গ্রেফতার করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। তিনি বলেন, এই সরকার সন্ত্রাসী সরকারে পরিণত হয়েছে। তারা সন্ত্রাস করছে। একদিকে তারা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে আর অন্যদিকে তারা বিনা কারণে তারা গ্রেফতার করে গোটা জাতিকে জিম্মি করেছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকারকে চলে যেতে হবে, তাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে। জনগণ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ এখন দেউলিয়া রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। এজন্য আমাদের এখন ইস্পাত কঠিন ঐক্য প্রয়োজন। সমস্ত রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে ঐক্য তৈরি করে এই ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে জনগণের সরকার, জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
    জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, দেশ এখন ভয়াবহ নরকে পরিণত হয়েছে। এই ভয়াবহ অবস্থা, অত্যাচার-নির্যাতন থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। যে দানব আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে এই দানবকে আমাদের সরাতে হবে। সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। দেশনেত্রী কারাগারে যাওয়ার আগে যে আহ্বান করে গেছে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আমি তার সেই আহ্বান আবারও জানিয়ে বলছি আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অচলায়ন ভেঙে ফেলি। বুকের ওপর যারা বসে আছে তাদেরকে সরাতে হবে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের রাষ্ট্র, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
    বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীদের সমস্ত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে, সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
    স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে বাইরে রেখে আরও একটি ৫ জানুয়ারির মতো প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়। তবে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তারা দেশনেত্রীকে মুক্ত করবে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করে নেবে। এজন্য সময় থাকতে তিনি সরকারকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানান। কারণ খালেদা জিয়া ছাড়া দেশে কোন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না।
    ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, দেশের একজন নাগরিক হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার সাংবিধানিক ৫টি মৌলিক অধিকার আছে। এটি সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রের প্রতীক, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিয়ে কারাগারে সাজানো বিচার করতে চাইলে তা কখনো মেনে নেয়া হবে না। তিনি সুস্থ্য না হওয়া পর্যন্ত তার কোন বিচার করা যাবে না। বিএনপির এই নেতা বলেন, ধোকাবাজীর নির্বাচন আর এদেশে করা যাবে না। আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো এবং তাকে চতুর্থবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবো।
    নজরুল ইসলাম খান বলেন, এখন জোর করে যারা ক্ষমতায় আছে তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরও একটি নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। এজন্য তারা বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তি বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি। নজরুল ইসলাম বলেন, জনগণ বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত করে তার নেতৃত্বেই সরকার উৎখাতের আন্দোলন করতে চায়। তাকে ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হবে না। খালেদা জিয়া মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে একেকজনকে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মতো ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানান তিনি।
    মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, সেলিমা রহমান, ডাঃ জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, জয়নাল আবদীন ফারুক, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরাফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, মহানগর দক্ষিণের কাজী আবুল বাশার, যুব দলের মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, শ্রমিক দলের নুরুল ইসলাম খান নাসিম, ছাত্র দলের রাজীব আহসান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।
    সারাদেশে দুই শতাধিক নেতাকর্মী আটক: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাব এবং দেশব্যাপী জেলা ও মহানগর সদরের মানববন্ধন কর্মসূচিকে ঘিরে গতকাল বিকেল পর্যন্ত দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে দলটি। বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ তথ্য জানান।
    তিনি বলেন, প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে আসা ও যাওয়ার পথে সরকারের আজ্ঞাবহ পুলিশ বাহিনী বিনা উস্কানিতে ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনসমূহের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নির্বাহী কমিটি সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল মতিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ লেবার পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলমকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে মৎস্য ভবন, কাকরাইল মোড়, পল্টন মোড়, সেগুনবাগিচা, হাইকোর্ট মোড়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত হয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। কিন্তু পুলিশী বাধা উপেক্ষা করে মানববন্ধনে নেতাকর্মীসহ জনতার ঢল নামে। এদিকে গাজীপুরসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিএনপি’র মানববন্ধন কর্মসূচিতে পুলিশ অতর্কিত হামলা ও গুলি চালায়। এসময় বিএনপি’র বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মরহুম আ স ম হান্নান শাহ’র পুত্র শাহ রিয়াজুল হান্নান ও কাউন্সিলর হান্নান মিয়া হান্নুসহ ২৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশী লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণে মহিলা দলের সাবেক সভাপতি আনোয়ারা বেগম, যুবদল নেতা সাজেদুল মোল্লাহ, সুমনসহ বেশ ২০ জনের মতো নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন।
    তিনি জানান, মানববন্ধন থেকে যুবদলের অর্ধশতাধিক, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩০ জনের অধিক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৪০ জনের অধিক, দক্ষিণ যুবদলের দুই জন, ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক, শ্রমিক দলের ৫জনসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। এছাড়া বাগেরহাট জেলার ৪ জন, মেহেরপুরে ১১জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। লেবার পার্টির মাহবুবুল আলমকে গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলের চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার ফরিদ উদ্দিন। তারা অবিলম্বে মাহবুবের মুক্তি দাবি করেন।