জাপান কীভাবে পরিচ্ছন্ন দেশ হয়ে উঠল
শিক্ষার্থীরা ধৈর্য সহকারে তাদের শিক্ষকের কথা শুনছে। শিক্ষকের শেষ কথাগুলো ছিল : ‘ওকে, সবাই শোনো আজকের ক্লিনিং রোস্টার। প্রথম ও দ্বিতীয় সারি শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করবে। তৃতীয় ও চতুর্থ করিডোর, সিঁড়ি আর পঞ্চম লাইনে যারা আছ, তারা টয়লেটগুলো পরিষ্কার করবে।’ পঞ্চম সারি থেকে কিছুটা গুঞ্জনের শব্দ আসলেও শিশুরা উঠে দাঁড়াল এবং ক্লাসরুমের পেছনে রাখা সব উপকরণ নিয়ে টয়লেটের দিকে দৌড়ে গেল।
এটি জাপানি স্কুলগুলোর একটি পরিচিত দৃশ্য। এই দেশে যারা প্রথমবার যান, তারা অবাক হন কীভাবে দেশটি এতো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হলো। চলতে ফেরতে গিয়ে তারা দেখেন, কোথাও ময়লা ফেলার ডাস্টবিন নেই এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মীও চোখে পড়ে না। তাহলে এত পরিষ্কার কীভাবে? এর সহজ উত্তর হলো অধিবাসীরাই দেশকে পরিচ্ছন্ন রাখে। হিরোশিমার একজন সরকারি কর্মকর্তা মাইকো আওয়ানে বলেন, ‘বছরের স্কুলজীবনে, এলিমেন্টারি থেকে হাই স্কুল পর্যন্ত, শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের রুটিনে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে অংশ নিতে হয়। আমাদের নিজেদের ব্যবহার্য জিনিস ও থাকার স্থান পরিষ্কার রাখতে বাড়িতে বাবা-মা শিক্ষা দেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জাপানিরা অন্যদের কাছ আমাদের ভাবমূর্তির বিষয়ে খুবই স্পর্শকাতর। আমরা চাই না কেউ আমাদের খারাপ ভাবুক।’
জাপানে পরিচ্ছন্নতার কিছু কিছু ঘটনা ভাইরাল হয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে জাপানের খেলা শেষে সমর্থকদের স্টেডিয়াম পরিষ্কার করার ঘটনা বিশ্বকে আলোড়িত করেছিল। খেলোয়াড়ও ড্রেসিংরুম ছাড়ার আগে সেটি পরিষ্কার করে রেখেছিল। ফিফার কর্মকর্তা প্রিসিলা জানসেনস টুইট করেছিলেন, ‘সব টিমের জন্য এটা দারুণ অনুকরণীয়।’