• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • কুরআন তিলাওয়াত ও তারাবীর তিলাওয়াত : আমাদের অসতর্কতা

    কুরআনুল কারীম আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কালাম। মহান প্রভুর মহান বার্তা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

    لَّا یَمَسُّهٗۤ اِلَّا الْمُطَهَّرُوْنَ تَنْزِیْلٌ مِّنْ رَّبِّ الْعٰلَمِیْنَ

    যারা অত্যন্ত পবিত্র তারাই কেবল একে স্পর্শ করে। এটা জগৎসমূহের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। -সূরা ওয়াকেয়া (৫৬) : ৭৯-৮০

    আমরা কুরআন তিলাওয়াত করি। তিলাওয়াত কুরআনের বড় একটি হক। আল্লাহ তাআলা আদেশ করেছেন-

    اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ

    (হে নবী!) ওহীর মাধ্যমে তোমার প্রতি যে কিতাব নাযিল করা হয়েছে তা তিলাওয়াত কর। -সূরা আনকাবূত (২৯) : ৪৫

    তিলাওয়াতের অনেক গুরুত্ব, অনেক ফযীলত। তিলাওয়াতকারীর লাভ ও সওয়াবকে অল্লাহ এমন ব্যবসার সাথে তুলনা করেছেন, যে ব্যবসা কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না-

    إِنَّ الَّذِينَ يَتْلُونَ كِتَابَ اللهِ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَأَنْفَقُوا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةً يَرْجُونَ تِجَارَةً لَنْ تَبُورَ  .

    যারা আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে, নামায কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে (সৎকাজে) ব্যয় করে গোপনে ও প্রাকশ্যে। তারা এমন ব্যবসায়ের আশাবাদী, যাতে কখনও লোকসান হয় না। -সূরা ফাতির (৩৫) : ২৯

    মহান আল্লাহ তাআলার কালাম তিলাওয়াতের বিশেষ নিয়ম ও আদব রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

    وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا

    কুরআন তিলাওয়াত কর ধীরস্থির ভাবে, স্পষ্টরূপে। -সূরা মুযযাম্মিল (৭৩) : ৪

    হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

    زينوا القرآن بأصواتكم

    সুন্দর সূরের মাধ্যমে কুরআনকে  (এর তিলাওয়াতকে) সৌন্দর্যমণ্ডিত কর। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৪৬৮

    হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম ইরশাদ করেছেন, (কিয়ামতের দিন) কুরআনের তিলাওয়াতকারী বা হাফেজকে বলা হবে-

    اقْرَأْ، وَارْتَقِ، وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِي الدُّنْيَا، فَإِنَّ مَنْزِلَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَؤُهَا.

    তিলাওয়াত করতে থাক এবং উপরে উঠতে থাক। ধীরে ধীরে তিলাওয়াত কর, যেভাবে ধীরে ধীরে দুনিয়াতে তিলাওয়াত করতে। তোমার অবস্থান হবে সর্বশেষ আয়াতের স্থলে যা তুমি তিলাওয়াত করতে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৪৬৪; জামে তিরমিযী, হাদীস ২৯১৪

    এই ধীরস্থির বা তারতীলের সাথে তিলাওয়াত কেমন হবে তা প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখিয়ে গেছেন, শিখিয়ে গেছেন। হযরত উম্মে সালামাহ রাযি.-কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায ও তিলাওয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, তাঁর তিলাওয়াত ছিল-

    قِرَاءَةً مُفَسَّرَةً حَرْفًا حَرْفًا

    প্রতিটি হরফ পৃথক পৃথকভাবে উচ্চারিত। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৯২৩

    অর্থাৎ কোনো জড়তা, অস্পষ্টতা ও তাড়াহুড়া ছিল না।

    হযরত আনাস রাযি.-কে নবীজীর তিলাওয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, তাঁর তিলাওয়াত ছিল (মদের স্থানে) টেনে পড়া। এর পর তিনি بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ পাঠ করে শোনান এবং اللهِ , الرَّحْمٰنِ  ও الرَّحِيمِ এ সব জায়গার মদগুলো টেনে উচ্চারণ করে দেখান। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০৪৬

    সাহাবায়ে কেরামের তিলাওয়াতের বৈশিষ্ট্যও এমনই ছিল। ধীরস্থিরভাবে তিলাওয়াত করতেন তাঁরা। নিজেরা করতেন, অন্যদেরকেও তাগিদ দিতেন।

    قَالَ عَلْقَمَةُ : صَلَّيْتُ مَعَ ابْنِ مَسْعُودٍ مِنْ أَوَّلِ النَّهَارِ إِلَى انْصِرَافِهِ مِنَ الْفَجْرِ فَكَانَ يُرَتِّلُ.

    হযরত আলকামাহ রাহ. বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর সাথে নামায পড়লাম দিনের শুরু থেকে ফজর পর্যন্ত। তিনি তিলাওয়াত করছিলেন তারতীলের সাথে, ধীরস্থিরভাবে। -মুখতাছারু কিয়ামিল লাইল পৃ. ১৩১

    وَقَرَأَ عَلْقَمَةُ عَلَى عَبْدِ اللَّهِ وَكَانَ حَسَنَ الصَّوْتِ. فَقَالَ: رَتِّلْ فِدَاكَ أَبِي وَأُمِّي. فَإِنَّهُ زَيْنُ الْقُرْآنِ

    আলকামাহ রাহ. একবার হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি.-কে কুরআন তিলাওয়াত করে শোনাচ্ছিলেন। তিনি সুমধুর কণ্ঠের অধিকারী ছিলেন। (তো তিনি কিছুটা দ্রুত পড়ে যাচ্ছিলেন) তখন ইবনে মাসউদ রাযি. বললেন, আমার বাবা-মা তোমার উপর কুরবান হোক! ধীরস্থিরভাবে তারতীলের সাথে তিলাওয়াত কর। এটা কুরআনের (তিলাওয়াতের) ভূষণ। -মুখতাসারু কিয়ামিল লাইল, পৃ. ১৩১

    হযরত ইবনে মাসউদ রা.কে এক ব্যক্তি বলল,

    إِنِّي لَأَقْرَأُ الْمُفَصَّلَ فِي رَكْعَةٍ، فَقَالَ عَبْدُ اللهِ: هَذًّا كَهَذِّ الشِّعْرِ، إِنَّ أَقْوَامًا يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ، وَلَكِنْ إِذَا وَقَعَ فِي الْقَلْبِ فَرَسَخَ فِيهِ نَفَعَ

    আমি এক রাকাতেই মুফাস্সালের [সূরা ক্বাফ থেকে সূরা নাস পর্যন্ত। (ফাতহুল বারী ২/২৫৮)] সব সূরা পড়ে নিই। হযরত ইবনে মাসউদ রাযি তখন বললেন, সে তো কবিতা আওড়ানোর মত পাঠ করা।

    অনেক মানুষ কুরআন তিলাওয়াত করে, কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালির নিচেও যায় না। অথচ কুরআন তিলাওয়াত তখনই (পরিপূর্ণ) উপকারী হয় যখন তা অন্তরে গিয়ে বসে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮২২

    وَعَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ: سَافَرْتُ مَعَ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ مِنْ مَكَّةَ إِلَى الْمَدِينَةِ وَهُمْ يَسِيرُونَ إِلَيْهَا وَيَنْزِلُونَ بِاللَّيْلِ، فَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَقُومُ نِصْفَ اللَّيْلِ فَيَقْرَأُ الْقُرْآنَ حَرْفًا حَرْفًا، ثُمَّ حَكَى قِرَاءَتَهُ: ثُمَّ يَبْكِي حَتَّى تَسْمَعَ لَهُ نَشِيجًا.

    হযরত ইবনে আবী মুলাইকা রাহ. বলেন, এক সফরে মক্কা থেকে মদীনায় যাওয়ার পথে আমি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.-এর সাথে ছিলাম। দিনভর আমরা পথ চলতাম আর রাতে কোথাও তাবু ফেলে বিশ্রাম করতাম। হযরত ইবনে আব্বাস রাযি. মাঝরাতে নামাযে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং খুব ধীরে ধীরে থেমে থেমে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। এক একটি শব্দ স্পষ্ট ও পৃথক পৃথক শোনা যেত। আর নামাযে তিনি ডুকরে ডুকরে কাঁদতেন। এমনকি তাঁর হেঁচকির আওয়ায পর্যন্ত শোনা যেত। -মুখতাসারু কিয়ামিল লাইল পৃ. ১৩১

    আরেক বর্ণনায় হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি.তিনি বলেন-

    لَا تَهُذُّوا الْقُرْآنَ كَهَذِّ الشِّعْرِ، وَلَا تَنْثُرُوا كَنَثْرِ الدَّقَلِ، وَقِفُوا عِنْدَ عَجَائِبِهِ وَحَرِّكُوا بِهِ الْقُلُوبَ، وَلَا يَكُونُ هَمُّ أَحَدِكُمْ مِنَ السُّورَةِ آخِرَهَا.

    তোমরা কবিতা পাঠের মত গড়গড় করে দ্রুত কালামে পাক তিলাওয়াত করো না এবং নষ্ট খেজুর যেমন ছুড়ে ছুড়ে ফেলা হয় তেমন করে পড়ো না বরং এর বিস্ময়কর বাণী ও বক্তব্যগুলোতে এসে থেমে যাও, হৃদয়কে নাড়া দাও। এ ভাবনা যেন না থাকে যে, এ সূরা কখন শেষ হবে! -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস ৮৮২৫

    উলামায়ে কেরাম বলেন, কুরআন তারতীলের সাথে পড়া সুন্নত হওয়ার কয়েকটি কারণ :

    ১. তারতীলের সাথে তিলাওয়াত করা হলে কুরআনে বর্ণিত বিষয়গুলোর প্রতি মনোনিবেশ করা যায়।

    ২. আল্লাহ তাআলার কালামের প্রতি অধিক সম্মান প্রদর্শিত হয়।

    ৩. অন্তরে অধিক ক্রিয়া সৃষ্টি করে। -আলইতকান ফী উলূমিল কুরআন ১/১০৬

    সুতরাং যারা অর্থ বুঝেন না তাদের জন্যও ধীরে তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব। কারণ কুরআনের অর্থ বুঝতে না পারলেও কুরআনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও অন্তরে ক্রিয়া সৃষ্টি হওয়া তো অবশ্যই সম্ভব।

    উলামায়ে কেরাম এ বিষয়েও একমত যে, কুরআন তিলাওয়াত খুব দ্রুত করা ক্ষেত্রবিশেষে নাজায়েয।

    আল্লামা যারকাশী রাহ. বলেন, তারতীল মানে কুরআনের শব্দগুলো ভরাট উচ্চারণে পাঠ করা এবং হরফগুলো স্পষ্ট করে উচ্চারণ করা। অন্যথায় এক হরফ আরেক হরফের সাথে যুক্ত হয়ে যাবে। কারো কারো মতে এটা তারতীলের সর্বনিম্ন মাত্রা।

    নামাযে আমরা কুরআন তিলাওয়াত করে থাকি নামাযের ফরয বিধান হিসাবে। কুরআন তিলাওয়াতের যে আদবসমূহ উপরে আলোচিত হল সেগুলো নামাযে তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে আরও বেশি  প্রযোজ্য। নামাযে তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে ধীরস্থিরতা ও ভাবগাম্ভীর্য আরো বেশি মাত্রায় থাকতে হবে। তখন এগুলো শুধু তিলাওয়াতের বিষয় হিসাবেই থাকে না বরং এই ধীরস্থিরতা ও আত্মনিমগ্নতা নামাযেরও বিষয়।

    নামাযের খুশু-খুযুর জন্য তিলাওয়াত তারতীলের সাথে হওয়া খুব জরুরি। তাছাড়া এত দ্রুত তিলাওয়াতের কারণে মদ্দ-গুন্নাসহ তাজবীদের অনেক কায়েদা লঙ্ঘিত হয় এবং হুরূফের ছিফাতের প্রতিও যথাযথ লক্ষ্য রাখা যায় না, ফলে দ্রুত পড়তে গিয়ে ص এর জায়গায় س হয়ে যাওয়া, ش এর জায়গায় س হয়ে যাওয়া, ﻁ এর জায়গায় ت হয়ে যাওয়া কিংবা যেখানে টান নেই সেখানে টান হয়ে যাওয়া বা কোথাও টান আছে সেখানে টান না হওয়া (দ্রুত পড়তে গেলে এই টানের ভুল সব চেয়ে বেশি হয়) খুব সহজেই ঘটে যেতে পারে।

    মোটকথা নামাযে দ্রুত তিলাওয়াত করতে গিয়ে নামায নষ্ট হয়ে যাওয়ার মত ভুল যদি নাও হয় বরং শুধু যদি এটুকু হয় যে, উচ্চারণে মাকরূহ পর্যায়ের বিঘ্ন ঘটছে তাহলে সেই নামাযও কি ত্রুটিযুক্ত হয়ে পড়ল না? আর যদি ধরে নেওয়া হয় যে, কেউ সকল উচ্চারণ ঠিক রেখে খুব দ্রুত পড়ে যেতে পারেন তার জন্যও তো নামাযে অন্তত এমনটি না করা উচিত। কারণ তাতে কুরআন তিলাওয়াতের ন্যূনতম আদবটুকুও যেমন রক্ষিত হয় না তেমনি নামাযে খুশু-খুযু রক্ষা করাও সহজ হয় না।

    ফরয নামায ও অন্যান্য নামাযে আমরা কিছুটা ধীরস্থির তিলাওয়াত করে থাকি।  কিন্তু রমযানে তারাবীতে এত দ্রুত পড়ে থাকি, এতই দ্রুত যে তারতীলের ন্যূনতম মাত্রাও সেখানে উপস্থিত থাকে না। মদ্দ (টান), গুন্নাহ ও শব্দের উচ্চারণ বিঘ্নিত হয়ে তিলাওয়াত মাকরূহ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছে; বরং অর্থের পরিবর্তন হয়ে নামায নষ্ট হয়ে যায়, আমাদের অজান্তেই। আর খুশু-খুযু, ধ্যানমগ্নতা তো নষ্ট হচ্ছেই। আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে আল্লাহর সুমহান কালাম পড়ছি বা শুনছি এমন ভাব-তন্ময়তা তো দূরের কথা কখন বিশ রাকাত তারাবী শেষ হবে এই চিন্তাই যেন সকলকে তাড়িত করতে থাকে।

    নামায বা তিলাওয়াতের যে আদবটুকু ফরয নামাযে রক্ষা হয় তারাবীতে সেটুকু পাওয়াও দুষ্কর। দ্রুত তিলাওয়াত, দ্রুত রুকু, সেজদা, দ্রুত তাসবীহ। অনেকের মাঝে ধারণা জন্মে গেছে, তারাবী মানেই তাড়াতাড়ি পড়া। যার কারণে দেখা যায় যে, যারা ‘সূরা’-তারাবী পড়েন তারাও ভীষণ দ্রুত পড়েন।

    অনেকেই মুসল্লিদের কষ্টের কথা বলে থাকেন। কিন্তু চিন্তা করে দেখুন, ধীরস্থিরভাবে বিশ রাকাত নামায পড়ার কারণে যতটুকু কষ্ট-ক্লান্তি আমাদের হয় তার চেয়ে বেশি হয় কিয়াম, রুকু, সেজদা, তাসবীহ দ্রুত করার কারণে। দুই রাকাত শেষে সালাম ফিরিয়েই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে যাওয়া। চার রাকাত পড়ে খুব সামান্য একটু সময় বসে আবার শুরু করা। অথচ সালাফে সালেহীনের আমল কেমন ছিল তা আমরা পূর্বেই দেখে এসেছি।

    মক্কা-মদীনার তারাবীর খোঁজ নিয়ে দেখুন, সেখানে কত ধীরস্থির তিলাওয়াত, দীর্ঘ বিশ্রাম, লম্বা সময় নিয়ে তারাবী। সেখানে কত দেশের, কত ধরনের, কত বয়সের মানুষ রয়েছে! অথচ আমাদের অবস্থা হল, বিরতিহীন উঠাবসার মাধ্যমে বিশ রাকাত শেষ করার এক প্রতিযেগিতা। অথচ হাদীস শরীফে কাকের ঠোকরের মত রুকু, সেজদা করা থেকে কত শক্তভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

    এর চেয়ে তিলাওয়াত ধীরে করে কিয়াম একটু লম্বা করলে, রুকু, সেজদায় সময় নিলে এবং উঠাবসায় ধীরস্থিরতা অবলম্বন করলে কষ্ট অনেকই কমে যাবে। বয়স্কদের কথা যদি বলেন তাদের জন্য তো ধীরস্থিরতাই সহজ। তাছাড়া বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য কেরাত ছোট করার কথা হাদীসে রয়েছে। তাড়াতাড়ি করার কথা তো নেই! এদের যদি খতম তারাবী একেবারেই কষ্ট হয়ে যায় তাহলে সূরা তারাবী পড়তে পারেন।

    তারাবীর নামায যেমন গুরুত্বপূর্ণ আমল তেমনই ফযীলতের। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

    مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.

    যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সাথে, সওয়াবের আশায় রমযানে কিয়াম করে (তারাবী, তাহাজ্জুদ সবই এর অন্তর্ভুক্ত) আল্লাহ তাআলা তার পেছনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২০০৯

    অন্য হাদীসে ইরশাদ হয়েছে-

    خَرَجَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْم وَلَدَتْهُ أُمُّهُ

    …সে যাবতীয় গুনাহ থেকে নবজাত শিশুর মত পবিত্র হয়ে যাবে। -সুনানে নাসায়ী, হাদীস ২২১০; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৩২৮

    এই যে এত এত সওয়াবের কথা হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হল এগুলো পাওয়ার জন্য কি আমল সহীহ ও নির্ভুল হওয়া শর্ত নয়?! কিংবা আল্লাহ আমাকে এত সওয়াব দান করবেন, এর জন্য একটু ধৈর্য, একটু ধীরস্থিরতা, অন্তত সর্বনিম্ন আদবটুকু রক্ষা করাও কি আমার কর্তব্য নয়?

    সুতরাং আমাদের অবশ্যকর্তব্য হচ্ছে, নামাযের কিয়াম, রুকু, সেজদা ও  তিলাওয়াতে ধীরস্থিরতা অবলম্বন করা ও নির্ভুল পড়া।

    আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমীন।

    জাপানি পার্লামেন্টের সায়
    অসুস্থতার কারণে রীতি ভেঙে অবসর যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন জাপানের সম্রাট আকিহিতো। সম্রাটের এ ইচ্ছা পূরণে নতুন আইন করছে দেশটির সরকার। মন্ত্রিসভার পরে এবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এ সংক্রান্ত একটি বিল অনুমোদন পেয়েছে। এর ফলে সম্রাটের অবসরের পথে আরো একধাপ এগিয়ে গেলে দেশটি। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এ বিল অনুমোদন পায়। এসময় ক্ষমতাসীন পার্টি ছাড়াও অন্য ৬টি দলের এমপিরা বিলের পক্ষে সম্মতি দেন। আগামী সপ্তাহে এটি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে তোলা হবে। সেখানে অনুমোদন পেলেই এটি আইন হিসেবে কার্যকর হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আসছে বছরই অবসরে যাবেন সম্রাট আকিহিতো। রয়টার্স।
    চ্যাম্পিয়নদের দলে বাংলাদেশও
    চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মূলত চ্যাম্পিয়নদেরই খেলা। আসরে অংশ নেয়া আট দলের পিছনের রেকর্ডের দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়। এই আট দলের মধ্যে কেবল পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডেরই আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের কোন রেকর্ড নেই। তবে তাদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন করার কোন সুযোগ নেই। তাহলে তাদের ভীড়ে কেন বাংলাদেশ? বাংলাদেশ তো আর চ্যাম্পিয়ন কোন দল নয়!
    সামর্থের প্রশ্ন করলে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। বাংলাদেশকে নিয়ে এমন প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল দুবছর আগেও, এখন তা অতীত। বিশেষ করে একদিনের ক্রিকেটে তো বটেই। ধারাবাহীক পারফরম্যান্সের প্রমাণ দিয়ে সকল ক্রিকেট পরাশক্তির কাছ থেকেই সমীহ আদায় করে নিয়েছে টাইগাররা। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরাও তাই এবারের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে রাখছেন আলাদা কাতারে। সফলতার ব্যাপারে খেলোয়াড়দেরও আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই একটুও। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের পেছনে ফেলে ওয়ানডেতে ছয় নম্বরে উঠে আসার খবরেও সাকিব-মাশরাফিদের বিষ্মিত না হওয়া তো তারই প্রমাণ।
    ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চ্যাম্পিয়নের তকমা গায়ে না মাখলেও এর আগে নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত দুই আসরেই ফাইনালে খেলেছে তারা।  এবারো তাদের ফেভারিট তকমাকে অস্বীকার করবেন না কেউই। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচেই এই ইংল্যান্ডের মুখোমুখি বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক বিচারে ওয়ানডের দুই সেরা দলই মুখোমুখি হচ্ছে আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে। তবু কোন প্রশ্ন ছাড়াই ওভালের আজকের ম্যাচে ফেবারিট ইংলিশরাই।
    তবে প্রেরণার জায়গা আছে সাকিব-মাশরাফিদেরও। শুনতে অদ্ভত লাগলেও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের বিচারে এদিয়ে বাংলাদেশই! দু’দলের শেষ ৭ ওয়ানডেতে ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে ইংলিশদের শেষ আট থেকে বিদায় নেয়ার স্মৃতি হয়তো এখনো অনেকের কাছেই টাটকা। গত অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে তিন ম্যাচের সিরিজ ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে জিতলেও সিরিজটা হতে পারত বাংলাদেশেরও। মিরপুরের প্রথম ওয়ানডেতে নিশ্চিত জয়টা হাতছাড়া না হলে ইতিহাসটা তো লেখা হতো অন্যভাবেই।
    তবে সাকুল্য বিচারে অনেক এগিয়ে ক্রিকেটর প্রাচীনতম দল ইংল্যান্ড। মোট ১৯ ম্যাচে ৪ জয় বাংলাদেশের, হার বাকি ১৫ ম্যাচেই। কিন্তু অতীত আর বর্তমানের বাংলাদেশে যে ঢের পার্থক্য। এটাই মাশরাফি বাহিনীর প্রধাণ শক্তি। এখন আর টাইগাররা ‘সান্তনা মূলক হার’এর লক্ষ্যে মাঠে নামে না, নামে জয়ের দৃড় মানসিকতা নিয়েই। আজও নিশ্চয় এর বত্যয় হবে না।
    বিশেষ করে তামিম-সাকিব-মুশফিক-মাহমুদুল্লাহরা যদি নিজেদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেন, ইংলিশ পেসিং কন্ডিশনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে মাশরাফি যদি মুস্তাফিজ-রুবেল-তাসকিনদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনতে পারেন, সাব্বির-সৌম্য-মোসাদ্দেকরা যদি বদলে যাওয়া বাংলাদেশের পতাকাটা দৃড়হস্তে ধরতে পারেন তাহলে ভালো কিছুর আশা করতেই পারে চাতকের দৃষ্টিতে সুদর বিদেশভুমে চেয়ে থাকা দেশের ষোল দু গুনে বত্রিশ কোটি চোখ।
    ২০০০ সালে প্রথম বাংলাদেশ অংশ নেই এই আসরে। তখন অবশ্য এর নাম ছিল আইসিসি নকআউট টুর্নামেন্ট। এরপর ২০০২ ও ২০০৪ সালে আসলে ছিল বাংলাদেশের নাম। ২০০৯ সাল থেকে ওয়নডে র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ আট দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দর্শকের সারিতে থেকেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এমন বিশ্বমঞ্চে তখন অবশ্য বাংলাদেশের অংশগ্রহণই দেখা হত অর্জনের দৃষ্টিতে। সময়ের পরিক্রমায় এখন সেই আসরই যেমন নাম নিয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, তেমনি বদলেছে বাংলাদেশের অবস্থান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত সাবেক বিশ্ব ও ২০০৪ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চ্যাম্পিয়ন দলকে পেছনে ফেলে তাই আসরে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। মাঝের আট বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে পরির্তন এসেছে সেটাই এবার প্রামাণের পালা মাশরাফিদের।

    ধূমপায়ী শিয়াল

    Posted by admin on June 1
    Posted in Uncategorized 

    ধূমপায়ী শিয়াল

    ওপরের ছবি দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই, ঘটনাটি সত্যি। ছড়া-গল্পগাথার বদৌলতে শিয়াল অত্যন্ত চতুর প্রাণী হিসেবে বিশেষ পরিচিত। চতুরতার জন্য এদের ‘শিয়াল পণ্ডিত’ও বলা হয়। শিয়াল সাধারণত ঝোপঝাড় কিংবা গর্তে লুকিয়ে থাকে।
    সন্ধ্যার পর গর্ত থেকে বের হয়ে শিকারে মনোযোগ দেয়। শিয়াল মূলত মাংসাশী হলেও এরা সর্বভুক প্রাণী। মরা-পচা প্রাণী থেকে শুরু করে ডাস্টবিনের ময়লা খাবারও খেয়ে থাকে শিয়াল।
    তবে এদিন আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন বিমানবন্দরের বাইরে এক পর্যটকের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ধূমপান করছে শিয়াল। লুইস এচাসোন নামের ঐ স্কটিশ ভদ্রলোক বিমানবন্দরের বাইরে দিয়ে হাঁটার সময় হঠাৎ শিয়ালের মুখে সিগারেট দেখে সঙ্গে সঙ্গে তা ক্যামেরাবন্দি করেন।
    ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারেননি লুইস। টুইটারে দেওয়ার পর ঘটনাটি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
    তবে ডাবলিন এয়ারপোর্টের অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে ঘটনাটি ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, শিয়ালের সিগারেট খাওয়ার বিষয়টি মোটেও যৌক্তিক কোনো ব্যাপার না। শিয়ালের মুখের সামনে থাকা সাদা বস্তুটি প্রকৃতপক্ষে শিয়ালের বেড়ে যাওয়া দাঁত। খবর দ্য আইরিশ সান।
    জন্মের পরই হাঁটলো শিশু!
    নবজাতক একটি শিশু হাঁটছে, এমন একটি ভিডিও ফেইসবুকে পোস্ট করার পর সেটি ভাইরাল হয়ে উঠেছে। ২৬ মে পোস্ট করার পর থেকে ৪১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি এ পর্যন্ত ছয় কোটি ৮০ লাখ বার দেখা হয়েছে, ১৫ লাখ শেয়ার হয়েছে এবং তিন লাখ ২৫ হাজার প্রতিক্রিয়া এসেছে যার অধিকাংশই বিস্ময়সূচক। ভিডিও ফুটেজটিতে দেখা গেছে, এক নার্সের সহযোগিতায় নবজাতক এক পা তুলে সামনে ফেলে আরেক পা তুলে হাঁটার অনুকরণ করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ব্রাজিল থেকে আর্লেতি আরান্তেস নামের এক ব্যক্তি ফেইসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করেছেন। তবে কখন ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। রচেস্টার মেডিকেল সেন্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যানুসারে ভিডিওতে যা দেখা গেছে তা বিস্ময়কর কোনো ঘটনা নয়, এটি নবজাতকের স্বাভাবিক জন্মগত প্রতিক্রিয়া যাকে ‘স্টেপিং রিফ্লেক্স’ বলে। এনডিটিভি।

    ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ চট্টগ্রাম উপকূল ছুঁয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে

    পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মঙ্গলবার (৩০ মে) ভোর ৬টা থেকে কুতুবদিয়ার হয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল ছুঁয়ে আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

    বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ডিউটি অফিসার মাহমুদুল আলম। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি কুতুবদিয়ার নিকট হয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল ছুঁয়ে আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। কোথাও কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে। বাতাসের সাথে ভারী বর্ষণ হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

    জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান বিন আলী বলেন,বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোরা থেকে বাঁচতে চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলার মধ্যে ৭টি উপজেলাকে উপকূলীয় এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলার ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের রক্ষণাবেক্ষণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ রয়েছেন। এখনো কোথাও কোন দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায় নি।

    বাঁশখালী উপজেলায় খবর নিয়ে জানা গেছে, সেখানে মাঝারি ধরনের বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। সাথে রয়েছে বৃষ্টিও। বাতাসে উপকূলীয় ইউনিয়ন ছনুয়া, বাহারছড়া, রত্নপুর, খানখানাবাদ, গণ্ডামারা এলাকায় বাতাসে গাছপালা ভেঙ্গে গেছে ও ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। তবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া যায়নি।

    প্রাথমিকভাবে কুতুবদিয়া, কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর এসেছে। এর মধ্যে সেন্টমার্টিনেই দেড় শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে বহু গাছ। সড়কে গাছ পড়ে কিছু এলাকায় সড়ক যোগাযোগও বিঘ্নিত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। উপকূলীয় জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। তবে ভাটার সময় ঝড় উপকূল অতিক্রম শুরু করায় জলোচ্ছ্বাস ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেনি।

    জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আছিয়া খাতুন বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় নগরীর লালখান বাজার মতিঝর্ণা পাহাড় এলাকা থেকে শতাধিক পরিবারকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে মাইকিং চলমান রয়েছে। পার্শ্ববর্তী লালখানবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে সোমবার রাত থেকে শতাধিক এলাকাবাসী আশ্রয় নিয়েছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ অনেক লোকজনকে এখনো সরানো যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

    মোরার প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে বৃষ্টি চলছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে চলছে ভারি বর্ষণ। উপকূলীয় জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে আভাস দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া অফিস। বুয়েটের ইন্সটিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজার ও আশপাশের এলাকায় ১২৮ মিলিমিটার থেকে ২৫৬ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। অতি ভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসেরও আশঙ্কা থাকে। সাগর উত্তাল থাকায় বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা, ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।

    গত ২৬ মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর ২৮ মে সকালে তা নিম্নচাপে এবং মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। সোমবার সন্ধ্যায় তা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।

    রমজানের শুভেচ্ছা ট্রাম্প-ট্রুডোর

    মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে ইফতার বা ঈদ অনুষ্ঠান হচ্ছে না

    পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে মুসলমানদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। গতকাল শনিবার থেকে উত্তর আমেরিকায় রোজা শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে শুক্রবার প্রদত্ত এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিনীদের পক্ষ থেকে মুসলমানদের এ রমজানের সার্থকতা কামনা করছি। অপরদিকে, চলতি বছরে ইফতার বা ঈদে কোনও অনুষ্ঠান আয়োজন করছে না মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। পররাষ্ট্র দফতরের দু’জন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এমন একটি অনুরোধ ইতোমধ্যে খারিজ করে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা এ খবর জানিয়েছেন। রিপাবলিকান বা ডেমোক্র্যাট যারাই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, ১৯৯৯ সাল থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ইফতার বা ঈদুল ফিতরের অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ধর্ম বিষয়ক কার্যালয় ঈদুল ফিতরে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুরোধ করেছিল। কিন্তু টিলারসন সে অনুরোধ খারিজ করে দিয়েছেন বলে দুই কর্মকর্তা জানান। ট্রাম্প বলেন, এই মাসে মুসলমানেরা রোজা পালনের পাশাপাশি নিকট প্রতিবেশী গরীব-দুঃখীদের মধ্যেও খাদ্য-সহায়তা দিয়ে থাকেন অর্থাৎ সকলেই রমজানের মহিমাকে সমুন্নত রাখতে প্রয়াসী হন। এছাড়া, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ সন্ত্রাসী তৎপরতা প্রতিহত করার সংকল্পও গ্রহণ করেন মানবতার শান্তির পথ সুগম করতে। দাঙ্গা-হাঙ্গামায় লিপ্ত এলাকার অসহায় মানুষ এবং গরীব মানুষদের কল্যাণেও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণে উৎসাহিত হন রোজাদাররা। ট্রাম্প বলেন, স¤প্রতি সউদি আরব সফরের সময় সেখানে ৫০টির অধিক মুসলিম রাষ্ট্র প্রধানের সাথে মিলিত হবার সুযোগ পেয়েছি। গোটাবিশ্বের শান্তি, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির প্রশ্নে আমরা সকলেই পরস্পরের সহযোগী হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছি। ট্রাম্প আরো বলেন, যুক্তরাজ্য এবং মিসরে সন্ত্রাসী হামলায় অনেক অসহায় মানুষ হতাহত হয়েছেন। এ নিয়ে গোটাবিশ্ব আজ শোকাহত। এমন বর্বরোচিত আক্রমণের বিরুদ্ধে সকলের রুখে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই। কারণ, এমন হামলার মধ্যে রমজানের মূল্যবোধ ব্যাহত হয়। এদিকে কানাডা ও বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের আসন্ন রামজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ৫০ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তাটি শুরু করেন আসসালামু আলাইকুম বলে। এবং বক্তৃতা শেষ করেন রামাদান মোবারক বলে। এ বছর কানাডার ১৫০ তম স্বাধীনতা দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। রয়টার্স, সিএনএন।

    যুক্তরাষ্ট্রে হিজাব পরিহিত নারীকে রক্ষা করতে গিয়ে নিহত ২

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হিজাব পরিহিত মুসলিম নারীকে বিদ্বেষপ্রসূত আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন দুই জন। কমিউটার ট্রেনে দুই মুসলিম নারীকে বিদ্বেষপ্রসূত গালিগালাজ করলে ওই দুই জন এক ব্যক্তিকে বাধা দেন।

    তখন ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে দুইজনকে আঘাত করে ওই ব্যক্তি, এতে ঘটনাস্থলে একজন নিহত আরেকজনকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। হামলাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
    পোর্টল্যান্ড শহরের হলিউড ট্রানসিট স্টেশনে ঘটে এই ঘটনা । মর্মান্তিক এই ঘটনার বর্ণণা দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা সার্জেন্ট পিট সিম্পসন বলেন, হামলাকারী ট্রেনের মধ্যে দুই মুসলিম নারীকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করছিল এবং যার অনেকগুলো বিদ্বেষপ্রসূত আক্রমণের শ্রেণীতে পড়ে। এই গালিগালাজের মধ্যে কিছু ব্যক্তি তাকে বাধা দেয় এবং তার আচরণ নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। যেসব মানুষকে উদ্দেশ্য করে সে চিৎকার করছিল তাদের সে আক্রমণ করে বসে ছুরি দিয়ে, এতে দুই জন নিহত ও একজন আহত হয়।
    ছুরিসহ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যে দুই নারীকে আক্রমণাত্মক কথা বলা হচ্ছিল তারা পুলিশ আসার আগেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। বিবিসি।
    পবিত্র মাহে রমজান শুরু রবিবার
    শনিবার রাতে তারাবি ও সেহরি

    শুক্রবার বাংলাদেশের কোথাও ১৪৩৮ হিজরি সনের পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে চলতি শাবান মাস ৩০ দিনে পূর্ণ হবে। রমজান শুরু হবে রবিবার থেকে। শনিবার দিনগত রাতে তারাবি নামাজ আদায় ও সেহরি খেয়ে বাংলাদেশের মানুষ রোজা রাখবেন রবিবার।

    শুক্রবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমের ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে বসে চাঁদ দেখা কমিটির সভা। দেশের কোথাও থেকে চাঁদ দেখার কোনো সংবাদ পায়নি কমিটি।
    ধর্মমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, দেশের কোথাও চাঁদ দেখার খবর পাওয়া যায়নি। শনিবার ১৪৩৮ হিজরির পবিত্র শাবান মাস ৩০ দিন পূর্ণ হবে। রবিবার থেকে শুরু হবে রমজান।
    এদিকে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শনিবার শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস।
    জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে প্রতিবারের মতো এবারও পড়া হবে খতমে তারাবি। এক্ষেত্রে দেশের সব মসজিদে বায়তুল মোকাররমের পদ্ধতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে ইসলামি ফাউন্ডেশন। বলা হয়েছে, রমজান মাসে দেশের প্রায় সকল মসজিদে খতম তারাবিতে পবিত্র কোরআনের নির্দিষ্ট পরিমাণ পারা তিলাওয়াত না করার রেওয়াজ চালু আছে। তবে কোনও কোনও মসজিদে এর ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এতে করে কর্মজীবী- যারা বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন, তাদের পক্ষে কোরআন খতমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয় না। এ অবস্থায় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে অতৃপ্তি ও মানসিক চাপ অনুভূত হয়। কোরআন খতমের পূর্ণ সওয়াব থেকেও তারা বঞ্চিত হন। এ পরিস্থিতি নিরসনে রমজানের প্রথম ৬ দিনে দেড় পারা করে ৯ পারা এবং বাকি ২১ দিনে ১ পারা করে ২১ পারা তিলাওয়াত করলে ২৭ রমজান রাতে, অর্থাৎ পবিত্র লাইলাতুল কদরে কোরআন খতম করা সম্ভব। এর আগে বিষয়টি নিয়ে দেশবরেণ্য আলেম, পীর-মাশায়েখ, খতিব-ইমামদের সঙ্গে আলোচনা হলে তারাও এ পদ্ধতিতে খতম তারাবি পড়ার পক্ষে অভিমত দিয়েছিলেন এবং সে মোতাবেক অধিকাংশ মসজিদে এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এ অবস্থায় দেশের সকল মসজিদে খতম তারাবিতে প্রথম ৬ দিনে দেড় পারা করে ও পরবর্তী ২১ দিনে এক পারা করে তিলাওয়াতের মাধ্যমে পবিত্র লাইলাতুল কদরে কুরআন খতমের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মসজিদের ইমাম, মসজিদ কমিটি, মুসল্লি এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে বিনীত অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

    সরনো হলো সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের ভাস্কর্য

    সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত আলোচিত ভাস্কর্যটি বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার সময় ঘটনাস্থলে সুপ্রিম কোর্টে কর্তৃপক্ষের কারও দেখা মেলেনি। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সেখানে সুপ্রিম কোর্টে দায়িত্বরত কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দেখা গেছে। ভাস্কর্যটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নাকি অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে-এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
    এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার বা অন্য কোন কর্মকর্তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে বহুবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। গভীর রাতে প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদ জানান এবং সড়ক অবরোধ করেন।
    তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার অপরাহ্ণে প্রধান বিচারপতি বারের বর্তমান ও সাবেক সভাপতি এবং সম্পাদকগণকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকেছিলেন। সেখানে ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার বিষয়ে আলোচনা হয়।
    শ্রমিকরা যখন ভাস্কর্যটি ভাঙার কাজ করছিল তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভাস্কর মৃণাল হক। একপর্যায়ে তিনি রাস্তার দিকে এলে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকরা তার প্রতিক্রিয়ার জন্য ঘিরে ধরেন। কথা বলতে গিয়ে তিনি কিছুক্ষণ দুই হাত দিয়ে চোখ মোছেন। একপর্যায়ে কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেন, ‘এখানে কিছু বলার নাই। অনেকের অনেক ক্ষমতা আছে। এটি আমি বানিয়েছি। আমাকে চাপ দেয়া হয়েছে, তাই সরাতে বাধ্য হচ্ছি।’
    ভাস্কর্যটির কি হবে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুনেছি অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ের সামনে সরানো হতে পারে। তিনি বলেন, এরপর হয়তো সারাদেশের ভাস্কর্য সরানোর দাবি উঠবে।
    উল্লেখ্য, রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’-এর আদলে এই ভাস্কর্যটি ৬ মাস আগে সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপন করা হয়েছিল।
    বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়
    ক্রিকেট বিশ্বের স্বীকৃত শক্তি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়ে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করলো বাংলাদেশ। গতকাল ডাবলিনের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে মাশরাফি বাহিনী ৫ উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে ষষ্ঠস্থানে উঠে আসলো। শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেললো টাইগাররা। এই জয়ে বাংলাদেশ ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ অর্জন করলো। কিউইদের ছুড়ে দেয়া ২৭১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ ১০ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়।
    এ ম্যাচকে ঘিরে টাইগারদের অনেক স্বপ্ন ছিলো। জয় পেলে অন্তত তিনটি বড় অর্জনতো হবেই। নিউজিল্যান্ডই একমাত্র দেশ বাকি ছিল, যাদেরকে বিদেশের মাটিতে পরাজয়ের স্বাদ দিতে পারেনি টাইগাররা। সেই স্বাদ পূর্ণ করা সহ আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেলে ষষ্ঠস্থানে উঠে আসা এবং সবচেয়ে বড় পাওয়া, ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলা নিশ্চিত করা। অবশেষে সব অর্জনই হলো মাশরাফিদের।
    কাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দিকে জয়ের নায়ক ছিলেন তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান। দু’জনের ১৩৬ রানের জুটি বাংলাদেশের জয়ের ভীত গড়ে দেয়। মাঝের চার উইকেট পড়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত দলকে জয়ের বন্দরে টেনে নিয়ে যান দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লা রিয়াদ। তাদের ৭২ রানের জুটিই বাংলাদেশকে এনে দেয় বহুল কাঙ্খিত জয়টি। খেলায় ম্যাচ সেরার পুরষ্কার পান মুশফিকুর রহিম।

    বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে হারাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

    গুগলের তৈরিকৃত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ডিপমিন্ড আলফাগো হারিয়ে দিয়েছে শীর্ষস্থানধারী গো খেলোয়াড় কে জিইকে। তিন ধাপের ম্যাচের প্রথম দুটি জয় করে আলফাগো বিজয় নিশ্চিত করে।
    ডিপমিন্ডের প্রতিষ্ঠাতা ডেমিস হাসাবিস বলেন, কে জিই একদম ‘নিখুঁত’ ভাবেই খেলেছে এবং আলফাগো কে তার ‘সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্তই ধাক্কা দিয়েছে’।
    পরাজয়ের পর কে জিই সাংবাদিকদের বলেন, হারার কারণে একটু খারাপ লাগছে। আমার ধারনা ছিল যে আমি ভালোই খেলছিলাম তাই একটু অনুশোচনা হচ্ছে এখন।
    গো খেলায়, ১৯ বাই ১৯ ঘরের একটি বোর্ডের মধ্যে পাথর বসাতে হয়। যে সবচেয়ে বেশি এলাকায় পাথর বসাতে পারবে সেই এই ম্যাচ জিতে যাবে। এই খেলাটি অন্যতম জটিল খেলা হিসেবে সারা বিশ্বে সমাদৃত। দাবার খেলার চেয়েও বেশি চ্যালেঞ্জিং কম্পিউটারের জন্য।
    পুরনো অঙ্ক অধ্যয়ন আর নিজে নিজেই হাজারবার এই খেলায় অংশ নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল আলফাগো ।
    কোম্পানিটি বলছে, এই খেলার আসল উদ্দেশ্য হল বিজ্ঞান ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধির প্রয়োগ ঘটানো। তবে কোম্পানির বক্তব্যের সঙ্গে ভিন্নমত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানী অধ্যাপক নোয়েল শার্কে বলেন, সাধারণ বুদ্ধিমত্তা তৈরি কর এটা এখনো অনেক দূরের পথ। বিবিসি।

    মাথা ঝুঁকে মোবাইল ব্যবহারে মেরুদণ্ডের ক্ষতি

    মোবাইল ডিভাইসগুলো এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী, বার্তা আদান প্রদান, ইন্টারনেট ব্রাউজিংসহ বিভিন্ন কারণের দিনের অনেকটা সময় কেটে যায় মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্রমাগত মোবাইল স্ক্রিনে মাথা ঝুঁকে তাকিয়ে থাকা মেরুদণ্ডের জন্য ক্ষতিকর।
    নিউইয়র্কের স্পাইন সার্জারি ও রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিনের মেরুদণ্ড অস্ত্রোপচার বিভাগের প্রধান ড. কেনেথ হংসরাজের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। মেরুদণ্ডে মাথার নাড়াচাড়ায় কি প্রভাব পরে সেটা মূল্যায়নে তার গবেষণা মার্কিন ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে।
    গবেষণায় বলা হয়, বেশিরভাগ মানুষ মোবাইলে বার্তা আদান প্রদানের সময় একটু ঝুঁকে পড়ে। যখন মাথা সোজা থাকে তখন মেরুদণ্ডের উপর ১০ থেকে ১২ পাউন্ড চাপ পড়ে যা একটি স্বাভাবিক মানুষের মাথার ওজনের সমান। কিন্তু মাথা ঝুঁকে আসলে মেরুদণ্ডের উপর চাপ বৃদ্ধি পায়। মাথা ১৫ ডিগ্রি ঝুঁকে পড়লে মেরুদণ্ডে প্রায় ২৭ পাউন্ড চাপ পড়ে, ৩০ ডিগ্রি কোণে পড়ে ৪০ পাউন্ড, ৪৫ ডিগ্রি কোণে ৪৯ পাউন্ড এবং ৬০ ডিগ্রি কোণে মাথা ঝুঁকে পড়লে মেরুদণ্ডে ৬০ পাউন্ড চাপ পড়ে। ‘টেক্সট নেক’ বা বার্তা আদান প্রদানের সময় ঝুঁকে পড়ার প্রবণতায় মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
    ড. হংসরাজ বলেন, এটা রীতিমত মহামারীতে পরিণত হয়েছে, অথবা বলতে পারেন যে সব খানেই এটি (টেক্সট নেক) দেখা যাচ্ছে। আপনার চারপাশে দেখুন, সবাই মাথা নুইয়ে চলছে। যদি এই মহামারী অব্যাহত থাকে তাহলে খুব দ্রুতই অনেক মানুষকে মেরুদণ্ডের জন্য চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
    মানুষ দিনে গড়ে দুই থেকে চার ঘণ্টা বার্তা আদান প্রদান, ই মেইল, সোশ্যাল মিডিয়া, ই বুক, প্রিন্ট বুক ও ম্যাগাজিন পাঠ করে থাকে যা বছরে ৭০০ থেকে ১৪০০ ঘণ্টা পর্যন্ত দাঁড়ায়। হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সেটি প্রায় ৫০০০ ঘণ্টা। দীর্ঘসময় ধরে মেরুদণ্ডের টিস্যুতে চাপ পড়লে স্নায়ু ও মেরুদণ্ডের সংযোগস্থলে সমস্যা হতে পারে। অনেক চিকিৎসক জানিয়েছেন, টেক্সট ব্যাক সমস্যার কারণে ঘাড়, মাথা ও পিঠ ব্যথার রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন।
    মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারের সময় মাথা ঝোঁকানোর প্রবণতার সমাধান হয়তো নেই। ড. হংসরাজ বলেছেন, মানুষের উচিত বার্তা পাঠ করার সময়ে মাথা না ঝুঁকিয়ে সোজা রেখে বরং চোখ ব্যবহার করা উচিত। মাথার সঠিক অবস্থানটা এমন হওয়া উচিত যেন দুই কাঁধ ও দুই কান সমান্তরালে থাকে। ওয়াশিংটন পোস্ট।

    ‘দ্বীনের উপর চলা এবং আল্লাহর বিধান মানা বর্তমান সময়েও সম্ভব’

    [বিগত ১৫-০৬-১৪৩৮ হি. মোতাবেক ১৫-০৩-২০১৭ঈ. তারিখে মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা-এর নবনির্মিত দাওয়াহ ভবনে অনুষ্ঠিত হয় এসএসসি পরীক্ষা সমাপণকারী ছাত্রদের নিয়ে দিনব্যাপী একটি দ্বীন-শিক্ষা মজলিস। ঐ মজলিসে দ্বীনের মৌলিক বিষয়াদি আলোচনার পাশাপাশি কুরআনে-কারীমের মশক ও নামাযের মশকেরও আয়োজন ছিল। আরও ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব, যে পর্বে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা-এর সম্মানিত মুদীর, কিসমুদ দাওয়াহ-এর মুশরিফ হযরত মাওলানা মুফতী আবুল হাসান মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ ছাহেব দা. বা.। আলকাউসারের পাঠকদেরকেও ঐ দাওয়াতী মজলিসে শামিল করে নেয়ার সদিচ্ছা থেকে ঐ মজলিসের দুটো মূল্যবান বয়ান এই সংখ্যায় প্রকাশিত হল। আল্লাহ তাআলা আমাদের যথাযথ উপকৃত হওয়ার তাওফীক দান করুন- আমীন।]

     

    তোমাদের কী মনে হয়, আমরা ও তোমরা এক না দুই? এক। হাঁ, আমরা এক; আমরা কোনো ভিন্ন গোষ্ঠী বা আলাদা সম্প্রদায় নই। আমাদের সবার পরিচয়- আমরা আল্লাহর বান্দা ও মাখলুক। আমাকে যিনি সৃষ্টি করেছেন, আপনাকেও তিনি সৃষ্টি করেছেন। আমাদের আদি পিতা, যার মাধ্যমে দুনিয়াতে মানুষের আসা-যাওয়া শুরু হয়েছে, কে? আদম আলাইহিস সালাম। আদম আলাইহিস সালাম দুনিয়াতে এসেছেন। তাঁর মাধ্যমে আমরা এসেছি। কাজেই সবাই আমরা একই গোত্রের লোক।

    এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁর মেহেরবানিতে আমাদেরকে মুসলমান বানিয়েছেন। আল্লাহকে স্বীকার করে-এমন বান্দা বানিয়েছেন। সৃষ্টিকর্তাকে স্বীকার করে-তাদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। পৃথিবীতে দুই শ্রেণির মানুষই আছে। এক শ্রেণি আল্লাহকে মানে, আরেক শ্রেণি আল্লাহকে মানে না। এর একটি সহজ উদাহরণ দিচ্ছি। আমরা সবাই মা-বাবার মাধ্যমে দুনিয়াতে এসেছি। কিন্তু সব ঘরের সন্তান কি মা-বাবার কথা শুনে? শুনে না। মা-বাবার মাধ্যমে সে দুনিয়াতে এসেছে, তা জানা সত্ত্বেও মা-বাবার কথা শুনে না। তাদের খোঁজ-খবর নেয় না। তাদের সাথে সুসম্পর্ক রাখে না। অনেক অবনতির পরও আমাদের দেশের পরিবারিক অবস্থা এখনো ভালো। যে সকল দেশকে আমরা উন্নত দেশ বলি, পশ্চিমের দেশগুলো, ওখানে আইনই আছে যে, একুশ বছর হয়ে গেলে স্বাধীন। ওখানে সন্তানের বয়স একুশ বছর হয়ে গেলে মা-বাবা থেকে সন্তান স্বাধীন হয়ে যায়। মা-বাবা বুড়ো হলে সন্তানরা তাদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয়। ওখানে যদি মারা যায়, খবর পাঠায় ছেলের কাছে। কোনো সময় সম্ভব হলে, তার সৎকার ও আনুষাঙ্গিক কাজ-কর্মের জন্য ছেলে যায়। অনেকে আবার টাকা পাঠিয়ে দেয়, বলে আপনারা করে ফেলেন। আমার আসা সম্ভব নয়। এরকম একটা দুইটা না। অহরহ ঘটনা ঘটছে। তাহলে দেখা গেল, অনেকে মা-বাবার ঘরে জন্মলাভ করেও মা-বাবার পরিচয় দেওয়ার দরকার মনে করে না। ঠিক অনুরূপভাবে অনেকে আল্লাহর বান্দা হয়েও নিজেকে আল্লাহর বান্দা হিসেবে স্বীকার করার প্রয়োজন মনে করে না। তো যারা আমরা নিজেদেরকে আল্লাহর বান্দা বলে স্বীকার করি, তারা এক শ্রেণির ও এক প্রকারের মানুষ। আমাদের বিশ্বাস এক, আদর্শ এক। আমরা বিশ্বাস করি যে, আল্লাহ মানুষকে শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে চালাবার জন্য, দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য, যুগে যুগে নবীদের পাঠিয়েছেন। আমরা যারা বিশ্বাসী ও ঈমানদার তারা সবাই এই সূত্রে এক যে, আমরা আদম আলাইহিস সালামকে বিশ্বাস করি, নূহ আলাইহিস সালামকে বিশ্বাস করি, ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে বিশ্বাস করি; সকল নবী ও রাসূলকে বিশ্বাস করি। এরপর আমাদের সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, যাঁর নির্দেশ ও নির্দেশনা চলবে কিয়ামত পর্যন্ত; আমরা তাঁকে বিশ্বাস করি এবং তাঁর শরীয়তের আনুগত্য করি। তিনিই শেষ নবী এবং তাঁর শরীয়তই শেষ শরীয়ত। এই পৃথিবী ততদিন পর্যন্ত ধ্বংস হবে না যতদিন তার নির্দেশনা অন্তত কিছু হলেও মানা হবে। কিছু লোকে মানবে। এমন হবে যে, এমন লোক একজনও নেই, পৃথিবীতে আল্লাহর নাম নেওয়ার কেউ নেই তখন আর পৃথিবী থাকবে না।

    এই যে এখনো টিকে আছে, মাঝে মাঝেই বড় বড় দুর্যোগ ঘটে। ভূমিকম্প হয়, সুনামী হয়, এক একটা এলাকা শেষ হয়ে যায়। পুরো পৃথিবীও শেষ হয়ে যেতে পারে। এক সময় কি শেষ হবে না? হবে। কিয়ামতের আগে। কেন শেষ হবে? শেষ হবে এজন্যই যে, ঐ সময় আল্লাহ বলার, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনা মানার মত একজনও থাকবে না। ওদের উপরই কিয়ামত হবে।

    তো কথা যেখান থেকে শুরু করেছিলাম, সব মুসলমান, যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে-তারা সবাই এক। স্কুল পড়ুয়া, মাদরাসা পড়ুয়া, কৃষক, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, আমলা সকলের প্রথম পরিচয় হল আমরা মুসলমান। বিশ্বাস ও আদর্শের কোনো পার্থক্য নাই। এখন শিক্ষার যে পার্থক্য, সম্পূর্ণ আলাদা দুটো ধারা- হাজার বছর পর্যন্ত মুসলিম সমাজে এটা ছিল না। এই বিভক্তিটা সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এটা কৃত্রিম। এটা আমাদের বারবার আলোচনা করতে হবে এবং গভীরভাবে বুঝতে হবে। অনেক বছর আগের কথা নয়। হাজার বছরেরও বেশি সময় আমাদের শিক্ষাধারা এই ছিল যে, মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত একই রকমের পড়া হত। মাধ্যমিক স্তরে পড়ার পরে এখন যেমন ইন্টারমিডিয়েটে ভাগ হয়। অনার্স-এ গিয়ে এক একজন এক এক সাবজেক্ট নেয়। এরকম ভাগ হত। কেউ ডাক্তার হত। কেউ ইঞ্জিনিয়ার হত। কেউ আলেম হত। কেউ মুফতী, মুহাদ্দিস হত। কিন্তু এই ম্যাট্রিক পর্যায়ের পড়াটা, ম্যাট্রিক নাম না থাকুক, মাধ্যমিক স্তরের পড়াটা এক-ই পড়া ছিল। এই জন্য তখন এই বিভক্তি ছিল না। এখন তো এই শিক্ষা-ক্ষেত্রেই মুসলমানরা কতভাবে বিভক্ত। এখন জেনারেল শিক্ষাও কি এক রকম? কেউ ইংলিশ মিডিয়াম, কেউ বাংলা মাধ্যম। কত পদ্ধতি, কত ভাগ। যদি আজকেও সেই আগের শিক্ষাব্যবস্থা থাকত তাহলে কি ম্যাট্রিকওয়ালাদেরকে এখানে আলাদাভাবে ডেকে নিয়ে আসা লাগত? অন্তত এখন যে উদ্দেশ্যে দাওয়াত করা হয়েছে, সেই একেবারে দ্বীনের প্রাথমিক আলোচনার জন্য ডেকে তা করা লাগত না।

    আমাদের চিন্তা-চেতনা একটাই; মুসলমানরা কাছাকাছি আসুক। যারা মানুষের ইহজাগতিক প্রয়োজনগুলো পূরণ করার শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে। সে চাকরি করবে, সে ইঞ্জিনিয়ার হবে, সে ডাক্তার হবে; সে মুসলমান ইঞ্জিনিয়ার হোক, মুসলমান ডাক্তার হোক। তার স্বকীয়তা থাকুক। আরেক ডাক্তার ও তার মধ্যে পার্থক্য থাকুক। আরেকজন ইঞ্জিনিয়ার ও তার মধ্যে  পার্থক্য থাকুক। আরেকজন ইঞ্জিনিয়ার ফাঁক-ফোকর বের করবে। কোন্ দিক দিয়ে কত কী করা যায়। আর সে চিন্তা করবে, কীভাবে উন্নত করা যায়। ভালো করা যায়। তার এবং তার সহকর্মীর মধ্যে পার্থক্য থাকবে। মুসলমান ডাক্তার তৈরি হওয়া, মুসলমান ইঞ্জিনিয়ার তৈরি হওয়া। মুসলমান শিক্ষক তৈরি হওয়া, মুসলমান ব্যবসায়ী তৈরি হওয়া। এগুলো হল এই চিন্তার উদ্দেশ্য। এই চিন্তা থেকেই দ্বীনী-দাওয়াতী কাজগুলো হয়ে থাকে। এই চিন্তা থেকেই এখানকার এই জমায়েত।

    তো চাইলে আমরা রাতারাতি এই শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তন করে দিতে পারব না। আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারব না। এটা একটা চালু ব্যবস্থা। তাছাড়া ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে যাদের চিন্তায় আঘাত লাগে, তারা কিন্তু সহ্য করবে না। আপনি যখন কিছু বলবেন, ধর্মের কথা বলবেন, ওরা একসাথে হৈ চৈ করে উঠবে। এটাকে এমন মনে করার সুযোগ নেই যে, ওরা একটু ধর্মের বিরুদ্ধে বলছে আর কি! না, এ সমস্ত লোক অনেক পেছন থেকে কাজ করে। আন্তর্জাতিকভাবে এসবের জন্য নিয়োগ করা এজেন্ট থাকে। এই প্রসঙ্গটা দীর্ঘ করছি না। আপনারা বড় হলে, চারপাশের অভিজ্ঞতা হলে অনেক কিছুই পরিষ্কার হবে। তো এই ক্ষেত্রে কাজ করা কি খুবই সহজ!

    এজন্য ব্যক্তি পর্যায়ের কাজ করা সহজ। আমরা নিজেরা সতর্ক থাকা সহজ। এজন্য যেটা আমার এক নম্বর দরকার তা হল, আমার ঈমানকে বাঁচিয়ে রাখা। আমি আগে নিজেকে দিয়ে শুরু করব এরপর সমাজ বদলাবার চেষ্টা করব। এখানে কোনো ভিন্ন দল বা রাজনীতি হবে না। বরং নিজেকে ঠিক করা। আমার পড়ার জীবনটা যেন ভালো হয়। একজন ভালো মানুষ হিসেবে যেন চলতে পারি। একটু আগে আমরা কুরআনের তিলাওয়াত শুনেছি-

    إِنَّ اللهَ مَعَ الَّذِينَ اتَّقَوْا وَالَّذِينَ هُمْ مُحْسِنُونَ.

    আল্লাহ তাদেরই সাথে আছেন, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা সৎকর্মপরায়ণ। -সূরা নাহল (১৬) : ১২৮

    যাদের মধ্যে তাকওয়া আছে, তাদের সাথে আল্লাহ আছেন। আর যারা ভালো লোক, তাদের সাথে আল্লাহ আছেন। যার সাথে আল্লাহ আছেন তার কি আর কিছু লাগবে?

    আপনি চলবেন আল্লাহ আপনার সাহায্য করবেন। আপনার পড়া মুখস্থ হয় না, আল্লাহ তাআলা আপনার সাহায্য করবেন। চাকরি পান না, জীবিকার ব্যবস্থা হয় না, আল্লাহ সাহায্য করবেন। আপনি অসুস্থ, আল্লাহ সাহায্য করবেন। আল্লাহ আপনার সাথে আছেন, তো আপনার সব কিছু আছে। কোনো কিছুরই অভাব নাই।

    إِنَّ اللهَ مَعَ الَّذِينَ اتَّقَوْا যদি তাকওয়া থাকে। তাকওয়া কাকে বলে? সহজ ভাষায় তাকওয়া হল; আল্লাহর একজন বান্দা হিসেবে চলা। আল্লাহর একজন বান্দা হিসেবে চলতে হলে কী করতে হবে? আল্লাহ যা আদেশ করেছেন তা করতে হবে। আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকতে হবে। এর নামই তাকওয়া। অনেক লম্বা কথা নয়। আমি আপনি পারি না- এরকম নির্দেশ কিন্তু আল্লাহ দেননি। বরং মানুষের সাধ্যের ভেতরে যেই কাজগুলো, সেগুলোর নির্দেশই তিনি দেন। যখন আমরা দ্বীনের কাছাকাছি আসব। আলেম-উলামাদের সংশ্রবে আসব তখন বুঝা যাবে দ্বীনের উপর চলা এবং আল্লাহর বিধানগুলো মানা কঠিন কিছু নয়। স্কুলে পড়ার জীবনেও এটা সম্ভব। পেশাজীবনেও সম্ভব। চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বানিজ্য সর্বক্ষেত্রেই সম্ভব। তবে জানতে তো হবে। এর জন্য কোনো একজন পরহেযগার নির্ভরযোগ্য আলেমকে নিজের মুরব্বী হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। তার পরামর্শে চলতে হবে। দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে বের হওয়া খুবই উপকারী। তবে অবশ্যই নিজের মুরব্বী আলেমের নির্দেশনা মোতাবেক চলতে হবে। উলামায়ে কেরামের মজলিসগুলেতে বসতে হবে। মারকাযের প্রধান দফতরে প্রতি ইংরেজী মাসের প্রথম বুধবার আসর থেকে ইশা পর্যন্ত ‘দ্বীনী মাহফিল’ হয়। আগামী মাস থেকে হযরতপুর প্রাঙ্গণেও তা শুরু হবে। আপনার প্রশ্নের উত্তর দেয়ারও একটা পর্ব থাকবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের সকলকে কবুল করুন।

    وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين.

    [অনুলিখন : মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ বিন  ওয়াক্কাস]

    জাপানে সম্রাট আকিহিতোর পদত্যাগ বিল অনুমোদন

    জাপান সরকার এমন এক বিল অনুমোদন করেছে, যা পাস হলে দেশটির সম্রাট আকিহিতো ইচ্ছামাফিক পদত্যাগের অনুমতি পাবেন। জানা গেছে গত বছর ৮৩ বছর বয়সী এই রাজা বলেছিলেন, বয়স ও স্বাস্থ্য তার জন্য রাজকীয় দায়িত্ব পালনকে কঠিন করে তুলছে।
    কিন্তু তিনি জীবিত অবস্থায় বিলুপ্ত হতে এবং তার উত্তরসূরি নারুহিতোকে সিংহাসনে বসানোর ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত কোনো বিধান নেই জাপানের প্রচলিত আইনে।
    আশা করা হচ্ছে, কোনো বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই এ বিলটি দেশটির সংসদে পাশ হবে। এছাড়া কোন ঝামেলা ছাড়াই এই আইনের পরিবর্তন আসবে বলে শুক্রবার কেবিনেটের প্রধান সচিব ইয়োশিহাইদ সুগা জানিয়েছেন।
    উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে বাবা হিরোহিতোর মৃত্যুর পর জাপানের সম্রাট হন আকিহিতো। ২৭ বছর পর এখন তার বয়স ৮২ বছর। ভুগছেন ক্যান্সার ও হৃদরোগসহ নানা অসুখে। বিবিসি।