প্রাক্তন জাপানি প্রধানমন্ত্রী ইয়াসুহিরো নাকাসোনে পরলোকগমন করেছেন
জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইয়াসুহিরো নাকাসোনে আজ পরলোকগমন করেছেন। শিল্প প্রতিষ্ঠানের বেসরকারিকরণ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে জাপানের জোরালো সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সুপরিচিত তিনি।
শোওয়া যুগে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারীদের মধ্যে তিনিই জীবিত ছিলেন এতদিন।
নাকাসোনে ১৯১৮ সালে গুম্মা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ ক’রে বেরোনোর পর তিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি করতে শুরু করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নৌবাহিনীর অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৪৭ সালে তিনি সংসদের নিম্নকক্ষে আসন লাভের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করেন এবং জয় লাভ করে পর পর ২০ মেয়াদের মত সেই আসন তিনি ধরে রাখতে সক্ষম হন।
১৯৮২ সালে জাপানের ৭১তম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে নাকাসোনে দলের নির্বাহী পদ ও মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকটি উচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর পদে তিনি দায়িত্ব পালন করেন প্রায় পাঁচ বছর।
প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন থাকার সময় তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত নেতৃবর্গ সহ যুদ্ধে প্রাণবলীদানকারী জাপানীদের সম্মানে উৎসর্গীকৃত শিন্তো মন্দির ইয়াসুকুনি শ্রাইন দর্শন করতে যান আনুষ্ঠানিক ভাবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে তিনিই প্রথম এই মন্দির আনুষ্ঠানিক ভাবে দর্শন করেছিলেন। তবে চীন ও অন্যান্য দেশের তরফ থেকে তীব্র সমালোচনা হওয়ায় নাকাসোনে এই মন্দির দর্শনে আর যাননি।
১৯৮০র দশকে নাকাসোনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের সাথে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। দুই নেতা পরস্পরকে ‘রন’ এবং ‘ইয়াসু’, এই নামে সম্বোধন করতেন।
নাকাসোনে ছিলেন জাপানের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সংবিধান সংশোধনের বিরাট এক প্রবক্তা, যে স্বপ্ন তিনি পূরণ করে যেতে পারেননি।
মৃত্যুকালে ইয়াসুহিরো নাকাসোনের বয়স হয়েছিল ১০১ বছর।