জাপানে ভাইরাস সংক্রমণের দ্রুত বৃদ্ধি দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা

জাপানের করোনাভাইরাস প্রতিহত করার পদক্ষেপ পর্যালোচনা করে দেখা বিশেষজ্ঞদের একটি সরকারি প্যানেল বলছে দেশে নতুন সংক্রমণের “বিস্ফোরণমুখী” বৃদ্ধি দেখা যায়নি এবং রোগ ছড়িয়ে পড়া কোন এক পর্যায় পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। তবে দেশে সংক্রমণের আরও ঘটনা প্রত্যাশিত হওয়ায় জনগণের সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তার উপর প্যানেল গুরুত্ব আরোপ করেছে।

গত সোমবার প্যানেল এই অভিমত প্রকাশ করে। দু’সপ্তাহ আগে প্যানেল সতর্ক করে দিয়েছিল যে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পরবর্তী দু’সপ্তাহ হবে জাপানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক সময়।

তিনটি শর্ত পূরণ করছে সেরকম স্থান ও অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলার আহ্বান প্যানেল জনগণের প্রতি জানাচ্ছে। প্যানেল বলছে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সংক্রমণ যেখানে ঘটেছে, এই তিনের সমন্বয় সেখানে সাধারণত দেখা গেছে। শর্ত তিনটি হল: বাতাস চলাচলের অপর্যাপ্ত ব্যবস্থা সহ বন্ধ কোন জায়গা, জনবহুল এলাকা, এবং খুব কাছে থেকে কথা বলার মত মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ।

বর্তমানে বড় অনুষ্ঠানগুলো স্বেচ্ছামূলকভাবে বাতিল কিংবা স্থগিত করা হয়েছে এবং সরকারের অনুরোধে সারা দিয়ে জাপান জুড়ে স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। উত্তরের হোক্কাইদো জেলা ভাইরাসের বিস্তারের কারণে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করে এবং এরপর থেকে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

প্যানেল বলছে আগামী বৃহস্পতিবারের দিকে তারা এসব পদক্ষেপ বহাল রাখা হবে কিনা সে বিষয়ে তাদের মতামত দেবে।

সোমবার প্যানেলের উপস্থাপন করা মূল্যায়নের সারসংক্ষেপ হচ্ছে নিম্নরূপ:

বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বলা যায় যে অনেক ক্ষেত্রেই সংক্রমণের কেন্দ্রীভূতকরণ যথেষ্ট আগাম অবস্থায় সনাক্ত করা গেছে। সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে থাকা অন্যান্য দেশের তুলনায় জাপানে আগাম সনাক্তকরণ বৃদ্ধির মাত্রা হ্রাসে সহায়ক হয়। গত মাসের ২৪ তারিখে প্যানেল উল্লেখ করেছিল যে আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহ হবে ভাইরাস সামালা দেয়ার বেলায় গুরুত্বপূর্ণ এক সময়।

সোমবার ৯ মার্চ পর্যন্ত জাপানে নতুন সংক্রমণের “বিস্ফোরণমুখী” বৃদ্ধি দেখা যায়নি। রোগের বিস্তার কোন এক পর্যায় পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম দেশ হিসেবে জাপানকে প্যানেল দেখছে। তবে দেশে আরও সংক্রমণ ঘটার সম্ভাবনা থাকায় জনগণকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। জাপানে রোগ বিস্তারের সার্বিক ছবি এখনও অজানা রয়ে গেছে।

হোক্কাইদোর গভর্নর গত মাসের ২৮ তারিখে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছেন। জেলার নেয়া সেই পদক্ষেপের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে দেখার উপর আগামী সপ্তাহের বৃহস্পতিবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পরিকল্পনা প্যানেল করছে।

সংক্রমণ বিস্তারের বেলায় প্যানেল মনে করছে, এমনকি জাপান দেশের ভেতরে এর দ্রুত সম্প্রসারণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হলেও বিশ্ব জুড়ে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া সামাল দেয়া কঠিন হবে। মহামারী এখন বৈশ্বিক আকার নিতে থাকায় ভাইরাস কেবল দেশের ভেতরেই ছড়াবে না, সেই সাথে দেশের বাইরে থেকেও বারবার তা নিয়ে আসা হবে।

ভাইরাসের আরও বিস্তার প্রতিহত করার বেলায় প্যানেল তিনটি শর্ত পূরণ করছে সেরকম জায়গা থেকে দূরে সরে থাকার উপদেশ লোকজনকে দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সংক্রমণ যেখানে ঘটেছে, এই তিনের সমন্বয় সেখানে সাধারণভাবে দেখা গেছে।

তিনটি শর্ত হল: বাতাস চলাচলের অপর্যাপ্ত ব্যবস্থা সহ বন্ধ কোন জায়গা, জনবহুল এলাকা, এবং মুখোমুখি কথা বলার মত মানুষের সংযোগে আসা।

সংক্ষেপে বলা যায় ঘরে ঘন ঘন বাতাস প্রবাহের সুযোগ করে দেয়া এবং জনবহুল জায়গা এড়িয়ে চলা ও কাছে থেকে কথা বলা এড়িয়ে চলার উপদেশ প্যানেল জনগণকে দিচ্ছে।