• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • জাপানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৩৫

    জাপানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ এ।
    স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সেখানে ভূমিধসের সৃষ্টি হয়। এতে চাপা পড়েছে অসংখ্য বাড়িঘর ও মানুষ। সংবাদমাধ্যম ‘এনএইচকে’ জানায়, এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩৫। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬০০ জনের মত। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
    নিহতদের বেশিরভাগই উত্তরাঞ্চলের ছোট শহর আতসুমার বাসিন্দা। সেখানে একটি বড় পাহাড় ধসে পড়ে। আতসুমা শহরের এক বাসিন্দা আকিরা মাতসুশিতা যিনি ভূমিধসে তার এক ভাইকে হারান। তিনি বলেন, এ রকম ভূমিধস আমাদের এখানে কখনও হয়নি। আমি আমার নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাসই করতাম না।
    যারা ভূমিধসে আটকা পড়েছে তাদের বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম। ভূমিকম্প ও ভূমিধসে আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ করছে কমপক্ষে ৪০ হাজার উদ্ধারকর্মী। এদের মধ্যে রয়েছে সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবক।
    দেশটির সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বুল্ডেজার, স্নাইপার কুকুর ও ৭৫ টি হেলিকপ্টার।
    জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজে আবে বলেন, শিগগিরই তিনি ভূমিকম্প ও ভূমিধসে আক্রান্ত হওয়া অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
    এদিকে ভূমিকম্পের ফলে হোকাইদো দ্বীপের ১৬ লাখ বাসিন্দা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।

    ভোটের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে সংশয় বিএনপিতে

    বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাসের ৮ মাস পূর্ণ হলো আজ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন। পরে তাকে আদালতের পাশে নাজিমউদ্দিন রোডের ২২৮ বছরের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে আট মাস ধরে জেলে আছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও নেতারা আশা করছেন আর মাত্র দু’টি মামলায় জামিন পেলে কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আইনগত বাধা অপসারিত হতে পারে। এ পর্যন্ত বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ৩৬টি মামলার মধ্যে ৩৪টিতে জামিন লাভ করেছেন তিনি। এখন কুমিল্লার আদালতে দুইটি মামলায় জামিনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন দলের নেতা-কর্মীরা। একটি মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও দায়রা জজের বিচারক কে এম সামছুল আলম ১২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন। অপর মামলাটির জামিন আবেদনের ওপর শুনানির দিন নির্ধারনের জন্য ৯ সেপ্টেম্বর আদালতে আবেদন করবেন বেগম জিয়ার আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার আইনজীবী একেএম এহসানুর রহমান জানান, কুমিল্লার নাশকতার মামলায় আগামী ১২ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ  জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে। আর অপর একটি হত্যা মামলায় দায়রা আদালত থেকে নথি আসা সাপেক্ষে কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। তার আইনজীবী মাসুদ আহমদ তালুকদার ইত্তেফাককে জানান, তারা হত্যা মামলার দ্রুত জামিন শুনানির জন্য আগামীকাল রবিবার পিটিশন দিবেন।
    এদিকে কুমিল্লার অবশিষ্ট দুই মামলায় জামিন পেলে বেগম জিয়া কারামুক্ত হতে পারবেন কি-না তা নিয়ে সংশয়ে আছেন দলের আইনজীবী ও নেতৃবৃন্দ। দলের সিনিয়র একজন আইনজীবী নেতা ইত্তেফাককে বলেন, সরকার আন্তরিক না হলে আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে মুক্ত করা সম্ভব না। দুইটি মামলায় জামিন হলে উনার মুক্তি মিলবে এমন আশা ভেঙে গেছে কারাগারের ভেতর আদালত স্থাপনের পর। আমরা ধারণা করেছিলাম সরকার কিছুটা নরম হয়েছে। কিন্ত তা ঠিক নয়। তারা বেগম জিয়ার ব্যাপারে হার্ডলাইনে আছে বলে মনে হচ্ছে। নির্বাচন পর্যন্ত তাকে কারাগারে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে।
    দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আমরা আইনজীবীরা আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। যতবার সফলতার দোরগোড়ায় গেছি তখনই সরকারের কলাকৌশল আর ষড়যন্ত্রের কারণে জামিন বিলম্বিত হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করা সম্ভবপর নয়। একমাত্র পথ হলো, রাজপথ। এই রাজপথে যাওয়ার জন্য এখন প্রস্তুতি নিচ্ছি।
    স্থায়ী কামটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী মনে করেন, এখন যা পরিস্থিতি তাতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আইন যখন সরকারের হাতে চলে যায়, তখন তো আর ন্যায়বিচার আশা করা যায় না। বিচারবিভাগকে সরকার প্রভাবিত করছে তাই দেশের মানুষ মনে করে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। আমরাও মনে করি আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন না। এর জন্য আন্দোলন সংগ্রাম, প্রতিবাদ, প্রয়োজন। বিএনপি তাই খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমীর খসরু বলেন, আর দুইটি মামলায় জামিন পেলেই তিনি মুক্তি পাবেন বলে আমরা আশা করতে পারি, তবে নিশ্চিত হতে পারি না। কারণ সরকার বেগম জিয়াকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। তাকে মাইনাস করে নির্বাচন করতে চায়। নির্বাচনের আগে তার মুক্তি এমনিতে দিবে না। এজন্য আমাদের আন্দোলন করতে হবে। সরকারকে আমরা বাধ্য করবো।
    খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আইনের প্রক্রিয়ায় যদি জামিন হয় তাহলে আমরা আশা করি অতি শিগগিরই তিনি কারামুক্ত হবেন। আমরা আশা করছি কুমিল্লার দুইটি মামলায় জামিন হলে তার কারামুক্তিতে আইনগত বাধা থাকবে না। এখন রাজনৈতিকভাবে সরকার খালেদা জিয়াকে আরো মামলা দিয়ে বা গ্রেফতারি পরোয়ানা দিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত জেলে রাখতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। যদি তাই হয়, তাহলে সেটা হবে অত্যন্ত বেআইনি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চারটি মামলা ছাড়া বাকি সব মামলা দায়ের করা হয়েছে বর্তমান সরকারের আমলে। রাজনৈতিকভাবে এখন সরকার খালেদা জিয়াকে আরো মামলা দিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত জেলে রাখতে পারে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। তার বিরুদ্ধে যে সব মামলা রয়েছে তাতে এই সময়ে এই মামলায় (জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা) তাকে গ্রেপ্তার করার কোনো কারণ ছিল না।
    বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, যে মামলায় খালেদা জিয়া জেলে গেছেন সেই মামলায় কিন্তু তিনি জামিনে আছেন। কিন্তু কিছু বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলায় তাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় জামিন পাওয়ার অর্থই হচ্ছে তিনি মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে আসবেন। কিন্তু সরকারের অবৈধ হস্তক্ষেপে কারামুক্ত হতে পারছেন না। তাকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা মনে করি সরকারের হস্তক্ষেপেই আইন চলছে। তিনি বলেন, সরকার গোপনে অনেক কিছু করছে, যা আমাদের জানানো হচ্ছে না। এসবই করা হচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যাতে তাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যায়।
    এডভোকেট মাসুদ আহমদ তালুকদার বলেন, কুমিল্লার দুই মামলায় জামিন পেলে খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আর কোন বাধা থাকবে না। তবে আমাদের আশংকা সরকার যদি তাকে নির্বাচন পর্যন্ত কারাগারে রাখতে চায় তাহলে হয়তো নতুন কোন মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখাতে পারে। সরকারের মনোভাব সুবিধাজনক নয়।
    কুমিল্লার জামিনের অপেক্ষায় থাকা দুই মামলার ব্যাপারে আইনজীবিরা জানান, ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বেলা ১১টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সদরের পৌর এলাকার হায়দারপুল নামক স্থানে একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। পর দিন ২৬ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হয়ে থানায় বিএনপি চেয়ারপারসনসহ ২০ দলীয় জোটের ৩২ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। এরই মধ্যে আদালতে মামলাটির অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। ওই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগসহ তাকে হুকুমের আসামি করা হয়।

    জাপানের কোবে শহরের কাছে দ্বিতীয়বারের মত ভূমিতে আঘাত হেনেছে টাইফুন জেবি

    জাপানের মূল দ্বীপের শিকোকু এবং হোনশু অঞ্চল অতিক্রমের পর টাইফুন জেবি এখন জাপান সাগরের উপর দিয়ে ক্রমশ উত্তরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। জাপানের আবহাওয়া এজেন্সি বলছে, এত বেশি তীব্রতার কোন টাইফুন সর্বশেষ জাপানের ভূমিতে আঘাত হেনেছিল সিকি শতাব্দী আগে।

    উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত এই টাইফুনে অন্তত ৩ ব্যক্তি নিহত এবং অন্যান্য আরও ১শ ৪৮ জন আহত হয়েছেন।

    টাইফুনের কারণে যানবাহন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কিয়োটো, ওসাকা এবং কোবে এলাকায় কিছু রেল চলাচল স্থগিত করা হয়েছে।

    এছাড়াও, প্রধানত পশ্চিম জাপানে আজকের জন্য নির্ধারিত ৬শ’রও বেশি আভ্যন্তরীণ বিমান-যাত্রা বাতিল করেছে বিমান কোম্পানিগুলো।

    দাঁড়িয়ে পানি পান মৃত্যুরও কারণ হতে পারে

    উবায়দুর রহমান খান নদভী

    আমেরিকার এক শহরে জনৈক পাকিস্তানি ট্যাক্সি চালক একটি কফি শপে ঢুকলেন। নিজে এক বোতল ঠান্ডা পানি নিয়ে এক পাশে গিয়ে বসে, প্রথমে ছোট ছোট তিন ঢোক তিন নিঃশ্বাসে পান করলেন। এরপর বাকী পানিটুকু শেষ করে যখন লোকটি বের হয়ে যাচ্ছেন, তখন আরেক ভদ্রলোক দৌঁড়ে এসে তার হাত ধরলেন। বললেন, এক্সকিউজ মি, আপনি কি আমাকে ৫ মিনিট সময় দিবেন? আমার কিছু কথা বলার ছিল। ড্রাইভার লোকটি বললেন, বসে বলব না চলতে চলতে বলব। পার্কিংয়ে আমার গাড়ি রাখা আছে। তখন ভদ্রলোক বললেন, চলুন আপনার সাথে যেতে যেতেই কথাগুলো বলা যাক। ভদ্রলোক যা বললেন, তা রীতিমতো বিস্ময়কর। তিনি নিজের পরিচয় দিলেন, আমেরিকার প্রখ্যাত এক বিজ্ঞানী তিনি। ট্যাক্সিতে বসে তিনি পাকিস্তানি এই চালককে প্রশ্ন করলেন, আপনি একটু আগে যেভাবে পানি পান করলেন, এটা কি আপনার অভ্যাস না হঠাৎ করেই এমনটি হয়েছে। যেখানে আমেরিকায় আমরা যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে হাঁটতে হাঁটতে শুধু পানি কেন পুরো লাঞ্চ বা ডিনার করে ফেলি, আপনি সেখানে এক বোতল পানি এক জায়গায় বসে থেমে থেমে নিঃশ্বাস নিয়ে পান করলেন, এর পেছনে কারণ কি? বিজ্ঞান যেখানে বলে, পরিশ্রান্ত মানুষ দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। পানির প্রেসারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তার হার্ট, কিডনি, লিভার ইত্যাদি। নিজের জীবনের দৈনন্দিন এ অভ্যাসটি এই বিজ্ঞানীর চোখে এত বিস্ময়কর কেন ঠেকলো তা এই ড্রাইভার বুঝতে পারছিলেন না। তিনি সরল ভাষায় উত্তর দিলেন, আমি একজন মুসলমান। আমাদের ধর্মে এভাবেই পানি খাওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। আমি ছেলে বেলা থেকে এভাবেই পানি খেতে শিখেছি। আমার পরিবারের ছোট বড় সকলেই এভাবে পানি পান করে। বিজ্ঞানী তখন বললেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে মানুষের পানি পানের সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছি। আমার জ্ঞানের সাথে আপনার আজকের এ পানি পানের দৃশ্য এমনভাবে মিলে গেছে যে, আমি আপনাকে না ধরে পারলাম না। আপনি আমাকে একটু লম্বা সময় দিন। দূরে কোনোদিকে লংড্রাইভে চলুন। আমি আপনার পেমেন্ট দিব, কথা বলার জন্য আলাদা সম্মানিও দেব। তথাপি আমি চাই, আমার গবেষণার একজন রোলমডেলের সাথে আমার দীর্ঘ আলোচনায় আমার গবেষণা পূর্ণতা লাভ করুক। বিজ্ঞানী এরপর জানতে চাইলেন, এভাবে পানি পান করা আপনি শিখেছেন কার কাছে? এটি কি কোনো সংস্থা বা গবেষকের ফর্মুলা। তখন ড্রাইভার সহজ সরলভাবে জবাবে বললেন, এটি আমাদের নবী (সা.) এর সুন্নত। তার এ নির্দেশনা মত পৃথিবীর সব অনুগত মুসলমান পানি পান করে থাকেন। শুধু তাই না, আমাদের জীবনে প্রতিটি কাজের এমন একটি সুন্দর নকশা আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এঁকে দিয়ে গিয়েছেন। যাকে সুন্নত বলে, আমরা তারই অনুসরণ করি। তখন এ বিজ্ঞানী ট্যাক্সি চালককে তখনকার মতো বিদায় দিয়ে বললেন, আমাকে আরও সময় দিতে হবে। আপনার ঠিকানা ও যোগাযোগের সবকিছু আমাকে দিন। আপনাদের প্রফেটের সুন্নত সম্পর্কে যারা বেশি জানেন তেমন জ্ঞানী ব্যক্তিদের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিন। সেদিনের মতো এভাবেই তারা দু’জন আলাদা হয়ে যান। ক’য়েকটি সাক্ষাতের পর এই বিজ্ঞানী ইসলামিক সেন্টারের ইমাম সাহেবের হাতে ইসলামগ্রহণ করেন। তিনি ইসলামের সত্যতা ও শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে আলোচিত ট্যাক্সি চালকের পানি পান করা থেকে প্রথম ধারণা লাভ করেন। পরে তিনি বলেছেন, দাঁড়িয়ে পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। খুব তৃষ্ণার সময় একশ্বাসে অনেক পানি খাওয়া আরও ক্ষতিকর। পানি পানের বহু থিওরি আমি জমা করেছি, কিন্তু সাধারণ একজন ট্যাক্সি চালক যেভাবে বসে ধীরে ধীরে ছোট ছোট তিন ঢোক পানি তিন নিশ্বাসে পান করলো, এ ছিল আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। আমি বুঝতে চেষ্টা করেছিলাম এ ঘটনাটি কি ইচ্ছাকৃত না কাকতালীয়। যখন চালক ব্যক্তিটি আমাকে সব বুঝিয়ে বললেন, তখন আমার সামনে জ্ঞানের দরজা খুলে গেল। আমি সেই মহামানবের সকল সুন্নত সম্পর্কে শ্রদ্ধাভরে জানার সুযোগ পেলাম। যা দেড় হাজার বছর আগে একটি অনুন্নত পরিবেশে থেকেও ইসলামের নবী (সা.) শিক্ষা দিয়ে গেছেন। যার মধ্যকার বিজ্ঞান সৌন্দর্য ও শ্রেষ্ঠত্ব দিনে দিনে বিশ্বের মানুষ আরও বেশি করে বুঝতে পারছে। মানুষ যখন প্রথম এক ঢোক পানি খায়, এরপর নিঃশ্বাস নেয় তখন পানির পরপরই তার দেহে অক্সিজেন প্রবেশ করে। এরপর তিনবার যখন এ কাজটি করে তখন তার মস্তিষ্ক ও রক্তের শিরা-উপশিরা যথেষ্ট অক্সিজেন লাভ করে, ফুসফুস আরাম পায়, খাদ্য ও শ্বাসনালী নিজেদের সেরা পারফর্ম করে, পাকস্থলী ধীরে ধীরে সে পানিগুলো রিসিভ করে। বিভিন্ন নালী ও শিরা পানিটাকে ফিল্টারিং করে, পানিতে কোনো জীবাণু বা ময়লা থাকলে উপকারী জীবাণুরা সেগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে এর তীব্র গতি পাকস্থলীকে যেভাবে আঘাত করে, তার কুপ্রভাব কিডনী পর্যন্ত পৌঁছে যায়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি এমনকি মূত্রথলিতেও চাপ সৃষ্টি করে। আর তৃষ্ণার্থ বা ক্লান্ত মানুষ এক নিঃশ্বাসে অনেক পানি খেলে এতে তার শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থা, রক্তচাপ, মস্তিষ্কের কমান্ড ইত্যাদি সবক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। বিষম খেয়ে বা খাদ্যনালীতে আটকে গিয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটাও অসম্ভব নয়। শুধু এ বিজ্ঞানী নয়, দুনিয়ার আরও গবেষণা প্রতিষ্ঠান মুসলমানদের পানি পানের সুন্নত পদ্ধতিকে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দিচ্ছে, স্বাগত জানাচ্ছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরির জন্য জাপানী ও ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা ছোট ছোট ঢোক নিয়ে শ্বাস ছেড়ে ছেড়ে দীর্ঘ সময়ে পানি পান করার পদ্ধতি প্রয়োগ করে ভালো ফল লাভ করেছে। পাশ্চাত্যের ইসলামগ্রহণের যে প্রবণতা দিনদিনই বাড়ছে এতে বড় বড় ঘটনাতো বটেই সাধারণ মুসলমানদের জীবনরীতি দেখেও অসংখ্য মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বিশ্বে প্রতিদিন প্রায় ৩২শ’ মানুষ ইসলামগ্রহণ করে। তাদের এ পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে পানি পান, খাদ্যগ্রহণ, পারিবারিক শান্তি, বিবাহিত জীবনের পবিত্রতা, সন্তানদের মায়া-মমতা, এমনকি রোগীর সেবা, মৃতের প্রতি শ্রদ্ধা ও ইসলামী পদ্ধতির জানাজা দাফন-কাফন। আল্লাহ মানুষের হেদায়াতের জন্য যে কোনো বিষয়কে উসিলা বানাতে পারেন। মহানবী (সা.)-এর সুন্নত তো ইসলামের সর্বপেক্ষা বড় সম্পদ। এটি কল্যাণের আকর, সাফল্যের ভান্ডার, আর বিজ্ঞানের সমারোহ।

    ইভিএম চাপানো হবে না

    গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

    জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে তুমুল বিতর্ক এবং বিরোধিতার মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই ইভিএম পদ্ধতিতে ইলেকশন হয়। ইভিএম দেশে নিয়ে আসার পক্ষে আমি সব সময় ছিলাম। এখনও পক্ষেই আছি। তবে এটা ঠিক, এটা একটা প্রাকটিসের ব্যাপার; তাড়াহুড়ার কিছু নেই। ভোটারদের ওপর এটা চাপিয়ে দেয়া যাবে না। নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুতে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলন থেকে দেশে ফিরে এসে গতকাল গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। যথা সময়েই নির্বাচন হবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবেই; নির্বাচন ঠেকানোর শক্তি কারো নেই। বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না এবং কোনো ধরণের সংলাপে বসার সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, তাদের (বিএনপি) সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রশ্নই আসে না। বেগম জিয়াকে ২০১৫ সালেই গ্রেফতার করা উচিত ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা তাকে গ্রেফতার করিনি। বেগম জিয়ার মুক্তি আদালত অথবা প্রেসিডেন্টের ক্ষমার উপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, জনগণের সেবা করছি; নির্বাচনে জনগণ ভোট দিলে দেবে না দিলে নাই। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের চেষ্টায় ভুঁয়া ছবি ব্যবহার করে মিয়ানমারের প্রচারণা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিয়ানমার অত্যান্ত জঘন্য কাজ করেছে। আন্তর্জাতিকভাবে নিজেরাই নিজেদের অবস্থান খারাপ করেছে। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
    নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি পেতে হলে হয় আদালত থেকে, না হয় প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। খালেদা জিয়াকে আমি গ্রেফতার করিনি, রাজনৈতিকভাবে তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। ২০১৫ সালে আন্দোলনের নামে যখন জ্বালাও পোড়াও করেছে তখন তাকে গ্রেফতার করতে পারতাম, কিন্তু করিনি। তিনি গ্রেফতার হয়েছেন এতিমের টাকা চুরি করে। আমরা সেই মামলা করিনি। তার পছন্দের ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের সরকার মামলা করেছে। কেস তো আরও আছে। আমার নামেও তো মামলা ছিল। আমার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া কোনো মামলা তুলে নেইনি। আমি বলেছি কোন মামলার চার্জশীট দেবার আগে মামলা শেষ হবে না। বিএনপির এত নামিদামি আইনজীবী, ব্যারিস্টার অমুক-তমুক রয়েছে। তারা কেন পারলো না প্রমাণ করতে যে খালেদা জিয়া নির্দোষ, তারা এতিমের টাকা নেয়নি। তাহলে এখানে আমাদের দোষ দিয়ে লাভটা কী। তবে তাদের নেত্রী বন্দি হয়ে আছে, তাদের আন্দোলন কই? তারা আন্দোলন করুক। কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, দলটির নেতাদের এমন ঘোষণা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের নেত্রী বন্দি হয়ে আছে, এতে আমাদের কী করার আছে। তাকে মুক্ত করার জন্য তারা আন্দোলন করুক।
    আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি তাদের চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না- দলটির এ ঘোষণার উত্তরে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ক্ষমতা থেকে সরে গেলে যারা একবার ক্ষমতায় বসে তারা আর ছাড়তে চায় না। মার্শাল ল, সামরিক শাসন ও কেয়ারটেকার সরকারের এমন উদাহরণ রয়েছে। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে তিনি বলেন, উচ্চ আদালত এ বিষয়ে একটি রায় দিয়েছে। যদি সংসদ মনে করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনের সুযোগ সংসদ পরপর দুবার নিতে পারে। তবে সংসদ সে সুযোগ নেয়নি। একটা সরকার থেকে আরেকটা সরকারে যে ট্রানজিশনাল সময়, এ সময়ে যেন কোনও ফাঁক না থাকে সেজন্য এটা করা। মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে গেলে সংসদ ভেঙে দিতে হয়। সংসদ কিন্তু কখনো শেষ হয়ে যায়নি। নির্বাচনের সময় সংসদ থাকবে কিন্তু কার্যকারিতা থাকবে না। যদি কোনো ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, যদি কোনো যুদ্ধ দেখা দেয় তখন ওই পার্লামেন্টের অনুমোদন নিয়েই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে আমি ভারত ও নেপাল সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিশ্বের প্রত্যেকটা দেশে এ ব্যবস্থা আছে।
    আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি হুঙ্কার দিচ্ছে নির্বাচন করবে না। সেটা তাদের দলের ওপর নির্ভর করবে, এটা তাদের দলের সিদ্ধান্ত। আমাদের কি করার আছে? বিএনপি যদি মনে করে নির্বাচন করবে না, তাহলে করবে না। এখানে তো আমাদের বাধা দেওয়ারও কিছু নেই বা দাওয়াত দেওয়ার কিছু নেই, এটাই পরিষ্কার কথা।
    বিএনপির সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না
    নির্বাচনকালীণ সরকার গঠন এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রশ্নই ওঠে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে মারা যাওয়ার পর যখন বাসায় দেখতে গেলাম, তারা আমার মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিলো, ভেতরে ঢুকতে দিলো না। সেই দিনই আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি, আর তাদের সঙ্গে আমি বসবো না, কোনও আলোচনা হবে না। আপনারা যে যা-ই বলেন না কেন, ক্ষমতায় থাকি আর না থাকি, তাতে কিছুই আসে যায় না। আমার একটা আত্মসম্মানবোধ আছে।
    বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া জড়িত
    বঙ্গবন্ধু হত্যায় যারা পরিকল্পনাকারী এবং সুবিধাভোগী তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে কিনা-এমন প্রশ্নে জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় তার কেবিনেটের সদস্য খন্দকার মোশতাক জড়িত। কিন্তু সে প্রেসিডেন্ট হয়েই জিয়াউর রহমানকে সেনা প্রধান করেছিল। এছাড়া কর্ণেল ফারুক-রশিদদের সাক্ষাতকারের সময় তারা বলেছিল জিয়াউর রহমানের কাছে তারা পরামর্শ চাইলে তাদের ‘গো এহেড’ বলে সামনে এগুতে বলেছিল। এতেই বোঝা যায় ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর খুনের সাথে জিয়া জড়িত ছিল। খুনের পরিকল্পনাকারী এবং সুবিধাভোগীদের বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এই হত্যাকান্ড নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে। হয়তো ভবিষ্যতে অনেক কিছুই বেড়িয়ে আসবে।
    ড. কামাল, বি. চৌধুরী, রব, মান্না প্রসঙ্গে
    ড. কামাল হোসেন, বি. চৌধুরীর জোট গঠনকে সাধুবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের এই উদ্যোগ, ঐক্যকে সাধুবাদ জানাই। ঐক্য হোক, একসঙ্গে হয়ে ভোটটা করুক। বিকল্প একটা জোট থাকুক। নির্বাচনে কনটেসটেন্ট লাগে। ড. কামাল হোসেন বলেছেন নির্বাচন হয় কিনা সন্দেহ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনকে পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আপনারা কামাল হোসেন গংরা নির্বাচন চান কি না? আপনারা চান অসাংবিধানিক সরকার আসুক। তাহলে আপনারা পতাকা পান, গুরুত্ব বাড়ে।ড. কামাল হোসেনের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী যখন ধমকের সুরে কথা বলেন তখন বুঝতে হবে প্লেন রেডি, শুটকেস ঘোছানো শুধু বাকি।
    ’৭৩ সালে ড. কামাল হোসেন বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় এমপি হয়েছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া আসনে তিনি বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় এমপি হয়েছিলেন। তিনি আবার আমাদের সমালোচনা করেন, গণতন্ত্রের কথা বলেন।
    ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ভাল মানুষ। তার পরিবারের সাথে অনেক আগ থেকে সম্পর্ক। তারা বাবা এবং আমার বাবা ১৯৫৬ সালে একই ক্যাবিনেটে মন্ত্রী ছিলেন। তিনি বিএনপি থেকে বিকল্পধারা তৈরী করেছেন। কিন্তু বিকল্পধারা এখন স্বতন্ত্রধারা হয়ে গেছে।
    জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম রব সম্পর্কে তিনি বলেন, একটা কথা আছে রব সম্পর্কে আর তা হল- সুসময়ে সরব দু:সময়ে নিরব/ সে হল আ স ম রব। অনেক বড় নেতা ছিলেন। এক সময় ছাত্রলীগ করতেন। আমাদের দল থেকে বের হয়ে আলাদা নির্বাচন করলেন। কিন্তু ফেল করলেন। জনগণ আপনাকে ভোট দিয়েছিল নৌকার জন্য। নৌকা নেই জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
    নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মান্না। যখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসলেন তখন বলেছিলাম, অনেক তো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লিখলেন এবার আওয়ামী লীগের পক্ষে লিখেন। কিন্তু এ কথা শুনে মান্না জুড়ে দেয় কান্না। তিনিও দল থেকে চলে গেলেন।
    মিডিয়া বিএনপির ফেবারে
    আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার অসংখ্য বেসরকারি টেলিভিশনের পারমিশন দিয়েছে জানিয়ে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বেসরকারি টেলিভিশন আগে ছিল না, আমিই দিয়েছি। অথচ সেই টেলিভিশন তাদের (বিএনপি) ফেবার করে, আমাকে রাখে চার-পাঁচ নম্বরে। তিনি বলেন, বিএনপি পার্লামেন্টে নেই, তারা বৈধ বিরোধী দলেও নেই। অথচ আমাদের মিডিয়ার কাছে এখন বিএনপিই বিরোধী দল, তারাই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। আজ কিছু কিছু রিপোর্ট পড়ছিলাম। তাদের (বিএনপি) আমলে যে দুর্নীতি, ঘুষ নেওয়া, আন্তর্জাতিকভাবেও বহু কাহিনি রয়েছে। তবে, তাদের সৌভাগ্য যে মিডিয়া সব সময় তাদের ফেবার করে। আমি তো থাকি আপনাদের প্রত্যেকটা টেলিভিশনের হয় তিন নম্বর, নয়তো চার বা পাঁচ নম্বরে। এটা হলো বাস্তবতা।
    মিয়ানমারের ছবি বানানো
    রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। তারা মুখে বলে, কিন্তু করে না। আবার করতে গেলে অনেক বাধা আসে। নেপালে মিয়ানমারের নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে দেশটিকে দেয়া বাংলাদেশের তালিকা অনুযায়ী ৩ হাজার লোককে ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত রয়েছে মিয়ানমার।
    এদিকে সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধের ছবি ব্যবহার করে রোহিঙ্গা বিরোধী প্রচারণা চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটা নিয়ে বলতে চাই, আমাদের দেশেও এই ধরনের ছবি নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে। এখন কথাটা হচ্ছে, শিখলো কার কাছ থেকে ওরা? আমাদের বিএনপি-জামায়াতের কাছ থেকে এগুলো শিখলো কি-না তারা? বিভিন্নভাবে জামায়াত-বিএনপিও কিন্তু এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছিল। মিয়ানমার যেটা করেছে এটা অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ করেছে। আন্তর্জাতিক ভাবে তারা হেয় প্রতিপন্ন হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সাধারণত যখন এই ধরনের (বিমসটেক) একটা আঞ্চলিক গোষ্ঠী তৈরি হয়, তখন সেখানে এ ধরনের দ্বি-পাক্ষিক বিষয়গুলো সেখানে তুলে ধরা যায় না। এতে পরিবেশটা ভালো থাকে। হিমালয় থেকে বঙ্গপোসগারকে ঘিরে যে দেশগুলো সে দেশগুলোর সঙ্গে একটা সমঝোতা ও দেশগুলোর মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। সার্বিক বিবেচনায় বিমসটেকের সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
    ডেল্টা প্ল্যান ২১০০
    ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ডেল্টা প্ল্যান ২১০০-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ১০০ বছরে কোন পর্যায়ে যাবে সেই পরিকল্পনা চলছে। ২০২১ সাল থেকে শুরু করে ২০৪১ সাল পর্যন্ত কী করবো, তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, দিনবদলের সনদ চলছে। কাজ চলছে। তা অব্যাহত থাকবে। ২১০০ সালে বাংলাদেশকে কীভাবে দেখতে চাই, বদ্বীপকে বাঁচিয়ে রাখা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্যান্য অভিঘাত থেকে বাঁচাতে এই প্ল্যান। দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতেই ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়ন হাতে নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে কাজ চলছে।
    একাদশ জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নেই। তবে লক্ষ্য ও পরিকল্পনা গ্রহণে কাজ করে যাচ্ছি। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ছাড়া আসলে দেশের উন্নয়ন হবে না। সে লক্ষ্যে ২০১০ থেকে ২০, ২০২১ থেকে ৪১ সাল পর্যন্ত করণীয় অনেকদূর এগিয়েছে। পরবর্তী ২০৪১ থেকে ২১০০ পর্যন্ত কী হবে সেই পরিকল্পনাও দিয়ে যাচ্ছি। এ নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। দেশ এগিয়ে যাবে। বদ্বীপকে রক্ষা ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতেই ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ হাতে নেওয়া হচ্ছে। জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নই আমার ইচ্ছা। আর কিছু চাই না তো।
    আগামী নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ওপর আমার আস্থা-বিশ্বাস আছে। আমার কোনও আকাক্সক্ষা নেই। জনগণ যদি উন্নতি চায়, কল্যাণ চায়, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও আমাকে জয়যুক্ত করবে। তবে আমি এটুকু মনে করি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে না পারলে সুদিন আসবে না, আসবে দুর্দিন। এটা আমি নিশ্চিত। জনগণ আমাকে না চাইলে আমার কোনও দুঃখ নাই। ক্ষমতায় থেকে কাজ করেছি জনগণের জন্যে, জনগণ ভোট দিলে দেবে, না দিলে কিছু করার নাই, আফসোস নাই।

    বিদেশি পর্যটকদের জাপানী বিমান কোম্পানির নতুন সেবা

    জাপানী বিমান কোম্পানি “অল নিপ্পন এয়ারওয়েজের” পরিচালনা কোম্পানি, এএনএ হোল্ডিংস, বিদেশি পর্যটকদের এক নতুন সেবা প্রদানের ব্যবস্থা শুরু করবে।

    ভ্রমণ নির্দেশিকা সেবা প্রদানের জন্য এই কোম্পানি, টোকিওর নিকটবর্তী কামাকুরা শহর ভিত্তিক “হাবার” নামক একটি উদ্যোগী কোম্পানির সাথে ব্যবসায়ী সম্পর্ক স্থাপন করেছে।

    নতুন উদ্যোগী কোম্পানিটি, প্রায় ৪ হাজার ৫শ নিবন্ধিত গাইডের সাথে বিদেশি পর্যটকদের যোগাযোগ স্থাপনের জন্য অনলাইন সেবা প্রদান করে।

    এসব গাইড, দু’জন একসঙ্গে কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে একজন, বিদেশি ভাষার ভার নেন এবং অপর জন হচ্ছেন স্থানীয় বিশেষজ্ঞ।

    এএনএ চলতি বছরের শেষ নাগাদ, জাপানে আগত যাত্রীদের জন্য যোগাযোগ স্থাপনের সেবা প্রদান শুরু করার পরিকল্পনা করছে।

    এএনএ’র “ডিজিটাল ডিজাইন ল্যাবের” মুখ্য পরিচালক ইয়োশিয়াকি সুদা বলেন যে, এই সেবা বিমান কোম্পানিটিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে সাহায্য করবে কেননা গ্রাহকরা বিমানের টিকিট কেনার সময় গাইড বেছে নিতে সক্ষম হবেন।

    কুরআন-বর্ণিত ইঞ্জিল ও প্রচলিত ইঞ্জিল

    মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

    আলহামদু লিল্লাহ, মুসলিমসমাজে ইসলামী আকীদা-বিশ্বাসের শিক্ষা মকতব থেকে শুরু হয়ে যায়। মকতবেই আমাদেরকে ইসলামের মৌলিক আকীদাগুলো একটি সংক্ষিপ্ত বাক্যে শেখানো হয়েছে। আমাদেরকে পড়ানো হয়েছে-

    آمنت بالله، وملائكته، وكتبه، ورسله، واليوم الآخر، والقدر خيره وشره من الله تعالى، والبعث بعد الموت.

    আমি ঈমান এনেছি আল্লাহ তাআলার প্রতি। তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি। তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি। তাঁর রাসূলগণের প্রতি। আখেরাতের প্রতি। আর একথার প্রতি যে, সকল ভালো-মন্দ আল্লাহর তাআলার পক্ষ থেকে নির্ধারিত। এবং ঈমান এনেছি মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করার প্রতি।

    ইসলামী আকীদার বৈশিষ্ট্য এই যে, উম্মতে মুসলিমা আল্লাহ তাআলার বাতলে দেওয়া সকল হককে হক মনে করে। এগুলোর মাঝে কোনোরূপ তারতম্য করে না। তারা বলে-

    لا نفرق بين أحد من رسله.

    আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোনো পার্থক্য করিনা। যে, কারও প্রতি ঈমান আনব আর কারও প্রতি ঈমান আনব না। তারা ইহুদী নাসারার মত কখনো এ কথা বলে না- نؤمن ببعض ونكفر ببعض.

    আমরা কারো প্রতি ঈমান আনি আর কারো প্রতি আনি না।

    বরং তারা আল্লাহ তাআলার সকল ফেরেশতার প্রতি ঈমান আনে। আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত সকল কিতাবের প্রতি ঈমান আনে। সেগুলোকে সত্য মনে করে। আল্লাহ তাআলার প্রেরিত সকল নবী ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনে। তাদেরকে হক এবং সত্যবাদী ও সত্যায়িত মনে করে। নাযিলকৃত কিতাবের প্রতিটি আয়াত ও প্রতিটি কথা সত্য মনে করে। আল্লাহ তাআলার রাসূল থেকে প্রাপ্ত সকল কথা  হক ও সত্য মনে করে। ইরশাদ হয়েছে-

    اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ  كُلٌّ اٰمَنَ بِاللهِ وَ مَلٰٓىِٕكَتِهٖ وَ كُتُبِهٖ وَ رُسُلِهٖ  لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِهٖ  وَ قَالُوْا سَمِعْنَا وَ اَطَعْنَا ؗغُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَ اِلَیْكَ الْمَصِیْرُ.

    রাসূল (হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাতে ঈমান এনেছে, যা তাঁর উপর তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ হতে নাযিল করা হয়েছে এবং (তাঁর সাথে) মুমিনগণও। তাঁরা সকলে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছে। (তারা বলে,) আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না  (যে, কারও প্রতি ঈমান আনব এবং কারও প্রতি আনব না)। এবং তাঁরা বলে, আমরা (আল্লাহ ও রাসূলের বিধানসমূহ মনোযোগ সহকারে) শুনেছি এবং তা (খুশীমনে) পালন করছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনার মাগফিরাতের ভিখারী, আর আপনারই কাছে আমাদের প্রত্যাবর্তন। -সূরা বাকারা (২) : ২৮৫

    সূরা নিসায় এ ধরনের পার্থক্য ও তারতম্যের ব্যাপারে এই ধমকি শোনানো হয়েছে-

    اِنَّ الَّذِیْنَ یَكْفُرُوْنَ بِاللهِ وَ رُسُلِهٖ وَ یُرِیْدُوْنَ اَنْ یُّفَرِّقُوْا بَیْنَ اللهِ وَ رُسُلِهٖ وَ یَقُوْلُوْنَ نُؤْمِنُ بِبَعْضٍ وَّ نَكْفُرُ بِبَعْضٍ  وَّ یُرِیْدُوْنَ اَنْ یَّتَّخِذُوْا بَیْنَ ذٰلِكَ سَبِیْلً اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْكٰفِرُوْنَ حَقًّا وَ اَعْتَدْنَا لِلْكٰفِرِیْنَ عَذَابًا مُّهِیْنًا وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللهِ وَ رُسُلِهٖ وَ لَمْ یُفَرِّقُوْا بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ اُولٰٓىِٕكَ سَوْفَ یُؤْتِیْهِمْ اُجُوْرَهُمْ  وَ كَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا.

    যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় ও বলে, আমরা কতক (রাসূল)-এর প্রতি তো ঈমান রাখি এবং কতককে অস্বীকার করি, আর (এভাবে) তারা (কুফর ও ঈমানের মাঝখানে) মাঝামাঝি একটি পথ অবলম্বন করতে চায়- এরূপ লোকই সত্যিকারের কাফির। আর আমি কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনবে এবং তাঁদের কারও মধ্যে কোনো পার্থক্য করবে না, আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মফল দান করবেন। আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। -সূরা নিসা (৪) : ১৫০-১৫২

    সূরা বাকারায় ইহুদীদের এ ধরনের কুফরীসূলভ আচরণের ব্যাপারে সর্তক করে ইরশাদ হয়েছে-

    اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْكِتٰبِ وَ تَكْفُرُوْنَ بِبَعْضٍ  فَمَا جَزَآءُ مَنْ یَّفْعَلُ ذٰلِكَ مِنْكُمْ اِلَّا خِزْیٌ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا  وَ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ یُرَدُّوْنَ اِلٰۤی اَشَدِّ الْعَذَابِ  وَ مَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ.

    তবে কি তোমরা কিতাবের (তাওরাতের) কিছু অংশে ঈমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? তাহলে বল, তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে তোমাদের শাস্তি এ ছাড়া আর কী হতে পারে যে, পার্থিব জীবনে তাদের জন্য থাকবে লাঞ্ছনা আর কিয়ামতের দিন তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হবে কঠিনতর আযাবের দিকে? তোমরা যা-কিছু কর আল্লাহ সে সম্পর্কে উদাসীন নন। -সূরা বাকারা (২) : ৮৫

    এদিকে অনেক সহজ-সরল মুসলমানকে খ্রিস্টান মিশনারীরা এই বলে ধোকা দেয় যে, মুসলমানরা তো ঈসা আলাইহিস সালামকে নবী মানে এবং ইঞ্জিলকে আসমানী কিতাব মনে করে তাই (নাউযুবিল্লাহ) তারা নাসারা হয়ে গেলে কোনো অসুবিধা নেই। এ ধরনের ধোঁকা ও প্রবঞ্চনা দিয়ে তাদেরকে খ্রিস্টান বানায়। আর তাদের নাম দেয় ‘ঈসায়ী মুসলমান’।

    প্রত্যেক নবীর প্রতি ঈমান আনার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহর প্রেরিত সকল নবী রাসূলকে হক মনে করা। এই বিশ্বাস রাখা যে, তাঁর শরীয়ত ও সুন্নাত তাঁর উম্মতের জন্য অবশ্যঅনুসরণীয় ছিল। এবং এ বিশ্বাসও রাখা যে, আল্লাহ তাআলার শেষ নবী ও শেষ রাসূল হলেন হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাঁর শরীয়ত ও সুন্নাত সকল সম্প্রদায়ের সকল এলাকার সকল যুগের সকল ভাষার মানুষের জন্য অবশ্যঅনুসরণীয়। এখন নাজাত ও মুক্তি শুধু তাঁরই অনুসরণ এবং তাঁর শরীয়ত ও সুন্নাতের অনুসরণে সীমাবদ্ধ।

    তাঁর পরে অন্য কোনো ব্যক্তির নবুওতের দাবি করার একমাত্র অর্থ হচ্ছে ঐ ব্যক্তি দাজ্জাল ও মিথ্যাবাদী। আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপকারী। যারা তাকে নবী মানবে তারা সরাসরি কাফের ও ঈমানহারা হয়ে যাবে।

    উম্মতে মুসলিমা আল্লাহর সকল ‘নবী’র প্রতি ঈমান রাখে, ‘মুতানাব্বির’ (নবুওতের মিথ্যা দাবিদার) প্রতি ঈমান রাখে না। তারা মুসায়লামা থেকে গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী পর্যন্ত সকল যুগের নবুওতের মিথ্যা দাবিদারকে মিথ্যাবাদী ও অভিশপ্ত মনে করে।

    আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত সকল কিতাবের প্রতি ঈমান রাখার উদ্দেশ্য হচ্ছে, তারা সেগুলোকে সত্য ও হক মনে করে। পাশাপাশি এই বিশ্বাসও রাখে, যা আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলে দিয়েছেন, আহলে কিতাবগণ আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত কিতাবে বিকৃতি সাধন করেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিকৃত অংশ আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাবের অংশ নয়। আর যতক্ষণ বিকৃত অংশ নির্দিষ্ট করা না হবে বিকৃতি মিশ্রিত কিতাবের উপর বিশ্বাস করা জায়েয হবে না।

    এবং এ বিশ্বাসও রাখে যে, আল্লাহর নাযিলকৃত ঐ সকল কিতাব যেভাবে নাযিল হয়েছিল সেভাবে নিঃসন্দেহে হক ও সত্য। কিন্তু আল্লাহ তাআলা এখন কিয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য কুরআনে নাযিলকৃত শরীয়তকে অবশ্যঅনুসরণীয় বানিয়ে দিয়েছেন। পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের শরীয়তকে আল্লাহ তাআলার কুরআনের মাধ্যমে রহিত করেছেন। এখন পূর্ববর্তী শরীয়তের কোনো হুকুম কুরআন-সমর্থিত না হলে অনুসরণযোগ্য নয়।

    মোটকথা, প্রত্যেক হককে হক মনে করা, হককে সত্যায়ন করার ক্ষেত্রে পার্থক্য ও তারতম্য না করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী আকীদা। কিন্তু অন্যান্য ইসলামী আকীদার মতই এ আকীদার বিস্তারিত ব্যাখ্যাও অনেকের জানা নেই। এই অজ্ঞতাকে পুঁজি করে অনেক খ্রিস্টান মুসলমানদেরকে ধোঁকা দিয়ে থাকে। তারা বলে, মুসলমানরা যদি (নাউযুবিল্লাহ) খ্রিস্টান হয়ে যায় এতে কোনো অসুবিধা নেই। এভাবে ধোঁকা দিয়ে তাদেরকে খ্রিস্টান বানিয়ে তাদের নাম দেয় ‘ঈসায়ী মুসলমান’। إنا لله وإنا إليه راجعون

    অথচ আমরা হলাম মিল্লাতে হানীফিয়্যাহ (তাওহীদের অনুসারী) ‘মুসলিম’। আমরা মুশরিক নই, ইহুদী নই, খ্রিস্টান নই, না অন্য কোনো প্রকারের কাফের। ভালোভাবে স্বরণ রাখতে হবে, এ নাম কেবলই ধোঁকা। ‘ঈসায়ী মুসলমান’-এর অর্থ হচ্ছে গায়রে মুসলিম মুসলমান।

    আরো স্মরণ রাখা দরকার, মুসলমান ঈসা আলাইহিস সালামের ব্যাপারে ঐ আকীদা-বিশ্বাসই পোষণ করে, যা কুরআনে কারীম ও হাদীসে ইরশাদ হয়েছে। যথা :

    ঈসা আলাইহিস সালাম আল্লাহ তাআলার বান্দা ও তাঁর রাসূল। ঈসা আলাইহিস সালাম মারইয়ামের পুত্র। আল্লাহ তাআলা তাঁকে পিতা ছাড়া নিজের বিশেষ কুদরতে সৃষ্টি করেছেন। ঈসা আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তাআলা বনী ইসরাঈলের নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেন। ঈসা আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তাআলা শেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যাঁর আরেক নাম আহমদ, ভবিষ্যদ্বাণী শোনানোর জন্য প্রেরণ করেছেন। এবং তিনি শেষ নবী আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী শুনিয়েছেন এবং জোরালোভাবে বলে গেছেন যে, তাঁর আগমনের পর তোমরা সকলে তাঁর প্রতি ঈমান আনবে এবং তাঁর অনুসরণ করবে। ঈসা আলাইহিস সালাম আল্লাহ তাআলার বান্দা। নাউযুবিল্লাহ আল্লাহর পুত্র নন। তিনি আল্লাহ তাআলার ইবাদতগুযার বান্দা ছিলেন। মাআযাল্লাহ তিনি ইলাহ অথবা তিন খোদার এক খোদা ছিলেন না। খোদাবন্দ তাআলা তো কেবল আল্লাহই। তিনি একমাত্র মা‘বুদ। তিনি ছাড়া অন্য কেউ ইবাদতের উপযুক্ত নয়। ঈসা আলাইহিস সালামকে জালেমরা না হত্যা করতে পেরেছে, না শুলে চড়াতে পেরেছে। বরং আল্লাহ তাআলা তাঁকে জালেমদের হাত থেকে রক্ষা করে আসমানে উঠিয়ে নিয়েছেন। তিনি এখনও আসমানে জীবিত আছেন। হাদীস শরীফের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী কিয়ামতের পূর্বে তিনি পৃথিবীতে অবতরণ করবেন এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীয়ত অনুযায়ী ফায়সালা করবেন। দাজ্জালকে হত্যা করবেন। একটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হবে।

    একটু চিন্তা করুন! খ্রিস্টানরা হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের ব্যাপারে যেসব আকীদা পোষণ করে সেগুলোর সাথে মুসলমানদের এ সকল আকীদার কোনো মিল আছে কি?

    আজকের খ্রিস্টানরা ঈসা আলাইহিস সালামের আনীত আকীদা-বিশ্বাস ও শরীয়তের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। তারা ঈসা আলাইহিস সালামের শিক্ষা ছেড়ে পৌলের মনগড়া বানানো কথার প্রচার করছে। আল্লাহর নাযিলকৃত ইঞ্জিল তো এখন তাদের কাছে অবিকৃত অবস্থায়ও নেই, বিকৃত অবস্থায়ও নেই। ইঞ্জিলের পরিবর্তে তারা হাওয়ারীনদের দিকে সম্বন্ধকৃত মানবরচিত কিছু গ্রন্থের প্রতি বিশ্বাসের দাবি করে। এ জন্য তারা তো নিজেদের ঈসায়ী বলারও হক রাখে না।

    যদি মেনে নেওয়া হয় যে, তারা ঈসা আলাইহিস সালামের শরীয়তের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং নাযিলকৃত ইঞ্জিলের শরীয়তের অনুসারী তাহলেও তো খোদ ঈসা আলাইহিস সালামের হুকুম এবং নাযিলকৃত ইঞ্জিলের ফরমান অনুযায়ী তাদের জন্য আবশ্যক হল, সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ঈমান আনা এবং তাঁর শরীয়তের অনুসরণ করা। স্বয়ং ঈসা আলাইহিস সালাম যদি জীবিত থাকতেন তাহলে তাঁরই অনুসরণ করতেন। আর ঈসা আলাইহিস সালাম কিয়ামতের পূর্বে যখন আসমান থেকে অবতরণ করবেন তখন তাঁরই অনুসরণ করবেন।

    খ্রিস্টানদের ভ্রষ্টতার অবস্থা দেখুন, যেখানে তাদের জন্য আবশ্যক ছিল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ঈমান আনা, কুরআন ও কুরআনের শরীয়তের প্রতি ঈমান এনে সেগুলোর অনুসরণ করা, তা না করে তারা ঈমানদার মুসলমানদেরকে বিকৃত খ্রিস্টবাদের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত। তাছাড়া শেষ নবীর আগমনের পর তো সঠিক খ্রিস্টবাদও রহিত হয়ে গেছে। নাজাত ও মুক্তির জন্য এখন সেটাও যথেষ্ট নয়।

    ইঞ্জিল সম্পর্কে ইসলামী আকীদার সারমর্ম হল :

    ইঞ্জিল আল্লাহ তাআলার কালাম, যা তিনি তাঁর বান্দা ও রাসূল মারইয়াম তনয় ঈসা আলাইহিস সালামের উপর নাযিল করেছেন। আল্লাহ তাআলা যে ইঞ্জিল নাযিল করেছেন তা সবটুকুই হক এবং তা পুরোপুরি সত্য। ইঞ্জিলের শরীয়ত বনী ইসরাঈলের জন্য প্রযোজ্য ছিল। তাওরাত ও ইঞ্জিলে কিতাবীরা অনেক বিকৃতি সাধন করেছে। কুরআনে কারীমের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাওরাত ও ইঞ্জিলসহ পূর্বের সকল শরীয়ত রহিত করেছেন। এখন শেষ নবীর আগমনের পর হেদায়েত ও নাজাত কেবল শেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর প্রতি নাযিলকৃত কুরআনী শরীয়তের অনুসরণে নিহিত।

    এখন আবার একটু চিন্তা করুন! এই ইসলামী আকীদাগুলোর সাথে খ্রিস্টানদের কাছে থাকা মানবরচিত গ্রন্থ ইঞ্জিল ও বাইবেলের কী সম্পর্ক? ইঞ্জিল তো আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত কালাম। আর প্রচলিত ইঞ্জিল ও বাইবেল মানবরচিত। যাতে স্বয়ং খ্রিস্টান পাদ্রী ও গবেষকদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী প্রচুর পরিমাণে অসঙ্গতি ও বৈপরীত্য বিদ্যমান। কুরআনে বর্ণিত ইঞ্জিলের সাথে যার কোনো মিল নেই।

    তা সত্ত্বেও খ্রিস্টানরা প্রচলিত ইঞ্জিল ও বাইবেলকে আসল ইঞ্জিল হিসেবে প্রচার করার পেছনে লেগে আছে!!

    নয়াপল্টনে মানুষের ঢল

    Posted by admin on September 1
    Posted in Uncategorized 

    নয়াপল্টনে মানুষের ঢল

    বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নয়াপল্টনের জনসভায় মানুষের ঢল নেমেছে। দুপুর ২টায় জনসভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। দুপুর ১২ টার দিকেই নেতাকর্মীদের উপস্থিতি একদিকে নাইটিঙ্গেল মোড় অন্যদিকে ফকিরাপুল ছাড়িয়ে যায়। এখন জনসভার উপস্থিতি আরামবাগ, ফকিরাপুল, কাকরাইল, বিজয়নগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে।

    ঢাকা এবং ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড হাতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশের দিকে যাচ্ছেন। তবে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না। প্রখর রোদ ও তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে নয়াপল্টনেে অবস্থান নিয়ে নেতাকর্মীরা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন।

    ভোট জালিয়াতি ও চুরি করতেই সরকার ইভিএম ব্যবহারে ব্যাতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে -রিজভী

    ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট জালিয়াতি ও ভোট চুরির অফুরন্ত সুযোগ থাকবে বলেই বাংলাদেশের অবৈধ সরকার নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে ইভিএম ব্যবহারে ব্যাতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিভিন্ন গবেষণার ও অনুসন্ধানের রিপোর্ট থেকে এটি সুস্পস্ট যে ইভিএম সহজে হ্যাক করা যায়, চাইলে একমূহুর্তের মধ্যে ইভিএম এর সবগুলো ফলাফল পরিবর্তন করা সম্ভব। ভোটারের সংখ্যা বাড়ানো-কমানো থেকে শুরু করে যে কোন প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটকেও পাল্টে দেয়া যায়। ইভিএম-এ দূর থেকেও ম্যানিপুলেট করা যায়। ইভিএম দিয়ে ভোটারের নাম, বয়স, ঠিকানা, মোবাইল, পরিবার ইত্যাদিসহ যাবতীয় তথ্য একেবারেই পাওয়া যায়। এর অপব্যবহারের মাধ্যমে হুমকি-ভীতি প্রদান থেকে শুরু করে ভোটারের অনুপস্থিতিতে তার নামেও জালভোট দেয়া সম্ভব। ভোটারবিহীন সরকারের দিক থেকে ভোটাররা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলেই এখন ডিজিটাল মেশিন কারচুপির উপর নির্ভর করছে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী। আজ বুধবার বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
    রিজভী বলেন, নির্বাচনের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা সরকারের চাহিদামত ইভিএম এর তথ্য বা ফল রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে এমনকি দলীয় লোকদের হাতেও এই ক্ষমতা চলে যেতে পারে। ইভিএম এর সফটওয়ার পরিবর্তন বা বন্ধ করে নির্বাচনে অস্থিতিশীলতা ও শূণ্যতা সৃষ্টি করা সম্ভব। অনেক স্বৈরতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে প্রহসন ও নির্লজ্জ কারচুপির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভোটারদের ইভিএম স্ক্রিনে দেখানো হয় তাদের ভোট সঠিক প্রার্থীর নামে যাচ্ছে। কিন্তু ইভিএম এর ভেতর তথ্য হিসেবে ভোট চলে যায় অন্য প্রার্থীর নামে।
    তিনি বলেন, একমাত্র সরকারীদল ছাড়া নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিকদল, সুধীজন, পেশাজীবী সংগঠনগুলোর অধিকাংশই আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার জন্য মতামত পেশ করেছিল। ইসিও দীর্ঘদিন ধরে বলে এসেছে সব দল না চাইলে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। কিন্তু বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ও শ্রেনী পেশার মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করে তড়িগড়ি করে আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগ ও নানা ষড়যন্ত্রের কথা শুনা যাচ্ছে। ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশনের তোড়জোড় দূরভিসন্ধিমূলক ও হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলাল উদ্দিন বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০০ টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি।
    নির্বাচন কমিশন সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নামে এক বিতর্কিত মাধ্যম ব্যবহারের চিন্তা করছে যা জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। ভারতেও দু’দিন আগে বিরোধী দলগুলো ইভিএম ব্যবহার না করতে সে দেশের নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের দূরভিস্বন্ধিমূলক পরিকল্পনা মূলত ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং রচনার পটভূমি। ইভিএম নিয়ে বিশ্বজুড়ে যখন হতাশা ও সমালোচনার ঝড় বইছে তখন এই ধরনের উদ্যোগ কার ইশারায় এবং কিসের ইঙ্গিতবাহি তা জাতির কাছে সুস্পস্ট। জনগণের দল হিসেবে জনমতের প্রতি বিএনপি’র চিরন্তন দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাই আমরা এমন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করছি যেখানে জনগণের স্বপ্ন, আকাঙ্খা ও দাবির প্রতিফলন ঘটবে।
    ইভিএম নিয়ে বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর অভিজ্ঞতা ও আর্ন্তজাতিক গবেষণার ফলাফলের কিছু অংশ তুলে ধরে রিজভী বলেন, ভারতের ইকোনোমিক টাইমস পত্রিকার অনুসন্ধানের রির্পোটে জানা যায় বিশ্বের ২০০ টি দেশের মধ্যে মাত্র ৪টি দেশে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। সেসব দেশেও ইভিএম ব্যবহার নিয়ে তুমুল সমালোচনা চলছে। উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলো আজও পর্যন্ত ইভিএমের গ্রহণযোগ্য ব্যবহার ঘটেনি। যে সব অল্প সংখ্যক দেশে ইভিএম আংশিকভাবে ব্যবহার করা হয় সেখানেও ভোট প্রক্রিয়ায় ও ফল নির্ধারনে ভয়াবহ কারচুপির প্রমান মিলেছে। ভোট গ্রহণের এই পদ্ধতিতে ইন্টারনেট সিকিউরিটি ও তথ্যের গোপনীয়তা নিয়েও গণতান্ত্রিক বিশ্বে সার্বজনিন ভীতি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তাই প্রায় সব দেশেই নির্বাচনে ইভিএমকে ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ ও জনবিরোধী মাধ্যম হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
    তিনি বলে, আয়ারল্যান্ডে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে গবেষনার পেছনে ৫১ মিলিয়ন ইউরো খরচ করবার পর এটিকে অবৈধ নির্বাচনী যন্ত্র হিসেবে ঘোষনা করা হয়। জার্মানির সুপ্রিমকোর্ট ইভিএমকে অসাংবিধানিক ও জনস্বার্থ বিরোধী ঘোষনার মাধ্যমে এর ব্যবহারকে নিষিদ্ধ করে। হল্যান্ডে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও ফলাফলের স্বচ্ছতার অভাবে ডাচ কাউন্সিল আইন করে ইভিএম ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। এছাড়াও ইটালি ও প্যারাগুয়েতে ইভিএম নিষিদ্ধ করা হয়।
    যুক্তরাজ্যেও অনেক গবেষনা ও আলোচনা ভিত্তিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনে বিতর্কিত ইভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ক্যালিফোর্নিয়াসহ যুক্তরাজ্যের অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যে, সুজারল্যান্ড-স্পেন-রোমানিয়া সহ বেশ কিছু দেশে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আশাব্যঞ্জক ফল না ঘটায় এর আর প্রয়োগ ঘটেনি। নরওয়েতে কোন ভোটার কাকে ভোট দিচ্ছে, এই গোপনীয়তা ভঙ্গের ভয়ে পরিক্ষামূলক নির্বাচনে ভোটের পরিমান আসংখ্যাজণকভাবে কমে যায়। এটিকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি ও জনস্বার্থের পরিপন্থি বিবেচনা করে সেখানে ইভিএম প্রত্যাহার করা হয়। বিবিসির একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায় যুক্তরাস্ট্রের গবেষকরা মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে ভারতের ইভিএম প্রক্রিয়া হ্যাক করে কয়েকটি কেন্দ্রের ফলাফল পরিবর্তন করা হয়। এবছরের মে মাসে ভারতের একটি স্থানীয় নির্বাচনে ১৫% এর বেশি ভোটিং মেশিন অকার্যকর হয়ে পড়ে। টাইমস অফ ইন্ডিয়া পত্রিকার ভোটারদের সাক্ষাতকার নিয়ে দেখে অধিকাংশ বুথেই ভোটের দিন ইভিএম নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। বিতর্কের মুখে ভারতের নির্বাচন কমিশন দাবি করে, গরমে উচ্চমাত্রার কারণে তাদের ইভিএমগুলো হঠাৎ করে নষ্ট হয়ে যায়। এই ব্যাখ্যা নিয়ে সর্বত্র হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। গত বছরেই ভারতের আরেকটি নির্বাচনে হিন্দুস্থান টাইমস পত্রিকার অনুসন্ধানে নতুন বিতর্ক বেরিয়ে আসে। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সবগুলো ভোট চলে যায় সরকার দলীয় প্রার্থীর নামে।
    এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

    উ. কোরিয়াকে এখনও মারাত্মক হুমকি মনে করছে জাপান
    যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সাথে আলোচনা সত্ত্বেও টোকিও উত্তর কোরিয়াকে এখনও মারাত্মক হুমকি মনে করছে। কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা কমার পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো জাপানের বার্ষিক প্রতিরক্ষা পর্যালোচনায় এ কথা বলা হয়। খবর বার্তা সংস্থা তাসের।
    ২০১৬ সাল থেকে উত্তর কোরিয়া পরিকল্পিতভাবে তিন দফা পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় এবং ৪০টি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে।
    জাপানের প্রতিরক্ষা বিষয়ক শ্বেতপত্রে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের সামরিক কর্মকাণ্ড জাপানের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকি। এটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর শান্তি ও নিরাপত্তা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
    শ্বেতপত্রে আরো বলা হয়, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে উত্তর কোরিয়ার নেতা কোরীয় উপদ্বীপের নিরস্ত্রীকরণ সম্পন্ন করতে তার আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি লিখিতভাবেও এমন প্রতিশ্রুতি দেন। পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ধ্বংসের ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
    জাপানের বার্ষিক ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পিয়ংইয়ংয়ের মোতায়েন করা কয়েকশ’ নদং ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের যেকোন স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম বলে আশংকা করা হচ্ছে।
    উল্লেখ্য, গত ১২ জুন সিঙ্গাপুরের সান্তোসা দ্বীপের কাপেলা হোটেলে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ঐতিহাসিক বৈঠক হয়।
    সেখানে তারা একটি যৌথ চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তি অনুযায়ী মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিনিময়ে পিয়ংইয়ং কোরীয় উপদ্বীপকে নিরস্ত্রীকরণের প্রতিশ্রুতি দেয়। -বাসস

    বাংলাদেশে অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

    বাংলাদেশে একটি অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। যাতে দেশের জণগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে। যুক্তরাষ্ট্র সময সোমবার ওয়াশিংটনের ফরেন প্রেস সেন্টারে ‘ইউ এস পলিসি ইন দ্য ইন্ডিয়ান ওশান রিজোন’ শীর্ষক এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনসহ চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে করা এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ এন্ড সেন্ট্রাল এশিয়া বিষয়ক প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিটেন্ট সেক্রেটারি (উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী) এলিস ওয়েলস। এক প্রশ্নের জবাবে শুরুতেই ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্বের সম্ভাবনার দিকগুলো নিয়ে কথা বলেন ডেপুটি অ্যাসিটেন্ট সেক্রেটারি। পাশাপাশি বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন-আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) সবসময়ই বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে যে বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে থাকি সেটা হলো- অবাধ এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের কাছে দেয়া প্রতিজ্ঞা পূরণ করা। সে নির্বাচন হতে হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন।
    সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনকে স্বতস্ফূর্ত গণতান্ত্রিক বিক্ষোভ আখ্যা দিয়ে ডেপুটি অ্যাসিটেন্ট সেক্রেটারি এলিস ওয়েলস বলেন, আমরা সাম্প্রতিক সময়ের ছাত্র বিক্ষোভগুলো পর্যবেক্ষণ করেছি, সেখানে যা ঘটেছে সেটা হলো স্বতস্ফূর্ত গণতান্ত্রিক বিক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এছাড়া নাগরিকদের সমাবেশ এবং সরকারের এসব বিষয়ে সাড়া প্রদানের বিষয়ও আমরা দেখেছি। মুক্তমত প্রকাশ এবং অবাধ রাজনৈতিক চর্চার সুযোগকে যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানায় মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, আমরা বাংলাদেশে সব পক্ষের মুক্তভাবে মত প্রকাশের সুযোগ করে দেবার পক্ষপাতি এবং তাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অবাধ অংশগ্রহণের পরিবেশকে উৎসাহিত করছি। সবার জন্য এমন সুযোগ তৈরি হোক যাতে কোন প্রকার ভয় বা প্রতিহিংসা মুক্ত থেকে সভা বা সমাবেশে অংশ নিতে পারে।

    কুরআনের হেদায়েত সবার জন্য

    মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

    بعد…

    সংক্ষেপে তিনটি কথা আরয করছি।

    প্রথম কথা, মসজিদের সাথে আমাদের সম্পর্ক কেবল রমযান কেন্দ্রিক হওয়া উচিত নয়। মসজিদের সাথে আমাদের সম্পর্ক হবে দায়েমী। দুনিয়াতে জান্নাতের নমুনা মসজিদ।

    দ্বিতীয় কথা, কুরআন মাজীদের সাথে আমাদের সম্পর্ক যেন হয় দায়েমী। একবার একজনকে দেখেছি, তাঁর ভক্তদেরকে বলছেন, তিলাওয়াত করতে না পারলে কুল হুওয়াল্লাহ দুই শ বার পড়েন। এ কথাটা শুনে আমার বড় কষ্ট লেগেছে। সূরা ইখলাস দু শ বার কেন চার শ বার পড়। এক হাজার বার পড়। কিন্তু এটা পুরো কুরআন শেখার বিকল্প কীভাবে হয়? না পড়তে পারলে শিখেন- এ কথা বলতে হবে। মুসলমানকে কুরআন শিখতে হবে। পড়তে পারতে হবে।

    আমরা রমযানে তারাবীতে কুরআন শুনলাম। কুরআন শুধু শোনা- এটা কোনো মুমিনের শান হতে পারে না। মুমিনকে কুরআন শোনানোর যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এক সূরা, দুই সূরা, এক পারা, দুই পারা এভাবে পরিমাণ বাড়াতে হবে। পুরা কুরআন যেন তিলাওয়াত করতে পারে, দেখে দেখে পুরা কুরআন পড়তে পারে এমন যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এজন্য আমরা এই রমযান থেকেই মেহনত শুরু করি। প্রয়োজনে আলিফ বা তা ছা থেকে শুরু করি।

    কুরআন শেখা ফরয। সহীহ-শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত শেখা সবার উপর ফরয। শেখার জন্যে এখন আপনাদের কোনো ওযর নেই যে, আমরা কুরআন শেখার জন্যে কোনো রাস্তা পাইনি। দশ বছর আগের বৌনাকান্দি আর এখনকার বৌনাকান্দিতে কত পার্থক্য! দশ বছর আগের হযরতপুর আর এখনকার হযরতপুরে কত পার্থক্য! পুরা কুরআন সূরা ফাতেহা থেকে নাস পর্যন্ত দেখে দেখে সহীহ-শুদ্ধভাবে পড়তে পারার যোগ্যতা যুবকদের সবাইকে অর্জন করতে হবে। অর্জন করার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। আর বুড়োরা ছোট ছোট সূরা দিয়ে শুরু করবেন। আর বড় বড় সূরা অংশ বিশেষ করে শিখতে হবে। শিখতে শিখতে কবরে যাব। শেখা বন্ধ করে কবরে যাওয়ার চেয়ে শিখতে শিখতে কবরে যাওয়া কি ভালো না?

    হযরত হারদুঈর ঘটনা। তাঁর সাথে সম্পর্ক রাখতেন এমন এক জেনারেল শিক্ষিত লোক। হয়ত ডাক্তার হবেন। তিনি নাযেরা শিখেছেন। আগ্রহ হল, পুরা কুরআন হিফয করবেন। তার বুঝ হল, আমি যদি হিফয শেষ করতে নাও পারি, হিফয করতে করতে কবরে যাই…। ঠিক যখন তার এক পারা দুই পারা করে (সম্ভবত) আঠার পারা  হিফয হল, তখন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে ডাক এসেছে। তিনি কবরে চলে গেছেন। তো এখন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে কী আশা করতে পারি। শুরু করা তো আমার সাধ্যের ভেতরে আছে। শেষ করানো আল্লাহ্র কাজ। কুরআন শেখার ক্ষেত্রে এ কথা বড় অন্যায় যে, নামাযে তো কেবল আমার চার সূরা দরকার। আচ্ছা, কুরআন কি শুধু নামাযের জন্য, না যিন্দেগীর জন্য?

    তৃতীয় বিষয় হল, বুযুর্গদের একটি উক্তি আছে। বড় চমৎকার। পুরা বাস্তবসম্মত কথা- رب تال للقرآن والقرآن يلعنه অনেক মানুষ আছে এমন যে, সে কুরআন তিলাওয়াত করে আর কুরআন তাকে লানত করে। অর্থাৎ সে নিজেই কুরআনের ভাষায় নিজকে লানত করে চলেছে। কুরআন তিলাওয়াত করতে করতে সে হয়ত পড়ছে  فَنَجْعَلْ لَعْنَتَ اللهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহ্র লানত। ও লোক মিথ্যাবাদী। সে তিলাওয়াত করছে অথচ মিথ্যা ছাড়ছে না। সে হয়ত পড়ছে- أَلَا لَعْنَةُ اللهِ عَلَى الظَّالِمِينَঅত্যাচারীদের উপর আল্লাহর লানত অথচ সে নিজেই মানুষের উপর যুলম করে। যেখানেই তার ক্ষমতা থাকে সেখানেই সে যুলুম করে। এভাবে সে নিজেই নিজেকে কুরআনের ভাষায় লানত করে।

    তিলাওয়াত শব্দটা বড় তাৎপর্যপূর্ণ। তিলাওয়াত শব্দের মধ্যে এই কথাও আছে যে, যা পড়বে সে অনুসারে চলবে। তালা-ইয়াতলু- পেছনে পেছনে চলা। পড়ব আর যা পড়ছি ওটার পেছনে পেছনে চলব। কুরআনের হেদায়েতগুলো মেনে চলব। তিনটা কথা বলা হল আল্লাহ আমাদেরকে আমল করার তাওফীক দান করুন।

     

    দ্বিতীয় মজলিস

    আমরা যদি চিন্তা করি, এই রমযানে আমাদের দেশে কত খতম হয়েছে; তারাবীতে, তাহাজ্জুদে, নফলে; মসজিদের তারাবীতে, ব্যক্তিগত তারাবীতে…। আর যদি সারা বিশ্বের কথা ধরা হয় তাহলে তো বলতে হবে, খতম অনবরত চলতে থাকে। হারামে তারাবী চলছে। আরো পশ্চিমে আরো পরে তারাবী শুরু হবে। চব্বিশ ঘণ্টা সব জায়গায় ঘুরে ঘুরে তারাবী চলতে থাকে।

    আমাদেরকে যে কথাটি মনে রাখতে হবে তা হল, তিলাওয়াত কুরআনের একটি হক, একমাত্র হক নয়। তিলাওয়াত অনেক গুরুত্বপূর্ণ হক তবে কুরআনের আরো বড় বড় হক রয়েছে। কুরআনের সব হককে যদি এক কথায় বলতে চাই, তাহলে কুরআনের ভাষায়-

    وَ قَالَ الرَّسُوْلُ یٰرَبِّ اِنَّ قَوْمِی اتَّخَذُوْا هٰذَا الْقُرْاٰنَ مَهْجُوْرًا.

    আর রাসূল বলবেন, হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় এ কুরআনকে পরিত্যক্ত করে রেখেছিল। -সূরা ফুরকান (২৫) : ৩০

    মক্কার মুশরিকরা যখন দাওয়াত কবুল করেনি তখন হয়ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই শেকায়েত করেছেন- সেটা এখানে উদ্ধৃত হয়েছে, অথবা আখেরাতে শেকায়েত করবেন- সে কথা এখানে উদ্ধৃত হয়েছে। কুরআনকে ছেড়ে দেওয়ার অর্থ কী, কীভাবে হয়? যত কিছু কুরআন ছেড়ে দেওয়ার অধীনে আসে তত কিছু হিজরানে কুরআনের আওতায় আসে।

    এর বিপরীত হল, কুরআনকে গ্রহণ করা। কুরআনের হক আদায় করা এবং যথাযথভাবে আদায় করা। যদি আমরা কুরআন তিলাওয়াতের হকের কথা বলি তাহলে শুধু তিলাওয়াতই আল্লাহ ফরয করেছেন- তা নয়। حَقّ تِلَاوَتَه… তিলাওয়াতের হক আদায় করে তিলাওয়াত করা জরুরি। তিলাওয়াতের হক আদায় করার জন্য কমপক্ষে তিনটা বিষয় দরকার। ১. তিলাওয়াত বিশুদ্ধ হতে হবে। ২. বুঝে বুঝে তিলাওয়াত করতে হবে। ৩. তিলাওয়াত মোতাবেক আমল করতে হবে। তাহলে এটা হবে হক আদায় করে তিলাওয়াত করা।

    হক আদায় করে কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে- এ কথার উপর এ আয়াত যে দালালাত করে এটা এ আয়াতের দালালাতুন নস। الدلالة بالطريقة الأولوية। দালালাতুন নস অনেক সময় ইবারাতুন নস থেকে অধিক শক্তিশালী হয়। আবলাগ হয়। কথাটা তালিবুল ইলম ভাইদের জন্য বলে রাখলাম।

    এই আমরা তিলাওয়াত শুনলাম, এটা যদি বুঝে শুনে হয়- চাই সেটা নির্ভরযোগ্য কোনো অনুবাদনির্ভর হোক- যদি আমরা খেয়াল করি তাহলে দেখব যে, কুরআনের কত বিধান পরিত্যক্ত হয়ে আছে।

    প্রথম ঈমানের বিষয়টা ধরি। যেসব করণীয় সম্পর্কে কুরআন আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছে এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিষয়  ঈমান। কুরআনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঈমান সম্পর্কে যত আয়াত আছে আমরা আমাদের সমাজে তালাশ করে দেখি- কোন্ ঈমান আল্লাহ ফরয করেছেন আর সমাজে আছে কী? কত আকীদা কুরআন ফরয করে দিয়েছে আর আমাদের সমাজের বড় অংশ সে আকীদার কাছেধারেও নেই। কুরআনের তালীমগুলোকে ব্যাপকভাবে চর্চা করা দরকার।

    هُدىً لِلنَّاسِ কুরআন তো সবার জন্যে হেদায়েত। যাদের দিলে আল্লাহ্র ভয় নেই আখেরাতের ভয় নেই, তারা এখান থেকে হেদায়েত গ্রহণ করে না। এটা তাদের দুর্ভাগ্যের বিষয়। কিন্তু আল্লাহ তো দিয়েছেন সবার জন্যে।  হেদায়েত গ্রহণ করে, উপকার গ্রহণ করে কেবল মুত্তাকীরা- هُدًى لِلْمُتَّقِينَ । যদিও শুধু মুত্তাকীদের জন্য দেননি। দিয়েছেন সবার জন্যে।

    প্রয়োজন কুরআনে কারীমের সকল হেদায়েতের ব্যাপক চর্চা। বিশেষত ফরযে আইন শ্রেণির হেদায়েতগুলোর তো অত্যাবশ্যকভাবে ব্যাপক চর্চা দরকার। এমনিভাবে যে শ্রেণির মানুষের জন্য যে হেদায়েতগুলো বিশেষভাবে দেওয়া হয়েছে সে শ্রেণির মানুষের মাঝে ওই হেদায়েতগুলো বিশেষভাবে প্রচার-প্রসার করা দরকার।

    মুসলিম বিশ্বের যত দেশ আছে সব দেশের সরকারকে, প্রশাসনের লোকদেরকে কুরআন মাজীদ কী কী কথা বলেছে? বিচারকদেরকে কী বলেছে? আইনের লোকদেরকে কী বলেছে?

    যত অ্যাডভোকেট আছে সবাইকে কুরআন এক কথা বলে দিয়েছে-

    وَ لَا تَكُنْ لِّلْخَآىِٕنِیْنَ خَصِیْمًا.

    খেয়ানতকারীদের পক্ষে ওকালতী করতে যেও না। যে হকের উপর আছে তার পক্ষে তুমি সাফাই গাও। তাকে আইনি সহযোগিতা দাও। যে হকের উপর নেই, যে খেয়ানত করছে, তার পক্ষে তুমি দাঁড়াতে পারো না।

    তারা কি কুরআন পড়ে না? কুরআনের তরজমা পড়ে না? হয়ত না। হয়ত এমনও লোক থাকবে, যারা কুরআন ধরেও দেখে না। কিন্তু এ সকল বিধান সকলেই জানে।

    পুরো মুসলিম বিশ্বে যত আদালত আছে, কোর্ট আছে, বিচারপতি ও বিচারক আছে, সবাইকে কুরআন বলে দিয়েছে-

    اَفَحُكْمَ الْجَاهِلِیَّةِ یَبْغُوْنَ   وَ مَنْ اَحْسَنُ مِنَ اللهِ حُكْمًا لِّقَوْمٍ یُّوْقِنُوْنَ.

    যারা ওহীর ইলম থেকে বঞ্চিত তোমরা কি তাদের বিধান চাচ্ছ? অথচ তোমরা দাবি কর তোমরা মুমিন। তোমরা মুসলিম। তাদের তাহযীব তামাদ্দুন, তাদের আইন ও সংবিধান কীভাবে তোমাদের আইন হয়? এর ভিত্তিতে কীভাবে তোমরা ফায়সালা কর? তুমি যদি মুমিন হয়ে থাক তবে কুরআনের চেয়ে ভালো বিধান তোমাকে কে দিবে? এর চেয়ে বড় আইন কে দেবে? কার কাছে যাচ্ছ? তোমার রব তো আল্লাহ। তোমার খালিক মালিক আল্লাহ। আল্লাহ্র বান্দাদের উপর হুকুমত করবে, আল্লাহ্র বান্দাদের ঝগড়া মিটাবে, মামলা মোকাদ্দমার ফায়সালা করবে, বিচার করবে, সেই বিচারের নীতি তুমি কার থেকে নেবে? তোমার খালিক থেকে নাও। তোমার মালিক থেকে নাও। যিনি মাবুদ তার কাছ থেকে নাও। সবকিছু কুরআনে আছে।

    وَ مَنْ لَّمْ یَحْكُمْ بِمَاۤ اَنْزَلَ اللهُ فَاُولٰٓىِٕكَ هُمُ الظّٰلِمُوْن.

    আল্লাহ্র নাযিল করা বিধান মোতাবেক তুমি ফায়সালা করছ না, তুমি যালিম না হয়ে আর কী হবে?

    তুমি মুমিন। তোমার হেদায়েতের জন্য আল্লাহ কুরআন দান করেছেন, এর মধ্যে সবকিছু আছে। একজন বিচারকের জন্যে যা কিছু দরকার, একজন সরকার প্রধানের যা কিছু দরকার সব হেদায়েত ও নির্দেশনা এবং মূলনীতি দেওয়া আছে। একজন আইনজীবীর যা দরকার হয় আছে। একজন ব্যবসায়ীর যা দরকার হয় আছে। সামাজিক রীতিনীতির জন্য যা দরকার সব আছে। একটা ভালো সমাজের জন্যে যা দরকার সব আছে। যত শ্রেণির মানুষ এবং মানব জাতির যত ধরনের সমস্যা হতে পারে সবকিছুর হেদায়েত এবং সমাধান কুরআনে আছে। আল্লাহ তো তোমাকে ইলমে ওহী দান করেছেন। কুরআন-সুন্নাহর মাধ্যমে এই উম্মতকে আল্লাহ ধনী বানিয়ে দিয়েছেন। তুমি কেন অন্যের দুয়ারে হাত পাতবে?!

    কুরআনে কারীম সকল ক্ষমতাধর শাসকগোষ্ঠীকে সম্বোধন করে নমুনা দিয়ে দিয়েছে-

    اَلَّذِیْنَ اِنْ مَّكَّنّٰهُمْ فِی الْاَرْضِ اَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتَوُا الزَّكٰوةَ وَ اَمَرُوْا بِالْمَعْرُوْفِ وَ نَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ  وَ لِلّٰهِ عَاقِبَةُ الْاُمُوْرِ.

    যাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজের নির্দেশ  দেবে ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে। আর সকল কাজের পরিণাম আল্লাহ্র এখতিয়ারে। -সূরা হজ¦ (২২) : ৪১

    কুরআন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে সেই নির্দেশও, যা আল্লাহ তাআলা দাউদ আলাইহিস সালামকে দিয়েছিলেন। তাঁকে আল্লাহ তাআলা নবুওতও দান করেছিলেন এবং বাদশাহীও দান করেছিলেন। বাদশাহী কী এবং কেন তা জানিয়েছেন আল্লাহ তাআলা তাঁকে। এবং সেই হেদায়েত কুরআনে নাযিল করে কিয়ামত পর্যন্ত আনেওয়ালা সকলের জন্য বিধান করে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-

    يٰدَاوٗدُ اِنَّا جَعَلْنٰكَ خَلِیْفَةً فِی الْاَرْضِ فَاحْكُمْ بَیْنَ النَّاسِ بِالْحَقِّ وَ لَا تَتَّبِعِ الْهَوٰی فَیُضِلَّكَ عَنْ سَبِیْلِ اللهِ  اِنَّ الَّذِیْنَ یَضِلُّوْنَ عَنْ سَبِیْلِ اللهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِیْدٌۢ بِمَا نَسُوْا یَوْمَ الْحِسَابِ.

    হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি। অতএব তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর এবং খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না, কেননা তা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হতে বিচ্যুত করবে। যারা আল্লাহ্র পথ হতে ভ্রষ্ট হয় তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। কারণ তারা বিচারদিবসকে ভুলে আছে। -সূরা ছদ (৩৮) : ২৬

    কুরআন খতম তো সবাই করেছে, সব দেশের প্রশাসনের সব লোকেরা করেছে, আদালতের সব লোকেরা করেছে, পার্লামেন্টের সব লোকেরা করেছে। কুরআন কিন্তু সবাইকে সম্বোধন করে করে বলেছে, পথনির্দেশ দিয়েছে, দিয়ে যাচ্ছে। কুরআন বলেছে, সুদ ছাড়ো, ঘুষ ছাড়ো, ধোঁকা ছাড়ো। ভেজাল ছাড়ো। দুর্নীতি ছাড়ো। মাপে কম দিও না। ওয়াদা পুরা করো। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করো না।…

    যুবকদেরকে কেমন পাক্কা ঈমানদার হতে হবে সে বর্ণনা আল্লাহ সূরা কাহফে দিয়েছেন-

    اِنَّهُمْ فِتْیَةٌ اٰمَنُوْا بِرَبِّهِمْ وَ زِدْنٰهُمْ هُدًی ، وَّ رَبَطْنَا عَلٰی قُلُوْبِهِمْ اِذْ قَامُوْا فَقَالُوْا رَبُّنَا رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ لَنْ نَّدْعُوَاۡ مِنْ دُوْنِهٖۤ اِلٰهًا لَّقَدْ قُلْنَاۤ اِذًا شَطَطًا.

    তারা ছিল একদল যুবক, যারা নিজ প্রতিপালকের প্রতি ঈমান এনেছিল এবং আমি তাদেরকে হেদায়েতে প্রভূত উৎকর্ষ দান করেছিলাম। আমি তাদের অন্তর সুদৃঢ় করে দিয়েছিলাম। এটা সেই সময়ের কথা যখন তারা (রাজার সামনেই) দাঁড়াল এবং বলল, আমাদের প্রতিপালক তিনিই, যিনি আকাশম-লী ও পৃথিবীর মালিক। আমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকে মাবুদ বলে কখনোই ডাকব না। তাহলে তো আমরা চরম অবাস্তব কথাই বলব। -সূরা কাহ্ফ (১৮) : ১৩-১৪

    কোন্ শ্রেণীর মানুষ আছে, যে বলবে, আমার কথা কুরআনে নেই। বাচ্চাদের কথা বলুন, মা-বাবা তাদেরকে কীভাবে লালন পালন করবে সে কথা কুরআনে আছে। মৃত্যু এসে গেছে, কবরে কীভাবে সোপর্দ করবেন, কবরে গিয়ে তার কী হালত হবে। সব এসে গেছে কুরআনে। কুরআন হল যিন্দা কিতাব। কুরআন এমন জিনিস না যে, এটা গিলাফে ভরে তাকে রেখে দিবেন। কুরআন এমন কিতাব নয় যে, শুধু তিলাওয়াত করে ক্ষান্ত থাকবেন।

    তিলাওয়াত করার সময় আপনাকে কুরআন বলতে থাকবে। শুধু তিলাওয়াত করে চলে যাবেন এটা হবে না। গাফেল হয়ে কেউ কুরআন তিলাওয়াত করে চলে যাবে এটা হতে পারে না। কুরআন তাকে সজাগ করে দিবে। দিল খুলে, দিলের কান খুলে যে তিলাওয়াত করে, কুরআন তাকে গাফেল থাকতে দেয় না। আল্লাহ তাআলা এজন্যই  মুমিনের দায়িত্বে কুরআন তিলাওয়াত জরুরি করে দিয়েছেন। কুরআন তিলাওয়াত ঈমানী দায়িত্ব। এর দ্বারা মুমিনের ঈমান জাগ্রত হয়। ঈমানী তাকাযা জাগ্রত হয়। এই জিনিসটা আমরা খেয়াল করার চেষ্টা করি। যার সাধ্যে যতটুকু আছে, কুরআনের হেদায়েতগুলোকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করি।

    কুরআনকে আমরা যিন্দা কিতাব হিসাবে গ্রহণ করি। শুধু তিলাওয়াত করে খতম করব। এটা অনেক বড় সওয়াবের বিষয়। কিন্তু হক আদায় করে তিলাওয়াত শুধু খতম করা আর সওয়াব হাসিল করার নাম নয়। সবাই সবার সাধ্যের ভেতরে কুরআনের হেদায়েতগুলোকে বাস্তবায়নের  চেষ্টা করি। …وَ عِبَادُ الرَّحْمٰنِ  এ আয়াতে আল্লাহ তার বান্দাদের গুণাবলী বলে দিয়েছেন।  قَدْ اَفْلَحَ الْمُؤْمِنُوْنَ এখানে আল্লাহ মুমিন বান্দাদের গুণাবলি বলে দিয়েছেন। উলুল আলবাব- কারা কুরআনে বলে দেওয়া হয়েছে। মুত্তাকী কারা- বলে দেওয়া হয়েছে।

    গতকাল সূরা মাআরিজে তিলাওয়াত হল, মুসল্লি কেমন হবে। মুসল্লি এমন হবে, মুসল্লির সিফাত এই হবে। মুসল্লির মধ্যে চারিত্রিক পবিত্রতা থাকতে হবে। মুসল্লিদের গুণাবলি ওখানে বর্ণনা করা হয়েছে। মুসল্লিদের সম্পদে, যা আল্লাহ্র দেয়া, তাতে বঞ্চিতদের হক থাকে। কুরআনে বর্ণিত এ সকল সিফাত খুঁজে খুঁজে নিজের মধ্যে আনার চেষ্টা করি। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ভরপুর তাওফীক নসীব করেন।

    আমর বিল মারুফ নাহি আনিল মুনকার  ও জিহাদের কত আয়াত কুরআন মাজীদে আছে। এসব আজ অবহেলিত। ইসলামী খেলাফত নেই। এ কথা আমরা বলি। এখন সরকারও বলে- দেশে ইসলামী খেলাফত নেই। ইসলামী হুকুমত নেই। ইসলামী হুকুমত না থাকার কারণে খেলাফত বিষয়ক যত ইসলামী বিধান আছে সব মাফ!! নাউযু বিল্লাহ!

    ইসলামী হুকুমত কীভাবে হবে? ইসলামী হুকুমত কি আসমান থেকে নাযিল হয়, যেমন ঈসা আ.-এর উম্মতের জন্যে আসমান থেকে তৈরি খাবার এসেছে? যাকে আল্লাহ ক্ষমতা দিয়েছেন সে যদি তার হুকুমতকে ইসলামী তরীকায় পরিচালনা করে তাহলে ইসলামী হুকুমত আসে। সে আমর বিল মারুফ নাহি আনিল মুনকারের চূড়ান্ত বিভাগ খুলবে। সে জিহাদের বিধান বাস্তবায়ন করবে। হুদূদ (ইসলামী দ-বিধি) বাস্তবায়ন করবে। তার অফিস আদালত সবকিছু কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক হবে। তাহলে ইসলামী হুকুমত অস্তিত্ব লাভ করবে। মুসলিম দেশের সরকার যদি বলে, আমাদের দেশে ইসলামী হুকুমত নেই। এজন্য এ সকল বিধান প্রযোজ্য না- এর চেয়ে হাস্যকর কথা আর কী আছে!

    সকল মুসলিম দেশের প্রশাসনকে ডেকে ডেকে কুরআন বলে, তোমরা আমর বিল মারুফের কাজ কর। নাহি আনিল মুনকারের কাজ কর। ইবাদত নিজে কর। ইবাদতের পরিবেশ কায়েম কর। সালাত কায়েম কর। যাকাত আদায়ের ব্যবস্থা কর। নিজে যাকাত দাও।  তোমার অধীনস্থরা যাকাত দিচ্ছে কি না সেটা তদারকি কর। শরীয়ত যে সকল হদ নির্ধারণ করে দিয়েছে সে হদগুলো কায়েম কর। চুরির কী শাস্তি? ফাহেশার কী শাস্তি? মদ্যপানের কী শাস্তি? কোন্টার কী শাস্তি সেটা বাস্তবায়ন কর। নিজের থেকে পণ্ডিতি করো না। শরীয়ত যেটা নির্ধারণ করে দিয়েছে সেটা বাস্তবায়ন কর। সেটা বাস্তবায়ন করবে, সুফল পাবে। নিজের থেকে পণ্ডিতি করলে একে তো শরীয়তের বিধান লংঘন হবে, শরীয়তের বিপরীতে আরেক আইন দাঁড় করানোর মত কুফরী কাজ হবে, অপর দিকে ফায়দা কিচ্ছু হবে না। ক্ষতি আর ক্ষতি হবে।

    মাদরাসার মধ্যে কুরআনের পরিবেশ, ঘরের মধ্যে কুরআনের পরিবেশ- এটা যে আল্লাহ্র কত বড় নিআমত- এটা বুঝতে পারে সে, যার পুরো ঘর এক দিকে আর সে কুরআন  শিখেছে, কুরআনী যিন্দেগী, ঈমানী যিন্দেগী বোঝা শুরু করেছে এবং সেটা একটু বাস্তবায়ন করতে চায়। কিন্তু পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য পারে না। তখন বোঝা যায় পরিবেশটা কুরআনী হওয়া, পুরো পরিবারটা কুরআনী হওয়া কত বড় নিআমত।

    একটা ঘরে পর্দার পরিবেশ নেই। হঠাৎ একজন পর্দার বিধান জেনেছেন। আল্লাহ তার ঈমানী শক্তি জাগ্রত করে দিয়েছেন। মনে করুন, তিনি তার মায়ের কাছে বসা। এমন সময় তার কাছে আসতে চায় তার ভাবি বা এমনও হতে পারে, আপনার ভাবি ওখানে আর আপনি কোনো দরকারে ওখানে যেতে চান। তখন তাকে সরে যেতে হবে বা আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। এটা অনেক বড় একটা বাধা। কিন্তু যদি আপনিও পর্দার বিধান মানেন সেও পর্দার বিধান মানে তাহলে বিষয়টা সহজ। আপনার ভেতর যদি পর্দার বিধানের গুরুত্ব থাকে, আপনি যদি দ্বীন-ঈমান শিখে থাকেন তাহলে এই বাধার উপর আপনি খুশিই হবেন।

    আমি আমার ভাতিজাদের ঘটনা শুনিয়েছি। যখন রিয়াদ থেকে এসেছি, তারা একেবারে ছোট। আমি ঘরে ঢুকেছি। গ্রাম দেশে একটা ঘরের দুইটা পাশ থাকে। একটাকে বলে আতীনা। সামনের অংশ আর ভেতরের অংশ। আমি সামনের অংশ থেকে ভেতরের অংশে গিয়েছি। এখন বের হব। বাইরে উঠান। উঠান আবার দুই ধরনের, ভেতরের উঠান, বাইরের উঠান। আমি ভেতরের উঠানে যাব, আম্মার সাথে দেখা করার জন্য। যাওয়ার আগে আমি আওয়াজ দিব। কিন্তু আমি আওয়াজ দেওয়ার আগেই ভাতিজারা আমার ভাব দেখে বুঝতে পেরেছে আমি ওইদিকে যাব। তখন দুজনই দুই হাত বাড়িয়ে দিয়ে আমাকে নিষেধ করছে, এদিকে আসবেন না, আসবেন না; আম্মা ওখানে আছেন। কে তাদেরকে এটা শিখিয়েছে? এটা শিখিয়েছে তাদের পরিবেশ।

    আমাকে বাধা দিয়েছে এতে আমি খুশি। আমাকে যদি এক ঘণ্টা বা দুই ঘণ্টাও দেরি করতে হয়, তাও আমি খুশি। কিন্তু যদি কারো কাছে এই বিধানের গুরুত্ব না থাকে তাহলে  সে এক-দুই ঘণ্টা  তো দূরের কথা বাধা দেওয়ার উপরেই নারাজ হয়ে যাবে। মাদরাসার তালিবুল ইলম যারা, তাদের পুরা পরিবারটাই যদি এমন মাদরাসী হয় তাহলে এক অবস্থা। আর যদি এমন হয়, পরিবারের মধ্যে সে একজনই মাদরাসায় পড়ছে তাহলে দেখুন কী দুর্দশা! ভাবীরা নারাজ। কারণ, তার সামনে এসে পড়লে সে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে। সে হয়ত মায়ের কাছে বসা। হঠাৎ ভাবী না জানিয়ে সামনে এসে পড়লেন। তখন সে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকল এবং উঠে চলে গেল। এতে উনারা নারায। কারণ, পর্দার বিধানের গুরুত্ব এখনো তাদের অন্তরে বসেনি।

    এখন তো অনেকে পর্দার বিধানকেই ভাগ করে ফেলেছে। খাস পর্দা আর আম পর্দা। শরীয়তে দুই ধরনের পর্দা নাই। শরীয়তে আছে পর্দার বিধান। কেউ পুরা মানে আর কেউ কিছুটা মানে। ঘরে পর্দা আছে, খাস পর্দা নাই- এর মানে হল, পর্দা নেই। এজন্য খালা শাশুড়ি, মামী শাশুড়ি কত ধরনের শাশুড়ি যে আছে। এই সব শাশুড়িরা পর্দার বিধানের আওতায়। এসব শাশুড়ির সাথে পর্দা করতে হবে। আসল শাশুড়ি তো হলেন আপনার স্ত্রীর মা। হাঁ, আপনি অন্যদের খোঁজ-খবর নেন ভায়া হয়ে। আপনার স্ত্রীর মাধ্যমে। সরাসরি তাদের সাথে কথাও বলতে যাবেন না। দেখা দেওয়া তো দূরের কথা। এ সমস্ত কথা কে মানে? এগুলো তিক্ত কথা। কঠিন কথা। এগুলোর পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এমন পবিত্র পরিবেশই কুরআনী পরিবেশ।

    ঘরকে কবরস্তান বানাবেন না। কবরস্তানে কেউ কুরআন পড়ে না। ঘরকে কুরআনের আলোয় আলোকিত করুন। রেডিও ছেড়ে, মোবাইল ছেড়ে কুরআন তিলাওয়াত দিয়ে দিন শুরু করেছেন। সূরা ইয়াসীনের তিলাওয়াত  শোনার মধ্য দিয়ে দিন শুরু করেছেন। ভালো কথা, কিন্তু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবেন না। সূরা ইয়াসীনের অর্থের প্রতি খেয়াল করুন। সূরা ইয়াসীনকে বলা হয়েছে কলবুল কুরআন। এ সূরায় পুরো কুরআনের হেদায়েতের সারসংক্ষেপ চলে এসেছে। অর্থ বুঝে বুঝে সূরা ইয়াসীন শুনুন এবং সে মোতাবেক আপনার দিনটা পরিচালিত করুন। আপনার ঘরটা, দোকানটা পরিচালিত করুন। তাহলে সূরা ইয়াসীন শোনা সার্থক। এক ধাপ আরো অগ্রসর হোন, সূরা ইয়াসীনের তিলাওয়াত শিখুন; নিজে তিলাওয়াত করুন। আরও সূরা শিখুন। পূর্ণ কুরআনের সহীহ তিলাওয়াত শিখুন, তিলাওয়াত করুন এবং কুরআনের ইলম ও আমল গ্রহণ করুন।  আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফীক নসীব করুন- আমীন।

    জাপানে টাইফুনের আঘাত

    জাপানের ভয়াবহ বন্যার পর শুক্রবার আবার বড় ধরনের সামুদ্রিক ঝড় বা শক্তিশালী টাইফুন আঘাত হেনেছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জাপানের আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, টাইফুন সিমারন বৃহস্পতিবার রাতে জাপানি দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার। গত ৪৮ ঘণ্টায় সেখানে ৬০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, মুষলধারে বৃষ্টি ছাড়াও বন্যায় রাস্তা ডুবে গেছে, ঘরবাড়ির অবকাঠামো ভেঙে গেছে। বাতাসে লরি উল্টে গেছে। প্রচন্ড ঝড়ের কারণে এক লাখের বেশি পরিবার বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। ৩০০ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বুলেট ট্রেনও সাময়িকভাবে বন্ধ। জাপানের আগুন ও বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তর বলছে, টাইফুনে ১৩ জন আহত। অনেক মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার কথা বলা হয়। আবহাওয়া দপ্তরের প্রধান রুতা কুরোরা সেখানকার বাসিন্দাদের ভূমিধস, বন্যা ও জলোচ্ছ¡াস থেকে সতর্ক করে দিয়েছেন। এনএইচকে।

    বিএনপি একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার দায় এড়াতে পারেনা

    একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনার দায় বিএনপি এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শনিবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহু লেনবিশিষ্ট সড়ক ট্যানেল নির্মাণকাজ পরিদর্শনে এসে তিনি এ মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনাই হামলাকারীদের প্রধান টার্গেট ছিল- উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা এই কিলিংয়ের টার্গেট ছিল। সারা দেশ জানে বিএনপির সরকার তখন ক্ষমতায়। হাওয়া ভবনের পরিকল্পনায়, ডিজাইনে এটা হয়েছে। এগুলো এখন আর কোনো গোপন বিষয় নয়।
    আইভি রহমানসহ ২৪ প্রাণের প্রদীপ নিভে গেছে। শেখ হাসিনার ওপর আল্লাহর অশেষ রহমত ছিল বলে বেঁচে গেছেন। এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের রায় হতে যাচ্ছে। রায় কী হবে, কারা এতে জড়িত- সেটা বিচারালয় সিদ্ধান্ত নেবেন। আদালত রায় দেবেন, এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। আদালত স্বাধীন। মন্ত্রী আরও বলেন, এই ঘটনাটির নীলনকশাকারী বিএনপি। সেই অবস্থায় আমরা বলতেই পারি, বিএনপি এর দায় এড়াতে পারে না। আমরা আশা করব, রায় বাস্তবতার নিরিখেই হবে। যা ঘটেছে সেই নিরিখেই বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে এই রায় দেবে। এবং সেজন্যই আমি বলেছি, বিএনপির অনেক নেতার জড়িত হওয়ার আশঙ্কা আছে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, জেলা প্রশাসক ইলিয়াছ হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

    যে বক্তব্যের কারণে মসজিদুল হারামের ইমাম গ্রেফতার হয়েছেন

    মক্কা মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শাইখ সালেহ আত তালিব হাফিজুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিডল ইস্ট মনিটর নামের একটি অনলাইনে এই সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। তবে অন্য কোনো সংবাদ মাধ্যম থেকে এর সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি। যে বক্তব্যটি ইমাম সোশাল মিডিয়ায় দেন সেটি হলো- তোমরা আল্লাহর নাফরমান এবং যারা এই সমাজের মধ্যে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনাকে চালু করছে তাদেরকে বয়কট করো। যা আমাদের পূর্বসূরি বড় বড় উলামায়ে কেরামগণ বলে গেছেন। ঐ সমস্ত মানুষদের অনুষ্ঠানকে বর্জন করো যাদের কর্মপদ্ধতি সন্দেহযুক্ত, এবং যারা নারীদেরকে রাস্তায় বের করে এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের অনুমতি দেয়, যারা নারীদেরকে উলঙ্গপনার দিকে আহবান করে, যারা নারী-পুরুষের অবাধে মেলামেশার দিকে উৎসাহিত করে বর্তমান সমাজে ফাসাদ শুরু করেছে, তাদেরকে বয়কট করুন ৷ যারা নেশাযুক্ত পানীয়কে বৈধতা দান করে তাদেরকে বয়কট করুন । আপনারা পরিপূর্ণভাবে গান-বাজনা এবং কমেডি, কৌতুক ও সিনেমার অনুষ্ঠানকে বয়কট করুন । যদিও যারা এই সিনেমা ও কমেডি চালু করেছে তারা এটাকে নিছক বিনোদন মনে করে। এটা কেবল বিনোদন নয় বরং এই সিনেমার অনুমোদন দ্বারা একমাত্র উদ্দেশ্য হল পশ্চিমা চিন্তা-চেতনাকে লালন করা এবং সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পশ্চিমা আদর্শ ও নীতিকে ঢুকিয়ে দেওয়া। যে নাচ গানের এবং কমেডি নাটক সিনেমার অনুমোদন একেবারে ইসলামী নেই। ইসলামী নীতিতে এই কাজ হারাম, ইসলাম এর অনুমোদন প্রদান করে না ।

    তাদের এই অসৎ উদ্যোগ পবিত্র এই ভূমির জন্য লজ্জাজনক বিষয়, এবং এই পবিত্র ভূমিকে লাঞ্ছিত করার শামিল, তাদের এই অসৎ উদ্যোগ ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ সংকেত, এক সময় আসবে যখন এই বেহায়াপনায় ‘কুদওয়াতুন লিশ্শাবাব’ তথা যুবকদের উত্তম মডেল হিসাবে স্থান পাবে।