• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • সিএনএনের প্রতিবেদন

    করোনা ভাইরাস চীনা ল্যাবে তৈরি কি না-তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র

    উহানের বন্যপ্রাণী কেনাবেচার বাজার, না চীনের কোনো পরীক্ষাগারে প্রাণঘাতী নোভেল করোনা ভাইরাসের উত্পত্তি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সমালোচকেরা বলছেন, নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে চীনকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

    তবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো এ তত্ত্বের সমর্থনে পর্যাপ্ত তথ্য পায়নি বলে কয়েক জন কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছে। মঙ্গলবার মার্কিন সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান মাইক মিলে করোনা ভাইরাসের উত্স অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের জোর তত্পরতার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘এখনই সিদ্ধান্ত টানা ঠিক হবে না, তবে এই মুহূর্তে আমি বলতে পারি, তথ্য-প্রমাণ এটিকে (ভাইরাসের উত্স) প্রাকৃতিক বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত নই।’ মার্কিন গোয়েন্দারা যে ভাইরাসের উত্স অনুসন্ধানে কাজ করছে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পও তা স্বীকার করেন। যদিও এখন পর্যন্ত অনুসন্ধানে কী পাওয়া গেছে, তা বলতে রাজি হননি তিনি।

    করোনা ভাইরাসের উত্স নিয়ে বিশ্ব জুড়ে যত ধরনের গুঞ্জন রয়েছে, তার মধ্যে চীনের পরীক্ষাগার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া সংক্রান্ত তত্ত্ব নিয়েই সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য চীনকে দায়ী করে এরই মধ্যে কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম। বুধবার ফক্স নিউজের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, উহানের একটি ল্যাবরেটরি থেকে করোনা ভাইরাসের উত্পত্তি হয়েছে। প্রতিবেদনে আরো দাবি করা হয়, ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির যে ল্যাবে ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে সেখানে নিরাপত্তায় ঘাটতি ছিল এবং কেউ একজন আক্রান্ত হয়ে পড়েছিল। ঐ আক্রান্ত ব্যক্তি আবার পার্শ্ববর্তী কাঁচাবাজারে যাওয়ার পর ভাইরাসটি ছড়াতে শুরু করে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কোভিড-১৯ ভাইরাস যে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়, সে তথ্য দ্রুত প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

    তবে চীন শুরু থেকেই তাদের পরীক্ষাগারে ভাইরাসটির উত্পত্তি সংক্রান্ত ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ নাকচ করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহভাবে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার বিচারে এই ভাইরাসের সবচেয়ে বড়ো শিকার দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ট্রাম্পের সমালোচনা চাপা দিতে তার সমর্থক ও রিপাবলিকান প্রতিনিধিদের কয়েকজন চীনের বিরুদ্ধে এ ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্বে’ হাওয়া দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ আছে। ট্রাম্পের সমালোচকেরা বলছেন, নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে চীনকে দায়ী করার চেষ্টা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভাইরাস শনাক্তকরণ ও মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনের সক্ষমতা বেশি—এমনটা প্রমাণ করার প্রচেষ্টায় এ কাজ করেছে বেইজিং।

    করোনা ভাইরাসের উত্পত্তি কীভাবে—তা নিয়ে এখনো গবেষণা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তবে বিজ্ঞানীদের একটি বড়ো অংশ মনে করে কোভিড-১৯-এর উত্পত্তি বাদুড় থেকে। এরপর অন্য কোনো মাধ্যম হয়ে তা মানুষের শরীরে প্রবেশ করেছে।

    এক দিনেই চীনের মোট মৃত্যুকে ছাড়াল যুক্তরাষ্ট্র

    করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর দিক দিয়ে ভয়ংকর রেকর্ড গড়ল যুক্তরাষ্ট্র। এক দিনেই দেশটিতে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হলো। এই মৃত্যু চীনের মোট মৃত্যুকেও ছাড়িয়ে গেছে। তার পরও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ধীরে ধীরে সবকিছু খুলে দেওয়ার চিন্তা করছে। বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছে ২২ লাখ এবং দেড় লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই মারা গেছে প্রায় ৩৬ হাজার।

    করোনা ভয়ংকর হয়ে উঠছে যুক্তরাষ্ট্রে

    ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ২৪ ঘণ্টায় মারা যায় ৪ হাজার ৫৯১ জন। এর আগের দিন বুধবার মৃত্যু ছিল ২ হাজার ৫৬৯ জন। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য বিশ্লেষণ করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এই তথ্য প্রকাশ করেছে। গতকাল রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডো মিটারের তথ্যে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে মোট আক্রান্ত ৬ লাখ ৯০ হাজার ৮০০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৫৫ জনের। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দেশটিতে শুক্রবার মারা গেছে ১ হাজার ৩৩৮ জন। নিউ জার্সির অ্যান্ডোভার সুবাকিউট অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার নামের নার্সিং হোম থেকে ১৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

    কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের উত্পত্তিস্থল উহানে মৃত্যু ১ হাজার ২৯০ জন বেড়ে ৩ হাজার ৮৬৯ জনে পৌঁছেছে। এ নিয়ে চীনে মোট মৃত্যু ৪ হাজার ৪৬২ জন। তবে ওয়ার্ল্ডো মিটার জানায়, চীনে মোট মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৬৩২ জনের। ওয়ার্ল্ডো মিটার আরো জানায়, করোনায় বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছে ২২ লাখ ২২ হাজার ৯৭৪ জন এবং মৃত্যু ১ লাখ ৫২ হাজার ৩১৮ জনের।

    বিশ্ব অর্থনীতি ৩ শতাংশ সংকুচিত হবার পূর্বাভাস দিল আইএমএফ

    এই প্রথম বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ একসঙ্গে মন্দার কবলে পড়ছে

    করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাবে অচল হয়ে পড়া বিশ্বে এবার প্রবৃদ্ধি না হয়ে বরং সংকুচিত হবার পূর্বাভাস দিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

    সংস্থাটি বলছে ১৯৩০ সালের মহামন্দার পর বিশ্ব কখনো এতটা খারাপ অবস্থায় পড়েনি। সব মিলিয়ে এ বছর বিশ্ব অর্থনীতির মোট দেশজ উত্পাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি মাইনাস ৩ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।

    মঙ্গলবার ভার্চুয়ালভাবে শুরু হয়েছে বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ-এর বসন্তকালীন সভা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নীতি-নির্ধারকরা অনলাইনে এই সভায় অংশ নিচ্ছে।

    আইএমএফ সতর্ক করে বলেছে, যদি নীতি-নির্ধারকরা করোনা মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয় সেক্ষেত্রে এই মন্দার প্রভাব আগামী বছরও দীর্ঘায়িত হবে।

    যদি এ বছর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে সেক্ষেত্রে ২০২১ সালে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত জিডিপি বৃদ্ধি পেতে পারে।

    ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটা এখন স্পষ্ট যে ১৯৩০-এর দশকের মহামন্দার পর সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দার সামনে দাঁড়িয়ে পৃথিবী। এটা এক দশক আগের অর্থনৈতিক সংকটকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। এই লকডাউন বিশ্বের প্রবৃদ্ধি নাটকীয়ভাবে পেছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

    আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ বলছেন, এই সংকটে বিশ্ব আগামী দুই বছরে ৯ ট্রিলিয়ন ডলার (৯ লাখ কোটি ডলার) প্রবৃদ্ধি হারাবে। এই অঙ্ক জার্মানি ও জাপানের মতো দুই শিল্পোন্নত দেশের মোট জিডিপির পরিমাণের চেয়েও বেশি।

    গত জানুয়ারি মাসেও আইএমএফ এ বছর ৩ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করেছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় বিশ্বের দেশগুলোতে যে অবরুদ্ধ অবস্থা তৈরি হয়েছে তার ফলে আরেকটি মন্দার দিকে চলে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি।

    গোপীনাথ বলেন, শতাব্দীকাল আগের সেই মহামন্দার পর এই প্রথম বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো একসঙ্গে মন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে। এক দশক আগের মন্দার পর ২০০৯ সালে বিশ্বে অর্থনীতি শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছিল, যা ছিল, মহামন্দার পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি। এবার তা হতে যাচ্ছে ৩ শতাংশ।

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২ লাখ কোটি ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে এর পরেও মার্কিন প্রবৃদ্ধি মাইনাস ৫ দশমিক ৯ শতাংশ হবার পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। ১৯৪৬ সালের পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দেখছে মার্কিন অর্থনীতি।

    পূর্বাভাস অনুযায়ী বিশ্বের দ্বিতীয় বড়ো অর্থনীতির দেশ চীনে এ বছর সংকোচন না হলেও প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ। যা ১৯৭৬ সালের পর চীনে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি। ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানির প্রবৃদ্ধি হবে মাইনাস ৭ শতাংশ, জাপানে মাইনাস ৫ দশমিক ২ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে মাইনাস সাড়ে ৬ শতাংশ।

    মহামারির প্রভাবে অর্থনীতির অনেক হিসাব বদলে যাচ্ছে। পরের বছর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করলেও অনিশ্চয়তার কথা বলছে আইএমএফ। কারণ অর্থনীতির এই পরিবর্তন সাধারণ মানুষের ভোগ ব্যয় এবং ভোক্তা আচরণে অনেক প্রভাব ফেলবে।

    দুর্বল চাহিদা ও সরবরাহ ব্যবস্থার ফলে ভোক্তার আস্থা কমে আসবে। এটি পুনরুদ্ধার কতটা হবে সেটি নিয়েও সংশয় রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের করোনা ভাইরাসের টেস্ট করতে আরো বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

    তাছাড়া স্বাস্থ্যখাতে সংকট মোকাবিলায় অবসরপ্রাপ্তদের নিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত সুরক্ষা এবং ভেন্টিলেশন সংগ্রহ এবং মেডিক্যাল পণ্য বাণিজ্যে নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আইএমএফ।

    জরুরি অবস্থা সারা জাপান জুড়ে সম্প্রসারিত হতে পারে

    জাপান সরকার করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ঘোষণা করা জরুরি অবস্থা পুরো দেশ জুড়ে সম্প্রসারিত করে নেয়া বিবেচনা করে দেখছে।

    করোনাভাইরাস বিষয়ক একটি টাস্ক ফোর্সের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আগে বিশেষজ্ঞদের একটি উপদেষ্টা প্যানেলকে অভিমত জানানোর জন্য বলতে সরকার প্রস্তুত আছে।

    চলতি মাসের ৭ তারিখে সরকার টোকিও এবং ছয়টি জেলায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। তবে এরপর থেকে অন্য জেলাগুলোতেও সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।

    হাসপাতাল বেডের ঘাটতির মুখে জাপানের ৯টি জেলা

    এনএইচকে জানতে পেরেছে যে জাপানের ৪৭টি জেলার মধ্যে ৯টিতে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসা করতে পারার হাসপাতাল বেড এখন আর প্রায় অবশিষ্ট নেই।

    করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসার জন্য কতগুলো বেড নিশ্চিত করা হয়েছে এবং এর মধ্যে কতগুলো ইতিমধ্যে ভর্তি হয়ে গেছে, এনএইচকে সে বিষয়ে জেলা সরকার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছে জানতে চেয়েছিল। সারা দেশে এখন করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসা করার উপযোগী ৯,৬০০র মত হাসপাতাল বেড রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া রোগীর মোট সংখ্যা হচ্ছে কমপক্ষে ৫,০০০।

    নয়টি জেলা জানিয়েছে যে এদের ৮০ শতাংশের বেশি বেডে এখন রোগীরা আছেন। নয়টি জেলার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা টোকিও, ওসাকা, হিওগো এবং ফুকুওকা জেলা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অন্য পাঁচটি জেলার মধ্যে জরুরি অবস্থার আওতায় না পড়া কিওতো এবং ওকিনাওয়া অন্তর্ভুক্ত আছে।

    জেলা কর্মকর্তারা সার্জিকাল মাস্ক ও অন্যান্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের ঘাটতি এবং হালকা উপসর্গ দেখা দেয়া রোগীদের থাকার স্থাপনায় সরিয়ে নেয়া দেখাশোনা করার চিকিৎসা কর্মীর অভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।

    এছাড়া বড় হাসপাতালগুলোতে অনেক বেশি রোগীর আগমনের ফলে হাসপাতালের ভেতরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া নিয়েও তারা চিন্তিত।

    বিশ্ব স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক জাতীয় কেন্দ্রের পরিচালক কুৎসুনা সাতোশি বলছেন, আঞ্চলিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যেন সচল রাখা যায় সেজন্য যেসব হাসপাতাল করোনা রোগী গ্রহণ করেনি তাদের উচিৎ হবে সহযোগিতা করা। যেসব এলাকায় এখনও পর্যন্ত খুব বেশি রোগী নেই, তাদের প্রতি সামর্থ্য থাকা অবস্থায় আরও বেশি হাসপাতাল বেড নিশ্চিত করে নেয়ার আহ্বান তিনি জানান।

    জাপানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বৃদ্ধি

    জাপানে নিশ্চিত হওয়া করোনাভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা ৮,৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। এই সংখ্যায় বিমানবন্দরে কোয়ারেন্টিন পরীক্ষায় ইতিবাচক প্রমাণ হওয়া লোকজন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং ভাড়া করা বিমানে যারা জাপানে ফিরে এসেছেন তারা অন্তর্ভুক্ত আছেন।

    বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত ৩১৫টি নতুন সংক্রমণ সম্পর্কে জানা যাওয়ায় মোট সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ৮,৪৮৮।

    প্রমোদ তরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের ৭১২টি ঘটনা যোগ করা হলে মোট সংখ্যা হবে ৯,২০০।

    বুধবারের নিশ্চিত করা আরও সাতটি মৃত্যু এবং জাহাজের ১২টি সহ মোট মৃত্যুর সংখ্যা হচ্ছে ১৮১টি।

    ২৪৪৬টি সংক্রমণ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত জেলার তালিকার শীর্ষে আছে টোকিও। ৮৯৪টি সংক্রমণ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ওসাকা এবং এরপর ৫৯৬টি হচ্ছে কানাগাওয়ায়, ৫৩৭টি চিবায়, ৪৫২টি সাইতামায়, ৪২৩টি হিওগোতে এবং ৪১৬টি ফুকুওকায়।

    স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বুধবার পর্যন্ত প্রমোদ তরীর পাঁচজন সহ ১৭৩ জন সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় ছিলেন।

    কর্মকর্তারা বলছেন ১,৫৪৬ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। এদের মধ্যে ৯০১ জনের সংক্রমণ জাপানে সনাক্ত করা হয় এবং ৬৪৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন প্রমোদ তরীতে।

    বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ১৮ লক্ষ ৯০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে

    জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে যে, সোমবার আন্তর্জাতিকমান সময় সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লক্ষ ৯৭ হাজার ৩৭৩টিতে।

    যুক্তরাষ্ট্র ৫ লক্ষ ৬৮ হাজার ১৭৬ জন আক্রান্ত ব্যক্তি নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এরপর ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪৯৬ জন নিয়ে রয়েছে স্পেন, তারপর ১ লক্ষ ৫৯হাজার ৫১৬ জন নিয়ে ইতালি, ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৮৭৩ জন নিয়ে রয়েছে ফ্রান্স এবং এরপর ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৯২ জন নিয়ে রয়েছে জার্মানি।

    বিশ্বব্যাপী মোট নিহত ব্যক্তির সংখ্যা হচ্ছে ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৩০৪ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২২ হাজার ৯৩৫ জন মৃত্যুবরণ করেন যুক্তরাষ্ট্রে।

    এদিকে, নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এই অঙ্গরাজ্যে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

    যুক্তরাষ্ট্রে মোট মৃত্যুবরণ করা লোকের ৪০ শতাংশেরও বেশি হচ্ছেন নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের।

    কুয়োমো সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, ৬৭১ জন এর আগের দিন মারা যান। ফলে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ হাজার ৫৬ জনে।

    গভর্নর বলেন, আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের দিনভিত্তিক লেখচিত্রের রেখা লোকজনের বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেয়ার কারণে সমতল হয়েছে। তিনি এও বলেন, তার বিশ্বাস সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি শেষ হয়েছে যদি লোকজন সতর্কতার সাথে আচরণ করা অব্যাহত রাখেন।

    এদিকে, ইতালির সরকার সোমবার ঘোষণা করে, সেদেশে করোনাভাইরাসের মহামারীজনিত মৃত্যের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে যা যুক্তরাষ্ট্রের পরে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা।

    ২০০৯ সালের ফ্লু থেকে ১০ গুণ বেশি প্রাণঘাতী কোভিড-১৯:বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও’র প্রধান বলেছেন, কোভিড-১৯ হল ২০০৯ সালের ফ্লু বৈশ্বিক মহামারি থেকে ১০ গুণ বেশি প্রাণঘাতী।

    ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক তেদ্রোস আদহানোম ঘেব্রেইসাস সোমবার জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন যে কোভিড-১৯ এর বিস্তার “খুব দ্রুত ত্বরান্বিত হয় এবং এর গতিও কমে অনেক বেশি মন্থরভাবে”।

    তিনি বলেন, সেকারণে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বাস্তবায়ন করা নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ সমূহও “অবশ্যই শ্লথ গতিতে এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে প্রত্যাহার করা উচিত”। তিনি আরও বলেন যে সেগুলো সব “একসাথে” তুলে নেয়া উচিত হবে না।

    ডব্লিউএইচও এক্ষেত্রে দেশগুলো বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার বিবেচনাকালীন তাদের ব্যবহারের জন্য ছয়টি মানদণ্ডের একটি তালিকা তৈরি করেছে।
    এই তালিকার মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে কিনা এবং এর পাশাপাশি সনাক্তকরণ, পরীক্ষা, বিচ্ছিন্নকরণ এবং প্রতিটি সংক্রমণের চিকিৎসা ও তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার পদক্ষেপ বজায় আছে কিনা, সেটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

    উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডব্লিউএইচও’কে প্রদান করা তহবিল তার দেশ পর্যালোচনা করে দেখার ইঙ্গিত দেয়ার পর মহাপরিচালকের এই নিয়মিত ব্রিফিং বা ব্যাখ্যা প্রদান কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।

    তেদ্রোস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে তার সংস্থার সবচেয়ে বড় তহবিল যোগানকারী দেশ। তিনি আরও বলেন যে ট্রাম্পের অবস্থান যে সমর্থনসূচক, সেটি তার জানা আছে এবং তিনি প্রত্যাশা করেন যে যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচও’তে তহবিল সরবরাহ অব্যাহত রাখবে

    করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে সত্যি ১৮ মাসই লাগবে?

    করোনা ভাইরাসের একটি কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরি করেতে সাড়ে চার হাজার কোটি ডলারের বেশি অর্থায়ন করেছেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ও তাঁর স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস পরিচালিত দাতব্য প্রতিষ্ঠান বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। তাদেরও ধারণা করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে প্রায় ১৮ মাস লেগে যাবে। তবে কি সত্যি দেড় বছর লাগবে, এমন প্রশ্ন অনেকেরই।

    মার্কিন সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডারে প্রধান সম্পাদক এলিসন শনটেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা, এর ভ্যাকসিন তৈরিতে চলমান গবেষণাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন বিল গেটসের স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস।

    তিনি বলেন, বহু বছর ধরে ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছেন এমন অনেকের সঙ্গে আমরা কাজ করছি। ভ্যাকসিনের কার্যকর ও নিরাপদ পরীক্ষার জন্য সময় লাগবে। আমার মনে হয় ভ্যাকসিন তৈরিতে সত্যি ১৮ মাসই লাগবে। সুসংবাদ হচ্ছে, ভ্যাকসিন তৈরির কাজে অনেক বিজ্ঞানী এগিয়ে এসেছেন। ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো যৌথ উদ্যোগ নিচ্ছে । তবে প্রয়োগের আগে আমাদের জানতে হবে ভ্যাকসিনটি কাকে কী মাত্রায় দিতে হবে।

    মেলিন্ডা গেটস বলেন, গত পাঁচ বছরে আমাদের বিজ্ঞান কতটা এগিয়েছে, তার দিকে তাকাতে হতে পারে। আমি সত্যিই মনে করি যে একটি ভ্যাকসিনের দেখা আমরা পাব। আরও অনেক কাজ চলছে। আমরা চেষ্টা করছি এমন ওষুধ খুঁজে বের করতে, যাতে কোভিড-১৯ আক্রান্তের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায় বা রোগটির প্রভাব কমিয়ে আনা যায়। আশা করি আমরা এমন কিছু ওষুধ খুঁজে পাব।

    তিনি বলেন, মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ আক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত এমন কিছু অর্জন সম্ভব নয়। এমন বিভিন্ন রোগের ইতিহাস থেকেই আমরা এটি জানি। এ জন্য আমাদের অপেক্ষা করাও উচিত নয়। কারণ, তাতে অনেক লোক মারা যাবে। অনেক মৃত্যুর বিনিময়ে আমরা হয়তো হার্ড ইমিউনিটির দেখা পাব। এ কারণে এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে থাকা উপায়—সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা, হাত ধোয়ার মতো বিষয়ে মানুষকে সচেতন করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা কিছু কার্যকর বলে জানি, তা নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

    তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিনের সরবরাহের কাজটি আমাদের সতর্কভাবে করতে হবে। প্রথমেই দিতে হবে স্বাস্থ্যকর্মীদের। তাদের নিরাপদ রাখতে পারলেই, তারা অন্যদের নিরাপদে থাকতে সহায়তা করতে পারবে। তারপর সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের কাছে এটি পৌঁছাতে হবে। তারপর এটি সমাজের সর্বস্তরে সমানভাবে বিতরণ করতে হবে।

    যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বিস্তৃত হচ্ছে করোনাভাইরাস

    যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং ইতিমধ্যে প্রায় ৫ লক্ষ ৪০ হাজার লোক সংক্রমিত হয়েছেন।

    মার্চ মাসের ১৩ তারিখ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা দেয়ার প্রায় এক মাস পরও করোনাভাইরাস দেশ জুড়ে ব্যাপক সংক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

    জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশ করা নির্মম এই উপাত্ত অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে জানা যাওয়া মৃত এবং সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা সারা বিশ্বের মধ্যে এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে।

    দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নিশ্চিত সংক্রমণের ঘটনা নিয়ে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    গভর্নর এন্ড্রু কুওমো রবিবার সাংবাদিকদের বলেন যে টানা ছয়দিন ধরে রাজ্যটি দৈনিক ৭শ’রও বেশি মৃত্যুর ঘটনা প্রত্যক্ষ করে চলেছে।

    কুওমো আরও বলেন, আবশ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের তাদের কর্মীদের মুখের মাস্কের উপকরণ সরবরাহের জন্য তিনি শিগিগিরই একটি প্রশাসনিক আদেশ জারি করবেন। উল্লেখ্য, মালামাল সরবরাহকারী ট্রাক চালক, সুপারমার্কেট কর্মী এবং অন্যান্য আবশ্যক কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপ নেয়া হল।

    বাতাসে ১৩ ফুট পর্যন্ত ছড়াতে পারে করোনা ভাইরাস!

    করোনা ভাইরাস বাতাসে ১৩ ফুট পর্যন্ত ছড়াতে পারে। চীনা গবেষকরা একটি গবেষণা পত্রে শুক্রবার এই ভয়ানক তথ্য প্রকাশ করেছেন। মূলত ছোঁয়াচে রোগ নিয়েই এই পত্রিকায় গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।

    চীনের ওই গবেষকের দল উহানের হৌশেনশান হাসপতালের কোভিড আক্রান্তদের আইসিইউ ও জেনারেল ওয়ার্ডের বায়ু ও মেঝের থেকে নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণাটি চালান।সেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি হাসপাতালে এক করোনা আক্রান্ত রোগীর থেকে ১৩ ফুট দূরত্বেও কার্যকর রয়েছে করোনা ভাইরাস।

    গবেষণায় বলা হয়, হাসপাতালের মেঝেতেই সবচেয়ে বেশি ভাইরাস পড়ে রয়েছে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ও বায়ুর গতির কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে গবেষকরা মনে করছেন।এছাড়াও অত্যাধি‌ক ভাইরাস পাওয়া গেছে কম্পিউটারের মাউস, ডাস্টবিন, বিছানা ও দরজার হাতলে।চিকিৎসা দেয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের জুতোয়ও করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে।এছাড়া ওই হাসপাতালের বাতাস পরীক্ষা করেও দেখা গিয়েছে, ভাইরাসের আকার এতই ক্ষুদ্র যে এটি বাতাসে কয়েকঘণ্টা ভেসে থাকতে পারছে। আর বাতাসে ভেসে বেড়ানোর ক্ষেত্রে আক্রান্তের থেকে ১৩ ফুট দূরত্বের মধ্যেই সেটি ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

    এর আগে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, করোনা আক্রান্ত রোগীর থেকে তিন ফুট দূরত্বে থাকলে ছড়ায় না করোনা ভাইরাস। পরে আরেকটি গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ২৭ ফুট পর্যন্ত ছড়াতে পারে করোনা ভাইরাস। তবে এটি বিভ্রান্তিকর তথ্য বলে দাবি করেছেন শীর্ষ মার্কিন বিজ্ঞানী ডা. অ্যান্টনি স্টিফেন ফৌসি। জেরুজালেম পোস্ট।

    নিউইয়র্কে যা ঘটেছে, টোকিও’তেও তা হতে পারে

    যুক্তরাষ্ট্রের একজন চিকিৎসক সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, নিউইয়র্কে যা ঘটেছে, সেরকমটি টোকিও’তেও ঘটতে পারে।

    নিউইয়র্ক শহরের মাউন্ট সিনাই’য়ের আইকান মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক রবার্ট ইয়ানাগিসাওয়া এনএইচকে’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই সতর্কতা উচ্চারণ করেন। এছাড়া, তিনি “জাপানিজ মেডিকেল সোসাইটি অব আমেরিকার” প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

    তিনি বলেন, দ্রুত বাড়তে থাকা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা সামাল দিতে গিয়ে নিউইয়র্কের চিকিৎসা ইন্সটিটিউটগুলো সব খালিস্থানই রোগীদের শয্যা দিয়ে ভর্তির পাশাপাশি অজরুরি অপারেশনগুলোও স্থগিত করেছে, যা অন্য রোগে ভোগা ব্যক্তিদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

    ইয়ানাগিসাওয়া আরও বলেন যে চিকিৎসক এবং নার্স’সহ চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা শুধুমাত্র কোনভাবে হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম সচল রাখতে সমর্থ হচ্ছেন।

    ইয়ানাগিসাওয়া মার্চের শুরুর দিকে নিউইয়র্কের সাথে টোকিও’র বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা করেন।

    দু’শহরের লোকজনের আচরণ এবং জনঘনত্বের মধ্যকার সাদৃশ্য বিবেচনায় নিয়ে তিনি বলেন, নিউইয়র্কে যা ঘটেছে তা টোকিও’তেও ঘটতে পারে।

    টোকিও মেট্রোপলিটন সরকার অবশ্য হাসপাতালের শয্যা খালি করার জন্য ইতিমধ্যেই লক্ষণ না থাকা বা মৃদু উপসর্গ থাকা করোনাভাইরাস রোগীদের হোটেলে স্থানান্তর করা শুরু করেছে।

    ইয়ানাগিসাওয়া বলেন, এক্ষেত্রে, হোটেল কর্মীদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে একটি নির্দেশিকা প্রস্তুত করার পাশাপাশি রোগীদের অনলাইনে পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি ভিডিও ব্যবস্থা চালুর প্রয়োজনীয়তাও সরকারের রয়েছে।

    যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে

    জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, গত শুক্রবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৫ লক্ষ ৩শ ৯৯টি করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা নথিবদ্ধ করা হয়েছে।

    বিশ্ববিদ্যালয়টির ভাষ্যানুযায়ী, তাদের মধ্যে ১৮ হাজার ৬শ ৯৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে। আর শুধুমাত্র ইতালিতেই মৃতের সংখ্যা এর চেয়ে বেশি, যেটি হল ১৮ হাজার ৮শ ৪৯।

    জাপানকে সম্ভবত সংক্রমণ বিরোধী পদক্ষেপ জোরদার করতে হবেঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউ এইচও’র একজন কর্মকর্তা বলেছেন,জাপানে সংক্রমণের পথের সন্ধান না পাওয়া এলাকাগুলোতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আরও জোরালো পদক্ষেপ নিতে হতে পারে।

    ডব্লিউএইচওর জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক মাইকেল রায়ান শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

    তিনি বলেন, জাপানে “গুচ্ছ সংক্রমণ ধ্বংসকারীদের” বিশেষায়িত দলগুলো বেশ কার্যকর এবং রোগের বিস্তারের পথ নিয়ে বিপুল পরিমাণ “অত্যন্ত দরকারি তথ্য” তারা সংগ্রহ করেছে।

    তবে, তিনি টোকিও সহ মোট তিনটি অতিসংক্রমণ এলাকার দিকে দিকনির্দেশ করেন যেখানে গত দু’সপ্তাহে এমন অনেক সংক্রমণ ঘটেছে যেগুলোকে জানা সংক্রমণ শৃংখলের সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব নয়।

    রায়ান বলেন, সংক্রমণ দমানোর জন্য পরীক্ষা এবং পৃথককরণ বাড়ানোর পাশাপাশি দেশটিকে সম্ভবত অন্যান্য পদক্ষেপও গ্রহণ করতে হবে।

    উল্লেখ্য, ডব্লিউএইচও’র করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবকে একটি বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণার এক মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ।

    করোনা: ‘দ্রুত লকডাউন তুলে নিলে মারাত্মক পুনরুত্থান হবে’

    দ্রুত লকডাউন তুলে নিলে মারাত্মকভাবে করোনা ভাইরাসের পুনরুত্থান হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাধনম ঘেব্রেইয়েসাস। শুক্রবার একটি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই সতর্ক বার্তা দেন।

    এসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে দেশগুলোকে লকডাউন তুলে নেয়ার বিষয়ে আরো সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

    করোনার প্রকোপ কমায় ইতিমধ্যে লকডাউন তুলে দিয়েছে ইসরায়েল। এছাড়া ইউরোপের দেশ স্পেন এবং ইতালি লকডাউন না তুলে নিলেও কিছু ব্যবস্থা শিথিল করতে চাইছে।

    এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাধনম ঘেব্রেইয়েসাস বলেন, স্বাগত জানাচ্ছি যে ইউরোপে এর প্রকোপ কমতে শুরু করেছে। তবে দ্রুত লকডাউন উঠিয়ে দিলে আবারো মারাত্মক পুনরুত্থান হবে করোনার।

    বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ লাখের বেশি মানুষ। মারা গেছেন ১ লাখ ১ হাজার জন।