• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • সউদীতে এবার স্থায়ী নাগরিকত্ব পাচ্ছেন বিদেশিরা

    সউদী আরবে বাস করা ৭৩ বিদেশি নাগরিককে স্থায়ী বসবাসের ‘প্রিমিয়াম’ মানের অনুমতি দিয়েছে দেশটি। সোমবার (১১ নভেম্বর) দেশটির সরকারি প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি সেন্টারের সূত্রে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানায়।
    গত মে মাস থেকে সউদী আরবে স্থায়ী বসবাসের অনুমতির আবেদন শুরু হয়। হাজার হাজার আবেদনকারীর মধ্য থেকে দেশটিতে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়া ব্যক্তিদের প্রথম ব্যাচে ১৯টি দেশের বিনিয়োগকারী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন। কিন্তু ঠিক কতজন আবেদনকারী এ অনুমতি পেয়েছেন, এর কোনো তথ্য জানা যায়নি।
    স্থায়ী বসবাসের এ অনুমতির জন্য আবেদনকারীদের এককালীন আট লাখ সউদী রিয়াল (এক কোটি ৮০ লাখ বাংলাদেশি টাকা) দিতে হয়েছে। এর বিকল্প ব্যবস্থায় আবেদনকারীর প্রাথমিকভাবে প্রতিবছর নবায়নের উপযোগী এক লাখ সউদী রিয়াল (২২ লাখ বাংলাদেশি টাকা) দেওয়ার সুযোগ ছিল।
    তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে বহুমুখী ক্ষেত্র চালুর অংশ হিসেবে সউদী আরবে বিদেশিদের জন্য স্থায়ী বসবাসের অনুমতির সুযোগ তৈরি করলো দেশটি। স্থায়ী বসবাসের অনুমতির প্রিমিয়াম মানে অনুমতি পাওয়া ব্যক্তি দেশটিতে সম্পত্তি কিনতে এবং সউদী কোনো স্পন্সর ছাড়াই ব্যবসা করতে পারবেন। পাশাপাশি তারা পরিবারের সদস্যদের জন্য দেশটিতে ভিসা স্পন্সর করা ও দেশটিতে সহজে যাওয়া-আসার সুযোগ পাবেন।
    ২০১৬ সালে সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বিদেশিদের সউদী আরবে স্থায়ী বসবাসের অনুমতির বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন। ওই সময়ে তিনি ধারণা দেন, এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে সউদী আরব ২০২০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ১০ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব পেতে পারে।
    স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বড় অংকের অর্থের বিনিময়ে সউদী আরবে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি মিলবে। পাশাপাশি নিজেরাই সেখানে ব্যবসা পরিচালনা এবং সম্পত্তি কিনতে পারবেন।
    প্রসঙ্গত, বর্তমানে সউদীতে প্রচলিত স্পন্সরশিপভিত্তিক ব্যবস্থায় একজন সউদী নাগরিক স্পন্সর হতে রাজি হলে দেশটিতে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে বসবাসের করতে পারেন বিদেশিরা। এ ব্যবস্থার আওতায় প্রায় এক কোটি বিদেশি সউদী আরবে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন।

    শরীয়ত ও ইতিহাসের আলোকে জশনে জুলুসে ঈদে মীলাদুন্নবী

    রবীউল আউয়াল চাঁদের ১২ তারিখ বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে আমাদের দেশে ‘ঈদে মীলাদুন্নবী’ পালিত হয় এবং এতদুদ্দেশ্যে জশনে, জুলুস ও উরসুন্নবীর আয়োজন-অনুষ্ঠানও করা হয়। কোন কোন মহলের পক্ষ থেকে এসব আয়োজন-অনুষ্ঠানকে নবীপ্রেমের শ্রেষ্ঠ আলামত রূপে আখ্যায়িত করে তদপ্রতি বিশেষ তাগিদ ও উৎসাহ প্রদান করা হয় এবং এসব আনুষ্ঠানিকতায় যারা সংশ্লিষ্ট হয় না তাদেরকে নানা তিরস্কার ও বিদ্রুপ বানে জর্জরিত করা হয়। তাই এই নিবন্ধে ইতিহাস ও শরীয়তের দৃষ্টিকোণে ‘ঈদে মীলাদুন্নবী, জুলুস-মিছিল’ এবং প্রচলিত ‘মীলাদ মাহ্ফিলের’ খতিয়ান পেশ করা হল।
    প্রথমে একথা জানা থাকা আবশ্যক যে, হযরত রাসলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি প্রেম ও ভালবাসা হল ঈমানের পর্বশর্ত। বিশুদ্ধ বর্ণনা অনুসারে তাঁর সাথে সম্পর্কিত বিষয় ও তাঁর সুন্নাত-তরীকার প্রতি আন্তরিক মুহাব্বত এবং সে মতে জীবন নির্বাহ হল ঈমানের স্পষ্ট আলামত ও নাজাতের একমাত্র উসীলা। এতে কারো আপত্তি নেই এবং থাকার কথাও নয়।
    কিন্তু প্রশ্ন হল, প্রচলিত নিয়মে প্রতি বছর রবীউল আউয়াল চাঁদে এবং বিশেষ করে এ মাসের নয় ও বার তারিখকে নির্দিষ্ট করে বিপুল পরিমাণ অর্থ অপব্যয় করে ঈদে মীলাদের জশ্নে-জুলুসের ব্যবস্থা করা, অতীব জাঁকজমকের সাথে মাহ্ফিলের আয়োজন করা কিংবা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে এদিন গুলোকে নির্দিষ্ট করা এবং তজ্জন্য গরু-ছাগল জবাই করাকে জরুরী মনে করা কি কুরআন-হাদীস, ইজমায়ে উম্মত প্রভৃতি শরীয়তের দলীল দ্বারা প্রমাণিত? অথবা তিন শ্রেষ্ঠ যুগ অর্থাৎ সাহাবা, তাবিঈন ও তাবে তাবিঈনের যুগে কি এসব কাজের প্রচলন ছিল? সে কথা যাচাই করাই এ আলোচনার মুখ্য উদ্দেশ্য।
    বলা বাহুল্য, মানুষের পছন্দ-অপছন্দের উপর দ্বীন-ধর্ম নির্ভরশীল নয়। তেমনি ব্যাপক জনগণের রুচি-অভিরুচিকেও সুন্নাত বলা যায় না। বরং শরীয়তের দলীল-প্রমাণ দ্বারা যা প্রমাণিত হয়, তাই দ্বীন ও সুন্নাত। প্রমাণবিহীন কাজ-কর্মকে সাওয়াবের কাজ মনে করা হলে বিদ্আতে পর্যবসিত হয়। শরীয়তের দৃষ্টিতে বিদ্আত কাজ হল অত্যন্ত ঘৃণ্য এবং দ্বীনে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে প্রকাশ্য বিদ্রোহ। মোটকথা, ইসলাম ধর্মে হক ও বাতিল এবং গুনাহ্ ও সাওয়াবের মাপকাঠি হল শরীয়তের দলীল, মানুষের অভিরুচি নয়।
    .
    শরীয়তের দলীলঃ
    .
    (১) শরীয়তের প্রথম ও প্রধান দলীল হল পবিত্র কুরআন মাজীদ, যা অপরিবর্তনীয় এক শাশ্বত এবং পরিপর্ণ জীবন বিধান।
    (২) শরীয়তের দ্বিতীয় দলীল হল, পবিত্র হাদীস শরীফ। স্বয়ং কুরআন মাজীদ স্থানে স্থানে হাদীসকে শরীয়তের দলীল রূপে অভিহিত করেছে।
    (৩) শরীয়তের তৃতীয় দলীল উম্মতের ইজমা বা ঐকমত্য। তিরমিযী শরীফের এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- “আল্লাহ্ মুহাম্মদের উম্মতকে গোমরাহীর উপর একমত রাখবেন না।” হাদীসটি একথার প্রমাণ বহন করে যে, উম্মতের ঐকমত্য সত্য ও বিশুদ্ধ।
    (৪) কুরআন-হাদীসের পর খুলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নাত ও তরীকা এবং অন্যান্য সাহাবায়ে কিরামের বাণী আর ধরাবাহিক আমলও শরীয়তের দলীল।
    (৫) খুলাফায়ে রাশিদীন এবং সাহাবায়ে কিরামের পর তাবিঈন ও তাবে তাবিঈনের যুগের উলামাদের কোন কাজ করা বা বর্জন করাকে শরীয়ত বড় গুরুত্ব দান করে। সে কারণে তাঁদের অনুসরণ করাও মুসলমানদের কর্তব্য।
    (৬) ক্বিয়াস এবং ইস্তিহ্সানও শরীয়তের অন্যতম দলীল এবং কুরআন-হাদীস ও ইজমার পরে তার স্থান।
    .
    এ সংপ্তি আলোচনার পর জেনে রাখা উচিত যে, কুরআন-হাদীস ও শরীয়তের অন্যান্য দলীল-প্রমাণের আলোকে অনুসন্ধান করলে স্পষ্ট হয় যে, প্রতি রবীউল আউয়াল চাঁদে জশ্নে-জুলুসের ব্যবস্থা ও প্রচলিত নিয়মে মীলাদ মাহ্ফিলের আয়োজন ইত্যাদি শরীয়তের উল্লিখিত কোন দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয়।
    কুরআন মাজীদের ১১৪টি সরা, ৫৪০টি রুকূ, ৬,৬৬৬টি আয়াত এবং ৩,২২,৬৭১টি অরের প্রতি দৃষ্টিপাত করুন কোথাও এর প্রমাণ পাওয়া যাবে না। অনুরূপ সিহাহ্ সিত্তার হাদীস গ্রন্থসমহ এবং অপরাপর হাদীস গ্রন্থ যথা মুয়াত্তা মালেক, মুসনাদে ইমাম আহ্মদ, দারমী ও তাহাবী, মুসান্নাফে ইব্নে আবী শাইবা, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, কান্যুল উম্মাল, মুসতাদরাকে হাকেম, বাইহাকী ও দারাকুতনী প্রভৃতি ছোট বড় হাদীস গ্রন্থসমহের কোথাও এসব আচার-অনুষ্ঠানের উল্লেখ পাওয়া যায় না। তেমনি ফিক্বাহ্ শাস্ত্রের কিতাব যেমন- মাবসত, সিয়ারে কবীর, হিদায়াহ্, ফাতল ক্বাদীর, বাদাইউস্ সানায়ে’, আল-বাহরুর রায়েক্ব, ফাতওয়ায়ে শামী ও আলমগিরিয়্যাহ্ প্রভৃতি ছোট বড় অজস্র কিতাবের কোন একটিতে এর সামান্যতম ইঙ্গিতও দেখা যায় না। তদুপরি ইজমায়ে উম্মত দ্বারা এটি প্রমাণিত হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। কেননা, ইসলামের প্রথম ছয় শতাব্দী পর্যন্ত এর কোন নজীর পাওয়া যায় না। বরং এর উদ্ভাবন কাল থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের দায়িত্বশীল উলামায়ে কিরাম এসব আচার-অনুষ্ঠানের কড়া সমালোচনা করে আসছেন। বিস্তারিত তথ্য পরে আসছে।
    .
    উল্লেখ্য, শরীয়তের চতুর্থ দলীল ক্বিয়াস এবং ইস্তিহ্সান দ্বারাও তা প্রমাণ করা যায় না। চার মাযহাবের মহান চার ইমাম এবং ইমাম আউযাঈ, ইমাম সুফিয়ান সাউরী, ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদ (রাহ্.) প্রমুখ সর্বজন শ্রদ্ধেয় মুজতাহিদীনে কিরাম, যাদের ক্বিয়াস ও ইস্তিহ্সান শরীয়তে গ্রহণযোগ্য, তাঁদের কেউ প্রচলিত নিয়মের মীলাদুন্নবী উদযাপন করেছেন বলে প্রমাণ নেই। পরবর্তী যুগে ক্বিয়াস ও ইস্তিহ্সান দ্বারা যারা মীলাদুন্নবীর প্রচলিত নিয়মকে প্রমাণিত বলে মনে করেন, তাদের মধ্যে ক্বিয়াস, ইস্তিহ্সান ও ইজতিহাদের সামান্যতম যোগ্যতাও নেই। (কুতুবে তবকাতে ফুক্বাহা)।
    .
    মোটকথা, খিলাফতে রাশিদার ত্রিশ বছরে, একশত দশ হিজরী পর্যন্ত সাহাবীগণের যুগে, একশত সত্তর হিজরী পর্যন্ত তাবিঈনের যুগে এবং প্রায় দুইশত বিশ হিজরী পর্যন্ত তাবে তাবিঈনের যুগে প্রচলিত মীলাদের কোন অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায় না। অথচ দুনিয়ার বুকে নবীপ্রেমের উজ্জ্বল নিদর্শন রেখে গেছেন তাঁরাই। উহদ যুদ্ধে সাহাবী হযরত ত্বাল্হা (রাযি.) আপন শরীর দ্বারা রাসলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আড়াল করে রেখে ছিলেন। ফলে তাঁর শরীরে সত্তরটির মত শত্রু পক্ষের তীর বিদ্ধ হয়েছিল। অন্য এক সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ্ ইব্নে যায়েদ রাসলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তিকালের শোকে মুহ্যমান হয়ে দোয়া করেছিলেন, “হে আল্লাহ্! আমাকে অন্ধ করে দাও, যেন, এই চোখ দিয়ে প্রিয়নবীর পরে আর কাউকে দেখতে না হয়।” বর্ণিত আছে যে, তিনি বাস্তবিকই অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। আরেক মহিলা সাহাবী, যার পিতা, স্বামী ও ভাই উহদ যুদ্ধে শহীদ হয়ে ছিলেন, তিনি রাসলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখে বলেছিলেন, “ইয়া রাসলাল্লাহ্! আপনাকে পাওয়ার শর্তে আমার জন্য যে কোন মুসীবত সহ্য করা অতি সহজ।”
    অনুরূপ হুদাইবিয়ার সন্ধিণে তাঁর পবিত্র মুখ থেকে যে থু থু ফেলছিলেন, তা মাটিতে পড়ার আগেই সাহাবায়ে কিরাম পরম সম্মানের সাথে হাতে তুলে নিজেদের মুখে মেখে নেন। তাঁর শরীর মুবারক থেকে কোন চুল খসে পড়তে না পড়তেই সাহাবীগণ তা হাতে নিয়ে নিতেন। (সীরাতুল মুস্তফা, তানযীমুল আশতাত)।
    দুনিয়ার ইতিহাসে প্রেম-ভালবাসার এমনতর নজীর কি দ্বিতীয়টি আছে? এ নজীরবিহীন প্রেম-ভালবাসার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন জাগে, সাহাবায়ে কিরাম ভালবাসা ও সম্মান জ্ঞাপনের নিদর্শন স্বরূপ মীলাদুন্নবী ও জুলুস-মিছিলের কথিত এই আয়োজন-অনুষ্ঠান কি কোন সময় করেছিলেন? অতঃপর তাবিঈন ও তাবে তাবিঈনের যুগেও কি প্রেম-প্রীতি ও মর্যাদা জ্ঞাপনের এই উদাহরণ স্থাপিত হয়েছিল? যদি হয়ে থাকে তবে কোন উম্মতের ভিন্নমত পোষণ করার অবকাশ নেই। মীলাদ পড়ূয়া মহলের সাথে আমরাও একমত হতে বাধ্য হব। কিন্তু যদি প্রমাণ করতে না পারে (ইন্শাআল্লাহ্, ক্বিয়ামত পর্যন্ত পারবে না) তাহলে যে কাজ তিন শ্রেষ্ঠ যুগ অর্থাৎ সাহাবী, তাবিঈন ও তাবে তাবিঈনের যুগে উত্তম ও সাওয়াবের কাজরূপে কোন সময় পালিত হয়নি, তা আজ কিরূপে অসীম বরকতের কাজ বলে গণ্য হতে পারে?
    এ ব্যাপারে হযরত ইমাম মালিক (রাহ্.)এর মল্যবান বাণী প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন, “এই উম্মতের পরবর্তী যুগকে ঐ পন্থায় সংশোধন করা যাবে যে পন্থায় প্রথম যুগ সংশোধন হয়েছিল।” (ইক্তিযাউস্ সিরাতিল মুস্তাক্বীম-৩৬৭)।
    কেবল এই মৌলিক কথাটির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে চিন্তা করা হলে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, এসব আচার-অনুষ্ঠান কি সত্যি সুন্নাত ও নবীপ্রেমের কাজ? না বিদ্আত এবং নবীজির রূহ্ মুবারকের অসন্তুষ্টিরই কারণ?
    .
    উপরোক্ত আলোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, শরীয়তের কোন দলীল এবং তিন মুবারক যুগের মহান চার খলীফা ও সাহাবী, তাবিঈন ও তাবে তাবিঈনের কোন আমল দ্বারা প্রচলিত নিয়মের মীলাদ মাহ্ফিল ও জুলুস-মিছিলের আয়োজন-অনুষ্ঠান সাব্যস্ত নয়। এমন কি উম্মতের পরবর্তী বড় বড় ইমাম যথা ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফিঈ, ইমাম আহ্মদ ইব্নে হাম্বল ও ইমাম মালিক (রাহ্.) অতঃপর বড় বড় মুহাদ্দিস যথা ইমাম বুখারী, ইমাম তিরমিযী, ইমাম মুসলিম ও ইমাম আবুদাঊদ (রাহ্.) প্রমুখের আমলে এই মীলাদ মাহ্ফিলের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। এভাবে বড় পীর হযরত আব্দুল কাদির জিলানী (রাহ্.), হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশ্তী আজমীরী (রাহ্.) প্রমুখ যুগ বরেণ্য সফী সাধকগণও এ ধরনের আয়োজন-অনুষ্ঠান কখনও করেননি।
    তাহলে প্রশ্ন জাগে, এই মীলাদের সত্র কি এবং এর জন্ম কোথায়? এ ব্যাপারে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে যে তথ্য পাওয়া যায় তাহলো, ৬০৪ হিজরী সালে ইরাকের মুসিল শহরে বাদশাহ্ আবু সাঈদ মুজাফ্ফর কুকুবুরী (মৃতঃ ৬৩০ হিজরী) ও আবুল খাত্তাব উমর ইব্নে দিহ্য়া নামক জনৈক দরবারী আলেম দ্বারা সর্বপ্রথম এর গোড়াপত্তন হয়। ১২ রবীউল আউয়াল ভিত্তিক এই অনুষ্ঠানের ল্য ছিল আনন্দ উৎসব এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য ঈসালে সাওয়াব উদ্দেশ্যে যিয়াফতের ব্যবস্থা করা। (তারীখে ইব্নে কবীর-১৩/১৩৬, তারীখে ইব্নে খাল্লিক্বান-৪/১১৭, ইখ্তিলাফে উম্মত ও সীরাতে মুস্তাক্বীম-১/৮৩ পৃষ্ঠা)।
    মীলাদের গোঁড়া সমর্থক মৌলবী আহ্মদ রেজা খাঁ বেরলবীর বিশিষ্ট খলীফা মৌলবী আব্দুচ্ছমী রামপুরী সাহেবও সে কথা স্বীকার করেন। তার ভাষায়, “রবীউল আউয়ালের ১২ তারিখ আনন্দ-উল্লাস ও মীলাদ মাহ্ফিলের আয়োজন-অনুষ্ঠানের জন্য যে নির্দিষ্ট করা হয়, তা করা হয় ৬শ’ হিজরী সনের শেষ ভাগে।” (আন্ওয়ারে সাতেয়া-১৬৩)।
    যে বাদশার ব্যবস্থাপনায় জাঁকজমকপর্ণ মীলাদের আয়োজন করা হত, তিনি কোন্ প্রকৃতির ছিলেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ইমাম আহ্মদ ইব্নে মুহাম্মদ মালেকী (রাহ্.)এর মন্তব্য থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়। তিনি লিখেন- “সে ছিল এক অপব্যয়ী বাদশা। সে নিজস্ব ইজতিহাদ ও অভিরুচি মতে আমল করার জন্য সমকালীন আলেমদের আদেশ দিত এবং অন্য ইমামের অনুসরণ না করার জন্য উৎসাহ যোগাত। ফলে (স্বার্থপর) আলেমদের একটি দলকে সে বাগিয়ে নিয়েছিল। সে প্রতি রবীউল আউয়াল মাসে মীলাদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করত। সেই প্রথম বাদশা যে এই নবতর প্রথার ভিত্তি স্থাপন করে।” (আল কাউলুল মু’তামাদ ফী আমালিল মাওলীদ, মিন্হাযুল ওয়াযিহ্-২৪৯)।
    .
    এই অপব্যয়ী বাদশা প্রজাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য ধর্মের নামে বাইতুল মালের ল ল টাকা মীলাদুন্নবীর আয়োজনে পানির মত ব্যয় করত। প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক আল্লামা যাহাবী (রাহ্.) তার সম্পর্কে লিখেন, “সে প্রতি বছর মীলাদুন্নবী উপল্েয প্রায় তিন ল দিনার ব্যয় করত।” (দুয়ালুল ইসলাম-২/১৩৬)।
    আল্লামা ইব্নে কাসীর ও আল্লামা ইব্নে খাল্লিক্বান (রাহ্.) লিখেন, “কোন কোন মীলাদ মাহ্ফিলে সেই বাদশার দ¯রখানে পাঁচ হাজার ভূনা মাথা, দশ হাজার মুরগী এবং ত্রিশ হাজার হালুয়ার পাত্র থাকত। মাহ্ফিল স্থানে স্থাপন করা হত বিশটিরও অধিক চার পাঁচ তলা বিশিষ্ট গম্বুজ। তন্মধ্যে একটি গম্বুজ বাদশার জন্য নির্দিষ্ট থাকত। অবশিষ্ট গম্বুজগুলোতে অবস্থান করত বাদশার উজির-নাজির ও সভাসদবর্গ। সফর মাস থেকেই শুরু হত গম্বুজ সাজানোর কাজ। এ মাহ্ফিলে অত্যন্ত ধুমধামের সাথে নাচ-গানের আসর বসত। বাদশা নিজেও নাচে অংশগ্রহণ করত। মাহ্ফিল শেষে যোগদানকারীদের যথাযোগ্য সম্মানীও দেওয়া হত।” (তারীখে ইব্নে কাসীর-১৩/১৩৭, তারীখে ইব্নে খাল্লিক্বান-৪/১১৭-১১৯)।
    সুপ্রসিদ্ধ ‘দুয়ালুল ইসলাম’ ইতিহাস গ্রন্থে দেখা যায়, উপরোক্ত অপব্যয়ী বাদশার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে মীলাদ মাহ্ফিলের বৈধতা ব্যাখ্যা করে আবুল খাত্তাব উমর ইব্নে দিহ্য়া (মৃতঃ ৬৩৩ হিজরী) ‘আত-তানবীর ফী মাওলিদিস্ সিরাজিল মুনীর’ নামক একটি কিতাব রচনা করেছিল। এজন্য সে বাদশার পক্ষ থেকে এক হাজার দিনার বখশিশ লাভ করেছিল। (খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৩)। এই মৌলবী সম্পর্কে আল্লামা হাফেজ ইব্নে হাজার আসক্বালানী (রাহ্.) লিখেন, “সে পর্ববর্তী ইমাম ও আলেম-উলামাদের সাথে বেআদবী করত। সে ছিল অশ্লীল ভাষী, অহঙ্কারী, নির্বোধ এবং দ্বীন সম্পর্কে সংকীর্ণমনা ও অলস প্রকৃতির।” (লিসানুল মীযান-৪/২৯৬, আল্ মিন্হাযুল ওয়াযিহ্)। তিনি আরও লিখেন, “আল্লামা ইব্নুন্ নাজ্জার মন্তব্য করেন যে, আমি এই মৌলবীর মিথ্যাচার ও দুর্বলতা সম্পর্কে লোকদের একমত দেখেছি।” (লিসানুল মীযান-৪/২৯৬, আল্ মিনহাযুল ওয়াযিহ্)।
    .
    উপরোক্ত ঐতিহাসিক আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, প্রচলিত মীলাদ মাহ্ফিলের গোড়াপত্তন হয়েছিল সাহাবী, তাবিঈন এবং সাল্ফে সালিহীনের যুগের অনেক পরে এক অপব্যয়ী বাদশা ও তার দোসর এক স্বার্থপর মৌলবী দ্বারা। এর উদ্দেশ্য হল, বিপুল অপব্যয়ে ধর্মের নামে লোকদের আকৃষ্ট করা এবং উদরপর্তির একটি উসীলা সৃষ্টি করা, যা পরবর্তী মীলাদপন্থী মৌলবীদের মধ্যেও প্রকটভাবে দেখা যাচ্ছে। তাই এ কাজ সাওয়াবের নয়, বরং বিদ্আত তথা ইসলামে একটি নুতন বিষয়ের সংযোজন।
    ইমাম মালেক (রাহ্.) অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলেন, “যে কাজ রাসলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণের যুগে ছিল না, তা আজ দ্বীন হতে পারে না।” (আল্ ই’তিসাম, খন্ড-১)। পরবর্তীকালে বেশ কিছু সরলমনা মুসলমান এবং অপরিণামদর্শী আলেম মীলাদের এই প্রথার সাথে জড়িয়ে পড়েন। কোন এক আরবী কবি বড় আক্ষেপের সাথে বলেনঃ “রাজা-বাদশা, মতলববাজ আলেম এবং স্বার্থবাদী সাধকদের কারণেই ধর্মের যা কিছু নষ্ট হল।”
    অবাক হওয়ার কথা, শরীয়তে যার কোন ভিত্তি নেই, সেই মীলাদ মাহ্ফিলের সাথে ইদানিংকালে ‘ঈদ’ শব্দটিও যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। অথচ ইসলামের গোটা ইতিহাসে ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আযহা ছাড়া তৃতীয় কোন ঈদের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। সাহাবা, তাবিঈন এবং আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের হক্কানী উলামায়ে কিরাম এ দু’দিন ছাড়া আর কোন দিনের সাথে ‘ঈদ’ শব্দ যোগ করেননি। সুতরাং এটা দ্বীন বিকৃতি ছাড়া আর কি হতে পারে? জানি না, সামনে এই এক বিদ্আত মীলাদের সাথে আরও কত প্রকারের বিদ্আত যুক্ত হবে।
    .
    বর্তমানে কোন কোন এলাকায় ঈদে মীলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা অপব্যয় করে বিপুল আয়োজনে জুলুস ও শানদার মিছিলেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যুক্তি দেখানো হচ্ছে যে, এতে ইসলামের শান-শওকত প্রকাশ পায় এবং মুসলিম সমাজে নবচেতনা সৃষ্টি হয়। অথচ ইসলামের দুই মহান ঈদের দিনে এই বন্ধুরা মীলাদ মাহ্ফিলের মত বা তার অর্ধ্বেক পরিমাণেও কোন জুলুস-মিছিলের আয়োজন করেন না। বস্তুতঃ ঈদে মীলাদুন্নবী উদযাপনে যদি মঙ্গলের কিছু থাকত বা নবীপ্রেমের আলামত হত, তাহলে সাহাবায়ে কিরাম কোন অবস্থাতেই এ কাজ থেকে বিরত থাকতেন না। কারণ, তাঁরা নবীর উদ্দেশ্যে জান-মাল সব কিছু বিসর্জন দিয়েছিলেন এবং তাঁদের কাছে নবীর একটি সুন্নাত উভয় জাহান থেকেও মল্যবান ছিল।
    এতদসত্ত্বেও তাঁরা ঈদে মীলাদুন্নবী, উরসুন্নবী, প্রচলিত ক্বিয়াম ইত্যাদি প্রথা-রসমের সৃষ্টি করেননি। অতএব, বুঝা গেল, মীলাদুন্নবী নামের প্রচলিত কার্যক্রম নবীপ্রেমের আলামতও নয় এবং তা দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত বা সাওয়াবের কাজও নয়।
    .
    মীলাদুন্নবী ও হক্কানী উলামাঃ
    .
    এখানে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে, একজন অপব্যয়ী বাদশা এবং একজন স্বার্থপর আলেমের হাতে যে মীলাদ অনুষ্ঠানের উৎপত্তি, তৎকালের উলামায়ে হক্কানী সেই মীলাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন কি-না?
    জবাবে বলতে হয়, যুগ যুগ ধরে আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের উলামায়ে কিরাম নবাবিস্কৃত এই প্রথার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা ও বাদ-প্রতিবাদ করে এসেছেন। নিম্নে কতিপয় যুগবরেণ্য আলেমের উদ্ধৃতি পেশ করা হল।
    .
    ১) আল্লামা তাজুদ্দীন ফাকেহানী (রাহ্.) ছিলেন মীলাদ উদ্ভব কালের একজন সুপ্রসিদ্ধ আলেম। তিনি মীলাদের প্রতিবাদে এক মল্যবান কিতাব রচনা করেছেন। কিতাবটির নাম ‘আল্ মাওরিদ ফিল কালামি আলাল মাওলিদ’। উক্ত গ্রন্থে তিনি লিখেন, “মীলাদের এই প্রথা না কুরআনে আছে, না হাদীস শরীফে। আর না পর্বসরীদের থেকে তা বর্ণিত আছে। বরং এটি একটি বিদ্আত কাজ, যাকে বাতিলপন্থী ও স্বার্থপরগোষ্ঠী সৃষ্টি করেছে। আর পেট পজারীরা তা লালন করেছে।” (বারাহীনে ক্বাতেয়া-১৬৪, হিওয়ার মাআল মালিকী-১৯৪ পৃষ্ঠা)।
    ২) আল্লামা হাফেজ ইব্নে হাজার আসক্বালানী শাফী (রাহ্.)কে প্রশ্ন করা হয়, মীলাদ অনুষ্ঠান কি বিদ্আত? না শরীয়তে এর কোন ভিত্তি আছে? জবাবে তিনি বলেন, “মীলাদ অনুষ্ঠান মলতঃ বিদ্আত। তিন পবিত্র যুগের সালফে সালিহীনের আমলে এর অস্তিত্ব ছিল না।” (হিওয়ার মাআল মালিকী-১৭৭ পৃষ্ঠা)।
    ৩) ইমামুল হিন্দ হযরত শায়েখ আহ্মদ সরহিন্দী মুজাদ্দিদে আল্ফে সানী হানাফী (রাহ্.) যাঁকে মীলাদ সমর্থক আলেমগণও মুজাদ্দিদ বলে স্বীকার করেন, তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, মীলাদ মাহ্ফিল অনাচার মুক্ত হলেও তাতে দোষের কিছু আছে কি? তিনি বলেন, “আমি মনে করি , যতণ পর্যন্ত এর দরজা সম্পূর্ণ বন্ধ হবে না, স্বার্থপর লোকেরা এর থেকে বিরত থাকবে না। যদি এর কিঞ্চিৎ জায়েয হওয়ার ফাত্ওয়া দেওয়া হয়, তবে জানি না ব্যাপারটি ক্রমশঃ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।” (মাকতুবাতে ইমাম রব্বানী, দপ্তর-৩, মাকতুব-৭২)।
    ৪) হযরত শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলবী হানাফী (রাহ্.)কে জিজ্ঞাসা করা হয়, রবীউল আউয়াল মাসে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করে এর সাওয়াব রাসলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রূহে পৌঁছানো, তেমনি মুহাররম মাসে হযরত হুসাইন ও অন্যান্য আহ্লে বাইতের ঈসালে সাওয়াব উদ্দেশ্যে খানাপিনার আয়োজন করা কি জায়েয? উত্তরে তিনি বলেন, “নিজের আমলের সাওয়াব কোন বুযুর্গ ব্যক্তিকে বখশিশ করার ইখতিয়ার মানুষের আছে। তবে এর জন্য কোন মাস বা দিন-কাল নির্দিষ্ট করা বিদ্আত।“ (ফাতওয়ায়ে আযীযী-১৭৬)। তিনি ‘তুহ্ফায়ে ইসনা আশারিয়া’ নামক গ্রন্থে মীলাদ উদযাপনকে শিয়াদের মুহাররম উদযাপনের সাথে তুলনা করে বলেন, “শিয়াদের সাদৃশ্য অবলম্বন থেকে দরে থাকা আবশ্যক।” (মাহনামায়ে দারুল উলূম, জানুয়ারী সংখ্যা, ১৯৮৯ইং)।
    ৫) ইমাম আহ্মদ ইব্নে মুহাম্মদ মালেকী (রাহ্.) বলেন, “চার মাযহাবের আলেমগণ মীলাদ অনুষ্ঠানের নিন্দায় একমত।” (আল্ কাওলুল মু’তামাদ, আল্ মিনহাযুল ওয়াযিহ্-২৫৩)।
    ৬) মিসরের প্রখ্যাত আলেম ও মুফাস্সির আল্লামা সৈয়দ রশীদ রেজা এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “এই মীলাদ নির্দ্বিধায় বিদ্আত কাজ। জনৈক বাদশা এর উদ্ভাবক।” (হিওয়ার মাআল মালেকী-১৭৬)।
    ৭) সৌদি আরবের প্রধান মুফ্তী আল্লামা শায়েখ আব্দুল আযীয বিন বায এর ফাত্ওয়াঃ তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “কুরআন, সুন্নাহ্ তথা অন্যান্য শরয়ী দলীল মতে ঈদে মীলাদুন্নবীর আয়োজন-অনুষ্ঠান ভিত্তিহীন, বরং বিদ্আত। এতে ইহুদী-খ্রীস্টানদের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। এসব অনুষ্ঠানে মুসলমানদের যোগদান করা নাজায়েয। কেননা, এর দ্বারা বিদ্আতের সম্প্রসারণ ও তদপ্রতি উৎসাহ যোগানো হয়।” (মাজমুউ ফাতওয়া-৪/২৮৩-৮৪)।
    .
    ঈদে মীলাদের নিন্দনীয় দিকসমূহঃ
    .
    ১) মীলাদ সমর্থক আলেমগণ কেবল যে ঈদে মীলাদের অনুষ্ঠান করেন তা নয়, বরং যারা এসব নবোদ্ভাবিত বিষয় পালন করে না, তাদের প্রতি গালমন্দের একটা কোষ সৃষ্টি করেন এবং তাদেরকে ওহাবী, নবীর শত্রু ইত্যাদি তিরস্কারে জর্জরিত করেন। যদি ব্যাপার তাই হয়, তবে সাহাবী, তাবিঈন, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক, ইমাম বুখারী, ইমাম গজ্জালী, আরিফে রূমী, বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানী, খাজা মুঈনুদ্দীন চিশ্তী (রাহ্.) প্রমুখ কোন ইমাম বা বুযুর্গ এই তিরস্কার থেকে বাঁচতে পারেন না। কারণ, তাঁদের যুগে ঈদে মীলাদের অনুষ্ঠান পালিত হত না। তাছাড়া হাদীস অনুযায়ী মুসলমানদের গালমন্দ করা যে ফাসেকী এবং সম্মানহানি করা যে হারাম, তা কি আদৌ চিন্তা করা হয়। এ ধরনের অহেতুক বিবাদ-বিসম্বাদের ফলে মুসলিম ঐক্যে যে ফাটল সৃষ্টি হয়, তজ্জন্য তারা কি দায়ী নয়?
    ২) মীলাদপন্থী আলেমদের অনেকে মীলাদ মাহ্ফিলে রাসলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হাজির-নাজির মনে করেন এবং এই ধারণা ব্যাপক করার চেষ্টা চালান। অথচ শরীয়ত ও যুক্তি উভয় দিক দিয়ে এ ধারণা অসত্য ও বাতিল। ফিক্বাহ্ শাস্ত্রবিদগণ এমন আক্বীদা পোষণকারীদের ‘কাফির’ সাব্যস্ত করেছেন। কারণ, হাজির-নাজির হওয়া কুরআন-হাদীসের আলোকে মহান আল্লাহর একটি বিশেষ গুণ, যা আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো জন্য হতে পারে না।
    ৩) ঈদে মীলাদুন্নবী উদযাপনের অন্যতম নিন্দনীয় দিক হল এতে বিজাতির সাদৃশ্যতা অবলম্বন এবং তাদের অনুকরণ দেখা যায়, যা হাদীসের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ। কেননা, এই রসম খ্রীস্টান ও হিন্দুদের থেকে মুসলিম সমাজে প্রবেশ করেছে। খ্রীস্টান জাতি প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর হযরত ঈসা (আ.)এর জন্ম দিবস পালন উপলক্ষ্যে ক্রিসমাস ডে-এর আয়োজন করে। জনৈক বেরলবী মৌলবী ঈদে মীলাদ পালনের বৈধতা ব্যাখ্যা করে বলেন, মহাসমারোহে ঈসা (আ.)এর জন্ম দিবস যে দেশে পালিত হয়, সে দেশে ইসলামের ইমেজ প্রতিষ্ঠার জন্য সম্মিলিতভাবে নবী দিবস পালন করা আবশ্যক। যাতে ইহুদী-নাসারাদের অন্তরে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)এর মর্যাদা বদ্ধমল হয় এবং মুসলিম যুব সমাজের অন্তরেও নবীজির প্রতি শ্রদ্ধা সৃষ্টি হয়।” (দৈনিক জং, ১২ মার্চ, মাহনামায়ে দারুল উলূম, এপ্রিল সংখ্যা ১৯৯০ইং)।
    হিন্দুরাও প্রতি বছর ৮ ভাদ্র শ্রীকৃষ্ণের জন্ম দিবস উপলক্ষ্যে ‘জন্মাষ্টমী’ পালন করে থাকে। এ উপলক্ষ্যে বিরাট জুলুস-মিছিলের আয়োজন করে।
    ৪) প্রচলিত মীলাদ মাহ্ফিলের আর একটি নিন্দনীয় কাজ হল, তথায় শ্রোতাবৃন্দের চিত্তাকর্ষণ উদ্দেশ্যে এমন সব আজগুবী কিচ্ছা-কাহিনী ও বানোয়াট হাদীস বয়ান করা হয়, যা নির্ভরযোগ্য হাদীস গ্রন্থসমহে পাওয়া যায় না। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পতপবিত্র জীবনের যে অজস্র ঘটনা বিশুদ্ধ সনদে হাদীস গ্রন্থসমহে বর্ণিত আছে, তার প্রত্যেকটিই চমকপ্রদ এবং উম্মতের জন্য শিণীয়। তদসত্ত্বেও মীলাদ পাঠকারী মৌলবীগণ সেই বিশুদ্ধ ও শিণীয় ঘটনাগুলো পাশ কাটিয়ে বানোয়াট কিচ্ছা-কাহিনী ও জাল হাদীস শুনিয়ে নিজেদের ইল্ম জাহির করতে মরিয়া হয়ে উঠেন। এ মর্মে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কঠোর সতর্কবাণী বিদ্যমান। মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদীসে তিনি ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, সে যেন জাহান্নামে নিজের ঠিকানা করে নেয়।”
    .
    জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালন ইসলামী মল্যবোধ পরিপন্থীঃ
    .
    বিখ্যাত আলেম ও বিশিষ্ট লেখক মাওলানা ইউসুফ লুধিয়ানবী (রাহ্.) বলেন, “আসলে আগেকার জাতিগুলোর মধ্যে তাদের ধর্ম প্রবর্তক ও মহাপুরুষগণের জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালনের রেওয়াজ প্রচলিত ছিল। যেমন খ্রীস্টানরা অদ্যাবধি হযরত ঈসা (আ.)এর জন্ম দিবস পালন করে আসছে। কিন্তু ইসলামী শরীয়ত ‘দিবস পালন’-এর কোন প্রথা প্রবর্তন করেনি। না করার মধ্যে দু’টি হিকমত নিহিত। প্রথম, দিবস পালনে যা কিছু করা হয়, তা ইসলামের দাওয়াত, তার রূহ্ ও চরিত্রের সাথে কোন প্রকার সঙ্গতি রাখে না। বস্তুতঃ ইসলাম এই জাহেরী সাজসজ্জা, রং-তামাশা ও শ্লোগানে বিশ্বাসী নয়। ইসলাম এসব হৈচৈ ও রিয়াকারী হতে দরে থেকে নীরবতার সাথে মানুষের ভাবান্তর ঘটায়। অতঃপর বিশুদ্ধ আক্বীদা, সুন্দর স্বভাব-চরিত্র ও নেক আমলের তরবিয়ত দিয়ে মানুষকে মানুষে পরিণত করে। তাই ইসলামের দৃষ্টিতে এসব জাঁকজমক কোন মল্য রাখে না। দ্বিতীয় হিকমত হল, অপরাপর ধর্মের মত ইসলাম বিশেষ কোন মৌসুমে পল্লবিত হয় না, বরং এ বৃ সদা বসন্তের ন্যায় সারা বছর তরতাজা থাকে এবং সর্বদা এর ফল-ফুল আহরণ করা যায়। তাই ইসলামের দাওয়াত কোন দিন তারিখে সীমাবদ্ধ নয়।
    অপরাপর জাতিসমহ তাদের দু’চারজন মহাপুরুষের জন্ম দিবস পালন করে ক্ষান্ত হয়ে যায়। কিন্তু ইসলামের কথা ভিন্ন। ইসলামের রয়েছে অগণিত ব্যক্তিত্ব, যাঁদের আযমত ও মহত্বের সামনে আসমান নতশির, নরানী ফেরেশ্তাগণের পবিত্রতা নিষ্প্রভ। ইসলামের অসংখ্য নবী-রাসলের কথা প্রথমে আসে, যাঁরা ছিলেন মানবতার দিশারী। নবীগণের পরে আসে লাধিক সাহাবায়ে কিরামের কাফেলা। এরপর আসে প্রতি শতাব্দীর ল ল আউলিয়া ও গাউস-কুতুবের জামাআত। তাঁরা প্রত্যেকে ছিলেন হিদায়াতের উজ্জ্বল নত্র। এবার চিন্তা করে দেখুন, জন্ম দিবস পালনের প্রথা যদি ইসলাম জারি করে দিত, তবে সারা বছরে উম্মতের জন্য নিজস্ব কাজের একটি দিনও কি অবশিষ্ট থাকত? এ জন্য রাসলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবী, তাবিঈন থেকে শুরু করে ৬শ’ হিজরী পর্যন্ত কোন উম্মত দিবস পালনের বিজাতীয় প্রথাকে গ্রহণ করেননি।
    .
    কিসের আনন্দে এ উৎসবঃ
    .
    বড় অবাক হওয়ার কথা, রাসলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রবীউল আউয়াল মাসের কোন্ তারিখ জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সে বিষয়ে ঐতিহাসিকদের মতভেদ আছে, কেউ বলেন ৩ তারিখ, কেউ বলেন ৮ তারিখ, কেউ বলেন ৯ তারিখ, আবার কেউ বলেন ১২ তারিখ। কিন্তু অনেক ইতিহাসবিদের মতে ১২ রবীউল আউয়াল তিনি ইন্তিকালও করেছেন। তাহলে বলা যাবে যে, আমরা মীলাদুন্নবীর উৎসব পালন করি সে দিন যে দিন তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণ করেন। কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে, রবীউল আউয়ালের ১২ তারিখ তোমরা যে উৎসব পালন কর, তা কি নবীর জন্ম দিবস হিসেবে, না তাঁর ইন্তিকালের আনন্দে? (নাঊযুবিল্লাহ্) তবে এর সদুত্তর হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবে না।
    পরিশেষে বলতে হয় যে, রাসলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম বৃত্তান্ত ও সীরাত-চরিতের বর্ণনা এবং তাঁর প্রেম-ভালবাসার প্রকাশ এক কথা, আর প্রচলিত মীলাদ মাহ্ফিল বা ‘জশনে জুলুসে ঈদে মীলাদুন্নবী’র আয়োজন-অনুষ্ঠান অন্য কথা। প্রথমটি মুস্তহাব, বরং আবশ্যকীয়। আর দ্বিতীয়টি শরীয়ত ও যুক্তি উভয় দিক দিয়ে ভিত্তিহীন। ইসলাম ধর্মে এক নতুন বিষয়ের সংযোজন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র রূহের অসন্তুষ্টির কারণ। যা শরীয়তের উসল অনুযায়ী পরিত্যাজ্য। হিদায়াত আল্লাহ্ তাআলার হাতে।
    .
    লেখকঃ হাদীস গবেষক, বক্তা, গ্রন্থ প্রণেতা এবং প্রখ্যাত মুহাদ্দিস- দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

    স্যাক্সোফোন প্রতিযোগিতায় জাপানীদের শীর্ষ পুরষ্কার লাভ

    জাপানী দুজন স্যাক্সোফোন বাদক, বেলজিয়ামে অনুষ্ঠিত একটি মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতায় শীর্ষ পুরষ্কার লাভ করেছেন।

    বেলজিয়ামের দিনান্ত শহরে প্রতি চার বছর অন্তর অ্যাডলফ স্যাক্স আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য শহরটি, স্যাক্সোফোনের উদ্ভাবক অ্যাডলফ স্যাক্সের জন্মস্থান। চলতি বছর, ১৯টি দেশের প্রায় ১শ জন বাদক প্রতিদ্বন্ধিতায় অবতীর্ণ হন।

    গত শুক্র ও শনিবার অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতায়, ২৭ বছর বয়সী কেনতা সাইতো শীর্ষ এবং ৩০ বছর বয়সী রুই ওযাওয়া ২য় স্থান লাভ করেন।

    সাইতো, সেনযোকু গাকুয়েন সঙ্গীত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার পর টোকিও চারুকলা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।

    সাইতো, এই প্রতিযোগিতায় জয়লাভের আনন্দ প্রকাশের ভাষা নেই বলে উল্লেখ করেন।

    উল্লেখ্য, এটা হচ্ছে প্রতিযোগিতাটিতে জাপানীদের শীর্ষ ও ২য় স্থান দখলের প্রথম ঘটনা।

    সম্রাটের অভিষেক উপলক্ষে অনুষ্ঠান

    টোকিওতে, সম্রাটের অভিষেক উপলক্ষে খোলা আকাশের নীচে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক লোকজন সমবেত হয়েছেন।

    আজ সন্ধ্যা ৫টার কিছু পরে, রাজ প্রাসাদের সামনে অবস্থিত একটি চত্বরে অনুষ্ঠানটি আরম্ভ হয়। সাংসদ, ব্যবসায়ী নেতা এবং অন্যান্যদের আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে, প্রায় ৩০ হাজার লোক অংশগ্রহণ করেন।

    সম্রাট নারুহিতো এবং সম্রাজ্ঞী মাসাকো, নিযুউবাশি সেতুর নিকটে প্রাসাদে উপস্থিত হয়ে লোকজনদের অভিবাদন জানান।

    প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে, অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন।

    সম্রাট, তিনি এবং সম্রাজ্ঞী লোকজনের সুখ এবং জাপানের আরও উন্নয়ন ও বিশ্বের শান্তির জন্য প্রার্থনা করছেন বলে জানান।

    উপস্থিত লোকজন, সম্রাট দম্পতির দীর্ঘায়ু কামনা করেন। সম্রাট এবং সম্রাজ্ঞী, হাতে থাকা লণ্ঠন নেড়ে জবাব দেন।

    মহাকাশে তৈরি হল গরুর মাংস

    একটি বিফ-স্টেকে যত পরিমাণ মাংস থাকে ততটা পরিমাণ মাংস কৃত্রিম পদ্ধতিতে তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। মাংসখণ্ডটি পৃথিবীতে উৎপাদন করা হয়নি, উৎপাদন করা হয়েছে ভূপৃষ্ঠ থেকে ২৪৮ কিলোমিটার ওপরে ভাসমান আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে এবং কোনও প্রাণীকে হত্যা না করেই।

    আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের রাশিয়ার অংশে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ২৬ তারিখে এই ঐতিহাসিক পরীক্ষাটি হয়। রাশিয়ান মহাকাশচারী ও জীববিজ্ঞানী ওলেগ স্ক্রিপোচকা পরীক্ষাটি করেন। জীবিত গোরুর দেহ থেকে একটি ছোট্ট টিস্যুকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সুস্থ ও জীবন্ত রেখে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মহাকাশে। সেই জীবন্ত টিস্যুটির বায়োপ্রিন্টিং ঘটান বিজ্ঞানী ওলেগ স্ক্রিপোচকা।

    জীবাণুমুক্ত পরিবেশে কোনও জীবদেহ থেকে নেয়া কলা বা টিস্যুকে কৃত্রিমভাবে পুষ্টি দিয়ে আয়তনে বাড়ানোর পদ্ধতির নাম টিস্যু কালচার। যেটি নতুন কোনও পদ্ধতি নয়। বহু লুপ্তপ্রায় উদ্ভিদকে সংরক্ষণ করা, প্রাণীর দেহের কোনও ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যুকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া, এমনকি ডিম্বাশয়ের টিস্যু থেকে ডিম্বানু তৈরির মতো ঘটনা ঘটিয়েছে বিজ্ঞান। টিস্যু কালচারের সাহায্যে। এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ইভলিন টেলফার ও তার টিম এই অসাধ্যসাধন করেছিলেন ২০১৮ সালে। এই টিস্যু কালচার পদ্ধতিরই আরেকটা রুপ হলো বায়ো-প্রিন্টিং। এই পদ্ধতিতে একটি থ্রি-ডি বায়ো-প্রিন্টার মেশিনের মধ্যে প্রাণীকোশ বা কলার কৃত্রিম বৃদ্ধি ঘটানো হয়। এর মধ্যে কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্যকারী বিভিন্ন উপাদান মেশানো থাকে।

    জীবন্ত টিস্যুটির কোষগুলি অনবরত বিভজিত হতে থাকে বায়ো-প্রিন্টার মেশিনে থাকা বিশেষ তরলে। সাহায্য করে করে চুম্বক শক্তি। ফলে ক্রমশ আকারে বাড়তে থাকে টিস্যুটি। মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যে তৈরি হয়ে যায় বিফ-স্টেক করার উপযুক্ত বড়সড় একটি স্বাভাবিক মাংসখণ্ড এবং এটি পেতে কোনও প্রাণীকে হত্যা করতে হয়নি। বায়োপ্রিন্টিং পদ্ধতিতে তৈরি মাংসের বৈশিষ্ট্য হলো এই মাংস জীবাণুমুক্ত হবে।

    বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীতেও তারা এই পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তবে পৃথিবীর চেয়ে মহাকাশে মাংসখণ্ডটি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এর কারণ হিসেবে তারা মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণের অনুপস্থিতিকে দেখিয়েছেন। মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে পৃথিবীতে টিস্যুটির নিচের দিকের কোশের বৃদ্ধি ও বিভাজন হয়। কিন্তু মহাকাশে টিস্যুর সব দিকের কোষ একসাথে বিভাজিত হয় বলে মাংসখণ্ডটি সব দিকে একসঙ্গে ও দ্রুত বাড়তে থাকে। সূত্র: নিউজ ১৮।

    জিসোমিয়া নবায়নে দক্ষিণ কোরিয়াকে আহ্বান জানাবেন মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী

    মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মার্ক এস্‌পার দক্ষিণ কোরিয়াকে জাপানের সাথে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি ক’রে নেওয়ার চুক্তি এমাসে পরের দিকে নবায়ন না করার সিদ্ধান্তটি পুনরবিবেচনা করতে আহ্বান জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

    পেন্টাগনের মুখপাত্র জোনাথন হফম্যান বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সওলে দক্ষিণ কোরীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী চিওন গিয়োন দোও’র সঙ্গে বৈঠকে এই চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করবেন।

    হফম্যান বলেন আগামী বুধবার থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এশিয়ার চারটি দেশ দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনাম সফর শুরু করবেন। সেসময় চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে তিনি আলোচনা করবেন।

    হফম্যান মার্কিন নীতি অবস্থানের পুনরুল্লেখ করে বলেন উত্তর কোরিয়া ও চীনকে মোকাবেলার জন্য জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে যদি ২৩শে নভেম্বর চুক্তিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়।

    গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য সংক্ষেপে জিসোমিয়া নামে পরিচিত এই চুক্তির পূর্ণরূপ হোল জেনারেল সিকিউরিটি অফ মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট বা সামরিক তথ্যের সাধারণ নিরাপত্তা সংক্রান্ত চুক্তি।

    থাইল্যান্ডে এসপার, চিওন এবং জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তারো কোনো’র মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতিও চলছে।

    পরিচালনা লোকসান সম্পর্কে জানিয়েছে সফট ব্যাংক গ্রুপ

    জাপানের আই টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সফট ব্যাংক গ্রুপ ২০১৯ অর্থ বছরের প্রথমার্ধে ১৪ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি পরিচালনা লোকসানের ঘোষণা দিয়েছে। এটা হচ্ছে ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে কোম্পানির এরকম লোকসান।

    গ্রুপের নিট মুনাফা এক বছর আগের চাইতে অর্ধেক, প্রায় ৩৮০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাজের জায়গা ভাগাভাগি করে নেয়ার সেবা প্রদানকারী কোম্পানি উই ওয়ার্কের আর্থিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে আসার পর প্রধানত গ্রুপের পরিচালিত একটি ফান্ডের হওয়া ব্যাপক লোকসান এই খারাপ ফলাফলের কারণ।

    গ্রুপটি এছাড়া ৯ হাজার কোটি ডলার মূল্যের একটি তহবিল গঠন করে বিনিয়োগ কোম্পানিতেও এর উপস্থিতি বৃদ্ধি করে চলেছিল। এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে গ্রুপ ১হাজার কোটি ডলারের মত নিট মুনাফা অর্জন করেছিল।

    খোকার সম্মানে বৃহস্পতিবার ডিএসসিসির ছুটি

    অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের শেষ মেয়র সাদেক হোসেন খোকার মৃত্যুতে তার প্রতি সম্মান জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

    আজ বুধবার ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার পূর্ণ দিবস অফিস ছুটি ঘোষণা করেছে। ফলে বৃহস্পতিবার করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনসহ আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহ বন্ধ থাকবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় নগর ভবন প্রাঙ্গণে মরহুম সাদেক হোসেন খোকার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এবং মরদেহে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শন করা হবে।

    গত ৪ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন সাদেক হোসেন খোকা। তিনি দীর্ঘকাল ক্যানসারে ভুগছিলেন। তার মৃত্যুতে মেয়র সাঈদ খোকন মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনাসহ মরহুমের শোকসন্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন।

    অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের শেষ মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় সোমবার দুপুর ১টায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন খোকা।

    আণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া এক নারীর অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা বইয়ের প্রশংসায় জাতিসংঘ

    পরমাণু অস্ত্রের ভয়াবহতা নিয়ে তরুণদের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা হিসাবে ১৯৪৫ সালে হিরোশিমার আণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া এক নারীর অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে রচিত এক ঐতিহাসিক কাহিনী পাঠের সুপারিশ করছে জাতিসংঘ।

    জাপানি বংশোদ্ভূত মার্কিন লেখক ক্যাথলিন বার্কিনশ লেখা লাস্ট চেরি ব্লসম বইটি ২০১৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। একজন জাপানি নারীর অভিজ্ঞতায় অনুপ্রাণিত হয়ে বইটি লেখা হয়। আণবিক বোমা হামলার সময় ঐ নারীর বয়স ছিল ১২ বছর।

    শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের এক সম্পদ হিসাবে বইটিকে জাতিসংঘ তাদের ওয়েবসাইটে অর্ন্তভুক্ত করেছে। মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বইমেলায় জাতিসংঘ বার্কিনশকে আমন্ত্রণ জানায়।

    বইটি লেখার কারণ হিসাবে লেখক তাঁর কন্যার সাথে এক কথোপকথনকে উল্লেখ করেন।

    বার্কিনশ বলেন যে তাঁর কন্যা একবার তাঁকে বলেছিল যে সে আণবিক বোমা হামলা বিষয়ে জানতে চায় কেননা তার সহপাঠী আণবিক বোমার মাশরুম ক্লাউডকে আকর্ষণীয় হিসাবে বর্ণনা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর কন্যার জন্ম এবং বড় হওয়া।

    লেখক বেঁচে থাকা ঐ নারীর গল্প বইটিতে অর্ন্তভুক্ত করেছেন। পরিবারের একমাত্র বেঁচে যাওয়া সদস্য হিসাবে এক অপরাধ বোধ তাঁকে আঁকড়ে ধরেছিল। পরিবারের ছবি থেকে তিনি তাঁর নিজের ছবিটি কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন।

    বইমেলায় যোগদানকারী নিউ ইয়র্কের হাই স্কুলের একজন শিক্ষক বলেন যে আণবিক বোমা হামলার ক্ষয়ক্ষতি লোকজন ভুলতে শুরু করেছে এমন এক সময়ে তিনি তাঁর শিক্ষার্থীদের বলতে চান যে এই মর্মান্তিক ঘটনার যেন কখনো পুনরাবৃত্তি না হয়।

    বৈশ্বিক পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ যে এখনো পর্যন্ত অর্জন করা সম্ভব হয়নি সে বিষয়ে জাতিসংঘ উদ্বিগ্ন।

    খোকার মরদেহ আসবে বৃহস্পতিবার, জুরাইনে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন

    অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হচ্ছে। খোকার মরদেহ আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ১০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশে পৌঁছাবে। পরে তাকে ঢাকার জুরাইনে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে। খোকার পারিবারিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

    সাদেক হোসেন খোকার শ্যালক শফিউল আজম খান জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে তার মৃতদেহ ঢাকায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার ইচ্ছা অনুযায়ী জুরাইন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

    তিনি বলেন, দুই বছর আগে সাদেক হোসেন খোকার বাংলাদেশ পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ দূতাবাসে তিনি মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেও জবাব পাননি। এখন তার মৃতদেহ ঢাকায় নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট প্রয়োজন। পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসে ট্রাভেল ডকুমেন্টের জন্য ইতোমধ্যে আবেদন করা হয়েছে।

    নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেছা জানান, সাদেক হোসেন খোকার মরদেহের সঙ্গে তার স্ত্রীকে ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট দেওয়া হবে। এ নিয়ে কোন সমস্যা হবে না।

    দীর্ঘদিন নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টার দিকে সেখানকার একটি হাসপাতালে মারা যান খোকা। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি। খোকা ১৯৫২ সালের ১২ মে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

    ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তার দল সরকার গঠন করলে তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। পরে ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার দল সরকার গঠন করলে তিনি মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন।

    এরপর তিনি সরাসরি নির্বাচনে জয় লাভের মাধ্যমে ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। খোকা ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করেন।

    কিডনি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৪ সালের মে মাসে চিকিৎসার জন্য নিউইয়র্কে যান সাদেক হোসেন খোকা। এরপর থেকে গত সাড়ে পাঁচ বছর ধরে থাকছিলেন নিউইয়র্ক সিটির ইস্ট এলমহার্স্ট এলাকার একটি ভাড়া বাসায়। সার্বক্ষণিক তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ইসমত হোসেন।

    জাপানের স্কুলের শিশুরা ক্ষীণ দৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে

    জাপানের গবেষকরা জানিয়েছেন যে প্রায় ১০ শতাংশ জুনিয়র হাই স্কুল শিক্ষার্থীরা সম্ভবত মারাত্মক ক্ষীণদৃষ্টিশক্তি সমস্যায় ভুগছেন যাকে উচ্চ মাইয়োপিয়া বলা হয়।

    কেইও বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক টোকিও’র প্রাথমিক এবং জুনিয়র হাই স্কুলের ১,৪১৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে জরিপ চালান।

    গবেষকরা দেখেন যে ৭৬.৫ শতাংশ প্রাথমিক এবং ৯৪.৯ শতাংশ জুনিয়র হাই স্কুল শিক্ষার্থী ক্ষীণদৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।

    জুনিয়র হাই স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কমপক্ষে ৯.৯ শতাংশ উচ্চ মাইয়োপিয়ায় ভুগছেন এবং ১৭ সেন্টিমিটারের বেশি দূরের বস্তু স্পষ্টভাবে দেখতে পারেন না।

    উচ্চ মাইয়োপিয়ায় রেটিনার সংযোগ নষ্ট হবার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে এবং রোগটি দৃষ্টিহীনতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

    গবেষকরা বলছেন বহির্কার্যক্রমে শিশুদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়ার কারণে ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তিসম্পন্নদের সংখ্যা বাড়ছে।

    বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন যে সম্ভবত ২০৫০ সালের মধ্যে ৪৮০ কোটি লোক ক্ষীণদৃষ্টির সমস্যায় এবং ৯৪ কোটি লোক উচ্চ মাইয়োপিয়ায় ভুগবেন।

    এ ফলাফলে ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগ্যানাইজেশন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

    গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক কাযুও ৎসুবোতা বলেন এটি রাষ্ট্রের দৃষ্টি দেয়ার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

    শিযুওকাতে দাইদোওগেই বিশ্বকাপ আরম্ভ

    জাপানের মধ্যাঞ্চলীয় শিযুওকা জেলায়, সড়কে কলা কৌশল প্রদর্শনের একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা চলমান থাকায় পুরো শহরটি শিল্পীদের মঞ্চে পরিণত হয়েছে।

    গতকাল, শহরটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৩৯টি মঞ্চে বার্ষিক দাইদোওগেই বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়। উল্লেখ্য, জাপানী দাইদোওগেই শব্দের অর্থ হচ্ছে সড়কে বিভিন্ন কলা কৌশল প্রদর্শন।

    ২৮তম চারদিনের এই প্রতিযোগিতায়, জাপান এবং সারাবিশ্ব থেকে ৮০র বেশী ব্যক্তি ও দল অংশগ্রহণ করছে।

    গতকাল একটি পার্কে ফিনল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার তিনজনের একটি দল, আড়াআড়িভাবে থাকা রশিগুলোকে নিজেদের শরীরের অংশের মত করে দক্ষতার সঙ্গে শূন্যে নৃত্য প্রদর্শন করেন।

    কানাডা এবং ফ্রান্সের চারজনের একটি দল, নিজেদের শরীর মুচড়িয়ে রশি টপকে যাওয়া দৃশ্যটি দর্শকদের ব্যাপক করতালি পায়।

    শিল্পীদের বিশ্ব পর্যায়ের কলা কৌশল প্রদর্শিত হওয়া উৎসবটি আগামী সোমবার পর্যন্ত চলবে।

    রাগবির বিশ্বকাপ ফাইনাল আজ

    বাংলাদেশে রাগবির জনপ্রিয়তা নেই। যদিও খেলাটির চর্চা শুরু হয়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোয়। এর মধ্যেই আজ শনিবার রাগবির বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাপানের টোকিওতে। এতে অংশ নেবে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

    ১৯৮৭ সালে এ টুর্নামেন্ট প্রচলনের পর আজকের আগ পর্যন্ত আটটি ফাইনাল হয়েছে। এতে নিউজিল্যান্ড কাপটি জিতেছে তিনবার। দুবার করে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। উত্তর গোলার্ধে একমাত্র বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, যারা আজ দ্বিতীয় শিরোপার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটায় খেলা শুরু করবে।

    এই প্রথমবারের মতো এশিয়া রাগবি বিশ্বকাপ ফাইনাল আয়োজনের সুযোগ পায়। বাংলাদেশ রাগবি ইউনিয়ন ফেডারেশন এ উপলক্ষ্যে আজ সকালে এক র‌্যালির আয়োজন করবে।

    বেসরকারি খাতের ইংরেজি পরীক্ষার ফলাফল ব্যবহার চালু বিলম্বিত করেছে জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়

    জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রবেশিকা পরীক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে আগামী এপ্রিল মাস থেকে বেসরকারি খাতের ইংরেজি পরীক্ষার ফলাফল ব্যবহার চালু স্থগিত করেছে।

    শিক্ষা মন্ত্রী কোইচি হাগিউদা শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, এই সিদ্ধান্ত এজন্য নেয়া হয় যে, এই পরিকল্পিত ব্যবস্থার অধীনে পরীক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং বসবাসের স্থানের দিক দিয়ে তাদেরকে যথাযথ সুযোগ হয়তো প্রদান করা সম্ভব হত না।

    হাগিউদা পরীক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

    তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় এই ব্যবস্থার সমস্যাগুলো পরীক্ষা করে দেখার জন্য এক বছর সময় নেবে এবং ২০২৪ অর্থবছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বেসরকারিভাবে পরিচালিত ইংরেজি পরীক্ষার ফলাফল ব্যবহার চালু করবে।

    অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এই বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে, বেসরকারিভাবে পরিচালিত ইংরেজি পরীক্ষাগুলো কতটা কঠিন তার পর্যায়ে বিভিন্নতা থাকবে, তাই আবেদনপত্র বাছাইয়ের সময়ে এইসব ফলাফল ব্যবহার করাটা কঠিন হয়ে পড়বে।

    হাইস্কুলের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকগণও এই পরীক্ষার ফি এবং পরীক্ষার হলে যাওয়ার ব্যয় নিয়েও আপত্তি জানান।

    নতুন বছরের শুভেচ্ছা কার্ড বিক্রি শুরু

    জাপান জুড়ে পোস্ট অফিসে আজ থেকে ২০২০ সালের জন্য নববর্ষের শুভেচ্ছা কার্ড বিক্রি শুরু হয়েছে।

    শুক্রবার টোকিও’র কেন্দ্রীয় পোস্ট অফিসে এ উপলক্ষ্যে ফিতা কাটার অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের সাথে উপস্থিত ছিলেন জাপানের জাতীয় রাগবি দলের সাবেক ক্যাপটেন তোশিআকি হিরোসে।

    সকাল ৯টায় বিক্রি আরম্ভ হওয়ার আগে বহু লোক সেখানে লাইন দিয়ে অপেক্ষা করছিলেন।
    একটি শুভেচ্ছা কার্ডের দাম ৬৩ ইয়েন বা প্রায় ৬০ মার্কিন সেন্ট। লটারির জন্য প্রত্যেক কার্ডে নম্বর লেখা আছে। প্রথম পুরস্কার হোল নগদ ৩ লক্ষ ইয়েন বা প্রায় ২ হাজার ৮শো ডলার অথবা ইলেকট্রনিক মানি’তে প্রায় ৩ লক্ষ ১০ হাজার ইয়েন বা প্রায় ২ হাজার ৯শো ডলার।