• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • চীনে ফের বাড়ছে সংক্রমণ, শহর লকডাউন

    চীনে ফের বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আরও ১৭ আক্রান্ত হয়েছে। এর আগের দিন রবিবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪ জন।

    এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আক্রান্ত ১৭ জনের মধ্যে ৭ জন বাইরে থেকে আসা। এছাড়া ৫ জন উহানের। গত বছরের ডিসেম্বরে উহান থেকেই সর্বপ্রথম করোনার আবির্ভাব ঘটে।

    সংক্রমণ বাড়ায় দেশটির শুলান শহরে ইতিমধ্যে লকডাউন দেয়া হয়েছে। শহরটিতে এক লন্ড্রি থেকে সংক্রমণ হয়েছে ১১ জন। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৫ বছর বয়সী এক নারী থেকে শুরু হয়েছে সংক্রমণ। তার পরিবারের অধিকাংশই এখন কোভিড-১৯ রোগী।

    চীন সরকার এই শহরে সর্বোচ্চ ঝুঁকি ঘোষণা দিয়ে সকল জমসমাগম নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।

    এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৮২ হাজার ৯১৮ জন। মারা গেছে ৪ হাজার ৬৩৩ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭৮ হাজার ১৪৪ জন।

    অনেকগুলো জেলা থেকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা

    জাপান সরকার, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে সমগ্র দেশব্যাপী জারি করা জরুরি অবস্থা পূর্ব পরিকল্পিত ৩১শে মে’র আগেই বিশেষ সতর্কাবস্থা না থাকা সর্বোচ্চ ৩৪টি জেলা থেকে প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে জানিয়েছে।

    রবিবার প্রচারিত এনএইচকে’র এক অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন বিষয়ক মন্ত্রী নিশিমুরা ইয়াসুতোশি, আগামী সপ্তাহে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের মতামত শোনার পর সরকার জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের বিষয় বিবেচনা করবে বলে জানান।

    নিশিমুরা, এইধরনের একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সাপ্তাহিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা হ্রাস এবং আঞ্চলিক জনসংখ্যার অনুপাতে সংক্রমণের হার বিবেচনার বিষয় হতে পারে বলে উল্লেখ করেন।

    তিনি, নতুন সংক্রমণের কোন ঘটনা নেই এমন জেলাগুলো থেকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে জানান। তিনি, পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে টোকিও ও ওসাকা জেলা অন্তর্ভুক্ত থাকা বিশেষ সতর্কতা বিরাজমান থাকা ১৩টি জেলা থেকেও জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।

    স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রী কাতো কাৎসুনোবু, বিক্রি হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও কর্মীদের চাকুরিচ্যুত না করা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে প্রদেয় কর্মসংস্থানের ভর্তুকির বিষয় উল্লেখ করেন।

    তিনি, আবেদনের প্রক্রিয়া ব্যাপকভাবে সহজীকরণের মাধ্যমে আবেদন গ্রহণের অন্তত দুই সপ্তাহ পর ভর্তুকির অর্থ প্রদানের লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলে জানান।

    তিনি, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে ছুটিতে থাকতে বাধ্য হওয়া প্রত্যেক কর্মীর জন্য সরকারের প্রদেয় অর্থের পরিমাণ দৈনিক সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৩৩০ ইয়েন বা প্রায় ৮০ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি করার বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন।

    জাপানের বাণিজ্য ও শিল্প সমিতির চেয়ারম্যান মিমুরা আকিও’ও উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

    তিনি, বিভিন্ন কোম্পানির দেউলিয়া হওয়া ও ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার পদক্ষেপ সমাজের বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে উল্লেখ করে যত দ্রুত সম্ভব ভর্তুকি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

    যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার রেকর্ড ১৪.৭ শতাংশে উন্নীত

    করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারী বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির উপর আঘাত হানার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার গতমাসে রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

    শ্রম মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানায় যে এপ্রিল মাসে বেকারত্বের হার মার্চ মাস থেকে ৪.৪ শতাংশ বেড়ে ১৪.৭ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ১৯৪৮ সালে রেকর্ড রাখা শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ মন্দাবস্থা।

    মন্ত্রণালয় বলছে, অপ্রাতিষ্ঠানিক বেতনভোগীদের সংখ্যা এর আগের মাসের তুলনায় ২ কোটিরও বেশি কমেছে। ১৯৩৯ সালে রেকর্ড রাখা আরম্ভের পর থেকে এটি সর্বোচ্চ হ্রাস।

    সাম্প্রতিক এই উপাত্তে দেখা গেছে যে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকার মাঝে বিস্তৃত ধরণের শিল্পের নিয়োগকারীরা কাজের সংখ্যার হ্রাস অব্যাহত রেখেছে।

    এদিকে, অনেক অঙ্গরাজ্যেই বাণিজ্যিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হচ্ছে। তবে কিছু বিশ্লেষক এই পূর্বাভাষ দিচ্ছেন যে অনেক চাকুরিদাতাই করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় একটি ঢেউ আঘাত হানার আশংকা করায় বেকারত্বের হার কিছুকাল ধরে ১০ শতাংশের উপরেই অবস্থান করবে।

    কোভিড-১৯ এর জন্য ঔষধের ক্লিনিকাল পরীক্ষা শুরু করেছে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়

    টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি গ্রুপ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের সম্ভাব্য চিকিৎসা দেয়ার মত একটি ঔষধের ক্লিনিকাল বা মানব দেহে প্রয়োগের পরীক্ষা শুরু করেছে।

    নাফামোস্ট্যাট মেসাইলেট সাধারণত অগ্ন্যাশয়ের জটিলতা’সহ রক্ত জমাট বাধার মত অন্যান্য রোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি ফুথান ব্র্যান্ড নামে বাজারজাত করা হয়।

    উল্লেখ্য, সম্প্রতি শরীরে রক্ত জমাট বাধার পর করোনাভাইরাসবাহী অনেক ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার অবনতির কিছু খবর পাওয়া গেছে।

    টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়’সহ জাপানের অন্য পাঁচটি হাসপাতালে করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ১শ ৬০ জন রোগীর উপর এই পরীক্ষা চালানো হচ্ছে।

    রোগীদের দু’টি দলে ভাগ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একটি দলের উপর ফুথান এবং ভাইরাস রোধী এভিগান ঔষধ যৌথভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। আর অন্য গ্রুপকে শুধুমাত্র এভিগান দেয়া হচ্ছে।

    গবেষকরা দেখতে চাইছেন, করোনাভাইরাস উপসর্গের চিকিৎসায় ফুথান কার্যকরী এবং নিরাপদ কিনা। তারা বলছেন, গবেষণাগার পরীক্ষায় দেখা গেছে এটি সম্ভবত ভাইরাসের বিস্তারকে দমন করতে পারে।

    জাপানে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার নতুন সম্ভাবনা

    জাপান কোভিড-১৯’এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে চিকিৎসা কর্মীদের হাতে অন্য একটি হাতিয়ার তুলে দিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে ভাইরাস-রোধী ওষুধ অনুমোদনের মাধ্যমে একটি নতুন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।

    জাপান অতি দ্রুত রেমডেসিভির ওষুধের অনুমোদন দেয়।

    যুক্তরাষ্ট্র চলতি মাসের শুরুতে এই ওষুধের জরুরি ব্যবহারের স্বীকৃতি দেয়। ইবোলা’র চিকিৎসার জন্য রেমডেসিভির’এর উন্নয়ন করে যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক একটি কোম্পানি গিলিয়াড সায়েন্স।

    তবে, রেমডেসিভির’এর সরবরাহ সম্ভবত সীমিত। তাই সরকার মারাত্মক উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে প্রধানত এই ওষুধ সহজলভ্য করার পরিকল্পনা করছে।

    জাপানে কোভিড-১৯’এর জন্য অন্য একটি চিকিৎসা পদ্ধতিরও সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

    কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নেতৃত্বাধীন একটি দল জানাচ্ছে, তারা প্রশমিত করার একটি অ্যান্টিবডি কৃত্রিমভাবে উৎপন্ন করেছে।

    তারা জানাচ্ছে, বিভিন্ন পরীক্ষা থেকে দেখা যায় যে এই অ্যান্টিবডি থাকা অধিকাংশ কোষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়নি।

    যখন কোষগুলো একটি ভাইরাসে সংক্রমিত হয় তখন প্রশমিত করার একটি অ্যান্টিবডি মানব শরীরে তৈরি হয়।

    এই অ্যান্টিবডি ভাইরাসের সাথে একটি বন্ধন তৈরি করে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির কোষের উপরিভাগের রিসেপ্টরে এসে লেগে যাওয়াকে রোধ করে।

    কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাতাইয়ামা কাযুহিকো বলেন, “একটি অ্যান্টিবডি ওষুধের সম্ভাবনা থেকে চিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভব হওয়া আরও বেশি বিকল্পের সৃষ্টি করবে। আমি আশা করছি এটা একটা নতুন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি হয়ে উঠবে।”

    জাপানের পারিবারিক ব্যয় মার্চ মাসে কমে গেছে

    জাপানে মার্চ মাসে পারিবারিক ব্যয় কমে গেছে, কারণ করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর মাঝে অনেক পরিবারের লোকজন বাড়িতে অবস্থান করেছেন।

    অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, দু’জন বা ততোধিক সদস্য থাকা পরিবারের গড় ব্যয় ছিল ২ লক্ষ ৯২ হাজার ২১৪ ইয়েন বা প্রায় ২ হাজার ৭৫০ মার্কিন ডলার।

    এই ব্যয় মূল্য-সমন্বয় অর্থে এক বছর আগের একই মাসের থেকে ৬% কম।

    জাপানের বিভিন্ন পরিবার গত অক্টোবর মাসে সরকারের ভোগ্যপণ্য কর বাড়ানোর পর থেকে প্রতি মাসে কম ব্যয় করছে।

    প্যাকেজ ট্যুর সংক্রান্ত ব্যয় মার্চ মাসে ৮৩% হ্রাস পায়। হোটেল ভাড়া নেয়ার ব্যয় কমে যায় ৫৫%। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার মন্ত্রী নিশিমুরা ইয়াসুতোশি বলেন, “আমার মনে হয়, এই ব্যাপকহারে কমে যাওয়া লোকজনকে বাড়িতে থাকার অনুরোধের কারণে হয়েছে”। তিনি আরও বলেন, “আমি আশা করছি, এই সংখ্যা এপ্রিল মাসে জরুরি অবস্থার কারণে আরও বেশি নেতিবাচক হবে”।

    করোনাভাইরাস সতর্কতায় থাকা জেলার কর্মচারীদের প্রতি বাড়িতে থেকে কাজ করার আহ্বান জানানো হবে

    জাপান সরকার করোনাভাইরাস জনিত বিশেষ সতর্কতায় থাকা টোকিও এবং ১২টি জেলার বিভিন্ন কোম্পানির প্রতি কাজে যেতে হওয়া কর্মচারীর সংখ্যা কমপক্ষে ৭০ শতাংশ হ্রাসের আহ্বান জানাবে।

    ওসাকা সহ ছয়টি জেলা ও টোকিওতে সরকারের জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার হচ্ছে ঠিক এক মাস।

    প্রধানমন্ত্রী আবে শিনযো এরপর জরুরি অবস্থা সারা দেশজুড়ে সম্প্রসারিত করে নেয়া ছাড়াও প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী মে মাসের ৬ তারিখের পরিবর্তে জরুরি অবস্থার মেয়াদ চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত বাড়িয়ে নিয়েছেন।

    বুধবার আবে অনলাইনের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন এবং মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত শোনার পর জরুরি অবস্থা তুলে নেয়া হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিকল্পনার পুনরুল্লেখ করেন।

    তিনি বলেছেন, যার উপর ভিত্তি করে সেই সিদ্ধান্ত তিনি গ্রহণ করবেন সেইসব শর্তাবলী নির্ধারণ করে নেয়ার অনুরোধ তিনি বিশেষজ্ঞদের করবেন।

    জাপানে করোনাভাইরাসে সংক্রমিতের সংখ্যা ১৫ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে

    বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত জাপানে করোনাভাইরাসে নিশ্চিত করে সংক্রমিতের সংখ্যা হল ১৫ হাজার ৪৮৬।

    এই হিসাবের মধ্যে বিমানবন্দরের কোয়ারেন্টিন স্টেশনগুলোতে পরীক্ষা করা লোকজন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, কোয়ারেন্টিনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং সরকারী চাটার্ড বিমানে করে চীন থেকে জাপানে ফিরে আসা ব্যক্তিরাও অর্ন্তভুক্ত রয়েছেন। পশ্চিম জাপানের নাগাসাকিতে নোঙর করা কোস্টা আটলান্টিকা নামের প্রমোদতরীতে আক্রান্ত ক্রু সদস্যরাও এতে অর্ন্তভুক্ত।

    ফেব্রুয়ারি মাসে ইয়োকোহামা শহরে ডায়মণ্ড প্রিন্সেস প্রমোদতরীতে কোয়ারেন্টিন করা অতিরিক্ত ৭১২ টি সংক্রমণের ঘটনাকে অর্ন্তভুক্ত করা হলে এই সংখ্যা ১৬ হাজার ১৯৮ তে গিয়ে দাঁড়াবে।

    ডায়মণ্ড প্রিন্সেসের ১৩ জনকে নিয়ে জাপানে মৃতের সংখ্যা হল ৫৯২।

    উহানে খুলল শতাধিক স্কুল, ক্লাসে ফিরল শিক্ষার্থীরা

    মহামারি করোনা ভাইরাসের উত্পত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে শতাধিক স্কুল পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে গ্রেড নাইন ও গ্রেড টুয়েলভের শিক্ষার্থীরা স্কুলে ফিরতে শুরু করেছে। পরে ধাপে ধাপে অন্য শিক্ষার্থীদেরও ক্লাস শুরু হবে।

    ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরের একটি বাজার থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। জানুয়ারি থেকে শহরটিকে কড়া লকডাউনের মধ্যে রাখা হয়। সেখানে থেকে কাউকে বের হতে এবং ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শহরের ভেতরেও চলাচল খুব সীমিত করা হয়। গত কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় চীন করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। ভাইরাসের প্রকোপ অনেকখানি কমে আসায় এপ্রিলের শুরু দিক থেকে বিধিনিষেধ শিথিল হতে থাকে। এরই মধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেওয়া হয়েছে। এরকম অবস্থায় বুধবার থেকে আংশিকভাবে স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হলো।

    হুবেই প্রদেশ কর্তৃপক্ষের বিবৃতি উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বুধবার উহান শহরের ১২১টি স্কুল খুলেছে। এর মধ্যে ৮৩টি হাই স্কুল এবং ৩৮টি কারিগরি স্কুল রয়েছে। এদিন প্রায় ৫৭ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী স্কুলে যোগ দিয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরার আগে করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করানো হয়েছে। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে স্কুলগুলোকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে।

    চীনে চলতি গ্রীষ্মে গ্রেড নাইনের শিক্ষার্থীদেরকে বড়ো একটি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এছাড়া গ্রেড টুয়েলভের শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায়। উল্লেখ্য, দেশটির অন্য শহরগুলোতে গত মার্চ থেকেই গ্রেড টুয়েলভের শিক্ষার্থীরা ক্লাস শুরু করেছে। তবে রাজধানী বেইজিংয়ে এখনো বিভিন্ন স্কুল বন্ধই রয়েছে। বিশেষ করে প্রাইমারি স্কুল আপাতত বন্ধই থাকছে। বুধবার স্কুল খুলে দেওয়ার মাধ্যমে উহানের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার ক্ষেত্রে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। শুধু উহানই নয়, হুবেই প্রদেশে অন্যান্য শহরগুলোতেও ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

    করোনা ভাইরাসের কারণে প্রথম দিকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিল চীন। তবে নানামুখী প্রচেষ্টার সফলতার মাধ্যমে সেখানকার পরিস্থিতির এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রাণঘাতী এই ভাইরাস চীনের সীমানা পেরিয়ে এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিশ্বের ২১২টি দেশ ও অঞ্চলে সংক্রমিত হয়েছে এই ভাইরাস।

    করোনাভাইরাসের সাথে স্ট্রোকের সংযোগ রয়েছে বলে মার্কিন বিজ্ঞানীদের ধারণা

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গবেষকদের একটি গ্রুপ, করোনাভাইরাস সংক্রমণের সাথে শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়ে স্ট্রোক হওয়ার এক সংযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে।

    নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাইতে আইকান স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকদের একটি গ্রুপ, মার্চ মাসের ২৩ তারিখ থেকে এপ্রিল মাসের ৭ তারিখের মধ্যে পাঁচ ব্যক্তিকে পরীক্ষা করে দেখেন। এদের শরীরে দেখা দেয়া রোগকে বড় আকারের রক্তবাহী শিরা স্ট্রোক হিসাবে নির্ণয় করা হয়েছিল। রোগীদের মধ্যে ছিলেন একজন নারী ও চারজন পুরুষ এবং এদের সকলের বয়স হল ৩৩ থেকে ৪৯ এর মধ্যে। তাদের শরীরে এই অবস্থার পুনরাবৃত্তি দেখা দিলেও পাঁচজনের মধ্যে শুধুমাত্র একজনের পারিবারিক ইতিহাসে স্ট্রোকের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়।

    হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুসের রক্তনালীতে প্রবেশ করে করোনাভাইরাস যে সেই সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে অকেজো করে দিয়ে রক্তকে জমাট করে তুলছে, সেই বিষয়টি ইতিমধ্যেই সকলের জানা রয়েছে।

    গবেষকদের দলটি সন্দেহ করছে যে এই প্রক্রিয়ার ফলে কয়েকজন রোগীর মধ্যে সম্ভবত স্ট্রোক হয়ে যাচ্ছে।

    সহযোগী অধ্যাপক শিগেমাৎসু তোমোইয়োশি হলেন ঐ গ্রুপের একজন সদস্য। হাত এবং পা যদি অসাড় হয়ে পড়ে এবং কথা বলতে কষ্ট হয় তবে অবিলম্বে চিকিৎসা সেবা লাভের জন্য তিনি তরুণ বা বয়স্ক, যে কোন বয়সের লোকের কাছেই আহ্বান জানিয়েছেন। স্ট্রোকের মোকাবেলায় দ্রুত চিকিৎসা সেবা লাভ অপরিহার্য বলে তিনি আরো জানান।

    প্রতিবেদনটি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন নামক চিকিৎসা সংক্রান্ত মার্কিন এক সাময়িকীতে প্রকাশ করা হয়েছে।

    উহানের গবেষণাগারের সাথে ভাইরাসের সম্পর্ক এখনও “অনুমানমূলক”- ডব্লিউএইচও

    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও’র জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতির প্রধান বলেছেন, চীনের একটি গবেষণাগার যে করোনাভাইরাসের আদি উৎপত্তিস্থল হতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন অভিযোগ এখনও “অনুমান নির্ভর” রয়ে গেছে।

    ডব্লিউএইচও’র জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক মাইকেল রায়ান মার্কিন নেতৃত্বের তোলা এরকম অভিযোগের জবাবে সোমবার এই মন্তব্য করেন।

    উল্লেখ্য, গত রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, চীনা শহর উহানের গবেষণাগারে যে ভাইরাসটি উৎপত্তি হয়েছে সেটি নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন সরকারের হাতে “বড় ধরণের প্রমাণ” আছে।

    একই দিন চীনের সমালোচনা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন যে এই প্রাদুর্ভাব চীনের “ভয়াবহ ভুলের” পরিণতি। তবে, তিনি নির্দিষ্ট কোন প্রমাণের উল্লেখ করতে ব্যর্থ হন।

    রায়ান বলেন যে ভাইরাসটির কাল্পনিক উৎস সম্পর্কিত কোন উপাত্ত বা সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মার্কিন সরকারের কাছ থেকে পায়নি ডব্লিউএইচও।

    তিনি আরও বলেন, ডব্লিউএইচও’র দৃষ্টিকোণ থেকে এই অভিযোগ সমূহ এখনো অনুমান নির্ভর রয়ে গেছে।

    পেঁপের ‘করোনা পজিটিভ’, ল্যাবপ্রধান বরখাস্ত

    পেঁপের নমুনা পরীক্ষায় ‘করোনা ভাইরাস পজিটিভ’ আসার পর তাঞ্জানিয়ার ন্যাশনাল হেলথ ল্যাবরেটরির পরিচালক ও কোয়ালিটি ম্যানেজারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঞ্জানিয়ার প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলি ঐ ল্যাবরেটরিতে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য ব্যবহূত কিটের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার এক দিন পর শীর্ষ ঐ কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

    সোমবার সরাসরি সম্প্রচারিত এক ভাষণে মাগুফুলি জানান, প্রাণী ও ফলের নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলোতে মানুষের নাম ও বয়স লিখে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছিল করোনা ভাইরাস ল্যাবরেটরিতে। তার কিছু নেগেটিভ ও কিছু পজিটিভ এসেছে।

    তিনি বলেন, ‘যেমন গাড়ির তেলের নমুনায় জাবির হামজা, বয়স-৩০ (পুরুষ) লেখা হয়েছিল, ফল এসেছে নেগেটিভ। সারা সামওয়েলি, ৪৫ বছর বয়সি নারী—এমনটি লিখে কাঁঠালের একটি নমুনা পাঠিয়েছিলাম আমরা, এই পরীক্ষার ফল নিষ্পত্তিহীন ছিল। কিন্তু যখন এলিজাবেথ অ্যান, ২৬ বছর লিখে পেঁপের নমুনা পাঠানো হলো, তখন পেঁপের করোনা ভাইরাস ধরা পড়ল।’ প্রেসিডেন্ট জানান, একটি পাখি ও একটি ছাগলের নমুনার দুটোই পজিটিভ এসেছে, কিন্তু খরগোশের নমুনা পরীক্ষায় কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি ল্যাব।

    তাঞ্জানিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ১০ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ঐ ল্যাবরেটরি কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে তা তদন্ত করে ১৩ মের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে কমিটি। তবে ল্যাবরেটরিটিতে করোনা ভাইরাস পরীক্ষা অব্যাহত থাকবে।

    করোনা ভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় শিথিল পদক্ষেপের কারণে এরই মধ্যে সমালোচনায় পড়েছে তাঞ্জানিয়া সরকার। তারা যথেষ্ট কঠোর হচ্ছে না এবং আসল পরিস্থিতি গোপন করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে সরকারের দাবি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া গাইডলাইন তারা সতর্কভাবে অনুসরণ করে চলছে।

    ডিসেম্বরেই ফ্রান্সে পাওয়া গিয়েছিলো করোনা আক্রান্ত রোগী

    গত বছরের ডিসেম্বরের ২৭ তারিখে ফ্রান্সে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গিয়েছিলো বলে দাবি করেছে দেশটির এক ডাক্তার। আর এমনটি সত্য হলে চীনের প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই ভাইরাসটি ফ্রান্সেও সংক্রমিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    জানা গেছে, গত ডিসেম্বরের ২৭ তারিখ ফ্রান্সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এক রোগী পাওয়া যায়। বলা হচ্ছে, ওই রোগী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। এ বিষয়ে ফ্রান্সের অ্যাভিসেনি এবং জিন-ভার্দিয়ার হাসপাতালের জরুরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান ড কোহেন বলেন, তিনি ওই ব্যক্তির নমুনা আবার পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।

    গত ২৪ জানুয়ারি ফ্রান্সে প্রথম তিন জন করোনায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি হয়।

    করোনা: জাপানে ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ছে জরুরি অবস্থা

    প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় দেশব্যাপী জরুরি অবস্থার মেয়াদ ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছে জাপান সরকার।

    দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এর আগে গত ৭ এপ্রিল টোকিও এবং আরো ছয়টি এলাকায় মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে তা পুরো দেশজুড়ে করা হয়। বুধবার ঔ জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

    এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার পর ধারণা করা হচ্ছে আবে ৩১ মে পর্যন্ত জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেবেন।

    খবরে বলা হয়েছে, শিনজো আবে সোমবার দিনের শেষে সংবাদ সম্মেলনে সরকারি সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দেবেন।

    এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১৫ হাজারেরও বেশি লোক, মারা গেছে ৫১০ জন।

    কোবে হাসপাতাল করোনাভাইরাস এন্টিবডি পরীক্ষা চালিয়েছে

    পশ্চিম জাপানের কোবে শহরের একটি হাসপাতাল এটি খুঁজে পেয়েছে যে তাদের বহির্বিভাগের রোগীদের মধ্যে প্রায় ৩ শতাংশ করোনাভাইরাস এন্টিবডি বহন করছেন যা কোন এক সময়ে তাদের সংক্রমিত হবার ইঙ্গিত দেয়।

    মূলত, কোবে সিটি মেডিক্যাল সেন্টার জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি গ্রুপ মার্চের শেষ দিকে থেকে এপ্রিলের শুরুর দিক পর্যন্ত করোনাভাইরাসের উপসর্গ ব্যতিরেকে অন্যান্য কারণে ঐ হাসপাতালে আসা রোগীদের কাছে থেকে ১ হাজার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে।

    তার মধ্যে ৩৩টি নমুনা বা ৩.৩ শতাংশের এন্টিবডি পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল এসেছে।

    তবে, ঐ চিকিৎসকরা এটি উল্লেখ করেছেন যে পরীক্ষার পুঙ্খানুপুংখতার প্রশ্ন এবং শুধুমাত্র হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসা রোগীদের কাছে থেকে নমুনা সংগ্রহের কারণে তাদের প্রাপ্ত ফলাফলের প্রভাবের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আছে।

    তবে, তারা বলছেন যে কোবের জনসংখ্যার উপর তাদের প্রাপ্ত শতাংশ প্রয়োগ করলে এই ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে শহরের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়েছেন।

    হাসপাতালটির প্রধান কিহারা ইয়াসুকি শনিবার বলেন যে ধারণার চাইতে আরও অনেক বেশি সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা আছে এবং এর ফলস্বরূপ তারা এই এন্টিবডি বহন করছেন।