উহানে খুলল শতাধিক স্কুল, ক্লাসে ফিরল শিক্ষার্থীরা

মহামারি করোনা ভাইরাসের উত্পত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে শতাধিক স্কুল পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে গ্রেড নাইন ও গ্রেড টুয়েলভের শিক্ষার্থীরা স্কুলে ফিরতে শুরু করেছে। পরে ধাপে ধাপে অন্য শিক্ষার্থীদেরও ক্লাস শুরু হবে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরের একটি বাজার থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। জানুয়ারি থেকে শহরটিকে কড়া লকডাউনের মধ্যে রাখা হয়। সেখানে থেকে কাউকে বের হতে এবং ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শহরের ভেতরেও চলাচল খুব সীমিত করা হয়। গত কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় চীন করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। ভাইরাসের প্রকোপ অনেকখানি কমে আসায় এপ্রিলের শুরু দিক থেকে বিধিনিষেধ শিথিল হতে থাকে। এরই মধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেওয়া হয়েছে। এরকম অবস্থায় বুধবার থেকে আংশিকভাবে স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হলো।

হুবেই প্রদেশ কর্তৃপক্ষের বিবৃতি উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বুধবার উহান শহরের ১২১টি স্কুল খুলেছে। এর মধ্যে ৮৩টি হাই স্কুল এবং ৩৮টি কারিগরি স্কুল রয়েছে। এদিন প্রায় ৫৭ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী স্কুলে যোগ দিয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরার আগে করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করানো হয়েছে। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে স্কুলগুলোকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে।

চীনে চলতি গ্রীষ্মে গ্রেড নাইনের শিক্ষার্থীদেরকে বড়ো একটি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এছাড়া গ্রেড টুয়েলভের শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায়। উল্লেখ্য, দেশটির অন্য শহরগুলোতে গত মার্চ থেকেই গ্রেড টুয়েলভের শিক্ষার্থীরা ক্লাস শুরু করেছে। তবে রাজধানী বেইজিংয়ে এখনো বিভিন্ন স্কুল বন্ধই রয়েছে। বিশেষ করে প্রাইমারি স্কুল আপাতত বন্ধই থাকছে। বুধবার স্কুল খুলে দেওয়ার মাধ্যমে উহানের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার ক্ষেত্রে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। শুধু উহানই নয়, হুবেই প্রদেশে অন্যান্য শহরগুলোতেও ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

করোনা ভাইরাসের কারণে প্রথম দিকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিল চীন। তবে নানামুখী প্রচেষ্টার সফলতার মাধ্যমে সেখানকার পরিস্থিতির এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রাণঘাতী এই ভাইরাস চীনের সীমানা পেরিয়ে এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিশ্বের ২১২টি দেশ ও অঞ্চলে সংক্রমিত হয়েছে এই ভাইরাস।