জাপানের মৎস্য শিল্প
মাছ হচ্ছে জাপানের ঐতিহ্যবাহী খাবার বা ওয়াশোকু। কাঁচা মাছের সাশিমি বা সুশি, এবং রান্না করা, শুষ্ক কিংবা ঝলসানো সামুদ্রিক খাদ্য উৎসব আয়োজনের খাদ্য তালিকার অংশ ছাড়াও হচ্ছে নিয়মিত খাবার।
জাপানের মাছ ধরা এবং মৎস্য চাষ শিল্প দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সামুদ্রিক খাদ্য ভিত্তিক খাদ্য সংস্কৃতি হিসেবে দ্রুত বিস্তৃত হয়। সরকারি এক জরিপে দেখা যায়, ১৯৮৪ সালে বার্ষিক ১ কোটি ২৮ লক্ষ ২০ হাজার টন শিকার নিয়ে সর্বোচ্চে পৌঁছেছিল। তবে এর পর থেকে মৎস্য শিকার কমে এসে ২০১৭ সালে সর্বোচ্চ সীমার এক তৃতীয়াংশে নেমে যায়। জাপানের আশপাশের সমুদ্রে সম্পদ হ্রাস পাওয়ার জন্য জাপান সরকার মাত্রাতিরিক্ত মাছ ধরা এবং বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়াকে দায়ী করছে। আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ার মধ্যে দিয়ে দেশের ভেতরে ধরা মাছের ঘাটতি পূরণ করে নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে জাপানে বিক্রি হওয়া মাছের অর্ধেক বিদেশ থেকে আসছে।
এদিকে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের যোগান দিতে মাছের বৈশ্বিক উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাথা পিছু মাছ খাওয়ার পরিমাণ এখন হচ্ছে অর্ধ শতক আগের প্রায় দ্বিগুণ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বলছে, বিশ্বে মাছের মজুতের প্রায় ৩৩ শতাংশ মাত্রাতিরিক্ত শিকারের লক্ষ্য হচ্ছে।
এর থেকে পশ্চিমের দেশগুলোতে সম্পদ ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তার ধারণা বিস্তার লাভ করে।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে জাপানের সংসদ মাছ ধরা আইনের একটি সংশোধনী অনুমোদন করেছে। সংশোধনীতে মৎস্য সম্পদের ব্যবস্থাপনা জোরদার করে নেয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বেসরকারি সংরক্ষণ গ্রুপ বিশ্ব বন্য প্রাণী তহবিল ডব্লিউ ডব্লিউ এফ জাপানের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ব্যাপক আলোচনা এবং ক্ষুদ্রাকারের মৎস্যজীবীদের স্বার্থ বিবেচনা করে দেখার পর সরকার বিশ্বের সামনে কার্যকর একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা মডেল উপস্থাপন করতে পারবে বলে তাঁর সংগঠন উচ্চ আশা পোষণ করছে।